
ইন্টারনেটে ঘাঁটাঘাঁটি করে নিজেদের রোগ নির্ণয়ের চেষ্টা করেন অনেকেই। এই ধরনের সাইবারকন্ড্রিয়াক ব্যক্তিরা তাঁদের শারীরিক বা মানসিক অবস্থার সঙ্গে সম্পর্কিত যেকোনো উপসর্গ বা অসুস্থতার তথ্য জানার জন্য ইন্টারনেটে তথ্য খুঁজে থাকেন, যা তাঁদের উদ্বেগ বা অস্থিরতা আরও বাড়িয়ে তোলে। তবে এখন সাইবারকন্ড্রিয়াক এবং আত্ম-চিকিৎসা (যাঁরা চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়াই ওষুধ বা চিকিৎসা পদ্ধতি গ্রহণ করেন) নেওয়া ব্যক্তিদের এই উদ্বেগ কমাতে সাহায্য করবে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার (এআই) প্রযুক্তি। কারণ, ভারতের বেঙ্গালুরুর একটি শীর্ষস্থানীয় হাসপাতাল কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা এআই চ্যাটবট চালু করতে যাচ্ছে, যা ব্যক্তিগত যত্নের জন্য বিশেষভাবে ডিজাইন করা হবে।
ভারতের শীর্ষস্থানীয় হাসপাতাল চেইন গ্রুপ বলেছে, রোগীর চিকিৎসা-সংক্রান্ত তথ্যের জন্য ইন্টারনেট অনুসন্ধানের প্রয়োজনীয়তা দূর করবে ইন্টারঅ্যাকটিভ চ্যাটবটটি। নির্দিষ্ট রোগীর তথ্যের সঙ্গে কাজ করতে, দ্রুত রোগ নির্ণয়ে করতে, সঠিক উপসর্গ চিহ্নিত করতে এবং স্বাস্থ্যসেবা সংস্থার বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে তাৎক্ষণিকভাবে যোগাযোগ করার জন্য চ্যাটবটটি ডিজাইন করা হয়েছে।
গ্রুপটি আরও বলছে, ‘এটি অনলাইনে তথ্য খোঁজা এবং আত্ম-চিকিৎসার প্রয়োজনীয়তা বাদ দিয়ে দ্রুত চিকিৎসা পরামর্শ প্রদান করবে এবং সময়মতো পরামর্শের মাধ্যমে উন্নত চিকিৎসা নিশ্চিত করবে।’
অপর দিকে আরেকটি হাসপাতাল চেইন এমন একটি অ্যাপ চালু করার পরিকল্পনা করছে, যা এআই প্রযুক্তি ব্যবহার করে জীবনধারা সম্পর্কিত রোগ নির্ণয়ে সাহায্য করবে। যেমন—ডায়াবেটিস, স্থূলতা, শারীরিক অকার্যকারিতা, অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস, উচ্চ রক্তচাপ ইত্যাদি। রোগীদের স্বাস্থ্য ট্র্যাক করতে আইওটি (ইন্টারনেট অব থিংক) ডিভাইস ব্যবহার করা হবে। যেমন—স্মার্টওয়াচ বা রক্তে শর্করা পর্যবেক্ষণমূলক ডিভাইস।
হাসপাতাল চেইনটি বলেছে, ‘অ্যাপটি নিয়মিতভাবে রোগীর খাদ্যাভ্যাস, ব্যায়াম, পানি এবং ওষুধ সেবনের মতো স্বাস্থ্য-সংক্রান্ত ডেটা আপডেট করবে। এআইয়ের সাহায্যে এই ডেটাগুলো পর্যবেক্ষণ করা হবে, যাতে রোগী তার স্বাস্থ্য-সম্পর্কিত তথ্য আরও ভালোভাবে আরও জানতে পারে। আর রোগীদের নির্ধারিত দৈনিক রুটিন তারা অনুসরণ করছে কি না, তা পর্যবেক্ষণ করবেন চিকিৎসকেরা।
‘যদিও আইওটি সক্ষম স্বাস্থ্যসেবা ডিভাইসগুলো কিছুদিন ধরেই রয়েছে, তবে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রযুক্তির উত্থান হাসপাতালগুলোকে এই প্রযুক্তির ব্যাপকভাবে গ্রহণের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। তবে, সেন্ট জনস ন্যাশনাল একাডেমি অব হেলথ সায়েন্সেসের ফ্যামিলি মেডিসিনের সহকারী অধ্যাপক ডা. জন বলেন, রোগীদের মধ্যে এআইভিত্তিক চিকিৎসার ধারণা ব্যক্তিগত অনুভূতির ওপর নির্ভরশীল। অনেক রোগী বিশেষ করে তরুণ প্রজন্ম এবং প্রযুক্তি-পছন্দকারীরা এআইয়ের সুবিধাগুলো সাদরে গ্রহণ করবেন। তবে, চিকিৎসায় এআইয়ের অন্তর্ভুক্তিকে সন্দেহের দৃষ্টি দেখবেন কিছু রোগী এবং তারা প্রচলিত চিকিৎসা পদ্ধতি পছন্দ করবেন। প্রযুক্তি ব্যবহারে অভ্যস্ততার অভাবে কিছু মানুষ এআইয়ের ওপর নির্ভর করতে পারবে না।
অপেক্ষার সময় কমানো
বড় হাসপাতালগুলোতে রোগীর সংখ্যা বেশি হলে, বহির্বিভাগে বা হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র পেতে বা ওষুধের দোকানের কাউন্টারে দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করতে হয়। এ ক্ষেত্রে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) ব্যবহারের মাধ্যমে প্রক্রিয়াগুলো অনেক সহজ এবং দ্রুত করা সম্ভব। এই লক্ষ্যেই কাজ করছে ভারতের সেন্ট জনস হাসপাতাল, যেখানে তারা হাসপাতালের রোগীর ডেটা সংগ্রহ, বিলিং, কাজের ধারা এবং এমনকি নিয়োগ ব্যবস্থাও এআই মাধ্যমে পরিচালনা করছে।
বর্তমানে মানুষ এমন এক সংস্কৃতিতে অভ্যস্ত হয়ে পড়েছে, যেখানে তারা প্রায় সবকিছুই হাতের কাছে পেয়ে যায়। উদাহরণস্বরূপ, ভারতের নয়ডায় একটি ১০ মিনিটে অ্যাম্বুলেন্স সেবা চালু হয়েছে। ভবিষ্যতে, যাদের জরুরি চিকিৎসাসেবার প্রয়োজন নেই, তাদের সরাসরি অ্যাপয়েন্টমেন্ট নিয়ে সময় নষ্ট করতে হবে না, বরং সহজ পদ্ধতিতে চিকিৎসা নিতে পারবেন।
কাবেরী গ্রুপ অব হসপিটালসের প্রতিষ্ঠাতা ও নির্বাহী চেয়ারম্যান ডা. এস চন্দ্রকুমার, এমডি বলেন, ‘আমরা এমন রোগীদের জন্য প্রস্তুত হতে চাই। আমরা এআই ব্যবহার করে রোগ নির্ণয় করতে চাই। রোগী ডেটার মাধ্যমে প্রয়োজনীয় এআই প্রযুক্তি তৈরি করতে চাই।’ উল্লেখ্য, ভারতের প্রথম এআই-চালিত লাইফস্টাইল বা জীবনধারা সম্পর্কিত রোগ বিভাগ প্রতিষ্ঠা করেছে হাসপাতালটি।
অস্ত্রোপচারে এআই
অস্ত্রোপচারের ক্ষেত্রে মূল্যবান টুল হিসেবে ব্যবহৃত হতে পারে এআই। বর্তমানের বিশ্ব রোবোটিক সার্জারির পর্যায়ে পৌঁছেছে। সার্জিকাল প্রক্রিয়ায় বিভিন্ন বিষয় অত্যন্ত সঠিকভাবে পরিমাপ করতে সাহায্য করে এআই। উদাহরণস্বরূপ, জয়েন্ট রিপ্লেসমেন্টের আগে, এআইয়ের ত্রিমাত্রিক প্রযুক্তি চিকিৎসকদের সঠিকভাবে কৃত্রিম অঙ্গের আকার এবং তার অবস্থান নির্ধারণে সাহায্য করে। এমনকি কতটুকু হাড় কাটা হবে তা সঠিকভাবে পরিমাপ করে এই প্রযুক্তি, যাতে জয়েন্টগুলোর ভারসাম্য থাকে। প্রচলিত রিপ্লেসমেন্ট সার্জারিতে এই পরিমাপগুলো সাধারণত নির্দিষ্ট থাকে। ডিজিটাল প্রতিকৃতি ও সার্জারির পরিস্থিতির ভার্চুয়াল মডেল তৈরি অস্ত্রোপচারের পূর্বপ্রস্তুতিতে সাহায্য করতে পারে এআই।
এ ছাড়া ইমপ্লান্ট নির্বাচন, অস্ত্রোপচার ফলাফল পূর্বানুমান এবং অস্ত্রোপচারের পর রোগীর সুস্থতার প্রক্রিয়া পর্যবেক্ষণ করতেও এআই সাহায্য করে। মনিপাল হাসপাতাল এআই ব্যবহার করে রোগীর তথ্য বিশ্লেষণ করে। আর কাওয়েরি হাসপাতাল ‘দ্য ভিঞ্চি’ এবং ‘মাকো ২.০’ এআই মডেল ব্যবহার করে অস্ত্রোপচারের ক্ষেত্রে রোবোটিক সিস্টেমের সঠিকতা বাড়াচ্ছে। সেন্ট জনস হাসপাতালেও এআই দিয়ে পরিচালিত রোবোটিক অস্ত্রোপচার করছে।
এআই ডায়াগনোসিস
মানুষের চোখে না দেখা সূক্ষ্ম অসংগতিগুলো চিহ্নিত করতে সক্ষম এআই অ্যালগরিদমগুলো, যা ডায়াগনোসিসে অত্যন্ত কার্যকরী প্রমাণিত হচ্ছে। কিছু ডায়াগনস্টিক সেন্টারগুলো সিটি স্ক্যান, এমআরআই ইত্যাদি রেডিওলজিক্যাল পরীক্ষার সঠিক ব্যাখ্যা এবং ডায়াগনোসিস দিতে এআই ব্যবহার শুরু করেছে।
ডা. জন বলেন, ‘গত তিন বছরে বেঙ্গালুরুর অনেক হাসপাতাল এআইয়ের সাহায্যে রোগীর সঙ্গে যোগাযোগব্যবস্থা চালু করেছে, যেখানে রোগীর ব্যক্তিগত তথ্য, উপসর্গ, রোগের ইতিহাস এআই-চ্যাটবটের মাধ্যমে নেওয়া হয়। এ ছাড়া বেশ কিছু স্টার্টআপ এআই-ভিত্তিক সেবা প্রদান করছে, যেমন—প্রাথমিক অবস্থায় রোগ শনাক্তকরণ, রক্তের ছবি বিশ্লেষণ, ক্যানসার স্ক্রিনিং, জেনেটিক স্ক্রিনিং, টেলিরেডিওলজি এবং রোগীদের জন্য ব্যক্তিগতকৃত স্বাস্থ্যসেবা।
মনিপাল হাসপাতালের ডা. দীপক দুবে বলেন, ‘কিছু স্টার্টআপ এআই-ইন্টিগ্রেটেড সফটওয়্যার তৈরি করেছে যা কার্ডিওলজিস্টদের এবং চিকিৎসকদের ইসিজি ট্রেসিং আরও সঠিকভাবে বিশ্লেষণ করতে সাহায্য করে।
প্রয়োজনীয় ডেটার অভাব
সঠিক রোগ নির্ণয় এবং জরুরি সতর্কতার জন্য বড় পরিমাণ ডেটার প্রয়োজন এআই সিস্টেমগুলোর। এ বিষয়ে ডা. সুনীল বলেন, ‘বর্তমানে, স্বাস্থ্য রেকর্ডের জন্য কোনো কেন্দ্রীভূত ডেটাবেইস নেই। ভারতে স্বাস্থ্য তথ্য খণ্ডিত, ছড়ানো ও প্রায়ই অসম্পূর্ণ এবং স্বাস্থ্যসেবা ক্ষেত্রে একটি কার্যকরী এআই সিস্টেম তৈরি করতে দীর্ঘমেয়াদি ডেটা প্রয়োজন। এ সমস্যাগুলো তৈরি হয় কারণ অনেক স্বাস্থ্যসেবা প্রদানকারী অনুমোদিত নয় বা তারা অ-প্রাতিষ্ঠানিক চিকিৎসক।
ডা. চন্দ্রকুমার বলেন, এই ক্ষেত্রে আরেকটি বড় সমস্যা হল ডিজিটালাইজেশনের অভাব। এখনো অনেক হাসপাতাল এবং চিকিৎসক তাঁদের কাজের জন্য কম্পিউটার ব্যবহার করে না। এর ফলে ডেটার অভাব দেখা যায়, যা এআই অ্যালগরিদমের প্রশিক্ষণে প্রভাব ফেলে। নির্দিষ্ট মান দ্বন্দ্ব মেনে চলার অভাবও একটি বড় চ্যালেঞ্জ। ভারতের স্বাস্থ্য তথ্যকে বৈশ্বিক স্বাস্থ্য তথ্যপ্রযুক্তির মান অনুসরণ করতে হবে। তবে আশার কথা হলো যে আয়ুষ্মান ভারত ডিজিটাল হেলথ মিশন এর মাধ্যমে আমরা এই সমস্যাগুলো সমাধানে কিছু গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নিয়েছি।
উল্লেখ্য, আয়ুষ্মান ভারত ডিজিটাল হেলথ মিশন হলো—ভারত সরকারের একটি উদ্যোগ, যা ডিজিটাল প্রযুক্তির মাধ্যমে দেশের স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থাকে উন্নত করার লক্ষ্যে কাজ করছে। এর মূল উদ্দেশ্য হলো—স্বাস্থ্যসেবার পরিষেবাগুলো ডিজিটালভাবে সংযুক্ত করা এবং সব নাগরিকের জন্য সহজ, দ্রুত এবং কার্যকর স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করা
চিকিৎসকেরা এখনো গুরুত্বপূর্ণ
ঐতিহ্যগত চিকিৎসা নির্ণয়ের প্রক্রিয়াকে চ্যালেঞ্জ করতে শুরু করেছে এআই। তবে ডা. জন বলেন, ভবিষ্যতে এমন একটি পরিস্থিতি কল্পনা করা কঠিন যেখানে এআই ডাক্তার থেকে স্বাধীনভাবে সিদ্ধান্ত নেবে। এআইভিত্তিক টুলগুলো ডাক্তারদের জটিল রোগ নির্ণয়, অনুসন্ধান এবং চিকিৎসা পরিকল্পনা করতে সাহায্য করেছে। তবে, সিদ্ধান্ত নেওয়ার চ্যালেঞ্জ এখনো চিকিৎসকদের ওপর রয়েছে, যেখানে তাকে একাধিক কৌশল সমন্বয় করতে হয়। বিশেষ করে একাধিক রোগে আক্রান্ত রোগীদের ক্ষেত্রে।
মনিপাল হাসপাতালের ডা. দীপক বলেন, এআই কখনোই চিকিৎসকদের জায়গা নিতে পারে না, কারণ একজন ডাক্তার সরাসরি রোগীর সঙ্গে কথা বলে তাদের স্বস্তি এবং নিরাপত্তা দেয়। তবে, এআই ডাক্তারদের দ্রুত এবং আরও সঠিকভাবে রোগ নির্ণয় এবং চিকিৎসা দিতে সাহায্য করতে পারে।
তথ্যসূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া

ইন্টারনেটে ঘাঁটাঘাঁটি করে নিজেদের রোগ নির্ণয়ের চেষ্টা করেন অনেকেই। এই ধরনের সাইবারকন্ড্রিয়াক ব্যক্তিরা তাঁদের শারীরিক বা মানসিক অবস্থার সঙ্গে সম্পর্কিত যেকোনো উপসর্গ বা অসুস্থতার তথ্য জানার জন্য ইন্টারনেটে তথ্য খুঁজে থাকেন, যা তাঁদের উদ্বেগ বা অস্থিরতা আরও বাড়িয়ে তোলে। তবে এখন সাইবারকন্ড্রিয়াক এবং আত্ম-চিকিৎসা (যাঁরা চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়াই ওষুধ বা চিকিৎসা পদ্ধতি গ্রহণ করেন) নেওয়া ব্যক্তিদের এই উদ্বেগ কমাতে সাহায্য করবে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার (এআই) প্রযুক্তি। কারণ, ভারতের বেঙ্গালুরুর একটি শীর্ষস্থানীয় হাসপাতাল কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা এআই চ্যাটবট চালু করতে যাচ্ছে, যা ব্যক্তিগত যত্নের জন্য বিশেষভাবে ডিজাইন করা হবে।
ভারতের শীর্ষস্থানীয় হাসপাতাল চেইন গ্রুপ বলেছে, রোগীর চিকিৎসা-সংক্রান্ত তথ্যের জন্য ইন্টারনেট অনুসন্ধানের প্রয়োজনীয়তা দূর করবে ইন্টারঅ্যাকটিভ চ্যাটবটটি। নির্দিষ্ট রোগীর তথ্যের সঙ্গে কাজ করতে, দ্রুত রোগ নির্ণয়ে করতে, সঠিক উপসর্গ চিহ্নিত করতে এবং স্বাস্থ্যসেবা সংস্থার বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে তাৎক্ষণিকভাবে যোগাযোগ করার জন্য চ্যাটবটটি ডিজাইন করা হয়েছে।
গ্রুপটি আরও বলছে, ‘এটি অনলাইনে তথ্য খোঁজা এবং আত্ম-চিকিৎসার প্রয়োজনীয়তা বাদ দিয়ে দ্রুত চিকিৎসা পরামর্শ প্রদান করবে এবং সময়মতো পরামর্শের মাধ্যমে উন্নত চিকিৎসা নিশ্চিত করবে।’
অপর দিকে আরেকটি হাসপাতাল চেইন এমন একটি অ্যাপ চালু করার পরিকল্পনা করছে, যা এআই প্রযুক্তি ব্যবহার করে জীবনধারা সম্পর্কিত রোগ নির্ণয়ে সাহায্য করবে। যেমন—ডায়াবেটিস, স্থূলতা, শারীরিক অকার্যকারিতা, অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস, উচ্চ রক্তচাপ ইত্যাদি। রোগীদের স্বাস্থ্য ট্র্যাক করতে আইওটি (ইন্টারনেট অব থিংক) ডিভাইস ব্যবহার করা হবে। যেমন—স্মার্টওয়াচ বা রক্তে শর্করা পর্যবেক্ষণমূলক ডিভাইস।
হাসপাতাল চেইনটি বলেছে, ‘অ্যাপটি নিয়মিতভাবে রোগীর খাদ্যাভ্যাস, ব্যায়াম, পানি এবং ওষুধ সেবনের মতো স্বাস্থ্য-সংক্রান্ত ডেটা আপডেট করবে। এআইয়ের সাহায্যে এই ডেটাগুলো পর্যবেক্ষণ করা হবে, যাতে রোগী তার স্বাস্থ্য-সম্পর্কিত তথ্য আরও ভালোভাবে আরও জানতে পারে। আর রোগীদের নির্ধারিত দৈনিক রুটিন তারা অনুসরণ করছে কি না, তা পর্যবেক্ষণ করবেন চিকিৎসকেরা।
‘যদিও আইওটি সক্ষম স্বাস্থ্যসেবা ডিভাইসগুলো কিছুদিন ধরেই রয়েছে, তবে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রযুক্তির উত্থান হাসপাতালগুলোকে এই প্রযুক্তির ব্যাপকভাবে গ্রহণের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। তবে, সেন্ট জনস ন্যাশনাল একাডেমি অব হেলথ সায়েন্সেসের ফ্যামিলি মেডিসিনের সহকারী অধ্যাপক ডা. জন বলেন, রোগীদের মধ্যে এআইভিত্তিক চিকিৎসার ধারণা ব্যক্তিগত অনুভূতির ওপর নির্ভরশীল। অনেক রোগী বিশেষ করে তরুণ প্রজন্ম এবং প্রযুক্তি-পছন্দকারীরা এআইয়ের সুবিধাগুলো সাদরে গ্রহণ করবেন। তবে, চিকিৎসায় এআইয়ের অন্তর্ভুক্তিকে সন্দেহের দৃষ্টি দেখবেন কিছু রোগী এবং তারা প্রচলিত চিকিৎসা পদ্ধতি পছন্দ করবেন। প্রযুক্তি ব্যবহারে অভ্যস্ততার অভাবে কিছু মানুষ এআইয়ের ওপর নির্ভর করতে পারবে না।
অপেক্ষার সময় কমানো
বড় হাসপাতালগুলোতে রোগীর সংখ্যা বেশি হলে, বহির্বিভাগে বা হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র পেতে বা ওষুধের দোকানের কাউন্টারে দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করতে হয়। এ ক্ষেত্রে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) ব্যবহারের মাধ্যমে প্রক্রিয়াগুলো অনেক সহজ এবং দ্রুত করা সম্ভব। এই লক্ষ্যেই কাজ করছে ভারতের সেন্ট জনস হাসপাতাল, যেখানে তারা হাসপাতালের রোগীর ডেটা সংগ্রহ, বিলিং, কাজের ধারা এবং এমনকি নিয়োগ ব্যবস্থাও এআই মাধ্যমে পরিচালনা করছে।
বর্তমানে মানুষ এমন এক সংস্কৃতিতে অভ্যস্ত হয়ে পড়েছে, যেখানে তারা প্রায় সবকিছুই হাতের কাছে পেয়ে যায়। উদাহরণস্বরূপ, ভারতের নয়ডায় একটি ১০ মিনিটে অ্যাম্বুলেন্স সেবা চালু হয়েছে। ভবিষ্যতে, যাদের জরুরি চিকিৎসাসেবার প্রয়োজন নেই, তাদের সরাসরি অ্যাপয়েন্টমেন্ট নিয়ে সময় নষ্ট করতে হবে না, বরং সহজ পদ্ধতিতে চিকিৎসা নিতে পারবেন।
কাবেরী গ্রুপ অব হসপিটালসের প্রতিষ্ঠাতা ও নির্বাহী চেয়ারম্যান ডা. এস চন্দ্রকুমার, এমডি বলেন, ‘আমরা এমন রোগীদের জন্য প্রস্তুত হতে চাই। আমরা এআই ব্যবহার করে রোগ নির্ণয় করতে চাই। রোগী ডেটার মাধ্যমে প্রয়োজনীয় এআই প্রযুক্তি তৈরি করতে চাই।’ উল্লেখ্য, ভারতের প্রথম এআই-চালিত লাইফস্টাইল বা জীবনধারা সম্পর্কিত রোগ বিভাগ প্রতিষ্ঠা করেছে হাসপাতালটি।
অস্ত্রোপচারে এআই
অস্ত্রোপচারের ক্ষেত্রে মূল্যবান টুল হিসেবে ব্যবহৃত হতে পারে এআই। বর্তমানের বিশ্ব রোবোটিক সার্জারির পর্যায়ে পৌঁছেছে। সার্জিকাল প্রক্রিয়ায় বিভিন্ন বিষয় অত্যন্ত সঠিকভাবে পরিমাপ করতে সাহায্য করে এআই। উদাহরণস্বরূপ, জয়েন্ট রিপ্লেসমেন্টের আগে, এআইয়ের ত্রিমাত্রিক প্রযুক্তি চিকিৎসকদের সঠিকভাবে কৃত্রিম অঙ্গের আকার এবং তার অবস্থান নির্ধারণে সাহায্য করে। এমনকি কতটুকু হাড় কাটা হবে তা সঠিকভাবে পরিমাপ করে এই প্রযুক্তি, যাতে জয়েন্টগুলোর ভারসাম্য থাকে। প্রচলিত রিপ্লেসমেন্ট সার্জারিতে এই পরিমাপগুলো সাধারণত নির্দিষ্ট থাকে। ডিজিটাল প্রতিকৃতি ও সার্জারির পরিস্থিতির ভার্চুয়াল মডেল তৈরি অস্ত্রোপচারের পূর্বপ্রস্তুতিতে সাহায্য করতে পারে এআই।
এ ছাড়া ইমপ্লান্ট নির্বাচন, অস্ত্রোপচার ফলাফল পূর্বানুমান এবং অস্ত্রোপচারের পর রোগীর সুস্থতার প্রক্রিয়া পর্যবেক্ষণ করতেও এআই সাহায্য করে। মনিপাল হাসপাতাল এআই ব্যবহার করে রোগীর তথ্য বিশ্লেষণ করে। আর কাওয়েরি হাসপাতাল ‘দ্য ভিঞ্চি’ এবং ‘মাকো ২.০’ এআই মডেল ব্যবহার করে অস্ত্রোপচারের ক্ষেত্রে রোবোটিক সিস্টেমের সঠিকতা বাড়াচ্ছে। সেন্ট জনস হাসপাতালেও এআই দিয়ে পরিচালিত রোবোটিক অস্ত্রোপচার করছে।
এআই ডায়াগনোসিস
মানুষের চোখে না দেখা সূক্ষ্ম অসংগতিগুলো চিহ্নিত করতে সক্ষম এআই অ্যালগরিদমগুলো, যা ডায়াগনোসিসে অত্যন্ত কার্যকরী প্রমাণিত হচ্ছে। কিছু ডায়াগনস্টিক সেন্টারগুলো সিটি স্ক্যান, এমআরআই ইত্যাদি রেডিওলজিক্যাল পরীক্ষার সঠিক ব্যাখ্যা এবং ডায়াগনোসিস দিতে এআই ব্যবহার শুরু করেছে।
ডা. জন বলেন, ‘গত তিন বছরে বেঙ্গালুরুর অনেক হাসপাতাল এআইয়ের সাহায্যে রোগীর সঙ্গে যোগাযোগব্যবস্থা চালু করেছে, যেখানে রোগীর ব্যক্তিগত তথ্য, উপসর্গ, রোগের ইতিহাস এআই-চ্যাটবটের মাধ্যমে নেওয়া হয়। এ ছাড়া বেশ কিছু স্টার্টআপ এআই-ভিত্তিক সেবা প্রদান করছে, যেমন—প্রাথমিক অবস্থায় রোগ শনাক্তকরণ, রক্তের ছবি বিশ্লেষণ, ক্যানসার স্ক্রিনিং, জেনেটিক স্ক্রিনিং, টেলিরেডিওলজি এবং রোগীদের জন্য ব্যক্তিগতকৃত স্বাস্থ্যসেবা।
মনিপাল হাসপাতালের ডা. দীপক দুবে বলেন, ‘কিছু স্টার্টআপ এআই-ইন্টিগ্রেটেড সফটওয়্যার তৈরি করেছে যা কার্ডিওলজিস্টদের এবং চিকিৎসকদের ইসিজি ট্রেসিং আরও সঠিকভাবে বিশ্লেষণ করতে সাহায্য করে।
প্রয়োজনীয় ডেটার অভাব
সঠিক রোগ নির্ণয় এবং জরুরি সতর্কতার জন্য বড় পরিমাণ ডেটার প্রয়োজন এআই সিস্টেমগুলোর। এ বিষয়ে ডা. সুনীল বলেন, ‘বর্তমানে, স্বাস্থ্য রেকর্ডের জন্য কোনো কেন্দ্রীভূত ডেটাবেইস নেই। ভারতে স্বাস্থ্য তথ্য খণ্ডিত, ছড়ানো ও প্রায়ই অসম্পূর্ণ এবং স্বাস্থ্যসেবা ক্ষেত্রে একটি কার্যকরী এআই সিস্টেম তৈরি করতে দীর্ঘমেয়াদি ডেটা প্রয়োজন। এ সমস্যাগুলো তৈরি হয় কারণ অনেক স্বাস্থ্যসেবা প্রদানকারী অনুমোদিত নয় বা তারা অ-প্রাতিষ্ঠানিক চিকিৎসক।
ডা. চন্দ্রকুমার বলেন, এই ক্ষেত্রে আরেকটি বড় সমস্যা হল ডিজিটালাইজেশনের অভাব। এখনো অনেক হাসপাতাল এবং চিকিৎসক তাঁদের কাজের জন্য কম্পিউটার ব্যবহার করে না। এর ফলে ডেটার অভাব দেখা যায়, যা এআই অ্যালগরিদমের প্রশিক্ষণে প্রভাব ফেলে। নির্দিষ্ট মান দ্বন্দ্ব মেনে চলার অভাবও একটি বড় চ্যালেঞ্জ। ভারতের স্বাস্থ্য তথ্যকে বৈশ্বিক স্বাস্থ্য তথ্যপ্রযুক্তির মান অনুসরণ করতে হবে। তবে আশার কথা হলো যে আয়ুষ্মান ভারত ডিজিটাল হেলথ মিশন এর মাধ্যমে আমরা এই সমস্যাগুলো সমাধানে কিছু গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নিয়েছি।
উল্লেখ্য, আয়ুষ্মান ভারত ডিজিটাল হেলথ মিশন হলো—ভারত সরকারের একটি উদ্যোগ, যা ডিজিটাল প্রযুক্তির মাধ্যমে দেশের স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থাকে উন্নত করার লক্ষ্যে কাজ করছে। এর মূল উদ্দেশ্য হলো—স্বাস্থ্যসেবার পরিষেবাগুলো ডিজিটালভাবে সংযুক্ত করা এবং সব নাগরিকের জন্য সহজ, দ্রুত এবং কার্যকর স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করা
চিকিৎসকেরা এখনো গুরুত্বপূর্ণ
ঐতিহ্যগত চিকিৎসা নির্ণয়ের প্রক্রিয়াকে চ্যালেঞ্জ করতে শুরু করেছে এআই। তবে ডা. জন বলেন, ভবিষ্যতে এমন একটি পরিস্থিতি কল্পনা করা কঠিন যেখানে এআই ডাক্তার থেকে স্বাধীনভাবে সিদ্ধান্ত নেবে। এআইভিত্তিক টুলগুলো ডাক্তারদের জটিল রোগ নির্ণয়, অনুসন্ধান এবং চিকিৎসা পরিকল্পনা করতে সাহায্য করেছে। তবে, সিদ্ধান্ত নেওয়ার চ্যালেঞ্জ এখনো চিকিৎসকদের ওপর রয়েছে, যেখানে তাকে একাধিক কৌশল সমন্বয় করতে হয়। বিশেষ করে একাধিক রোগে আক্রান্ত রোগীদের ক্ষেত্রে।
মনিপাল হাসপাতালের ডা. দীপক বলেন, এআই কখনোই চিকিৎসকদের জায়গা নিতে পারে না, কারণ একজন ডাক্তার সরাসরি রোগীর সঙ্গে কথা বলে তাদের স্বস্তি এবং নিরাপত্তা দেয়। তবে, এআই ডাক্তারদের দ্রুত এবং আরও সঠিকভাবে রোগ নির্ণয় এবং চিকিৎসা দিতে সাহায্য করতে পারে।
তথ্যসূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া

ইন্টারনেটে ঘাঁটাঘাঁটি করে নিজেদের রোগ নির্ণয়ের চেষ্টা করেন অনেকেই। এই ধরনের সাইবারকন্ড্রিয়াক ব্যক্তিরা তাঁদের শারীরিক বা মানসিক অবস্থার সঙ্গে সম্পর্কিত যেকোনো উপসর্গ বা অসুস্থতার তথ্য জানার জন্য ইন্টারনেটে তথ্য খুঁজে থাকেন, যা তাঁদের উদ্বেগ বা অস্থিরতা আরও বাড়িয়ে তোলে। তবে এখন সাইবারকন্ড্রিয়াক এবং আত্ম-চিকিৎসা (যাঁরা চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়াই ওষুধ বা চিকিৎসা পদ্ধতি গ্রহণ করেন) নেওয়া ব্যক্তিদের এই উদ্বেগ কমাতে সাহায্য করবে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার (এআই) প্রযুক্তি। কারণ, ভারতের বেঙ্গালুরুর একটি শীর্ষস্থানীয় হাসপাতাল কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা এআই চ্যাটবট চালু করতে যাচ্ছে, যা ব্যক্তিগত যত্নের জন্য বিশেষভাবে ডিজাইন করা হবে।
ভারতের শীর্ষস্থানীয় হাসপাতাল চেইন গ্রুপ বলেছে, রোগীর চিকিৎসা-সংক্রান্ত তথ্যের জন্য ইন্টারনেট অনুসন্ধানের প্রয়োজনীয়তা দূর করবে ইন্টারঅ্যাকটিভ চ্যাটবটটি। নির্দিষ্ট রোগীর তথ্যের সঙ্গে কাজ করতে, দ্রুত রোগ নির্ণয়ে করতে, সঠিক উপসর্গ চিহ্নিত করতে এবং স্বাস্থ্যসেবা সংস্থার বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে তাৎক্ষণিকভাবে যোগাযোগ করার জন্য চ্যাটবটটি ডিজাইন করা হয়েছে।
গ্রুপটি আরও বলছে, ‘এটি অনলাইনে তথ্য খোঁজা এবং আত্ম-চিকিৎসার প্রয়োজনীয়তা বাদ দিয়ে দ্রুত চিকিৎসা পরামর্শ প্রদান করবে এবং সময়মতো পরামর্শের মাধ্যমে উন্নত চিকিৎসা নিশ্চিত করবে।’
অপর দিকে আরেকটি হাসপাতাল চেইন এমন একটি অ্যাপ চালু করার পরিকল্পনা করছে, যা এআই প্রযুক্তি ব্যবহার করে জীবনধারা সম্পর্কিত রোগ নির্ণয়ে সাহায্য করবে। যেমন—ডায়াবেটিস, স্থূলতা, শারীরিক অকার্যকারিতা, অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস, উচ্চ রক্তচাপ ইত্যাদি। রোগীদের স্বাস্থ্য ট্র্যাক করতে আইওটি (ইন্টারনেট অব থিংক) ডিভাইস ব্যবহার করা হবে। যেমন—স্মার্টওয়াচ বা রক্তে শর্করা পর্যবেক্ষণমূলক ডিভাইস।
হাসপাতাল চেইনটি বলেছে, ‘অ্যাপটি নিয়মিতভাবে রোগীর খাদ্যাভ্যাস, ব্যায়াম, পানি এবং ওষুধ সেবনের মতো স্বাস্থ্য-সংক্রান্ত ডেটা আপডেট করবে। এআইয়ের সাহায্যে এই ডেটাগুলো পর্যবেক্ষণ করা হবে, যাতে রোগী তার স্বাস্থ্য-সম্পর্কিত তথ্য আরও ভালোভাবে আরও জানতে পারে। আর রোগীদের নির্ধারিত দৈনিক রুটিন তারা অনুসরণ করছে কি না, তা পর্যবেক্ষণ করবেন চিকিৎসকেরা।
‘যদিও আইওটি সক্ষম স্বাস্থ্যসেবা ডিভাইসগুলো কিছুদিন ধরেই রয়েছে, তবে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রযুক্তির উত্থান হাসপাতালগুলোকে এই প্রযুক্তির ব্যাপকভাবে গ্রহণের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। তবে, সেন্ট জনস ন্যাশনাল একাডেমি অব হেলথ সায়েন্সেসের ফ্যামিলি মেডিসিনের সহকারী অধ্যাপক ডা. জন বলেন, রোগীদের মধ্যে এআইভিত্তিক চিকিৎসার ধারণা ব্যক্তিগত অনুভূতির ওপর নির্ভরশীল। অনেক রোগী বিশেষ করে তরুণ প্রজন্ম এবং প্রযুক্তি-পছন্দকারীরা এআইয়ের সুবিধাগুলো সাদরে গ্রহণ করবেন। তবে, চিকিৎসায় এআইয়ের অন্তর্ভুক্তিকে সন্দেহের দৃষ্টি দেখবেন কিছু রোগী এবং তারা প্রচলিত চিকিৎসা পদ্ধতি পছন্দ করবেন। প্রযুক্তি ব্যবহারে অভ্যস্ততার অভাবে কিছু মানুষ এআইয়ের ওপর নির্ভর করতে পারবে না।
অপেক্ষার সময় কমানো
বড় হাসপাতালগুলোতে রোগীর সংখ্যা বেশি হলে, বহির্বিভাগে বা হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র পেতে বা ওষুধের দোকানের কাউন্টারে দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করতে হয়। এ ক্ষেত্রে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) ব্যবহারের মাধ্যমে প্রক্রিয়াগুলো অনেক সহজ এবং দ্রুত করা সম্ভব। এই লক্ষ্যেই কাজ করছে ভারতের সেন্ট জনস হাসপাতাল, যেখানে তারা হাসপাতালের রোগীর ডেটা সংগ্রহ, বিলিং, কাজের ধারা এবং এমনকি নিয়োগ ব্যবস্থাও এআই মাধ্যমে পরিচালনা করছে।
বর্তমানে মানুষ এমন এক সংস্কৃতিতে অভ্যস্ত হয়ে পড়েছে, যেখানে তারা প্রায় সবকিছুই হাতের কাছে পেয়ে যায়। উদাহরণস্বরূপ, ভারতের নয়ডায় একটি ১০ মিনিটে অ্যাম্বুলেন্স সেবা চালু হয়েছে। ভবিষ্যতে, যাদের জরুরি চিকিৎসাসেবার প্রয়োজন নেই, তাদের সরাসরি অ্যাপয়েন্টমেন্ট নিয়ে সময় নষ্ট করতে হবে না, বরং সহজ পদ্ধতিতে চিকিৎসা নিতে পারবেন।
কাবেরী গ্রুপ অব হসপিটালসের প্রতিষ্ঠাতা ও নির্বাহী চেয়ারম্যান ডা. এস চন্দ্রকুমার, এমডি বলেন, ‘আমরা এমন রোগীদের জন্য প্রস্তুত হতে চাই। আমরা এআই ব্যবহার করে রোগ নির্ণয় করতে চাই। রোগী ডেটার মাধ্যমে প্রয়োজনীয় এআই প্রযুক্তি তৈরি করতে চাই।’ উল্লেখ্য, ভারতের প্রথম এআই-চালিত লাইফস্টাইল বা জীবনধারা সম্পর্কিত রোগ বিভাগ প্রতিষ্ঠা করেছে হাসপাতালটি।
অস্ত্রোপচারে এআই
অস্ত্রোপচারের ক্ষেত্রে মূল্যবান টুল হিসেবে ব্যবহৃত হতে পারে এআই। বর্তমানের বিশ্ব রোবোটিক সার্জারির পর্যায়ে পৌঁছেছে। সার্জিকাল প্রক্রিয়ায় বিভিন্ন বিষয় অত্যন্ত সঠিকভাবে পরিমাপ করতে সাহায্য করে এআই। উদাহরণস্বরূপ, জয়েন্ট রিপ্লেসমেন্টের আগে, এআইয়ের ত্রিমাত্রিক প্রযুক্তি চিকিৎসকদের সঠিকভাবে কৃত্রিম অঙ্গের আকার এবং তার অবস্থান নির্ধারণে সাহায্য করে। এমনকি কতটুকু হাড় কাটা হবে তা সঠিকভাবে পরিমাপ করে এই প্রযুক্তি, যাতে জয়েন্টগুলোর ভারসাম্য থাকে। প্রচলিত রিপ্লেসমেন্ট সার্জারিতে এই পরিমাপগুলো সাধারণত নির্দিষ্ট থাকে। ডিজিটাল প্রতিকৃতি ও সার্জারির পরিস্থিতির ভার্চুয়াল মডেল তৈরি অস্ত্রোপচারের পূর্বপ্রস্তুতিতে সাহায্য করতে পারে এআই।
এ ছাড়া ইমপ্লান্ট নির্বাচন, অস্ত্রোপচার ফলাফল পূর্বানুমান এবং অস্ত্রোপচারের পর রোগীর সুস্থতার প্রক্রিয়া পর্যবেক্ষণ করতেও এআই সাহায্য করে। মনিপাল হাসপাতাল এআই ব্যবহার করে রোগীর তথ্য বিশ্লেষণ করে। আর কাওয়েরি হাসপাতাল ‘দ্য ভিঞ্চি’ এবং ‘মাকো ২.০’ এআই মডেল ব্যবহার করে অস্ত্রোপচারের ক্ষেত্রে রোবোটিক সিস্টেমের সঠিকতা বাড়াচ্ছে। সেন্ট জনস হাসপাতালেও এআই দিয়ে পরিচালিত রোবোটিক অস্ত্রোপচার করছে।
এআই ডায়াগনোসিস
মানুষের চোখে না দেখা সূক্ষ্ম অসংগতিগুলো চিহ্নিত করতে সক্ষম এআই অ্যালগরিদমগুলো, যা ডায়াগনোসিসে অত্যন্ত কার্যকরী প্রমাণিত হচ্ছে। কিছু ডায়াগনস্টিক সেন্টারগুলো সিটি স্ক্যান, এমআরআই ইত্যাদি রেডিওলজিক্যাল পরীক্ষার সঠিক ব্যাখ্যা এবং ডায়াগনোসিস দিতে এআই ব্যবহার শুরু করেছে।
ডা. জন বলেন, ‘গত তিন বছরে বেঙ্গালুরুর অনেক হাসপাতাল এআইয়ের সাহায্যে রোগীর সঙ্গে যোগাযোগব্যবস্থা চালু করেছে, যেখানে রোগীর ব্যক্তিগত তথ্য, উপসর্গ, রোগের ইতিহাস এআই-চ্যাটবটের মাধ্যমে নেওয়া হয়। এ ছাড়া বেশ কিছু স্টার্টআপ এআই-ভিত্তিক সেবা প্রদান করছে, যেমন—প্রাথমিক অবস্থায় রোগ শনাক্তকরণ, রক্তের ছবি বিশ্লেষণ, ক্যানসার স্ক্রিনিং, জেনেটিক স্ক্রিনিং, টেলিরেডিওলজি এবং রোগীদের জন্য ব্যক্তিগতকৃত স্বাস্থ্যসেবা।
মনিপাল হাসপাতালের ডা. দীপক দুবে বলেন, ‘কিছু স্টার্টআপ এআই-ইন্টিগ্রেটেড সফটওয়্যার তৈরি করেছে যা কার্ডিওলজিস্টদের এবং চিকিৎসকদের ইসিজি ট্রেসিং আরও সঠিকভাবে বিশ্লেষণ করতে সাহায্য করে।
প্রয়োজনীয় ডেটার অভাব
সঠিক রোগ নির্ণয় এবং জরুরি সতর্কতার জন্য বড় পরিমাণ ডেটার প্রয়োজন এআই সিস্টেমগুলোর। এ বিষয়ে ডা. সুনীল বলেন, ‘বর্তমানে, স্বাস্থ্য রেকর্ডের জন্য কোনো কেন্দ্রীভূত ডেটাবেইস নেই। ভারতে স্বাস্থ্য তথ্য খণ্ডিত, ছড়ানো ও প্রায়ই অসম্পূর্ণ এবং স্বাস্থ্যসেবা ক্ষেত্রে একটি কার্যকরী এআই সিস্টেম তৈরি করতে দীর্ঘমেয়াদি ডেটা প্রয়োজন। এ সমস্যাগুলো তৈরি হয় কারণ অনেক স্বাস্থ্যসেবা প্রদানকারী অনুমোদিত নয় বা তারা অ-প্রাতিষ্ঠানিক চিকিৎসক।
ডা. চন্দ্রকুমার বলেন, এই ক্ষেত্রে আরেকটি বড় সমস্যা হল ডিজিটালাইজেশনের অভাব। এখনো অনেক হাসপাতাল এবং চিকিৎসক তাঁদের কাজের জন্য কম্পিউটার ব্যবহার করে না। এর ফলে ডেটার অভাব দেখা যায়, যা এআই অ্যালগরিদমের প্রশিক্ষণে প্রভাব ফেলে। নির্দিষ্ট মান দ্বন্দ্ব মেনে চলার অভাবও একটি বড় চ্যালেঞ্জ। ভারতের স্বাস্থ্য তথ্যকে বৈশ্বিক স্বাস্থ্য তথ্যপ্রযুক্তির মান অনুসরণ করতে হবে। তবে আশার কথা হলো যে আয়ুষ্মান ভারত ডিজিটাল হেলথ মিশন এর মাধ্যমে আমরা এই সমস্যাগুলো সমাধানে কিছু গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নিয়েছি।
উল্লেখ্য, আয়ুষ্মান ভারত ডিজিটাল হেলথ মিশন হলো—ভারত সরকারের একটি উদ্যোগ, যা ডিজিটাল প্রযুক্তির মাধ্যমে দেশের স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থাকে উন্নত করার লক্ষ্যে কাজ করছে। এর মূল উদ্দেশ্য হলো—স্বাস্থ্যসেবার পরিষেবাগুলো ডিজিটালভাবে সংযুক্ত করা এবং সব নাগরিকের জন্য সহজ, দ্রুত এবং কার্যকর স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করা
চিকিৎসকেরা এখনো গুরুত্বপূর্ণ
ঐতিহ্যগত চিকিৎসা নির্ণয়ের প্রক্রিয়াকে চ্যালেঞ্জ করতে শুরু করেছে এআই। তবে ডা. জন বলেন, ভবিষ্যতে এমন একটি পরিস্থিতি কল্পনা করা কঠিন যেখানে এআই ডাক্তার থেকে স্বাধীনভাবে সিদ্ধান্ত নেবে। এআইভিত্তিক টুলগুলো ডাক্তারদের জটিল রোগ নির্ণয়, অনুসন্ধান এবং চিকিৎসা পরিকল্পনা করতে সাহায্য করেছে। তবে, সিদ্ধান্ত নেওয়ার চ্যালেঞ্জ এখনো চিকিৎসকদের ওপর রয়েছে, যেখানে তাকে একাধিক কৌশল সমন্বয় করতে হয়। বিশেষ করে একাধিক রোগে আক্রান্ত রোগীদের ক্ষেত্রে।
মনিপাল হাসপাতালের ডা. দীপক বলেন, এআই কখনোই চিকিৎসকদের জায়গা নিতে পারে না, কারণ একজন ডাক্তার সরাসরি রোগীর সঙ্গে কথা বলে তাদের স্বস্তি এবং নিরাপত্তা দেয়। তবে, এআই ডাক্তারদের দ্রুত এবং আরও সঠিকভাবে রোগ নির্ণয় এবং চিকিৎসা দিতে সাহায্য করতে পারে।
তথ্যসূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া

ইন্টারনেটে ঘাঁটাঘাঁটি করে নিজেদের রোগ নির্ণয়ের চেষ্টা করেন অনেকেই। এই ধরনের সাইবারকন্ড্রিয়াক ব্যক্তিরা তাঁদের শারীরিক বা মানসিক অবস্থার সঙ্গে সম্পর্কিত যেকোনো উপসর্গ বা অসুস্থতার তথ্য জানার জন্য ইন্টারনেটে তথ্য খুঁজে থাকেন, যা তাঁদের উদ্বেগ বা অস্থিরতা আরও বাড়িয়ে তোলে। তবে এখন সাইবারকন্ড্রিয়াক এবং আত্ম-চিকিৎসা (যাঁরা চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়াই ওষুধ বা চিকিৎসা পদ্ধতি গ্রহণ করেন) নেওয়া ব্যক্তিদের এই উদ্বেগ কমাতে সাহায্য করবে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার (এআই) প্রযুক্তি। কারণ, ভারতের বেঙ্গালুরুর একটি শীর্ষস্থানীয় হাসপাতাল কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা এআই চ্যাটবট চালু করতে যাচ্ছে, যা ব্যক্তিগত যত্নের জন্য বিশেষভাবে ডিজাইন করা হবে।
ভারতের শীর্ষস্থানীয় হাসপাতাল চেইন গ্রুপ বলেছে, রোগীর চিকিৎসা-সংক্রান্ত তথ্যের জন্য ইন্টারনেট অনুসন্ধানের প্রয়োজনীয়তা দূর করবে ইন্টারঅ্যাকটিভ চ্যাটবটটি। নির্দিষ্ট রোগীর তথ্যের সঙ্গে কাজ করতে, দ্রুত রোগ নির্ণয়ে করতে, সঠিক উপসর্গ চিহ্নিত করতে এবং স্বাস্থ্যসেবা সংস্থার বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে তাৎক্ষণিকভাবে যোগাযোগ করার জন্য চ্যাটবটটি ডিজাইন করা হয়েছে।
গ্রুপটি আরও বলছে, ‘এটি অনলাইনে তথ্য খোঁজা এবং আত্ম-চিকিৎসার প্রয়োজনীয়তা বাদ দিয়ে দ্রুত চিকিৎসা পরামর্শ প্রদান করবে এবং সময়মতো পরামর্শের মাধ্যমে উন্নত চিকিৎসা নিশ্চিত করবে।’
অপর দিকে আরেকটি হাসপাতাল চেইন এমন একটি অ্যাপ চালু করার পরিকল্পনা করছে, যা এআই প্রযুক্তি ব্যবহার করে জীবনধারা সম্পর্কিত রোগ নির্ণয়ে সাহায্য করবে। যেমন—ডায়াবেটিস, স্থূলতা, শারীরিক অকার্যকারিতা, অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস, উচ্চ রক্তচাপ ইত্যাদি। রোগীদের স্বাস্থ্য ট্র্যাক করতে আইওটি (ইন্টারনেট অব থিংক) ডিভাইস ব্যবহার করা হবে। যেমন—স্মার্টওয়াচ বা রক্তে শর্করা পর্যবেক্ষণমূলক ডিভাইস।
হাসপাতাল চেইনটি বলেছে, ‘অ্যাপটি নিয়মিতভাবে রোগীর খাদ্যাভ্যাস, ব্যায়াম, পানি এবং ওষুধ সেবনের মতো স্বাস্থ্য-সংক্রান্ত ডেটা আপডেট করবে। এআইয়ের সাহায্যে এই ডেটাগুলো পর্যবেক্ষণ করা হবে, যাতে রোগী তার স্বাস্থ্য-সম্পর্কিত তথ্য আরও ভালোভাবে আরও জানতে পারে। আর রোগীদের নির্ধারিত দৈনিক রুটিন তারা অনুসরণ করছে কি না, তা পর্যবেক্ষণ করবেন চিকিৎসকেরা।
‘যদিও আইওটি সক্ষম স্বাস্থ্যসেবা ডিভাইসগুলো কিছুদিন ধরেই রয়েছে, তবে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রযুক্তির উত্থান হাসপাতালগুলোকে এই প্রযুক্তির ব্যাপকভাবে গ্রহণের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। তবে, সেন্ট জনস ন্যাশনাল একাডেমি অব হেলথ সায়েন্সেসের ফ্যামিলি মেডিসিনের সহকারী অধ্যাপক ডা. জন বলেন, রোগীদের মধ্যে এআইভিত্তিক চিকিৎসার ধারণা ব্যক্তিগত অনুভূতির ওপর নির্ভরশীল। অনেক রোগী বিশেষ করে তরুণ প্রজন্ম এবং প্রযুক্তি-পছন্দকারীরা এআইয়ের সুবিধাগুলো সাদরে গ্রহণ করবেন। তবে, চিকিৎসায় এআইয়ের অন্তর্ভুক্তিকে সন্দেহের দৃষ্টি দেখবেন কিছু রোগী এবং তারা প্রচলিত চিকিৎসা পদ্ধতি পছন্দ করবেন। প্রযুক্তি ব্যবহারে অভ্যস্ততার অভাবে কিছু মানুষ এআইয়ের ওপর নির্ভর করতে পারবে না।
অপেক্ষার সময় কমানো
বড় হাসপাতালগুলোতে রোগীর সংখ্যা বেশি হলে, বহির্বিভাগে বা হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র পেতে বা ওষুধের দোকানের কাউন্টারে দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করতে হয়। এ ক্ষেত্রে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) ব্যবহারের মাধ্যমে প্রক্রিয়াগুলো অনেক সহজ এবং দ্রুত করা সম্ভব। এই লক্ষ্যেই কাজ করছে ভারতের সেন্ট জনস হাসপাতাল, যেখানে তারা হাসপাতালের রোগীর ডেটা সংগ্রহ, বিলিং, কাজের ধারা এবং এমনকি নিয়োগ ব্যবস্থাও এআই মাধ্যমে পরিচালনা করছে।
বর্তমানে মানুষ এমন এক সংস্কৃতিতে অভ্যস্ত হয়ে পড়েছে, যেখানে তারা প্রায় সবকিছুই হাতের কাছে পেয়ে যায়। উদাহরণস্বরূপ, ভারতের নয়ডায় একটি ১০ মিনিটে অ্যাম্বুলেন্স সেবা চালু হয়েছে। ভবিষ্যতে, যাদের জরুরি চিকিৎসাসেবার প্রয়োজন নেই, তাদের সরাসরি অ্যাপয়েন্টমেন্ট নিয়ে সময় নষ্ট করতে হবে না, বরং সহজ পদ্ধতিতে চিকিৎসা নিতে পারবেন।
কাবেরী গ্রুপ অব হসপিটালসের প্রতিষ্ঠাতা ও নির্বাহী চেয়ারম্যান ডা. এস চন্দ্রকুমার, এমডি বলেন, ‘আমরা এমন রোগীদের জন্য প্রস্তুত হতে চাই। আমরা এআই ব্যবহার করে রোগ নির্ণয় করতে চাই। রোগী ডেটার মাধ্যমে প্রয়োজনীয় এআই প্রযুক্তি তৈরি করতে চাই।’ উল্লেখ্য, ভারতের প্রথম এআই-চালিত লাইফস্টাইল বা জীবনধারা সম্পর্কিত রোগ বিভাগ প্রতিষ্ঠা করেছে হাসপাতালটি।
অস্ত্রোপচারে এআই
অস্ত্রোপচারের ক্ষেত্রে মূল্যবান টুল হিসেবে ব্যবহৃত হতে পারে এআই। বর্তমানের বিশ্ব রোবোটিক সার্জারির পর্যায়ে পৌঁছেছে। সার্জিকাল প্রক্রিয়ায় বিভিন্ন বিষয় অত্যন্ত সঠিকভাবে পরিমাপ করতে সাহায্য করে এআই। উদাহরণস্বরূপ, জয়েন্ট রিপ্লেসমেন্টের আগে, এআইয়ের ত্রিমাত্রিক প্রযুক্তি চিকিৎসকদের সঠিকভাবে কৃত্রিম অঙ্গের আকার এবং তার অবস্থান নির্ধারণে সাহায্য করে। এমনকি কতটুকু হাড় কাটা হবে তা সঠিকভাবে পরিমাপ করে এই প্রযুক্তি, যাতে জয়েন্টগুলোর ভারসাম্য থাকে। প্রচলিত রিপ্লেসমেন্ট সার্জারিতে এই পরিমাপগুলো সাধারণত নির্দিষ্ট থাকে। ডিজিটাল প্রতিকৃতি ও সার্জারির পরিস্থিতির ভার্চুয়াল মডেল তৈরি অস্ত্রোপচারের পূর্বপ্রস্তুতিতে সাহায্য করতে পারে এআই।
এ ছাড়া ইমপ্লান্ট নির্বাচন, অস্ত্রোপচার ফলাফল পূর্বানুমান এবং অস্ত্রোপচারের পর রোগীর সুস্থতার প্রক্রিয়া পর্যবেক্ষণ করতেও এআই সাহায্য করে। মনিপাল হাসপাতাল এআই ব্যবহার করে রোগীর তথ্য বিশ্লেষণ করে। আর কাওয়েরি হাসপাতাল ‘দ্য ভিঞ্চি’ এবং ‘মাকো ২.০’ এআই মডেল ব্যবহার করে অস্ত্রোপচারের ক্ষেত্রে রোবোটিক সিস্টেমের সঠিকতা বাড়াচ্ছে। সেন্ট জনস হাসপাতালেও এআই দিয়ে পরিচালিত রোবোটিক অস্ত্রোপচার করছে।
এআই ডায়াগনোসিস
মানুষের চোখে না দেখা সূক্ষ্ম অসংগতিগুলো চিহ্নিত করতে সক্ষম এআই অ্যালগরিদমগুলো, যা ডায়াগনোসিসে অত্যন্ত কার্যকরী প্রমাণিত হচ্ছে। কিছু ডায়াগনস্টিক সেন্টারগুলো সিটি স্ক্যান, এমআরআই ইত্যাদি রেডিওলজিক্যাল পরীক্ষার সঠিক ব্যাখ্যা এবং ডায়াগনোসিস দিতে এআই ব্যবহার শুরু করেছে।
ডা. জন বলেন, ‘গত তিন বছরে বেঙ্গালুরুর অনেক হাসপাতাল এআইয়ের সাহায্যে রোগীর সঙ্গে যোগাযোগব্যবস্থা চালু করেছে, যেখানে রোগীর ব্যক্তিগত তথ্য, উপসর্গ, রোগের ইতিহাস এআই-চ্যাটবটের মাধ্যমে নেওয়া হয়। এ ছাড়া বেশ কিছু স্টার্টআপ এআই-ভিত্তিক সেবা প্রদান করছে, যেমন—প্রাথমিক অবস্থায় রোগ শনাক্তকরণ, রক্তের ছবি বিশ্লেষণ, ক্যানসার স্ক্রিনিং, জেনেটিক স্ক্রিনিং, টেলিরেডিওলজি এবং রোগীদের জন্য ব্যক্তিগতকৃত স্বাস্থ্যসেবা।
মনিপাল হাসপাতালের ডা. দীপক দুবে বলেন, ‘কিছু স্টার্টআপ এআই-ইন্টিগ্রেটেড সফটওয়্যার তৈরি করেছে যা কার্ডিওলজিস্টদের এবং চিকিৎসকদের ইসিজি ট্রেসিং আরও সঠিকভাবে বিশ্লেষণ করতে সাহায্য করে।
প্রয়োজনীয় ডেটার অভাব
সঠিক রোগ নির্ণয় এবং জরুরি সতর্কতার জন্য বড় পরিমাণ ডেটার প্রয়োজন এআই সিস্টেমগুলোর। এ বিষয়ে ডা. সুনীল বলেন, ‘বর্তমানে, স্বাস্থ্য রেকর্ডের জন্য কোনো কেন্দ্রীভূত ডেটাবেইস নেই। ভারতে স্বাস্থ্য তথ্য খণ্ডিত, ছড়ানো ও প্রায়ই অসম্পূর্ণ এবং স্বাস্থ্যসেবা ক্ষেত্রে একটি কার্যকরী এআই সিস্টেম তৈরি করতে দীর্ঘমেয়াদি ডেটা প্রয়োজন। এ সমস্যাগুলো তৈরি হয় কারণ অনেক স্বাস্থ্যসেবা প্রদানকারী অনুমোদিত নয় বা তারা অ-প্রাতিষ্ঠানিক চিকিৎসক।
ডা. চন্দ্রকুমার বলেন, এই ক্ষেত্রে আরেকটি বড় সমস্যা হল ডিজিটালাইজেশনের অভাব। এখনো অনেক হাসপাতাল এবং চিকিৎসক তাঁদের কাজের জন্য কম্পিউটার ব্যবহার করে না। এর ফলে ডেটার অভাব দেখা যায়, যা এআই অ্যালগরিদমের প্রশিক্ষণে প্রভাব ফেলে। নির্দিষ্ট মান দ্বন্দ্ব মেনে চলার অভাবও একটি বড় চ্যালেঞ্জ। ভারতের স্বাস্থ্য তথ্যকে বৈশ্বিক স্বাস্থ্য তথ্যপ্রযুক্তির মান অনুসরণ করতে হবে। তবে আশার কথা হলো যে আয়ুষ্মান ভারত ডিজিটাল হেলথ মিশন এর মাধ্যমে আমরা এই সমস্যাগুলো সমাধানে কিছু গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নিয়েছি।
উল্লেখ্য, আয়ুষ্মান ভারত ডিজিটাল হেলথ মিশন হলো—ভারত সরকারের একটি উদ্যোগ, যা ডিজিটাল প্রযুক্তির মাধ্যমে দেশের স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থাকে উন্নত করার লক্ষ্যে কাজ করছে। এর মূল উদ্দেশ্য হলো—স্বাস্থ্যসেবার পরিষেবাগুলো ডিজিটালভাবে সংযুক্ত করা এবং সব নাগরিকের জন্য সহজ, দ্রুত এবং কার্যকর স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করা
চিকিৎসকেরা এখনো গুরুত্বপূর্ণ
ঐতিহ্যগত চিকিৎসা নির্ণয়ের প্রক্রিয়াকে চ্যালেঞ্জ করতে শুরু করেছে এআই। তবে ডা. জন বলেন, ভবিষ্যতে এমন একটি পরিস্থিতি কল্পনা করা কঠিন যেখানে এআই ডাক্তার থেকে স্বাধীনভাবে সিদ্ধান্ত নেবে। এআইভিত্তিক টুলগুলো ডাক্তারদের জটিল রোগ নির্ণয়, অনুসন্ধান এবং চিকিৎসা পরিকল্পনা করতে সাহায্য করেছে। তবে, সিদ্ধান্ত নেওয়ার চ্যালেঞ্জ এখনো চিকিৎসকদের ওপর রয়েছে, যেখানে তাকে একাধিক কৌশল সমন্বয় করতে হয়। বিশেষ করে একাধিক রোগে আক্রান্ত রোগীদের ক্ষেত্রে।
মনিপাল হাসপাতালের ডা. দীপক বলেন, এআই কখনোই চিকিৎসকদের জায়গা নিতে পারে না, কারণ একজন ডাক্তার সরাসরি রোগীর সঙ্গে কথা বলে তাদের স্বস্তি এবং নিরাপত্তা দেয়। তবে, এআই ডাক্তারদের দ্রুত এবং আরও সঠিকভাবে রোগ নির্ণয় এবং চিকিৎসা দিতে সাহায্য করতে পারে।
তথ্যসূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া

গুলিবিদ্ধ হয়ে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদির অবস্থা আশঙ্কাজনক। গুলিতে তাঁর মস্তিষ্ক মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং তাঁর ফুসফুসেও আঘাত রয়েছে। তাঁকে কনজারভেটিভ ম্যানেজমেন্টে অর্থাৎ অস্ত্রোপচার ছাড়া নিবিড় পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে...
১৫ ঘণ্টা আগে
ডিসেম্বর মানেই হাড়কাঁপানো শীত। আর শীত মানেই খাবারের উৎসব। খেজুরের রস, পিঠা পায়েসের কমতি হয় না এ ঋতুতে। কনকনে ঠান্ডার বিপক্ষে যুদ্ধে আমাদের প্রধান হাতিয়ার খাবার। তবে সঠিক খাবার বাছাই করা না গেলে হিতে বিপরীত হতে পারে।
১ দিন আগে
চিকিৎসাবিজ্ঞানে সব বন্ধ্যত্বের ৩০ থেকে ৪০ শতাংশের জন্য পুরুষের সমস্যা দায়ী। এ ছাড়া পুরুষের বীর্যে শুক্রাণুর সংখ্যা কমে গেলে, শুক্রাণুর গতি কম থাকলে কিংবা একেবারেই শুক্রাণু না পাওয়া গেলে এবং স্বামী-স্ত্রী নিয়মিত সহবাসের পরও যদি এক বছরের মধ্যে গর্ভধারণ না হয়, তাহলে সেটিকে বলা হয় পুরুষ বন্ধ্যত্ব।
১ দিন আগে
শীতকাল মানেই শুষ্ক, ঠান্ডা আবহাওয়া এবং তার সঙ্গে রোগজীবাণুর সহজ সংক্রমণ। এ সময় প্রধানত ভাইরাস ও ব্যাকটেরিয়াজনিত শ্বাসতন্ত্রের রোগগুলো দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। ঠান্ডা আবহাওয়ার কারণে আমাদের রোগ প্রতিরোধক্ষমতা কিছুটা দুর্বল হয় এবং বদ্ধ জায়গায় মানুষ কাছাকাছি থাকায় রোগ সংক্রমণের ঝুঁকি বাড়ে।
১ দিন আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

গুলিবিদ্ধ হয়ে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদির অবস্থা আশঙ্কাজনক। গুলিতে তাঁর মস্তিষ্ক মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং তাঁর ফুসফুসেও আঘাত রয়েছে। তাঁকে কনজারভেটিভ ম্যানেজমেন্টে অর্থাৎ অস্ত্রোপচার ছাড়া নিবিড় পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে বলে জানিয়েছে তার চিকিৎসায় গঠিত মেডিকেল বোর্ড।
১৪ বিষয়ে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের সমন্বয়ে এভারকেয়ার হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ হাদির জন্য যে মেডিকেল বোর্ড গঠন করেছে, তাতে নেতৃত্ব দিচ্ছেন হাসপাতালটির আইসিইউ ও ক্রিটিক্যাল কেয়ার বিভাগের সিনিয়র কনসালটেন্ট ডা. মো. জাফর ইকবাল।

এভারকেয়ার হাসপাতালের পরিচালক (মেডিকেল সার্ভিসেস) ডা. আরিফ মাহমুদ আজ শনিবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘হাদির অবস্থা আশঙ্কাজনক। আমরা মেডিকেল বোর্ড গঠন করে চিকিৎসা চালিয়ে যাচ্ছি। এই মুহূর্তে মিডিয়া ব্রিফের চেয়ে তার চিকিৎসার দিকেই আমাদের মনোযোগ বেশি। তার ভাই তাকে বিদেশে চিকিৎসার জন্য নেওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন। আমরা আমাদের সর্বোচ্চ সহযোগিতা করব। হাদির বর্তমান অবস্থা তার পরিবারকে আমরা ব্রিফ করেছি।’
মেডিকেল বোর্ডের পর্যবেক্ষণ ও সিদ্ধান্ত তুলে ধরে এক আনুষ্ঠানিক বিবৃতিতে বলা হয়, রোগীর মস্তিষ্ক ‘মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত’ হয়েছে। তাকে কনজারভেটিভ ম্যানেজমেন্টে রাখা হয়েছে। ব্রেন প্রোটেকশন প্রটোকল (স্ট্রোক বা মস্তিষ্কের আঘাতের পর মস্তিষ্ককে আরও ক্ষতি থেকে বাঁচাতে বিশেষ চিকিৎসা পদ্ধতি ও যত্ন) অনুসরণ করে প্রয়োজনীয় সব ধরনের সহায়তা চালু থাকবে। শারীরিক অবস্থা কিছুটা স্থিতিশীল হলে আবার ব্রেনের সিটি স্ক্যান করা হতে পারে। হাদির ফুসফুসেও আঘাত রয়েছে। চেস্ট ড্রেইন টিউব (বুকের ভেতর থেকে বাতাস, রক্ত বা অন্যান্য তরল বের করতে ব্যবহৃত নমনীয় নল) দিয়ে অল্প পরিমাণ রক্ত নির্গত হওয়ায় তা চালু রাখা হয়েছে। ফুসফুসে সংক্রমণ ও এআরডিএস (তীব্র শ্বাসকষ্ট সিন্ড্রোম ফুসফুসের একটি গুরুতর অবস্থা) প্রতিরোধে সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করে ভেন্টিলেটর সাপোর্ট অব্যাহত রাখা হবে।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, হাদির কিডনির কার্যক্ষমতা ফিরে এসেছে। এটি বজায় রাখতে পূর্বনির্ধারিত ফ্লুইড ব্যালেন্স (শরীরে প্রবেশ করা তরল এবং শরীর থেকে বেরিয়ে যাওয়া তরলের মধ্যকার ভারসাম্য) যথাযথভাবে চালিয়ে যাওয়া হবে। পূর্বে শরীরে রক্ত জমাট বাঁধা ও রক্তক্ষরণের মধ্যে অসামঞ্জস্যতা (ডিআইসি) দেখা দিলেও তা অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে এসেছে। এ অবস্থা সার্বক্ষণিক মনিটরিং করা হচ্ছে এবং প্রয়োজন অনুযায়ী রক্ত ও রক্তজাত উপাদান সঞ্চালন অব্যাহত থাকবে।
মেডিকেল বোর্ড জানিয়েছে, হাদির মস্তিষ্কের নিচের অংশ বা গুরুমস্তিষ্কে আঘাতের (ব্রেন স্টেম ইনজুরি) কারণে রোগীর অবস্থা অত্যন্ত সংবেদনশীল; রক্তচাপ ও হৃৎস্পন্দনের ওঠানামা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে বর্তমানে যে সাপোর্ট দেওয়া হচ্ছে, তা চলমান থাকবে। যেকোনো মুহূর্তে পরিস্থিতির পরিবর্তন ঘটতে পারে। তাই রোগীকে কৃত্রিম শ্বাস-প্রশ্বাসে রাখা হয়েছে। হৃৎস্পন্দন বিপজ্জনকভাবে কমে গেলে তাৎক্ষণিকভাবে টেম্পোরারি পেসমেকার (হৃদপিণ্ডের স্পন্দনের ধীরগতি বা অনিয়মিত গতি ঠিক রাখতে অস্থায়ী চিকিৎসা যন্ত্র) স্থাপনের জন্য সংশ্লিষ্ট টিম সম্পূর্ণ প্রস্তুত রয়েছে।
মেডিকেল বোর্ডের বৈঠকের পর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, গুলিবিদ্ধ ওসমান হাদির শরীরে আপাতত নতুন কোনো অস্ত্রোপচার বা হস্তক্ষেপ করা হবে না, পর্যবেক্ষণভিত্তিক চিকিৎসাই চলবে।
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওয়ান-স্টপ ক্রাইসিস সেন্টার, রেডিওলজি, আইসিইউ, অ্যানেস্থেশিয়া, নিউরোসার্জারি ও অন্যান্য সংশ্লিষ্ট বিভাগের চিকিৎসক ও সাপোর্টিভ স্টাফদের অসাধারণ ও মানবিক অবদানের জন্য মেডিকেল বোর্ড তাদের প্রতি আন্তরিক কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছে।
হাসপাতালে ভিড় না করতে; কোনো ধরনের অনুমানভিত্তিক বা বিভ্রান্তিকর তথ্য প্রচার না করে মেডিকেল বোর্ডের প্রতি আস্থা রাখতে এবং রোগীর ব্যক্তিগত গোপনীয়তা ও মর্যাদা রক্ষায় সবাইকে সহযোগিতা করার অনুরোধ জানিয়েছে মেডিকেল বোর্ড।
শুক্রবার দুপুরে রাজধানীর বিজয়নগরে ওসমান হাদিকে গুলি করে দুর্বৃত্তরা। পরে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখান থেকে সন্ধ্যার পর তাকে এভারকেয়ার হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। বর্তমানে সেখানেই তিনি চিকিৎসাধীন।
হাদির শারীরিক অবস্থার বিষয়ে শুক্রবার রাতে প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী (স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়) অধ্যাপক ডা. সায়েদুর রহমান বলেন, বাম কানের ওপর দিয়ে ঢুকে ডান দিক দিয়ে বেরিয়ে যাওয়া বুলেট হাদির মস্তিষ্কের কাণ্ড বা ব্রেন স্টেম পর্যন্ত ক্ষতিগ্রস্ত করেছে, যা চিকিৎসাবিজ্ঞানে ‘ম্যাসিভ ব্রেন ইনজুরি’ হিসেবে বিবেচিত।
তিনি জানান, আগামী ৭২ ঘণ্টা অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ এবং এ অবস্থায় কোনো ধরনের নতুন ইন্টারভেনশন করা হবে না। হাদি বর্তমানে ‘খুবই ক্রিটিক্যাল’ অবস্থায় রয়েছেন এবং তাকে আপাতত কৃত্রিম শ্বাস-প্রশ্বাসে রাখা হয়েছে। তবে চিকিৎসকেরা এখনও আশার কোনো নিশ্চয়তা দিতে পারছেন না।

গুলিবিদ্ধ হয়ে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদির অবস্থা আশঙ্কাজনক। গুলিতে তাঁর মস্তিষ্ক মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং তাঁর ফুসফুসেও আঘাত রয়েছে। তাঁকে কনজারভেটিভ ম্যানেজমেন্টে অর্থাৎ অস্ত্রোপচার ছাড়া নিবিড় পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে বলে জানিয়েছে তার চিকিৎসায় গঠিত মেডিকেল বোর্ড।
১৪ বিষয়ে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের সমন্বয়ে এভারকেয়ার হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ হাদির জন্য যে মেডিকেল বোর্ড গঠন করেছে, তাতে নেতৃত্ব দিচ্ছেন হাসপাতালটির আইসিইউ ও ক্রিটিক্যাল কেয়ার বিভাগের সিনিয়র কনসালটেন্ট ডা. মো. জাফর ইকবাল।

এভারকেয়ার হাসপাতালের পরিচালক (মেডিকেল সার্ভিসেস) ডা. আরিফ মাহমুদ আজ শনিবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘হাদির অবস্থা আশঙ্কাজনক। আমরা মেডিকেল বোর্ড গঠন করে চিকিৎসা চালিয়ে যাচ্ছি। এই মুহূর্তে মিডিয়া ব্রিফের চেয়ে তার চিকিৎসার দিকেই আমাদের মনোযোগ বেশি। তার ভাই তাকে বিদেশে চিকিৎসার জন্য নেওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন। আমরা আমাদের সর্বোচ্চ সহযোগিতা করব। হাদির বর্তমান অবস্থা তার পরিবারকে আমরা ব্রিফ করেছি।’
মেডিকেল বোর্ডের পর্যবেক্ষণ ও সিদ্ধান্ত তুলে ধরে এক আনুষ্ঠানিক বিবৃতিতে বলা হয়, রোগীর মস্তিষ্ক ‘মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত’ হয়েছে। তাকে কনজারভেটিভ ম্যানেজমেন্টে রাখা হয়েছে। ব্রেন প্রোটেকশন প্রটোকল (স্ট্রোক বা মস্তিষ্কের আঘাতের পর মস্তিষ্ককে আরও ক্ষতি থেকে বাঁচাতে বিশেষ চিকিৎসা পদ্ধতি ও যত্ন) অনুসরণ করে প্রয়োজনীয় সব ধরনের সহায়তা চালু থাকবে। শারীরিক অবস্থা কিছুটা স্থিতিশীল হলে আবার ব্রেনের সিটি স্ক্যান করা হতে পারে। হাদির ফুসফুসেও আঘাত রয়েছে। চেস্ট ড্রেইন টিউব (বুকের ভেতর থেকে বাতাস, রক্ত বা অন্যান্য তরল বের করতে ব্যবহৃত নমনীয় নল) দিয়ে অল্প পরিমাণ রক্ত নির্গত হওয়ায় তা চালু রাখা হয়েছে। ফুসফুসে সংক্রমণ ও এআরডিএস (তীব্র শ্বাসকষ্ট সিন্ড্রোম ফুসফুসের একটি গুরুতর অবস্থা) প্রতিরোধে সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করে ভেন্টিলেটর সাপোর্ট অব্যাহত রাখা হবে।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, হাদির কিডনির কার্যক্ষমতা ফিরে এসেছে। এটি বজায় রাখতে পূর্বনির্ধারিত ফ্লুইড ব্যালেন্স (শরীরে প্রবেশ করা তরল এবং শরীর থেকে বেরিয়ে যাওয়া তরলের মধ্যকার ভারসাম্য) যথাযথভাবে চালিয়ে যাওয়া হবে। পূর্বে শরীরে রক্ত জমাট বাঁধা ও রক্তক্ষরণের মধ্যে অসামঞ্জস্যতা (ডিআইসি) দেখা দিলেও তা অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে এসেছে। এ অবস্থা সার্বক্ষণিক মনিটরিং করা হচ্ছে এবং প্রয়োজন অনুযায়ী রক্ত ও রক্তজাত উপাদান সঞ্চালন অব্যাহত থাকবে।
মেডিকেল বোর্ড জানিয়েছে, হাদির মস্তিষ্কের নিচের অংশ বা গুরুমস্তিষ্কে আঘাতের (ব্রেন স্টেম ইনজুরি) কারণে রোগীর অবস্থা অত্যন্ত সংবেদনশীল; রক্তচাপ ও হৃৎস্পন্দনের ওঠানামা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে বর্তমানে যে সাপোর্ট দেওয়া হচ্ছে, তা চলমান থাকবে। যেকোনো মুহূর্তে পরিস্থিতির পরিবর্তন ঘটতে পারে। তাই রোগীকে কৃত্রিম শ্বাস-প্রশ্বাসে রাখা হয়েছে। হৃৎস্পন্দন বিপজ্জনকভাবে কমে গেলে তাৎক্ষণিকভাবে টেম্পোরারি পেসমেকার (হৃদপিণ্ডের স্পন্দনের ধীরগতি বা অনিয়মিত গতি ঠিক রাখতে অস্থায়ী চিকিৎসা যন্ত্র) স্থাপনের জন্য সংশ্লিষ্ট টিম সম্পূর্ণ প্রস্তুত রয়েছে।
মেডিকেল বোর্ডের বৈঠকের পর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, গুলিবিদ্ধ ওসমান হাদির শরীরে আপাতত নতুন কোনো অস্ত্রোপচার বা হস্তক্ষেপ করা হবে না, পর্যবেক্ষণভিত্তিক চিকিৎসাই চলবে।
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওয়ান-স্টপ ক্রাইসিস সেন্টার, রেডিওলজি, আইসিইউ, অ্যানেস্থেশিয়া, নিউরোসার্জারি ও অন্যান্য সংশ্লিষ্ট বিভাগের চিকিৎসক ও সাপোর্টিভ স্টাফদের অসাধারণ ও মানবিক অবদানের জন্য মেডিকেল বোর্ড তাদের প্রতি আন্তরিক কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছে।
হাসপাতালে ভিড় না করতে; কোনো ধরনের অনুমানভিত্তিক বা বিভ্রান্তিকর তথ্য প্রচার না করে মেডিকেল বোর্ডের প্রতি আস্থা রাখতে এবং রোগীর ব্যক্তিগত গোপনীয়তা ও মর্যাদা রক্ষায় সবাইকে সহযোগিতা করার অনুরোধ জানিয়েছে মেডিকেল বোর্ড।
শুক্রবার দুপুরে রাজধানীর বিজয়নগরে ওসমান হাদিকে গুলি করে দুর্বৃত্তরা। পরে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখান থেকে সন্ধ্যার পর তাকে এভারকেয়ার হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। বর্তমানে সেখানেই তিনি চিকিৎসাধীন।
হাদির শারীরিক অবস্থার বিষয়ে শুক্রবার রাতে প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী (স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়) অধ্যাপক ডা. সায়েদুর রহমান বলেন, বাম কানের ওপর দিয়ে ঢুকে ডান দিক দিয়ে বেরিয়ে যাওয়া বুলেট হাদির মস্তিষ্কের কাণ্ড বা ব্রেন স্টেম পর্যন্ত ক্ষতিগ্রস্ত করেছে, যা চিকিৎসাবিজ্ঞানে ‘ম্যাসিভ ব্রেন ইনজুরি’ হিসেবে বিবেচিত।
তিনি জানান, আগামী ৭২ ঘণ্টা অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ এবং এ অবস্থায় কোনো ধরনের নতুন ইন্টারভেনশন করা হবে না। হাদি বর্তমানে ‘খুবই ক্রিটিক্যাল’ অবস্থায় রয়েছেন এবং তাকে আপাতত কৃত্রিম শ্বাস-প্রশ্বাসে রাখা হয়েছে। তবে চিকিৎসকেরা এখনও আশার কোনো নিশ্চয়তা দিতে পারছেন না।

ইন্টারনেটে ঘাঁটাঘাঁটি করে নিজেদের রোগ নির্ণয়ের চেষ্টা করেন অনেকেই। এই ধরনের সাইবারকন্ড্রিয়াক ব্যক্তিরা তাঁদের শারীরিক বা মানসিক অবস্থার সঙ্গে সম্পর্কিত যেকোনো উপসর্গ বা অসুস্থতার তথ্য জানার জন্য ইন্টারনেটে প্রচুর খোঁজাখুঁজি করেন, যা প্রায়ই তাঁদের উদ্বেগ বা অস্থিরতা আরও বাড়িয়ে তোলে। তবে এখন সাইবারকন্
০৮ জানুয়ারি ২০২৫
ডিসেম্বর মানেই হাড়কাঁপানো শীত। আর শীত মানেই খাবারের উৎসব। খেজুরের রস, পিঠা পায়েসের কমতি হয় না এ ঋতুতে। কনকনে ঠান্ডার বিপক্ষে যুদ্ধে আমাদের প্রধান হাতিয়ার খাবার। তবে সঠিক খাবার বাছাই করা না গেলে হিতে বিপরীত হতে পারে।
১ দিন আগে
চিকিৎসাবিজ্ঞানে সব বন্ধ্যত্বের ৩০ থেকে ৪০ শতাংশের জন্য পুরুষের সমস্যা দায়ী। এ ছাড়া পুরুষের বীর্যে শুক্রাণুর সংখ্যা কমে গেলে, শুক্রাণুর গতি কম থাকলে কিংবা একেবারেই শুক্রাণু না পাওয়া গেলে এবং স্বামী-স্ত্রী নিয়মিত সহবাসের পরও যদি এক বছরের মধ্যে গর্ভধারণ না হয়, তাহলে সেটিকে বলা হয় পুরুষ বন্ধ্যত্ব।
১ দিন আগে
শীতকাল মানেই শুষ্ক, ঠান্ডা আবহাওয়া এবং তার সঙ্গে রোগজীবাণুর সহজ সংক্রমণ। এ সময় প্রধানত ভাইরাস ও ব্যাকটেরিয়াজনিত শ্বাসতন্ত্রের রোগগুলো দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। ঠান্ডা আবহাওয়ার কারণে আমাদের রোগ প্রতিরোধক্ষমতা কিছুটা দুর্বল হয় এবং বদ্ধ জায়গায় মানুষ কাছাকাছি থাকায় রোগ সংক্রমণের ঝুঁকি বাড়ে।
১ দিন আগেমো. ইকবাল হোসেন

ডিসেম্বর মানেই হাড়কাঁপানো শীত। আর শীত মানেই খাবারের উৎসব। খেজুরের রস, পিঠা পায়েসের কমতি হয় না এ ঋতুতে। কনকনে ঠান্ডার বিপক্ষে যুদ্ধে আমাদের প্রধান হাতিয়ার খাবার। তবে সঠিক খাবার বাছাই করা না গেলে হিতে বিপরীত হতে পারে।
মানুষের শরীরের গঠন অন্যান্য প্রাণীর চেয়ে কিছুটা ভিন্ন। পৃথিবীর বেশির ভাগ প্রাণীর চেয়ে মানুষের খাদ্যাভ্যাস ভিন্ন। আমাদের শরীরের প্রতিটি অঙ্গপ্রত্যঙ্গের জন্য আলাদা পুষ্টির প্রয়োজন হয়। যেমন চোখের যত্নে ভিটামিন এ, ত্বকের যত্নে ভিটামিন বি, হাড়ের যত্নে ভিটামিন ডি ইত্যাদি। এসব চাহিদা পূরণ করে খাবার খেলে শরীরে সুখের হরমোনের নিঃসরণ বেড়ে যায় এবং আমাদের সুখানুভূতি হয়, মন শান্ত থাকে।
মন ভালো রাখার অন্যতম হরমোন ডোপামিন। এটি নিঃসরণে খাবারের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা আছে। আমাদের অন্ত্রে ভালো ব্যাকটেরিয়ার সংখ্যা যত বাড়বে, ডোপামিনের নিঃসরণও তত বাড়বে। তাই অন্ত্রের ব্যাকটেরিয়ার সংখ্যা বাড়াতে গুড ফ্যাট বা ভালো চর্বিসমৃদ্ধ, গাঁজানো এবং আঁশসমৃদ্ধ খাবার খেতে হবে।
সে ক্ষেত্রে চমৎকার খাবার হতে পারে শীতকালীন বিভিন্ন শাকসবজি। শিমের বিচি, মটরশুঁটি, বরবটিসহ অন্যান্য শাকসবজি ভালো ব্যাকটেরিয়ার সংখ্যা বাড়াতে চমৎকার কাজ করে। এ ছাড়া সামুদ্রিক মাছ, মাছের তেল, অলিভ অয়েল, টক দই ইত্যাদি খাবারও পর্যাপ্ত খেতে হবে। আঁশের উৎস হিসেবে লালশাক, পালংশাক, সবুজ শাক খেতে হবে। ভাজাপোড়া, প্রক্রিয়াজাত খাবার এবং ডুবোতেলে ভাজা খাবার যতটা সম্ভব এড়িয়ে চলতে হবে।
আমাদের মন ভালো রাখার আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ হরমোন হচ্ছে সেরোটোনিন। ৯০ শতাংশ সেরোটোনিন উৎপন্ন হয় অন্ত্রের এন্টেরোক্রমাফিন কোষের এন্টেরিক নার্ভাস সিস্টেম থেকে। এ জন্য অন্ত্রের স্বাস্থ্য ভালো রাখা বেশি জরুরি। অন্ত্রের পেশি নড়াচড়ায় সেরোটোনিন সাহায্য করে। মাত্র ১ শতাংশ সেরোটোনিন মস্তিষ্কে নিঃসৃত হয়। এই ১ শতাংশ সেরোটোনিন মুড, ঘুম, স্মৃতি, ক্ষুধা, মন ভালো থাকা ইত্যাদির ওপর প্রভাব বিস্তার করে। ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড, আয়রন এবং আঁশসমৃদ্ধ খাবার, ভিটামিন বি-১২ এবং ভিটামিন ডি সেরোটোনিনের নিঃসরণ বাড়ায়। খাবারের পাশাপাশি রাতে ভালো ঘুম সেরোটোনিনের নিঃসরণ বাড়িয়ে দেয়। সে ক্ষেত্রে পরিমিত রেডমিট, ব্রকলি, বাঁধাকপি, শিম, গাজরসহ সব ধরনের শীতকালীন সবজি এবং শীতের মিষ্টি রোদ দারুণ কাজ করে।
এ ছাড়া অ্যান্টি-ইনফ্লামেটরি গুণসমৃদ্ধ খাবার, যেমন দারুচিনি, লবঙ্গ, হলুদ, ফ্ল্যাক্স সিড, চিয়া সিড খাদ্যতালিকায় যোগ করতে হবে।
শীতে শরীরে ব্যথার প্রকোপ কিছুটা হলেও বেড়ে যায়। তবে এন্ডোরফিন নামক হরমোন প্রাকৃতিকভাবে ব্যথা উপশম করে। শারীরিক বা মানসিকভাবে আহত হলে এন্ডোরফিন সক্রিয় হয়ে আমাদের ব্যথা নিরাময় করে। অতিরিক্ত ওজন, বিষণ্নতা, উচ্চ রক্তচাপ এন্ডোরফিনের নিঃসরণ কমিয়ে দেয়। তবে কিছু খাবার আছে; যেগুলো খেলে এন্ডোরফিন হরমোনের নিঃসরণ বাড়ে। ভিটামিন সি-সমৃদ্ধ খাবারগুলো শরীরে ভিটামিন সি-এর চাহিদা পূরণের পাশাপাশি এন্ডোরফিন নিঃসরণে সহযোগিতা করে। তাই শীতে মন ভালো রাখতে পর্যাপ্ত পাতিলেবু, মোসাম্বি, পেয়ারা, কলা, জাম্বুরা ও কমলা খেতে হবে।
এর পাশাপাশি টমেটো, কাঁচা মরিচ, ক্যাপসিকাম ও পালংশাক শরীরের প্রয়োজনীয় ভিটামিন সি-এর জোগান দিতে পারে; সঙ্গে মেটায় আঁশ, পটাশিয়াম ও ম্যাগনেশিয়ামের ঘাটতিও।
এ ছাড়া শীতকালীন প্রায় সব শাকসবজি অ্যান্টি-অক্সিডেন্টে ভরপুর এবং ক্যানসার প্রতিরোধী গুণসমৃদ্ধ। এগুলো যদি নিয়মিত খাওয়া যায়, তাহলে শরীরে বাড়ে রোগ প্রতিরোধক্ষমতা। শীতকালীন পালংশাক, গাজর, টমেটো, বিটরুট, ক্যাপসিকাম, ব্রকলি হয়ে উঠতে পারে সুস্থ থাকার অন্যতম হাতিয়ার। শীতকালীন সবজি ভালো কোলেস্টেরল বাড়িয়ে দিতে এবং খারাপ কোলেস্টেরল কমাতে অত্যন্ত উপযোগী। তাই শীতকালে সুস্থতার অন্যতম চাবিকাঠি হতে পারে এসব সবজি।
আমাদের শরীরের অবহেলিত অঙ্গ ক্ষুদ্রান্ত্র। আমরা বিভিন্ন রকমের অস্বাস্থ্যকর খাবার খাই। সেসবের প্রভাব পড়ে ক্ষুদ্রান্ত্রের ওপর। এসব অস্বাস্থ্যকর খাবারের ফলে আমাদের ক্ষুদ্রান্ত্রের ভালো ব্যাকটেরিয়ার সংখ্যা কমতে থাকে।
ফলে গ্যাসের সমস্যা, ফ্যাটি লিভার, কোলেস্টেরল, কোষ্ঠকাঠিন্য বা কিডনি সমস্যার ঝুঁকি বাড়ে। আবার বিভিন্ন ধরনের ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হিসেবেও কমে যায় এসব ভালো ব্যাকটেরিয়ার সংখ্যা। তাই সুস্থ থাকতে এবং মন ভালো রাখতে শীতকাল হতে পারে আপনার জীবনের সেরা সময়।
খাবার খাওয়ার পাশাপাশি আরও কিছু বিষয় বিবেচনায় রাখতে হবে—
পুষ্টিবিদ ও জ্যেষ্ঠ পুষ্টি কর্মকর্তা, চট্টগ্রাম ডায়াবেটিক জেনারেল হাসপাতাল

ডিসেম্বর মানেই হাড়কাঁপানো শীত। আর শীত মানেই খাবারের উৎসব। খেজুরের রস, পিঠা পায়েসের কমতি হয় না এ ঋতুতে। কনকনে ঠান্ডার বিপক্ষে যুদ্ধে আমাদের প্রধান হাতিয়ার খাবার। তবে সঠিক খাবার বাছাই করা না গেলে হিতে বিপরীত হতে পারে।
মানুষের শরীরের গঠন অন্যান্য প্রাণীর চেয়ে কিছুটা ভিন্ন। পৃথিবীর বেশির ভাগ প্রাণীর চেয়ে মানুষের খাদ্যাভ্যাস ভিন্ন। আমাদের শরীরের প্রতিটি অঙ্গপ্রত্যঙ্গের জন্য আলাদা পুষ্টির প্রয়োজন হয়। যেমন চোখের যত্নে ভিটামিন এ, ত্বকের যত্নে ভিটামিন বি, হাড়ের যত্নে ভিটামিন ডি ইত্যাদি। এসব চাহিদা পূরণ করে খাবার খেলে শরীরে সুখের হরমোনের নিঃসরণ বেড়ে যায় এবং আমাদের সুখানুভূতি হয়, মন শান্ত থাকে।
মন ভালো রাখার অন্যতম হরমোন ডোপামিন। এটি নিঃসরণে খাবারের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা আছে। আমাদের অন্ত্রে ভালো ব্যাকটেরিয়ার সংখ্যা যত বাড়বে, ডোপামিনের নিঃসরণও তত বাড়বে। তাই অন্ত্রের ব্যাকটেরিয়ার সংখ্যা বাড়াতে গুড ফ্যাট বা ভালো চর্বিসমৃদ্ধ, গাঁজানো এবং আঁশসমৃদ্ধ খাবার খেতে হবে।
সে ক্ষেত্রে চমৎকার খাবার হতে পারে শীতকালীন বিভিন্ন শাকসবজি। শিমের বিচি, মটরশুঁটি, বরবটিসহ অন্যান্য শাকসবজি ভালো ব্যাকটেরিয়ার সংখ্যা বাড়াতে চমৎকার কাজ করে। এ ছাড়া সামুদ্রিক মাছ, মাছের তেল, অলিভ অয়েল, টক দই ইত্যাদি খাবারও পর্যাপ্ত খেতে হবে। আঁশের উৎস হিসেবে লালশাক, পালংশাক, সবুজ শাক খেতে হবে। ভাজাপোড়া, প্রক্রিয়াজাত খাবার এবং ডুবোতেলে ভাজা খাবার যতটা সম্ভব এড়িয়ে চলতে হবে।
আমাদের মন ভালো রাখার আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ হরমোন হচ্ছে সেরোটোনিন। ৯০ শতাংশ সেরোটোনিন উৎপন্ন হয় অন্ত্রের এন্টেরোক্রমাফিন কোষের এন্টেরিক নার্ভাস সিস্টেম থেকে। এ জন্য অন্ত্রের স্বাস্থ্য ভালো রাখা বেশি জরুরি। অন্ত্রের পেশি নড়াচড়ায় সেরোটোনিন সাহায্য করে। মাত্র ১ শতাংশ সেরোটোনিন মস্তিষ্কে নিঃসৃত হয়। এই ১ শতাংশ সেরোটোনিন মুড, ঘুম, স্মৃতি, ক্ষুধা, মন ভালো থাকা ইত্যাদির ওপর প্রভাব বিস্তার করে। ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড, আয়রন এবং আঁশসমৃদ্ধ খাবার, ভিটামিন বি-১২ এবং ভিটামিন ডি সেরোটোনিনের নিঃসরণ বাড়ায়। খাবারের পাশাপাশি রাতে ভালো ঘুম সেরোটোনিনের নিঃসরণ বাড়িয়ে দেয়। সে ক্ষেত্রে পরিমিত রেডমিট, ব্রকলি, বাঁধাকপি, শিম, গাজরসহ সব ধরনের শীতকালীন সবজি এবং শীতের মিষ্টি রোদ দারুণ কাজ করে।
এ ছাড়া অ্যান্টি-ইনফ্লামেটরি গুণসমৃদ্ধ খাবার, যেমন দারুচিনি, লবঙ্গ, হলুদ, ফ্ল্যাক্স সিড, চিয়া সিড খাদ্যতালিকায় যোগ করতে হবে।
শীতে শরীরে ব্যথার প্রকোপ কিছুটা হলেও বেড়ে যায়। তবে এন্ডোরফিন নামক হরমোন প্রাকৃতিকভাবে ব্যথা উপশম করে। শারীরিক বা মানসিকভাবে আহত হলে এন্ডোরফিন সক্রিয় হয়ে আমাদের ব্যথা নিরাময় করে। অতিরিক্ত ওজন, বিষণ্নতা, উচ্চ রক্তচাপ এন্ডোরফিনের নিঃসরণ কমিয়ে দেয়। তবে কিছু খাবার আছে; যেগুলো খেলে এন্ডোরফিন হরমোনের নিঃসরণ বাড়ে। ভিটামিন সি-সমৃদ্ধ খাবারগুলো শরীরে ভিটামিন সি-এর চাহিদা পূরণের পাশাপাশি এন্ডোরফিন নিঃসরণে সহযোগিতা করে। তাই শীতে মন ভালো রাখতে পর্যাপ্ত পাতিলেবু, মোসাম্বি, পেয়ারা, কলা, জাম্বুরা ও কমলা খেতে হবে।
এর পাশাপাশি টমেটো, কাঁচা মরিচ, ক্যাপসিকাম ও পালংশাক শরীরের প্রয়োজনীয় ভিটামিন সি-এর জোগান দিতে পারে; সঙ্গে মেটায় আঁশ, পটাশিয়াম ও ম্যাগনেশিয়ামের ঘাটতিও।
এ ছাড়া শীতকালীন প্রায় সব শাকসবজি অ্যান্টি-অক্সিডেন্টে ভরপুর এবং ক্যানসার প্রতিরোধী গুণসমৃদ্ধ। এগুলো যদি নিয়মিত খাওয়া যায়, তাহলে শরীরে বাড়ে রোগ প্রতিরোধক্ষমতা। শীতকালীন পালংশাক, গাজর, টমেটো, বিটরুট, ক্যাপসিকাম, ব্রকলি হয়ে উঠতে পারে সুস্থ থাকার অন্যতম হাতিয়ার। শীতকালীন সবজি ভালো কোলেস্টেরল বাড়িয়ে দিতে এবং খারাপ কোলেস্টেরল কমাতে অত্যন্ত উপযোগী। তাই শীতকালে সুস্থতার অন্যতম চাবিকাঠি হতে পারে এসব সবজি।
আমাদের শরীরের অবহেলিত অঙ্গ ক্ষুদ্রান্ত্র। আমরা বিভিন্ন রকমের অস্বাস্থ্যকর খাবার খাই। সেসবের প্রভাব পড়ে ক্ষুদ্রান্ত্রের ওপর। এসব অস্বাস্থ্যকর খাবারের ফলে আমাদের ক্ষুদ্রান্ত্রের ভালো ব্যাকটেরিয়ার সংখ্যা কমতে থাকে।
ফলে গ্যাসের সমস্যা, ফ্যাটি লিভার, কোলেস্টেরল, কোষ্ঠকাঠিন্য বা কিডনি সমস্যার ঝুঁকি বাড়ে। আবার বিভিন্ন ধরনের ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হিসেবেও কমে যায় এসব ভালো ব্যাকটেরিয়ার সংখ্যা। তাই সুস্থ থাকতে এবং মন ভালো রাখতে শীতকাল হতে পারে আপনার জীবনের সেরা সময়।
খাবার খাওয়ার পাশাপাশি আরও কিছু বিষয় বিবেচনায় রাখতে হবে—
পুষ্টিবিদ ও জ্যেষ্ঠ পুষ্টি কর্মকর্তা, চট্টগ্রাম ডায়াবেটিক জেনারেল হাসপাতাল

ইন্টারনেটে ঘাঁটাঘাঁটি করে নিজেদের রোগ নির্ণয়ের চেষ্টা করেন অনেকেই। এই ধরনের সাইবারকন্ড্রিয়াক ব্যক্তিরা তাঁদের শারীরিক বা মানসিক অবস্থার সঙ্গে সম্পর্কিত যেকোনো উপসর্গ বা অসুস্থতার তথ্য জানার জন্য ইন্টারনেটে প্রচুর খোঁজাখুঁজি করেন, যা প্রায়ই তাঁদের উদ্বেগ বা অস্থিরতা আরও বাড়িয়ে তোলে। তবে এখন সাইবারকন্
০৮ জানুয়ারি ২০২৫
গুলিবিদ্ধ হয়ে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদির অবস্থা আশঙ্কাজনক। গুলিতে তাঁর মস্তিষ্ক মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং তাঁর ফুসফুসেও আঘাত রয়েছে। তাঁকে কনজারভেটিভ ম্যানেজমেন্টে অর্থাৎ অস্ত্রোপচার ছাড়া নিবিড় পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে...
১৫ ঘণ্টা আগে
চিকিৎসাবিজ্ঞানে সব বন্ধ্যত্বের ৩০ থেকে ৪০ শতাংশের জন্য পুরুষের সমস্যা দায়ী। এ ছাড়া পুরুষের বীর্যে শুক্রাণুর সংখ্যা কমে গেলে, শুক্রাণুর গতি কম থাকলে কিংবা একেবারেই শুক্রাণু না পাওয়া গেলে এবং স্বামী-স্ত্রী নিয়মিত সহবাসের পরও যদি এক বছরের মধ্যে গর্ভধারণ না হয়, তাহলে সেটিকে বলা হয় পুরুষ বন্ধ্যত্ব।
১ দিন আগে
শীতকাল মানেই শুষ্ক, ঠান্ডা আবহাওয়া এবং তার সঙ্গে রোগজীবাণুর সহজ সংক্রমণ। এ সময় প্রধানত ভাইরাস ও ব্যাকটেরিয়াজনিত শ্বাসতন্ত্রের রোগগুলো দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। ঠান্ডা আবহাওয়ার কারণে আমাদের রোগ প্রতিরোধক্ষমতা কিছুটা দুর্বল হয় এবং বদ্ধ জায়গায় মানুষ কাছাকাছি থাকায় রোগ সংক্রমণের ঝুঁকি বাড়ে।
১ দিন আগেডা. অবন্তি ঘোষ

চিকিৎসাবিজ্ঞানে সব বন্ধ্যত্বের ৩০ থেকে ৪০ শতাংশের জন্য পুরুষের সমস্যা দায়ী। এ ছাড়া পুরুষের বীর্যে শুক্রাণুর সংখ্যা কমে গেলে, শুক্রাণুর গতি কম থাকলে কিংবা একেবারেই শুক্রাণু না পাওয়া গেলে এবং স্বামী-স্ত্রী নিয়মিত সহবাসের পরও যদি এক বছরের মধ্যে গর্ভধারণ না হয়, তাহলে সেটিকে বলা হয় পুরুষ বন্ধ্যত্ব।
বীর্য পরীক্ষার পর শুক্রাণুর সংখ্যা, গতি, আকৃতি, পরিমাণ ইত্যাদি
দেখা হয়।
চিকিৎসা নির্ভর করে সমস্যা কেমন এবং কোন স্তরে রয়েছে, তার ওপর। সাধারণভাবে চিকিৎসা কয়েকটি ধাপে করা হয়।
শুক্রাণুর সংখ্যা ও গতি উন্নত করতে কিছু পুষ্টি উপাদান এবং ভিটামিন দেওয়া হয়, যেমন:
ওষুধ শুরুর পর রোগীকে তিন মাস পর্যবেক্ষণে রাখা হয়। কারণ, নতুন শুক্রাণু তৈরিতে প্রায় ৭৫ দিন লাগে।
ওষুধে উন্নতি হলে স্বামী-স্ত্রী স্বাভাবিক পদ্ধতিতে গর্ভধারণের চেষ্টা করতে পারেন। প্রয়োজনে স্ত্রীকে ডিম্বাণু উৎপাদন বাড়ানোর ওষুধ দেওয়া হয়।
ভেরিকোসিল কিংবা শুক্রনালির ব্লকেজ থাকলে সার্জারির প্রয়োজন হতে পারে।
যাঁদের বীর্যে একেবারেই শুক্রাণু পাওয়া যায় না, যাকে অ্যাজোস্পার্মিয়া বলা হয়, তাঁদের ক্ষেত্রে অণ্ডকোষ থেকে সরাসরি শুক্রাণু সংগ্রহ করে আইসিএসআই করাই সবচেয়ে কার্যকর।
গাইনি, প্রসূতি ও বন্ধ্যাত্ব রোগ বিশেষজ্ঞ, আলোক হেলথকেয়ার, মিরপুর-১০

চিকিৎসাবিজ্ঞানে সব বন্ধ্যত্বের ৩০ থেকে ৪০ শতাংশের জন্য পুরুষের সমস্যা দায়ী। এ ছাড়া পুরুষের বীর্যে শুক্রাণুর সংখ্যা কমে গেলে, শুক্রাণুর গতি কম থাকলে কিংবা একেবারেই শুক্রাণু না পাওয়া গেলে এবং স্বামী-স্ত্রী নিয়মিত সহবাসের পরও যদি এক বছরের মধ্যে গর্ভধারণ না হয়, তাহলে সেটিকে বলা হয় পুরুষ বন্ধ্যত্ব।
বীর্য পরীক্ষার পর শুক্রাণুর সংখ্যা, গতি, আকৃতি, পরিমাণ ইত্যাদি
দেখা হয়।
চিকিৎসা নির্ভর করে সমস্যা কেমন এবং কোন স্তরে রয়েছে, তার ওপর। সাধারণভাবে চিকিৎসা কয়েকটি ধাপে করা হয়।
শুক্রাণুর সংখ্যা ও গতি উন্নত করতে কিছু পুষ্টি উপাদান এবং ভিটামিন দেওয়া হয়, যেমন:
ওষুধ শুরুর পর রোগীকে তিন মাস পর্যবেক্ষণে রাখা হয়। কারণ, নতুন শুক্রাণু তৈরিতে প্রায় ৭৫ দিন লাগে।
ওষুধে উন্নতি হলে স্বামী-স্ত্রী স্বাভাবিক পদ্ধতিতে গর্ভধারণের চেষ্টা করতে পারেন। প্রয়োজনে স্ত্রীকে ডিম্বাণু উৎপাদন বাড়ানোর ওষুধ দেওয়া হয়।
ভেরিকোসিল কিংবা শুক্রনালির ব্লকেজ থাকলে সার্জারির প্রয়োজন হতে পারে।
যাঁদের বীর্যে একেবারেই শুক্রাণু পাওয়া যায় না, যাকে অ্যাজোস্পার্মিয়া বলা হয়, তাঁদের ক্ষেত্রে অণ্ডকোষ থেকে সরাসরি শুক্রাণু সংগ্রহ করে আইসিএসআই করাই সবচেয়ে কার্যকর।
গাইনি, প্রসূতি ও বন্ধ্যাত্ব রোগ বিশেষজ্ঞ, আলোক হেলথকেয়ার, মিরপুর-১০

ইন্টারনেটে ঘাঁটাঘাঁটি করে নিজেদের রোগ নির্ণয়ের চেষ্টা করেন অনেকেই। এই ধরনের সাইবারকন্ড্রিয়াক ব্যক্তিরা তাঁদের শারীরিক বা মানসিক অবস্থার সঙ্গে সম্পর্কিত যেকোনো উপসর্গ বা অসুস্থতার তথ্য জানার জন্য ইন্টারনেটে প্রচুর খোঁজাখুঁজি করেন, যা প্রায়ই তাঁদের উদ্বেগ বা অস্থিরতা আরও বাড়িয়ে তোলে। তবে এখন সাইবারকন্
০৮ জানুয়ারি ২০২৫
গুলিবিদ্ধ হয়ে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদির অবস্থা আশঙ্কাজনক। গুলিতে তাঁর মস্তিষ্ক মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং তাঁর ফুসফুসেও আঘাত রয়েছে। তাঁকে কনজারভেটিভ ম্যানেজমেন্টে অর্থাৎ অস্ত্রোপচার ছাড়া নিবিড় পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে...
১৫ ঘণ্টা আগে
ডিসেম্বর মানেই হাড়কাঁপানো শীত। আর শীত মানেই খাবারের উৎসব। খেজুরের রস, পিঠা পায়েসের কমতি হয় না এ ঋতুতে। কনকনে ঠান্ডার বিপক্ষে যুদ্ধে আমাদের প্রধান হাতিয়ার খাবার। তবে সঠিক খাবার বাছাই করা না গেলে হিতে বিপরীত হতে পারে।
১ দিন আগে
শীতকাল মানেই শুষ্ক, ঠান্ডা আবহাওয়া এবং তার সঙ্গে রোগজীবাণুর সহজ সংক্রমণ। এ সময় প্রধানত ভাইরাস ও ব্যাকটেরিয়াজনিত শ্বাসতন্ত্রের রোগগুলো দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। ঠান্ডা আবহাওয়ার কারণে আমাদের রোগ প্রতিরোধক্ষমতা কিছুটা দুর্বল হয় এবং বদ্ধ জায়গায় মানুষ কাছাকাছি থাকায় রোগ সংক্রমণের ঝুঁকি বাড়ে।
১ দিন আগেডা. কাকলী হালদার

শীতকাল মানেই শুষ্ক, ঠান্ডা আবহাওয়া এবং তার সঙ্গে রোগজীবাণুর সহজ সংক্রমণ। এ সময় প্রধানত ভাইরাস ও ব্যাকটেরিয়াজনিত শ্বাসতন্ত্রের রোগগুলো দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। ঠান্ডা আবহাওয়ার কারণে আমাদের রোগ প্রতিরোধক্ষমতা কিছুটা দুর্বল হয় এবং বদ্ধ জায়গায় মানুষ কাছাকাছি থাকায় রোগ সংক্রমণের ঝুঁকি বাড়ে।
সাধারণ সর্দি-কাশি: রাইনোভাইরাস দিয়ে সংক্রমণ হলে হাঁচি, নাক দিয়ে পানি পড়া এবং হালকা গলাব্যথা পর্যন্ত হতে পারে।
ইনফ্লুয়েঞ্জা: ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাসের সংক্রমণ হলে সাধারণ সর্দির চেয়ে গুরুতর সমস্যা দেখা যায়। এর লক্ষণগুলোর মধ্যে রয়েছে উচ্চ জ্বর, শরীর ও পেশিতে প্রচণ্ড ব্যথা, ক্লান্তি এবং গাঢ় কাশি।
রেসপিরেটরি সিনসিশিয়াল ভাইরাস বা আরএসভি: এটি শিশুদের মধ্যে ব্রঙ্কিওলাইটিসের মতো গুরুতর শ্বাসতন্ত্রের সংক্রমণ ঘটায়।
এ ধরনের রোগ নিউমোনিয়া অথবা স্ট্রেপটোকক্কাসজনিত গলাব্যথার মতো কিছু ক্ষেত্রে গুরুতর ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণের দিকে মোড় নিতে পারে, যা অ্যান্টিবায়োটিকের মাধ্যমে চিকিৎসার প্রয়োজন হয়।
সংক্রমণ এড়াতে এবং রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বাড়াতে কিছু সহজ পদক্ষেপ নেওয়া যেতে পারে। যেমন—
ব্যক্তিগত পরিচ্ছন্নতা নিশ্চিত করা: নিয়মিত সাবান ও পানি দিয়ে খাওয়ার আগে, টয়লেট ব্যবহারের পরে, হাঁচি-কাশি দেওয়ার পরে, অপরিচ্ছন্ন কিছু স্পর্শ করার পর হাত ধোয়া জরুরি। হাঁচি-কাশির সময় রুমাল বা টিস্যু ব্যবহার করা এবং ব্যবহৃত টিস্যু নির্দিষ্ট স্থানে ফেলা উচিত।
পুষ্টিকর খাবার খাওয়া এবং পানি পান করা: পর্যাপ্ত ভিটামিন ‘সি’সমৃদ্ধ ফল; যেমন লেবু, কমলা, আমলকী ইত্যাদি এবং শাকসবজি খেয়ে রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বাড়াতে হবে। পানিশূন্যতা এড়াতে হালকা গরম পানি পান করুন।
উষ্ণতা বজায় রাখা: কান, মাথা ও গলা ঢেকে গরম জামাকাপড় পরুন। ঘর উষ্ণ রাখুন এবং সরাসরি ঠান্ডা বাতাস এড়িয়ে চলুন।
ভিড় এড়িয়ে চলা: অসুস্থতা চলাকালে যেকোনো ভিড় অথবা জনসমাগমপূর্ণ স্থানে যাওয়া থেকে বিরত থাকুন।
টিকা নেওয়া: শিশু, বয়স্ক বা দীর্ঘমেয়াদি রোগীদের মতো ঝুঁকিপূর্ণ মানুষ চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে ইনফ্লুয়েঞ্জা এবং নিউমোনিয়ার টিকা নিতে পারেন।
সহকারী অধ্যাপক, মাইক্রোবায়োলজি বিভাগ, ঢাকা মেডিকেল কলেজ।

শীতকাল মানেই শুষ্ক, ঠান্ডা আবহাওয়া এবং তার সঙ্গে রোগজীবাণুর সহজ সংক্রমণ। এ সময় প্রধানত ভাইরাস ও ব্যাকটেরিয়াজনিত শ্বাসতন্ত্রের রোগগুলো দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। ঠান্ডা আবহাওয়ার কারণে আমাদের রোগ প্রতিরোধক্ষমতা কিছুটা দুর্বল হয় এবং বদ্ধ জায়গায় মানুষ কাছাকাছি থাকায় রোগ সংক্রমণের ঝুঁকি বাড়ে।
সাধারণ সর্দি-কাশি: রাইনোভাইরাস দিয়ে সংক্রমণ হলে হাঁচি, নাক দিয়ে পানি পড়া এবং হালকা গলাব্যথা পর্যন্ত হতে পারে।
ইনফ্লুয়েঞ্জা: ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাসের সংক্রমণ হলে সাধারণ সর্দির চেয়ে গুরুতর সমস্যা দেখা যায়। এর লক্ষণগুলোর মধ্যে রয়েছে উচ্চ জ্বর, শরীর ও পেশিতে প্রচণ্ড ব্যথা, ক্লান্তি এবং গাঢ় কাশি।
রেসপিরেটরি সিনসিশিয়াল ভাইরাস বা আরএসভি: এটি শিশুদের মধ্যে ব্রঙ্কিওলাইটিসের মতো গুরুতর শ্বাসতন্ত্রের সংক্রমণ ঘটায়।
এ ধরনের রোগ নিউমোনিয়া অথবা স্ট্রেপটোকক্কাসজনিত গলাব্যথার মতো কিছু ক্ষেত্রে গুরুতর ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণের দিকে মোড় নিতে পারে, যা অ্যান্টিবায়োটিকের মাধ্যমে চিকিৎসার প্রয়োজন হয়।
সংক্রমণ এড়াতে এবং রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বাড়াতে কিছু সহজ পদক্ষেপ নেওয়া যেতে পারে। যেমন—
ব্যক্তিগত পরিচ্ছন্নতা নিশ্চিত করা: নিয়মিত সাবান ও পানি দিয়ে খাওয়ার আগে, টয়লেট ব্যবহারের পরে, হাঁচি-কাশি দেওয়ার পরে, অপরিচ্ছন্ন কিছু স্পর্শ করার পর হাত ধোয়া জরুরি। হাঁচি-কাশির সময় রুমাল বা টিস্যু ব্যবহার করা এবং ব্যবহৃত টিস্যু নির্দিষ্ট স্থানে ফেলা উচিত।
পুষ্টিকর খাবার খাওয়া এবং পানি পান করা: পর্যাপ্ত ভিটামিন ‘সি’সমৃদ্ধ ফল; যেমন লেবু, কমলা, আমলকী ইত্যাদি এবং শাকসবজি খেয়ে রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বাড়াতে হবে। পানিশূন্যতা এড়াতে হালকা গরম পানি পান করুন।
উষ্ণতা বজায় রাখা: কান, মাথা ও গলা ঢেকে গরম জামাকাপড় পরুন। ঘর উষ্ণ রাখুন এবং সরাসরি ঠান্ডা বাতাস এড়িয়ে চলুন।
ভিড় এড়িয়ে চলা: অসুস্থতা চলাকালে যেকোনো ভিড় অথবা জনসমাগমপূর্ণ স্থানে যাওয়া থেকে বিরত থাকুন।
টিকা নেওয়া: শিশু, বয়স্ক বা দীর্ঘমেয়াদি রোগীদের মতো ঝুঁকিপূর্ণ মানুষ চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে ইনফ্লুয়েঞ্জা এবং নিউমোনিয়ার টিকা নিতে পারেন।
সহকারী অধ্যাপক, মাইক্রোবায়োলজি বিভাগ, ঢাকা মেডিকেল কলেজ।

ইন্টারনেটে ঘাঁটাঘাঁটি করে নিজেদের রোগ নির্ণয়ের চেষ্টা করেন অনেকেই। এই ধরনের সাইবারকন্ড্রিয়াক ব্যক্তিরা তাঁদের শারীরিক বা মানসিক অবস্থার সঙ্গে সম্পর্কিত যেকোনো উপসর্গ বা অসুস্থতার তথ্য জানার জন্য ইন্টারনেটে প্রচুর খোঁজাখুঁজি করেন, যা প্রায়ই তাঁদের উদ্বেগ বা অস্থিরতা আরও বাড়িয়ে তোলে। তবে এখন সাইবারকন্
০৮ জানুয়ারি ২০২৫
গুলিবিদ্ধ হয়ে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদির অবস্থা আশঙ্কাজনক। গুলিতে তাঁর মস্তিষ্ক মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং তাঁর ফুসফুসেও আঘাত রয়েছে। তাঁকে কনজারভেটিভ ম্যানেজমেন্টে অর্থাৎ অস্ত্রোপচার ছাড়া নিবিড় পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে...
১৫ ঘণ্টা আগে
ডিসেম্বর মানেই হাড়কাঁপানো শীত। আর শীত মানেই খাবারের উৎসব। খেজুরের রস, পিঠা পায়েসের কমতি হয় না এ ঋতুতে। কনকনে ঠান্ডার বিপক্ষে যুদ্ধে আমাদের প্রধান হাতিয়ার খাবার। তবে সঠিক খাবার বাছাই করা না গেলে হিতে বিপরীত হতে পারে।
১ দিন আগে
চিকিৎসাবিজ্ঞানে সব বন্ধ্যত্বের ৩০ থেকে ৪০ শতাংশের জন্য পুরুষের সমস্যা দায়ী। এ ছাড়া পুরুষের বীর্যে শুক্রাণুর সংখ্যা কমে গেলে, শুক্রাণুর গতি কম থাকলে কিংবা একেবারেই শুক্রাণু না পাওয়া গেলে এবং স্বামী-স্ত্রী নিয়মিত সহবাসের পরও যদি এক বছরের মধ্যে গর্ভধারণ না হয়, তাহলে সেটিকে বলা হয় পুরুষ বন্ধ্যত্ব।
১ দিন আগে