Ajker Patrika

ক্যাপটাগন: যে মাদকে টিকে ছিলেন বাশার আল-আসাদ

২০২১ সালে জেদ্দা ইসলামিক বন্দরে সৌদি কাস্টমস কর্মকর্তারা ডালিমের চালান থেকে পাঁচ মিলিয়নেরও বেশি ক্যাপটাগন ট্যাবলেট জব্দ করেন। ছবি: সংগৃহীত
২০২১ সালে জেদ্দা ইসলামিক বন্দরে সৌদি কাস্টমস কর্মকর্তারা ডালিমের চালান থেকে পাঁচ মিলিয়নেরও বেশি ক্যাপটাগন ট্যাবলেট জব্দ করেন। ছবি: সংগৃহীত

বাশার আল-আসাদের পতনের চার দিন পর দামেস্কের নিয়ন্ত্রণ নেওয়া বিদ্রোহী যোদ্ধারা বিপুল পরিমাণ ক্যাপটাগন উদ্ধার করেছেন। এই মাদকদ্রব্য দীর্ঘদিন ধরে সিরিয়ায় ব্যাপকভাবে উৎপাদিত হয়ে আসছিল। বাশার আল-আসাদের ক্ষমতায় টিকে থাকার সঙ্গে এই মাদকের গভীর সম্পর্ক রয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে।

বিদ্রোহীদের মধ্যে সবচেয়ে শক্তিশালী সংগঠন হায়াত তাহরির আল-শামের (এইচটিএস) শীর্ষ কমান্ডার আহমেদ আল-শারা (যিনি আল-জুলানি নামেও পরিচিত) অভিযোগ করেছেন, বাশারের সময় সিরিয়া বিশ্বে ক্যাপটাগনের ‘বৃহত্তম উৎস’ ছিল। তিনি ক্যাপটাগনের উৎপাদন ও বাণিজ্য দমন করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।

কিন্তু কী এই ক্যাপটাগন এবং সাম্প্রতিক বছরগুলোতে এটি কীভাবে সিরিয়ার প্রতিবেশীদের সঙ্গে দেশটির সম্পর্কের কেন্দ্রে পরিণত হয়েছিল?

ক্যাপটাগন কী ও কোথায় এটি উদ্ভাবিত হয়েছিল?

ক্যাপটাগন হলো আসক্তিকর এক ধরনের অ্যামফেটামিন জাতীয় উত্তেজক। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে এটি প্রধানত সিরিয়ায় উৎপাদিত এবং উপসাগরীয় দেশগুলোতে চোরাচালান হয়েছে। এর মাধ্যমে আসাদ শাসন এই মাদককে আলোচনার কৌশল হিসেবে ব্যবহার করে আরব লীগের সদস্যপদ পুনঃস্থাপন করে, যখন বিভিন্ন দেশ অবৈধ মাদক বাণিজ্য রোধের চেষ্টা চালায়।

২০২৩ সালের ১ মে আম্মানে অনুষ্ঠিত আরব পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের বৈঠকে দামেস্ক জর্ডান ও ইরাকের সঙ্গে মাদক উৎপাদন ও চোরাচালানের উৎস শনাক্ত করতে একমত হয়, জর্ডানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে এ কথা জানানো হয়। এর এক সপ্তাহ পর, দক্ষিণ সিরিয়ায় এক বিমান হামলায় এক শীর্ষস্থানীয় সিরীয় মাদক চোরাকারবারি ও তার পরিবার নিহত হয়, যা জর্ডানের প্রতি ইঙ্গিত করে।

ক্যাপটাগন প্রথমে ১৯৬০-এর দশকে জার্মানির ডেগুসা ফার্মা গ্রুপে উদ্ভাবিত একটি মানসিক ওষুধের ব্র্যান্ড নাম ছিল। এটি মূলত অমনোযোগী, নারকোলেপসি এবং কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্রের উত্তেজক হিসেবে ব্যবহৃত হতো।

ক্যাপটাগন ট্যাবলেটে ফেনাইটাইলিন নামক একটি সিনথেটিক মাদক থাকত, যা ফেনেথাইলামিন পরিবারের একটি যৌগ। অ্যামফেটামিনও এই পরিবারে অন্তর্ভুক্ত।

১৯৮৬ সালে ফেনাইটাইলিনকে জাতিসংঘের মনোস্নায়ুতন্ত্র সংক্রান্ত মাদকদ্রব্য কনভেনশন ১৯৭১-এর তালিকা-২ তে অন্তর্ভুক্ত করা হয় এবং অধিকাংশ দেশ ক্যাপটাগনের ব্যবহার বন্ধ করে দেয়। ২০১১ সালে আন্তর্জাতিক মাদক নিয়ন্ত্রণ বোর্ড জানায়, ২০০৯ সালের পর থেকে কোনো দেশ ফেনাইটাইলিন উৎপাদন করেনি।

তাহলে উৎপাদন কি একেবারে বন্ধ হয়ে গিয়েছিল?

সরকারি উৎপাদন বন্ধ হয়ে গেলেও পূর্ব ইউরোপ, বিশেষ করে বুলগেরিয়ায় থাকা স্টকগুলো মধ্যপ্রাচ্যে চোরাচালান করা হয়।

পরবর্তী সময়ে ১৯৯০-এর দশক থেকে ২০০০-এর দশকের শুরুর দিকে বুলগেরিয়ায় নতুন জাল ক্যাপটাগন ট্যাবলেট তৈরি হয়। ইউরোপীয় মাদক ও মাদকাসক্তি পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের ২০১৮ সালের এক প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, এসব মাদক বালকান ও তুর্কি অপরাধ চক্রের মাধ্যমে আরব উপদ্বীপে চোরাচালান করা হতো।

তুরস্ক ও বুলগেরিয়া কর্তৃপক্ষের কঠোর অভিযান, যার মধ্যে অ্যামফেটামিন সংশ্লেষণের সঙ্গে জড়িত ১৮টি বড় ল্যাবরেটরি বন্ধ করে দেওয়া অন্তর্ভুক্ত, বালকান থেকে মাদক বাণিজ্যের পরিমাণ উল্লেখযোগ্যভাবে কমিয়ে দেয়।

কেন সিরিয়ায় এত ক্যাপটাগন তৈরি হচ্ছিল?

২০১১ সালে বাশার আল-আসাদবিরোধী বিক্ষোভকারীদের ওপর সরকারের কঠোর দমন-পীড়নের পর সিরিয়া গৃহযুদ্ধের অন্ধকারে নিমজ্জিত হয়। আন্তর্জাতিকভাবে একঘরে হয়ে যাওয়া এবং যুদ্ধের ভয়াবহতার মধ্যে দেশটি অর্থনৈতিক সংকটে পড়ে।

দামেস্ক মাদক বাণিজ্যে জড়িত থাকার অভিযোগ অস্বীকার করলেও বিশ্লেষকেরা বলছেন, অর্থনৈতিক সংকট মোকাবিলার জন্য ক্যাপটাগনের উৎপাদন ও চোরাচালানের মাধ্যমে আসাদ ও তাঁর মিত্ররা বিলিয়ন ডলার আয় করেছে।

নিউ লাইনস ইনস্টিটিউটের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ক্ষমতাচ্যুত সিরীয় সরকার হিজবুল্লাহর মতো সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর সঙ্গে স্থানীয় জোট গড়ে ক্যাপটাগনের উৎপাদন ও চোরাচালানে কারিগরি ও লজিস্টিক সহায়তা নিয়েছিল।

বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, বর্তমানে বিশ্বে যত ক্যাপটাগন উৎপাদন হয়, তার বেশির ভাগই সিরিয়ায় তৈরি হয়। এসব মাদকের মূল গন্তব্য ধনী উপসাগরীয় দেশগুলো।

pentagon

জর্ডান ও উপসাগরীয় দেশগুলো কী পদক্ষেপ নিয়েছে?

২০২২ সাল থেকে যেসব দেশের সীমান্ত দিয়ে প্রচুর ক্যাপটাগন পাচার হতো, সেসব দেশ সিরিয়া থেকে আসা এই মাদকের চোরাচালান বন্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিয়েছে।

২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে জর্ডানের সেনাবাহিনী জানিয়েছিল, বছরের শুরু থেকে তাঁরা ৩০ জন চোরাচালানকারীকে হত্যা করেছে এবং পাচারের চেষ্টাকালে ১ কোটি ৬০ লাখ ক্যাপটাগন ট্যাবলেট আটকে দিয়েছে—যা পুরো ২০২১ সালে জব্দ করা পরিমাণের চেয়েও বেশি।

২০২২ সালের আগস্টের শেষ দিকে সৌদি কর্তৃপক্ষ ইতিহাসে ক্যাপটাগনের সবচেয়ে বড় চালান জব্দ করে। এতে ৪ কোটি ৬০ লাখ অ্যামফেটামিন ট্যাবলেট একটি ময়দার চালানের মধ্যে পাওয়া যায়।

সৌদি জেনারেল ডিরেক্টরেট অব নারকোটিক্স কন্ট্রোলের একজন মুখপাত্র একে দেশটিতে একক মাদকবিরোধী অভিযানের সবচেয়ে বড় অপারেশন বলে উল্লেখ করেন।

২০২৩ সালের ফেব্রুয়ারিতে সংযুক্ত আরব আমিরাতের আবুধাবি বিমানবন্দরে এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করা হয়। তিনি সবুজ মটরশুঁটির ক্যানের ভেতর ৪৫ লাখ ক্যাপটাগন ট্যাবলেট পাচারের চেষ্টা করছিলেন।

২০০৭ সালে বুলগেরিয়ার রাজধানী সোফিয়ায় জব্দ হওয়া ৭৮৯ কেজি ক্যাপটাগন ধ্বংস করার আগে এক কাস্টমস কর্মকর্তা প্রদর্শন করেন।
২০০৭ সালে বুলগেরিয়ার রাজধানী সোফিয়ায় জব্দ হওয়া ৭৮৯ কেজি ক্যাপটাগন ধ্বংস করার আগে এক কাস্টমস কর্মকর্তা প্রদর্শন করেন।

বিশ্বের অন্য দেশগুলো কী করছে?

মধ্যপ্রাচ্যের বাইরে ক্যাপটাগন তুলনামূলকভাবে কম পরিচিত হলেও যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্র সিরিয়ায় এর উৎপাদন নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে।

২০২৩ সালে উভয় দেশ ক্যাপটাগন বাণিজ্যের সঙ্গে জড়িত সিরীয়দের ওপর নতুন নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে। যুক্তরাজ্যের সরকারের এক বিবৃতিতে বলা হয়, বিশ্বের ৮০ শতাংশ ক্যাপটাগন সিরিয়ায় উৎপাদিত হয়, যা আসাদ সরকারকে অর্থনৈতিকভাবে শক্তিশালী করে। এর মূল্য মেক্সিকোর মোট কার্টেল বাণিজ্যের তিনগুণ।

বিবৃতিতে আরও উল্লেখ করা হয়, হিজবুল্লাহ ও অন্যান্য ইরান-সমর্থিত গোষ্ঠী এই মাদক উৎপাদন ও চোরাচালানে সহায়তা করছে, যা আঞ্চলিক অস্থিতিশীলতা ও আসক্তি বাড়াচ্ছে।

২০২২ সালের ডিসেম্বর মাসে যুক্তরাষ্ট্র ‘ক্যাপটাগন অ্যাক্ট’ চালু করে। এর মাধ্যমে অবৈধ এই মাদক বাণিজ্য বন্ধে যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন সংস্থাকে ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দেওয়া হয়। কারণ আশঙ্কা করা হচ্ছে, এই মাদক যুক্তরাষ্ট্রেও পৌঁছাতে পারে।

আরব লীগে সিরিয়ার প্রত্যাবর্তন ও ক্যাপটাগন

সিরিয়া থেকে ক্যাপটাগনের উৎপাদন ও বাণিজ্য বন্ধে আরব লীগের সদস্য রাষ্ট্রগুলোর আগ্রহ দামেস্কের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ আলোচ্য বিষয় হয়ে ওঠে।

২০২৩ সালের ১ মে জর্ডানের রাজধানী আম্মানে অনুষ্ঠিত আরব পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের বৈঠকে এক জর্ডানীয় কর্মকর্তা বলেন, সিরিয়াকে অবশ্যই রাজনৈতিক সমাধানের বিষয়ে আন্তরিকতা দেখাতে হবে। কারণ, এটি পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারে লবিংয়ের পূর্বশর্ত। এটি সিরিয়ার পুনর্গঠনের জন্য তহবিল সংগ্রহে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

২০২৩ সাল পর্যন্ত ক্যাপটাগনের সবচেয়ে বড় বাজার ছিল সৌদি আরব। দেশটি দামেস্কের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করার আলোচনায়ও গ্যারান্টি চায়।

যুদ্ধের প্রথম দিকের বছরগুলোতে সৌদি আরব সরকারবিরোধী বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলোকে সমর্থন দিলেও সাম্প্রতিক বছরগুলোতে আঞ্চলিক কূটনীতির পরিবর্তনের অংশ হিসেবে সিরিয়া বিষয়ে অবস্থানও বদলায়। ইরানের সঙ্গে সম্পর্ক পুনঃপ্রতিষ্ঠার ফলেই দামেস্কের সঙ্গে সম্পর্ক ভালো রাখার ইচ্ছা প্রকাশ করে রিয়াদ।

আম্মানে বৈঠকের পর মিসর, ইরাক, জর্ডান, সৌদি আরব এবং সিরিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা জানান, সিরিয়া জর্ডান ও ইরাকের সীমান্তে চোরাচালান বন্ধ করতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণে সম্মত হয়েছে।

২০২৩ সালে সিরিয়ায় নিহত মাদক সম্রাট কে ছিলেন?

২০২৩ সালের মে মাসে কায়রোতে অনুষ্ঠিত বৈঠকে আরব লীগের ২২টি সদস্য রাষ্ট্র সিরিয়ার সদস্যপদ ফিরিয়ে আনতে ভোট দেয়। এর পরদিনই সিরিয়ার দক্ষিণাঞ্চলে এক বিমান হামলায় সন্দেহভাজন মাদক পাচারকারী মারাই আল-রামথান এবং তাঁর পরিবার নিহত হন।

যুদ্ধ পর্যবেক্ষণকারী সংস্থা জানিয়েছে, এই হামলা জর্ডান চালিয়েছে। যুক্তরাজ্যভিত্তিক সংস্থা সিরিয়ান অবজারভেটরি ফর হিউম্যান রাইটস (এসওএইচআর) বলেছে, আল-রামথানকে সবচেয়ে প্রভাবশালী মাদক পাচারকারী এবং জর্ডানে ক্যাপটাগনসহ অন্যান্য মাদক পাচারের প্রধান ব্যক্তি হিসেবে বিবেচনা করা হতো।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

৮ মিনিট দেরি, মনোনয়নপত্র জমা দিতে না পেরে অঝোরে কাঁদলেন এবি পার্টির প্রার্থী প্রত্যাশী

৪৭ আসনে মনোনয়নপত্র জমা দিল এনসিপি

জেপির মঞ্জুর পর নির্বাচন বর্জন করলেন রুহুল আমিন হাওলাদার ও ফিরোজ রশীদ

প্রয়োজনীয়সংখ্যক স্বাক্ষর সংগ্রহ করেছেন তাসনিম জারা

এনসিপিতে আসিফ মাহমুদ, হলেন নির্বাচন পরিচালনা কমিটির প্রধান

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

‘২০২৫’ নিয়ে ১৯৯৮ সালে করা আমেরিকানদের ভবিষ্যদ্বাণী কতটুকু মিলেছে

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ৩০ ডিসেম্বর ২০২৫, ০০: ৫৭
ছবি: সিএনএন
ছবি: সিএনএন

১৯৯৮ সালে যুক্তরাষ্ট্রের রাজনীতি ও সমাজ বাস্তবতা ছিল একেবারেই ভিন্ন। সেই বছর প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিনটন অভিশংসন প্রক্রিয়ার মুখে পড়েছিলেন, অস্কারে রাজত্ব করেছিল টাইটানিক, আর অধিকাংশ আমেরিকানের ঘরে ছিল ল্যান্ডলাইন ফোন। ঠিক সেই সময়েই গ্যালাপ ও ইউএসএ টুডে এক ব্যতিক্রমী জরিপ চালায়। ল্যান্ডলাইন ফোনে ১ হাজার ৫৫ জন আমেরিকানের সঙ্গে কথা বলে জানতে চাওয়া হয়—দূর ভবিষ্যৎ ‘২০২৫ সাল’ কেমন হবে বলে তাঁরা মনে করেন।

সোমবার (২৯ ডিসেম্বর) সিএনএন জানিয়েছে, ২০২৫ সাল নিয়ে সে সময় মার্কিনরা যে ভবিষ্যদ্বাণীগুলো করেছিল, সেগুলো সংরক্ষিত আছে কর্নেল বিশ্ববিদ্যালয়ের রোপার সেন্টারের জরিপ আর্কাইভে। ২০২৫ সালের শেষ প্রান্তে এসে এখন দেখা যাচ্ছে—সেই সব অনুমানের কোনোটা মিলেছে, আর কোনোটা মেলেনি।

এ ক্ষেত্রে দেখা গেছে, সেই সময়ের অনেক পূর্বাভাসই ছিল বিস্ময়করভাবে সঠিক। অধিকাংশ আমেরিকান তখনই ধারণা করেছিলেন, আগামী ২৭ বছরে যুক্তরাষ্ট্রে একজন কৃষ্ণাঙ্গ প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হবেন, সমকামী বিবাহ বৈধ ও স্বাভাবিক হয়ে উঠবে এবং একটি ‘মারাত্মক নতুন রোগ’ বিশ্বকে নাড়িয়ে দেবে। বাস্তবে বারাক ওবামার প্রেসিডেন্ট হওয়া, সমকামী বিবাহের আইনি স্বীকৃতি এবং করোনা মহামারি সেই অনুমানগুলোকে সত্য প্রমাণ করেছে।

একইভাবে অনেকেই সেই সময় সঠিকভাবে ধারণা করেছিলেন, সাধারণ মানুষের জন্য মহাকাশ ভ্রমণ খুব সাধারণ বিষয় হয়ে উঠবে না এবং ভিনগ্রহের প্রাণীর সঙ্গে মানুষের সরাসরি যোগাযোগ ঘটবে না।

তবে কিছু ভবিষ্যদ্বাণী বাস্তবতার সঙ্গে মেলেনি। জরিপে অংশ নেওয়া প্রায় দুই-তৃতীয়াংশ মানুষ মনে করেছিলেন, ২০২৫ সালের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র একজন নারী প্রেসিডেন্ট পাবে—যা এখনো ঘটেনি। অর্ধেকের বেশি মানুষ আশা করেছিলেন ক্যানসারের নিরাময় আবিষ্কৃত হবে এবং ৬১ শতাংশ মনে করেছিলেন মানুষ নিয়মিতভাবে ১০০ বছর বয়স পর্যন্ত বাঁচবে। বাস্তবে চিকিৎসাবিজ্ঞানে অগ্রগতি হলেও এসব প্রত্যাশা পুরোপুরি পূরণ হয়নি।

জরিপে দেশের সামগ্রিক দিকনির্দেশনা নিয়েও প্রশ্ন ছিল। সেখানে ফুটে উঠেছিল প্রবল হতাশা। ৭০ শতাংশ মনে করেছিলেন ধনীদের জীবনমান উন্নত হবে, কিন্তু মধ্যবিত্তদের ভবিষ্যৎ নিয়ে বিভক্ত মতামত ছিল। দরিদ্রদের জীবন আরও কঠিন হবে—এমনটাই ভাবতেন বেশির ভাগ। প্রায় ৮০ শতাংশ ধারণা করেছিলেন ব্যক্তিগত গোপনীয়তা কমবে, আর ৫৭ শতাংশ মনে করেছিলেন ব্যক্তিগত স্বাধীনতাও হ্রাস পাবে। অপরাধ বৃদ্ধি, পরিবেশের অবনতি এবং নৈতিক মূল্যবোধের পতনের আশঙ্কাও ছিল প্রবল। ৭১ শতাংশ মত দিয়েছিলেন, সন্তানকে ভালো মানুষ হিসেবে বড় করা আরও কঠিন হবে।

তবে কিছু আশাবাদী দিকও ছিল। অধিকাংশ আমেরিকান বিশ্বাস করতেন, জাতিগত সম্পর্কের উন্নতি হবে এবং চিকিৎসাসেবা আরও সহজলভ্য হবে—যদিও তা হবে ব্যয়বহুল।

গ্যালাপ আজও জরিপ চালিয়ে যাচ্ছে, যদিও এখন ল্যান্ডলাইনের ওপর নির্ভরতা কম। এই দীর্ঘ সময়ের ব্যবধানে জনমতও নাটকীয়ভাবে বদলে গেছে। ১৯৯৮ সালে যেখানে প্রায় ৬০ শতাংশ আমেরিকান দেশের গতিপথ নিয়ে সন্তুষ্ট ছিলেন, বর্তমানে সেই হার নেমে এসেছে মাত্র ২৪ শতাংশে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

৮ মিনিট দেরি, মনোনয়নপত্র জমা দিতে না পেরে অঝোরে কাঁদলেন এবি পার্টির প্রার্থী প্রত্যাশী

৪৭ আসনে মনোনয়নপত্র জমা দিল এনসিপি

জেপির মঞ্জুর পর নির্বাচন বর্জন করলেন রুহুল আমিন হাওলাদার ও ফিরোজ রশীদ

প্রয়োজনীয়সংখ্যক স্বাক্ষর সংগ্রহ করেছেন তাসনিম জারা

এনসিপিতে আসিফ মাহমুদ, হলেন নির্বাচন পরিচালনা কমিটির প্রধান

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

পুতিনের বাসভবনে ড্রোন হামলার অভিযোগ—‘মিথ্যা’ বলছে ইউক্রেন

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
ইউক্রেনের ভলোদিমির জেলেনস্কি ও রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। ছবি: এএফপি
ইউক্রেনের ভলোদিমির জেলেনস্কি ও রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। ছবি: এএফপি

রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের বাসভবন লক্ষ্য করে ড্রোন হামলা চালিয়েছে ইউক্রেন—এমন অভিযোগ করেছেন দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই লাভরভ। তবে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি রাশিয়ার এই দাবিকে পুরোপুরি ‘মিথ্যা ও সাজানো’ বলে প্রত্যাখ্যান করেছেন।

রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানিয়েছেন, এই হামলার কারণে চলমান শান্তি আলোচনায় রাশিয়ার অবস্থানের ‘পরিবর্তন বা পুনর্বিবেচনা’ করা হতে পারে। তবে মস্কো এখনই আলোচনা থেকে সরে দাঁড়াচ্ছে না।

মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএন সের্গেই লাভরভের উদ্ধৃতি দিয়ে বলেছে, গতকাল রোববার রাত থেকে আজ সোমবার ভোর পর্যন্ত পুতিনের বাসভবন লক্ষ্য করে ৯১টি দূরপাল্লার ড্রোন হামলা চালায় ইউক্রেন। রুশ প্রতিরক্ষাব্যবস্থা সবকটি ড্রোন ভূপাতিত করেছে। তবে এতে কোনো হতাহত বা ক্ষয়ক্ষতির ঘটনা ঘটেনি।

লাভরভ হুমকি দিয়ে বলেন, ইউক্রেনের এমন হঠকারী কর্মকাণ্ডের জবাব দেওয়া হবে। রুশ সামরিক বাহিনী ইতিমধ্যে পাল্টা হামলার জন্য লক্ষ্যবস্তু নির্ধারণ করে ফেলেছে। তবে হামলার সময় প্রেসিডেন্ট পুতিন নোভগোরোদের ওই বাসভবনে ছিলেন কি না, তা স্পষ্ট করা হয়নি।

ফ্লোরিডায় ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠক শেষ করে ইউরোপে ফেরার পথে জেলেনস্কি রাশিয়ার এই দাবিকে নাকচ করে দেন। তিনি বলেন, ‘রাশিয়া আবারও ভয়ংকর সব মিথ্যা বিবৃতি দিচ্ছে। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সঙ্গে আমাদের কূটনৈতিক অগ্রগতির সাফল্য নষ্ট করতেই এমন নাটক সাজানো হচ্ছে। তারা মূলত কিয়েভের সরকারি ভবনগুলোতে বড় ধরনের হামলার ক্ষেত্র তৈরি করার জন্য এই অজুহাত দিচ্ছে।’

জেলেনস্কি জানান, ট্রাম্পের সঙ্গে তাঁর ২০ দফা শান্তি পরিকল্পনার প্রায় ৯০ শতাংশ বিষয়ে ঐকমত্য হয়েছে, যা রাশিয়াকে বিচলিত করে তুলেছে।

এদিকে ক্রেমলিন বলছে, আজ প্রেসিডেন্ট পুতিন টেলিফোনে ডোনাল্ড ট্রাম্পকে এই ড্রোন হামলার বিষয়টি জানিয়েছেন। পুতিন ট্রাম্পকে বলেছেন, এই হামলার পর রাশিয়া তাদের শান্তি আলোচনার শর্তগুলো পুনরায় খতিয়ে দেখবে।

রুশ গণমাধ্যমগুলো ক্রেমলিনের সহকারী ইউরি উশাকভের বরাত দিয়ে জানিয়েছে, এই খবর শুনে ট্রাম্প ‘বিস্মিত ও ক্ষুব্ধ’ হয়েছেন। তবে হোয়াইট হাউস থেকে এই ফোনালাপকে কেবল ‘ইতিবাচক’ বলে বর্ণনা করা হয়েছে, বিস্তারিত কিছু জানানো হয়নি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

৮ মিনিট দেরি, মনোনয়নপত্র জমা দিতে না পেরে অঝোরে কাঁদলেন এবি পার্টির প্রার্থী প্রত্যাশী

৪৭ আসনে মনোনয়নপত্র জমা দিল এনসিপি

জেপির মঞ্জুর পর নির্বাচন বর্জন করলেন রুহুল আমিন হাওলাদার ও ফিরোজ রশীদ

প্রয়োজনীয়সংখ্যক স্বাক্ষর সংগ্রহ করেছেন তাসনিম জারা

এনসিপিতে আসিফ মাহমুদ, হলেন নির্বাচন পরিচালনা কমিটির প্রধান

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

তাইওয়ানকে ঘিরে ধরেছে চীনের যুদ্ধজাহাজ, যুদ্ধবিমান ও ড্রোন

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
মহড়ায় সরাসরি গুলির অনুশীলনও করা হচ্ছে। ছবি: চীনের পূর্বাঞ্চলীয় থিয়েটার কমান্ড
মহড়ায় সরাসরি গুলির অনুশীলনও করা হচ্ছে। ছবি: চীনের পূর্বাঞ্চলীয় থিয়েটার কমান্ড

তাইওয়ানকে ঘিরে ইতিহাসের সবচেয়ে বড় সামরিক মহড়া শুরু করেছে চীন। সোমবার শুরু হওয়া এই মহড়ায় যুদ্ধজাহাজ, যুদ্ধবিমান, ড্রোন ও সরাসরি গোলাবর্ষণও অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। ‘জাস্টিস মিশন ২০২৫’ নামের এই অভিযানে তাইওয়ানকে চারদিক থেকে ঘিরে সাতটি সামুদ্রিক অঞ্চলে সমন্বিত স্থল, নৌ ও আকাশ মহড়া চালানো হচ্ছে। বিশ্লেষকদের মতে, এটি এখন পর্যন্ত তাইওয়ানকে লক্ষ্য করে চীনের সর্ববৃহৎ ও সবচেয়ে আক্রমণাত্মক সামরিক প্রদর্শন।

চীনের পূর্বাঞ্চলীয় থিয়েটার কমান্ড জানিয়েছে—মহড়ায় স্থল ও সমুদ্রের লক্ষ্যবস্তুর ওপর সিমুলেটেড হামলা, পাশাপাশি তাইওয়ানের প্রধান বন্দরগুলো অবরোধ করার অনুশীলন করা হচ্ছে। ভবিষ্যতে তাইওয়ানকে বিচ্ছিন্ন করতে বা চাপের মুখে ফেলতে এই ধরনের অবরোধ ব্যবহৃত হতে পারে বলে মনে করছেন সামরিক বিশ্লেষকেরা। সরাসরি গোলাবর্ষণের মহড়া মঙ্গলবার (৩০ ডিসেম্বর) পর্যন্ত চলবে এবং আগের যে কোনো সময়ের তুলনায় এবার তাইওয়ানের আরও কাছাকাছি ঝুঁকিপূর্ণ অঞ্চল ঘোষণা করা হয়েছে।

এই মহড়ার ফলে বেসামরিক বিমান ও নৌ চলাচল ব্যাহত হচ্ছে। বেশ কয়েকটি এয়ারলাইন তাদের ফ্লাইটের রুট পরিবর্তন করতে বাধ্য হয়েছে এবং তাইওয়ানের বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ বিকল্প আকাশপথ ব্যবহারের প্রস্তুতি নিয়েছে। চীনা সামরিক কর্মকর্তারা দাবি করেছেন, এই মহড়া ‘তাইওয়ানের স্বাধীনতাপন্থী শক্তি’ ও ‘বিদেশি হস্তক্ষেপের’ বিরুদ্ধে কঠোর সতর্কবার্তা।

উল্লেখ্য, সম্প্রতি তাইওয়ানের কাছে ১১.১ বিলিয়ন ডলারের অস্ত্র বিক্রির অনুমোদন দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র, যা ইতিহাসে সবচেয়ে বড় প্যাকেজ। এতে রয়েছে ৮২টি হিমার্স রকেট লঞ্চার, ৪২০টি দূরপাল্লার এটিএসিএমএস ক্ষেপণাস্ত্র, স্বচালিত হাউইটজার, উন্নত ড্রোন ব্যবস্থা ও অ্যান্টি-আর্মার অস্ত্র। বেইজিং এই অস্ত্রচুক্তিকে তীব্রভাবে নিন্দা জানিয়ে বলেছে, এতে তাইওয়ান একটি ‘বারুদের স্তূপে’ পরিণত হচ্ছে।

তাইওয়ানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, মহড়া চলাকালে তাদের দ্বীপভূমির চারপাশে ৮৯টি চীনা সামরিক বিমান, ১৪টি নৌজাহাজ ও ১৪টি কোস্ট গার্ড জাহাজ শনাক্ত করা হয়েছে। কিছু চীনা জাহাজ তাইওয়ানের উপকূলের খুব কাছাকাছি অবস্থানে এসে চোখ রাঙাচ্ছে। এই প্রেক্ষিতে সেনাবাহিনীকে সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থায় রেখেছে তাইওয়ান।

চীনের রাষ্ট্রায়ত্ত গণমাধ্যম জানিয়েছে, মহড়ার মূল লক্ষ্য তাইওয়ানের গুরুত্বপূর্ণ বন্দর—উত্তরের কিলুং ও দক্ষিণের কাওশিয়ুং বন্ধ করে দেওয়ার সক্ষমতা পরীক্ষা। চীন তাইওয়ানকে নিজের ভূখণ্ড দাবি করলেও তাইওয়ান বলছে, দ্বীপটির ভবিষ্যৎ নির্ধারণের অধিকার শুধু সেখানকার জনগণেরই আছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

৮ মিনিট দেরি, মনোনয়নপত্র জমা দিতে না পেরে অঝোরে কাঁদলেন এবি পার্টির প্রার্থী প্রত্যাশী

৪৭ আসনে মনোনয়নপত্র জমা দিল এনসিপি

জেপির মঞ্জুর পর নির্বাচন বর্জন করলেন রুহুল আমিন হাওলাদার ও ফিরোজ রশীদ

প্রয়োজনীয়সংখ্যক স্বাক্ষর সংগ্রহ করেছেন তাসনিম জারা

এনসিপিতে আসিফ মাহমুদ, হলেন নির্বাচন পরিচালনা কমিটির প্রধান

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

১৭ বছরের সাজার রায় চ্যালেঞ্জ করে ইমরান খান ও বুশরা বিবির আপিল

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
ইমরান খান ও তাঁর স্ত্রী বুশরা বিবি। ছবি: এএফপি
ইমরান খান ও তাঁর স্ত্রী বুশরা বিবি। ছবি: এএফপি

পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান ও তাঁর স্ত্রী বুশরা বিবি বর্তমানে কারাগারে। তোশাখানা দুর্নীতির মামলায় তাঁরা দুজনই সাজা খাটছেন। এর মধ্যে ২০ ডিসেম্বর তোশাখানা দুর্নীতির নতুন মামলায় তাঁদের আরও ১৭ বছর করে কারাদণ্ড দেন দেশটির একটি বিশেষ আদালত। এই রায় চ্যালেঞ্জ করে আজ সোমবার (২৯ ডিসেম্বর) ইসলামাবাদ হাইকোর্টে (আইএইচসি) পৃথক দুটি আপিল করেছেন ইমরান খান ও তাঁর স্ত্রী বুশরা বিবি।

আপিল আবেদনে ইমরান খান ও বুশরা বিবির আইনজীবীরা দাবি করেছেন, এই সাজা সম্পূর্ণ রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত এবং ইমরান খানকে জাতীয় রাজনীতি থেকে দূরে রাখতেই এ ‘পরিকল্পিত’ রায় দেওয়া হয়েছে। আইনজীবীরা ইমরান খান ও বুশরা বিবির পক্ষে কিছু যুক্তি উত্থাপন করেছেন।

আইনজীবীদের দাবি, ফেডারেল ইনভেস্টিগেশন এজেন্সি (এফআইএ) কোনো এফআইআর ছাড়াই ইমরান খান ও বুশরা বিবির বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করে। এর মাত্র দুই দিনের মাথায় তড়িঘড়ি করে চালানো তদন্তের ভিত্তিতে এই মামলা হয়, যা স্বচ্ছ বিচারের পরিপন্থী।

আপিল আবেদনে বলা হয়েছে, তোশাখানাসংক্রান্ত এটি চতুর্থ মামলা। একই বিষয়ে বারবার মামলা করা আইনের লঙ্ঘন এবং এটি উদ্দেশ্যমূলকভাবে করা হয়েছে, যাতে ইমরান খানকে দীর্ঘদিন কারাগারে আটকে রাখা যায়।

আইনজীবীদের দাবি, ২০১৮ সালের তোশাখানা নীতিমালা অনুযায়ী নির্ধারিত মূল্যের ৫০ শতাংশ পরিশোধ করেই উপহারগুলো রাখা হয়েছিল। এখানে কোনো ধরনের বিশ্বাসভঙ্গ বা ‘ক্রিমিনাল ব্রিচ অব ট্রাস্ট’ ঘটেনি।

আপিলে যুক্তি দেওয়া হয়েছে, পাকিস্তান পেনাল কোড অনুযায়ী ইমরান খান ও বুশরা বিবি এই উপহার নেওয়ার সময় প্রচলিত সংজ্ঞায় ‘পাবলিক সার্ভেন্ট’ ছিলেন না। বিশেষ করে, বুশরা বিবি একজন গৃহিণী হিসেবে কোনো সরকারি পদের দায়িত্বে ছিলেন না।

প্রসঙ্গত, তোশাখানা মামলাটি মূলত ২০২১ সালের মে মাসে সৌদি আরব সফরকালে যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের দেওয়া একটি দামি বুলগারি জুয়েলারি সেট নিয়ে। প্রায় ৮ কোটি রুপি মূল্যের এই নেকলেস, ব্রেসলেট, আংটি ও কানের দুলের সেটটি ইমরান দম্পতি মাত্র ২৯ লাখ রুপি পরিশোধ করে নিজের কাছে রেখেছিলেন।

এই মামলায় পাকিস্তানের ফেডারেল ইনভেস্টিগেশন এজেন্সির (এআইএ) বিশেষ আদালতের বিচারক শাহরুখ আরজুমান্দ তাঁদের প্রত্যেককে প্রথমে বিশ্বাসভঙ্গের অভিযোগে ১০ বছর সশ্রম কারাদণ্ড, এরপর দুর্নীতিবিরোধী আইনের আওতায় সাত বছরের কারাদণ্ড এবং ১ কোটি ৬৪ লাখ রুপি জরিমানা করেছিলেন।

উল্লেখ্য, ২০২২ সালে সংসদীয় অনাস্থা ভোটে ক্ষমতাচ্যুত হয়েছিলেন ইমরান খান। এরপর তাঁর বিরুদ্ধে শতাধিক মামলা করা হয়। তিনি ২০২৪ সালের আগস্ট থেকে রাওয়ালপিন্ডির আদিয়ালা কারাগারে বন্দী আছেন। বর্তমানে ইমরান খান ১৯ কোটি পাউন্ডের দুর্নীতির মামলায় ১৪ বছরের সাজা খাটছেন। বুশরা বিবিও একই মামলায় সাত বছরের সাজাপ্রাপ্ত।

ইমরানের দল পিটিআইয়ের দাবি, তোশাখানা মামলার বিচারপ্রক্রিয়া ‘ক্যাঙারু কোর্টে’র মতো রুদ্ধদ্বার কক্ষে সম্পন্ন হয়েছে। এটি ন্যায়বিচারের পরিপন্থী।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

৮ মিনিট দেরি, মনোনয়নপত্র জমা দিতে না পেরে অঝোরে কাঁদলেন এবি পার্টির প্রার্থী প্রত্যাশী

৪৭ আসনে মনোনয়নপত্র জমা দিল এনসিপি

জেপির মঞ্জুর পর নির্বাচন বর্জন করলেন রুহুল আমিন হাওলাদার ও ফিরোজ রশীদ

প্রয়োজনীয়সংখ্যক স্বাক্ষর সংগ্রহ করেছেন তাসনিম জারা

এনসিপিতে আসিফ মাহমুদ, হলেন নির্বাচন পরিচালনা কমিটির প্রধান

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত