
আগে থেকে বলে না দিয়ে এটিকে নির্ঘাত একটি বানোয়াট থ্রিলার গল্প বলেই মনে হবে। কিন্তু এটি সত্য। এটি এমন এক লোকের গল্প যার হৃদয়ে কিশোর বয়সেই গেঁথে গিয়েছিল উগ্রবাদ, তিনি বোমা তৈরিতে ছিলেন সিদ্ধহস্ত, চৌকস অস্ত্র ব্যবসায়ী, গোপন সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা এবং সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে সহায়তাকারী। কোনো এক নিকষ কালো রাতে নিখোঁজ হওয়ার আগে টানা দুই দশক পশ্চিমের নিরাপত্তা কর্মকর্তাদের ঘুম হারাম করেছিলেন তিনি। মাঝ ভূমধ্যসাগরে এক জাহাজ থেকে মাঝরাতে উধাও হয়ে যান তিনি। এটি এখনো এক অমীমাংসিত রহস্য।
১৯৭০ এবং ১৯৮০–এর দশককে অনেকে বলেন ‘সন্ত্রাসবাদের স্বর্ণযুগ’। এই সময়টাতে পশ্চিমা নিরাপত্তা সংস্থা এবং আন্তর্জাতিক সহিংস চরমপন্থীদের মধ্যে চলছিল ছায়াযুদ্ধ। এর মধ্যে সবচেয়ে রহস্যময় ব্যক্তিত্ব ছিলেন ব্রুনো ব্রেগেট। এই ব্যক্তিই বলতে গেলে ওই সময়ে সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধের মোড় ঘুরিয়ে দেন। নতুন একটি বইয়ে সে গল্পই উঠে এসেছে।
ব্রেগেট ১৯৯৫ সালে নিখোঁজ হওয়ার পরবর্তী বছরগুলোতে যুক্তরাষ্ট্র সরকারের হয়ে গুরুত্বপূর্ণ কাজ করেছেন। সিআইএর এজেন্ট হয়ে হাজার হাজার ডলার কামিয়েছেন। মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময়ে কাজ করেছেন ফরাসি গোয়েন্দা বাহিনীর হয়েও।
বিস্তারিত গল্পটি বলার আগে ব্রুনো ব্রেগেটের পরিচয় দেওয়া যাক। ব্রুনোই প্রথম কোনো ইউরোপীয় যিনি ফিলিস্তিনের স্বাধীনতার জন্য সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়েছিলেন। ইউরোপে তাঁকে স্রেফ ভয়ংকর সন্ত্রাসী হিসেবেই দেখা হয়। সন্ত্রাসের দায়ে ফ্রান্স এবং ইসরায়েলে তিনি দুবার দোষী সাব্যস্ত হয়েছেন। তবে ১৯৯৫ সালে হঠাৎ নিখোঁজ হয়ে যান।
সুইস ইতিহাসবিদ এবং রাজনৈতিক সহিংসতা বিষয়ক বিশেষজ্ঞ আদ্রিয়ান হ্যানি বহু বছর ধরে ব্রেগেটের অজানা তথ্য সংগ্রহ করার চেষ্টা করছেন। বিপুল পরিমাণ গোপন নথি এবং মূল সাক্ষীদের সাক্ষাৎকারের ওপর ভিত্তি করে তিনি একটি বই লিখেছেন। আদ্রিয়ান হ্যানি বলছেন, ‘সমস্ত গুরুত্বপূর্ণ ঘটনায় ব্রেগেটের উপস্থিতি রয়েছে। তাঁর গল্প আমাদের সেই সময়ের সহিংসতা এবং চরমপন্থা সম্পর্কে বিস্তারিত ধারণা দেয়। সেই সময় এবং আজকের উভয় ক্ষেত্রেই র্যাডিক্যালাইজেশনের প্রক্রিয়া বুঝতে সাহায্য করে।’
কুখ্যাত সন্ত্রাসবাদী ইলিচ রামিরেজ সানচেজ। তিনি ‘কার্লোস দ্য জ্যাকেল’ নামেই বেশি পরিচিত। সানচেজের সহযোগী ছিলেন ব্রেগেট। নিখোঁজ হওয়ার পর মূলত যুক্তরাষ্ট্র সরকারের হয়ে কাজ করেছেন। সিআইএর পক্ষে গুপ্তচরবৃত্তি করেছেন। ১৯৯৪ সালে ফরাসি গোয়েন্দাদের হাতে ধরিয়ে দেন তাঁরই এক সময়ের বস কার্লোসকে। এই কাজ করে তিনি প্রচুর অর্থ কামিয়েছিলেন।
ব্রেগেটের মতো ব্যক্তিকে এজেন্ট নিয়োগের ঘটনা সিআইএর নৈতিকতার চর্চা নিয়েও প্রশ্ন তোলার সুযোগ করে দিয়েছে। যেখানে ব্রেগেট সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের জন্য ইসরায়েল এবং ফ্রান্সে দুবার দোষী সাব্যস্ত এবং মার্কিন সরকারের অর্থায়নে পরিচালিত মিউনিখের একটি গণতন্ত্রপন্থী রেডিও স্টেশনে বোমা হামলার জন্য দায়ী বলে অভিযোগ রয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্র ভিত্তিক সাংবাদিক এবং সিআইএর ইতিহাসের পুরস্কার বিজয়ী লেখক টিম ওয়েইনার বলেন, ‘সিআইএ এসব ক্ষেত্রে খুব কমই নীতি নৈতিকতার ধার ধারে।’
ওয়েইনার দ্য গার্ডিয়ানের অবজারভার ম্যাগাজিনকে বলেন, এজেন্ট শনাক্ত, নিয়োগ ও পরিচালনার জন্য বিদেশে সিআইএর কর্মকর্তারা থাকেন। একাধিক সিআইএ কর্মকর্তা আমাকে বলেছেন: ‘দাতব্য কাজ করতে চান এমন লোক দিয়ে তো আপনি একটি সন্ত্রাসী সংগঠনের তথ্য পাবেন না!’
ব্রেগেটের বেড়ে ওঠার গল্পটি অন্যরকম। ১৯৫০ সালে ইতালীয়-ভাষী সুইজারল্যান্ডের একটি মনোরম শহরে (আলপাইন) তাঁর জন্ম। ১৯৬০–এর দশকের শেষের দিকে উগ্রবাদের প্রভাব তাঁর ওপর পড়ে। বিভিন্ন প্রতিবাদ সমাবেশ ও মিছিলে যাওয়ার কারণে প্রায়ই স্কুল কামাই করতেন।
১৯৬৭ সালে বলিভিয়ায় নিহত সমাজতান্ত্রিক বিপ্লবের আইকন চে গুয়েভারা এবং মাও সেতুং-এর লেখাজোখা পড়তেন নিয়মিত। পশ্চিমের অন্য তরুণদের মতো, ভিয়েতনাম যুদ্ধ তাঁকেও ব্যাপকভাবে প্রভাবিত করে। পপুলার ফ্রন্ট ফর দ্য লিবারেশন অব প্যালেস্টাইনের (পিএফএলপি) মতো দলগুলোকে বিশ্ব সমাজতান্ত্রিক বিপ্লবের অগ্রদূত হিসেবে দেখতেন তিনি।
১৯৬৮ সালে আন্তর্জাতিক বিমানে একের পর এক আক্রমণ শুরু করে পিএফএলপি। এই সময় এ নিয়ে বিশ্বব্যাপী তোলপাড় শুরু হয়। ১৯৬৯ সালে জুরিখ বিমানবন্দরে একটি ইসরায়েলি যাত্রীবাহী জেট ধ্বংস চেষ্টার সঙ্গে জড়িত সন্দেহে এই গ্রুপের তিন সদস্যের বিচার শুরু হয়। বলতে গেলে ব্রেগেটের চরমপন্থার দিকে যাত্রার এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্ত।
কিছুদিন পরে ব্রেগেট সুইজারল্যান্ডে আরব সংগঠনগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ করে পিএফএলপিতে যোগদানের আগ্রহের কথা জানান। এরপর প্রশিক্ষণের জন্য লেবাননে যান। কিন্তু তাঁর প্রথম মিশনই ব্যর্থ হয়। ১৯৭০ সালের জুনে হাইফা বন্দরে তাঁকে বিস্ফোরকসহ আটক করা হয়। তেল আবিবের একটি ডিপার্টমেন্টাল স্টোর উড়িয়ে দেওয়ার পরিকল্পনা ছিল তাঁর।
১৫ বছরের কারাদণ্ডে দণ্ডিত হওয়ার পর, ব্রেগেট পরবর্তী সাত বছর কারাগারেই কাটিয়েছেন। সহযোগিতার শর্তে দণ্ড কমানোর প্রস্তাব দিলেও তিনি তা প্রত্যাখ্যান করেন। কিন্তু এরপরে জ্যঁ পল সার্ত্রে এবং গুন্টার গ্রাসসহ পশ্চিমা বামপন্থী চিন্তাবিদ, লেখক এবং কর্মীদের দাবির মুখে ব্রেগেটকে ক্ষমা করা হয়।
হ্যানি বলেন, ‘এটা খুব আশ্চর্যের ব্যাপার যে, তিনি তখনো এতটা একগুঁয়ে ছিলেন। কারণ ২৫ বছর পরে তিনিই বিশ্বাসঘাতকতা করে সিআইএর সঙ্গে হাত মেলান। অথচ ওই সময় পিএফএলপির প্রতি সম্পূর্ণ অনুগত ছিলেন। এতে বোঝা যায়, সময়ের সঙ্গে সঙ্গে কীভাবে পরিবর্তিত হয়েছেন।’
১৯৭৭ সালে ব্রেগেট একটি বই প্রকাশ করেন। কিন্তু শিগগিরই আবার গোপন অপারেশনে ফিরে যান। কার্লোস দ্য জ্যাকেলের আহ্বানে সাড়া দিয়ে একাধিক বড় আক্রমণ এবং গোলাগুলির ঘটনায় নাম উঠে আসার পর রীতিমতো আন্তর্জাতিক সেলিব্রিটিতে পরিণত হন ব্রেগেট।
এর চার বছর পর ব্রেগেট রেডিও ফ্রি ইউরোপের অফিসে বোমা হামলা করেন। গণতন্ত্রপন্থী এই নেটওয়ার্ক দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ পরবর্তী স্নায়ুযুদ্ধের অংশ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। হামলায় ছয়জন আহত এবং স্টেশনের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়। রোমানিয়ার তৎকালীন স্বৈরশাসক নিকোলাই কৌসেস্কুর গুপ্তচর বাহিনীর সহায়তায় এ হামলা পরিচালিত হয়। কার্লোস দ্য জ্যাকেল এবং তাঁর নতুন সংগঠনকে ঘাঁটি, অস্ত্র এবং পাসপোর্ট সরবরাহ করেছিল কৌসেস্কুর গুপ্তচর বাহিনী।
এরপর আরও খারাপ সময় আসতে থাকে। কার্লোস তাঁর তরুণ জার্মান গার্লফ্রেন্ডকে ব্রেগেটের সঙ্গে প্যারিস দূতাবাসে বোমা হামলার জন্য পাঠান। ধনী উপসাগরীয় দেশগুলো থেকে নিরাপত্তার নামে চাঁদাবাজি ছিল উদ্দেশ্য। শ্যাম্পস এলিসির কাছে গাড়িতে বিস্ফোরকসহ পুলিশের হাতে ধরা পড়েন তাঁরা। তাঁদের কারাগারে পাঠানো হলে মুক্ত করার জন্য কার্লোস আক্রমণ চালান। এতে ১১ জন নিহত এবং বহুজন আহত হন।
১৯৮৫ সালে মুক্তির পর ব্রেগেট কার্লোসের হয়ে কাজ চালিয়ে যান। অন্যান্য চরমপন্থী গোষ্ঠীর সঙ্গে যোগাযোগ করতে বা অস্ত্র চুক্তির মধ্যস্থতা করতে পশ্চিম ইউরোপ এবং মধ্যপ্রাচ্য ভ্রমণ করেন।
হ্যানির বইয়ে বলা হচ্ছে, এই সময়েই ব্রেগেট একদিন সুইজারল্যান্ডের বার্নে মার্কিন দূতাবাসে প্রবেশ করেন এবং সিআইএর হয়ে গুপ্তচরবৃত্তি করার প্রস্তাব দেন।
হ্যানি বইয়ে লিখেছেন, ‘তাঁর (ব্রেগেট) টাকার দরকার ছিল। একটা স্থিতিশীল আয়ের উৎস খুঁজছিলেন। জীবনে স্থিতিশীলতা চেয়েছিলেন। সংগঠনের মধ্যে নিজের অবস্থান এবং তাঁর সঙ্গে আচরণ—এসব নিয়ে তিনি ভাবিত ছিলেন। এ ছাড়া, ১৯৯১ সালের শেষ বসন্তে কার্লোস তাঁর সংগঠনকে সারা বিশ্বে প্রসারিত করছিলেন। ফলে বিচ্ছিন্নতাও বাড়ছিল। অনেক দেরি করে ফেলার আগেই এখান থেকে বেরোতে চেয়েছিলেন ব্রেগেট।’
ব্রেগেটকে এজেন্ট নিয়োগ করার ব্যাপারে সিআইএর ভেতর থেকে কোনো বাধা ছিল—নথিপত্রে এমন কোনো প্রমাণ নেই। হ্যানি বলেন, ১৯৯০–এর দশকের গোড়ার দিকে সিআইএ চাপের মধ্যে ছিল। তারা একটি নতুন মিশনে নেমেছিল: ব্রেগেটের পুরোনো সশস্ত্র কমরেডদের কীভাবে ঠেকানো যায়।
ওয়েইনার বলেন, ‘সোভিয়েত সাম্রাজ্যের পতন সিআইএর প্রতি ডাইনোসরের ওপর উল্কাপাতের মতো প্রভাব ফেলেছিল। অনেকে বলাবলি শুরু করেছিলেন: তাহলে আর সিআইএ রেখে লাভ কী? এবং উত্তরটি ছিল: এটি (সিআইএর কাজ) সন্ত্রাসবাদ, মাদক বিরোধী অভিযান… ভালুক (রাশিয়া) মারা গেছে কিন্তু সেখানে তো একটি জঙ্গল রয়ে গেছে যা সাপে পূর্ণ!
ব্রেগেটের প্রস্তাব সিআইএ লুফে নেয়। তাকে মাসিক ৩ হাজার ডলার চুক্তিতে কাজ দেয়। তাঁকে একটি কোড নাম দেওয়া হয়— FDBONUS/1। হোটেলে কয়েক সপ্তাহব্যাপী বৈঠকের পর, ব্রেগেট সিআইএকে কার্লোস দ্য জ্যাকেল এবং তাঁর সংগঠনের পাশাপাশি অনেক চরম বামপন্থী গোষ্ঠী সম্পর্কে প্রচুর তথ্য দেন।
পরবর্তী চার বছর ব্রেগেট সিআইএকে অনেক তথ্য সরবরাহ করেছেন বলেই ধরে নেওয়া যায়। সম্ভবত পরোক্ষভাবে ফরাসি গোয়েন্দা অভিযানের মূল উপাদানগুলো তিনিই সরবরাহ করেছিলেন। ১৯৯৪ সালে খার্তুমের একটি ক্লিনিক থেকে কার্লোসকে আটকের পেছনে তাঁর দেওয়া তথ্যগুলোই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ছিল।
ব্রেগেটের রহস্য অবশ্য অমীমাংসিতই রয়ে গেছে। ১৯৯৫ সালে চরমপন্থী থেকে সিআইএ এজেন্টে রূপান্তরিত ব্রেগেট গ্রিস থেকে ইতালিমুখী একটি ফেরিতে ওঠেন। এরপর আর কোনো খোঁজ পাওয়া যায়নি। তিনি কি আত্মহত্যা করেছেন? তাঁকে কি খুন করা হয়েছিল? নাকি তিনি কোনো মিথ্যা পরিচয়ে নতুন জীবন শুরু করেছিলেন?
ইতিহাসবিদ হ্যানি বলেন, ‘আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি, এটি (পক্ষ পরিবর্তন) তাঁর অনেক শত্রুর মধ্যে একটি ছিল। আমি বিশ্বাস করি না যে তিনি এখনো বেঁচে আছেন, যদিও এটি অসম্ভবও নয়। তাঁর জীবন ছিল একটি অসাধারণ একান্ত ব্যক্তিগত অভিযাত্রা … কিন্তু আমি মনে করি, এটি তখনই শেষ হয়ে গেছে (যখন তিনি ফেরিতে পা রেখেছিলেন)।’
দ্য গার্ডিয়ান থেকে অনুবাদ করেছেন জাহাঙ্গীর আলম

আগে থেকে বলে না দিয়ে এটিকে নির্ঘাত একটি বানোয়াট থ্রিলার গল্প বলেই মনে হবে। কিন্তু এটি সত্য। এটি এমন এক লোকের গল্প যার হৃদয়ে কিশোর বয়সেই গেঁথে গিয়েছিল উগ্রবাদ, তিনি বোমা তৈরিতে ছিলেন সিদ্ধহস্ত, চৌকস অস্ত্র ব্যবসায়ী, গোপন সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা এবং সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে সহায়তাকারী। কোনো এক নিকষ কালো রাতে নিখোঁজ হওয়ার আগে টানা দুই দশক পশ্চিমের নিরাপত্তা কর্মকর্তাদের ঘুম হারাম করেছিলেন তিনি। মাঝ ভূমধ্যসাগরে এক জাহাজ থেকে মাঝরাতে উধাও হয়ে যান তিনি। এটি এখনো এক অমীমাংসিত রহস্য।
১৯৭০ এবং ১৯৮০–এর দশককে অনেকে বলেন ‘সন্ত্রাসবাদের স্বর্ণযুগ’। এই সময়টাতে পশ্চিমা নিরাপত্তা সংস্থা এবং আন্তর্জাতিক সহিংস চরমপন্থীদের মধ্যে চলছিল ছায়াযুদ্ধ। এর মধ্যে সবচেয়ে রহস্যময় ব্যক্তিত্ব ছিলেন ব্রুনো ব্রেগেট। এই ব্যক্তিই বলতে গেলে ওই সময়ে সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধের মোড় ঘুরিয়ে দেন। নতুন একটি বইয়ে সে গল্পই উঠে এসেছে।
ব্রেগেট ১৯৯৫ সালে নিখোঁজ হওয়ার পরবর্তী বছরগুলোতে যুক্তরাষ্ট্র সরকারের হয়ে গুরুত্বপূর্ণ কাজ করেছেন। সিআইএর এজেন্ট হয়ে হাজার হাজার ডলার কামিয়েছেন। মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময়ে কাজ করেছেন ফরাসি গোয়েন্দা বাহিনীর হয়েও।
বিস্তারিত গল্পটি বলার আগে ব্রুনো ব্রেগেটের পরিচয় দেওয়া যাক। ব্রুনোই প্রথম কোনো ইউরোপীয় যিনি ফিলিস্তিনের স্বাধীনতার জন্য সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়েছিলেন। ইউরোপে তাঁকে স্রেফ ভয়ংকর সন্ত্রাসী হিসেবেই দেখা হয়। সন্ত্রাসের দায়ে ফ্রান্স এবং ইসরায়েলে তিনি দুবার দোষী সাব্যস্ত হয়েছেন। তবে ১৯৯৫ সালে হঠাৎ নিখোঁজ হয়ে যান।
সুইস ইতিহাসবিদ এবং রাজনৈতিক সহিংসতা বিষয়ক বিশেষজ্ঞ আদ্রিয়ান হ্যানি বহু বছর ধরে ব্রেগেটের অজানা তথ্য সংগ্রহ করার চেষ্টা করছেন। বিপুল পরিমাণ গোপন নথি এবং মূল সাক্ষীদের সাক্ষাৎকারের ওপর ভিত্তি করে তিনি একটি বই লিখেছেন। আদ্রিয়ান হ্যানি বলছেন, ‘সমস্ত গুরুত্বপূর্ণ ঘটনায় ব্রেগেটের উপস্থিতি রয়েছে। তাঁর গল্প আমাদের সেই সময়ের সহিংসতা এবং চরমপন্থা সম্পর্কে বিস্তারিত ধারণা দেয়। সেই সময় এবং আজকের উভয় ক্ষেত্রেই র্যাডিক্যালাইজেশনের প্রক্রিয়া বুঝতে সাহায্য করে।’
কুখ্যাত সন্ত্রাসবাদী ইলিচ রামিরেজ সানচেজ। তিনি ‘কার্লোস দ্য জ্যাকেল’ নামেই বেশি পরিচিত। সানচেজের সহযোগী ছিলেন ব্রেগেট। নিখোঁজ হওয়ার পর মূলত যুক্তরাষ্ট্র সরকারের হয়ে কাজ করেছেন। সিআইএর পক্ষে গুপ্তচরবৃত্তি করেছেন। ১৯৯৪ সালে ফরাসি গোয়েন্দাদের হাতে ধরিয়ে দেন তাঁরই এক সময়ের বস কার্লোসকে। এই কাজ করে তিনি প্রচুর অর্থ কামিয়েছিলেন।
ব্রেগেটের মতো ব্যক্তিকে এজেন্ট নিয়োগের ঘটনা সিআইএর নৈতিকতার চর্চা নিয়েও প্রশ্ন তোলার সুযোগ করে দিয়েছে। যেখানে ব্রেগেট সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের জন্য ইসরায়েল এবং ফ্রান্সে দুবার দোষী সাব্যস্ত এবং মার্কিন সরকারের অর্থায়নে পরিচালিত মিউনিখের একটি গণতন্ত্রপন্থী রেডিও স্টেশনে বোমা হামলার জন্য দায়ী বলে অভিযোগ রয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্র ভিত্তিক সাংবাদিক এবং সিআইএর ইতিহাসের পুরস্কার বিজয়ী লেখক টিম ওয়েইনার বলেন, ‘সিআইএ এসব ক্ষেত্রে খুব কমই নীতি নৈতিকতার ধার ধারে।’
ওয়েইনার দ্য গার্ডিয়ানের অবজারভার ম্যাগাজিনকে বলেন, এজেন্ট শনাক্ত, নিয়োগ ও পরিচালনার জন্য বিদেশে সিআইএর কর্মকর্তারা থাকেন। একাধিক সিআইএ কর্মকর্তা আমাকে বলেছেন: ‘দাতব্য কাজ করতে চান এমন লোক দিয়ে তো আপনি একটি সন্ত্রাসী সংগঠনের তথ্য পাবেন না!’
ব্রেগেটের বেড়ে ওঠার গল্পটি অন্যরকম। ১৯৫০ সালে ইতালীয়-ভাষী সুইজারল্যান্ডের একটি মনোরম শহরে (আলপাইন) তাঁর জন্ম। ১৯৬০–এর দশকের শেষের দিকে উগ্রবাদের প্রভাব তাঁর ওপর পড়ে। বিভিন্ন প্রতিবাদ সমাবেশ ও মিছিলে যাওয়ার কারণে প্রায়ই স্কুল কামাই করতেন।
১৯৬৭ সালে বলিভিয়ায় নিহত সমাজতান্ত্রিক বিপ্লবের আইকন চে গুয়েভারা এবং মাও সেতুং-এর লেখাজোখা পড়তেন নিয়মিত। পশ্চিমের অন্য তরুণদের মতো, ভিয়েতনাম যুদ্ধ তাঁকেও ব্যাপকভাবে প্রভাবিত করে। পপুলার ফ্রন্ট ফর দ্য লিবারেশন অব প্যালেস্টাইনের (পিএফএলপি) মতো দলগুলোকে বিশ্ব সমাজতান্ত্রিক বিপ্লবের অগ্রদূত হিসেবে দেখতেন তিনি।
১৯৬৮ সালে আন্তর্জাতিক বিমানে একের পর এক আক্রমণ শুরু করে পিএফএলপি। এই সময় এ নিয়ে বিশ্বব্যাপী তোলপাড় শুরু হয়। ১৯৬৯ সালে জুরিখ বিমানবন্দরে একটি ইসরায়েলি যাত্রীবাহী জেট ধ্বংস চেষ্টার সঙ্গে জড়িত সন্দেহে এই গ্রুপের তিন সদস্যের বিচার শুরু হয়। বলতে গেলে ব্রেগেটের চরমপন্থার দিকে যাত্রার এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্ত।
কিছুদিন পরে ব্রেগেট সুইজারল্যান্ডে আরব সংগঠনগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ করে পিএফএলপিতে যোগদানের আগ্রহের কথা জানান। এরপর প্রশিক্ষণের জন্য লেবাননে যান। কিন্তু তাঁর প্রথম মিশনই ব্যর্থ হয়। ১৯৭০ সালের জুনে হাইফা বন্দরে তাঁকে বিস্ফোরকসহ আটক করা হয়। তেল আবিবের একটি ডিপার্টমেন্টাল স্টোর উড়িয়ে দেওয়ার পরিকল্পনা ছিল তাঁর।
১৫ বছরের কারাদণ্ডে দণ্ডিত হওয়ার পর, ব্রেগেট পরবর্তী সাত বছর কারাগারেই কাটিয়েছেন। সহযোগিতার শর্তে দণ্ড কমানোর প্রস্তাব দিলেও তিনি তা প্রত্যাখ্যান করেন। কিন্তু এরপরে জ্যঁ পল সার্ত্রে এবং গুন্টার গ্রাসসহ পশ্চিমা বামপন্থী চিন্তাবিদ, লেখক এবং কর্মীদের দাবির মুখে ব্রেগেটকে ক্ষমা করা হয়।
হ্যানি বলেন, ‘এটা খুব আশ্চর্যের ব্যাপার যে, তিনি তখনো এতটা একগুঁয়ে ছিলেন। কারণ ২৫ বছর পরে তিনিই বিশ্বাসঘাতকতা করে সিআইএর সঙ্গে হাত মেলান। অথচ ওই সময় পিএফএলপির প্রতি সম্পূর্ণ অনুগত ছিলেন। এতে বোঝা যায়, সময়ের সঙ্গে সঙ্গে কীভাবে পরিবর্তিত হয়েছেন।’
১৯৭৭ সালে ব্রেগেট একটি বই প্রকাশ করেন। কিন্তু শিগগিরই আবার গোপন অপারেশনে ফিরে যান। কার্লোস দ্য জ্যাকেলের আহ্বানে সাড়া দিয়ে একাধিক বড় আক্রমণ এবং গোলাগুলির ঘটনায় নাম উঠে আসার পর রীতিমতো আন্তর্জাতিক সেলিব্রিটিতে পরিণত হন ব্রেগেট।
এর চার বছর পর ব্রেগেট রেডিও ফ্রি ইউরোপের অফিসে বোমা হামলা করেন। গণতন্ত্রপন্থী এই নেটওয়ার্ক দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ পরবর্তী স্নায়ুযুদ্ধের অংশ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। হামলায় ছয়জন আহত এবং স্টেশনের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়। রোমানিয়ার তৎকালীন স্বৈরশাসক নিকোলাই কৌসেস্কুর গুপ্তচর বাহিনীর সহায়তায় এ হামলা পরিচালিত হয়। কার্লোস দ্য জ্যাকেল এবং তাঁর নতুন সংগঠনকে ঘাঁটি, অস্ত্র এবং পাসপোর্ট সরবরাহ করেছিল কৌসেস্কুর গুপ্তচর বাহিনী।
এরপর আরও খারাপ সময় আসতে থাকে। কার্লোস তাঁর তরুণ জার্মান গার্লফ্রেন্ডকে ব্রেগেটের সঙ্গে প্যারিস দূতাবাসে বোমা হামলার জন্য পাঠান। ধনী উপসাগরীয় দেশগুলো থেকে নিরাপত্তার নামে চাঁদাবাজি ছিল উদ্দেশ্য। শ্যাম্পস এলিসির কাছে গাড়িতে বিস্ফোরকসহ পুলিশের হাতে ধরা পড়েন তাঁরা। তাঁদের কারাগারে পাঠানো হলে মুক্ত করার জন্য কার্লোস আক্রমণ চালান। এতে ১১ জন নিহত এবং বহুজন আহত হন।
১৯৮৫ সালে মুক্তির পর ব্রেগেট কার্লোসের হয়ে কাজ চালিয়ে যান। অন্যান্য চরমপন্থী গোষ্ঠীর সঙ্গে যোগাযোগ করতে বা অস্ত্র চুক্তির মধ্যস্থতা করতে পশ্চিম ইউরোপ এবং মধ্যপ্রাচ্য ভ্রমণ করেন।
হ্যানির বইয়ে বলা হচ্ছে, এই সময়েই ব্রেগেট একদিন সুইজারল্যান্ডের বার্নে মার্কিন দূতাবাসে প্রবেশ করেন এবং সিআইএর হয়ে গুপ্তচরবৃত্তি করার প্রস্তাব দেন।
হ্যানি বইয়ে লিখেছেন, ‘তাঁর (ব্রেগেট) টাকার দরকার ছিল। একটা স্থিতিশীল আয়ের উৎস খুঁজছিলেন। জীবনে স্থিতিশীলতা চেয়েছিলেন। সংগঠনের মধ্যে নিজের অবস্থান এবং তাঁর সঙ্গে আচরণ—এসব নিয়ে তিনি ভাবিত ছিলেন। এ ছাড়া, ১৯৯১ সালের শেষ বসন্তে কার্লোস তাঁর সংগঠনকে সারা বিশ্বে প্রসারিত করছিলেন। ফলে বিচ্ছিন্নতাও বাড়ছিল। অনেক দেরি করে ফেলার আগেই এখান থেকে বেরোতে চেয়েছিলেন ব্রেগেট।’
ব্রেগেটকে এজেন্ট নিয়োগ করার ব্যাপারে সিআইএর ভেতর থেকে কোনো বাধা ছিল—নথিপত্রে এমন কোনো প্রমাণ নেই। হ্যানি বলেন, ১৯৯০–এর দশকের গোড়ার দিকে সিআইএ চাপের মধ্যে ছিল। তারা একটি নতুন মিশনে নেমেছিল: ব্রেগেটের পুরোনো সশস্ত্র কমরেডদের কীভাবে ঠেকানো যায়।
ওয়েইনার বলেন, ‘সোভিয়েত সাম্রাজ্যের পতন সিআইএর প্রতি ডাইনোসরের ওপর উল্কাপাতের মতো প্রভাব ফেলেছিল। অনেকে বলাবলি শুরু করেছিলেন: তাহলে আর সিআইএ রেখে লাভ কী? এবং উত্তরটি ছিল: এটি (সিআইএর কাজ) সন্ত্রাসবাদ, মাদক বিরোধী অভিযান… ভালুক (রাশিয়া) মারা গেছে কিন্তু সেখানে তো একটি জঙ্গল রয়ে গেছে যা সাপে পূর্ণ!
ব্রেগেটের প্রস্তাব সিআইএ লুফে নেয়। তাকে মাসিক ৩ হাজার ডলার চুক্তিতে কাজ দেয়। তাঁকে একটি কোড নাম দেওয়া হয়— FDBONUS/1। হোটেলে কয়েক সপ্তাহব্যাপী বৈঠকের পর, ব্রেগেট সিআইএকে কার্লোস দ্য জ্যাকেল এবং তাঁর সংগঠনের পাশাপাশি অনেক চরম বামপন্থী গোষ্ঠী সম্পর্কে প্রচুর তথ্য দেন।
পরবর্তী চার বছর ব্রেগেট সিআইএকে অনেক তথ্য সরবরাহ করেছেন বলেই ধরে নেওয়া যায়। সম্ভবত পরোক্ষভাবে ফরাসি গোয়েন্দা অভিযানের মূল উপাদানগুলো তিনিই সরবরাহ করেছিলেন। ১৯৯৪ সালে খার্তুমের একটি ক্লিনিক থেকে কার্লোসকে আটকের পেছনে তাঁর দেওয়া তথ্যগুলোই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ছিল।
ব্রেগেটের রহস্য অবশ্য অমীমাংসিতই রয়ে গেছে। ১৯৯৫ সালে চরমপন্থী থেকে সিআইএ এজেন্টে রূপান্তরিত ব্রেগেট গ্রিস থেকে ইতালিমুখী একটি ফেরিতে ওঠেন। এরপর আর কোনো খোঁজ পাওয়া যায়নি। তিনি কি আত্মহত্যা করেছেন? তাঁকে কি খুন করা হয়েছিল? নাকি তিনি কোনো মিথ্যা পরিচয়ে নতুন জীবন শুরু করেছিলেন?
ইতিহাসবিদ হ্যানি বলেন, ‘আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি, এটি (পক্ষ পরিবর্তন) তাঁর অনেক শত্রুর মধ্যে একটি ছিল। আমি বিশ্বাস করি না যে তিনি এখনো বেঁচে আছেন, যদিও এটি অসম্ভবও নয়। তাঁর জীবন ছিল একটি অসাধারণ একান্ত ব্যক্তিগত অভিযাত্রা … কিন্তু আমি মনে করি, এটি তখনই শেষ হয়ে গেছে (যখন তিনি ফেরিতে পা রেখেছিলেন)।’
দ্য গার্ডিয়ান থেকে অনুবাদ করেছেন জাহাঙ্গীর আলম

যুক্তরাষ্ট্রের অ্যারিজোনায় রক্ষণশীল সংগঠন টার্নিং পয়েন্ট ইউএসএ আয়োজিত ‘আমেরিকাফেস্ট’ সম্মেলনে হঠাৎ উপস্থিত হয়ে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্সের প্রশংসা করেছেন মার্কিন র্যাপ তারকা নিকি মিনাজ।
৭ ঘণ্টা আগে
২০২৩ সালের অক্টোবরে যুদ্ধ শুরুর সময় হাদিল সাত মাসের অন্তঃসত্ত্বা ছিলেন। ঝুঁকিপূর্ণ গর্ভধারণ হওয়ায় তিনি নিয়মিত ডাক্তার দেখাতেন, আলট্রাসাউন্ড করাতেন এবং ভিটামিন নিতেন।
৮ ঘণ্টা আগে
বাশার আল-আসাদের পতনের পর সিরিয়ার মানুষ ভেবেছিল—দেশটির কুখ্যাত কারাগার অধ্যায়ের অবসান ঘটেছে। বিদ্রোহীরা জেলখানার দরজা ভেঙে বন্দীদের মুক্ত করেছিল, পরিবারের লোকেরা ছুটে গিয়েছিল নিখোঁজ স্বজনদের খোঁজে।
১০ ঘণ্টা আগে
আজ সোমবার স্থানীয় সময় সকালে মস্কোর দক্ষিণাঞ্চলের একটি অ্যাপার্টমেন্ট ব্লকের পার্কিং লটে এই বিস্ফোরণ ঘটে। জেনারেল সারভারভের গাড়ির নিচে একটি শক্তিশালী বিস্ফোরক ডিভাইস পেতে রাখা হয়েছিল। গাড়িটি চালু করার পরপরই সেটির বিস্ফোরণ ঘটে।
১২ ঘণ্টা আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

যুক্তরাষ্ট্রের অ্যারিজোনায় রক্ষণশীল সংগঠন টার্নিং পয়েন্ট ইউএসএ আয়োজিত ‘আমেরিকাফেস্ট’ সম্মেলনে হঠাৎ উপস্থিত হয়ে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্সের প্রশংসা করেছেন মার্কিন র্যাপ তারকা নিকি মিনাজ। রোববার (২১ ডিসেম্বর) অনুষ্ঠিত ওই সম্মেলনে তিনি তরুণ পুরুষদের জন্য ট্রাম্প ও ভ্যান্সকে ‘রোল মডেল’ হিসেবে উল্লেখ করেন। মিনাজের এই মন্তব্য রাজনৈতিক অঙ্গনে বেশ চমক সৃষ্টি করেছে।
সোমবার (২২ ডিসেম্বর) ‘ফরচুন’ জানিয়েছে, এই সম্মেলনটি প্রয়াত রক্ষণশীল কর্মী চার্লি কার্কের স্মরণে আয়োজন করা হয়। মঞ্চে নিকি মিনাজের সাক্ষাৎকার নেন চার্লি কার্কের স্ত্রী ও বর্তমানে টার্নিং পয়েন্ট ইউএসএ-এর নেতৃত্বে থাকা অ্যারিকা কার্ক। আলোচনায় ট্রাম্পের প্রতি নতুন সমর্থনের কথা জানান মিনাজ—যদিও অতীতে তিনি ট্রাম্পের কঠোর সমালোচক ছিলেন। পাশাপাশি তিনি নাইজেরিয়ায় খ্রিষ্টানদের ওপর সহিংসতারও নিন্দা জানান।
মিনাজ ক্যালিফোর্নিয়ার ডেমোক্র্যাট গভর্নর গ্যাভিন নিউসমকে কটাক্ষ করে ট্রাম্পের দেওয়া ‘নিউ-স্কাম’ নামটি ব্যবহার করেন। বর্তমান প্রশাসনের প্রশংসা করে তিনি বলেন—বর্তমান প্রশাসনে হৃদয় ও আত্মা আছে এবং ট্রাম্প ও ভ্যান্স দুজনই এমন নেতা, যাদের সঙ্গে সাধারণ মানুষ সহজে নিজেদের মিল খুঁজে পায়।
এদিকে মঞ্চে এক অস্বস্তিকর মুহূর্ত তৈরি হয়, যখন ভ্যান্সের রাজনৈতিক দক্ষতার প্রশংসা করতে গিয়ে মিনাজ তাঁকে ‘অ্যাসাসিন’ বলে ফেলেন। কথাটি বলার পরই তিনি থেমে যান এবং পরিস্থিতি কিছুটা বিব্রতকর হয়ে ওঠে। চার্লি কার্ক হত্যাকাণ্ডের শিকার হওয়ায় শব্দটি উপস্থিত অনেকের মনে আঘাত দেয়।
সম্প্রতি মিনাজ ট্রাম্পের ‘ট্রুথ সোশ্যাল’-এ দেওয়া নাইজেরিয়ায় খ্রিষ্টান নির্যাতন সংক্রান্ত একটি পোস্ট শেয়ার করেছিলেন, যেখানে সম্ভাব্য নিষেধাজ্ঞার কথা বলা হয়। এ নিয়ে তিনি জাতিসংঘে মার্কিন মিশনে আয়োজিত এক প্যানেল আলোচনাতেও অংশ নেন।
নিজের পরিবর্তিত অবস্থান নিয়ে মিনাজ বলেন, ‘মত বদলানো দোষের নয়—মনের কথা বলাই এখন সবচেয়ে বড় অপরাধ হয়ে গেছে।’ বিনোদন জগৎ থেকে সমালোচনার প্রসঙ্গে জানান, তিনি এসব নিয়ে ভাবেন না। একসময় ট্রাম্পের অভিবাসন নীতির তীব্র বিরোধিতা করা এই শিল্পী এখন প্রকাশ্যেই বলছেন, তাঁর মত বদলানো ঠিকই আছে।

যুক্তরাষ্ট্রের অ্যারিজোনায় রক্ষণশীল সংগঠন টার্নিং পয়েন্ট ইউএসএ আয়োজিত ‘আমেরিকাফেস্ট’ সম্মেলনে হঠাৎ উপস্থিত হয়ে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্সের প্রশংসা করেছেন মার্কিন র্যাপ তারকা নিকি মিনাজ। রোববার (২১ ডিসেম্বর) অনুষ্ঠিত ওই সম্মেলনে তিনি তরুণ পুরুষদের জন্য ট্রাম্প ও ভ্যান্সকে ‘রোল মডেল’ হিসেবে উল্লেখ করেন। মিনাজের এই মন্তব্য রাজনৈতিক অঙ্গনে বেশ চমক সৃষ্টি করেছে।
সোমবার (২২ ডিসেম্বর) ‘ফরচুন’ জানিয়েছে, এই সম্মেলনটি প্রয়াত রক্ষণশীল কর্মী চার্লি কার্কের স্মরণে আয়োজন করা হয়। মঞ্চে নিকি মিনাজের সাক্ষাৎকার নেন চার্লি কার্কের স্ত্রী ও বর্তমানে টার্নিং পয়েন্ট ইউএসএ-এর নেতৃত্বে থাকা অ্যারিকা কার্ক। আলোচনায় ট্রাম্পের প্রতি নতুন সমর্থনের কথা জানান মিনাজ—যদিও অতীতে তিনি ট্রাম্পের কঠোর সমালোচক ছিলেন। পাশাপাশি তিনি নাইজেরিয়ায় খ্রিষ্টানদের ওপর সহিংসতারও নিন্দা জানান।
মিনাজ ক্যালিফোর্নিয়ার ডেমোক্র্যাট গভর্নর গ্যাভিন নিউসমকে কটাক্ষ করে ট্রাম্পের দেওয়া ‘নিউ-স্কাম’ নামটি ব্যবহার করেন। বর্তমান প্রশাসনের প্রশংসা করে তিনি বলেন—বর্তমান প্রশাসনে হৃদয় ও আত্মা আছে এবং ট্রাম্প ও ভ্যান্স দুজনই এমন নেতা, যাদের সঙ্গে সাধারণ মানুষ সহজে নিজেদের মিল খুঁজে পায়।
এদিকে মঞ্চে এক অস্বস্তিকর মুহূর্ত তৈরি হয়, যখন ভ্যান্সের রাজনৈতিক দক্ষতার প্রশংসা করতে গিয়ে মিনাজ তাঁকে ‘অ্যাসাসিন’ বলে ফেলেন। কথাটি বলার পরই তিনি থেমে যান এবং পরিস্থিতি কিছুটা বিব্রতকর হয়ে ওঠে। চার্লি কার্ক হত্যাকাণ্ডের শিকার হওয়ায় শব্দটি উপস্থিত অনেকের মনে আঘাত দেয়।
সম্প্রতি মিনাজ ট্রাম্পের ‘ট্রুথ সোশ্যাল’-এ দেওয়া নাইজেরিয়ায় খ্রিষ্টান নির্যাতন সংক্রান্ত একটি পোস্ট শেয়ার করেছিলেন, যেখানে সম্ভাব্য নিষেধাজ্ঞার কথা বলা হয়। এ নিয়ে তিনি জাতিসংঘে মার্কিন মিশনে আয়োজিত এক প্যানেল আলোচনাতেও অংশ নেন।
নিজের পরিবর্তিত অবস্থান নিয়ে মিনাজ বলেন, ‘মত বদলানো দোষের নয়—মনের কথা বলাই এখন সবচেয়ে বড় অপরাধ হয়ে গেছে।’ বিনোদন জগৎ থেকে সমালোচনার প্রসঙ্গে জানান, তিনি এসব নিয়ে ভাবেন না। একসময় ট্রাম্পের অভিবাসন নীতির তীব্র বিরোধিতা করা এই শিল্পী এখন প্রকাশ্যেই বলছেন, তাঁর মত বদলানো ঠিকই আছে।

যার হৃদয়ে কিশোর বয়সেই গেঁথে গিয়েছিল উগ্রবাদ, তিনি বোমা তৈরিতে ছিলেন সিদ্ধহস্ত, চৌকস অস্ত্র ব্যবসায়ী, গোপন সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা এবং সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে সহায়তাকারী। কোনো এক নিকষ কালো রাতে নিখোঁজ হওয়ার আগে টানা দুই দশক পশ্চিমের নিরাপত্তা কর্মকর্তাদের ঘুম হারাম করেছিলেন তিনি। মাঝ ভূমধ্যসাগরে এক জাহাজ থে
২৮ এপ্রিল ২০২৩
২০২৩ সালের অক্টোবরে যুদ্ধ শুরুর সময় হাদিল সাত মাসের অন্তঃসত্ত্বা ছিলেন। ঝুঁকিপূর্ণ গর্ভধারণ হওয়ায় তিনি নিয়মিত ডাক্তার দেখাতেন, আলট্রাসাউন্ড করাতেন এবং ভিটামিন নিতেন।
৮ ঘণ্টা আগে
বাশার আল-আসাদের পতনের পর সিরিয়ার মানুষ ভেবেছিল—দেশটির কুখ্যাত কারাগার অধ্যায়ের অবসান ঘটেছে। বিদ্রোহীরা জেলখানার দরজা ভেঙে বন্দীদের মুক্ত করেছিল, পরিবারের লোকেরা ছুটে গিয়েছিল নিখোঁজ স্বজনদের খোঁজে।
১০ ঘণ্টা আগে
আজ সোমবার স্থানীয় সময় সকালে মস্কোর দক্ষিণাঞ্চলের একটি অ্যাপার্টমেন্ট ব্লকের পার্কিং লটে এই বিস্ফোরণ ঘটে। জেনারেল সারভারভের গাড়ির নিচে একটি শক্তিশালী বিস্ফোরক ডিভাইস পেতে রাখা হয়েছিল। গাড়িটি চালু করার পরপরই সেটির বিস্ফোরণ ঘটে।
১২ ঘণ্টা আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

‘এই বিভীষিকা আমি কখনো ভুলতে পারব না’—বলছিলেন হাদিল আল ঘেরবাওয়ি। ২৬ বছর বয়সী এই ফিলিস্তিনি নারী গাজা যুদ্ধে চরম ক্ষুধা, ভয় আর অনিশ্চয়তার মধ্যেই দুটি গর্ভধারণ ও দুবার সন্তান জন্ম দিয়েছেন।
সোমবার (২২ ডিসেম্বর) যুক্তরাজ্যের সংবাদমাধ্যম গার্ডিয়ান-ভিত্তিক ইনডিপেনডেন্ট জানিয়েছে, ২০২৩ সালের অক্টোবরে যুদ্ধ শুরুর সময় হাদিল সাত মাসের অন্তঃসত্ত্বা ছিলেন। ঝুঁকিপূর্ণ গর্ভধারণ হওয়ায় তিনি নিয়মিত ডাক্তার দেখাতেন, আলট্রাসাউন্ড করাতেন এবং ভিটামিন নিতেন। গাজা সিটির পূর্বাংশে ইসরায়েল সীমান্তের কাছে বসবাস করায় যুদ্ধ শুরুর প্রথম দিনই তিনি গাজার পশ্চিম অংশে বসবাস করা বাবা-মায়ের বাড়িতে চলে যান। হাদিল ভেবেছিলেন, কয়েক দিনের মধ্যেই তিনি আবার স্বামীর বাড়িতে ফিরে যাবেন। কিন্তু এরপর পরিবারটি অন্তত ১৩ বার বাস্তুচ্যুত হয় এবং স্বামীর বাড়িটিও একদিন পুরোপুরি ধ্বংস হয়ে যায়।
২০২৩ সালের অক্টোবর মাসেই গাজা সিটিতে একটি আবাসিক ভবনে বড় ধরনের হামলার কাছাকাছি অবস্থানে ছিলেন হাদিল। তাঁর কাছে এটিকে একটি ভূমিকম্প মনে হয়েছিল। পরে আশ্রয় নেন আল-শিফা হাসপাতালে। সেখানে অন্যান্য আশ্রয়প্রার্থীর ভিড় এত বেশি ছিল যে, বাথরুম ব্যবহার করাও প্রায় অসম্ভব ছিল। সেদিনের দৃশ্য আজও তাড়া করে ফেরে হাদিলকে। স্তূপ করে রাখা লাশ, ড্রামে রাখা খণ্ড-বিখণ্ড অঙ্গপ্রত্যঙ্গ আর তীব্র গন্ধ। তিনি বলেন, ‘আমি গর্ভবতী ছিলাম, সহ্য করতে পারিনি।’
অবস্থা এমন দাঁড়ায় যে—নিরাপত্তার আশায় এবার তিনি ও তাঁর স্বামী খান ইউনিসের নাসের হাসপাতালে যান এবং চিকিৎসকদের কাছে আগেভাগেই সন্তান প্রসবের অনুরোধ করেন। হাদিল যখন সন্তান প্রসব করছিলেন, তখন হাসপাতালটির পাশের ভবনেই হামলা হয় এবং আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। বিশৃঙ্খল এই পরিস্থিতিতে সন্তান বদলে যাওয়ার আতঙ্কও গ্রাস করেছিল হাদিলকে। তবে আতঙ্কের মধ্যেই শেষ পর্যন্ত তিনি ছেলে জাওয়াদের জন্ম দেন।
নবজাতক নিয়ে হাদিলকে ৩০ জনের সঙ্গে একটি কক্ষে গাদাগাদি করে থাকতে হয়েছিল। সেই সময়টিতে সেলাইয়ের তীব্র ব্যথার মধ্যেও তিনি কোনো ওষুধ পাননি; রাতের পর রাত চুপচাপ এই ব্যথা সহ্য করেছেন। তাঁর ধারণা, প্রসবের পর তিনি বিষণ্নতায় আক্রান্ত হয়েছিলেন।
কয়েক মাস পর তাঁরা একটি তাঁবুতে ওঠেন। বালু, পোকামাকড় আর প্রচণ্ড ঠান্ডায় একের পর এক নবজাতকের মৃত্যুর খবরে সারাক্ষণ আচ্ছন্ন হয়ে থাকতেন হাদিল। রাতে ছেলেকে জড়িয়ে ধরে বারবার জেগে উঠতেন। জাওয়াদের বয়স ৯ মাস হলে আবারও গর্ভবতী হন তিনি। হাদিল বলেন, ‘তাঁবুতে থেকে আরেকটি সন্তান—ভীষণ ধাক্কা খেয়েছিলাম।’
চলতি বছরের জানুয়ারিতে সাময়িক যুদ্ধবিরতির খবর কিছুটা আশা জাগিয়েছিল তাঁদের। সেই আশা থেকেই ঝুঁকি নিয়ে তাঁরা নিজেদের বাড়িতে ফিরে যান। কিন্তু ছয় সপ্তাহ পরই ভেঙে যায় যুদ্ধবিরতি। পেটে সন্তান নিয়ে আবারও পালাতে হয় হাদিলকে। পালানোর পর তাঁদের বাড়িটিও ধ্বংস হয়ে যায়। যুদ্ধের মধ্যে দ্বিতীয় গর্ভধারণ হাদিলের জন্য ছিল সবচেয়ে কঠিন। এই সন্তান পেটে রাখার ৯ মাসই তাঁর যুদ্ধের মধ্যে কেটেছে। এমনও দিন গেছে, সারা দিন শুধু একটি শসা খেয়ে কাটিয়েছেন। আর কোথাও এক মুঠো খাবার পেলে নিজের ভাগটুকু তিনি ছেলে জাওয়াদকে দিতেন।
দ্বিতীয়বার প্রসবের সময়ও তিনি বাবা-মায়ের বাড়িতে গিয়ে ওঠেন। কারণ ওই বাড়ি থেকে কাছাকাছি একটি হাসপাতালে নবজাতক সুরক্ষার জন্য ইনকিউবেটর ছিল। এক রাতে প্রসবব্যথা শুরু হলে, লিফট না থাকায় পাঁচ তলা থেকে হেঁটেই নামতে হয় হাদিলকে। পরে তিনি অ্যাম্বুলেন্সে ওঠেন এবং ওই হাসপাতালে দ্বিতীয় ছেলে ফারেসের জন্ম দেন। জন্মের সময় ফারেসের ওজন ছিল মাত্র ২ কেজি।
এবারে অ্যানেসথেসিয়া ছাড়াই সেলাই দেওয়া হয় হাদিলকে। আর অন্যকে সুযোগ করে দিতে কিছুক্ষণের মধ্যেই বিছানা খালি করে তাঁকে চেয়ারে বসে থাকতে হয়। ফারেসের জন্মের পাঁচ ঘণ্টা পর, চরম ক্লান্তি ও ব্যথা নিয়ে তিনি আবার পাঁচ তলা সিঁড়ি বেয়ে বাবা-মায়ের ঘরে ফেরেন। এই যুদ্ধ, তাঁর শরীর ও মনে রেখে গেছে এমন ক্ষত—যা ভুলবার নয়।

‘এই বিভীষিকা আমি কখনো ভুলতে পারব না’—বলছিলেন হাদিল আল ঘেরবাওয়ি। ২৬ বছর বয়সী এই ফিলিস্তিনি নারী গাজা যুদ্ধে চরম ক্ষুধা, ভয় আর অনিশ্চয়তার মধ্যেই দুটি গর্ভধারণ ও দুবার সন্তান জন্ম দিয়েছেন।
সোমবার (২২ ডিসেম্বর) যুক্তরাজ্যের সংবাদমাধ্যম গার্ডিয়ান-ভিত্তিক ইনডিপেনডেন্ট জানিয়েছে, ২০২৩ সালের অক্টোবরে যুদ্ধ শুরুর সময় হাদিল সাত মাসের অন্তঃসত্ত্বা ছিলেন। ঝুঁকিপূর্ণ গর্ভধারণ হওয়ায় তিনি নিয়মিত ডাক্তার দেখাতেন, আলট্রাসাউন্ড করাতেন এবং ভিটামিন নিতেন। গাজা সিটির পূর্বাংশে ইসরায়েল সীমান্তের কাছে বসবাস করায় যুদ্ধ শুরুর প্রথম দিনই তিনি গাজার পশ্চিম অংশে বসবাস করা বাবা-মায়ের বাড়িতে চলে যান। হাদিল ভেবেছিলেন, কয়েক দিনের মধ্যেই তিনি আবার স্বামীর বাড়িতে ফিরে যাবেন। কিন্তু এরপর পরিবারটি অন্তত ১৩ বার বাস্তুচ্যুত হয় এবং স্বামীর বাড়িটিও একদিন পুরোপুরি ধ্বংস হয়ে যায়।
২০২৩ সালের অক্টোবর মাসেই গাজা সিটিতে একটি আবাসিক ভবনে বড় ধরনের হামলার কাছাকাছি অবস্থানে ছিলেন হাদিল। তাঁর কাছে এটিকে একটি ভূমিকম্প মনে হয়েছিল। পরে আশ্রয় নেন আল-শিফা হাসপাতালে। সেখানে অন্যান্য আশ্রয়প্রার্থীর ভিড় এত বেশি ছিল যে, বাথরুম ব্যবহার করাও প্রায় অসম্ভব ছিল। সেদিনের দৃশ্য আজও তাড়া করে ফেরে হাদিলকে। স্তূপ করে রাখা লাশ, ড্রামে রাখা খণ্ড-বিখণ্ড অঙ্গপ্রত্যঙ্গ আর তীব্র গন্ধ। তিনি বলেন, ‘আমি গর্ভবতী ছিলাম, সহ্য করতে পারিনি।’
অবস্থা এমন দাঁড়ায় যে—নিরাপত্তার আশায় এবার তিনি ও তাঁর স্বামী খান ইউনিসের নাসের হাসপাতালে যান এবং চিকিৎসকদের কাছে আগেভাগেই সন্তান প্রসবের অনুরোধ করেন। হাদিল যখন সন্তান প্রসব করছিলেন, তখন হাসপাতালটির পাশের ভবনেই হামলা হয় এবং আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। বিশৃঙ্খল এই পরিস্থিতিতে সন্তান বদলে যাওয়ার আতঙ্কও গ্রাস করেছিল হাদিলকে। তবে আতঙ্কের মধ্যেই শেষ পর্যন্ত তিনি ছেলে জাওয়াদের জন্ম দেন।
নবজাতক নিয়ে হাদিলকে ৩০ জনের সঙ্গে একটি কক্ষে গাদাগাদি করে থাকতে হয়েছিল। সেই সময়টিতে সেলাইয়ের তীব্র ব্যথার মধ্যেও তিনি কোনো ওষুধ পাননি; রাতের পর রাত চুপচাপ এই ব্যথা সহ্য করেছেন। তাঁর ধারণা, প্রসবের পর তিনি বিষণ্নতায় আক্রান্ত হয়েছিলেন।
কয়েক মাস পর তাঁরা একটি তাঁবুতে ওঠেন। বালু, পোকামাকড় আর প্রচণ্ড ঠান্ডায় একের পর এক নবজাতকের মৃত্যুর খবরে সারাক্ষণ আচ্ছন্ন হয়ে থাকতেন হাদিল। রাতে ছেলেকে জড়িয়ে ধরে বারবার জেগে উঠতেন। জাওয়াদের বয়স ৯ মাস হলে আবারও গর্ভবতী হন তিনি। হাদিল বলেন, ‘তাঁবুতে থেকে আরেকটি সন্তান—ভীষণ ধাক্কা খেয়েছিলাম।’
চলতি বছরের জানুয়ারিতে সাময়িক যুদ্ধবিরতির খবর কিছুটা আশা জাগিয়েছিল তাঁদের। সেই আশা থেকেই ঝুঁকি নিয়ে তাঁরা নিজেদের বাড়িতে ফিরে যান। কিন্তু ছয় সপ্তাহ পরই ভেঙে যায় যুদ্ধবিরতি। পেটে সন্তান নিয়ে আবারও পালাতে হয় হাদিলকে। পালানোর পর তাঁদের বাড়িটিও ধ্বংস হয়ে যায়। যুদ্ধের মধ্যে দ্বিতীয় গর্ভধারণ হাদিলের জন্য ছিল সবচেয়ে কঠিন। এই সন্তান পেটে রাখার ৯ মাসই তাঁর যুদ্ধের মধ্যে কেটেছে। এমনও দিন গেছে, সারা দিন শুধু একটি শসা খেয়ে কাটিয়েছেন। আর কোথাও এক মুঠো খাবার পেলে নিজের ভাগটুকু তিনি ছেলে জাওয়াদকে দিতেন।
দ্বিতীয়বার প্রসবের সময়ও তিনি বাবা-মায়ের বাড়িতে গিয়ে ওঠেন। কারণ ওই বাড়ি থেকে কাছাকাছি একটি হাসপাতালে নবজাতক সুরক্ষার জন্য ইনকিউবেটর ছিল। এক রাতে প্রসবব্যথা শুরু হলে, লিফট না থাকায় পাঁচ তলা থেকে হেঁটেই নামতে হয় হাদিলকে। পরে তিনি অ্যাম্বুলেন্সে ওঠেন এবং ওই হাসপাতালে দ্বিতীয় ছেলে ফারেসের জন্ম দেন। জন্মের সময় ফারেসের ওজন ছিল মাত্র ২ কেজি।
এবারে অ্যানেসথেসিয়া ছাড়াই সেলাই দেওয়া হয় হাদিলকে। আর অন্যকে সুযোগ করে দিতে কিছুক্ষণের মধ্যেই বিছানা খালি করে তাঁকে চেয়ারে বসে থাকতে হয়। ফারেসের জন্মের পাঁচ ঘণ্টা পর, চরম ক্লান্তি ও ব্যথা নিয়ে তিনি আবার পাঁচ তলা সিঁড়ি বেয়ে বাবা-মায়ের ঘরে ফেরেন। এই যুদ্ধ, তাঁর শরীর ও মনে রেখে গেছে এমন ক্ষত—যা ভুলবার নয়।

যার হৃদয়ে কিশোর বয়সেই গেঁথে গিয়েছিল উগ্রবাদ, তিনি বোমা তৈরিতে ছিলেন সিদ্ধহস্ত, চৌকস অস্ত্র ব্যবসায়ী, গোপন সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা এবং সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে সহায়তাকারী। কোনো এক নিকষ কালো রাতে নিখোঁজ হওয়ার আগে টানা দুই দশক পশ্চিমের নিরাপত্তা কর্মকর্তাদের ঘুম হারাম করেছিলেন তিনি। মাঝ ভূমধ্যসাগরে এক জাহাজ থে
২৮ এপ্রিল ২০২৩
যুক্তরাষ্ট্রের অ্যারিজোনায় রক্ষণশীল সংগঠন টার্নিং পয়েন্ট ইউএসএ আয়োজিত ‘আমেরিকাফেস্ট’ সম্মেলনে হঠাৎ উপস্থিত হয়ে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্সের প্রশংসা করেছেন মার্কিন র্যাপ তারকা নিকি মিনাজ।
৭ ঘণ্টা আগে
বাশার আল-আসাদের পতনের পর সিরিয়ার মানুষ ভেবেছিল—দেশটির কুখ্যাত কারাগার অধ্যায়ের অবসান ঘটেছে। বিদ্রোহীরা জেলখানার দরজা ভেঙে বন্দীদের মুক্ত করেছিল, পরিবারের লোকেরা ছুটে গিয়েছিল নিখোঁজ স্বজনদের খোঁজে।
১০ ঘণ্টা আগে
আজ সোমবার স্থানীয় সময় সকালে মস্কোর দক্ষিণাঞ্চলের একটি অ্যাপার্টমেন্ট ব্লকের পার্কিং লটে এই বিস্ফোরণ ঘটে। জেনারেল সারভারভের গাড়ির নিচে একটি শক্তিশালী বিস্ফোরক ডিভাইস পেতে রাখা হয়েছিল। গাড়িটি চালু করার পরপরই সেটির বিস্ফোরণ ঘটে।
১২ ঘণ্টা আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

বাশার আল-আসাদের পতনের পর সিরিয়ার মানুষ ভেবেছিল—দেশটির কুখ্যাত কারাগার অধ্যায়ের অবসান ঘটেছে। বিদ্রোহীরা জেলখানার দরজা ভেঙে বন্দীদের মুক্ত করেছিল, পরিবারের লোকেরা ছুটে গিয়েছিল নিখোঁজ স্বজনদের খোঁজে। কিন্তু এক বছর না পেরোতেই সেই কারাগারগুলো আবার ভরে উঠছে। এবার নতুন সরকারের অধীনেই সিরিয়ায় আবারও ফিরে এসেছে গ্রেপ্তার, নির্যাতন ও চাঁদাবাজির অভিযোগ।
রয়টার্সের এক অনুসন্ধানে উঠে এসেছে, সিরিয়ার বর্তমান প্রেসিডেন্ট আহমেদ আল-শারার নিরাপত্তা বাহিনীর হাতে গত এক বছরে অন্তত ৮২৯ জন নিরাপত্তাজনিত কারণে আটক হয়েছেন। প্রকৃত সংখ্যা আরও বেশি হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। আটক ব্যক্তিদের বড় অংশই কোনো আনুষ্ঠানিক অভিযোগ বা আদালতের আদেশ ছাড়াই বন্দী রয়েছেন।
সোমবার (২২ ডিসেম্বর) প্রকাশিত রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আসাদ-পরবর্তী সিরিয়ায় প্রথম দফার গ্রেপ্তার শুরু হয়েছিল বিদ্রোহীদের বিজয়ের পরপরই। সে সময় মূলত আসাদের আমলের সেনা সদস্য ও কর্মকর্তাদের আটক করা হয়েছিল। পরে শীতের শেষ দিকে উপকূলীয় অঞ্চলে সহিংসতার জের ধরে আলাউইত সম্প্রদায়ের শত শত মানুষ গ্রেপ্তার হন। বসন্ত ও গ্রীষ্মে দ্রুজ অধ্যুষিত দক্ষিণাঞ্চলেও ব্যাপক ধরপাকড় চলে। একই সঙ্গে সুন্নি, খ্রিষ্টান ও শিয়া সম্প্রদায়ের লোকজনও ‘নিরাপত্তা ঝুঁকি’ বা আসাদের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতার অস্পষ্ট অভিযোগে আটক হন।
রয়টার্স জানিয়েছে, আসাদ আমলের অন্তত ২৮টি কারাগার ও আটক কেন্দ্র আবার সক্রিয় হয়েছে। এগুলোর অনেকগুলোই অতীতে নির্যাতনের জন্য কুখ্যাত ছিল। যদিও বর্তমান সরকার বলছে, অপরাধীদের বিচারের প্রয়োজনে এসব কেন্দ্র ব্যবহার করা হচ্ছে এবং অনেক বন্দীকে ইতিমধ্যে মুক্তি দেওয়া হয়েছে, তবে কোনো নির্দিষ্ট পরিসংখ্যান তারা প্রকাশ করেনি।
সাক্ষাৎকারে সাবেক বন্দী ও স্বজনেরা জানিয়েছেন, আটক কেন্দ্রগুলোতে ভয়াবহ মানবেতর পরিস্থিতি বিরাজ করছে। গাদাগাদি করে বন্দী রাখা, খাবার ও চিকিৎসার অভাব, ত্বকের রোগ এবং নিয়মিত মারধরের অভিযোগ রয়েছে। অন্তত ১১ জন বন্দী কারা হেফাজতে মারা গেছেন বলে নথিভুক্ত করেছে রয়টার্স। এদের মধ্যে কয়েকজনের মৃত্যুর খবর পরিবার জানতই না—দাফন সম্পন্ন হওয়ার পর তারা বিষয়টি জানতে পারে।
চাঁদাবাজিও নতুন করে মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে। ১৪টি পরিবার জানিয়েছে, স্বজনকে মুক্তির বিনিময়ে ৫০০ থেকে ১৫ হাজার ডলার পর্যন্ত দাবি করা হয়েছে। কিছু ক্ষেত্রে এই অঙ্ক ৯০ হাজার ডলার ছাড়িয়েছে। অর্থ পরিশোধের পরও অনেকেই মুক্তি পাননি।
এদিকে সরকার স্বীকার করেছে, প্রতিষ্ঠানগুলোর পুনর্গঠনের সময় কিছু ‘ফাঁকফোকর’ তৈরি হয়েছে এবং কিছু নিরাপত্তা সদস্য নীতিমালা লঙ্ঘন করেছে। তাদের দাবি, চাঁদাবাজি ও সহিংসতার ঘটনায় অন্তত ১৫৯ জন নিরাপত্তা সদস্যকে শাস্তি দেওয়া হয়েছে।
তবে মানবাধিকার সংগঠনগুলো বলছে, ব্যাপক আটক ও গুমের অভিযোগ নতুন সরকারের বিশ্বাসযোগ্যতাকে প্রশ্নের মুখে ফেলছে। জাতিসংঘের মানবাধিকার দপ্তরও আসাদের পতনের পর ‘বিচারবহির্ভূত হত্যা ও নির্বিচার আটক’-এর তথ্য পাওয়ার কথা জানিয়েছে।
আসাদের শাসনামলের মতো নির্মম নির্যাতন না হলেও, পুরোনো কারাগার ব্যবস্থার পুনরুজ্জীবন সিরিয়ার নতুন ভবিষ্যৎ নিয়ে গভীর উদ্বেগ তৈরি করছে। মানবাধিকারকর্মীদের ভাষায়, ‘শাসক বদলেছে, কিন্তু কারাগারের ছায়া এখনো কাটেনি।’

বাশার আল-আসাদের পতনের পর সিরিয়ার মানুষ ভেবেছিল—দেশটির কুখ্যাত কারাগার অধ্যায়ের অবসান ঘটেছে। বিদ্রোহীরা জেলখানার দরজা ভেঙে বন্দীদের মুক্ত করেছিল, পরিবারের লোকেরা ছুটে গিয়েছিল নিখোঁজ স্বজনদের খোঁজে। কিন্তু এক বছর না পেরোতেই সেই কারাগারগুলো আবার ভরে উঠছে। এবার নতুন সরকারের অধীনেই সিরিয়ায় আবারও ফিরে এসেছে গ্রেপ্তার, নির্যাতন ও চাঁদাবাজির অভিযোগ।
রয়টার্সের এক অনুসন্ধানে উঠে এসেছে, সিরিয়ার বর্তমান প্রেসিডেন্ট আহমেদ আল-শারার নিরাপত্তা বাহিনীর হাতে গত এক বছরে অন্তত ৮২৯ জন নিরাপত্তাজনিত কারণে আটক হয়েছেন। প্রকৃত সংখ্যা আরও বেশি হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। আটক ব্যক্তিদের বড় অংশই কোনো আনুষ্ঠানিক অভিযোগ বা আদালতের আদেশ ছাড়াই বন্দী রয়েছেন।
সোমবার (২২ ডিসেম্বর) প্রকাশিত রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আসাদ-পরবর্তী সিরিয়ায় প্রথম দফার গ্রেপ্তার শুরু হয়েছিল বিদ্রোহীদের বিজয়ের পরপরই। সে সময় মূলত আসাদের আমলের সেনা সদস্য ও কর্মকর্তাদের আটক করা হয়েছিল। পরে শীতের শেষ দিকে উপকূলীয় অঞ্চলে সহিংসতার জের ধরে আলাউইত সম্প্রদায়ের শত শত মানুষ গ্রেপ্তার হন। বসন্ত ও গ্রীষ্মে দ্রুজ অধ্যুষিত দক্ষিণাঞ্চলেও ব্যাপক ধরপাকড় চলে। একই সঙ্গে সুন্নি, খ্রিষ্টান ও শিয়া সম্প্রদায়ের লোকজনও ‘নিরাপত্তা ঝুঁকি’ বা আসাদের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতার অস্পষ্ট অভিযোগে আটক হন।
রয়টার্স জানিয়েছে, আসাদ আমলের অন্তত ২৮টি কারাগার ও আটক কেন্দ্র আবার সক্রিয় হয়েছে। এগুলোর অনেকগুলোই অতীতে নির্যাতনের জন্য কুখ্যাত ছিল। যদিও বর্তমান সরকার বলছে, অপরাধীদের বিচারের প্রয়োজনে এসব কেন্দ্র ব্যবহার করা হচ্ছে এবং অনেক বন্দীকে ইতিমধ্যে মুক্তি দেওয়া হয়েছে, তবে কোনো নির্দিষ্ট পরিসংখ্যান তারা প্রকাশ করেনি।
সাক্ষাৎকারে সাবেক বন্দী ও স্বজনেরা জানিয়েছেন, আটক কেন্দ্রগুলোতে ভয়াবহ মানবেতর পরিস্থিতি বিরাজ করছে। গাদাগাদি করে বন্দী রাখা, খাবার ও চিকিৎসার অভাব, ত্বকের রোগ এবং নিয়মিত মারধরের অভিযোগ রয়েছে। অন্তত ১১ জন বন্দী কারা হেফাজতে মারা গেছেন বলে নথিভুক্ত করেছে রয়টার্স। এদের মধ্যে কয়েকজনের মৃত্যুর খবর পরিবার জানতই না—দাফন সম্পন্ন হওয়ার পর তারা বিষয়টি জানতে পারে।
চাঁদাবাজিও নতুন করে মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে। ১৪টি পরিবার জানিয়েছে, স্বজনকে মুক্তির বিনিময়ে ৫০০ থেকে ১৫ হাজার ডলার পর্যন্ত দাবি করা হয়েছে। কিছু ক্ষেত্রে এই অঙ্ক ৯০ হাজার ডলার ছাড়িয়েছে। অর্থ পরিশোধের পরও অনেকেই মুক্তি পাননি।
এদিকে সরকার স্বীকার করেছে, প্রতিষ্ঠানগুলোর পুনর্গঠনের সময় কিছু ‘ফাঁকফোকর’ তৈরি হয়েছে এবং কিছু নিরাপত্তা সদস্য নীতিমালা লঙ্ঘন করেছে। তাদের দাবি, চাঁদাবাজি ও সহিংসতার ঘটনায় অন্তত ১৫৯ জন নিরাপত্তা সদস্যকে শাস্তি দেওয়া হয়েছে।
তবে মানবাধিকার সংগঠনগুলো বলছে, ব্যাপক আটক ও গুমের অভিযোগ নতুন সরকারের বিশ্বাসযোগ্যতাকে প্রশ্নের মুখে ফেলছে। জাতিসংঘের মানবাধিকার দপ্তরও আসাদের পতনের পর ‘বিচারবহির্ভূত হত্যা ও নির্বিচার আটক’-এর তথ্য পাওয়ার কথা জানিয়েছে।
আসাদের শাসনামলের মতো নির্মম নির্যাতন না হলেও, পুরোনো কারাগার ব্যবস্থার পুনরুজ্জীবন সিরিয়ার নতুন ভবিষ্যৎ নিয়ে গভীর উদ্বেগ তৈরি করছে। মানবাধিকারকর্মীদের ভাষায়, ‘শাসক বদলেছে, কিন্তু কারাগারের ছায়া এখনো কাটেনি।’

যার হৃদয়ে কিশোর বয়সেই গেঁথে গিয়েছিল উগ্রবাদ, তিনি বোমা তৈরিতে ছিলেন সিদ্ধহস্ত, চৌকস অস্ত্র ব্যবসায়ী, গোপন সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা এবং সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে সহায়তাকারী। কোনো এক নিকষ কালো রাতে নিখোঁজ হওয়ার আগে টানা দুই দশক পশ্চিমের নিরাপত্তা কর্মকর্তাদের ঘুম হারাম করেছিলেন তিনি। মাঝ ভূমধ্যসাগরে এক জাহাজ থে
২৮ এপ্রিল ২০২৩
যুক্তরাষ্ট্রের অ্যারিজোনায় রক্ষণশীল সংগঠন টার্নিং পয়েন্ট ইউএসএ আয়োজিত ‘আমেরিকাফেস্ট’ সম্মেলনে হঠাৎ উপস্থিত হয়ে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্সের প্রশংসা করেছেন মার্কিন র্যাপ তারকা নিকি মিনাজ।
৭ ঘণ্টা আগে
২০২৩ সালের অক্টোবরে যুদ্ধ শুরুর সময় হাদিল সাত মাসের অন্তঃসত্ত্বা ছিলেন। ঝুঁকিপূর্ণ গর্ভধারণ হওয়ায় তিনি নিয়মিত ডাক্তার দেখাতেন, আলট্রাসাউন্ড করাতেন এবং ভিটামিন নিতেন।
৮ ঘণ্টা আগে
আজ সোমবার স্থানীয় সময় সকালে মস্কোর দক্ষিণাঞ্চলের একটি অ্যাপার্টমেন্ট ব্লকের পার্কিং লটে এই বিস্ফোরণ ঘটে। জেনারেল সারভারভের গাড়ির নিচে একটি শক্তিশালী বিস্ফোরক ডিভাইস পেতে রাখা হয়েছিল। গাড়িটি চালু করার পরপরই সেটির বিস্ফোরণ ঘটে।
১২ ঘণ্টা আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

রাশিয়ার রাজধানী মস্কোতে এক ভয়াবহ গাড়িবোমা হামলায় দেশটির শীর্ষস্থানীয় এক জেনারেল নিহত হয়েছেন। আজ সোমবার (২২ ডিসেম্বর) সকালে এ ঘটনা ঘটে বলে রুশ কর্মকর্তারা নিশ্চিত করেছেন।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি রাশিয়ার ইনভেস্টিগেটিভ কমিটির বরাতে জানিয়েছে, নিহত ব্যক্তির নাম লেফটেন্যান্ট জেনারেল ফানিল সারভারভ (৫৬)। তিনি রাশিয়ার সশস্ত্র বাহিনীর অপারেশনাল ট্রেনিং বিভাগের প্রধান ছিলেন।
তদন্ত কর্মকর্তাদের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, আজ স্থানীয় সময় সকালে মস্কোর দক্ষিণাঞ্চলের একটি অ্যাপার্টমেন্ট ব্লকের পার্কিং লটে এই বিস্ফোরণ ঘটে। জেনারেল সারভারভের গাড়ির নিচে একটি শক্তিশালী বিস্ফোরক ডিভাইস পেতে রাখা হয়েছিল। গাড়িটি চালু করার পরপরই সেটির বিস্ফোরণ ঘটে। বিস্ফোরণে গুরুতর আহত অবস্থায় সারভারভকে হাসপাতালে নেওয়া হলে সেখানে তাঁর মৃত্যু হয়।
ঘটনাস্থল থেকে পাওয়া ছবিতে দেখা গেছে, একটি সাদা রঙের গাড়ি বিস্ফোরণে দুমড়েমুচড়ে গেছে এবং সেটির যন্ত্রাংশ উড়ে গিয়ে পাশে থাকা অন্য যানবাহনের ওপর পড়েছে।
রুশ ইনভেস্টিগেটিভ কমিটি এ ঘটনাকে ‘পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড’ হিসেবে অভিহিত করে তদন্ত শুরু করেছে। প্রাথমিক তদন্তে রুশ কর্মকর্তাদের ধারণা, এই হামলার নেপথ্যে ইউক্রেনীয় গোয়েন্দা সংস্থার হাত থাকতে পারে। তবে ইউক্রেন এখন পর্যন্ত এ বিষয়ে কোনো আনুষ্ঠানিক মন্তব্য করেনি।
ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ জানিয়েছেন, জেনারেল সারভারভের মৃত্যুর খবর পাওয়ার পরপরই প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে তা জানানো হয়েছে।
৫৬ বছর বয়সী ফানিল সারভারভ রুশ সামরিক বাহিনীর অত্যন্ত অভিজ্ঞ কর্মকর্তা ছিলেন। রুশ গণমাধ্যমের তথ্যমতে, ফানিল সারভারভ নব্বইয়ের দশক এবং ২০০০ সালের শুরুতে তিনি ওসেটিয়ান-ইঙ্গুশ সংঘাত ও চেচেন যুদ্ধে সরাসরি অংশ নিয়েছিলেন। ২০১৫-১৬ সালে সিরিয়ায় রুশ সামরিক অভিযানেও তিনি নেতৃত্ব দেন।
২০২২ সালে ইউক্রেনে পূর্ণমাত্রার সামরিক অভিযান শুরু করার পর থেকে মস্কোতে হাইপ্রোফাইল ব্যক্তিদের ওপর বেশ কয়েকটি বড় হামলার ঘটনা ঘটেছে। ২০২২ সালে পুতিনের ঘনিষ্ঠ মিত্র আলেকজান্ডার দুগিনের কন্যা দারিয়া দুগিনা গাড়িবোমা হামলায় নিহত হন।
চলতি বছরের এপ্রিলে জেনারেল ইয়ারোস্লাভ মোসকালিক ও ২০২৪ সালের ডিসেম্বরে জেনারেল ইগর কিরিলভও একই ধরনের হামলায় প্রাণ হারান।
নীতিগত কারণে ইউক্রেন সাধারণত এ ধরনের হামলার দায় স্বীকার করে না। তবে গত বছর জেনারেল কিরিলভ নিহতের ঘটনায় ইউক্রেনীয় নিরাপত্তা সংস্থার জড়িত থাকার ইঙ্গিত দিয়েছিল বিবিসির একটি সূত্র।

রাশিয়ার রাজধানী মস্কোতে এক ভয়াবহ গাড়িবোমা হামলায় দেশটির শীর্ষস্থানীয় এক জেনারেল নিহত হয়েছেন। আজ সোমবার (২২ ডিসেম্বর) সকালে এ ঘটনা ঘটে বলে রুশ কর্মকর্তারা নিশ্চিত করেছেন।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি রাশিয়ার ইনভেস্টিগেটিভ কমিটির বরাতে জানিয়েছে, নিহত ব্যক্তির নাম লেফটেন্যান্ট জেনারেল ফানিল সারভারভ (৫৬)। তিনি রাশিয়ার সশস্ত্র বাহিনীর অপারেশনাল ট্রেনিং বিভাগের প্রধান ছিলেন।
তদন্ত কর্মকর্তাদের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, আজ স্থানীয় সময় সকালে মস্কোর দক্ষিণাঞ্চলের একটি অ্যাপার্টমেন্ট ব্লকের পার্কিং লটে এই বিস্ফোরণ ঘটে। জেনারেল সারভারভের গাড়ির নিচে একটি শক্তিশালী বিস্ফোরক ডিভাইস পেতে রাখা হয়েছিল। গাড়িটি চালু করার পরপরই সেটির বিস্ফোরণ ঘটে। বিস্ফোরণে গুরুতর আহত অবস্থায় সারভারভকে হাসপাতালে নেওয়া হলে সেখানে তাঁর মৃত্যু হয়।
ঘটনাস্থল থেকে পাওয়া ছবিতে দেখা গেছে, একটি সাদা রঙের গাড়ি বিস্ফোরণে দুমড়েমুচড়ে গেছে এবং সেটির যন্ত্রাংশ উড়ে গিয়ে পাশে থাকা অন্য যানবাহনের ওপর পড়েছে।
রুশ ইনভেস্টিগেটিভ কমিটি এ ঘটনাকে ‘পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড’ হিসেবে অভিহিত করে তদন্ত শুরু করেছে। প্রাথমিক তদন্তে রুশ কর্মকর্তাদের ধারণা, এই হামলার নেপথ্যে ইউক্রেনীয় গোয়েন্দা সংস্থার হাত থাকতে পারে। তবে ইউক্রেন এখন পর্যন্ত এ বিষয়ে কোনো আনুষ্ঠানিক মন্তব্য করেনি।
ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ জানিয়েছেন, জেনারেল সারভারভের মৃত্যুর খবর পাওয়ার পরপরই প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে তা জানানো হয়েছে।
৫৬ বছর বয়সী ফানিল সারভারভ রুশ সামরিক বাহিনীর অত্যন্ত অভিজ্ঞ কর্মকর্তা ছিলেন। রুশ গণমাধ্যমের তথ্যমতে, ফানিল সারভারভ নব্বইয়ের দশক এবং ২০০০ সালের শুরুতে তিনি ওসেটিয়ান-ইঙ্গুশ সংঘাত ও চেচেন যুদ্ধে সরাসরি অংশ নিয়েছিলেন। ২০১৫-১৬ সালে সিরিয়ায় রুশ সামরিক অভিযানেও তিনি নেতৃত্ব দেন।
২০২২ সালে ইউক্রেনে পূর্ণমাত্রার সামরিক অভিযান শুরু করার পর থেকে মস্কোতে হাইপ্রোফাইল ব্যক্তিদের ওপর বেশ কয়েকটি বড় হামলার ঘটনা ঘটেছে। ২০২২ সালে পুতিনের ঘনিষ্ঠ মিত্র আলেকজান্ডার দুগিনের কন্যা দারিয়া দুগিনা গাড়িবোমা হামলায় নিহত হন।
চলতি বছরের এপ্রিলে জেনারেল ইয়ারোস্লাভ মোসকালিক ও ২০২৪ সালের ডিসেম্বরে জেনারেল ইগর কিরিলভও একই ধরনের হামলায় প্রাণ হারান।
নীতিগত কারণে ইউক্রেন সাধারণত এ ধরনের হামলার দায় স্বীকার করে না। তবে গত বছর জেনারেল কিরিলভ নিহতের ঘটনায় ইউক্রেনীয় নিরাপত্তা সংস্থার জড়িত থাকার ইঙ্গিত দিয়েছিল বিবিসির একটি সূত্র।

যার হৃদয়ে কিশোর বয়সেই গেঁথে গিয়েছিল উগ্রবাদ, তিনি বোমা তৈরিতে ছিলেন সিদ্ধহস্ত, চৌকস অস্ত্র ব্যবসায়ী, গোপন সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা এবং সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে সহায়তাকারী। কোনো এক নিকষ কালো রাতে নিখোঁজ হওয়ার আগে টানা দুই দশক পশ্চিমের নিরাপত্তা কর্মকর্তাদের ঘুম হারাম করেছিলেন তিনি। মাঝ ভূমধ্যসাগরে এক জাহাজ থে
২৮ এপ্রিল ২০২৩
যুক্তরাষ্ট্রের অ্যারিজোনায় রক্ষণশীল সংগঠন টার্নিং পয়েন্ট ইউএসএ আয়োজিত ‘আমেরিকাফেস্ট’ সম্মেলনে হঠাৎ উপস্থিত হয়ে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্সের প্রশংসা করেছেন মার্কিন র্যাপ তারকা নিকি মিনাজ।
৭ ঘণ্টা আগে
২০২৩ সালের অক্টোবরে যুদ্ধ শুরুর সময় হাদিল সাত মাসের অন্তঃসত্ত্বা ছিলেন। ঝুঁকিপূর্ণ গর্ভধারণ হওয়ায় তিনি নিয়মিত ডাক্তার দেখাতেন, আলট্রাসাউন্ড করাতেন এবং ভিটামিন নিতেন।
৮ ঘণ্টা আগে
বাশার আল-আসাদের পতনের পর সিরিয়ার মানুষ ভেবেছিল—দেশটির কুখ্যাত কারাগার অধ্যায়ের অবসান ঘটেছে। বিদ্রোহীরা জেলখানার দরজা ভেঙে বন্দীদের মুক্ত করেছিল, পরিবারের লোকেরা ছুটে গিয়েছিল নিখোঁজ স্বজনদের খোঁজে।
১০ ঘণ্টা আগে