মুহাম্মাদ শফিউল্লাহ, ঢাকা

দেশের স্বাস্থ্য খাতে অস্থিরতা বিরাজ করেছে বছরজুড়ে। গত জানুয়ারিতে দ্বাদশ সাধারণ নির্বাচনের পর নতুন মন্ত্রিসভা গঠনের সাত মাসের মাথায় অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হয়। অন্তবর্তীকালীন সরকারের পাঁচ মাসে তা আরো বেড়েছে। বিশেষ করে পদায়ন, বদলি, চিকিৎসকদের আন্দোলন, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও কর্মকৌশলের অভাব ছিল প্রকট। এর সঙ্গে জুলাই-আগস্টের অভ্যুত্থানে আহতদের চিকিৎসা ও পুনর্বাসন নিয়ে অসন্তুষ্টিও দেখা গেছে। ফলে, স্বাস্থ্যখাতের অসুস্থতা যেন বছরজুড়েই ছিল।
স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দেশের স্বাস্থ্য খাতের এই অসুস্থতা দীর্ঘদিনের, স্বল্প সময়ে তা সারানো যাবে না। এর জন্য স্বল্প, মধ্যম ও দীর্ঘমেয়াদী কর্মকৌশল বাস্তবায়ন করতে হবে। বছরের প্রথম সাত মাস দায়িত্ব পালন করে রাজনৈতিক সরকার। এরপর গত পাঁচ মাসে অন্তবর্তীকালীন সরকার স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনা সঠিকভাবে পরিচালনা করতে পারেনি; ব্যবস্থাপনায় অদূরদর্শিতার পরিচয় দিয়েছে। বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে বদলি ও পদায়ন পরিকল্পনামাফিক হয়নি বলে সমালোচনা রয়েছে।
গণঅভ্যুত্থানে নিহতদের পূর্ণাঙ্গ তালিকা এখনো তৈরি করতে পারেনি বর্তমান সরকার। এবিষয়ে নানা মহল থেকে কয়েক দফায় চাপ সৃষ্টি হলেও তেমন কোনো অগ্রগতি দেখা যায়নি। একইভাবে আহতদের তালিকা অপূর্ণাঙ্গ এবং আহতরা প্রতিশ্রুত সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন বলেও অভিযোগ রয়েছে।
নাগরিক সংগঠন সুস্বাস্থ্যের বাংলাদেশের আহবায়ক ডা. কাজী সাইফউদ্দীন বেন্নূর আজকের পত্রিকাকে তিনি বলেন, ‘স্বাস্থ্যখাতে ব্যর্থতা অনেক বেশি। বিগত কয়েক মাস ধরে স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনায় অস্থিরতা এবং সিদ্ধান্তহীনতা দেখা গেছে। বিশেষ করে স্বাস্থ্য উপদেষ্টা ও মন্ত্রণালয়ের শীর্ষ কর্মকর্তারা এর জন্য দায়ী। যেসব পদায়ন ও বদলি হয়েছে তা সঠিকভাবে হয়নি। অদূরদর্শিতার কারণে ভঙ্গুর স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনা আরও জটিল আকার ধারণ করেছে। স্বাস্থ্যের মূল চালিকা শক্তি অপারেশনাল প্ল্যান (ওপি)। এখন ওপি কার্যকর নেই। এতে কিছুই ঠিকভাবে চলছে না।’
তিনি আরো বলেন, ‘স্বাস্থ্য সংস্কার কমিশনের কাজ এখনো বুঝতে পারছি না। কমিশন যথাযথভাবে ডিজাইন করে গঠন করা হয়নি। তবে সবচেয়ে বড় বিষয় হলো— অন্তবর্তীকালীন সময়ে আমরা বড় কোনো অনিয়ম বা দুর্নীতির খবর পাইনি। আমরা আশাবাদী উদ্যোগ শুরু হয়েছে, কাজ হবে।’
অভ্যুত্থানে আহতদের চিকিৎসা
গত জুলাই ও আগস্টের অভ্যুত্থানে হাসপাতালগুলোতে সবচেয়ে বেশি চাপ পড়ে। মূলত জুলাইয়ে আন্দোলনের মাঝামাঝিতে এই চাপ দেখা যায়। আগস্টের প্রথম পাঁচ দিন তা আরো বেড়ে যায়। হাসপাতালগুলো সক্ষমতার পাঁচ থেকে দশ গুণ জরুরি চিকিৎসা দেয়।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর বলেছে, সারা দেশের হাসপাতালগুলোতে সেসময় প্রায় ২০ হাজার রোগী চিকিৎসা নিয়েছে। ভর্তি হয়েছে ১১ হাজার ৩২২ জন। আর মারা গেছেন ৮২৬ জন আন্দোলনকারী। গত সোমবার পর্যন্ত এই তথ্য হালনাগাদ চলছে। বেশিরভাগ রোগীই গুলিবিদ্ধ ছিল। এর মধ্যে জীবন বাঁচাতে অন্তত ৩০ জন রোগীর হাত বা পা কেটে ফেলতে হয়েছে। আর চোখ হারিয়েছেন বহু রোগী। শুধু চোখের বিশেষায়িত হাসপাতালগুলোতে ভর্তি হয়েছেন অর্ধসহস্রাধিক রোগী।
আন্দোলনের দিনগুলোতে সারা দেশে হাসপাতালগুলোর কর্তৃপক্ষের জানিয়েছিল, বাংলাদেশের ইতিহাসে এত জরুরি ও সংকটাপন্ন রোগী তারা আগে কখনো দেখেনি। এখন রোগীরা চিকিৎসা পরবর্তী পর্যবেক্ষণের (ফলোআপ) জন্য হাসপাতালে আসছেন। রাজধানীতে এখনো দুই শতাধিক রোগী বিভিন্ন সরকারি হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।
এদিকে আহতদের পক্ষ থেকে সবচেয়ে বড় অভিযোগ, অন্তবর্তীকালীন সরকার প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী চিকিৎসার ব্যবস্থা করেনি। যথাযথ চিকিৎসা পাওয়ার জন্য তাদের বিভিন্ন সময় আন্দোলন করতেও দেখা গিয়েছে। রাজধানীর জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতাল ও পুনর্বাসন প্রতিষ্ঠানে (নিটোর) আহতদের দেখতে গিয়ে বিক্ষোভের মুখে পড়েন স্বাস্থ্য উপদেষ্টা নূরজাহান বেগম। যদিও সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, আহতদের চিকিৎসার জন্য কোনো কার্পণ্য করা হয়নি। ইতিমধ্যে বেশ কয়েকজনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠানো হয়েছে। আর বিদেশ থেকেও বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক দফায় দফায় আনা হয়েছে।
রোগ নিয়ন্ত্রণ ও কর্মসূচি নিয়ে কার্যক্রম হয়নি
দেশে রোগ নিয়ন্ত্রণে বছরজুড়েই কোনো কার্যক্রম দেখা যায়নি। বছরের শুরু থেকে ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে আওয়ামী লীগ সরকারের উদাসীনতা ছিল। একই পথে হেঁটেছে বর্তমান অন্তবর্তীকালীন সরকার। ফলে খুবই নিরবে বেড়েছে এডিস মশাবাহিত ডেঙ্গু রোগ। বছরের শুরুতে ৩১ জানুয়ারি এই রোগে আক্রান্ত হয়ে এক হাজার ৫৫ জন হাসপাতালে ভর্তি হন। আর সে সময় পর্যন্ত মারা যায় ১৪ জন চিকিৎসাধীন রোগী। গত ৩০ ডিসেম্বর পর্যন্ত বছর জুড়ে ভর্তি রোগীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ১ হাজার ১৩০ জনে। আর এর মধ্যে মারা গেছে ৫৭৩ জন।
ডেঙ্গুর বিষয়ে বছরে বর্ষার আগে, বর্ষা মৌসুমে এবং বর্ষা পরবর্তী সময়ে তিনটি জরিপ করে সরকার। তবে চলতি বছরে একটি জরিপের ফলাফল প্রকাশ পেয়েছে। ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে দায়িত্ব স্থানীয় সরকার বিভাগের এবং চিকিৎসার দায়িত্ব স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের। এই দুই বিভাগের মধ্যে সমন্বয়হীনতার কারণে দেশে ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না বলে বিশেষজ্ঞদের দীর্ঘদিনের অভিযোগ রয়েছে। ২০২৪ সালজুড়ে এই অভিযোগ থেকে বের হওয়ার জন্য আওয়ামী লীগ সরকার এবং বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কার্যকরি কোনো পদক্ষেপ দেখা যায়নি।
দেশের সরকারি স্বাস্থ্য খাতের সিংহভাগ অবকাঠামো, রোগ প্রতিরোধ, স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনা ও সেবামূলক কার্যক্রম পরিচালিত হয় পাঁচ বছরমেয়াদি কৌশলগত পরিকল্পনা বা অপারেশনাল প্ল্যানের (ওপি) মাধ্যমে। বর্তমানে ওপি চলমান না থাকায় পুরো স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনায় এক রকম স্থবিরতা দেখা দিয়েছে। গত জুলাইয়ে ‘পঞ্চম স্বাস্থ্য, জনসংখ্যা ও পুষ্টি সেক্টর উন্নয়ন কর্মসূচি (৫ম এইচপিএনএসপি) ’ শিরোনামের ওপির কার্যক্রম শুরু হওয়ার কথা থাকলেও এখনো তা অনুমোদন পায়নি। ফলে ব্যাহত হচ্ছে প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা, হাসপাতালের সেবা ব্যবস্থাপনা, সংক্রামক ও অসংক্রামক রোগ নিয়ন্ত্রণ, টিকা ও পুষ্টি কার্যক্রমসহ ৩০টির বেশি বড় কর্মসূচি।
স্বাস্থ্যসেবা বিভাগ সূত্রে জানা যায়, পঞ্চম এইচপিএনএসপির বাস্তবায়ন চলতি বছরের জুলাইতে শুরু হয়ে ২০২৯ সালের জুনে শেষ হওয়ার কথা ছিল। এর ব্যয়ের আকার ১ লাখ ৬ হাজার ১০০ কোটি টাকা। চতুর্থ এইচপিএনএসপি চলতি বছরের জুনে শেষ হয়ে গেছে। ফলে দেশে স্বাস্থ্য খাতের উন্নয়ন, নিয়মিত ব্যবস্থাপনা ও সেবা কার্যক্রমের জন্য কোনো কর্মসূচি দাপ্তরিকভাবে চালু নেই।
সম্প্রসারিত টিকাদান কর্মসূচির (ইপিআই) কার্যক্রম ওপিতে হওয়ায় এতে স্থবিরতা দেখা দিয়েছে। এ কারণে ওপি বাস্তবায়ন শুরু না হওয়া পর্যন্ত রাজস্ব খাত থেকে টিকা কেনার সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছে মন্ত্রণালয়। সারা দেশে তৃণমূলে প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা দেওয়া সাড়ে ১৪ হাজার কমিউনিটি ক্লিনিকের কমিউনিটি হেলথ কেয়ার প্রোভাইডার (সিএইচসিচি) নামে কর্মীদের বেতন বন্ধ রয়েছে ছয় মাস ধরে।
বদলি ও পদায়ন নিয়ে অসন্তুষ্টি
গত জানুয়ারিতে দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনের পর নতুন মন্ত্রিপরিষদ গঠন হয়। এতে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পান বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জন ডা. সামন্ত লাল সেন ও প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পান ডা. রোকেয়া সুলতানা। রাজনৈতিক সরকারের প্রথম সাত মাসে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের বিভিন্ন ইস্যুতে অস্থিরতা দেখা গিয়েছে। তৎকালীন স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের তৎকালীন সচিব মো. জাহাঙ্গীর আলম স্বাস্থ্যমন্ত্রীর সঙ্গে সমন্বয় করতেন না। নিজ ইচ্ছামতো সিদ্ধান্ত বাস্তাবয়ন করতেন বলে অভিযোগ ছিল। সরকার পতনের আগে পর্যন্ত স্বাস্থ্যমন্ত্রী বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জন ডা. সামন্ত লাল সেনের তৎপরতা ছিল চোখে পড়ার মতো।
অন্তবর্তীকালীন সরকারের স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা নূরজাহান বেগম দায়িত্ব নেন ৮ আগস্ট। সরকার গঠনের পর স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়, মন্ত্রণালয়ের বিভিন্ন অধিদপ্তর, প্রতিষ্ঠান, হাসপাতাল, ইনস্টিটউট ও বিশ্বিবদ্যালয়ের শীর্ষ পদে পরিবর্তন আসেন। সরকার অনেক চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ বাতিল করে এবং অনেককে গুরুত্বপূর্ণ পদ থেকে অন্যত্র সরিয়ে দেয়। তবে সবচেয়ে বড় বিতর্ক হয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পদ নিয়ে। প্রায় পুরো আগস্টজুড়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে মধ্যম পর্যায় থেকে শীর্ষ পর্যায়ের কর্মকর্তারা কাজ করেননি। কেউ নিজ ইচ্ছায় অফিসে আসেননি; আবার কেউ বা অফিসে এসেও নিজকক্ষে প্রবেশ করতে পারেননি। এর কারণ হিসেবে দেখা গিয়েছে, তাঁদের সকলেই আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে সরাসরি যুক্ত ছিলেন। কারো কারো বিরুদ্ধে দীর্ঘদিন ধরে অর্থিক অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগও রয়েছে।
তিন দফায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের পদে নিয়োগ পাওয়া ডা. আবুল বাশার মোহাম্মদ খুরশীদ আলমকে পদ থেকে সরিয়ে দেয়া হয় অন্তবর্তীকালীন সরকার দায়িত্ব নেয়ার পরপরই। অধিদপ্তরের অসংক্রামক রোগ নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচির লাইন ডিরেক্টর অধ্যাপক ডা. রোবেদ আমিনকে ভারপ্রাপ্ত মহাপরিচালক হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়। তবে অনিয়মের অভিযোগ তুলে তার বিরোধিতা করে বিএনপি সমর্থিত চিকিৎসকদের সংগঠন ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ড্যাব)। কিছু দিনের মধ্যে জামায়াতে ইসলামী সমর্থিত চিকিৎসক সংগঠন ন্যাশনাল ডক্টরস ফোরামও (এনডিএফ) রোবেদ আমিনের বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়। এতে রোবেদ আমিন নিজ বাসায় থেকে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের দায়িত্ব সামলান প্রায় এক মাস। এই পুরো সময়ে তিনি স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে অফিস করতে পারেননি। এরপর তাকে সরিয়ে রুটিন দায়িত্ব দেয়া হয় স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. নাজমুল হোসেনকে। এর কিছুদিন পর স্বাস্থ্য অধিদপ্তেরর মহাপরিচালক পদে নিয়োগ পান অধ্যাপক ডা. আবু জাফর।
এছাড়াও সারাদেশের বিশেষায়িত হাসপাতাল, ইনস্টিটিউটের পরিচালক পদের পরিবর্তন নিয়েও বির্তক দেখা যায়। বর্তমান সরকার নতুন করে বাংলাদেশে মেডিকেল অ্যান্ড ডেন্টাল কাউন্সিল (বিএমডিসি), বাংলাদেশ চিকিৎসা গবেষণা পরিষদ (বিএমআরসি) ও চিকিৎসা শিক্ষা অ্যাক্রিডিটিশন কাউন্সিল পুনর্গঠন করে সরকার।
এদিকে স্বাস্থ্যসেবা বিভাগ ও স্বাস্থ্য শিক্ষা এবং পরিবার কল্যাণ বিভাগের সচিব পদে বছরজুড়ে বেশ কয়েকবার পরিবর্তন এসেছে। অন্তবর্তীকালীন সরকারের সময়েও দুই বিভাগের সচিব পদে পরিবর্তন এসেছে।
স্বাস্থ্য সংস্কার কমিশন
অন্তবর্তীকালীন সরকার দায়িত্ব নেয়ার পর খাতভিত্তিক সংস্কারে গুরুত্ব দিয়েছে। ফলে গঠন করা হয়েছে বিভিন্ন সংস্কার কমিশন। এর মধ্যে গত ১৭ নভেম্বর ১২ সদস্য বিশিষ্ট ব্যক্তির সমন্বয়ে স্বাস্থ্য সংস্কার কমিশন গঠন করে সরকার। এতে প্রধান করা হয় জাতীয় অধ্যাপক ডা. এ কে আজাদ খানকে। তবে কমিশনের কাজ নিয়ে স্বাস্থ্য পেশাজীবীদের সবচেয়ে বড় সমালোচনা হলো— কমিশন এক প্রকাশ অন্ধকারেই কাজ করছে। আদতে কমিশন কি ধরনের সংষ্কারের জন্য সরকারকে পরামর্শ দিচ্ছে, কি পর্যায়ে সংস্কার প্রয়োজন তার রূপরেখা নেই। এই কমিশনের সদস্যদের বাছাই করার ক্ষেত্রেও যথাযথ পরিকল্পনা করা হয়নি বলে সমালোচনা রয়েছে।
এদিকে গত ৩ সেপ্টেম্বর স্বাস্থ্য ব্যবস্থার সংস্কার, চিকিৎসাসেবার গুণগত মান উন্নয়ন, কাঠামো শক্তিশালীকরণে ১২ সদস্যের বিশেষজ্ঞ কমিটি গঠন করে করে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়। এতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সাবেক মহাপরিচালক ডা. এম এ ফয়েজকে প্রধান করা হয়। তবে তার বিরুদ্ধে সমালোচনা ওঠে। বিশেষত ড্যাব সমালোচনামুখর বেশি ছিল। এর প্রেক্ষিতে ১২ সেপ্টেম্বর পদত্যাগ করেন ফায়েজ।
স্বাস্থ্য সংস্কার কমিশনের প্রধান অধ্যাপক ডা. এ কে আজাদ খান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমরা সংস্কার নিয়ে কাজ করছি। স্বাস্থ্য ব্যবস্থার সংস্কার নিয়ে এক বাক্যে বলার মতো কিছুই নেই। সরকারকে ফেব্রুয়ারি নাগাদ প্রতিবেদন জমা দেব। আমরা আপনাদেরকে আনুষ্ঠানিকভাবে জানাব।’
আন্দোলনমুখর সময়
বছরজুড়েই দেশের স্বাস্থ্য খাতে বিভিন্ন পর্যায়ের আন্দোলন অব্যাহত ছিল। অন্তবর্তীকালীন সরকারের দায়িত্ব গ্রহণের পর ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে ডাক দেয়া চিকিৎসকদের কর্মবিরতি বড় পরিসরে আলোচনায় আসে। গত ১ সপ্টেম্বর দেশের সব সরকারি ও বেসরকারি চিকিৎসকরা অনির্দিষ্টকালের জন্য কর্মবিরতির ঘোষণা দিয়েছিলেন। প্রথমে সড়ক দুর্ঘটনায় গুরুতর আহত বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থীর চিকিৎসায় অবহেলায় মৃত্যুর অভিযোগে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে সে সময় হট্টগোল হয়। ওই শিক্ষার্থীর মৃত্যুতে চিকিৎসায় অবহেলার অভিযোগ তুলে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের এক চিকিৎসককে মারধরের ঘটনা ঘটে।
এ ঘটনায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে উত্তেজনাকর পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। পরেসময়ে বিষয়টি মেডিকেলে ছড়িয়ে পড়লে রোগীর স্বজনদের ডাক্তার ও মেডিকেল কলেজের ছাত্ররা অবরুদ্ধ করে রাখেন এবং জরুরি গেট বন্ধ করে দেন। এই ঘটনার মধ্যেই রাজধানীর খিলগাঁও সিপাহীবাগ এলাকা থেকে দুই গ্রুপের সংঘর্ষে আহতরা ঢাকা মেডিকেলে চিকিৎসা নিতে এলে পরবর্তী সময়ে অন্য গ্রুপের লোকজন জরুরি বিভাগে ভেতরে ঢুকে চাপাতিসহ হাসপাতালে জরুরি বিভাগের ভেতরে ঢুকে যায়। এ সময় হাতেনাতে চারজনকে আটক করে সেনাবাহিনীকে দেয় কর্তৃপক্ষ। এর প্রেক্ষিতে নিরাপত্তার অভাবের কথা জানিয়ে জরুরি বিভাগের সকল ধরনের চিকিৎসা বন্ধ করে দেয়। টানা একদিন এমন পরিস্থিত থাকার পর সরকারের আশ্বাসের প্রতিক্ষিতে কাজে ফেরেন চিকিৎসকরা।
এদিকে ডিসেম্বরজুড়ে আন্দোলনে নামে স্নাতকোত্তর শিক্ষানবিশ চিকিৎসকরা (বেসরকারি)। মাসিক ভাতা বাড়ানোর দাবিতে তাঁরা রাজপথে আন্দোলন করেন। কর্মবিরতি ও সড়ক অবরোধও করেন তাঁরা। পরে সরকার দুই দফায় ভাতা বাড়ালে আন্দোলনের ইতি টানেন তাঁরা।
এছাড়া বিভিন্ন পর্যায়ের স্বাস্থ্য পেশাজীবীরা আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর নানা কর্মসূচি পালন করেন। এর মধ্যে ছিল, পদায়ন, দীর্ঘদিনের পদবঞ্চিত হওয়া ও আপগ্রেশনের মতো বিষয়।

দেশের স্বাস্থ্য খাতে অস্থিরতা বিরাজ করেছে বছরজুড়ে। গত জানুয়ারিতে দ্বাদশ সাধারণ নির্বাচনের পর নতুন মন্ত্রিসভা গঠনের সাত মাসের মাথায় অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হয়। অন্তবর্তীকালীন সরকারের পাঁচ মাসে তা আরো বেড়েছে। বিশেষ করে পদায়ন, বদলি, চিকিৎসকদের আন্দোলন, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও কর্মকৌশলের অভাব ছিল প্রকট। এর সঙ্গে জুলাই-আগস্টের অভ্যুত্থানে আহতদের চিকিৎসা ও পুনর্বাসন নিয়ে অসন্তুষ্টিও দেখা গেছে। ফলে, স্বাস্থ্যখাতের অসুস্থতা যেন বছরজুড়েই ছিল।
স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দেশের স্বাস্থ্য খাতের এই অসুস্থতা দীর্ঘদিনের, স্বল্প সময়ে তা সারানো যাবে না। এর জন্য স্বল্প, মধ্যম ও দীর্ঘমেয়াদী কর্মকৌশল বাস্তবায়ন করতে হবে। বছরের প্রথম সাত মাস দায়িত্ব পালন করে রাজনৈতিক সরকার। এরপর গত পাঁচ মাসে অন্তবর্তীকালীন সরকার স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনা সঠিকভাবে পরিচালনা করতে পারেনি; ব্যবস্থাপনায় অদূরদর্শিতার পরিচয় দিয়েছে। বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে বদলি ও পদায়ন পরিকল্পনামাফিক হয়নি বলে সমালোচনা রয়েছে।
গণঅভ্যুত্থানে নিহতদের পূর্ণাঙ্গ তালিকা এখনো তৈরি করতে পারেনি বর্তমান সরকার। এবিষয়ে নানা মহল থেকে কয়েক দফায় চাপ সৃষ্টি হলেও তেমন কোনো অগ্রগতি দেখা যায়নি। একইভাবে আহতদের তালিকা অপূর্ণাঙ্গ এবং আহতরা প্রতিশ্রুত সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন বলেও অভিযোগ রয়েছে।
নাগরিক সংগঠন সুস্বাস্থ্যের বাংলাদেশের আহবায়ক ডা. কাজী সাইফউদ্দীন বেন্নূর আজকের পত্রিকাকে তিনি বলেন, ‘স্বাস্থ্যখাতে ব্যর্থতা অনেক বেশি। বিগত কয়েক মাস ধরে স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনায় অস্থিরতা এবং সিদ্ধান্তহীনতা দেখা গেছে। বিশেষ করে স্বাস্থ্য উপদেষ্টা ও মন্ত্রণালয়ের শীর্ষ কর্মকর্তারা এর জন্য দায়ী। যেসব পদায়ন ও বদলি হয়েছে তা সঠিকভাবে হয়নি। অদূরদর্শিতার কারণে ভঙ্গুর স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনা আরও জটিল আকার ধারণ করেছে। স্বাস্থ্যের মূল চালিকা শক্তি অপারেশনাল প্ল্যান (ওপি)। এখন ওপি কার্যকর নেই। এতে কিছুই ঠিকভাবে চলছে না।’
তিনি আরো বলেন, ‘স্বাস্থ্য সংস্কার কমিশনের কাজ এখনো বুঝতে পারছি না। কমিশন যথাযথভাবে ডিজাইন করে গঠন করা হয়নি। তবে সবচেয়ে বড় বিষয় হলো— অন্তবর্তীকালীন সময়ে আমরা বড় কোনো অনিয়ম বা দুর্নীতির খবর পাইনি। আমরা আশাবাদী উদ্যোগ শুরু হয়েছে, কাজ হবে।’
অভ্যুত্থানে আহতদের চিকিৎসা
গত জুলাই ও আগস্টের অভ্যুত্থানে হাসপাতালগুলোতে সবচেয়ে বেশি চাপ পড়ে। মূলত জুলাইয়ে আন্দোলনের মাঝামাঝিতে এই চাপ দেখা যায়। আগস্টের প্রথম পাঁচ দিন তা আরো বেড়ে যায়। হাসপাতালগুলো সক্ষমতার পাঁচ থেকে দশ গুণ জরুরি চিকিৎসা দেয়।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর বলেছে, সারা দেশের হাসপাতালগুলোতে সেসময় প্রায় ২০ হাজার রোগী চিকিৎসা নিয়েছে। ভর্তি হয়েছে ১১ হাজার ৩২২ জন। আর মারা গেছেন ৮২৬ জন আন্দোলনকারী। গত সোমবার পর্যন্ত এই তথ্য হালনাগাদ চলছে। বেশিরভাগ রোগীই গুলিবিদ্ধ ছিল। এর মধ্যে জীবন বাঁচাতে অন্তত ৩০ জন রোগীর হাত বা পা কেটে ফেলতে হয়েছে। আর চোখ হারিয়েছেন বহু রোগী। শুধু চোখের বিশেষায়িত হাসপাতালগুলোতে ভর্তি হয়েছেন অর্ধসহস্রাধিক রোগী।
আন্দোলনের দিনগুলোতে সারা দেশে হাসপাতালগুলোর কর্তৃপক্ষের জানিয়েছিল, বাংলাদেশের ইতিহাসে এত জরুরি ও সংকটাপন্ন রোগী তারা আগে কখনো দেখেনি। এখন রোগীরা চিকিৎসা পরবর্তী পর্যবেক্ষণের (ফলোআপ) জন্য হাসপাতালে আসছেন। রাজধানীতে এখনো দুই শতাধিক রোগী বিভিন্ন সরকারি হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।
এদিকে আহতদের পক্ষ থেকে সবচেয়ে বড় অভিযোগ, অন্তবর্তীকালীন সরকার প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী চিকিৎসার ব্যবস্থা করেনি। যথাযথ চিকিৎসা পাওয়ার জন্য তাদের বিভিন্ন সময় আন্দোলন করতেও দেখা গিয়েছে। রাজধানীর জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতাল ও পুনর্বাসন প্রতিষ্ঠানে (নিটোর) আহতদের দেখতে গিয়ে বিক্ষোভের মুখে পড়েন স্বাস্থ্য উপদেষ্টা নূরজাহান বেগম। যদিও সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, আহতদের চিকিৎসার জন্য কোনো কার্পণ্য করা হয়নি। ইতিমধ্যে বেশ কয়েকজনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠানো হয়েছে। আর বিদেশ থেকেও বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক দফায় দফায় আনা হয়েছে।
রোগ নিয়ন্ত্রণ ও কর্মসূচি নিয়ে কার্যক্রম হয়নি
দেশে রোগ নিয়ন্ত্রণে বছরজুড়েই কোনো কার্যক্রম দেখা যায়নি। বছরের শুরু থেকে ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে আওয়ামী লীগ সরকারের উদাসীনতা ছিল। একই পথে হেঁটেছে বর্তমান অন্তবর্তীকালীন সরকার। ফলে খুবই নিরবে বেড়েছে এডিস মশাবাহিত ডেঙ্গু রোগ। বছরের শুরুতে ৩১ জানুয়ারি এই রোগে আক্রান্ত হয়ে এক হাজার ৫৫ জন হাসপাতালে ভর্তি হন। আর সে সময় পর্যন্ত মারা যায় ১৪ জন চিকিৎসাধীন রোগী। গত ৩০ ডিসেম্বর পর্যন্ত বছর জুড়ে ভর্তি রোগীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ১ হাজার ১৩০ জনে। আর এর মধ্যে মারা গেছে ৫৭৩ জন।
ডেঙ্গুর বিষয়ে বছরে বর্ষার আগে, বর্ষা মৌসুমে এবং বর্ষা পরবর্তী সময়ে তিনটি জরিপ করে সরকার। তবে চলতি বছরে একটি জরিপের ফলাফল প্রকাশ পেয়েছে। ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে দায়িত্ব স্থানীয় সরকার বিভাগের এবং চিকিৎসার দায়িত্ব স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের। এই দুই বিভাগের মধ্যে সমন্বয়হীনতার কারণে দেশে ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না বলে বিশেষজ্ঞদের দীর্ঘদিনের অভিযোগ রয়েছে। ২০২৪ সালজুড়ে এই অভিযোগ থেকে বের হওয়ার জন্য আওয়ামী লীগ সরকার এবং বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কার্যকরি কোনো পদক্ষেপ দেখা যায়নি।
দেশের সরকারি স্বাস্থ্য খাতের সিংহভাগ অবকাঠামো, রোগ প্রতিরোধ, স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনা ও সেবামূলক কার্যক্রম পরিচালিত হয় পাঁচ বছরমেয়াদি কৌশলগত পরিকল্পনা বা অপারেশনাল প্ল্যানের (ওপি) মাধ্যমে। বর্তমানে ওপি চলমান না থাকায় পুরো স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনায় এক রকম স্থবিরতা দেখা দিয়েছে। গত জুলাইয়ে ‘পঞ্চম স্বাস্থ্য, জনসংখ্যা ও পুষ্টি সেক্টর উন্নয়ন কর্মসূচি (৫ম এইচপিএনএসপি) ’ শিরোনামের ওপির কার্যক্রম শুরু হওয়ার কথা থাকলেও এখনো তা অনুমোদন পায়নি। ফলে ব্যাহত হচ্ছে প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা, হাসপাতালের সেবা ব্যবস্থাপনা, সংক্রামক ও অসংক্রামক রোগ নিয়ন্ত্রণ, টিকা ও পুষ্টি কার্যক্রমসহ ৩০টির বেশি বড় কর্মসূচি।
স্বাস্থ্যসেবা বিভাগ সূত্রে জানা যায়, পঞ্চম এইচপিএনএসপির বাস্তবায়ন চলতি বছরের জুলাইতে শুরু হয়ে ২০২৯ সালের জুনে শেষ হওয়ার কথা ছিল। এর ব্যয়ের আকার ১ লাখ ৬ হাজার ১০০ কোটি টাকা। চতুর্থ এইচপিএনএসপি চলতি বছরের জুনে শেষ হয়ে গেছে। ফলে দেশে স্বাস্থ্য খাতের উন্নয়ন, নিয়মিত ব্যবস্থাপনা ও সেবা কার্যক্রমের জন্য কোনো কর্মসূচি দাপ্তরিকভাবে চালু নেই।
সম্প্রসারিত টিকাদান কর্মসূচির (ইপিআই) কার্যক্রম ওপিতে হওয়ায় এতে স্থবিরতা দেখা দিয়েছে। এ কারণে ওপি বাস্তবায়ন শুরু না হওয়া পর্যন্ত রাজস্ব খাত থেকে টিকা কেনার সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছে মন্ত্রণালয়। সারা দেশে তৃণমূলে প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা দেওয়া সাড়ে ১৪ হাজার কমিউনিটি ক্লিনিকের কমিউনিটি হেলথ কেয়ার প্রোভাইডার (সিএইচসিচি) নামে কর্মীদের বেতন বন্ধ রয়েছে ছয় মাস ধরে।
বদলি ও পদায়ন নিয়ে অসন্তুষ্টি
গত জানুয়ারিতে দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনের পর নতুন মন্ত্রিপরিষদ গঠন হয়। এতে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পান বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জন ডা. সামন্ত লাল সেন ও প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পান ডা. রোকেয়া সুলতানা। রাজনৈতিক সরকারের প্রথম সাত মাসে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের বিভিন্ন ইস্যুতে অস্থিরতা দেখা গিয়েছে। তৎকালীন স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের তৎকালীন সচিব মো. জাহাঙ্গীর আলম স্বাস্থ্যমন্ত্রীর সঙ্গে সমন্বয় করতেন না। নিজ ইচ্ছামতো সিদ্ধান্ত বাস্তাবয়ন করতেন বলে অভিযোগ ছিল। সরকার পতনের আগে পর্যন্ত স্বাস্থ্যমন্ত্রী বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জন ডা. সামন্ত লাল সেনের তৎপরতা ছিল চোখে পড়ার মতো।
অন্তবর্তীকালীন সরকারের স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা নূরজাহান বেগম দায়িত্ব নেন ৮ আগস্ট। সরকার গঠনের পর স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়, মন্ত্রণালয়ের বিভিন্ন অধিদপ্তর, প্রতিষ্ঠান, হাসপাতাল, ইনস্টিটউট ও বিশ্বিবদ্যালয়ের শীর্ষ পদে পরিবর্তন আসেন। সরকার অনেক চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ বাতিল করে এবং অনেককে গুরুত্বপূর্ণ পদ থেকে অন্যত্র সরিয়ে দেয়। তবে সবচেয়ে বড় বিতর্ক হয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পদ নিয়ে। প্রায় পুরো আগস্টজুড়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে মধ্যম পর্যায় থেকে শীর্ষ পর্যায়ের কর্মকর্তারা কাজ করেননি। কেউ নিজ ইচ্ছায় অফিসে আসেননি; আবার কেউ বা অফিসে এসেও নিজকক্ষে প্রবেশ করতে পারেননি। এর কারণ হিসেবে দেখা গিয়েছে, তাঁদের সকলেই আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে সরাসরি যুক্ত ছিলেন। কারো কারো বিরুদ্ধে দীর্ঘদিন ধরে অর্থিক অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগও রয়েছে।
তিন দফায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের পদে নিয়োগ পাওয়া ডা. আবুল বাশার মোহাম্মদ খুরশীদ আলমকে পদ থেকে সরিয়ে দেয়া হয় অন্তবর্তীকালীন সরকার দায়িত্ব নেয়ার পরপরই। অধিদপ্তরের অসংক্রামক রোগ নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচির লাইন ডিরেক্টর অধ্যাপক ডা. রোবেদ আমিনকে ভারপ্রাপ্ত মহাপরিচালক হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়। তবে অনিয়মের অভিযোগ তুলে তার বিরোধিতা করে বিএনপি সমর্থিত চিকিৎসকদের সংগঠন ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ড্যাব)। কিছু দিনের মধ্যে জামায়াতে ইসলামী সমর্থিত চিকিৎসক সংগঠন ন্যাশনাল ডক্টরস ফোরামও (এনডিএফ) রোবেদ আমিনের বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়। এতে রোবেদ আমিন নিজ বাসায় থেকে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের দায়িত্ব সামলান প্রায় এক মাস। এই পুরো সময়ে তিনি স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে অফিস করতে পারেননি। এরপর তাকে সরিয়ে রুটিন দায়িত্ব দেয়া হয় স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. নাজমুল হোসেনকে। এর কিছুদিন পর স্বাস্থ্য অধিদপ্তেরর মহাপরিচালক পদে নিয়োগ পান অধ্যাপক ডা. আবু জাফর।
এছাড়াও সারাদেশের বিশেষায়িত হাসপাতাল, ইনস্টিটিউটের পরিচালক পদের পরিবর্তন নিয়েও বির্তক দেখা যায়। বর্তমান সরকার নতুন করে বাংলাদেশে মেডিকেল অ্যান্ড ডেন্টাল কাউন্সিল (বিএমডিসি), বাংলাদেশ চিকিৎসা গবেষণা পরিষদ (বিএমআরসি) ও চিকিৎসা শিক্ষা অ্যাক্রিডিটিশন কাউন্সিল পুনর্গঠন করে সরকার।
এদিকে স্বাস্থ্যসেবা বিভাগ ও স্বাস্থ্য শিক্ষা এবং পরিবার কল্যাণ বিভাগের সচিব পদে বছরজুড়ে বেশ কয়েকবার পরিবর্তন এসেছে। অন্তবর্তীকালীন সরকারের সময়েও দুই বিভাগের সচিব পদে পরিবর্তন এসেছে।
স্বাস্থ্য সংস্কার কমিশন
অন্তবর্তীকালীন সরকার দায়িত্ব নেয়ার পর খাতভিত্তিক সংস্কারে গুরুত্ব দিয়েছে। ফলে গঠন করা হয়েছে বিভিন্ন সংস্কার কমিশন। এর মধ্যে গত ১৭ নভেম্বর ১২ সদস্য বিশিষ্ট ব্যক্তির সমন্বয়ে স্বাস্থ্য সংস্কার কমিশন গঠন করে সরকার। এতে প্রধান করা হয় জাতীয় অধ্যাপক ডা. এ কে আজাদ খানকে। তবে কমিশনের কাজ নিয়ে স্বাস্থ্য পেশাজীবীদের সবচেয়ে বড় সমালোচনা হলো— কমিশন এক প্রকাশ অন্ধকারেই কাজ করছে। আদতে কমিশন কি ধরনের সংষ্কারের জন্য সরকারকে পরামর্শ দিচ্ছে, কি পর্যায়ে সংস্কার প্রয়োজন তার রূপরেখা নেই। এই কমিশনের সদস্যদের বাছাই করার ক্ষেত্রেও যথাযথ পরিকল্পনা করা হয়নি বলে সমালোচনা রয়েছে।
এদিকে গত ৩ সেপ্টেম্বর স্বাস্থ্য ব্যবস্থার সংস্কার, চিকিৎসাসেবার গুণগত মান উন্নয়ন, কাঠামো শক্তিশালীকরণে ১২ সদস্যের বিশেষজ্ঞ কমিটি গঠন করে করে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়। এতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সাবেক মহাপরিচালক ডা. এম এ ফয়েজকে প্রধান করা হয়। তবে তার বিরুদ্ধে সমালোচনা ওঠে। বিশেষত ড্যাব সমালোচনামুখর বেশি ছিল। এর প্রেক্ষিতে ১২ সেপ্টেম্বর পদত্যাগ করেন ফায়েজ।
স্বাস্থ্য সংস্কার কমিশনের প্রধান অধ্যাপক ডা. এ কে আজাদ খান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমরা সংস্কার নিয়ে কাজ করছি। স্বাস্থ্য ব্যবস্থার সংস্কার নিয়ে এক বাক্যে বলার মতো কিছুই নেই। সরকারকে ফেব্রুয়ারি নাগাদ প্রতিবেদন জমা দেব। আমরা আপনাদেরকে আনুষ্ঠানিকভাবে জানাব।’
আন্দোলনমুখর সময়
বছরজুড়েই দেশের স্বাস্থ্য খাতে বিভিন্ন পর্যায়ের আন্দোলন অব্যাহত ছিল। অন্তবর্তীকালীন সরকারের দায়িত্ব গ্রহণের পর ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে ডাক দেয়া চিকিৎসকদের কর্মবিরতি বড় পরিসরে আলোচনায় আসে। গত ১ সপ্টেম্বর দেশের সব সরকারি ও বেসরকারি চিকিৎসকরা অনির্দিষ্টকালের জন্য কর্মবিরতির ঘোষণা দিয়েছিলেন। প্রথমে সড়ক দুর্ঘটনায় গুরুতর আহত বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থীর চিকিৎসায় অবহেলায় মৃত্যুর অভিযোগে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে সে সময় হট্টগোল হয়। ওই শিক্ষার্থীর মৃত্যুতে চিকিৎসায় অবহেলার অভিযোগ তুলে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের এক চিকিৎসককে মারধরের ঘটনা ঘটে।
এ ঘটনায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে উত্তেজনাকর পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। পরেসময়ে বিষয়টি মেডিকেলে ছড়িয়ে পড়লে রোগীর স্বজনদের ডাক্তার ও মেডিকেল কলেজের ছাত্ররা অবরুদ্ধ করে রাখেন এবং জরুরি গেট বন্ধ করে দেন। এই ঘটনার মধ্যেই রাজধানীর খিলগাঁও সিপাহীবাগ এলাকা থেকে দুই গ্রুপের সংঘর্ষে আহতরা ঢাকা মেডিকেলে চিকিৎসা নিতে এলে পরবর্তী সময়ে অন্য গ্রুপের লোকজন জরুরি বিভাগে ভেতরে ঢুকে চাপাতিসহ হাসপাতালে জরুরি বিভাগের ভেতরে ঢুকে যায়। এ সময় হাতেনাতে চারজনকে আটক করে সেনাবাহিনীকে দেয় কর্তৃপক্ষ। এর প্রেক্ষিতে নিরাপত্তার অভাবের কথা জানিয়ে জরুরি বিভাগের সকল ধরনের চিকিৎসা বন্ধ করে দেয়। টানা একদিন এমন পরিস্থিত থাকার পর সরকারের আশ্বাসের প্রতিক্ষিতে কাজে ফেরেন চিকিৎসকরা।
এদিকে ডিসেম্বরজুড়ে আন্দোলনে নামে স্নাতকোত্তর শিক্ষানবিশ চিকিৎসকরা (বেসরকারি)। মাসিক ভাতা বাড়ানোর দাবিতে তাঁরা রাজপথে আন্দোলন করেন। কর্মবিরতি ও সড়ক অবরোধও করেন তাঁরা। পরে সরকার দুই দফায় ভাতা বাড়ালে আন্দোলনের ইতি টানেন তাঁরা।
এছাড়া বিভিন্ন পর্যায়ের স্বাস্থ্য পেশাজীবীরা আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর নানা কর্মসূচি পালন করেন। এর মধ্যে ছিল, পদায়ন, দীর্ঘদিনের পদবঞ্চিত হওয়া ও আপগ্রেশনের মতো বিষয়।

ওজন কমানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া যেমন কঠিন, সেই সিদ্ধান্তে দীর্ঘদিন অটল থাকা অনেকের ক্ষেত্রে আরও কঠিন। সঠিক অনুপ্রেরণা না থাকলে ওজন কমানো শুরু করাই কঠিন হয়ে পড়ে। আর শুরু করলেও মাঝপথে থেমে যাওয়ার ঝুঁকি থাকে। তবে কিছু বাস্তবসম্মত কৌশল অনুসরণ করলে ওজন কমানোর লক্ষ্য অর্জন সহজ হতে পারে।
১০ ঘণ্টা আগে
থাইরয়েড হরমোন আমাদের গলার সামনে থাইরয়েড গ্রন্থি থেকে নিঃসৃত একধরনের হরমোন কিংবা প্রাণরস। এটি গলার সামনে থেকে নিঃসৃত হলেও সারা শরীরে ছড়িয়ে পড়ে এবং পুরো শরীরে কাজ করে।
১১ ঘণ্টা আগে
সুষম খাবারের ৬টি উপাদানের অন্যতম ভিটামিন ও খনিজ লবণ। এগুলো আমাদের শরীরের চালিকাশক্তির অন্যতম উপাদান হিসেবে বিবেচিত। শরীরের একেকটি অঙ্গের সুরক্ষায় একেক ধরনের ভিটামিন প্রয়োজন হয়। যেমন চুল ও চোখের সুরক্ষায় ভিটামিন ‘এ’, ত্বকের সুরক্ষায় ভিটামিন ‘বি’ ও ‘সি’, হাড় ও দাঁতের সুরক্ষায় ভিটামিন ‘ডি’ প্রয়োজন হয়।
১১ ঘণ্টা আগে
ঝাঁকির কারণে শিশুর মস্তিষ্কে আঘাত বা শেকেন বেবি সিনড্রোম হলো শিশু নির্যাতনের একটি মারাত্মক ও জীবনঘাতী রূপ। এটি প্রধানত ২ বছরের কম বয়সী শিশুদের ক্ষেত্রে দেখা যায়। এই অবস্থায় শিশুকে জোরে জোরে ঝাঁকানোর ফলে মস্তিষ্ক, চোখ ও ঘাড়ে গুরুতর আঘাত সৃষ্টি হয়, যদিও বাহ্যিকভাবে অনেক সময় কোনো...
১৩ ঘণ্টা আগেফিচার ডেস্ক

ওজন কমানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া যেমন কঠিন, সেই সিদ্ধান্তে দীর্ঘদিন অটল থাকা অনেকের ক্ষেত্রে আরও কঠিন। সঠিক অনুপ্রেরণা না থাকলে ওজন কমানো শুরু করাই কঠিন হয়ে পড়ে। আর শুরু করলেও মাঝপথে থেমে যাওয়ার ঝুঁকি থাকে। তবে কিছু বাস্তবসম্মত কৌশল অনুসরণ করলে ওজন কমানোর লক্ষ্য অর্জন সহজ হতে পারে।
নিজেকে দেওয়া প্রতিশ্রুতি না ভাঙা
ওজন কমানোর ক্ষেত্রে নিজের সঙ্গে বোঝাপড়া বেশ ভূমিকা রাখতে পারে। কেউ কেউ লিখিত পরিকল্পনা বা অ্যাপের মাধ্যমে প্রতিদিনের লক্ষ্য ঠিক করেন। আবার কেউ জিমের সদস্যপদ বা ব্যায়াম ক্লাসে ভর্তি হয়ে নিজেকে দায়বদ্ধ করে তোলেন। এতে মাঝপথে হাল ছেড়ে দেওয়ার প্রবণতা কমে।
জীবনযাপনের সঙ্গে মানানসই পরিকল্পনা বেছে নেওয়া
যে ডায়েট বা ব্যায়াম পরিকল্পনা দীর্ঘদিন মেনে চলা সম্ভব নয়, তা এড়িয়ে চলা ভালো। অতিরিক্ত কঠোর নিয়ম অথবা সবকিছু একেবারে বাদ দেওয়ার মানসিকতা অনেক সময় উল্টো ফল বয়ে আনে। বরং ক্যালরি নিয়ন্ত্রণ, খাবারের পরিমাণ কমানো, অতি প্রক্রিয়াজাত খাবার কম খাওয়া এবং বেশি করে ফল ও সবজি অন্তর্ভুক্ত করার মতো অভ্যাসগুলো দীর্ঘ মেয়াদে উপকারী।
পছন্দের ব্যায়াম খোঁজা
ওজন কমাতে শারীরিক কার্যকলাপ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তবে যে ব্যায়াম আপনার ভালো লাগে না, তা বেশি দিন চালিয়ে যাওয়া কঠিন। হাঁটা, সাঁতার, নাচ, সাইক্লিং কিংবা জিম—যে ধরনের ব্যায়াম উপভোগ করেন, সেটিই বেছে নেওয়া ভালো।
যে বিষয়গুলো অনুপ্রেরণা জোগায়
ওজন কমানোর পুরো যাত্রায় শুধু শেষ লক্ষ্যের দিকে তাকিয়ে থাকলে হতাশা আসতে পারে। তাই ছোট ছোট প্রক্রিয়াগত লক্ষ্য ঠিক করা জরুরি। যেমন সপ্তাহে নির্দিষ্ট কয়েক দিন ব্যায়াম করা বা প্রতিটি খাবারে সবজি রাখা। এসব লক্ষ্য পূরণ হলে আত্মবিশ্বাস বাড়ে। নিজের অগ্রগতি লিখে রাখাও গুরুত্বপূর্ণ। খাবার ও দৈনন্দিন অভ্যাসের হিসাব রাখলে কোথায় ভুল হচ্ছে কিংবা কোন অভ্যাস ওজন বাড়াচ্ছে, তা সহজে ধরা পড়ে।
সামাজিক সহায়তা এবং ইতিবাচক মনোভাব
পরিবার ও বন্ধুদের নিজের লক্ষ্য জানালে তারা মানসিক সমর্থন দিতে পারে। কেউ কেউ ওজন কমানোর সঙ্গী পেলে আরও অনুপ্রাণিত বোধ করে। পাশাপাশি নিজের সঙ্গে ইতিবাচকভাবে কথা বলা এবং পরিবর্তনের প্রতি দৃঢ় মনোভাব রাখা গুরুত্বপূর্ণ।
বাধা এলে যা করতে হবে
জীবনে নানা ধরনের চাপ এবং সামাজিক অনুষ্ঠানের কারণে পরিকল্পনা ভেস্তে যেতে পারে। এ ধরনের পরিস্থিতির জন্য আগেই মানসিকভাবে প্রস্তুত থাকলে আবার সঠিক পথে ফেরা সহজ হয়। নিখুঁত হওয়ার চেষ্টা না করে নিজের ভুল মেনে নেওয়া এবং নিজেকে ক্ষমা করাও অনুপ্রেরণা ধরে রাখতে সহায়ক।
ওজন কমানোর ক্ষেত্রে অনুপ্রেরণাই সবচেয়ে বড় শক্তি। সবার অনুপ্রেরণার উৎস এক নয়। তাই নিজের জন্য কার্যকর পদ্ধতি খুঁজে নেওয়াই হলো মূল চাবিকাঠি।
তবে ধৈর্য ধরুন, ছোট ছোট সাফল্য উদ্যাপন করুন
এবং প্রয়োজনে সাহায্য চাইতে সংকোচ করবেন না। সঠিক পরিকল্পনা ও সমর্থন থাকলে ওজন কমানোর লক্ষ্য অর্জন করা সম্ভব।
সূত্র: হেলথ লাইন

ওজন কমানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া যেমন কঠিন, সেই সিদ্ধান্তে দীর্ঘদিন অটল থাকা অনেকের ক্ষেত্রে আরও কঠিন। সঠিক অনুপ্রেরণা না থাকলে ওজন কমানো শুরু করাই কঠিন হয়ে পড়ে। আর শুরু করলেও মাঝপথে থেমে যাওয়ার ঝুঁকি থাকে। তবে কিছু বাস্তবসম্মত কৌশল অনুসরণ করলে ওজন কমানোর লক্ষ্য অর্জন সহজ হতে পারে।
নিজেকে দেওয়া প্রতিশ্রুতি না ভাঙা
ওজন কমানোর ক্ষেত্রে নিজের সঙ্গে বোঝাপড়া বেশ ভূমিকা রাখতে পারে। কেউ কেউ লিখিত পরিকল্পনা বা অ্যাপের মাধ্যমে প্রতিদিনের লক্ষ্য ঠিক করেন। আবার কেউ জিমের সদস্যপদ বা ব্যায়াম ক্লাসে ভর্তি হয়ে নিজেকে দায়বদ্ধ করে তোলেন। এতে মাঝপথে হাল ছেড়ে দেওয়ার প্রবণতা কমে।
জীবনযাপনের সঙ্গে মানানসই পরিকল্পনা বেছে নেওয়া
যে ডায়েট বা ব্যায়াম পরিকল্পনা দীর্ঘদিন মেনে চলা সম্ভব নয়, তা এড়িয়ে চলা ভালো। অতিরিক্ত কঠোর নিয়ম অথবা সবকিছু একেবারে বাদ দেওয়ার মানসিকতা অনেক সময় উল্টো ফল বয়ে আনে। বরং ক্যালরি নিয়ন্ত্রণ, খাবারের পরিমাণ কমানো, অতি প্রক্রিয়াজাত খাবার কম খাওয়া এবং বেশি করে ফল ও সবজি অন্তর্ভুক্ত করার মতো অভ্যাসগুলো দীর্ঘ মেয়াদে উপকারী।
পছন্দের ব্যায়াম খোঁজা
ওজন কমাতে শারীরিক কার্যকলাপ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তবে যে ব্যায়াম আপনার ভালো লাগে না, তা বেশি দিন চালিয়ে যাওয়া কঠিন। হাঁটা, সাঁতার, নাচ, সাইক্লিং কিংবা জিম—যে ধরনের ব্যায়াম উপভোগ করেন, সেটিই বেছে নেওয়া ভালো।
যে বিষয়গুলো অনুপ্রেরণা জোগায়
ওজন কমানোর পুরো যাত্রায় শুধু শেষ লক্ষ্যের দিকে তাকিয়ে থাকলে হতাশা আসতে পারে। তাই ছোট ছোট প্রক্রিয়াগত লক্ষ্য ঠিক করা জরুরি। যেমন সপ্তাহে নির্দিষ্ট কয়েক দিন ব্যায়াম করা বা প্রতিটি খাবারে সবজি রাখা। এসব লক্ষ্য পূরণ হলে আত্মবিশ্বাস বাড়ে। নিজের অগ্রগতি লিখে রাখাও গুরুত্বপূর্ণ। খাবার ও দৈনন্দিন অভ্যাসের হিসাব রাখলে কোথায় ভুল হচ্ছে কিংবা কোন অভ্যাস ওজন বাড়াচ্ছে, তা সহজে ধরা পড়ে।
সামাজিক সহায়তা এবং ইতিবাচক মনোভাব
পরিবার ও বন্ধুদের নিজের লক্ষ্য জানালে তারা মানসিক সমর্থন দিতে পারে। কেউ কেউ ওজন কমানোর সঙ্গী পেলে আরও অনুপ্রাণিত বোধ করে। পাশাপাশি নিজের সঙ্গে ইতিবাচকভাবে কথা বলা এবং পরিবর্তনের প্রতি দৃঢ় মনোভাব রাখা গুরুত্বপূর্ণ।
বাধা এলে যা করতে হবে
জীবনে নানা ধরনের চাপ এবং সামাজিক অনুষ্ঠানের কারণে পরিকল্পনা ভেস্তে যেতে পারে। এ ধরনের পরিস্থিতির জন্য আগেই মানসিকভাবে প্রস্তুত থাকলে আবার সঠিক পথে ফেরা সহজ হয়। নিখুঁত হওয়ার চেষ্টা না করে নিজের ভুল মেনে নেওয়া এবং নিজেকে ক্ষমা করাও অনুপ্রেরণা ধরে রাখতে সহায়ক।
ওজন কমানোর ক্ষেত্রে অনুপ্রেরণাই সবচেয়ে বড় শক্তি। সবার অনুপ্রেরণার উৎস এক নয়। তাই নিজের জন্য কার্যকর পদ্ধতি খুঁজে নেওয়াই হলো মূল চাবিকাঠি।
তবে ধৈর্য ধরুন, ছোট ছোট সাফল্য উদ্যাপন করুন
এবং প্রয়োজনে সাহায্য চাইতে সংকোচ করবেন না। সঠিক পরিকল্পনা ও সমর্থন থাকলে ওজন কমানোর লক্ষ্য অর্জন করা সম্ভব।
সূত্র: হেলথ লাইন

২০২৪ সালজুড়ে দেশের স্বাস্থ্য খাতে অস্থিরতা বিদ্যমান ছিল। বছরের শুরুতে ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের আমল থেকে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার পর্যন্ত নানা বিতর্ক ও অসন্তোষ স্বাস্থ্য খাতকে প্রভাবিত করেছে। অভ্যুত্থানে আহতদের চিকিৎসা ও পুনর্বাসন, পদায়ন ও বদলিতে অনিয়ম, ডেঙ্গুর ভয়াবহতা নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থতা এবং স্ব
০১ জানুয়ারি ২০২৫
থাইরয়েড হরমোন আমাদের গলার সামনে থাইরয়েড গ্রন্থি থেকে নিঃসৃত একধরনের হরমোন কিংবা প্রাণরস। এটি গলার সামনে থেকে নিঃসৃত হলেও সারা শরীরে ছড়িয়ে পড়ে এবং পুরো শরীরে কাজ করে।
১১ ঘণ্টা আগে
সুষম খাবারের ৬টি উপাদানের অন্যতম ভিটামিন ও খনিজ লবণ। এগুলো আমাদের শরীরের চালিকাশক্তির অন্যতম উপাদান হিসেবে বিবেচিত। শরীরের একেকটি অঙ্গের সুরক্ষায় একেক ধরনের ভিটামিন প্রয়োজন হয়। যেমন চুল ও চোখের সুরক্ষায় ভিটামিন ‘এ’, ত্বকের সুরক্ষায় ভিটামিন ‘বি’ ও ‘সি’, হাড় ও দাঁতের সুরক্ষায় ভিটামিন ‘ডি’ প্রয়োজন হয়।
১১ ঘণ্টা আগে
ঝাঁকির কারণে শিশুর মস্তিষ্কে আঘাত বা শেকেন বেবি সিনড্রোম হলো শিশু নির্যাতনের একটি মারাত্মক ও জীবনঘাতী রূপ। এটি প্রধানত ২ বছরের কম বয়সী শিশুদের ক্ষেত্রে দেখা যায়। এই অবস্থায় শিশুকে জোরে জোরে ঝাঁকানোর ফলে মস্তিষ্ক, চোখ ও ঘাড়ে গুরুতর আঘাত সৃষ্টি হয়, যদিও বাহ্যিকভাবে অনেক সময় কোনো...
১৩ ঘণ্টা আগেডা. মো. মাজহারুল হক তানিম

থাইরয়েড হরমোন আমাদের গলার সামনে থাইরয়েড গ্রন্থি থেকে নিঃসৃত একধরনের হরমোন কিংবা প্রাণরস। এটি গলার সামনে থেকে নিঃসৃত হলেও সারা শরীরে ছড়িয়ে পড়ে এবং পুরো শরীরে কাজ করে।
হাইপোথাইরয়েডিজমের লক্ষণ
শীতকালীন সবজি খাওয়ায় সতর্কতা
কাবেজ জাতীয় সবজি; যেমন ফুলকপি, বাঁধাকপি, লেটুসপাতায় থাকে গয়ট্রোজেন নামে একধরনের উপাদান। এটি থাইরয়েড হরমোন তৈরিতে বাধা দিয়ে থাকে। তাই যাঁদের হাইপোথাইরয়েড আছে, তাঁদের এসব সবজি কাঁচা অবস্থায় খাওয়া যাবে না। কিন্তু রান্না করে অল্প খাওয়া যাবে।
শীতকালে থাইরয়েড রোগীদের হরমোনের চাহিদা বেড়ে যায়। তাই অতিরিক্ত দুর্বল লাগে, ঠান্ডা ভাব এবং কাজের গতি ধীর হতে পারে।
শীতকালে থাইরয়েড রোগীদের করণীয়
গরম থাকার চেষ্টা করুন: জ্যাকেট কিংবা কম্বল ইত্যাদির মতো গরম কাপড় ব্যবহার করতে হবে। গরম খাবার বেশি খেতে হবে; যেমন স্যুপ কিংবা চা।
ভিটামিন ‘ডি’ বাড়ান: সকাল ৯ থেকে ১০টার দিকে রোদে থাকার চেষ্টা করুন। ভিটামিন ‘ডি’ লেভেল বেশি কম থাকলে চিকিৎসকের পরামর্শে ভিটামিন ‘ডি’ সাপ্লিমেন্ট নিতে পারেন।
খাদ্যাভ্যাস: পর্যাপ্ত পানি পান করুন। ভিটামিন ‘সি ও বি’ সমৃদ্ধ এবং প্রোটিনযুক্ত খাবার বেশি খেতে হবে। প্রক্রিয়াজাত খাবার কম খান।
মন নিয়ন্ত্রণ করুন: মুড সুইং খুবই সাধারণ বিষয় থাইরয়েড রোগীদের জন্য। তাই নিজের মন নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। এ ছাড়া প্রফুল্ল থাকার চেষ্টা করুন, কর্মঠ থাকুন, দুশ্চিন্তা ঝেড়ে ফেলুন। প্রয়োজনে লাইট থেরাপি নিতে পারেন।
শীতে থাইরয়েড রোগীদের ত্বকের যত্ন
থাইরয়েড রোগীদের ত্বক স্বভাবতই শুষ্ক থাকে। শীতকালে তা আরও শুষ্ক হয়ে ওঠে। তাই শীতকালে গোসলের পর ময়শ্চারাইজার, লোশন কিংবা ক্রিম নিয়মিত ব্যবহার করুন। ত্বকে চুলকানি অথবা র্যাশ থাকলে চর্ম ও যৌন বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেবেন।
নিয়মিত ফলোআপ
৩ থেকে ৬ মাস পরপর আপনার হরমোন ও থাইরয়েড, বিশেষত এন্ডোক্রাইনোলজিস্টের পরামর্শ নিন। চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া ওষুধের মাত্রা কম কিংবা বেশি করা যাবে না।
এন্ডোক্রাইনোলজিস্ট, ইসলামী ব্যাংক সেন্ট্রাল হাসপাতাল, কাকরাইল, ঢাকা

থাইরয়েড হরমোন আমাদের গলার সামনে থাইরয়েড গ্রন্থি থেকে নিঃসৃত একধরনের হরমোন কিংবা প্রাণরস। এটি গলার সামনে থেকে নিঃসৃত হলেও সারা শরীরে ছড়িয়ে পড়ে এবং পুরো শরীরে কাজ করে।
হাইপোথাইরয়েডিজমের লক্ষণ
শীতকালীন সবজি খাওয়ায় সতর্কতা
কাবেজ জাতীয় সবজি; যেমন ফুলকপি, বাঁধাকপি, লেটুসপাতায় থাকে গয়ট্রোজেন নামে একধরনের উপাদান। এটি থাইরয়েড হরমোন তৈরিতে বাধা দিয়ে থাকে। তাই যাঁদের হাইপোথাইরয়েড আছে, তাঁদের এসব সবজি কাঁচা অবস্থায় খাওয়া যাবে না। কিন্তু রান্না করে অল্প খাওয়া যাবে।
শীতকালে থাইরয়েড রোগীদের হরমোনের চাহিদা বেড়ে যায়। তাই অতিরিক্ত দুর্বল লাগে, ঠান্ডা ভাব এবং কাজের গতি ধীর হতে পারে।
শীতকালে থাইরয়েড রোগীদের করণীয়
গরম থাকার চেষ্টা করুন: জ্যাকেট কিংবা কম্বল ইত্যাদির মতো গরম কাপড় ব্যবহার করতে হবে। গরম খাবার বেশি খেতে হবে; যেমন স্যুপ কিংবা চা।
ভিটামিন ‘ডি’ বাড়ান: সকাল ৯ থেকে ১০টার দিকে রোদে থাকার চেষ্টা করুন। ভিটামিন ‘ডি’ লেভেল বেশি কম থাকলে চিকিৎসকের পরামর্শে ভিটামিন ‘ডি’ সাপ্লিমেন্ট নিতে পারেন।
খাদ্যাভ্যাস: পর্যাপ্ত পানি পান করুন। ভিটামিন ‘সি ও বি’ সমৃদ্ধ এবং প্রোটিনযুক্ত খাবার বেশি খেতে হবে। প্রক্রিয়াজাত খাবার কম খান।
মন নিয়ন্ত্রণ করুন: মুড সুইং খুবই সাধারণ বিষয় থাইরয়েড রোগীদের জন্য। তাই নিজের মন নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। এ ছাড়া প্রফুল্ল থাকার চেষ্টা করুন, কর্মঠ থাকুন, দুশ্চিন্তা ঝেড়ে ফেলুন। প্রয়োজনে লাইট থেরাপি নিতে পারেন।
শীতে থাইরয়েড রোগীদের ত্বকের যত্ন
থাইরয়েড রোগীদের ত্বক স্বভাবতই শুষ্ক থাকে। শীতকালে তা আরও শুষ্ক হয়ে ওঠে। তাই শীতকালে গোসলের পর ময়শ্চারাইজার, লোশন কিংবা ক্রিম নিয়মিত ব্যবহার করুন। ত্বকে চুলকানি অথবা র্যাশ থাকলে চর্ম ও যৌন বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেবেন।
নিয়মিত ফলোআপ
৩ থেকে ৬ মাস পরপর আপনার হরমোন ও থাইরয়েড, বিশেষত এন্ডোক্রাইনোলজিস্টের পরামর্শ নিন। চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া ওষুধের মাত্রা কম কিংবা বেশি করা যাবে না।
এন্ডোক্রাইনোলজিস্ট, ইসলামী ব্যাংক সেন্ট্রাল হাসপাতাল, কাকরাইল, ঢাকা

২০২৪ সালজুড়ে দেশের স্বাস্থ্য খাতে অস্থিরতা বিদ্যমান ছিল। বছরের শুরুতে ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের আমল থেকে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার পর্যন্ত নানা বিতর্ক ও অসন্তোষ স্বাস্থ্য খাতকে প্রভাবিত করেছে। অভ্যুত্থানে আহতদের চিকিৎসা ও পুনর্বাসন, পদায়ন ও বদলিতে অনিয়ম, ডেঙ্গুর ভয়াবহতা নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থতা এবং স্ব
০১ জানুয়ারি ২০২৫
ওজন কমানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া যেমন কঠিন, সেই সিদ্ধান্তে দীর্ঘদিন অটল থাকা অনেকের ক্ষেত্রে আরও কঠিন। সঠিক অনুপ্রেরণা না থাকলে ওজন কমানো শুরু করাই কঠিন হয়ে পড়ে। আর শুরু করলেও মাঝপথে থেমে যাওয়ার ঝুঁকি থাকে। তবে কিছু বাস্তবসম্মত কৌশল অনুসরণ করলে ওজন কমানোর লক্ষ্য অর্জন সহজ হতে পারে।
১০ ঘণ্টা আগে
সুষম খাবারের ৬টি উপাদানের অন্যতম ভিটামিন ও খনিজ লবণ। এগুলো আমাদের শরীরের চালিকাশক্তির অন্যতম উপাদান হিসেবে বিবেচিত। শরীরের একেকটি অঙ্গের সুরক্ষায় একেক ধরনের ভিটামিন প্রয়োজন হয়। যেমন চুল ও চোখের সুরক্ষায় ভিটামিন ‘এ’, ত্বকের সুরক্ষায় ভিটামিন ‘বি’ ও ‘সি’, হাড় ও দাঁতের সুরক্ষায় ভিটামিন ‘ডি’ প্রয়োজন হয়।
১১ ঘণ্টা আগে
ঝাঁকির কারণে শিশুর মস্তিষ্কে আঘাত বা শেকেন বেবি সিনড্রোম হলো শিশু নির্যাতনের একটি মারাত্মক ও জীবনঘাতী রূপ। এটি প্রধানত ২ বছরের কম বয়সী শিশুদের ক্ষেত্রে দেখা যায়। এই অবস্থায় শিশুকে জোরে জোরে ঝাঁকানোর ফলে মস্তিষ্ক, চোখ ও ঘাড়ে গুরুতর আঘাত সৃষ্টি হয়, যদিও বাহ্যিকভাবে অনেক সময় কোনো...
১৩ ঘণ্টা আগেমো. ইকবাল হোসেন

সুষম খাবারের ৬টি উপাদানের অন্যতম ভিটামিন ও খনিজ লবণ। এগুলো আমাদের শরীরের চালিকাশক্তির অন্যতম উপাদান হিসেবে বিবেচিত। শরীরের একেকটি অঙ্গের সুরক্ষায় একেক ধরনের ভিটামিন প্রয়োজন হয়। যেমন চুল ও চোখের সুরক্ষায় ভিটামিন ‘এ’, ত্বকের সুরক্ষায় ভিটামিন ‘বি’ ও ‘সি’, হাড় ও দাঁতের সুরক্ষায় ভিটামিন ‘ডি’ প্রয়োজন হয়। আবার ত্বক, চুল ও প্রজননতন্ত্রের সুরক্ষায় ভিটামিন ‘ই’-এর ভূমিকা অনেক বেশি। এ ছাড়া শরীরের বিভিন্ন রকমের পেশি এবং স্নায়ুতন্ত্রের সুরক্ষায় খনিজ লবণের ভূমিকা অনেক বেশি।
এই ভিটামিন ও খনিজ লবণগুলো আমরা প্রধানত শাকসবজি ও ফলমূল থেকে পেয়ে থাকি। কিন্তু কিছু অসাবধানতার ফলে শাকসবজি ও ফলমূলের পুষ্টির একটা বড় অংশ হারিয়ে যায়।
আমরা ঐতিহ্যগতভাবে শাকসবজি কাটার পর পানি দিয়ে কয়েকবার ধুয়ে থাকি। এতে পানিতে দ্রবণীয় ভিটামিন ‘বি ও সি’ পানির সঙ্গে মিশে শাকসবজির বাইরে চলে যায়। ফলে আমরা ওই শাকসবজি থেকে প্রয়োজনীয় ভিটামিন ও খনিজ লবণ পাই না। তাই সেগুলো কাটা বা খোসা ছাড়ানোর আগে ভালো করে ধুয়ে নিতে হবে। এতে ময়লা পরিষ্কারের পাশাপাশি সব পুষ্টিগুণ অক্ষুণ্ন থাকবে। শাকসবজি কাটার আগে বঁটি, ছুরি বা গ্রেটারও খুব ভালো করে ধুয়ে নিতে হবে।
শাকসবজি রান্নার নামে দীর্ঘ সময় আগুনের তাপে রাখা যাবে না। অল্প তাপেই শাকসবজিতে থাকা ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়া বা জীবাণু মারা যায়। এগুলো যত কম সময় সেদ্ধ করা হবে, তত বেশি পুষ্টিগুণ অক্ষুণ্ণ থাকবে। যেমন দীর্ঘ সময় ধরে রান্না করলে শাকসবজির প্রায় ৫০ শতাংশ পটাশিয়াম নষ্ট হয়ে যায়। কিন্তু এটি শরীরের জন্য অতিপ্রয়োজনীয় খনিজ। ফলে অল্প আঁচে ভাপানো শাকসবজি খাওয়া ভালো।
প্রতিটি শাকসবজির নিজস্ব রং বজায় রেখে রান্না করলে তার পুষ্টিগুণ বেশি বজায় থাকবে। যেমন গাজর রান্নার পর লাল রং, শিম রান্নার পর সবুজ রং কিংবা ফুলকপির সাদা রং বজায় থাকতে হবে। রান্না করতে গিয়ে শাকসবজির রং যত নষ্ট হবে, তার পুষ্টিগুণ তত বেশি নষ্ট হবে।
অনেক সময় রাতে শাকসবজি কেটে রেখে দেওয়া হয় সকালে রান্না করার জন্য। অথবা সকালে কেটে রাখি দুপুরে রান্না করার জন্য। এভাবে দীর্ঘ সময় কেটে রেখে দিলে শাকসবজির কাটা অংশ বাতাসের সংস্পর্শে এসে জারণ-বিজারণ বিক্রিয়ার মাধ্যমে পুষ্টিগুণ নষ্ট করে। এভাবে কেটে রাখা শাকসবজিতে বিষক্রিয়াও হতে পারে। তাই এর সঠিক পুষ্টিগুণ বজায় রাখতে রাতে কেটে না রেখে রান্নার আগে কেটে দ্রুত রান্না করুন।
শাকসবজি কাটার কাজে ধারালো বঁটি অথবা ছুরি ব্যবহার করতে হবে। ভোঁতা বঁটি বা ছুরি দিয়ে এগুলো কাটার পর অনেক প্রয়োজনীয় পুষ্টি উপাদান নষ্ট হতে পারে। এ ছাড়া ভোঁতা বঁটি বা ছুরি দিয়ে কেটে রাখা শাকসবজিতে দ্রুত ব্যাকটেরিয়া কিংবা ছত্রাকের আক্রমণ হতে পারে।
সবজি ছোট টুকরা করে না কেটে যথাসম্ভব বড় টুকরা করে কাটবেন। ছোট টুকরা করে কাটলে তাপে বেশি পরিমাণে পুষ্টিগুণ নষ্ট হতে পারে। কিন্তু টুকরা বড় রাখলে বেশি তাপে রান্নায়ও ভেতরের পুষ্টিগুণ সহজে নষ্ট হয় না।
গাজর, পটোল, লাউ, শসা, মিষ্টিকুমড়ার মতো সবজিগুলো খোসাসহ রান্না করতে হবে। এসব সবজির খোসায়ও অনেক ভিটামিন ও মিনারেল থাকে।
শাকসবজি ভাজা ভাজা না করে রান্না করে খেলে বেশি পুষ্টিগুণ পাওয়া যায়। প্রথমত ভাজা করতে হলে খুব ছোট টুকরা করে কাটতে হয়। দ্বিতীয়ত ভাজি করতে হলে দীর্ঘ সময় তাপে রাখতে হয়। এই দুটি বিষয় শাকসবজির পুষ্টিগুণ অনেক কমিয়ে দেয়। তাই এগুলো ঝোল করে রান্না করে খাওয়ার অভ্যাস করতে হবে।
জ্যেষ্ঠ পুষ্টি কর্মকর্তা, চট্টগ্রাম ডায়াবেটিক জেনারেল হাসপাতাল

সুষম খাবারের ৬টি উপাদানের অন্যতম ভিটামিন ও খনিজ লবণ। এগুলো আমাদের শরীরের চালিকাশক্তির অন্যতম উপাদান হিসেবে বিবেচিত। শরীরের একেকটি অঙ্গের সুরক্ষায় একেক ধরনের ভিটামিন প্রয়োজন হয়। যেমন চুল ও চোখের সুরক্ষায় ভিটামিন ‘এ’, ত্বকের সুরক্ষায় ভিটামিন ‘বি’ ও ‘সি’, হাড় ও দাঁতের সুরক্ষায় ভিটামিন ‘ডি’ প্রয়োজন হয়। আবার ত্বক, চুল ও প্রজননতন্ত্রের সুরক্ষায় ভিটামিন ‘ই’-এর ভূমিকা অনেক বেশি। এ ছাড়া শরীরের বিভিন্ন রকমের পেশি এবং স্নায়ুতন্ত্রের সুরক্ষায় খনিজ লবণের ভূমিকা অনেক বেশি।
এই ভিটামিন ও খনিজ লবণগুলো আমরা প্রধানত শাকসবজি ও ফলমূল থেকে পেয়ে থাকি। কিন্তু কিছু অসাবধানতার ফলে শাকসবজি ও ফলমূলের পুষ্টির একটা বড় অংশ হারিয়ে যায়।
আমরা ঐতিহ্যগতভাবে শাকসবজি কাটার পর পানি দিয়ে কয়েকবার ধুয়ে থাকি। এতে পানিতে দ্রবণীয় ভিটামিন ‘বি ও সি’ পানির সঙ্গে মিশে শাকসবজির বাইরে চলে যায়। ফলে আমরা ওই শাকসবজি থেকে প্রয়োজনীয় ভিটামিন ও খনিজ লবণ পাই না। তাই সেগুলো কাটা বা খোসা ছাড়ানোর আগে ভালো করে ধুয়ে নিতে হবে। এতে ময়লা পরিষ্কারের পাশাপাশি সব পুষ্টিগুণ অক্ষুণ্ন থাকবে। শাকসবজি কাটার আগে বঁটি, ছুরি বা গ্রেটারও খুব ভালো করে ধুয়ে নিতে হবে।
শাকসবজি রান্নার নামে দীর্ঘ সময় আগুনের তাপে রাখা যাবে না। অল্প তাপেই শাকসবজিতে থাকা ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়া বা জীবাণু মারা যায়। এগুলো যত কম সময় সেদ্ধ করা হবে, তত বেশি পুষ্টিগুণ অক্ষুণ্ণ থাকবে। যেমন দীর্ঘ সময় ধরে রান্না করলে শাকসবজির প্রায় ৫০ শতাংশ পটাশিয়াম নষ্ট হয়ে যায়। কিন্তু এটি শরীরের জন্য অতিপ্রয়োজনীয় খনিজ। ফলে অল্প আঁচে ভাপানো শাকসবজি খাওয়া ভালো।
প্রতিটি শাকসবজির নিজস্ব রং বজায় রেখে রান্না করলে তার পুষ্টিগুণ বেশি বজায় থাকবে। যেমন গাজর রান্নার পর লাল রং, শিম রান্নার পর সবুজ রং কিংবা ফুলকপির সাদা রং বজায় থাকতে হবে। রান্না করতে গিয়ে শাকসবজির রং যত নষ্ট হবে, তার পুষ্টিগুণ তত বেশি নষ্ট হবে।
অনেক সময় রাতে শাকসবজি কেটে রেখে দেওয়া হয় সকালে রান্না করার জন্য। অথবা সকালে কেটে রাখি দুপুরে রান্না করার জন্য। এভাবে দীর্ঘ সময় কেটে রেখে দিলে শাকসবজির কাটা অংশ বাতাসের সংস্পর্শে এসে জারণ-বিজারণ বিক্রিয়ার মাধ্যমে পুষ্টিগুণ নষ্ট করে। এভাবে কেটে রাখা শাকসবজিতে বিষক্রিয়াও হতে পারে। তাই এর সঠিক পুষ্টিগুণ বজায় রাখতে রাতে কেটে না রেখে রান্নার আগে কেটে দ্রুত রান্না করুন।
শাকসবজি কাটার কাজে ধারালো বঁটি অথবা ছুরি ব্যবহার করতে হবে। ভোঁতা বঁটি বা ছুরি দিয়ে এগুলো কাটার পর অনেক প্রয়োজনীয় পুষ্টি উপাদান নষ্ট হতে পারে। এ ছাড়া ভোঁতা বঁটি বা ছুরি দিয়ে কেটে রাখা শাকসবজিতে দ্রুত ব্যাকটেরিয়া কিংবা ছত্রাকের আক্রমণ হতে পারে।
সবজি ছোট টুকরা করে না কেটে যথাসম্ভব বড় টুকরা করে কাটবেন। ছোট টুকরা করে কাটলে তাপে বেশি পরিমাণে পুষ্টিগুণ নষ্ট হতে পারে। কিন্তু টুকরা বড় রাখলে বেশি তাপে রান্নায়ও ভেতরের পুষ্টিগুণ সহজে নষ্ট হয় না।
গাজর, পটোল, লাউ, শসা, মিষ্টিকুমড়ার মতো সবজিগুলো খোসাসহ রান্না করতে হবে। এসব সবজির খোসায়ও অনেক ভিটামিন ও মিনারেল থাকে।
শাকসবজি ভাজা ভাজা না করে রান্না করে খেলে বেশি পুষ্টিগুণ পাওয়া যায়। প্রথমত ভাজা করতে হলে খুব ছোট টুকরা করে কাটতে হয়। দ্বিতীয়ত ভাজি করতে হলে দীর্ঘ সময় তাপে রাখতে হয়। এই দুটি বিষয় শাকসবজির পুষ্টিগুণ অনেক কমিয়ে দেয়। তাই এগুলো ঝোল করে রান্না করে খাওয়ার অভ্যাস করতে হবে।
জ্যেষ্ঠ পুষ্টি কর্মকর্তা, চট্টগ্রাম ডায়াবেটিক জেনারেল হাসপাতাল

২০২৪ সালজুড়ে দেশের স্বাস্থ্য খাতে অস্থিরতা বিদ্যমান ছিল। বছরের শুরুতে ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের আমল থেকে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার পর্যন্ত নানা বিতর্ক ও অসন্তোষ স্বাস্থ্য খাতকে প্রভাবিত করেছে। অভ্যুত্থানে আহতদের চিকিৎসা ও পুনর্বাসন, পদায়ন ও বদলিতে অনিয়ম, ডেঙ্গুর ভয়াবহতা নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থতা এবং স্ব
০১ জানুয়ারি ২০২৫
ওজন কমানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া যেমন কঠিন, সেই সিদ্ধান্তে দীর্ঘদিন অটল থাকা অনেকের ক্ষেত্রে আরও কঠিন। সঠিক অনুপ্রেরণা না থাকলে ওজন কমানো শুরু করাই কঠিন হয়ে পড়ে। আর শুরু করলেও মাঝপথে থেমে যাওয়ার ঝুঁকি থাকে। তবে কিছু বাস্তবসম্মত কৌশল অনুসরণ করলে ওজন কমানোর লক্ষ্য অর্জন সহজ হতে পারে।
১০ ঘণ্টা আগে
থাইরয়েড হরমোন আমাদের গলার সামনে থাইরয়েড গ্রন্থি থেকে নিঃসৃত একধরনের হরমোন কিংবা প্রাণরস। এটি গলার সামনে থেকে নিঃসৃত হলেও সারা শরীরে ছড়িয়ে পড়ে এবং পুরো শরীরে কাজ করে।
১১ ঘণ্টা আগে
ঝাঁকির কারণে শিশুর মস্তিষ্কে আঘাত বা শেকেন বেবি সিনড্রোম হলো শিশু নির্যাতনের একটি মারাত্মক ও জীবনঘাতী রূপ। এটি প্রধানত ২ বছরের কম বয়সী শিশুদের ক্ষেত্রে দেখা যায়। এই অবস্থায় শিশুকে জোরে জোরে ঝাঁকানোর ফলে মস্তিষ্ক, চোখ ও ঘাড়ে গুরুতর আঘাত সৃষ্টি হয়, যদিও বাহ্যিকভাবে অনেক সময় কোনো...
১৩ ঘণ্টা আগেডা. মো. আরমান হোসেন রনি

ঝাঁকির কারণে শিশুর মস্তিষ্কে আঘাত বা শেকেন বেবি সিনড্রোম হলো শিশু নির্যাতনের একটি মারাত্মক ও জীবনঘাতী রূপ। এটি প্রধানত ২ বছরের কম বয়সী শিশুদের ক্ষেত্রে দেখা যায়। এই অবস্থায় শিশুকে জোরে জোরে ঝাঁকানোর ফলে মস্তিষ্ক, চোখ ও ঘাড়ে গুরুতর আঘাত সৃষ্টি হয়, যদিও বাহ্যিকভাবে অনেক সময় কোনো আঘাতের চিহ্ন না-ও থাকতে পারে।
কারণ
শিশুর অতিরিক্ত কান্না, বিরক্তি কিংবা অস্থিরতার কারণে অভিভাবক বা পরিচর্যাকারীর রাগ এ ঘটনার জন্য বিশেষভাবে দায়ী। এই অবস্থায় শিশুকে ঝাঁকালে তাদের ঘাড়ের পেশি দুর্বল হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়।
এ ছাড়া মাথা শরীরের তুলনায় বড় হওয়ায় ঝাঁকানোর সময় তা সামনে-পেছনে দ্রুত নড়াচড়া করে। ফলে মস্তিষ্ক খুলির ভেতরে আঘাতপ্রাপ্ত হয় এবং রক্তনালিগুলো ছিঁড়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে।
কী ঘটে
শিশুকে জোরে ঝাঁকানোর ফলে তিনটি প্রধান ক্ষতি হয়—
মস্তিষ্কে আঘাত: মস্তিষ্ক ও খুলির মাঝখানে থাকা রক্তনালি ছিঁড়ে গিয়ে রক্তক্ষরণ হয়।
চোখে আঘাত: ভিট্রিওরেটিনাল ট্র্যাকশনের কারণে মাল্টিলেয়ার্ড রেটিনায় রক্তক্ষরণ হয়, যা শেকেন বেবি সিনড্রোমের একটি গুরুত্বপূর্ণ লক্ষণ।
ঘাড় ও স্পাইনাল ইনজুরি: সার্ভাইক্যাল স্পাইনের ক্ষতি ও মস্তিষ্কে অক্সিজেনের ঘাটতি দেখা দিতে পারে।
লক্ষণ
শেকেন বেবি সিনড্রোমে আক্রান্ত শিশুর লক্ষণগুলো হালকা থেকে গুরুতর হতে পারে। সাধারণ লক্ষণগুলো হলো:
অতিরিক্ত কান্না বা অস্বাভাবিক নিস্তেজ হয়ে যাওয়া
চোখের পরীক্ষায় দেখা যায়—
রোগনির্ণয়
শেকেন বেবি সিনড্রোম মূলত ক্লিনিক্যাল ডায়াগনোসিস। তবে নিশ্চিত করার জন্য—
চিকিৎসা
এর চিকিৎসা একটি মাল্টিডিসিপ্লিনারি অ্যাপ্রোচের মাধ্যমে করা হয়—
চিকিৎসকের আইনগত ও নৈতিক দায়িত্ব
শেকেন বেবি সিনড্রোম একটি শিশু নির্যাতনজনিত অপরাধ। তাই চিকিৎসকের দায়িত্ব শুধু চিকিৎসা করা নয়, বরং—
চক্ষুবিশেষজ্ঞ ও সার্জন, জাতীয় চক্ষুবিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল, শেরেবাংলা নগর, ঢাকা।

ঝাঁকির কারণে শিশুর মস্তিষ্কে আঘাত বা শেকেন বেবি সিনড্রোম হলো শিশু নির্যাতনের একটি মারাত্মক ও জীবনঘাতী রূপ। এটি প্রধানত ২ বছরের কম বয়সী শিশুদের ক্ষেত্রে দেখা যায়। এই অবস্থায় শিশুকে জোরে জোরে ঝাঁকানোর ফলে মস্তিষ্ক, চোখ ও ঘাড়ে গুরুতর আঘাত সৃষ্টি হয়, যদিও বাহ্যিকভাবে অনেক সময় কোনো আঘাতের চিহ্ন না-ও থাকতে পারে।
কারণ
শিশুর অতিরিক্ত কান্না, বিরক্তি কিংবা অস্থিরতার কারণে অভিভাবক বা পরিচর্যাকারীর রাগ এ ঘটনার জন্য বিশেষভাবে দায়ী। এই অবস্থায় শিশুকে ঝাঁকালে তাদের ঘাড়ের পেশি দুর্বল হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়।
এ ছাড়া মাথা শরীরের তুলনায় বড় হওয়ায় ঝাঁকানোর সময় তা সামনে-পেছনে দ্রুত নড়াচড়া করে। ফলে মস্তিষ্ক খুলির ভেতরে আঘাতপ্রাপ্ত হয় এবং রক্তনালিগুলো ছিঁড়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে।
কী ঘটে
শিশুকে জোরে ঝাঁকানোর ফলে তিনটি প্রধান ক্ষতি হয়—
মস্তিষ্কে আঘাত: মস্তিষ্ক ও খুলির মাঝখানে থাকা রক্তনালি ছিঁড়ে গিয়ে রক্তক্ষরণ হয়।
চোখে আঘাত: ভিট্রিওরেটিনাল ট্র্যাকশনের কারণে মাল্টিলেয়ার্ড রেটিনায় রক্তক্ষরণ হয়, যা শেকেন বেবি সিনড্রোমের একটি গুরুত্বপূর্ণ লক্ষণ।
ঘাড় ও স্পাইনাল ইনজুরি: সার্ভাইক্যাল স্পাইনের ক্ষতি ও মস্তিষ্কে অক্সিজেনের ঘাটতি দেখা দিতে পারে।
লক্ষণ
শেকেন বেবি সিনড্রোমে আক্রান্ত শিশুর লক্ষণগুলো হালকা থেকে গুরুতর হতে পারে। সাধারণ লক্ষণগুলো হলো:
অতিরিক্ত কান্না বা অস্বাভাবিক নিস্তেজ হয়ে যাওয়া
চোখের পরীক্ষায় দেখা যায়—
রোগনির্ণয়
শেকেন বেবি সিনড্রোম মূলত ক্লিনিক্যাল ডায়াগনোসিস। তবে নিশ্চিত করার জন্য—
চিকিৎসা
এর চিকিৎসা একটি মাল্টিডিসিপ্লিনারি অ্যাপ্রোচের মাধ্যমে করা হয়—
চিকিৎসকের আইনগত ও নৈতিক দায়িত্ব
শেকেন বেবি সিনড্রোম একটি শিশু নির্যাতনজনিত অপরাধ। তাই চিকিৎসকের দায়িত্ব শুধু চিকিৎসা করা নয়, বরং—
চক্ষুবিশেষজ্ঞ ও সার্জন, জাতীয় চক্ষুবিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল, শেরেবাংলা নগর, ঢাকা।

২০২৪ সালজুড়ে দেশের স্বাস্থ্য খাতে অস্থিরতা বিদ্যমান ছিল। বছরের শুরুতে ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের আমল থেকে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার পর্যন্ত নানা বিতর্ক ও অসন্তোষ স্বাস্থ্য খাতকে প্রভাবিত করেছে। অভ্যুত্থানে আহতদের চিকিৎসা ও পুনর্বাসন, পদায়ন ও বদলিতে অনিয়ম, ডেঙ্গুর ভয়াবহতা নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থতা এবং স্ব
০১ জানুয়ারি ২০২৫
ওজন কমানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া যেমন কঠিন, সেই সিদ্ধান্তে দীর্ঘদিন অটল থাকা অনেকের ক্ষেত্রে আরও কঠিন। সঠিক অনুপ্রেরণা না থাকলে ওজন কমানো শুরু করাই কঠিন হয়ে পড়ে। আর শুরু করলেও মাঝপথে থেমে যাওয়ার ঝুঁকি থাকে। তবে কিছু বাস্তবসম্মত কৌশল অনুসরণ করলে ওজন কমানোর লক্ষ্য অর্জন সহজ হতে পারে।
১০ ঘণ্টা আগে
থাইরয়েড হরমোন আমাদের গলার সামনে থাইরয়েড গ্রন্থি থেকে নিঃসৃত একধরনের হরমোন কিংবা প্রাণরস। এটি গলার সামনে থেকে নিঃসৃত হলেও সারা শরীরে ছড়িয়ে পড়ে এবং পুরো শরীরে কাজ করে।
১১ ঘণ্টা আগে
সুষম খাবারের ৬টি উপাদানের অন্যতম ভিটামিন ও খনিজ লবণ। এগুলো আমাদের শরীরের চালিকাশক্তির অন্যতম উপাদান হিসেবে বিবেচিত। শরীরের একেকটি অঙ্গের সুরক্ষায় একেক ধরনের ভিটামিন প্রয়োজন হয়। যেমন চুল ও চোখের সুরক্ষায় ভিটামিন ‘এ’, ত্বকের সুরক্ষায় ভিটামিন ‘বি’ ও ‘সি’, হাড় ও দাঁতের সুরক্ষায় ভিটামিন ‘ডি’ প্রয়োজন হয়।
১১ ঘণ্টা আগে