মুহাম্মাদ শফিউল্লাহ, ঢাকা

গত সপ্তাহের শুরুতে ৯ মাস বয়সী মেয়েশিশুকে রাজধানীর রমনা এলাকায় ইপিআইয়ের এক স্থায়ী টিকা কেন্দ্রে নিয়ে যান বেসরকারি চাকরিজীবী বাবা। উদ্দেশ্য, হাম-রুবেলার (এমআর) প্রথম ডোজ দেওয়া। তবে সেদিন কেন্দ্রটিতে টিকা না থাকায় তাঁকে ফিরে আসতে হয়। এমআরসহ আরও কয়েক ধরনের টিকার ঘাটতির কারণে সেদিন শিশুসন্তানদের টিকা দেওয়া ছাড়াই ফিরতে বাধ্য হন অনেক অভিভাবক।
শুধু ঢাকার রমনার কেন্দ্রটি নয়, দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে শিশুদের নিয়মিত টিকাগুলোর ক্ষেত্রে একই সংকট দেখা দিয়েছে। সরকারের গুরুত্বপূর্ণ সম্প্রসারিত টিকাদান কর্মসূচির (ইপিআই) আওতায় দেওয়া এসব টিকার সংকট চলছে কয়েক মাস ধরে। কোথাও সংকট তীব্র, কোথাওবা তুলনামূলক কম। সংশ্লিষ্টদের মতে, টিকা কেনা এবং তারপর সরবরাহ ব্যবস্থার জটিলতায় এই অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। কর্তৃপক্ষ বলছে, এ সংকট দীর্ঘমেয়াদি হবে না। তথ্য অনুযায়ী দ্রুত সমাধান করা হচ্ছে।
টিকার মাধ্যমে প্রতিরোধযোগ্য কিছু রোগ নির্মূলে বাংলাদেশ উল্লেখযোগ্য সাফল্য পেয়েছে। ইপিআই কর্মসূচিতে বর্তমানে ১১টি রোগ প্রতিরোধে ৮টি টিকা দেওয়া হয়। নবজাতক থেকে ১১ মাস বয়সী শিশু, ২৩ মাস বয়সী শিশু, ১৫ বছরের কম বয়সী কিশোরী এবং ১৫ থেকে ৪৯ বছর বয়সী সন্তান ধারণক্ষম নারীদের এসব টিকা দেওয়া হয়। যক্ষ্মা, পোলিও, ডিপথেরিয়া, হুপিংকাশি, ধনুষ্টঙ্কার, হেপাটাইটিস-বি, হিমোফাইলাস ইনফ্লুয়েঞ্জা-বি, হাম ও রুবেলা, নিউমোকক্কাল নিউমোনিয়া ও হিউম্যান প্যাপিলোমাভাইরাস (এইচপিভি) এসব রোগের টিকাদান সারা বছর চলে।
ইপিআইয়ের কেন্দ্রীয় কার্যালয় থেকে শুরু করে বিভাগীয়, জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বিভিন্ন জেলায় বর্তমানে পিসিভি (নিউমোনিয়া) ও পেন্টাভ্যালেন্ট (ডিপথেরিয়া, হুপিংকাশি, ধনুষ্টঙ্কার, হেপাটাইটিস-বি ও হিমোফাইলাস ইনফ্লুয়েঞ্জা-বি) টিকার সংকট রয়েছে। তবে তিন মাস আগের তুলনায় অভাব কিছুটা কম।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার একজন উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, তাঁর উপজেলায় সবচেয়ে বেশি সংকট পিসিভি টিকার। এ ঘাটতি সাত মাস ধরে চলছে। মাসখানেক আগে পৌঁছানো সর্বশেষ চালানটি সাত দিনের মধ্যেই শেষ হয়ে গেছে।
ওই কর্মকর্তা বলেন, দেশজুড়ে সব জায়গাতেই দু-তিন ধরনের টিকার অভাব রয়েছে।১৯৭৯ সালে দেশের শহরগুলোতে সম্প্রসারিত টিকাদান কর্মসূচি (ইপিআই) চালু হয়। ১৯৮৫ সালে তা সারা দেশে বিস্তৃত হয়। বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা স্বাস্থ্য সুরক্ষা ফাউন্ডেশনের তথ্যমতে, এ কর্মসূচি চালুর আগে প্রতি হাজার শিশুর মধ্যে মৃত্যুহার ছিল ১৫১ জন।
২০২৪ সালে তা কমে দাঁড়িয়েছে ২১ জনে। বাংলাদেশের ইপিআই কর্মসূচি জনস্বাস্থ্যে বড় সাফল্য হিসেবে বৈশ্বিকভাবে স্বীকৃত। এর মাধ্যমে মা ও শিশুস্বাস্থ্যে উল্লেখযোগ্য উন্নতি হয়েছে, শিশু মৃত্যুহার কমেছে এবং দেশের প্রতিটি অঞ্চলে প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করা সম্ভব হয়েছে। এ টিকা কর্মসূচি পোলিও এবং মাতৃ ও নবজাতক ধনুষ্টঙ্কার (এমএনটি) নির্মূল করা এবং হেপাটাইটিস নিয়ন্ত্রণে সফল হয়েছে। পাশাপাশি কিশোরী মেয়েদের মধ্যে ৯৩ শতাংশকে এইচপিভি টিকা দেওয়া যাচ্ছে, যা জরায়ুমুখের ক্যানসার প্রতিরোধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে।
স্বাস্থ্য সুরক্ষা ফাউন্ডেশন গত আগস্টের শেষে এক সংবাদ সম্মেলনে বলেছিল, সেপ্টেম্বরে টিকা কেনায় দেরি হলে অক্টোবরের মধ্যেই মজুত ফুরিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
অন্তর্বর্তী সরকারের অর্থনৈতিক উপদেষ্টা কমিটি সম্প্রতি ইপিআই কর্মসূচির জন্য টিকা কেনায় নীতিগত অনুমোদন দিয়েছে। সরাসরি ক্রয় পদ্ধতি অনুসরণ করে ইউনিসেফের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক উদ্যোগ ‘গ্যাভি’ থেকে টিকা সংগ্রহ করা হবে। প্রসঙ্গত, ‘গ্যাভি, দ্য ভ্যাকসিন অ্যালায়েন্স’ হচ্ছে নিম্ন আয়ের দেশগুলোর জন্য সুলভে টিকা সহজলভ্য করতে গঠিত এক বৈশ্বিক উদ্যোগ।
যেসব জেলায় টিকার সংকট বেশি রয়েছে, কুমিল্লা তার অন্যতম। কুমিল্লার ডেপুটি সিভিল সার্জন রেজা মো. সারোয়ার আকবর আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘টিকার সংকট গত অর্থবছরে বেশি ছিল, তবে সংকট কমেছে। আমরা নিয়মিত টিকা পাচ্ছি এবং শেষ হওয়ার আগেই আবার চাহিদা পাঠিয়েছি। সুনির্দিষ্টভাবে বলা সম্ভব নয়, কোন টিকার সংকট আছে। কারণ, একেক সময় একেক ধরনের টিকার অভাব হয়। ফলে কোনো একটির সংকটই স্থায়ী নয়। বর্তমানে পেন্টাভ্যালেন্ট ও পিসিভির সংকট রয়েছে।’
নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের এক কর্মকর্তা বলেন, ‘দেশে রুটিন ইপিআইয়ের টিকার সংকট রয়েছে। আগে স্বাস্থ্য খাতের পাঁচ বছর মেয়াদি কৌশলগত পরিকল্পনা বা অপারেশনাল প্ল্যানের (ওপি) মাধ্যমে টিকা কেনা হতো, যা সহজ ছিল। নতুন ওপি না হওয়ায় বর্তমানে রাজস্ব খাত থেকে কেনা হচ্ছে। এই প্রক্রিয়া কিছুটা জটিল। সচিব ও মন্ত্রী একটি নির্দিষ্ট অঙ্ক পর্যন্ত অর্থের ক্রয়াদেশ দিতে পারেন। এর বেশি হলে তা সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটিতে অনুমোদনের জন্য পাঠাতে হয়।’
দুজন সিভিল সার্জন এবং উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা জানিয়েছেন, গত সপ্তাহে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কর্মকর্তা, জেলার সিভিল সার্জন ও উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তাদের নিয়ে প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী (স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয়) একটি ভার্চুয়াল বৈঠক করেছেন। তাতে টিকার সংকটের বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে।
ইপিআই সূত্রে জানা গেছে, চলতি অর্থবছরে সরকার টিকা কেনার জন্য ১ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ দিয়েছে। এর মধ্যে সাড়ে আট শ কোটি টাকা দিয়ে ইপিআইয়ের নিয়মিত টিকা এবং বাকি অর্থ দিয়ে হাজিদের টিকা, জলাতঙ্কের টিকা ইত্যাদি কেনা হবে।
ইপিআইয়ের কেন্দ্রীয় কোল্ডস্টোরেজ থেকে টিকা জেলা পর্যায়ে সিভিল সার্জনের মাধ্যমে পাঠানো হয় এবং সেখানে সংরক্ষণ করে উপজেলা পর্যায়ে বিতরণ করা হয়। গত মঙ্গলবার থেকে জেলা চাহিদা অনুযায়ী টিকা পাঠানো শুরু হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার পর্যন্ত ২০টির বেশি জেলায় টিকা বিতরণ সম্পন্ন হয়েছে।
চাঁদপুরের সিভিল সার্জন মোহাম্মদ নুর আলম দীন জানিয়েছেন, জেলায় শিশুদের টিকার চলমান সংকট তিন দিন আগে শেষ হয়েছে। তিনি বলেন, ‘আমাদেরও সংকট ছিল। তবে তিন-চার দিন আগে চাহিদা অনুযায়ী সব টিকা সরবরাহ পেয়েছি। যে টিকা এসেছে, তাতে দেড় মাস নির্বিঘ্নে চলবে।’
সিলেটের বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক মো. আনিসুর রহমান জানিয়েছেন, বিভাগের চার জেলায় মজুত টিকায় আগামী মাসের মাঝামাঝি পর্যন্ত চলতে পারে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের উপপরিচালক (ইপিআই) মো. শাহরিয়ার সাজ্জাদ বলেন, নিয়মিত অপারেশনাল প্ল্যান থেকে কার্যক্রম রাজস্ব খাতে চলে আসার কারণে কিছুটা জটিলতা সৃষ্টি হয়েছে। তবে এগুলো স্থায়ী নয়। দেশের কোথাও কোথাও টিকার সংকট রয়েছে। কিন্তু এ সংকট সাধারণ কার্যক্রমে খুব বেশি সমস্যা সৃষ্টি করেনি। কোনো এলাকায় সংকট দেখামাত্রই সেখানে টিকা পাঠানো হচ্ছে।
স্বাস্থ্যবিষয়ক প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী অধ্যাপক ডা. মো. সায়েদুর রহমানও স্বাস্থ্য কার্যক্রম ওপি থেকে রাজস্ব খাতে আনার কারণে সাময়িক সমস্যার বিষয়টি উল্লেখ করেন। তিনি আশ্বাস দিয়ে বলেন, শিগগির এর সমাধান হবে। বিশেষ সহকারী জানান, গত অর্থবছরে টিকার জন্য সাড়ে চার শ কোটি টাকা বরাদ্দ ছিল। চলতি অর্থবছরে তা ১ হাজার কোটি টাকা করা হয়েছে। টিকা কেনার জন্য অর্থের অনুমোদন হয়েছে। দু-এক সপ্তাহের মধ্যে টিকা হাতে আসবে।
ডা. মো. সায়েদুর রহমান আরও বলেন, ‘টিকা এখন হাতে নেই, এমনটি নয়। কিছু ব্যবস্থাপনাগত ত্রুটির কারণে কয়েকটি কেন্দ্রে টিকা পাওয়া যাচ্ছে না। ১০-১২টি উপজেলায় এবং ৪টি জেলায় সাময়িক ঘাটতি হয়েছে, যা ইতিমধ্যে সমাধান করা হয়েছে। আমাদের হাতে থাকা মজুত দিয়ে কার্যক্রম চলছে।’

গত সপ্তাহের শুরুতে ৯ মাস বয়সী মেয়েশিশুকে রাজধানীর রমনা এলাকায় ইপিআইয়ের এক স্থায়ী টিকা কেন্দ্রে নিয়ে যান বেসরকারি চাকরিজীবী বাবা। উদ্দেশ্য, হাম-রুবেলার (এমআর) প্রথম ডোজ দেওয়া। তবে সেদিন কেন্দ্রটিতে টিকা না থাকায় তাঁকে ফিরে আসতে হয়। এমআরসহ আরও কয়েক ধরনের টিকার ঘাটতির কারণে সেদিন শিশুসন্তানদের টিকা দেওয়া ছাড়াই ফিরতে বাধ্য হন অনেক অভিভাবক।
শুধু ঢাকার রমনার কেন্দ্রটি নয়, দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে শিশুদের নিয়মিত টিকাগুলোর ক্ষেত্রে একই সংকট দেখা দিয়েছে। সরকারের গুরুত্বপূর্ণ সম্প্রসারিত টিকাদান কর্মসূচির (ইপিআই) আওতায় দেওয়া এসব টিকার সংকট চলছে কয়েক মাস ধরে। কোথাও সংকট তীব্র, কোথাওবা তুলনামূলক কম। সংশ্লিষ্টদের মতে, টিকা কেনা এবং তারপর সরবরাহ ব্যবস্থার জটিলতায় এই অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। কর্তৃপক্ষ বলছে, এ সংকট দীর্ঘমেয়াদি হবে না। তথ্য অনুযায়ী দ্রুত সমাধান করা হচ্ছে।
টিকার মাধ্যমে প্রতিরোধযোগ্য কিছু রোগ নির্মূলে বাংলাদেশ উল্লেখযোগ্য সাফল্য পেয়েছে। ইপিআই কর্মসূচিতে বর্তমানে ১১টি রোগ প্রতিরোধে ৮টি টিকা দেওয়া হয়। নবজাতক থেকে ১১ মাস বয়সী শিশু, ২৩ মাস বয়সী শিশু, ১৫ বছরের কম বয়সী কিশোরী এবং ১৫ থেকে ৪৯ বছর বয়সী সন্তান ধারণক্ষম নারীদের এসব টিকা দেওয়া হয়। যক্ষ্মা, পোলিও, ডিপথেরিয়া, হুপিংকাশি, ধনুষ্টঙ্কার, হেপাটাইটিস-বি, হিমোফাইলাস ইনফ্লুয়েঞ্জা-বি, হাম ও রুবেলা, নিউমোকক্কাল নিউমোনিয়া ও হিউম্যান প্যাপিলোমাভাইরাস (এইচপিভি) এসব রোগের টিকাদান সারা বছর চলে।
ইপিআইয়ের কেন্দ্রীয় কার্যালয় থেকে শুরু করে বিভাগীয়, জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বিভিন্ন জেলায় বর্তমানে পিসিভি (নিউমোনিয়া) ও পেন্টাভ্যালেন্ট (ডিপথেরিয়া, হুপিংকাশি, ধনুষ্টঙ্কার, হেপাটাইটিস-বি ও হিমোফাইলাস ইনফ্লুয়েঞ্জা-বি) টিকার সংকট রয়েছে। তবে তিন মাস আগের তুলনায় অভাব কিছুটা কম।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার একজন উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, তাঁর উপজেলায় সবচেয়ে বেশি সংকট পিসিভি টিকার। এ ঘাটতি সাত মাস ধরে চলছে। মাসখানেক আগে পৌঁছানো সর্বশেষ চালানটি সাত দিনের মধ্যেই শেষ হয়ে গেছে।
ওই কর্মকর্তা বলেন, দেশজুড়ে সব জায়গাতেই দু-তিন ধরনের টিকার অভাব রয়েছে।১৯৭৯ সালে দেশের শহরগুলোতে সম্প্রসারিত টিকাদান কর্মসূচি (ইপিআই) চালু হয়। ১৯৮৫ সালে তা সারা দেশে বিস্তৃত হয়। বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা স্বাস্থ্য সুরক্ষা ফাউন্ডেশনের তথ্যমতে, এ কর্মসূচি চালুর আগে প্রতি হাজার শিশুর মধ্যে মৃত্যুহার ছিল ১৫১ জন।
২০২৪ সালে তা কমে দাঁড়িয়েছে ২১ জনে। বাংলাদেশের ইপিআই কর্মসূচি জনস্বাস্থ্যে বড় সাফল্য হিসেবে বৈশ্বিকভাবে স্বীকৃত। এর মাধ্যমে মা ও শিশুস্বাস্থ্যে উল্লেখযোগ্য উন্নতি হয়েছে, শিশু মৃত্যুহার কমেছে এবং দেশের প্রতিটি অঞ্চলে প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করা সম্ভব হয়েছে। এ টিকা কর্মসূচি পোলিও এবং মাতৃ ও নবজাতক ধনুষ্টঙ্কার (এমএনটি) নির্মূল করা এবং হেপাটাইটিস নিয়ন্ত্রণে সফল হয়েছে। পাশাপাশি কিশোরী মেয়েদের মধ্যে ৯৩ শতাংশকে এইচপিভি টিকা দেওয়া যাচ্ছে, যা জরায়ুমুখের ক্যানসার প্রতিরোধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে।
স্বাস্থ্য সুরক্ষা ফাউন্ডেশন গত আগস্টের শেষে এক সংবাদ সম্মেলনে বলেছিল, সেপ্টেম্বরে টিকা কেনায় দেরি হলে অক্টোবরের মধ্যেই মজুত ফুরিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
অন্তর্বর্তী সরকারের অর্থনৈতিক উপদেষ্টা কমিটি সম্প্রতি ইপিআই কর্মসূচির জন্য টিকা কেনায় নীতিগত অনুমোদন দিয়েছে। সরাসরি ক্রয় পদ্ধতি অনুসরণ করে ইউনিসেফের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক উদ্যোগ ‘গ্যাভি’ থেকে টিকা সংগ্রহ করা হবে। প্রসঙ্গত, ‘গ্যাভি, দ্য ভ্যাকসিন অ্যালায়েন্স’ হচ্ছে নিম্ন আয়ের দেশগুলোর জন্য সুলভে টিকা সহজলভ্য করতে গঠিত এক বৈশ্বিক উদ্যোগ।
যেসব জেলায় টিকার সংকট বেশি রয়েছে, কুমিল্লা তার অন্যতম। কুমিল্লার ডেপুটি সিভিল সার্জন রেজা মো. সারোয়ার আকবর আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘টিকার সংকট গত অর্থবছরে বেশি ছিল, তবে সংকট কমেছে। আমরা নিয়মিত টিকা পাচ্ছি এবং শেষ হওয়ার আগেই আবার চাহিদা পাঠিয়েছি। সুনির্দিষ্টভাবে বলা সম্ভব নয়, কোন টিকার সংকট আছে। কারণ, একেক সময় একেক ধরনের টিকার অভাব হয়। ফলে কোনো একটির সংকটই স্থায়ী নয়। বর্তমানে পেন্টাভ্যালেন্ট ও পিসিভির সংকট রয়েছে।’
নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের এক কর্মকর্তা বলেন, ‘দেশে রুটিন ইপিআইয়ের টিকার সংকট রয়েছে। আগে স্বাস্থ্য খাতের পাঁচ বছর মেয়াদি কৌশলগত পরিকল্পনা বা অপারেশনাল প্ল্যানের (ওপি) মাধ্যমে টিকা কেনা হতো, যা সহজ ছিল। নতুন ওপি না হওয়ায় বর্তমানে রাজস্ব খাত থেকে কেনা হচ্ছে। এই প্রক্রিয়া কিছুটা জটিল। সচিব ও মন্ত্রী একটি নির্দিষ্ট অঙ্ক পর্যন্ত অর্থের ক্রয়াদেশ দিতে পারেন। এর বেশি হলে তা সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটিতে অনুমোদনের জন্য পাঠাতে হয়।’
দুজন সিভিল সার্জন এবং উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা জানিয়েছেন, গত সপ্তাহে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কর্মকর্তা, জেলার সিভিল সার্জন ও উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তাদের নিয়ে প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী (স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয়) একটি ভার্চুয়াল বৈঠক করেছেন। তাতে টিকার সংকটের বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে।
ইপিআই সূত্রে জানা গেছে, চলতি অর্থবছরে সরকার টিকা কেনার জন্য ১ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ দিয়েছে। এর মধ্যে সাড়ে আট শ কোটি টাকা দিয়ে ইপিআইয়ের নিয়মিত টিকা এবং বাকি অর্থ দিয়ে হাজিদের টিকা, জলাতঙ্কের টিকা ইত্যাদি কেনা হবে।
ইপিআইয়ের কেন্দ্রীয় কোল্ডস্টোরেজ থেকে টিকা জেলা পর্যায়ে সিভিল সার্জনের মাধ্যমে পাঠানো হয় এবং সেখানে সংরক্ষণ করে উপজেলা পর্যায়ে বিতরণ করা হয়। গত মঙ্গলবার থেকে জেলা চাহিদা অনুযায়ী টিকা পাঠানো শুরু হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার পর্যন্ত ২০টির বেশি জেলায় টিকা বিতরণ সম্পন্ন হয়েছে।
চাঁদপুরের সিভিল সার্জন মোহাম্মদ নুর আলম দীন জানিয়েছেন, জেলায় শিশুদের টিকার চলমান সংকট তিন দিন আগে শেষ হয়েছে। তিনি বলেন, ‘আমাদেরও সংকট ছিল। তবে তিন-চার দিন আগে চাহিদা অনুযায়ী সব টিকা সরবরাহ পেয়েছি। যে টিকা এসেছে, তাতে দেড় মাস নির্বিঘ্নে চলবে।’
সিলেটের বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক মো. আনিসুর রহমান জানিয়েছেন, বিভাগের চার জেলায় মজুত টিকায় আগামী মাসের মাঝামাঝি পর্যন্ত চলতে পারে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের উপপরিচালক (ইপিআই) মো. শাহরিয়ার সাজ্জাদ বলেন, নিয়মিত অপারেশনাল প্ল্যান থেকে কার্যক্রম রাজস্ব খাতে চলে আসার কারণে কিছুটা জটিলতা সৃষ্টি হয়েছে। তবে এগুলো স্থায়ী নয়। দেশের কোথাও কোথাও টিকার সংকট রয়েছে। কিন্তু এ সংকট সাধারণ কার্যক্রমে খুব বেশি সমস্যা সৃষ্টি করেনি। কোনো এলাকায় সংকট দেখামাত্রই সেখানে টিকা পাঠানো হচ্ছে।
স্বাস্থ্যবিষয়ক প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী অধ্যাপক ডা. মো. সায়েদুর রহমানও স্বাস্থ্য কার্যক্রম ওপি থেকে রাজস্ব খাতে আনার কারণে সাময়িক সমস্যার বিষয়টি উল্লেখ করেন। তিনি আশ্বাস দিয়ে বলেন, শিগগির এর সমাধান হবে। বিশেষ সহকারী জানান, গত অর্থবছরে টিকার জন্য সাড়ে চার শ কোটি টাকা বরাদ্দ ছিল। চলতি অর্থবছরে তা ১ হাজার কোটি টাকা করা হয়েছে। টিকা কেনার জন্য অর্থের অনুমোদন হয়েছে। দু-এক সপ্তাহের মধ্যে টিকা হাতে আসবে।
ডা. মো. সায়েদুর রহমান আরও বলেন, ‘টিকা এখন হাতে নেই, এমনটি নয়। কিছু ব্যবস্থাপনাগত ত্রুটির কারণে কয়েকটি কেন্দ্রে টিকা পাওয়া যাচ্ছে না। ১০-১২টি উপজেলায় এবং ৪টি জেলায় সাময়িক ঘাটতি হয়েছে, যা ইতিমধ্যে সমাধান করা হয়েছে। আমাদের হাতে থাকা মজুত দিয়ে কার্যক্রম চলছে।’
মুহাম্মাদ শফিউল্লাহ, ঢাকা

গত সপ্তাহের শুরুতে ৯ মাস বয়সী মেয়েশিশুকে রাজধানীর রমনা এলাকায় ইপিআইয়ের এক স্থায়ী টিকা কেন্দ্রে নিয়ে যান বেসরকারি চাকরিজীবী বাবা। উদ্দেশ্য, হাম-রুবেলার (এমআর) প্রথম ডোজ দেওয়া। তবে সেদিন কেন্দ্রটিতে টিকা না থাকায় তাঁকে ফিরে আসতে হয়। এমআরসহ আরও কয়েক ধরনের টিকার ঘাটতির কারণে সেদিন শিশুসন্তানদের টিকা দেওয়া ছাড়াই ফিরতে বাধ্য হন অনেক অভিভাবক।
শুধু ঢাকার রমনার কেন্দ্রটি নয়, দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে শিশুদের নিয়মিত টিকাগুলোর ক্ষেত্রে একই সংকট দেখা দিয়েছে। সরকারের গুরুত্বপূর্ণ সম্প্রসারিত টিকাদান কর্মসূচির (ইপিআই) আওতায় দেওয়া এসব টিকার সংকট চলছে কয়েক মাস ধরে। কোথাও সংকট তীব্র, কোথাওবা তুলনামূলক কম। সংশ্লিষ্টদের মতে, টিকা কেনা এবং তারপর সরবরাহ ব্যবস্থার জটিলতায় এই অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। কর্তৃপক্ষ বলছে, এ সংকট দীর্ঘমেয়াদি হবে না। তথ্য অনুযায়ী দ্রুত সমাধান করা হচ্ছে।
টিকার মাধ্যমে প্রতিরোধযোগ্য কিছু রোগ নির্মূলে বাংলাদেশ উল্লেখযোগ্য সাফল্য পেয়েছে। ইপিআই কর্মসূচিতে বর্তমানে ১১টি রোগ প্রতিরোধে ৮টি টিকা দেওয়া হয়। নবজাতক থেকে ১১ মাস বয়সী শিশু, ২৩ মাস বয়সী শিশু, ১৫ বছরের কম বয়সী কিশোরী এবং ১৫ থেকে ৪৯ বছর বয়সী সন্তান ধারণক্ষম নারীদের এসব টিকা দেওয়া হয়। যক্ষ্মা, পোলিও, ডিপথেরিয়া, হুপিংকাশি, ধনুষ্টঙ্কার, হেপাটাইটিস-বি, হিমোফাইলাস ইনফ্লুয়েঞ্জা-বি, হাম ও রুবেলা, নিউমোকক্কাল নিউমোনিয়া ও হিউম্যান প্যাপিলোমাভাইরাস (এইচপিভি) এসব রোগের টিকাদান সারা বছর চলে।
ইপিআইয়ের কেন্দ্রীয় কার্যালয় থেকে শুরু করে বিভাগীয়, জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বিভিন্ন জেলায় বর্তমানে পিসিভি (নিউমোনিয়া) ও পেন্টাভ্যালেন্ট (ডিপথেরিয়া, হুপিংকাশি, ধনুষ্টঙ্কার, হেপাটাইটিস-বি ও হিমোফাইলাস ইনফ্লুয়েঞ্জা-বি) টিকার সংকট রয়েছে। তবে তিন মাস আগের তুলনায় অভাব কিছুটা কম।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার একজন উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, তাঁর উপজেলায় সবচেয়ে বেশি সংকট পিসিভি টিকার। এ ঘাটতি সাত মাস ধরে চলছে। মাসখানেক আগে পৌঁছানো সর্বশেষ চালানটি সাত দিনের মধ্যেই শেষ হয়ে গেছে।
ওই কর্মকর্তা বলেন, দেশজুড়ে সব জায়গাতেই দু-তিন ধরনের টিকার অভাব রয়েছে।১৯৭৯ সালে দেশের শহরগুলোতে সম্প্রসারিত টিকাদান কর্মসূচি (ইপিআই) চালু হয়। ১৯৮৫ সালে তা সারা দেশে বিস্তৃত হয়। বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা স্বাস্থ্য সুরক্ষা ফাউন্ডেশনের তথ্যমতে, এ কর্মসূচি চালুর আগে প্রতি হাজার শিশুর মধ্যে মৃত্যুহার ছিল ১৫১ জন।
২০২৪ সালে তা কমে দাঁড়িয়েছে ২১ জনে। বাংলাদেশের ইপিআই কর্মসূচি জনস্বাস্থ্যে বড় সাফল্য হিসেবে বৈশ্বিকভাবে স্বীকৃত। এর মাধ্যমে মা ও শিশুস্বাস্থ্যে উল্লেখযোগ্য উন্নতি হয়েছে, শিশু মৃত্যুহার কমেছে এবং দেশের প্রতিটি অঞ্চলে প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করা সম্ভব হয়েছে। এ টিকা কর্মসূচি পোলিও এবং মাতৃ ও নবজাতক ধনুষ্টঙ্কার (এমএনটি) নির্মূল করা এবং হেপাটাইটিস নিয়ন্ত্রণে সফল হয়েছে। পাশাপাশি কিশোরী মেয়েদের মধ্যে ৯৩ শতাংশকে এইচপিভি টিকা দেওয়া যাচ্ছে, যা জরায়ুমুখের ক্যানসার প্রতিরোধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে।
স্বাস্থ্য সুরক্ষা ফাউন্ডেশন গত আগস্টের শেষে এক সংবাদ সম্মেলনে বলেছিল, সেপ্টেম্বরে টিকা কেনায় দেরি হলে অক্টোবরের মধ্যেই মজুত ফুরিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
অন্তর্বর্তী সরকারের অর্থনৈতিক উপদেষ্টা কমিটি সম্প্রতি ইপিআই কর্মসূচির জন্য টিকা কেনায় নীতিগত অনুমোদন দিয়েছে। সরাসরি ক্রয় পদ্ধতি অনুসরণ করে ইউনিসেফের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক উদ্যোগ ‘গ্যাভি’ থেকে টিকা সংগ্রহ করা হবে। প্রসঙ্গত, ‘গ্যাভি, দ্য ভ্যাকসিন অ্যালায়েন্স’ হচ্ছে নিম্ন আয়ের দেশগুলোর জন্য সুলভে টিকা সহজলভ্য করতে গঠিত এক বৈশ্বিক উদ্যোগ।
যেসব জেলায় টিকার সংকট বেশি রয়েছে, কুমিল্লা তার অন্যতম। কুমিল্লার ডেপুটি সিভিল সার্জন রেজা মো. সারোয়ার আকবর আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘টিকার সংকট গত অর্থবছরে বেশি ছিল, তবে সংকট কমেছে। আমরা নিয়মিত টিকা পাচ্ছি এবং শেষ হওয়ার আগেই আবার চাহিদা পাঠিয়েছি। সুনির্দিষ্টভাবে বলা সম্ভব নয়, কোন টিকার সংকট আছে। কারণ, একেক সময় একেক ধরনের টিকার অভাব হয়। ফলে কোনো একটির সংকটই স্থায়ী নয়। বর্তমানে পেন্টাভ্যালেন্ট ও পিসিভির সংকট রয়েছে।’
নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের এক কর্মকর্তা বলেন, ‘দেশে রুটিন ইপিআইয়ের টিকার সংকট রয়েছে। আগে স্বাস্থ্য খাতের পাঁচ বছর মেয়াদি কৌশলগত পরিকল্পনা বা অপারেশনাল প্ল্যানের (ওপি) মাধ্যমে টিকা কেনা হতো, যা সহজ ছিল। নতুন ওপি না হওয়ায় বর্তমানে রাজস্ব খাত থেকে কেনা হচ্ছে। এই প্রক্রিয়া কিছুটা জটিল। সচিব ও মন্ত্রী একটি নির্দিষ্ট অঙ্ক পর্যন্ত অর্থের ক্রয়াদেশ দিতে পারেন। এর বেশি হলে তা সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটিতে অনুমোদনের জন্য পাঠাতে হয়।’
দুজন সিভিল সার্জন এবং উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা জানিয়েছেন, গত সপ্তাহে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কর্মকর্তা, জেলার সিভিল সার্জন ও উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তাদের নিয়ে প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী (স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয়) একটি ভার্চুয়াল বৈঠক করেছেন। তাতে টিকার সংকটের বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে।
ইপিআই সূত্রে জানা গেছে, চলতি অর্থবছরে সরকার টিকা কেনার জন্য ১ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ দিয়েছে। এর মধ্যে সাড়ে আট শ কোটি টাকা দিয়ে ইপিআইয়ের নিয়মিত টিকা এবং বাকি অর্থ দিয়ে হাজিদের টিকা, জলাতঙ্কের টিকা ইত্যাদি কেনা হবে।
ইপিআইয়ের কেন্দ্রীয় কোল্ডস্টোরেজ থেকে টিকা জেলা পর্যায়ে সিভিল সার্জনের মাধ্যমে পাঠানো হয় এবং সেখানে সংরক্ষণ করে উপজেলা পর্যায়ে বিতরণ করা হয়। গত মঙ্গলবার থেকে জেলা চাহিদা অনুযায়ী টিকা পাঠানো শুরু হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার পর্যন্ত ২০টির বেশি জেলায় টিকা বিতরণ সম্পন্ন হয়েছে।
চাঁদপুরের সিভিল সার্জন মোহাম্মদ নুর আলম দীন জানিয়েছেন, জেলায় শিশুদের টিকার চলমান সংকট তিন দিন আগে শেষ হয়েছে। তিনি বলেন, ‘আমাদেরও সংকট ছিল। তবে তিন-চার দিন আগে চাহিদা অনুযায়ী সব টিকা সরবরাহ পেয়েছি। যে টিকা এসেছে, তাতে দেড় মাস নির্বিঘ্নে চলবে।’
সিলেটের বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক মো. আনিসুর রহমান জানিয়েছেন, বিভাগের চার জেলায় মজুত টিকায় আগামী মাসের মাঝামাঝি পর্যন্ত চলতে পারে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের উপপরিচালক (ইপিআই) মো. শাহরিয়ার সাজ্জাদ বলেন, নিয়মিত অপারেশনাল প্ল্যান থেকে কার্যক্রম রাজস্ব খাতে চলে আসার কারণে কিছুটা জটিলতা সৃষ্টি হয়েছে। তবে এগুলো স্থায়ী নয়। দেশের কোথাও কোথাও টিকার সংকট রয়েছে। কিন্তু এ সংকট সাধারণ কার্যক্রমে খুব বেশি সমস্যা সৃষ্টি করেনি। কোনো এলাকায় সংকট দেখামাত্রই সেখানে টিকা পাঠানো হচ্ছে।
স্বাস্থ্যবিষয়ক প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী অধ্যাপক ডা. মো. সায়েদুর রহমানও স্বাস্থ্য কার্যক্রম ওপি থেকে রাজস্ব খাতে আনার কারণে সাময়িক সমস্যার বিষয়টি উল্লেখ করেন। তিনি আশ্বাস দিয়ে বলেন, শিগগির এর সমাধান হবে। বিশেষ সহকারী জানান, গত অর্থবছরে টিকার জন্য সাড়ে চার শ কোটি টাকা বরাদ্দ ছিল। চলতি অর্থবছরে তা ১ হাজার কোটি টাকা করা হয়েছে। টিকা কেনার জন্য অর্থের অনুমোদন হয়েছে। দু-এক সপ্তাহের মধ্যে টিকা হাতে আসবে।
ডা. মো. সায়েদুর রহমান আরও বলেন, ‘টিকা এখন হাতে নেই, এমনটি নয়। কিছু ব্যবস্থাপনাগত ত্রুটির কারণে কয়েকটি কেন্দ্রে টিকা পাওয়া যাচ্ছে না। ১০-১২টি উপজেলায় এবং ৪টি জেলায় সাময়িক ঘাটতি হয়েছে, যা ইতিমধ্যে সমাধান করা হয়েছে। আমাদের হাতে থাকা মজুত দিয়ে কার্যক্রম চলছে।’

গত সপ্তাহের শুরুতে ৯ মাস বয়সী মেয়েশিশুকে রাজধানীর রমনা এলাকায় ইপিআইয়ের এক স্থায়ী টিকা কেন্দ্রে নিয়ে যান বেসরকারি চাকরিজীবী বাবা। উদ্দেশ্য, হাম-রুবেলার (এমআর) প্রথম ডোজ দেওয়া। তবে সেদিন কেন্দ্রটিতে টিকা না থাকায় তাঁকে ফিরে আসতে হয়। এমআরসহ আরও কয়েক ধরনের টিকার ঘাটতির কারণে সেদিন শিশুসন্তানদের টিকা দেওয়া ছাড়াই ফিরতে বাধ্য হন অনেক অভিভাবক।
শুধু ঢাকার রমনার কেন্দ্রটি নয়, দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে শিশুদের নিয়মিত টিকাগুলোর ক্ষেত্রে একই সংকট দেখা দিয়েছে। সরকারের গুরুত্বপূর্ণ সম্প্রসারিত টিকাদান কর্মসূচির (ইপিআই) আওতায় দেওয়া এসব টিকার সংকট চলছে কয়েক মাস ধরে। কোথাও সংকট তীব্র, কোথাওবা তুলনামূলক কম। সংশ্লিষ্টদের মতে, টিকা কেনা এবং তারপর সরবরাহ ব্যবস্থার জটিলতায় এই অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। কর্তৃপক্ষ বলছে, এ সংকট দীর্ঘমেয়াদি হবে না। তথ্য অনুযায়ী দ্রুত সমাধান করা হচ্ছে।
টিকার মাধ্যমে প্রতিরোধযোগ্য কিছু রোগ নির্মূলে বাংলাদেশ উল্লেখযোগ্য সাফল্য পেয়েছে। ইপিআই কর্মসূচিতে বর্তমানে ১১টি রোগ প্রতিরোধে ৮টি টিকা দেওয়া হয়। নবজাতক থেকে ১১ মাস বয়সী শিশু, ২৩ মাস বয়সী শিশু, ১৫ বছরের কম বয়সী কিশোরী এবং ১৫ থেকে ৪৯ বছর বয়সী সন্তান ধারণক্ষম নারীদের এসব টিকা দেওয়া হয়। যক্ষ্মা, পোলিও, ডিপথেরিয়া, হুপিংকাশি, ধনুষ্টঙ্কার, হেপাটাইটিস-বি, হিমোফাইলাস ইনফ্লুয়েঞ্জা-বি, হাম ও রুবেলা, নিউমোকক্কাল নিউমোনিয়া ও হিউম্যান প্যাপিলোমাভাইরাস (এইচপিভি) এসব রোগের টিকাদান সারা বছর চলে।
ইপিআইয়ের কেন্দ্রীয় কার্যালয় থেকে শুরু করে বিভাগীয়, জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বিভিন্ন জেলায় বর্তমানে পিসিভি (নিউমোনিয়া) ও পেন্টাভ্যালেন্ট (ডিপথেরিয়া, হুপিংকাশি, ধনুষ্টঙ্কার, হেপাটাইটিস-বি ও হিমোফাইলাস ইনফ্লুয়েঞ্জা-বি) টিকার সংকট রয়েছে। তবে তিন মাস আগের তুলনায় অভাব কিছুটা কম।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার একজন উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, তাঁর উপজেলায় সবচেয়ে বেশি সংকট পিসিভি টিকার। এ ঘাটতি সাত মাস ধরে চলছে। মাসখানেক আগে পৌঁছানো সর্বশেষ চালানটি সাত দিনের মধ্যেই শেষ হয়ে গেছে।
ওই কর্মকর্তা বলেন, দেশজুড়ে সব জায়গাতেই দু-তিন ধরনের টিকার অভাব রয়েছে।১৯৭৯ সালে দেশের শহরগুলোতে সম্প্রসারিত টিকাদান কর্মসূচি (ইপিআই) চালু হয়। ১৯৮৫ সালে তা সারা দেশে বিস্তৃত হয়। বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা স্বাস্থ্য সুরক্ষা ফাউন্ডেশনের তথ্যমতে, এ কর্মসূচি চালুর আগে প্রতি হাজার শিশুর মধ্যে মৃত্যুহার ছিল ১৫১ জন।
২০২৪ সালে তা কমে দাঁড়িয়েছে ২১ জনে। বাংলাদেশের ইপিআই কর্মসূচি জনস্বাস্থ্যে বড় সাফল্য হিসেবে বৈশ্বিকভাবে স্বীকৃত। এর মাধ্যমে মা ও শিশুস্বাস্থ্যে উল্লেখযোগ্য উন্নতি হয়েছে, শিশু মৃত্যুহার কমেছে এবং দেশের প্রতিটি অঞ্চলে প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করা সম্ভব হয়েছে। এ টিকা কর্মসূচি পোলিও এবং মাতৃ ও নবজাতক ধনুষ্টঙ্কার (এমএনটি) নির্মূল করা এবং হেপাটাইটিস নিয়ন্ত্রণে সফল হয়েছে। পাশাপাশি কিশোরী মেয়েদের মধ্যে ৯৩ শতাংশকে এইচপিভি টিকা দেওয়া যাচ্ছে, যা জরায়ুমুখের ক্যানসার প্রতিরোধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে।
স্বাস্থ্য সুরক্ষা ফাউন্ডেশন গত আগস্টের শেষে এক সংবাদ সম্মেলনে বলেছিল, সেপ্টেম্বরে টিকা কেনায় দেরি হলে অক্টোবরের মধ্যেই মজুত ফুরিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
অন্তর্বর্তী সরকারের অর্থনৈতিক উপদেষ্টা কমিটি সম্প্রতি ইপিআই কর্মসূচির জন্য টিকা কেনায় নীতিগত অনুমোদন দিয়েছে। সরাসরি ক্রয় পদ্ধতি অনুসরণ করে ইউনিসেফের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক উদ্যোগ ‘গ্যাভি’ থেকে টিকা সংগ্রহ করা হবে। প্রসঙ্গত, ‘গ্যাভি, দ্য ভ্যাকসিন অ্যালায়েন্স’ হচ্ছে নিম্ন আয়ের দেশগুলোর জন্য সুলভে টিকা সহজলভ্য করতে গঠিত এক বৈশ্বিক উদ্যোগ।
যেসব জেলায় টিকার সংকট বেশি রয়েছে, কুমিল্লা তার অন্যতম। কুমিল্লার ডেপুটি সিভিল সার্জন রেজা মো. সারোয়ার আকবর আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘টিকার সংকট গত অর্থবছরে বেশি ছিল, তবে সংকট কমেছে। আমরা নিয়মিত টিকা পাচ্ছি এবং শেষ হওয়ার আগেই আবার চাহিদা পাঠিয়েছি। সুনির্দিষ্টভাবে বলা সম্ভব নয়, কোন টিকার সংকট আছে। কারণ, একেক সময় একেক ধরনের টিকার অভাব হয়। ফলে কোনো একটির সংকটই স্থায়ী নয়। বর্তমানে পেন্টাভ্যালেন্ট ও পিসিভির সংকট রয়েছে।’
নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের এক কর্মকর্তা বলেন, ‘দেশে রুটিন ইপিআইয়ের টিকার সংকট রয়েছে। আগে স্বাস্থ্য খাতের পাঁচ বছর মেয়াদি কৌশলগত পরিকল্পনা বা অপারেশনাল প্ল্যানের (ওপি) মাধ্যমে টিকা কেনা হতো, যা সহজ ছিল। নতুন ওপি না হওয়ায় বর্তমানে রাজস্ব খাত থেকে কেনা হচ্ছে। এই প্রক্রিয়া কিছুটা জটিল। সচিব ও মন্ত্রী একটি নির্দিষ্ট অঙ্ক পর্যন্ত অর্থের ক্রয়াদেশ দিতে পারেন। এর বেশি হলে তা সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটিতে অনুমোদনের জন্য পাঠাতে হয়।’
দুজন সিভিল সার্জন এবং উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা জানিয়েছেন, গত সপ্তাহে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কর্মকর্তা, জেলার সিভিল সার্জন ও উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তাদের নিয়ে প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী (স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয়) একটি ভার্চুয়াল বৈঠক করেছেন। তাতে টিকার সংকটের বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে।
ইপিআই সূত্রে জানা গেছে, চলতি অর্থবছরে সরকার টিকা কেনার জন্য ১ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ দিয়েছে। এর মধ্যে সাড়ে আট শ কোটি টাকা দিয়ে ইপিআইয়ের নিয়মিত টিকা এবং বাকি অর্থ দিয়ে হাজিদের টিকা, জলাতঙ্কের টিকা ইত্যাদি কেনা হবে।
ইপিআইয়ের কেন্দ্রীয় কোল্ডস্টোরেজ থেকে টিকা জেলা পর্যায়ে সিভিল সার্জনের মাধ্যমে পাঠানো হয় এবং সেখানে সংরক্ষণ করে উপজেলা পর্যায়ে বিতরণ করা হয়। গত মঙ্গলবার থেকে জেলা চাহিদা অনুযায়ী টিকা পাঠানো শুরু হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার পর্যন্ত ২০টির বেশি জেলায় টিকা বিতরণ সম্পন্ন হয়েছে।
চাঁদপুরের সিভিল সার্জন মোহাম্মদ নুর আলম দীন জানিয়েছেন, জেলায় শিশুদের টিকার চলমান সংকট তিন দিন আগে শেষ হয়েছে। তিনি বলেন, ‘আমাদেরও সংকট ছিল। তবে তিন-চার দিন আগে চাহিদা অনুযায়ী সব টিকা সরবরাহ পেয়েছি। যে টিকা এসেছে, তাতে দেড় মাস নির্বিঘ্নে চলবে।’
সিলেটের বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক মো. আনিসুর রহমান জানিয়েছেন, বিভাগের চার জেলায় মজুত টিকায় আগামী মাসের মাঝামাঝি পর্যন্ত চলতে পারে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের উপপরিচালক (ইপিআই) মো. শাহরিয়ার সাজ্জাদ বলেন, নিয়মিত অপারেশনাল প্ল্যান থেকে কার্যক্রম রাজস্ব খাতে চলে আসার কারণে কিছুটা জটিলতা সৃষ্টি হয়েছে। তবে এগুলো স্থায়ী নয়। দেশের কোথাও কোথাও টিকার সংকট রয়েছে। কিন্তু এ সংকট সাধারণ কার্যক্রমে খুব বেশি সমস্যা সৃষ্টি করেনি। কোনো এলাকায় সংকট দেখামাত্রই সেখানে টিকা পাঠানো হচ্ছে।
স্বাস্থ্যবিষয়ক প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী অধ্যাপক ডা. মো. সায়েদুর রহমানও স্বাস্থ্য কার্যক্রম ওপি থেকে রাজস্ব খাতে আনার কারণে সাময়িক সমস্যার বিষয়টি উল্লেখ করেন। তিনি আশ্বাস দিয়ে বলেন, শিগগির এর সমাধান হবে। বিশেষ সহকারী জানান, গত অর্থবছরে টিকার জন্য সাড়ে চার শ কোটি টাকা বরাদ্দ ছিল। চলতি অর্থবছরে তা ১ হাজার কোটি টাকা করা হয়েছে। টিকা কেনার জন্য অর্থের অনুমোদন হয়েছে। দু-এক সপ্তাহের মধ্যে টিকা হাতে আসবে।
ডা. মো. সায়েদুর রহমান আরও বলেন, ‘টিকা এখন হাতে নেই, এমনটি নয়। কিছু ব্যবস্থাপনাগত ত্রুটির কারণে কয়েকটি কেন্দ্রে টিকা পাওয়া যাচ্ছে না। ১০-১২টি উপজেলায় এবং ৪টি জেলায় সাময়িক ঘাটতি হয়েছে, যা ইতিমধ্যে সমাধান করা হয়েছে। আমাদের হাতে থাকা মজুত দিয়ে কার্যক্রম চলছে।’

ছয় দফা দাবিতে টানা ষষ্ঠ দিনের মতো আন্দোলন করছেন স্বাস্থ্য সহকারীরা। মহাখালী স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সামনে তাঁদের অবস্থান কর্মসূচি চলছে। শনিবার থেকে সারা দেশের স্বাস্থ্য সহকারীরা ঢাকায় এসে লাগাতার কর্মবিরতির ঘোষণা দিয়েছেন।
১৫ ঘণ্টা আগে
বেতনকাঠামোর দশম গ্রেড বাস্তবায়নের দাবিতে হাসপাতালসহ দেশের সব স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানে চার ঘণ্টা কর্মবিরতি পালন করেছেন মেডিকেল টেকনোলজিস্ট ও ফার্মাসিস্টরা। গতকাল বুধবার সকাল ৮টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত তাঁদের এই কর্মসূচির কারণে চরম দুর্ভোগে পড়ে রোগী এবং তাদের স্বজনেরা। গত ৩০ নভেম্বর থেকে...
১ দিন আগে
দেশের সরকারি ও বেসরকারি সব ধরনের হাসপাতালে প্রতিবছরই বাড়ছে সেবাগ্রহণকারীর সংখ্যা। কিন্তু অধিকাংশ চিকিৎসাকেন্দ্রেই শৌচাগারগুলো ব্যবহারের অযোগ্য অথবা ন্যূনতম মানের নয়। ফলে চিকিৎসা নিতে এসে রোগীরা নানা ভোগান্তিতে পড়ছেন। আর প্রতিবন্ধী রোগীদের ক্ষেত্রে এ ভোগান্তি আরও তীব্র।
২ দিন আগে
দেশে গত এক দিনে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে আরও দুজনের মৃত্যু হয়েছে। এই সময়ে নতুন আক্রান্ত ৫৬৫ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে।
৩ দিন আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

নিয়োগবিধি সংশোধন, বেতনবৈষম্য দূরীকরণ এবং টেকনিক্যাল পদমর্যাদা প্রদানের দাবিতে টানা ষষ্ঠ দিনের মতো আন্দোলন করছেন স্বাস্থ্য সহকারীরা। আজ বৃহস্পতিবার (৪ নভেম্বর) রাজধানীর মহাখালীর স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সামনে দিনভর অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন তাঁরা। আন্দোলনকারীরা ঘোষণা দিয়েছেন, আগামী শনিবার (৬ ডিসেম্বর) থেকে সারা দেশের স্বাস্থ্য সহকারীরা ঢাকায় সমবেত হয়ে লাগাতার কর্মবিরতি পালন করবেন।
গত শনিবার (২৯ নভেম্বর) থেকে শুরু হওয়া কর্মবিরতি প্রথম দুই দিন চলেছিল শহীদ মিনারে। পরে তাঁরা অবস্থান নেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সামনে। বাংলাদেশ হেলথ অ্যাসিস্ট্যান্ট অ্যাসোসিয়েশনের ব্যানারে এ আন্দোলনে অংশ নিয়েছেন দেশের ৬৪ জেলার স্বাস্থ্য সহকারী, সহকারী স্বাস্থ্য পরিদর্শক ও স্বাস্থ্য পরিদর্শকেরা।
এই কর্মসূচির কারণে কয়েক দিন ধরে সারা দেশে ১ লাখ ২০ হাজার অস্থায়ী টিকাদান কেন্দ্রের কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। ফলে টিকা নিতে এসে অনেক মা ও শিশু ফিরে যেতে বাধ্য হচ্ছেন।
স্বাস্থ্য সহকারীদের এ কর্মসূচির কারণে সারা দেশে ১ লাখ ২০ হাজার অস্থায়ী টিকাদান কেন্দ্রের সেবা কয়েক দিন ধরে বন্ধ রয়েছে। এতে টিকা নিতে এসে মা ও শিশুরা ফিরে যাচ্ছেন।
স্বাস্থ্য সহকারীদের দাবি, প্রান্তিক জনগোষ্ঠীকে বঞ্চিত করে কর্মবিরতিতে যেতে তাঁরা চাননি। কিন্তু দীর্ঘদিনের বঞ্চনা ও কর্তৃপক্ষের প্রতিশ্রুতি ভঙ্গের কারণে তাঁরা আন্দোলনে যেতে বাধ্য হয়েছেন। দীর্ঘ ২৭ বছর ধরে বারবার প্রতিশ্রুতির আশ্বাস মিললেও বাস্তবে কোনো অগ্রগতি হয়নি।
দাবি আদায়ে অনড় অবস্থান জানিয়ে নেতারা বলেন, ‘আমাদের ১৬তম গ্রেড থেকে ১৪তম গ্রেডে উন্নীত করার সরকারি আদেশ জারি না হওয়া পর্যন্ত আমরা কর্মসূচি প্রত্যাহার করব না। এখন শান্তিপূর্ণ অবস্থান কর্মসূচি চলছে, প্রয়োজনে আরও কঠোর হতে বাধ্য হব।’

প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জন্য দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে স্বাস্থ্য সহকারীদের নানা বঞ্চনার চিত্রও তুলে ধরে আন্দোলনকারীরা জানান, টিকাদানের আগে মাসজুড়ে বাড়ি বাড়ি গিয়ে রেজিস্ট্রেশন করা, জন্ম-মৃত্যুনিবন্ধন, নবজাতক ও গর্ভবতী মায়ের রেজিস্ট্রেশন, যক্ষ্মা রোগী শনাক্তকরণ, ডটস (সরাসরি পর্যবেক্ষণ থেরাপি) পদ্ধতিতে ওষুধ খাওয়ানো, উঠান বৈঠক, মা সমাবেশসহ বিভিন্ন সেবা তাঁরা দিয়ে থাকেন। সপ্তাহে তিন দিন কমিউনিটি ক্লিনিকে নিয়মিত সেবা দেওয়ার পরও তাঁদের মাসিক ভ্রমণভাতা মাত্র ৬০০ টাকা। আর বেতন মোট ৯ হাজার ৭০০ টাকা।
আন্দোলনকারীদের দাবির মধ্যে রয়েছে, নিয়োগবিধি সংশোধন করে স্নাতক বা সমমানের যোগ্যতা যুক্ত করে ১৪তম গ্রেড প্রদান, ইন-সার্ভিস ডিপ্লোমাধারীদের ১১তম গ্রেডসহ টেকনিক্যাল পদমর্যাদা দেওয়া, ধারাবাহিকভাবে উচ্চতর গ্রেডে পদোন্নতি নিশ্চিত করা, প্রশিক্ষণ ছাড়াই স্নাতক স্কেলে অন্তর্ভুক্ত করা, বেতনস্কেল পুনর্নির্ধারণের সময় টাইম স্কেল বা উচ্চতর স্কেল সংযুক্ত করা এবং ইন-সার্ভিস ডিপ্লোমা (এসআইটি) সম্পন্নকারীদের সমমান স্বীকৃতি প্রদান।
বাংলাদেশ হেলথ অ্যাসিস্ট্যান্ট অ্যাসোসিয়েশনের কেন্দ্রীয় সমন্বয় পরিষদের সদস্যসচিব ফজলুল হক চৌধুরী আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক প্রশাসনের সঙ্গে বৈঠক হয়েছে। তাঁরা জানিয়েছেন, আমাদের ফাইল জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। সেখানে এখনো বিশ্লেষণ শুরু হয়নি।’
তিনি আরও জানান, ৬৪ জেলার সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকদের সঙ্গে আলোচনা করে আগামী শনিবার থেকে লাগাতার কর্মবিরতির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক (প্রশাসন) ডা. এ বি এম আবু হানিফ আজ সন্ধ্যায় মোবাইল ফোনে আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘তাদের দাবির বিষয়ে আমাদের কোনো আপত্তি নেই। আমরা প্রয়োজনীয় কাগজপত্র প্রস্তুত করে মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছি। এখানে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ছাড়াও অর্থ মন্ত্রণালয় এবং জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের কাজ রয়েছে। সেখানে প্রক্রিয়াগতভাবে কিছুটা সময় লাগছে। গত তিন দিন তারা স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সামনে অবস্থান করছে। আমরা কাজ করছি। আমরা আশা করছি, সবকিছু ভালোভাবে সমাধান হবে।’

নিয়োগবিধি সংশোধন, বেতনবৈষম্য দূরীকরণ এবং টেকনিক্যাল পদমর্যাদা প্রদানের দাবিতে টানা ষষ্ঠ দিনের মতো আন্দোলন করছেন স্বাস্থ্য সহকারীরা। আজ বৃহস্পতিবার (৪ নভেম্বর) রাজধানীর মহাখালীর স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সামনে দিনভর অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন তাঁরা। আন্দোলনকারীরা ঘোষণা দিয়েছেন, আগামী শনিবার (৬ ডিসেম্বর) থেকে সারা দেশের স্বাস্থ্য সহকারীরা ঢাকায় সমবেত হয়ে লাগাতার কর্মবিরতি পালন করবেন।
গত শনিবার (২৯ নভেম্বর) থেকে শুরু হওয়া কর্মবিরতি প্রথম দুই দিন চলেছিল শহীদ মিনারে। পরে তাঁরা অবস্থান নেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সামনে। বাংলাদেশ হেলথ অ্যাসিস্ট্যান্ট অ্যাসোসিয়েশনের ব্যানারে এ আন্দোলনে অংশ নিয়েছেন দেশের ৬৪ জেলার স্বাস্থ্য সহকারী, সহকারী স্বাস্থ্য পরিদর্শক ও স্বাস্থ্য পরিদর্শকেরা।
এই কর্মসূচির কারণে কয়েক দিন ধরে সারা দেশে ১ লাখ ২০ হাজার অস্থায়ী টিকাদান কেন্দ্রের কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। ফলে টিকা নিতে এসে অনেক মা ও শিশু ফিরে যেতে বাধ্য হচ্ছেন।
স্বাস্থ্য সহকারীদের এ কর্মসূচির কারণে সারা দেশে ১ লাখ ২০ হাজার অস্থায়ী টিকাদান কেন্দ্রের সেবা কয়েক দিন ধরে বন্ধ রয়েছে। এতে টিকা নিতে এসে মা ও শিশুরা ফিরে যাচ্ছেন।
স্বাস্থ্য সহকারীদের দাবি, প্রান্তিক জনগোষ্ঠীকে বঞ্চিত করে কর্মবিরতিতে যেতে তাঁরা চাননি। কিন্তু দীর্ঘদিনের বঞ্চনা ও কর্তৃপক্ষের প্রতিশ্রুতি ভঙ্গের কারণে তাঁরা আন্দোলনে যেতে বাধ্য হয়েছেন। দীর্ঘ ২৭ বছর ধরে বারবার প্রতিশ্রুতির আশ্বাস মিললেও বাস্তবে কোনো অগ্রগতি হয়নি।
দাবি আদায়ে অনড় অবস্থান জানিয়ে নেতারা বলেন, ‘আমাদের ১৬তম গ্রেড থেকে ১৪তম গ্রেডে উন্নীত করার সরকারি আদেশ জারি না হওয়া পর্যন্ত আমরা কর্মসূচি প্রত্যাহার করব না। এখন শান্তিপূর্ণ অবস্থান কর্মসূচি চলছে, প্রয়োজনে আরও কঠোর হতে বাধ্য হব।’

প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জন্য দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে স্বাস্থ্য সহকারীদের নানা বঞ্চনার চিত্রও তুলে ধরে আন্দোলনকারীরা জানান, টিকাদানের আগে মাসজুড়ে বাড়ি বাড়ি গিয়ে রেজিস্ট্রেশন করা, জন্ম-মৃত্যুনিবন্ধন, নবজাতক ও গর্ভবতী মায়ের রেজিস্ট্রেশন, যক্ষ্মা রোগী শনাক্তকরণ, ডটস (সরাসরি পর্যবেক্ষণ থেরাপি) পদ্ধতিতে ওষুধ খাওয়ানো, উঠান বৈঠক, মা সমাবেশসহ বিভিন্ন সেবা তাঁরা দিয়ে থাকেন। সপ্তাহে তিন দিন কমিউনিটি ক্লিনিকে নিয়মিত সেবা দেওয়ার পরও তাঁদের মাসিক ভ্রমণভাতা মাত্র ৬০০ টাকা। আর বেতন মোট ৯ হাজার ৭০০ টাকা।
আন্দোলনকারীদের দাবির মধ্যে রয়েছে, নিয়োগবিধি সংশোধন করে স্নাতক বা সমমানের যোগ্যতা যুক্ত করে ১৪তম গ্রেড প্রদান, ইন-সার্ভিস ডিপ্লোমাধারীদের ১১তম গ্রেডসহ টেকনিক্যাল পদমর্যাদা দেওয়া, ধারাবাহিকভাবে উচ্চতর গ্রেডে পদোন্নতি নিশ্চিত করা, প্রশিক্ষণ ছাড়াই স্নাতক স্কেলে অন্তর্ভুক্ত করা, বেতনস্কেল পুনর্নির্ধারণের সময় টাইম স্কেল বা উচ্চতর স্কেল সংযুক্ত করা এবং ইন-সার্ভিস ডিপ্লোমা (এসআইটি) সম্পন্নকারীদের সমমান স্বীকৃতি প্রদান।
বাংলাদেশ হেলথ অ্যাসিস্ট্যান্ট অ্যাসোসিয়েশনের কেন্দ্রীয় সমন্বয় পরিষদের সদস্যসচিব ফজলুল হক চৌধুরী আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক প্রশাসনের সঙ্গে বৈঠক হয়েছে। তাঁরা জানিয়েছেন, আমাদের ফাইল জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। সেখানে এখনো বিশ্লেষণ শুরু হয়নি।’
তিনি আরও জানান, ৬৪ জেলার সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকদের সঙ্গে আলোচনা করে আগামী শনিবার থেকে লাগাতার কর্মবিরতির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক (প্রশাসন) ডা. এ বি এম আবু হানিফ আজ সন্ধ্যায় মোবাইল ফোনে আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘তাদের দাবির বিষয়ে আমাদের কোনো আপত্তি নেই। আমরা প্রয়োজনীয় কাগজপত্র প্রস্তুত করে মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছি। এখানে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ছাড়াও অর্থ মন্ত্রণালয় এবং জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের কাজ রয়েছে। সেখানে প্রক্রিয়াগতভাবে কিছুটা সময় লাগছে। গত তিন দিন তারা স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সামনে অবস্থান করছে। আমরা কাজ করছি। আমরা আশা করছি, সবকিছু ভালোভাবে সমাধান হবে।’

গত সপ্তাহের শুরুতে ৯ মাস বয়সী মেয়েশিশুকে রাজধানীর রমনা এলাকায় ইপিআইয়ের এক স্থায়ী টিকা কেন্দ্রে নিয়ে যান বেসরকারি চাকরিজীবী বাবা। উদ্দেশ্য, হাম-রুবেলার (এমআর) প্রথম ডোজ দেওয়া। তবে সেদিন কেন্দ্রটিতে টিকা না থাকায় তাঁকে ফিরে আসতে হয়।
২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫
বেতনকাঠামোর দশম গ্রেড বাস্তবায়নের দাবিতে হাসপাতালসহ দেশের সব স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানে চার ঘণ্টা কর্মবিরতি পালন করেছেন মেডিকেল টেকনোলজিস্ট ও ফার্মাসিস্টরা। গতকাল বুধবার সকাল ৮টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত তাঁদের এই কর্মসূচির কারণে চরম দুর্ভোগে পড়ে রোগী এবং তাদের স্বজনেরা। গত ৩০ নভেম্বর থেকে...
১ দিন আগে
দেশের সরকারি ও বেসরকারি সব ধরনের হাসপাতালে প্রতিবছরই বাড়ছে সেবাগ্রহণকারীর সংখ্যা। কিন্তু অধিকাংশ চিকিৎসাকেন্দ্রেই শৌচাগারগুলো ব্যবহারের অযোগ্য অথবা ন্যূনতম মানের নয়। ফলে চিকিৎসা নিতে এসে রোগীরা নানা ভোগান্তিতে পড়ছেন। আর প্রতিবন্ধী রোগীদের ক্ষেত্রে এ ভোগান্তি আরও তীব্র।
২ দিন আগে
দেশে গত এক দিনে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে আরও দুজনের মৃত্যু হয়েছে। এই সময়ে নতুন আক্রান্ত ৫৬৫ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে।
৩ দিন আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

বেতনকাঠামোর দশম গ্রেড বাস্তবায়নের দাবিতে হাসপাতালসহ দেশের সব স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানে চার ঘণ্টা কর্মবিরতি পালন করেছেন মেডিকেল টেকনোলজিস্ট ও ফার্মাসিস্টরা। গতকাল বুধবার সকাল ৮টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত তাঁদের এই কর্মসূচির কারণে চরম দুর্ভোগে পড়ে রোগী এবং তাদের স্বজনেরা। গত ৩০ নভেম্বর থেকে টেকনোলজিস্ট ও ফার্মাসিস্টরা কর্মবিরতি পালন করছেন।
এদিকে দাবি আদায়ে বৃহস্পতিবার কমপ্লিট শাটডাউন কর্মসূচিতে যাওয়ার কথা রয়েছে আন্দোলনকারীদের। তবে কঠোর এই কর্মসূচিতে যাওয়ার আগে গতকাল রাতে বৈঠকে বসেছেন আন্দোলনকারীরা। বৈঠক সূত্রে জানা গেছে, শাটডাউন কর্মসূচি প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত আসতে পারে।
মেডিকেল টেকনোলজিস্ট ও ফার্মাসিস্টদের কর্মবিরতির কারণে রোগীরা চরম ভোগান্তিতে পড়লেও দাবি আদায়ে দিনভর কঠোর অবস্থানে ছিলেন তাঁরা। কর্মবিরতির সময় হাসপাতালের জরুরি সেবা চালু থাকলেও অনেককে সেবা না পেয়ে চলে যেতে দেখা গেছে।
আন্দোলনরতরা জানান, মেডিকেল টেকনোলজিস্ট ও ফার্মাসিস্টদের দশম গ্রেড বাস্তবায়নের ফাইল জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে আটকে আছে। আমলাতান্ত্রিক জটিলতায় দীর্ঘদিনেও বিষয়টির সমাধান হয়নি। এর আগে ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার, ডিপ্লোমা নার্স ও ডিপ্লোমা কৃষিবিদদের ১১তম গ্রেড থেকে ১০ম গ্রেডে উন্নীত করা হয়েছে। ফলে দাবি আদায়ে এবার কঠোর কর্মসূচি পালন করছেন তাঁরা।
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রতিদিন ১০ হাজারের বেশি মানুষ চিকিৎসাসেবা নিতে যায়। এসব সেবাপ্রার্থীর বড় অংশ ঢাকার বাইরে থেকে আসে। টেকনোলজিস্ট ও ফার্মাসিস্টদের গতকালের কর্মবিরতির কারণে অনেকে চিকিৎসা না পেয়ে চলে যায়।
বিভিন্ন স্থানে দিনভর ভোগান্তি
চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে সেবা বন্ধ রেখে চার ঘণ্টা কর্মবিরতি পালন করেছেন টেকনোলজিস্ট ও ফার্মাসিস্টরা। এতে ভোগান্তিতে পড়ে হাসপাতালে সেবা নিতে আসা রোগী ও তাদের স্বজনেরা।
কর্মবিরতি চলাকালে হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়, হাসপাতালের ফার্মেসিতে বিনা মূল্যে সরকারি ওষুধ বিতরণ, রক্ত পরীক্ষা, এক্স-রে, আলট্রাসনোগ্রামসহ রোগনির্ণয়ের বিভিন্ন সেবাকেন্দ্র বন্ধ রয়েছে। এ সময় হাসপাতালের বিভিন্ন ওয়ার্ড ও সেবাকেন্দ্রগুলোয় কর্মবিরতির ব্যানার ঝুলছিল। তবে হাসপাতালের অন্যান্য সেবা কার্যক্রম স্বাভাবিক ছিল। চমেক হাসপাতালে রেডিওলজি অ্যান্ড ইমেজিং বিভাগের একজন কর্মচারী আজকের পত্রিকাকে বলেন, কর্মবিরতির ফলে এক্স-রে করা সাময়িক বন্ধ ছিল।
একই দাবিতে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালের সামনে অবস্থান নিয়ে সমাবেশ করেন মেডিকেল টেকনোলজিস্ট ও ফার্মাসিস্টরা। বুধবার সকাল ৯টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত এ কর্মসূচি পালন করেন তাঁরা। এ সময় আন্দোলনকারীরা বলেন, ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার ও নার্সদের মতো তাঁদেরও চাকরিগত মর্যাদা দশম গ্রেডে উন্নীত না হওয়া পর্যন্ত কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে।
এ ছাড়া সিরাজগঞ্জ সদরে শহীদ এম মনসুর আলী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মূল ফটকের সামনে অবস্থান নিয়ে কর্মসূচি পালিত হয়। কর্মবিরতির কারণে হাসপাতালে সব ধরনের পরীক্ষা-নিরীক্ষা এবং ওষুধ বিতরণ বন্ধ ছিল।
আবদুল্লাহ নামের এক রোগী বলেন, ‘সিটি স্ক্যান করানোর জন্য এসেছিলাম। এসে শুনি, কর্মবিরতি দিয়েছে। এ জন্য ফিরে যাচ্ছি।’
উল্লাপাড়ার আনিসুর নামের এক বৃদ্ধ বলেন, ‘কোমরে ব্যথা। তাই ডাক্তারের কাছে এসেছি। এসে শুনি, দুপুরের আগে চিকিৎসা হবে না।’
একই দাবিতে রাজবাড়ীতে মেডিকেল টেকনোলজিস্ট ও ফার্মাসিস্টরা চার ঘণ্টার কর্মবিরতি পালন করেছেন। বুধবার সকাল ৮টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত এই কর্মবিরতি পালন করেন তাঁরা। কর্মবিরতি কর্মসূচিতে দাবি আদায় না হলে ৪ ডিসেম্বর থেকে পূর্ণদিবস কর্মবিরতি পালনের মাধ্যমে হাসপাতাল শাটডাউন ঘোষণার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তাঁরা।

বেতনকাঠামোর দশম গ্রেড বাস্তবায়নের দাবিতে হাসপাতালসহ দেশের সব স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানে চার ঘণ্টা কর্মবিরতি পালন করেছেন মেডিকেল টেকনোলজিস্ট ও ফার্মাসিস্টরা। গতকাল বুধবার সকাল ৮টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত তাঁদের এই কর্মসূচির কারণে চরম দুর্ভোগে পড়ে রোগী এবং তাদের স্বজনেরা। গত ৩০ নভেম্বর থেকে টেকনোলজিস্ট ও ফার্মাসিস্টরা কর্মবিরতি পালন করছেন।
এদিকে দাবি আদায়ে বৃহস্পতিবার কমপ্লিট শাটডাউন কর্মসূচিতে যাওয়ার কথা রয়েছে আন্দোলনকারীদের। তবে কঠোর এই কর্মসূচিতে যাওয়ার আগে গতকাল রাতে বৈঠকে বসেছেন আন্দোলনকারীরা। বৈঠক সূত্রে জানা গেছে, শাটডাউন কর্মসূচি প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত আসতে পারে।
মেডিকেল টেকনোলজিস্ট ও ফার্মাসিস্টদের কর্মবিরতির কারণে রোগীরা চরম ভোগান্তিতে পড়লেও দাবি আদায়ে দিনভর কঠোর অবস্থানে ছিলেন তাঁরা। কর্মবিরতির সময় হাসপাতালের জরুরি সেবা চালু থাকলেও অনেককে সেবা না পেয়ে চলে যেতে দেখা গেছে।
আন্দোলনরতরা জানান, মেডিকেল টেকনোলজিস্ট ও ফার্মাসিস্টদের দশম গ্রেড বাস্তবায়নের ফাইল জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে আটকে আছে। আমলাতান্ত্রিক জটিলতায় দীর্ঘদিনেও বিষয়টির সমাধান হয়নি। এর আগে ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার, ডিপ্লোমা নার্স ও ডিপ্লোমা কৃষিবিদদের ১১তম গ্রেড থেকে ১০ম গ্রেডে উন্নীত করা হয়েছে। ফলে দাবি আদায়ে এবার কঠোর কর্মসূচি পালন করছেন তাঁরা।
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রতিদিন ১০ হাজারের বেশি মানুষ চিকিৎসাসেবা নিতে যায়। এসব সেবাপ্রার্থীর বড় অংশ ঢাকার বাইরে থেকে আসে। টেকনোলজিস্ট ও ফার্মাসিস্টদের গতকালের কর্মবিরতির কারণে অনেকে চিকিৎসা না পেয়ে চলে যায়।
বিভিন্ন স্থানে দিনভর ভোগান্তি
চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে সেবা বন্ধ রেখে চার ঘণ্টা কর্মবিরতি পালন করেছেন টেকনোলজিস্ট ও ফার্মাসিস্টরা। এতে ভোগান্তিতে পড়ে হাসপাতালে সেবা নিতে আসা রোগী ও তাদের স্বজনেরা।
কর্মবিরতি চলাকালে হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়, হাসপাতালের ফার্মেসিতে বিনা মূল্যে সরকারি ওষুধ বিতরণ, রক্ত পরীক্ষা, এক্স-রে, আলট্রাসনোগ্রামসহ রোগনির্ণয়ের বিভিন্ন সেবাকেন্দ্র বন্ধ রয়েছে। এ সময় হাসপাতালের বিভিন্ন ওয়ার্ড ও সেবাকেন্দ্রগুলোয় কর্মবিরতির ব্যানার ঝুলছিল। তবে হাসপাতালের অন্যান্য সেবা কার্যক্রম স্বাভাবিক ছিল। চমেক হাসপাতালে রেডিওলজি অ্যান্ড ইমেজিং বিভাগের একজন কর্মচারী আজকের পত্রিকাকে বলেন, কর্মবিরতির ফলে এক্স-রে করা সাময়িক বন্ধ ছিল।
একই দাবিতে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালের সামনে অবস্থান নিয়ে সমাবেশ করেন মেডিকেল টেকনোলজিস্ট ও ফার্মাসিস্টরা। বুধবার সকাল ৯টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত এ কর্মসূচি পালন করেন তাঁরা। এ সময় আন্দোলনকারীরা বলেন, ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার ও নার্সদের মতো তাঁদেরও চাকরিগত মর্যাদা দশম গ্রেডে উন্নীত না হওয়া পর্যন্ত কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে।
এ ছাড়া সিরাজগঞ্জ সদরে শহীদ এম মনসুর আলী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মূল ফটকের সামনে অবস্থান নিয়ে কর্মসূচি পালিত হয়। কর্মবিরতির কারণে হাসপাতালে সব ধরনের পরীক্ষা-নিরীক্ষা এবং ওষুধ বিতরণ বন্ধ ছিল।
আবদুল্লাহ নামের এক রোগী বলেন, ‘সিটি স্ক্যান করানোর জন্য এসেছিলাম। এসে শুনি, কর্মবিরতি দিয়েছে। এ জন্য ফিরে যাচ্ছি।’
উল্লাপাড়ার আনিসুর নামের এক বৃদ্ধ বলেন, ‘কোমরে ব্যথা। তাই ডাক্তারের কাছে এসেছি। এসে শুনি, দুপুরের আগে চিকিৎসা হবে না।’
একই দাবিতে রাজবাড়ীতে মেডিকেল টেকনোলজিস্ট ও ফার্মাসিস্টরা চার ঘণ্টার কর্মবিরতি পালন করেছেন। বুধবার সকাল ৮টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত এই কর্মবিরতি পালন করেন তাঁরা। কর্মবিরতি কর্মসূচিতে দাবি আদায় না হলে ৪ ডিসেম্বর থেকে পূর্ণদিবস কর্মবিরতি পালনের মাধ্যমে হাসপাতাল শাটডাউন ঘোষণার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তাঁরা।

গত সপ্তাহের শুরুতে ৯ মাস বয়সী মেয়েশিশুকে রাজধানীর রমনা এলাকায় ইপিআইয়ের এক স্থায়ী টিকা কেন্দ্রে নিয়ে যান বেসরকারি চাকরিজীবী বাবা। উদ্দেশ্য, হাম-রুবেলার (এমআর) প্রথম ডোজ দেওয়া। তবে সেদিন কেন্দ্রটিতে টিকা না থাকায় তাঁকে ফিরে আসতে হয়।
২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫
ছয় দফা দাবিতে টানা ষষ্ঠ দিনের মতো আন্দোলন করছেন স্বাস্থ্য সহকারীরা। মহাখালী স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সামনে তাঁদের অবস্থান কর্মসূচি চলছে। শনিবার থেকে সারা দেশের স্বাস্থ্য সহকারীরা ঢাকায় এসে লাগাতার কর্মবিরতির ঘোষণা দিয়েছেন।
১৫ ঘণ্টা আগে
দেশের সরকারি ও বেসরকারি সব ধরনের হাসপাতালে প্রতিবছরই বাড়ছে সেবাগ্রহণকারীর সংখ্যা। কিন্তু অধিকাংশ চিকিৎসাকেন্দ্রেই শৌচাগারগুলো ব্যবহারের অযোগ্য অথবা ন্যূনতম মানের নয়। ফলে চিকিৎসা নিতে এসে রোগীরা নানা ভোগান্তিতে পড়ছেন। আর প্রতিবন্ধী রোগীদের ক্ষেত্রে এ ভোগান্তি আরও তীব্র।
২ দিন আগে
দেশে গত এক দিনে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে আরও দুজনের মৃত্যু হয়েছে। এই সময়ে নতুন আক্রান্ত ৫৬৫ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে।
৩ দিন আগেমুহাম্মাদ শফিউল্লাহ, ঢাকা

দেশের সরকারি ও বেসরকারি সব ধরনের হাসপাতালে প্রতিবছরই বাড়ছে সেবাগ্রহণকারীর সংখ্যা। কিন্তু অধিকাংশ চিকিৎসাকেন্দ্রেই শৌচাগারগুলো ব্যবহারের অযোগ্য অথবা ন্যূনতম মানের নয়। ফলে চিকিৎসা নিতে এসে রোগীরা নানা ভোগান্তিতে পড়ছেন। আর প্রতিবন্ধী রোগীদের ক্ষেত্রে এ ভোগান্তি আরও তীব্র। কারণ হাসপাতালে প্রতিবন্ধী রোগীদের উপযোগী শৌচাগার ১ শতাংশেরও কম।
হাসপাতাল পরিচালনা বিশেষজ্ঞরা বলছেন, প্রতিবন্ধীবান্ধব শৌচাগার একটি হাসপাতালের মৌলিক পরিকাঠামোর অংশ হওয়া উচিত। তবে দেশে এ ধরনের সুবিধার মারাত্মক ঘাটতি রয়েছে। বিশেষ করে সরকারি হাসপাতালগুলোতে ঘাটতি বেশি। ফলে রোগীরা শুধু ভোগান্তিতেই পড়ছেন না; বরং গুরুতর স্বাস্থ্যঝুঁকিরও সম্মুখীন হচ্ছেন। দীর্ঘ সময় শৌচাগার ব্যবহার করতে না পারার ফলে কিডনি জটিলতা, ইউরিনারি ট্র্যাক্ট ইনফেকশন (মূত্রনালি সংক্রমণ) ও পানিশূন্যতাসহ নানা সমস্যা দেখা দেয়।
যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক বিজ্ঞান, প্রযুক্তি ও চিকিৎসাবিষয়ক গবেষণা প্রকাশনা সংস্থা পাবলিক লাইব্রেরি অব সায়েন্সের প্লস ওয়ান সাময়িকীতে বাংলাদেশে হাসপাতালের শৌচাগার নিয়ে একটি গবেষণাপত্র প্রকাশ পায়। গবেষণার শিরোনাম ‘ইনঅ্যাডিক্যুইট স্যানিটেশন ইন হেলথকেয়ার ফ্যাসিলিটিজ: অ্যা কম্প্রিহেনসিভ ইভ্যালুয়েশন অব টয়লেটস ইন মেজর হাসপাতাল ইন ঢাকা, বাংলাদেশ’। গবেষণাটি করেছেন অস্ট্রেলিয়া ও বাংলাদেশের নয়জন গবেষক।
গবেষণায় রাজধানীর ১০টি সরকারি ও ২টি বেসরকারি হাসপাতালে মোট ২ হাজার ৪৫৯টি শৌচাগার পর্যবেক্ষণ করা হয়। এর মধ্যে প্রতিবন্ধী রোগীদের উপযোগী শৌচাগারের সংখ্যা মাত্র ১০টি, যা ১ শতাংশেরও কম বা শূন্য দশমিক ৪ শতাংশ। প্রায় ৯৯ শতাংশ শৌচাগার হুইলচেয়ার ব্যবহারকারী বা চলাফেরায় সীমাবদ্ধ রোগীদের জন্য ব্যবহারযোগ্য নয়। অধিকাংশ শৌচাগারে দরজা সংকীর্ণ, কমোডের উচ্চতা অনুপযুক্ত, গ্র্যাব-বার বা হাতল নেই এবং প্রবেশপথে র্যাম্পের সুবিধাও নেই। ফলে প্রতিবন্ধী রোগীরা শৌচাগার ব্যবহার করতে গিয়ে চরম ভোগান্তি এবং নিরাপত্তাহীনতায় পড়েন।
দেশে ক্যানসার রোগীদের জন্য সর্বোচ্চ সরকারি চিকিৎসা কেন্দ্র জাতীয় ক্যানসার গবেষণা ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল ঘুরে এখানকার দুটি ভবনের কোথাও প্রতিবন্ধী রোগীদের জন্য নির্ধারিত শৌচাগার পাওয়া যায়নি।
একইভাবে হৃদরোগ চিকিৎসার জন্য সরকারের বিশেষায়িত চিকিৎসাকেন্দ্র জাতীয় হৃদ্রোগ ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের তিনটি ভবনের কোথাও নেই প্রতিবন্ধী রোগীদের জন্য নির্ধারিত শৌচাগার। তাঁদের জন্য আলাদা শৌচাগার না থাকার কথা স্বীকার করেন এই হাসপাতালের পরিচালক অধ্যাপক আব্দুল ওয়াদুদ চৌধুরী। তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘এখানে ভর্তি রোগীরা বেডসাইড টয়লেট ব্যবহার করেন। বিভিন্ন হাসপাতালের জন্য নতুন যেসব ভবন নির্মাণ করা হচ্ছে, সেখানে প্রতিবন্ধী রোগীদের জন্য শৌচাগার, হুইলচেয়ার বা শয্যাসহ ওঠানামার জন্য প্রয়োজনীয় র্যাম্প রাখা প্রয়োজন।’
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক (হাসপাতাল ও ক্লিনিক) আবু হোসেন মো. মঈনুল আহসান বলেন, ‘সরকারি হাসপাতালে নির্ধারিত শয্যার ২-৩ গুণ রোগী ভর্তি থাকেন। দৈনিক বহির্বিভাগে রোগী আসেন সক্ষমতার ৪-৫ গুণ। স্বাভাবিক রোগীদের জন্য উন্নত শৌচাগারের ব্যবস্থাপনা নেই। প্রতিবন্ধী রোগীদের জন্যও আলাদা শৌচাগার রাখা যায়নি। তবে আমরা এ বিষয়ে পরিকল্পনা করছি।’

দেশের সরকারি ও বেসরকারি সব ধরনের হাসপাতালে প্রতিবছরই বাড়ছে সেবাগ্রহণকারীর সংখ্যা। কিন্তু অধিকাংশ চিকিৎসাকেন্দ্রেই শৌচাগারগুলো ব্যবহারের অযোগ্য অথবা ন্যূনতম মানের নয়। ফলে চিকিৎসা নিতে এসে রোগীরা নানা ভোগান্তিতে পড়ছেন। আর প্রতিবন্ধী রোগীদের ক্ষেত্রে এ ভোগান্তি আরও তীব্র। কারণ হাসপাতালে প্রতিবন্ধী রোগীদের উপযোগী শৌচাগার ১ শতাংশেরও কম।
হাসপাতাল পরিচালনা বিশেষজ্ঞরা বলছেন, প্রতিবন্ধীবান্ধব শৌচাগার একটি হাসপাতালের মৌলিক পরিকাঠামোর অংশ হওয়া উচিত। তবে দেশে এ ধরনের সুবিধার মারাত্মক ঘাটতি রয়েছে। বিশেষ করে সরকারি হাসপাতালগুলোতে ঘাটতি বেশি। ফলে রোগীরা শুধু ভোগান্তিতেই পড়ছেন না; বরং গুরুতর স্বাস্থ্যঝুঁকিরও সম্মুখীন হচ্ছেন। দীর্ঘ সময় শৌচাগার ব্যবহার করতে না পারার ফলে কিডনি জটিলতা, ইউরিনারি ট্র্যাক্ট ইনফেকশন (মূত্রনালি সংক্রমণ) ও পানিশূন্যতাসহ নানা সমস্যা দেখা দেয়।
যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক বিজ্ঞান, প্রযুক্তি ও চিকিৎসাবিষয়ক গবেষণা প্রকাশনা সংস্থা পাবলিক লাইব্রেরি অব সায়েন্সের প্লস ওয়ান সাময়িকীতে বাংলাদেশে হাসপাতালের শৌচাগার নিয়ে একটি গবেষণাপত্র প্রকাশ পায়। গবেষণার শিরোনাম ‘ইনঅ্যাডিক্যুইট স্যানিটেশন ইন হেলথকেয়ার ফ্যাসিলিটিজ: অ্যা কম্প্রিহেনসিভ ইভ্যালুয়েশন অব টয়লেটস ইন মেজর হাসপাতাল ইন ঢাকা, বাংলাদেশ’। গবেষণাটি করেছেন অস্ট্রেলিয়া ও বাংলাদেশের নয়জন গবেষক।
গবেষণায় রাজধানীর ১০টি সরকারি ও ২টি বেসরকারি হাসপাতালে মোট ২ হাজার ৪৫৯টি শৌচাগার পর্যবেক্ষণ করা হয়। এর মধ্যে প্রতিবন্ধী রোগীদের উপযোগী শৌচাগারের সংখ্যা মাত্র ১০টি, যা ১ শতাংশেরও কম বা শূন্য দশমিক ৪ শতাংশ। প্রায় ৯৯ শতাংশ শৌচাগার হুইলচেয়ার ব্যবহারকারী বা চলাফেরায় সীমাবদ্ধ রোগীদের জন্য ব্যবহারযোগ্য নয়। অধিকাংশ শৌচাগারে দরজা সংকীর্ণ, কমোডের উচ্চতা অনুপযুক্ত, গ্র্যাব-বার বা হাতল নেই এবং প্রবেশপথে র্যাম্পের সুবিধাও নেই। ফলে প্রতিবন্ধী রোগীরা শৌচাগার ব্যবহার করতে গিয়ে চরম ভোগান্তি এবং নিরাপত্তাহীনতায় পড়েন।
দেশে ক্যানসার রোগীদের জন্য সর্বোচ্চ সরকারি চিকিৎসা কেন্দ্র জাতীয় ক্যানসার গবেষণা ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল ঘুরে এখানকার দুটি ভবনের কোথাও প্রতিবন্ধী রোগীদের জন্য নির্ধারিত শৌচাগার পাওয়া যায়নি।
একইভাবে হৃদরোগ চিকিৎসার জন্য সরকারের বিশেষায়িত চিকিৎসাকেন্দ্র জাতীয় হৃদ্রোগ ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের তিনটি ভবনের কোথাও নেই প্রতিবন্ধী রোগীদের জন্য নির্ধারিত শৌচাগার। তাঁদের জন্য আলাদা শৌচাগার না থাকার কথা স্বীকার করেন এই হাসপাতালের পরিচালক অধ্যাপক আব্দুল ওয়াদুদ চৌধুরী। তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘এখানে ভর্তি রোগীরা বেডসাইড টয়লেট ব্যবহার করেন। বিভিন্ন হাসপাতালের জন্য নতুন যেসব ভবন নির্মাণ করা হচ্ছে, সেখানে প্রতিবন্ধী রোগীদের জন্য শৌচাগার, হুইলচেয়ার বা শয্যাসহ ওঠানামার জন্য প্রয়োজনীয় র্যাম্প রাখা প্রয়োজন।’
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক (হাসপাতাল ও ক্লিনিক) আবু হোসেন মো. মঈনুল আহসান বলেন, ‘সরকারি হাসপাতালে নির্ধারিত শয্যার ২-৩ গুণ রোগী ভর্তি থাকেন। দৈনিক বহির্বিভাগে রোগী আসেন সক্ষমতার ৪-৫ গুণ। স্বাভাবিক রোগীদের জন্য উন্নত শৌচাগারের ব্যবস্থাপনা নেই। প্রতিবন্ধী রোগীদের জন্যও আলাদা শৌচাগার রাখা যায়নি। তবে আমরা এ বিষয়ে পরিকল্পনা করছি।’

গত সপ্তাহের শুরুতে ৯ মাস বয়সী মেয়েশিশুকে রাজধানীর রমনা এলাকায় ইপিআইয়ের এক স্থায়ী টিকা কেন্দ্রে নিয়ে যান বেসরকারি চাকরিজীবী বাবা। উদ্দেশ্য, হাম-রুবেলার (এমআর) প্রথম ডোজ দেওয়া। তবে সেদিন কেন্দ্রটিতে টিকা না থাকায় তাঁকে ফিরে আসতে হয়।
২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫
ছয় দফা দাবিতে টানা ষষ্ঠ দিনের মতো আন্দোলন করছেন স্বাস্থ্য সহকারীরা। মহাখালী স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সামনে তাঁদের অবস্থান কর্মসূচি চলছে। শনিবার থেকে সারা দেশের স্বাস্থ্য সহকারীরা ঢাকায় এসে লাগাতার কর্মবিরতির ঘোষণা দিয়েছেন।
১৫ ঘণ্টা আগে
বেতনকাঠামোর দশম গ্রেড বাস্তবায়নের দাবিতে হাসপাতালসহ দেশের সব স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানে চার ঘণ্টা কর্মবিরতি পালন করেছেন মেডিকেল টেকনোলজিস্ট ও ফার্মাসিস্টরা। গতকাল বুধবার সকাল ৮টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত তাঁদের এই কর্মসূচির কারণে চরম দুর্ভোগে পড়ে রোগী এবং তাদের স্বজনেরা। গত ৩০ নভেম্বর থেকে...
১ দিন আগে
দেশে গত এক দিনে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে আরও দুজনের মৃত্যু হয়েছে। এই সময়ে নতুন আক্রান্ত ৫৬৫ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে।
৩ দিন আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

দেশে গত এক দিনে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে আরও দুজনের মৃত্যু হয়েছে। এই সময়ে নতুন আক্রান্ত ৫৬৫ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে।
এ নিয়ে চলতি বছরের এখন পর্যন্ত ডেঙ্গুতে ৩৮৬ জনের মৃত্যু হলো। আর আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি রোগী সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল ৯৫ হাজার ৫৭৭। এর মধ্যে ৬২ দশমিক ৪ শতাংশ পুরুষ এবং ৩৭ দশমিক ৬ শতাংশ নারী।
আজ মঙ্গলবার (২ ডিসেম্বর) স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুম থেকে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। বিজ্ঞপ্তিতে গতকাল সোমবার সকাল ৮টা থেকে আজ সকাল ৮টা পর্যন্ত তথ্য জানানো হয়।
গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে যে দুজনের মৃত্যু হয়েছে তাঁরা পুরুষ। তাঁদে বয়স যথাক্রমে ৫৫ ও ৬৫ বছর।
চলতি বছর ডেঙ্গুতে সবচেয়ে বেশি মৃত্যু হয়েছে নভেম্বর মাসে। ওই মাসে ১০৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। তার আগে অক্টোবর মাসে ৮০ জন ও সেপ্টেম্বর মাসে ৭৬ জনের মৃত্যু হয়েছে।
এদিকে, গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি রোগীর মধ্যে বরিশাল বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ৫১ জন, চট্টগ্রাম বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ৮২, ঢাকা বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ৯৫, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনে ১২৭ জন, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে ৮৮ জন, খুলনা বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ৪৩, ময়মনসিংহ বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ৪৫, রাজশাহী বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ৩০, রংপুর বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) তিন ও সিলেট বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) একজন রয়েছে।

দেশে গত এক দিনে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে আরও দুজনের মৃত্যু হয়েছে। এই সময়ে নতুন আক্রান্ত ৫৬৫ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে।
এ নিয়ে চলতি বছরের এখন পর্যন্ত ডেঙ্গুতে ৩৮৬ জনের মৃত্যু হলো। আর আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি রোগী সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল ৯৫ হাজার ৫৭৭। এর মধ্যে ৬২ দশমিক ৪ শতাংশ পুরুষ এবং ৩৭ দশমিক ৬ শতাংশ নারী।
আজ মঙ্গলবার (২ ডিসেম্বর) স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুম থেকে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। বিজ্ঞপ্তিতে গতকাল সোমবার সকাল ৮টা থেকে আজ সকাল ৮টা পর্যন্ত তথ্য জানানো হয়।
গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে যে দুজনের মৃত্যু হয়েছে তাঁরা পুরুষ। তাঁদে বয়স যথাক্রমে ৫৫ ও ৬৫ বছর।
চলতি বছর ডেঙ্গুতে সবচেয়ে বেশি মৃত্যু হয়েছে নভেম্বর মাসে। ওই মাসে ১০৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। তার আগে অক্টোবর মাসে ৮০ জন ও সেপ্টেম্বর মাসে ৭৬ জনের মৃত্যু হয়েছে।
এদিকে, গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি রোগীর মধ্যে বরিশাল বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ৫১ জন, চট্টগ্রাম বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ৮২, ঢাকা বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ৯৫, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনে ১২৭ জন, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে ৮৮ জন, খুলনা বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ৪৩, ময়মনসিংহ বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ৪৫, রাজশাহী বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ৩০, রংপুর বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) তিন ও সিলেট বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) একজন রয়েছে।

গত সপ্তাহের শুরুতে ৯ মাস বয়সী মেয়েশিশুকে রাজধানীর রমনা এলাকায় ইপিআইয়ের এক স্থায়ী টিকা কেন্দ্রে নিয়ে যান বেসরকারি চাকরিজীবী বাবা। উদ্দেশ্য, হাম-রুবেলার (এমআর) প্রথম ডোজ দেওয়া। তবে সেদিন কেন্দ্রটিতে টিকা না থাকায় তাঁকে ফিরে আসতে হয়।
২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫
ছয় দফা দাবিতে টানা ষষ্ঠ দিনের মতো আন্দোলন করছেন স্বাস্থ্য সহকারীরা। মহাখালী স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সামনে তাঁদের অবস্থান কর্মসূচি চলছে। শনিবার থেকে সারা দেশের স্বাস্থ্য সহকারীরা ঢাকায় এসে লাগাতার কর্মবিরতির ঘোষণা দিয়েছেন।
১৫ ঘণ্টা আগে
বেতনকাঠামোর দশম গ্রেড বাস্তবায়নের দাবিতে হাসপাতালসহ দেশের সব স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানে চার ঘণ্টা কর্মবিরতি পালন করেছেন মেডিকেল টেকনোলজিস্ট ও ফার্মাসিস্টরা। গতকাল বুধবার সকাল ৮টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত তাঁদের এই কর্মসূচির কারণে চরম দুর্ভোগে পড়ে রোগী এবং তাদের স্বজনেরা। গত ৩০ নভেম্বর থেকে...
১ দিন আগে
দেশের সরকারি ও বেসরকারি সব ধরনের হাসপাতালে প্রতিবছরই বাড়ছে সেবাগ্রহণকারীর সংখ্যা। কিন্তু অধিকাংশ চিকিৎসাকেন্দ্রেই শৌচাগারগুলো ব্যবহারের অযোগ্য অথবা ন্যূনতম মানের নয়। ফলে চিকিৎসা নিতে এসে রোগীরা নানা ভোগান্তিতে পড়ছেন। আর প্রতিবন্ধী রোগীদের ক্ষেত্রে এ ভোগান্তি আরও তীব্র।
২ দিন আগে