Ajker Patrika

মে মাসে সৌদি আরব যাচ্ছেন ট্রাম্প, হাতে ১০০ বিলিয়ন ডলারের অস্ত্র বিক্রির প্যাকেজ

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ২৫ এপ্রিল ২০২৫, ১৫: ২৮
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও সৌদি যুবরাজ মুহাম্মদ বিন সালমান। ছবি: সংগৃহীত
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও সৌদি যুবরাজ মুহাম্মদ বিন সালমান। ছবি: সংগৃহীত

সৌদি আরবকে ১০০ বিলিয়ন ডলারের বেশি মূল্যের অস্ত্র বিক্রির একটি বিশাল প্যাকেজ প্রস্তাব করার প্রস্তুতি নিচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। আগামী মে মাসে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের রিয়াদ সফরের সময় এই প্রস্তাবের ঘোষণা করা হতে পারে। সংশ্লিষ্ট ছয়টি প্রত্যক্ষ সূত্রের বরাত দিয়ে এমন তথ্য জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।

এর আগে জো বাইডেনের প্রশাসন ইসরায়েলের সঙ্গে সৌদি আরবের সম্পর্ক স্বাভাবিক করার বৃহত্তর চুক্তির অংশ হিসেবে রিয়াদের সঙ্গে একটি প্রতিরক্ষা চুক্তি চূড়ান্তের চেষ্টা করেছিল। তবে তা শেষ পর্যন্ত ব্যর্থ হয়। এবার ট্রাম্প প্রশাসন আরও বিস্তৃত ও বিশেষ করে অস্ত্র বিক্রির ওপর জোর দিয়ে নতুন প্রস্তাব নিয়ে তোড়জোড় শুরু করেছে।

বাইডেনের প্রস্তাবে চীনের কাছ থেকে অস্ত্র ক্রয় বন্ধ এবং বেইজিংয়ের বিনিয়োগ সীমিত করার বিনিময়ে সৌদি আরবকে আরও উন্নত মার্কিন অস্ত্রশস্ত্রের জোগান দেওয়ার কথা বলা হয়েছিল। ট্রাম্প প্রশাসনের প্রস্তাবে একই ধরনের শর্তাবলি অন্তর্ভুক্ত আছে কি না, তা নিশ্চিত করতে পারেনি রয়টার্স।

হোয়াইট হাউস ও সৌদি সরকারের যোগাযোগ দপ্তর তাৎক্ষণিকভাবে এ বিষয়ে মন্তব্যের অনুরোধে সাড়া দেয়নি।

তবে, মার্কিন প্রতিরক্ষা দপ্তরের এক কর্মকর্তা রয়টার্সকে বলেছেন, ‘প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের নেতৃত্বে সৌদি আরবের সঙ্গে আমাদের প্রতিরক্ষা সম্পর্ক আগের চেয়ে অনেক শক্তিশালী। আমাদের নিরাপত্তা সহযোগিতা বজায় রাখা এই অংশীদারত্বের একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান এবং আমরা সৌদি আরবের প্রতিরক্ষা চাহিদা পূরণে তাদের সঙ্গে কাজ চালিয়ে যাব।’

প্রথম মেয়াদে ট্রাম্প সৌদি আরবের কাছে অস্ত্র বিক্রিকে মার্কিন ভূমিকার জন্য ভালো বলে বর্ণনা করেছিলেন।

সংশ্লিষ্ট দুটি সূত্র জানিয়েছে, মার্কিন বেসরকারি সমরাস্ত্র নির্মাতা প্রতিষ্ঠান লকহিড মার্টিন করপোরেশন সৌদি আরবকে সি-১৩০ পরিবহন বিমানসহ বিভিন্ন উন্নত অস্ত্র ব্যবস্থা সরবরাহ করতে পারে। একটি সূত্র জানিয়েছে, লকহিড ক্ষেপণাস্ত্র এবং রাডারও সরবরাহ করবে।

চারটি সূত্রের খবর অনুযায়ী, আগে রেথিয়ন টেকনোলজিস নামে পরিচিত, বর্তমানে আরটিএক্স করপোরেশন—এই সংস্থাটিও ট্রাম্পের এই প্যাকেজে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। প্যাকেজে বোয়িং, নর্থরপ গ্রুমম্যান করপোরেশন এবং জেনারেল অ্যাটমিক্সের মতো প্রধান মার্কিন প্রতিরক্ষা ঠিকাদাররাও যুক্ত থাকছে।

বিষয়টির সংবেদনশীলতার কারণে কোনো সূত্রই তাঁদের নাম প্রকাশ করতে রাজি হননি।

আরটিএক্স, নর্থরপ এবং জেনারেল অ্যাটমিক্স মন্তব্য করতে অস্বীকার করেছে। বোয়িং তাৎক্ষণিকভাবে মন্তব্যের জন্য করা অনুরোধে সাড়া দেয়নি। লকহিড মার্টিনের একজন মুখপাত্র বলেছেন, বিদেশে সামরিক সরঞ্জাম ও অস্ত্র বিক্রি প্রকৃতপক্ষে সরকার-থেকে-সরকার লেনদেনের বিষয়। অন্য দেশের সরকারের কাছে বিক্রয় সম্পর্কিত প্রশ্নের উত্তর যুক্তরাষ্ট্রের সরকার সবচেয়ে ভালো দিতে পারবে।

প্রস্তাবিত চুক্তির বিষয়ে দুটি সূত্র জানিয়েছে, অনেকগুলো বিষয়ে বেশ কিছু দিন ধরে আলোচনার স্তরে রয়েছে। উদাহরণস্বরূপ, তাঁরা জানিয়েছেন, সৌদি আরব ২০১৮ সালে প্রথম জেনারেল অ্যাটমিক্সের ড্রোন সম্পর্কে তথ্য চেয়েছিল। একটি সূত্র অনুসারে, গত ১২ মাসে জেনারেল অ্যাটমিক্সের এমকিউ-৯বি সি গার্ডিয়ান-স্টাইলের ড্রোন এবং অন্যান্য যুদ্ধবিমানের জন্য ২০ বিলিয়ন ডলারের একটি চুক্তি আলোচনার কেন্দ্রে উঠে এসেছে।

তিনটি সূত্র জানিয়েছে, প্রতিরক্ষা সংস্থাগুলোর বেশ কয়েকজন নির্বাহী ট্রাম্পের প্রতিনিধিদলের অংশ হিসেবে যাওয়ার কথা রয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্র দীর্ঘকাল ধরে সৌদি আরবকে অস্ত্র সরবরাহ করে আসছে। ২০১৭ সালে ট্রাম্প প্রায় ১১০ বিলিয়ন ডলারের অস্ত্র বিক্রির প্রস্তাব করেছিলেন। ২০১৮ সাল পর্যন্ত মাত্র ১৪ দশমিক ৫ বিলিয়ন ডলারের অস্ত্র বিক্রি শুরু হয়েছিল। তবে সৌদি সাংবাদিক জামাল খাশোগি হত্যাকাণ্ডের পর কংগ্রেস এই চুক্তিগুলো নিয়ে প্রশ্ন তুলতে শুরু করে।

২০২১ সালে, বাইডেন প্রশাসনের সময়, খাশোগি হত্যা এবং ইয়েমেন যুদ্ধ বন্ধ করার জন্য সৌদি আরবের ওপর চাপ সৃষ্টি করতে কংগ্রেস দেশটির কাছে আক্রমণাত্মক অস্ত্র বিক্রির ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে।

মার্কিন আইন অনুসারে, বড় আকারের আন্তর্জাতিক অস্ত্র চুক্তি চূড়ান্ত হওয়ার আগে কংগ্রেস সদস্যদের পর্যালোচনা করা বাধ্যতামূলক। কংগ্রেসে অনুমোদনের পরই কেবল এ ধরনের চুক্তি হতে পারে।

ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসন বিশ্বব্যাপী তেল সরবরাহকে প্রভাবিত করার পর ২০২২ সালে বাইডেন প্রশাসন সৌদি আরবের ওপর কঠোর অবস্থান কিছুটা শিথিল করতে শুরু করে। ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের হামলার পর ওয়াশিংটন যখন গাজা যুদ্ধ নিয়ে পরবর্তী পরিকল্পনার জন্য রিয়াদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করছিল, তখন ২০২৪ সালে অস্ত্র বিক্রির নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করা হয়।

তিনটি সূত্র জানিয়েছে, লকহিডের এফ-৩৫ জেটের সম্ভাব্য চুক্তি নিয়ে আলোচনা হতে পারে। সৌদি আরব বহু বছর ধরে এই যুদ্ধবিমানের বিষয়ে আগ্রহ দেখিয়ে আসছে। তবে ট্রাম্পের সফরের সময়ই এফ-৩৫ চুক্তি স্বাক্ষরের সম্ভাবনা কম বলে মনে করছেন সূত্রগুলো।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র মধ্যপ্রাচ্যে ঘনিষ্ঠ মিত্র ইসরায়েলকে আরব রাষ্ট্রগুলোর চেয়ে সব সময় অধিক উন্নত আমেরিকান অস্ত্র সরবরাহ করার নিশ্চয়তা দেয়। প্রতিবেশীদের ওপর ইসরায়েলের ‘গুণগত সামরিক শ্রেষ্ঠত্ব’ বজায় রাখার জন্য সবই করে যুক্তরাষ্ট্র। ইসরায়েল নয় বছর আগেই সর্বাধুনিক প্রযুক্তির এফ-৩৫ যুদ্ধবিমান পেয়েছে। দেশটি একাধিক স্কোয়াড্রনও তৈরি করে ফেলেছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

জাপানের পারমাণবিক অস্ত্র অর্জনের চেষ্টাকে প্রতিহতের ঘোষণা উত্তর কোরিয়ার

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
উত্তর কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট কিম জং উন। ছবি: এএফপি
উত্তর কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট কিম জং উন। ছবি: এএফপি

জাপানের পারমাণবিক অস্ত্র অর্জনের যে কোনো প্রচেষ্টা কঠোরভাবে প্রতিহত করার হুঁশিয়ারি দিয়েছে উত্তর কোরিয়া। দেশটির রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম কেসিএনএ রোববার (২১ ডিসেম্বর) এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, জাপানের পারমাণবিক উচ্চাকাঙ্ক্ষা যে কোনো মূল্যে রোধ করা উচিত, কারণ এটি মানবজাতির জন্য ভয়াবহ বিপর্যয় ডেকে আনতে পারে।

উত্তর কোরিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অধীন ‘ইনস্টিটিউট ফর জাপান স্টাডিজ’-এর পরিচালক এক বিবৃতিতে বলেন, জাপানের পারমাণবিক অস্ত্র অর্জনের চেষ্টা শুধু এশিয়া নয়, পুরো বিশ্বের জন্য মারাত্মক ঝুঁকি তৈরি করবে। তাঁর ভাষায়, ‘জাপানের পারমাণবিক হওয়ার প্রচেষ্টা মানবজাতির জন্য এক মহাবিপর্যয় বয়ে আনবে।’

যুক্তরাজ্য-ভিত্তিক ইনডিপেনডেন্ট জানিয়েছে, উত্তর কোরিয়ার এই প্রতিক্রিয়ার পেছনে রয়েছে জাপানের প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের এক কর্মকর্তার সাম্প্রতিক মন্তব্য। জাপানের বার্তা সংস্থা কিয়োদো নিউজের খবরে বলা হয়, ওই কর্মকর্তা প্রকাশ্যে বলেছেন, টোকিওর পারমাণবিক অস্ত্র রাখা উচিত।

এই প্রেক্ষাপটে উত্তর কোরিয়া দাবি করেছে, এটি কোনো বিচ্ছিন্ন বা বেপরোয়া মন্তব্য নয়; বরং জাপানের বহুদিনের পারমাণবিক অস্ত্রায়নের আকাঙ্ক্ষারই প্রতিফলন।

উত্তর কোরিয়ার মতে, জাপান তাদের তথাকথিত ‘অ-পারমাণবিক নীতি’ পুনর্বিবেচনার কথা বলে কার্যত একটি ‘লাল রেখা’ অতিক্রম করেছে। বিবৃতিতে বলা হয়, জাপানের কর্মকর্তাদের মন্তব্যগুলোই বলে দিচ্ছে, টোকিও এখন প্রকাশ্যেই পারমাণবিক অস্ত্র অর্জনের বাসনা জানাচ্ছে।

উত্তর কোরিয়ার রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম আরও দাবি করেছে, যুক্তরাষ্ট্র যখন গত অক্টোবরে দক্ষিণ কোরিয়াকে একটি পারমাণবিক সাবমেরিন নির্মাণের অনুমোদন দেয়, তার পরপরই জাপানে এই ধরনের বক্তব্য জোরালো হতে শুরু করে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট লি জে মিয়ংয়ের সঙ্গে বাণিজ্য ও নিরাপত্তা ইস্যুতে শীর্ষ বৈঠকের পর ওই অনুমোদন দিয়েছিলেন।

উত্তর কোরিয়ার ওই কর্মকর্তা সতর্ক করে বলেন—জাপান যদি পারমাণবিক অস্ত্র অর্জন করে, তবে এশিয়া ভয়াবহ পারমাণবিক বিপর্যয়ের মুখে পড়বে। তবে তিনি পিয়ংইয়ংয়ের নিজস্ব পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে কোনো মন্তব্য করেননি।

ধারণা করা হয়, উত্তর কোরিয়া নিজেই একটি ক্রমবর্ধমান পারমাণবিক অস্ত্রভান্ডারের অধিকারী। আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞা ও নিরস্ত্রীকরণের আহ্বান থাকার পরও দেশটি তার পারমাণবিক সক্ষমতা বজায় রাখা ও সম্প্রসারণের ঘোষণা দিয়ে আসছে। গত সেপ্টেম্বরে জাতিসংঘে দেওয়া ভাষণে উত্তর কোরিয়ার উপপররাষ্ট্রমন্ত্রী কিম সন গিয়ং বলেন—পারমাণবিক অস্ত্র তাদের রাষ্ট্রীয় আইন, জাতীয় নীতি এবং সার্বভৌম অধিকারের অংশ, যা তারা কোনো পরিস্থিতিতেই ত্যাগ করবে না।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ভেনেজুয়েলার আরও একটি তেলের ট্যাংকার ধাওয়া করছে মার্কিন বাহিনী

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ২১ ডিসেম্বর ২০২৫, ২৩: ১৪
ক্যারিবিয়ান সাগরে পানামা পতাকাবাহী সেঞ্চুরি নামের একটি তেলবাহী জাহাজের ওপর মার্কিন সামরিক বাহিনীর টহল। ছবি: রয়টার্সের সৌজন্যে
ক্যারিবিয়ান সাগরে পানামা পতাকাবাহী সেঞ্চুরি নামের একটি তেলবাহী জাহাজের ওপর মার্কিন সামরিক বাহিনীর টহল। ছবি: রয়টার্সের সৌজন্যে

ভেনেজুয়েলা উপকূলে আন্তর্জাতিক জলসীমায় আরও একটি তেলের ট্যাংকার ধাওয়া করছে মার্কিন কোস্ট গার্ড। আজ রোববার (২১ ডিসেম্বর) তিনজন মার্কিন কর্মকর্তা বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। এটি সফল হলে এক সপ্তাহের মধ্যে ভেনেজুয়েলাসংশ্লিষ্ট তিনটি তেলবাহী জাহাজ জব্দ করার ঘটনা ঘটবে।

প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প গত সপ্তাহে ভেনেজুয়েলার ওপর ‘সর্বাত্মক নৌ অবরোধ’ ঘোষণার পর থেকে এই চিরুনি অভিযান শুরু হয়েছে।

সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, মার্কিন কোস্ট গার্ড বর্তমানে একটি তেল ট্যাংকারকে ধাওয়া করছে। তবে অভিযানের সুনির্দিষ্ট অবস্থান বা জাহাজটির পরিচয় প্রকাশ করা হয়নি।

এই অভিযান নিয়ে হোয়াইট হাউস বা পেন্টাগন থেকে তাৎক্ষণিক কোনো আনুষ্ঠানিক মন্তব্য পাওয়া যায়নি।

হোয়াইট হাউসের ন্যাশনাল ইকোনমিক কাউন্সিলের ডিরেক্টর কেভিন হ্যাসেট আজ জানিয়েছেন, এর আগে জব্দ করা দুটি ট্যাংকার ‘ব্ল্যাক মার্কেট’ বা কালোবাজারের মাধ্যমে বিভিন্ন নিষিদ্ধ দেশে তেল সরবরাহ করছিল।

কেভিন হ্যাসেট দাবি করেছেন, এই আটকের ঘটনায় যুক্তরাষ্ট্রে তেলের দাম বাড়ার কোনো কারণ নেই। তাঁর মতে, এগুলো বিচ্ছিন্ন ঘটনা এবং কেবল কালোবাজারি জাহাজগুলোকেই লক্ষ্যবস্তু করা হচ্ছে।

তবে বাজার বিশ্লেষক ও তেল ব্যবসায়ীরা ভিন্নমত পোষণ করছেন। একজন তেল ব্যবসায়ী রয়টার্সকে বলেন, এই ধরনের পদক্ষেপ ভূরাজনৈতিক ঝুঁকি বহুগুণ বাড়িয়ে দেয়। আগামীকাল সোমবার এশিয়ার বাজারে তেলের দাম বাড়ার প্রবল সম্ভাবনা রয়েছে। তবে ইউক্রেন যুদ্ধ শেষ হওয়ার সম্ভাবনা তেলের দামের এই ঊর্ধ্বগতিকে কিছুটা নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারে।

গত সেপ্টেম্বর থেকে প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরোর ওপর চাপ বাড়াতে ট্রাম্প প্রশাসন এই অঞ্চলে সামরিক উপস্থিতি কয়েক গুণ বাড়িয়ে দিয়েছে। গত কয়েক মাসে প্রশান্ত মহাসাগর ও ক্যারিবিয়ান সাগরে ভেনেজুয়েলাসংশ্লিষ্ট ভেসেলগুলোর ওপর অন্তত দুই ডজন সামরিক হামলা চালানো হয়েছে। হিউম্যান রাইটস ওয়াচ ও বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমের তথ্যমতে, এসব সামরিক অভিযানে এখন পর্যন্ত অন্তত ১০০ জন নিহত হয়েছেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ভেনেজুয়েলায় মার্কিন হস্তক্ষেপ নিয়ে সতর্ক করলেন লুলা

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ২২ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৮: ৫২
ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট লুইজ ইনাসিও লুলা দা সিলভা। ছবি: সংগৃহীত
ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট লুইজ ইনাসিও লুলা দা সিলভা। ছবি: সংগৃহীত

ভেনেজুয়েলার বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের ক্রমবর্ধমান চাপ ও সম্ভাব্য সামরিক পদক্ষেপ ‘ভয়াবহ মানবিক বিপর্যয়’ ডেকে আনবে বলে সতর্ক করেছেন ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট লুইজ ইনাসিও লুলা দা সিলভা। তিনি মত দিয়েছেন, ভেনেজুয়েলায় কোনো ধরনের সশস্ত্র হস্তক্ষেপ শুধু ওই দেশের জন্য নয়, বরং পুরো পৃথিবীর জন্যই এক বিপজ্জনক দৃষ্টান্ত স্থাপন করবে।

ব্রাজিলের দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর ফোজ দো ইগুয়াসুতে দক্ষিণ আমেরিকার আঞ্চলিক জোট ‘মারকোসুর’-এর শীর্ষ সম্মেলনে বক্তব্য রাখতে গিয়ে লুলা এই মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, ‘ভেনেজুয়েলায় সশস্ত্র হস্তক্ষেপ একটি মানবিক বিপর্যয়ে রূপ নেবে। এটি এমন একটি নজির সৃষ্টি করবে, যা বৈশ্বিক স্থিতিশীলতার জন্য মারাত্মক হুমকি।’

এ বিষয়ে এক প্রতিবেদনে রোববার (২১ ডিসেম্বর) রয়টার্স জানিয়েছে, ভেনেজুয়েলা ইস্যুতে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে উত্তেজনা সম্প্রতি আরও বেড়েছে। গত মঙ্গলবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ভেনেজুয়েলায় যাতায়াতকারী সব নিষেধাজ্ঞাভুক্ত তেলবাহী জাহাজের ওপর ‘অবরোধ’ আরোপের নির্দেশ দেন। ওয়াশিংটনের এই পদক্ষেপকে নিকোলাস মাদুরো সরকারের ওপর চাপ বাড়ানোর নতুন কৌশল হিসেবে দেখা হচ্ছে। ভেনেজুয়েলার অর্থনীতির প্রধান চালিকাশক্তি তেল খাতকে লক্ষ্য করেই এই ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

লুলা স্মরণ করিয়ে দেন, ফকল্যান্ডস যুদ্ধের চার দশকেরও বেশি সময় পর দক্ষিণ আমেরিকা আবারও অন্য মহাদেশীয় কোনো শক্তির সামরিক উপস্থিতির আশঙ্কায় ভুগছে। তিনি বলেন, ‘দক্ষিণ আমেরিকা আবার এমন এক ভূতের ছায়ায় পড়ছে, যেখানে এই অঞ্চলের বাইরে থেকে আসা সামরিক শক্তি আমাদের শান্তিকে প্রশ্নবিদ্ধ করছে।’

চলতি সপ্তাহের শুরুতেই লাতিন আমেরিকার দুই বৃহত্তম অর্থনীতির শীর্ষ নেতা ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট লুলা দ্য সিলভা এবং মেক্সিকোর প্রেসিডেন্ট ক্লাউদিয়া শেইনবাউম ভেনেজুয়েলা পরিস্থিতিতে সংযম দেখানোর আহ্বান জানিয়েছিলেন। তবে গত শনিবারের বক্তব্যে লুলা আরও কঠোর দেখিয়েছেন।

‘মারকোসুর’ সম্মেলন শেষে দেওয়া এক যৌথ ঘোষণায় লাতিন আমেরিকার নেতারা ভেনেজুয়েলায় গণতান্ত্রিক নীতি ও মানবাধিকার রক্ষায় শান্তিপূর্ণ পথেই অগ্রসর হওয়ার অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেন। এই ঘোষণায় আর্জেন্টিনা, প্যারাগুয়ে ও পানামার প্রেসিডেন্টদের পাশাপাশি বলিভিয়া, ইকুয়েডর ও পেরুর শীর্ষ কর্মকর্তারাও সমর্থন জানান।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ট্রেনের ভাড়া বাড়ছে ভারতেও

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
২৬ ডিসেম্বর থেকে ট্রেনের ভাড়া বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে ভারতের রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ। ছবি: সংগৃহীত
২৬ ডিসেম্বর থেকে ট্রেনের ভাড়া বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে ভারতের রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ। ছবি: সংগৃহীত

ভারতেও ট্রেনের ভাড়া বাড়ছে। পকেটে টান পড়তে যাচ্ছে সাধারণ যাত্রীদের। ২৬ ডিসেম্বর থেকে ট্রেনের ভাড়া বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে দেশটির রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ। তবে স্বস্তির খবর হলো, লোকাল ট্রেনের ভাড়া অপরিবর্তিত থাকছে। মূলত দূরপাল্লার যাত্রীদের জন্যই এই বাড়তি ভাড়া কার্যকর হবে।

ভারতের রেলওয়ে কর্তৃপক্ষের ঘোষণা অনুযায়ী, ভ্রমণের দূরত্ব ও কোচের ধরনভেদে নতুন ভাড়ার হার নির্ধারিত হবে। ২১৫ কিলোমিটার পর্যন্ত সাধারণ শ্রেণিতে ভাড়ায় কোনো পরিবর্তন নেই। তবে ২১৫ কিলোমিটারের বেশি দূরত্বের ক্ষেত্রে প্রতি কিলোমিটারে এক পয়সা করে ভাড়া বাড়বে।

মেল বা এক্সপ্রেস ট্রেনের (নন-এসি) যাত্রীদের জন্য প্রতি কিলোমিটারে ভাড়া বাড়বে দুই পয়সা। এসি কোচ বা শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত কোচের ক্ষেত্রেও কিলোমিটার প্রতি দুই পয়সা ভাড়া বাড়ানো হয়েছে।

তবে যদি কোনো যাত্রী নন-এসি কোচে ৫০০ কিলোমিটার পথ পাড়ি দেন, নতুন নিয়ম অনুযায়ী তাঁকে আগের চেয়ে ১০ রুপি বেশি ভাড়া দিতে হবে।

কেন এই ভাড়া বৃদ্ধি

রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, গত এক দশকে রেলপথ সম্প্রসারণের ফলে জনবল এবং অন্যান্য ব্যয় বহুগুণ বেড়েছে। রেলওয়ের বর্তমান জনবল ব্যয় দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ১৫ হাজার কোটি রুপিতে এবং পেনশনের পেছনে খরচ হচ্ছে ৬০ হাজার কোটি রুপি। সব মিলিয়ে ২০২৪-২৫ অর্থবছরে মোট পরিচালনা ব্যয় বেড়ে হয়েছে ২ লাখ ৬৩ হাজার কোটি রুপি।

যাত্রীদের ভাড়া ও পণ্য পরিবহনের মাধ্যমে খরচ সামাল দেওয়ার চেষ্টা করছে রেলওয়ে। এর আগে গত জুলাই মাসেও ভাড়া বাড়ানো হয়েছিল (নন-এসিতে এক পয়সা ও এসিতে দুই পয়সা)। তারও আগে ২০২০ সালের ১ জানুয়ারি বড় ধরনের ভাড়া বৃদ্ধি কার্যকর করা হয়েছিল, যেখানে এসি কোচে ভাড়া বেড়েছিল কিলোমিটার প্রতি চার পয়সা পর্যন্ত।

রেলওয়ে কর্মকর্তাদের মতে, উন্নত সেবা এবং ক্রমবর্ধমান ব্যয় মেটাতে এই সামান্য ভাড়া বৃদ্ধি অপরিহার্য হয়ে পড়েছিল। কর্তৃপক্ষ আশা করছে, এই ভাড়া বৃদ্ধির ফলে রেলওয়ের বার্ষিক আয় প্রায় ৬০০ কোটি রুপি বাড়বে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত