বিবিসি

আপনি প্রতিদিন কতটা দ্রুত হাঁটেন—এই সাধারণ অভ্যাস জানাতে পারে আপনার মস্তিষ্ক কতটা দ্রুত বুড়িয়ে যাচ্ছে। গবেষণায় দেখা গেছে, যাঁরা ধীরে হাঁটেন, তাঁদের মস্তিষ্ক তুলনামূলকভাবে ছোট হয় এবং মস্তিষ্কের গুরুত্বপূর্ণ কাঠামোয় ভিন্নতা থাকে।
দৃশ্যত সাধারণ মনে হলেও আপনি যখন দোকানে যান, পার্কে হাঁটেন বা বাসস্টপেজে পৌঁছান, সেই হাঁটার গতি শরীর ও মনের ভেতরের অবস্থা জানাতে পারে। এমনকি আপনি কত বছর বাঁচবেন, হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার আশঙ্কা বা হৃদ্রোগে আক্রান্ত হওয়ার বিষয়টিও ভবিষ্যদ্বাণী করতে পারে আপনার হাঁটার গতি। এটি ব্যবহার করে জানা যেতে পারে, আপনার কগনিটিভ বা মানসিক ক্ষমতা কোন গতিতে কমছে।
এই হাঁটার গতি পরিমাপকে বলা হয় ‘ওয়াকিং স্পিড টেস্ট’। এটি নির্ধারণ করে, একজন ব্যক্তি দৈনন্দিন কাজকর্ম কতটা স্বচ্ছন্দে করতে পারছেন। এটি দুর্বলতা শনাক্তের পাশাপাশি স্ট্রোকের পর মস্তিষ্কের পুনর্বাসন কেমন হবে, সেটিও অনুমান করতে পারে।
বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে হাঁটার গতি ধীর হওয়া স্বাভাবিক হলেও যদি হঠাৎ এই গতি কমে যায়, তবে তা হতে পারে শরীরে বড় ধরনের কোনো সমস্যা বা দুর্বলতার ইঙ্গিত।
‘গতি কমে গেলে বুঝতে হবে, কিছু একটা ঘটছে’
হার্ভার্ড মেডিকেল স্কুলের মেডিসিন বিভাগের অধ্যাপক ক্রিস্টিনা ডিয়েলি-কনরাইট বলেন, ‘যখন কারও হাঁটার গতি কমে আসে, তখন প্রায়ই দেখা যায়, তা শরীরের ভেতরের কোনো দুর্বলতার সঙ্গে সম্পর্কিত।’
‘সম্ভবত সেই ব্যক্তি কোনো দীর্ঘমেয়াদি রোগে ভুগছেন, ফলে তাঁর চলাফেরা কমে গেছে বা তিনি স্থবির হয়ে পড়েছেন। এর ফলে পেশিশক্তি ও অস্থিসন্ধির সচলতা কমে যায়, যা পরে আরও স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি করে,’ বলেন কনরাইট।

সহজ এক পরীক্ষা
এই হাঁটার গতি মাপতে প্রয়োজন শুধু একটি স্টপওয়াচ ও দূরত্ব মাপার একটি সরঞ্জাম। বাইরে বেশি জায়গা থাকলে ১০ মিটার হাঁটার পরীক্ষাটি করা যায়। প্রথমে ৫ মিটার পথ মেপে নিন, এরপর আরেকটি ১০ মিটার। ৫ মিটার পথ হেঁটে গতি নির্ধারণ করুন, এরপর ১০ মিটার পথ স্বাভাবিক গতিতে হাঁটুন। সময় নিয়ে গতি হিসাব করুন—১০ মিটারকে সময় দিয়ে ভাগ করুন।
আপনি যদি বাসায় থাকেন এবং জায়গা সীমিত থাকলে ৪ মিটার হাঁটার পরীক্ষাও করা যায়। ১ মিটার বাড়তি পথ রেখে ৪ মিটার হাঁটার সময় নিন। এরপর ৪ মিটারকে সময় দিয়ে ভাগ করে গতি নির্ধারণ করুন।
আপনি কোন গোষ্ঠীতে পড়েন
গড় হাঁটার গতি সাধারণত বয়স ও লিঙ্গ অনুযায়ী ভিন্ন হয়—
৪০–৪৯ বছর: নারী–১.৩৯ মিটার/সেকেন্ড, পুরুষ–১.৪৩ মিটার/সেকেন্ড
৫০–৫৯ বছর: নারী–১.৩১ মিটার/সেকেন্ড, পুরুষ–১.৪৩ মিটার/সেকেন্ড
৬০–৬৯ বছর: নারী–১.২৪ মিটার/সেকেন্ড, পুরুষ–১.৪৩ মিটার/সেকেন্ড
৭০–৭৯ বছর: নারী–১.১৩ মিটার/সেকেন্ড, পুরুষ–১.২৬ মিটার/সেকেন্ড
৮০–৮৯ বছর: নারী–০.৯৪ মিটার/সেকেন্ড, পুরুষ–০.৯৭ মিটার/সেকেন্ড
আপনার ফোনে থাকা অ্যাপ, যেমন Walkmeter, MapMyWalk, Strava কিংবা Google Fit দিয়ে হাঁটার গতি নির্ধারণ করা যায়। এসব অ্যাপ জিপিএস ব্যবহার করে দূরত্ব ও সময় হিসাব করে গতি বের করে।
গবেষণায় দেখা গেছে, বয়সভিত্তিক হাঁটার গতি থেকে ভবিষ্যতের আয়ু অনুমান করা সম্ভব। যুক্তরাষ্ট্রের পিটসবার্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের এক গবেষণায় ৬৫ বছর বা তার বেশি বয়সী ৩৪ হাজার মানুষের তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, যাঁদের হাঁটার গতি সবচেয়ে কম, ৭৫ বছর বয়সে তাঁদের ১০ বছর বাঁচার সম্ভাবনা মাত্র ১৯ শতাংশ। অথচ যাঁরা দ্রুত হাঁটেন, তাঁদের ক্ষেত্রে এই সম্ভাবনা ৮৭ শতাংশ।
একটা ব্যাখ্যা হতে পারে, যাঁরা আগে থেকেই অসুস্থ, তাঁরা কম চলাফেরা করেন। কিন্তু ২০০৯ সালে ফ্রান্সের এক গবেষণায় দেখা গেছে, এমনকি সুস্থ ৬৫ বছর বা তার বেশি বয়সী মানুষের মধ্যেও যাঁদের গতি ধীর, তাঁদের হৃদ্রোগে মৃত্যুর ঝুঁকি ছিল তিন গুণ বেশি।

‘হাঁটা আসলে একসঙ্গে অনেক কিছু’
ডিউক বিশ্ববিদ্যালয়ের মনোবিজ্ঞান ও স্নায়ুবিজ্ঞান বিভাগের গবেষক লাইন রাসমুসেন বলেন, ‘হাঁটা যতটা সহজ মনে হয়, বাস্তবে তা নয়। এ ক্ষেত্রে হাড়-মাংসপেশি, চোখ, হৃদ্যন্ত্র, ফুসফুস ও মস্তিষ্ক—সবকিছুকে একসঙ্গে কাজ করতে হয়।’
তাঁর মতে, বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে শরীরের এসব কার্যকারিতা কমে যায়। তাই ধীরগতিতে হাঁটা বয়সজনিত সার্বিক অবক্ষয়ের ইঙ্গিত হতে পারে।
এমনকি শুধু প্রবীণদের ক্ষেত্রেই নয়, বরং মাঝবয়সীদের ক্ষেত্রেও এটি প্রযোজ্য। ২০১৯ সালের এক গবেষণায় দেখা গেছে, ৪৫ বছর বয়সেও হাঁটার গতি জানিয়ে দিতে পারে শরীর ও মস্তিষ্ক কতটা দ্রুত বার্ধক্যের দিকে এগোচ্ছে।
‘তিন বছর বয়সের মেধা জানিয়ে দেয় ৪৫ বছরে হাঁটার গতি’
নিউজিল্যান্ডের ডানিডিন শহরে ১৯৭২–৭৩ সালে জন্ম নেওয়া ১ হাজারের বেশি মানুষকে নিয়ে দীর্ঘমেয়াদি এক গবেষণা করা হয়। এই গবেষণায় ৯০৪ জনের মধ্যে দেখা গেছে, যাঁদের হাঁটার গতি ধীর, তাঁদের ফুসফুস, দাঁত ও রোগ প্রতিরোধব্যবস্থা তুলনামূলকভাবে দুর্বল। এমনকি উচ্চ রক্তচাপ, কোলেস্টেরল, কম কার্ডিও ফিটনেসের মতো বার্ধক্যের বলিরেখা বেশি দেখা গেছে। তাঁদের মুষ্টিশক্তিও দুর্বল ছিল এবং চেয়ার থেকে উঠতেও সমস্যা হচ্ছিল।
ব্রেইন স্ক্যানে দেখা গেছে, ধীরগতির হাঁটার সঙ্গে ছোট মস্তিষ্ক, পাতলা নিউকোর্টেক্স এবং অতিরিক্ত হোয়াইট ম্যাটার যুক্ত। এমনকি তাঁদের মুখাবয়বও অন্যদের তুলনায় বেশি বয়সী মনে হয়েছে।
গবেষকেরা আরও দেখেছেন, এই পার্থক্য অনেক আগে থেকেই ছিল। তিন বছর বয়সে বুদ্ধিমত্তা, ভাষা এবং শরীরের গতি নিয়ে করা পরীক্ষাগুলোর ফলাফল দিয়েই ৪৫ বছরে হাঁটার গতির পূর্বাভাস দেওয়া গিয়েছিল।
রাসমুসেন বলেন, ‘সবচেয়ে অবাক হয়েছি এই দেখে যে ৪৫ বছর বয়সে একজন কীভাবে হাঁটছেন, তা জানিয়ে দিচ্ছে তাঁর শৈশবের মানসিক সক্ষমতা!’
সমাধান হাতের নাগালে
তবে নিজেরা ধীরগতিতে হাঁটাহাঁটি করেন বলে যাঁদের মনে হয়, তাঁদের হতাশ হওয়ার কিছু নেই। হাঁটার গতি বাড়ানো সম্ভব। ক্যানসার রোগীদের নিয়ে গবেষণা করতে গিয়ে ডিয়েলি-কনরাইট দেখেছেন, হাঁটার সময় ও গতি প্রতি তিন-চার সপ্তাহ পর বাড়ালে ধীরে ধীরে তা উন্নত হয়।
তিনি বলেন, ‘যেকোনো সুযোগে হাঁটা দরকার। এটি স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।’ তাঁর পরামর্শ, গন্তব্যে যাওয়ার সময় গাড়ি কিছুটা দূরে পার্ক করুন, বন্ধুদের সঙ্গে হাঁটার পরিকল্পনা করুন কিংবা পোষা প্রাণী নিয়ে বের হন।
‘বিশেষ করে যাঁরা বসে কাজ করেন, তাঁদের হাঁটার বিরতি নেওয়া জরুরি। এমনকি বাথরুমে যাওয়ার জন্য হলেও পাঁচ মিনিট হাঁটুন বা আশপাশে ছোট একটি চক্কর দিন—তাতে উপকার মিলবেই,’ বলেন ডিয়েলি-কনরাইট।

আপনি প্রতিদিন কতটা দ্রুত হাঁটেন—এই সাধারণ অভ্যাস জানাতে পারে আপনার মস্তিষ্ক কতটা দ্রুত বুড়িয়ে যাচ্ছে। গবেষণায় দেখা গেছে, যাঁরা ধীরে হাঁটেন, তাঁদের মস্তিষ্ক তুলনামূলকভাবে ছোট হয় এবং মস্তিষ্কের গুরুত্বপূর্ণ কাঠামোয় ভিন্নতা থাকে।
দৃশ্যত সাধারণ মনে হলেও আপনি যখন দোকানে যান, পার্কে হাঁটেন বা বাসস্টপেজে পৌঁছান, সেই হাঁটার গতি শরীর ও মনের ভেতরের অবস্থা জানাতে পারে। এমনকি আপনি কত বছর বাঁচবেন, হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার আশঙ্কা বা হৃদ্রোগে আক্রান্ত হওয়ার বিষয়টিও ভবিষ্যদ্বাণী করতে পারে আপনার হাঁটার গতি। এটি ব্যবহার করে জানা যেতে পারে, আপনার কগনিটিভ বা মানসিক ক্ষমতা কোন গতিতে কমছে।
এই হাঁটার গতি পরিমাপকে বলা হয় ‘ওয়াকিং স্পিড টেস্ট’। এটি নির্ধারণ করে, একজন ব্যক্তি দৈনন্দিন কাজকর্ম কতটা স্বচ্ছন্দে করতে পারছেন। এটি দুর্বলতা শনাক্তের পাশাপাশি স্ট্রোকের পর মস্তিষ্কের পুনর্বাসন কেমন হবে, সেটিও অনুমান করতে পারে।
বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে হাঁটার গতি ধীর হওয়া স্বাভাবিক হলেও যদি হঠাৎ এই গতি কমে যায়, তবে তা হতে পারে শরীরে বড় ধরনের কোনো সমস্যা বা দুর্বলতার ইঙ্গিত।
‘গতি কমে গেলে বুঝতে হবে, কিছু একটা ঘটছে’
হার্ভার্ড মেডিকেল স্কুলের মেডিসিন বিভাগের অধ্যাপক ক্রিস্টিনা ডিয়েলি-কনরাইট বলেন, ‘যখন কারও হাঁটার গতি কমে আসে, তখন প্রায়ই দেখা যায়, তা শরীরের ভেতরের কোনো দুর্বলতার সঙ্গে সম্পর্কিত।’
‘সম্ভবত সেই ব্যক্তি কোনো দীর্ঘমেয়াদি রোগে ভুগছেন, ফলে তাঁর চলাফেরা কমে গেছে বা তিনি স্থবির হয়ে পড়েছেন। এর ফলে পেশিশক্তি ও অস্থিসন্ধির সচলতা কমে যায়, যা পরে আরও স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি করে,’ বলেন কনরাইট।

সহজ এক পরীক্ষা
এই হাঁটার গতি মাপতে প্রয়োজন শুধু একটি স্টপওয়াচ ও দূরত্ব মাপার একটি সরঞ্জাম। বাইরে বেশি জায়গা থাকলে ১০ মিটার হাঁটার পরীক্ষাটি করা যায়। প্রথমে ৫ মিটার পথ মেপে নিন, এরপর আরেকটি ১০ মিটার। ৫ মিটার পথ হেঁটে গতি নির্ধারণ করুন, এরপর ১০ মিটার পথ স্বাভাবিক গতিতে হাঁটুন। সময় নিয়ে গতি হিসাব করুন—১০ মিটারকে সময় দিয়ে ভাগ করুন।
আপনি যদি বাসায় থাকেন এবং জায়গা সীমিত থাকলে ৪ মিটার হাঁটার পরীক্ষাও করা যায়। ১ মিটার বাড়তি পথ রেখে ৪ মিটার হাঁটার সময় নিন। এরপর ৪ মিটারকে সময় দিয়ে ভাগ করে গতি নির্ধারণ করুন।
আপনি কোন গোষ্ঠীতে পড়েন
গড় হাঁটার গতি সাধারণত বয়স ও লিঙ্গ অনুযায়ী ভিন্ন হয়—
৪০–৪৯ বছর: নারী–১.৩৯ মিটার/সেকেন্ড, পুরুষ–১.৪৩ মিটার/সেকেন্ড
৫০–৫৯ বছর: নারী–১.৩১ মিটার/সেকেন্ড, পুরুষ–১.৪৩ মিটার/সেকেন্ড
৬০–৬৯ বছর: নারী–১.২৪ মিটার/সেকেন্ড, পুরুষ–১.৪৩ মিটার/সেকেন্ড
৭০–৭৯ বছর: নারী–১.১৩ মিটার/সেকেন্ড, পুরুষ–১.২৬ মিটার/সেকেন্ড
৮০–৮৯ বছর: নারী–০.৯৪ মিটার/সেকেন্ড, পুরুষ–০.৯৭ মিটার/সেকেন্ড
আপনার ফোনে থাকা অ্যাপ, যেমন Walkmeter, MapMyWalk, Strava কিংবা Google Fit দিয়ে হাঁটার গতি নির্ধারণ করা যায়। এসব অ্যাপ জিপিএস ব্যবহার করে দূরত্ব ও সময় হিসাব করে গতি বের করে।
গবেষণায় দেখা গেছে, বয়সভিত্তিক হাঁটার গতি থেকে ভবিষ্যতের আয়ু অনুমান করা সম্ভব। যুক্তরাষ্ট্রের পিটসবার্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের এক গবেষণায় ৬৫ বছর বা তার বেশি বয়সী ৩৪ হাজার মানুষের তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, যাঁদের হাঁটার গতি সবচেয়ে কম, ৭৫ বছর বয়সে তাঁদের ১০ বছর বাঁচার সম্ভাবনা মাত্র ১৯ শতাংশ। অথচ যাঁরা দ্রুত হাঁটেন, তাঁদের ক্ষেত্রে এই সম্ভাবনা ৮৭ শতাংশ।
একটা ব্যাখ্যা হতে পারে, যাঁরা আগে থেকেই অসুস্থ, তাঁরা কম চলাফেরা করেন। কিন্তু ২০০৯ সালে ফ্রান্সের এক গবেষণায় দেখা গেছে, এমনকি সুস্থ ৬৫ বছর বা তার বেশি বয়সী মানুষের মধ্যেও যাঁদের গতি ধীর, তাঁদের হৃদ্রোগে মৃত্যুর ঝুঁকি ছিল তিন গুণ বেশি।

‘হাঁটা আসলে একসঙ্গে অনেক কিছু’
ডিউক বিশ্ববিদ্যালয়ের মনোবিজ্ঞান ও স্নায়ুবিজ্ঞান বিভাগের গবেষক লাইন রাসমুসেন বলেন, ‘হাঁটা যতটা সহজ মনে হয়, বাস্তবে তা নয়। এ ক্ষেত্রে হাড়-মাংসপেশি, চোখ, হৃদ্যন্ত্র, ফুসফুস ও মস্তিষ্ক—সবকিছুকে একসঙ্গে কাজ করতে হয়।’
তাঁর মতে, বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে শরীরের এসব কার্যকারিতা কমে যায়। তাই ধীরগতিতে হাঁটা বয়সজনিত সার্বিক অবক্ষয়ের ইঙ্গিত হতে পারে।
এমনকি শুধু প্রবীণদের ক্ষেত্রেই নয়, বরং মাঝবয়সীদের ক্ষেত্রেও এটি প্রযোজ্য। ২০১৯ সালের এক গবেষণায় দেখা গেছে, ৪৫ বছর বয়সেও হাঁটার গতি জানিয়ে দিতে পারে শরীর ও মস্তিষ্ক কতটা দ্রুত বার্ধক্যের দিকে এগোচ্ছে।
‘তিন বছর বয়সের মেধা জানিয়ে দেয় ৪৫ বছরে হাঁটার গতি’
নিউজিল্যান্ডের ডানিডিন শহরে ১৯৭২–৭৩ সালে জন্ম নেওয়া ১ হাজারের বেশি মানুষকে নিয়ে দীর্ঘমেয়াদি এক গবেষণা করা হয়। এই গবেষণায় ৯০৪ জনের মধ্যে দেখা গেছে, যাঁদের হাঁটার গতি ধীর, তাঁদের ফুসফুস, দাঁত ও রোগ প্রতিরোধব্যবস্থা তুলনামূলকভাবে দুর্বল। এমনকি উচ্চ রক্তচাপ, কোলেস্টেরল, কম কার্ডিও ফিটনেসের মতো বার্ধক্যের বলিরেখা বেশি দেখা গেছে। তাঁদের মুষ্টিশক্তিও দুর্বল ছিল এবং চেয়ার থেকে উঠতেও সমস্যা হচ্ছিল।
ব্রেইন স্ক্যানে দেখা গেছে, ধীরগতির হাঁটার সঙ্গে ছোট মস্তিষ্ক, পাতলা নিউকোর্টেক্স এবং অতিরিক্ত হোয়াইট ম্যাটার যুক্ত। এমনকি তাঁদের মুখাবয়বও অন্যদের তুলনায় বেশি বয়সী মনে হয়েছে।
গবেষকেরা আরও দেখেছেন, এই পার্থক্য অনেক আগে থেকেই ছিল। তিন বছর বয়সে বুদ্ধিমত্তা, ভাষা এবং শরীরের গতি নিয়ে করা পরীক্ষাগুলোর ফলাফল দিয়েই ৪৫ বছরে হাঁটার গতির পূর্বাভাস দেওয়া গিয়েছিল।
রাসমুসেন বলেন, ‘সবচেয়ে অবাক হয়েছি এই দেখে যে ৪৫ বছর বয়সে একজন কীভাবে হাঁটছেন, তা জানিয়ে দিচ্ছে তাঁর শৈশবের মানসিক সক্ষমতা!’
সমাধান হাতের নাগালে
তবে নিজেরা ধীরগতিতে হাঁটাহাঁটি করেন বলে যাঁদের মনে হয়, তাঁদের হতাশ হওয়ার কিছু নেই। হাঁটার গতি বাড়ানো সম্ভব। ক্যানসার রোগীদের নিয়ে গবেষণা করতে গিয়ে ডিয়েলি-কনরাইট দেখেছেন, হাঁটার সময় ও গতি প্রতি তিন-চার সপ্তাহ পর বাড়ালে ধীরে ধীরে তা উন্নত হয়।
তিনি বলেন, ‘যেকোনো সুযোগে হাঁটা দরকার। এটি স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।’ তাঁর পরামর্শ, গন্তব্যে যাওয়ার সময় গাড়ি কিছুটা দূরে পার্ক করুন, বন্ধুদের সঙ্গে হাঁটার পরিকল্পনা করুন কিংবা পোষা প্রাণী নিয়ে বের হন।
‘বিশেষ করে যাঁরা বসে কাজ করেন, তাঁদের হাঁটার বিরতি নেওয়া জরুরি। এমনকি বাথরুমে যাওয়ার জন্য হলেও পাঁচ মিনিট হাঁটুন বা আশপাশে ছোট একটি চক্কর দিন—তাতে উপকার মিলবেই,’ বলেন ডিয়েলি-কনরাইট।

জীবনে রঙের অস্তিত্ব না থাকলে কেমন হতো? নির্জীব, একঘেয়ে কেমন যেন নিরানন্দ কিংবা নেই কোনো উৎসাহ-উদ্দীপনা। রঙিন কিছু দেখলেই আমাদের মন যেন উৎফুল্ল হয়ে ওঠে, খাবারের বেলায়ও এটি একই রকম সত্য।
৩ দিন আগে
ওজন কমানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া যেমন কঠিন, সেই সিদ্ধান্তে দীর্ঘদিন অটল থাকা অনেকের ক্ষেত্রে আরও কঠিন। সঠিক অনুপ্রেরণা না থাকলে ওজন কমানো শুরু করাই কঠিন হয়ে পড়ে। আর শুরু করলেও মাঝপথে থেমে যাওয়ার ঝুঁকি থাকে। তবে কিছু বাস্তবসম্মত কৌশল অনুসরণ করলে ওজন কমানোর লক্ষ্য অর্জন সহজ হতে পারে।
৪ দিন আগে
থাইরয়েড হরমোন আমাদের গলার সামনে থাইরয়েড গ্রন্থি থেকে নিঃসৃত একধরনের হরমোন কিংবা প্রাণরস। এটি গলার সামনে থেকে নিঃসৃত হলেও সারা শরীরে ছড়িয়ে পড়ে এবং পুরো শরীরে কাজ করে।
৪ দিন আগে
সুষম খাবারের ৬টি উপাদানের অন্যতম ভিটামিন ও খনিজ লবণ। এগুলো আমাদের শরীরের চালিকাশক্তির অন্যতম উপাদান হিসেবে বিবেচিত। শরীরের একেকটি অঙ্গের সুরক্ষায় একেক ধরনের ভিটামিন প্রয়োজন হয়। যেমন চুল ও চোখের সুরক্ষায় ভিটামিন ‘এ’, ত্বকের সুরক্ষায় ভিটামিন ‘বি’ ও ‘সি’, হাড় ও দাঁতের সুরক্ষায় ভিটামিন ‘ডি’ প্রয়োজন হয়।
৪ দিন আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

জীবনে রঙের অস্তিত্ব না থাকলে কেমন হতো? নির্জীব, একঘেয়ে কেমন যেন নিরানন্দ কিংবা নেই কোনো উৎসাহ-উদ্দীপনা। রঙিন কিছু দেখলেই আমাদের মন যেন উৎফুল্ল হয়ে ওঠে, খাবারের বেলায়ও এটি একই রকম সত্য।
রঙিন খাবারে সাজানো প্লেট দেখতে আমাদের মন এমনিতেই খাবারের দিকে আকৃষ্ট হয়ে পড়ে। খাবার দেখার ও ঘ্রাণ পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই আমাদের মস্তিষ্ক হজমের প্রস্তুতির জন্য নানা সংকেত পাঠাতে শুরু করে।
তবে দেখতে সুন্দর তা ই নয়, রঙিন খাবারের প্লেট আসলে পুষ্টির ‘পাওয়ার হাউস’ বা এক শক্তিশালী ভাণ্ডার। ফলমূল ও শাকসবজিতে রঙের অস্তিত্ব জানান দেয় এসবে আছে উদ্ভিজ্জ রঞ্জক বা পিগমেন্ট— যার সংখ্যা ২ হাজারেরও বেশি। এর মধ্যে রয়েছে ফ্ল্যাভোনয়েড, ক্যারোটিনয়েড ও অ্যান্থোসায়ানিন। এসব রঞ্জক ‘ফাইটোনিউট্রিয়েন্ট’ নামে পরিচিত।
আমাদের শরীর নিজে থেকে এসব ফাইটোনিউট্রিয়েন্ট তৈরি করতে পারে না, অথচ নানা রোগ, প্রদাহ, সংক্রমণ এমনকি কিছু ধরনের ক্যানসার থেকে সুরক্ষা দিতে এগুলোর ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
খাবারের প্রতিটি রং আমাদের শরীরের জন্য কি কি উপকার নিয়ে আসে চলুন জেনে নেওয়া যাক—
১. লাল রঙের খাবার: লাইকোপিনে ভরপুর
লাল রঙের ফল ও সবজিতে থাকে লাইকোপিন নামের এক শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। এটি প্রকৃতিতে পাওয়া সবচেয়ে কার্যকর অ্যান্টিঅক্সিডেন্টগুলোর একটি।

যে কারণে লাল রঙের খাবার বেশি খাওয়া উচিত
অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সুপারস্টার: শরীর থেকে ক্ষতিকর পদার্থ বা টক্সিন বের করতে সাহায্য করে, সংক্রমণের বিরুদ্ধে লড়াই করে এবং কোষকে অক্সিডেটিভ স্ট্রেস থেকে রক্ষা করে।
চোখের সুরক্ষা: এক গবেষণায় দেখা গেছে, লাইকোপিন চোখের ম্যাকুলা অংশের ক্ষয় ধীর করতে সাহায্য করে।
ক্যানসারের ঝুঁকি কমাতে সহায়ক: প্রোস্টেট ক্যানসারের ঝুঁকি কমাতে কাজ করে লাইকোপিন। এছাড়াও স্তন ক্যানসারের অগ্রগতিও ধীর করতে পারে।
মস্তিষ্কের স্বাস্থ্য: অক্সিডেটিভ স্ট্রেস থেকে মস্তিষ্কের কোষকে সুরক্ষা দেয়।
হৃদ্স্বাস্থ্য: রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে এবং প্রদাহ কমায়, যা হৃদ্রোগের বড় ঝুঁকির কারণ।
লাল রঙের খাবারের সেরা উৎস: টমেটো (রান্না করা বা ব্লেন্ড করা টমেটো সবচেয়ে বেশি কার্যকর), তরমুজ, লাল পেয়ারা, জাম্বুরা এবং লাল গাজর।

২. কমলা ও হলুদ রঙের খাবার: ত্বক, চোখ ও রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতার বুস্টার
এই উজ্জ্বল রংগুলোর উৎস বিটা-ক্রিপ্টোজ্যানথিন নামের একটি গুরুত্বপূর্ণ যৌগ, যা কোষের পারস্পরিক যোগাযোগ ও রোগপ্রতিরোধ ব্যবস্থাকে সহায়তা করে।
উপকারিতা:
শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট: বয়স দ্রুত বাড়ানো, প্রদাহ ও দীর্ঘমেয়াদি রোগের জন্য দায়ী ফ্রি র্যাডিক্যালকে নিষ্ক্রিয় করে।
প্রো-ভিটামিন এ: শরীরে সহজে ভিটামিন এ-তে রূপান্তরিত হয়, যা চোখের দৃষ্টি ও সুস্থ ত্বকের জন্য অপরিহার্য।
রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি: ইমিউন কোষের গঠন ও কার্যকারিতা উন্নত করে। বিশেষ করে নিরামিষ খাদ্যাভ্যাসে, যেখানে ভিটামিন এ গ্রহণ তুলনামূলক কম হতে পারে, সেখানে এটি খুবই উপকারী।
সেরা উৎস: আম, পেঁপে, কমলা, কুমড়া, হলুদ ক্যাপসিকাম।

৩. সবুজ রঙের খাবার: ক্লোরোফিল ও ডিটক্সের জাদু
সবুজ খাবারের রং আসে ক্লোরোফিল থেকে। প্রকৃতিতে পাওয়া সবচেয়ে পুষ্টিসমৃদ্ধ খাবারের তালিকায় সবুজ শাকসবজি শীর্ষে।
কেন সবুজ খাবার জরুরি?
বিটা-ক্যারোটিন: ধমনিতে চর্বি জমা (অ্যাথেরোস্ক্লেরোসিস), ক্যানসার, দৃষ্টিশক্তি হ্রাস ও ডিএনএ ক্ষতি প্রতিরোধে সহায়ক।
উচ্চ আঁশ (ফাইবার) : অন্ত্রের স্বাস্থ্য ভালো রাখে, ক্ষতিকর এলডিএল কোলেস্টেরল কমায় এবং ওজন নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে।
ভিটামিন কে ও পটাশিয়াম: রক্ত জমাট বাঁধা ও রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে অত্যন্ত প্রয়োজনীয়।
সালফোরাফেন ও আইসোথায়োসায়ানেটস: শরীরের ডিটক্স প্রক্রিয়াকে সহায়তা করে, কোলনের স্বাস্থ্য রক্ষা করে এবং ক্যানসারের ঝুঁকি কমাতে ভূমিকা রাখতে পারে।
সেরা উৎস: পালং শাক, ব্রকলি, কেল, সজনে পাতা, মেথি শাক, সবুজ হার্বস, অ্যাসপ্যারাগাস, কিউই, বাঁধাকপি, অঙ্কুরিত বীজ (স্প্রাউটস) ও গ্রিন টি।
৪. নীল ও বেগুনি রঙের খাবার: অ্যান্থোসায়ানিনের শক্তি
অ্যান্থোসায়ানিন আছে এমন খাবারে এই রংগুলো থাকে। যা থেকে বুঝা যায় এ খাবারগুলো শক্তিশালী ফ্ল্যাভোনয়েড এবং প্রদাহনাশক ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট গুণে ভরপুর।
উপকারিতা:
রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ: স্ট্রোক ও কিডনি রোগের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে।
হৃদ্স্বাস্থ্য: কোলেস্টেরল ও প্রদাহ কমায়, ধমনিতে প্লাক জমা রোধে সহায়ক।
মস্তিষ্কের সুরক্ষা: স্মৃতিশক্তি ও বুদ্ধিবৃত্তিক কার্যকারিতা উন্নত করে, ডিএনএ ক্ষতি প্রতিরোধে ভূমিকা রাখে।
ক্যানসারের বিরুদ্ধে প্রতিরক্ষা: ক্যানসার কোষের বৃদ্ধি ধীর বা বন্ধ করতে সহায়তা করতে পারে।
সেরা উৎস: ব্লুবেরি, ব্ল্যাকবেরি, বেগুনি বাঁধাকপি, বেগুন, আঙুর, বরই, ডুমুর।

৫. সাদা ও বাদামি খাবার: নীরব চিকিৎসক
লাল-নীল-সবুজ এমন রঙিন খাবারের ভিড়ে কিন্তু ফ্যাকাশে বা বাদামি রঙের খাবারকে হালকাভাবে নেওয়া যাবে না। কেন না এসব খাবারে রয়েছে অ্যালিসিন, কোয়ারসেটিন, ক্যাম্পফেরল মতো যৌগ। এগুলোর প্রতিটিই স্বাস্থ্য রক্ষায় বিশেষ ভূমিকা রাখে।
উপকারিতা:
অ্যালিসিন: এই উপাদানটি রসুনে থাকে। এটি ব্যাকটেরিয়া ও ফাঙ্গাসের বিরুদ্ধে কার্যকর, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, কোলেস্টেরল ও রক্তচাপ কমাতে সাহায্য করে।
কোয়ারসেটিন: শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও প্রদাহনাশক, অ্যালার্জি এবং হৃদ্স্বাস্থ্য রক্ষায় সহায়ক।
ক্যাম্পফেরল: হৃদ্রোগ ও কিছু ধরনের ক্যানসার থেকে সুরক্ষা দেয়।
সেরা উৎস: রসুন, পেঁয়াজ, ফুলকপি, মাশরুম ও মুলা।
আপনার প্রতিদিনের ‘রেইনবো ডায়েট’ সাজাতে পারেন যেভাবে—
১. আপনার প্লেটের অর্ধেক পূর্ণ করুন সবজি দিয়ে।
২. প্রতিদিন দুটি ফল খান।
৩. সর্বোচ্চ তাজা ও পুষ্টির জন্য মৌসুমি এবং স্থানীয় ফল ও সবজি বেছে নিন।
৪. প্রতিদিন একটি নতুন রঙের খাবার যোগ করুন।
৫. খাবার পরিকল্পনার সময় ক্যালরির পরিবর্তে রঙের দিকে মন দিন।
বিজ্ঞান বারবার প্রমাণ করেছে, যখন ফাইটোনিউট্রিয়েন্টের কথা আসে, তখন সাপ্লিমেন্ট বা কৃত্রিম ওষুধের চেয়ে প্রাকৃতিক খাবার অনেক বেশি কার্যকর। প্রাকৃতিক খাবারে বিদ্যমান ভিটামিন, খনিজ, ফাইবার এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের যে সম্মিলিত শক্তি থাকে, কোনো ওষুধ বা পিল তা দিয়ে পূরণ হয় না। তাই প্রতিদিনের পুষ্টির লক্ষ্য নির্ধারণে রঙকেই বেছে নিন।

জীবনে রঙের অস্তিত্ব না থাকলে কেমন হতো? নির্জীব, একঘেয়ে কেমন যেন নিরানন্দ কিংবা নেই কোনো উৎসাহ-উদ্দীপনা। রঙিন কিছু দেখলেই আমাদের মন যেন উৎফুল্ল হয়ে ওঠে, খাবারের বেলায়ও এটি একই রকম সত্য।
রঙিন খাবারে সাজানো প্লেট দেখতে আমাদের মন এমনিতেই খাবারের দিকে আকৃষ্ট হয়ে পড়ে। খাবার দেখার ও ঘ্রাণ পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই আমাদের মস্তিষ্ক হজমের প্রস্তুতির জন্য নানা সংকেত পাঠাতে শুরু করে।
তবে দেখতে সুন্দর তা ই নয়, রঙিন খাবারের প্লেট আসলে পুষ্টির ‘পাওয়ার হাউস’ বা এক শক্তিশালী ভাণ্ডার। ফলমূল ও শাকসবজিতে রঙের অস্তিত্ব জানান দেয় এসবে আছে উদ্ভিজ্জ রঞ্জক বা পিগমেন্ট— যার সংখ্যা ২ হাজারেরও বেশি। এর মধ্যে রয়েছে ফ্ল্যাভোনয়েড, ক্যারোটিনয়েড ও অ্যান্থোসায়ানিন। এসব রঞ্জক ‘ফাইটোনিউট্রিয়েন্ট’ নামে পরিচিত।
আমাদের শরীর নিজে থেকে এসব ফাইটোনিউট্রিয়েন্ট তৈরি করতে পারে না, অথচ নানা রোগ, প্রদাহ, সংক্রমণ এমনকি কিছু ধরনের ক্যানসার থেকে সুরক্ষা দিতে এগুলোর ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
খাবারের প্রতিটি রং আমাদের শরীরের জন্য কি কি উপকার নিয়ে আসে চলুন জেনে নেওয়া যাক—
১. লাল রঙের খাবার: লাইকোপিনে ভরপুর
লাল রঙের ফল ও সবজিতে থাকে লাইকোপিন নামের এক শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। এটি প্রকৃতিতে পাওয়া সবচেয়ে কার্যকর অ্যান্টিঅক্সিডেন্টগুলোর একটি।

যে কারণে লাল রঙের খাবার বেশি খাওয়া উচিত
অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সুপারস্টার: শরীর থেকে ক্ষতিকর পদার্থ বা টক্সিন বের করতে সাহায্য করে, সংক্রমণের বিরুদ্ধে লড়াই করে এবং কোষকে অক্সিডেটিভ স্ট্রেস থেকে রক্ষা করে।
চোখের সুরক্ষা: এক গবেষণায় দেখা গেছে, লাইকোপিন চোখের ম্যাকুলা অংশের ক্ষয় ধীর করতে সাহায্য করে।
ক্যানসারের ঝুঁকি কমাতে সহায়ক: প্রোস্টেট ক্যানসারের ঝুঁকি কমাতে কাজ করে লাইকোপিন। এছাড়াও স্তন ক্যানসারের অগ্রগতিও ধীর করতে পারে।
মস্তিষ্কের স্বাস্থ্য: অক্সিডেটিভ স্ট্রেস থেকে মস্তিষ্কের কোষকে সুরক্ষা দেয়।
হৃদ্স্বাস্থ্য: রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে এবং প্রদাহ কমায়, যা হৃদ্রোগের বড় ঝুঁকির কারণ।
লাল রঙের খাবারের সেরা উৎস: টমেটো (রান্না করা বা ব্লেন্ড করা টমেটো সবচেয়ে বেশি কার্যকর), তরমুজ, লাল পেয়ারা, জাম্বুরা এবং লাল গাজর।

২. কমলা ও হলুদ রঙের খাবার: ত্বক, চোখ ও রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতার বুস্টার
এই উজ্জ্বল রংগুলোর উৎস বিটা-ক্রিপ্টোজ্যানথিন নামের একটি গুরুত্বপূর্ণ যৌগ, যা কোষের পারস্পরিক যোগাযোগ ও রোগপ্রতিরোধ ব্যবস্থাকে সহায়তা করে।
উপকারিতা:
শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট: বয়স দ্রুত বাড়ানো, প্রদাহ ও দীর্ঘমেয়াদি রোগের জন্য দায়ী ফ্রি র্যাডিক্যালকে নিষ্ক্রিয় করে।
প্রো-ভিটামিন এ: শরীরে সহজে ভিটামিন এ-তে রূপান্তরিত হয়, যা চোখের দৃষ্টি ও সুস্থ ত্বকের জন্য অপরিহার্য।
রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি: ইমিউন কোষের গঠন ও কার্যকারিতা উন্নত করে। বিশেষ করে নিরামিষ খাদ্যাভ্যাসে, যেখানে ভিটামিন এ গ্রহণ তুলনামূলক কম হতে পারে, সেখানে এটি খুবই উপকারী।
সেরা উৎস: আম, পেঁপে, কমলা, কুমড়া, হলুদ ক্যাপসিকাম।

৩. সবুজ রঙের খাবার: ক্লোরোফিল ও ডিটক্সের জাদু
সবুজ খাবারের রং আসে ক্লোরোফিল থেকে। প্রকৃতিতে পাওয়া সবচেয়ে পুষ্টিসমৃদ্ধ খাবারের তালিকায় সবুজ শাকসবজি শীর্ষে।
কেন সবুজ খাবার জরুরি?
বিটা-ক্যারোটিন: ধমনিতে চর্বি জমা (অ্যাথেরোস্ক্লেরোসিস), ক্যানসার, দৃষ্টিশক্তি হ্রাস ও ডিএনএ ক্ষতি প্রতিরোধে সহায়ক।
উচ্চ আঁশ (ফাইবার) : অন্ত্রের স্বাস্থ্য ভালো রাখে, ক্ষতিকর এলডিএল কোলেস্টেরল কমায় এবং ওজন নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে।
ভিটামিন কে ও পটাশিয়াম: রক্ত জমাট বাঁধা ও রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে অত্যন্ত প্রয়োজনীয়।
সালফোরাফেন ও আইসোথায়োসায়ানেটস: শরীরের ডিটক্স প্রক্রিয়াকে সহায়তা করে, কোলনের স্বাস্থ্য রক্ষা করে এবং ক্যানসারের ঝুঁকি কমাতে ভূমিকা রাখতে পারে।
সেরা উৎস: পালং শাক, ব্রকলি, কেল, সজনে পাতা, মেথি শাক, সবুজ হার্বস, অ্যাসপ্যারাগাস, কিউই, বাঁধাকপি, অঙ্কুরিত বীজ (স্প্রাউটস) ও গ্রিন টি।
৪. নীল ও বেগুনি রঙের খাবার: অ্যান্থোসায়ানিনের শক্তি
অ্যান্থোসায়ানিন আছে এমন খাবারে এই রংগুলো থাকে। যা থেকে বুঝা যায় এ খাবারগুলো শক্তিশালী ফ্ল্যাভোনয়েড এবং প্রদাহনাশক ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট গুণে ভরপুর।
উপকারিতা:
রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ: স্ট্রোক ও কিডনি রোগের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে।
হৃদ্স্বাস্থ্য: কোলেস্টেরল ও প্রদাহ কমায়, ধমনিতে প্লাক জমা রোধে সহায়ক।
মস্তিষ্কের সুরক্ষা: স্মৃতিশক্তি ও বুদ্ধিবৃত্তিক কার্যকারিতা উন্নত করে, ডিএনএ ক্ষতি প্রতিরোধে ভূমিকা রাখে।
ক্যানসারের বিরুদ্ধে প্রতিরক্ষা: ক্যানসার কোষের বৃদ্ধি ধীর বা বন্ধ করতে সহায়তা করতে পারে।
সেরা উৎস: ব্লুবেরি, ব্ল্যাকবেরি, বেগুনি বাঁধাকপি, বেগুন, আঙুর, বরই, ডুমুর।

৫. সাদা ও বাদামি খাবার: নীরব চিকিৎসক
লাল-নীল-সবুজ এমন রঙিন খাবারের ভিড়ে কিন্তু ফ্যাকাশে বা বাদামি রঙের খাবারকে হালকাভাবে নেওয়া যাবে না। কেন না এসব খাবারে রয়েছে অ্যালিসিন, কোয়ারসেটিন, ক্যাম্পফেরল মতো যৌগ। এগুলোর প্রতিটিই স্বাস্থ্য রক্ষায় বিশেষ ভূমিকা রাখে।
উপকারিতা:
অ্যালিসিন: এই উপাদানটি রসুনে থাকে। এটি ব্যাকটেরিয়া ও ফাঙ্গাসের বিরুদ্ধে কার্যকর, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, কোলেস্টেরল ও রক্তচাপ কমাতে সাহায্য করে।
কোয়ারসেটিন: শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও প্রদাহনাশক, অ্যালার্জি এবং হৃদ্স্বাস্থ্য রক্ষায় সহায়ক।
ক্যাম্পফেরল: হৃদ্রোগ ও কিছু ধরনের ক্যানসার থেকে সুরক্ষা দেয়।
সেরা উৎস: রসুন, পেঁয়াজ, ফুলকপি, মাশরুম ও মুলা।
আপনার প্রতিদিনের ‘রেইনবো ডায়েট’ সাজাতে পারেন যেভাবে—
১. আপনার প্লেটের অর্ধেক পূর্ণ করুন সবজি দিয়ে।
২. প্রতিদিন দুটি ফল খান।
৩. সর্বোচ্চ তাজা ও পুষ্টির জন্য মৌসুমি এবং স্থানীয় ফল ও সবজি বেছে নিন।
৪. প্রতিদিন একটি নতুন রঙের খাবার যোগ করুন।
৫. খাবার পরিকল্পনার সময় ক্যালরির পরিবর্তে রঙের দিকে মন দিন।
বিজ্ঞান বারবার প্রমাণ করেছে, যখন ফাইটোনিউট্রিয়েন্টের কথা আসে, তখন সাপ্লিমেন্ট বা কৃত্রিম ওষুধের চেয়ে প্রাকৃতিক খাবার অনেক বেশি কার্যকর। প্রাকৃতিক খাবারে বিদ্যমান ভিটামিন, খনিজ, ফাইবার এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের যে সম্মিলিত শক্তি থাকে, কোনো ওষুধ বা পিল তা দিয়ে পূরণ হয় না। তাই প্রতিদিনের পুষ্টির লক্ষ্য নির্ধারণে রঙকেই বেছে নিন।

আপনার হাঁটার গতি শুধু শরীরচর্চার একটি সূচক নয়, বরং এটি মস্তিষ্কের স্বাস্থ্য, বার্ধক্যের গতি এবং ভবিষ্যতের আয়ুর সঙ্গে সরাসরি সম্পর্কযুক্ত। গবেষণায় দেখা গেছে, যারা ধীরে হাঁটে, তাদের মস্তিষ্ক তুলনামূলকভাবে ছোট এবং গুরুত্বপূর্ণ কাঠামোয় ভিন্নতা থাকে। হাঁটার গতি দিয়ে ভবিষ্যতে শারীরিক দুর্বলতা, হৃদ্রোগ
১১ জুন ২০২৫
ওজন কমানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া যেমন কঠিন, সেই সিদ্ধান্তে দীর্ঘদিন অটল থাকা অনেকের ক্ষেত্রে আরও কঠিন। সঠিক অনুপ্রেরণা না থাকলে ওজন কমানো শুরু করাই কঠিন হয়ে পড়ে। আর শুরু করলেও মাঝপথে থেমে যাওয়ার ঝুঁকি থাকে। তবে কিছু বাস্তবসম্মত কৌশল অনুসরণ করলে ওজন কমানোর লক্ষ্য অর্জন সহজ হতে পারে।
৪ দিন আগে
থাইরয়েড হরমোন আমাদের গলার সামনে থাইরয়েড গ্রন্থি থেকে নিঃসৃত একধরনের হরমোন কিংবা প্রাণরস। এটি গলার সামনে থেকে নিঃসৃত হলেও সারা শরীরে ছড়িয়ে পড়ে এবং পুরো শরীরে কাজ করে।
৪ দিন আগে
সুষম খাবারের ৬টি উপাদানের অন্যতম ভিটামিন ও খনিজ লবণ। এগুলো আমাদের শরীরের চালিকাশক্তির অন্যতম উপাদান হিসেবে বিবেচিত। শরীরের একেকটি অঙ্গের সুরক্ষায় একেক ধরনের ভিটামিন প্রয়োজন হয়। যেমন চুল ও চোখের সুরক্ষায় ভিটামিন ‘এ’, ত্বকের সুরক্ষায় ভিটামিন ‘বি’ ও ‘সি’, হাড় ও দাঁতের সুরক্ষায় ভিটামিন ‘ডি’ প্রয়োজন হয়।
৪ দিন আগেফিচার ডেস্ক

ওজন কমানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া যেমন কঠিন, সেই সিদ্ধান্তে দীর্ঘদিন অটল থাকা অনেকের ক্ষেত্রে আরও কঠিন। সঠিক অনুপ্রেরণা না থাকলে ওজন কমানো শুরু করাই কঠিন হয়ে পড়ে। আর শুরু করলেও মাঝপথে থেমে যাওয়ার ঝুঁকি থাকে। তবে কিছু বাস্তবসম্মত কৌশল অনুসরণ করলে ওজন কমানোর লক্ষ্য অর্জন সহজ হতে পারে।
নিজেকে দেওয়া প্রতিশ্রুতি না ভাঙা
ওজন কমানোর ক্ষেত্রে নিজের সঙ্গে বোঝাপড়া বেশ ভূমিকা রাখতে পারে। কেউ কেউ লিখিত পরিকল্পনা বা অ্যাপের মাধ্যমে প্রতিদিনের লক্ষ্য ঠিক করেন। আবার কেউ জিমের সদস্যপদ বা ব্যায়াম ক্লাসে ভর্তি হয়ে নিজেকে দায়বদ্ধ করে তোলেন। এতে মাঝপথে হাল ছেড়ে দেওয়ার প্রবণতা কমে।
জীবনযাপনের সঙ্গে মানানসই পরিকল্পনা বেছে নেওয়া
যে ডায়েট বা ব্যায়াম পরিকল্পনা দীর্ঘদিন মেনে চলা সম্ভব নয়, তা এড়িয়ে চলা ভালো। অতিরিক্ত কঠোর নিয়ম অথবা সবকিছু একেবারে বাদ দেওয়ার মানসিকতা অনেক সময় উল্টো ফল বয়ে আনে। বরং ক্যালরি নিয়ন্ত্রণ, খাবারের পরিমাণ কমানো, অতি প্রক্রিয়াজাত খাবার কম খাওয়া এবং বেশি করে ফল ও সবজি অন্তর্ভুক্ত করার মতো অভ্যাসগুলো দীর্ঘ মেয়াদে উপকারী।
পছন্দের ব্যায়াম খোঁজা
ওজন কমাতে শারীরিক কার্যকলাপ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তবে যে ব্যায়াম আপনার ভালো লাগে না, তা বেশি দিন চালিয়ে যাওয়া কঠিন। হাঁটা, সাঁতার, নাচ, সাইক্লিং কিংবা জিম—যে ধরনের ব্যায়াম উপভোগ করেন, সেটিই বেছে নেওয়া ভালো।
যে বিষয়গুলো অনুপ্রেরণা জোগায়
ওজন কমানোর পুরো যাত্রায় শুধু শেষ লক্ষ্যের দিকে তাকিয়ে থাকলে হতাশা আসতে পারে। তাই ছোট ছোট প্রক্রিয়াগত লক্ষ্য ঠিক করা জরুরি। যেমন সপ্তাহে নির্দিষ্ট কয়েক দিন ব্যায়াম করা বা প্রতিটি খাবারে সবজি রাখা। এসব লক্ষ্য পূরণ হলে আত্মবিশ্বাস বাড়ে। নিজের অগ্রগতি লিখে রাখাও গুরুত্বপূর্ণ। খাবার ও দৈনন্দিন অভ্যাসের হিসাব রাখলে কোথায় ভুল হচ্ছে কিংবা কোন অভ্যাস ওজন বাড়াচ্ছে, তা সহজে ধরা পড়ে।
সামাজিক সহায়তা এবং ইতিবাচক মনোভাব
পরিবার ও বন্ধুদের নিজের লক্ষ্য জানালে তারা মানসিক সমর্থন দিতে পারে। কেউ কেউ ওজন কমানোর সঙ্গী পেলে আরও অনুপ্রাণিত বোধ করে। পাশাপাশি নিজের সঙ্গে ইতিবাচকভাবে কথা বলা এবং পরিবর্তনের প্রতি দৃঢ় মনোভাব রাখা গুরুত্বপূর্ণ।
বাধা এলে যা করতে হবে
জীবনে নানা ধরনের চাপ এবং সামাজিক অনুষ্ঠানের কারণে পরিকল্পনা ভেস্তে যেতে পারে। এ ধরনের পরিস্থিতির জন্য আগেই মানসিকভাবে প্রস্তুত থাকলে আবার সঠিক পথে ফেরা সহজ হয়। নিখুঁত হওয়ার চেষ্টা না করে নিজের ভুল মেনে নেওয়া এবং নিজেকে ক্ষমা করাও অনুপ্রেরণা ধরে রাখতে সহায়ক।
ওজন কমানোর ক্ষেত্রে অনুপ্রেরণাই সবচেয়ে বড় শক্তি। সবার অনুপ্রেরণার উৎস এক নয়। তাই নিজের জন্য কার্যকর পদ্ধতি খুঁজে নেওয়াই হলো মূল চাবিকাঠি।
তবে ধৈর্য ধরুন, ছোট ছোট সাফল্য উদ্যাপন করুন
এবং প্রয়োজনে সাহায্য চাইতে সংকোচ করবেন না। সঠিক পরিকল্পনা ও সমর্থন থাকলে ওজন কমানোর লক্ষ্য অর্জন করা সম্ভব।
সূত্র: হেলথ লাইন

ওজন কমানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া যেমন কঠিন, সেই সিদ্ধান্তে দীর্ঘদিন অটল থাকা অনেকের ক্ষেত্রে আরও কঠিন। সঠিক অনুপ্রেরণা না থাকলে ওজন কমানো শুরু করাই কঠিন হয়ে পড়ে। আর শুরু করলেও মাঝপথে থেমে যাওয়ার ঝুঁকি থাকে। তবে কিছু বাস্তবসম্মত কৌশল অনুসরণ করলে ওজন কমানোর লক্ষ্য অর্জন সহজ হতে পারে।
নিজেকে দেওয়া প্রতিশ্রুতি না ভাঙা
ওজন কমানোর ক্ষেত্রে নিজের সঙ্গে বোঝাপড়া বেশ ভূমিকা রাখতে পারে। কেউ কেউ লিখিত পরিকল্পনা বা অ্যাপের মাধ্যমে প্রতিদিনের লক্ষ্য ঠিক করেন। আবার কেউ জিমের সদস্যপদ বা ব্যায়াম ক্লাসে ভর্তি হয়ে নিজেকে দায়বদ্ধ করে তোলেন। এতে মাঝপথে হাল ছেড়ে দেওয়ার প্রবণতা কমে।
জীবনযাপনের সঙ্গে মানানসই পরিকল্পনা বেছে নেওয়া
যে ডায়েট বা ব্যায়াম পরিকল্পনা দীর্ঘদিন মেনে চলা সম্ভব নয়, তা এড়িয়ে চলা ভালো। অতিরিক্ত কঠোর নিয়ম অথবা সবকিছু একেবারে বাদ দেওয়ার মানসিকতা অনেক সময় উল্টো ফল বয়ে আনে। বরং ক্যালরি নিয়ন্ত্রণ, খাবারের পরিমাণ কমানো, অতি প্রক্রিয়াজাত খাবার কম খাওয়া এবং বেশি করে ফল ও সবজি অন্তর্ভুক্ত করার মতো অভ্যাসগুলো দীর্ঘ মেয়াদে উপকারী।
পছন্দের ব্যায়াম খোঁজা
ওজন কমাতে শারীরিক কার্যকলাপ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তবে যে ব্যায়াম আপনার ভালো লাগে না, তা বেশি দিন চালিয়ে যাওয়া কঠিন। হাঁটা, সাঁতার, নাচ, সাইক্লিং কিংবা জিম—যে ধরনের ব্যায়াম উপভোগ করেন, সেটিই বেছে নেওয়া ভালো।
যে বিষয়গুলো অনুপ্রেরণা জোগায়
ওজন কমানোর পুরো যাত্রায় শুধু শেষ লক্ষ্যের দিকে তাকিয়ে থাকলে হতাশা আসতে পারে। তাই ছোট ছোট প্রক্রিয়াগত লক্ষ্য ঠিক করা জরুরি। যেমন সপ্তাহে নির্দিষ্ট কয়েক দিন ব্যায়াম করা বা প্রতিটি খাবারে সবজি রাখা। এসব লক্ষ্য পূরণ হলে আত্মবিশ্বাস বাড়ে। নিজের অগ্রগতি লিখে রাখাও গুরুত্বপূর্ণ। খাবার ও দৈনন্দিন অভ্যাসের হিসাব রাখলে কোথায় ভুল হচ্ছে কিংবা কোন অভ্যাস ওজন বাড়াচ্ছে, তা সহজে ধরা পড়ে।
সামাজিক সহায়তা এবং ইতিবাচক মনোভাব
পরিবার ও বন্ধুদের নিজের লক্ষ্য জানালে তারা মানসিক সমর্থন দিতে পারে। কেউ কেউ ওজন কমানোর সঙ্গী পেলে আরও অনুপ্রাণিত বোধ করে। পাশাপাশি নিজের সঙ্গে ইতিবাচকভাবে কথা বলা এবং পরিবর্তনের প্রতি দৃঢ় মনোভাব রাখা গুরুত্বপূর্ণ।
বাধা এলে যা করতে হবে
জীবনে নানা ধরনের চাপ এবং সামাজিক অনুষ্ঠানের কারণে পরিকল্পনা ভেস্তে যেতে পারে। এ ধরনের পরিস্থিতির জন্য আগেই মানসিকভাবে প্রস্তুত থাকলে আবার সঠিক পথে ফেরা সহজ হয়। নিখুঁত হওয়ার চেষ্টা না করে নিজের ভুল মেনে নেওয়া এবং নিজেকে ক্ষমা করাও অনুপ্রেরণা ধরে রাখতে সহায়ক।
ওজন কমানোর ক্ষেত্রে অনুপ্রেরণাই সবচেয়ে বড় শক্তি। সবার অনুপ্রেরণার উৎস এক নয়। তাই নিজের জন্য কার্যকর পদ্ধতি খুঁজে নেওয়াই হলো মূল চাবিকাঠি।
তবে ধৈর্য ধরুন, ছোট ছোট সাফল্য উদ্যাপন করুন
এবং প্রয়োজনে সাহায্য চাইতে সংকোচ করবেন না। সঠিক পরিকল্পনা ও সমর্থন থাকলে ওজন কমানোর লক্ষ্য অর্জন করা সম্ভব।
সূত্র: হেলথ লাইন

আপনার হাঁটার গতি শুধু শরীরচর্চার একটি সূচক নয়, বরং এটি মস্তিষ্কের স্বাস্থ্য, বার্ধক্যের গতি এবং ভবিষ্যতের আয়ুর সঙ্গে সরাসরি সম্পর্কযুক্ত। গবেষণায় দেখা গেছে, যারা ধীরে হাঁটে, তাদের মস্তিষ্ক তুলনামূলকভাবে ছোট এবং গুরুত্বপূর্ণ কাঠামোয় ভিন্নতা থাকে। হাঁটার গতি দিয়ে ভবিষ্যতে শারীরিক দুর্বলতা, হৃদ্রোগ
১১ জুন ২০২৫
জীবনে রঙের অস্তিত্ব না থাকলে কেমন হতো? নির্জীব, একঘেয়ে কেমন যেন নিরানন্দ কিংবা নেই কোনো উৎসাহ-উদ্দীপনা। রঙিন কিছু দেখলেই আমাদের মন যেন উৎফুল্ল হয়ে ওঠে, খাবারের বেলায়ও এটি একই রকম সত্য।
৩ দিন আগে
থাইরয়েড হরমোন আমাদের গলার সামনে থাইরয়েড গ্রন্থি থেকে নিঃসৃত একধরনের হরমোন কিংবা প্রাণরস। এটি গলার সামনে থেকে নিঃসৃত হলেও সারা শরীরে ছড়িয়ে পড়ে এবং পুরো শরীরে কাজ করে।
৪ দিন আগে
সুষম খাবারের ৬টি উপাদানের অন্যতম ভিটামিন ও খনিজ লবণ। এগুলো আমাদের শরীরের চালিকাশক্তির অন্যতম উপাদান হিসেবে বিবেচিত। শরীরের একেকটি অঙ্গের সুরক্ষায় একেক ধরনের ভিটামিন প্রয়োজন হয়। যেমন চুল ও চোখের সুরক্ষায় ভিটামিন ‘এ’, ত্বকের সুরক্ষায় ভিটামিন ‘বি’ ও ‘সি’, হাড় ও দাঁতের সুরক্ষায় ভিটামিন ‘ডি’ প্রয়োজন হয়।
৪ দিন আগেডা. মো. মাজহারুল হক তানিম

থাইরয়েড হরমোন আমাদের গলার সামনে থাইরয়েড গ্রন্থি থেকে নিঃসৃত একধরনের হরমোন কিংবা প্রাণরস। এটি গলার সামনে থেকে নিঃসৃত হলেও সারা শরীরে ছড়িয়ে পড়ে এবং পুরো শরীরে কাজ করে।
হাইপোথাইরয়েডিজমের লক্ষণ
শীতকালীন সবজি খাওয়ায় সতর্কতা
কাবেজ জাতীয় সবজি; যেমন ফুলকপি, বাঁধাকপি, লেটুসপাতায় থাকে গয়ট্রোজেন নামে একধরনের উপাদান। এটি থাইরয়েড হরমোন তৈরিতে বাধা দিয়ে থাকে। তাই যাঁদের হাইপোথাইরয়েড আছে, তাঁদের এসব সবজি কাঁচা অবস্থায় খাওয়া যাবে না। কিন্তু রান্না করে অল্প খাওয়া যাবে।
শীতকালে থাইরয়েড রোগীদের হরমোনের চাহিদা বেড়ে যায়। তাই অতিরিক্ত দুর্বল লাগে, ঠান্ডা ভাব এবং কাজের গতি ধীর হতে পারে।
শীতকালে থাইরয়েড রোগীদের করণীয়
গরম থাকার চেষ্টা করুন: জ্যাকেট কিংবা কম্বল ইত্যাদির মতো গরম কাপড় ব্যবহার করতে হবে। গরম খাবার বেশি খেতে হবে; যেমন স্যুপ কিংবা চা।
ভিটামিন ‘ডি’ বাড়ান: সকাল ৯ থেকে ১০টার দিকে রোদে থাকার চেষ্টা করুন। ভিটামিন ‘ডি’ লেভেল বেশি কম থাকলে চিকিৎসকের পরামর্শে ভিটামিন ‘ডি’ সাপ্লিমেন্ট নিতে পারেন।
খাদ্যাভ্যাস: পর্যাপ্ত পানি পান করুন। ভিটামিন ‘সি ও বি’ সমৃদ্ধ এবং প্রোটিনযুক্ত খাবার বেশি খেতে হবে। প্রক্রিয়াজাত খাবার কম খান।
মন নিয়ন্ত্রণ করুন: মুড সুইং খুবই সাধারণ বিষয় থাইরয়েড রোগীদের জন্য। তাই নিজের মন নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। এ ছাড়া প্রফুল্ল থাকার চেষ্টা করুন, কর্মঠ থাকুন, দুশ্চিন্তা ঝেড়ে ফেলুন। প্রয়োজনে লাইট থেরাপি নিতে পারেন।
শীতে থাইরয়েড রোগীদের ত্বকের যত্ন
থাইরয়েড রোগীদের ত্বক স্বভাবতই শুষ্ক থাকে। শীতকালে তা আরও শুষ্ক হয়ে ওঠে। তাই শীতকালে গোসলের পর ময়শ্চারাইজার, লোশন কিংবা ক্রিম নিয়মিত ব্যবহার করুন। ত্বকে চুলকানি অথবা র্যাশ থাকলে চর্ম ও যৌন বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেবেন।
নিয়মিত ফলোআপ
৩ থেকে ৬ মাস পরপর আপনার হরমোন ও থাইরয়েড, বিশেষত এন্ডোক্রাইনোলজিস্টের পরামর্শ নিন। চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া ওষুধের মাত্রা কম কিংবা বেশি করা যাবে না।
এন্ডোক্রাইনোলজিস্ট, ইসলামী ব্যাংক সেন্ট্রাল হাসপাতাল, কাকরাইল, ঢাকা

থাইরয়েড হরমোন আমাদের গলার সামনে থাইরয়েড গ্রন্থি থেকে নিঃসৃত একধরনের হরমোন কিংবা প্রাণরস। এটি গলার সামনে থেকে নিঃসৃত হলেও সারা শরীরে ছড়িয়ে পড়ে এবং পুরো শরীরে কাজ করে।
হাইপোথাইরয়েডিজমের লক্ষণ
শীতকালীন সবজি খাওয়ায় সতর্কতা
কাবেজ জাতীয় সবজি; যেমন ফুলকপি, বাঁধাকপি, লেটুসপাতায় থাকে গয়ট্রোজেন নামে একধরনের উপাদান। এটি থাইরয়েড হরমোন তৈরিতে বাধা দিয়ে থাকে। তাই যাঁদের হাইপোথাইরয়েড আছে, তাঁদের এসব সবজি কাঁচা অবস্থায় খাওয়া যাবে না। কিন্তু রান্না করে অল্প খাওয়া যাবে।
শীতকালে থাইরয়েড রোগীদের হরমোনের চাহিদা বেড়ে যায়। তাই অতিরিক্ত দুর্বল লাগে, ঠান্ডা ভাব এবং কাজের গতি ধীর হতে পারে।
শীতকালে থাইরয়েড রোগীদের করণীয়
গরম থাকার চেষ্টা করুন: জ্যাকেট কিংবা কম্বল ইত্যাদির মতো গরম কাপড় ব্যবহার করতে হবে। গরম খাবার বেশি খেতে হবে; যেমন স্যুপ কিংবা চা।
ভিটামিন ‘ডি’ বাড়ান: সকাল ৯ থেকে ১০টার দিকে রোদে থাকার চেষ্টা করুন। ভিটামিন ‘ডি’ লেভেল বেশি কম থাকলে চিকিৎসকের পরামর্শে ভিটামিন ‘ডি’ সাপ্লিমেন্ট নিতে পারেন।
খাদ্যাভ্যাস: পর্যাপ্ত পানি পান করুন। ভিটামিন ‘সি ও বি’ সমৃদ্ধ এবং প্রোটিনযুক্ত খাবার বেশি খেতে হবে। প্রক্রিয়াজাত খাবার কম খান।
মন নিয়ন্ত্রণ করুন: মুড সুইং খুবই সাধারণ বিষয় থাইরয়েড রোগীদের জন্য। তাই নিজের মন নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। এ ছাড়া প্রফুল্ল থাকার চেষ্টা করুন, কর্মঠ থাকুন, দুশ্চিন্তা ঝেড়ে ফেলুন। প্রয়োজনে লাইট থেরাপি নিতে পারেন।
শীতে থাইরয়েড রোগীদের ত্বকের যত্ন
থাইরয়েড রোগীদের ত্বক স্বভাবতই শুষ্ক থাকে। শীতকালে তা আরও শুষ্ক হয়ে ওঠে। তাই শীতকালে গোসলের পর ময়শ্চারাইজার, লোশন কিংবা ক্রিম নিয়মিত ব্যবহার করুন। ত্বকে চুলকানি অথবা র্যাশ থাকলে চর্ম ও যৌন বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেবেন।
নিয়মিত ফলোআপ
৩ থেকে ৬ মাস পরপর আপনার হরমোন ও থাইরয়েড, বিশেষত এন্ডোক্রাইনোলজিস্টের পরামর্শ নিন। চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া ওষুধের মাত্রা কম কিংবা বেশি করা যাবে না।
এন্ডোক্রাইনোলজিস্ট, ইসলামী ব্যাংক সেন্ট্রাল হাসপাতাল, কাকরাইল, ঢাকা

আপনার হাঁটার গতি শুধু শরীরচর্চার একটি সূচক নয়, বরং এটি মস্তিষ্কের স্বাস্থ্য, বার্ধক্যের গতি এবং ভবিষ্যতের আয়ুর সঙ্গে সরাসরি সম্পর্কযুক্ত। গবেষণায় দেখা গেছে, যারা ধীরে হাঁটে, তাদের মস্তিষ্ক তুলনামূলকভাবে ছোট এবং গুরুত্বপূর্ণ কাঠামোয় ভিন্নতা থাকে। হাঁটার গতি দিয়ে ভবিষ্যতে শারীরিক দুর্বলতা, হৃদ্রোগ
১১ জুন ২০২৫
জীবনে রঙের অস্তিত্ব না থাকলে কেমন হতো? নির্জীব, একঘেয়ে কেমন যেন নিরানন্দ কিংবা নেই কোনো উৎসাহ-উদ্দীপনা। রঙিন কিছু দেখলেই আমাদের মন যেন উৎফুল্ল হয়ে ওঠে, খাবারের বেলায়ও এটি একই রকম সত্য।
৩ দিন আগে
ওজন কমানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া যেমন কঠিন, সেই সিদ্ধান্তে দীর্ঘদিন অটল থাকা অনেকের ক্ষেত্রে আরও কঠিন। সঠিক অনুপ্রেরণা না থাকলে ওজন কমানো শুরু করাই কঠিন হয়ে পড়ে। আর শুরু করলেও মাঝপথে থেমে যাওয়ার ঝুঁকি থাকে। তবে কিছু বাস্তবসম্মত কৌশল অনুসরণ করলে ওজন কমানোর লক্ষ্য অর্জন সহজ হতে পারে।
৪ দিন আগে
সুষম খাবারের ৬টি উপাদানের অন্যতম ভিটামিন ও খনিজ লবণ। এগুলো আমাদের শরীরের চালিকাশক্তির অন্যতম উপাদান হিসেবে বিবেচিত। শরীরের একেকটি অঙ্গের সুরক্ষায় একেক ধরনের ভিটামিন প্রয়োজন হয়। যেমন চুল ও চোখের সুরক্ষায় ভিটামিন ‘এ’, ত্বকের সুরক্ষায় ভিটামিন ‘বি’ ও ‘সি’, হাড় ও দাঁতের সুরক্ষায় ভিটামিন ‘ডি’ প্রয়োজন হয়।
৪ দিন আগেমো. ইকবাল হোসেন

সুষম খাবারের ৬টি উপাদানের অন্যতম ভিটামিন ও খনিজ লবণ। এগুলো আমাদের শরীরের চালিকাশক্তির অন্যতম উপাদান হিসেবে বিবেচিত। শরীরের একেকটি অঙ্গের সুরক্ষায় একেক ধরনের ভিটামিন প্রয়োজন হয়। যেমন চুল ও চোখের সুরক্ষায় ভিটামিন ‘এ’, ত্বকের সুরক্ষায় ভিটামিন ‘বি’ ও ‘সি’, হাড় ও দাঁতের সুরক্ষায় ভিটামিন ‘ডি’ প্রয়োজন হয়। আবার ত্বক, চুল ও প্রজননতন্ত্রের সুরক্ষায় ভিটামিন ‘ই’-এর ভূমিকা অনেক বেশি। এ ছাড়া শরীরের বিভিন্ন রকমের পেশি এবং স্নায়ুতন্ত্রের সুরক্ষায় খনিজ লবণের ভূমিকা অনেক বেশি।
এই ভিটামিন ও খনিজ লবণগুলো আমরা প্রধানত শাকসবজি ও ফলমূল থেকে পেয়ে থাকি। কিন্তু কিছু অসাবধানতার ফলে শাকসবজি ও ফলমূলের পুষ্টির একটা বড় অংশ হারিয়ে যায়।
আমরা ঐতিহ্যগতভাবে শাকসবজি কাটার পর পানি দিয়ে কয়েকবার ধুয়ে থাকি। এতে পানিতে দ্রবণীয় ভিটামিন ‘বি ও সি’ পানির সঙ্গে মিশে শাকসবজির বাইরে চলে যায়। ফলে আমরা ওই শাকসবজি থেকে প্রয়োজনীয় ভিটামিন ও খনিজ লবণ পাই না। তাই সেগুলো কাটা বা খোসা ছাড়ানোর আগে ভালো করে ধুয়ে নিতে হবে। এতে ময়লা পরিষ্কারের পাশাপাশি সব পুষ্টিগুণ অক্ষুণ্ন থাকবে। শাকসবজি কাটার আগে বঁটি, ছুরি বা গ্রেটারও খুব ভালো করে ধুয়ে নিতে হবে।
শাকসবজি রান্নার নামে দীর্ঘ সময় আগুনের তাপে রাখা যাবে না। অল্প তাপেই শাকসবজিতে থাকা ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়া বা জীবাণু মারা যায়। এগুলো যত কম সময় সেদ্ধ করা হবে, তত বেশি পুষ্টিগুণ অক্ষুণ্ণ থাকবে। যেমন দীর্ঘ সময় ধরে রান্না করলে শাকসবজির প্রায় ৫০ শতাংশ পটাশিয়াম নষ্ট হয়ে যায়। কিন্তু এটি শরীরের জন্য অতিপ্রয়োজনীয় খনিজ। ফলে অল্প আঁচে ভাপানো শাকসবজি খাওয়া ভালো।
প্রতিটি শাকসবজির নিজস্ব রং বজায় রেখে রান্না করলে তার পুষ্টিগুণ বেশি বজায় থাকবে। যেমন গাজর রান্নার পর লাল রং, শিম রান্নার পর সবুজ রং কিংবা ফুলকপির সাদা রং বজায় থাকতে হবে। রান্না করতে গিয়ে শাকসবজির রং যত নষ্ট হবে, তার পুষ্টিগুণ তত বেশি নষ্ট হবে।
অনেক সময় রাতে শাকসবজি কেটে রেখে দেওয়া হয় সকালে রান্না করার জন্য। অথবা সকালে কেটে রাখি দুপুরে রান্না করার জন্য। এভাবে দীর্ঘ সময় কেটে রেখে দিলে শাকসবজির কাটা অংশ বাতাসের সংস্পর্শে এসে জারণ-বিজারণ বিক্রিয়ার মাধ্যমে পুষ্টিগুণ নষ্ট করে। এভাবে কেটে রাখা শাকসবজিতে বিষক্রিয়াও হতে পারে। তাই এর সঠিক পুষ্টিগুণ বজায় রাখতে রাতে কেটে না রেখে রান্নার আগে কেটে দ্রুত রান্না করুন।
শাকসবজি কাটার কাজে ধারালো বঁটি অথবা ছুরি ব্যবহার করতে হবে। ভোঁতা বঁটি বা ছুরি দিয়ে এগুলো কাটার পর অনেক প্রয়োজনীয় পুষ্টি উপাদান নষ্ট হতে পারে। এ ছাড়া ভোঁতা বঁটি বা ছুরি দিয়ে কেটে রাখা শাকসবজিতে দ্রুত ব্যাকটেরিয়া কিংবা ছত্রাকের আক্রমণ হতে পারে।
সবজি ছোট টুকরা করে না কেটে যথাসম্ভব বড় টুকরা করে কাটবেন। ছোট টুকরা করে কাটলে তাপে বেশি পরিমাণে পুষ্টিগুণ নষ্ট হতে পারে। কিন্তু টুকরা বড় রাখলে বেশি তাপে রান্নায়ও ভেতরের পুষ্টিগুণ সহজে নষ্ট হয় না।
গাজর, পটোল, লাউ, শসা, মিষ্টিকুমড়ার মতো সবজিগুলো খোসাসহ রান্না করতে হবে। এসব সবজির খোসায়ও অনেক ভিটামিন ও মিনারেল থাকে।
শাকসবজি ভাজা ভাজা না করে রান্না করে খেলে বেশি পুষ্টিগুণ পাওয়া যায়। প্রথমত ভাজা করতে হলে খুব ছোট টুকরা করে কাটতে হয়। দ্বিতীয়ত ভাজি করতে হলে দীর্ঘ সময় তাপে রাখতে হয়। এই দুটি বিষয় শাকসবজির পুষ্টিগুণ অনেক কমিয়ে দেয়। তাই এগুলো ঝোল করে রান্না করে খাওয়ার অভ্যাস করতে হবে।
জ্যেষ্ঠ পুষ্টি কর্মকর্তা, চট্টগ্রাম ডায়াবেটিক জেনারেল হাসপাতাল

সুষম খাবারের ৬টি উপাদানের অন্যতম ভিটামিন ও খনিজ লবণ। এগুলো আমাদের শরীরের চালিকাশক্তির অন্যতম উপাদান হিসেবে বিবেচিত। শরীরের একেকটি অঙ্গের সুরক্ষায় একেক ধরনের ভিটামিন প্রয়োজন হয়। যেমন চুল ও চোখের সুরক্ষায় ভিটামিন ‘এ’, ত্বকের সুরক্ষায় ভিটামিন ‘বি’ ও ‘সি’, হাড় ও দাঁতের সুরক্ষায় ভিটামিন ‘ডি’ প্রয়োজন হয়। আবার ত্বক, চুল ও প্রজননতন্ত্রের সুরক্ষায় ভিটামিন ‘ই’-এর ভূমিকা অনেক বেশি। এ ছাড়া শরীরের বিভিন্ন রকমের পেশি এবং স্নায়ুতন্ত্রের সুরক্ষায় খনিজ লবণের ভূমিকা অনেক বেশি।
এই ভিটামিন ও খনিজ লবণগুলো আমরা প্রধানত শাকসবজি ও ফলমূল থেকে পেয়ে থাকি। কিন্তু কিছু অসাবধানতার ফলে শাকসবজি ও ফলমূলের পুষ্টির একটা বড় অংশ হারিয়ে যায়।
আমরা ঐতিহ্যগতভাবে শাকসবজি কাটার পর পানি দিয়ে কয়েকবার ধুয়ে থাকি। এতে পানিতে দ্রবণীয় ভিটামিন ‘বি ও সি’ পানির সঙ্গে মিশে শাকসবজির বাইরে চলে যায়। ফলে আমরা ওই শাকসবজি থেকে প্রয়োজনীয় ভিটামিন ও খনিজ লবণ পাই না। তাই সেগুলো কাটা বা খোসা ছাড়ানোর আগে ভালো করে ধুয়ে নিতে হবে। এতে ময়লা পরিষ্কারের পাশাপাশি সব পুষ্টিগুণ অক্ষুণ্ন থাকবে। শাকসবজি কাটার আগে বঁটি, ছুরি বা গ্রেটারও খুব ভালো করে ধুয়ে নিতে হবে।
শাকসবজি রান্নার নামে দীর্ঘ সময় আগুনের তাপে রাখা যাবে না। অল্প তাপেই শাকসবজিতে থাকা ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়া বা জীবাণু মারা যায়। এগুলো যত কম সময় সেদ্ধ করা হবে, তত বেশি পুষ্টিগুণ অক্ষুণ্ণ থাকবে। যেমন দীর্ঘ সময় ধরে রান্না করলে শাকসবজির প্রায় ৫০ শতাংশ পটাশিয়াম নষ্ট হয়ে যায়। কিন্তু এটি শরীরের জন্য অতিপ্রয়োজনীয় খনিজ। ফলে অল্প আঁচে ভাপানো শাকসবজি খাওয়া ভালো।
প্রতিটি শাকসবজির নিজস্ব রং বজায় রেখে রান্না করলে তার পুষ্টিগুণ বেশি বজায় থাকবে। যেমন গাজর রান্নার পর লাল রং, শিম রান্নার পর সবুজ রং কিংবা ফুলকপির সাদা রং বজায় থাকতে হবে। রান্না করতে গিয়ে শাকসবজির রং যত নষ্ট হবে, তার পুষ্টিগুণ তত বেশি নষ্ট হবে।
অনেক সময় রাতে শাকসবজি কেটে রেখে দেওয়া হয় সকালে রান্না করার জন্য। অথবা সকালে কেটে রাখি দুপুরে রান্না করার জন্য। এভাবে দীর্ঘ সময় কেটে রেখে দিলে শাকসবজির কাটা অংশ বাতাসের সংস্পর্শে এসে জারণ-বিজারণ বিক্রিয়ার মাধ্যমে পুষ্টিগুণ নষ্ট করে। এভাবে কেটে রাখা শাকসবজিতে বিষক্রিয়াও হতে পারে। তাই এর সঠিক পুষ্টিগুণ বজায় রাখতে রাতে কেটে না রেখে রান্নার আগে কেটে দ্রুত রান্না করুন।
শাকসবজি কাটার কাজে ধারালো বঁটি অথবা ছুরি ব্যবহার করতে হবে। ভোঁতা বঁটি বা ছুরি দিয়ে এগুলো কাটার পর অনেক প্রয়োজনীয় পুষ্টি উপাদান নষ্ট হতে পারে। এ ছাড়া ভোঁতা বঁটি বা ছুরি দিয়ে কেটে রাখা শাকসবজিতে দ্রুত ব্যাকটেরিয়া কিংবা ছত্রাকের আক্রমণ হতে পারে।
সবজি ছোট টুকরা করে না কেটে যথাসম্ভব বড় টুকরা করে কাটবেন। ছোট টুকরা করে কাটলে তাপে বেশি পরিমাণে পুষ্টিগুণ নষ্ট হতে পারে। কিন্তু টুকরা বড় রাখলে বেশি তাপে রান্নায়ও ভেতরের পুষ্টিগুণ সহজে নষ্ট হয় না।
গাজর, পটোল, লাউ, শসা, মিষ্টিকুমড়ার মতো সবজিগুলো খোসাসহ রান্না করতে হবে। এসব সবজির খোসায়ও অনেক ভিটামিন ও মিনারেল থাকে।
শাকসবজি ভাজা ভাজা না করে রান্না করে খেলে বেশি পুষ্টিগুণ পাওয়া যায়। প্রথমত ভাজা করতে হলে খুব ছোট টুকরা করে কাটতে হয়। দ্বিতীয়ত ভাজি করতে হলে দীর্ঘ সময় তাপে রাখতে হয়। এই দুটি বিষয় শাকসবজির পুষ্টিগুণ অনেক কমিয়ে দেয়। তাই এগুলো ঝোল করে রান্না করে খাওয়ার অভ্যাস করতে হবে।
জ্যেষ্ঠ পুষ্টি কর্মকর্তা, চট্টগ্রাম ডায়াবেটিক জেনারেল হাসপাতাল

আপনার হাঁটার গতি শুধু শরীরচর্চার একটি সূচক নয়, বরং এটি মস্তিষ্কের স্বাস্থ্য, বার্ধক্যের গতি এবং ভবিষ্যতের আয়ুর সঙ্গে সরাসরি সম্পর্কযুক্ত। গবেষণায় দেখা গেছে, যারা ধীরে হাঁটে, তাদের মস্তিষ্ক তুলনামূলকভাবে ছোট এবং গুরুত্বপূর্ণ কাঠামোয় ভিন্নতা থাকে। হাঁটার গতি দিয়ে ভবিষ্যতে শারীরিক দুর্বলতা, হৃদ্রোগ
১১ জুন ২০২৫
জীবনে রঙের অস্তিত্ব না থাকলে কেমন হতো? নির্জীব, একঘেয়ে কেমন যেন নিরানন্দ কিংবা নেই কোনো উৎসাহ-উদ্দীপনা। রঙিন কিছু দেখলেই আমাদের মন যেন উৎফুল্ল হয়ে ওঠে, খাবারের বেলায়ও এটি একই রকম সত্য।
৩ দিন আগে
ওজন কমানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া যেমন কঠিন, সেই সিদ্ধান্তে দীর্ঘদিন অটল থাকা অনেকের ক্ষেত্রে আরও কঠিন। সঠিক অনুপ্রেরণা না থাকলে ওজন কমানো শুরু করাই কঠিন হয়ে পড়ে। আর শুরু করলেও মাঝপথে থেমে যাওয়ার ঝুঁকি থাকে। তবে কিছু বাস্তবসম্মত কৌশল অনুসরণ করলে ওজন কমানোর লক্ষ্য অর্জন সহজ হতে পারে।
৪ দিন আগে
থাইরয়েড হরমোন আমাদের গলার সামনে থাইরয়েড গ্রন্থি থেকে নিঃসৃত একধরনের হরমোন কিংবা প্রাণরস। এটি গলার সামনে থেকে নিঃসৃত হলেও সারা শরীরে ছড়িয়ে পড়ে এবং পুরো শরীরে কাজ করে।
৪ দিন আগে