ধর্ম ও জীবন ডেস্ক

ব্যক্তিগত গোপনীয়তা রক্ষার অধিকার মানুষের অন্যতম মৌলিক অধিকার। ইসলাম এ অধিকারের স্বীকৃতি দেয়। পবিত্র কোরআনের একাধিক আয়াতে বিষয়টি আলোচিত হয়েছে। মহানবী (সা.)-এর হাদিসেও ব্যক্তিগত গোপনীয়তা লঙ্ঘনকারীদের সতর্ক করা হয়েছে। কোনো মানুষের সম্মান-সম্ভ্রমের সুরক্ষা নিশ্চিত করা ইসলামের মৌলিক উদ্দেশ্যগুলোর একটি। কোরআন-সুন্নাহর আলোকে ব্যক্তিগত গোপনীয়তা রক্ষার কয়েকটি দিক তুলে ধরা হলো—
অন্যের গোপনীয়তা লঙ্ঘন গুনাহ
ব্যক্তিগত গোপনীয়তা রক্ষার বিষয়টি বেশ গুরুত্ব দিয়ে দেখে ইসলাম। মানুষের একান্ত ব্যক্তিগত বিষয়গুলো যাতে প্রকাশ হয়ে না পড়ে, সে জন্য কোনো সংরক্ষিত এলাকায় প্রবেশের আগে অনুমতি নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এটুকুই নয়, বরং নিজের ঘরের অপ্রাপ্তবয়স্ক সন্তানদের জন্যও একান্ত ব্যক্তিগত সময়গুলোতে মা-বাবার কক্ষে প্রবেশের আগে অনুমতি নেওয়া আবশ্যক করা হয়েছে।
পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘হে মুমিনগণ, তোমাদের মালিকানাধীন দাস-দাসীরা এবং তোমাদের মধ্যে যারা প্রাপ্তবয়ষ্ক হয়নি, তারা যেন তোমাদের কক্ষে প্রবেশ করতে তিন সময়ে অনুমতি গ্রহণ করে—ফজরের নামাজের আগে, দ্বিপ্রহরে যখন তোমরা তোমাদের পোশাক খুলে রাখো এবং এশার নামাজের পর; এই তিন সময় তোমাদের গোপনীয়তার সময়।’ (সুরা নুর: ৫৮)
অনুমতি ছাড়া কারও একান্ত সময়ে তাঁর কাছে যাওয়া গুনাহের কাজ। আর কারও অজান্তে ঘরের ভেতরের ব্যক্তিগত মুহূর্ত নজরদারি করা বা উঁকি দেওয়া আরও বড় গুনাহের কাজ। হাদিসে এ ব্যাপারে কঠিন হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছে। সাহাল ইবনে সাদ (রা.) বলেন, একবার এক লোক রাসুল (সা.)-এর কোনো এক কক্ষে উঁকি দেন। তখন রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর হাতে একটা চিরুনি ছিল, যা দিয়ে তিনি মাথা আঁচড়াচ্ছিলেন। তিনি বললেন, যদি আমি জানতাম তুমি উঁকি দিচ্ছ, তাহলে এটা দিয়ে তোমার চোখ ফুঁড়ে দিতাম। তাকানোর জন্য অনুমতি নেওয়ার বিধান আবশ্যক করা হয়েছে। (বুখারি)
অনুমতি না পেলে ফিরে যাওয়া উচিত
কারও ঘরে অনুমতি ছাড়া প্রবেশ নিষিদ্ধ। পবিত্র কোরআনে এরশাদ হয়েছে, ‘হে মুমিনগণ, তোমরা নিজেদের ঘর ছাড়া অন্যের ঘরে প্রবেশ কোরো না, যতক্ষণ না তোমরা অনুমতি নেবে এবং গৃহবাসীদের সালাম দেবে। এটাই তোমাদের জন্য উত্তম, যাতে তোমরা উপদেশ গ্রহণ করো।’ (সুরা নুর: ২৭)
আর কারও দরজায় টোকা দিয়ে তিনবার অনুমতি চাওয়ার পরও যদি সে সাড়া না দেয়, তাহলে ফিরে যাওয়া উচিত। আবু সাইদ খুদরি (রা.) থেকে বর্ণিত, আবু মুসা (রা.) উমর (রা.)-এর কক্ষে প্রবেশের জন্য তিনবার অনুমতি চেয়েছিলেন এবং তিনি কোনো অনুমতি পাননি। উমর (রা.) তাঁকে পরে জিজ্ঞেস করেন, ‘তুমি ফিরে গেলে কেন?’ তিনি জবাব দেন, ‘আমি আপনার কাছে প্রবেশের জন্য তিনবার অনুমতি চেয়েছিলাম—যেমনটা রাসুল (সা.) আমাদের শিখিয়েছিলেন, কিন্তু আপনি কোনো অনুমতি দেননি, তাই আমি প্রবেশ করিনি।’ (ইবনে মাজাহ)
অন্য হাদিসে আবদুল্লাহ ইবনে বুশর (রা.) বলেন, ‘যখন কারও দরজায় কেউ এসে দাঁড়াবে এবং অনুমতি চাইবে, তখন একেবারে দরজার সোজাসুজি দাঁড়াবে না, বরং একটু ডান পাশে বা বাঁ পাশে সরে দাঁড়াবে। যদি অনুমতি দেওয়া হয়, তবে প্রবেশ করবে, অন্যথায় ফিরে যাবে।’ (আল-আদাবুল মুফরাদ)
নিজের গোপনীয়তা প্রকাশ করাও গুনাহ
দাম্পত্যজীবনে স্বামী-স্ত্রীর একান্ত মুহূর্তগুলো গোপন রাখা আবশ্যক। এ বিষয়গুলো মানুষকে বলে বেড়ানোর অনুমতি দেয় না ইসলাম। মহানবী (সা.) বলেন, ‘নিশ্চয়ই কিয়ামতের দিন মানুষের মধ্যে আল্লাহর কাছে সর্বাধিক নিকৃষ্ট সেই পুরুষ, যে তার স্ত্রীর সঙ্গে একান্তে মিলিত হয় এবং স্ত্রী স্বামীর সঙ্গে মিলিত হয়, এরপর সে স্ত্রীর রহস্য প্রকাশ করে দেয়।’ (মুসলিম)
একইভাবে গোপন পাপের কথা মানুষকে বলে বেড়ানোও বড় গুনাহের কাজ। হাদিসে এসেছে, আবু হুরায়রা (রা.) বলেন, আমি রাসুলুল্লাহ (সা.)-কে বলতে শুনেছি। তিনি বলেছেন, ‘আমার উম্মতের সবাইকে ক্ষমা করে দেওয়া হবে; তবে ওই সব লোককে ক্ষমা করা হবে না, যারা পাপ করার পর তা অন্যের কাছে প্রকাশ করে দেয়। অন্যের কাছে প্রকাশ করার একটি দিক হলো, কোনো ব্যক্তি রাতের আঁধারে কোনো গুনাহ করল এবং মহান আল্লাহ ওই ব্যক্তির গুনাহ গোপন রাখলেন। কিন্তু ভোর হওয়ার পর সে নিজেই অন্য মানুষের কাছে বলল, হে অমুক, জানো, রাতে আমি এ কাজ করেছি। সারা রাত মহান আল্লাহ ওই ব্যক্তির পাপটি গোপন রাখলেন আর ভোর হওয়ামাত্রই আল্লাহর ঢেকে রাখা পাপের বিষয়টি সেই ব্যক্তি নিজেই প্রকাশ করে দিল!’ (বুখারি)
অন্যের দোষ গোপন করার ফজিলত
অন্যের কোনো দোষ জানা থাকলেও তা প্রকাশ না করাই ইসলামের শিক্ষা। বিশেষ করে ওই ব্যক্তির অনুপস্থিতিতে তাঁর দোষচর্চা ইসলামে নিষিদ্ধ। এটিকে ইসলামের পরিভাষায় গিবত বলা হয়। পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘...তোমাদের কেউ যেন কারও পশ্চাতে নিন্দা না করে। তোমাদের কেউ কি নিজের মৃত ভাইয়ের গোশত খেতে চাইবে? বস্তুত তোমরা একে ঘৃণাই করো।’ (সুরা হুজুরাত: ১২) মৃত ভাইয়ের গোশত খাওয়ার মর্ম সম্পর্কে আবু হুরায়রা (রা.) রাসুল (সা.)-এর কাছে জানতে চাইলেন, ‘এটা কীভাবে?’ তিনি বললেন, ‘কেউ ব্যভিচার করার পর তওবা করলে গুনাহ মাফ হয়ে যায়। কিন্তু যে গিবত করে তার গুনাহ প্রতিপক্ষ মাফ না করা পর্যন্ত মাফ হয় না।’ (তিরমিজি)
অন্যের দোষ প্রকাশ না করার ফজিলত সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘যে ব্যক্তি কোনো মুসলমানের দোষ গোপন করে, আল্লাহ দুনিয়া ও আখিরাতে তার দোষ গোপন করবেন।’ (ইবনে মাজাহ)
অন্যের দোষ অনুসন্ধান করা নিষেধ
কারও দোষ অনুসন্ধান করা এবং অনুমান করে খারাপ ধারণা করা ইসলামে নিষিদ্ধ। কারও পেছনে গুপ্তচরবৃত্তি করাও নিষিদ্ধ। পবিত্র কোরআনে এরশাদ হয়েছে, ‘হে মুমিনগণ, তোমরা বেশির ভাগ অনুমান থেকে দূরে থাকো। কেননা, অনুমান কোনো কোনো ক্ষেত্রে পাপ। তোমরা একে অপরের গোপনীয় বিষয় সন্ধান কোরো না এবং একে অপরের পেছনে নিন্দা কোরো না।’ (সুরা হুজুরাত: ১২)
মহানবী (সা.) সাহাবিদের উদ্দেশে বলেন, ‘তোমরা যদি মানুষের গোপনীয় বিষয় উদ্ঘাটনে লেগে যাও, তবে তোমরা তাকে ধ্বংস করে দেবে কিংবা অন্তত ধ্বংসের প্রান্তে পৌঁছে দেবে।’ (আবু দাউদ) অন্য হাদিসে তিনি বলেন, ‘তোমরা অবশ্যই ধারণা থেকে বেঁচে থাক। কেননা, ধারণা সবচেয়ে বড় মিথ্যা কথা। কারো দোষ খুঁজে বেড়িও না, গোয়েন্দাগিরিতে লিপ্ত হয়ো না এবং একে অন্যকে ধোঁকা দিয়ো না। …’ (বুখারি)
বৃহত্তর স্বার্থে গোয়েন্দাগিরির অনুমতি
মানুষকে ক্ষতির হাত থেকে বাঁচাতে এবং জাতীয় স্বার্থে কখনো-সখনো ব্যক্তিবিশেষের ব্যক্তিগত বিষয় অনুসন্ধানের প্রয়োজন পড়ে। ইসলামি আইন ও বিচারব্যবস্থার বিধান অনুসারে কারও ব্যক্তিগত তথ্য প্রকাশ করা যাবে। তবে তা যথাযথ কর্তৃপক্ষ বা সরাসরি বিষয়টির সঙ্গে জড়িতদের কাছেই হতে হবে। সাধারণ সমাজে তা প্রচার করা যাবে না। এরশাদ হয়েছে, ‘যখন শান্তি বা শঙ্কার কোনো সংবাদ তাদের কাছে আসে, তখন তারা তা প্রচার করে থাকে। যদি তারা তা রাসুল বা তাদের মধ্যে যারা ক্ষমতার অধিকারী তাদের গোচরে আনত, তবে তাদের মধ্যে যারা তথ্য অনুসন্ধান করে, তারা তার যথার্থতা নির্ণয় করতে পারত। …’ (সুরা নিসা: ৮৩)

ব্যক্তিগত গোপনীয়তা রক্ষার অধিকার মানুষের অন্যতম মৌলিক অধিকার। ইসলাম এ অধিকারের স্বীকৃতি দেয়। পবিত্র কোরআনের একাধিক আয়াতে বিষয়টি আলোচিত হয়েছে। মহানবী (সা.)-এর হাদিসেও ব্যক্তিগত গোপনীয়তা লঙ্ঘনকারীদের সতর্ক করা হয়েছে। কোনো মানুষের সম্মান-সম্ভ্রমের সুরক্ষা নিশ্চিত করা ইসলামের মৌলিক উদ্দেশ্যগুলোর একটি। কোরআন-সুন্নাহর আলোকে ব্যক্তিগত গোপনীয়তা রক্ষার কয়েকটি দিক তুলে ধরা হলো—
অন্যের গোপনীয়তা লঙ্ঘন গুনাহ
ব্যক্তিগত গোপনীয়তা রক্ষার বিষয়টি বেশ গুরুত্ব দিয়ে দেখে ইসলাম। মানুষের একান্ত ব্যক্তিগত বিষয়গুলো যাতে প্রকাশ হয়ে না পড়ে, সে জন্য কোনো সংরক্ষিত এলাকায় প্রবেশের আগে অনুমতি নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এটুকুই নয়, বরং নিজের ঘরের অপ্রাপ্তবয়স্ক সন্তানদের জন্যও একান্ত ব্যক্তিগত সময়গুলোতে মা-বাবার কক্ষে প্রবেশের আগে অনুমতি নেওয়া আবশ্যক করা হয়েছে।
পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘হে মুমিনগণ, তোমাদের মালিকানাধীন দাস-দাসীরা এবং তোমাদের মধ্যে যারা প্রাপ্তবয়ষ্ক হয়নি, তারা যেন তোমাদের কক্ষে প্রবেশ করতে তিন সময়ে অনুমতি গ্রহণ করে—ফজরের নামাজের আগে, দ্বিপ্রহরে যখন তোমরা তোমাদের পোশাক খুলে রাখো এবং এশার নামাজের পর; এই তিন সময় তোমাদের গোপনীয়তার সময়।’ (সুরা নুর: ৫৮)
অনুমতি ছাড়া কারও একান্ত সময়ে তাঁর কাছে যাওয়া গুনাহের কাজ। আর কারও অজান্তে ঘরের ভেতরের ব্যক্তিগত মুহূর্ত নজরদারি করা বা উঁকি দেওয়া আরও বড় গুনাহের কাজ। হাদিসে এ ব্যাপারে কঠিন হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছে। সাহাল ইবনে সাদ (রা.) বলেন, একবার এক লোক রাসুল (সা.)-এর কোনো এক কক্ষে উঁকি দেন। তখন রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর হাতে একটা চিরুনি ছিল, যা দিয়ে তিনি মাথা আঁচড়াচ্ছিলেন। তিনি বললেন, যদি আমি জানতাম তুমি উঁকি দিচ্ছ, তাহলে এটা দিয়ে তোমার চোখ ফুঁড়ে দিতাম। তাকানোর জন্য অনুমতি নেওয়ার বিধান আবশ্যক করা হয়েছে। (বুখারি)
অনুমতি না পেলে ফিরে যাওয়া উচিত
কারও ঘরে অনুমতি ছাড়া প্রবেশ নিষিদ্ধ। পবিত্র কোরআনে এরশাদ হয়েছে, ‘হে মুমিনগণ, তোমরা নিজেদের ঘর ছাড়া অন্যের ঘরে প্রবেশ কোরো না, যতক্ষণ না তোমরা অনুমতি নেবে এবং গৃহবাসীদের সালাম দেবে। এটাই তোমাদের জন্য উত্তম, যাতে তোমরা উপদেশ গ্রহণ করো।’ (সুরা নুর: ২৭)
আর কারও দরজায় টোকা দিয়ে তিনবার অনুমতি চাওয়ার পরও যদি সে সাড়া না দেয়, তাহলে ফিরে যাওয়া উচিত। আবু সাইদ খুদরি (রা.) থেকে বর্ণিত, আবু মুসা (রা.) উমর (রা.)-এর কক্ষে প্রবেশের জন্য তিনবার অনুমতি চেয়েছিলেন এবং তিনি কোনো অনুমতি পাননি। উমর (রা.) তাঁকে পরে জিজ্ঞেস করেন, ‘তুমি ফিরে গেলে কেন?’ তিনি জবাব দেন, ‘আমি আপনার কাছে প্রবেশের জন্য তিনবার অনুমতি চেয়েছিলাম—যেমনটা রাসুল (সা.) আমাদের শিখিয়েছিলেন, কিন্তু আপনি কোনো অনুমতি দেননি, তাই আমি প্রবেশ করিনি।’ (ইবনে মাজাহ)
অন্য হাদিসে আবদুল্লাহ ইবনে বুশর (রা.) বলেন, ‘যখন কারও দরজায় কেউ এসে দাঁড়াবে এবং অনুমতি চাইবে, তখন একেবারে দরজার সোজাসুজি দাঁড়াবে না, বরং একটু ডান পাশে বা বাঁ পাশে সরে দাঁড়াবে। যদি অনুমতি দেওয়া হয়, তবে প্রবেশ করবে, অন্যথায় ফিরে যাবে।’ (আল-আদাবুল মুফরাদ)
নিজের গোপনীয়তা প্রকাশ করাও গুনাহ
দাম্পত্যজীবনে স্বামী-স্ত্রীর একান্ত মুহূর্তগুলো গোপন রাখা আবশ্যক। এ বিষয়গুলো মানুষকে বলে বেড়ানোর অনুমতি দেয় না ইসলাম। মহানবী (সা.) বলেন, ‘নিশ্চয়ই কিয়ামতের দিন মানুষের মধ্যে আল্লাহর কাছে সর্বাধিক নিকৃষ্ট সেই পুরুষ, যে তার স্ত্রীর সঙ্গে একান্তে মিলিত হয় এবং স্ত্রী স্বামীর সঙ্গে মিলিত হয়, এরপর সে স্ত্রীর রহস্য প্রকাশ করে দেয়।’ (মুসলিম)
একইভাবে গোপন পাপের কথা মানুষকে বলে বেড়ানোও বড় গুনাহের কাজ। হাদিসে এসেছে, আবু হুরায়রা (রা.) বলেন, আমি রাসুলুল্লাহ (সা.)-কে বলতে শুনেছি। তিনি বলেছেন, ‘আমার উম্মতের সবাইকে ক্ষমা করে দেওয়া হবে; তবে ওই সব লোককে ক্ষমা করা হবে না, যারা পাপ করার পর তা অন্যের কাছে প্রকাশ করে দেয়। অন্যের কাছে প্রকাশ করার একটি দিক হলো, কোনো ব্যক্তি রাতের আঁধারে কোনো গুনাহ করল এবং মহান আল্লাহ ওই ব্যক্তির গুনাহ গোপন রাখলেন। কিন্তু ভোর হওয়ার পর সে নিজেই অন্য মানুষের কাছে বলল, হে অমুক, জানো, রাতে আমি এ কাজ করেছি। সারা রাত মহান আল্লাহ ওই ব্যক্তির পাপটি গোপন রাখলেন আর ভোর হওয়ামাত্রই আল্লাহর ঢেকে রাখা পাপের বিষয়টি সেই ব্যক্তি নিজেই প্রকাশ করে দিল!’ (বুখারি)
অন্যের দোষ গোপন করার ফজিলত
অন্যের কোনো দোষ জানা থাকলেও তা প্রকাশ না করাই ইসলামের শিক্ষা। বিশেষ করে ওই ব্যক্তির অনুপস্থিতিতে তাঁর দোষচর্চা ইসলামে নিষিদ্ধ। এটিকে ইসলামের পরিভাষায় গিবত বলা হয়। পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘...তোমাদের কেউ যেন কারও পশ্চাতে নিন্দা না করে। তোমাদের কেউ কি নিজের মৃত ভাইয়ের গোশত খেতে চাইবে? বস্তুত তোমরা একে ঘৃণাই করো।’ (সুরা হুজুরাত: ১২) মৃত ভাইয়ের গোশত খাওয়ার মর্ম সম্পর্কে আবু হুরায়রা (রা.) রাসুল (সা.)-এর কাছে জানতে চাইলেন, ‘এটা কীভাবে?’ তিনি বললেন, ‘কেউ ব্যভিচার করার পর তওবা করলে গুনাহ মাফ হয়ে যায়। কিন্তু যে গিবত করে তার গুনাহ প্রতিপক্ষ মাফ না করা পর্যন্ত মাফ হয় না।’ (তিরমিজি)
অন্যের দোষ প্রকাশ না করার ফজিলত সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘যে ব্যক্তি কোনো মুসলমানের দোষ গোপন করে, আল্লাহ দুনিয়া ও আখিরাতে তার দোষ গোপন করবেন।’ (ইবনে মাজাহ)
অন্যের দোষ অনুসন্ধান করা নিষেধ
কারও দোষ অনুসন্ধান করা এবং অনুমান করে খারাপ ধারণা করা ইসলামে নিষিদ্ধ। কারও পেছনে গুপ্তচরবৃত্তি করাও নিষিদ্ধ। পবিত্র কোরআনে এরশাদ হয়েছে, ‘হে মুমিনগণ, তোমরা বেশির ভাগ অনুমান থেকে দূরে থাকো। কেননা, অনুমান কোনো কোনো ক্ষেত্রে পাপ। তোমরা একে অপরের গোপনীয় বিষয় সন্ধান কোরো না এবং একে অপরের পেছনে নিন্দা কোরো না।’ (সুরা হুজুরাত: ১২)
মহানবী (সা.) সাহাবিদের উদ্দেশে বলেন, ‘তোমরা যদি মানুষের গোপনীয় বিষয় উদ্ঘাটনে লেগে যাও, তবে তোমরা তাকে ধ্বংস করে দেবে কিংবা অন্তত ধ্বংসের প্রান্তে পৌঁছে দেবে।’ (আবু দাউদ) অন্য হাদিসে তিনি বলেন, ‘তোমরা অবশ্যই ধারণা থেকে বেঁচে থাক। কেননা, ধারণা সবচেয়ে বড় মিথ্যা কথা। কারো দোষ খুঁজে বেড়িও না, গোয়েন্দাগিরিতে লিপ্ত হয়ো না এবং একে অন্যকে ধোঁকা দিয়ো না। …’ (বুখারি)
বৃহত্তর স্বার্থে গোয়েন্দাগিরির অনুমতি
মানুষকে ক্ষতির হাত থেকে বাঁচাতে এবং জাতীয় স্বার্থে কখনো-সখনো ব্যক্তিবিশেষের ব্যক্তিগত বিষয় অনুসন্ধানের প্রয়োজন পড়ে। ইসলামি আইন ও বিচারব্যবস্থার বিধান অনুসারে কারও ব্যক্তিগত তথ্য প্রকাশ করা যাবে। তবে তা যথাযথ কর্তৃপক্ষ বা সরাসরি বিষয়টির সঙ্গে জড়িতদের কাছেই হতে হবে। সাধারণ সমাজে তা প্রচার করা যাবে না। এরশাদ হয়েছে, ‘যখন শান্তি বা শঙ্কার কোনো সংবাদ তাদের কাছে আসে, তখন তারা তা প্রচার করে থাকে। যদি তারা তা রাসুল বা তাদের মধ্যে যারা ক্ষমতার অধিকারী তাদের গোচরে আনত, তবে তাদের মধ্যে যারা তথ্য অনুসন্ধান করে, তারা তার যথার্থতা নির্ণয় করতে পারত। …’ (সুরা নিসা: ৮৩)

আল্লাহর দেওয়া জীবন অত্যন্ত মূল্যবান। যে সম্পদ যত বেশি মূল্যবান, তার ব্যবহার-প্রক্রিয়াও তত বেশি সুপরিকল্পিত হওয়া প্রয়োজন। সময় বহমান স্রোতের মতো, যাকে কখনো বেঁধে রাখা যায় না। তাই জীবনের এই মূল্যবান সময়গুলো অবহেলায় নষ্ট করা কোনো বুদ্ধিমানের কাজ নয়।
৩ ঘণ্টা আগে
জানাজার স্থানে যদি পর্দার খেলাপ কিংবা নারীর নিরাপত্তা বিঘ্নিত হওয়ার আশঙ্কা থাকে, তবে সেখানে উপস্থিত হওয়ার অনুমতি ইসলাম দেয় না। জানাজার নামাজ যেহেতু নারীদের জন্য আবশ্যক নয়, তাই এতে অংশ নিতে গিয়ে কোনো ফরজ বিধান লঙ্ঘন করা বিধানসম্মত নয়।
৮ ঘণ্টা আগে
জানাজার নামাজ ফরজে কিফায়া। অর্থাৎ কোনো মুসলমান মারা গেলে মহল্লার অল্পসংখ্যক লোক জানাজার নামাজ আদায় করলে বাকিরা দায়িত্বমুক্ত হয়ে যাবে। এ ছাড়া একজন মুসলমানের ওপর অন্য মুসলমানের পাঁচটি হক আছে। এর মধ্যে মৃত ব্যক্তির জানাজায় অংশ নেওয়াও একটি হক।
১০ ঘণ্টা আগে
মৃত্যুর সঙ্গে সঙ্গে মানুষের আমলের দুয়ার বন্ধ হয়ে যায়। এই অবস্থায় বিলাপ কিংবা উচ্চ স্বরে কান্নাকাটি মৃত ব্যক্তির কোনো উপকারে আসে না; বরং তাঁর জন্য মাগফিরাতের দোয়া এবং তাঁর ভালো গুণগুলো স্মরণ করাই প্রকৃত কল্যাণকর।
১২ ঘণ্টা আগেশায়খ আহমাদুল্লাহ

আল্লাহর দেওয়া জীবন অত্যন্ত মূল্যবান। যে সম্পদ যত বেশি মূল্যবান, তার ব্যবহার-প্রক্রিয়াও তত বেশি সুপরিকল্পিত হওয়া প্রয়োজন। সময় বহমান স্রোতের মতো, যাকে কখনো বেঁধে রাখা যায় না। তাই জীবনের এই মূল্যবান সময়গুলো অবহেলায় নষ্ট করা কোনো বুদ্ধিমানের কাজ নয়। ইসলামি শরিয়তের নির্দেশনা হলো, মানুষের জীবন ও সময় আল্লাহর সন্তুষ্টির পথেই ব্যয় হওয়া উচিত। পরিতাপের বিষয় হলো, আমরা আমাদের এই ক্ষণস্থায়ী জীবনের সময়গুলোকে এমন সব আচার-অনুষ্ঠান ও বিজাতীয় উৎসবে খরচ করছি, যার ভেতর না আছে দুনিয়ার কল্যাণ, না আছে পরকালের মুক্তি। তেমনই একটি অনর্থক ও শরিয়ত বিবর্জিত উৎসবের নাম ‘থার্টি ফার্স্ট নাইট’।
থার্টি ফার্স্ট নাইটের গোড়ার ইতিহাস বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, এর সঙ্গে পৌত্তলিকতা ও কুসংস্কারের নিবিড় যোগাযোগ রয়েছে। প্রাচীন পারস্যের সম্রাট জামশিদ খ্রিষ্টপূর্ব ৮০০ সালে এবং পরবর্তী সময়ে রোমান সম্রাট জুলিয়াস সিজার খ্রিষ্টপূর্ব ৪৬ সালে নববর্ষের প্রচলন করেন। মূলত এটি ইংরেজি নববর্ষ নয়, খ্রিষ্টীয় বা গ্রেগরিয়ান নববর্ষ, যা পোপ গ্রেগরির নামানুসারে প্রবর্তিত। প্রাচীনকালে পারস্যের প্রকৃতি পূজারিরা বিশ্বাস করত, বছরের প্রথম দিন আনন্দ-ফুর্তিতে কাটালে সারা বছর ভালো থাকা যাবে। সেই কুসংস্কার আজও আধুনিক সমাজের তথাকথিত বিজ্ঞানমনস্ক মানুষের মধ্যে গেঁথে আছে। অথচ বছরের প্রথম দিন উল্লাস করলে সারা বছর ভালো যাবে—এর চেয়ে অযৌক্তিক ও হাস্যকর বিশ্বাস আর কী হতে পারে!
ইসলামি দৃষ্টিভঙ্গিতে কোনো উৎসব পালন করতে হলে কোরআন-সুন্নাহ ও সাহাবায়ে কেরামের আমলের প্রামাণ্যতা প্রয়োজন। গবেষণায় দেখা যায়, নতুন বছরকে স্বাগত জানানোর সপক্ষে ইসলামে কোনো দলিল নেই। রাসুলুল্লাহ (সা.) স্পষ্টভাবে বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি যে জাতির সঙ্গে সাদৃশ্য রাখবে, সে তাদেরই অন্তর্ভুক্ত হবে।’ (সুনানে আবু দাউদ)। কোনো জাগতিক কাজ তখনই বৈধ হয়, যখন তা শরিয়তের বিধান লঙ্ঘন করে না এবং সৃষ্টির হক নষ্ট করে না। কিন্তু থার্টি ফার্স্ট নাইট উদ্যাপনে এই দুটি শর্তই চরমভাবে লঙ্ঘিত হয়। এটি একদিকে যেমন বিজাতীয় সংস্কৃতির অন্ধ অনুকরণ, অন্যদিকে এর মাধ্যমে নাগরিক শান্তি ও মানুষের অধিকার ব্যাপকভাবে ক্ষুণ্ন করা হয়।
এই উৎসবের সামাজিক ও নৈতিক ক্ষতির দিকগুলো অত্যন্ত ভয়াবহ। প্রথমত, এতে বিপুল অর্থের অপচয় হয়। যে রাতে আতশবাজি, ফানুস ও ডিজে পার্টির নামে কোটি কোটি টাকা ব্যয় করা হয়, সেই হাড়কাঁপানো শীতের রাতেই দেশের লাখো গরিব মানুষ এক টুকরো গরম কাপড়ের অভাবে কষ্ট পায়। অপচয়কারীকে পবিত্র কোরআনে শয়তানের ভাই হিসেবে আখ্যা দেওয়া হয়েছে। দ্বিতীয়ত বিকট শব্দে আতশবাজি ও সাউন্ডবক্স ব্যবহারের ফলে জনস্বাস্থ্যের বিপর্যয় ঘটে। শহরের ফ্ল্যাটে থাকা বৃদ্ধ, শিশু ও অসুস্থ রোগীরা এই শব্দদূষণে চরম স্বাস্থ্যঝুঁকির মুখে পড়ে। এমনকি পটকার শব্দে শিশুর মৃত্যু কিংবা ফানুসের আগুনে দগ্ধ হওয়ার মতো মর্মান্তিক ঘটনাও প্রতিবছর আমাদের দেখতে হয়।
তদুপরি এই বিজাতীয় সংস্কৃতি আমাদের তরুণ প্রজন্মকে এক ভোগবাদী ও নৈতিকতাহীন পথে ঠেলে দিচ্ছে। মাদক, গান-বাজনা এবং নারী-পুরুষের অবাধ মেলামেশার মাধ্যমে অশ্লীলতার বিস্তার ঘটছে, যা ইসলামের সুমহান দর্শনের সম্পূর্ণ পরিপন্থী। ইসলাম আমাদের ত্যাগের উৎসব শিখিয়েছে, যেখানে ভোগের চেয়ে অপরের কল্যাণ ও গরিবের হক বেশি গুরুত্ব পায়। অথচ থার্টি ফার্স্ট নাইটের মতো উৎসবে আত্মকেন্দ্রিক ভোগবাদ ছাড়া আর কিছুই নেই। আমাদের নিজস্ব সমৃদ্ধ সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য থাকতে কেন আমরা অন্যের দেউলিয়া সংস্কৃতির দ্বারস্থ হচ্ছি, সেটি আজ এক বড় প্রশ্ন।
প্রকৃতপক্ষে নতুন বছর আসা মানেই নতুনের আগমন নয়, বরং জীবন থেকে একটি বছরের পাতা ঝরে যাওয়া। জীবনের বরফ প্রতিনিয়ত গলে যাচ্ছে। আমরা কি একবারও ভাবি, কবরের দিকে আমাদের পা আরও এক ধাপ এগিয়ে গেল! একজন ফাঁসির আসামির কাছে যেমন প্রতিটি সূর্যোদয় মৃত্যুর নিকটবর্তী হওয়ার সংকেত, আমাদের জীবনও ঠিক তেমনি ফুরিয়ে আসছে। তাই থার্টি ফার্স্ট নাইটের রাতে নেশা ও উন্মাদনায় মত্ত না হয়ে বিগত জীবনের গুনাহের জন্য তওবা করা এবং আগামীর জন্য নেক পরিকল্পনা করাই বুদ্ধিমানের কাজ।
সন্তান, পরিবার ও সমাজকে এই ভ্রান্ত সংস্কৃতি থেকে রক্ষা করা আমাদের ইমানি ও নাগরিক দায়িত্ব। আল্লাহ তাআলা আমাদের বিজাতীয় সংস্কৃতি পরিহার করে ইসলামি জীবনাদর্শ গ্রহণ করার তৌফিক দান করুন।
জুমার মিম্বর থেকে গ্রন্থনা: সাব্বির জাদিদ

আল্লাহর দেওয়া জীবন অত্যন্ত মূল্যবান। যে সম্পদ যত বেশি মূল্যবান, তার ব্যবহার-প্রক্রিয়াও তত বেশি সুপরিকল্পিত হওয়া প্রয়োজন। সময় বহমান স্রোতের মতো, যাকে কখনো বেঁধে রাখা যায় না। তাই জীবনের এই মূল্যবান সময়গুলো অবহেলায় নষ্ট করা কোনো বুদ্ধিমানের কাজ নয়। ইসলামি শরিয়তের নির্দেশনা হলো, মানুষের জীবন ও সময় আল্লাহর সন্তুষ্টির পথেই ব্যয় হওয়া উচিত। পরিতাপের বিষয় হলো, আমরা আমাদের এই ক্ষণস্থায়ী জীবনের সময়গুলোকে এমন সব আচার-অনুষ্ঠান ও বিজাতীয় উৎসবে খরচ করছি, যার ভেতর না আছে দুনিয়ার কল্যাণ, না আছে পরকালের মুক্তি। তেমনই একটি অনর্থক ও শরিয়ত বিবর্জিত উৎসবের নাম ‘থার্টি ফার্স্ট নাইট’।
থার্টি ফার্স্ট নাইটের গোড়ার ইতিহাস বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, এর সঙ্গে পৌত্তলিকতা ও কুসংস্কারের নিবিড় যোগাযোগ রয়েছে। প্রাচীন পারস্যের সম্রাট জামশিদ খ্রিষ্টপূর্ব ৮০০ সালে এবং পরবর্তী সময়ে রোমান সম্রাট জুলিয়াস সিজার খ্রিষ্টপূর্ব ৪৬ সালে নববর্ষের প্রচলন করেন। মূলত এটি ইংরেজি নববর্ষ নয়, খ্রিষ্টীয় বা গ্রেগরিয়ান নববর্ষ, যা পোপ গ্রেগরির নামানুসারে প্রবর্তিত। প্রাচীনকালে পারস্যের প্রকৃতি পূজারিরা বিশ্বাস করত, বছরের প্রথম দিন আনন্দ-ফুর্তিতে কাটালে সারা বছর ভালো থাকা যাবে। সেই কুসংস্কার আজও আধুনিক সমাজের তথাকথিত বিজ্ঞানমনস্ক মানুষের মধ্যে গেঁথে আছে। অথচ বছরের প্রথম দিন উল্লাস করলে সারা বছর ভালো যাবে—এর চেয়ে অযৌক্তিক ও হাস্যকর বিশ্বাস আর কী হতে পারে!
ইসলামি দৃষ্টিভঙ্গিতে কোনো উৎসব পালন করতে হলে কোরআন-সুন্নাহ ও সাহাবায়ে কেরামের আমলের প্রামাণ্যতা প্রয়োজন। গবেষণায় দেখা যায়, নতুন বছরকে স্বাগত জানানোর সপক্ষে ইসলামে কোনো দলিল নেই। রাসুলুল্লাহ (সা.) স্পষ্টভাবে বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি যে জাতির সঙ্গে সাদৃশ্য রাখবে, সে তাদেরই অন্তর্ভুক্ত হবে।’ (সুনানে আবু দাউদ)। কোনো জাগতিক কাজ তখনই বৈধ হয়, যখন তা শরিয়তের বিধান লঙ্ঘন করে না এবং সৃষ্টির হক নষ্ট করে না। কিন্তু থার্টি ফার্স্ট নাইট উদ্যাপনে এই দুটি শর্তই চরমভাবে লঙ্ঘিত হয়। এটি একদিকে যেমন বিজাতীয় সংস্কৃতির অন্ধ অনুকরণ, অন্যদিকে এর মাধ্যমে নাগরিক শান্তি ও মানুষের অধিকার ব্যাপকভাবে ক্ষুণ্ন করা হয়।
এই উৎসবের সামাজিক ও নৈতিক ক্ষতির দিকগুলো অত্যন্ত ভয়াবহ। প্রথমত, এতে বিপুল অর্থের অপচয় হয়। যে রাতে আতশবাজি, ফানুস ও ডিজে পার্টির নামে কোটি কোটি টাকা ব্যয় করা হয়, সেই হাড়কাঁপানো শীতের রাতেই দেশের লাখো গরিব মানুষ এক টুকরো গরম কাপড়ের অভাবে কষ্ট পায়। অপচয়কারীকে পবিত্র কোরআনে শয়তানের ভাই হিসেবে আখ্যা দেওয়া হয়েছে। দ্বিতীয়ত বিকট শব্দে আতশবাজি ও সাউন্ডবক্স ব্যবহারের ফলে জনস্বাস্থ্যের বিপর্যয় ঘটে। শহরের ফ্ল্যাটে থাকা বৃদ্ধ, শিশু ও অসুস্থ রোগীরা এই শব্দদূষণে চরম স্বাস্থ্যঝুঁকির মুখে পড়ে। এমনকি পটকার শব্দে শিশুর মৃত্যু কিংবা ফানুসের আগুনে দগ্ধ হওয়ার মতো মর্মান্তিক ঘটনাও প্রতিবছর আমাদের দেখতে হয়।
তদুপরি এই বিজাতীয় সংস্কৃতি আমাদের তরুণ প্রজন্মকে এক ভোগবাদী ও নৈতিকতাহীন পথে ঠেলে দিচ্ছে। মাদক, গান-বাজনা এবং নারী-পুরুষের অবাধ মেলামেশার মাধ্যমে অশ্লীলতার বিস্তার ঘটছে, যা ইসলামের সুমহান দর্শনের সম্পূর্ণ পরিপন্থী। ইসলাম আমাদের ত্যাগের উৎসব শিখিয়েছে, যেখানে ভোগের চেয়ে অপরের কল্যাণ ও গরিবের হক বেশি গুরুত্ব পায়। অথচ থার্টি ফার্স্ট নাইটের মতো উৎসবে আত্মকেন্দ্রিক ভোগবাদ ছাড়া আর কিছুই নেই। আমাদের নিজস্ব সমৃদ্ধ সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য থাকতে কেন আমরা অন্যের দেউলিয়া সংস্কৃতির দ্বারস্থ হচ্ছি, সেটি আজ এক বড় প্রশ্ন।
প্রকৃতপক্ষে নতুন বছর আসা মানেই নতুনের আগমন নয়, বরং জীবন থেকে একটি বছরের পাতা ঝরে যাওয়া। জীবনের বরফ প্রতিনিয়ত গলে যাচ্ছে। আমরা কি একবারও ভাবি, কবরের দিকে আমাদের পা আরও এক ধাপ এগিয়ে গেল! একজন ফাঁসির আসামির কাছে যেমন প্রতিটি সূর্যোদয় মৃত্যুর নিকটবর্তী হওয়ার সংকেত, আমাদের জীবনও ঠিক তেমনি ফুরিয়ে আসছে। তাই থার্টি ফার্স্ট নাইটের রাতে নেশা ও উন্মাদনায় মত্ত না হয়ে বিগত জীবনের গুনাহের জন্য তওবা করা এবং আগামীর জন্য নেক পরিকল্পনা করাই বুদ্ধিমানের কাজ।
সন্তান, পরিবার ও সমাজকে এই ভ্রান্ত সংস্কৃতি থেকে রক্ষা করা আমাদের ইমানি ও নাগরিক দায়িত্ব। আল্লাহ তাআলা আমাদের বিজাতীয় সংস্কৃতি পরিহার করে ইসলামি জীবনাদর্শ গ্রহণ করার তৌফিক দান করুন।
জুমার মিম্বর থেকে গ্রন্থনা: সাব্বির জাদিদ

ব্যক্তিগত গোপনীয়তা রক্ষার অধিকার মানুষের অন্যতম মৌলিক অধিকার। ইসলাম এই অধিকারের স্বীকৃতি দেয়। পবিত্র কোরআনের একাধিক আয়াতে বিষয়টি আলোচিত হয়েছে। মহানবী (সা.)-এর হাদিসেও ব্যক্তিগত গোপনীয়তা লঙ্ঘনকারীদের সতর্ক করা হয়েছে। একজন মানুষের সম্মান-সম্ভ্রমের সুরক্ষা নিশ্চিত করা ইসলামের মৌলিক উদ্দেশ্যগুলোর একটি।
১০ ডিসেম্বর ২০২২
জানাজার স্থানে যদি পর্দার খেলাপ কিংবা নারীর নিরাপত্তা বিঘ্নিত হওয়ার আশঙ্কা থাকে, তবে সেখানে উপস্থিত হওয়ার অনুমতি ইসলাম দেয় না। জানাজার নামাজ যেহেতু নারীদের জন্য আবশ্যক নয়, তাই এতে অংশ নিতে গিয়ে কোনো ফরজ বিধান লঙ্ঘন করা বিধানসম্মত নয়।
৮ ঘণ্টা আগে
জানাজার নামাজ ফরজে কিফায়া। অর্থাৎ কোনো মুসলমান মারা গেলে মহল্লার অল্পসংখ্যক লোক জানাজার নামাজ আদায় করলে বাকিরা দায়িত্বমুক্ত হয়ে যাবে। এ ছাড়া একজন মুসলমানের ওপর অন্য মুসলমানের পাঁচটি হক আছে। এর মধ্যে মৃত ব্যক্তির জানাজায় অংশ নেওয়াও একটি হক।
১০ ঘণ্টা আগে
মৃত্যুর সঙ্গে সঙ্গে মানুষের আমলের দুয়ার বন্ধ হয়ে যায়। এই অবস্থায় বিলাপ কিংবা উচ্চ স্বরে কান্নাকাটি মৃত ব্যক্তির কোনো উপকারে আসে না; বরং তাঁর জন্য মাগফিরাতের দোয়া এবং তাঁর ভালো গুণগুলো স্মরণ করাই প্রকৃত কল্যাণকর।
১২ ঘণ্টা আগেইসলাম ডেস্ক

কোনো মুসলমানের জানাজায় অংশগ্রহণ ও তাকে কবরস্থ করা সমাজের মুসলমানদের ইমানি দায়িত্ব। পাশাপাশি এতে রয়েছে অধিক পরিমাণে সওয়াব। এ ছাড়া এটি এক মুমিনের ওপর অন্য মুমিনের অধিকার।
জানাজা ও দাফনকার্যে অংশগ্রহণের লাভ সম্পর্কে হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত আছে, রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি (আল্লাহর প্রতি) বিশ্বাস রেখে এবং নেকির আশা রেখে কোনো মুসলমানের জানাজার সঙ্গে যাবে এবং তার জানাজার নামাজ আদায় করবে এবং দাফন করা পর্যন্ত তার সঙ্গে থাকবে, সে দুই কিরাত (পরিমাপের একক) সওয়াব নিয়ে (বাড়ি) ফিরবে। এক কিরাত উহুদ পাহাড়ের সমান। আর যে ব্যক্তি জানাজার নামাজ আদায় করে মৃতকে সমাধিস্থ করার আগেই ফিরে আসবে, সে এক কিরাত সওয়াব নিয়ে (বাড়ি) ফিরবে।’ (রিয়াদুস সালেহিন: ৯৩৫)
আমাদের সমাজে সাধারণত জানাজার নামাজ ও দাফন প্রক্রিয়ায় পুরুষদেরই দেখা যায় দেখা যায় অংশগ্রহণ করতে। তবে নারীদের জন্য জানাজার নামাজে অংশগ্রহণ বিষয়ে ইসলামবিষয়ক গবেষকদের মত হলো, নারীদের জন্য জানাজার নামাজ আদায় করা মৌলিকভাবে নিষিদ্ধ নয়। চাইলে তারাও জানাজায় শরিক হতে পারবে। এতে জানাজার কোনো ক্ষতি হবে না। তবে জানাজায় অংশগ্রহণের বিষয়ে নারীদেরকে ইসলাম নিরুৎসাহিত করে থাকে।
জানাজার স্থানে যদি পর্দার খেলাপ হওয়ার সম্ভাবনা থাকে কিংবা নারীর নিরাপত্তা বিঘ্নিত হওয়ার আশঙ্কা থাকে, তবে সেখানে উপস্থিত হওয়ার অনুমতি ইসলাম দেয় না। জানাজার নামাজ যেহেতু নারীদের জন্য আবশ্যক নয়, তাই এতে অংশ নিতে গিয়ে কোনো ফরজ বিধান লঙ্ঘন করা বিধান সম্মত নয়। কেননা, ইসলামের বিধান মতে—জানাজার নামাজ আদায়, মৃতদেহ বহন এবং দাফন সংক্রান্ত সামগ্রিক দায়িত্ব মূলত পুরুষদের ওপরই ন্যস্ত।
এ ছাড়া শরিয়তবিরোধী কোনো পরিস্থিতির আশঙ্কা থাকার কারণে অনেক আলেম নারীদের জানাজায় অংশগ্রহণে নিরুৎসাহিত করে থাকেন।

কোনো মুসলমানের জানাজায় অংশগ্রহণ ও তাকে কবরস্থ করা সমাজের মুসলমানদের ইমানি দায়িত্ব। পাশাপাশি এতে রয়েছে অধিক পরিমাণে সওয়াব। এ ছাড়া এটি এক মুমিনের ওপর অন্য মুমিনের অধিকার।
জানাজা ও দাফনকার্যে অংশগ্রহণের লাভ সম্পর্কে হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত আছে, রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি (আল্লাহর প্রতি) বিশ্বাস রেখে এবং নেকির আশা রেখে কোনো মুসলমানের জানাজার সঙ্গে যাবে এবং তার জানাজার নামাজ আদায় করবে এবং দাফন করা পর্যন্ত তার সঙ্গে থাকবে, সে দুই কিরাত (পরিমাপের একক) সওয়াব নিয়ে (বাড়ি) ফিরবে। এক কিরাত উহুদ পাহাড়ের সমান। আর যে ব্যক্তি জানাজার নামাজ আদায় করে মৃতকে সমাধিস্থ করার আগেই ফিরে আসবে, সে এক কিরাত সওয়াব নিয়ে (বাড়ি) ফিরবে।’ (রিয়াদুস সালেহিন: ৯৩৫)
আমাদের সমাজে সাধারণত জানাজার নামাজ ও দাফন প্রক্রিয়ায় পুরুষদেরই দেখা যায় দেখা যায় অংশগ্রহণ করতে। তবে নারীদের জন্য জানাজার নামাজে অংশগ্রহণ বিষয়ে ইসলামবিষয়ক গবেষকদের মত হলো, নারীদের জন্য জানাজার নামাজ আদায় করা মৌলিকভাবে নিষিদ্ধ নয়। চাইলে তারাও জানাজায় শরিক হতে পারবে। এতে জানাজার কোনো ক্ষতি হবে না। তবে জানাজায় অংশগ্রহণের বিষয়ে নারীদেরকে ইসলাম নিরুৎসাহিত করে থাকে।
জানাজার স্থানে যদি পর্দার খেলাপ হওয়ার সম্ভাবনা থাকে কিংবা নারীর নিরাপত্তা বিঘ্নিত হওয়ার আশঙ্কা থাকে, তবে সেখানে উপস্থিত হওয়ার অনুমতি ইসলাম দেয় না। জানাজার নামাজ যেহেতু নারীদের জন্য আবশ্যক নয়, তাই এতে অংশ নিতে গিয়ে কোনো ফরজ বিধান লঙ্ঘন করা বিধান সম্মত নয়। কেননা, ইসলামের বিধান মতে—জানাজার নামাজ আদায়, মৃতদেহ বহন এবং দাফন সংক্রান্ত সামগ্রিক দায়িত্ব মূলত পুরুষদের ওপরই ন্যস্ত।
এ ছাড়া শরিয়তবিরোধী কোনো পরিস্থিতির আশঙ্কা থাকার কারণে অনেক আলেম নারীদের জানাজায় অংশগ্রহণে নিরুৎসাহিত করে থাকেন।

ব্যক্তিগত গোপনীয়তা রক্ষার অধিকার মানুষের অন্যতম মৌলিক অধিকার। ইসলাম এই অধিকারের স্বীকৃতি দেয়। পবিত্র কোরআনের একাধিক আয়াতে বিষয়টি আলোচিত হয়েছে। মহানবী (সা.)-এর হাদিসেও ব্যক্তিগত গোপনীয়তা লঙ্ঘনকারীদের সতর্ক করা হয়েছে। একজন মানুষের সম্মান-সম্ভ্রমের সুরক্ষা নিশ্চিত করা ইসলামের মৌলিক উদ্দেশ্যগুলোর একটি।
১০ ডিসেম্বর ২০২২
আল্লাহর দেওয়া জীবন অত্যন্ত মূল্যবান। যে সম্পদ যত বেশি মূল্যবান, তার ব্যবহার-প্রক্রিয়াও তত বেশি সুপরিকল্পিত হওয়া প্রয়োজন। সময় বহমান স্রোতের মতো, যাকে কখনো বেঁধে রাখা যায় না। তাই জীবনের এই মূল্যবান সময়গুলো অবহেলায় নষ্ট করা কোনো বুদ্ধিমানের কাজ নয়।
৩ ঘণ্টা আগে
জানাজার নামাজ ফরজে কিফায়া। অর্থাৎ কোনো মুসলমান মারা গেলে মহল্লার অল্পসংখ্যক লোক জানাজার নামাজ আদায় করলে বাকিরা দায়িত্বমুক্ত হয়ে যাবে। এ ছাড়া একজন মুসলমানের ওপর অন্য মুসলমানের পাঁচটি হক আছে। এর মধ্যে মৃত ব্যক্তির জানাজায় অংশ নেওয়াও একটি হক।
১০ ঘণ্টা আগে
মৃত্যুর সঙ্গে সঙ্গে মানুষের আমলের দুয়ার বন্ধ হয়ে যায়। এই অবস্থায় বিলাপ কিংবা উচ্চ স্বরে কান্নাকাটি মৃত ব্যক্তির কোনো উপকারে আসে না; বরং তাঁর জন্য মাগফিরাতের দোয়া এবং তাঁর ভালো গুণগুলো স্মরণ করাই প্রকৃত কল্যাণকর।
১২ ঘণ্টা আগেআবরার নাঈম

দুনিয়ার সফরের শেষ গন্তব্য মৃত্যু। মৃত্যু এক অপ্রিয় সত্য, যা সুনিশ্চিত অনিবার্য ও অবশ্যম্ভাবী। এ প্রসঙ্গে আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘প্রতিটি প্রাণীকে মৃত্যুর স্বাদ আস্বাদন করতে হবে।’ (সুরা আলে ইমরান: ১৮৫)
জানাজার নামাজ ফরজে কিফায়া। অর্থাৎ কোনো মুসলমান মারা গেলে মহল্লার অল্পসংখ্যক লোক জানাজার নামাজ আদায় করলে বাকিরা দায়িত্বমুক্ত হয়ে যাবে। এ ছাড়া একজন মুসলমানের ওপর অন্য মুসলমানের পাঁচটি হক আছে। এর মধ্যে মৃত ব্যক্তির জানাজায় অংশ নেওয়াও একটি হক।
হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘এক মুসলমানের অধিকার অন্য মুসলমানের ওপর পাঁচটি: সালামের জবাব দেওয়া, রোগীকে দেখতে যাওয়া, জানাজার সঙ্গে যাওয়া, দাওয়াত কবুল করা এবং হাঁচি দিলে তার জবাব দেওয়া।’ (রিয়াদুস সলেহিন: ৯০০)
কোনো মুসলমানের জানাজায় অংশগ্রহণ ও তাকে কবরস্থ করা সমাজের মুসলমানদের ইমানি দায়িত্ব। পাশাপাশি এতে রয়েছে অধিক পরিমাণে সওয়াব। যদিও সবার অংশগ্রহণ জরুরি নয়। তাই বলে এমন সওয়াবের কাজ থেকে পিছিয়ে থাকা কখনোই সমীচীন নয়।
জানাজা ও দাফনকার্যে অংশগ্রহণের লাভ সম্পর্কে হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত আছে, রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি (আল্লাহর প্রতি) বিশ্বাস রেখে এবং নেকির আশা রেখে কোনো মুসলমানের জানাজার সঙ্গে যাবে এবং তার জানাজার নামাজ আদায় করবে এবং দাফন করা পর্যন্ত তার সঙ্গে থাকবে, সে দুই কিরাত (পরিমাপের একক) সওয়াব নিয়ে (বাড়ি) ফিরবে। এক কিরাত উহুদ পাহাড়ের সমান। আর যে ব্যক্তি জানাজার নামাজ আদায় করে মৃতকে সমাধিস্থ করার আগেই ফিরে আসবে, সে এক কিরাত সওয়াব নিয়ে (বাড়ি) ফিরবে।’ (রিয়াদুস সলেহিন: ৯৩৫)

দুনিয়ার সফরের শেষ গন্তব্য মৃত্যু। মৃত্যু এক অপ্রিয় সত্য, যা সুনিশ্চিত অনিবার্য ও অবশ্যম্ভাবী। এ প্রসঙ্গে আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘প্রতিটি প্রাণীকে মৃত্যুর স্বাদ আস্বাদন করতে হবে।’ (সুরা আলে ইমরান: ১৮৫)
জানাজার নামাজ ফরজে কিফায়া। অর্থাৎ কোনো মুসলমান মারা গেলে মহল্লার অল্পসংখ্যক লোক জানাজার নামাজ আদায় করলে বাকিরা দায়িত্বমুক্ত হয়ে যাবে। এ ছাড়া একজন মুসলমানের ওপর অন্য মুসলমানের পাঁচটি হক আছে। এর মধ্যে মৃত ব্যক্তির জানাজায় অংশ নেওয়াও একটি হক।
হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘এক মুসলমানের অধিকার অন্য মুসলমানের ওপর পাঁচটি: সালামের জবাব দেওয়া, রোগীকে দেখতে যাওয়া, জানাজার সঙ্গে যাওয়া, দাওয়াত কবুল করা এবং হাঁচি দিলে তার জবাব দেওয়া।’ (রিয়াদুস সলেহিন: ৯০০)
কোনো মুসলমানের জানাজায় অংশগ্রহণ ও তাকে কবরস্থ করা সমাজের মুসলমানদের ইমানি দায়িত্ব। পাশাপাশি এতে রয়েছে অধিক পরিমাণে সওয়াব। যদিও সবার অংশগ্রহণ জরুরি নয়। তাই বলে এমন সওয়াবের কাজ থেকে পিছিয়ে থাকা কখনোই সমীচীন নয়।
জানাজা ও দাফনকার্যে অংশগ্রহণের লাভ সম্পর্কে হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত আছে, রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি (আল্লাহর প্রতি) বিশ্বাস রেখে এবং নেকির আশা রেখে কোনো মুসলমানের জানাজার সঙ্গে যাবে এবং তার জানাজার নামাজ আদায় করবে এবং দাফন করা পর্যন্ত তার সঙ্গে থাকবে, সে দুই কিরাত (পরিমাপের একক) সওয়াব নিয়ে (বাড়ি) ফিরবে। এক কিরাত উহুদ পাহাড়ের সমান। আর যে ব্যক্তি জানাজার নামাজ আদায় করে মৃতকে সমাধিস্থ করার আগেই ফিরে আসবে, সে এক কিরাত সওয়াব নিয়ে (বাড়ি) ফিরবে।’ (রিয়াদুস সলেহিন: ৯৩৫)

ব্যক্তিগত গোপনীয়তা রক্ষার অধিকার মানুষের অন্যতম মৌলিক অধিকার। ইসলাম এই অধিকারের স্বীকৃতি দেয়। পবিত্র কোরআনের একাধিক আয়াতে বিষয়টি আলোচিত হয়েছে। মহানবী (সা.)-এর হাদিসেও ব্যক্তিগত গোপনীয়তা লঙ্ঘনকারীদের সতর্ক করা হয়েছে। একজন মানুষের সম্মান-সম্ভ্রমের সুরক্ষা নিশ্চিত করা ইসলামের মৌলিক উদ্দেশ্যগুলোর একটি।
১০ ডিসেম্বর ২০২২
আল্লাহর দেওয়া জীবন অত্যন্ত মূল্যবান। যে সম্পদ যত বেশি মূল্যবান, তার ব্যবহার-প্রক্রিয়াও তত বেশি সুপরিকল্পিত হওয়া প্রয়োজন। সময় বহমান স্রোতের মতো, যাকে কখনো বেঁধে রাখা যায় না। তাই জীবনের এই মূল্যবান সময়গুলো অবহেলায় নষ্ট করা কোনো বুদ্ধিমানের কাজ নয়।
৩ ঘণ্টা আগে
জানাজার স্থানে যদি পর্দার খেলাপ কিংবা নারীর নিরাপত্তা বিঘ্নিত হওয়ার আশঙ্কা থাকে, তবে সেখানে উপস্থিত হওয়ার অনুমতি ইসলাম দেয় না। জানাজার নামাজ যেহেতু নারীদের জন্য আবশ্যক নয়, তাই এতে অংশ নিতে গিয়ে কোনো ফরজ বিধান লঙ্ঘন করা বিধানসম্মত নয়।
৮ ঘণ্টা আগে
মৃত্যুর সঙ্গে সঙ্গে মানুষের আমলের দুয়ার বন্ধ হয়ে যায়। এই অবস্থায় বিলাপ কিংবা উচ্চ স্বরে কান্নাকাটি মৃত ব্যক্তির কোনো উপকারে আসে না; বরং তাঁর জন্য মাগফিরাতের দোয়া এবং তাঁর ভালো গুণগুলো স্মরণ করাই প্রকৃত কল্যাণকর।
১২ ঘণ্টা আগেইসলাম ডেস্ক

মৃত্যুর সঙ্গে সঙ্গে মানুষের আমলের দুয়ার বন্ধ হয়ে যায়। এই অবস্থায় বিলাপ কিংবা উচ্চ স্বরে কান্নাকাটি মৃত ব্যক্তির কোনো উপকারে আসে না; বরং তাঁর জন্য মাগফিরাতের দোয়া এবং তাঁর ভালো গুণগুলো স্মরণ করাই প্রকৃত কল্যাণকর।
হজরত আবদুল্লাহ ইবনে ওমর (রা.) বর্ণিত হাদিসে রাসুলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেছেন—‘তোমরা তোমাদের মৃতদের ভালো কাজগুলোর আলোচনা করো এবং মন্দ কাজের আলোচনা থেকে বিরত থাকো।’ (সুনানে আবু দাউদ: ৪৯০০)
কারও মৃত্যুর পর তাঁর পাশে উপস্থিত হলে লাশ দেখার সময় দোয়ার বিশেষ গুরুত্ব রয়েছে। হজরত উম্মে সালামাহ (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘তোমরা রোগী কিংবা মৃতের কাছে উপস্থিত হলে ভালো কথা বলবে। কেননা তোমরা যা বলবে, ফেরেশতারা তার ওপর আমিন বলবেন।’
এই অবস্থায় এই দোয়া পড়া সুন্নত—‘আল্লাহুম্মাগফিরলি ওয়া লাহু ওয়া আকিবনি মিনহু উকবান হাসানাহ।’
অর্থ: ‘হে আল্লাহ, তুমি আমাকে ও তাকে ক্ষমা করো এবং আমাকে তার চেয়েও উত্তম প্রতিদান দাও।’ (সুনানে ইবনে মাজাহ: ১৪৪৭)
পবিত্র কোরআনে পূর্ববর্তী নবীগণ নিজেদের এবং সমস্ত মুমিনের জন্য যেভাবে দোয়া করেছেন, তা আমাদের জন্য বড় শিক্ষা।
হজরত ইবরাহিম (আ.)-এর দোয়া—‘রব্বানাগফিরলি ওয়ালিওয়ালিদাইয়া ওয়ালিল মুমিনিনা ইয়াওমা ইয়াকুমুল হিসাব।’
অর্থ: ‘হে আমার প্রতিপালক, যেদিন হিসাব প্রতিষ্ঠিত হবে, সেদিন আমাকে, আমার পিতা-মাতা ও সব ইমানদারকে ক্ষমা করুন।’ (সুরা ইবরাহিম: ৪১)
হজরত নুহ (আ.)-এর দোয়া—‘রব্বিগফিরলি ওয়ালিওয়ালিদাইয়া ওয়ালিমান দাখালা বাইতিয়া মুমিনাও-ওয়ালিল মুমিনিনা ওয়াল মুমিনাত।’
অর্থ: ‘হে আমার প্রতিপালক, আমাকে ক্ষমা করে দিন এবং আমার পিতা-মাতাকেও; আর যে ইমান অবস্থায় আমার ঘরে প্রবেশ করেছে এবং সমস্ত মুমিন পুরুষ ও মুমিন নারীকেও।’ (সুরা নুহ: ২৮)

মৃত্যুর সঙ্গে সঙ্গে মানুষের আমলের দুয়ার বন্ধ হয়ে যায়। এই অবস্থায় বিলাপ কিংবা উচ্চ স্বরে কান্নাকাটি মৃত ব্যক্তির কোনো উপকারে আসে না; বরং তাঁর জন্য মাগফিরাতের দোয়া এবং তাঁর ভালো গুণগুলো স্মরণ করাই প্রকৃত কল্যাণকর।
হজরত আবদুল্লাহ ইবনে ওমর (রা.) বর্ণিত হাদিসে রাসুলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেছেন—‘তোমরা তোমাদের মৃতদের ভালো কাজগুলোর আলোচনা করো এবং মন্দ কাজের আলোচনা থেকে বিরত থাকো।’ (সুনানে আবু দাউদ: ৪৯০০)
কারও মৃত্যুর পর তাঁর পাশে উপস্থিত হলে লাশ দেখার সময় দোয়ার বিশেষ গুরুত্ব রয়েছে। হজরত উম্মে সালামাহ (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘তোমরা রোগী কিংবা মৃতের কাছে উপস্থিত হলে ভালো কথা বলবে। কেননা তোমরা যা বলবে, ফেরেশতারা তার ওপর আমিন বলবেন।’
এই অবস্থায় এই দোয়া পড়া সুন্নত—‘আল্লাহুম্মাগফিরলি ওয়া লাহু ওয়া আকিবনি মিনহু উকবান হাসানাহ।’
অর্থ: ‘হে আল্লাহ, তুমি আমাকে ও তাকে ক্ষমা করো এবং আমাকে তার চেয়েও উত্তম প্রতিদান দাও।’ (সুনানে ইবনে মাজাহ: ১৪৪৭)
পবিত্র কোরআনে পূর্ববর্তী নবীগণ নিজেদের এবং সমস্ত মুমিনের জন্য যেভাবে দোয়া করেছেন, তা আমাদের জন্য বড় শিক্ষা।
হজরত ইবরাহিম (আ.)-এর দোয়া—‘রব্বানাগফিরলি ওয়ালিওয়ালিদাইয়া ওয়ালিল মুমিনিনা ইয়াওমা ইয়াকুমুল হিসাব।’
অর্থ: ‘হে আমার প্রতিপালক, যেদিন হিসাব প্রতিষ্ঠিত হবে, সেদিন আমাকে, আমার পিতা-মাতা ও সব ইমানদারকে ক্ষমা করুন।’ (সুরা ইবরাহিম: ৪১)
হজরত নুহ (আ.)-এর দোয়া—‘রব্বিগফিরলি ওয়ালিওয়ালিদাইয়া ওয়ালিমান দাখালা বাইতিয়া মুমিনাও-ওয়ালিল মুমিনিনা ওয়াল মুমিনাত।’
অর্থ: ‘হে আমার প্রতিপালক, আমাকে ক্ষমা করে দিন এবং আমার পিতা-মাতাকেও; আর যে ইমান অবস্থায় আমার ঘরে প্রবেশ করেছে এবং সমস্ত মুমিন পুরুষ ও মুমিন নারীকেও।’ (সুরা নুহ: ২৮)

ব্যক্তিগত গোপনীয়তা রক্ষার অধিকার মানুষের অন্যতম মৌলিক অধিকার। ইসলাম এই অধিকারের স্বীকৃতি দেয়। পবিত্র কোরআনের একাধিক আয়াতে বিষয়টি আলোচিত হয়েছে। মহানবী (সা.)-এর হাদিসেও ব্যক্তিগত গোপনীয়তা লঙ্ঘনকারীদের সতর্ক করা হয়েছে। একজন মানুষের সম্মান-সম্ভ্রমের সুরক্ষা নিশ্চিত করা ইসলামের মৌলিক উদ্দেশ্যগুলোর একটি।
১০ ডিসেম্বর ২০২২
আল্লাহর দেওয়া জীবন অত্যন্ত মূল্যবান। যে সম্পদ যত বেশি মূল্যবান, তার ব্যবহার-প্রক্রিয়াও তত বেশি সুপরিকল্পিত হওয়া প্রয়োজন। সময় বহমান স্রোতের মতো, যাকে কখনো বেঁধে রাখা যায় না। তাই জীবনের এই মূল্যবান সময়গুলো অবহেলায় নষ্ট করা কোনো বুদ্ধিমানের কাজ নয়।
৩ ঘণ্টা আগে
জানাজার স্থানে যদি পর্দার খেলাপ কিংবা নারীর নিরাপত্তা বিঘ্নিত হওয়ার আশঙ্কা থাকে, তবে সেখানে উপস্থিত হওয়ার অনুমতি ইসলাম দেয় না। জানাজার নামাজ যেহেতু নারীদের জন্য আবশ্যক নয়, তাই এতে অংশ নিতে গিয়ে কোনো ফরজ বিধান লঙ্ঘন করা বিধানসম্মত নয়।
৮ ঘণ্টা আগে
জানাজার নামাজ ফরজে কিফায়া। অর্থাৎ কোনো মুসলমান মারা গেলে মহল্লার অল্পসংখ্যক লোক জানাজার নামাজ আদায় করলে বাকিরা দায়িত্বমুক্ত হয়ে যাবে। এ ছাড়া একজন মুসলমানের ওপর অন্য মুসলমানের পাঁচটি হক আছে। এর মধ্যে মৃত ব্যক্তির জানাজায় অংশ নেওয়াও একটি হক।
১০ ঘণ্টা আগে