ফজলুল কবির

দেশে এই মুহূর্তে সবচেয়ে বেশি উচ্চারিত শব্দ ‘লোডশেডিং’। বিভিন্ন এলাকায় লোডশেডিংয়ের সময়সূচি ঘোষণা করা হয়েছে। এ নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা চলছে। এমন সিদ্ধান্তের কারণ হিসেবে সরকারের পক্ষ থেকে যা বলা হয়েছে, তা সরল করলে দাঁড়ায় ‘অর্থনৈতিক সংকট’ মোকাবিলায় আগে থেকেই নেওয়া সতর্কতা। প্রশ্ন হলো, লোডশেডিংয়ের মাধ্যমে যতটা সাশ্রয় হবে, তার চেয়ে বেশি লোকসান গুনতে হবে না তো?
এই প্রশ্নের উত্তর এককথায় দেওয়াটা সহজ নয়। তবে চেষ্টা করা যেতে পারে। তার আগে লোডশেডিংয়ের কারণ হিসেবে সরকারি বয়ানটি আরেকবার জানা যাক।
সরকার বলছে, জ্বালানি তেলের লোকসান কমাতে ডিজেলভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোর উৎপাদন বন্ধের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। এরই মধ্যে এই সিদ্ধান্ত কার্যকরও করা হয়েছে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রীর জ্বালানি উপদেষ্টা ড. তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী এক-দেড় ঘণ্টা করে প্রতিদিন লোডশেডিংয়ের কথা বলেছেন। পাশাপাশি কোথাও কোথাও এই লোডশেডিং দুই ঘণ্টা পর্যন্ত হতে পারে বলেও জানিয়েছেন তিনি।
এই ঘোষণা এসেছে ১৮ জুলাই। সবাই জানে, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে সারা বিশ্বেই জ্বালানি তেলের একটা সংকট তৈরি হয়েছে। দাম বেড়েছে। এতে লোকসান গুনতে হচ্ছে বলে দাবি সরকারের। এ জন্য ডিজেলভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র বন্ধের পাশাপাশি সপ্তাহে এক দিন পেট্রলপাম্প বন্ধ রাখার কথা বলা হলেও এর পূর্ণ দিকনির্দেশনা এখনো পাওয়া যায়নি। তবে এলাকাভিত্তিক সম্ভাব্য লোডশেডিংয়ের তালিকা এরই মধ্যে নিজেদের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করেছে ঢাকা পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড (ডিপিডিসি)। এ নিয়েও নানা সমালোচনা চলছে। কারণ, বাস্তবের লোডশেডিংয়ের সঙ্গে প্রকাশিত তালিকা এবং জ্বালানি উপদেষ্টার ঘোষণার মিল পাওয়া যাচ্ছে না অনেক এলাকাতেই।
রাজধানীতেই বিভিন্ন এলাকায় দিনে ৩ ঘণ্টা, কোনো কোনো এলাকায় তারও বেশি লোডশেডিং হচ্ছে বলে খবর পাওয়া গেছে। রাজধানীর বাইরের শহরগুলোতে এর দৈর্ঘ্য আরও বেশি। আর উপজেলা পর্যায়ে এমনকি ১০-১২ ঘণ্টার লোডশেডিং’য়ের খবরও পাওয়া গেছে। সব মিলিয়ে বিদ্যুতের সংকট বেশ বড় মাত্রায় তৈরি হয়েছে বলেই মনে হয়। বিশেষত যখন প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে যে নতুন নির্দেশনা দেওয়া হলো, সেখানে সরকারি দপ্তরগুলোতে ২৫ শতাংশ বিদ্যুৎ সাশ্রয়ের কথা বলা হয়।
সার্বিক পরিস্থিতিতে দুটি প্রশ্ন সামনে আসছে। প্রথমটি হলো, যদি না-ই মানা হয়, তবে ঘটা করে সময়সূচি প্রকাশ করা কেন? আর দ্বিতীয় প্রশ্নটি শুরুতেই উত্থাপন করা হয়েছে যে এই আর্থিক সাশ্রয়ের চেষ্টার কারণে লাভের চেয়ে লোকসান বেশি হবে না তো?
প্রথম প্রশ্নটির কাছে যাওয়া যাক। দেশজুড়ে লোডশেডিংয়ের সংকট এ নিয়ে ঘোষণার বেশ আগেই শুরু হয়েছে। কয়েক মাস ধরে, বিশেষ করে গ্রামাঞ্চলে এই সংকট বেশ বাড়াবাড়ি আকার নেয়। উপজেলা পর্যায়ে দীর্ঘ সময় বিদ্যুৎ না থাকা নিয়ে বিভিন্ন সময়ে জাতীয় দৈনিকগুলোতে খবর বেরিয়েছে। সর্বশেষ, ৫ জুলাই আজকের পত্রিকা এ নিয়ে সংবাদ প্রকাশ করে। ওই দিনের প্রধান শিরোনামই ছিল বিদ্যুৎ-সংকট নিয়ে। সেখানে গুরুত্বপূর্ণ পর্যটন শহর কক্সবাজারের কথা বলা হয়, যেখানে সে সময় দিনে ৫-৬ ঘণ্টা করে লোডশেডিং হচ্ছিল। অর্থাৎ, ঘোষণার আগে থেকেই ঘটনা শুরু হয়ে গিয়েছিল। এমনকি রাজধানীর অনভিজাত বিভিন্ন এলাকাতেও অনেক আগে থেকেই লোডশেডিং শুরু হয়েছিল। তাহলে ঘটা করে ঘোষণা দেওয়া কেন? রাজধানীতে লোডশেডিং বাড়ানোর কারণেই কি আগে থেকে ঘোষণার ব্যবস্থা হলো? নাকি রাজধানীর অভিজাত এলাকাকে এর আওতায় আনার আগে এই ভদ্রতা করা হলো? রাজধানীর বাইরে থাকা লোকেরা কি তবে ঊন-নাগরিক? এমন তো হওয়ার কথা নয়। কারণ, রাষ্ট্র তো সব নাগরিকের সমান অধিকারের কথা স্বীকার করে। প্রশ্নটি উত্থাপন করা হলো—নীতিনির্ধারকদের ভেবে দেখার জন্য শুধু। যদিও এই ঘোষণা দেওয়ার চর্চা শুরু করাটা মন্দের ভালো হয়েছে বলে বাহ্বা পেতেই পারে।
রাজধানীর জন্য ঘোষিত সময়সূচির দিকে তাকালে আবার আরেক চিত্র দেখা যায়। বলা হলো, সব এলাকায় সমানভাবে এক-দেড় ঘণ্টা করে বিদ্যুৎ থাকবে না। কিন্তু বাস্তবে দেখা গেল কিছু এলাকায় বিদ্যুৎ গেলে আর আসার নাম নেয় না, কিংবা এক-দেড় ঘণ্টা করে কয়েকবার বিদ্যুৎ যায়। কিন্তু কেন? এর উত্তর আছে ডিপিডিসি ও ডেসকোর কাছে। তারা বলছে, এক ঘণ্টা লোডশেডিং করার পরও প্রয়োজনীয় বিদ্যুৎ পাচ্ছে না রাজধানীতে বিদ্যুৎ বিতরণের দায়িত্বে থাকা এ দুই সরকারি প্রতিষ্ঠান। ফলে রুটিনের বাইরে গিয়ে লোডশেডিং করতে হচ্ছে তাদের।
বাস্তবতা হলো, রুটিনে হেরফেরের দায়টা মূলত নিম্ন আয়ের লোকেরাই মেটাচ্ছে। রাজধানীর অভিজাত এলাকাগুলো থেকে অন্তত ঘোষিত সময়সূচির চেয়ে অনেক বেশি মাত্রায় লোডশেডিং হওয়ার অভিযোগ এখন পর্যন্ত আসেনি। আর নিম্ন আয়ের মানুষ-অধ্যুষিত এলাকাগুলোয় অতিমাত্রায় লোডশেডিংয়ের বাস্তবতা তো একেবারে সামনেই আছে।
না, এমনটা শুধু বাংলাদেশেই হয় বা হচ্ছে, তা বলা যাবে না। বিশ্বের যেসব দেশে লোডশেডিংয়ের বাস্তবতা আছে, সবখানেই দেখা যায় এ ধরনের বৈষম্য। দেখা যায়, বিদ্যুৎ-সংকট দেখা দিলেই নিম্ন আয়ের মানুষেরা ভোগান্তিতে পড়ছেন। এর কারণ, লোডশেডিংয়ের সিদ্ধান্ত আসে রাষ্ট্রের কাছ থেকে, আর রাষ্ট্র বস্তুটি এখনো অভিজাতদের কবজায়। অবশ্য প্রতিটি রাষ্ট্রই এ ধরনের সময়সূচি ঘোষণার ক্ষেত্রে একধরনের ‘সাম্য’ নীতি মেনে চলে। যদিও এই ‘সাম্য’ নামের সোনার পাথরবাটিটি থাকে শুধু কাগজে-কলমেই। বাস্তবে সব দেশেই লোডশেডিংয়ের সবচেয়ে বড় ধকল যায় নিম্ন আয়ের মানুষের ওপর দিয়ে। বাংলাদেশেও তা-ই হচ্ছে।
আফ্রিকার দেশ জাম্বিয়ায় বিদ্যুৎ-সংকটের প্রেক্ষাপটে চলা লোডশেডিং এবং অর্থনীতিতে এর প্রভাব নিয়ে গত বছরের জানুয়ারিতে একটি গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশিত হয় ডেভেলপমেন্ট সাউদার্ন আফ্রিকা জার্নালে। সেখানে বলা হয়, সময়সূচি ঘোষণার সময় সাধারণত সব এলাকায় সমানভাবে লোডশেডিং করার কথা বলা হলেও বাস্তবে ভুগতে হয় নিম্ন আয়ের মানুষদের। অথচ অর্থনৈতিক বিবেচনায় এমন সিদ্ধান্ত ভুল। কারণ, বিদ্যুতের বিকল্প জোগাড়ের সামর্থ্য অভিজাতদের থাকলেও দরিদ্রদের তা থাকে না। আবার দরিদ্র-অধ্যুষিত এলাকাগুলোয় দেখা যায়, বহু লোক নিজের ঘরের মধ্যেই ছোট ছোট উৎপাদনব্যবস্থা গড়ে তুলেছেন। বিদ্যুৎ না থাকলে তাঁর হাতে একদিকে বিকল্প থাকছে না, আবার এ জন্য তাঁর উৎপাদনও বন্ধ হচ্ছে। ফলে তিনি সরাসরি আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হন। এ কারণে অভিজাত এলাকায় লোডশেডিংয়ের কারণে হওয়া ক্ষতির চেয়ে দরিদ্র এলাকায় লোডশেডিংয়ের ক্ষতি অনেক বেশি।
একটু উদাহরণ দেওয়া যাক। রাজধানীর পাশে কামরাঙ্গীরচর বা এমন এলাকাগুলোয় বহু ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পকারখানা রয়েছে। কেউ হয়তো আবাসিক ভবনের মধ্যে নিজের একটি রুমে ছোট যন্ত্র বসিয়ে বোতল বানাচ্ছেন, কেউ হয়তো কয়েকজন কর্মী নিয়ে তৈরি পোশাকের কারখানা চালু করেছেন আবার কেউ হয়তো চানাচুর বানাচ্ছেন। বিষয়টি নীতিনির্ধারকেরাও বেশ ভালো জানেন। কিন্তু এসব এলাকা আবার শিল্প এলাকা হিসেবেও স্বীকৃত নয়। জাতীয় অর্থনীতিতে এবং কর্মসংস্থানে এই ছোট ছোট কারখানার অবদান কিন্তু কম নয়। শিল্প এলাকা হিসেবে স্বীকৃত না হওয়ায় এগুলো বিশেষ নজরও পায় না। ফলে এলাকাভিত্তিক লোডশেডিংয়ের সাধারণ হিসাবেই এগুলো পড়ে যায়, যার সরাসরি প্রভাব পড়ে এখানকার বাসিন্দাদের রুটি-রুজি ও আরও বড় পরিসরে জাতীয় অর্থনীতিতে। ফলে লোডশেডিং অনেকটা অঘোষিতভাবেই আয় ও সামাজিক বৈষম্য বাড়ায়।
এবার আসা যাক মূল প্রশ্নে। এর অর্থনৈতিক মূল্য কত? বাংলাদেশে লোডশেডিংয়ের এ সূত্রটি কিন্তু উৎপাদন ও সরবরাহ সক্ষমতাজনিত নয়। এটি করা হচ্ছে জ্বালানি খাতে ব্যয় সাশ্রয় করতে। কারণ হিসেবে দেখানো হয়েছে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে সৃষ্ট বৈশ্বিক পরিস্থিতিতে আন্তর্জাতিক জ্বালানি বাজারে অস্থিরতাকে। কিন্তু এই সংকটে কি আমরা নিজে থেকেই পড়লাম?
একটু খোলাসা করা যাক। গত জুনে বাজেট প্রস্তাব উত্থাপনের সময় অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেছিলেন, ‘দেশে সম্প্রতি মোট বিদ্যুৎ উৎপাদনক্ষমতা (ক্যাপটিভ ও নবায়নযোগ্য জ্বালানিসহ) ২৫ হাজার ৫৬৬ মেগাওয়াট। কিন্তু এখন পর্যন্ত সর্বোচ্চ উৎপাদন ১৪ হাজার ৭৮২ মেগাওয়াট। বাড়তি এই সক্ষমতা অব্যবহৃতই থাকছে। কিন্তু এর পেছনে ব্যয়ও হচ্ছে। এ সময় না কিনলেও বিদ্যুৎ খাতের উদ্যোক্তাদের মোটা অঙ্কের অর্থ পরিশোধ করে আসছে সরকারি সংস্থা বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (পিডিবি)। এভাবেই ক্যাপাসিটি চার্জের নামে গত তিন বছর বিদ্যুৎ খাতে প্রায় ৫৪ হাজার কোটি টাকা গচ্চা দিয়েছে সরকার। এর মধ্যে বেসরকারি বিদ্যুৎকেন্দ্রের মালিকদের পকেটে গেছে প্রায় ৪২ হাজার কোটি টাকা। সম্প্রতি বিদ্যুৎ বিভাগে পাঠানো পিডিবির প্রতিবেদন থেকে এসব তথ্য জানা গেছে। (দৈনিক সমকাল, ২০ জুলাই)
এর সঙ্গে মিলিয়ে নেওয়া যাক প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে দেওয়া সর্বশেষ নির্দেশনাকে। সেখানে বলা হয়েছে এবারের বাজেটে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে মোট বরাদ্দের ২০ শতাংশ সাশ্রয়ের কথা। বলা প্রয়োজন, এবারের বাজেটে এমনিতেই এই খাত আগের বাজেটের চেয়ে সংকুচিত হয়েছে। এবারের বাজেটে বিদ্যুৎ বিভাগ এবং জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের জন্য বরাদ্দ ১ হাজার ৪১৮ কোটি টাকা কমিয়ে ২৬ হাজার ৬৬ কোটি টাকা করা হয়। এর ২০ শতাংশ সাশ্রয় মানে ৫ হাজার ২১৩ কোটি টাকা। কিন্তু, তিন বছরে মোট ৫৪ হাজার হিসাবে গড়ে বছরে যে ১৮ হাজার কোটি টাকা করে গচ্চা গেল, তার কী হবে?
এই প্রশ্নের উত্তর জনতা অন্তত দিতে পারবে না; বরং ব্যয় সাশ্রয় চেষ্টা ও তার প্রভাবের দিকে তাকানো যাক। ২০১৩ সালে পাকিস্তান ডেভেলপমেন্ট রিভিউতে প্রকাশিত এক গবেষণায় দেখা গেছে, দেশটিতে শুধু লোডশেডিংয়ের কারণে ১৭০ কোটি মার্কিন ডলারের (১৬ হাজার কোটি টাকার বেশি) ক্ষতি হচ্ছে। পাকিস্তানে সে সময় বিদ্যুৎ-সংকট প্রকট হয়েছিল। বলা হতে পারে, এটা শুধু পাকিস্তানের সংকট হতে পারে। কিন্তু আসলেই কি তাই?
না, একই চিত্র দেখা গেছে দক্ষিণ আফ্রিকায়। দেশটি এখনো বিদ্যুৎ-সংকটের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। সম্প্রতি মানিওয়েবে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে দেশটির জ্বালানি বিশেষজ্ঞ ইসা সালাঙ্গা বলেছেন, লোডশেডিংয়ের কারণে দক্ষিণ আফ্রিকা বিনিয়োগ হারাচ্ছে ব্যাপকভাবে। সঙ্গে বিদ্যমান ব্যবসার ক্ষতির বিষয়টি তো আছেই। কতটা? তিনি বলছেন, দক্ষিণ আফ্রিকার ক্ষেত্রে প্রতিদিন এক-দেড় ঘণ্টা লোডশেডিংয়ের জন্য দিনে লোকসানের পরিমাণ ১০ কোটি র্যান্ড (বর্তমান বিনিময়মূল্য অনুযায়ী ৫০ কোটি ৫০ লাখ টাকা)। আর দিনে ৬ ঘণ্টা করে লোডশেডিং হলে এই অঙ্ক ১২০ কোটি র্যান্ড বা ৬৬০ কোটি টাকা। বছরের হিসাবটি আর না করাই ভালো। একই ধরনের হিসাব পাওয়া যায় আরেক প্রতিবেশী দেশ নেপালের ক্ষেত্রেও।
অর্থাৎ, সরকারি নির্দেশনা পুরোপুরি রক্ষায় সমর্থ হলেও যে ৬-৭ হাজার কোটি টাকা সাশ্রয় হবে লোডশেডিংয়ের মাধ্যমে, তার জন্য আর্থিক মাশুলই গুনতে হবে কমপক্ষে দুই-তিন গুণের বেশি। আর সামাজিক ও আয়বৈষম্য বৃদ্ধির কারণে হওয়া অন্য সংকট তো বাদই থাকল। সঙ্গে রয়েছে শিক্ষা-স্বাস্থ্যসহ বিভিন্ন খাতে পড়া এর সরাসরি প্রভাব।
বাংলাদেশে লোডশেডিংয়ের কারণে সবচেয়ে বেশি ক্ষতির শিকার বরাবরের মতোই নিম্ন আয়ের মানুষেরা হবে, এটা আর না বললেও চলে। এ ক্ষেত্রে বিশেষভাবে বলা প্রয়োজন বিপুলসংখ্যক তরুণ জনগোষ্ঠীর কথা, যাঁদের একটি বড় অংশ স্বউদ্যোগে বিভিন্ন ক্ষুদ্র ও মাঝারি প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলছেন। তরুণদের একটি বড় অংশ ফ্রিল্যান্সিংয়ের কাজে যুক্ত। এফ-কমার্সের পরিসর বাড়ছে। ইন্টারনেটভিত্তিক কার্যক্রম ও আয়ের উৎস সম্প্রসারিত হচ্ছে। লোডশেডিং তাঁদের কর্মসংস্থান ও আয়ে বড় ভাগ বসাবে। এ অবস্থায় বিদ্যুতের ঘাটতি অর্থনীতিতে বড় প্রভাব ফেলবে নিঃসন্দেহে, যার মূল্য ডিজেলভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র বন্ধ করে বেঁচে যাওয়া টাকার চেয়ে অনেক বেশি।
লেখক: সহকারী বার্তা সম্পাদক, আজকের পত্রিকা

দেশে এই মুহূর্তে সবচেয়ে বেশি উচ্চারিত শব্দ ‘লোডশেডিং’। বিভিন্ন এলাকায় লোডশেডিংয়ের সময়সূচি ঘোষণা করা হয়েছে। এ নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা চলছে। এমন সিদ্ধান্তের কারণ হিসেবে সরকারের পক্ষ থেকে যা বলা হয়েছে, তা সরল করলে দাঁড়ায় ‘অর্থনৈতিক সংকট’ মোকাবিলায় আগে থেকেই নেওয়া সতর্কতা। প্রশ্ন হলো, লোডশেডিংয়ের মাধ্যমে যতটা সাশ্রয় হবে, তার চেয়ে বেশি লোকসান গুনতে হবে না তো?
এই প্রশ্নের উত্তর এককথায় দেওয়াটা সহজ নয়। তবে চেষ্টা করা যেতে পারে। তার আগে লোডশেডিংয়ের কারণ হিসেবে সরকারি বয়ানটি আরেকবার জানা যাক।
সরকার বলছে, জ্বালানি তেলের লোকসান কমাতে ডিজেলভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোর উৎপাদন বন্ধের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। এরই মধ্যে এই সিদ্ধান্ত কার্যকরও করা হয়েছে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রীর জ্বালানি উপদেষ্টা ড. তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী এক-দেড় ঘণ্টা করে প্রতিদিন লোডশেডিংয়ের কথা বলেছেন। পাশাপাশি কোথাও কোথাও এই লোডশেডিং দুই ঘণ্টা পর্যন্ত হতে পারে বলেও জানিয়েছেন তিনি।
এই ঘোষণা এসেছে ১৮ জুলাই। সবাই জানে, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে সারা বিশ্বেই জ্বালানি তেলের একটা সংকট তৈরি হয়েছে। দাম বেড়েছে। এতে লোকসান গুনতে হচ্ছে বলে দাবি সরকারের। এ জন্য ডিজেলভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র বন্ধের পাশাপাশি সপ্তাহে এক দিন পেট্রলপাম্প বন্ধ রাখার কথা বলা হলেও এর পূর্ণ দিকনির্দেশনা এখনো পাওয়া যায়নি। তবে এলাকাভিত্তিক সম্ভাব্য লোডশেডিংয়ের তালিকা এরই মধ্যে নিজেদের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করেছে ঢাকা পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড (ডিপিডিসি)। এ নিয়েও নানা সমালোচনা চলছে। কারণ, বাস্তবের লোডশেডিংয়ের সঙ্গে প্রকাশিত তালিকা এবং জ্বালানি উপদেষ্টার ঘোষণার মিল পাওয়া যাচ্ছে না অনেক এলাকাতেই।
রাজধানীতেই বিভিন্ন এলাকায় দিনে ৩ ঘণ্টা, কোনো কোনো এলাকায় তারও বেশি লোডশেডিং হচ্ছে বলে খবর পাওয়া গেছে। রাজধানীর বাইরের শহরগুলোতে এর দৈর্ঘ্য আরও বেশি। আর উপজেলা পর্যায়ে এমনকি ১০-১২ ঘণ্টার লোডশেডিং’য়ের খবরও পাওয়া গেছে। সব মিলিয়ে বিদ্যুতের সংকট বেশ বড় মাত্রায় তৈরি হয়েছে বলেই মনে হয়। বিশেষত যখন প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে যে নতুন নির্দেশনা দেওয়া হলো, সেখানে সরকারি দপ্তরগুলোতে ২৫ শতাংশ বিদ্যুৎ সাশ্রয়ের কথা বলা হয়।
সার্বিক পরিস্থিতিতে দুটি প্রশ্ন সামনে আসছে। প্রথমটি হলো, যদি না-ই মানা হয়, তবে ঘটা করে সময়সূচি প্রকাশ করা কেন? আর দ্বিতীয় প্রশ্নটি শুরুতেই উত্থাপন করা হয়েছে যে এই আর্থিক সাশ্রয়ের চেষ্টার কারণে লাভের চেয়ে লোকসান বেশি হবে না তো?
প্রথম প্রশ্নটির কাছে যাওয়া যাক। দেশজুড়ে লোডশেডিংয়ের সংকট এ নিয়ে ঘোষণার বেশ আগেই শুরু হয়েছে। কয়েক মাস ধরে, বিশেষ করে গ্রামাঞ্চলে এই সংকট বেশ বাড়াবাড়ি আকার নেয়। উপজেলা পর্যায়ে দীর্ঘ সময় বিদ্যুৎ না থাকা নিয়ে বিভিন্ন সময়ে জাতীয় দৈনিকগুলোতে খবর বেরিয়েছে। সর্বশেষ, ৫ জুলাই আজকের পত্রিকা এ নিয়ে সংবাদ প্রকাশ করে। ওই দিনের প্রধান শিরোনামই ছিল বিদ্যুৎ-সংকট নিয়ে। সেখানে গুরুত্বপূর্ণ পর্যটন শহর কক্সবাজারের কথা বলা হয়, যেখানে সে সময় দিনে ৫-৬ ঘণ্টা করে লোডশেডিং হচ্ছিল। অর্থাৎ, ঘোষণার আগে থেকেই ঘটনা শুরু হয়ে গিয়েছিল। এমনকি রাজধানীর অনভিজাত বিভিন্ন এলাকাতেও অনেক আগে থেকেই লোডশেডিং শুরু হয়েছিল। তাহলে ঘটা করে ঘোষণা দেওয়া কেন? রাজধানীতে লোডশেডিং বাড়ানোর কারণেই কি আগে থেকে ঘোষণার ব্যবস্থা হলো? নাকি রাজধানীর অভিজাত এলাকাকে এর আওতায় আনার আগে এই ভদ্রতা করা হলো? রাজধানীর বাইরে থাকা লোকেরা কি তবে ঊন-নাগরিক? এমন তো হওয়ার কথা নয়। কারণ, রাষ্ট্র তো সব নাগরিকের সমান অধিকারের কথা স্বীকার করে। প্রশ্নটি উত্থাপন করা হলো—নীতিনির্ধারকদের ভেবে দেখার জন্য শুধু। যদিও এই ঘোষণা দেওয়ার চর্চা শুরু করাটা মন্দের ভালো হয়েছে বলে বাহ্বা পেতেই পারে।
রাজধানীর জন্য ঘোষিত সময়সূচির দিকে তাকালে আবার আরেক চিত্র দেখা যায়। বলা হলো, সব এলাকায় সমানভাবে এক-দেড় ঘণ্টা করে বিদ্যুৎ থাকবে না। কিন্তু বাস্তবে দেখা গেল কিছু এলাকায় বিদ্যুৎ গেলে আর আসার নাম নেয় না, কিংবা এক-দেড় ঘণ্টা করে কয়েকবার বিদ্যুৎ যায়। কিন্তু কেন? এর উত্তর আছে ডিপিডিসি ও ডেসকোর কাছে। তারা বলছে, এক ঘণ্টা লোডশেডিং করার পরও প্রয়োজনীয় বিদ্যুৎ পাচ্ছে না রাজধানীতে বিদ্যুৎ বিতরণের দায়িত্বে থাকা এ দুই সরকারি প্রতিষ্ঠান। ফলে রুটিনের বাইরে গিয়ে লোডশেডিং করতে হচ্ছে তাদের।
বাস্তবতা হলো, রুটিনে হেরফেরের দায়টা মূলত নিম্ন আয়ের লোকেরাই মেটাচ্ছে। রাজধানীর অভিজাত এলাকাগুলো থেকে অন্তত ঘোষিত সময়সূচির চেয়ে অনেক বেশি মাত্রায় লোডশেডিং হওয়ার অভিযোগ এখন পর্যন্ত আসেনি। আর নিম্ন আয়ের মানুষ-অধ্যুষিত এলাকাগুলোয় অতিমাত্রায় লোডশেডিংয়ের বাস্তবতা তো একেবারে সামনেই আছে।
না, এমনটা শুধু বাংলাদেশেই হয় বা হচ্ছে, তা বলা যাবে না। বিশ্বের যেসব দেশে লোডশেডিংয়ের বাস্তবতা আছে, সবখানেই দেখা যায় এ ধরনের বৈষম্য। দেখা যায়, বিদ্যুৎ-সংকট দেখা দিলেই নিম্ন আয়ের মানুষেরা ভোগান্তিতে পড়ছেন। এর কারণ, লোডশেডিংয়ের সিদ্ধান্ত আসে রাষ্ট্রের কাছ থেকে, আর রাষ্ট্র বস্তুটি এখনো অভিজাতদের কবজায়। অবশ্য প্রতিটি রাষ্ট্রই এ ধরনের সময়সূচি ঘোষণার ক্ষেত্রে একধরনের ‘সাম্য’ নীতি মেনে চলে। যদিও এই ‘সাম্য’ নামের সোনার পাথরবাটিটি থাকে শুধু কাগজে-কলমেই। বাস্তবে সব দেশেই লোডশেডিংয়ের সবচেয়ে বড় ধকল যায় নিম্ন আয়ের মানুষের ওপর দিয়ে। বাংলাদেশেও তা-ই হচ্ছে।
আফ্রিকার দেশ জাম্বিয়ায় বিদ্যুৎ-সংকটের প্রেক্ষাপটে চলা লোডশেডিং এবং অর্থনীতিতে এর প্রভাব নিয়ে গত বছরের জানুয়ারিতে একটি গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশিত হয় ডেভেলপমেন্ট সাউদার্ন আফ্রিকা জার্নালে। সেখানে বলা হয়, সময়সূচি ঘোষণার সময় সাধারণত সব এলাকায় সমানভাবে লোডশেডিং করার কথা বলা হলেও বাস্তবে ভুগতে হয় নিম্ন আয়ের মানুষদের। অথচ অর্থনৈতিক বিবেচনায় এমন সিদ্ধান্ত ভুল। কারণ, বিদ্যুতের বিকল্প জোগাড়ের সামর্থ্য অভিজাতদের থাকলেও দরিদ্রদের তা থাকে না। আবার দরিদ্র-অধ্যুষিত এলাকাগুলোয় দেখা যায়, বহু লোক নিজের ঘরের মধ্যেই ছোট ছোট উৎপাদনব্যবস্থা গড়ে তুলেছেন। বিদ্যুৎ না থাকলে তাঁর হাতে একদিকে বিকল্প থাকছে না, আবার এ জন্য তাঁর উৎপাদনও বন্ধ হচ্ছে। ফলে তিনি সরাসরি আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হন। এ কারণে অভিজাত এলাকায় লোডশেডিংয়ের কারণে হওয়া ক্ষতির চেয়ে দরিদ্র এলাকায় লোডশেডিংয়ের ক্ষতি অনেক বেশি।
একটু উদাহরণ দেওয়া যাক। রাজধানীর পাশে কামরাঙ্গীরচর বা এমন এলাকাগুলোয় বহু ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পকারখানা রয়েছে। কেউ হয়তো আবাসিক ভবনের মধ্যে নিজের একটি রুমে ছোট যন্ত্র বসিয়ে বোতল বানাচ্ছেন, কেউ হয়তো কয়েকজন কর্মী নিয়ে তৈরি পোশাকের কারখানা চালু করেছেন আবার কেউ হয়তো চানাচুর বানাচ্ছেন। বিষয়টি নীতিনির্ধারকেরাও বেশ ভালো জানেন। কিন্তু এসব এলাকা আবার শিল্প এলাকা হিসেবেও স্বীকৃত নয়। জাতীয় অর্থনীতিতে এবং কর্মসংস্থানে এই ছোট ছোট কারখানার অবদান কিন্তু কম নয়। শিল্প এলাকা হিসেবে স্বীকৃত না হওয়ায় এগুলো বিশেষ নজরও পায় না। ফলে এলাকাভিত্তিক লোডশেডিংয়ের সাধারণ হিসাবেই এগুলো পড়ে যায়, যার সরাসরি প্রভাব পড়ে এখানকার বাসিন্দাদের রুটি-রুজি ও আরও বড় পরিসরে জাতীয় অর্থনীতিতে। ফলে লোডশেডিং অনেকটা অঘোষিতভাবেই আয় ও সামাজিক বৈষম্য বাড়ায়।
এবার আসা যাক মূল প্রশ্নে। এর অর্থনৈতিক মূল্য কত? বাংলাদেশে লোডশেডিংয়ের এ সূত্রটি কিন্তু উৎপাদন ও সরবরাহ সক্ষমতাজনিত নয়। এটি করা হচ্ছে জ্বালানি খাতে ব্যয় সাশ্রয় করতে। কারণ হিসেবে দেখানো হয়েছে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে সৃষ্ট বৈশ্বিক পরিস্থিতিতে আন্তর্জাতিক জ্বালানি বাজারে অস্থিরতাকে। কিন্তু এই সংকটে কি আমরা নিজে থেকেই পড়লাম?
একটু খোলাসা করা যাক। গত জুনে বাজেট প্রস্তাব উত্থাপনের সময় অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেছিলেন, ‘দেশে সম্প্রতি মোট বিদ্যুৎ উৎপাদনক্ষমতা (ক্যাপটিভ ও নবায়নযোগ্য জ্বালানিসহ) ২৫ হাজার ৫৬৬ মেগাওয়াট। কিন্তু এখন পর্যন্ত সর্বোচ্চ উৎপাদন ১৪ হাজার ৭৮২ মেগাওয়াট। বাড়তি এই সক্ষমতা অব্যবহৃতই থাকছে। কিন্তু এর পেছনে ব্যয়ও হচ্ছে। এ সময় না কিনলেও বিদ্যুৎ খাতের উদ্যোক্তাদের মোটা অঙ্কের অর্থ পরিশোধ করে আসছে সরকারি সংস্থা বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (পিডিবি)। এভাবেই ক্যাপাসিটি চার্জের নামে গত তিন বছর বিদ্যুৎ খাতে প্রায় ৫৪ হাজার কোটি টাকা গচ্চা দিয়েছে সরকার। এর মধ্যে বেসরকারি বিদ্যুৎকেন্দ্রের মালিকদের পকেটে গেছে প্রায় ৪২ হাজার কোটি টাকা। সম্প্রতি বিদ্যুৎ বিভাগে পাঠানো পিডিবির প্রতিবেদন থেকে এসব তথ্য জানা গেছে। (দৈনিক সমকাল, ২০ জুলাই)
এর সঙ্গে মিলিয়ে নেওয়া যাক প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে দেওয়া সর্বশেষ নির্দেশনাকে। সেখানে বলা হয়েছে এবারের বাজেটে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে মোট বরাদ্দের ২০ শতাংশ সাশ্রয়ের কথা। বলা প্রয়োজন, এবারের বাজেটে এমনিতেই এই খাত আগের বাজেটের চেয়ে সংকুচিত হয়েছে। এবারের বাজেটে বিদ্যুৎ বিভাগ এবং জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের জন্য বরাদ্দ ১ হাজার ৪১৮ কোটি টাকা কমিয়ে ২৬ হাজার ৬৬ কোটি টাকা করা হয়। এর ২০ শতাংশ সাশ্রয় মানে ৫ হাজার ২১৩ কোটি টাকা। কিন্তু, তিন বছরে মোট ৫৪ হাজার হিসাবে গড়ে বছরে যে ১৮ হাজার কোটি টাকা করে গচ্চা গেল, তার কী হবে?
এই প্রশ্নের উত্তর জনতা অন্তত দিতে পারবে না; বরং ব্যয় সাশ্রয় চেষ্টা ও তার প্রভাবের দিকে তাকানো যাক। ২০১৩ সালে পাকিস্তান ডেভেলপমেন্ট রিভিউতে প্রকাশিত এক গবেষণায় দেখা গেছে, দেশটিতে শুধু লোডশেডিংয়ের কারণে ১৭০ কোটি মার্কিন ডলারের (১৬ হাজার কোটি টাকার বেশি) ক্ষতি হচ্ছে। পাকিস্তানে সে সময় বিদ্যুৎ-সংকট প্রকট হয়েছিল। বলা হতে পারে, এটা শুধু পাকিস্তানের সংকট হতে পারে। কিন্তু আসলেই কি তাই?
না, একই চিত্র দেখা গেছে দক্ষিণ আফ্রিকায়। দেশটি এখনো বিদ্যুৎ-সংকটের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। সম্প্রতি মানিওয়েবে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে দেশটির জ্বালানি বিশেষজ্ঞ ইসা সালাঙ্গা বলেছেন, লোডশেডিংয়ের কারণে দক্ষিণ আফ্রিকা বিনিয়োগ হারাচ্ছে ব্যাপকভাবে। সঙ্গে বিদ্যমান ব্যবসার ক্ষতির বিষয়টি তো আছেই। কতটা? তিনি বলছেন, দক্ষিণ আফ্রিকার ক্ষেত্রে প্রতিদিন এক-দেড় ঘণ্টা লোডশেডিংয়ের জন্য দিনে লোকসানের পরিমাণ ১০ কোটি র্যান্ড (বর্তমান বিনিময়মূল্য অনুযায়ী ৫০ কোটি ৫০ লাখ টাকা)। আর দিনে ৬ ঘণ্টা করে লোডশেডিং হলে এই অঙ্ক ১২০ কোটি র্যান্ড বা ৬৬০ কোটি টাকা। বছরের হিসাবটি আর না করাই ভালো। একই ধরনের হিসাব পাওয়া যায় আরেক প্রতিবেশী দেশ নেপালের ক্ষেত্রেও।
অর্থাৎ, সরকারি নির্দেশনা পুরোপুরি রক্ষায় সমর্থ হলেও যে ৬-৭ হাজার কোটি টাকা সাশ্রয় হবে লোডশেডিংয়ের মাধ্যমে, তার জন্য আর্থিক মাশুলই গুনতে হবে কমপক্ষে দুই-তিন গুণের বেশি। আর সামাজিক ও আয়বৈষম্য বৃদ্ধির কারণে হওয়া অন্য সংকট তো বাদই থাকল। সঙ্গে রয়েছে শিক্ষা-স্বাস্থ্যসহ বিভিন্ন খাতে পড়া এর সরাসরি প্রভাব।
বাংলাদেশে লোডশেডিংয়ের কারণে সবচেয়ে বেশি ক্ষতির শিকার বরাবরের মতোই নিম্ন আয়ের মানুষেরা হবে, এটা আর না বললেও চলে। এ ক্ষেত্রে বিশেষভাবে বলা প্রয়োজন বিপুলসংখ্যক তরুণ জনগোষ্ঠীর কথা, যাঁদের একটি বড় অংশ স্বউদ্যোগে বিভিন্ন ক্ষুদ্র ও মাঝারি প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলছেন। তরুণদের একটি বড় অংশ ফ্রিল্যান্সিংয়ের কাজে যুক্ত। এফ-কমার্সের পরিসর বাড়ছে। ইন্টারনেটভিত্তিক কার্যক্রম ও আয়ের উৎস সম্প্রসারিত হচ্ছে। লোডশেডিং তাঁদের কর্মসংস্থান ও আয়ে বড় ভাগ বসাবে। এ অবস্থায় বিদ্যুতের ঘাটতি অর্থনীতিতে বড় প্রভাব ফেলবে নিঃসন্দেহে, যার মূল্য ডিজেলভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র বন্ধ করে বেঁচে যাওয়া টাকার চেয়ে অনেক বেশি।
লেখক: সহকারী বার্তা সম্পাদক, আজকের পত্রিকা

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
০৬ অক্টোবর ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫বাসস, ঢাকা

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরের জেরা শুরু করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আইনজীবী আমীর হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।
এই মামলার শুনানিতে এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের একাধিক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ ‘স্টার উইটনেস’ হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।
পরবর্তীকালে, এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।
মামলার প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এসএইচ তামিম। শুনানিতে তাঁদের সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলা ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হলো রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই তিনটি মামলার বিচারকাজই বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরের জেরা শুরু করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আইনজীবী আমীর হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।
এই মামলার শুনানিতে এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের একাধিক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ ‘স্টার উইটনেস’ হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।
পরবর্তীকালে, এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।
মামলার প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এসএইচ তামিম। শুনানিতে তাঁদের সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলা ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হলো রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই তিনটি মামলার বিচারকাজই বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।

রাজধানীর জন্য ঘোষিত সময়সূচির দিকে তাকালে আবার আরেক চিত্র দেখা যায়। বলা হলো, সব এলাকায় সমানভাবে এক-দেড় ঘণ্টা করে বিদ্যুৎ থাকবে না। কিন্তু বাস্তবে দেখা গেল কিছু এলাকায় বিদ্যুৎ গেলে আর আসার নাম নেয় না, কিংবা এক-দেড় ঘণ্টা করে কয়েকবার বিদ্যুৎ যায়। কিন্তু কেন?
২৪ জুলাই ২০২২
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা। অনেকে দেখে নিচ্ছিলেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না, কেউ জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করছিলেন, কেউ আবার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।
বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গতকাল শত শত ট্রলার নোঙর করে রাখা ছিল। জেলেদের উপস্থিতিতে ঘাট এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। ফকিরহাটের মুদি-মনিহারি দোকানগুলোতে জেলেরা কেনাকাটা করতে ভিড় জমান। ফকিরহাট এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে যেতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ামাত্রই সাগরে নামব।’
জেলে নুরসাইদ ও ফোরকান মিয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে কেটেছে। ওই সময়ে বেশ টাকা ঋণ করেছি। এখন সাগরে যাব। দেখি আল্লাহ ঋণ পরিশোধ করতে দেন কি না।’
নোয়াখালীর হাতিয়ার সূর্যমুখী, বাংলাবাজার, কাজিরবাজার, পাইতান মার্কেট চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গতকাল জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। অনেকে নৌকায় জাল তুলছিলেন, আবার অনেকে জ্বালানি তেল মজুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে নিয়ে যান। সূর্যমুখী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি জাফর উল্যা বলেন, ‘সাগরে ৮-১০ দিন থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ধ্যায় সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব।’
সূর্যমুখী ঘাট জেলে সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, ‘সাগরে নামতে প্রস্তুত নোয়াখালীর হাতিয়ার ২০টি ঘাটের লক্ষাধিক জেলে। এসব ঘাটে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ফিশিং ট্রলার রয়েছে। প্রতি ট্রলারে ১০ জন হলেও লক্ষাধিক জেলে এই মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সবাই গত ৫৮ দিন তীরে বেকার ছিলেন।’
পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেরা গতকাল দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিড়া, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী, হেতালিয়া, কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার জেলেরা, সদর উপজেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা প্রস্তুতি শেষে গত রাতে বঙ্গোপসাগরে রওনা হন।
কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে নৌকা, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সেরেছেন জেলেরা। গতকাল মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের খুরেরমুখ, সাবরাং ও বাহারছড়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা সারি সারি ট্রলারে জাল ও রসদ তোলেন জেলেরা।
একটি ট্রলারের মাঝি আবু তাহের জানান, এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কেউ সাগরে মাছ শিকারে নামেনি। এতে উপকূলের কাছাকাছি সাগরে জাল ফেললেই ইলিশসহ অন্য মাছ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
কক্সবাজার শহরের ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজারের মতো যান্ত্রিক ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। অধিকাংশ ট্রলার নিষেধাজ্ঞা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে রওনা হবে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও আমতলী, পিরোজপুর, কক্সবাজার এবং হাতিয়া প্রতিনিধি]

‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা। অনেকে দেখে নিচ্ছিলেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না, কেউ জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করছিলেন, কেউ আবার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।
বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গতকাল শত শত ট্রলার নোঙর করে রাখা ছিল। জেলেদের উপস্থিতিতে ঘাট এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। ফকিরহাটের মুদি-মনিহারি দোকানগুলোতে জেলেরা কেনাকাটা করতে ভিড় জমান। ফকিরহাট এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে যেতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ামাত্রই সাগরে নামব।’
জেলে নুরসাইদ ও ফোরকান মিয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে কেটেছে। ওই সময়ে বেশ টাকা ঋণ করেছি। এখন সাগরে যাব। দেখি আল্লাহ ঋণ পরিশোধ করতে দেন কি না।’
নোয়াখালীর হাতিয়ার সূর্যমুখী, বাংলাবাজার, কাজিরবাজার, পাইতান মার্কেট চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গতকাল জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। অনেকে নৌকায় জাল তুলছিলেন, আবার অনেকে জ্বালানি তেল মজুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে নিয়ে যান। সূর্যমুখী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি জাফর উল্যা বলেন, ‘সাগরে ৮-১০ দিন থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ধ্যায় সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব।’
সূর্যমুখী ঘাট জেলে সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, ‘সাগরে নামতে প্রস্তুত নোয়াখালীর হাতিয়ার ২০টি ঘাটের লক্ষাধিক জেলে। এসব ঘাটে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ফিশিং ট্রলার রয়েছে। প্রতি ট্রলারে ১০ জন হলেও লক্ষাধিক জেলে এই মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সবাই গত ৫৮ দিন তীরে বেকার ছিলেন।’
পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেরা গতকাল দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিড়া, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী, হেতালিয়া, কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার জেলেরা, সদর উপজেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা প্রস্তুতি শেষে গত রাতে বঙ্গোপসাগরে রওনা হন।
কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে নৌকা, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সেরেছেন জেলেরা। গতকাল মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের খুরেরমুখ, সাবরাং ও বাহারছড়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা সারি সারি ট্রলারে জাল ও রসদ তোলেন জেলেরা।
একটি ট্রলারের মাঝি আবু তাহের জানান, এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কেউ সাগরে মাছ শিকারে নামেনি। এতে উপকূলের কাছাকাছি সাগরে জাল ফেললেই ইলিশসহ অন্য মাছ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
কক্সবাজার শহরের ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজারের মতো যান্ত্রিক ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। অধিকাংশ ট্রলার নিষেধাজ্ঞা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে রওনা হবে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও আমতলী, পিরোজপুর, কক্সবাজার এবং হাতিয়া প্রতিনিধি]

রাজধানীর জন্য ঘোষিত সময়সূচির দিকে তাকালে আবার আরেক চিত্র দেখা যায়। বলা হলো, সব এলাকায় সমানভাবে এক-দেড় ঘণ্টা করে বিদ্যুৎ থাকবে না। কিন্তু বাস্তবে দেখা গেল কিছু এলাকায় বিদ্যুৎ গেলে আর আসার নাম নেয় না, কিংবা এক-দেড় ঘণ্টা করে কয়েকবার বিদ্যুৎ যায়। কিন্তু কেন?
২৪ জুলাই ২০২২
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
০৬ অক্টোবর ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক দিন পরই গত রোববার লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে পণ্যের ট্রাক আটকে দেয় ভারত। সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, রোববার ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী সীমান্তে প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকে যায়। এ ছাড়া বেনাপোলে ৩৬টি পোশাক বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যের শতাধিক ট্রাক ঢুকতে পারেনি।
গতকাল সোমবার পর্যন্ত বুড়িমারী থেকে প্রাণের পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোর অর্ধেকের বেশি ফেরত নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেনাপোলে পোর্টের ভেতরে ২৪টি ট্রাক ছাড়া বাকিগুলো ফেরত চলে যায়।
বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল পোর্টের ভেতর ও বাইরে শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। আজ পোর্টের ভেতরের ২৪টি ছাড়া বাকিগুলো ফেরত নিয়ে গেছেন মালিকেরা। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, পোর্টের ভেতরের ট্রাকগুলোও ফেরত নিতে হবে।
জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে ৬ মিলিয়ন ডলারের ক্রয় আদেশ রয়েছে। তার মধ্য থেকে রোববার বুড়িমারী দিয়ে ১৭ ট্রাকবোঝাই পণ্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো ঢুকতে পারেনি। ট্রাকগুলো ফেরত আনা হচ্ছে। নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে অন্য পথ দিয়ে পণ্য পাঠাতে হবে।’
বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই ২৪টি ট্রাক পোর্টের ভেতরে থাকায় এখনো তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আশা, যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এই পণ্যগুলোর এলসি করা হয়েছিল, তাই এগুলো প্রবেশে অনুমতি পাবে। তবে এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার ওপর।
এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রপ্তানিকারক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।
স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় নৌপরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
আমদানি ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এর পরিমাণ ৮০ শতাংশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাক পণ্য থাকে তৈরি পোশাক।
এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। ফলে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখাই সরকারের উচিত বলে মনে করছেন তিনি।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহ মিটিয়ে ফেলতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হবে উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর।

ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক দিন পরই গত রোববার লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে পণ্যের ট্রাক আটকে দেয় ভারত। সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, রোববার ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী সীমান্তে প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকে যায়। এ ছাড়া বেনাপোলে ৩৬টি পোশাক বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যের শতাধিক ট্রাক ঢুকতে পারেনি।
গতকাল সোমবার পর্যন্ত বুড়িমারী থেকে প্রাণের পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোর অর্ধেকের বেশি ফেরত নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেনাপোলে পোর্টের ভেতরে ২৪টি ট্রাক ছাড়া বাকিগুলো ফেরত চলে যায়।
বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল পোর্টের ভেতর ও বাইরে শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। আজ পোর্টের ভেতরের ২৪টি ছাড়া বাকিগুলো ফেরত নিয়ে গেছেন মালিকেরা। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, পোর্টের ভেতরের ট্রাকগুলোও ফেরত নিতে হবে।
জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে ৬ মিলিয়ন ডলারের ক্রয় আদেশ রয়েছে। তার মধ্য থেকে রোববার বুড়িমারী দিয়ে ১৭ ট্রাকবোঝাই পণ্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো ঢুকতে পারেনি। ট্রাকগুলো ফেরত আনা হচ্ছে। নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে অন্য পথ দিয়ে পণ্য পাঠাতে হবে।’
বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই ২৪টি ট্রাক পোর্টের ভেতরে থাকায় এখনো তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আশা, যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এই পণ্যগুলোর এলসি করা হয়েছিল, তাই এগুলো প্রবেশে অনুমতি পাবে। তবে এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার ওপর।
এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রপ্তানিকারক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।
স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় নৌপরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
আমদানি ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এর পরিমাণ ৮০ শতাংশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাক পণ্য থাকে তৈরি পোশাক।
এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। ফলে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখাই সরকারের উচিত বলে মনে করছেন তিনি।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহ মিটিয়ে ফেলতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হবে উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর।

রাজধানীর জন্য ঘোষিত সময়সূচির দিকে তাকালে আবার আরেক চিত্র দেখা যায়। বলা হলো, সব এলাকায় সমানভাবে এক-দেড় ঘণ্টা করে বিদ্যুৎ থাকবে না। কিন্তু বাস্তবে দেখা গেল কিছু এলাকায় বিদ্যুৎ গেলে আর আসার নাম নেয় না, কিংবা এক-দেড় ঘণ্টা করে কয়েকবার বিদ্যুৎ যায়। কিন্তু কেন?
২৪ জুলাই ২০২২
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
০৬ অক্টোবর ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
১৮৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ধূলিধূসর টিলা খুঁড়ে পাওয়া মূল্যবান এই রত্নগুলো এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি ব্রিটিশ সংগ্রহাগারে প্রায় দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে ছিল। এখন যেহেতু রত্নগুলোর হাতবদলের সময় এসেছে, তাই নতুন সংগ্রাহকেরা আগ্রহ নিয়ে এগুলো সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখানে একটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।
গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর কাছাকাছি, বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ইটের ঘরের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি মুক্তা, রুবি, টোপাজ, নীলা ও নকশা করা সোনার পাত সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে এই রত্নগুলোর সঙ্গে সঙ্গে একটি খোদাই করা পাত্রে হাড়ের টুকরাও পাওয়া যায়, যেগুলোকে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে শনাক্ত করা হয়। এই আবিষ্কার তখন প্রত্নতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।
সাদাবি’স এশিয়ার চেয়ারম্যান নিকোলাস চাউ মনে করেন, স্মরণকালের বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর মাঝে এই রত্নসম্ভার অন্যতম। তবে এগুলো নিলামে তোলার কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর তা হচ্ছে—ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এবং বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র এই সম্পদ বিক্রি করা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?
১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এস্টেট ম্যানেজার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে লুম্বিনির ঠিক দক্ষিণে পিপ্রাওয়ায় অবস্থিত একটি ঢিবি খনন করেন। সেখান থেকেই প্রায় ২ হাজার বছর আগের ওই নির্দশনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাপ্ত রত্নসম্ভার ও দেহাবশেষ, যা তখনো পর্যন্ত অক্ষত ছিল, সেগুলো গৌতম বুদ্ধের শাক্য বংশের এবং বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের ঐতিহ্য। হাড়ের নিদর্শনগুলো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। এসব দেশে এখনো সেগুলোর পূজা করা হয়।

আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
১৮৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ধূলিধূসর টিলা খুঁড়ে পাওয়া মূল্যবান এই রত্নগুলো এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি ব্রিটিশ সংগ্রহাগারে প্রায় দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে ছিল। এখন যেহেতু রত্নগুলোর হাতবদলের সময় এসেছে, তাই নতুন সংগ্রাহকেরা আগ্রহ নিয়ে এগুলো সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখানে একটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।
গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর কাছাকাছি, বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ইটের ঘরের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি মুক্তা, রুবি, টোপাজ, নীলা ও নকশা করা সোনার পাত সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে এই রত্নগুলোর সঙ্গে সঙ্গে একটি খোদাই করা পাত্রে হাড়ের টুকরাও পাওয়া যায়, যেগুলোকে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে শনাক্ত করা হয়। এই আবিষ্কার তখন প্রত্নতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।
সাদাবি’স এশিয়ার চেয়ারম্যান নিকোলাস চাউ মনে করেন, স্মরণকালের বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর মাঝে এই রত্নসম্ভার অন্যতম। তবে এগুলো নিলামে তোলার কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর তা হচ্ছে—ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এবং বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র এই সম্পদ বিক্রি করা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?
১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এস্টেট ম্যানেজার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে লুম্বিনির ঠিক দক্ষিণে পিপ্রাওয়ায় অবস্থিত একটি ঢিবি খনন করেন। সেখান থেকেই প্রায় ২ হাজার বছর আগের ওই নির্দশনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাপ্ত রত্নসম্ভার ও দেহাবশেষ, যা তখনো পর্যন্ত অক্ষত ছিল, সেগুলো গৌতম বুদ্ধের শাক্য বংশের এবং বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের ঐতিহ্য। হাড়ের নিদর্শনগুলো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। এসব দেশে এখনো সেগুলোর পূজা করা হয়।

রাজধানীর জন্য ঘোষিত সময়সূচির দিকে তাকালে আবার আরেক চিত্র দেখা যায়। বলা হলো, সব এলাকায় সমানভাবে এক-দেড় ঘণ্টা করে বিদ্যুৎ থাকবে না। কিন্তু বাস্তবে দেখা গেল কিছু এলাকায় বিদ্যুৎ গেলে আর আসার নাম নেয় না, কিংবা এক-দেড় ঘণ্টা করে কয়েকবার বিদ্যুৎ যায়। কিন্তু কেন?
২৪ জুলাই ২০২২
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
০৬ অক্টোবর ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫