Ajker Patrika

মস্তিষ্ক, অস্থিমজ্জায়ও মাইক্রোপ্লাস্টিক, ঘোরতর বিপদের সতর্কবার্তা বিজ্ঞানীদের

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ০৫ অক্টোবর ২০২৫, ১৩: ১০
মানুষের অস্থি এমনকি অস্থিমজ্জার ভেতরেও মাইক্রোপ্লাস্টিক পাওয়া যাচ্ছে। ছবি: ফ্রিপিক
মানুষের অস্থি এমনকি অস্থিমজ্জার ভেতরেও মাইক্রোপ্লাস্টিক পাওয়া যাচ্ছে। ছবি: ফ্রিপিক

মাইক্রোপ্লাস্টিক এখন এতটাই ছড়িয়ে পড়েছে যে আমরা তা খাচ্ছি, পান করছি আর নিশ্বাসের সঙ্গে টানছি। ফলে এগুলো আমাদের মল, প্লাসেন্টা, প্রজনন অঙ্গ এমনকি মস্তিষ্কেও পাওয়া যাচ্ছে। এবার জীবাশ্ম জ্বালানি থেকে তৈরি পাঁচ মিলিমিটারের চেয়েও ছোট আকারের কণা আমাদের হাড়ের ভেতরে গভীর পর্যন্ত পৌঁছে গেছে।

বিজ্ঞানবিষয়ক সাময়িকী সায়েন্স অ্যালার্ট জানিয়েছে, নতুন এক পর্যালোচনা গবেষণায় ৬২টি পুরোনো গবেষণার ভিত্তিতে বলা হচ্ছে, মাইক্রোপ্লাস্টিক ও আরও ক্ষুদ্র ন্যানো প্লাস্টিক আমাদের কঙ্কাল স্বাস্থ্যে নানা ধরনের প্রভাব ফেলছে। এই পর্যালোচনা গবেষণা প্রকাশিত হয়েছে স্প্রিঙ্গার জার্নালে।

এ বিষয়ে ব্রাজিলের স্টেট ইউনিভার্সিটি অব কাম্পিনাসের চিকিৎসাবিজ্ঞানী রদ্রিগো বুয়েনো দে অলিভেইরা বলেন, ‘এক উল্লেখযোগ্য গবেষণার ফলাফল দেখাচ্ছে যে মাইক্রোপ্লাস্টিক হাড়ের টিস্যুর গভীরে, যেমন অস্থিমজ্জায় পৌঁছে যেতে পারে এবং এর বিপাক প্রক্রিয়ায় ব্যাঘাত ঘটাতে পারে।’

মানুষের ওপর পরিচালিত কিছু গবেষণায় দেখা গেছে, খাবারের মাধ্যমে শরীরে প্রবেশের পর রক্তের সাহায্যে এই প্লাস্টিকের অবশিষ্টাংশ হাড়ের টিস্যুতে জমা হচ্ছে। প্রাণীর শরীরে করা গবেষণায় দেখা গেছে, এগুলো হাড়ের বৃদ্ধি কমিয়ে দেয়। পাশাপাশি হাড়ের বৃদ্ধি ও মেরামতে সাহায্যকারী অস্টিওক্লাস্ট কোষের কাজ ব্যাহত হয় এর ফলে। এতে হাড় দুর্বল হয়ে পড়ে, বিকৃত বা ভেঙে যাওয়ার ঝুঁকিও বেড়ে যায়।

অলিভেইরা ব্যাখ্যা করে বলেন, ‘হাড়ের কোষ নিয়ে করা ইন ভিট্রো গবেষণায় দেখা গেছে, মাইক্রোপ্লাস্টিক কোষের কার্যক্ষমতা কমায়, কোষকে দ্রুত বার্ধক্যের দিকে ঠেলে দেয় এবং কোষের ভিন্নকরণ প্রক্রিয়ায় পরিবর্তন আনে। পাশাপাশি প্রদাহও সৃষ্টি করে। এসব নেতিবাচক প্রভাবের কারণে প্রাণীর কঙ্কালের বৃদ্ধি থেমে গেছে, যা খুবই উদ্বেগজনক।’

এই মাইক্রোপ্লাস্টিক মানুষের হাড়ে একইভাবে প্রভাব ফেলছে কিনা, তা এখনো নিশ্চিত নয়। তবে বিশ্বজুড়ে অস্টিওপোরোসিস রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। এ রোগে হাড় ভঙ্গুর হয়ে যায় এবং সহজে ভেঙে পড়ে। গবেষকেরা সন্দেহ করছেন, মাইক্রোপ্লাস্টিকও এর একটি কারণ হতে পারে। যদিও মদ্যপান আর বয়স বাড়ার মতো পরিচিত ঝুঁকির বিষয়গুলোও রয়েছে।

তবু বিশেষজ্ঞদের সতর্কবার্তা—আমরা এই ‘অপর্যাপ্তভাবে স্বীকৃত বিপদ’ আরও বাড়াচ্ছি। প্রতিবছর অন্তত ৪০০ মিলিয়ন মেট্রিক টন প্লাস্টিক তৈরি হচ্ছে, যার সঙ্গে বছরে ১৮০ কোটি মেট্রিক টন গ্রিনহাউস গ্যাস নির্গত হচ্ছে। বছরের পর বছর গবেষকেরা এই ক্ষতিকর পেট্রোকেমিক্যাল দূষণ আমাদের শরীরে কী প্রভাব ফেলছে, তা নিয়ে আরও বেশি গবেষণা করার দাবি জানাচ্ছেন।

তবে, আমরা চাইলে কিছুটা হলেও মাইক্রোপ্লাস্টিকের প্রভাব কমাতে পারি। এর জন্য পানির ফিল্টার ব্যবহার করা যেতে পারে এবং সিনথেটিক কাপড় কিংবা প্লাস্টিকের বোতলজাত পানীয়র ব্যবহার সীমিত করতে হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

শিশু-কিশোরদের মধ্যেও বাড়ছে উচ্চ রক্তচাপ

  • দ্য ল্যানসেট চাইল্ড অ্যাডোলেসেন্ট হেলথে গবেষণা নিবন্ধটি প্রকাশিত হয়েছে
  • শিশু-কিশোরদের মধ্যে ২০ বছরে উচ্চ রক্তচাপের হার বেড়ে দ্বিগুণ হয়েছে
  • অতিরিক্ত ওজন, কম সক্রিয়তা, সোডিয়াম, অতিপ্রক্রিয়াজাত খাবার গ্রহণ অন্যতম কারণ
  • পরিবেশদূষণ, মানসিক চাপের কারণেও শিশু-কিশোরদের এ সমস্যা হচ্ছে
আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

সাধারণ মানুষের বড় একটি অংশের ধারণা, শুধু বড়রাই উচ্চ রক্তচাপে আক্রান্ত হয়। কিন্তু বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই ধারণা সঠিক নয়। শিশু-কিশোররাও এ সমস্যায় আক্রান্ত হতে পারে। শুধু তা-ই নয়, এ সমস্যা উদ্বেগজনকভাবে দিন দিন বাড়ছে। নতুন একটি গবেষণা বলছে, গত ২০ বছরে শিশু-কিশোরদের উচ্চ রক্তচাপে আক্রান্ত হওয়ার হার বেড়ে দ্বিগুণ হয়েছে।

চিকিৎসাবিজ্ঞান বিষয়ক সাময়িকী দ্য ল্যানসেটের শিশু-কিশোরদের স্বাস্থ্যবিষয়ক গবেষণা নিবন্ধ প্রকাশকারী সাময়িকী দ্য ল্যানসেট চাইল্ড অ্যাডোলেসেন্ট হেলথ গত বুধবার এ-সংক্রান্ত একটি গবেষণা নিবন্ধ প্রকাশ করেছে। চীন ও যুক্তরাজ্যের একদল গবেষক গবেষণাটি করেছেন। এতে নেতৃত্ব দিয়েছেন চীনের হ্যাংঝৌয়ের ঝেজিয়াং ইউনিভার্সিটি স্কুল অব মেডিসিনের দ্য সেকেন্ড অ্যাফিলিয়েটেড হসপিটালের স্কুল অব পাবলিক হেলথের ড. জিয়ালি ঝৌ।

গবেষণা নিবন্ধের রচয়িতাদের একজন ঝেজিয়াং ইউনিভার্সিটি স্কুল অব মেডিসিনের দ্য সেকেন্ড অ্যাফিলিয়েটেড হসপিটালের স্কুল অব পাবলিক হেলথের ড. পিয়েগ সং। তিনি মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএনকে বলেন, ‘২০০০ সালে ৩ দশমিক ৪ শতাংশ ছেলে শিশু-কিশোর এবং ৩ শতাংশ মেয়ে শিশু-কিশোর উচ্চ রক্তচাপে আক্রান্ত ছিল। ২০২০ সালে এই হার বেড়ে যথাক্রমে সাড়ে ৬ শতাংশ ও ৫ দশমিক ৮ শতাংশে দাঁড়িয়েছে।’ এক ইমেইলে তিনি আরও বলেন, আশার কথা হলো, আরও ভালোভাবে পর্যবেক্ষণ এবং আগেভাগে শনাক্ত করা গেলে এই এই ঝুঁকি মোকাবিলা সম্ভব। উচ্চ রক্তচাপ প্রতিরোধে, বিশেষ করে শিশু-কিশোরের ওজন ও পুষ্টির দিকে বেশি মনোযোগ দিতে হবে।’

শিশু-কিশোরদের উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা প্রসঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের ম্যাসাচুসেটসে অবস্থিত হার্ভার্ড মেডিকেল স্কুলের বেথ ইসরায়েল ডিকোনেস মেডিকেল সেন্টারের সহকারী অধ্যাপক ড. মিংইউ ঝ্যাং সিএনএনকে বলেন, শিশু-কিশোরদের মধ্যে যাদের উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা হচ্ছে, তাদের পরবর্তী সময়ে হৃদ্‌রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি অনেক বেশি। যুক্তরাষ্ট্রে অসংক্রামক রোগে মৃত্যুর শীর্ষ কারণ হৃদ্‌রোগ।

ড. পিয়েগ সং বলেন, শিশু-কিশোররা নানা কারণে উচ্চ রক্তচাপে আক্রান্ত হতে পারে। এর মধ্যে শিশু বয়সে অতিরিক্ত ওজন সবচেয়ে বড় কারণ। কারণ, ইনসুলিন রেজিস্ট্যান্স, প্রদাহ ও শরীরে রক্তপ্রবাহের সঙ্গে অতিরিক্ত ওজনের যোগসূত্র রয়েছে। খাদ্যাভ্যাসও উচ্চ রক্তচাপের একটি কারণ। অতিরিক্ত সোডিয়াম (লবণ) গ্রহণ এবং অতিপ্রক্রিয়াজাত খাবার এ সমস্যা তৈরি করতে পারে। ভালোভাবে ঘুম না হওয়া, মানসিক চাপ ও উচ্চ রক্তচাপের পারিবারিক ইতিহাস থাকলেও শিশু-কিশোররা এ সমস্যায় আক্রান্ত হতে পারে।

এই গবেষক বলেন, এখনকার অনেক শিশু আগের প্রজন্মগুলোর তুলনায় কম খেলাধুলা করে, সক্রিয় থাকে। তাদের সিংহভাগ সময় কাটে অলসভাবে, মোবাইল ফোন কিংবা টেলিভিশনের স্ক্রিনে নজর রেখে। এ ছাড়া পরিবেশদূষণও শিশু-কিশোরদের মধ্যে উচ্চ রক্তচাপের প্রবণতা বাড়াচ্ছে বলে জানা যাচ্ছে।

এর আগে যুক্তরাষ্ট্রের হার্ভার্ড মেডিকেল স্কুলের সহকারী অধ্যাপক ড. মিংইউ ঝ্যাংয়ের নেতৃত্বে পরিচালিত একটি গবেষণায় জানা গেছে, মাতৃগর্ভে থাকা অবস্থায়ই যদি শিশু পিএফএএস (পারফ্লোরোঅ্যালকাইল অ্যান্ড পলিফ্লোরোঅ্যালকাইল) রাসায়নিক উপাদানের সংস্পর্শে আসে, তাহলে তার জন্মের পর উচ্চ রক্তচাপে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বেশি থাকে। পিএফএএস হলো মানবসৃষ্ট প্রায় ১৫ হাজার ধরনের রাসায়নিক যৌগ, যেগুলো ক্যানসার, এন্ডোক্রাইন-সম্পর্কিত স্বাস্থ্য জটিলতা ও শিশুর দৈহিক-মানসিক বিকাশকে বাধাগ্রস্ত করে। পিএফএএসকে ‘চিরকালীন রাসায়নিক’ও বলা হয়। কারণ, এসব রাসায়নিক মাটির সঙ্গে মেশে না এবং এগুলো কখনোই পুরোপুরি ভাঙে না।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ডায়াবেটিস ফেডারেশন: প্রাপ্তবয়স্কের ১৩ শতাংশ ডায়াবেটিস রোগী

  • পরিশ্রম না করা ও অনিয়ন্ত্রিত খাদ্যাভ্যাসসহ বিভিন্ন কারণ
  • ডায়াবেটিস বৃদ্ধি পুরো স্বাস্থ্যব্যবস্থার ওপর চাপ বাড়াচ্ছে
মুহাম্মাদ শফিউল্লাহ, ঢাকা
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

দেশে ডায়াবেটিস (বহুমূত্র) রোগীর সংখ্যা উদ্বেগজনক হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে। প্রাপ্তবয়স্ক জনগোষ্ঠীর ১৩ শতাংশই ডায়াবেটিসে আক্রান্ত। ডায়াবেটিসের এমন উপস্থিতির কারণে অন্যান্য অসংক্রামক রোগের প্রাদুর্ভাবও বাড়ছে। সে কারণে ডায়াবেটিস রোগী বৃদ্ধির এই ঊর্ধ্বগতি পুরো স্বাস্থ্যব্যবস্থার ওপরই চাপ সৃষ্টি করছে এবং জনশক্তিকে দুর্বল করে তুলছে বলে জনস্বাস্থ্যবিদেরা অভিমত দিয়েছেন।

আন্তর্জাতিক ডায়াবেটিস ফেডারেশন (আইডিএফ) জানিয়েছে, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া অঞ্চলে বর্তমানে প্রায় ১০ কোটি ৭০ লাখ মানুষ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত। ২০৫০ সালে এ সংখ্যা বেড়ে সাড়ে ১৮ কোটিতে পৌঁছাবে। এখন বাংলাদেশে ১১ কোটি ৩০ লাখ প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের মধ্যে প্রায় ১৩ শতাংশই ডায়াবেটিসে আক্রান্ত। অর্থাৎ প্রায় ১ কোটি ৩৮ লাখ ৭৭ হাজার মানুষ এ রোগে ভুগছেন।

সরকারের স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের বার্ষিক প্রকাশনা ‘হেলথ বুলেটিন’-এর সর্বশেষ সংস্করণে বলা হয়েছে, দেশে অসংক্রামক রোগগুলো এখন প্রধান অসুস্থতা ও মৃত্যুর কারণ হয়ে উঠেছে। এর মধ্যে প্রধান রোগগুলো হলো ডায়াবেটিস, হৃদ্‌রোগ, ক্যানসার এবং ফুসফুসের সমস্যাসহ শ্বাসতন্ত্রের বিভিন্ন অসুখ (সিওপিডি)। দেশে মোট মৃত্যুর ৭০ দশমিক ২৬ শতাংশই ঘটছে অসংক্রামক রোগের কারণে। আবার অসংক্রামক রোগের মোট মৃত্যুর মধ্যে ৩৪ শতাংশ হৃদ্‌রোগ, ১৪ শতাংশ ক্যানসার, ৭ শতাংশ সিওপিডি, ৪ শতাংশ ডায়াবেটিস, ১১ শতাংশ অন্যান্য অসংক্রামক রোগ, ২৩ শতাংশ সংক্রামক রোগ এবং ৭ শতাংশ আঘাতের কারণে ঘটছে।

ডায়াবেটিস একটি হরমোন-সংক্রান্ত রোগ। মানবদেহের অগ্ন্যাশয় ইনসুলিন নামের হরমোনটি পর্যাপ্ত পরিমাণে তৈরি করতে ব্যর্থ হলে বা দেহে উৎপন্ন ইনসুলিন ঠিকমতো কাজ না করলে রক্তে শর্করার (সুগার) মাত্রা নিয়ন্ত্রিত থাকে না। এ অবস্থাই হলো ডায়াবেটিস। বারবার মূত্রত্যাগ করা অন্যতম বৈশিষ্ট্য বলে এর বাংলা নাম বহুমূত্র। সাধারণত চার ধরনের ডায়াবেটিস রয়েছে—টাইপ-১, টাইপ-২, গর্ভকালীন এবং অন্যান্য। টাইপ-১ ডায়াবেটিসে অগ্ন্যাশয় ইনসুলিন উৎপাদন করতে প্রায় সম্পূর্ণ ব্যর্থ হয়। তাই রোগীকে জীবনধারণের জন্য অবশ্যই ইনসুলিন নিতে হয়। আর টাইপ-২ ডায়াবেটিসে দেহে উৎপন্ন ইনসুলিন ঠিকমতো কাজ করে না।

জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, অনিয়ন্ত্রিত খাদ্যাভ্যাস, অস্বাস্থ্যকর জীবনাচার, ভেজাল খাদ্য ও দূষণের কারণে দেশে বিভিন্ন অসংক্রামক রোগ বাড়ছে। এর মধ্যে ডায়াবেটিস ও উচ্চ রক্তচাপই সবচেয়ে বেশি। ডায়াবেটিস রোগী যদি উচ্চ রক্তচাপে আক্রান্ত হন তবে, তাঁর কিডনি জটিলতা, অন্ধত্ব ও অন্যান্য গুরুতর সমস্যার ঝুঁকি বেড়ে যায়।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সাবেক মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. শাহ মনির হোসেন বলেন, ডায়াবেটিস বেশির ভাগ ক্ষেত্রে বংশগত। কিছু ক্ষেত্রে স্থূলতার কারণেও হয়ে থাকে। ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য যেমন শারীরিক কার্যক্রম বাড়ানো প্রয়োজন, তা নগর জীবনে যথাযথভাবে করা সম্ভব হচ্ছে না। ঢাকা বা অন্যান্য বড় শহরে হাঁটার জন্য পর্যাপ্ত জায়গা নেই।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ডেঙ্গুতে শিশুসহ ৩ জনের মৃত্যু, হাসপাতালে ভর্তি ৮৩৩

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

সারা দেশে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে শিশুসহ তিনজনের মৃত্যু হয়েছে। একই সময়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে ৮৩৩ জন।

আজ বৃহস্পতিবার (১৩ নভেম্বর) স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুম থেকে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়। বিজ্ঞপ্তিতে গতকাল বুধবার সকাল ৮টা থেকে আজ সকাল ৮টা পর্যন্ত তথ্য জানিয়েছে অধিদপ্তর।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, গত এক দিনে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে ৮৩৩ জন রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। তাদের মধ্যে বরিশাল বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ১১৩, চট্টগ্রাম বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ১১৯, ঢাকা বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ১৫৮ , ঢাকা উত্তর সিটিতে ১৬৭, ঢাকা দক্ষিণ সিটিতে ১১৬, ময়মনসিংহ বিভাগে ৭৭ (সিটি করপোরেশনের বাইরে), রাজশাহী বিভাগে ৬৫ (সিটি করপোরেশনের বাইরে), রংপুর বিভাগে ১২ (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ও সিলেট বিভাগে ৬ জন (সিটি করপোরেশনের বাইরে) নতুন রোগী ভর্তি হয়েছে।

এদিকে গত এক দিনে সারা দেশে ৮৫৯ জন ডেঙ্গু রোগী হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র পেয়েছে। এ নিয়ে চলতি বছর ছাড়পত্র পেয়েছে ৭৮ হাজার ৮৪৮ জন।

২৪ ঘণ্টায় মারা যাওয়া তিনজনের মধ্যে এক বছরের মেয়ে শিশু রয়েছে। সে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিল। বাকি দুজন পুরুষ। তাঁদের বয়স যথাক্রমে ৪০ ও ৬০ বছর।

এ বছরের জানুয়ারি থেকে এখন পর্যন্ত সব মিলিয়ে ৮২ হাজার ৬০৬ জন রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। চলতি বছর এখন পর্যন্ত ডেঙ্গুতে মৃত্যু হয়েছে ৩২৬ জনের।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

জাতীয় ফিজিক্যাল মেডিসিন অ্যান্ড রিহ্যাবিলিটেশন দিবস

মেডিসিন ও ফিজিওথেরাপির সমন্বিত চিকিৎসা পদ্ধতি প্রয়োজন: মুহাম্মদ তসলিম উদ্দিন

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ১৩ নভেম্বর ২০২৫, ০০: ৫৪
আজ বুধবার দুপুরে রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবে জাতীয় ফিজিক্যাল মেডিসিন অ্যান্ড রিহ্যাবিলিটেশন দিবস উপলক্ষে সংবাদ সম্মেলন। ছবি: আজকের পত্রিকা
আজ বুধবার দুপুরে রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবে জাতীয় ফিজিক্যাল মেডিসিন অ্যান্ড রিহ্যাবিলিটেশন দিবস উপলক্ষে সংবাদ সম্মেলন। ছবি: আজকের পত্রিকা

দেশে প্রতিবছর স্ট্রোক, হার্ট অ্যাটাক, পক্ষাঘাতগ্রস্ত কিংবা শারীরিক প্রতিবন্ধকতায় অনেকে আক্রান্ত হচ্ছে। তবে শুধু হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়ে এসব রোগী স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসতে পারছে না। মেডিসিনের পাশাপাশি ফিজিওথেরাপির মাধ্যমে তাদের সুস্থ করে স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে আনা সম্ভব।

আজ বুধবার দুপুরে রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবে জাতীয় ফিজিক্যাল মেডিসিন অ্যান্ড রিহ্যাবিলিটেশন দিবস উপলক্ষে বাংলাদেশ সোসাইটি অব ফিজিক্যাল মেডিসিন অ্যান্ড রিহ্যাবিলিটেশন আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন ফিজিক্যাল মেডিসিন ও রিহ্যাবিলিটেশন বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. মুহাম্মদ তসলিম উদ্দিন।

সংবাদ সম্মেলনে সভাপতির বক্তব্যে মুহাম্মদ তসলিম উদ্দিন বলেন, ‘আমাদের গড় আয়ু বাড়ছে। ব্যথা-বেদনায় কর্মক্ষমতা কমে যাচ্ছে। এতে শুধু ওষুধ দিয়ে কাজ হবে না। তিনটা রোগে ৭০ শতাংশ মানুষ মারা যায়। স্ট্রোক, হার্ট অ্যাটাক ও ক্রনিক ডিজিজ। এসবের সঠিক চিকিৎসাপদ্ধতি নির্ধারণ করতে পারলে রোগীকে আবার স্বনির্ভর ও কার্যকর জীবনে ফিরিয়ে আনা সম্ভব।’

মুহাম্মদ তসলিম উদ্দিন আরও বলেন, ‘ইউএন বলছে, বাংলাদেশে প্রতি সাতজনে একজনের মধ্যে কোনো না কোনোভাবে প্রতিবন্ধকতা রয়েছে। আমরা চাই, যে প্রতিষ্ঠানে এমন রোগীদের চিকিৎসা হবে, সেই একই প্রতিষ্ঠানে তাকে ফিজিওথেরাপি দিয়ে একেবারে সুস্থ করে বাড়ি ফিরতে দেওয়া হবে।’

মুহাম্মদ তসলিম উদ্দিন বলেন, বাংলাদেশে রিহ্যাবিলিটেশন নার্স তৈরি করা হবে—এমন কোনো কোর্সই নেই। শুধু চিকিৎসক থাকলে হবে না, ফিজিওথেরাপিস্ট থাকতে হবে। রিহ্যাবিলিটেশন নার্স তৈরি করতে হবে। এর জন্য আইন, পলিসি ও গভর্ন্যান্স দরকার। প্রত্যেক মানুষেরই এখন কোনো না কোনো সমস্যা থাকে, যা ফিজিওথেরাপির সঙ্গে সম্পৃক্ত।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, এবারের ফিজিক্যাল মেডিসিন অ্যান্ড রিহ্যাবিলিটেশন দিবসের প্রতিপাদ্য ‘সমন্বিত পুনর্বাসনে চাই সম্মিলিত প্রচেষ্টা’। দিবসটি উপলক্ষে আগামীকাল বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে সকাল সাড়ে ৮টায় র‍্যালি অনুষ্ঠিত হবে। এ ছাড়া সকাল সাড়ে ১০টায় আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হবে।

সংবাদ সম্মেলনের লিখিত বক্তব্যে এম এ কে আজাদ বলেন, একটি দেশ তখনই প্রকৃত অর্থে উন্নত দেশ হিসেবে বিবেচিত হয়, যখন সেখানে প্রতিবন্ধী মানুষের সংখ্যা কম, প্রতিবন্ধিতা প্রতিরোধের সব ব্যবস্থা বিদ্যমান থাকে এবং যেসব ব্যক্তি প্রতিবন্ধী, তাঁদের চিকিৎসা, পুনর্বাসন ও জীবনযাপনের প্রতিটি ক্ষেত্রে পূর্ণ সহায়তা ও সুযোগ নিশ্চিত করা হয়।

এ ছাড়া তিনি দেশের প্রতিটি সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে ফিজিক্যাল মেডিসিন ও রিহ্যাবিলিটেশন ইউনিটকে শক্তিশালী করা; পর্যাপ্ত প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত রিহ্যাবিলিটেশন জনবল নিয়োগ এবং জনসচেতনতা বাড়ানো; বিদ্যমান আইনকে কার্যকর, নতুন আইন প্রণয়ন ও নীতিমালা বাস্তবায়নে তৎপরতা বাড়ানো; সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয়, জেলা-উপজেলা প্রশাসন, এসএনজিও ও সিভিল সোসাইটির একসঙ্গে কাজ করা এবং স্কুল, কলেজ, কর্মক্ষেত্র, সড়ক-পরিবহন ইত্যাদি সর্বত্র প্রতিবন্ধীবান্ধব ইউনিভার্সাল ডিজাইনের মান মেনে তৈরির দাবি জানান।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত