Ajker Patrika

বাংলাদেশে কোভিড ও মাদকনীতির প্রভাব নিয়ে গবেষণা, বড় তহবিল পেলেন কানাডার গবেষকেরা

আপডেট : ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১৪: ৫৯
ড. জাহিদ বাট ও ড. জিওফ বার্ডওয়েল। ছবি: সংগৃহীত
ড. জাহিদ বাট ও ড. জিওফ বার্ডওয়েল। ছবি: সংগৃহীত

বাংলাদেশসহ নিম্ন ও মধ্যম আয়ের দেশগুলোতে লং কোভিড শনাক্তকরণ ও ব্যবস্থাপনার কৌশল উন্নয়ন এবং ছোট শহর ও গ্রামীণ এলাকায় মাদকনীতির পরিবর্তনের প্রভাব নিয়ে গবেষণার জন্য কানাডিয়ান ইনস্টিটিউটস অব হেলথ রিসার্চ (সিআইএইচআর) থেকে দুই গবেষক তহবিল পেয়েছেন। কানাডার ওয়াটারলু ইউনিভার্সিটির স্কুল অব পাবলিক হেলথ সায়েন্সেস-এর গবেষক ড. জিওফ বার্ডওয়েল এবং ড. জাহিদ বাট এই দুটি গবেষণা পরিচালনা করবেন।

বাংলাদেশে লং কোভিড চিহ্নিতকরণ ও ব্যবস্থাপনার কৌশল

ওয়াটারলু ইউনিভার্সিটির গবেষক ড. জাহিদ বাটের গবেষণা প্রকল্প ‘বাংলাদেশে লং কোভিড: নিম্ন ও মধ্যম আয়ের দেশ এবং স্বল্প সম্পদযুক্ত স্বাস্থ্য ব্যবস্থায় পোস্ট-কোভিড সিনড্রোম চিহ্নিতকরণ ও ব্যবস্থাপনার কৌশল উন্নয়ন’ সিআইএইচআর-এর প্রতিযোগিতায় এক বছরের জন্য ১ লাখ ডলার অনুদান পেয়েছে।

এই বিষয়ে ড. বাট বলেন, ‘লং কোভিড সংক্রান্ত গবেষণার বেশির ভাগই উচ্চ-আয়ের দেশগুলোতে পরিচালিত হয়েছে। তবে, নিম্ন ও মধ্যম আয়ের দেশগুলোতে ভিন্ন ভিন্ন অর্থনৈতিক ও সামাজিক বাস্তবতা থাকায়, এই গবেষণাগুলোর ফলাফল সবক্ষেত্রে কার্যকর নাও হতে পারে।’

গবেষণাটিতে নমুনা হিসেবে বাংলাদেশের একটি উপজেলায় কোভিড-১৯ পরীক্ষিত সব ব্যক্তিকে নেওয়া হবে। এরপর বিশ্বব্যাপী স্বীকৃত জনমিতি ও স্বাস্থ্য পর্যবেক্ষণ ব্যবস্থা ব্যবহার করে ওই অঞ্চলে লং কোভিড কীভাবে প্রভাব ফেলছে তা বিশ্লেষণ করা হবে।

এ গবেষণায় শুধু স্বাস্থ্যগত প্রভাব নয়, বরং অর্থনৈতিক প্রভাব, যেমন—জীবন-জীবিকা ব্যাহত হওয়া, আয়ের ক্ষতিসহ অন্যান্য দিকেও গুরুত্ব দেওয়া হবে। গবেষণার ফলাফল ‘পোস্ট-কোভিড সিনড্রোমের’ প্রাথমিক পর্যায়ে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণে সহায়তা করবে এবং মহামারির দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব কমাতে ভূমিকা রাখবে বলে আশাবাদী ড. বাট।

এই গবেষণার মাধ্যমে এই খাতে কানাডার গবেষণা অংশীদারত্ব আরও দৃঢ় হবে এবং এটি ভবিষ্যতে বিশ্বব্যাপী জরুরি স্বাস্থ্য অবস্থা মোকাবিলায় প্রস্তুতি ও প্রতিক্রিয়ার দক্ষতা বৃদ্ধি করবে।

এই প্রকল্পের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট গবেষকেরা হলেন ড. শ্যানন মাজোভিচ, ড. ক্রেইগ জেনস এবং ড. পিটার হল। তাঁরা তিনজনই ওয়াটারলু ইউনিভার্সিটির গবেষক। এ ছাড়া, বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক উদরাময় গবেষণা কেন্দ্রের—আইসিডিডিআর, বি-এর গবেষকেরাও এতে অংশ নিচ্ছেন। তাঁরা হলেন—মো. আতিক ইকবাল চৌধুরী, মোহাম্মদ জাহিদ হোসেন, ফারজানা আফরোজ, আশরাফুল আলম, শামসুল আরেফিন, মোহাম্মদ জোবায়ের চিশতি, কাজী মুনিসুল ইসলাম এবং আফরুনা রহমান।

ছোট শহর ও গ্রামীণ এলাকায় মাদক নীতির পরিবর্তনের প্রভাব সংক্রান্ত গবেষণা

মাদকনীতি সংক্রান্ত আরেকটি গবেষণাও সিআইএইচআর তহবিল পেয়েছে। এই গবেষণায় ছোট শহর ও গ্রামীণ এলাকায় মাদক নীতির পরিবর্তনের প্রভাব কেমন তা যাচাই করা হবে। এই গবেষণায় নেতৃত্ব দিচ্ছেন ওয়াটারলুর আরেক গবেষক ড. জিওফ বার্ডওয়েল।

বার্ডওয়েলের প্রকল্পের নাম ‘অবৈধ মাদকের ব্যবহারের প্রতিক্রিয়ায় পুলিশের আচরণের কারণে সম্প্রদায়ের স্বাস্থ্যগত প্রভাব: ছোট শহর ও গ্রামীণ সম্প্রদায়ে পুলিশ নীতির পরিবর্তন ও কার্যক্রম বিশ্লেষণের জন্য একটি মিশ্র-পদ্ধতির গবেষণা।’ এই প্রকল্পটি চার বছরের জন্য ৬ লাখ ৬৪ হাজার ডলার অনুদান পেয়েছেন। এ ছাড়া বার্ডওয়েল গত বছর ব্রিজ ফান্ডিং হিসেবে আরও ১ লাখ ডলার পেয়েছিলেন।

বার্ডওয়েল বলেন, ‘মাদকের ব্যবহার সংক্রান্ত অধিকাংশ গবেষণা বড় শহরগুলোর ওপর কেন্দ্রীভূত। কিন্তু, ছোট শহর ও গ্রামীণ এলাকাগুলোর বাস্তবতা বোঝার জন্য গবেষণা হওয়া জরুরি, যাতে ওয়াটারলু অঞ্চলে এবং অনুরূপ অন্যান্য এলাকায় নীতি নির্ধারণ ও মাদক নিয়ন্ত্রণ কৌশল প্রণয়ন করা যায়।’

তিনি আরও বলেন, ‘বর্তমানে মাদক ব্যবহারের বিষয়টি অপরাধ নয়, বরং একটি স্বাস্থ্য সমস্যা হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। মাদক গ্রহণের বিষয়টিকে অপরাধীকরণের ফলে নেতিবাচক স্বাস্থ্যগত প্রভাব পড়ে এবং সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ওয়াটারলু রিজিয়ন পুলিশ সার্ভিস মাদক সংক্রান্ত অপরাধকে কম গুরুত্ব দিচ্ছে। ফলে, মাদকদ্রব্য দখলের অভিযোগ ৫০ শতাংশ হ্রাস পেয়েছে।’

বার্ডওয়েলের গবেষণা ২০১৬ থেকে ২০২৬ সাল পর্যন্ত পুলিশের মাদক সংক্রান্ত কার্যক্রমের পরিবর্তনের প্রভাব মূল্যায়ন করবে এবং জনসংখ্যা ও ভৌগোলিক অবস্থানের ভিত্তিতে পুলিশের হস্তক্ষেপে কী ধরনের বৈচিত্র্য দেখা যাচ্ছে, তাও বিশ্লেষণ করবে।

এ গবেষণা প্রকল্পে বার্ডওয়েলের সঙ্গে রয়েছেন ড. ক্রিস পার্লম্যান ও ড. জেন ল। তাঁরাও ওয়াটারলু ইউনিভার্সিটির। এ ছাড়া টরন্টো ইউনিভার্সিটির ড. ক্যারল স্ট্রাইকও আছেন তাঁদের সঙ্গে। প্রকল্পটি ওয়াটারলু রিজিয়ন পুলিশ সার্ভিস, রিজিয়ন অব ওয়াটারলু পাবলিক হেলথ অ্যান্ড প্যারামেডিক সার্ভিসেস, ওয়াটারলু রিজিয়ন ইন্টিগ্রেটেড ড্রাগ স্ট্র্যাটেজি, ওয়াটারলু রিজিয়ন ড্রাগ অ্যাকশন টিম, ড্রাগ স্ট্র্যাটেজি নেটওয়ার্ক অব অন্টারিও এবং পিভট লিগ্যাল সোসাইটির সঙ্গে যৌথভাবে পরিচালিত হবে।

দুই গবেষণাই গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলবে বাংলাদেশে

বাংলাদেশসহ অন্যান্য নিম্ন ও মধ্যম আয়ের দেশে লং কোভিড শনাক্তকরণ এবং ছোট শহর ও গ্রামীণ এলাকায় মাদক সংক্রান্ত পুলিশের ভূমিকা পরিবর্তনের স্বাস্থ্যগত প্রভাব বিশ্লেষণ—উভয় গবেষণাই গুরুত্বপূর্ণ নীতি নির্ধারণ ও বাস্তবসম্মত সমাধান প্রণয়নে ভূমিকা রাখবে। বিশ্ব জরুরি স্বাস্থ্য অবস্থার প্রস্তুতি, মাদক নীতির পরিবর্তন এবং জনস্বাস্থ্য রক্ষার ক্ষেত্রে এই গবেষণাগুলো ভবিষ্যতের জন্য পথপ্রদর্শক হতে পারে।

উল্লেখ্য, কোভিড-১৯ সংক্রমণ থেকে সেরে ওঠার পরেও কিছু মানুষের মধ্যে বেশ কিছু উপসর্গ দেখা যায়, যা কয়েক সপ্তাহ, মাস বা এমনকি বছর ধরেও থাকতে পারে। সহজ ভাষায় বলতে গেলে, কোভিড-১৯ হওয়ার পরে কিছু মানুষের শরীর পুরোপুরি আগের মতো সুস্থ হতে সময় নেয় এবং কিছু সমস্যা লেগে থাকে—এই সমস্যাগুলোকেই সাধারণভাবে লং কোভিড বলা হয়।

লং কোভিড কাদের হতে পারে?

যাদের কোভিড-১৯ এর সংক্রমণ হয়েছে, তাদের মধ্যে যে কারও লং কোভিড হতে পারে। এমনকি যাদের মৃদু উপসর্গ ছিল বা হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার প্রয়োজন হয়নি, তাদেরও লং কোভিড হতে পারে। বে, যাদের কোভিড-১৯ এর সংক্রমণ গুরুতর ছিল, বিশেষ করে যারা হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন, তাদের মধ্যে লং কোভিড হওয়ার ঝুঁকি তুলনামূলকভাবে বেশি থাকে।

লং কোভিড এর উপসর্গগুলো কী কী?

লং কোভিডের উপসর্গগুলো ব্যক্তিভেদ ভিন্ন হতে পারে এবং শরীরের বিভিন্ন অঙ্গকে প্রভাবিত করতে পারে। কিছু সাধারণ উপসর্গ নিচে উল্লেখ করা হলো—ক্লান্তি বা অবসাদ: অতিরিক্ত দুর্বল লাগা, সামান্য কাজ করলেই হাঁপিয়ে যাওয়া, যা বিশ্রাম নেওয়ার পরেও কমতে চায় না। শ্বাসকষ্ট: শ্বাস নিতে কষ্ট হওয়া, বুক ভারী লাগা, দমবন্ধ ভাব হওয়া। দীর্ঘস্থায়ী কাশি, যা সহজে সারতে চায় না। ঘন ঘন বা একটানা মাথাব্যথা। স্মৃতিশক্তি ও মনোযোগের সমস্যা বা ব্রেইন ফগ। অর্থাৎ মনে রাখতে অসুবিধা হওয়া, মনোযোগ দিতে সমস্যা হওয়া, সবকিছু যেন ঘোলাটে লাগে।

এ ছাড়া, গন্ধ ও স্বাদের পরিবর্তন: গন্ধ বা স্বাদ কমে যাওয়া বা পাল্টে যাওয়া, যা কোভিড সেরে যাওয়ার পরেও দীর্ঘ সময় ধরে থাকতে পারে। পেশি ও শরীরে সন্ধিস্থলগুলোতে ব্যথা, বুক ধড়ফড় করা, ঘুমের সমস্যা, পেটের সমস্যা ও মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যা উল্লেখযোগ্য।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

আসিফের ফেসবুক পেজ রিমুভ করা হয়েছে, সংঘবদ্ধ রিপোর্টের অভিযোগ

আজকের রাশিফল: মানিব্যাগের দশা মরুভূমি, প্রেমের দুনিয়ায়ও দুর্ভিক্ষ

ছয় মাসের পরিচয়ে বিবাহিতাকে বিয়ের প্রস্তাব, প্রত্যাখ্যান করায় গুলি

সখীপুরে নিখোঁজের ৭ ঘণ্টা পর বন থেকে উদ্ধার শিশুটি মারা গেছে

অরুণাচলকে চীনের ‘মূল স্বার্থ’ বলছে পেন্টাগন, ভিত্তিহীন বলে প্রত্যাখ্যান বেইজিংয়ের

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

কিডনি রোগীর বন্ধু কামরুল

  • নিজের হাতে ২০০০তম কিডনি প্রতিস্থাপন।
  • নিজে কোনো পারিশ্রমিক নেন না ডা. কামরুল।
  • কিডনি প্রতিস্থাপন ২ লাখ ১৫ হাজার টাকায়।
মুহাম্মাদ শফিউল্লাহ, ঢাকা
আপডেট : ২৪ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৯: ২৫
অধ্যাপক কামরুল ইসলাম।
অধ্যাপক কামরুল ইসলাম।

বাংলাদেশে যেখানে কিডনি প্রতিস্থাপন এখনো সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরে, সেখানে অসহায় ও দরিদ্র রোগীদের শেষ ভরসা হয়ে উঠেছেন কিডনির শল্যচিকিৎসক অধ্যাপক কামরুল ইসলাম। দেশে যত কিডনি প্রতিস্থাপিত হয়, সেগুলোর একটি বড় অংশই করেন তিনি। নিজের প্রতিষ্ঠিত সেন্টার ফর কিডনি ডিজিজেস অ্যান্ড ইউরোলজি (সিকেডি) হাসপাতালে গতকাল মঙ্গলবার তিনি ২০০০তম কিডনি প্রতিস্থাপন সম্পন্ন করেছেন। ব্যয়বহুল এই শল্য-চিকিৎসায় নিজে কোনো পারিশ্রমিক নেন না ২০২২ সালে স্বাধীনতা পদকপ্রাপ্ত এই চিকিৎসক।

কিডনি ফাউন্ডেশনের তথ্য অনুসারে, বাংলাদেশে কিডনি রোগের পরিস্থিতি উদ্বেগজনক। প্রায় ২ কোটি মানুষ কিডনির কোনো না কোনো সমস্যায় ভুগছেন। দেশে প্রতি ঘণ্টায় প্রায় পাঁচজন রোগীর মৃত্যু হচ্ছে কিডনি অকেজো হয়ে। কিডনি প্রতিস্থাপন সীমিত এবং ডায়ালাইসিস ব্যয়বহুল। ফলে অধিকাংশ রোগী চিকিৎসা না পেয়ে মারা যান। তবে প্রাথমিক পর্যায়ে শনাক্ত ও চিকিৎসা নিলে ৬০ শতাংশ রোগীর জীবন রক্ষা সম্ভব।

কামরুল ইসলামের জন্ম ১৯৬৫ সালে। মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিকে বোর্ডের মেধাতালিকায় যথাক্রমে ১৫তম ও ১০তম স্থান লাভ করেছিলেন তিনি। এরপর ঢাকা মেডিকেল কলেজের ৪০তম ব্যাচের শিক্ষার্থী হিসেবে ১৯৯০ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত মেডিকেল কলেজের মধ্যে সম্মিলিত এমবিবিএস পরীক্ষায় প্রথম স্থান অর্জন করে স্বর্ণপদক পান। এরপর ১৯৯৫ সালে এফসিপিএস, ২০০০ সালে বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইউরোলজিতে এমএস এবং ২০০৩ সালে ইংল্যান্ডের রয়েল কলেজ থেকে এফআরসিএস ডিগ্রি অর্জন করেন তিনি।

ডা. কামরুলের কর্মজীবন শুরু ১৯৯৩ সালে, বিসিএসের মাধ্যমে স্বাস্থ্য ক্যাডারে যোগ দিয়ে। ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব কিডনি ডিজিজেস অ্যান্ড ইউরোলজি হাসপাতালে সহযোগী অধ্যাপক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন তিনি এবং ২০০৭ সালে প্রথম সফল কিডনি প্রতিস্থাপন সম্পন্ন করেন। ২০১১ সালে সরকারি চাকরি ছেড়ে বেসরকারি একটি মেডিকেল কলেজে অধ্যাপক পদে দায়িত্ব নেন। পরে ২০১৪ সালে নিজ উদ্যোগে রাজধানীর শ্যামলীতে সিকেডি হাসপাতাল প্রতিষ্ঠা করেন।

সিকেডি সূত্রে জানা যায়, বর্তমানে ডা. কামরুলের নেতৃত্বে সপ্তাহে ছয়টি কিডনি প্রতিস্থাপন করা হয়। কিডনি দাতা ও গ্রহীতার জন্য একই সঙ্গে দুটি কক্ষে অস্ত্রোপচার চলে। প্রতিটি অস্ত্রোপচারে সাধারণত ১০-১২ জন চিকিৎসক অংশ নেন। যাঁদের মধ্যে থাকেন অবেদনবিদ, কিডনি বিশেষজ্ঞ, ইউরোলজির শল্যচিকিৎসকসহ অন্যান্য বিশেষজ্ঞ, পাশাপাশি নার্স ও টেকনোলজিস্ট।

ডা. কামরুল বলেন, সিকেডিতে প্রতিদিন গড়ে একটি কিডনি প্রতিস্থাপিত হয়। প্রতিটি অস্ত্রোপচারে ১০-১২ জন চিকিৎসক কাজ করেন। তিনি নিজে পারিশ্রমিক নেন না, তবে অস্ত্রোপচারে আনুষঙ্গিক খরচ থাকে। তাঁর হাসপাতালে কিডনি প্রতিস্থাপনের প্যাকেজ এখন ২ লাখ ১৫ হাজার টাকা। যার মধ্যে অস্ত্রোপচার, ওষুধ, আইসিইউ এবং অন্যান্য খরচ অন্তর্ভুক্ত। কিডনি দাতা সাধারণত ৩ থেকে ৭ দিন এবং কিডনি গ্রহীতা ৭ থেকে ১০ দিন হাসপাতালে থাকেন।

হাসপাতালের অন্যান্য সার্জারি ও চিকিৎসাসেবার আয়ের অর্থে কিডনি প্রতিস্থাপনের খরচের পুরো প্রক্রিয়া চালানো হয়। সেখানে প্রতিদিন ৭-১২টি কিডনি স্টোন সার্জারি, কিডনি ক্যানসার, প্রস্টেট ক্যানসারসহ অন্যান্য সার্জারি করা হয়। হাসপাতালে বর্তমানে চিকিৎসক, নার্স, টেকনোলজিস্টসহ কর্মকর্তা-কর্মচারীর সংখ্যা চার শতাধিক। আউটডোরে প্রতিদিন ২৫০-৩০০ রোগী, ইনডোরে প্রায় ১০০ রোগী সেবা নেন। ১০০ শয্যার হাসপাতালটিতে আরও ৫০ শয্যা বাড়ানোর জন্য আবেদন করা হয়েছে।

চলতি বছরের জানুয়ারিতে সিকেডি হাসপাতালে কিডনি প্রতিস্থাপন করেছেন সাতক্ষীরা সদর উপজেলার বাসিন্দা মাইনুল রহমান। ৪৪ বছর বয়সী এই ব্যবসায়ীর কিডনি অকেজো হয়ে গেলে স্ত্রীর দেওয়া কিডনি নিয়ে তাঁর শরীরে প্রতিস্থাপন করা হয়। ডা. কামরুল ইসলাম এই অস্ত্রোপচার করেন।

কিডনি প্রতিস্থাপনে সিকেডি হাসপাতাল সোয়া দুই লাখ টাকা নিয়েছে জানিয়ে মাইনুল রহমান গতকাল সন্ধ্যায় আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘সিকেডি হাসপাতাল যদি অন্য হাসপাতালের মতো খরচ নিত, তাহলে আমরা তা বহন করতে পারতাম না। এখন প্রতি মাসে ফলোআপ চিকিৎসা প্রয়োজন হয়। সেখানে গেলে সবকিছু বিনা মূল্যে পাওয়া যায়। পরীক্ষা-নিরীক্ষা ও চিকিৎসকের ফি দিতে হয় না।’

এর আগে ২০২৩ সালের অক্টোবরে স্ত্রীর দেওয়া কিডনি নিজের শরীরে প্রতিস্থাপন করেন নারায়ণগঞ্জের ৩৭ বছর বয়সী আবু বকর। তিনি বলেন, ‘ডা. কামরুল স্যার খুবই মানবিক। আমরা খরচের ভয়ে চিকিৎসায় যেতে চাইনি। তিনি কয়েকবার ফোন করে আমাদের খোঁজ নিয়েছেন, তিনি কিডনি বসিয়ে দিয়েছেন।’

ডা. কামরুল জানান, কিডনি প্রতিস্থাপন করা রোগীরা বাসায় গেলে প্রথম এক থেকে দুই বছর অত্যন্ত সতর্ক থাকতে হয়; বিশেষ করে ওষুধ ঠিকমতো না খাওয়া, সময়মতো ডোজ না নেওয়া এবং অনিয়মিত জীবনধারা ঝুঁকি বাড়ায়। আবার রোগীরা খরচের ভয়ে ফলোআপ চিকিৎসায় আসতে চান না। ফলে তাঁদের এসব চিকিৎসা আজীবন বিনা মূল্যে করেন তিনি।

ডা. কামরুলের স্ত্রীও একজন চিকিৎসক। তিনি বর্তমানে শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে কর্মরত। তাঁদের তিন মেয়ে। বড় মেয়ে শিক্ষানবিশ চিকিৎসক, মেজ মেয়ে এমবিবিএস অধ্যয়ন করছেন।

নিজের প্রতিষ্ঠিত সিকেডি হাসপাতালকে ‘বড় গাছের মতো’ দেখেন ডা. কামরুল ইসলাম। যেখানে আয়ের একটি অংশ দরিদ্র রোগী ও কিডনি প্রতিস্থাপনে ব্যয় করা হয়। তিনি বলেন, ‘মানুষকে নিখুঁত চিকিৎসা দেওয়া আমার কর্তব্য। আমি কিডনি রোগীদের খরচ হাসপাতালের অন্যান্য আয়ের মাধ্যমে বহন করি। এটি যেকোনো হাসপাতালই করতে পারে এবং এর জন্য লোকসান হয়; তা কিন্তু নয়।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

আসিফের ফেসবুক পেজ রিমুভ করা হয়েছে, সংঘবদ্ধ রিপোর্টের অভিযোগ

আজকের রাশিফল: মানিব্যাগের দশা মরুভূমি, প্রেমের দুনিয়ায়ও দুর্ভিক্ষ

ছয় মাসের পরিচয়ে বিবাহিতাকে বিয়ের প্রস্তাব, প্রত্যাখ্যান করায় গুলি

সখীপুরে নিখোঁজের ৭ ঘণ্টা পর বন থেকে উদ্ধার শিশুটি মারা গেছে

অরুণাচলকে চীনের ‘মূল স্বার্থ’ বলছে পেন্টাগন, ভিত্তিহীন বলে প্রত্যাখ্যান বেইজিংয়ের

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

কবিরাজিসহ প্রথাগত চিকিৎসার কার্যকারিতা খতিয়ে দেখছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ২২ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৯: ৪৭
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

আফ্রিকায় ভেষজ চিকিৎসকেরা ক্ষত বা ব্যথা উপশমে গাছগাছড়া সংগ্রহ করছেন; চীনে আকুপাংচার বিশেষজ্ঞরা সুচ ব্যবহার করে মাইগ্রেন সারাচ্ছেন; আবার ভারতে যোগীরা ধ্যানচর্চা করছেন—এ ধরনের প্রথাগত চিকিৎসা পদ্ধতিগুলো ক্রমেই কার্যকর প্রমাণিত হচ্ছে এবং এগুলো আরও বেশি মনোযোগ ও গবেষণার দাবি রাখে বলে জানিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) এক কর্মকর্তা।

ডব্লিউএইচওর গ্লোবাল ট্র্যাডিশনাল মেডিসিন সেন্টারের প্রধান ডা. শ্যামা কুরুবিল্লার মতে, ঐতিহাসিকভাবে পর্যাপ্ত বৈজ্ঞানিক প্রমাণের অভাবের কারণে যেসব প্রথাগত চিকিৎসা পদ্ধতিকে অনেক সময় অবহেলা করা হয়েছে, আধুনিক প্রযুক্তি ও বিনিয়োগ বাড়লে সেই ধারণা বদলাতে পারে।

দ্য গার্ডিয়ানের প্রতিবেদনে বলা হয়, চলতি বছরের শুরুতে বিভিন্ন দেশ সম্মত হয়েছে যে আগামী এক দশকের জন্য ডব্লিউএইচও একটি নতুন বৈশ্বিক প্রথাগত চিকিৎসা কৌশল গ্রহণ করবে।

এই কৌশলের লক্ষ্য—প্রমাণভিত্তিকভাবে স্বাস্থ্য ও কল্যাণে প্রথাগত, পরিপূরক ও সমন্বিত চিকিৎসার সম্ভাবনাময় অবদানকে কাজে লাগানো।

এই কৌশলের আওতায় প্রথাগত চিকিৎসা পদ্ধতির জন্য শক্তিশালী প্রমাণভিত্তি তৈরি, চিকিৎসা ও চিকিৎসকদের নিয়ন্ত্রণ কাঠামো গড়ে তোলা এবং প্রয়োজন অনুযায়ী এসব পদ্ধতিকে আধুনিক জৈব-চিকিৎসাভিত্তিক স্বাস্থ্যব্যবস্থার সঙ্গে একীভূত করার পরিকল্পনা রয়েছে।

কুরুবিল্লা বলেন, ‘এটা ভীষণ রোমাঞ্চকর। আমি বলছি না, আমরা এখনই জানি—কোনটা কাজ করে আর কোনটা করে না। তবে এ মুহূর্তে বিষয়টি জানার বড় সুযোগ তৈরি হয়েছে।’

প্রথাগত চিকিৎসা বলতে এমন স্বাস্থ্য ও সুস্থতার ব্যবস্থাকে বোঝায়, যেগুলোর উদ্ভব আধুনিক বায়োমেডিসিনের আগেই হয়েছে। এসব চিকিৎসা পদ্ধতির ধরন নানাবিধ—ভেষজ চা থেকে শুরু করে ভারতের আয়ুর্বেদিক চিকিৎসাব্যবস্থা পর্যন্ত।

কুরুবিল্লা বলেন, শত শত বছর ধরে চলে আসা এসব পদ্ধতির মধ্যে অনেকগুলোরই বিশাল সম্ভাবনা রয়েছে। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, জিনোমিক্স ও মস্তিষ্ক স্ক্যানসহ আধুনিক প্রযুক্তির মাধ্যমে এখন সেগুলো নতুনভাবে অনুসন্ধান করা সম্ভব।

তাঁর মতে, প্রথাগত চিকিৎসা গ্রহণের ক্ষেত্রে থাইল্যান্ড ভালো উদাহরণ। দেশটিতে গবেষকেরা প্রথাগত চিকিৎসা পদ্ধতি পর্যবেক্ষণ ও নথিবদ্ধ করছেন এবং ভেষজ চিকিৎসাকে প্রয়োজনীয় ওষুধের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করতে পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালাচ্ছেন। গত মে মাসে থাইল্যান্ডের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় পেশির ব্যথা ও কোষ্ঠকাঠিন্যসহ কিছু রোগের ক্ষেত্রে চিকিৎসকদের আধুনিক ওষুধের বদলে প্রথাগত চিকিৎসা ব্যবহারের সুপারিশ করেছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

আসিফের ফেসবুক পেজ রিমুভ করা হয়েছে, সংঘবদ্ধ রিপোর্টের অভিযোগ

আজকের রাশিফল: মানিব্যাগের দশা মরুভূমি, প্রেমের দুনিয়ায়ও দুর্ভিক্ষ

ছয় মাসের পরিচয়ে বিবাহিতাকে বিয়ের প্রস্তাব, প্রত্যাখ্যান করায় গুলি

সখীপুরে নিখোঁজের ৭ ঘণ্টা পর বন থেকে উদ্ধার শিশুটি মারা গেছে

অরুণাচলকে চীনের ‘মূল স্বার্থ’ বলছে পেন্টাগন, ভিত্তিহীন বলে প্রত্যাখ্যান বেইজিংয়ের

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

শীতে খিচুড়ি কেন খাবেন

ফিচার ডেস্ক
আপডেট : ২০ ডিসেম্বর ২০২৫, ১১: ১৮
শীতে খিচুড়ি কেন খাবেন

শীতের সকাল কিংবা সন্ধ্যায় ধোঁয়া ওঠা এক বাটি খিচুড়ির চেয়ে আরামদায়ক আর কী হতে পারে। খিচুড়ি শুধু একটি খাবার নয়। শীতকাল মানে আরাম করে হরেক রকমের সবজি দিয়ে রান্না করা খিচুড়ি খাওয়া। এতে যেমন মন ভরে, তেমনি পুষ্টিগুণে ভরপুর এ খাবার রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বাড়াতে সহায়তা করে। এ ছাড়া এটি শরীরে বিভিন্ন উপাদানের ভারসাম্য বজায় রাখতেও সহায়ক। শীতকালীন ক্লান্তি দূর করতে এবং ঋতু পরিবর্তনের অসুস্থতা থেকে বাঁচতে খিচুড়ি একটি আদর্শ খাবার। এটি সহজে হজম হয়।

কেন খাবেন খিচুড়ি

পুষ্টিবিদদের পরামর্শ অনুযায়ী, খিচুড়ির প্রতিটি উপাদান আমাদের শরীরের জন্য বিশেষভাবে উপকারী। এতে থাকা চাল থেকে পাওয়া যায় পর্যাপ্ত শর্করা ও শক্তি। ডাল জোগায় প্রোটিন ও আঁশ, যা হজমে বিশেষভাবে সাহায্য করে। ঘি শরীরের তাপমাত্রা ধরে রাখতে এবং পুষ্টি শোষণে সহায়ক। হলুদে থাকা কারকিউমিন ব্যথানাশক হিসেবে কাজ করে এবং আদা সংক্রমণের বিরুদ্ধে লড়াই করে শরীর উষ্ণ রাখে। খিচুড়িতে সবজি যোগ করলে আঁশের মাত্রা বাড়ে। গোলমরিচ ও জিরার মতো মসলা বিপাক প্রক্রিয়া উন্নত করে। এ ছাড়া সাবুদানার খিচুড়ি রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখে। এ ছাড়া এটি তাৎক্ষণিক শক্তি জোগাতে কার্যকর।

mog-dal

মুগ ডালের খিচুড়ি

চাল ও মুগ ডালের মিশেলে তৈরি এই খিচুড়ি যেমন সহজপাচ্য, তেমনি পুষ্টিগুণে ভরপুর। এর বিশেষত্বের চাবিকাঠি লুকিয়ে রয়েছে মসলায়। একেবারে হলুদ, লবণ, জিরা অথবা ধনেগুঁড়ার মতো সাধারণ কিছু মসলা দিয়ে এটি রান্না করা হয়। এটা রান্নার সময় মুগ ডালের সঙ্গে চালও ভেজে নিতে পারেন। এতে মুগ ডালের একটা ভিন্ন গন্ধ পাওয়া যাবে। হলুদের পরিবর্তে এতে ব্যবহার করতে পারেন সবুজ মুগডাল।

উপকারিতা: শরীর উষ্ণ রাখে এবং দীর্ঘক্ষণ শক্তি জোগায়।

khichuri

সবজি খিচুড়ি

গাজর, মটরশুঁটি, ফুলকপি, আলু, টমেটো ইত্যাদি শীতের সবজি দিয়ে তৈরি রান্না করা সবজি খিচুড়ি সুস্বাদু ও পুষ্টিকর। এর সঙ্গে শীতে পাওয়া যায় এমন প্রায় সব শাক ও সবজি যোগ করতে হবে। সবজিগুলো ছোট টুকরা করে কেটে নিতে হবে।

যে সবজিগুলো সেদ্ধ হতে বেশি সময় নেয়, সেগুলো আগে ভেজে নিন অথবা প্রেশার কুকারে দিন। এরপর তেল বা ঘিতে জিরা, তেজপাতা ও অন্যান্য মসলা দিয়ে পেঁয়াজ, আদা, রসুন ভাজার পর সবজিগুলো হালকা ভেজে নিন। ভেজে রাখা সবজি, চাল, ডাল ও পানি দিয়ে প্রেশার কুকারে বা হাঁড়িতে রান্না করুন। নরম খিচুড়ি চাইলে পানি বেশি দিতে পারেন। শেষ মুহূর্তে পালংসহ অন্য নরম শাক এতে যোগ করতে পারেন।

উপকারিতা: এটি অন্যান্য উপকারের সঙ্গে কোষ্ঠকাঠিন্য কমায় এবং দ্রুত শক্তি পুনরুদ্ধার করে।

তিল-খিচুড়ি

তিল খিচুড়ি

ঠান্ডা পাহাড়ি অঞ্চলে শীতের প্রকোপ থেকে রক্ষা পেতে এই খিচুড়ি অত্যন্ত জনপ্রিয়। চাল, মাষকলাইয়ের ডাল এবং তিল এর প্রধান উপকরণ। রান্নার আগে চাল ও ডাল ভিজিয়ে রাখা হয়। তিল হালকা ভেজে গুঁড়া করে নেওয়া হয়। তিল থেকে পাওয়া স্বাস্থ্যকর চর্বি ও খনিজ উপাদান শীতের দিনে শরীরের জন্য খুবই উপকারী। জিরা, হিং, হলুদ এবং লাল মরিচ গুঁড়ার সুগন্ধি মিশ্রণ এতে অনন্য স্বাদ যোগ করে। খাঁটি ঘি অথবা তেল-মসলার ফোড়ন দিয়ে এটি রান্না করা হয়। প্রোটিন, চর্বি এবং মিনারেলসমৃদ্ধ এই খাবার শীত জয়ের এক অমোঘ হাতিয়ার হতে পারে।

উপকারিতা: এটি শরীরে তাৎক্ষণিক শক্তি জোগানোর পাশাপাশি দীর্ঘক্ষণ শরীর গরম রাখতে সাহায্য করে।

আমলকীর-খিচুড়ি

আমলকী খিচুড়ি

সচরাচর খাওয়া হয় এমন কোনো খিচুড়ি খেতে না চাইলে রান্না করতে পারেন আমলকী খিচুড়ি। এটি কোনো সাধারণ খাবার নয়। এ খিচুড়ি রান্না করা হয় চাল, খোসা ছাড়ানো কালো মাষকলাইয়ের ডাল এবং তাজা আমলকী দিয়ে। নরম ধরনের এ খিচুড়ির স্বাদ ও সুগন্ধ বাড়াতে রান্নায় জিরা, হিং, হলুদ ও লাল মরিচের গুঁড়া ব্যবহার করতে পারেন। এগুলো এতে রাজকীয় স্বাদ যোগ করবে। সবশেষে ঘি বা তেলের সুগন্ধি ফোড়ন এই খিচুড়িকে করে তোলে আরও সুস্বাদু। কেউ চাইলে এই খিচুড়ির পুষ্টিমান আরও বাড়াতে বিভিন্ন ধরনের ঋতুভিত্তিক সবজি যোগ করতে পারেন। শীতের এই উৎসবের দিনগুলোতে শরীর সতেজ রাখতে এবং রসনা তৃপ্তিতে আমলকী খিচুড়ি হতে পারে আপনার সেরা পছন্দ।

উপকারিতা: এটি শরীরে শক্তি জোগানোর পাশাপাশি হজমশক্তি এবং রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বাড়ায়। এ ছাড়া শরীর ডিটক্সে সহায়তা করে, হজম প্রক্রিয়া উন্নত হয়, গ্যাস্ট্রিক কমায়, কোলাজেন উৎপাদন বাড়ায় এবং ওজন কমাতে সহায়ক।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

আসিফের ফেসবুক পেজ রিমুভ করা হয়েছে, সংঘবদ্ধ রিপোর্টের অভিযোগ

আজকের রাশিফল: মানিব্যাগের দশা মরুভূমি, প্রেমের দুনিয়ায়ও দুর্ভিক্ষ

ছয় মাসের পরিচয়ে বিবাহিতাকে বিয়ের প্রস্তাব, প্রত্যাখ্যান করায় গুলি

সখীপুরে নিখোঁজের ৭ ঘণ্টা পর বন থেকে উদ্ধার শিশুটি মারা গেছে

অরুণাচলকে চীনের ‘মূল স্বার্থ’ বলছে পেন্টাগন, ভিত্তিহীন বলে প্রত্যাখ্যান বেইজিংয়ের

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

এই শীতে কেন খাবেন তেজপাতা ও লবঙ্গ চা

আলমগীর আলম
আপডেট : ২০ ডিসেম্বর ২০২৫, ১১: ০৪
এই শীতে কেন খাবেন তেজপাতা ও লবঙ্গ চা

তেজপাতা ও লবঙ্গ—উভয়ই অ্যান্টিঅক্সিডেন্টে ভরপুর। এতে রয়েছে শক্তিশালী প্রদাহবিরোধী ও ব্যাকটেরিয়ারোধী গুণাবলি, যা শরীরের ভেতরে ইতিবাচক পরিবর্তন আনতে সক্ষম। তবে এই চা সাধারণত সবার জন্য নিরাপদ হলেও গর্ভবতী এবং স্তন্যদানকারী মায়েদের এটি পান করা থেকে বিরত থাকা উচিত।

১. হজমশক্তি বৃদ্ধিতে: বদহজমের সমস্যায় ভুগলে তেজপাতা দারুণ মুক্তি দিতে পারে। অন্যদিকে, লবঙ্গ এনজাইম নিঃসরণ বাড়িয়ে হজমপ্রক্রিয়াকে ত্বরান্বিত এবং পেটের অস্বস্তি দূর করে।

২. ব্যথা ও প্রদাহ উপশমে: আর্থ্রাইটিসের মতো রোগে যাঁরা ভোগেন, তাঁদের জন্য এই চা অত্যন্ত উপকারী। ইউরিক অ্যাসিডের ব্যথা কমাতে এবং শরীরের বিভিন্ন অংশের প্রদাহ বা ফোলা ভাব রোধে তেজপাতা ও লবঙ্গ লড়তে সাহায্য করে।

৩. রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বাড়াতে: লবঙ্গে থাকা অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল বৈশিষ্ট্য ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়া

ও ভাইরাসের বিরুদ্ধে কাজ করে। এর সঙ্গে তেজপাতা যুক্ত হলে শরীরের রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বহুগুণ বেড়ে যায়, যা বিশেষ করে ঠান্ডা ও ফ্লু মৌসুমে সুরক্ষা দেয়।

৪. দীর্ঘস্থায়ী রোগের ঝুঁকি কমাতে: এই চা শরীরে ক্ষতিকর ফ্রি র‍্যাডিক্যালের বিরুদ্ধে লড়াই করে অক্সিডেটিভ স্ট্রেস কমায়। ফলে হৃদ্‌রোগ এবং নির্দিষ্ট কিছু ক্যানসারের ঝুঁকি কমে পায়।

৫. দাঁত ও মাড়ির সুরক্ষায়: লবঙ্গ তেল দাঁতের জন্য উপকারী হিসেবে স্বীকৃত। নিয়মিত লবঙ্গ চা পান করলে মাড়ি ও দাঁত সুস্থ রাখা সম্ভব।

তেজপাতা ও লবঙ্গ চা তৈরি করবেন যেভাবে

উপকরণ সংগ্রহ করা এবং এই চা তৈরি করার প্রক্রিয়া অত্যন্ত সহজ—

উপকরণ: ৩-৪টি শুকনো তেজপাতা, ৫-৬টি আস্ত লবঙ্গ এবং ৪ কাপ পানি। স্বাদ বাড়াতে মধু বা লেবু ব্যবহার করতে পারেন।

প্রণালি: প্রথমে একটি পাত্রে পানি ফুটিয়ে নিতে হবে। তাতে তেজপাতা ও লবঙ্গ দিয়ে চুলার আঁচ কমিয়ে দিন। ১৫ মিনিট মিশ্রণটি সেদ্ধ করার পর চুলা নিভিয়ে আরও ৫ মিনিট পাত্রটি ঢেকে রেখে দিন। এরপর ছাঁকনি দিয়ে ছেঁকে তেজপাতা ও লবঙ্গ ফেলে দিয়ে পানি আলাদা করে নিন। স্বাদ অনুযায়ী মধু কিংবা লেবুর রস মিশিয়ে পান করুন।

সেবনবিধি ও সতর্কতা

ভালো ফল পেতে প্রতিদিন এক কাপ এই চা-পান করা ভালো; বিশেষ করে খাবারের পর এটি পান করলে হজমশক্তি বাড়াতে সবচেয়ে ভালো কাজ করে।

লেখক: খাদ্য পথ্য ও আকুপ্রেশার বিশেষজ্ঞ, প্রধান নির্বাহী, প্রাকৃতিক নিরাময় কেন্দ্র

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

আসিফের ফেসবুক পেজ রিমুভ করা হয়েছে, সংঘবদ্ধ রিপোর্টের অভিযোগ

আজকের রাশিফল: মানিব্যাগের দশা মরুভূমি, প্রেমের দুনিয়ায়ও দুর্ভিক্ষ

ছয় মাসের পরিচয়ে বিবাহিতাকে বিয়ের প্রস্তাব, প্রত্যাখ্যান করায় গুলি

সখীপুরে নিখোঁজের ৭ ঘণ্টা পর বন থেকে উদ্ধার শিশুটি মারা গেছে

অরুণাচলকে চীনের ‘মূল স্বার্থ’ বলছে পেন্টাগন, ভিত্তিহীন বলে প্রত্যাখ্যান বেইজিংয়ের

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত