রায়হান রাশেদ
আজ খতমে তারাবিতে পবিত্র কোরআনের ৩০ তম পারা তিলাওয়াত করা হবে। সুরা নাবা, নাজিয়াত, আবাসা, তাকভির, ইনফিতার, মুতাফফিফিন, ইনশিকাক, বুরুজ, তারিক, আলা, গাশিয়া, ফাজর, বালাদ, শামস, লাইল, দুহা, ইনশিরাহ, ত্বিন, আলাক, কদর, বাইয়িনা, জিলজাল, আদিয়া, কারিয়া, তাকসুর, আসর, হুমাজা, ফিল, কোরাইশ, মাউন, কাউসার, কাফিরুন, নসর, লাহাব, ইখলাস, ফালাক ও নাস পড়া হবে। সুরা বাইয়িনা, জিলজাল, নাসর, ফালাক ও নাস ছাড়া সবকটি সুরা মক্কায় অবতীর্ণ। এখানে এসব সুরার কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় সংক্ষেপে তুলে ধরা হলো—
রাত ঘুমানোর সময়
আল্লাহ মানুষের জন্য রাত ঘুমানোর বিছানা বানিয়েছেন। ঘুম মহান আল্লাহর এক বিশেষ নিয়ামত। ঘুম শরীরের ক্লান্তি দূর করে, মনে প্রশান্তি আনে এবং কর্মস্পৃহা বৃদ্ধি করে। কিন্তু আজকাল মানুষ গভীর রাত পর্যন্ত জেগে থাকে। বিভিন্ন অহেতুক কাজে সময়ক্ষেপণ করে। কারও কারও ঘুমাতে সকাল হয়ে যায়। অধিক রাত জাগরণ মানুষকে চিন্তা-চেতনায়, মননে ও শরীরে অসুস্থ করে তোলে। জীবন থেকে কেড়ে নেয় কর্মোদ্যোগী শক্তি। আল্লাহ মানুষের সুন্দর জীবনযাপন, কর্ম ও চিন্তায় সুস্থতার জন্য রাতে ঘুমাতে বলেছেন। আল্লাহ বলেন, ‘আমি তোমাদের বিশ্রামের জন্য নিদ্রা দিয়েছি, তোমাদের জন্য রাতকে করেছি আবরণস্বরুপ, আর দিনকে বানিয়েছি তোমাদের কাজের জন্য।’ (সুরা নাবা: ৯-১১)
প্রয়োজনের তাগিদে রাত জাগার অনুমোদন করেছে ইসলাম। তবে সে ক্ষেত্রে ইসলামের নিয়মকে উপেক্ষা করা যাবে না। রাত জাগা যেন ফজর নামাজ কাজা হওয়ার কারণ না হয়ে দাঁড়ায়। রাত জাগলে শরীর দুর্বল হয়ে পড়ে। ঘুমের অভাবে মেজাজ খিটখিটে হয়ে যায়। ব্যক্তি, পারিবারিক ও জনজীবনে অশান্তি দেখা দেয়। কাজকর্মে শক্তি হারিয়ে ফেলে। চিন্তার দৈন্য তৈরি হয়। রাসুল (সা.) এশার আগে ঘুমানো এবং এশার পর না ঘুমিয়ে গল্পগুজব করা অপছন্দ করতেন। (বুখারি: ৫৯৯)
সুরা নাজিয়াত, আবাসা, তাকভির ও ইনফিতারের বিষয়বস্তু
এসব সুরায় কিয়ামত অস্বীকারকারীদের ফেরাউনের পরিণতির কথা চিন্তা করতে নির্দেশ, জান্নাত-জাহান্নামির পরিচয়, অন্ধ সাহাবি আবদুল্লাহ উম্মে মাকতুম (রা.)-কে ঘিরে বিধান, আল্লাহর একত্ববাদ, কিয়ামতে কেউ কারও উপকারে না আসা, কোরআন ও নবীজির সত্যতা, উপদেশ, লিপিকর ফেরেশতা কর্তৃক মানুষের আমল লিপিবদ্ধ করার বিষয়ের বিবরণ রয়েছে।
ওজনে কম দেওয়া ভয়াবহ পাপ
সমাজে প্রায়ই ওজনে কম দেওয়ার ঘটনা শোনা যায়। দোকানি মেপে দেওয়ার সময় দেখা যায় ঠিক আছে। বাসায় এনে মাপলে সেটা ১০০ গ্রাম কম হয়ে যায়! ব্যবসায়-বাণিজ্য ও লেনদেনের ক্ষেত্রে ওজনে কমবেশি করা বা ঠকানোর মাধ্যমে জীবিকা উপার্জন একটি জঘন্য অপরাধ। শোয়াইব (আ.)-এর জাতির ওপর আজাব এসেছিল বিশেষভাবে পরিমাপ ও ওজনে অসততার কারণে। তাই এ ধরনের প্রতারণা থেকে বেঁচে থাকা উচিত। এটা কোরআনের ভাষায় অত্যন্ত ঘৃণিত ও নিন্দনীয় কাজ। আল্লাহ বলেন, ‘যারা মাপে কম দেয়, তাদের জন্য দুর্ভোগ।’ (সুরা মুতাফফিফিন: ১)
সুরা ইনশিকাক থেকে আলাকের বিষয়বস্তু
সুরা ইনশিকাক, বুরুজ, তারিক, আলা, গাশিয়া, ফাজর, বালাদ, শামস, লাইল, দুহা, ইনশিরাহ, ত্বিন, আলাকে কিয়ামতের দিন মানুষের কৃতকর্মের ফল পাওয়া, কারা সৌভাগ্যবান, পরিখা খননকারীদের কাহিনি, কোরআনের মহত্ব ও বড়ত্ব, মানুষের জন্য তত্ত্বাবধায়ক ফেরেশতা নিযুক্ত করা, মানুষ সৃষ্টির মূল উপাদান নিয়ে গবেষণার আদেশ, কাফেরদের প্রতি সতর্কবার্তা, আল্লাহর গুণকীর্তন, উপদেশ, সৃষ্টিজীবে আল্লাহর পরিচয়, ধ্বংসপ্রাপ্ত বিভিন্ন জাতির প্রতি ইঙ্গিত, দুঃখ-কষ্ট জীবনের অংশ, অহংকারী কাফের, নেক আমল, ভালো কাজের প্রতি উৎসাহ, তাকওয়া, আমল অনুযায়ী ফলাফল, নবীজির প্রতি আল্লাহর সন্তুষ্টি, মানুষের সৌন্দর্য, পড়া, সম্পদের কারণে মানুষের বিপদ এবং কাফেরের আলাপ রয়েছে।
হাজার মাসের চেয়ে উত্তম যে রাত
সুরা কদরে আল্লাহ তাআলা কদরের রাতের শ্রেষ্ঠত্বের বর্ণনা দিয়েছেন। লাইলাতুল কদর বা কদরের রাত সবচেয়ে মর্যাদাপূর্ণ। কোরআন ও হাদিসে কদরের রাতকে হাজার মাসের চেয়ে উত্তম বলা হয়েছে। মানবজাতির সম্মানে এ রাতে ফেরেশতারা ভূপৃষ্ঠে নেমে আসেন। আল্লাহ তাআলা এ রাতে পবিত্র কোরআন অবতীর্ণ করেছেন। এ রাতে পবিত্র কোরআন লাওহে মাহফুজ থেকে দুনিয়ার আসমানে আনা হয়। এ রাতে ফজর পর্যন্ত আল্লাহর রহমত বর্ষিত হয়। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘যে লাইলাতুল কদরে ইমানের সঙ্গে সওয়াবের আশায় নামাজ পড়ে, তার অতীতের সব গুনাহ ক্ষমা করে দেওয়া হয়।’ (বুখারি: ২০১৪)
সুরা বাইয়িনা থেকে তাকাসুরের বিষয়বস্তু
সুরা বাইয়িনা, জিলজাল, আদিয়া, কারিয়া ও তাকাসুরে নবীজির রিসালাত ও নবুওয়তে কিতাবিদের অবস্থান, ইখলাস, মুমিন-কাফের, কিয়ামতের আগের ভূমিকম্প, মানুষের অকৃজ্ঞতা, দুনিয়ার প্রতি মানুষের অতিরিক্ত আসক্তি ইত্যাদি বিষয় রয়েছে।
কালের শপথ—সুরা আসর
সুরা আসর পবিত্র কোরআনের ১০৩ তম সুরা। আয়াত সংখ্যা ৩। অনেক মুফাসসিরের মতে ছোট হলেও এ সুরায় রয়েছে পবিত্র কোরআনের সমস্ত লক্ষ্য ও জ্ঞানের সংক্ষিপ্তসার। সুরা আসরে দ্ব্যর্থহীন ভাষায় মানুষের সাফল্য ও কল্যাণের এবং তার ধ্বংস ও সর্বনাশের পথ বর্ণনা করা হয়েছে। হজরত ইমাম শাফেয়ি (রহ.) এ সুরা প্রসঙ্গে বলেন, ‘লোকরা যদি এই সুরাটি সম্পর্কে চিন্তাভাবনা করে, তাহলে এই সুরাই তাদের হেদায়েতের জন্য যথেষ্ট।’
যে মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত নয়
আসর অর্থ কাল বা সময়। এ সুরার শুরুতে আল্লাহ শপথ নিয়েছেন সময়ের। যাতে মানুষ সময়ের গুরুত্ব উপলব্ধি করে এর যথাযথ ব্যবহারে সচেতন হয়। দ্বিতীয় আয়াতে আল্লাহ বলছেন, ‘নিঃসন্দেহে সব মানুষই ক্ষতির মধ্যে রয়েছে।’ এর পরের আয়াতে আল্লাহ বাঁচার উপায় বলে দিয়েছেন, যা পালন করলে মানুষ ক্ষতিমুক্ত হবে। এক. ইমান। দুই. সৎকাজ। সৎকাজ বলতে কেবল ইবাদত-বন্দেগি, দান-খয়রাত ও জ্ঞানার্জনকে বোঝায় না। সব ধরনের ভালো কাজই সৎকাজ। তিন. পরস্পরকে সত্যের উপদেশ ও চার. পরস্পরকে ধৈর্যের উপদেশ।
এ ছাড়া তারাবির আজকের অংশে হুমাজা, ফিল, কোরাইশ, মাউন, কাউসার, কাফিরুন, নসর, লাহাব, ইখলাস, ফালাক ও নাসে কারও অগোচরে দোষ চর্চা, খোঁটা, বিদ্রুপ, দুনিয়াপ্রীতি, জাহান্নামের আজাব, হস্তিবাহিনীর গল্প, ব্যবসা, নেয়ামত, মুমিনের গুণাবলি, কাফেরের দোষক্রটি, নবীজিকে হাউজে কাউসার প্রদান, নামাজ, কোরবানি, ইমানের সঙ্গে কুফরের সংমিশ্রণ নেই, তাসবিহ, ইস্তিগফার, আবু লাহাব ও তার স্ত্রী উম্মে জামিলের পরিণতি, আল্লাহর পরিচয়, সৃষ্টির সবকিছুর অনিষ্ট থেকে আল্লাহর আশ্রয় ইত্যাদি বিষয়ের আলোচনা রয়েছে।
আল্লাহর অশেষ দয়ায় এই পর্বের মাধ্যমে শেষ হলো প্রতিদিনের তারাবির বিষয়বস্তু নিয়ে লেখা ‘আজকের তারাবি’ সিরিজ। আল্লাহ তাআলা আমাদের আমল করার তাওফিক দিন।
লেখক: ইসলামবিষয়ক গবেষক ও সাংবাদিক
আজ খতমে তারাবিতে পবিত্র কোরআনের ৩০ তম পারা তিলাওয়াত করা হবে। সুরা নাবা, নাজিয়াত, আবাসা, তাকভির, ইনফিতার, মুতাফফিফিন, ইনশিকাক, বুরুজ, তারিক, আলা, গাশিয়া, ফাজর, বালাদ, শামস, লাইল, দুহা, ইনশিরাহ, ত্বিন, আলাক, কদর, বাইয়িনা, জিলজাল, আদিয়া, কারিয়া, তাকসুর, আসর, হুমাজা, ফিল, কোরাইশ, মাউন, কাউসার, কাফিরুন, নসর, লাহাব, ইখলাস, ফালাক ও নাস পড়া হবে। সুরা বাইয়িনা, জিলজাল, নাসর, ফালাক ও নাস ছাড়া সবকটি সুরা মক্কায় অবতীর্ণ। এখানে এসব সুরার কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় সংক্ষেপে তুলে ধরা হলো—
রাত ঘুমানোর সময়
আল্লাহ মানুষের জন্য রাত ঘুমানোর বিছানা বানিয়েছেন। ঘুম মহান আল্লাহর এক বিশেষ নিয়ামত। ঘুম শরীরের ক্লান্তি দূর করে, মনে প্রশান্তি আনে এবং কর্মস্পৃহা বৃদ্ধি করে। কিন্তু আজকাল মানুষ গভীর রাত পর্যন্ত জেগে থাকে। বিভিন্ন অহেতুক কাজে সময়ক্ষেপণ করে। কারও কারও ঘুমাতে সকাল হয়ে যায়। অধিক রাত জাগরণ মানুষকে চিন্তা-চেতনায়, মননে ও শরীরে অসুস্থ করে তোলে। জীবন থেকে কেড়ে নেয় কর্মোদ্যোগী শক্তি। আল্লাহ মানুষের সুন্দর জীবনযাপন, কর্ম ও চিন্তায় সুস্থতার জন্য রাতে ঘুমাতে বলেছেন। আল্লাহ বলেন, ‘আমি তোমাদের বিশ্রামের জন্য নিদ্রা দিয়েছি, তোমাদের জন্য রাতকে করেছি আবরণস্বরুপ, আর দিনকে বানিয়েছি তোমাদের কাজের জন্য।’ (সুরা নাবা: ৯-১১)
প্রয়োজনের তাগিদে রাত জাগার অনুমোদন করেছে ইসলাম। তবে সে ক্ষেত্রে ইসলামের নিয়মকে উপেক্ষা করা যাবে না। রাত জাগা যেন ফজর নামাজ কাজা হওয়ার কারণ না হয়ে দাঁড়ায়। রাত জাগলে শরীর দুর্বল হয়ে পড়ে। ঘুমের অভাবে মেজাজ খিটখিটে হয়ে যায়। ব্যক্তি, পারিবারিক ও জনজীবনে অশান্তি দেখা দেয়। কাজকর্মে শক্তি হারিয়ে ফেলে। চিন্তার দৈন্য তৈরি হয়। রাসুল (সা.) এশার আগে ঘুমানো এবং এশার পর না ঘুমিয়ে গল্পগুজব করা অপছন্দ করতেন। (বুখারি: ৫৯৯)
সুরা নাজিয়াত, আবাসা, তাকভির ও ইনফিতারের বিষয়বস্তু
এসব সুরায় কিয়ামত অস্বীকারকারীদের ফেরাউনের পরিণতির কথা চিন্তা করতে নির্দেশ, জান্নাত-জাহান্নামির পরিচয়, অন্ধ সাহাবি আবদুল্লাহ উম্মে মাকতুম (রা.)-কে ঘিরে বিধান, আল্লাহর একত্ববাদ, কিয়ামতে কেউ কারও উপকারে না আসা, কোরআন ও নবীজির সত্যতা, উপদেশ, লিপিকর ফেরেশতা কর্তৃক মানুষের আমল লিপিবদ্ধ করার বিষয়ের বিবরণ রয়েছে।
ওজনে কম দেওয়া ভয়াবহ পাপ
সমাজে প্রায়ই ওজনে কম দেওয়ার ঘটনা শোনা যায়। দোকানি মেপে দেওয়ার সময় দেখা যায় ঠিক আছে। বাসায় এনে মাপলে সেটা ১০০ গ্রাম কম হয়ে যায়! ব্যবসায়-বাণিজ্য ও লেনদেনের ক্ষেত্রে ওজনে কমবেশি করা বা ঠকানোর মাধ্যমে জীবিকা উপার্জন একটি জঘন্য অপরাধ। শোয়াইব (আ.)-এর জাতির ওপর আজাব এসেছিল বিশেষভাবে পরিমাপ ও ওজনে অসততার কারণে। তাই এ ধরনের প্রতারণা থেকে বেঁচে থাকা উচিত। এটা কোরআনের ভাষায় অত্যন্ত ঘৃণিত ও নিন্দনীয় কাজ। আল্লাহ বলেন, ‘যারা মাপে কম দেয়, তাদের জন্য দুর্ভোগ।’ (সুরা মুতাফফিফিন: ১)
সুরা ইনশিকাক থেকে আলাকের বিষয়বস্তু
সুরা ইনশিকাক, বুরুজ, তারিক, আলা, গাশিয়া, ফাজর, বালাদ, শামস, লাইল, দুহা, ইনশিরাহ, ত্বিন, আলাকে কিয়ামতের দিন মানুষের কৃতকর্মের ফল পাওয়া, কারা সৌভাগ্যবান, পরিখা খননকারীদের কাহিনি, কোরআনের মহত্ব ও বড়ত্ব, মানুষের জন্য তত্ত্বাবধায়ক ফেরেশতা নিযুক্ত করা, মানুষ সৃষ্টির মূল উপাদান নিয়ে গবেষণার আদেশ, কাফেরদের প্রতি সতর্কবার্তা, আল্লাহর গুণকীর্তন, উপদেশ, সৃষ্টিজীবে আল্লাহর পরিচয়, ধ্বংসপ্রাপ্ত বিভিন্ন জাতির প্রতি ইঙ্গিত, দুঃখ-কষ্ট জীবনের অংশ, অহংকারী কাফের, নেক আমল, ভালো কাজের প্রতি উৎসাহ, তাকওয়া, আমল অনুযায়ী ফলাফল, নবীজির প্রতি আল্লাহর সন্তুষ্টি, মানুষের সৌন্দর্য, পড়া, সম্পদের কারণে মানুষের বিপদ এবং কাফেরের আলাপ রয়েছে।
হাজার মাসের চেয়ে উত্তম যে রাত
সুরা কদরে আল্লাহ তাআলা কদরের রাতের শ্রেষ্ঠত্বের বর্ণনা দিয়েছেন। লাইলাতুল কদর বা কদরের রাত সবচেয়ে মর্যাদাপূর্ণ। কোরআন ও হাদিসে কদরের রাতকে হাজার মাসের চেয়ে উত্তম বলা হয়েছে। মানবজাতির সম্মানে এ রাতে ফেরেশতারা ভূপৃষ্ঠে নেমে আসেন। আল্লাহ তাআলা এ রাতে পবিত্র কোরআন অবতীর্ণ করেছেন। এ রাতে পবিত্র কোরআন লাওহে মাহফুজ থেকে দুনিয়ার আসমানে আনা হয়। এ রাতে ফজর পর্যন্ত আল্লাহর রহমত বর্ষিত হয়। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘যে লাইলাতুল কদরে ইমানের সঙ্গে সওয়াবের আশায় নামাজ পড়ে, তার অতীতের সব গুনাহ ক্ষমা করে দেওয়া হয়।’ (বুখারি: ২০১৪)
সুরা বাইয়িনা থেকে তাকাসুরের বিষয়বস্তু
সুরা বাইয়িনা, জিলজাল, আদিয়া, কারিয়া ও তাকাসুরে নবীজির রিসালাত ও নবুওয়তে কিতাবিদের অবস্থান, ইখলাস, মুমিন-কাফের, কিয়ামতের আগের ভূমিকম্প, মানুষের অকৃজ্ঞতা, দুনিয়ার প্রতি মানুষের অতিরিক্ত আসক্তি ইত্যাদি বিষয় রয়েছে।
কালের শপথ—সুরা আসর
সুরা আসর পবিত্র কোরআনের ১০৩ তম সুরা। আয়াত সংখ্যা ৩। অনেক মুফাসসিরের মতে ছোট হলেও এ সুরায় রয়েছে পবিত্র কোরআনের সমস্ত লক্ষ্য ও জ্ঞানের সংক্ষিপ্তসার। সুরা আসরে দ্ব্যর্থহীন ভাষায় মানুষের সাফল্য ও কল্যাণের এবং তার ধ্বংস ও সর্বনাশের পথ বর্ণনা করা হয়েছে। হজরত ইমাম শাফেয়ি (রহ.) এ সুরা প্রসঙ্গে বলেন, ‘লোকরা যদি এই সুরাটি সম্পর্কে চিন্তাভাবনা করে, তাহলে এই সুরাই তাদের হেদায়েতের জন্য যথেষ্ট।’
যে মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত নয়
আসর অর্থ কাল বা সময়। এ সুরার শুরুতে আল্লাহ শপথ নিয়েছেন সময়ের। যাতে মানুষ সময়ের গুরুত্ব উপলব্ধি করে এর যথাযথ ব্যবহারে সচেতন হয়। দ্বিতীয় আয়াতে আল্লাহ বলছেন, ‘নিঃসন্দেহে সব মানুষই ক্ষতির মধ্যে রয়েছে।’ এর পরের আয়াতে আল্লাহ বাঁচার উপায় বলে দিয়েছেন, যা পালন করলে মানুষ ক্ষতিমুক্ত হবে। এক. ইমান। দুই. সৎকাজ। সৎকাজ বলতে কেবল ইবাদত-বন্দেগি, দান-খয়রাত ও জ্ঞানার্জনকে বোঝায় না। সব ধরনের ভালো কাজই সৎকাজ। তিন. পরস্পরকে সত্যের উপদেশ ও চার. পরস্পরকে ধৈর্যের উপদেশ।
এ ছাড়া তারাবির আজকের অংশে হুমাজা, ফিল, কোরাইশ, মাউন, কাউসার, কাফিরুন, নসর, লাহাব, ইখলাস, ফালাক ও নাসে কারও অগোচরে দোষ চর্চা, খোঁটা, বিদ্রুপ, দুনিয়াপ্রীতি, জাহান্নামের আজাব, হস্তিবাহিনীর গল্প, ব্যবসা, নেয়ামত, মুমিনের গুণাবলি, কাফেরের দোষক্রটি, নবীজিকে হাউজে কাউসার প্রদান, নামাজ, কোরবানি, ইমানের সঙ্গে কুফরের সংমিশ্রণ নেই, তাসবিহ, ইস্তিগফার, আবু লাহাব ও তার স্ত্রী উম্মে জামিলের পরিণতি, আল্লাহর পরিচয়, সৃষ্টির সবকিছুর অনিষ্ট থেকে আল্লাহর আশ্রয় ইত্যাদি বিষয়ের আলোচনা রয়েছে।
আল্লাহর অশেষ দয়ায় এই পর্বের মাধ্যমে শেষ হলো প্রতিদিনের তারাবির বিষয়বস্তু নিয়ে লেখা ‘আজকের তারাবি’ সিরিজ। আল্লাহ তাআলা আমাদের আমল করার তাওফিক দিন।
লেখক: ইসলামবিষয়ক গবেষক ও সাংবাদিক
এই পাহাড় দেখে মনে হয় যেন মহান কোনো শিল্পীর রংতুলি দিয়ে সযত্নে আঁকা। তবে এই রঙিন শিলার ঢেউ শুধু সৌন্দর্য নয়—ইমানদারদের কাছে এটি এক পরম সত্যের নিদর্শন, যাকে আমরা কোরআনের আলোকে আরও গভীরভাবে উপলব্ধি করতে পারি।
৫ ঘণ্টা আগেকৃতজ্ঞ বান্দা আল্লাহর কাছে প্রিয়। নিয়ামতের শুকরিয়া আদায় করলে তিনি খুশি হন। জীবন আরও সুন্দর করে সাজিয়ে দেন। পবিত্র কোরআনে এসেছে, ‘যদি তোমরা কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করো এবং ইমান আনো, তাহলে তোমাদের শাস্তি দিয়ে আল্লাহ কী করবেন? আল্লাহ (সৎ কাজের বড়ই) পুরস্কারদাতা, সর্ববিষয়ে জ্ঞাত।’ (সুরা নিসা: ১৪৭)। অন্য এক আয়াত
১৩ ঘণ্টা আগেলজ্জা মোমিনের ভূষণ বা অলংকার। বাহ্যিক সৌন্দর্যের চেয়ে তা বেশি গুরুত্বপূর্ণ। লজ্জাশীলতা কল্যাণ বয়ে আনে। হজরত ইমরান ইবনে হুসাইন (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, লজ্জা মঙ্গল বয়ে আনে। (সহিহ্ মুসলিমের অন্য বর্ণনায় আছে, লজ্জার সবটুকু মঙ্গলই মঙ্গল। (রিয়াজুস সালেহিন: ৬৮৭)
১ দিন আগেমানবতার এক মহান কাজ ক্ষুধার্তদের মুখে খাবার তুলে দেওয়া । ইসলামে একে অন্যতম শ্রেষ্ঠ কাজ বলে আখ্যা দেওয়া হয়েছে । এক ব্যক্তি রাসুলুল্লাহ ( সা . ) - কে প্রশ্ন করলেন , ‘ ইসলামে কোন কাজটি শ্রেষ্ঠ ? ” তিনি বললেন , ‘ ইসলামে সবচেয়ে ভালো কাজ হচ্ছে ক্ষুধার্তকে খাবার খাওয়ানো । ' ( সহিহ্ বুখারি : ১২ ,
২ দিন আগে