Ajker Patrika

জর্জিয়ায় মানব ডিম্বাণু খামার থেকে ৩ থাই নারী উদ্ধার

অনলাইন ডেস্ক
আপডেট : ০৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ২২: ০৪
উদ্ধার হওয়া তিন নারীর সঙ্গে কথা বলেন পাভেনা হংসাকুলা। ছবি: ভিডিও থেকে নেওয়া
উদ্ধার হওয়া তিন নারীর সঙ্গে কথা বলেন পাভেনা হংসাকুলা। ছবি: ভিডিও থেকে নেওয়া

জর্জিয়ায় একটি ‘মানব ডিম্বাণু খামারের’ সন্ধান পাওয়া গেছে। ব্যাংকক পোস্টের প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, চীনা গ্যাংস্টারদের পরিচালিত এই ‘মানব ডিম্বাণু খামার’ থেকে ভুক্তভোগী তিন নারীকে উদ্ধার করেছে থাইল্যান্ডের পুলিশ। উদ্ধার হওয়া নারীরা জানান, তাঁদের অজ্ঞান করে প্রতি ঋতুচক্রে ডিম্বাণু সংগ্রহ করা হতো।

থাইল্যান্ডের একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা পাভেনা হংসাকুলা বলেন, ‘গত বছরের সেপ্টেম্বরে এক নারী ৭০ হাজার বাথ মুক্তিপণ দিয়ে দেশে ফেরেন। তাঁর কাছেই প্রথম এই ডিম্বাণু খামার সম্পর্কে জানতে পারি। ওই নারী জানান, আরও কিছু থাই নারী সেখানে আটকে আছেন। যাঁদের কাছে মুক্তিপণের প্রয়োজনীয় অর্থ নেই।’

পাভেনা হংসাকুলা বলেন, ‘বিষয়টি জানার পর আমি থাই পুলিশ ও ইন্টারপোলের সাহায্য চাই। তারা একটি অভিযান পরিচালনা করে তিন নারীকে উদ্ধার করে।’

থাইল্যান্ডের পররাষ্ট্র পুলিশ বিভাগের প্রধান মেজর জেনারেল সুরাপান থাইপ্রাসার্ত বলেন, ‘আমরা হংসাকুলার তথ্যের ভিত্তিতে ইন্টারপোলের সহযোগিতায় তদন্ত শুরু করি। এরপর গত ৩০ জানুয়ারি তিন নারীকে উদ্ধার করে দেশে ফিরিয়ে আনা হয়।’

উদ্ধার হওয়া এক নারী জানান, তিনি ফেসবুকে ৪ থেকে ৬ লাখ বাথ (১৪ থেকে ১৬ লাখ টাকা) বেতনের একটি চাকরির বিজ্ঞাপন দেখেন। যেখানে বলা হয়েছিল, ‘সারোগেসি বা গর্ভ ভাড়ার বিষয়টি জর্জিয়ায় বৈধ। কেউ গর্ভ ভাড়া দিতে চাইলে তাঁকে ৪ থেকে ৬ লাখ বাথ বেতনে নিয়োগ দেওয়া হবে।’ এই বিজ্ঞাপন দেখে তিনি নিয়োগদাতার সঙ্গে যোগাযোগ করেন। তারা জানায়, ভ্রমণসংক্রান্ত সব খরচ কোম্পানি বহন করবে।

উদ্ধার হওয়া নারী আরও জানান, একজন থাই নারীর নেতৃত্বে গত বছরের আগস্টে প্রায় ১০ নারীকে নিয়ে তিনি জর্জিয়ায় পৌঁছান। সেখানে পৌঁছে দেখেন, চারটি বিশাল বাড়িতে অন্তত ১০০ জন থাই নারীকে বন্দী রাখা হয়েছে। পুরো জায়গাটি চীনা গ্যাংস্টাররা নিয়ন্ত্রণ করত। সেখানে সারোগেসির কোনো পরিবেশ ছিল না। তাঁর ধারণা, যে নারী তাঁদের জর্জিয়ায় নিয়ে যান তিনি চায়নিজ গ্যাংয়ের হয়ে কাজ করতেন।

ওই নারী আরও জানান, জর্জিয়ায় আটকে রেখে তাঁদের শরীরে ডিম্বাণু উৎপাদনকারী হরমোন প্রয়োগ করা হতো এবং প্রতি মাসে অজ্ঞান করে ডিম্বাণু সংগ্রহ করা হতো। যদিও তাঁদের মোটা অঙ্কের বেতনের প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল, তবে অনেক নারীই কোনো অর্থ পাননি।

পাভেনা হংসাকুলা জানান, এই ‘মানব ডিম্বাণু খামার’ চক্রের মাধ্যমে সংগৃহীত ডিম্বাণুগুলো সম্ভবত অন্য কোনো দেশে পাচার করা হয় এবং আইভিএফ বা ইন-ভিট্রো ফার্টিলাইজেশন প্রক্রিয়ায় ব্যবহার করা হয়।

থাইল্যান্ডের পুলিশ জানিয়েছে, এখনো অনেক নারী এই চক্রের হাতে আটক আছেন। তাঁদের উদ্ধারে অভিযান অব্যাহত থাকবে।

পাভেনা ফাউন্ডেশনের তথ্যমতে, ২০২৪ সালে ২৫৭ জন থাই নাগরিক মানব পাচারের শিকার হন। তাঁদের মধ্যে ৫৩ জন থাইল্যান্ডে এবং ২০৪ জন বিদেশে আটকা পড়েন। সংস্থাটি এ পর্যন্ত ১৫২ জনকে উদ্ধার করেছে।

জর্জিয়ায় সারোগেসির জন্য নির্দিষ্ট আইন না থাকলেও চুক্তির ভিত্তিতে এটি বৈধ। তবে সম্প্রতি বিভিন্ন অপরাধী চক্রের কর্মকাণ্ডের কারণে দেশটির সরকার এটিকে অবৈধ ঘোষণার পরিকল্পনা করছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

আসামির জবানবন্দি: মাগুরার শিশুটির গলায় ওড়না পেঁচিয়ে ধর্ষণ করা হয়

রেমিট্যান্সের নামে ৭৩০ কোটি টাকার কর ফাঁকি দিয়েছেন একজন, কার কথা বললেন এনবিআর চেয়ারম্যান

অতিরিক্ত দায়িত্ব পালনে খাওয়ার খরচ চায় পুলিশ

ভারতে বসেছে বিশ্বের গোয়েন্দাপ্রধানদের আসর, কী হচ্ছে সেখানে

মামলা করতে যাওয়া নারীর কাছ থেকে টাকা ‘কেড়ে নিলেন’ এসআই

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত