আজকের পত্রিকা ডেস্ক

জন এফ কেনেডি হত্যাকাণ্ড মার্কিন মানসে এক দগদগে ক্ষত হয়ে রয়ে গেছে। সেই মুহূর্তের প্রচণ্ড ধাক্কা রিচার্ড ও’কনেলের কবিতা ‘নেক্রোসে’ চিত্রিত হয়েছে। তিনি লিখেছেন, ‘মাথাটি পেছনের দিকে ঝুঁকে মৃত্যুর দিকে এগিয়ে যাচ্ছে, রক্তে ভেসে যাচ্ছে খুলি...।’ ১৯৬৩ সালের ২২ নভেম্বরের ডালাসের ডিলি প্লাজায় সেই ভয়াবহ কয়েক সেকেন্ড এক রহস্য রেখে গেছে, যা এখনো সমাধান হয়নি। এমনকি সদ্য প্রকাশিত ৮০ হাজার নথির পরও সেই রহস্য অনুদ্ঘাটিত।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সিদ্ধান্তে জন এফ কেনেডির হত্যাকাণ্ড সংক্রান্ত নথির প্রকাশ নতুন করে সেদিনের ঘটনাগুলো নিয়ে জল্পনা-কল্পনা উসকে দিয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার জেএফকে সেন্টার ফর দ্য পারফর্মিং আর্টস সফরকালে ট্রাম্প আমেরিকানদের উদ্দেশে বলেন, ‘আপনাদের জানার জন্য অনেক কিছুই আছে এতে।’ এবং তিনি জানান, তাঁর প্রশাসন কোনো তথ্য গোপন রাখবে না।
এর আগে, ২০১৭ সালে ট্রাম্প অতিরিক্ত নথি প্রকাশের সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। যদিও জাতীয় নিরাপত্তার স্বার্থে হাজারো নথির কিছু অংশ অবশ্য প্রকাশ করা হয়নি। চলতি বছরের জানুয়ারিতে তিনি এক নির্বাহী আদেশের মাধ্যমে কেনেডি হত্যাকাণ্ডের পাশাপাশি রবার্ট এফ. কেনেডি ও মার্টিন লুথার কিং জুনিয়রের হত্যাকাণ্ড সম্পর্কিত বাকি সব নথি প্রকাশের নির্দেশ দেন।
সর্বশেষ প্রকাশিত নথিপত্রের অংশ হিসেবে নতুনভাবে চিহ্নিত ১ হাজার ১২৩টি ফাইল প্রকাশ করা হয়েছে। গবেষক ও বিশ্লেষকেরা এখন এসব নথি পর্যালোচনা করে নতুন তথ্য অনুসন্ধান করছেন।
জন এফ কেনেডি হত্যাকাণ্ডের রাতেই গোয়েন্দা কর্মকর্তা জে গ্যারেট আন্ডারহিল আতঙ্কিত অবস্থায় ওয়াশিংটন ছেড়ে পালিয়ে যান। তিনি নিউজার্সিতে এক বন্ধুর বাড়িতে আশ্রয় নেন। সেখানে তিনি স্পষ্টতই ভীত ও বিচলিত ছিলেন। প্রকাশিত নথিতে পাওয়া এক মেমো অনুযায়ী, আন্ডারহিল অভিযোগ করেন যে, সিআইএর ভেতরের একটি ‘ছোট গোষ্ঠী’ কেনেডি হত্যাকাণ্ডের জন্য দায়ী।
প্রকাশিত নথির তথ্য অনুসারে, আন্ডারহিল নাকি তাঁর বন্ধু শার্লিন ফিটসিমন্সকে বলেছিলেন, জন এফ কেনেডি হত্যাকাণ্ডের পেছনে সিআইএ যুক্ত ছিল। তিনি বলেন, ‘(লি হার্ভে) অসওয়াল্ড স্রেফ বলির পাঁঠা।’ আন্ডারহিল দাবি করেন, প্রকৃত ষড়যন্ত্রকারীরা ‘ভয়ংকর কিছু একটা করেছে’ এবং তাঁরা অস্ত্র চোরাচালান, মাদক ব্যবসা ও অন্যান্য অবৈধ কর্মকাণ্ডে জড়িত ছিল।
পরিচিত সামরিক গোয়েন্দা কর্মকর্তা, পরামর্শক এবং সামরিক বিষয়ে লেখক হিসেবে আন্ডারহিলের অতীত তাঁর আশঙ্কাকে আরও বিশ্বাসযোগ্য করে তোলে। ১৯৬৭ সালের ১৯ জুলাই তারিখের এক নথিতে উল্লেখ করা হয়েছে, ‘যেসব বন্ধুর কাছে আন্ডারহিল গিয়েছিলেন, তারা বলেছেন, তিনি তখন নেশাগ্রস্ত ছিলেন না, কিন্তু প্রবলভাবে আতঙ্কিত ছিলেন। তাঁরা জানান, আন্ডারহিল দাবি করেছিলেন যে, অস্ত্র চোরাচালান, মাদক ব্যবসা এবং অন্যান্য অবৈধ কাজে জড়িত সিআইএর একটি চক্র, যারা রাজনৈতিক ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে নিজেদের স্বার্থসিদ্ধি করছিল, তারাই কেনেডিকে হত্যা করেছে। নাকি কেনেডি এই অনিয়মের কথা জানতে পেরেছিলেন এবং এ সম্পর্কে প্রকাশ্যে বলার আগেই তাঁকে হত্যা করা হয়েছিল।’
যদিও বন্ধুরা সব সময় আন্ডারহিলকে সম্পূর্ণ বাস্তববাদী ও যুক্তিবাদী বলে চিনতেন, প্রথমে তারা তাঁর বক্তব্যকে গুরুত্ব দেননি। এ বিষয়ে নথিতে বলা হয়, তাঁর এক বন্ধু বলেন, ‘আমার মনে হয়, এর প্রধান কারণ ছিল—আমরা বিশ্বাসই করতে পারছিলাম না যে, সিআইএর ভেতরে এমন একটি দুর্নীতিগ্রস্ত গোষ্ঠী থাকতে পারে, যারা মাফিয়ার মতোই নির্মম এবং আরও দক্ষ।’
প্রাণের ভয়ে আন্ডারহিল কেনেডি হত্যাকাণ্ডের পরপরই ওয়াশিংটন ছেড়ে পালিয়ে যান এবং তাঁর বন্ধুদের জানান, তিনি দেশত্যাগে বাধ্য হতে পারেন। তবে এর ছয় মাসেরও কম সময় পর ১৯৬৪ সালের ৮ মে আন্ডারহিলকে ওয়াশিংটনে তাঁর নিজ অ্যাপার্টমেন্টে মৃত অবস্থায় পাওয়া যায়। তাঁর মাথা গুলিবিদ্ধ অবস্থায় ছিল। সরকারিভাবে এটিকে আত্মহত্যা বলে ঘোষণা করা হলেও বেশ কিছু অসংগতি নানা গুজবকে উসকে দিয়েছে। যেমন— তিনি ডানহাতি হওয়া সত্ত্বেও তাঁর মাথার বাম কানের পেছনে গুলি কীভাবে হলো?
আন্ডারহিলের মৃতদেহ প্রথম দেখতে পান দ্য নিউ রিপাবলিকের এক ব্যক্তি—অ্যাশার ব্রাইনস। প্রকাশিত গোপন নথিতে বলা হয়েছে, ‘আন্ডারহিলের মৃত্যুকে আত্মহত্যা বলে ঘোষণা দেওয়া মোটেও বিশ্বাসযোগ্য নয়। তাঁর দেহ আবিষ্কার করেন তাঁর লেখালেখির সহযোগী দ্য নিউ রিপাবলিকে অ্যাশার ব্রাইনস।’
নথিতে বলা হয়, ‘তাঁর (আন্ডারহিল) মাথার বাঁ কানের পেছনে গুলি লেগেছিল, আর একটি অটোমেটিক পিস্তল পাওয়া যায় তাঁর শরীরের বাঁ পাশে। বিষয়টি অদ্ভুত। কারণ ব্রাইনস জানান, আন্ডারহিল ছিলেন ডানহাতি। ব্রাইনসের ধারণা, ওই পিস্তলে সাইলেন্সার লাগানো ছিল, কারণ ওই অ্যাপার্টমেন্ট ভবনের বাসিন্দারা কোনো গুলির শব্দ শোনেননি। দেখা যাচ্ছে, আন্ডারহিল কয়েক দিন আগেই মারা গিয়েছিলেন।’
১৯১৫ সালে ব্রুকলিনে জন্মগ্রহণ করা আন্ডারহিল হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক সম্পন্ন করেন এবং দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় গোয়েন্দা জগতে প্রবেশ করেন। সামরিক গোয়েন্দা বিভাগে (এমআইএস) তাঁর কাজের জন্য তাঁকে যুদ্ধ বিভাগ থেকে দক্ষতার স্বীকৃতি প্রদান করা হয়। যুদ্ধের পর সিআইএ তাঁকে নিয়োগের বিষয়ে বিবেচনা করলেও নথিপত্রে দেখা যায়, তাঁকে সতর্কতার সঙ্গে পর্যবেক্ষণ করতে বলা হয় এবং সীমিত মাত্রায় গোপন তথ্যের প্রবেশাধিকার দেওয়ার সুপারিশ করা হয়।
১৯৫০-এর দশকের মাঝামাঝি আন্ডারহিল সাংবাদিক ও পরামর্শক হিসেবে সুপরিচিত হয়ে ওঠেন। তিনি ‘লাইফ’ ও ‘এসকোয়ার’ পত্রিকায় লিখতেন এবং প্রায়শই মার্কিন সামরিক প্রস্তুতির সমালোচনা করতেন। তাঁর সঙ্গে গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর যোগাযোগ অব্যাহত ছিল, বিশেষ করে সোভিয়েত ইউনিয়নের সামরিক বিশ্লেষণের ক্ষেত্রে। তিনি একবার এফবিআই এবং সিআইএকে হারমান অ্যাক্সেলব্যাঙ্ক সম্পর্কে তথ্য দিয়েছিলেন। এই ব্যক্তি সোভিয়েত ইউনিয়নের সামরিক সরঞ্জাম ও স্থাপনার ছবি বিক্রি করতেন।
নতুন প্রকাশিত নথিগুলো লি হার্ভে ওসওয়াল্ডের ভূমিকা নিয়ে আগের সন্দেহগুলোকেই আরও জোরদার করেছে। সরকারিভাবে বলা হয়, ওসওয়াল্ড একাই হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছিলেন। কিন্তু এই বক্তব্যের অসংগতি আছে। গুলির সময়কাল, বুলেটের গতিপথ এবং প্রত্যক্ষদর্শীদের সাক্ষ্য থেকে দ্বিতীয় একজন বন্দুকধারীর সম্ভাবনার ইঙ্গিত পাওয়া যায়।
ডালাসের ডিলে প্লাজায় প্রেসিডেন্ট কেনেডি ও তাঁর গাড়িবহরের ওপর হামলার মুহূর্ত ধারণকারী কোম্পানি জাপ্রুডার ফিল্মের চিত্র থেকে দেখা যায় যে, গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর কেনেডির মাথা পেছনের দিকে নড়ে যায়। অথচ, প্রচলিত ধারণা, গুলিগুলো পেছন থেকে করা হয়েছিল।
ওসওয়াল্ডের অতীত রহস্য আরও ঘনীভূত করে। সাবেক মেরিন সদস্য ওসওয়াল্ড ১৯৫৯ সালে সোভিয়েত ইউনিয়নে পালিয়ে যান। পরে তিনি এক রুশ নারীকে বিয়ে করে তাঁকে নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে ফিরে আসেন। তাঁর সঙ্গে কিউবার প্রেসিডেন্ট ফিদেল কাস্ত্রোপন্থী ও বিরোধী উভয় গোষ্ঠীর যোগাযোগ ছিল বলে প্রমাণ আছে। পাশাপাশি কেনেডি হত্যাকাণ্ডের আগে থেকেই তাঁকে সিআইএ ও এফবিআই নজরদারিতে রেখেছিল। এসব কারণেই অনেকে সন্দেহ করেন যে, তিনি একা কাজ করেননি।
সম্প্রতি নবগঠিত টাস্কফোর্স অন দ্য ডিক্লাসিফিকেশন অব ফেডারেল সিক্রেটসের প্রধান আনা পলিনা লুনা ‘দুজন বন্দুকধারী’ তত্ত্বকে সমর্থন করেছেন। তাঁর এই অবস্থান বহুদিন ধরে প্রচলিত ওয়ারেন কমিশনের উপসংহারকে চ্যালেঞ্জ জানাচ্ছে।
প্রকাশিত নথিপত্রে স্যামুয়েল জর্জ কামিংস নামে এক ব্যক্তির বিষয়েও গুরুত্বপূর্ণ তথ্য উঠে এসেছে। কামিংস অস্ত্র ব্যবসায়ী ছিলেন এবং তাঁর সঙ্গে বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার সংযোগ ছিল। তিনি সিআইএ-তে অস্ত্র বিশেষজ্ঞ হিসেবে কাজ করেছেন এবং বিদেশি অস্ত্র কেনা ও বিতরণের সঙ্গে জড়িত ছিলেন। নথিপত্রে উল্লেখ আছে, তিনি যুক্তরাষ্ট্রসহ বিদেশি গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করতেন, যার মধ্যে তৎকালীন পশ্চিম জার্মানির গোয়েন্দা সংস্থা বিএনডি অন্যতম। এমনকি তিনি কিউবা বিরোধী গোপন অস্ত্র চুক্তির সঙ্গেও যুক্ত থাকতে পারেন বলে ইঙ্গিত পাওয়া গেছে।
কামিংসের কোম্পানি ইন্টারন্যাশনাল আর্মামেন্ট করপোরেশন (ইন্টারার্মকো) বিভিন্ন বিদ্রোহী গোষ্ঠীর কাছে অস্ত্র সরবরাহ করত। যদিও জন এফ. কেনেডি হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে তাঁর সরাসরি কোনো সম্পর্কের প্রমাণ পাওয়া যায়নি, তবে তাঁর কার্যক্রম ও গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সংযোগ ১৯৬৩ সালের ২২ নভেম্বরের একটি ঘটনার পটভূমি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে।
আরেকটি দীর্ঘদিনের রহস্য হলো কেন জ্যাক রুবি। তিনি ডালাসের এক নাইটক্লাব মালিক। তাঁর সংগঠিত অপরাধচক্রের সঙ্গে সম্পৃক্ততার অভিযোগ ছিল। কেনেডি হত্যার দুই দিন পর তিনি ওসওয়াল্ডকে গুলি করেছেন। যদিও রুবি দাবি করেছিলেন, তিনি শোকের বশে এটি করেছেন, তবে সন্দেহবাদীরা মনে করেন, তিনি ওসওয়াল্ডকে চুপ করিয়ে দিতে চেয়েছিলেন, যাতে সে আরও তথ্য প্রকাশ করতে না পারে।
রুবির বিচার এবং কারাগারে থাকার সময় ক্যানসারে তাঁর মৃত্যুর ঘটনা সন্দেহ আরও বাড়িয়ে তুলেছে। রহস্য আরও ঘনীভূত হয় যখন জানা যায় যে, কারাগারে রুবির চিকিৎসার সঙ্গে যুক্ত ডাক্তারদের একজন লুইস জোলিয়ন ওয়েস্ট ছিলেন সিআইএ-এর মস্তিষ্ক নিয়ন্ত্রণ প্রকল্প ‘এমকেআল্ট্রা’—এর সঙ্গে জড়িত গবেষক।
জেএফকে হত্যাকাণ্ডের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বস্তুগত প্রমাণ এখনো বিতর্কিত রয়ে গেছে। বিশেষ করে ‘ম্যাজিক বুলেট’ তত্ত্ব। যেখানে দাবি করা হয় যে, একটি মাত্র গুলি প্রেসিডেন্ট কেনেডি এবং টেক্সাসের গভর্নর জন কনেলিকে একসঙ্গে আঘাত করেছিল—এই ধারণাকে বহু বিশ্লেষক অবিশ্বাস্য বলে মনে করেন।
এনডিটিভি থেকে অনুবাদ করেছেন আজকের পত্রিকার সহ-সম্পাদক আব্দুর রহমান

জন এফ কেনেডি হত্যাকাণ্ড মার্কিন মানসে এক দগদগে ক্ষত হয়ে রয়ে গেছে। সেই মুহূর্তের প্রচণ্ড ধাক্কা রিচার্ড ও’কনেলের কবিতা ‘নেক্রোসে’ চিত্রিত হয়েছে। তিনি লিখেছেন, ‘মাথাটি পেছনের দিকে ঝুঁকে মৃত্যুর দিকে এগিয়ে যাচ্ছে, রক্তে ভেসে যাচ্ছে খুলি...।’ ১৯৬৩ সালের ২২ নভেম্বরের ডালাসের ডিলি প্লাজায় সেই ভয়াবহ কয়েক সেকেন্ড এক রহস্য রেখে গেছে, যা এখনো সমাধান হয়নি। এমনকি সদ্য প্রকাশিত ৮০ হাজার নথির পরও সেই রহস্য অনুদ্ঘাটিত।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সিদ্ধান্তে জন এফ কেনেডির হত্যাকাণ্ড সংক্রান্ত নথির প্রকাশ নতুন করে সেদিনের ঘটনাগুলো নিয়ে জল্পনা-কল্পনা উসকে দিয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার জেএফকে সেন্টার ফর দ্য পারফর্মিং আর্টস সফরকালে ট্রাম্প আমেরিকানদের উদ্দেশে বলেন, ‘আপনাদের জানার জন্য অনেক কিছুই আছে এতে।’ এবং তিনি জানান, তাঁর প্রশাসন কোনো তথ্য গোপন রাখবে না।
এর আগে, ২০১৭ সালে ট্রাম্প অতিরিক্ত নথি প্রকাশের সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। যদিও জাতীয় নিরাপত্তার স্বার্থে হাজারো নথির কিছু অংশ অবশ্য প্রকাশ করা হয়নি। চলতি বছরের জানুয়ারিতে তিনি এক নির্বাহী আদেশের মাধ্যমে কেনেডি হত্যাকাণ্ডের পাশাপাশি রবার্ট এফ. কেনেডি ও মার্টিন লুথার কিং জুনিয়রের হত্যাকাণ্ড সম্পর্কিত বাকি সব নথি প্রকাশের নির্দেশ দেন।
সর্বশেষ প্রকাশিত নথিপত্রের অংশ হিসেবে নতুনভাবে চিহ্নিত ১ হাজার ১২৩টি ফাইল প্রকাশ করা হয়েছে। গবেষক ও বিশ্লেষকেরা এখন এসব নথি পর্যালোচনা করে নতুন তথ্য অনুসন্ধান করছেন।
জন এফ কেনেডি হত্যাকাণ্ডের রাতেই গোয়েন্দা কর্মকর্তা জে গ্যারেট আন্ডারহিল আতঙ্কিত অবস্থায় ওয়াশিংটন ছেড়ে পালিয়ে যান। তিনি নিউজার্সিতে এক বন্ধুর বাড়িতে আশ্রয় নেন। সেখানে তিনি স্পষ্টতই ভীত ও বিচলিত ছিলেন। প্রকাশিত নথিতে পাওয়া এক মেমো অনুযায়ী, আন্ডারহিল অভিযোগ করেন যে, সিআইএর ভেতরের একটি ‘ছোট গোষ্ঠী’ কেনেডি হত্যাকাণ্ডের জন্য দায়ী।
প্রকাশিত নথির তথ্য অনুসারে, আন্ডারহিল নাকি তাঁর বন্ধু শার্লিন ফিটসিমন্সকে বলেছিলেন, জন এফ কেনেডি হত্যাকাণ্ডের পেছনে সিআইএ যুক্ত ছিল। তিনি বলেন, ‘(লি হার্ভে) অসওয়াল্ড স্রেফ বলির পাঁঠা।’ আন্ডারহিল দাবি করেন, প্রকৃত ষড়যন্ত্রকারীরা ‘ভয়ংকর কিছু একটা করেছে’ এবং তাঁরা অস্ত্র চোরাচালান, মাদক ব্যবসা ও অন্যান্য অবৈধ কর্মকাণ্ডে জড়িত ছিল।
পরিচিত সামরিক গোয়েন্দা কর্মকর্তা, পরামর্শক এবং সামরিক বিষয়ে লেখক হিসেবে আন্ডারহিলের অতীত তাঁর আশঙ্কাকে আরও বিশ্বাসযোগ্য করে তোলে। ১৯৬৭ সালের ১৯ জুলাই তারিখের এক নথিতে উল্লেখ করা হয়েছে, ‘যেসব বন্ধুর কাছে আন্ডারহিল গিয়েছিলেন, তারা বলেছেন, তিনি তখন নেশাগ্রস্ত ছিলেন না, কিন্তু প্রবলভাবে আতঙ্কিত ছিলেন। তাঁরা জানান, আন্ডারহিল দাবি করেছিলেন যে, অস্ত্র চোরাচালান, মাদক ব্যবসা এবং অন্যান্য অবৈধ কাজে জড়িত সিআইএর একটি চক্র, যারা রাজনৈতিক ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে নিজেদের স্বার্থসিদ্ধি করছিল, তারাই কেনেডিকে হত্যা করেছে। নাকি কেনেডি এই অনিয়মের কথা জানতে পেরেছিলেন এবং এ সম্পর্কে প্রকাশ্যে বলার আগেই তাঁকে হত্যা করা হয়েছিল।’
যদিও বন্ধুরা সব সময় আন্ডারহিলকে সম্পূর্ণ বাস্তববাদী ও যুক্তিবাদী বলে চিনতেন, প্রথমে তারা তাঁর বক্তব্যকে গুরুত্ব দেননি। এ বিষয়ে নথিতে বলা হয়, তাঁর এক বন্ধু বলেন, ‘আমার মনে হয়, এর প্রধান কারণ ছিল—আমরা বিশ্বাসই করতে পারছিলাম না যে, সিআইএর ভেতরে এমন একটি দুর্নীতিগ্রস্ত গোষ্ঠী থাকতে পারে, যারা মাফিয়ার মতোই নির্মম এবং আরও দক্ষ।’
প্রাণের ভয়ে আন্ডারহিল কেনেডি হত্যাকাণ্ডের পরপরই ওয়াশিংটন ছেড়ে পালিয়ে যান এবং তাঁর বন্ধুদের জানান, তিনি দেশত্যাগে বাধ্য হতে পারেন। তবে এর ছয় মাসেরও কম সময় পর ১৯৬৪ সালের ৮ মে আন্ডারহিলকে ওয়াশিংটনে তাঁর নিজ অ্যাপার্টমেন্টে মৃত অবস্থায় পাওয়া যায়। তাঁর মাথা গুলিবিদ্ধ অবস্থায় ছিল। সরকারিভাবে এটিকে আত্মহত্যা বলে ঘোষণা করা হলেও বেশ কিছু অসংগতি নানা গুজবকে উসকে দিয়েছে। যেমন— তিনি ডানহাতি হওয়া সত্ত্বেও তাঁর মাথার বাম কানের পেছনে গুলি কীভাবে হলো?
আন্ডারহিলের মৃতদেহ প্রথম দেখতে পান দ্য নিউ রিপাবলিকের এক ব্যক্তি—অ্যাশার ব্রাইনস। প্রকাশিত গোপন নথিতে বলা হয়েছে, ‘আন্ডারহিলের মৃত্যুকে আত্মহত্যা বলে ঘোষণা দেওয়া মোটেও বিশ্বাসযোগ্য নয়। তাঁর দেহ আবিষ্কার করেন তাঁর লেখালেখির সহযোগী দ্য নিউ রিপাবলিকে অ্যাশার ব্রাইনস।’
নথিতে বলা হয়, ‘তাঁর (আন্ডারহিল) মাথার বাঁ কানের পেছনে গুলি লেগেছিল, আর একটি অটোমেটিক পিস্তল পাওয়া যায় তাঁর শরীরের বাঁ পাশে। বিষয়টি অদ্ভুত। কারণ ব্রাইনস জানান, আন্ডারহিল ছিলেন ডানহাতি। ব্রাইনসের ধারণা, ওই পিস্তলে সাইলেন্সার লাগানো ছিল, কারণ ওই অ্যাপার্টমেন্ট ভবনের বাসিন্দারা কোনো গুলির শব্দ শোনেননি। দেখা যাচ্ছে, আন্ডারহিল কয়েক দিন আগেই মারা গিয়েছিলেন।’
১৯১৫ সালে ব্রুকলিনে জন্মগ্রহণ করা আন্ডারহিল হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক সম্পন্ন করেন এবং দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় গোয়েন্দা জগতে প্রবেশ করেন। সামরিক গোয়েন্দা বিভাগে (এমআইএস) তাঁর কাজের জন্য তাঁকে যুদ্ধ বিভাগ থেকে দক্ষতার স্বীকৃতি প্রদান করা হয়। যুদ্ধের পর সিআইএ তাঁকে নিয়োগের বিষয়ে বিবেচনা করলেও নথিপত্রে দেখা যায়, তাঁকে সতর্কতার সঙ্গে পর্যবেক্ষণ করতে বলা হয় এবং সীমিত মাত্রায় গোপন তথ্যের প্রবেশাধিকার দেওয়ার সুপারিশ করা হয়।
১৯৫০-এর দশকের মাঝামাঝি আন্ডারহিল সাংবাদিক ও পরামর্শক হিসেবে সুপরিচিত হয়ে ওঠেন। তিনি ‘লাইফ’ ও ‘এসকোয়ার’ পত্রিকায় লিখতেন এবং প্রায়শই মার্কিন সামরিক প্রস্তুতির সমালোচনা করতেন। তাঁর সঙ্গে গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর যোগাযোগ অব্যাহত ছিল, বিশেষ করে সোভিয়েত ইউনিয়নের সামরিক বিশ্লেষণের ক্ষেত্রে। তিনি একবার এফবিআই এবং সিআইএকে হারমান অ্যাক্সেলব্যাঙ্ক সম্পর্কে তথ্য দিয়েছিলেন। এই ব্যক্তি সোভিয়েত ইউনিয়নের সামরিক সরঞ্জাম ও স্থাপনার ছবি বিক্রি করতেন।
নতুন প্রকাশিত নথিগুলো লি হার্ভে ওসওয়াল্ডের ভূমিকা নিয়ে আগের সন্দেহগুলোকেই আরও জোরদার করেছে। সরকারিভাবে বলা হয়, ওসওয়াল্ড একাই হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছিলেন। কিন্তু এই বক্তব্যের অসংগতি আছে। গুলির সময়কাল, বুলেটের গতিপথ এবং প্রত্যক্ষদর্শীদের সাক্ষ্য থেকে দ্বিতীয় একজন বন্দুকধারীর সম্ভাবনার ইঙ্গিত পাওয়া যায়।
ডালাসের ডিলে প্লাজায় প্রেসিডেন্ট কেনেডি ও তাঁর গাড়িবহরের ওপর হামলার মুহূর্ত ধারণকারী কোম্পানি জাপ্রুডার ফিল্মের চিত্র থেকে দেখা যায় যে, গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর কেনেডির মাথা পেছনের দিকে নড়ে যায়। অথচ, প্রচলিত ধারণা, গুলিগুলো পেছন থেকে করা হয়েছিল।
ওসওয়াল্ডের অতীত রহস্য আরও ঘনীভূত করে। সাবেক মেরিন সদস্য ওসওয়াল্ড ১৯৫৯ সালে সোভিয়েত ইউনিয়নে পালিয়ে যান। পরে তিনি এক রুশ নারীকে বিয়ে করে তাঁকে নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে ফিরে আসেন। তাঁর সঙ্গে কিউবার প্রেসিডেন্ট ফিদেল কাস্ত্রোপন্থী ও বিরোধী উভয় গোষ্ঠীর যোগাযোগ ছিল বলে প্রমাণ আছে। পাশাপাশি কেনেডি হত্যাকাণ্ডের আগে থেকেই তাঁকে সিআইএ ও এফবিআই নজরদারিতে রেখেছিল। এসব কারণেই অনেকে সন্দেহ করেন যে, তিনি একা কাজ করেননি।
সম্প্রতি নবগঠিত টাস্কফোর্স অন দ্য ডিক্লাসিফিকেশন অব ফেডারেল সিক্রেটসের প্রধান আনা পলিনা লুনা ‘দুজন বন্দুকধারী’ তত্ত্বকে সমর্থন করেছেন। তাঁর এই অবস্থান বহুদিন ধরে প্রচলিত ওয়ারেন কমিশনের উপসংহারকে চ্যালেঞ্জ জানাচ্ছে।
প্রকাশিত নথিপত্রে স্যামুয়েল জর্জ কামিংস নামে এক ব্যক্তির বিষয়েও গুরুত্বপূর্ণ তথ্য উঠে এসেছে। কামিংস অস্ত্র ব্যবসায়ী ছিলেন এবং তাঁর সঙ্গে বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার সংযোগ ছিল। তিনি সিআইএ-তে অস্ত্র বিশেষজ্ঞ হিসেবে কাজ করেছেন এবং বিদেশি অস্ত্র কেনা ও বিতরণের সঙ্গে জড়িত ছিলেন। নথিপত্রে উল্লেখ আছে, তিনি যুক্তরাষ্ট্রসহ বিদেশি গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করতেন, যার মধ্যে তৎকালীন পশ্চিম জার্মানির গোয়েন্দা সংস্থা বিএনডি অন্যতম। এমনকি তিনি কিউবা বিরোধী গোপন অস্ত্র চুক্তির সঙ্গেও যুক্ত থাকতে পারেন বলে ইঙ্গিত পাওয়া গেছে।
কামিংসের কোম্পানি ইন্টারন্যাশনাল আর্মামেন্ট করপোরেশন (ইন্টারার্মকো) বিভিন্ন বিদ্রোহী গোষ্ঠীর কাছে অস্ত্র সরবরাহ করত। যদিও জন এফ. কেনেডি হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে তাঁর সরাসরি কোনো সম্পর্কের প্রমাণ পাওয়া যায়নি, তবে তাঁর কার্যক্রম ও গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সংযোগ ১৯৬৩ সালের ২২ নভেম্বরের একটি ঘটনার পটভূমি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে।
আরেকটি দীর্ঘদিনের রহস্য হলো কেন জ্যাক রুবি। তিনি ডালাসের এক নাইটক্লাব মালিক। তাঁর সংগঠিত অপরাধচক্রের সঙ্গে সম্পৃক্ততার অভিযোগ ছিল। কেনেডি হত্যার দুই দিন পর তিনি ওসওয়াল্ডকে গুলি করেছেন। যদিও রুবি দাবি করেছিলেন, তিনি শোকের বশে এটি করেছেন, তবে সন্দেহবাদীরা মনে করেন, তিনি ওসওয়াল্ডকে চুপ করিয়ে দিতে চেয়েছিলেন, যাতে সে আরও তথ্য প্রকাশ করতে না পারে।
রুবির বিচার এবং কারাগারে থাকার সময় ক্যানসারে তাঁর মৃত্যুর ঘটনা সন্দেহ আরও বাড়িয়ে তুলেছে। রহস্য আরও ঘনীভূত হয় যখন জানা যায় যে, কারাগারে রুবির চিকিৎসার সঙ্গে যুক্ত ডাক্তারদের একজন লুইস জোলিয়ন ওয়েস্ট ছিলেন সিআইএ-এর মস্তিষ্ক নিয়ন্ত্রণ প্রকল্প ‘এমকেআল্ট্রা’—এর সঙ্গে জড়িত গবেষক।
জেএফকে হত্যাকাণ্ডের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বস্তুগত প্রমাণ এখনো বিতর্কিত রয়ে গেছে। বিশেষ করে ‘ম্যাজিক বুলেট’ তত্ত্ব। যেখানে দাবি করা হয় যে, একটি মাত্র গুলি প্রেসিডেন্ট কেনেডি এবং টেক্সাসের গভর্নর জন কনেলিকে একসঙ্গে আঘাত করেছিল—এই ধারণাকে বহু বিশ্লেষক অবিশ্বাস্য বলে মনে করেন।
এনডিটিভি থেকে অনুবাদ করেছেন আজকের পত্রিকার সহ-সম্পাদক আব্দুর রহমান
আজকের পত্রিকা ডেস্ক

জন এফ কেনেডি হত্যাকাণ্ড মার্কিন মানসে এক দগদগে ক্ষত হয়ে রয়ে গেছে। সেই মুহূর্তের প্রচণ্ড ধাক্কা রিচার্ড ও’কনেলের কবিতা ‘নেক্রোসে’ চিত্রিত হয়েছে। তিনি লিখেছেন, ‘মাথাটি পেছনের দিকে ঝুঁকে মৃত্যুর দিকে এগিয়ে যাচ্ছে, রক্তে ভেসে যাচ্ছে খুলি...।’ ১৯৬৩ সালের ২২ নভেম্বরের ডালাসের ডিলি প্লাজায় সেই ভয়াবহ কয়েক সেকেন্ড এক রহস্য রেখে গেছে, যা এখনো সমাধান হয়নি। এমনকি সদ্য প্রকাশিত ৮০ হাজার নথির পরও সেই রহস্য অনুদ্ঘাটিত।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সিদ্ধান্তে জন এফ কেনেডির হত্যাকাণ্ড সংক্রান্ত নথির প্রকাশ নতুন করে সেদিনের ঘটনাগুলো নিয়ে জল্পনা-কল্পনা উসকে দিয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার জেএফকে সেন্টার ফর দ্য পারফর্মিং আর্টস সফরকালে ট্রাম্প আমেরিকানদের উদ্দেশে বলেন, ‘আপনাদের জানার জন্য অনেক কিছুই আছে এতে।’ এবং তিনি জানান, তাঁর প্রশাসন কোনো তথ্য গোপন রাখবে না।
এর আগে, ২০১৭ সালে ট্রাম্প অতিরিক্ত নথি প্রকাশের সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। যদিও জাতীয় নিরাপত্তার স্বার্থে হাজারো নথির কিছু অংশ অবশ্য প্রকাশ করা হয়নি। চলতি বছরের জানুয়ারিতে তিনি এক নির্বাহী আদেশের মাধ্যমে কেনেডি হত্যাকাণ্ডের পাশাপাশি রবার্ট এফ. কেনেডি ও মার্টিন লুথার কিং জুনিয়রের হত্যাকাণ্ড সম্পর্কিত বাকি সব নথি প্রকাশের নির্দেশ দেন।
সর্বশেষ প্রকাশিত নথিপত্রের অংশ হিসেবে নতুনভাবে চিহ্নিত ১ হাজার ১২৩টি ফাইল প্রকাশ করা হয়েছে। গবেষক ও বিশ্লেষকেরা এখন এসব নথি পর্যালোচনা করে নতুন তথ্য অনুসন্ধান করছেন।
জন এফ কেনেডি হত্যাকাণ্ডের রাতেই গোয়েন্দা কর্মকর্তা জে গ্যারেট আন্ডারহিল আতঙ্কিত অবস্থায় ওয়াশিংটন ছেড়ে পালিয়ে যান। তিনি নিউজার্সিতে এক বন্ধুর বাড়িতে আশ্রয় নেন। সেখানে তিনি স্পষ্টতই ভীত ও বিচলিত ছিলেন। প্রকাশিত নথিতে পাওয়া এক মেমো অনুযায়ী, আন্ডারহিল অভিযোগ করেন যে, সিআইএর ভেতরের একটি ‘ছোট গোষ্ঠী’ কেনেডি হত্যাকাণ্ডের জন্য দায়ী।
প্রকাশিত নথির তথ্য অনুসারে, আন্ডারহিল নাকি তাঁর বন্ধু শার্লিন ফিটসিমন্সকে বলেছিলেন, জন এফ কেনেডি হত্যাকাণ্ডের পেছনে সিআইএ যুক্ত ছিল। তিনি বলেন, ‘(লি হার্ভে) অসওয়াল্ড স্রেফ বলির পাঁঠা।’ আন্ডারহিল দাবি করেন, প্রকৃত ষড়যন্ত্রকারীরা ‘ভয়ংকর কিছু একটা করেছে’ এবং তাঁরা অস্ত্র চোরাচালান, মাদক ব্যবসা ও অন্যান্য অবৈধ কর্মকাণ্ডে জড়িত ছিল।
পরিচিত সামরিক গোয়েন্দা কর্মকর্তা, পরামর্শক এবং সামরিক বিষয়ে লেখক হিসেবে আন্ডারহিলের অতীত তাঁর আশঙ্কাকে আরও বিশ্বাসযোগ্য করে তোলে। ১৯৬৭ সালের ১৯ জুলাই তারিখের এক নথিতে উল্লেখ করা হয়েছে, ‘যেসব বন্ধুর কাছে আন্ডারহিল গিয়েছিলেন, তারা বলেছেন, তিনি তখন নেশাগ্রস্ত ছিলেন না, কিন্তু প্রবলভাবে আতঙ্কিত ছিলেন। তাঁরা জানান, আন্ডারহিল দাবি করেছিলেন যে, অস্ত্র চোরাচালান, মাদক ব্যবসা এবং অন্যান্য অবৈধ কাজে জড়িত সিআইএর একটি চক্র, যারা রাজনৈতিক ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে নিজেদের স্বার্থসিদ্ধি করছিল, তারাই কেনেডিকে হত্যা করেছে। নাকি কেনেডি এই অনিয়মের কথা জানতে পেরেছিলেন এবং এ সম্পর্কে প্রকাশ্যে বলার আগেই তাঁকে হত্যা করা হয়েছিল।’
যদিও বন্ধুরা সব সময় আন্ডারহিলকে সম্পূর্ণ বাস্তববাদী ও যুক্তিবাদী বলে চিনতেন, প্রথমে তারা তাঁর বক্তব্যকে গুরুত্ব দেননি। এ বিষয়ে নথিতে বলা হয়, তাঁর এক বন্ধু বলেন, ‘আমার মনে হয়, এর প্রধান কারণ ছিল—আমরা বিশ্বাসই করতে পারছিলাম না যে, সিআইএর ভেতরে এমন একটি দুর্নীতিগ্রস্ত গোষ্ঠী থাকতে পারে, যারা মাফিয়ার মতোই নির্মম এবং আরও দক্ষ।’
প্রাণের ভয়ে আন্ডারহিল কেনেডি হত্যাকাণ্ডের পরপরই ওয়াশিংটন ছেড়ে পালিয়ে যান এবং তাঁর বন্ধুদের জানান, তিনি দেশত্যাগে বাধ্য হতে পারেন। তবে এর ছয় মাসেরও কম সময় পর ১৯৬৪ সালের ৮ মে আন্ডারহিলকে ওয়াশিংটনে তাঁর নিজ অ্যাপার্টমেন্টে মৃত অবস্থায় পাওয়া যায়। তাঁর মাথা গুলিবিদ্ধ অবস্থায় ছিল। সরকারিভাবে এটিকে আত্মহত্যা বলে ঘোষণা করা হলেও বেশ কিছু অসংগতি নানা গুজবকে উসকে দিয়েছে। যেমন— তিনি ডানহাতি হওয়া সত্ত্বেও তাঁর মাথার বাম কানের পেছনে গুলি কীভাবে হলো?
আন্ডারহিলের মৃতদেহ প্রথম দেখতে পান দ্য নিউ রিপাবলিকের এক ব্যক্তি—অ্যাশার ব্রাইনস। প্রকাশিত গোপন নথিতে বলা হয়েছে, ‘আন্ডারহিলের মৃত্যুকে আত্মহত্যা বলে ঘোষণা দেওয়া মোটেও বিশ্বাসযোগ্য নয়। তাঁর দেহ আবিষ্কার করেন তাঁর লেখালেখির সহযোগী দ্য নিউ রিপাবলিকে অ্যাশার ব্রাইনস।’
নথিতে বলা হয়, ‘তাঁর (আন্ডারহিল) মাথার বাঁ কানের পেছনে গুলি লেগেছিল, আর একটি অটোমেটিক পিস্তল পাওয়া যায় তাঁর শরীরের বাঁ পাশে। বিষয়টি অদ্ভুত। কারণ ব্রাইনস জানান, আন্ডারহিল ছিলেন ডানহাতি। ব্রাইনসের ধারণা, ওই পিস্তলে সাইলেন্সার লাগানো ছিল, কারণ ওই অ্যাপার্টমেন্ট ভবনের বাসিন্দারা কোনো গুলির শব্দ শোনেননি। দেখা যাচ্ছে, আন্ডারহিল কয়েক দিন আগেই মারা গিয়েছিলেন।’
১৯১৫ সালে ব্রুকলিনে জন্মগ্রহণ করা আন্ডারহিল হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক সম্পন্ন করেন এবং দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় গোয়েন্দা জগতে প্রবেশ করেন। সামরিক গোয়েন্দা বিভাগে (এমআইএস) তাঁর কাজের জন্য তাঁকে যুদ্ধ বিভাগ থেকে দক্ষতার স্বীকৃতি প্রদান করা হয়। যুদ্ধের পর সিআইএ তাঁকে নিয়োগের বিষয়ে বিবেচনা করলেও নথিপত্রে দেখা যায়, তাঁকে সতর্কতার সঙ্গে পর্যবেক্ষণ করতে বলা হয় এবং সীমিত মাত্রায় গোপন তথ্যের প্রবেশাধিকার দেওয়ার সুপারিশ করা হয়।
১৯৫০-এর দশকের মাঝামাঝি আন্ডারহিল সাংবাদিক ও পরামর্শক হিসেবে সুপরিচিত হয়ে ওঠেন। তিনি ‘লাইফ’ ও ‘এসকোয়ার’ পত্রিকায় লিখতেন এবং প্রায়শই মার্কিন সামরিক প্রস্তুতির সমালোচনা করতেন। তাঁর সঙ্গে গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর যোগাযোগ অব্যাহত ছিল, বিশেষ করে সোভিয়েত ইউনিয়নের সামরিক বিশ্লেষণের ক্ষেত্রে। তিনি একবার এফবিআই এবং সিআইএকে হারমান অ্যাক্সেলব্যাঙ্ক সম্পর্কে তথ্য দিয়েছিলেন। এই ব্যক্তি সোভিয়েত ইউনিয়নের সামরিক সরঞ্জাম ও স্থাপনার ছবি বিক্রি করতেন।
নতুন প্রকাশিত নথিগুলো লি হার্ভে ওসওয়াল্ডের ভূমিকা নিয়ে আগের সন্দেহগুলোকেই আরও জোরদার করেছে। সরকারিভাবে বলা হয়, ওসওয়াল্ড একাই হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছিলেন। কিন্তু এই বক্তব্যের অসংগতি আছে। গুলির সময়কাল, বুলেটের গতিপথ এবং প্রত্যক্ষদর্শীদের সাক্ষ্য থেকে দ্বিতীয় একজন বন্দুকধারীর সম্ভাবনার ইঙ্গিত পাওয়া যায়।
ডালাসের ডিলে প্লাজায় প্রেসিডেন্ট কেনেডি ও তাঁর গাড়িবহরের ওপর হামলার মুহূর্ত ধারণকারী কোম্পানি জাপ্রুডার ফিল্মের চিত্র থেকে দেখা যায় যে, গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর কেনেডির মাথা পেছনের দিকে নড়ে যায়। অথচ, প্রচলিত ধারণা, গুলিগুলো পেছন থেকে করা হয়েছিল।
ওসওয়াল্ডের অতীত রহস্য আরও ঘনীভূত করে। সাবেক মেরিন সদস্য ওসওয়াল্ড ১৯৫৯ সালে সোভিয়েত ইউনিয়নে পালিয়ে যান। পরে তিনি এক রুশ নারীকে বিয়ে করে তাঁকে নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে ফিরে আসেন। তাঁর সঙ্গে কিউবার প্রেসিডেন্ট ফিদেল কাস্ত্রোপন্থী ও বিরোধী উভয় গোষ্ঠীর যোগাযোগ ছিল বলে প্রমাণ আছে। পাশাপাশি কেনেডি হত্যাকাণ্ডের আগে থেকেই তাঁকে সিআইএ ও এফবিআই নজরদারিতে রেখেছিল। এসব কারণেই অনেকে সন্দেহ করেন যে, তিনি একা কাজ করেননি।
সম্প্রতি নবগঠিত টাস্কফোর্স অন দ্য ডিক্লাসিফিকেশন অব ফেডারেল সিক্রেটসের প্রধান আনা পলিনা লুনা ‘দুজন বন্দুকধারী’ তত্ত্বকে সমর্থন করেছেন। তাঁর এই অবস্থান বহুদিন ধরে প্রচলিত ওয়ারেন কমিশনের উপসংহারকে চ্যালেঞ্জ জানাচ্ছে।
প্রকাশিত নথিপত্রে স্যামুয়েল জর্জ কামিংস নামে এক ব্যক্তির বিষয়েও গুরুত্বপূর্ণ তথ্য উঠে এসেছে। কামিংস অস্ত্র ব্যবসায়ী ছিলেন এবং তাঁর সঙ্গে বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার সংযোগ ছিল। তিনি সিআইএ-তে অস্ত্র বিশেষজ্ঞ হিসেবে কাজ করেছেন এবং বিদেশি অস্ত্র কেনা ও বিতরণের সঙ্গে জড়িত ছিলেন। নথিপত্রে উল্লেখ আছে, তিনি যুক্তরাষ্ট্রসহ বিদেশি গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করতেন, যার মধ্যে তৎকালীন পশ্চিম জার্মানির গোয়েন্দা সংস্থা বিএনডি অন্যতম। এমনকি তিনি কিউবা বিরোধী গোপন অস্ত্র চুক্তির সঙ্গেও যুক্ত থাকতে পারেন বলে ইঙ্গিত পাওয়া গেছে।
কামিংসের কোম্পানি ইন্টারন্যাশনাল আর্মামেন্ট করপোরেশন (ইন্টারার্মকো) বিভিন্ন বিদ্রোহী গোষ্ঠীর কাছে অস্ত্র সরবরাহ করত। যদিও জন এফ. কেনেডি হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে তাঁর সরাসরি কোনো সম্পর্কের প্রমাণ পাওয়া যায়নি, তবে তাঁর কার্যক্রম ও গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সংযোগ ১৯৬৩ সালের ২২ নভেম্বরের একটি ঘটনার পটভূমি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে।
আরেকটি দীর্ঘদিনের রহস্য হলো কেন জ্যাক রুবি। তিনি ডালাসের এক নাইটক্লাব মালিক। তাঁর সংগঠিত অপরাধচক্রের সঙ্গে সম্পৃক্ততার অভিযোগ ছিল। কেনেডি হত্যার দুই দিন পর তিনি ওসওয়াল্ডকে গুলি করেছেন। যদিও রুবি দাবি করেছিলেন, তিনি শোকের বশে এটি করেছেন, তবে সন্দেহবাদীরা মনে করেন, তিনি ওসওয়াল্ডকে চুপ করিয়ে দিতে চেয়েছিলেন, যাতে সে আরও তথ্য প্রকাশ করতে না পারে।
রুবির বিচার এবং কারাগারে থাকার সময় ক্যানসারে তাঁর মৃত্যুর ঘটনা সন্দেহ আরও বাড়িয়ে তুলেছে। রহস্য আরও ঘনীভূত হয় যখন জানা যায় যে, কারাগারে রুবির চিকিৎসার সঙ্গে যুক্ত ডাক্তারদের একজন লুইস জোলিয়ন ওয়েস্ট ছিলেন সিআইএ-এর মস্তিষ্ক নিয়ন্ত্রণ প্রকল্প ‘এমকেআল্ট্রা’—এর সঙ্গে জড়িত গবেষক।
জেএফকে হত্যাকাণ্ডের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বস্তুগত প্রমাণ এখনো বিতর্কিত রয়ে গেছে। বিশেষ করে ‘ম্যাজিক বুলেট’ তত্ত্ব। যেখানে দাবি করা হয় যে, একটি মাত্র গুলি প্রেসিডেন্ট কেনেডি এবং টেক্সাসের গভর্নর জন কনেলিকে একসঙ্গে আঘাত করেছিল—এই ধারণাকে বহু বিশ্লেষক অবিশ্বাস্য বলে মনে করেন।
এনডিটিভি থেকে অনুবাদ করেছেন আজকের পত্রিকার সহ-সম্পাদক আব্দুর রহমান

জন এফ কেনেডি হত্যাকাণ্ড মার্কিন মানসে এক দগদগে ক্ষত হয়ে রয়ে গেছে। সেই মুহূর্তের প্রচণ্ড ধাক্কা রিচার্ড ও’কনেলের কবিতা ‘নেক্রোসে’ চিত্রিত হয়েছে। তিনি লিখেছেন, ‘মাথাটি পেছনের দিকে ঝুঁকে মৃত্যুর দিকে এগিয়ে যাচ্ছে, রক্তে ভেসে যাচ্ছে খুলি...।’ ১৯৬৩ সালের ২২ নভেম্বরের ডালাসের ডিলি প্লাজায় সেই ভয়াবহ কয়েক সেকেন্ড এক রহস্য রেখে গেছে, যা এখনো সমাধান হয়নি। এমনকি সদ্য প্রকাশিত ৮০ হাজার নথির পরও সেই রহস্য অনুদ্ঘাটিত।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সিদ্ধান্তে জন এফ কেনেডির হত্যাকাণ্ড সংক্রান্ত নথির প্রকাশ নতুন করে সেদিনের ঘটনাগুলো নিয়ে জল্পনা-কল্পনা উসকে দিয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার জেএফকে সেন্টার ফর দ্য পারফর্মিং আর্টস সফরকালে ট্রাম্প আমেরিকানদের উদ্দেশে বলেন, ‘আপনাদের জানার জন্য অনেক কিছুই আছে এতে।’ এবং তিনি জানান, তাঁর প্রশাসন কোনো তথ্য গোপন রাখবে না।
এর আগে, ২০১৭ সালে ট্রাম্প অতিরিক্ত নথি প্রকাশের সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। যদিও জাতীয় নিরাপত্তার স্বার্থে হাজারো নথির কিছু অংশ অবশ্য প্রকাশ করা হয়নি। চলতি বছরের জানুয়ারিতে তিনি এক নির্বাহী আদেশের মাধ্যমে কেনেডি হত্যাকাণ্ডের পাশাপাশি রবার্ট এফ. কেনেডি ও মার্টিন লুথার কিং জুনিয়রের হত্যাকাণ্ড সম্পর্কিত বাকি সব নথি প্রকাশের নির্দেশ দেন।
সর্বশেষ প্রকাশিত নথিপত্রের অংশ হিসেবে নতুনভাবে চিহ্নিত ১ হাজার ১২৩টি ফাইল প্রকাশ করা হয়েছে। গবেষক ও বিশ্লেষকেরা এখন এসব নথি পর্যালোচনা করে নতুন তথ্য অনুসন্ধান করছেন।
জন এফ কেনেডি হত্যাকাণ্ডের রাতেই গোয়েন্দা কর্মকর্তা জে গ্যারেট আন্ডারহিল আতঙ্কিত অবস্থায় ওয়াশিংটন ছেড়ে পালিয়ে যান। তিনি নিউজার্সিতে এক বন্ধুর বাড়িতে আশ্রয় নেন। সেখানে তিনি স্পষ্টতই ভীত ও বিচলিত ছিলেন। প্রকাশিত নথিতে পাওয়া এক মেমো অনুযায়ী, আন্ডারহিল অভিযোগ করেন যে, সিআইএর ভেতরের একটি ‘ছোট গোষ্ঠী’ কেনেডি হত্যাকাণ্ডের জন্য দায়ী।
প্রকাশিত নথির তথ্য অনুসারে, আন্ডারহিল নাকি তাঁর বন্ধু শার্লিন ফিটসিমন্সকে বলেছিলেন, জন এফ কেনেডি হত্যাকাণ্ডের পেছনে সিআইএ যুক্ত ছিল। তিনি বলেন, ‘(লি হার্ভে) অসওয়াল্ড স্রেফ বলির পাঁঠা।’ আন্ডারহিল দাবি করেন, প্রকৃত ষড়যন্ত্রকারীরা ‘ভয়ংকর কিছু একটা করেছে’ এবং তাঁরা অস্ত্র চোরাচালান, মাদক ব্যবসা ও অন্যান্য অবৈধ কর্মকাণ্ডে জড়িত ছিল।
পরিচিত সামরিক গোয়েন্দা কর্মকর্তা, পরামর্শক এবং সামরিক বিষয়ে লেখক হিসেবে আন্ডারহিলের অতীত তাঁর আশঙ্কাকে আরও বিশ্বাসযোগ্য করে তোলে। ১৯৬৭ সালের ১৯ জুলাই তারিখের এক নথিতে উল্লেখ করা হয়েছে, ‘যেসব বন্ধুর কাছে আন্ডারহিল গিয়েছিলেন, তারা বলেছেন, তিনি তখন নেশাগ্রস্ত ছিলেন না, কিন্তু প্রবলভাবে আতঙ্কিত ছিলেন। তাঁরা জানান, আন্ডারহিল দাবি করেছিলেন যে, অস্ত্র চোরাচালান, মাদক ব্যবসা এবং অন্যান্য অবৈধ কাজে জড়িত সিআইএর একটি চক্র, যারা রাজনৈতিক ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে নিজেদের স্বার্থসিদ্ধি করছিল, তারাই কেনেডিকে হত্যা করেছে। নাকি কেনেডি এই অনিয়মের কথা জানতে পেরেছিলেন এবং এ সম্পর্কে প্রকাশ্যে বলার আগেই তাঁকে হত্যা করা হয়েছিল।’
যদিও বন্ধুরা সব সময় আন্ডারহিলকে সম্পূর্ণ বাস্তববাদী ও যুক্তিবাদী বলে চিনতেন, প্রথমে তারা তাঁর বক্তব্যকে গুরুত্ব দেননি। এ বিষয়ে নথিতে বলা হয়, তাঁর এক বন্ধু বলেন, ‘আমার মনে হয়, এর প্রধান কারণ ছিল—আমরা বিশ্বাসই করতে পারছিলাম না যে, সিআইএর ভেতরে এমন একটি দুর্নীতিগ্রস্ত গোষ্ঠী থাকতে পারে, যারা মাফিয়ার মতোই নির্মম এবং আরও দক্ষ।’
প্রাণের ভয়ে আন্ডারহিল কেনেডি হত্যাকাণ্ডের পরপরই ওয়াশিংটন ছেড়ে পালিয়ে যান এবং তাঁর বন্ধুদের জানান, তিনি দেশত্যাগে বাধ্য হতে পারেন। তবে এর ছয় মাসেরও কম সময় পর ১৯৬৪ সালের ৮ মে আন্ডারহিলকে ওয়াশিংটনে তাঁর নিজ অ্যাপার্টমেন্টে মৃত অবস্থায় পাওয়া যায়। তাঁর মাথা গুলিবিদ্ধ অবস্থায় ছিল। সরকারিভাবে এটিকে আত্মহত্যা বলে ঘোষণা করা হলেও বেশ কিছু অসংগতি নানা গুজবকে উসকে দিয়েছে। যেমন— তিনি ডানহাতি হওয়া সত্ত্বেও তাঁর মাথার বাম কানের পেছনে গুলি কীভাবে হলো?
আন্ডারহিলের মৃতদেহ প্রথম দেখতে পান দ্য নিউ রিপাবলিকের এক ব্যক্তি—অ্যাশার ব্রাইনস। প্রকাশিত গোপন নথিতে বলা হয়েছে, ‘আন্ডারহিলের মৃত্যুকে আত্মহত্যা বলে ঘোষণা দেওয়া মোটেও বিশ্বাসযোগ্য নয়। তাঁর দেহ আবিষ্কার করেন তাঁর লেখালেখির সহযোগী দ্য নিউ রিপাবলিকে অ্যাশার ব্রাইনস।’
নথিতে বলা হয়, ‘তাঁর (আন্ডারহিল) মাথার বাঁ কানের পেছনে গুলি লেগেছিল, আর একটি অটোমেটিক পিস্তল পাওয়া যায় তাঁর শরীরের বাঁ পাশে। বিষয়টি অদ্ভুত। কারণ ব্রাইনস জানান, আন্ডারহিল ছিলেন ডানহাতি। ব্রাইনসের ধারণা, ওই পিস্তলে সাইলেন্সার লাগানো ছিল, কারণ ওই অ্যাপার্টমেন্ট ভবনের বাসিন্দারা কোনো গুলির শব্দ শোনেননি। দেখা যাচ্ছে, আন্ডারহিল কয়েক দিন আগেই মারা গিয়েছিলেন।’
১৯১৫ সালে ব্রুকলিনে জন্মগ্রহণ করা আন্ডারহিল হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক সম্পন্ন করেন এবং দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় গোয়েন্দা জগতে প্রবেশ করেন। সামরিক গোয়েন্দা বিভাগে (এমআইএস) তাঁর কাজের জন্য তাঁকে যুদ্ধ বিভাগ থেকে দক্ষতার স্বীকৃতি প্রদান করা হয়। যুদ্ধের পর সিআইএ তাঁকে নিয়োগের বিষয়ে বিবেচনা করলেও নথিপত্রে দেখা যায়, তাঁকে সতর্কতার সঙ্গে পর্যবেক্ষণ করতে বলা হয় এবং সীমিত মাত্রায় গোপন তথ্যের প্রবেশাধিকার দেওয়ার সুপারিশ করা হয়।
১৯৫০-এর দশকের মাঝামাঝি আন্ডারহিল সাংবাদিক ও পরামর্শক হিসেবে সুপরিচিত হয়ে ওঠেন। তিনি ‘লাইফ’ ও ‘এসকোয়ার’ পত্রিকায় লিখতেন এবং প্রায়শই মার্কিন সামরিক প্রস্তুতির সমালোচনা করতেন। তাঁর সঙ্গে গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর যোগাযোগ অব্যাহত ছিল, বিশেষ করে সোভিয়েত ইউনিয়নের সামরিক বিশ্লেষণের ক্ষেত্রে। তিনি একবার এফবিআই এবং সিআইএকে হারমান অ্যাক্সেলব্যাঙ্ক সম্পর্কে তথ্য দিয়েছিলেন। এই ব্যক্তি সোভিয়েত ইউনিয়নের সামরিক সরঞ্জাম ও স্থাপনার ছবি বিক্রি করতেন।
নতুন প্রকাশিত নথিগুলো লি হার্ভে ওসওয়াল্ডের ভূমিকা নিয়ে আগের সন্দেহগুলোকেই আরও জোরদার করেছে। সরকারিভাবে বলা হয়, ওসওয়াল্ড একাই হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছিলেন। কিন্তু এই বক্তব্যের অসংগতি আছে। গুলির সময়কাল, বুলেটের গতিপথ এবং প্রত্যক্ষদর্শীদের সাক্ষ্য থেকে দ্বিতীয় একজন বন্দুকধারীর সম্ভাবনার ইঙ্গিত পাওয়া যায়।
ডালাসের ডিলে প্লাজায় প্রেসিডেন্ট কেনেডি ও তাঁর গাড়িবহরের ওপর হামলার মুহূর্ত ধারণকারী কোম্পানি জাপ্রুডার ফিল্মের চিত্র থেকে দেখা যায় যে, গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর কেনেডির মাথা পেছনের দিকে নড়ে যায়। অথচ, প্রচলিত ধারণা, গুলিগুলো পেছন থেকে করা হয়েছিল।
ওসওয়াল্ডের অতীত রহস্য আরও ঘনীভূত করে। সাবেক মেরিন সদস্য ওসওয়াল্ড ১৯৫৯ সালে সোভিয়েত ইউনিয়নে পালিয়ে যান। পরে তিনি এক রুশ নারীকে বিয়ে করে তাঁকে নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে ফিরে আসেন। তাঁর সঙ্গে কিউবার প্রেসিডেন্ট ফিদেল কাস্ত্রোপন্থী ও বিরোধী উভয় গোষ্ঠীর যোগাযোগ ছিল বলে প্রমাণ আছে। পাশাপাশি কেনেডি হত্যাকাণ্ডের আগে থেকেই তাঁকে সিআইএ ও এফবিআই নজরদারিতে রেখেছিল। এসব কারণেই অনেকে সন্দেহ করেন যে, তিনি একা কাজ করেননি।
সম্প্রতি নবগঠিত টাস্কফোর্স অন দ্য ডিক্লাসিফিকেশন অব ফেডারেল সিক্রেটসের প্রধান আনা পলিনা লুনা ‘দুজন বন্দুকধারী’ তত্ত্বকে সমর্থন করেছেন। তাঁর এই অবস্থান বহুদিন ধরে প্রচলিত ওয়ারেন কমিশনের উপসংহারকে চ্যালেঞ্জ জানাচ্ছে।
প্রকাশিত নথিপত্রে স্যামুয়েল জর্জ কামিংস নামে এক ব্যক্তির বিষয়েও গুরুত্বপূর্ণ তথ্য উঠে এসেছে। কামিংস অস্ত্র ব্যবসায়ী ছিলেন এবং তাঁর সঙ্গে বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার সংযোগ ছিল। তিনি সিআইএ-তে অস্ত্র বিশেষজ্ঞ হিসেবে কাজ করেছেন এবং বিদেশি অস্ত্র কেনা ও বিতরণের সঙ্গে জড়িত ছিলেন। নথিপত্রে উল্লেখ আছে, তিনি যুক্তরাষ্ট্রসহ বিদেশি গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করতেন, যার মধ্যে তৎকালীন পশ্চিম জার্মানির গোয়েন্দা সংস্থা বিএনডি অন্যতম। এমনকি তিনি কিউবা বিরোধী গোপন অস্ত্র চুক্তির সঙ্গেও যুক্ত থাকতে পারেন বলে ইঙ্গিত পাওয়া গেছে।
কামিংসের কোম্পানি ইন্টারন্যাশনাল আর্মামেন্ট করপোরেশন (ইন্টারার্মকো) বিভিন্ন বিদ্রোহী গোষ্ঠীর কাছে অস্ত্র সরবরাহ করত। যদিও জন এফ. কেনেডি হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে তাঁর সরাসরি কোনো সম্পর্কের প্রমাণ পাওয়া যায়নি, তবে তাঁর কার্যক্রম ও গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সংযোগ ১৯৬৩ সালের ২২ নভেম্বরের একটি ঘটনার পটভূমি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে।
আরেকটি দীর্ঘদিনের রহস্য হলো কেন জ্যাক রুবি। তিনি ডালাসের এক নাইটক্লাব মালিক। তাঁর সংগঠিত অপরাধচক্রের সঙ্গে সম্পৃক্ততার অভিযোগ ছিল। কেনেডি হত্যার দুই দিন পর তিনি ওসওয়াল্ডকে গুলি করেছেন। যদিও রুবি দাবি করেছিলেন, তিনি শোকের বশে এটি করেছেন, তবে সন্দেহবাদীরা মনে করেন, তিনি ওসওয়াল্ডকে চুপ করিয়ে দিতে চেয়েছিলেন, যাতে সে আরও তথ্য প্রকাশ করতে না পারে।
রুবির বিচার এবং কারাগারে থাকার সময় ক্যানসারে তাঁর মৃত্যুর ঘটনা সন্দেহ আরও বাড়িয়ে তুলেছে। রহস্য আরও ঘনীভূত হয় যখন জানা যায় যে, কারাগারে রুবির চিকিৎসার সঙ্গে যুক্ত ডাক্তারদের একজন লুইস জোলিয়ন ওয়েস্ট ছিলেন সিআইএ-এর মস্তিষ্ক নিয়ন্ত্রণ প্রকল্প ‘এমকেআল্ট্রা’—এর সঙ্গে জড়িত গবেষক।
জেএফকে হত্যাকাণ্ডের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বস্তুগত প্রমাণ এখনো বিতর্কিত রয়ে গেছে। বিশেষ করে ‘ম্যাজিক বুলেট’ তত্ত্ব। যেখানে দাবি করা হয় যে, একটি মাত্র গুলি প্রেসিডেন্ট কেনেডি এবং টেক্সাসের গভর্নর জন কনেলিকে একসঙ্গে আঘাত করেছিল—এই ধারণাকে বহু বিশ্লেষক অবিশ্বাস্য বলে মনে করেন।
এনডিটিভি থেকে অনুবাদ করেছেন আজকের পত্রিকার সহ-সম্পাদক আব্দুর রহমান

আগামী বছরের অর্থাৎ, ২০২৬ সালের ইউরোভিশন গানের প্রতিযোগিতা বয়কট করবে আয়ারল্যান্ড, স্পেন, নেদারল্যান্ডস ও স্লোভেনিয়া। কারণ আয়োজকেরা ইসরায়েলকে প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে দিয়েছে। দেশগুলোর অভিযোগ, গাজায় গণহত্যা চালানো ইসরায়েলকে এই প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে দেওয়া ঠিক হয়নি।
১২ মিনিট আগে
ভারত ও রাশিয়ার মধ্যে কৌশলগত সম্পর্ক আরও মজবুত করার লক্ষ্যে যখন ভ্লাদিমির পুতিনের ৪-৫ ডিসেম্বরের রাষ্ট্রীয় সফর ও ২৩ তম বার্ষিক শীর্ষ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হচ্ছে, তখন কূটনৈতিক আলোচনার বাইরেও একটি বিষয় নজর কেড়েছে—রুশ প্রেসিডেন্টের খাবার সংক্রান্ত অভূতপূর্ব নিরাপত্তা ব্যবস্থা।
২৭ মিনিট আগে
যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তর বা স্টেট ডিপার্টমেন্ট ভেনেজুয়েলায় ভ্রমণ নিয়ে নতুন করে কঠোর সতর্কতা জারি করেছে। দেশটিতে থাকা সব মার্কিন নাগরিক ও স্থায়ী বাসিন্দাদের অবিলম্বে দেশটি ছেড়ে যাওয়ার আহ্বান জানিয়েছে তারা। নিরাপত্তা হুমকি দ্রুত বেড়ে যাওয়ায় এই নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
১ ঘণ্টা আগে
পাকিস্তানের সেনাপ্রধান ফিল্ড মার্শাল সৈয়দ আসিম মুনিরকে দেশের প্রথম চিফ অব ডিফেন্স ফোর্সেস (সিডিএফ) হিসাবে ঘোষণা করা হয়েছে। সত্তরের দশকের পর দেশটির সামরিক কমান্ডে এটি হলো সবচেয়ে বড়ো ও ব্যাপক পরিবর্তন। প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফের পরামর্শক্রমে প্রেসিডেন্ট আসিফ আলী জারদারি এই নিয়োগে অনুমোদন দেন।
২ ঘণ্টা আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

আগামী বছরের অর্থাৎ, ২০২৬ সালের ইউরোভিশন গানের প্রতিযোগিতা বয়কট করবে আয়ারল্যান্ড, স্পেন, নেদারল্যান্ডস ও স্লোভেনিয়া। কারণ আয়োজকেরা ইসরায়েলকে প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে দিয়েছে। দেশগুলোর অভিযোগ, গাজায় গণহত্যা চালানো ইসরায়েলকে এই প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে দেওয়া ঠিক হয়নি।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির খবরে বলা হয়েছে, গাজায় যুদ্ধ এবং নির্বাচনে অনিয়মের অভিযোগ তুলে এসব দেশ ইসরায়েলকে বাদ দেওয়ার দাবি করেছিল। জেনেভায় এক বৈঠকে গোপন ভোটের দাবি তোলে স্পেনের সম্প্রচার সংস্থা আরটিভিই। তারা জানায়, আয়োজনকারীরা সেই দাবি মানেনি। এতে উৎসবের প্রতি তাদের অবিশ্বাস আরও বেড়েছে।
আয়ারল্যান্ডের সংবাদমাধ্যম আরটিই জানায়, গাজার ভয়াবহ প্রাণহানি এবং চলমান মানবিক সংকটের সময়ে প্রতিযোগিতায় অংশ নেওয়া তাদের কাছে অগ্রহণযোগ্য। স্পেন ইউরোভিশনের ‘বিগ ফাইভ’ দেশের একটি। ফ্রান্স, জার্মানি, ইতালি ও যুক্তরাজ্যের সঙ্গে স্পেনের শিল্পীরা সরাসরি ফাইনালে ওঠে। কারণ এসব দেশের সম্প্রচার সংস্থা ইবিইউকে সবচেয়ে বেশি অর্থ দেয়। গতকাল বৃহস্পতিবার প্রায় ৫০টি সম্প্রচার সংস্থা—যার মধ্যে বিবিসিও আছে—ইউরোপিয়ান ব্রডকাস্টিং ইউনিয়নের (ইবিইউ) বৈঠকে যোগ দেয়। প্রতিবছর ১৫ কোটির বেশি দর্শক এই প্রতিযোগিতা দেখে, তাই ভবিষ্যৎ নিয়ে আলোচনা হয়। ইসরায়েল তাদের অংশগ্রহণকারী ইউভাল রাফায়েলের পক্ষে ভোট বাড়াতে অন্যদের সাহায্য নিয়েছে, এমন অভিযোগের পর সরকার ও তৃতীয় পক্ষের প্রভাব ঠেকাতে নতুন নিয়মে সম্মতি চাইছিল ইবিইউ।
বিবিসি জানায়, এই নিয়ম মানার ভোটের সঙ্গে একটি শর্ত জুড়ে দেওয়া হয়। সদস্যরা রাজি হলে ইসরায়েলকে নিয়ে আর কোনো ভোট হবে না। ইবিইউ জানায়, যারা নতুন নিয়ম মানতে সম্মত, তারা ইউরোভিশন ২০২৬-এ অংশ নিতে পারবে। ইউরোভিশন পরিচালক মার্টিন গ্রিন বলেন, সদস্যরা ইসরায়েলের অংশগ্রহণ নিয়ে খোলামেলা বিতর্কের সুযোগ পেয়েছে। ভোটে দেখা গেছে, অধিকাংশই চায় এই প্রতিযোগিতা রাজনৈতিক মঞ্চ না হোক, নিরপেক্ষতা বজায় থাকুক।
ইসরায়েলের প্রেসিডেন্ট আইজ্যাক হেরজগ সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানান। তিনি বলেন, এটি সংহতি, বন্ধুত্ব ও সহযোগিতার প্রতীক। ইসরায়েল বিশ্বমঞ্চে প্রতিনিধিত্ব পাওয়ার যোগ্য। ইসরায়েলের সম্প্রচার সংস্থা কান–এর প্রধান গলান ইয়োখপাজ বলেন, ইসরায়েলকে সরাতে চাওয়া সংস্কৃতিগত বয়কট ছাড়া কিছু নয়। আজ বয়কট শুরু হলে কাল অন্যদেরও ক্ষতি হতে পারে। ইউরোভিশনের ৭০ তম বছরে কি এমন স্মৃতি আমরা চাই?
যুক্তরাজ্যে ইউরোভিশন দেখায় বিবিসি। তারা জানায়, ইবিইউর নিয়ম কার্যকরে তারা সম্মিলিত সিদ্ধান্তকে সমর্থন করে। তবে এই সিদ্ধান্ত ইউরোভিশন সম্প্রদায়ের ভেতর বড় বিভাজন তৈরি করেছে। ডাচ সম্প্রচার সংস্থা অ্যাভরোট্রস জানায়, বর্তমান পরিস্থিতিতে অংশগ্রহণ তাদের মূল মূল্যবোধের সঙ্গে যায় না।
স্পেনের আরটিভিই জানায়, গত সেপ্টেম্বরেই তারা সিদ্ধান্ত নিয়েছিল—ইসরায়েল থাকলে স্পেন ইউরোভিশন থেকে সরে দাঁড়াবে। এই কারণে ২০২৬ সালের ফাইনাল ও সেমিফাইনাল তারা সম্প্রচারও করবে না। স্লোভেনিয়ার আরটিভিও জানায়, তাদের অবস্থান অপরিবর্তিত। নিয়ম বদলালেও মত বদলায়নি। ন্যায়নীতি রক্ষা করা তাদের দায়িত্ব। বেলজিয়ামের সম্প্রচার সংস্থা বলেছে, তারা কয়েক দিনের মধ্যে অবস্থান জানাবে।
অন্যদিকে নরওয়ে, সুইডেন, ফিনল্যান্ড, ডেনমার্ক ও আইসল্যান্ডসহ নর্ডিক দেশগুলো নিয়ম সংশোধনকে সমর্থন করেছে। তবে আইসল্যান্ড এখনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়নি। জার্মানি, যারা আগে বলেছিল ইসরায়েল বাদ গেলে তারাও সরে দাঁড়াবে, সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছে। তাদের সংস্থা এআরডি জানায়, তারা পরের বছর অংশ নিতে আগ্রহী এবং বৈচিত্র্য ও সংহতির উৎসব হিসেবে এটিকে দেখে। তবে যারা সরে দাঁড়িয়েছে, তাদের সিদ্ধান্তকে তারা সম্মান করে।

আগামী বছরের অর্থাৎ, ২০২৬ সালের ইউরোভিশন গানের প্রতিযোগিতা বয়কট করবে আয়ারল্যান্ড, স্পেন, নেদারল্যান্ডস ও স্লোভেনিয়া। কারণ আয়োজকেরা ইসরায়েলকে প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে দিয়েছে। দেশগুলোর অভিযোগ, গাজায় গণহত্যা চালানো ইসরায়েলকে এই প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে দেওয়া ঠিক হয়নি।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির খবরে বলা হয়েছে, গাজায় যুদ্ধ এবং নির্বাচনে অনিয়মের অভিযোগ তুলে এসব দেশ ইসরায়েলকে বাদ দেওয়ার দাবি করেছিল। জেনেভায় এক বৈঠকে গোপন ভোটের দাবি তোলে স্পেনের সম্প্রচার সংস্থা আরটিভিই। তারা জানায়, আয়োজনকারীরা সেই দাবি মানেনি। এতে উৎসবের প্রতি তাদের অবিশ্বাস আরও বেড়েছে।
আয়ারল্যান্ডের সংবাদমাধ্যম আরটিই জানায়, গাজার ভয়াবহ প্রাণহানি এবং চলমান মানবিক সংকটের সময়ে প্রতিযোগিতায় অংশ নেওয়া তাদের কাছে অগ্রহণযোগ্য। স্পেন ইউরোভিশনের ‘বিগ ফাইভ’ দেশের একটি। ফ্রান্স, জার্মানি, ইতালি ও যুক্তরাজ্যের সঙ্গে স্পেনের শিল্পীরা সরাসরি ফাইনালে ওঠে। কারণ এসব দেশের সম্প্রচার সংস্থা ইবিইউকে সবচেয়ে বেশি অর্থ দেয়। গতকাল বৃহস্পতিবার প্রায় ৫০টি সম্প্রচার সংস্থা—যার মধ্যে বিবিসিও আছে—ইউরোপিয়ান ব্রডকাস্টিং ইউনিয়নের (ইবিইউ) বৈঠকে যোগ দেয়। প্রতিবছর ১৫ কোটির বেশি দর্শক এই প্রতিযোগিতা দেখে, তাই ভবিষ্যৎ নিয়ে আলোচনা হয়। ইসরায়েল তাদের অংশগ্রহণকারী ইউভাল রাফায়েলের পক্ষে ভোট বাড়াতে অন্যদের সাহায্য নিয়েছে, এমন অভিযোগের পর সরকার ও তৃতীয় পক্ষের প্রভাব ঠেকাতে নতুন নিয়মে সম্মতি চাইছিল ইবিইউ।
বিবিসি জানায়, এই নিয়ম মানার ভোটের সঙ্গে একটি শর্ত জুড়ে দেওয়া হয়। সদস্যরা রাজি হলে ইসরায়েলকে নিয়ে আর কোনো ভোট হবে না। ইবিইউ জানায়, যারা নতুন নিয়ম মানতে সম্মত, তারা ইউরোভিশন ২০২৬-এ অংশ নিতে পারবে। ইউরোভিশন পরিচালক মার্টিন গ্রিন বলেন, সদস্যরা ইসরায়েলের অংশগ্রহণ নিয়ে খোলামেলা বিতর্কের সুযোগ পেয়েছে। ভোটে দেখা গেছে, অধিকাংশই চায় এই প্রতিযোগিতা রাজনৈতিক মঞ্চ না হোক, নিরপেক্ষতা বজায় থাকুক।
ইসরায়েলের প্রেসিডেন্ট আইজ্যাক হেরজগ সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানান। তিনি বলেন, এটি সংহতি, বন্ধুত্ব ও সহযোগিতার প্রতীক। ইসরায়েল বিশ্বমঞ্চে প্রতিনিধিত্ব পাওয়ার যোগ্য। ইসরায়েলের সম্প্রচার সংস্থা কান–এর প্রধান গলান ইয়োখপাজ বলেন, ইসরায়েলকে সরাতে চাওয়া সংস্কৃতিগত বয়কট ছাড়া কিছু নয়। আজ বয়কট শুরু হলে কাল অন্যদেরও ক্ষতি হতে পারে। ইউরোভিশনের ৭০ তম বছরে কি এমন স্মৃতি আমরা চাই?
যুক্তরাজ্যে ইউরোভিশন দেখায় বিবিসি। তারা জানায়, ইবিইউর নিয়ম কার্যকরে তারা সম্মিলিত সিদ্ধান্তকে সমর্থন করে। তবে এই সিদ্ধান্ত ইউরোভিশন সম্প্রদায়ের ভেতর বড় বিভাজন তৈরি করেছে। ডাচ সম্প্রচার সংস্থা অ্যাভরোট্রস জানায়, বর্তমান পরিস্থিতিতে অংশগ্রহণ তাদের মূল মূল্যবোধের সঙ্গে যায় না।
স্পেনের আরটিভিই জানায়, গত সেপ্টেম্বরেই তারা সিদ্ধান্ত নিয়েছিল—ইসরায়েল থাকলে স্পেন ইউরোভিশন থেকে সরে দাঁড়াবে। এই কারণে ২০২৬ সালের ফাইনাল ও সেমিফাইনাল তারা সম্প্রচারও করবে না। স্লোভেনিয়ার আরটিভিও জানায়, তাদের অবস্থান অপরিবর্তিত। নিয়ম বদলালেও মত বদলায়নি। ন্যায়নীতি রক্ষা করা তাদের দায়িত্ব। বেলজিয়ামের সম্প্রচার সংস্থা বলেছে, তারা কয়েক দিনের মধ্যে অবস্থান জানাবে।
অন্যদিকে নরওয়ে, সুইডেন, ফিনল্যান্ড, ডেনমার্ক ও আইসল্যান্ডসহ নর্ডিক দেশগুলো নিয়ম সংশোধনকে সমর্থন করেছে। তবে আইসল্যান্ড এখনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়নি। জার্মানি, যারা আগে বলেছিল ইসরায়েল বাদ গেলে তারাও সরে দাঁড়াবে, সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছে। তাদের সংস্থা এআরডি জানায়, তারা পরের বছর অংশ নিতে আগ্রহী এবং বৈচিত্র্য ও সংহতির উৎসব হিসেবে এটিকে দেখে। তবে যারা সরে দাঁড়িয়েছে, তাদের সিদ্ধান্তকে তারা সম্মান করে।

জন এফ কেনেডির হত্যাকাণ্ডের রাতেই গোয়েন্দা কর্মকর্তা জে গ্যারেট আন্ডারহিল আতঙ্কিত অবস্থায় ওয়াশিংটন ছেড়ে পালিয়ে যান। তিনি নিউজার্সিতে এক বন্ধুর বাড়িতে আশ্রয় নেন। সেখানে তিনি স্পষ্টতই ভীত ও বিচলিত ছিলেন। প্রকাশিত নথিতে পাওয়া এক মেমো অনুযায়ী, আন্ডারহিল অভিযোগ করেন যে, সিআইএ-এর ভেতরের একটি ‘ছোট গোষ্ঠী’ ক
১৯ মার্চ ২০২৫
ভারত ও রাশিয়ার মধ্যে কৌশলগত সম্পর্ক আরও মজবুত করার লক্ষ্যে যখন ভ্লাদিমির পুতিনের ৪-৫ ডিসেম্বরের রাষ্ট্রীয় সফর ও ২৩ তম বার্ষিক শীর্ষ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হচ্ছে, তখন কূটনৈতিক আলোচনার বাইরেও একটি বিষয় নজর কেড়েছে—রুশ প্রেসিডেন্টের খাবার সংক্রান্ত অভূতপূর্ব নিরাপত্তা ব্যবস্থা।
২৭ মিনিট আগে
যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তর বা স্টেট ডিপার্টমেন্ট ভেনেজুয়েলায় ভ্রমণ নিয়ে নতুন করে কঠোর সতর্কতা জারি করেছে। দেশটিতে থাকা সব মার্কিন নাগরিক ও স্থায়ী বাসিন্দাদের অবিলম্বে দেশটি ছেড়ে যাওয়ার আহ্বান জানিয়েছে তারা। নিরাপত্তা হুমকি দ্রুত বেড়ে যাওয়ায় এই নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
১ ঘণ্টা আগে
পাকিস্তানের সেনাপ্রধান ফিল্ড মার্শাল সৈয়দ আসিম মুনিরকে দেশের প্রথম চিফ অব ডিফেন্স ফোর্সেস (সিডিএফ) হিসাবে ঘোষণা করা হয়েছে। সত্তরের দশকের পর দেশটির সামরিক কমান্ডে এটি হলো সবচেয়ে বড়ো ও ব্যাপক পরিবর্তন। প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফের পরামর্শক্রমে প্রেসিডেন্ট আসিফ আলী জারদারি এই নিয়োগে অনুমোদন দেন।
২ ঘণ্টা আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

ভারত ও রাশিয়ার মধ্যে কৌশলগত সম্পর্ক আরও মজবুত করার লক্ষ্যে যখন ভ্লাদিমির পুতিনের ৪-৫ ডিসেম্বরের রাষ্ট্রীয় সফর ও ২৩ তম বার্ষিক শীর্ষ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হচ্ছে, তখন কূটনৈতিক আলোচনার বাইরেও একটি বিষয় নজর কেড়েছে—রুশ প্রেসিডেন্টের খাবার সংক্রান্ত অভূতপূর্ব নিরাপত্তা ব্যবস্থা। অন্য বিশ্বনেতাদের মতো তিনিও আনুষ্ঠানিক ভোজসভায় অংশ নেন, তবে তাঁর খাবার সবচেয়ে কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রিত।
পুতিন হোটেল বা আয়োজক দেশের কর্মীদের তৈরি খাবার গ্রহণ করেন না। তাঁর খাবারের জন্য বিশেষ নিরাপত্তা প্রোটোকল অনুসরণ করা হয়।
বিদেশ সফরে পুতিনের খাদ্য ব্যবস্থাপনা প্রায় সামরিক নির্ভুলতার সঙ্গে নিয়ন্ত্রিত হয়। এই কঠোরতার মূল কারণ হলো নিরাপত্তা—বিশেষজ্ঞদের মতে, সম্ভাব্য বিষক্রিয়া বা গুপ্তহত্যার চেষ্টা এড়াতে এই ব্যবস্থা অপরিহার্য। পুতিনের জন্য খাবার পরিবেশনের আগে যেসব প্রক্রিয়া অনুসরণ করা হয়:
বিশেষ শেফ ও লজিস্টিকস: প্রশিক্ষিত রুশ শেফ, পুষ্টিবিদ এবং সহযোগী কর্মীরা তাঁর সঙ্গে ফ্লাইটে আসেন। তাঁরাই বিশেষভাবে নিয়ন্ত্রিত রান্নাঘরে পুতিনের খাবার তৈরি করেন।
মোবাইল পরীক্ষাগার: তিনি ভ্রমণের সময় একটি অত্যাধুনিক মোবাইল খাদ্য পরীক্ষাগারও সঙ্গে রাখেন। এই ল্যাব পরিবেশনের আগে প্রতিটি খাদ্য এবং পানীয়ের উপাদান দ্রুত পরীক্ষা করে সম্ভাব্য বিষ বা ক্ষতিকারক বস্তুর উপস্থিতি যাচাই করে।
নিয়ন্ত্রিত উপাদান: খাবারের উপাদান হয় সরাসরি রাশিয়া থেকে আনা হয়, নতুবা আয়োজক দেশে দীর্ঘ পরীক্ষার মাধ্যমে এর নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হয়। শুধু অনুমোদিত এবং পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে যাচাই করা উপাদানই তাঁর রান্নাঘরে প্রবেশাধিকার পায়।
বিশেষ পরিবেশন: আনুষ্ঠানিক ভোজসভার ক্ষেত্রেও এই সতর্কতা বজায় থাকে। যদিও তিনি উপস্থিত থাকেন, কিন্তু সাধারণত তাঁর প্লেটে পরিবেশিত খাবারটি নিজস্ব শেফদের দ্বারা পৃথকভাবে প্রস্তুতকৃত হয়। খাদ্য পরিবেশনের আগে প্রশিক্ষিত পরীক্ষকদের দ্বারা চূড়ান্ত যাচাই করা হয়। এই প্রক্রিয়া মস্কো এবং বিদেশে উভয় ক্ষেত্রেই অনুসরণ করা হয়।
পুতিনের দৈনন্দিন খাদ্যাভ্যাস
খাবারের ব্যবস্থা নিয়ে এত কড়াকড়ি থাকলেও, পুতিনের দৈনন্দিন খাদ্যতালিকা কিন্তু বেশ সাধারণ। তাঁর জীবনযাপনও সুশৃঙ্খল। তিনি জমকালো ভোজের পরিবর্তে পুষ্টিকর ও সহজলভ্য খাবার পছন্দ করেন।
সকালের নাশতা: তাঁর সকাল শুরু হয় উচ্চ-প্রোটিন এবং কম-চিনিযুক্ত খাবার দিয়ে। সাধারণত মধুসহ ভরোগ (Tvorog, রুশ কটেজ চিজ) অথবা পরিজ (স্টার্চ ও পানি বা দুধ সহযোগে তৈরি) প্রধান খাদ্য। এ ছাড়া তিনি তাজা ফলের রস এবং মাঝে মাঝে কাঁচা কোয়েলের ডিম বা অমলেট গ্রহণ করেন। তাঁর খাদ্যাভ্যাসে অতিরিক্ত মিষ্টি বা চর্বিযুক্ত খাবারের স্থান নেই।
দুপুরের ও রাতের খাবার: পুতিন লাল মাংসের চেয়ে মাছ বেশি পছন্দ করেন, বিশেষত গ্রিলড বা স্মোকড মাছের পদ। ভেড়ার মাংসও তাঁর প্রিয়। তবে অতিরিক্ত মসলাযুক্ত রান্না তিনি এড়িয়ে চলেন। তাঁর বেশির ভাগ খাবারেই টমেটো, শসা এবং অন্যান্য সাধারণ সবজির সালাদ বাধ্যতামূলক। এই সবজিগুলো ভিটামিন এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের জোগান দেয়।
পানীয় ও ডেজার্ট: পুতিন মিষ্টি বেক করা সামগ্রী, কেক বা বাটারি পেস্ট্রি একদম পছন্দ করেন না। পানীয়ের ক্ষেত্রে তাজা জুস, সাধারণ ভেষজ পানীয় এবং কেফির (এক প্রকার ফার্মেন্টেড দুগ্ধজাত পানীয়) পান করেন। তবে তাঁর সুশৃঙ্খল রুটিনের মাঝেও একটি ছোট দুর্বলতা রয়েছে—তা হলো পেস্তা আইসক্রিম!
বিশেষজ্ঞরা বলেন, পুতিনের এই খাদ্যাভ্যাস তাঁর রাজনৈতিক ভাবমূর্তির সঙ্গে পুরোপুরি সামঞ্জস্যপূর্ণ: সংযত, শৃঙ্খলাবদ্ধ এবং ঐতিহ্যমুখী। পুষ্টি, প্রোটিন এবং সহজলভ্যতা ওপর তাঁর এই জোর, তাঁর দীর্ঘ ও অনিয়মিত কর্মঘণ্টার জন্য প্রয়োজনীয় স্থিতিশীল ক্যালরির জোগান নিশ্চিত করতে সাহায্য করে।

ভারত ও রাশিয়ার মধ্যে কৌশলগত সম্পর্ক আরও মজবুত করার লক্ষ্যে যখন ভ্লাদিমির পুতিনের ৪-৫ ডিসেম্বরের রাষ্ট্রীয় সফর ও ২৩ তম বার্ষিক শীর্ষ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হচ্ছে, তখন কূটনৈতিক আলোচনার বাইরেও একটি বিষয় নজর কেড়েছে—রুশ প্রেসিডেন্টের খাবার সংক্রান্ত অভূতপূর্ব নিরাপত্তা ব্যবস্থা। অন্য বিশ্বনেতাদের মতো তিনিও আনুষ্ঠানিক ভোজসভায় অংশ নেন, তবে তাঁর খাবার সবচেয়ে কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রিত।
পুতিন হোটেল বা আয়োজক দেশের কর্মীদের তৈরি খাবার গ্রহণ করেন না। তাঁর খাবারের জন্য বিশেষ নিরাপত্তা প্রোটোকল অনুসরণ করা হয়।
বিদেশ সফরে পুতিনের খাদ্য ব্যবস্থাপনা প্রায় সামরিক নির্ভুলতার সঙ্গে নিয়ন্ত্রিত হয়। এই কঠোরতার মূল কারণ হলো নিরাপত্তা—বিশেষজ্ঞদের মতে, সম্ভাব্য বিষক্রিয়া বা গুপ্তহত্যার চেষ্টা এড়াতে এই ব্যবস্থা অপরিহার্য। পুতিনের জন্য খাবার পরিবেশনের আগে যেসব প্রক্রিয়া অনুসরণ করা হয়:
বিশেষ শেফ ও লজিস্টিকস: প্রশিক্ষিত রুশ শেফ, পুষ্টিবিদ এবং সহযোগী কর্মীরা তাঁর সঙ্গে ফ্লাইটে আসেন। তাঁরাই বিশেষভাবে নিয়ন্ত্রিত রান্নাঘরে পুতিনের খাবার তৈরি করেন।
মোবাইল পরীক্ষাগার: তিনি ভ্রমণের সময় একটি অত্যাধুনিক মোবাইল খাদ্য পরীক্ষাগারও সঙ্গে রাখেন। এই ল্যাব পরিবেশনের আগে প্রতিটি খাদ্য এবং পানীয়ের উপাদান দ্রুত পরীক্ষা করে সম্ভাব্য বিষ বা ক্ষতিকারক বস্তুর উপস্থিতি যাচাই করে।
নিয়ন্ত্রিত উপাদান: খাবারের উপাদান হয় সরাসরি রাশিয়া থেকে আনা হয়, নতুবা আয়োজক দেশে দীর্ঘ পরীক্ষার মাধ্যমে এর নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হয়। শুধু অনুমোদিত এবং পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে যাচাই করা উপাদানই তাঁর রান্নাঘরে প্রবেশাধিকার পায়।
বিশেষ পরিবেশন: আনুষ্ঠানিক ভোজসভার ক্ষেত্রেও এই সতর্কতা বজায় থাকে। যদিও তিনি উপস্থিত থাকেন, কিন্তু সাধারণত তাঁর প্লেটে পরিবেশিত খাবারটি নিজস্ব শেফদের দ্বারা পৃথকভাবে প্রস্তুতকৃত হয়। খাদ্য পরিবেশনের আগে প্রশিক্ষিত পরীক্ষকদের দ্বারা চূড়ান্ত যাচাই করা হয়। এই প্রক্রিয়া মস্কো এবং বিদেশে উভয় ক্ষেত্রেই অনুসরণ করা হয়।
পুতিনের দৈনন্দিন খাদ্যাভ্যাস
খাবারের ব্যবস্থা নিয়ে এত কড়াকড়ি থাকলেও, পুতিনের দৈনন্দিন খাদ্যতালিকা কিন্তু বেশ সাধারণ। তাঁর জীবনযাপনও সুশৃঙ্খল। তিনি জমকালো ভোজের পরিবর্তে পুষ্টিকর ও সহজলভ্য খাবার পছন্দ করেন।
সকালের নাশতা: তাঁর সকাল শুরু হয় উচ্চ-প্রোটিন এবং কম-চিনিযুক্ত খাবার দিয়ে। সাধারণত মধুসহ ভরোগ (Tvorog, রুশ কটেজ চিজ) অথবা পরিজ (স্টার্চ ও পানি বা দুধ সহযোগে তৈরি) প্রধান খাদ্য। এ ছাড়া তিনি তাজা ফলের রস এবং মাঝে মাঝে কাঁচা কোয়েলের ডিম বা অমলেট গ্রহণ করেন। তাঁর খাদ্যাভ্যাসে অতিরিক্ত মিষ্টি বা চর্বিযুক্ত খাবারের স্থান নেই।
দুপুরের ও রাতের খাবার: পুতিন লাল মাংসের চেয়ে মাছ বেশি পছন্দ করেন, বিশেষত গ্রিলড বা স্মোকড মাছের পদ। ভেড়ার মাংসও তাঁর প্রিয়। তবে অতিরিক্ত মসলাযুক্ত রান্না তিনি এড়িয়ে চলেন। তাঁর বেশির ভাগ খাবারেই টমেটো, শসা এবং অন্যান্য সাধারণ সবজির সালাদ বাধ্যতামূলক। এই সবজিগুলো ভিটামিন এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের জোগান দেয়।
পানীয় ও ডেজার্ট: পুতিন মিষ্টি বেক করা সামগ্রী, কেক বা বাটারি পেস্ট্রি একদম পছন্দ করেন না। পানীয়ের ক্ষেত্রে তাজা জুস, সাধারণ ভেষজ পানীয় এবং কেফির (এক প্রকার ফার্মেন্টেড দুগ্ধজাত পানীয়) পান করেন। তবে তাঁর সুশৃঙ্খল রুটিনের মাঝেও একটি ছোট দুর্বলতা রয়েছে—তা হলো পেস্তা আইসক্রিম!
বিশেষজ্ঞরা বলেন, পুতিনের এই খাদ্যাভ্যাস তাঁর রাজনৈতিক ভাবমূর্তির সঙ্গে পুরোপুরি সামঞ্জস্যপূর্ণ: সংযত, শৃঙ্খলাবদ্ধ এবং ঐতিহ্যমুখী। পুষ্টি, প্রোটিন এবং সহজলভ্যতা ওপর তাঁর এই জোর, তাঁর দীর্ঘ ও অনিয়মিত কর্মঘণ্টার জন্য প্রয়োজনীয় স্থিতিশীল ক্যালরির জোগান নিশ্চিত করতে সাহায্য করে।

জন এফ কেনেডির হত্যাকাণ্ডের রাতেই গোয়েন্দা কর্মকর্তা জে গ্যারেট আন্ডারহিল আতঙ্কিত অবস্থায় ওয়াশিংটন ছেড়ে পালিয়ে যান। তিনি নিউজার্সিতে এক বন্ধুর বাড়িতে আশ্রয় নেন। সেখানে তিনি স্পষ্টতই ভীত ও বিচলিত ছিলেন। প্রকাশিত নথিতে পাওয়া এক মেমো অনুযায়ী, আন্ডারহিল অভিযোগ করেন যে, সিআইএ-এর ভেতরের একটি ‘ছোট গোষ্ঠী’ ক
১৯ মার্চ ২০২৫
আগামী বছরের অর্থাৎ, ২০২৬ সালের ইউরোভিশন গানের প্রতিযোগিতা বয়কট করবে আয়ারল্যান্ড, স্পেন, নেদারল্যান্ডস ও স্লোভেনিয়া। কারণ আয়োজকেরা ইসরায়েলকে প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে দিয়েছে। দেশগুলোর অভিযোগ, গাজায় গণহত্যা চালানো ইসরায়েলকে এই প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে দেওয়া ঠিক হয়নি।
১২ মিনিট আগে
যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তর বা স্টেট ডিপার্টমেন্ট ভেনেজুয়েলায় ভ্রমণ নিয়ে নতুন করে কঠোর সতর্কতা জারি করেছে। দেশটিতে থাকা সব মার্কিন নাগরিক ও স্থায়ী বাসিন্দাদের অবিলম্বে দেশটি ছেড়ে যাওয়ার আহ্বান জানিয়েছে তারা। নিরাপত্তা হুমকি দ্রুত বেড়ে যাওয়ায় এই নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
১ ঘণ্টা আগে
পাকিস্তানের সেনাপ্রধান ফিল্ড মার্শাল সৈয়দ আসিম মুনিরকে দেশের প্রথম চিফ অব ডিফেন্স ফোর্সেস (সিডিএফ) হিসাবে ঘোষণা করা হয়েছে। সত্তরের দশকের পর দেশটির সামরিক কমান্ডে এটি হলো সবচেয়ে বড়ো ও ব্যাপক পরিবর্তন। প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফের পরামর্শক্রমে প্রেসিডেন্ট আসিফ আলী জারদারি এই নিয়োগে অনুমোদন দেন।
২ ঘণ্টা আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তর বা স্টেট ডিপার্টমেন্ট ভেনেজুয়েলায় ভ্রমণ নিয়ে নতুন করে কঠোর সতর্কতা জারি করেছে। দেশটিতে থাকা সব মার্কিন নাগরিক ও স্থায়ী বাসিন্দাদের অবিলম্বে দেশটি ছেড়ে যাওয়ার আহ্বান জানিয়েছে তারা। নিরাপত্তা হুমকি দ্রুত বেড়ে যাওয়ায় এই নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। স্টেট ডিপার্টমেন্ট এক আনুষ্ঠানিক বিবৃতিতে এই নির্দেশনা দিয়েছে।
বিবৃতিতে বলা হয়, ভেনেজুয়েলায় ভুলভাবে আটক হওয়া, আটক অবস্থায় নির্যাতন, সন্ত্রাসবাদ, অপহরণ, স্থানীয় আইনের স্বেচ্ছাচারী প্রয়োগ, অপরাধ, নাগরিক অস্থিরতা এবং দুর্বল স্বাস্থ্যসেবার ঝুঁকি অত্যন্ত বেশি। তাই দেশটিতে ভ্রমণ এবং সেখানে অবস্থান না করতে মার্কিন নাগরিকদের নির্দেশ দেওয়া হচ্ছে।
ঘোষণায় আরও বলা হয়, ভেনেজুয়েলায় থাকা সব মার্কিন নাগরিক ও আইনগত স্থায়ী বাসিন্দাদের অবিলম্বে দেশ ছাড়তে জোরালো পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। এই সতর্কবার্তা এল এমন এক সময়, যার কয়েক ঘণ্টা আগেই যুক্তরাষ্ট্রের এক প্রাণঘাতী হামলায় অন্তত চারজন নিহত হয়েছে। স্থানীয় সময় গতকাল বৃহস্পতিবার পূর্ব প্রশান্ত মহাসাগরে একটি নৌকা লক্ষ্য করে মার্কিন বাহিনী হামলা চালায়। এতে চারজন নিহত হয়েছে বলে ইউএস সাউদার্ন কমান্ড এক বিবৃতিতে জানায়।
সামরিক কর্মকর্তাদের দাবি, আন্তর্জাতিক জলসীমায় চলাচলকারী এই নৌযানটি একটি ‘সন্ত্রাসী তালিকাভুক্ত সংগঠনের’ সঙ্গে যুক্ত। গোয়েন্দা তথ্যে জানা যায়, নৌকাটি পূর্ব প্রশান্ত মহাসাগরপথে অবৈধ মাদক পরিবহন করছিল। এক্সে দেওয়া পোস্টে সাউদার্ন কমান্ড জানায়, নৌকায় থাকা চার পুরুষ ‘মাদকসন্ত্রাসী’ নিহত হয়েছে। প্রকাশিত ভিডিওতে দেখা যায়, বহু ইঞ্জিনবিশিষ্ট দ্রুতগতির নৌকাটি আচমকা একটি প্রবল বিস্ফোরণে আঘাত পেয়ে আগুনে ঘিরে যায়।
ঘটনাটি এই অঞ্চলে যুক্তরাষ্ট্রের বিস্তৃত মাদকবিরোধী সামরিক অভিযানের অংশ। সাম্প্রতিক মাসগুলোতে এই অভিযান নিয়ে সমালোচনা বেড়েছে। কারণ, এতে নিহতের সংখ্যা এখন ৮৫-এর বেশি ছাড়িয়েছে।
এদিকে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাড়তে থাকা সামরিক উত্তেজনার জেরে একযোগে ছয়টি বড় আন্তর্জাতিক এয়ারলাইনের অবতরণ ও উড্ডয়নের অনুমতি বাতিল করেছে ভেনেজুয়েলা। এর আগে মার্কিন সতর্কবার্তার পরিপ্রেক্ষিতে ভেনেজুয়েলার কারাকাসগামী ফ্লাইটগুলো স্থগিত করেছিল এই এয়ারলাইনগুলো। পরে ভেনেজুয়েলা তাদের ৪৮ ঘণ্টার আলটিমেটাম দেয়। সময়সীমা পেরিয়ে যাওয়ায় ২৭ নভেম্বর থেকে নিষেধাজ্ঞা কার্যকর করা হয়েছে।
নিষিদ্ধ হওয়া এয়ারলাইনগুলো হলো—আইবেরিয়া, টিএপি পর্তুগাল, গোল, লাতাম, অ্যাভিয়াঙ্কা এবং টার্কিশ এয়ারলাইনস। ভেনেজুয়েলার এই সিদ্ধান্তে হাজারো যাত্রী বিপাকে পড়েছেন। তবে কিছু ছোট ছোট এয়ারলাইন এখনো দেশটিতে যাতায়াত করছে।
সম্প্রতি ক্যারিবিয়ান সাগরে ভেনেজুয়েলার উপকূলে মার্কিন সামরিক উপস্থিতি ঘিরে এই উত্তেজনার সূত্রপাত হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র ভেনেজুয়েলার উপকূলীয় এলাকায় ১৫ হাজার সেনা এবং বিশ্বের সবচেয়ে বড় বিমানবাহী জাহাজ ইউএসএস জেরাল্ড ফোর্ড মোতায়েন করেছে। ওয়াশিংটন বলছে, এই অভিযান মাদকবিরোধী তৎপরতার অংশ। তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মাদকবিরোধী অভিযানে এত বড় সামরিক উপস্থিতি সাধারণত দেখা যায় না।

যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তর বা স্টেট ডিপার্টমেন্ট ভেনেজুয়েলায় ভ্রমণ নিয়ে নতুন করে কঠোর সতর্কতা জারি করেছে। দেশটিতে থাকা সব মার্কিন নাগরিক ও স্থায়ী বাসিন্দাদের অবিলম্বে দেশটি ছেড়ে যাওয়ার আহ্বান জানিয়েছে তারা। নিরাপত্তা হুমকি দ্রুত বেড়ে যাওয়ায় এই নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। স্টেট ডিপার্টমেন্ট এক আনুষ্ঠানিক বিবৃতিতে এই নির্দেশনা দিয়েছে।
বিবৃতিতে বলা হয়, ভেনেজুয়েলায় ভুলভাবে আটক হওয়া, আটক অবস্থায় নির্যাতন, সন্ত্রাসবাদ, অপহরণ, স্থানীয় আইনের স্বেচ্ছাচারী প্রয়োগ, অপরাধ, নাগরিক অস্থিরতা এবং দুর্বল স্বাস্থ্যসেবার ঝুঁকি অত্যন্ত বেশি। তাই দেশটিতে ভ্রমণ এবং সেখানে অবস্থান না করতে মার্কিন নাগরিকদের নির্দেশ দেওয়া হচ্ছে।
ঘোষণায় আরও বলা হয়, ভেনেজুয়েলায় থাকা সব মার্কিন নাগরিক ও আইনগত স্থায়ী বাসিন্দাদের অবিলম্বে দেশ ছাড়তে জোরালো পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। এই সতর্কবার্তা এল এমন এক সময়, যার কয়েক ঘণ্টা আগেই যুক্তরাষ্ট্রের এক প্রাণঘাতী হামলায় অন্তত চারজন নিহত হয়েছে। স্থানীয় সময় গতকাল বৃহস্পতিবার পূর্ব প্রশান্ত মহাসাগরে একটি নৌকা লক্ষ্য করে মার্কিন বাহিনী হামলা চালায়। এতে চারজন নিহত হয়েছে বলে ইউএস সাউদার্ন কমান্ড এক বিবৃতিতে জানায়।
সামরিক কর্মকর্তাদের দাবি, আন্তর্জাতিক জলসীমায় চলাচলকারী এই নৌযানটি একটি ‘সন্ত্রাসী তালিকাভুক্ত সংগঠনের’ সঙ্গে যুক্ত। গোয়েন্দা তথ্যে জানা যায়, নৌকাটি পূর্ব প্রশান্ত মহাসাগরপথে অবৈধ মাদক পরিবহন করছিল। এক্সে দেওয়া পোস্টে সাউদার্ন কমান্ড জানায়, নৌকায় থাকা চার পুরুষ ‘মাদকসন্ত্রাসী’ নিহত হয়েছে। প্রকাশিত ভিডিওতে দেখা যায়, বহু ইঞ্জিনবিশিষ্ট দ্রুতগতির নৌকাটি আচমকা একটি প্রবল বিস্ফোরণে আঘাত পেয়ে আগুনে ঘিরে যায়।
ঘটনাটি এই অঞ্চলে যুক্তরাষ্ট্রের বিস্তৃত মাদকবিরোধী সামরিক অভিযানের অংশ। সাম্প্রতিক মাসগুলোতে এই অভিযান নিয়ে সমালোচনা বেড়েছে। কারণ, এতে নিহতের সংখ্যা এখন ৮৫-এর বেশি ছাড়িয়েছে।
এদিকে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাড়তে থাকা সামরিক উত্তেজনার জেরে একযোগে ছয়টি বড় আন্তর্জাতিক এয়ারলাইনের অবতরণ ও উড্ডয়নের অনুমতি বাতিল করেছে ভেনেজুয়েলা। এর আগে মার্কিন সতর্কবার্তার পরিপ্রেক্ষিতে ভেনেজুয়েলার কারাকাসগামী ফ্লাইটগুলো স্থগিত করেছিল এই এয়ারলাইনগুলো। পরে ভেনেজুয়েলা তাদের ৪৮ ঘণ্টার আলটিমেটাম দেয়। সময়সীমা পেরিয়ে যাওয়ায় ২৭ নভেম্বর থেকে নিষেধাজ্ঞা কার্যকর করা হয়েছে।
নিষিদ্ধ হওয়া এয়ারলাইনগুলো হলো—আইবেরিয়া, টিএপি পর্তুগাল, গোল, লাতাম, অ্যাভিয়াঙ্কা এবং টার্কিশ এয়ারলাইনস। ভেনেজুয়েলার এই সিদ্ধান্তে হাজারো যাত্রী বিপাকে পড়েছেন। তবে কিছু ছোট ছোট এয়ারলাইন এখনো দেশটিতে যাতায়াত করছে।
সম্প্রতি ক্যারিবিয়ান সাগরে ভেনেজুয়েলার উপকূলে মার্কিন সামরিক উপস্থিতি ঘিরে এই উত্তেজনার সূত্রপাত হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র ভেনেজুয়েলার উপকূলীয় এলাকায় ১৫ হাজার সেনা এবং বিশ্বের সবচেয়ে বড় বিমানবাহী জাহাজ ইউএসএস জেরাল্ড ফোর্ড মোতায়েন করেছে। ওয়াশিংটন বলছে, এই অভিযান মাদকবিরোধী তৎপরতার অংশ। তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মাদকবিরোধী অভিযানে এত বড় সামরিক উপস্থিতি সাধারণত দেখা যায় না।

জন এফ কেনেডির হত্যাকাণ্ডের রাতেই গোয়েন্দা কর্মকর্তা জে গ্যারেট আন্ডারহিল আতঙ্কিত অবস্থায় ওয়াশিংটন ছেড়ে পালিয়ে যান। তিনি নিউজার্সিতে এক বন্ধুর বাড়িতে আশ্রয় নেন। সেখানে তিনি স্পষ্টতই ভীত ও বিচলিত ছিলেন। প্রকাশিত নথিতে পাওয়া এক মেমো অনুযায়ী, আন্ডারহিল অভিযোগ করেন যে, সিআইএ-এর ভেতরের একটি ‘ছোট গোষ্ঠী’ ক
১৯ মার্চ ২০২৫
আগামী বছরের অর্থাৎ, ২০২৬ সালের ইউরোভিশন গানের প্রতিযোগিতা বয়কট করবে আয়ারল্যান্ড, স্পেন, নেদারল্যান্ডস ও স্লোভেনিয়া। কারণ আয়োজকেরা ইসরায়েলকে প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে দিয়েছে। দেশগুলোর অভিযোগ, গাজায় গণহত্যা চালানো ইসরায়েলকে এই প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে দেওয়া ঠিক হয়নি।
১২ মিনিট আগে
ভারত ও রাশিয়ার মধ্যে কৌশলগত সম্পর্ক আরও মজবুত করার লক্ষ্যে যখন ভ্লাদিমির পুতিনের ৪-৫ ডিসেম্বরের রাষ্ট্রীয় সফর ও ২৩ তম বার্ষিক শীর্ষ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হচ্ছে, তখন কূটনৈতিক আলোচনার বাইরেও একটি বিষয় নজর কেড়েছে—রুশ প্রেসিডেন্টের খাবার সংক্রান্ত অভূতপূর্ব নিরাপত্তা ব্যবস্থা।
২৭ মিনিট আগে
পাকিস্তানের সেনাপ্রধান ফিল্ড মার্শাল সৈয়দ আসিম মুনিরকে দেশের প্রথম চিফ অব ডিফেন্স ফোর্সেস (সিডিএফ) হিসাবে ঘোষণা করা হয়েছে। সত্তরের দশকের পর দেশটির সামরিক কমান্ডে এটি হলো সবচেয়ে বড়ো ও ব্যাপক পরিবর্তন। প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফের পরামর্শক্রমে প্রেসিডেন্ট আসিফ আলী জারদারি এই নিয়োগে অনুমোদন দেন।
২ ঘণ্টা আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

পাকিস্তানের সেনাপ্রধান ফিল্ড মার্শাল সৈয়দ আসিম মুনিরকে দেশের প্রথম চিফ অব ডিফেন্স ফোর্সেস (সিডিএফ) হিসাবে ঘোষণা করা হয়েছে। সত্তরের দশকের পর দেশটির সামরিক কমান্ডে এটি হলো সবচেয়ে বড়ো ও ব্যাপক পরিবর্তন। প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফের পরামর্শক্রমে প্রেসিডেন্ট আসিফ আলী জারদারি এই নিয়োগে অনুমোদন দেন। খবর দ্য ডনের।
পাকিস্তানের প্রেসিডেন্টের কার্যালয় এক বিবৃতিতে জানায়, ‘প্রেসিডেন্ট আসিফ আলী জারদারি ফিল্ড মার্শাল সৈয়দ আসিম মুনিরকে পাঁচ বছরের জন্য সেনাপ্রধানের (সিওএএস) সঙ্গে সমান্তরালভাবে সিডিএফ হিসাবেও নিয়োগে অনুমোদন দিয়েছেন।’ এই বিবৃতি বহুদিনের জল্পনা-কল্পনার অবসান ঘটাল। এর আগে গতকাল সন্ধ্যায় প্রধানমন্ত্রী শাহবাজই প্রেসিডেন্টকে এই নতুন দ্বৈত-দায়িত্বপ্রাপ্ত পদে ফিল্ড মার্শাল মুনিরকে নিয়োগের পরামর্শ দিয়েছিলেন।
প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর থেকে বলা হয়, ‘প্রধানমন্ত্রী ফিল্ড মার্শাল সৈয়দ আসিম মুনিরকে সেনাবাহিনী প্রধান এবং চিফ অব ডিফেন্স ফোর্সেস হিসাবে নিয়োগের সারসংক্ষেপ প্রেসিডেন্ট কার্যালয়ে পাঠিয়েছেন।’
এই নতুন ব্যবস্থা পাকিস্তানের সংবিধানের ২৭ তম সংশোধনীতে ২৪৩ অনুচ্ছেদের পরিবর্তনের মাধ্যমে তৈরি করা হয়েছে। যার ফলে, একটি মাত্র অফিসের অধীনে সশস্ত্রবাহিনীর অপারেশনাল, প্রশাসনিক ও কৌশলগত ক্ষমতাকে একত্র করা হয়েছে। সংশোধিত ২৪৩ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী, প্রধানমন্ত্রীর পরামর্শক্রমে প্রেসিডেন্ট সেনাপ্রধানকে নিয়োগ করবেন, যিনি একই সঙ্গে চিফ অব ডিফেন্স ফোর্সেস হিসাবেও কাজ করবেন।
এই সংশোধনীর মাধ্যমে ১৯৭৬ সাল থেকে চালু থাকা তিনবাহিনী সমন্বয় ব্যবস্থা—চেয়ারম্যান জয়েন্ট চিফস অব স্টাফ কমিটির (সিজেসিএসসি) অফিস বিলুপ্ত করা হয়। এর ফলে যৌথ কমান্ডের ইন্টিগ্রেশন সিডিএফ-এর হাতে চলে এল।
সাংবিধানিক এই আমূল পরিবর্তনকে সামরিক বাহিনীর আইনি কাঠামোর মধ্যে আনার জন্য সরকার ২৭ তম সংশোধনীর পরপরই ১৯৫২ সালের পাকিস্তান আর্মি অ্যাক্টেও (পিএএ) সংশোধন আনে। পিএএ-এর ৮এ অনুচ্ছেদের উপ-ধারা (১) এখন জানাচ্ছে যে, ‘প্রথমবারের মতো সেনাবাহিনী প্রধান যিনি একই সঙ্গে চিফ অব ডিফেন্স ফোর্সেস হবেন […], তাঁর মেয়াদ এই ধারার অধীনে ওই পদের বিজ্ঞপ্তির তারিখ থেকে শুরু হবে।’
আরও বলা হয়েছে, এই প্রথম সিওএএসসহ-সিডিএফ-এর বিজ্ঞপ্তি জারি হলে ‘বর্তমান সেনাপ্রধানের বিদ্যমান মেয়াদ ওই বিজ্ঞপ্তির তারিখ থেকে পুনরায় শুরু হয়েছে বলে গণ্য হবে।’ ৮এ অনুচ্ছেদের উপ-ধারা (৩) অনুযায়ী, সিওএএস যিনি একই সঙ্গে সিডিএফ-এরও দায়িত্বে থাকবেন, তাঁর ‘শর্তাবলি ও নিয়ম’ প্রধানমন্ত্রীর পরামর্শক্রমে প্রেসিডেন্ট স্থির করবেন।
ফিল্ড মার্শাল মুনির ২০২২ সালের ২৯ নভেম্বর ১৭ তম সেনাপ্রধান হিসাবে দায়িত্ব নিয়েছিলেন। ২০২৪ সালের নভেম্বরে সরকার পিএএ-তে পরিবর্তন আনে, যেখানে সিজেসিএসসি-এর মেয়াদ তিন বছর অপরিবর্তিত রেখে বাকি তিন বাহিনীর প্রধানদের মেয়াদ তিন থেকে বাড়িয়ে পাঁচ বছর করা হয়। একই সংশোধনীতে সার্ভিস চিফদের পুনঃ নিয়োগ বা তাঁদের মেয়াদ পাঁচ বছর পর্যন্ত বাড়ানোর সুযোগ রাখা হয়, যা আগে সর্বোচ্চ তিন বছর ছিল।
ফলস্বরূপ, ২৭ তম সংশোধনীর অধীনে এই পুনর্গঠনের সঙ্গে সাযুজ্য রেখে, পিএএ-এর সাম্প্রতিক পরিবর্তনগুলি প্রেসিডেন্টকে প্রধানমন্ত্রীর পরামর্শক্রমে সিওএএসসহ-সিডিএফ-কে আরও পাঁচ বছরের জন্য পুনঃ নিয়োগ বা তাঁর মেয়াদ পাঁচ বছর পর্যন্ত বাড়ানোর সুযোগ দিচ্ছে। এর ফলে তিনি ২০৩৫ সালের ডিসেম্বর পর্যন্তও পদে থাকতে পারেন।
এই নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশে দীর্ঘসূত্রতা ব্যাপক জল্পনা বাড়িয়েছিল। বিশেষ করে, যখন ২৭ নভেম্বর জেনারেল সাহির শামশাদ মির্জা অবসর নেওয়ার পর সিজেসিএসসি পদটি বিলুপ্ত হয়। ফিল্ড মার্শাল মুনির-এর আসল তিন বছরের সেনাপ্রধানের মেয়াদ (গত বছরের সংশোধনীর আগে) ২৯ নভেম্বরে শেষ হয়, কিন্তু সেদিনও কোনো বিজ্ঞপ্তি না আসায় আরও অনিশ্চয়তা দেখা দেয়। অনেকে মনে করেন, সরকার হয়তো আসন্ন চার-তারকা পদের নিয়োগ নিয়ে দর-কষাকষির জন্য এই নিয়োগ আটকে রেখেছিল।
রাজনৈতিক মহল থেকে ইঙ্গিত দেওয়া হয়, ন্যাশনাল স্ট্র্যাটেজিক কমান্ডের নতুন কমান্ডার (সিএনএসসি), ভাইস চিফ অব দ্য আর্মি স্টাফ (ভিসিওএএস) এবং ভবিষ্যতে সম্ভাব্য আইএসআই প্রধান নির্বাচনের ক্ষেত্রে দরদাম করতেই এই দেরি। সেনাবাহিনী আগেই স্পষ্ট করেছিল যে, কোনো ভিসিওএএস নিয়োগ করা হচ্ছে না। তবে সংশোধিত আইন অনুযায়ী, সিএনএসসি এবং যেকোনো ভিসিওএএস-এর নিয়োগ সিডিএফ-এর সুপারিশের সঙ্গে যুক্ত।
সরকারি কর্মকর্তারা বারবার সেনাবাহিনীর সঙ্গে কোনো উত্তেজনার কথা অস্বীকার করেছেন, জানিয়েছেন যে প্রক্রিয়াগত প্রয়োজনীয়তা ও প্রধানমন্ত্রীর বিদেশ সফরের সূচি সময়রেখা নির্ধারণ করেছে। তবুও, ২৭ তম সংশোধনী যেভাবে তাড়াহুড়ো করে সংসদে পাশ করানো হয়েছিল, তার পরে এমন নীরবতাকে অনেকে অস্বাভাবিক বলে মনে করেছেন। এই সংশোধনী কেন্দ্রীয় সরকারকে সিডিএফ-এর কার্যাবলি নির্ধারণের ক্ষমতাও দিয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে বহু-ডোমেন ইন্টিগ্রেশন, পুনর্গঠন এবং সার্ভিসগুলোর মধ্যে যৌথতা বাড়ানো।
এদিকে, আইনসচিব আজম নাজির তারার জানিয়েছেন, প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় সিডিএফ-এর জন্য একটি নতুন অর্গানোগ্রাম চূড়ান্ত করছে এবং এর খসড়া একদিন আগেই প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরে পাঠানো হয়েছে। সিডিএফ বিজ্ঞপ্তি নিয়ে কোনো মতপার্থক্যের ধারণা তিনি নাকচ করে দেন, জোর দিয়ে বলেন যে প্রধানমন্ত্রীর দেশের বাইরে থাকার কারণেই এই বিলম্ব। কর্মকর্তারা বলছেন, এই অর্গানোগ্রামেই সিডিএফ, সার্ভিস চিফ ও নতুন প্রতিষ্ঠিত কৌশলগত কমান্ডের মধ্যে কমান্ডের প্রবাহ কেমন হবে, তা উল্লেখ করা থাকবে।
সিডিএফ-এর নিয়োগ অনুমোদনের পাশাপাশি, প্রেসিডেন্ট জারদারি বিমানবাহিনীর নেতৃত্বের বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর পরামর্শও অনুমোদন করেছেন। প্রেসিডেন্ট ভবন জানিয়েছে, ‘প্রেসিডেন্ট আসিফ আলি জারদারি এয়ার চিফ মার্শাল জহির আহমদ বাবর সিধুর জন্য ২০২৬ সালের ১৯ মার্চ থেকে দুই বছরের মেয়াদ বাড়ানোর অনুমোদন দিয়েছেন।’
এই মেয়াদ বৃদ্ধিটি আগামী বছরের মার্চে তাঁর বর্তমান পাঁচ বছরের মেয়াদ শেষ হওয়ার পর কার্যকর হবে, যা তাঁকে ২০২৮ সালের মার্চ পর্যন্ত পদে বহাল রাখবে।

পাকিস্তানের সেনাপ্রধান ফিল্ড মার্শাল সৈয়দ আসিম মুনিরকে দেশের প্রথম চিফ অব ডিফেন্স ফোর্সেস (সিডিএফ) হিসাবে ঘোষণা করা হয়েছে। সত্তরের দশকের পর দেশটির সামরিক কমান্ডে এটি হলো সবচেয়ে বড়ো ও ব্যাপক পরিবর্তন। প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফের পরামর্শক্রমে প্রেসিডেন্ট আসিফ আলী জারদারি এই নিয়োগে অনুমোদন দেন। খবর দ্য ডনের।
পাকিস্তানের প্রেসিডেন্টের কার্যালয় এক বিবৃতিতে জানায়, ‘প্রেসিডেন্ট আসিফ আলী জারদারি ফিল্ড মার্শাল সৈয়দ আসিম মুনিরকে পাঁচ বছরের জন্য সেনাপ্রধানের (সিওএএস) সঙ্গে সমান্তরালভাবে সিডিএফ হিসাবেও নিয়োগে অনুমোদন দিয়েছেন।’ এই বিবৃতি বহুদিনের জল্পনা-কল্পনার অবসান ঘটাল। এর আগে গতকাল সন্ধ্যায় প্রধানমন্ত্রী শাহবাজই প্রেসিডেন্টকে এই নতুন দ্বৈত-দায়িত্বপ্রাপ্ত পদে ফিল্ড মার্শাল মুনিরকে নিয়োগের পরামর্শ দিয়েছিলেন।
প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর থেকে বলা হয়, ‘প্রধানমন্ত্রী ফিল্ড মার্শাল সৈয়দ আসিম মুনিরকে সেনাবাহিনী প্রধান এবং চিফ অব ডিফেন্স ফোর্সেস হিসাবে নিয়োগের সারসংক্ষেপ প্রেসিডেন্ট কার্যালয়ে পাঠিয়েছেন।’
এই নতুন ব্যবস্থা পাকিস্তানের সংবিধানের ২৭ তম সংশোধনীতে ২৪৩ অনুচ্ছেদের পরিবর্তনের মাধ্যমে তৈরি করা হয়েছে। যার ফলে, একটি মাত্র অফিসের অধীনে সশস্ত্রবাহিনীর অপারেশনাল, প্রশাসনিক ও কৌশলগত ক্ষমতাকে একত্র করা হয়েছে। সংশোধিত ২৪৩ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী, প্রধানমন্ত্রীর পরামর্শক্রমে প্রেসিডেন্ট সেনাপ্রধানকে নিয়োগ করবেন, যিনি একই সঙ্গে চিফ অব ডিফেন্স ফোর্সেস হিসাবেও কাজ করবেন।
এই সংশোধনীর মাধ্যমে ১৯৭৬ সাল থেকে চালু থাকা তিনবাহিনী সমন্বয় ব্যবস্থা—চেয়ারম্যান জয়েন্ট চিফস অব স্টাফ কমিটির (সিজেসিএসসি) অফিস বিলুপ্ত করা হয়। এর ফলে যৌথ কমান্ডের ইন্টিগ্রেশন সিডিএফ-এর হাতে চলে এল।
সাংবিধানিক এই আমূল পরিবর্তনকে সামরিক বাহিনীর আইনি কাঠামোর মধ্যে আনার জন্য সরকার ২৭ তম সংশোধনীর পরপরই ১৯৫২ সালের পাকিস্তান আর্মি অ্যাক্টেও (পিএএ) সংশোধন আনে। পিএএ-এর ৮এ অনুচ্ছেদের উপ-ধারা (১) এখন জানাচ্ছে যে, ‘প্রথমবারের মতো সেনাবাহিনী প্রধান যিনি একই সঙ্গে চিফ অব ডিফেন্স ফোর্সেস হবেন […], তাঁর মেয়াদ এই ধারার অধীনে ওই পদের বিজ্ঞপ্তির তারিখ থেকে শুরু হবে।’
আরও বলা হয়েছে, এই প্রথম সিওএএসসহ-সিডিএফ-এর বিজ্ঞপ্তি জারি হলে ‘বর্তমান সেনাপ্রধানের বিদ্যমান মেয়াদ ওই বিজ্ঞপ্তির তারিখ থেকে পুনরায় শুরু হয়েছে বলে গণ্য হবে।’ ৮এ অনুচ্ছেদের উপ-ধারা (৩) অনুযায়ী, সিওএএস যিনি একই সঙ্গে সিডিএফ-এরও দায়িত্বে থাকবেন, তাঁর ‘শর্তাবলি ও নিয়ম’ প্রধানমন্ত্রীর পরামর্শক্রমে প্রেসিডেন্ট স্থির করবেন।
ফিল্ড মার্শাল মুনির ২০২২ সালের ২৯ নভেম্বর ১৭ তম সেনাপ্রধান হিসাবে দায়িত্ব নিয়েছিলেন। ২০২৪ সালের নভেম্বরে সরকার পিএএ-তে পরিবর্তন আনে, যেখানে সিজেসিএসসি-এর মেয়াদ তিন বছর অপরিবর্তিত রেখে বাকি তিন বাহিনীর প্রধানদের মেয়াদ তিন থেকে বাড়িয়ে পাঁচ বছর করা হয়। একই সংশোধনীতে সার্ভিস চিফদের পুনঃ নিয়োগ বা তাঁদের মেয়াদ পাঁচ বছর পর্যন্ত বাড়ানোর সুযোগ রাখা হয়, যা আগে সর্বোচ্চ তিন বছর ছিল।
ফলস্বরূপ, ২৭ তম সংশোধনীর অধীনে এই পুনর্গঠনের সঙ্গে সাযুজ্য রেখে, পিএএ-এর সাম্প্রতিক পরিবর্তনগুলি প্রেসিডেন্টকে প্রধানমন্ত্রীর পরামর্শক্রমে সিওএএসসহ-সিডিএফ-কে আরও পাঁচ বছরের জন্য পুনঃ নিয়োগ বা তাঁর মেয়াদ পাঁচ বছর পর্যন্ত বাড়ানোর সুযোগ দিচ্ছে। এর ফলে তিনি ২০৩৫ সালের ডিসেম্বর পর্যন্তও পদে থাকতে পারেন।
এই নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশে দীর্ঘসূত্রতা ব্যাপক জল্পনা বাড়িয়েছিল। বিশেষ করে, যখন ২৭ নভেম্বর জেনারেল সাহির শামশাদ মির্জা অবসর নেওয়ার পর সিজেসিএসসি পদটি বিলুপ্ত হয়। ফিল্ড মার্শাল মুনির-এর আসল তিন বছরের সেনাপ্রধানের মেয়াদ (গত বছরের সংশোধনীর আগে) ২৯ নভেম্বরে শেষ হয়, কিন্তু সেদিনও কোনো বিজ্ঞপ্তি না আসায় আরও অনিশ্চয়তা দেখা দেয়। অনেকে মনে করেন, সরকার হয়তো আসন্ন চার-তারকা পদের নিয়োগ নিয়ে দর-কষাকষির জন্য এই নিয়োগ আটকে রেখেছিল।
রাজনৈতিক মহল থেকে ইঙ্গিত দেওয়া হয়, ন্যাশনাল স্ট্র্যাটেজিক কমান্ডের নতুন কমান্ডার (সিএনএসসি), ভাইস চিফ অব দ্য আর্মি স্টাফ (ভিসিওএএস) এবং ভবিষ্যতে সম্ভাব্য আইএসআই প্রধান নির্বাচনের ক্ষেত্রে দরদাম করতেই এই দেরি। সেনাবাহিনী আগেই স্পষ্ট করেছিল যে, কোনো ভিসিওএএস নিয়োগ করা হচ্ছে না। তবে সংশোধিত আইন অনুযায়ী, সিএনএসসি এবং যেকোনো ভিসিওএএস-এর নিয়োগ সিডিএফ-এর সুপারিশের সঙ্গে যুক্ত।
সরকারি কর্মকর্তারা বারবার সেনাবাহিনীর সঙ্গে কোনো উত্তেজনার কথা অস্বীকার করেছেন, জানিয়েছেন যে প্রক্রিয়াগত প্রয়োজনীয়তা ও প্রধানমন্ত্রীর বিদেশ সফরের সূচি সময়রেখা নির্ধারণ করেছে। তবুও, ২৭ তম সংশোধনী যেভাবে তাড়াহুড়ো করে সংসদে পাশ করানো হয়েছিল, তার পরে এমন নীরবতাকে অনেকে অস্বাভাবিক বলে মনে করেছেন। এই সংশোধনী কেন্দ্রীয় সরকারকে সিডিএফ-এর কার্যাবলি নির্ধারণের ক্ষমতাও দিয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে বহু-ডোমেন ইন্টিগ্রেশন, পুনর্গঠন এবং সার্ভিসগুলোর মধ্যে যৌথতা বাড়ানো।
এদিকে, আইনসচিব আজম নাজির তারার জানিয়েছেন, প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় সিডিএফ-এর জন্য একটি নতুন অর্গানোগ্রাম চূড়ান্ত করছে এবং এর খসড়া একদিন আগেই প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরে পাঠানো হয়েছে। সিডিএফ বিজ্ঞপ্তি নিয়ে কোনো মতপার্থক্যের ধারণা তিনি নাকচ করে দেন, জোর দিয়ে বলেন যে প্রধানমন্ত্রীর দেশের বাইরে থাকার কারণেই এই বিলম্ব। কর্মকর্তারা বলছেন, এই অর্গানোগ্রামেই সিডিএফ, সার্ভিস চিফ ও নতুন প্রতিষ্ঠিত কৌশলগত কমান্ডের মধ্যে কমান্ডের প্রবাহ কেমন হবে, তা উল্লেখ করা থাকবে।
সিডিএফ-এর নিয়োগ অনুমোদনের পাশাপাশি, প্রেসিডেন্ট জারদারি বিমানবাহিনীর নেতৃত্বের বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর পরামর্শও অনুমোদন করেছেন। প্রেসিডেন্ট ভবন জানিয়েছে, ‘প্রেসিডেন্ট আসিফ আলি জারদারি এয়ার চিফ মার্শাল জহির আহমদ বাবর সিধুর জন্য ২০২৬ সালের ১৯ মার্চ থেকে দুই বছরের মেয়াদ বাড়ানোর অনুমোদন দিয়েছেন।’
এই মেয়াদ বৃদ্ধিটি আগামী বছরের মার্চে তাঁর বর্তমান পাঁচ বছরের মেয়াদ শেষ হওয়ার পর কার্যকর হবে, যা তাঁকে ২০২৮ সালের মার্চ পর্যন্ত পদে বহাল রাখবে।

জন এফ কেনেডির হত্যাকাণ্ডের রাতেই গোয়েন্দা কর্মকর্তা জে গ্যারেট আন্ডারহিল আতঙ্কিত অবস্থায় ওয়াশিংটন ছেড়ে পালিয়ে যান। তিনি নিউজার্সিতে এক বন্ধুর বাড়িতে আশ্রয় নেন। সেখানে তিনি স্পষ্টতই ভীত ও বিচলিত ছিলেন। প্রকাশিত নথিতে পাওয়া এক মেমো অনুযায়ী, আন্ডারহিল অভিযোগ করেন যে, সিআইএ-এর ভেতরের একটি ‘ছোট গোষ্ঠী’ ক
১৯ মার্চ ২০২৫
আগামী বছরের অর্থাৎ, ২০২৬ সালের ইউরোভিশন গানের প্রতিযোগিতা বয়কট করবে আয়ারল্যান্ড, স্পেন, নেদারল্যান্ডস ও স্লোভেনিয়া। কারণ আয়োজকেরা ইসরায়েলকে প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে দিয়েছে। দেশগুলোর অভিযোগ, গাজায় গণহত্যা চালানো ইসরায়েলকে এই প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে দেওয়া ঠিক হয়নি।
১২ মিনিট আগে
ভারত ও রাশিয়ার মধ্যে কৌশলগত সম্পর্ক আরও মজবুত করার লক্ষ্যে যখন ভ্লাদিমির পুতিনের ৪-৫ ডিসেম্বরের রাষ্ট্রীয় সফর ও ২৩ তম বার্ষিক শীর্ষ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হচ্ছে, তখন কূটনৈতিক আলোচনার বাইরেও একটি বিষয় নজর কেড়েছে—রুশ প্রেসিডেন্টের খাবার সংক্রান্ত অভূতপূর্ব নিরাপত্তা ব্যবস্থা।
২৭ মিনিট আগে
যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তর বা স্টেট ডিপার্টমেন্ট ভেনেজুয়েলায় ভ্রমণ নিয়ে নতুন করে কঠোর সতর্কতা জারি করেছে। দেশটিতে থাকা সব মার্কিন নাগরিক ও স্থায়ী বাসিন্দাদের অবিলম্বে দেশটি ছেড়ে যাওয়ার আহ্বান জানিয়েছে তারা। নিরাপত্তা হুমকি দ্রুত বেড়ে যাওয়ায় এই নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
১ ঘণ্টা আগে