Ajker Patrika

আজকের তারাবি-২৭: ওজনে কম দেওয়ার শাস্তি ও শবে কদরের ফজিলত

রায়হান রাশেদ
আপডেট : ২৭ মার্চ ২০২৫, ১৩: ০৩
আজকের তারাবি-২৭: ওজনে কম দেওয়ার শাস্তি ও শবে কদরের ফজিলত

আজ খতমে তারাবিতে পবিত্র কোরআনের ৩০ তম পারা তিলাওয়াত করা হবে। সুরা নাবা, নাজিয়াত, আবাসা, তাকভির, ইনফিতার, মুতাফফিফিন, ইনশিকাক, বুরুজ, তারিক, আলা, গাশিয়া, ফাজর, বালাদ, শামস, লাইল, দুহা, ইনশিরাহ, ত্বিন, আলাক, কদর, বাইয়িনা, জিলজাল, আদিয়া, কারিয়া, তাকসুর, আসর, হুমাজা, ফিল, কোরাইশ, মাউন, কাউসার, কাফিরুন, নসর, লাহাব, ইখলাস, ফালাক ও নাস পড়া হবে। সুরা বাইয়িনা, জিলজাল, নাসর, ফালাক ও নাস ছাড়া সবকটি সুরা মক্কায় অবতীর্ণ। এখানে এসব সুরার কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় সংক্ষেপে তুলে ধরা হলো—

রাত ঘুমানোর সময়
আল্লাহ মানুষের জন্য রাত ঘুমানোর বিছানা বানিয়েছেন। ঘুম মহান আল্লাহর এক বিশেষ নিয়ামত। ঘুম শরীরের ক্লান্তি দূর করে, মনে প্রশান্তি আনে এবং কর্মস্পৃহা বৃদ্ধি করে। কিন্তু আজকাল মানুষ গভীর রাত পর্যন্ত জেগে থাকে। বিভিন্ন অহেতুক কাজে সময়ক্ষেপণ করে। কারও কারও ঘুমাতে সকাল হয়ে যায়। অধিক রাত জাগরণ মানুষকে চিন্তা-চেতনায়, মননে ও শরীরে অসুস্থ করে তোলে। জীবন থেকে কেড়ে নেয় কর্মোদ্যোগী শক্তি। আল্লাহ মানুষের সুন্দর জীবনযাপন, কর্ম ও চিন্তায় সুস্থতার জন্য রাতে ঘুমাতে বলেছেন। আল্লাহ বলেন, ‘আমি তোমাদের বিশ্রামের জন্য নিদ্রা দিয়েছি, তোমাদের জন্য রাতকে করেছি আবরণস্বরুপ, আর দিনকে বানিয়েছি তোমাদের কাজের জন্য।’ (সুরা নাবা: ৯-১১) 

প্রয়োজনের তাগিদে রাত জাগার অনুমোদন করেছে ইসলাম। তবে সে ক্ষেত্রে ইসলামের নিয়মকে উপেক্ষা করা যাবে না। রাত জাগা যেন ফজর নামাজ কাজা হওয়ার কারণ না হয়ে দাঁড়ায়। রাত জাগলে শরীর দুর্বল হয়ে পড়ে। ঘুমের অভাবে মেজাজ খিটখিটে হয়ে যায়। ব্যক্তি, পারিবারিক ও জনজীবনে অশান্তি দেখা দেয়। কাজকর্মে শক্তি হারিয়ে ফেলে। চিন্তার দৈন্য তৈরি হয়। রাসুল (সা.) এশার আগে ঘুমানো এবং এশার পর না ঘুমিয়ে গল্পগুজব করা অপছন্দ করতেন। (বুখারি: ৫৯৯) 

সুরা নাজিয়াত, আবাসা, তাকভির ও ইনফিতারের বিষয়বস্তু
এসব সুরায় কিয়ামত অস্বীকারকারীদের ফেরাউনের পরিণতির কথা চিন্তা করতে নির্দেশ, জান্নাত-জাহান্নামির পরিচয়, অন্ধ সাহাবি আবদুল্লাহ উম্মে মাকতুম (রা.)-কে ঘিরে বিধান, আল্লাহর একত্ববাদ, কিয়ামতে কেউ কারও উপকারে না আসা, কোরআন ও নবীজির সত্যতা, উপদেশ, লিপিকর ফেরেশতা কর্তৃক মানুষের আমল লিপিবদ্ধ করার বিষয়ের বিবরণ রয়েছে। 

ওজনে কম দেওয়া ভয়াবহ পাপ
সমাজে প্রায়ই ওজনে কম দেওয়ার ঘটনা শোনা যায়। দোকানি মেপে দেওয়ার সময় দেখা যায় ঠিক আছে। বাসায় এনে মাপলে সেটা ১০০ গ্রাম কম হয়ে যায়! ব্যবসায়-বাণিজ্য ও লেনদেনের ক্ষেত্রে ওজনে কমবেশি করা বা ঠকানোর মাধ্যমে জীবিকা উপার্জন একটি জঘন্য অপরাধ। শোয়াইব (আ.)-এর জাতির ওপর আজাব এসেছিল বিশেষভাবে পরিমাপ ও ওজনে অসততার কারণে। তাই এ ধরনের প্রতারণা থেকে বেঁচে থাকা উচিত। এটা কোরআনের ভাষায় অত্যন্ত ঘৃণিত ও নিন্দনীয় কাজ। আল্লাহ বলেন, ‘যারা মাপে কম দেয়, তাদের জন্য দুর্ভোগ।’ (সুরা মুতাফফিফিন: ১) 

সুরা ইনশিকাক থেকে আলাকের বিষয়বস্তু
সুরা ইনশিকাক, বুরুজ, তারিক, আলা, গাশিয়া, ফাজর, বালাদ, শামস, লাইল, দুহা, ইনশিরাহ, ত্বিন, আলাকে কিয়ামতের দিন মানুষের কৃতকর্মের ফল পাওয়া, কারা সৌভাগ্যবান, পরিখা খননকারীদের কাহিনি, কোরআনের মহত্ব ও বড়ত্ব, মানুষের জন্য তত্ত্বাবধায়ক ফেরেশতা নিযুক্ত করা, মানুষ সৃষ্টির মূল উপাদান নিয়ে গবেষণার আদেশ, কাফেরদের প্রতি সতর্কবার্তা, আল্লাহর গুণকীর্তন, উপদেশ, সৃষ্টিজীবে আল্লাহর পরিচয়, ধ্বংসপ্রাপ্ত বিভিন্ন জাতির প্রতি ইঙ্গিত, দুঃখ-কষ্ট জীবনের অংশ, অহংকারী কাফের, নেক আমল, ভালো কাজের প্রতি উৎসাহ, তাকওয়া, আমল অনুযায়ী ফলাফল, নবীজির প্রতি আল্লাহর সন্তুষ্টি, মানুষের সৌন্দর্য, পড়া, সম্পদের কারণে মানুষের বিপদ এবং কাফেরের আলাপ রয়েছে। 

হাজার মাসের চেয়ে উত্তম যে রাত
সুরা কদরে আল্লাহ তাআলা কদরের রাতের শ্রেষ্ঠত্বের বর্ণনা দিয়েছেন। লাইলাতুল কদর বা কদরের রাত সবচেয়ে মর্যাদাপূর্ণ। কোরআন ও হাদিসে কদরের রাতকে হাজার মাসের চেয়ে উত্তম বলা হয়েছে। মানবজাতির সম্মানে এ রাতে ফেরেশতারা ভূপৃষ্ঠে নেমে আসেন। আল্লাহ তাআলা এ রাতে পবিত্র কোরআন অবতীর্ণ করেছেন। এ রাতে পবিত্র কোরআন লাওহে মাহফুজ থেকে দুনিয়ার আসমানে আনা হয়। এ রাতে ফজর পর্যন্ত আল্লাহর রহমত বর্ষিত হয়। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘যে লাইলাতুল কদরে ইমানের সঙ্গে সওয়াবের আশায় নামাজ পড়ে, তার অতীতের সব গুনাহ ক্ষমা করে দেওয়া হয়।’ (বুখারি: ২০১৪) 

সুরা বাইয়িনা থেকে তাকাসুরের বিষয়বস্তু
সুরা বাইয়িনা, জিলজাল, আদিয়া, কারিয়া ও তাকাসুরে নবীজির রিসালাত ও নবুওয়তে কিতাবিদের অবস্থান, ইখলাস, মুমিন-কাফের, কিয়ামতের আগের ভূমিকম্প, মানুষের অকৃজ্ঞতা, দুনিয়ার প্রতি মানুষের অতিরিক্ত আসক্তি ইত্যাদি বিষয় রয়েছে। 

কালের শপথ—সুরা আসর
সুরা আসর পবিত্র কোরআনের ১০৩ তম সুরা। আয়াত সংখ্যা ৩। অনেক মুফাসসিরের মতে ছোট হলেও এ সুরায় রয়েছে পবিত্র কোরআনের সমস্ত লক্ষ্য ও জ্ঞানের সংক্ষিপ্তসার। সুরা আসরে দ্ব্যর্থহীন ভাষায় মানুষের সাফল্য ও কল্যাণের এবং তার ধ্বংস ও সর্বনাশের পথ বর্ণনা করা হয়েছে। হজরত ইমাম শাফেয়ি (রহ.) এ সুরা প্রসঙ্গে বলেন, ‘লোকরা যদি এই সুরাটি সম্পর্কে চিন্তাভাবনা করে, তাহলে এই সুরাই তাদের হেদায়েতের জন্য যথেষ্ট।’ 

যে মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত নয়
আসর অর্থ কাল বা সময়। এ সুরার শুরুতে আল্লাহ শপথ নিয়েছেন সময়ের। যাতে মানুষ সময়ের গুরুত্ব উপলব্ধি করে এর যথাযথ ব্যবহারে সচেতন হয়। দ্বিতীয় আয়াতে আল্লাহ বলছেন, ‘নিঃসন্দেহে সব মানুষই ক্ষতির মধ্যে রয়েছে।’ এর পরের আয়াতে আল্লাহ বাঁচার উপায় বলে দিয়েছেন, যা পালন করলে মানুষ ক্ষতিমুক্ত হবে। এক. ইমান। দুই. সৎকাজ। সৎকাজ বলতে কেবল ইবাদত-বন্দেগি, দান-খয়রাত ও জ্ঞানার্জনকে বোঝায় না। সব ধরনের ভালো কাজই সৎকাজ। তিন. পরস্পরকে সত্যের উপদেশ ও চার. পরস্পরকে ধৈর্যের উপদেশ। 

এ ছাড়া তারাবির আজকের অংশে হুমাজা, ফিল, কোরাইশ, মাউন, কাউসার, কাফিরুন, নসর, লাহাব, ইখলাস, ফালাক ও নাসে কারও অগোচরে দোষ চর্চা, খোঁটা, বিদ্রুপ, দুনিয়াপ্রীতি, জাহান্নামের আজাব, হস্তিবাহিনীর গল্প, ব্যবসা, নেয়ামত, মুমিনের গুণাবলি, কাফেরের দোষক্রটি, নবীজিকে হাউজে কাউসার প্রদান, নামাজ, কোরবানি, ইমানের সঙ্গে কুফরের সংমিশ্রণ নেই, তাসবিহ, ইস্তিগফার, আবু লাহাব ও তার স্ত্রী উম্মে জামিলের পরিণতি, আল্লাহর পরিচয়, সৃষ্টির সবকিছুর অনিষ্ট থেকে আল্লাহর আশ্রয় ইত্যাদি বিষয়ের আলোচনা রয়েছে।

আল্লাহর অশেষ দয়ায় এই পর্বের মাধ্যমে শেষ হলো প্রতিদিনের তারাবির বিষয়বস্তু নিয়ে লেখা ‘আজকের তারাবি’ সিরিজ। আল্লাহ তাআলা আমাদের আমল করার তাওফিক দিন।

লেখক: ইসলামবিষয়ক গবেষক ও সাংবাদিক  

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

আজকের নামাজের সময়সূচি: ২৫ ডিসেম্বর ২০২৫

ইসলাম ডেস্ক 
আজকের নামাজের সময়সূচি। ছবি: সংগৃহীত
আজকের নামাজের সময়সূচি। ছবি: সংগৃহীত

জীবনকে সুশৃঙ্খল করতে এবং আল্লাহর সান্নিধ্য পেতে নামাজের কোনো বিকল্প নেই। একজন মুমিনের জন্য নামাজ হলো আল্লাহর সঙ্গে সরাসরি কথোপকথনের মাধ্যম। এটি এমন এক ইবাদত—যা আমাদের মনে আধ্যাত্মিক প্রশান্তি আনে, জীবনের প্রতিটি কাজে আনে বরকত।

প্রতিদিন সময় মতো পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করা প্রত্যেক মুসলমানের ওপর আবশ্যক। তাই জেনে নেওয়া যাক আজ কোন ওয়াক্তের নামাজ কখন আদায় করতে হবে।

আজ বৃহস্পতিবার, ২৫ ডিসেম্বর ২০২৫ ইংরেজি, ১০ পৌষ ১৪৩২ বাংলা, ০৪ রজব ১৪৪৭ হিজরি। ঢাকা ও তার আশপাশের এলাকার নামাজের সময়সূচি তুলে ধরা হলো—

আজকের নামাজের সময়সূচি
নামাজ ওয়াক্ত শুরুওয়াক্ত শেষ
তাহাজ্জুদ ও সেহরির শেষ সময়০০: ০০০৫: ১৬ মিনিট
ফজর০৫: ১৭ মিনিট০৬: ৩৭ মিনিট
জোহর১১: ৫৯ মিনিট০৩: ৪২ মিনিট
আসর০৩: ৪৩ মিনিট০৫: ১৮ মিনিট
মাগরিব০৫: ২০ মিনিট০৬: ৩৮ মিনিট
এশা০৬: ৩৯ মিনিট০৫: ১৬ মিনিট

উল্লিখিত সময়ের সঙ্গে যেসব বিভাগের সময় যোগ-বিয়োগ করতে হবে, সেগুলো হলো:

বিয়োগ করতে হবে—
চট্টগ্রাম: ০৫ মিনিট
সিলেট: ০৬ মিনিট

যোগ করতে হবে—
খুলনা: ০৩ মিনিট
রাজশাহী: ০৭ মিনিট
রংপুর: ০৮ মিনিট
বরিশাল: ০১ মিনিট

নামাজ আমাদের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি যেমন আমাদের দৈহিক পবিত্রতা নিশ্চিত করে, তেমনই আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে। আজকের এই নামাজের সময়সূচি আমাদের মনে করিয়ে দেয়—জীবনের ব্যস্ততা যতই থাকুক না কেন, আল্লাহর জন্য সময় বের করা আমাদের প্রধান দায়িত্ব।

আসুন, নামাজের মাধ্যমে আমরা নিজেদেরকে তাঁর আরও কাছে নিয়ে যাই। জীবনে নিয়ে আসি ইমানের নুর।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

যে তিন শ্রেণির নামাজির জন্য রয়েছে দুর্ভোগ

ইসলাম ডেস্ক 
আপডেট : ২৪ ডিসেম্বর ২০২৫, ১০: ৩৯
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

নামাজ বা সালাত অন্যতম প্রধান ফরজ ইবাদত। পবিত্র কোরআনের ৮২টি স্থানে নামাজের কথা উল্লেখ করে এর অপরিসীম গুরুত্ব বর্ণনা করা হয়েছে। মহান আল্লাহ ইরশাদ করেন, ‘যখন তোমরা সালাত (নামাজ) পূর্ণ করবে, তখন দাঁড়িয়ে, বসে ও শুয়ে আল্লাহকে স্মরণ করবে। অতঃপর যখন নিশ্চিন্ত হবে, তখন সালাত (পূর্বের নিয়মে) কায়েম করবে। নিশ্চয়ই সালাত মুমিনদের ওপর নির্দিষ্ট সময়ে ফরজ।’ (সুরা নিসা: ১০৩)

রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর হাদিসেও বারবার গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে ওয়াক্তমতো নামাজ আদায়ের ওপর। এমনকি আল্লাহর কাছেও এটি অত্যন্ত প্রিয় একটি আমল। হজরত আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.) বর্ণনা করেন, আমি রাসুল (সা.)-কে জিজ্ঞেস করলাম, কোন আমল আল্লাহর কাছে অধিক প্রিয়? তিনি বললেন, ‘যথাসময়ে সালাত আদায় করা।’ আমি পুনরায় জিজ্ঞেস করলাম, এরপর কোনটি? তিনি বললেন, ‘পিতা-মাতার প্রতি সদ্ব্যবহার।’ আমি আবার জিজ্ঞেস করলাম, ‘এরপর কোনটি?’ রাসুল (সা.) বললেন, ‘আল্লাহর পথে লড়াই করা’। (সহিহ্ বুখারি: ৫০২)

নামাজ পড়া সত্ত্বেও তিন শ্রেণির নামাজির জন্য পরকালে রয়েছে ভয়াবহ শাস্তির হুঁশিয়ারি। এই তিন শ্রেণি হলো: ১. যারা লোক দেখানোর জন্য নামাজ আদায় করে। ২. যারা নামাজে চরম অমনোযোগী। ৩. যারা নামাজে চুরি করে, অর্থাৎ রুকু-সিজদা ঠিকমতো আদায় করে না।

পবিত্র কোরআনে প্রথম দুই শ্রেণির কথা উল্লেখ করে আল্লাহ বলেন, ‘অতএব সেই নামাজ আদায়কারীদের জন্য দুর্ভোগ, যারা নিজেদের নামাজে অমনোযোগী এবং যারা লোক দেখানোর জন্য তা করে।’ (সুরা মাউন: ৪-৬)

অন্যদিকে, তৃতীয় শ্রেণির নামাজি তথা নামাজ চোরদের সম্পর্কে আবু কাতাদাহ (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসে রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘চোরদের মধ্যে সবচেয়ে বড় চোর হলো ওই ব্যক্তি, যে নামাজে চুরি করে।’ সাহাবিরা জিজ্ঞেস করলেন, ‘হে আল্লাহর রাসুল, নামাজে চুরি কীভাবে হয়?’ জবাবে নবীজি (সা.) বললেন, ‘নামাজে চুরি হলো রুকু-সিজদা পূর্ণ না করা (ঠিকমতো আদায় না করা)।’ (মিশকাতুল মাসাবিহ্: ৮৮৫)

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

আজকের নামাজের সময়সূচি: ২৪ ডিসেম্বর ২০২৫

ইসলাম ডেস্ক 
আজকের নামাজের সময়সূচি। ছবি: সংগৃহীত
আজকের নামাজের সময়সূচি। ছবি: সংগৃহীত

জীবনকে সুশৃঙ্খল করতে এবং আল্লাহর সান্নিধ্য পেতে নামাজের কোনো বিকল্প নেই। একজন মুমিনের জন্য নামাজ হলো আল্লাহর সঙ্গে সরাসরি কথোপকথনের মাধ্যম। এটি এমন এক ইবাদত—যা আমাদের মনে আধ্যাত্মিক প্রশান্তি আনে, জীবনের প্রতিটি কাজে আনে বরকত।

প্রতিদিন সময় মতো পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করা প্রত্যেক মুসলমানের ওপর আবশ্যক। তাই জেনে নেওয়া যাক আজ কোন ওয়াক্তের নামাজ কখন আদায় করতে হবে।

আজ বুধবার, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৫ ইংরেজি, ০৯ পৌষ ১৪৩২ বাংলা, ০৩ রজব ১৪৪৭ হিজরি। ঢাকা ও তার আশপাশের এলাকার নামাজের সময়সূচি তুলে ধরা হলো—

আজকের নামাজের সময়সূচি
নামাজ ওয়াক্ত শুরুওয়াক্ত শেষ
তাহাজ্জুদ ও সেহরির শেষ সময়০০: ০০০৫: ১৬ মিনিট
ফজর০৫: ১৭ মিনিট০৬: ৩৭ মিনিট
জোহর১১: ৫৯ মিনিট০৩: ৪১ মিনিট
আসর০৩: ৪২ মিনিট০৫: ১৭ মিনিট
মাগরিব০৫: ১৯ মিনিট০৬: ৩৮ মিনিট
এশা০৬: ৩৯ মিনিট০৫: ১৬ মিনিট

উল্লিখিত সময়ের সঙ্গে যেসব বিভাগের সময় যোগ-বিয়োগ করতে হবে, সেগুলো হলো:

বিয়োগ করতে হবে—
চট্টগ্রাম: ০৫ মিনিট
সিলেট: ০৬ মিনিট

যোগ করতে হবে—
খুলনা: ০৩ মিনিট
রাজশাহী: ০৭ মিনিট
রংপুর: ০৮ মিনিট
বরিশাল: ০১ মিনিট

নামাজ আমাদের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি যেমন আমাদের দৈহিক পবিত্রতা নিশ্চিত করে, তেমনই আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে। আজকের এই নামাজের সময়সূচি আমাদের মনে করিয়ে দেয়—জীবনের ব্যস্ততা যতই থাকুক না কেন, আল্লাহর জন্য সময় বের করা আমাদের প্রধান দায়িত্ব।

আসুন, নামাজের মাধ্যমে আমরা নিজেদেরকে তাঁর আরও কাছে নিয়ে যাই। জীবনে নিয়ে আসি ইমানের নুর।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

আজানের আগে নামাজ আদায় করা যাবে কি

ইসলাম ডেস্ক 
আপডেট : ২৩ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৩: ১৭
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

ইসলামি শরিয়তে প্রাপ্তবয়স্ক প্রতিটি মুসলমানের ওপর দৈনিক পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করা ফরজ। এটি ইসলামের পাঁচটি মূল স্তম্ভের অন্যতম। পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেছেন, ‘তোমরা নামাজ কায়েম করো, জাকাত দাও এবং যারা নামাজে অবনত হয়, তাদের সঙ্গে তোমরাও অবনত হও।’ (সুরা বাকারা: ৪৩)

নামাজের প্রতি মুমিনের যত্নবান হওয়ার নির্দেশ দিয়ে আল্লাহ তাআলা আরও বলেন, ‘সব নামাজের প্রতি যত্নবান হও; বিশেষ করে মধ্যবর্তী নামাজের (আসর) ব্যাপারে। আর আল্লাহর সামনে একান্ত আদবের সঙ্গে দাঁড়াও।’ (সুরা বাকারা: ২৩৮)

প্রতিদিন পাঁচবার আজানের মাধ্যমে মুসল্লিদের আল্লাহর ঘরের দিকে ডাকা হয়। আজানের প্রতি সম্মান প্রদর্শন এবং এর প্রতি ভালোবাসা পোষণ করা প্রতিটি মুসলমানের ইমানি দায়িত্ব। নামাজ কবুল হওয়ার জন্য তা নির্দিষ্ট সময়ে বা ওয়াক্তমতো আদায় করা অপরিহার্য। পবিত্র কোরআনে বর্ণিত হয়েছে, ‘নির্ধারিত সময়ে নামাজ আদায় করা মুমিনদের জন্য অবশ্যকর্তব্য।’ (সুরা নিসা: ১০৩)

এখানে একটি বিষয় জেনে রাখা জরুরি, নামাজের জন্য ওয়াক্ত হওয়া শর্ত, আজান হওয়া নয়। আজানের মূল উদ্দেশ্য হলো জামাতের সঙ্গে ফরজ নামাজ আদায়ের আহ্বান জানানো। যদি কোনো কারণে আজান হতে দেরি হয়, কিন্তু নামাজের ওয়াক্ত শুরু হয়ে যায়, তবে আজানের আগেই নামাজ আদায় করে নেওয়া বৈধ এবং নামাজ হয়ে যাবে। মূলত, একাকী নামাজ আদায়ের ক্ষেত্রে আজান হওয়া জরুরি নয়, বরং ওয়াক্ত শুরু হওয়াটাই আসল শর্ত। তবে ওয়াক্ত হওয়ার আগে নামাজ আদায় করলে তা কবুল হবে না।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত