মুহাম্মাদ শফিউল্লাহ, ঢাকা

দেশের গ্রামাঞ্চলে প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান কমিউনিটি ক্লিনিক। তবে শুরুতেই কম বরাদ্দ এবং নিম্নমানের নির্মাণসামগ্রী ব্যবহারের কারণে বিদ্যমান সাড়ে ১৪ হাজারের মধ্যে এক-তৃতীয়াংশ ক্লিনিকের অবকাঠামোই ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। ব্যবহার-অনুপযোগী এ বিপুলসংখ্যক অবকাঠামো পুনর্নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
৫ হাজার ৮০টি ক্লিনিককে উচ্চ ও মধ্যম ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করে তালিকা তৈরি করেছে সংশ্লিষ্ট কার্যালয়। তালিকাটি সরকারের উন্নয়ন পরিকল্পনায় অন্তর্ভুক্তির জন্য ইতিমধ্যে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে।
গ্রামীণ দরিদ্র ও সুবিধাবঞ্চিত মানুষের জন্য মানসম্মত প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে ১৯৯৬ সালে কমিউনিটি ক্লিনিক স্থাপনের পরিকল্পনা নেওয়া হয়। প্রতি ৬ হাজার মানুষের জন্য একটি করে কেন্দ্র তৈরির সিদ্ধান্ত হয়। ক্লিনিকগুলো নির্মাণের কার্যক্রম শুরু হয় ১৯৯৮ সালে, অর্থাৎ আজ থেকে ২৭ বছর আগে। ক্লিনিকগুলো প্রথমদিকে কমিউনিটি-বেস্ড হেলথকেয়ার (সিবিএইচসি) কর্মসূচির মাধ্যমে পরিচালিত হয়। ২০১৮ সালে এর কার্যক্রমকে টেকসই করতে কমিউনিটি ক্লিনিক স্বাস্থ্য সহায়তা ট্রাস্ট আইন প্রণয়ন করা হয় এবং পরবর্তী সময়ে একটি ট্রাস্ট এই স্থানীয় স্বাস্থ্যসেবা কর্মসূচি পরিচালনার দায়িত্ব নেয়।
‘স্বাস্থ্য, জনসংখ্যা ও পুষ্টি সেক্টর কর্মসূচি’ (এইচপিএনএসপি) নামে অপারেশনাল প্ল্যানের মেয়াদ গত বছর শেষ হওয়া সত্ত্বেও নতুন কর্মসূচি নেওয়া হয়নি। এ কারণে বর্তমানে ট্রাস্টের মাধ্যমেই রাজস্ব খাত থেকে কমিউনিটি ক্লিনিকগুলো পরিচালিত হচ্ছে। প্রসঙ্গত, দেশের স্বাস্থ্য খাতের সিংহভাগ অবকাঠামো ও প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবাসহ ৩০টির বেশি কর্মসূচি পরিচালিত হয় এইচপিএনএসপির আওতায়।
কমিউনিটি ক্লিনিক স্বাস্থ্য সহায়তা ট্রাস্ট জানায়, ২০২১ সাল পর্যন্ত ১৪ হাজার ১৪১টি কমিউনিটি ক্লিনিক নির্মাণ করা হয়েছে। শুরুর দুই বছরে ১০ হাজার ৭২৩টি ক্লিনিক কম ব্যয়ে নির্মিত হওয়ায় এগুলোর আয়ুষ্কাল দ্রুত শেষ হতে থাকে। ২০০৯-১৫ সালে ১ হাজার ৬২০ কোটি টাকা ব্যয়ে এসব ক্লিনিক সংস্কার ও নতুন ক্লিনিক নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়। প্রথম পর্যায়ে নির্মিত ১০ হাজার ৭২৩টির মধ্যে ১০ হাজার ৬২৪টিই সংস্কার করা হয় এবং হাওর ও পাহাড়সহ দুর্গম এলাকায় নতুন করে ২ হাজার ৭৩৭টি ক্লিনিক তৈরি করা হয়। ১৯৯৮-২০০১ সাল সময়ে প্রতিটি ক্লিনিক তুলনামূলকভাবে বেশ কম ব্যয়ে (১ থেকে সোয়া ১ লাখ টাকা) নির্মাণ করা হয়েছিল। এ কারণে নিম্নমানের নির্মাণসামগ্রী ব্যবহার করা হয়। পরবর্তী সময়ে এগুলো ৬ থেকে ৭ লাখ টাকায় মেরামত করা হয়েছে। ক্লিনিকগুলো এখন দুই কক্ষের পরিবর্তে চার কক্ষের এবং উন্নত অবকাঠামোয় নির্মাণ করার পরিকল্পনা রয়েছে।
সরকারের তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে ১৪ হাজার ৪২৫টি কমিউনিটি ক্লিনিকের মধ্যে সক্রিয় রয়েছে ১৪ হাজার ৩৬৩টি। সচল ক্লিনিকের মধ্যে ৫ হাজার ৮০টিকে উচ্চ ও মধ্যম ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করে মন্ত্রণালয়ে তালিকা পাঠানো হয়েছে।
তালিকা অনুযায়ী, ঢাকা বিভাগে ৫৯৩টি উচ্চ ও ২৭২টি মধ্যম, রংপুরে ৪১৪টি উচ্চ ও ৩০৯টি মধ্যম, খুলনায় ৩০৩টি উচ্চ ও ২৯৭টি মধ্যম, সিলেটে ১৬২টি উচ্চ ও ১১৪টি মধ্যম, ময়মনসিংহে ৩৬১টি উচ্চ ও ১১৪টি মধ্যম, রাজশাহীতে ৪১৩টি উচ্চ ও ২৫৫টি মধ্যম, বরিশালে ৩১৭টি উচ্চ ও ১৭৪টি মধ্যম এবং চট্টগ্রামে ৫৭৩টি উচ্চ ও ২৯৮টি মধ্যম ঝুঁকিপূর্ণ ক্লিনিক রয়েছে।
সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, পুনর্নির্মাণের পাশাপাশি কমিউনিটি ক্লিনিকের সংখ্যা বাড়ানোরও পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। জাপান সরকারের বৈদেশিক সহায়তা সংস্থা জাইকার অর্থায়নে ৫০০টি ক্লিনিক নির্মাণ করা হবে।
প্রথম দুই বছরে নির্মিত ১০ হাজার কমিউনিটি ক্লিনিকের মধ্যে অধিকাংশকে ২০২২ সালে পুনর্নির্মাণ ও সংস্কারের উদ্যোগ নিয়েছিল সরকার। তখন থেকে বেশ কিছুসংখ্যক ক্লিনিক নতুন করে নির্মাণ করা হয়।
কমিউনিটি ক্লিনিক স্বাস্থ্য সহায়তা ট্রাস্টের পরিচালক (মাঠ প্রশাসন) ডা. আসিফ মাহমুদ আজকের পত্রিকাকে বলেন, ২০২২ সাল থেকে এখন পর্যন্ত কিছু ক্লিনিক পুনর্নির্মিত হয়েছে। তবে এখন তালিকা ধরে আরও অনেক ক্লিনিক পুনর্নির্মাণ করা হবে। যেসব ক্লিনিক পুরো নতুন করে নির্মাণ করা প্রয়োজন, তার তালিকা হালনাগাদ করা হচ্ছে। এটা চলমান প্রক্রিয়া। যেসব ক্লিনিকের বিষয়ে সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হয়েছে, সেগুলোর তালিকা মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে।
ডা. আসিফ মাহমুদ আরও বলেন, ‘উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ বলতে যেসব ক্লিনিক এখনই নতুন করে নির্মাণ করা দরকার, সেগুলোকে বোঝানো হয়েছে। মধ্যম ঝুঁকিপূর্ণ হলো তার পরের স্তর। তবে উচ্চ বা মধ্যম ঝুঁকি যা-ই হোক, সবই পুনর্নির্মাণ প্রয়োজন। এসব ভবন দিয়ে কাজ চালানো যাবে না।’
জানা গেছে, ঝুঁকিপূর্ণ ক্লিনিকের মধ্যে বেশ কয়েকটিতে কার্যক্রম চালানো যাচ্ছে না। ক্লিনিকের কাজ চলছে স্থানীয় বিদ্যালয়, অন্য কোনো সরকারি স্থাপনা অথবা স্থানীয় লোকজনের বাড়ির উঠানে। এতে স্বাভাবিক সেবা ব্যাহত হচ্ছে।
কিছু ক্লিনিকের কাজ পাশের কোনো স্থাপনায় চলছে স্বীকার করলেও সেবা ব্যাহত হচ্ছে না বলেই দাবি করেছেন ট্রাস্টের পরিচালক আসিফ মাহমুদ।
কমিউনিটি ক্লিনিকগুলো মাতৃত্বকালীন, গর্ভকালীন ও প্রসূতি সেবা, শিশুরোগের সমন্বিত চিকিৎসা, প্রজনন স্বাস্থ্য, পরিবার পরিকল্পনা, টিকাদান, নবদম্পতি নিবন্ধন, জন্ম-মৃত্যু ও প্রসবের সম্ভাব্য তারিখ নিবন্ধন, পুষ্টি শিক্ষা ও পুষ্টিকর খাদ্য সরবরাহ করে। বছরে প্রায় ১৬ কোটি মানুষ এই ক্লিনিকের সেবা গ্রহণ করেন।
পুনর্নির্মাণের মডেল যেমন হবে
ক্লিনিকের পুনর্নির্মাণের জন্য দুটি মডেল তৈরি করা হয়েছে। সমতল জমিতে যেসব ক্লিনিক নির্মাণ করা হবে, সেগুলোর ব্যয় ধরা হয়েছে ৩৫ লাখ টাকা। উঁচু বা দুর্গম এলাকার ক্লিনিকপ্রতি ব্যয় হবে ৫০ লাখ টাকা।
ট্রাস্টের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. আখতারুজ্জামান বলেন, ‘নতুন পরিকল্পনায় সাধারণ জমি ও উঁচু-দুর্গম এলাকার জন্য আলাদা মডেল তৈরি করা হয়েছে। এতে ভবনগুলো আরও টেকসই হবে। এটি সেবার মান বৃদ্ধিতেও সহায়ক হবে।’
জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, কমিউনিটি ক্লিনিকের ভবন এমনভাবে নির্মাণ করতে হবে, যেন কয়েক দশক ধরে সেবা দেওয়া সম্ভব হয়। এ ছাড়া সরকার ও ট্রাস্টের দায়িত্ব স্পষ্ট করতে হবে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাস্থ্য অর্থনীতি ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক ড. সৈয়দ আব্দুল হামিদ বলেন, ‘প্রধানত পরিকল্পনার অভাব ও দুর্নীতির কারণে বাংলাদেশে সরকারি খাতের অনেক অবকাঠামো টেকসই হয় না। শুরুতে কমিউনিটি ক্লিনিকের ভবনের মানে তেমন গুরুত্ব দেওয়া হয়নি। সংখ্যায় গুরুত্ব দেওয়া হয়েছিল।’
তাঁর মতে, ক্লিনিকগুলো যেভাবে গড়ে তোলার পরিকল্পনা করা হয়েছিল, তা-ও বাস্তবায়িত হয়নি। রোগ প্রতিরোধমূলক ও স্বাস্থ্য বিষয়ে সচেতনতা সৃষ্টির কেন্দ্র না হয়ে, এটি মূলত রোগের চিকিৎসাসেবার কেন্দ্র হিসেবে কাজ করছে। মেডিকেল শিক্ষায় প্রশিক্ষিত জনবলের বদলে সাধারণ শিক্ষিত ব্যক্তিদের স্বাস্থ্যসেবাকর্মী নিয়োগ করা হয়েছে।’
ড. সৈয়দ আব্দুল হামিদ বলেন, দুর্বল অবকাঠামো ও সীমিত জায়গা ছাড়াও অনগ্রসর ও দূরবর্তী এলাকায় ক্লিনিকগুলোর অবস্থানও বড় সমস্যা। এটি সেবা দেওয়ার ক্ষেত্রে জটিলতা সৃষ্টি করছে।

দেশের গ্রামাঞ্চলে প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান কমিউনিটি ক্লিনিক। তবে শুরুতেই কম বরাদ্দ এবং নিম্নমানের নির্মাণসামগ্রী ব্যবহারের কারণে বিদ্যমান সাড়ে ১৪ হাজারের মধ্যে এক-তৃতীয়াংশ ক্লিনিকের অবকাঠামোই ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। ব্যবহার-অনুপযোগী এ বিপুলসংখ্যক অবকাঠামো পুনর্নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
৫ হাজার ৮০টি ক্লিনিককে উচ্চ ও মধ্যম ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করে তালিকা তৈরি করেছে সংশ্লিষ্ট কার্যালয়। তালিকাটি সরকারের উন্নয়ন পরিকল্পনায় অন্তর্ভুক্তির জন্য ইতিমধ্যে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে।
গ্রামীণ দরিদ্র ও সুবিধাবঞ্চিত মানুষের জন্য মানসম্মত প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে ১৯৯৬ সালে কমিউনিটি ক্লিনিক স্থাপনের পরিকল্পনা নেওয়া হয়। প্রতি ৬ হাজার মানুষের জন্য একটি করে কেন্দ্র তৈরির সিদ্ধান্ত হয়। ক্লিনিকগুলো নির্মাণের কার্যক্রম শুরু হয় ১৯৯৮ সালে, অর্থাৎ আজ থেকে ২৭ বছর আগে। ক্লিনিকগুলো প্রথমদিকে কমিউনিটি-বেস্ড হেলথকেয়ার (সিবিএইচসি) কর্মসূচির মাধ্যমে পরিচালিত হয়। ২০১৮ সালে এর কার্যক্রমকে টেকসই করতে কমিউনিটি ক্লিনিক স্বাস্থ্য সহায়তা ট্রাস্ট আইন প্রণয়ন করা হয় এবং পরবর্তী সময়ে একটি ট্রাস্ট এই স্থানীয় স্বাস্থ্যসেবা কর্মসূচি পরিচালনার দায়িত্ব নেয়।
‘স্বাস্থ্য, জনসংখ্যা ও পুষ্টি সেক্টর কর্মসূচি’ (এইচপিএনএসপি) নামে অপারেশনাল প্ল্যানের মেয়াদ গত বছর শেষ হওয়া সত্ত্বেও নতুন কর্মসূচি নেওয়া হয়নি। এ কারণে বর্তমানে ট্রাস্টের মাধ্যমেই রাজস্ব খাত থেকে কমিউনিটি ক্লিনিকগুলো পরিচালিত হচ্ছে। প্রসঙ্গত, দেশের স্বাস্থ্য খাতের সিংহভাগ অবকাঠামো ও প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবাসহ ৩০টির বেশি কর্মসূচি পরিচালিত হয় এইচপিএনএসপির আওতায়।
কমিউনিটি ক্লিনিক স্বাস্থ্য সহায়তা ট্রাস্ট জানায়, ২০২১ সাল পর্যন্ত ১৪ হাজার ১৪১টি কমিউনিটি ক্লিনিক নির্মাণ করা হয়েছে। শুরুর দুই বছরে ১০ হাজার ৭২৩টি ক্লিনিক কম ব্যয়ে নির্মিত হওয়ায় এগুলোর আয়ুষ্কাল দ্রুত শেষ হতে থাকে। ২০০৯-১৫ সালে ১ হাজার ৬২০ কোটি টাকা ব্যয়ে এসব ক্লিনিক সংস্কার ও নতুন ক্লিনিক নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়। প্রথম পর্যায়ে নির্মিত ১০ হাজার ৭২৩টির মধ্যে ১০ হাজার ৬২৪টিই সংস্কার করা হয় এবং হাওর ও পাহাড়সহ দুর্গম এলাকায় নতুন করে ২ হাজার ৭৩৭টি ক্লিনিক তৈরি করা হয়। ১৯৯৮-২০০১ সাল সময়ে প্রতিটি ক্লিনিক তুলনামূলকভাবে বেশ কম ব্যয়ে (১ থেকে সোয়া ১ লাখ টাকা) নির্মাণ করা হয়েছিল। এ কারণে নিম্নমানের নির্মাণসামগ্রী ব্যবহার করা হয়। পরবর্তী সময়ে এগুলো ৬ থেকে ৭ লাখ টাকায় মেরামত করা হয়েছে। ক্লিনিকগুলো এখন দুই কক্ষের পরিবর্তে চার কক্ষের এবং উন্নত অবকাঠামোয় নির্মাণ করার পরিকল্পনা রয়েছে।
সরকারের তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে ১৪ হাজার ৪২৫টি কমিউনিটি ক্লিনিকের মধ্যে সক্রিয় রয়েছে ১৪ হাজার ৩৬৩টি। সচল ক্লিনিকের মধ্যে ৫ হাজার ৮০টিকে উচ্চ ও মধ্যম ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করে মন্ত্রণালয়ে তালিকা পাঠানো হয়েছে।
তালিকা অনুযায়ী, ঢাকা বিভাগে ৫৯৩টি উচ্চ ও ২৭২টি মধ্যম, রংপুরে ৪১৪টি উচ্চ ও ৩০৯টি মধ্যম, খুলনায় ৩০৩টি উচ্চ ও ২৯৭টি মধ্যম, সিলেটে ১৬২টি উচ্চ ও ১১৪টি মধ্যম, ময়মনসিংহে ৩৬১টি উচ্চ ও ১১৪টি মধ্যম, রাজশাহীতে ৪১৩টি উচ্চ ও ২৫৫টি মধ্যম, বরিশালে ৩১৭টি উচ্চ ও ১৭৪টি মধ্যম এবং চট্টগ্রামে ৫৭৩টি উচ্চ ও ২৯৮টি মধ্যম ঝুঁকিপূর্ণ ক্লিনিক রয়েছে।
সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, পুনর্নির্মাণের পাশাপাশি কমিউনিটি ক্লিনিকের সংখ্যা বাড়ানোরও পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। জাপান সরকারের বৈদেশিক সহায়তা সংস্থা জাইকার অর্থায়নে ৫০০টি ক্লিনিক নির্মাণ করা হবে।
প্রথম দুই বছরে নির্মিত ১০ হাজার কমিউনিটি ক্লিনিকের মধ্যে অধিকাংশকে ২০২২ সালে পুনর্নির্মাণ ও সংস্কারের উদ্যোগ নিয়েছিল সরকার। তখন থেকে বেশ কিছুসংখ্যক ক্লিনিক নতুন করে নির্মাণ করা হয়।
কমিউনিটি ক্লিনিক স্বাস্থ্য সহায়তা ট্রাস্টের পরিচালক (মাঠ প্রশাসন) ডা. আসিফ মাহমুদ আজকের পত্রিকাকে বলেন, ২০২২ সাল থেকে এখন পর্যন্ত কিছু ক্লিনিক পুনর্নির্মিত হয়েছে। তবে এখন তালিকা ধরে আরও অনেক ক্লিনিক পুনর্নির্মাণ করা হবে। যেসব ক্লিনিক পুরো নতুন করে নির্মাণ করা প্রয়োজন, তার তালিকা হালনাগাদ করা হচ্ছে। এটা চলমান প্রক্রিয়া। যেসব ক্লিনিকের বিষয়ে সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হয়েছে, সেগুলোর তালিকা মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে।
ডা. আসিফ মাহমুদ আরও বলেন, ‘উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ বলতে যেসব ক্লিনিক এখনই নতুন করে নির্মাণ করা দরকার, সেগুলোকে বোঝানো হয়েছে। মধ্যম ঝুঁকিপূর্ণ হলো তার পরের স্তর। তবে উচ্চ বা মধ্যম ঝুঁকি যা-ই হোক, সবই পুনর্নির্মাণ প্রয়োজন। এসব ভবন দিয়ে কাজ চালানো যাবে না।’
জানা গেছে, ঝুঁকিপূর্ণ ক্লিনিকের মধ্যে বেশ কয়েকটিতে কার্যক্রম চালানো যাচ্ছে না। ক্লিনিকের কাজ চলছে স্থানীয় বিদ্যালয়, অন্য কোনো সরকারি স্থাপনা অথবা স্থানীয় লোকজনের বাড়ির উঠানে। এতে স্বাভাবিক সেবা ব্যাহত হচ্ছে।
কিছু ক্লিনিকের কাজ পাশের কোনো স্থাপনায় চলছে স্বীকার করলেও সেবা ব্যাহত হচ্ছে না বলেই দাবি করেছেন ট্রাস্টের পরিচালক আসিফ মাহমুদ।
কমিউনিটি ক্লিনিকগুলো মাতৃত্বকালীন, গর্ভকালীন ও প্রসূতি সেবা, শিশুরোগের সমন্বিত চিকিৎসা, প্রজনন স্বাস্থ্য, পরিবার পরিকল্পনা, টিকাদান, নবদম্পতি নিবন্ধন, জন্ম-মৃত্যু ও প্রসবের সম্ভাব্য তারিখ নিবন্ধন, পুষ্টি শিক্ষা ও পুষ্টিকর খাদ্য সরবরাহ করে। বছরে প্রায় ১৬ কোটি মানুষ এই ক্লিনিকের সেবা গ্রহণ করেন।
পুনর্নির্মাণের মডেল যেমন হবে
ক্লিনিকের পুনর্নির্মাণের জন্য দুটি মডেল তৈরি করা হয়েছে। সমতল জমিতে যেসব ক্লিনিক নির্মাণ করা হবে, সেগুলোর ব্যয় ধরা হয়েছে ৩৫ লাখ টাকা। উঁচু বা দুর্গম এলাকার ক্লিনিকপ্রতি ব্যয় হবে ৫০ লাখ টাকা।
ট্রাস্টের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. আখতারুজ্জামান বলেন, ‘নতুন পরিকল্পনায় সাধারণ জমি ও উঁচু-দুর্গম এলাকার জন্য আলাদা মডেল তৈরি করা হয়েছে। এতে ভবনগুলো আরও টেকসই হবে। এটি সেবার মান বৃদ্ধিতেও সহায়ক হবে।’
জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, কমিউনিটি ক্লিনিকের ভবন এমনভাবে নির্মাণ করতে হবে, যেন কয়েক দশক ধরে সেবা দেওয়া সম্ভব হয়। এ ছাড়া সরকার ও ট্রাস্টের দায়িত্ব স্পষ্ট করতে হবে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাস্থ্য অর্থনীতি ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক ড. সৈয়দ আব্দুল হামিদ বলেন, ‘প্রধানত পরিকল্পনার অভাব ও দুর্নীতির কারণে বাংলাদেশে সরকারি খাতের অনেক অবকাঠামো টেকসই হয় না। শুরুতে কমিউনিটি ক্লিনিকের ভবনের মানে তেমন গুরুত্ব দেওয়া হয়নি। সংখ্যায় গুরুত্ব দেওয়া হয়েছিল।’
তাঁর মতে, ক্লিনিকগুলো যেভাবে গড়ে তোলার পরিকল্পনা করা হয়েছিল, তা-ও বাস্তবায়িত হয়নি। রোগ প্রতিরোধমূলক ও স্বাস্থ্য বিষয়ে সচেতনতা সৃষ্টির কেন্দ্র না হয়ে, এটি মূলত রোগের চিকিৎসাসেবার কেন্দ্র হিসেবে কাজ করছে। মেডিকেল শিক্ষায় প্রশিক্ষিত জনবলের বদলে সাধারণ শিক্ষিত ব্যক্তিদের স্বাস্থ্যসেবাকর্মী নিয়োগ করা হয়েছে।’
ড. সৈয়দ আব্দুল হামিদ বলেন, দুর্বল অবকাঠামো ও সীমিত জায়গা ছাড়াও অনগ্রসর ও দূরবর্তী এলাকায় ক্লিনিকগুলোর অবস্থানও বড় সমস্যা। এটি সেবা দেওয়ার ক্ষেত্রে জটিলতা সৃষ্টি করছে।
মুহাম্মাদ শফিউল্লাহ, ঢাকা

দেশের গ্রামাঞ্চলে প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান কমিউনিটি ক্লিনিক। তবে শুরুতেই কম বরাদ্দ এবং নিম্নমানের নির্মাণসামগ্রী ব্যবহারের কারণে বিদ্যমান সাড়ে ১৪ হাজারের মধ্যে এক-তৃতীয়াংশ ক্লিনিকের অবকাঠামোই ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। ব্যবহার-অনুপযোগী এ বিপুলসংখ্যক অবকাঠামো পুনর্নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
৫ হাজার ৮০টি ক্লিনিককে উচ্চ ও মধ্যম ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করে তালিকা তৈরি করেছে সংশ্লিষ্ট কার্যালয়। তালিকাটি সরকারের উন্নয়ন পরিকল্পনায় অন্তর্ভুক্তির জন্য ইতিমধ্যে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে।
গ্রামীণ দরিদ্র ও সুবিধাবঞ্চিত মানুষের জন্য মানসম্মত প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে ১৯৯৬ সালে কমিউনিটি ক্লিনিক স্থাপনের পরিকল্পনা নেওয়া হয়। প্রতি ৬ হাজার মানুষের জন্য একটি করে কেন্দ্র তৈরির সিদ্ধান্ত হয়। ক্লিনিকগুলো নির্মাণের কার্যক্রম শুরু হয় ১৯৯৮ সালে, অর্থাৎ আজ থেকে ২৭ বছর আগে। ক্লিনিকগুলো প্রথমদিকে কমিউনিটি-বেস্ড হেলথকেয়ার (সিবিএইচসি) কর্মসূচির মাধ্যমে পরিচালিত হয়। ২০১৮ সালে এর কার্যক্রমকে টেকসই করতে কমিউনিটি ক্লিনিক স্বাস্থ্য সহায়তা ট্রাস্ট আইন প্রণয়ন করা হয় এবং পরবর্তী সময়ে একটি ট্রাস্ট এই স্থানীয় স্বাস্থ্যসেবা কর্মসূচি পরিচালনার দায়িত্ব নেয়।
‘স্বাস্থ্য, জনসংখ্যা ও পুষ্টি সেক্টর কর্মসূচি’ (এইচপিএনএসপি) নামে অপারেশনাল প্ল্যানের মেয়াদ গত বছর শেষ হওয়া সত্ত্বেও নতুন কর্মসূচি নেওয়া হয়নি। এ কারণে বর্তমানে ট্রাস্টের মাধ্যমেই রাজস্ব খাত থেকে কমিউনিটি ক্লিনিকগুলো পরিচালিত হচ্ছে। প্রসঙ্গত, দেশের স্বাস্থ্য খাতের সিংহভাগ অবকাঠামো ও প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবাসহ ৩০টির বেশি কর্মসূচি পরিচালিত হয় এইচপিএনএসপির আওতায়।
কমিউনিটি ক্লিনিক স্বাস্থ্য সহায়তা ট্রাস্ট জানায়, ২০২১ সাল পর্যন্ত ১৪ হাজার ১৪১টি কমিউনিটি ক্লিনিক নির্মাণ করা হয়েছে। শুরুর দুই বছরে ১০ হাজার ৭২৩টি ক্লিনিক কম ব্যয়ে নির্মিত হওয়ায় এগুলোর আয়ুষ্কাল দ্রুত শেষ হতে থাকে। ২০০৯-১৫ সালে ১ হাজার ৬২০ কোটি টাকা ব্যয়ে এসব ক্লিনিক সংস্কার ও নতুন ক্লিনিক নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়। প্রথম পর্যায়ে নির্মিত ১০ হাজার ৭২৩টির মধ্যে ১০ হাজার ৬২৪টিই সংস্কার করা হয় এবং হাওর ও পাহাড়সহ দুর্গম এলাকায় নতুন করে ২ হাজার ৭৩৭টি ক্লিনিক তৈরি করা হয়। ১৯৯৮-২০০১ সাল সময়ে প্রতিটি ক্লিনিক তুলনামূলকভাবে বেশ কম ব্যয়ে (১ থেকে সোয়া ১ লাখ টাকা) নির্মাণ করা হয়েছিল। এ কারণে নিম্নমানের নির্মাণসামগ্রী ব্যবহার করা হয়। পরবর্তী সময়ে এগুলো ৬ থেকে ৭ লাখ টাকায় মেরামত করা হয়েছে। ক্লিনিকগুলো এখন দুই কক্ষের পরিবর্তে চার কক্ষের এবং উন্নত অবকাঠামোয় নির্মাণ করার পরিকল্পনা রয়েছে।
সরকারের তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে ১৪ হাজার ৪২৫টি কমিউনিটি ক্লিনিকের মধ্যে সক্রিয় রয়েছে ১৪ হাজার ৩৬৩টি। সচল ক্লিনিকের মধ্যে ৫ হাজার ৮০টিকে উচ্চ ও মধ্যম ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করে মন্ত্রণালয়ে তালিকা পাঠানো হয়েছে।
তালিকা অনুযায়ী, ঢাকা বিভাগে ৫৯৩টি উচ্চ ও ২৭২টি মধ্যম, রংপুরে ৪১৪টি উচ্চ ও ৩০৯টি মধ্যম, খুলনায় ৩০৩টি উচ্চ ও ২৯৭টি মধ্যম, সিলেটে ১৬২টি উচ্চ ও ১১৪টি মধ্যম, ময়মনসিংহে ৩৬১টি উচ্চ ও ১১৪টি মধ্যম, রাজশাহীতে ৪১৩টি উচ্চ ও ২৫৫টি মধ্যম, বরিশালে ৩১৭টি উচ্চ ও ১৭৪টি মধ্যম এবং চট্টগ্রামে ৫৭৩টি উচ্চ ও ২৯৮টি মধ্যম ঝুঁকিপূর্ণ ক্লিনিক রয়েছে।
সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, পুনর্নির্মাণের পাশাপাশি কমিউনিটি ক্লিনিকের সংখ্যা বাড়ানোরও পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। জাপান সরকারের বৈদেশিক সহায়তা সংস্থা জাইকার অর্থায়নে ৫০০টি ক্লিনিক নির্মাণ করা হবে।
প্রথম দুই বছরে নির্মিত ১০ হাজার কমিউনিটি ক্লিনিকের মধ্যে অধিকাংশকে ২০২২ সালে পুনর্নির্মাণ ও সংস্কারের উদ্যোগ নিয়েছিল সরকার। তখন থেকে বেশ কিছুসংখ্যক ক্লিনিক নতুন করে নির্মাণ করা হয়।
কমিউনিটি ক্লিনিক স্বাস্থ্য সহায়তা ট্রাস্টের পরিচালক (মাঠ প্রশাসন) ডা. আসিফ মাহমুদ আজকের পত্রিকাকে বলেন, ২০২২ সাল থেকে এখন পর্যন্ত কিছু ক্লিনিক পুনর্নির্মিত হয়েছে। তবে এখন তালিকা ধরে আরও অনেক ক্লিনিক পুনর্নির্মাণ করা হবে। যেসব ক্লিনিক পুরো নতুন করে নির্মাণ করা প্রয়োজন, তার তালিকা হালনাগাদ করা হচ্ছে। এটা চলমান প্রক্রিয়া। যেসব ক্লিনিকের বিষয়ে সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হয়েছে, সেগুলোর তালিকা মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে।
ডা. আসিফ মাহমুদ আরও বলেন, ‘উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ বলতে যেসব ক্লিনিক এখনই নতুন করে নির্মাণ করা দরকার, সেগুলোকে বোঝানো হয়েছে। মধ্যম ঝুঁকিপূর্ণ হলো তার পরের স্তর। তবে উচ্চ বা মধ্যম ঝুঁকি যা-ই হোক, সবই পুনর্নির্মাণ প্রয়োজন। এসব ভবন দিয়ে কাজ চালানো যাবে না।’
জানা গেছে, ঝুঁকিপূর্ণ ক্লিনিকের মধ্যে বেশ কয়েকটিতে কার্যক্রম চালানো যাচ্ছে না। ক্লিনিকের কাজ চলছে স্থানীয় বিদ্যালয়, অন্য কোনো সরকারি স্থাপনা অথবা স্থানীয় লোকজনের বাড়ির উঠানে। এতে স্বাভাবিক সেবা ব্যাহত হচ্ছে।
কিছু ক্লিনিকের কাজ পাশের কোনো স্থাপনায় চলছে স্বীকার করলেও সেবা ব্যাহত হচ্ছে না বলেই দাবি করেছেন ট্রাস্টের পরিচালক আসিফ মাহমুদ।
কমিউনিটি ক্লিনিকগুলো মাতৃত্বকালীন, গর্ভকালীন ও প্রসূতি সেবা, শিশুরোগের সমন্বিত চিকিৎসা, প্রজনন স্বাস্থ্য, পরিবার পরিকল্পনা, টিকাদান, নবদম্পতি নিবন্ধন, জন্ম-মৃত্যু ও প্রসবের সম্ভাব্য তারিখ নিবন্ধন, পুষ্টি শিক্ষা ও পুষ্টিকর খাদ্য সরবরাহ করে। বছরে প্রায় ১৬ কোটি মানুষ এই ক্লিনিকের সেবা গ্রহণ করেন।
পুনর্নির্মাণের মডেল যেমন হবে
ক্লিনিকের পুনর্নির্মাণের জন্য দুটি মডেল তৈরি করা হয়েছে। সমতল জমিতে যেসব ক্লিনিক নির্মাণ করা হবে, সেগুলোর ব্যয় ধরা হয়েছে ৩৫ লাখ টাকা। উঁচু বা দুর্গম এলাকার ক্লিনিকপ্রতি ব্যয় হবে ৫০ লাখ টাকা।
ট্রাস্টের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. আখতারুজ্জামান বলেন, ‘নতুন পরিকল্পনায় সাধারণ জমি ও উঁচু-দুর্গম এলাকার জন্য আলাদা মডেল তৈরি করা হয়েছে। এতে ভবনগুলো আরও টেকসই হবে। এটি সেবার মান বৃদ্ধিতেও সহায়ক হবে।’
জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, কমিউনিটি ক্লিনিকের ভবন এমনভাবে নির্মাণ করতে হবে, যেন কয়েক দশক ধরে সেবা দেওয়া সম্ভব হয়। এ ছাড়া সরকার ও ট্রাস্টের দায়িত্ব স্পষ্ট করতে হবে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাস্থ্য অর্থনীতি ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক ড. সৈয়দ আব্দুল হামিদ বলেন, ‘প্রধানত পরিকল্পনার অভাব ও দুর্নীতির কারণে বাংলাদেশে সরকারি খাতের অনেক অবকাঠামো টেকসই হয় না। শুরুতে কমিউনিটি ক্লিনিকের ভবনের মানে তেমন গুরুত্ব দেওয়া হয়নি। সংখ্যায় গুরুত্ব দেওয়া হয়েছিল।’
তাঁর মতে, ক্লিনিকগুলো যেভাবে গড়ে তোলার পরিকল্পনা করা হয়েছিল, তা-ও বাস্তবায়িত হয়নি। রোগ প্রতিরোধমূলক ও স্বাস্থ্য বিষয়ে সচেতনতা সৃষ্টির কেন্দ্র না হয়ে, এটি মূলত রোগের চিকিৎসাসেবার কেন্দ্র হিসেবে কাজ করছে। মেডিকেল শিক্ষায় প্রশিক্ষিত জনবলের বদলে সাধারণ শিক্ষিত ব্যক্তিদের স্বাস্থ্যসেবাকর্মী নিয়োগ করা হয়েছে।’
ড. সৈয়দ আব্দুল হামিদ বলেন, দুর্বল অবকাঠামো ও সীমিত জায়গা ছাড়াও অনগ্রসর ও দূরবর্তী এলাকায় ক্লিনিকগুলোর অবস্থানও বড় সমস্যা। এটি সেবা দেওয়ার ক্ষেত্রে জটিলতা সৃষ্টি করছে।

দেশের গ্রামাঞ্চলে প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান কমিউনিটি ক্লিনিক। তবে শুরুতেই কম বরাদ্দ এবং নিম্নমানের নির্মাণসামগ্রী ব্যবহারের কারণে বিদ্যমান সাড়ে ১৪ হাজারের মধ্যে এক-তৃতীয়াংশ ক্লিনিকের অবকাঠামোই ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। ব্যবহার-অনুপযোগী এ বিপুলসংখ্যক অবকাঠামো পুনর্নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
৫ হাজার ৮০টি ক্লিনিককে উচ্চ ও মধ্যম ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করে তালিকা তৈরি করেছে সংশ্লিষ্ট কার্যালয়। তালিকাটি সরকারের উন্নয়ন পরিকল্পনায় অন্তর্ভুক্তির জন্য ইতিমধ্যে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে।
গ্রামীণ দরিদ্র ও সুবিধাবঞ্চিত মানুষের জন্য মানসম্মত প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে ১৯৯৬ সালে কমিউনিটি ক্লিনিক স্থাপনের পরিকল্পনা নেওয়া হয়। প্রতি ৬ হাজার মানুষের জন্য একটি করে কেন্দ্র তৈরির সিদ্ধান্ত হয়। ক্লিনিকগুলো নির্মাণের কার্যক্রম শুরু হয় ১৯৯৮ সালে, অর্থাৎ আজ থেকে ২৭ বছর আগে। ক্লিনিকগুলো প্রথমদিকে কমিউনিটি-বেস্ড হেলথকেয়ার (সিবিএইচসি) কর্মসূচির মাধ্যমে পরিচালিত হয়। ২০১৮ সালে এর কার্যক্রমকে টেকসই করতে কমিউনিটি ক্লিনিক স্বাস্থ্য সহায়তা ট্রাস্ট আইন প্রণয়ন করা হয় এবং পরবর্তী সময়ে একটি ট্রাস্ট এই স্থানীয় স্বাস্থ্যসেবা কর্মসূচি পরিচালনার দায়িত্ব নেয়।
‘স্বাস্থ্য, জনসংখ্যা ও পুষ্টি সেক্টর কর্মসূচি’ (এইচপিএনএসপি) নামে অপারেশনাল প্ল্যানের মেয়াদ গত বছর শেষ হওয়া সত্ত্বেও নতুন কর্মসূচি নেওয়া হয়নি। এ কারণে বর্তমানে ট্রাস্টের মাধ্যমেই রাজস্ব খাত থেকে কমিউনিটি ক্লিনিকগুলো পরিচালিত হচ্ছে। প্রসঙ্গত, দেশের স্বাস্থ্য খাতের সিংহভাগ অবকাঠামো ও প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবাসহ ৩০টির বেশি কর্মসূচি পরিচালিত হয় এইচপিএনএসপির আওতায়।
কমিউনিটি ক্লিনিক স্বাস্থ্য সহায়তা ট্রাস্ট জানায়, ২০২১ সাল পর্যন্ত ১৪ হাজার ১৪১টি কমিউনিটি ক্লিনিক নির্মাণ করা হয়েছে। শুরুর দুই বছরে ১০ হাজার ৭২৩টি ক্লিনিক কম ব্যয়ে নির্মিত হওয়ায় এগুলোর আয়ুষ্কাল দ্রুত শেষ হতে থাকে। ২০০৯-১৫ সালে ১ হাজার ৬২০ কোটি টাকা ব্যয়ে এসব ক্লিনিক সংস্কার ও নতুন ক্লিনিক নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়। প্রথম পর্যায়ে নির্মিত ১০ হাজার ৭২৩টির মধ্যে ১০ হাজার ৬২৪টিই সংস্কার করা হয় এবং হাওর ও পাহাড়সহ দুর্গম এলাকায় নতুন করে ২ হাজার ৭৩৭টি ক্লিনিক তৈরি করা হয়। ১৯৯৮-২০০১ সাল সময়ে প্রতিটি ক্লিনিক তুলনামূলকভাবে বেশ কম ব্যয়ে (১ থেকে সোয়া ১ লাখ টাকা) নির্মাণ করা হয়েছিল। এ কারণে নিম্নমানের নির্মাণসামগ্রী ব্যবহার করা হয়। পরবর্তী সময়ে এগুলো ৬ থেকে ৭ লাখ টাকায় মেরামত করা হয়েছে। ক্লিনিকগুলো এখন দুই কক্ষের পরিবর্তে চার কক্ষের এবং উন্নত অবকাঠামোয় নির্মাণ করার পরিকল্পনা রয়েছে।
সরকারের তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে ১৪ হাজার ৪২৫টি কমিউনিটি ক্লিনিকের মধ্যে সক্রিয় রয়েছে ১৪ হাজার ৩৬৩টি। সচল ক্লিনিকের মধ্যে ৫ হাজার ৮০টিকে উচ্চ ও মধ্যম ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করে মন্ত্রণালয়ে তালিকা পাঠানো হয়েছে।
তালিকা অনুযায়ী, ঢাকা বিভাগে ৫৯৩টি উচ্চ ও ২৭২টি মধ্যম, রংপুরে ৪১৪টি উচ্চ ও ৩০৯টি মধ্যম, খুলনায় ৩০৩টি উচ্চ ও ২৯৭টি মধ্যম, সিলেটে ১৬২টি উচ্চ ও ১১৪টি মধ্যম, ময়মনসিংহে ৩৬১টি উচ্চ ও ১১৪টি মধ্যম, রাজশাহীতে ৪১৩টি উচ্চ ও ২৫৫টি মধ্যম, বরিশালে ৩১৭টি উচ্চ ও ১৭৪টি মধ্যম এবং চট্টগ্রামে ৫৭৩টি উচ্চ ও ২৯৮টি মধ্যম ঝুঁকিপূর্ণ ক্লিনিক রয়েছে।
সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, পুনর্নির্মাণের পাশাপাশি কমিউনিটি ক্লিনিকের সংখ্যা বাড়ানোরও পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। জাপান সরকারের বৈদেশিক সহায়তা সংস্থা জাইকার অর্থায়নে ৫০০টি ক্লিনিক নির্মাণ করা হবে।
প্রথম দুই বছরে নির্মিত ১০ হাজার কমিউনিটি ক্লিনিকের মধ্যে অধিকাংশকে ২০২২ সালে পুনর্নির্মাণ ও সংস্কারের উদ্যোগ নিয়েছিল সরকার। তখন থেকে বেশ কিছুসংখ্যক ক্লিনিক নতুন করে নির্মাণ করা হয়।
কমিউনিটি ক্লিনিক স্বাস্থ্য সহায়তা ট্রাস্টের পরিচালক (মাঠ প্রশাসন) ডা. আসিফ মাহমুদ আজকের পত্রিকাকে বলেন, ২০২২ সাল থেকে এখন পর্যন্ত কিছু ক্লিনিক পুনর্নির্মিত হয়েছে। তবে এখন তালিকা ধরে আরও অনেক ক্লিনিক পুনর্নির্মাণ করা হবে। যেসব ক্লিনিক পুরো নতুন করে নির্মাণ করা প্রয়োজন, তার তালিকা হালনাগাদ করা হচ্ছে। এটা চলমান প্রক্রিয়া। যেসব ক্লিনিকের বিষয়ে সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হয়েছে, সেগুলোর তালিকা মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে।
ডা. আসিফ মাহমুদ আরও বলেন, ‘উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ বলতে যেসব ক্লিনিক এখনই নতুন করে নির্মাণ করা দরকার, সেগুলোকে বোঝানো হয়েছে। মধ্যম ঝুঁকিপূর্ণ হলো তার পরের স্তর। তবে উচ্চ বা মধ্যম ঝুঁকি যা-ই হোক, সবই পুনর্নির্মাণ প্রয়োজন। এসব ভবন দিয়ে কাজ চালানো যাবে না।’
জানা গেছে, ঝুঁকিপূর্ণ ক্লিনিকের মধ্যে বেশ কয়েকটিতে কার্যক্রম চালানো যাচ্ছে না। ক্লিনিকের কাজ চলছে স্থানীয় বিদ্যালয়, অন্য কোনো সরকারি স্থাপনা অথবা স্থানীয় লোকজনের বাড়ির উঠানে। এতে স্বাভাবিক সেবা ব্যাহত হচ্ছে।
কিছু ক্লিনিকের কাজ পাশের কোনো স্থাপনায় চলছে স্বীকার করলেও সেবা ব্যাহত হচ্ছে না বলেই দাবি করেছেন ট্রাস্টের পরিচালক আসিফ মাহমুদ।
কমিউনিটি ক্লিনিকগুলো মাতৃত্বকালীন, গর্ভকালীন ও প্রসূতি সেবা, শিশুরোগের সমন্বিত চিকিৎসা, প্রজনন স্বাস্থ্য, পরিবার পরিকল্পনা, টিকাদান, নবদম্পতি নিবন্ধন, জন্ম-মৃত্যু ও প্রসবের সম্ভাব্য তারিখ নিবন্ধন, পুষ্টি শিক্ষা ও পুষ্টিকর খাদ্য সরবরাহ করে। বছরে প্রায় ১৬ কোটি মানুষ এই ক্লিনিকের সেবা গ্রহণ করেন।
পুনর্নির্মাণের মডেল যেমন হবে
ক্লিনিকের পুনর্নির্মাণের জন্য দুটি মডেল তৈরি করা হয়েছে। সমতল জমিতে যেসব ক্লিনিক নির্মাণ করা হবে, সেগুলোর ব্যয় ধরা হয়েছে ৩৫ লাখ টাকা। উঁচু বা দুর্গম এলাকার ক্লিনিকপ্রতি ব্যয় হবে ৫০ লাখ টাকা।
ট্রাস্টের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. আখতারুজ্জামান বলেন, ‘নতুন পরিকল্পনায় সাধারণ জমি ও উঁচু-দুর্গম এলাকার জন্য আলাদা মডেল তৈরি করা হয়েছে। এতে ভবনগুলো আরও টেকসই হবে। এটি সেবার মান বৃদ্ধিতেও সহায়ক হবে।’
জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, কমিউনিটি ক্লিনিকের ভবন এমনভাবে নির্মাণ করতে হবে, যেন কয়েক দশক ধরে সেবা দেওয়া সম্ভব হয়। এ ছাড়া সরকার ও ট্রাস্টের দায়িত্ব স্পষ্ট করতে হবে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাস্থ্য অর্থনীতি ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক ড. সৈয়দ আব্দুল হামিদ বলেন, ‘প্রধানত পরিকল্পনার অভাব ও দুর্নীতির কারণে বাংলাদেশে সরকারি খাতের অনেক অবকাঠামো টেকসই হয় না। শুরুতে কমিউনিটি ক্লিনিকের ভবনের মানে তেমন গুরুত্ব দেওয়া হয়নি। সংখ্যায় গুরুত্ব দেওয়া হয়েছিল।’
তাঁর মতে, ক্লিনিকগুলো যেভাবে গড়ে তোলার পরিকল্পনা করা হয়েছিল, তা-ও বাস্তবায়িত হয়নি। রোগ প্রতিরোধমূলক ও স্বাস্থ্য বিষয়ে সচেতনতা সৃষ্টির কেন্দ্র না হয়ে, এটি মূলত রোগের চিকিৎসাসেবার কেন্দ্র হিসেবে কাজ করছে। মেডিকেল শিক্ষায় প্রশিক্ষিত জনবলের বদলে সাধারণ শিক্ষিত ব্যক্তিদের স্বাস্থ্যসেবাকর্মী নিয়োগ করা হয়েছে।’
ড. সৈয়দ আব্দুল হামিদ বলেন, দুর্বল অবকাঠামো ও সীমিত জায়গা ছাড়াও অনগ্রসর ও দূরবর্তী এলাকায় ক্লিনিকগুলোর অবস্থানও বড় সমস্যা। এটি সেবা দেওয়ার ক্ষেত্রে জটিলতা সৃষ্টি করছে।

ছয় দফা দাবিতে টানা ষষ্ঠ দিনের মতো আন্দোলন করছেন স্বাস্থ্য সহকারীরা। মহাখালী স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সামনে তাঁদের অবস্থান কর্মসূচি চলছে। শনিবার থেকে সারা দেশের স্বাস্থ্য সহকারীরা ঢাকায় এসে লাগাতার কর্মবিরতির ঘোষণা দিয়েছেন।
১৭ ঘণ্টা আগে
বেতনকাঠামোর দশম গ্রেড বাস্তবায়নের দাবিতে হাসপাতালসহ দেশের সব স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানে চার ঘণ্টা কর্মবিরতি পালন করেছেন মেডিকেল টেকনোলজিস্ট ও ফার্মাসিস্টরা। গতকাল বুধবার সকাল ৮টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত তাঁদের এই কর্মসূচির কারণে চরম দুর্ভোগে পড়ে রোগী এবং তাদের স্বজনেরা। গত ৩০ নভেম্বর থেকে...
১ দিন আগে
দেশের সরকারি ও বেসরকারি সব ধরনের হাসপাতালে প্রতিবছরই বাড়ছে সেবাগ্রহণকারীর সংখ্যা। কিন্তু অধিকাংশ চিকিৎসাকেন্দ্রেই শৌচাগারগুলো ব্যবহারের অযোগ্য অথবা ন্যূনতম মানের নয়। ফলে চিকিৎসা নিতে এসে রোগীরা নানা ভোগান্তিতে পড়ছেন। আর প্রতিবন্ধী রোগীদের ক্ষেত্রে এ ভোগান্তি আরও তীব্র।
২ দিন আগে
দেশে গত এক দিনে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে আরও দুজনের মৃত্যু হয়েছে। এই সময়ে নতুন আক্রান্ত ৫৬৫ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে।
৩ দিন আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

নিয়োগবিধি সংশোধন, বেতনবৈষম্য দূরীকরণ এবং টেকনিক্যাল পদমর্যাদা প্রদানের দাবিতে টানা ষষ্ঠ দিনের মতো আন্দোলন করছেন স্বাস্থ্য সহকারীরা। আজ বৃহস্পতিবার (৪ নভেম্বর) রাজধানীর মহাখালীর স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সামনে দিনভর অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন তাঁরা। আন্দোলনকারীরা ঘোষণা দিয়েছেন, আগামী শনিবার (৬ ডিসেম্বর) থেকে সারা দেশের স্বাস্থ্য সহকারীরা ঢাকায় সমবেত হয়ে লাগাতার কর্মবিরতি পালন করবেন।
গত শনিবার (২৯ নভেম্বর) থেকে শুরু হওয়া কর্মবিরতি প্রথম দুই দিন চলেছিল শহীদ মিনারে। পরে তাঁরা অবস্থান নেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সামনে। বাংলাদেশ হেলথ অ্যাসিস্ট্যান্ট অ্যাসোসিয়েশনের ব্যানারে এ আন্দোলনে অংশ নিয়েছেন দেশের ৬৪ জেলার স্বাস্থ্য সহকারী, সহকারী স্বাস্থ্য পরিদর্শক ও স্বাস্থ্য পরিদর্শকেরা।
এই কর্মসূচির কারণে কয়েক দিন ধরে সারা দেশে ১ লাখ ২০ হাজার অস্থায়ী টিকাদান কেন্দ্রের কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। ফলে টিকা নিতে এসে অনেক মা ও শিশু ফিরে যেতে বাধ্য হচ্ছেন।
স্বাস্থ্য সহকারীদের এ কর্মসূচির কারণে সারা দেশে ১ লাখ ২০ হাজার অস্থায়ী টিকাদান কেন্দ্রের সেবা কয়েক দিন ধরে বন্ধ রয়েছে। এতে টিকা নিতে এসে মা ও শিশুরা ফিরে যাচ্ছেন।
স্বাস্থ্য সহকারীদের দাবি, প্রান্তিক জনগোষ্ঠীকে বঞ্চিত করে কর্মবিরতিতে যেতে তাঁরা চাননি। কিন্তু দীর্ঘদিনের বঞ্চনা ও কর্তৃপক্ষের প্রতিশ্রুতি ভঙ্গের কারণে তাঁরা আন্দোলনে যেতে বাধ্য হয়েছেন। দীর্ঘ ২৭ বছর ধরে বারবার প্রতিশ্রুতির আশ্বাস মিললেও বাস্তবে কোনো অগ্রগতি হয়নি।
দাবি আদায়ে অনড় অবস্থান জানিয়ে নেতারা বলেন, ‘আমাদের ১৬তম গ্রেড থেকে ১৪তম গ্রেডে উন্নীত করার সরকারি আদেশ জারি না হওয়া পর্যন্ত আমরা কর্মসূচি প্রত্যাহার করব না। এখন শান্তিপূর্ণ অবস্থান কর্মসূচি চলছে, প্রয়োজনে আরও কঠোর হতে বাধ্য হব।’

প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জন্য দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে স্বাস্থ্য সহকারীদের নানা বঞ্চনার চিত্রও তুলে ধরে আন্দোলনকারীরা জানান, টিকাদানের আগে মাসজুড়ে বাড়ি বাড়ি গিয়ে রেজিস্ট্রেশন করা, জন্ম-মৃত্যুনিবন্ধন, নবজাতক ও গর্ভবতী মায়ের রেজিস্ট্রেশন, যক্ষ্মা রোগী শনাক্তকরণ, ডটস (সরাসরি পর্যবেক্ষণ থেরাপি) পদ্ধতিতে ওষুধ খাওয়ানো, উঠান বৈঠক, মা সমাবেশসহ বিভিন্ন সেবা তাঁরা দিয়ে থাকেন। সপ্তাহে তিন দিন কমিউনিটি ক্লিনিকে নিয়মিত সেবা দেওয়ার পরও তাঁদের মাসিক ভ্রমণভাতা মাত্র ৬০০ টাকা। আর বেতন মোট ৯ হাজার ৭০০ টাকা।
আন্দোলনকারীদের দাবির মধ্যে রয়েছে, নিয়োগবিধি সংশোধন করে স্নাতক বা সমমানের যোগ্যতা যুক্ত করে ১৪তম গ্রেড প্রদান, ইন-সার্ভিস ডিপ্লোমাধারীদের ১১তম গ্রেডসহ টেকনিক্যাল পদমর্যাদা দেওয়া, ধারাবাহিকভাবে উচ্চতর গ্রেডে পদোন্নতি নিশ্চিত করা, প্রশিক্ষণ ছাড়াই স্নাতক স্কেলে অন্তর্ভুক্ত করা, বেতনস্কেল পুনর্নির্ধারণের সময় টাইম স্কেল বা উচ্চতর স্কেল সংযুক্ত করা এবং ইন-সার্ভিস ডিপ্লোমা (এসআইটি) সম্পন্নকারীদের সমমান স্বীকৃতি প্রদান।
বাংলাদেশ হেলথ অ্যাসিস্ট্যান্ট অ্যাসোসিয়েশনের কেন্দ্রীয় সমন্বয় পরিষদের সদস্যসচিব ফজলুল হক চৌধুরী আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক প্রশাসনের সঙ্গে বৈঠক হয়েছে। তাঁরা জানিয়েছেন, আমাদের ফাইল জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। সেখানে এখনো বিশ্লেষণ শুরু হয়নি।’
তিনি আরও জানান, ৬৪ জেলার সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকদের সঙ্গে আলোচনা করে আগামী শনিবার থেকে লাগাতার কর্মবিরতির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক (প্রশাসন) ডা. এ বি এম আবু হানিফ আজ সন্ধ্যায় মোবাইল ফোনে আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘তাদের দাবির বিষয়ে আমাদের কোনো আপত্তি নেই। আমরা প্রয়োজনীয় কাগজপত্র প্রস্তুত করে মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছি। এখানে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ছাড়াও অর্থ মন্ত্রণালয় এবং জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের কাজ রয়েছে। সেখানে প্রক্রিয়াগতভাবে কিছুটা সময় লাগছে। গত তিন দিন তারা স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সামনে অবস্থান করছে। আমরা কাজ করছি। আমরা আশা করছি, সবকিছু ভালোভাবে সমাধান হবে।’

নিয়োগবিধি সংশোধন, বেতনবৈষম্য দূরীকরণ এবং টেকনিক্যাল পদমর্যাদা প্রদানের দাবিতে টানা ষষ্ঠ দিনের মতো আন্দোলন করছেন স্বাস্থ্য সহকারীরা। আজ বৃহস্পতিবার (৪ নভেম্বর) রাজধানীর মহাখালীর স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সামনে দিনভর অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন তাঁরা। আন্দোলনকারীরা ঘোষণা দিয়েছেন, আগামী শনিবার (৬ ডিসেম্বর) থেকে সারা দেশের স্বাস্থ্য সহকারীরা ঢাকায় সমবেত হয়ে লাগাতার কর্মবিরতি পালন করবেন।
গত শনিবার (২৯ নভেম্বর) থেকে শুরু হওয়া কর্মবিরতি প্রথম দুই দিন চলেছিল শহীদ মিনারে। পরে তাঁরা অবস্থান নেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সামনে। বাংলাদেশ হেলথ অ্যাসিস্ট্যান্ট অ্যাসোসিয়েশনের ব্যানারে এ আন্দোলনে অংশ নিয়েছেন দেশের ৬৪ জেলার স্বাস্থ্য সহকারী, সহকারী স্বাস্থ্য পরিদর্শক ও স্বাস্থ্য পরিদর্শকেরা।
এই কর্মসূচির কারণে কয়েক দিন ধরে সারা দেশে ১ লাখ ২০ হাজার অস্থায়ী টিকাদান কেন্দ্রের কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। ফলে টিকা নিতে এসে অনেক মা ও শিশু ফিরে যেতে বাধ্য হচ্ছেন।
স্বাস্থ্য সহকারীদের এ কর্মসূচির কারণে সারা দেশে ১ লাখ ২০ হাজার অস্থায়ী টিকাদান কেন্দ্রের সেবা কয়েক দিন ধরে বন্ধ রয়েছে। এতে টিকা নিতে এসে মা ও শিশুরা ফিরে যাচ্ছেন।
স্বাস্থ্য সহকারীদের দাবি, প্রান্তিক জনগোষ্ঠীকে বঞ্চিত করে কর্মবিরতিতে যেতে তাঁরা চাননি। কিন্তু দীর্ঘদিনের বঞ্চনা ও কর্তৃপক্ষের প্রতিশ্রুতি ভঙ্গের কারণে তাঁরা আন্দোলনে যেতে বাধ্য হয়েছেন। দীর্ঘ ২৭ বছর ধরে বারবার প্রতিশ্রুতির আশ্বাস মিললেও বাস্তবে কোনো অগ্রগতি হয়নি।
দাবি আদায়ে অনড় অবস্থান জানিয়ে নেতারা বলেন, ‘আমাদের ১৬তম গ্রেড থেকে ১৪তম গ্রেডে উন্নীত করার সরকারি আদেশ জারি না হওয়া পর্যন্ত আমরা কর্মসূচি প্রত্যাহার করব না। এখন শান্তিপূর্ণ অবস্থান কর্মসূচি চলছে, প্রয়োজনে আরও কঠোর হতে বাধ্য হব।’

প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জন্য দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে স্বাস্থ্য সহকারীদের নানা বঞ্চনার চিত্রও তুলে ধরে আন্দোলনকারীরা জানান, টিকাদানের আগে মাসজুড়ে বাড়ি বাড়ি গিয়ে রেজিস্ট্রেশন করা, জন্ম-মৃত্যুনিবন্ধন, নবজাতক ও গর্ভবতী মায়ের রেজিস্ট্রেশন, যক্ষ্মা রোগী শনাক্তকরণ, ডটস (সরাসরি পর্যবেক্ষণ থেরাপি) পদ্ধতিতে ওষুধ খাওয়ানো, উঠান বৈঠক, মা সমাবেশসহ বিভিন্ন সেবা তাঁরা দিয়ে থাকেন। সপ্তাহে তিন দিন কমিউনিটি ক্লিনিকে নিয়মিত সেবা দেওয়ার পরও তাঁদের মাসিক ভ্রমণভাতা মাত্র ৬০০ টাকা। আর বেতন মোট ৯ হাজার ৭০০ টাকা।
আন্দোলনকারীদের দাবির মধ্যে রয়েছে, নিয়োগবিধি সংশোধন করে স্নাতক বা সমমানের যোগ্যতা যুক্ত করে ১৪তম গ্রেড প্রদান, ইন-সার্ভিস ডিপ্লোমাধারীদের ১১তম গ্রেডসহ টেকনিক্যাল পদমর্যাদা দেওয়া, ধারাবাহিকভাবে উচ্চতর গ্রেডে পদোন্নতি নিশ্চিত করা, প্রশিক্ষণ ছাড়াই স্নাতক স্কেলে অন্তর্ভুক্ত করা, বেতনস্কেল পুনর্নির্ধারণের সময় টাইম স্কেল বা উচ্চতর স্কেল সংযুক্ত করা এবং ইন-সার্ভিস ডিপ্লোমা (এসআইটি) সম্পন্নকারীদের সমমান স্বীকৃতি প্রদান।
বাংলাদেশ হেলথ অ্যাসিস্ট্যান্ট অ্যাসোসিয়েশনের কেন্দ্রীয় সমন্বয় পরিষদের সদস্যসচিব ফজলুল হক চৌধুরী আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক প্রশাসনের সঙ্গে বৈঠক হয়েছে। তাঁরা জানিয়েছেন, আমাদের ফাইল জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। সেখানে এখনো বিশ্লেষণ শুরু হয়নি।’
তিনি আরও জানান, ৬৪ জেলার সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকদের সঙ্গে আলোচনা করে আগামী শনিবার থেকে লাগাতার কর্মবিরতির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক (প্রশাসন) ডা. এ বি এম আবু হানিফ আজ সন্ধ্যায় মোবাইল ফোনে আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘তাদের দাবির বিষয়ে আমাদের কোনো আপত্তি নেই। আমরা প্রয়োজনীয় কাগজপত্র প্রস্তুত করে মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছি। এখানে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ছাড়াও অর্থ মন্ত্রণালয় এবং জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের কাজ রয়েছে। সেখানে প্রক্রিয়াগতভাবে কিছুটা সময় লাগছে। গত তিন দিন তারা স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সামনে অবস্থান করছে। আমরা কাজ করছি। আমরা আশা করছি, সবকিছু ভালোভাবে সমাধান হবে।’

দেশের গ্রামাঞ্চলে প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান কমিউনিটি ক্লিনিক। তবে শুরুতেই কম বরাদ্দ এবং নিম্নমানের নির্মাণসামগ্রী ব্যবহারের কারণে বিদ্যমান সাড়ে ১৪ হাজারের মধ্যে এক-তৃতীয়াংশ ক্লিনিকের অবকাঠামোই ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। ব্যবহার-অনুপযোগী এ বিপুলসংখ্যক অবকাঠামো পুনর্নির্মাণের..
০৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫
বেতনকাঠামোর দশম গ্রেড বাস্তবায়নের দাবিতে হাসপাতালসহ দেশের সব স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানে চার ঘণ্টা কর্মবিরতি পালন করেছেন মেডিকেল টেকনোলজিস্ট ও ফার্মাসিস্টরা। গতকাল বুধবার সকাল ৮টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত তাঁদের এই কর্মসূচির কারণে চরম দুর্ভোগে পড়ে রোগী এবং তাদের স্বজনেরা। গত ৩০ নভেম্বর থেকে...
১ দিন আগে
দেশের সরকারি ও বেসরকারি সব ধরনের হাসপাতালে প্রতিবছরই বাড়ছে সেবাগ্রহণকারীর সংখ্যা। কিন্তু অধিকাংশ চিকিৎসাকেন্দ্রেই শৌচাগারগুলো ব্যবহারের অযোগ্য অথবা ন্যূনতম মানের নয়। ফলে চিকিৎসা নিতে এসে রোগীরা নানা ভোগান্তিতে পড়ছেন। আর প্রতিবন্ধী রোগীদের ক্ষেত্রে এ ভোগান্তি আরও তীব্র।
২ দিন আগে
দেশে গত এক দিনে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে আরও দুজনের মৃত্যু হয়েছে। এই সময়ে নতুন আক্রান্ত ৫৬৫ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে।
৩ দিন আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

বেতনকাঠামোর দশম গ্রেড বাস্তবায়নের দাবিতে হাসপাতালসহ দেশের সব স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানে চার ঘণ্টা কর্মবিরতি পালন করেছেন মেডিকেল টেকনোলজিস্ট ও ফার্মাসিস্টরা। গতকাল বুধবার সকাল ৮টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত তাঁদের এই কর্মসূচির কারণে চরম দুর্ভোগে পড়ে রোগী এবং তাদের স্বজনেরা। গত ৩০ নভেম্বর থেকে টেকনোলজিস্ট ও ফার্মাসিস্টরা কর্মবিরতি পালন করছেন।
এদিকে দাবি আদায়ে বৃহস্পতিবার কমপ্লিট শাটডাউন কর্মসূচিতে যাওয়ার কথা রয়েছে আন্দোলনকারীদের। তবে কঠোর এই কর্মসূচিতে যাওয়ার আগে গতকাল রাতে বৈঠকে বসেছেন আন্দোলনকারীরা। বৈঠক সূত্রে জানা গেছে, শাটডাউন কর্মসূচি প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত আসতে পারে।
মেডিকেল টেকনোলজিস্ট ও ফার্মাসিস্টদের কর্মবিরতির কারণে রোগীরা চরম ভোগান্তিতে পড়লেও দাবি আদায়ে দিনভর কঠোর অবস্থানে ছিলেন তাঁরা। কর্মবিরতির সময় হাসপাতালের জরুরি সেবা চালু থাকলেও অনেককে সেবা না পেয়ে চলে যেতে দেখা গেছে।
আন্দোলনরতরা জানান, মেডিকেল টেকনোলজিস্ট ও ফার্মাসিস্টদের দশম গ্রেড বাস্তবায়নের ফাইল জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে আটকে আছে। আমলাতান্ত্রিক জটিলতায় দীর্ঘদিনেও বিষয়টির সমাধান হয়নি। এর আগে ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার, ডিপ্লোমা নার্স ও ডিপ্লোমা কৃষিবিদদের ১১তম গ্রেড থেকে ১০ম গ্রেডে উন্নীত করা হয়েছে। ফলে দাবি আদায়ে এবার কঠোর কর্মসূচি পালন করছেন তাঁরা।
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রতিদিন ১০ হাজারের বেশি মানুষ চিকিৎসাসেবা নিতে যায়। এসব সেবাপ্রার্থীর বড় অংশ ঢাকার বাইরে থেকে আসে। টেকনোলজিস্ট ও ফার্মাসিস্টদের গতকালের কর্মবিরতির কারণে অনেকে চিকিৎসা না পেয়ে চলে যায়।
বিভিন্ন স্থানে দিনভর ভোগান্তি
চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে সেবা বন্ধ রেখে চার ঘণ্টা কর্মবিরতি পালন করেছেন টেকনোলজিস্ট ও ফার্মাসিস্টরা। এতে ভোগান্তিতে পড়ে হাসপাতালে সেবা নিতে আসা রোগী ও তাদের স্বজনেরা।
কর্মবিরতি চলাকালে হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়, হাসপাতালের ফার্মেসিতে বিনা মূল্যে সরকারি ওষুধ বিতরণ, রক্ত পরীক্ষা, এক্স-রে, আলট্রাসনোগ্রামসহ রোগনির্ণয়ের বিভিন্ন সেবাকেন্দ্র বন্ধ রয়েছে। এ সময় হাসপাতালের বিভিন্ন ওয়ার্ড ও সেবাকেন্দ্রগুলোয় কর্মবিরতির ব্যানার ঝুলছিল। তবে হাসপাতালের অন্যান্য সেবা কার্যক্রম স্বাভাবিক ছিল। চমেক হাসপাতালে রেডিওলজি অ্যান্ড ইমেজিং বিভাগের একজন কর্মচারী আজকের পত্রিকাকে বলেন, কর্মবিরতির ফলে এক্স-রে করা সাময়িক বন্ধ ছিল।
একই দাবিতে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালের সামনে অবস্থান নিয়ে সমাবেশ করেন মেডিকেল টেকনোলজিস্ট ও ফার্মাসিস্টরা। বুধবার সকাল ৯টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত এ কর্মসূচি পালন করেন তাঁরা। এ সময় আন্দোলনকারীরা বলেন, ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার ও নার্সদের মতো তাঁদেরও চাকরিগত মর্যাদা দশম গ্রেডে উন্নীত না হওয়া পর্যন্ত কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে।
এ ছাড়া সিরাজগঞ্জ সদরে শহীদ এম মনসুর আলী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মূল ফটকের সামনে অবস্থান নিয়ে কর্মসূচি পালিত হয়। কর্মবিরতির কারণে হাসপাতালে সব ধরনের পরীক্ষা-নিরীক্ষা এবং ওষুধ বিতরণ বন্ধ ছিল।
আবদুল্লাহ নামের এক রোগী বলেন, ‘সিটি স্ক্যান করানোর জন্য এসেছিলাম। এসে শুনি, কর্মবিরতি দিয়েছে। এ জন্য ফিরে যাচ্ছি।’
উল্লাপাড়ার আনিসুর নামের এক বৃদ্ধ বলেন, ‘কোমরে ব্যথা। তাই ডাক্তারের কাছে এসেছি। এসে শুনি, দুপুরের আগে চিকিৎসা হবে না।’
একই দাবিতে রাজবাড়ীতে মেডিকেল টেকনোলজিস্ট ও ফার্মাসিস্টরা চার ঘণ্টার কর্মবিরতি পালন করেছেন। বুধবার সকাল ৮টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত এই কর্মবিরতি পালন করেন তাঁরা। কর্মবিরতি কর্মসূচিতে দাবি আদায় না হলে ৪ ডিসেম্বর থেকে পূর্ণদিবস কর্মবিরতি পালনের মাধ্যমে হাসপাতাল শাটডাউন ঘোষণার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তাঁরা।

বেতনকাঠামোর দশম গ্রেড বাস্তবায়নের দাবিতে হাসপাতালসহ দেশের সব স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানে চার ঘণ্টা কর্মবিরতি পালন করেছেন মেডিকেল টেকনোলজিস্ট ও ফার্মাসিস্টরা। গতকাল বুধবার সকাল ৮টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত তাঁদের এই কর্মসূচির কারণে চরম দুর্ভোগে পড়ে রোগী এবং তাদের স্বজনেরা। গত ৩০ নভেম্বর থেকে টেকনোলজিস্ট ও ফার্মাসিস্টরা কর্মবিরতি পালন করছেন।
এদিকে দাবি আদায়ে বৃহস্পতিবার কমপ্লিট শাটডাউন কর্মসূচিতে যাওয়ার কথা রয়েছে আন্দোলনকারীদের। তবে কঠোর এই কর্মসূচিতে যাওয়ার আগে গতকাল রাতে বৈঠকে বসেছেন আন্দোলনকারীরা। বৈঠক সূত্রে জানা গেছে, শাটডাউন কর্মসূচি প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত আসতে পারে।
মেডিকেল টেকনোলজিস্ট ও ফার্মাসিস্টদের কর্মবিরতির কারণে রোগীরা চরম ভোগান্তিতে পড়লেও দাবি আদায়ে দিনভর কঠোর অবস্থানে ছিলেন তাঁরা। কর্মবিরতির সময় হাসপাতালের জরুরি সেবা চালু থাকলেও অনেককে সেবা না পেয়ে চলে যেতে দেখা গেছে।
আন্দোলনরতরা জানান, মেডিকেল টেকনোলজিস্ট ও ফার্মাসিস্টদের দশম গ্রেড বাস্তবায়নের ফাইল জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে আটকে আছে। আমলাতান্ত্রিক জটিলতায় দীর্ঘদিনেও বিষয়টির সমাধান হয়নি। এর আগে ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার, ডিপ্লোমা নার্স ও ডিপ্লোমা কৃষিবিদদের ১১তম গ্রেড থেকে ১০ম গ্রেডে উন্নীত করা হয়েছে। ফলে দাবি আদায়ে এবার কঠোর কর্মসূচি পালন করছেন তাঁরা।
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রতিদিন ১০ হাজারের বেশি মানুষ চিকিৎসাসেবা নিতে যায়। এসব সেবাপ্রার্থীর বড় অংশ ঢাকার বাইরে থেকে আসে। টেকনোলজিস্ট ও ফার্মাসিস্টদের গতকালের কর্মবিরতির কারণে অনেকে চিকিৎসা না পেয়ে চলে যায়।
বিভিন্ন স্থানে দিনভর ভোগান্তি
চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে সেবা বন্ধ রেখে চার ঘণ্টা কর্মবিরতি পালন করেছেন টেকনোলজিস্ট ও ফার্মাসিস্টরা। এতে ভোগান্তিতে পড়ে হাসপাতালে সেবা নিতে আসা রোগী ও তাদের স্বজনেরা।
কর্মবিরতি চলাকালে হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়, হাসপাতালের ফার্মেসিতে বিনা মূল্যে সরকারি ওষুধ বিতরণ, রক্ত পরীক্ষা, এক্স-রে, আলট্রাসনোগ্রামসহ রোগনির্ণয়ের বিভিন্ন সেবাকেন্দ্র বন্ধ রয়েছে। এ সময় হাসপাতালের বিভিন্ন ওয়ার্ড ও সেবাকেন্দ্রগুলোয় কর্মবিরতির ব্যানার ঝুলছিল। তবে হাসপাতালের অন্যান্য সেবা কার্যক্রম স্বাভাবিক ছিল। চমেক হাসপাতালে রেডিওলজি অ্যান্ড ইমেজিং বিভাগের একজন কর্মচারী আজকের পত্রিকাকে বলেন, কর্মবিরতির ফলে এক্স-রে করা সাময়িক বন্ধ ছিল।
একই দাবিতে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালের সামনে অবস্থান নিয়ে সমাবেশ করেন মেডিকেল টেকনোলজিস্ট ও ফার্মাসিস্টরা। বুধবার সকাল ৯টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত এ কর্মসূচি পালন করেন তাঁরা। এ সময় আন্দোলনকারীরা বলেন, ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার ও নার্সদের মতো তাঁদেরও চাকরিগত মর্যাদা দশম গ্রেডে উন্নীত না হওয়া পর্যন্ত কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে।
এ ছাড়া সিরাজগঞ্জ সদরে শহীদ এম মনসুর আলী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মূল ফটকের সামনে অবস্থান নিয়ে কর্মসূচি পালিত হয়। কর্মবিরতির কারণে হাসপাতালে সব ধরনের পরীক্ষা-নিরীক্ষা এবং ওষুধ বিতরণ বন্ধ ছিল।
আবদুল্লাহ নামের এক রোগী বলেন, ‘সিটি স্ক্যান করানোর জন্য এসেছিলাম। এসে শুনি, কর্মবিরতি দিয়েছে। এ জন্য ফিরে যাচ্ছি।’
উল্লাপাড়ার আনিসুর নামের এক বৃদ্ধ বলেন, ‘কোমরে ব্যথা। তাই ডাক্তারের কাছে এসেছি। এসে শুনি, দুপুরের আগে চিকিৎসা হবে না।’
একই দাবিতে রাজবাড়ীতে মেডিকেল টেকনোলজিস্ট ও ফার্মাসিস্টরা চার ঘণ্টার কর্মবিরতি পালন করেছেন। বুধবার সকাল ৮টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত এই কর্মবিরতি পালন করেন তাঁরা। কর্মবিরতি কর্মসূচিতে দাবি আদায় না হলে ৪ ডিসেম্বর থেকে পূর্ণদিবস কর্মবিরতি পালনের মাধ্যমে হাসপাতাল শাটডাউন ঘোষণার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তাঁরা।

দেশের গ্রামাঞ্চলে প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান কমিউনিটি ক্লিনিক। তবে শুরুতেই কম বরাদ্দ এবং নিম্নমানের নির্মাণসামগ্রী ব্যবহারের কারণে বিদ্যমান সাড়ে ১৪ হাজারের মধ্যে এক-তৃতীয়াংশ ক্লিনিকের অবকাঠামোই ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। ব্যবহার-অনুপযোগী এ বিপুলসংখ্যক অবকাঠামো পুনর্নির্মাণের..
০৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫
ছয় দফা দাবিতে টানা ষষ্ঠ দিনের মতো আন্দোলন করছেন স্বাস্থ্য সহকারীরা। মহাখালী স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সামনে তাঁদের অবস্থান কর্মসূচি চলছে। শনিবার থেকে সারা দেশের স্বাস্থ্য সহকারীরা ঢাকায় এসে লাগাতার কর্মবিরতির ঘোষণা দিয়েছেন।
১৭ ঘণ্টা আগে
দেশের সরকারি ও বেসরকারি সব ধরনের হাসপাতালে প্রতিবছরই বাড়ছে সেবাগ্রহণকারীর সংখ্যা। কিন্তু অধিকাংশ চিকিৎসাকেন্দ্রেই শৌচাগারগুলো ব্যবহারের অযোগ্য অথবা ন্যূনতম মানের নয়। ফলে চিকিৎসা নিতে এসে রোগীরা নানা ভোগান্তিতে পড়ছেন। আর প্রতিবন্ধী রোগীদের ক্ষেত্রে এ ভোগান্তি আরও তীব্র।
২ দিন আগে
দেশে গত এক দিনে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে আরও দুজনের মৃত্যু হয়েছে। এই সময়ে নতুন আক্রান্ত ৫৬৫ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে।
৩ দিন আগেমুহাম্মাদ শফিউল্লাহ, ঢাকা

দেশের সরকারি ও বেসরকারি সব ধরনের হাসপাতালে প্রতিবছরই বাড়ছে সেবাগ্রহণকারীর সংখ্যা। কিন্তু অধিকাংশ চিকিৎসাকেন্দ্রেই শৌচাগারগুলো ব্যবহারের অযোগ্য অথবা ন্যূনতম মানের নয়। ফলে চিকিৎসা নিতে এসে রোগীরা নানা ভোগান্তিতে পড়ছেন। আর প্রতিবন্ধী রোগীদের ক্ষেত্রে এ ভোগান্তি আরও তীব্র। কারণ হাসপাতালে প্রতিবন্ধী রোগীদের উপযোগী শৌচাগার ১ শতাংশেরও কম।
হাসপাতাল পরিচালনা বিশেষজ্ঞরা বলছেন, প্রতিবন্ধীবান্ধব শৌচাগার একটি হাসপাতালের মৌলিক পরিকাঠামোর অংশ হওয়া উচিত। তবে দেশে এ ধরনের সুবিধার মারাত্মক ঘাটতি রয়েছে। বিশেষ করে সরকারি হাসপাতালগুলোতে ঘাটতি বেশি। ফলে রোগীরা শুধু ভোগান্তিতেই পড়ছেন না; বরং গুরুতর স্বাস্থ্যঝুঁকিরও সম্মুখীন হচ্ছেন। দীর্ঘ সময় শৌচাগার ব্যবহার করতে না পারার ফলে কিডনি জটিলতা, ইউরিনারি ট্র্যাক্ট ইনফেকশন (মূত্রনালি সংক্রমণ) ও পানিশূন্যতাসহ নানা সমস্যা দেখা দেয়।
যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক বিজ্ঞান, প্রযুক্তি ও চিকিৎসাবিষয়ক গবেষণা প্রকাশনা সংস্থা পাবলিক লাইব্রেরি অব সায়েন্সের প্লস ওয়ান সাময়িকীতে বাংলাদেশে হাসপাতালের শৌচাগার নিয়ে একটি গবেষণাপত্র প্রকাশ পায়। গবেষণার শিরোনাম ‘ইনঅ্যাডিক্যুইট স্যানিটেশন ইন হেলথকেয়ার ফ্যাসিলিটিজ: অ্যা কম্প্রিহেনসিভ ইভ্যালুয়েশন অব টয়লেটস ইন মেজর হাসপাতাল ইন ঢাকা, বাংলাদেশ’। গবেষণাটি করেছেন অস্ট্রেলিয়া ও বাংলাদেশের নয়জন গবেষক।
গবেষণায় রাজধানীর ১০টি সরকারি ও ২টি বেসরকারি হাসপাতালে মোট ২ হাজার ৪৫৯টি শৌচাগার পর্যবেক্ষণ করা হয়। এর মধ্যে প্রতিবন্ধী রোগীদের উপযোগী শৌচাগারের সংখ্যা মাত্র ১০টি, যা ১ শতাংশেরও কম বা শূন্য দশমিক ৪ শতাংশ। প্রায় ৯৯ শতাংশ শৌচাগার হুইলচেয়ার ব্যবহারকারী বা চলাফেরায় সীমাবদ্ধ রোগীদের জন্য ব্যবহারযোগ্য নয়। অধিকাংশ শৌচাগারে দরজা সংকীর্ণ, কমোডের উচ্চতা অনুপযুক্ত, গ্র্যাব-বার বা হাতল নেই এবং প্রবেশপথে র্যাম্পের সুবিধাও নেই। ফলে প্রতিবন্ধী রোগীরা শৌচাগার ব্যবহার করতে গিয়ে চরম ভোগান্তি এবং নিরাপত্তাহীনতায় পড়েন।
দেশে ক্যানসার রোগীদের জন্য সর্বোচ্চ সরকারি চিকিৎসা কেন্দ্র জাতীয় ক্যানসার গবেষণা ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল ঘুরে এখানকার দুটি ভবনের কোথাও প্রতিবন্ধী রোগীদের জন্য নির্ধারিত শৌচাগার পাওয়া যায়নি।
একইভাবে হৃদরোগ চিকিৎসার জন্য সরকারের বিশেষায়িত চিকিৎসাকেন্দ্র জাতীয় হৃদ্রোগ ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের তিনটি ভবনের কোথাও নেই প্রতিবন্ধী রোগীদের জন্য নির্ধারিত শৌচাগার। তাঁদের জন্য আলাদা শৌচাগার না থাকার কথা স্বীকার করেন এই হাসপাতালের পরিচালক অধ্যাপক আব্দুল ওয়াদুদ চৌধুরী। তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘এখানে ভর্তি রোগীরা বেডসাইড টয়লেট ব্যবহার করেন। বিভিন্ন হাসপাতালের জন্য নতুন যেসব ভবন নির্মাণ করা হচ্ছে, সেখানে প্রতিবন্ধী রোগীদের জন্য শৌচাগার, হুইলচেয়ার বা শয্যাসহ ওঠানামার জন্য প্রয়োজনীয় র্যাম্প রাখা প্রয়োজন।’
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক (হাসপাতাল ও ক্লিনিক) আবু হোসেন মো. মঈনুল আহসান বলেন, ‘সরকারি হাসপাতালে নির্ধারিত শয্যার ২-৩ গুণ রোগী ভর্তি থাকেন। দৈনিক বহির্বিভাগে রোগী আসেন সক্ষমতার ৪-৫ গুণ। স্বাভাবিক রোগীদের জন্য উন্নত শৌচাগারের ব্যবস্থাপনা নেই। প্রতিবন্ধী রোগীদের জন্যও আলাদা শৌচাগার রাখা যায়নি। তবে আমরা এ বিষয়ে পরিকল্পনা করছি।’

দেশের সরকারি ও বেসরকারি সব ধরনের হাসপাতালে প্রতিবছরই বাড়ছে সেবাগ্রহণকারীর সংখ্যা। কিন্তু অধিকাংশ চিকিৎসাকেন্দ্রেই শৌচাগারগুলো ব্যবহারের অযোগ্য অথবা ন্যূনতম মানের নয়। ফলে চিকিৎসা নিতে এসে রোগীরা নানা ভোগান্তিতে পড়ছেন। আর প্রতিবন্ধী রোগীদের ক্ষেত্রে এ ভোগান্তি আরও তীব্র। কারণ হাসপাতালে প্রতিবন্ধী রোগীদের উপযোগী শৌচাগার ১ শতাংশেরও কম।
হাসপাতাল পরিচালনা বিশেষজ্ঞরা বলছেন, প্রতিবন্ধীবান্ধব শৌচাগার একটি হাসপাতালের মৌলিক পরিকাঠামোর অংশ হওয়া উচিত। তবে দেশে এ ধরনের সুবিধার মারাত্মক ঘাটতি রয়েছে। বিশেষ করে সরকারি হাসপাতালগুলোতে ঘাটতি বেশি। ফলে রোগীরা শুধু ভোগান্তিতেই পড়ছেন না; বরং গুরুতর স্বাস্থ্যঝুঁকিরও সম্মুখীন হচ্ছেন। দীর্ঘ সময় শৌচাগার ব্যবহার করতে না পারার ফলে কিডনি জটিলতা, ইউরিনারি ট্র্যাক্ট ইনফেকশন (মূত্রনালি সংক্রমণ) ও পানিশূন্যতাসহ নানা সমস্যা দেখা দেয়।
যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক বিজ্ঞান, প্রযুক্তি ও চিকিৎসাবিষয়ক গবেষণা প্রকাশনা সংস্থা পাবলিক লাইব্রেরি অব সায়েন্সের প্লস ওয়ান সাময়িকীতে বাংলাদেশে হাসপাতালের শৌচাগার নিয়ে একটি গবেষণাপত্র প্রকাশ পায়। গবেষণার শিরোনাম ‘ইনঅ্যাডিক্যুইট স্যানিটেশন ইন হেলথকেয়ার ফ্যাসিলিটিজ: অ্যা কম্প্রিহেনসিভ ইভ্যালুয়েশন অব টয়লেটস ইন মেজর হাসপাতাল ইন ঢাকা, বাংলাদেশ’। গবেষণাটি করেছেন অস্ট্রেলিয়া ও বাংলাদেশের নয়জন গবেষক।
গবেষণায় রাজধানীর ১০টি সরকারি ও ২টি বেসরকারি হাসপাতালে মোট ২ হাজার ৪৫৯টি শৌচাগার পর্যবেক্ষণ করা হয়। এর মধ্যে প্রতিবন্ধী রোগীদের উপযোগী শৌচাগারের সংখ্যা মাত্র ১০টি, যা ১ শতাংশেরও কম বা শূন্য দশমিক ৪ শতাংশ। প্রায় ৯৯ শতাংশ শৌচাগার হুইলচেয়ার ব্যবহারকারী বা চলাফেরায় সীমাবদ্ধ রোগীদের জন্য ব্যবহারযোগ্য নয়। অধিকাংশ শৌচাগারে দরজা সংকীর্ণ, কমোডের উচ্চতা অনুপযুক্ত, গ্র্যাব-বার বা হাতল নেই এবং প্রবেশপথে র্যাম্পের সুবিধাও নেই। ফলে প্রতিবন্ধী রোগীরা শৌচাগার ব্যবহার করতে গিয়ে চরম ভোগান্তি এবং নিরাপত্তাহীনতায় পড়েন।
দেশে ক্যানসার রোগীদের জন্য সর্বোচ্চ সরকারি চিকিৎসা কেন্দ্র জাতীয় ক্যানসার গবেষণা ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল ঘুরে এখানকার দুটি ভবনের কোথাও প্রতিবন্ধী রোগীদের জন্য নির্ধারিত শৌচাগার পাওয়া যায়নি।
একইভাবে হৃদরোগ চিকিৎসার জন্য সরকারের বিশেষায়িত চিকিৎসাকেন্দ্র জাতীয় হৃদ্রোগ ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের তিনটি ভবনের কোথাও নেই প্রতিবন্ধী রোগীদের জন্য নির্ধারিত শৌচাগার। তাঁদের জন্য আলাদা শৌচাগার না থাকার কথা স্বীকার করেন এই হাসপাতালের পরিচালক অধ্যাপক আব্দুল ওয়াদুদ চৌধুরী। তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘এখানে ভর্তি রোগীরা বেডসাইড টয়লেট ব্যবহার করেন। বিভিন্ন হাসপাতালের জন্য নতুন যেসব ভবন নির্মাণ করা হচ্ছে, সেখানে প্রতিবন্ধী রোগীদের জন্য শৌচাগার, হুইলচেয়ার বা শয্যাসহ ওঠানামার জন্য প্রয়োজনীয় র্যাম্প রাখা প্রয়োজন।’
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক (হাসপাতাল ও ক্লিনিক) আবু হোসেন মো. মঈনুল আহসান বলেন, ‘সরকারি হাসপাতালে নির্ধারিত শয্যার ২-৩ গুণ রোগী ভর্তি থাকেন। দৈনিক বহির্বিভাগে রোগী আসেন সক্ষমতার ৪-৫ গুণ। স্বাভাবিক রোগীদের জন্য উন্নত শৌচাগারের ব্যবস্থাপনা নেই। প্রতিবন্ধী রোগীদের জন্যও আলাদা শৌচাগার রাখা যায়নি। তবে আমরা এ বিষয়ে পরিকল্পনা করছি।’

দেশের গ্রামাঞ্চলে প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান কমিউনিটি ক্লিনিক। তবে শুরুতেই কম বরাদ্দ এবং নিম্নমানের নির্মাণসামগ্রী ব্যবহারের কারণে বিদ্যমান সাড়ে ১৪ হাজারের মধ্যে এক-তৃতীয়াংশ ক্লিনিকের অবকাঠামোই ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। ব্যবহার-অনুপযোগী এ বিপুলসংখ্যক অবকাঠামো পুনর্নির্মাণের..
০৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫
ছয় দফা দাবিতে টানা ষষ্ঠ দিনের মতো আন্দোলন করছেন স্বাস্থ্য সহকারীরা। মহাখালী স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সামনে তাঁদের অবস্থান কর্মসূচি চলছে। শনিবার থেকে সারা দেশের স্বাস্থ্য সহকারীরা ঢাকায় এসে লাগাতার কর্মবিরতির ঘোষণা দিয়েছেন।
১৭ ঘণ্টা আগে
বেতনকাঠামোর দশম গ্রেড বাস্তবায়নের দাবিতে হাসপাতালসহ দেশের সব স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানে চার ঘণ্টা কর্মবিরতি পালন করেছেন মেডিকেল টেকনোলজিস্ট ও ফার্মাসিস্টরা। গতকাল বুধবার সকাল ৮টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত তাঁদের এই কর্মসূচির কারণে চরম দুর্ভোগে পড়ে রোগী এবং তাদের স্বজনেরা। গত ৩০ নভেম্বর থেকে...
১ দিন আগে
দেশে গত এক দিনে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে আরও দুজনের মৃত্যু হয়েছে। এই সময়ে নতুন আক্রান্ত ৫৬৫ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে।
৩ দিন আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

দেশে গত এক দিনে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে আরও দুজনের মৃত্যু হয়েছে। এই সময়ে নতুন আক্রান্ত ৫৬৫ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে।
এ নিয়ে চলতি বছরের এখন পর্যন্ত ডেঙ্গুতে ৩৮৬ জনের মৃত্যু হলো। আর আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি রোগী সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল ৯৫ হাজার ৫৭৭। এর মধ্যে ৬২ দশমিক ৪ শতাংশ পুরুষ এবং ৩৭ দশমিক ৬ শতাংশ নারী।
আজ মঙ্গলবার (২ ডিসেম্বর) স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুম থেকে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। বিজ্ঞপ্তিতে গতকাল সোমবার সকাল ৮টা থেকে আজ সকাল ৮টা পর্যন্ত তথ্য জানানো হয়।
গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে যে দুজনের মৃত্যু হয়েছে তাঁরা পুরুষ। তাঁদে বয়স যথাক্রমে ৫৫ ও ৬৫ বছর।
চলতি বছর ডেঙ্গুতে সবচেয়ে বেশি মৃত্যু হয়েছে নভেম্বর মাসে। ওই মাসে ১০৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। তার আগে অক্টোবর মাসে ৮০ জন ও সেপ্টেম্বর মাসে ৭৬ জনের মৃত্যু হয়েছে।
এদিকে, গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি রোগীর মধ্যে বরিশাল বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ৫১ জন, চট্টগ্রাম বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ৮২, ঢাকা বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ৯৫, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনে ১২৭ জন, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে ৮৮ জন, খুলনা বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ৪৩, ময়মনসিংহ বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ৪৫, রাজশাহী বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ৩০, রংপুর বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) তিন ও সিলেট বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) একজন রয়েছে।

দেশে গত এক দিনে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে আরও দুজনের মৃত্যু হয়েছে। এই সময়ে নতুন আক্রান্ত ৫৬৫ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে।
এ নিয়ে চলতি বছরের এখন পর্যন্ত ডেঙ্গুতে ৩৮৬ জনের মৃত্যু হলো। আর আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি রোগী সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল ৯৫ হাজার ৫৭৭। এর মধ্যে ৬২ দশমিক ৪ শতাংশ পুরুষ এবং ৩৭ দশমিক ৬ শতাংশ নারী।
আজ মঙ্গলবার (২ ডিসেম্বর) স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুম থেকে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। বিজ্ঞপ্তিতে গতকাল সোমবার সকাল ৮টা থেকে আজ সকাল ৮টা পর্যন্ত তথ্য জানানো হয়।
গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে যে দুজনের মৃত্যু হয়েছে তাঁরা পুরুষ। তাঁদে বয়স যথাক্রমে ৫৫ ও ৬৫ বছর।
চলতি বছর ডেঙ্গুতে সবচেয়ে বেশি মৃত্যু হয়েছে নভেম্বর মাসে। ওই মাসে ১০৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। তার আগে অক্টোবর মাসে ৮০ জন ও সেপ্টেম্বর মাসে ৭৬ জনের মৃত্যু হয়েছে।
এদিকে, গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি রোগীর মধ্যে বরিশাল বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ৫১ জন, চট্টগ্রাম বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ৮২, ঢাকা বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ৯৫, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনে ১২৭ জন, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে ৮৮ জন, খুলনা বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ৪৩, ময়মনসিংহ বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ৪৫, রাজশাহী বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ৩০, রংপুর বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) তিন ও সিলেট বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) একজন রয়েছে।

দেশের গ্রামাঞ্চলে প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান কমিউনিটি ক্লিনিক। তবে শুরুতেই কম বরাদ্দ এবং নিম্নমানের নির্মাণসামগ্রী ব্যবহারের কারণে বিদ্যমান সাড়ে ১৪ হাজারের মধ্যে এক-তৃতীয়াংশ ক্লিনিকের অবকাঠামোই ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। ব্যবহার-অনুপযোগী এ বিপুলসংখ্যক অবকাঠামো পুনর্নির্মাণের..
০৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫
ছয় দফা দাবিতে টানা ষষ্ঠ দিনের মতো আন্দোলন করছেন স্বাস্থ্য সহকারীরা। মহাখালী স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সামনে তাঁদের অবস্থান কর্মসূচি চলছে। শনিবার থেকে সারা দেশের স্বাস্থ্য সহকারীরা ঢাকায় এসে লাগাতার কর্মবিরতির ঘোষণা দিয়েছেন।
১৭ ঘণ্টা আগে
বেতনকাঠামোর দশম গ্রেড বাস্তবায়নের দাবিতে হাসপাতালসহ দেশের সব স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানে চার ঘণ্টা কর্মবিরতি পালন করেছেন মেডিকেল টেকনোলজিস্ট ও ফার্মাসিস্টরা। গতকাল বুধবার সকাল ৮টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত তাঁদের এই কর্মসূচির কারণে চরম দুর্ভোগে পড়ে রোগী এবং তাদের স্বজনেরা। গত ৩০ নভেম্বর থেকে...
১ দিন আগে
দেশের সরকারি ও বেসরকারি সব ধরনের হাসপাতালে প্রতিবছরই বাড়ছে সেবাগ্রহণকারীর সংখ্যা। কিন্তু অধিকাংশ চিকিৎসাকেন্দ্রেই শৌচাগারগুলো ব্যবহারের অযোগ্য অথবা ন্যূনতম মানের নয়। ফলে চিকিৎসা নিতে এসে রোগীরা নানা ভোগান্তিতে পড়ছেন। আর প্রতিবন্ধী রোগীদের ক্ষেত্রে এ ভোগান্তি আরও তীব্র।
২ দিন আগে