জায়েদুল আহসান

রাষ্ট্রের স্থপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যার দায়ে ১২ সেনা কর্মকর্তাকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করার আদেশের কথা আমরা সবাই জানি। প্রচলিত আদালত রাষ্ট্রপতি শেখ মুজিবকে সপরিবারে হত্যার অভিযোগে তাঁদের মৃত্যুদণ্ডাদেশ দিয়েছেন। কিন্তু হত্যাকাণ্ডটি নিছকই কয়েকজন মাঝারি পর্যায়ের সেনা কর্মকর্তার কাজ ছিল না। এই হত্যাকাণ্ডের পূর্বাপর আরও বেশ কিছু ঘটনা ঘটেছে, বিশেষ করে রাজনৈতিক, সামরিক ও বেসামরিক প্রশাসনের যাঁরা জেনে-শুনে-বুঝে খুনিদের হত্যাকাণ্ডটি ঘটাতে সহায়তা করেছেন, হত্যাকাণ্ডের পর তাঁদের আশ্রয়-প্রশ্রয় দিয়েছেন এবং বিচারের পথ বন্ধ করেছেন, তাঁদেরও কাঠগড়ায় দাঁড় করানো রাষ্ট্রের দায়িত্বের মধ্যেই পড়ে। বঙ্গবন্ধু হত্যার ৪৭তম বার্ষিকীতে এসেও আমরা সেই উদ্যোগটি দেখতে পাইনি।
বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলায় সাক্ষ্য-প্রমাণে দেখা যায়, ১৯৭৫ সালের মার্চ থেকেই প্রকাশ্য ষড়যন্ত্র শুরু হয়। খুনিরা তখন থেকেই ক্যান্টনমেন্ট, মেজর রশিদের বাসভবন, কুমিল্লার বার্ড, গাজীপুরের সালনা, খন্দকার মোশতাকের পুরান ঢাকার আগামসি লেন ও কুমিল্লার দাউদকান্দির বাড়িতে দফায় দফায় বৈঠক করেছে। খুনিরা তাদের অভিপ্রায়ের কথা সেনাবাহিনীর উপপ্রধান জেনারেল জিয়াকেও অবহিত করেছিল। জিয়া তাতে নিজে জড়াবেন না বললেও ষড়যন্ত্র ঠেকানোর কোনো উদ্যোগ নেননি।
সেনাবাহিনীর অভ্যন্তরে যাঁরা বিদ্রোহ করেন এবং বিদ্রোহে উসকানি দেন বা উৎসাহিত করেন, তাঁরা যেমন দোষী, তেমনি যাঁরা বিদ্রোহের প্রস্তুতির খবর পেয়ে চুপ থাকেন অথবা যাঁরা বিদ্রোহ প্রত্যক্ষ করে তা দমনে সর্বশক্তি প্রয়োগে বিরত থাকেন, তাঁরাও দোষী। সেনা অভ্যন্তরে কোনো বিদ্রোহ বা অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের পরিকল্পনার খবর কোনো সেনাসদস্য বা কর্মকর্তা জানতে পারলে যথাযথ কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা তাঁর কর্তব্য। সেই কর্তব্য পালনে ব্যর্থতার দায়ে তাঁকে কোর্ট মার্শালের মুখোমুখি হতে হয়।
বঙ্গবন্ধু দেশের রাষ্ট্রপতি হিসেবে সার্বক্ষণিকভাবে গোয়েন্দাদের নজরের আওতায় থাকার কথা। বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ড শুধু এক রাতের সিদ্ধান্তে হয়নি, দীর্ঘদিন ধরে ষড়যন্ত্র চলছিল, সেই ষড়যন্ত্র আঁচ করতে না পারা এবং বঙ্গবন্ধুর বাসভবনে আক্রমণের সময় গোয়েন্দাদের কোনো তৎপরতা না থাকার ব্যর্থতার জন্য সেই সময়ের সামরিক-বেসামরিক গোয়েন্দাপ্রধান বা কর্মকর্তারাও দায় এড়াতে পারেন না। ধানমন্ডির ৩২ নম্বর রোডের বাসভবনে আক্রমণের খবর স্বয়ং বঙ্গবন্ধুকে টেলিফোন করে বাহিনীপ্রধানকে জানাতে হয়েছে। এরপরও প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ না করায় তাঁকেও সামরিক আদালতের বিচারের মুখোমুখি করার কথা।
যেসব ব্যাটালিয়ন বা ব্রিগেডের সৈনিক বা অফিসাররা হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত ছিলেন, সেই সব কমান্ডারকে সেনা আইনে বিচারের আওতায় আনা উচিত ছিল। সামরিক বাহিনীর মধ্যকার চেইন অব কমান্ড ভঙ্গকারীদের দমাতে ব্যর্থতার দায় তাঁদের কাঁধেও বর্তায়।
সেনাবাহিনীর কোনো ইউনিট মুভ করলে জিএস ব্রাঞ্চ, এমও ডিরেক্টর, এমআই ডিরেক্টর ও ট্রেনিং ডিরেক্টরকেও অবহিত করতে হয়। সেনাবাহিনীর দুটি ইউনিট ১৫ আগস্ট খুনি মেজর ফারুক ও মেজর রশিদের নেতৃত্বে মুভ করে। তারা ৪৬ ব্রিগেডের অধীনে হলেও ৪৬ ব্রিগেড ওই মুভ সম্পর্কে কিছুই জানত না। এসব ইউনিটের কর্মরত অধিনায়কদেরও কাঠগড়ায় দাঁড়ানোর কথা।
১৮ আগস্ট সেনাপ্রধান সফিউল্লাহর দপ্তরে সব সিনিয়র অফিসারদের বৈঠকে খুনিদের আইনের আওতায় আনার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এরপরও খুনিদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নিতে ব্যর্থ হওয়ার দায় সিনিয়র অফিসারদেরই নিতে হবে। খুনিরা প্রকাশ্যে খুনের কথা স্বীকার করার পরও তাঁদের সেনা আইনে বিচারের আওতায় আনতে না পারার ব্যর্থতা ঢাকায় অবস্থানরত সক্রিয় প্রতিটি কমান্ডের অধিনায়কদেরও নিতে হবে। বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলার রায়েও বলা হয়েছে, ‘এই মামলায় সাক্ষ্য-প্রমাণের ভিত্তিতে এটাই প্রতীয়মান হয় যে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা যাঁরা ঢাকায় ছিলেন, তাঁরা দায়িত্ব পালন করেননি, এমনকি দায়িত্ব পালনের কোনো পদক্ষেপও গ্রহণ করেননি, যথেষ্ট সময় পাওয়া সত্ত্বেও।’
১৫ আগস্টে দেশের রাষ্ট্রপতিকে হত্যার পর উপরাষ্ট্রপতি বহাল থাকা অবস্থায় খন্দকার মোশতাকের রাষ্ট্রপতি হিসেবে শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে, রেডিওতে ভাষণ দিয়ে খুনিদের সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করে বাহিনীপ্রধানেরাও রাষ্ট্রপতি হত্যাকে অনুমোদন দিয়ে খুনিদের সহায়তা করেছেন। তাঁরা যতই বলেন না কেন চাপে পড়ে মোশতাকের সঙ্গে হাত মিলিয়েছেন বা গৃহযুদ্ধ এড়াতে করেছেন, সেটা গ্রহণযোগ্য কোনো যুক্তি নয়। হত্যাকাণ্ড ঠেকাতে না পারলেও পরবর্তীকালে কয়েকজন খুনির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে না পারার দায় সশস্ত্র বাহিনীর কর্তাব্যক্তিরা এড়াতে পারেন না।
জাতির পিতার হত্যাকারীদের বিচারে সামরিক ও প্রশাসনিক ব্যর্থতাই শুধু নয়, ব্যর্থ ছিলেন রাজনীতিবিদেরাও। তাঁরাও খুনিদের পৃষ্ঠপোষকতা দিয়েছেন, এ জন্য তাঁদেরও দায় নিতে হবে।
ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ জারি করে যাঁরা বিচারের পথ বন্ধ করেছিলেন, পাশাপাশি সংসদে যে ২৪১ জন সদস্য ভোট দিয়ে ওই অধ্যাদেশের বৈধতা দিয়েছেন, তাঁদের প্রত্যেকেই দেশের রাষ্ট্রপতি হত্যার বিচারের পথ বন্ধ করার দায়ে অপরাধ করেছেন।

বঙ্গবন্ধুর মৃতদেহ ডিঙিয়ে আওয়ামী লীগের যেসব নেতা খন্দকার মোশতাকের মন্ত্রিসভায় যোগ দিয়েছিলেন, তাঁরাও অপরাধী। যে পরিস্থিতিতেই হোক তাঁরা খুনিদের সঙ্গে হাত মিলিয়েছেন। যুদ্ধের ময়দানে যদি কোনো সৈনিক প্রতিপক্ষের ভয়ে গুলি ছোড়া থেকে বিরত থাকেন, তাঁকে যেমন কোর্ট মার্শালের মুখোমুখি হতে হয়, তেমনি বঙ্গবন্ধুর সহচর যাঁরা সেদিনই মোশতাকের মন্ত্রিসভায় গিয়েছেন, তাঁরা প্রত্যেকেই রাজনৈতিক অপরাধী।
বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের পর প্রতিটি সরকারই খুনিদের নিরাপত্তা দিয়েছে। আনুকূল্য দিয়েছে। বেআইনিভাবে রাষ্ট্রীয় কোষাগারের অর্থ তাঁদের পেছনে ব্যয় করেছে। আদালতের রায়ে দণ্ডিত না হলেও যেহেতু তাঁরা খুনের কথা স্বীকার করেছেন, তাই আত্মস্বীকৃত খুনিদের আশ্রয়-প্রশ্রয় দিয়ে খন্দকার মোশতাকের মতোই জেনারেল জিয়া, জেনারেল এরশাদ ও খালেদা জিয়া অপরাধ করেছেন। একই সঙ্গে নৃশংস এই হত্যাকাণ্ডের বিচার বন্ধ রেখে তাঁরা আরও একটি অপরাধ করেছেন।
১৯৭৬ সালের ৮ জুন ১২ খুনিকে বিভিন্ন দূতাবাসে চাকরি দেওয়া হয়। ফারুক আর রশিদ চাকরি নেননি। তাঁরা জিয়াকে দিয়ে তাঁদের আরও কিছু অ্যাজেন্ডা বাস্তবায়ন করতে চান। এ নিয়ে বিরোধে ফারুক-রশিদ একাধিকবার অভ্যুত্থানের চেষ্টা করেন। ১৯৭৭ সালের ১ মার্চ জিয়াবিরোধী সেনাবিদ্রোহের দায়ে ফারুকের পাঁচ বছরের কারাদণ্ড হয়।
১৯৮০ সালের ১৭ জুন আরেকটি ব্যর্থ অভ্যুত্থানের দায়ে খুনিদের কয়েকজনকে সামরিক আইনে সাজা দেওয়া হয়েছিল। অভ্যুত্থান ব্যর্থ হওয়ায় ডালিম, হুদা ও নূর দূতাবাসের কাজ ফেলে বিভিন্ন দেশে পালিয়ে যান। ঢাকায় আজিজ পাশাকে গ্রেপ্তার করা হয়। তিনি রাজসাক্ষী হলে জিয়াউর রহমান তাঁকে আবারও কূটনীতিকের দায়িত্ব দিয়ে রোমে পাঠান।
এরপর জেনারেল এরশাদ ক্ষমতায় এসে জিয়ার সময় যে কয়জন কর্মস্থল ছেড়ে চলে গিয়েছিলেন, তাঁদের বকেয়া বেতন দিয়ে পুনর্বহাল করেন। এরপর ১৯৯১ সালে খালেদা জিয়া ক্ষমতায় আসার পরেও খুনিদের বিভিন্ন দূতাবাসে চাকরি ও পদোন্নতির ধারা অব্যাহত রাখেন।
১৯৯৬ সালের জুন মাসে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসে ৬ খুনিকে চাকরিচ্যুত করে। ১৯৯৮ সালে বিচার আদালত ১৫ জনকে মৃত্যুদণ্ডাদেশ দেন। ২০০১ সালের ৩০ এপ্রিল হাইকোর্ট ১২ জনের মৃত্যুদণ্ড বহাল রাখেন। ওই বছরের অক্টোবরে খালেদা জিয়া আবার ক্ষমতায় আসেন। তারপর সুপ্রিম কোর্টে এই বিচারের কার্যক্রম পুরোপুরি আটকে যায়। ২০০২ সালে দণ্ডপ্রাপ্ত খুনি আজিজ পাশাকে খালেদা জিয়ার সরকার মরণোত্তর সব সুবিধা দেয়।
এসব তথ্য গোপন কিছু নয়। সবই হয়েছে প্রকাশ্যে। খুনিদের রাষ্ট্রীয় সব সুবিধা দেওয়ায় জিয়া, এরশাদ ও খালেদা জিয়া সমানভাবেই দায়ী। উল্লিখিত প্রশাসনিক ও বিচারিক সুবিধার বাইরে জেনারেল এরশাদ ও খালেদা জিয়া খুনিদের রাজনীতিতে অংশ নেওয়ার সুযোগ দিয়ে আরেক ধরনের পৃষ্ঠপোষকতা করেছেন। এ কাজটার মূলে ছিলেন জেনারেল এরশাদ।
গোয়েন্দা সংস্থার সহায়তায় খুনি শাহরিয়ার রশিদ ও বজলুল হুদা প্রগতিশীল গণতান্ত্রিক শক্তি (প্রগশ) নামের একটি রাজনৈতিক দল গঠন করেন। ১৯৮৫ সালে ফারুক ও রশিদ ‘১৫ আগস্ট বিপ্লবের আদর্শ বাস্তবায়ন’ নামে সংগঠন গড়ে তোলেন। ১৯৮৭ সালের ৩ আগস্ট শেরাটন হোটেলে সংবাদ সম্মেলন করে খুনি ফারুককে সভাপতি করে ফ্রিডম পার্টি প্রতিষ্ঠার ঘোষণা দেন খুনি রশিদ। ফ্রিডম পার্টির প্রার্থী হিসেবে বজলুল হুদাকে সব দলের বর্জনের মধ্যে ১৯৮৮ সালে অনুষ্ঠিত তৃতীয় সংসদে সদস্য নির্বাচিত করা হয়। এর আগে ১৯৮৬ সালের ১৫ অক্টোবরে অনুষ্ঠিত রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে খুনি ফারুককে নির্বাচন করার সুযোগ দেন এরশাদ।
শুধু তা-ই নয়, তৃতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে ১৯৮৮ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি রাষ্ট্রনিয়ন্ত্রিত রেডিও-টিভিতে খুনি রশিদকে পঁচাত্তরের ১৫ আগস্টের ঘটনার পক্ষে সাফাই গাওয়ার সুযোগ করে দেন এরশাদ। ১৫ আগস্টের পর জাতি আবার খুনিকণ্ঠ শুনতে পায়।
একইভাবে খালেদা জিয়ার আমলেও রশিদকে ১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারির ভোটারবিহীন নির্বাচনে ফ্রিডম পার্টির প্রার্থী হিসেবে সংসদ সদস্য নির্বাচিত করা হয়। সংসদে বিরোধী দলের নেতার আসনে খুনি রশিদের বসার দৃশ্যও তখন জাতি প্রত্যক্ষ করে।
এটা প্রমাণ করার দরকার হয় না যে জিয়া, এরশাদ ও খালেদা জিয়া সরকারের সময় খুনিরা রাষ্ট্রীয় মদদে সব ধরনের আনুকূল্য পেয়েছিলেন। তাই তাঁরাও খুনিদের সহযোগী হিসেবে দায় এড়াতে পারেন না। খুনিদের রাজনৈতিকভাবে পুনর্বাসনের সুযোগ যাঁরা দিয়েছেন, তাঁদেরও জবাবদিহির আওতায় আনা রাষ্ট্রের দায়িত্ব ছিল।
শেষ করি ১৯৭৬ সালের একটি ঘটনা দিয়ে। মেজর জেনারেল মইনুল হোসেন চৌধুরী বীর বিক্রম তখন লন্ডন হাইকমিশনে কর্মরত। তিনি এক জেনারেলের নীরব সাক্ষ্য বইতে লিখেছেন, ব্রিটেনের একটি ছাপাখানায় বাংলাদেশি মুদ্রা ছাপানো হতো। ওই ছাপাখানায় বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতি অঙ্কিত বিভিন্ন মানের কোটি কোটি টাকা জমা ছিল। বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে দুজন কর্মকর্তা লন্ডন যাবেন। তাঁদের যেন হাইকমিশন সহায়তা করে, জেনারেল মইনুলকে সেই নির্দেশনা দেওয়া হয়। ওই দুই কর্মকর্তা যথারীতি লন্ডন যান। হাইকমিশনের সহায়তায় তাঁরা ওই সব টাকা পুড়িয়ে ধ্বংস করে ঢাকায় ফেরেন।
প্রশ্ন হলো শুধু সামরিক আর রাজনৈতিক ব্যক্তিরাই বঙ্গবন্ধুর হত্যাকারীদের সহায়তা করেননি, প্রশাসনের ভেতরেও এমন অনেকে ঘাপটি মেরে বসে ছিলেন, যাঁরা বঙ্গবন্ধুর ছবিকেও ভয় পেতেন। সেই সব ঘাতককে খুঁজে বের করবে কে? তারা কি এখনো সক্রিয় নয়?

রাষ্ট্রের স্থপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যার দায়ে ১২ সেনা কর্মকর্তাকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করার আদেশের কথা আমরা সবাই জানি। প্রচলিত আদালত রাষ্ট্রপতি শেখ মুজিবকে সপরিবারে হত্যার অভিযোগে তাঁদের মৃত্যুদণ্ডাদেশ দিয়েছেন। কিন্তু হত্যাকাণ্ডটি নিছকই কয়েকজন মাঝারি পর্যায়ের সেনা কর্মকর্তার কাজ ছিল না। এই হত্যাকাণ্ডের পূর্বাপর আরও বেশ কিছু ঘটনা ঘটেছে, বিশেষ করে রাজনৈতিক, সামরিক ও বেসামরিক প্রশাসনের যাঁরা জেনে-শুনে-বুঝে খুনিদের হত্যাকাণ্ডটি ঘটাতে সহায়তা করেছেন, হত্যাকাণ্ডের পর তাঁদের আশ্রয়-প্রশ্রয় দিয়েছেন এবং বিচারের পথ বন্ধ করেছেন, তাঁদেরও কাঠগড়ায় দাঁড় করানো রাষ্ট্রের দায়িত্বের মধ্যেই পড়ে। বঙ্গবন্ধু হত্যার ৪৭তম বার্ষিকীতে এসেও আমরা সেই উদ্যোগটি দেখতে পাইনি।
বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলায় সাক্ষ্য-প্রমাণে দেখা যায়, ১৯৭৫ সালের মার্চ থেকেই প্রকাশ্য ষড়যন্ত্র শুরু হয়। খুনিরা তখন থেকেই ক্যান্টনমেন্ট, মেজর রশিদের বাসভবন, কুমিল্লার বার্ড, গাজীপুরের সালনা, খন্দকার মোশতাকের পুরান ঢাকার আগামসি লেন ও কুমিল্লার দাউদকান্দির বাড়িতে দফায় দফায় বৈঠক করেছে। খুনিরা তাদের অভিপ্রায়ের কথা সেনাবাহিনীর উপপ্রধান জেনারেল জিয়াকেও অবহিত করেছিল। জিয়া তাতে নিজে জড়াবেন না বললেও ষড়যন্ত্র ঠেকানোর কোনো উদ্যোগ নেননি।
সেনাবাহিনীর অভ্যন্তরে যাঁরা বিদ্রোহ করেন এবং বিদ্রোহে উসকানি দেন বা উৎসাহিত করেন, তাঁরা যেমন দোষী, তেমনি যাঁরা বিদ্রোহের প্রস্তুতির খবর পেয়ে চুপ থাকেন অথবা যাঁরা বিদ্রোহ প্রত্যক্ষ করে তা দমনে সর্বশক্তি প্রয়োগে বিরত থাকেন, তাঁরাও দোষী। সেনা অভ্যন্তরে কোনো বিদ্রোহ বা অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের পরিকল্পনার খবর কোনো সেনাসদস্য বা কর্মকর্তা জানতে পারলে যথাযথ কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা তাঁর কর্তব্য। সেই কর্তব্য পালনে ব্যর্থতার দায়ে তাঁকে কোর্ট মার্শালের মুখোমুখি হতে হয়।
বঙ্গবন্ধু দেশের রাষ্ট্রপতি হিসেবে সার্বক্ষণিকভাবে গোয়েন্দাদের নজরের আওতায় থাকার কথা। বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ড শুধু এক রাতের সিদ্ধান্তে হয়নি, দীর্ঘদিন ধরে ষড়যন্ত্র চলছিল, সেই ষড়যন্ত্র আঁচ করতে না পারা এবং বঙ্গবন্ধুর বাসভবনে আক্রমণের সময় গোয়েন্দাদের কোনো তৎপরতা না থাকার ব্যর্থতার জন্য সেই সময়ের সামরিক-বেসামরিক গোয়েন্দাপ্রধান বা কর্মকর্তারাও দায় এড়াতে পারেন না। ধানমন্ডির ৩২ নম্বর রোডের বাসভবনে আক্রমণের খবর স্বয়ং বঙ্গবন্ধুকে টেলিফোন করে বাহিনীপ্রধানকে জানাতে হয়েছে। এরপরও প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ না করায় তাঁকেও সামরিক আদালতের বিচারের মুখোমুখি করার কথা।
যেসব ব্যাটালিয়ন বা ব্রিগেডের সৈনিক বা অফিসাররা হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত ছিলেন, সেই সব কমান্ডারকে সেনা আইনে বিচারের আওতায় আনা উচিত ছিল। সামরিক বাহিনীর মধ্যকার চেইন অব কমান্ড ভঙ্গকারীদের দমাতে ব্যর্থতার দায় তাঁদের কাঁধেও বর্তায়।
সেনাবাহিনীর কোনো ইউনিট মুভ করলে জিএস ব্রাঞ্চ, এমও ডিরেক্টর, এমআই ডিরেক্টর ও ট্রেনিং ডিরেক্টরকেও অবহিত করতে হয়। সেনাবাহিনীর দুটি ইউনিট ১৫ আগস্ট খুনি মেজর ফারুক ও মেজর রশিদের নেতৃত্বে মুভ করে। তারা ৪৬ ব্রিগেডের অধীনে হলেও ৪৬ ব্রিগেড ওই মুভ সম্পর্কে কিছুই জানত না। এসব ইউনিটের কর্মরত অধিনায়কদেরও কাঠগড়ায় দাঁড়ানোর কথা।
১৮ আগস্ট সেনাপ্রধান সফিউল্লাহর দপ্তরে সব সিনিয়র অফিসারদের বৈঠকে খুনিদের আইনের আওতায় আনার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এরপরও খুনিদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নিতে ব্যর্থ হওয়ার দায় সিনিয়র অফিসারদেরই নিতে হবে। খুনিরা প্রকাশ্যে খুনের কথা স্বীকার করার পরও তাঁদের সেনা আইনে বিচারের আওতায় আনতে না পারার ব্যর্থতা ঢাকায় অবস্থানরত সক্রিয় প্রতিটি কমান্ডের অধিনায়কদেরও নিতে হবে। বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলার রায়েও বলা হয়েছে, ‘এই মামলায় সাক্ষ্য-প্রমাণের ভিত্তিতে এটাই প্রতীয়মান হয় যে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা যাঁরা ঢাকায় ছিলেন, তাঁরা দায়িত্ব পালন করেননি, এমনকি দায়িত্ব পালনের কোনো পদক্ষেপও গ্রহণ করেননি, যথেষ্ট সময় পাওয়া সত্ত্বেও।’
১৫ আগস্টে দেশের রাষ্ট্রপতিকে হত্যার পর উপরাষ্ট্রপতি বহাল থাকা অবস্থায় খন্দকার মোশতাকের রাষ্ট্রপতি হিসেবে শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে, রেডিওতে ভাষণ দিয়ে খুনিদের সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করে বাহিনীপ্রধানেরাও রাষ্ট্রপতি হত্যাকে অনুমোদন দিয়ে খুনিদের সহায়তা করেছেন। তাঁরা যতই বলেন না কেন চাপে পড়ে মোশতাকের সঙ্গে হাত মিলিয়েছেন বা গৃহযুদ্ধ এড়াতে করেছেন, সেটা গ্রহণযোগ্য কোনো যুক্তি নয়। হত্যাকাণ্ড ঠেকাতে না পারলেও পরবর্তীকালে কয়েকজন খুনির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে না পারার দায় সশস্ত্র বাহিনীর কর্তাব্যক্তিরা এড়াতে পারেন না।
জাতির পিতার হত্যাকারীদের বিচারে সামরিক ও প্রশাসনিক ব্যর্থতাই শুধু নয়, ব্যর্থ ছিলেন রাজনীতিবিদেরাও। তাঁরাও খুনিদের পৃষ্ঠপোষকতা দিয়েছেন, এ জন্য তাঁদেরও দায় নিতে হবে।
ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ জারি করে যাঁরা বিচারের পথ বন্ধ করেছিলেন, পাশাপাশি সংসদে যে ২৪১ জন সদস্য ভোট দিয়ে ওই অধ্যাদেশের বৈধতা দিয়েছেন, তাঁদের প্রত্যেকেই দেশের রাষ্ট্রপতি হত্যার বিচারের পথ বন্ধ করার দায়ে অপরাধ করেছেন।

বঙ্গবন্ধুর মৃতদেহ ডিঙিয়ে আওয়ামী লীগের যেসব নেতা খন্দকার মোশতাকের মন্ত্রিসভায় যোগ দিয়েছিলেন, তাঁরাও অপরাধী। যে পরিস্থিতিতেই হোক তাঁরা খুনিদের সঙ্গে হাত মিলিয়েছেন। যুদ্ধের ময়দানে যদি কোনো সৈনিক প্রতিপক্ষের ভয়ে গুলি ছোড়া থেকে বিরত থাকেন, তাঁকে যেমন কোর্ট মার্শালের মুখোমুখি হতে হয়, তেমনি বঙ্গবন্ধুর সহচর যাঁরা সেদিনই মোশতাকের মন্ত্রিসভায় গিয়েছেন, তাঁরা প্রত্যেকেই রাজনৈতিক অপরাধী।
বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের পর প্রতিটি সরকারই খুনিদের নিরাপত্তা দিয়েছে। আনুকূল্য দিয়েছে। বেআইনিভাবে রাষ্ট্রীয় কোষাগারের অর্থ তাঁদের পেছনে ব্যয় করেছে। আদালতের রায়ে দণ্ডিত না হলেও যেহেতু তাঁরা খুনের কথা স্বীকার করেছেন, তাই আত্মস্বীকৃত খুনিদের আশ্রয়-প্রশ্রয় দিয়ে খন্দকার মোশতাকের মতোই জেনারেল জিয়া, জেনারেল এরশাদ ও খালেদা জিয়া অপরাধ করেছেন। একই সঙ্গে নৃশংস এই হত্যাকাণ্ডের বিচার বন্ধ রেখে তাঁরা আরও একটি অপরাধ করেছেন।
১৯৭৬ সালের ৮ জুন ১২ খুনিকে বিভিন্ন দূতাবাসে চাকরি দেওয়া হয়। ফারুক আর রশিদ চাকরি নেননি। তাঁরা জিয়াকে দিয়ে তাঁদের আরও কিছু অ্যাজেন্ডা বাস্তবায়ন করতে চান। এ নিয়ে বিরোধে ফারুক-রশিদ একাধিকবার অভ্যুত্থানের চেষ্টা করেন। ১৯৭৭ সালের ১ মার্চ জিয়াবিরোধী সেনাবিদ্রোহের দায়ে ফারুকের পাঁচ বছরের কারাদণ্ড হয়।
১৯৮০ সালের ১৭ জুন আরেকটি ব্যর্থ অভ্যুত্থানের দায়ে খুনিদের কয়েকজনকে সামরিক আইনে সাজা দেওয়া হয়েছিল। অভ্যুত্থান ব্যর্থ হওয়ায় ডালিম, হুদা ও নূর দূতাবাসের কাজ ফেলে বিভিন্ন দেশে পালিয়ে যান। ঢাকায় আজিজ পাশাকে গ্রেপ্তার করা হয়। তিনি রাজসাক্ষী হলে জিয়াউর রহমান তাঁকে আবারও কূটনীতিকের দায়িত্ব দিয়ে রোমে পাঠান।
এরপর জেনারেল এরশাদ ক্ষমতায় এসে জিয়ার সময় যে কয়জন কর্মস্থল ছেড়ে চলে গিয়েছিলেন, তাঁদের বকেয়া বেতন দিয়ে পুনর্বহাল করেন। এরপর ১৯৯১ সালে খালেদা জিয়া ক্ষমতায় আসার পরেও খুনিদের বিভিন্ন দূতাবাসে চাকরি ও পদোন্নতির ধারা অব্যাহত রাখেন।
১৯৯৬ সালের জুন মাসে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসে ৬ খুনিকে চাকরিচ্যুত করে। ১৯৯৮ সালে বিচার আদালত ১৫ জনকে মৃত্যুদণ্ডাদেশ দেন। ২০০১ সালের ৩০ এপ্রিল হাইকোর্ট ১২ জনের মৃত্যুদণ্ড বহাল রাখেন। ওই বছরের অক্টোবরে খালেদা জিয়া আবার ক্ষমতায় আসেন। তারপর সুপ্রিম কোর্টে এই বিচারের কার্যক্রম পুরোপুরি আটকে যায়। ২০০২ সালে দণ্ডপ্রাপ্ত খুনি আজিজ পাশাকে খালেদা জিয়ার সরকার মরণোত্তর সব সুবিধা দেয়।
এসব তথ্য গোপন কিছু নয়। সবই হয়েছে প্রকাশ্যে। খুনিদের রাষ্ট্রীয় সব সুবিধা দেওয়ায় জিয়া, এরশাদ ও খালেদা জিয়া সমানভাবেই দায়ী। উল্লিখিত প্রশাসনিক ও বিচারিক সুবিধার বাইরে জেনারেল এরশাদ ও খালেদা জিয়া খুনিদের রাজনীতিতে অংশ নেওয়ার সুযোগ দিয়ে আরেক ধরনের পৃষ্ঠপোষকতা করেছেন। এ কাজটার মূলে ছিলেন জেনারেল এরশাদ।
গোয়েন্দা সংস্থার সহায়তায় খুনি শাহরিয়ার রশিদ ও বজলুল হুদা প্রগতিশীল গণতান্ত্রিক শক্তি (প্রগশ) নামের একটি রাজনৈতিক দল গঠন করেন। ১৯৮৫ সালে ফারুক ও রশিদ ‘১৫ আগস্ট বিপ্লবের আদর্শ বাস্তবায়ন’ নামে সংগঠন গড়ে তোলেন। ১৯৮৭ সালের ৩ আগস্ট শেরাটন হোটেলে সংবাদ সম্মেলন করে খুনি ফারুককে সভাপতি করে ফ্রিডম পার্টি প্রতিষ্ঠার ঘোষণা দেন খুনি রশিদ। ফ্রিডম পার্টির প্রার্থী হিসেবে বজলুল হুদাকে সব দলের বর্জনের মধ্যে ১৯৮৮ সালে অনুষ্ঠিত তৃতীয় সংসদে সদস্য নির্বাচিত করা হয়। এর আগে ১৯৮৬ সালের ১৫ অক্টোবরে অনুষ্ঠিত রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে খুনি ফারুককে নির্বাচন করার সুযোগ দেন এরশাদ।
শুধু তা-ই নয়, তৃতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে ১৯৮৮ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি রাষ্ট্রনিয়ন্ত্রিত রেডিও-টিভিতে খুনি রশিদকে পঁচাত্তরের ১৫ আগস্টের ঘটনার পক্ষে সাফাই গাওয়ার সুযোগ করে দেন এরশাদ। ১৫ আগস্টের পর জাতি আবার খুনিকণ্ঠ শুনতে পায়।
একইভাবে খালেদা জিয়ার আমলেও রশিদকে ১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারির ভোটারবিহীন নির্বাচনে ফ্রিডম পার্টির প্রার্থী হিসেবে সংসদ সদস্য নির্বাচিত করা হয়। সংসদে বিরোধী দলের নেতার আসনে খুনি রশিদের বসার দৃশ্যও তখন জাতি প্রত্যক্ষ করে।
এটা প্রমাণ করার দরকার হয় না যে জিয়া, এরশাদ ও খালেদা জিয়া সরকারের সময় খুনিরা রাষ্ট্রীয় মদদে সব ধরনের আনুকূল্য পেয়েছিলেন। তাই তাঁরাও খুনিদের সহযোগী হিসেবে দায় এড়াতে পারেন না। খুনিদের রাজনৈতিকভাবে পুনর্বাসনের সুযোগ যাঁরা দিয়েছেন, তাঁদেরও জবাবদিহির আওতায় আনা রাষ্ট্রের দায়িত্ব ছিল।
শেষ করি ১৯৭৬ সালের একটি ঘটনা দিয়ে। মেজর জেনারেল মইনুল হোসেন চৌধুরী বীর বিক্রম তখন লন্ডন হাইকমিশনে কর্মরত। তিনি এক জেনারেলের নীরব সাক্ষ্য বইতে লিখেছেন, ব্রিটেনের একটি ছাপাখানায় বাংলাদেশি মুদ্রা ছাপানো হতো। ওই ছাপাখানায় বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতি অঙ্কিত বিভিন্ন মানের কোটি কোটি টাকা জমা ছিল। বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে দুজন কর্মকর্তা লন্ডন যাবেন। তাঁদের যেন হাইকমিশন সহায়তা করে, জেনারেল মইনুলকে সেই নির্দেশনা দেওয়া হয়। ওই দুই কর্মকর্তা যথারীতি লন্ডন যান। হাইকমিশনের সহায়তায় তাঁরা ওই সব টাকা পুড়িয়ে ধ্বংস করে ঢাকায় ফেরেন।
প্রশ্ন হলো শুধু সামরিক আর রাজনৈতিক ব্যক্তিরাই বঙ্গবন্ধুর হত্যাকারীদের সহায়তা করেননি, প্রশাসনের ভেতরেও এমন অনেকে ঘাপটি মেরে বসে ছিলেন, যাঁরা বঙ্গবন্ধুর ছবিকেও ভয় পেতেন। সেই সব ঘাতককে খুঁজে বের করবে কে? তারা কি এখনো সক্রিয় নয়?

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
০৬ অক্টোবর ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫বাসস, ঢাকা

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরের জেরা শুরু করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আইনজীবী আমীর হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।
এই মামলার শুনানিতে এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের একাধিক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ ‘স্টার উইটনেস’ হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।
পরবর্তীকালে, এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।
মামলার প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এসএইচ তামিম। শুনানিতে তাঁদের সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলা ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হলো রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই তিনটি মামলার বিচারকাজই বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরের জেরা শুরু করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আইনজীবী আমীর হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।
এই মামলার শুনানিতে এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের একাধিক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ ‘স্টার উইটনেস’ হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।
পরবর্তীকালে, এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।
মামলার প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এসএইচ তামিম। শুনানিতে তাঁদের সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলা ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হলো রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই তিনটি মামলার বিচারকাজই বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।

রাষ্ট্রের স্থপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যার দায়ে ১২ সেনা কর্মকর্তাকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করার আদেশের কথা আমরা সবাই জানি। প্রচলিত আদালত রাষ্ট্রপতি শেখ মুজিবকে সপরিবারে হত্যার অভিযোগে তাঁদের মৃত্যুদণ্ডাদেশ দিয়েছেন। কিন্তু হত্যাকাণ্ডটি নিছকই কয়েকজন মাঝারি পর্যায়ের সেন
১৫ আগস্ট ২০২২
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা। অনেকে দেখে নিচ্ছিলেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না, কেউ জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করছিলেন, কেউ আবার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।
বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গতকাল শত শত ট্রলার নোঙর করে রাখা ছিল। জেলেদের উপস্থিতিতে ঘাট এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। ফকিরহাটের মুদি-মনিহারি দোকানগুলোতে জেলেরা কেনাকাটা করতে ভিড় জমান। ফকিরহাট এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে যেতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ামাত্রই সাগরে নামব।’
জেলে নুরসাইদ ও ফোরকান মিয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে কেটেছে। ওই সময়ে বেশ টাকা ঋণ করেছি। এখন সাগরে যাব। দেখি আল্লাহ ঋণ পরিশোধ করতে দেন কি না।’
নোয়াখালীর হাতিয়ার সূর্যমুখী, বাংলাবাজার, কাজিরবাজার, পাইতান মার্কেট চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গতকাল জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। অনেকে নৌকায় জাল তুলছিলেন, আবার অনেকে জ্বালানি তেল মজুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে নিয়ে যান। সূর্যমুখী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি জাফর উল্যা বলেন, ‘সাগরে ৮-১০ দিন থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ধ্যায় সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব।’
সূর্যমুখী ঘাট জেলে সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, ‘সাগরে নামতে প্রস্তুত নোয়াখালীর হাতিয়ার ২০টি ঘাটের লক্ষাধিক জেলে। এসব ঘাটে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ফিশিং ট্রলার রয়েছে। প্রতি ট্রলারে ১০ জন হলেও লক্ষাধিক জেলে এই মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সবাই গত ৫৮ দিন তীরে বেকার ছিলেন।’
পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেরা গতকাল দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিড়া, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী, হেতালিয়া, কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার জেলেরা, সদর উপজেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা প্রস্তুতি শেষে গত রাতে বঙ্গোপসাগরে রওনা হন।
কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে নৌকা, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সেরেছেন জেলেরা। গতকাল মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের খুরেরমুখ, সাবরাং ও বাহারছড়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা সারি সারি ট্রলারে জাল ও রসদ তোলেন জেলেরা।
একটি ট্রলারের মাঝি আবু তাহের জানান, এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কেউ সাগরে মাছ শিকারে নামেনি। এতে উপকূলের কাছাকাছি সাগরে জাল ফেললেই ইলিশসহ অন্য মাছ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
কক্সবাজার শহরের ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজারের মতো যান্ত্রিক ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। অধিকাংশ ট্রলার নিষেধাজ্ঞা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে রওনা হবে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও আমতলী, পিরোজপুর, কক্সবাজার এবং হাতিয়া প্রতিনিধি]

‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা। অনেকে দেখে নিচ্ছিলেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না, কেউ জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করছিলেন, কেউ আবার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।
বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গতকাল শত শত ট্রলার নোঙর করে রাখা ছিল। জেলেদের উপস্থিতিতে ঘাট এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। ফকিরহাটের মুদি-মনিহারি দোকানগুলোতে জেলেরা কেনাকাটা করতে ভিড় জমান। ফকিরহাট এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে যেতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ামাত্রই সাগরে নামব।’
জেলে নুরসাইদ ও ফোরকান মিয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে কেটেছে। ওই সময়ে বেশ টাকা ঋণ করেছি। এখন সাগরে যাব। দেখি আল্লাহ ঋণ পরিশোধ করতে দেন কি না।’
নোয়াখালীর হাতিয়ার সূর্যমুখী, বাংলাবাজার, কাজিরবাজার, পাইতান মার্কেট চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গতকাল জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। অনেকে নৌকায় জাল তুলছিলেন, আবার অনেকে জ্বালানি তেল মজুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে নিয়ে যান। সূর্যমুখী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি জাফর উল্যা বলেন, ‘সাগরে ৮-১০ দিন থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ধ্যায় সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব।’
সূর্যমুখী ঘাট জেলে সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, ‘সাগরে নামতে প্রস্তুত নোয়াখালীর হাতিয়ার ২০টি ঘাটের লক্ষাধিক জেলে। এসব ঘাটে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ফিশিং ট্রলার রয়েছে। প্রতি ট্রলারে ১০ জন হলেও লক্ষাধিক জেলে এই মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সবাই গত ৫৮ দিন তীরে বেকার ছিলেন।’
পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেরা গতকাল দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিড়া, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী, হেতালিয়া, কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার জেলেরা, সদর উপজেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা প্রস্তুতি শেষে গত রাতে বঙ্গোপসাগরে রওনা হন।
কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে নৌকা, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সেরেছেন জেলেরা। গতকাল মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের খুরেরমুখ, সাবরাং ও বাহারছড়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা সারি সারি ট্রলারে জাল ও রসদ তোলেন জেলেরা।
একটি ট্রলারের মাঝি আবু তাহের জানান, এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কেউ সাগরে মাছ শিকারে নামেনি। এতে উপকূলের কাছাকাছি সাগরে জাল ফেললেই ইলিশসহ অন্য মাছ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
কক্সবাজার শহরের ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজারের মতো যান্ত্রিক ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। অধিকাংশ ট্রলার নিষেধাজ্ঞা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে রওনা হবে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও আমতলী, পিরোজপুর, কক্সবাজার এবং হাতিয়া প্রতিনিধি]

রাষ্ট্রের স্থপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যার দায়ে ১২ সেনা কর্মকর্তাকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করার আদেশের কথা আমরা সবাই জানি। প্রচলিত আদালত রাষ্ট্রপতি শেখ মুজিবকে সপরিবারে হত্যার অভিযোগে তাঁদের মৃত্যুদণ্ডাদেশ দিয়েছেন। কিন্তু হত্যাকাণ্ডটি নিছকই কয়েকজন মাঝারি পর্যায়ের সেন
১৫ আগস্ট ২০২২
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
০৬ অক্টোবর ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক দিন পরই গত রোববার লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে পণ্যের ট্রাক আটকে দেয় ভারত। সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, রোববার ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী সীমান্তে প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকে যায়। এ ছাড়া বেনাপোলে ৩৬টি পোশাক বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যের শতাধিক ট্রাক ঢুকতে পারেনি।
গতকাল সোমবার পর্যন্ত বুড়িমারী থেকে প্রাণের পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোর অর্ধেকের বেশি ফেরত নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেনাপোলে পোর্টের ভেতরে ২৪টি ট্রাক ছাড়া বাকিগুলো ফেরত চলে যায়।
বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল পোর্টের ভেতর ও বাইরে শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। আজ পোর্টের ভেতরের ২৪টি ছাড়া বাকিগুলো ফেরত নিয়ে গেছেন মালিকেরা। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, পোর্টের ভেতরের ট্রাকগুলোও ফেরত নিতে হবে।
জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে ৬ মিলিয়ন ডলারের ক্রয় আদেশ রয়েছে। তার মধ্য থেকে রোববার বুড়িমারী দিয়ে ১৭ ট্রাকবোঝাই পণ্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো ঢুকতে পারেনি। ট্রাকগুলো ফেরত আনা হচ্ছে। নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে অন্য পথ দিয়ে পণ্য পাঠাতে হবে।’
বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই ২৪টি ট্রাক পোর্টের ভেতরে থাকায় এখনো তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আশা, যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এই পণ্যগুলোর এলসি করা হয়েছিল, তাই এগুলো প্রবেশে অনুমতি পাবে। তবে এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার ওপর।
এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রপ্তানিকারক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।
স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় নৌপরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
আমদানি ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এর পরিমাণ ৮০ শতাংশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাক পণ্য থাকে তৈরি পোশাক।
এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। ফলে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখাই সরকারের উচিত বলে মনে করছেন তিনি।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহ মিটিয়ে ফেলতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হবে উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর।

ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক দিন পরই গত রোববার লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে পণ্যের ট্রাক আটকে দেয় ভারত। সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, রোববার ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী সীমান্তে প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকে যায়। এ ছাড়া বেনাপোলে ৩৬টি পোশাক বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যের শতাধিক ট্রাক ঢুকতে পারেনি।
গতকাল সোমবার পর্যন্ত বুড়িমারী থেকে প্রাণের পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোর অর্ধেকের বেশি ফেরত নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেনাপোলে পোর্টের ভেতরে ২৪টি ট্রাক ছাড়া বাকিগুলো ফেরত চলে যায়।
বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল পোর্টের ভেতর ও বাইরে শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। আজ পোর্টের ভেতরের ২৪টি ছাড়া বাকিগুলো ফেরত নিয়ে গেছেন মালিকেরা। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, পোর্টের ভেতরের ট্রাকগুলোও ফেরত নিতে হবে।
জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে ৬ মিলিয়ন ডলারের ক্রয় আদেশ রয়েছে। তার মধ্য থেকে রোববার বুড়িমারী দিয়ে ১৭ ট্রাকবোঝাই পণ্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো ঢুকতে পারেনি। ট্রাকগুলো ফেরত আনা হচ্ছে। নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে অন্য পথ দিয়ে পণ্য পাঠাতে হবে।’
বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই ২৪টি ট্রাক পোর্টের ভেতরে থাকায় এখনো তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আশা, যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এই পণ্যগুলোর এলসি করা হয়েছিল, তাই এগুলো প্রবেশে অনুমতি পাবে। তবে এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার ওপর।
এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রপ্তানিকারক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।
স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় নৌপরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
আমদানি ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এর পরিমাণ ৮০ শতাংশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাক পণ্য থাকে তৈরি পোশাক।
এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। ফলে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখাই সরকারের উচিত বলে মনে করছেন তিনি।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহ মিটিয়ে ফেলতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হবে উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর।

রাষ্ট্রের স্থপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যার দায়ে ১২ সেনা কর্মকর্তাকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করার আদেশের কথা আমরা সবাই জানি। প্রচলিত আদালত রাষ্ট্রপতি শেখ মুজিবকে সপরিবারে হত্যার অভিযোগে তাঁদের মৃত্যুদণ্ডাদেশ দিয়েছেন। কিন্তু হত্যাকাণ্ডটি নিছকই কয়েকজন মাঝারি পর্যায়ের সেন
১৫ আগস্ট ২০২২
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
০৬ অক্টোবর ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
১৮৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ধূলিধূসর টিলা খুঁড়ে পাওয়া মূল্যবান এই রত্নগুলো এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি ব্রিটিশ সংগ্রহাগারে প্রায় দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে ছিল। এখন যেহেতু রত্নগুলোর হাতবদলের সময় এসেছে, তাই নতুন সংগ্রাহকেরা আগ্রহ নিয়ে এগুলো সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখানে একটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।
গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর কাছাকাছি, বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ইটের ঘরের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি মুক্তা, রুবি, টোপাজ, নীলা ও নকশা করা সোনার পাত সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে এই রত্নগুলোর সঙ্গে সঙ্গে একটি খোদাই করা পাত্রে হাড়ের টুকরাও পাওয়া যায়, যেগুলোকে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে শনাক্ত করা হয়। এই আবিষ্কার তখন প্রত্নতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।
সাদাবি’স এশিয়ার চেয়ারম্যান নিকোলাস চাউ মনে করেন, স্মরণকালের বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর মাঝে এই রত্নসম্ভার অন্যতম। তবে এগুলো নিলামে তোলার কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর তা হচ্ছে—ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এবং বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র এই সম্পদ বিক্রি করা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?
১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এস্টেট ম্যানেজার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে লুম্বিনির ঠিক দক্ষিণে পিপ্রাওয়ায় অবস্থিত একটি ঢিবি খনন করেন। সেখান থেকেই প্রায় ২ হাজার বছর আগের ওই নির্দশনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাপ্ত রত্নসম্ভার ও দেহাবশেষ, যা তখনো পর্যন্ত অক্ষত ছিল, সেগুলো গৌতম বুদ্ধের শাক্য বংশের এবং বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের ঐতিহ্য। হাড়ের নিদর্শনগুলো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। এসব দেশে এখনো সেগুলোর পূজা করা হয়।

আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
১৮৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ধূলিধূসর টিলা খুঁড়ে পাওয়া মূল্যবান এই রত্নগুলো এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি ব্রিটিশ সংগ্রহাগারে প্রায় দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে ছিল। এখন যেহেতু রত্নগুলোর হাতবদলের সময় এসেছে, তাই নতুন সংগ্রাহকেরা আগ্রহ নিয়ে এগুলো সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখানে একটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।
গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর কাছাকাছি, বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ইটের ঘরের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি মুক্তা, রুবি, টোপাজ, নীলা ও নকশা করা সোনার পাত সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে এই রত্নগুলোর সঙ্গে সঙ্গে একটি খোদাই করা পাত্রে হাড়ের টুকরাও পাওয়া যায়, যেগুলোকে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে শনাক্ত করা হয়। এই আবিষ্কার তখন প্রত্নতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।
সাদাবি’স এশিয়ার চেয়ারম্যান নিকোলাস চাউ মনে করেন, স্মরণকালের বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর মাঝে এই রত্নসম্ভার অন্যতম। তবে এগুলো নিলামে তোলার কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর তা হচ্ছে—ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এবং বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র এই সম্পদ বিক্রি করা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?
১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এস্টেট ম্যানেজার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে লুম্বিনির ঠিক দক্ষিণে পিপ্রাওয়ায় অবস্থিত একটি ঢিবি খনন করেন। সেখান থেকেই প্রায় ২ হাজার বছর আগের ওই নির্দশনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাপ্ত রত্নসম্ভার ও দেহাবশেষ, যা তখনো পর্যন্ত অক্ষত ছিল, সেগুলো গৌতম বুদ্ধের শাক্য বংশের এবং বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের ঐতিহ্য। হাড়ের নিদর্শনগুলো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। এসব দেশে এখনো সেগুলোর পূজা করা হয়।

রাষ্ট্রের স্থপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যার দায়ে ১২ সেনা কর্মকর্তাকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করার আদেশের কথা আমরা সবাই জানি। প্রচলিত আদালত রাষ্ট্রপতি শেখ মুজিবকে সপরিবারে হত্যার অভিযোগে তাঁদের মৃত্যুদণ্ডাদেশ দিয়েছেন। কিন্তু হত্যাকাণ্ডটি নিছকই কয়েকজন মাঝারি পর্যায়ের সেন
১৫ আগস্ট ২০২২
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
০৬ অক্টোবর ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫