Ajker Patrika

বাংলাদেশ-ভুটান-ভারত-নেপাল যান চলাচল প্রটোকলের খসড়া চূড়ান্ত

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ১৩ এপ্রিল ২০২৫, ১৭: ৪২
বাংলাদেশ, ভুটান, ভারত ও নেপাল যানবাহন চলাচলে একটি প্রটোকলের খসড়া চূড়ান্ত করেছে। ছবি: সংগৃহীত
বাংলাদেশ, ভুটান, ভারত ও নেপাল যানবাহন চলাচলে একটি প্রটোকলের খসড়া চূড়ান্ত করেছে। ছবি: সংগৃহীত

অবশেষে আলোর মুখ দেখছে বাংলাদেশ, ভুটান, ভারত ও নেপালের (বিবিআইএন) মধ্যে যাত্রী, ব্যক্তিগত ও পণ্যবাহী যান চলাচলের জন্য স্বাক্ষরিত মোটর ভেহিকেলস অ্যাগ্রিমেন্ট (এমভিএ)।

চুক্তি স্বাক্ষরের এক দশক পরে এই চার দক্ষিণ এশীয় দেশ যান চলাচল নিশ্চিতে একটি প্রটোকলের খসড়া চূড়ান্ত করেছে।

নেপালি সংবাদমাধ্যম কাঠমান্ডু পোস্টের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দক্ষিণ এশিয়ায় এ ধরনের প্রটোকল এটিই প্রথম। মোটর ভেহিকেল অ্যাগ্রিমেন্ট ছাড়াও বিবিআইএন (বাংলাদেশ-ভুটান-ভারত-নেপাল) দেশগুলো আঞ্চলিক জ্বালানি নিরাপত্তার জন্য আন্তসংযুক্ত গ্রিডের পরিকল্পনাও করছে।

বিবিআইএন-এমভিএর লক্ষ্য হলো যাত্রী, ব্যক্তিগত ও পণ্যবাহী যানবাহন চলাচলের মাধ্যমে আন্ত-আঞ্চলিক বাণিজ্য ও যোগাযোগ জোরদার করার ক্ষেত্রে বাধা দূর করা।

বিবিআইএন দক্ষিণ এশীয় আঞ্চলিক সহযোগিতা সংস্থার (সার্ক) উপ-আঞ্চলিক সহযোগিতা কাঠামো। তবে এই কাঠামো এখনো সুপ্ত। ভারত-পাকিস্তানের দীর্ঘদিনের বৈরিতার কারণে সার্ক এক দশকেরও বেশি সময় ধরে কোনো শীর্ষ সম্মেলন করতে পারেনি।

কিছু পর্যবেক্ষক বলছেন, সম্প্রতি ভারতের বাংলাদেশকে দেওয়া ট্রান্সশিপমেন্ট-সুবিধা বাতিল করার সিদ্ধান্ত এই চার দেশের মধ্যে এমভিএ বাস্তবায়নে বাধা সৃষ্টি করতে পারে।

বাংলাদেশের সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী, ভুটানের তথ্য ও যোগাযোগমন্ত্রী, ভারতের সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক এবং নৌপরিবহনমন্ত্রী এবং নেপালের ভৌত অবকাঠামো ও পরিবহনমন্ত্রী ২০১৫ সালের ১৫ জুন ভুটানের থিম্পুতে বিবিআইএন মোটর ভেহিকেল অ্যাগ্রিমেন্টে স্বাক্ষর করেন।

চুক্তিতে উল্লেখ করা হয়েছে, এটি কার্যকর করার জন্য প্রয়োজনীয় অভ্যন্তরীণ আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন হয়েছে। এই চুক্তি দেশগুলোর ভূখণ্ডের মধ্যে দ্রুত ও সুলভে পণ্য ও মানুষ যাতায়াতে সহায়তা করবে। প্রটোকলটির আওতায় একটি পাইলট প্রকল্প চালুর কথাও বলা হয়েছে।

প্রটোকল অনুযায়ী, ভুটান ছাড়া অন্য তিন দেশ সব ধরনের যানবাহন চলাচলের অনুমতি দেবে। পণ্যবাহী যানবাহনের চলাচল অনুমোদনের অধীনে হালকা বাণিজ্যিক যানবাহন (৭ হাজার ৫০০ কেজি পর্যন্ত), মাঝারি বাণিজ্যিক যানবাহন (৭ হাজার ৫০০ থেকে ১২ হাজার কেজি) এবং ভারী বাণিজ্যিক যানবাহন (১২ হাজার কেজির বেশি)—এই তিন শ্রেণি চালু করা হবে।

প্রটোকল চূড়ান্ত করার জন্য ২০১৫ ও ২০১৬ সালে পরীক্ষামূলক চলাচল (ট্রায়াল রান) অনুষ্ঠিত হয়।
এতে যাত্রী, ব্যক্তিগত ও পণ্যবাহী যানবাহনের মসৃণ চলাচল সম্ভব বলেই প্রতীয়মান হয়।

২০১৫ সালের নভেম্বরে কলকাতা-ঢাকা-আগরতলা রুটে (৬০০ কিলোমিটার) পণ্যবাহী যানবাহনের পরীক্ষামূলক চলাচল; ২০১৬ সালের ২৯ আগস্ট থেকে ৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ঢাকা ও দিল্লির মধ্যে (১ হাজার ৭৮০ কিলোমিটার) এবং ২০১৮ সালের ২৩ এপ্রিল ঢাকা থেকে ভারত হয়ে কাঠমান্ডু পর্যন্ত যাত্রীবাহী বাস পরীক্ষামূলক চলাচল করে।

এই প্রকল্প বাস্তবায়নে সহায়তা করছে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি)। সংস্থাটির মতে, প্রস্তাবিত পরীক্ষামূলক রুটের মধ্যে রয়েছে নেপাল ও ভারতের মধ্যে কাঠমান্ডু-ভৈরব-সুনৌলি-লক্ষ্ণৌ-কানপুর-নয়াদিল্লি এবং কাঠমান্ডু-বীরগঞ্জ-রাক্সৌল-কলকাতা।

নেপাল, ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে পরীক্ষামূলক রুট হিসেবে কাঠমান্ডু-কাঁকরভিটা-পানিতানকি-শিলিগুঁড়ি-ফুলবাড়ী-বাংলাবান্ধা-মোংলা/চট্টগ্রাম রুট প্রস্তাব করা হয়েছে।

সংশ্লিষ্ট দেশগুলোর কর্মকর্তারা ২০২২ সালের মার্চ মাসে নয়াদিল্লিতে বৈঠক করেন এবং মোটর ভেহিকেল অ্যাগ্রিমেন্ট বাস্তবায়নের জন্য একটি নির্দিষ্ট সময়সীমার মধ্যে কর্মপরিকল্পনা প্রণয়নে সম্মত হন। সেই সঙ্গে তাঁরা আরও পরীক্ষামূলক চলাচল আয়োজনের পরামর্শ দেন। পাশাপাশি এডিবির কাছে সেই পরীক্ষামূলক চলাচলে সহায়তার অনুরোধ জানান। পরে এডিবি এমভিএর ধারণাপত্রের ভিত্তিতে একটি পদ্ধতি প্রস্তাব করে।

বাংলাদেশ, ভারত ও নেপালের মধ্যে অথবা কেবল দুটি দেশের মধ্যে পরীক্ষামূলক চলাচল অনুষ্ঠিত হয়েছে। ভুটান বিবিআইএন-এমভিএতে স্বাক্ষর করেছে এবং প্রটোকলে সম্মতিও জানিয়েছে, কিন্তু তারা পরীক্ষামূলক চলাচলে অংশ নেয়নি।

এডিবির তৈরি করা এশিয়ান হাইওয়ে করিডর বিবিআইএন-এমভিএ বাস্তবায়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।

এডিবি রুট সমন্বয় (রুটভিত্তিক উৎস-গন্তব্য বিশ্লেষণ) ; রুট চিহ্নিতকরণ; ফি নির্ধারণ; আন্তসীমান্ত যানবাহন বিমা এবং নেপালের জন্য বিবিআইএন প্রভাব সমীক্ষাসহ অন্যান্য বিষয়ে গবেষণা সম্পন্ন করেছে। কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, নেপাল সরাসরি চারটি ভারতীয় বন্দর—কলকাতা, হলদিয়া, বিশাখাপত্তম ও মুন্দ্রার সঙ্গে যুক্ত হবে।

এডিবি চ্যালেঞ্জ হিসেবে সীমান্ত রক্ষার দায়িত্বে থাকা সংস্থাগুলোর মধ্যে দুর্বল সমন্বয়ের কথাও উল্লেখ করেছে।

তবে অংশীজনেরা চুক্তি বাস্তবায়নের পর নেপালে ভারত ও বাংলাদেশের যানবাহন প্রবেশের ব্যাপক বৃদ্ধি আশা করছেন।

প্রটোকলটিতে বিভিন্ন প্রাতিষ্ঠানিক প্রক্রিয়া; চুক্তির শর্ত লঙ্ঘনের তদন্ত ও প্রতিরোধের জন্য সহযোগিতাসহ অন্যান্য বিষয়ও অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। প্রটোকলের খসড়া অনুসারে, স্বাক্ষরকারীরা চুক্তি স্বাক্ষরের দুই বছরের মধ্যে চুক্তির অধীনে চলাচলকারী যানবাহনগুলোর কার্যকর ট্র্যাকিংয়ের জন্য উপযুক্ত সফটওয়্যার ও হার্ডওয়্যারসহ একটি ইলেকট্রনিক প্ল্যাটফর্ম স্থাপন করবে। দেশগুলো যানবাহন ও পণ্য চলাচল পর্যবেক্ষণ এবং নিরাপত্তা নিশ্চিতে জন্য একটি সাধারণ (যৌথ) ইলেকট্রনিক প্ল্যাটফর্ম স্থাপন করবে।

যানবাহনের ক্রুদের (চালক, সহকারী ইত্যাদি) অবশ্যই স্বাক্ষরকারী দেশগুলোর নাগরিক হতে হবে। তাঁরা বৈধ পাসপোর্ট বা অন্যান্য নথির ভিত্তিতে ভ্রমণ করবেন। আন্তসীমান্ত ভ্রমণের জন্য ভিসার প্রয়োজন হলে, চালক ও সহকারীদের ভিসার আবেদনের সঙ্গে চুক্তির সংযুক্তি-৩ অনুযায়ী ইস্যু করা তাঁর ক্রু আইডেনটিটি কার্ডের কপি জমা দিতে হবে। আবেদনকারীকে তাঁর ড্রাইভিং লাইসেন্সের একটি কপিও জমা দিতে হবে। ক্রু আইডেনটিটি কার্ড কাগজের ফরমে বা স্মার্ট কার্ড হিসেবে ইস্যু করা হবে।

প্রাতিষ্ঠানিক ব্যবস্থা হিসেবে, চুক্তির বাস্তবায়ন, সমন্বয় ও পর্যবেক্ষণের জন্য এবং সংশ্লিষ্ট সব সংস্থার প্রতিনিধিদের সমন্বয়ে গঠিত সচিবের সভাপতিত্বে একটি স্থায়ী জাতীয় স্থল পরিবহন সুবিধা কমিটি বা অনুরূপ সংস্থা গঠন করা হবে।

চুক্তির বাস্তবায়ন পর্যবেক্ষণ ও পর্যালোচনা এবং বিরোধের বন্ধুত্বপূর্ণ নিষ্পত্তির জন্য একটি প্ল্যাটফর্ম হিসেবে কাজ করার জন্য একটি যৌথ স্থল পরিবহন সুবিধা কমিটি গঠন করা হবে। অনুরূপভাবে, প্রটোকল অনুযায়ী মোটর যানবাহনের প্রবেশ ও প্রস্থান নিয়ন্ত্রণের জন্য একটি কাস্টমস উপ-গ্রুপ গঠন করা হবে। প্রটোকলে চুক্তি স্থগিত, প্রত্যাহার, পর্যালোচনা ও সংশোধনের বিধানও রাখা হয়েছে।

আরও খবর পড়ুন

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ব্রিটেনের রানি ক্যামিলাও যৌন নিপীড়নের শিকার হয়েছিলেন

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
ব্রিটেনের রানি ক্যামিলা। ফাইল ছবি
ব্রিটেনের রানি ক্যামিলা। ফাইল ছবি

ব্রিটেনের রানি ক্যামিলা কিশোর বয়সে ট্রেনে এক ব্যক্তির হামলার শিকার হওয়ার অভিজ্ঞতার কথা প্রথমবারের মতো প্রকাশ্যে বলেছেন। বিবিসিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি জানান, ওই হামলার ঘটনা তাঁকে তীব্র ক্ষোভে ভরিয়ে দিয়েছিল।

আজ বুধবার নারী নির্যাতন বিষয়ে প্রচারিত এক আলোচনায় ক্যামিলা বলেন, ‘আমি যখন কিশোরী ছিলাম, তখন ট্রেনে আমার ওপর হামলা হয়েছিল। সেই সময় আমি ভীষণ রেগে গিয়েছিলাম। এটা এখনো মনে আছে। আমি তখন বই পড়ছিলাম। হঠাৎ এই ছেলেটি বা বলা ভালো লোকটি আমার ওপর হামলা করে। আমি তার বিরুদ্ধে প্রতিরোধ করেছিলাম।’

রাজা তৃতীয় চার্লসের স্ত্রী জানান, যিনি তাঁর ওপর হামলা করেছিলেন, তাঁকে তিনি চিনতেন না।

৭৮ বছর বয়সী ক্যামিলা দীর্ঘদিন ধরে যৌন ও পারিবারিক সহিংসতা বন্ধে কাজ করা বিভিন্ন দাতব্য সংস্থা ও উদ্যোগের পৃষ্ঠপোষকতা করে আসছেন এবং ভুক্তভোগীদের সহায়তায় সক্রিয় ভূমিকা রাখছেন।

এই হামলার ঘটনা প্রথম প্রকাশ পায় গত সেপ্টেম্বরে, যখন রাজপরিবার নিয়ে লেখা একটি বই দ্য টাইমস পত্রিকায় ধারাবাহিকভাবে ছাপা হয়। তবে এর আগে বাকিংহাম প্যালেস থেকে বিষয়টি আনুষ্ঠানিকভাবে নিশ্চিত করা হয়নি।

বিবিসিকে ক্যামিলা বলেন, ‘আমি ট্রেন থেকে নামার পর আমার মা আমার দিকে তাকিয়ে বলেছিলেন, “তোমার চুল এমন এলোমেলো কেন? আর তোমার কোটের বোতাম কোথায়?’”

ক্যামিলা বলেন, ‘ঘটনাটি আমাকে ভীষণ ক্ষুব্ধ করেছিল। সেই অনুভূতি বহু বছর ধরে মনের ভেতর কোথাও রয়ে গেছে।’

ওই বইয়ে বলা হয়, ঘটনাটি ঘটে লন্ডনের প্যাডিংটন স্টেশনের দিকে যাওয়া একটি ট্রেনে। তখন ক্যামিলার বয়স ছিল প্রায় ১৬ বা ১৭ বছর। জুতা খুলে হামলাকারীর যৌনাঙ্গে আঘাত করেছিলেন তিনি।

বইটিতে বলা হয়, প্যাডিংটন স্টেশনে পৌঁছানোর পর তিনি এক কর্মকর্তাকে হামলাকারীকে দেখিয়ে দেন এবং পরে ওই ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করা হয়। তবে সাক্ষাৎকারে ক্যামিলা এসব বিস্তারিত তথ্য নিশ্চিত করেননি।

তথ্যসূত্র: রয়টার্স

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

নির্বাচনে প্রথম ধাপে ভোট পড়েছে ৫২ শতাংশ, দাবি মিয়ানমারের জান্তা সরকারের

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
গত রোববার মিয়ানমারে প্রথম ধাপের ভোট গ্রহণ শেষ হয়েছে। ছবি: রয়টার্সের সৌজন্যে
গত রোববার মিয়ানমারে প্রথম ধাপের ভোট গ্রহণ শেষ হয়েছে। ছবি: রয়টার্সের সৌজন্যে

মিয়ানমারে সাধারণ নির্বাচনের প্রথম ধাপে ৫২ দশমিক ১৩ শতাংশ ভোট পড়েছে বলে দাবি করেছে দেশটির ক্ষমতাসীন জান্তা সরকার। ২০২১ সালের সামরিক অভ্যুত্থানের পর এই প্রথম দেশটিতে তিন ধাপে বিতর্কিত নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। তবে আগের দুটি নির্বাচনের তুলনায় এবারের ভোটার উপস্থিতি কম।

জান্তা সরকারের মুখপাত্র জাও মিন তুন রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমকে জানান, ১০২টি টাউনশিপের প্রায় ৬০ লাখ মানুষ প্রথম ধাপে ভোট দিয়েছেন। তিনি এই উপস্থিতিকে ‘গর্বের বিষয়’ হিসেবে অভিহিত করেছেন।

বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতা দখলের প্রায় পাঁচ বছর পর তিন ধাপে নির্বাচনের আয়োজন করেছে জান্তা সরকার। গত রোববার (২৮ ডিসেম্বর) প্রথম ধাপের ভোট গ্রহণ শেষ হয়।

আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর তথ্যমতে, ২০১৫ ও ২০২০ সালের নির্বাচনে মিয়ানমারে প্রায় ৭০ শতাংশ ভোট পড়েছিল। এবার তা ৫২ শতাংশে নেমে আসায় নির্বাচনের গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। জাতিসংঘ, পশ্চিমের দেশগুলো এবং হিউম্যান রাইটস ওয়াচ এই নির্বাচনকে ‘প্রহসন’ বলে প্রত্যাখ্যান করেছে।

বিরোধী দলগুলোকে অংশ নিতে না দেওয়া এবং নির্বাচনের সমালোচনা করাকে বেআইনি ঘোষণা করায় আন্তর্জাতিক মহলে এই ভোট কোনো গ্রহণযোগ্যতা পায়নি।

তবে জান্তা মুখপাত্র জাও মিন তুন বলেন, ‘অনেক উন্নত গণতান্ত্রিক দেশেও ভোটার উপস্থিতি ৫০ শতাংশের বেশি হয় না। সেই তুলনায় আমাদের এই হার অত্যন্ত আশাব্যঞ্জক।’

নির্বাচনের গতিবিধি বিশ্লেষণে দেখা যাচ্ছে, অবসরপ্রাপ্ত জেনারেলদের নেতৃত্বাধীন ‘ইউনিয়ন সলিডারিটি অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট পার্টির’ (ইউএসডিপি) হাতেই এবার ক্ষমতা যাবে। কারণ, জনপ্রিয় বিরোধী দল ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্রেসিকে (এনএলডি) বিলুপ্ত ঘোষণা করা হয়েছে।

পরবর্তী রাউন্ডের ভোট গ্রহণ হবে আগামী ১১ জানুয়ারি এবং ২৫ জানুয়ারি। মোট ৩৩০টি শহরের মধ্যে ২৬৫টিতে ভোট হবে। যদিও এর অনেক অঞ্চলেই জান্তা সরকারের পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ নেই।

এদিকে ২০২০ সালের নির্বাচনে নিরঙ্কুশ জয়ী এনএলডি নেত্রী অং সান সু চি এখনো বন্দী অবস্থায় আছেন। তখন থেকেই মিয়ানমারের জান্তা সরকারের অধীনে ব্যাপক গৃহযুদ্ধ চলছে। বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলো অনেক গুরুত্বপূর্ণ সীমান্ত এলাকা দখল করে নিয়েছে।

এই অস্থিতিশীলতার মধ্যেই নির্বাচন আয়োজন করে আন্তর্জাতিক বৈধতা পাওয়ার চেষ্টা করছে সামরিক সরকার। তবে এশিয়ান নেটওয়ার্ক ফর ফ্রি ইলেকশনস জানিয়েছে, জান্তা সরকারের নির্বাচনী আইনে ভোটার উপস্থিতির কোনো ন্যূনতম সীমা নেই। এটি তাদের ভোটার উপস্থিতির যেকোনো হারকেই বৈধতা দেওয়ার সুযোগ করে দিয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ভারতে চলন্ত গাড়িতে ২ ঘণ্টা দলবদ্ধ ধর্ষণের পর ছুড়ে ফেলা হলো রাস্তায়

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ৩১ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৮: ০২
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

ভারতের হরিয়ানা রাজ্যের ফরিদাবাদ শহরে চলন্ত গাড়িতে ২৮ বছর বয়সী এক নারীকে তুলে নিয়ে দুই ঘণ্টার বেশি সময় ধরে দলবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে।

গত সোমবার রাতে এ ঘটনা ঘটে বলে জানিয়েছে দেশটির সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি।

সংবাদমাধ্যমটির প্রতিবেদনে বলা হয়, বিবাহিত ওই নারী রাতে বাড়ি যাওয়ার জন্য যানবাহনের অপেক্ষায় দাঁড়িয়ে ছিলেন। সে সময় একটি গাড়ি থামে এবং দুজন যুবক তাঁকে বাড়ি পৌঁছে দেওয়ার কথা বলে গাড়িতে তোলেন। কিন্তু গাড়িটি তাঁর গন্তব্যের বদলে গুড়গাঁও সড়কের দিকে যেতে শুরু করে।

অভিযোগ অনুযায়ী, ওই নারী দুই ঘণ্টা গাড়িটির ভেতরে আটকে ছিলেন এবং অভিযুক্ত ব্যক্তিরা ক্রমাগত তাঁকে ধর্ষণ করেন। বাধা দেওয়া সত্ত্বেও অভিযুক্ত ব্যক্তিরা থামেননি, উল্টো তাঁকে হুমকি দেন। এরপর এস জি এম নগরের রাজা চকের কাছে ওই নারীকে চলন্ত গাড়ি থেকে ফেলে দেওয়া হয়। এতে তাঁর মুখে গুরুতর আঘাত লাগে এবং প্রচুর রক্তক্ষরণ হয়।

এ সময় ভুক্তভোগী নারী বারবার তাঁর বোনকে ফোন করছিলেন। পরে তাঁর বোন যখন ফিরতি ফোন করেন, তখন তিনি পুরো বিষয়টি জানতে পারেন। খবর পেয়ে পরিবারের সদস্যরা দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে তাঁকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি করেন। তাঁর মুখে ১০ থেকে ১২টি সেলাই দিতে হয়েছে।

বর্তমানে ওই নারীর শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল থাকলেও ট্রমায় ভুগছেন। এ জন্য এখন পর্যন্ত তাঁর জবানবন্দি নেওয়া সম্ভব হয়নি।

ভুক্তভোগীর বোন অভিযোগে জানিয়েছেন, ঘটনার দিন রাত সাড়ে ৮টার দিকে তাঁর বোন তাঁকে ফোন করে বলেছিলেন, মায়ের সঙ্গে ঝগড়া হওয়ায় তিনি বন্ধুর বাড়ি যাচ্ছেন। তিন ঘণ্টার মধ্যে বাড়ি ফিরে আসবেন বলেও বোনকে জানিয়েছিলেন তিনি।

এনডিটিভির প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, ওই নারী বিবাহিত এবং তিন সন্তানের জননী। পারিবারিক কলহের কারণে তিনি স্বামী থেকে আলাদা থাকেন।

পুলিশ এরই মধ্যে অভিযুক্ত দুজনকে গ্রেপ্তার ও অপরাধে ব্যবহৃত গাড়িটি জব্দ করেছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

জার্মানিতে হলিউড স্টাইলে ডাকাতি, ব্যাংকের ভল্ট কেটে ৩ কোটি ইউরো লুট

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
ড্রিল দিয়ে ব্যাংকের ভল্ট ভেঙে ৩ কোটি ইউরো মূল্যের অর্থ ও মূল্যবান সামগ্রী নিয়ে গেছে ডাকাতেরা। ছবি: গেলসেনকির্শেন পুলিশ
ড্রিল দিয়ে ব্যাংকের ভল্ট ভেঙে ৩ কোটি ইউরো মূল্যের অর্থ ও মূল্যবান সামগ্রী নিয়ে গেছে ডাকাতেরা। ছবি: গেলসেনকির্শেন পুলিশ

হলিউডের বিখ্যাত সিনেমা-সিরিজে হরহামেশাই ব্যাংক ডাকাতির কাহিনি দেখা যায়। কিন্তু বাস্তবে তেমন হওয়াটা অসম্ভব মনে হলেও এমন সিনেমাটিক স্টাইলে ব্যাংক ডাকাতি হয়ে গেছে জার্মানির এক ব্যস্ত বাণিজ্যিক এলাকায়। ড্রিল দিয়ে ব্যাংকের ভল্ট ভেঙে ৩ কোটি ইউরো মূল্যের অর্থ ও মূল্যবান সামগ্রী নিয়ে গেছে ডাকাতেরা।

পশ্চিম জার্মানির গেলসেনকির্শেন শহরের স্পারকাসে সেভিংস ব্যাংকে এ ঘটনা ঘটেছে। বিবিসির প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, বড় ড্রিল ব্যবহার করে আনুমানিক ৩ কোটি ইউরো (৪৩১ কোটি ৭৬ লাখ টাকা) নগদ অর্থ ও মূল্যবান সামগ্রী লুট করেছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

এই ঘটনাকে ডাকাতির কাহিনিনির্ভর হলিউডের সিনেমা ‘ওশানস ইলেভেন’-এর সঙ্গে তুলনা করে এএফপি বার্তা সংস্থাকে এক পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, এটি অত্যন্ত পেশাদারভাবে করা হয়েছে। তিনি আরও জানান, এই ডাকাতির সময় অর্থ, স্বর্ণ ও গহনা রাখা ৩ হাজারেরও বেশি সেফ ডিপোজিট বক্স ভেঙে ফেলা হয়েছে।

গেলসেনকির্শেন পুলিশ জানায়, গত সোমবার ভোররাতে ফায়ার অ্যালার্ম সক্রিয় হলে তারা ঘটনার বিষয়ে জানতে পারে। তখন ক্রিসমাসের ছুটি চলছিল। আর এ সুযোগ কাজে লাগিয়ে বুয়ের জেলায় নিয়েনহোফস্ট্রাসে অবস্থিত ওই ভবনে ডাকাতি চালায়।

প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, তারা পাশের একটি পার্কিং গ্যারেজ ব্যবহার করে ব্যাংকে ঢোকে এবং সেখান দিয়েই পালিয়ে যায়।

তবে এ ঘটনায় এখনো পর্যন্ত কাউকে গ্রেপ্তার করা যায়নি।

প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাতে বিবিসি প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, গত শনিবার রাত থেকে গত রোববার ভোর পর্যন্ত ওই ভবনটির গ্যারেজের সিঁড়িঘরে কয়েকজন পুরুষকে বড় বড় ব্যাগ বহন করতে দেখা গেছে।

পুলিশ জানায়, ভিডিও ফুটেজে সোমবার ভোরে ডে-লা-শেভালারি-স্ট্রাসে অবস্থিত গ্যারেজ থেকে একটি কালো অডি আরএস ৬ গাড়িকে বেরিয়ে যেতে দেখা যায়। সোমবার ভোররাতে একটি ফায়ার-অ্যালার্ম বাজলে ভূগর্ভস্থ ভল্ট রুমে ঢোকার জন্য করা গর্তটি ধরা পড়ে। এরপর পুলিশ ও দমকল বাহিনী ভবনটিতে তল্লাশি চালায়।

চুরির ঘটনায় ব্যাংকের শাখাটি বন্ধ রাখা হয়েছে। গ্রাহকদের প্রায় ৯৫ শতাংশ সেফ ডিপোজিট বক্স খুলে ফেলা হয়েছে বলে জানিয়েছে ব্যাংকটি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত