Ajker Patrika

পুতিনের কাছে রাশিয়ার বিরুদ্ধে ইউক্রেনের জয় ‘মায়াজাল’, ভ্যান্সের কাছে ‘অলীক কল্পনা’

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ও মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্স। ছবি: সংগৃহীত
রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ও মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্স। ছবি: সংগৃহীত

রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন তাঁর দেশের বিরুদ্ধে যুদ্ধে ইউক্রেনের জয়কে ‘মায়াজাল’ বলে মনে করছেন। পুতিন ঘোষণা করেছেন, ইউক্রেন যদি যুক্তরাষ্ট্রের উত্থাপিত শান্তি পরিকল্পনা না মানে, তবে তারা নিছক কল্পনার ভেতরেই বাস করছে। একই ধরনের কথা বলেছেন, মার্কিন প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্স। তাঁর ভাষায়, রাশিয়ার বিরুদ্ধে ইউক্রেনের জয় আসলে এক ধরনের ‘অলীক কল্পনা।’

ভ্লাদিমির পুতিন যুক্তরাষ্ট্র উত্থাপিত শান্তি পরিকল্পনার দিকে ইঙ্গিত করে বলেছেন, ‘ইউক্রেন এই পরিকল্পনার বিরুদ্ধে। বোঝাই যাচ্ছে, ইউক্রেন আর তার ইউরোপীয় মিত্ররা এখনো মায়াজালে ডুবে আছে, এখনো ভাবে তারা যুদ্ধক্ষেত্রে রাশিয়াকে কৌশলগত পরাজয় দিতে পারবে।’

পুতিনের এই ইতিবাচক প্রতিক্রিয়াই ইউরোপীয় ও ইউক্রেনীয় কর্মকর্তাদের সেই আশঙ্কাকে আরও ভারী করে তোলে যে—মার্কিন প্রস্তাবটি আসলে প্রায় আত্মসমর্পণের সমান। রাশিয়ার জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদে ভাষণ দিতে গিয়ে পুতিন বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের উপস্থাপিত ২৮ দফা পরিকল্পনা গত আগস্টে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে আলাস্কা বৈঠকের আগে আলোচিত বিষয়বস্তুর ‘এক নতুন সংস্করণ’, ‘একটি আধুনিক রূপ।’ তিনি জানান, মস্কো ইতিমধ্যেই পরিকল্পনাটি হাতে পেয়েছে এবং তাঁর মতে এটি একটি ‘চূড়ান্ত শান্তি-সমঝোতার ভিত্তি হতে পারে।’

ওদিকে, যুক্তরাষ্ট্রের ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্সও একই সুরে কথা বলেছেন। তাঁর মতে, যে কোনো শান্তি পরিকল্পনা ইউক্রেনের সার্বভৌমত্ব অক্ষুণ্ন রাখবে এবং দুই পক্ষের কাছেই গ্রহণযোগ্য হতে হবে। তবে রাশিয়ার বিরুদ্ধে ইউক্রেনের জয়কে তিনি নিছক ‘অলীক কল্পনা’ বলে আখ্যায়িত করেছেন। তিনি এক্সে লিখেছেন, ‘ধারণাটা এমন যে—যদি আমরা আরও অর্থ, আরও অস্ত্র, কিংবা আরও নিষেধাজ্ঞা দিই, তবে বিজয় হাতের মুঠোয়। কিন্তু এটি নিছক এক কল্পনাই আসলে।’

ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি এই প্রস্তাবকে এক ভয়াবহ বাঁক পরিবর্তন বলে আখ্যা দিয়েছেন। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ডোনাল্ড ট্রাম্প কিয়েভকে বৃহস্পতিবারের মধ্যেই পরিকল্পনাটি মেনে নিতে বলেছেন। এই মার্কিন-রুশ প্রস্তাব মেনে নিলে ইউক্রেনকে ভূখণ্ড ছাড়ার পাশাপাশি আরও কিছু কঠিন ছাড় দিতে হবে। জেলেনস্কির মতে, এসব ছাড় দেশটিকে ‘স্বাধীনতা, মর্যাদা আর ন্যায়বিচারহীন’ করে দিতে পারে।

জেলেনস্কি ইঙ্গিত দিয়েছেন, ইউক্রেন যদি কঠোর অবস্থান নেয়, তবে হয়তো যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থন হারানোর ঝুঁকি আছে। তাই তিনি ইউরোপীয় মিত্রদেরও খোঁজ নিয়েছেন। শুক্রবার তিনি জার্মান চ্যান্সেলর ফ্রিডরিখ ম্যার্ৎজ, ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাখোঁ এবং যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমারের সঙ্গে কথা বলেন। জার্মান চ্যান্সেলরের দপ্তর জানিয়েছে, তিন নেতা জেলেনস্কিকে ‘দীর্ঘস্থায়ী ও ন্যায়সংগত শান্তির পথে তাদের অটুট সমর্থন’ পুনর্ব্যক্ত করেছেন। তাঁরা স্পষ্ট করে বলেন, যে কোনো সমঝোতা অবশ্যই ন্যায্য হতে হবে এবং ইউক্রেনের নিজস্ব সীমারেখাকে গুরুত্ব দিতে হবে।

ইইউ পররাষ্ট্রনীতি প্রধান কাইয়া ক্যালাস সতর্ক করে বলেছেন, এই যুদ্ধ কীভাবে শেষ হবে তা খুব গুরুত্বপূর্ণ। তাঁর ভাষায়, ‘ইউক্রেনের বিরুদ্ধে রাশিয়ার যুদ্ধ ইউরোপের অস্তিত্বগত হুমকি। আমরা সবাই চাই এই যুদ্ধ শেষ হোক। কিন্তু তা কীভাবে শেষ হবে, সেটাই আসল কথা। রাশিয়ার কোনো আইনি অধিকার নেই যে দখল করা দেশের কাছ থেকে ছাড় চাইবে। শেষ পর্যন্ত সিদ্ধান্ত নেওয়ার অধিকার ইউক্রেনের।’

অন্যদিকে ট্রাম্প রেডিও সাক্ষাৎকারে আবার বলেন, এই চুক্তি পুতিনকে আরও আগ্রাসী করবে এমন ধারণা ভিত্তিহীন। তাঁর কথা, ‘সে আর যুদ্ধ করার ভাবছে না। সে ভাবছে শান্তি। যা খুশি বলুন। এই যুদ্ধটা নাকি এক দিনেই শেষ হওয়ার কথা ছিল, অথচ এখন চার বছর হয়ে গেছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা—জনসংখ্যার তীব্র সংকটে ইউক্রেন

বাংলাদেশি ও পাকিস্তানি শিক্ষার্থী ভর্তি স্থগিত করেছে যুক্তরাজ্যের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়

ভোটের মাঠে: টাঙ্গাইলে নির্বাচনী উত্তাপ

গোপালগঞ্জে শিক্ষকের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ, ছাত্রীর আত্মহত্যা

খালেদা জিয়াকে নিয়ে এয়ার অ্যাম্বুলেন্স রওনা হবে শুক্রবার দুপুরে

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ