আবু তাহের খান

শিশু বয়সে পর্যাপ্ত পরিমাণে মানসম্মত পুষ্টিকর খাবার না পাওয়ার কারণে যে মানুষটি বড় হয়ে কাঙ্ক্ষিত মানের শারীরিক সামর্থ্যের অভাবে সর্বোচ্চ মানের খেলোয়াড় বা ক্রীড়াবিদ হয়ে উঠতে পারছেন না, সেই একই কারণে এ দেশের অন্য মানুষেরাও তেমনি সেরা বিজ্ঞানী, গবেষক, উদ্ভাবক, শিক্ষক, আমলা কিংবা রাজনীতিক হয়ে উঠতে পারছেন না। স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন জাতীয় জনসংখ্যা গবেষণা ও প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট (নিপোর্ট) কর্তৃক পরিচালিত এবং অতিসম্প্রতি প্রকাশিত ‘জাতীয় জনমিতি ও স্বাস্থ্য জরিপ ২০২২ ’-এর তথ্য জানাচ্ছে, দেশের ২৮ দশমিক ৭ শতাংশ শিশুই গ্রহণযোগ্য মানের পুষ্টিকর খাবার পাচ্ছে না।
দেশের ৬ থেকে ২৩ মাস বয়সী শিশুদের ওপর পরিচালিত এ জরিপ থেকে বেরিয়ে আসা সবচেয়ে উদ্বেগজনক তথ্যটি হচ্ছে এই, গ্রহণযোগ্য মানের পুষ্টিকর খাবারপ্রাপ্তির ক্ষেত্রে ২০১৭-১৮ সালে যে হার ছিল ৩৫ শতাংশ, সেটাই এখন ২৮ দশমিক ৭ শতাংশে নেমে এসেছে। এখানে দুটি প্রশ্ন: এক. আজকের যে শিশুরা আগামী দিনে বিভিন্ন খাতে ও ক্ষেত্রে যুক্ত হয়ে দেশ পরিচালনা করবে এবং দেশকে নেতৃত্ব দেবে, তাদের ৭১ শতাংশই যদি পুষ্টিহীন থাকে, তাহলে ওই পুষ্টিহীন পরিচালনা ও নেতৃত্বের আওতায় দেশ এগোবে কেমন করে?
দুই. গ্রহণযোগ্য মানের পুষ্টিপ্রাপ্ত শিশুর সংখ্যা মাত্র পাঁচ বছরের ব্যবধানে যদি ৬ দশমিক ৩ শতাংশ কমে যায়, তাহলে জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচি (ইউএনডিপি) কর্তৃক নির্ধারিত মানব উন্নয়ন সূচক (এইচডিআই) অনুযায়ী বাংলাদেশ কি সঠিক পথে এগোচ্ছে কিংবা পথ সঠিক থাকলেও তার গতি কি সন্তোষজনক?
প্রথম প্রশ্নের জবাব যেহেতু কিছুটা বিস্তৃত হওয়ার কথা, তাই দ্বিতীয় প্রশ্নের সংক্ষিপ্ত আলোচনাটিই আগে করা যাক। শিশুর পুষ্টিহীনতার উল্লিখিত এ হার মাত্র পাঁচ বছরের ব্যবধানে কী কারণে ৬ দশমিক ৩ শতাংশ কমে গেল, সে কারণটি অবশ্যই খুঁজে দেখা প্রয়োজন। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে হয়তো বলা হবে, করোনা ও ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে এ সময়ে অর্থনীতির ওপর যে বিরূপ প্রভাব পড়েছে, এর ফলেই এমনটি ঘটেছে। কথাটি পুরোপুরি যথার্থ নয়। বাংলাদেশে করোনার প্রথম রোগী শনাক্ত হয় ২০২০ সালের ৮ মার্চ; অর্থাৎ তত দিনে জরিপের আওতাধীন সময়কালের ২ বছর ৮ মাস পেরিয়ে গেছে।
অন্যদিকে রাশিয়া কর্তৃক ইউক্রেন আক্রমণের ঘটনা ঘটে ২০২২ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি; অর্থাৎ ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাব পুরোপুরি শুরু হওয়ার আগেই জরিপের মেয়াদকাল (৩০ জুন ২০২২) শেষ হয়ে যায়। ফলে ২০১৭-১৮ সালের তুলনায় ২০২২ সালে এসে শিশুর মানসম্মত পুষ্টি গ্রহণের হার যে এতটা কমে গেল, এর জন্য মূলত দায়ী হচ্ছে রাষ্ট্রের অন্যায্য, অদক্ষ, অমানবিক বণ্টন ও বাজারব্যবস্থা এবং এই অন্যায্য, অদক্ষতা ও অমানবিকতা যে এ ক্ষেত্রে কতটা প্রকট, রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানের তথ্য দিয়েই সে বিষয়টিকে খানিকটা ব্যাখ্যা করা যেতে পারে।
২০১৭ সালে বাংলাদেশের জনগণের মাথাপিছু গড় আয় ছিল ১ হাজার ৮১৬ মার্কিন ডলার, যখন দেশের ৩৫ শতাংশ শিশু মানসম্মত পুষ্টিকর খাবার গ্রহণের সুযোগ পেত। ২০২২ সালে বাংলাদেশের জনগণের মাথাপিছু গড় আয় ৪৮ শতাংশ বেড়ে ২ হাজার ৬৮৭ মার্কিন ডলারে উন্নীত হলেও শিশুর মানসম্মত পুষ্টিযুক্ত খাবার গ্রহণের হার কমে দাঁড়িয়েছে ২৮ দশমিক ৭ শতাংশে। তার মানে হচ্ছে, এই সময়ের মধ্যে সমাজের একটি বিশেষ শ্রেণির (যারা মোট জনসংখ্যার মাত্র ১০ শতাংশ) আয় ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পেলেও সংখ্যাগরিষ্ঠ সাধারণ মানুষের আয়-উপার্জন তেমন কিছুই বাড়েনি; বরং মূল্যস্ফীতির বিবেচনায় অধিকাংশ ক্ষেত্রে তা কমে গেছে। ফলে খুব স্বাভাবিকভাবেই শিশুর পুষ্টিকর খাবারপ্রাপ্তির ওপর তার যে ব্যাপকভিত্তিক নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে, সেখানে করোনা বা ইউক্রেন যুদ্ধের অবদান খুবই সামান্য। রাষ্ট্রের নীতি ও দৃষ্টিভঙ্গিই এ ক্ষেত্রে মূল কারণ।
এবার প্রথম প্রশ্নে ফিরে আসা যাক। পুষ্টিবঞ্চিত ওই ৭১ শতাংশ শিশু যখন বড় হয়ে বাংলাদেশ রাষ্ট্রের বিভিন্ন খাত ও ক্ষেত্র পরিচালনার দায়িত্বে এবং নেতৃত্বের আসনে অধিষ্ঠিত হবে, তখন তাদের সেই নেতৃত্ব ও পরিচালনার মান কেমন হবে? মেধা, দক্ষতা ও সৃজনশীলতা প্রয়োগে সত্যি কি তাদের পক্ষে সম্ভব হবে সর্বোচ্চ গুণগত মানটুকু রক্ষা করা? কয়েকটি বহুল আলোচিত উদাহরণ দিয়ে বিষয়টিকে ব্যাখ্যা করা যেতে পারে। বাংলাদেশের খেলোয়াড় ও ক্রীড়াবিদদের ব্যাপারে একটি প্রমাণিত সাধারণ অভিমত এই যে, শারীরিক সামর্থ্যে বা স্ট্যামিনায় তাঁদের অধিকাংশই অত্যন্ত পিছিয়ে পড়া মানুষ; শারীরিক শক্তি ও সামর্থ্যের অভাবে তাঁদের অধিকাংশই উঁচু মানের খেলোয়াড় হয়ে উঠতে পারছেন না।
এ বিষয়টির সঙ্গে নিবিড়ভাবে জড়িয়ে আছে শিশু বয়সে পুষ্টিকর খাবার পাওয়া বা না পাওয়ার বিষয়টি। কারণ শিশু বয়সে একজন মানুষের দেহে ওই অন্তর্গত সামর্থ্যটি গড়ে না উঠলে পরে শত বাড়তি খাবার যোগ করেও পিছিয়ে পড়া সেই ঘাটতিটুকু আর পূরণ করা সম্ভব নয়। বিষয়টি একইভাবে অন্য সব পেশার ক্ষেত্রেও সমানভাবে প্রযোজ্য।
শিশু বয়সে পর্যাপ্ত পরিমাণে মানসম্মত পুষ্টিকর খাবার না পাওয়ার কারণে যে মানুষটি বড় হয়ে কাঙ্ক্ষিত মানের শারীরিক সামর্থ্যের অভাবে সর্বোচ্চ মানের খেলোয়াড় বা ক্রীড়াবিদ হয়ে উঠতে পারছেন না, সেই একই কারণে এ দেশের অন্য মানুষেরাও তেমনি সেরা বিজ্ঞানী, সেরা গবেষক, সেরা উদ্ভাবক, সেরা শিক্ষক, সেরা আমলা কিংবা সেরা রাজনীতিক হয়ে উঠতে পারছেন না। প্রমাণ এই যে আমাদের রপ্তানি তালিকায় তৈরি পোশাক থাকলেও যন্ত্রপাতি বা প্রযুক্তি নেই, অন্যের উদ্ভাবিত ফর্মুলায় তৈরি ওষুধ থাকলেও নিজেদের উদ্ভাবিত কোনো টিকা বা ওষুধ নেই, প্রায় কোটি সংখ্যায় শ্রমিক থাকলেও প্রকৌশলী বা কারিগরি বিশেষজ্ঞ নেই।
আর আমদানি তালিকায় ভোগ্যপণ্যের পাশাপাশি রয়েছে উচ্চ প্রযুক্তি ও তদভিত্তিক যন্ত্রপাতি, স্থল, জল ও আকাশপথে চলাচলকারী যানবাহন, কারিগরি বিশেষজ্ঞ, এমনকি কারখানা ও দপ্তরের সাধারণ পরিচালনকর্মীও। অন্যদিকে রাষ্ট্র ও রাজনীতিতে রয়েছে অন্য দেশ ও সংগঠনের সনদ ও সুপারিশপ্রাপ্তির নিরন্তর প্রত্যাশা। কিন্তু নিজেদের কর্ম, দৃষ্টান্ত ও সুপারিশকে অন্যের কাছে কাম্য, আকর্ষণীয় ও অনুকরণীয় করে তোলার কোনো আকাঙ্ক্ষাই কখনো আমাদের মধ্যে জন্মায় না। আমরা আসলে অন্যের কর্ম, চিন্তা, মেধা, উদ্ভাবন ও উৎপাদনের ভোক্তা ও ফলভোগী মাত্র, যার পেছনের একটি বড় কারণ হচ্ছে শিশুকালে ও বাড়ন্ত বয়সে পর্যাপ্ত পুষ্টিকর খাবার না পাওয়া।
এমনি পরিস্থিতিতে ‘জাতীয় জনমিতি ও স্বাস্থ্য জরিপ ২০২২ ’-এর তথ্যকে বিশেষ গুরুত্বের সঙ্গে গ্রহণপূর্বক দেশের সার্বিক পুষ্টিপরিস্থিতির উন্নয়নে জরুরি ভিত্তিতে কার্যকর সংশোধনমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা আবশ্যক বলে মনে করি। সংশোধনমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের কথা বলা এ জন্য যে চলতি কার্যক্রম ও কর্মসূচিতে কিছু কিছু ত্রুটিবিচ্যুতি, সীমাবদ্ধতা ও অসম্পূর্ণতা থাকার কারণেই বস্তুত দেশের পুষ্টিপরিস্থিতির ক্ষেত্রে কাঙ্ক্ষিত হারে অগ্রগতি সাধিত হচ্ছে না। ওই যে পাঁচ বছরের ব্যবধানে ৬ থেকে ২৩ মাস বয়সী শিশুদের গ্রহণযোগ্য মানের পুষ্টিকর খাবারপ্রাপ্তির ক্ষেত্রে উদ্বেগজনক মাত্রার অবনতি ঘটল, সেটিও ওই ধরনের ত্রুটিবিচ্যুতি, সীমাবদ্ধতা ও অসম্পূর্ণতার কারণেই।
আর সে ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় ত্রুটিটি থেকে যাচ্ছে বস্তুত রাষ্ট্রের আদর্শিক চিন্তাচেতনা, দৃষ্টিভঙ্গি ও নীতিকাঠামোর ক্ষেত্রে। রাষ্ট্র শুধু বিত্তবানের সামর্থ্যের আলোকে জনগণের পুষ্টিপরিস্থিতিকে বিবেচনা করলে সংখ্যাগরিষ্ঠ সাধারণ জনগণের পুষ্টিস্তরের সন্তোষজনক অগ্রগতি কখনোই এবং কিছুতেই অর্জন করা সম্ভব নয়।
আগামী দিনের বাংলাদেশ যাতে একদল মেধাবী, দক্ষ ও সৃজনশীল চিন্তাচেতনা ও মানবিক গুণাবলিসমৃদ্ধ মানুষের নেতৃত্বের আওতায় পরিচালিত হতে পারে, সে জন্য দেশের প্রতিটি শিশুর জন্য গ্রহণযোগ্য মাত্রার পর্যাপ্ত পুষ্টিকর খাবারপ্রাপ্তির বিষয়টি রাষ্ট্রকে অবশ্যই নিশ্চিত করতে হবে। কিন্তু মুষ্টিমেয় সুবিধাবাদী বিত্তবানের স্বার্থের অনুগামী রাজনীতি ও আমলাতন্ত্র সেটি করতে কতটা আগ্রহী হবে, সেটাই দেখার বিষয়।

শিশু বয়সে পর্যাপ্ত পরিমাণে মানসম্মত পুষ্টিকর খাবার না পাওয়ার কারণে যে মানুষটি বড় হয়ে কাঙ্ক্ষিত মানের শারীরিক সামর্থ্যের অভাবে সর্বোচ্চ মানের খেলোয়াড় বা ক্রীড়াবিদ হয়ে উঠতে পারছেন না, সেই একই কারণে এ দেশের অন্য মানুষেরাও তেমনি সেরা বিজ্ঞানী, গবেষক, উদ্ভাবক, শিক্ষক, আমলা কিংবা রাজনীতিক হয়ে উঠতে পারছেন না। স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন জাতীয় জনসংখ্যা গবেষণা ও প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট (নিপোর্ট) কর্তৃক পরিচালিত এবং অতিসম্প্রতি প্রকাশিত ‘জাতীয় জনমিতি ও স্বাস্থ্য জরিপ ২০২২ ’-এর তথ্য জানাচ্ছে, দেশের ২৮ দশমিক ৭ শতাংশ শিশুই গ্রহণযোগ্য মানের পুষ্টিকর খাবার পাচ্ছে না।
দেশের ৬ থেকে ২৩ মাস বয়সী শিশুদের ওপর পরিচালিত এ জরিপ থেকে বেরিয়ে আসা সবচেয়ে উদ্বেগজনক তথ্যটি হচ্ছে এই, গ্রহণযোগ্য মানের পুষ্টিকর খাবারপ্রাপ্তির ক্ষেত্রে ২০১৭-১৮ সালে যে হার ছিল ৩৫ শতাংশ, সেটাই এখন ২৮ দশমিক ৭ শতাংশে নেমে এসেছে। এখানে দুটি প্রশ্ন: এক. আজকের যে শিশুরা আগামী দিনে বিভিন্ন খাতে ও ক্ষেত্রে যুক্ত হয়ে দেশ পরিচালনা করবে এবং দেশকে নেতৃত্ব দেবে, তাদের ৭১ শতাংশই যদি পুষ্টিহীন থাকে, তাহলে ওই পুষ্টিহীন পরিচালনা ও নেতৃত্বের আওতায় দেশ এগোবে কেমন করে?
দুই. গ্রহণযোগ্য মানের পুষ্টিপ্রাপ্ত শিশুর সংখ্যা মাত্র পাঁচ বছরের ব্যবধানে যদি ৬ দশমিক ৩ শতাংশ কমে যায়, তাহলে জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচি (ইউএনডিপি) কর্তৃক নির্ধারিত মানব উন্নয়ন সূচক (এইচডিআই) অনুযায়ী বাংলাদেশ কি সঠিক পথে এগোচ্ছে কিংবা পথ সঠিক থাকলেও তার গতি কি সন্তোষজনক?
প্রথম প্রশ্নের জবাব যেহেতু কিছুটা বিস্তৃত হওয়ার কথা, তাই দ্বিতীয় প্রশ্নের সংক্ষিপ্ত আলোচনাটিই আগে করা যাক। শিশুর পুষ্টিহীনতার উল্লিখিত এ হার মাত্র পাঁচ বছরের ব্যবধানে কী কারণে ৬ দশমিক ৩ শতাংশ কমে গেল, সে কারণটি অবশ্যই খুঁজে দেখা প্রয়োজন। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে হয়তো বলা হবে, করোনা ও ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে এ সময়ে অর্থনীতির ওপর যে বিরূপ প্রভাব পড়েছে, এর ফলেই এমনটি ঘটেছে। কথাটি পুরোপুরি যথার্থ নয়। বাংলাদেশে করোনার প্রথম রোগী শনাক্ত হয় ২০২০ সালের ৮ মার্চ; অর্থাৎ তত দিনে জরিপের আওতাধীন সময়কালের ২ বছর ৮ মাস পেরিয়ে গেছে।
অন্যদিকে রাশিয়া কর্তৃক ইউক্রেন আক্রমণের ঘটনা ঘটে ২০২২ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি; অর্থাৎ ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাব পুরোপুরি শুরু হওয়ার আগেই জরিপের মেয়াদকাল (৩০ জুন ২০২২) শেষ হয়ে যায়। ফলে ২০১৭-১৮ সালের তুলনায় ২০২২ সালে এসে শিশুর মানসম্মত পুষ্টি গ্রহণের হার যে এতটা কমে গেল, এর জন্য মূলত দায়ী হচ্ছে রাষ্ট্রের অন্যায্য, অদক্ষ, অমানবিক বণ্টন ও বাজারব্যবস্থা এবং এই অন্যায্য, অদক্ষতা ও অমানবিকতা যে এ ক্ষেত্রে কতটা প্রকট, রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানের তথ্য দিয়েই সে বিষয়টিকে খানিকটা ব্যাখ্যা করা যেতে পারে।
২০১৭ সালে বাংলাদেশের জনগণের মাথাপিছু গড় আয় ছিল ১ হাজার ৮১৬ মার্কিন ডলার, যখন দেশের ৩৫ শতাংশ শিশু মানসম্মত পুষ্টিকর খাবার গ্রহণের সুযোগ পেত। ২০২২ সালে বাংলাদেশের জনগণের মাথাপিছু গড় আয় ৪৮ শতাংশ বেড়ে ২ হাজার ৬৮৭ মার্কিন ডলারে উন্নীত হলেও শিশুর মানসম্মত পুষ্টিযুক্ত খাবার গ্রহণের হার কমে দাঁড়িয়েছে ২৮ দশমিক ৭ শতাংশে। তার মানে হচ্ছে, এই সময়ের মধ্যে সমাজের একটি বিশেষ শ্রেণির (যারা মোট জনসংখ্যার মাত্র ১০ শতাংশ) আয় ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পেলেও সংখ্যাগরিষ্ঠ সাধারণ মানুষের আয়-উপার্জন তেমন কিছুই বাড়েনি; বরং মূল্যস্ফীতির বিবেচনায় অধিকাংশ ক্ষেত্রে তা কমে গেছে। ফলে খুব স্বাভাবিকভাবেই শিশুর পুষ্টিকর খাবারপ্রাপ্তির ওপর তার যে ব্যাপকভিত্তিক নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে, সেখানে করোনা বা ইউক্রেন যুদ্ধের অবদান খুবই সামান্য। রাষ্ট্রের নীতি ও দৃষ্টিভঙ্গিই এ ক্ষেত্রে মূল কারণ।
এবার প্রথম প্রশ্নে ফিরে আসা যাক। পুষ্টিবঞ্চিত ওই ৭১ শতাংশ শিশু যখন বড় হয়ে বাংলাদেশ রাষ্ট্রের বিভিন্ন খাত ও ক্ষেত্র পরিচালনার দায়িত্বে এবং নেতৃত্বের আসনে অধিষ্ঠিত হবে, তখন তাদের সেই নেতৃত্ব ও পরিচালনার মান কেমন হবে? মেধা, দক্ষতা ও সৃজনশীলতা প্রয়োগে সত্যি কি তাদের পক্ষে সম্ভব হবে সর্বোচ্চ গুণগত মানটুকু রক্ষা করা? কয়েকটি বহুল আলোচিত উদাহরণ দিয়ে বিষয়টিকে ব্যাখ্যা করা যেতে পারে। বাংলাদেশের খেলোয়াড় ও ক্রীড়াবিদদের ব্যাপারে একটি প্রমাণিত সাধারণ অভিমত এই যে, শারীরিক সামর্থ্যে বা স্ট্যামিনায় তাঁদের অধিকাংশই অত্যন্ত পিছিয়ে পড়া মানুষ; শারীরিক শক্তি ও সামর্থ্যের অভাবে তাঁদের অধিকাংশই উঁচু মানের খেলোয়াড় হয়ে উঠতে পারছেন না।
এ বিষয়টির সঙ্গে নিবিড়ভাবে জড়িয়ে আছে শিশু বয়সে পুষ্টিকর খাবার পাওয়া বা না পাওয়ার বিষয়টি। কারণ শিশু বয়সে একজন মানুষের দেহে ওই অন্তর্গত সামর্থ্যটি গড়ে না উঠলে পরে শত বাড়তি খাবার যোগ করেও পিছিয়ে পড়া সেই ঘাটতিটুকু আর পূরণ করা সম্ভব নয়। বিষয়টি একইভাবে অন্য সব পেশার ক্ষেত্রেও সমানভাবে প্রযোজ্য।
শিশু বয়সে পর্যাপ্ত পরিমাণে মানসম্মত পুষ্টিকর খাবার না পাওয়ার কারণে যে মানুষটি বড় হয়ে কাঙ্ক্ষিত মানের শারীরিক সামর্থ্যের অভাবে সর্বোচ্চ মানের খেলোয়াড় বা ক্রীড়াবিদ হয়ে উঠতে পারছেন না, সেই একই কারণে এ দেশের অন্য মানুষেরাও তেমনি সেরা বিজ্ঞানী, সেরা গবেষক, সেরা উদ্ভাবক, সেরা শিক্ষক, সেরা আমলা কিংবা সেরা রাজনীতিক হয়ে উঠতে পারছেন না। প্রমাণ এই যে আমাদের রপ্তানি তালিকায় তৈরি পোশাক থাকলেও যন্ত্রপাতি বা প্রযুক্তি নেই, অন্যের উদ্ভাবিত ফর্মুলায় তৈরি ওষুধ থাকলেও নিজেদের উদ্ভাবিত কোনো টিকা বা ওষুধ নেই, প্রায় কোটি সংখ্যায় শ্রমিক থাকলেও প্রকৌশলী বা কারিগরি বিশেষজ্ঞ নেই।
আর আমদানি তালিকায় ভোগ্যপণ্যের পাশাপাশি রয়েছে উচ্চ প্রযুক্তি ও তদভিত্তিক যন্ত্রপাতি, স্থল, জল ও আকাশপথে চলাচলকারী যানবাহন, কারিগরি বিশেষজ্ঞ, এমনকি কারখানা ও দপ্তরের সাধারণ পরিচালনকর্মীও। অন্যদিকে রাষ্ট্র ও রাজনীতিতে রয়েছে অন্য দেশ ও সংগঠনের সনদ ও সুপারিশপ্রাপ্তির নিরন্তর প্রত্যাশা। কিন্তু নিজেদের কর্ম, দৃষ্টান্ত ও সুপারিশকে অন্যের কাছে কাম্য, আকর্ষণীয় ও অনুকরণীয় করে তোলার কোনো আকাঙ্ক্ষাই কখনো আমাদের মধ্যে জন্মায় না। আমরা আসলে অন্যের কর্ম, চিন্তা, মেধা, উদ্ভাবন ও উৎপাদনের ভোক্তা ও ফলভোগী মাত্র, যার পেছনের একটি বড় কারণ হচ্ছে শিশুকালে ও বাড়ন্ত বয়সে পর্যাপ্ত পুষ্টিকর খাবার না পাওয়া।
এমনি পরিস্থিতিতে ‘জাতীয় জনমিতি ও স্বাস্থ্য জরিপ ২০২২ ’-এর তথ্যকে বিশেষ গুরুত্বের সঙ্গে গ্রহণপূর্বক দেশের সার্বিক পুষ্টিপরিস্থিতির উন্নয়নে জরুরি ভিত্তিতে কার্যকর সংশোধনমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা আবশ্যক বলে মনে করি। সংশোধনমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের কথা বলা এ জন্য যে চলতি কার্যক্রম ও কর্মসূচিতে কিছু কিছু ত্রুটিবিচ্যুতি, সীমাবদ্ধতা ও অসম্পূর্ণতা থাকার কারণেই বস্তুত দেশের পুষ্টিপরিস্থিতির ক্ষেত্রে কাঙ্ক্ষিত হারে অগ্রগতি সাধিত হচ্ছে না। ওই যে পাঁচ বছরের ব্যবধানে ৬ থেকে ২৩ মাস বয়সী শিশুদের গ্রহণযোগ্য মানের পুষ্টিকর খাবারপ্রাপ্তির ক্ষেত্রে উদ্বেগজনক মাত্রার অবনতি ঘটল, সেটিও ওই ধরনের ত্রুটিবিচ্যুতি, সীমাবদ্ধতা ও অসম্পূর্ণতার কারণেই।
আর সে ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় ত্রুটিটি থেকে যাচ্ছে বস্তুত রাষ্ট্রের আদর্শিক চিন্তাচেতনা, দৃষ্টিভঙ্গি ও নীতিকাঠামোর ক্ষেত্রে। রাষ্ট্র শুধু বিত্তবানের সামর্থ্যের আলোকে জনগণের পুষ্টিপরিস্থিতিকে বিবেচনা করলে সংখ্যাগরিষ্ঠ সাধারণ জনগণের পুষ্টিস্তরের সন্তোষজনক অগ্রগতি কখনোই এবং কিছুতেই অর্জন করা সম্ভব নয়।
আগামী দিনের বাংলাদেশ যাতে একদল মেধাবী, দক্ষ ও সৃজনশীল চিন্তাচেতনা ও মানবিক গুণাবলিসমৃদ্ধ মানুষের নেতৃত্বের আওতায় পরিচালিত হতে পারে, সে জন্য দেশের প্রতিটি শিশুর জন্য গ্রহণযোগ্য মাত্রার পর্যাপ্ত পুষ্টিকর খাবারপ্রাপ্তির বিষয়টি রাষ্ট্রকে অবশ্যই নিশ্চিত করতে হবে। কিন্তু মুষ্টিমেয় সুবিধাবাদী বিত্তবানের স্বার্থের অনুগামী রাজনীতি ও আমলাতন্ত্র সেটি করতে কতটা আগ্রহী হবে, সেটাই দেখার বিষয়।

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
০৬ অক্টোবর ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫বাসস, ঢাকা

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরের জেরা শুরু করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আইনজীবী আমীর হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।
এই মামলার শুনানিতে এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের একাধিক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ ‘স্টার উইটনেস’ হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।
পরবর্তীকালে, এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।
মামলার প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এসএইচ তামিম। শুনানিতে তাঁদের সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলা ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হলো রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই তিনটি মামলার বিচারকাজই বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরের জেরা শুরু করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আইনজীবী আমীর হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।
এই মামলার শুনানিতে এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের একাধিক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ ‘স্টার উইটনেস’ হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।
পরবর্তীকালে, এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।
মামলার প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এসএইচ তামিম। শুনানিতে তাঁদের সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলা ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হলো রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই তিনটি মামলার বিচারকাজই বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।

শিশু বয়সে পর্যাপ্ত পরিমাণে মানসম্মত পুষ্টিকর খাবার না পাওয়ার কারণে যে মানুষটি বড় হয়ে কাঙ্ক্ষিত মানের শারীরিক সামর্থ্যের অভাবে সর্বোচ্চ মানের খেলোয়াড় বা ক্রীড়াবিদ হয়ে উঠতে পারছেন না, সেই একই কারণে এ দেশের অন্য মানুষেরাও তেমনি সেরা বিজ্ঞানী, গবেষক, উদ্ভাবক, শিক্ষক, আমলা কিংবা রাজনীতিক হয়ে উঠতে পারছেন
০৫ ডিসেম্বর ২০২৩
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা। অনেকে দেখে নিচ্ছিলেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না, কেউ জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করছিলেন, কেউ আবার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।
বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গতকাল শত শত ট্রলার নোঙর করে রাখা ছিল। জেলেদের উপস্থিতিতে ঘাট এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। ফকিরহাটের মুদি-মনিহারি দোকানগুলোতে জেলেরা কেনাকাটা করতে ভিড় জমান। ফকিরহাট এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে যেতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ামাত্রই সাগরে নামব।’
জেলে নুরসাইদ ও ফোরকান মিয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে কেটেছে। ওই সময়ে বেশ টাকা ঋণ করেছি। এখন সাগরে যাব। দেখি আল্লাহ ঋণ পরিশোধ করতে দেন কি না।’
নোয়াখালীর হাতিয়ার সূর্যমুখী, বাংলাবাজার, কাজিরবাজার, পাইতান মার্কেট চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গতকাল জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। অনেকে নৌকায় জাল তুলছিলেন, আবার অনেকে জ্বালানি তেল মজুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে নিয়ে যান। সূর্যমুখী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি জাফর উল্যা বলেন, ‘সাগরে ৮-১০ দিন থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ধ্যায় সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব।’
সূর্যমুখী ঘাট জেলে সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, ‘সাগরে নামতে প্রস্তুত নোয়াখালীর হাতিয়ার ২০টি ঘাটের লক্ষাধিক জেলে। এসব ঘাটে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ফিশিং ট্রলার রয়েছে। প্রতি ট্রলারে ১০ জন হলেও লক্ষাধিক জেলে এই মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সবাই গত ৫৮ দিন তীরে বেকার ছিলেন।’
পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেরা গতকাল দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিড়া, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী, হেতালিয়া, কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার জেলেরা, সদর উপজেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা প্রস্তুতি শেষে গত রাতে বঙ্গোপসাগরে রওনা হন।
কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে নৌকা, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সেরেছেন জেলেরা। গতকাল মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের খুরেরমুখ, সাবরাং ও বাহারছড়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা সারি সারি ট্রলারে জাল ও রসদ তোলেন জেলেরা।
একটি ট্রলারের মাঝি আবু তাহের জানান, এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কেউ সাগরে মাছ শিকারে নামেনি। এতে উপকূলের কাছাকাছি সাগরে জাল ফেললেই ইলিশসহ অন্য মাছ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
কক্সবাজার শহরের ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজারের মতো যান্ত্রিক ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। অধিকাংশ ট্রলার নিষেধাজ্ঞা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে রওনা হবে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও আমতলী, পিরোজপুর, কক্সবাজার এবং হাতিয়া প্রতিনিধি]

‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা। অনেকে দেখে নিচ্ছিলেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না, কেউ জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করছিলেন, কেউ আবার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।
বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গতকাল শত শত ট্রলার নোঙর করে রাখা ছিল। জেলেদের উপস্থিতিতে ঘাট এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। ফকিরহাটের মুদি-মনিহারি দোকানগুলোতে জেলেরা কেনাকাটা করতে ভিড় জমান। ফকিরহাট এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে যেতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ামাত্রই সাগরে নামব।’
জেলে নুরসাইদ ও ফোরকান মিয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে কেটেছে। ওই সময়ে বেশ টাকা ঋণ করেছি। এখন সাগরে যাব। দেখি আল্লাহ ঋণ পরিশোধ করতে দেন কি না।’
নোয়াখালীর হাতিয়ার সূর্যমুখী, বাংলাবাজার, কাজিরবাজার, পাইতান মার্কেট চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গতকাল জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। অনেকে নৌকায় জাল তুলছিলেন, আবার অনেকে জ্বালানি তেল মজুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে নিয়ে যান। সূর্যমুখী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি জাফর উল্যা বলেন, ‘সাগরে ৮-১০ দিন থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ধ্যায় সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব।’
সূর্যমুখী ঘাট জেলে সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, ‘সাগরে নামতে প্রস্তুত নোয়াখালীর হাতিয়ার ২০টি ঘাটের লক্ষাধিক জেলে। এসব ঘাটে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ফিশিং ট্রলার রয়েছে। প্রতি ট্রলারে ১০ জন হলেও লক্ষাধিক জেলে এই মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সবাই গত ৫৮ দিন তীরে বেকার ছিলেন।’
পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেরা গতকাল দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিড়া, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী, হেতালিয়া, কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার জেলেরা, সদর উপজেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা প্রস্তুতি শেষে গত রাতে বঙ্গোপসাগরে রওনা হন।
কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে নৌকা, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সেরেছেন জেলেরা। গতকাল মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের খুরেরমুখ, সাবরাং ও বাহারছড়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা সারি সারি ট্রলারে জাল ও রসদ তোলেন জেলেরা।
একটি ট্রলারের মাঝি আবু তাহের জানান, এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কেউ সাগরে মাছ শিকারে নামেনি। এতে উপকূলের কাছাকাছি সাগরে জাল ফেললেই ইলিশসহ অন্য মাছ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
কক্সবাজার শহরের ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজারের মতো যান্ত্রিক ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। অধিকাংশ ট্রলার নিষেধাজ্ঞা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে রওনা হবে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও আমতলী, পিরোজপুর, কক্সবাজার এবং হাতিয়া প্রতিনিধি]

শিশু বয়সে পর্যাপ্ত পরিমাণে মানসম্মত পুষ্টিকর খাবার না পাওয়ার কারণে যে মানুষটি বড় হয়ে কাঙ্ক্ষিত মানের শারীরিক সামর্থ্যের অভাবে সর্বোচ্চ মানের খেলোয়াড় বা ক্রীড়াবিদ হয়ে উঠতে পারছেন না, সেই একই কারণে এ দেশের অন্য মানুষেরাও তেমনি সেরা বিজ্ঞানী, গবেষক, উদ্ভাবক, শিক্ষক, আমলা কিংবা রাজনীতিক হয়ে উঠতে পারছেন
০৫ ডিসেম্বর ২০২৩
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
০৬ অক্টোবর ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক দিন পরই গত রোববার লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে পণ্যের ট্রাক আটকে দেয় ভারত। সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, রোববার ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী সীমান্তে প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকে যায়। এ ছাড়া বেনাপোলে ৩৬টি পোশাক বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যের শতাধিক ট্রাক ঢুকতে পারেনি।
গতকাল সোমবার পর্যন্ত বুড়িমারী থেকে প্রাণের পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোর অর্ধেকের বেশি ফেরত নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেনাপোলে পোর্টের ভেতরে ২৪টি ট্রাক ছাড়া বাকিগুলো ফেরত চলে যায়।
বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল পোর্টের ভেতর ও বাইরে শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। আজ পোর্টের ভেতরের ২৪টি ছাড়া বাকিগুলো ফেরত নিয়ে গেছেন মালিকেরা। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, পোর্টের ভেতরের ট্রাকগুলোও ফেরত নিতে হবে।
জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে ৬ মিলিয়ন ডলারের ক্রয় আদেশ রয়েছে। তার মধ্য থেকে রোববার বুড়িমারী দিয়ে ১৭ ট্রাকবোঝাই পণ্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো ঢুকতে পারেনি। ট্রাকগুলো ফেরত আনা হচ্ছে। নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে অন্য পথ দিয়ে পণ্য পাঠাতে হবে।’
বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই ২৪টি ট্রাক পোর্টের ভেতরে থাকায় এখনো তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আশা, যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এই পণ্যগুলোর এলসি করা হয়েছিল, তাই এগুলো প্রবেশে অনুমতি পাবে। তবে এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার ওপর।
এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রপ্তানিকারক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।
স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় নৌপরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
আমদানি ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এর পরিমাণ ৮০ শতাংশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাক পণ্য থাকে তৈরি পোশাক।
এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। ফলে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখাই সরকারের উচিত বলে মনে করছেন তিনি।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহ মিটিয়ে ফেলতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হবে উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর।

ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক দিন পরই গত রোববার লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে পণ্যের ট্রাক আটকে দেয় ভারত। সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, রোববার ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী সীমান্তে প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকে যায়। এ ছাড়া বেনাপোলে ৩৬টি পোশাক বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যের শতাধিক ট্রাক ঢুকতে পারেনি।
গতকাল সোমবার পর্যন্ত বুড়িমারী থেকে প্রাণের পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোর অর্ধেকের বেশি ফেরত নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেনাপোলে পোর্টের ভেতরে ২৪টি ট্রাক ছাড়া বাকিগুলো ফেরত চলে যায়।
বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল পোর্টের ভেতর ও বাইরে শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। আজ পোর্টের ভেতরের ২৪টি ছাড়া বাকিগুলো ফেরত নিয়ে গেছেন মালিকেরা। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, পোর্টের ভেতরের ট্রাকগুলোও ফেরত নিতে হবে।
জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে ৬ মিলিয়ন ডলারের ক্রয় আদেশ রয়েছে। তার মধ্য থেকে রোববার বুড়িমারী দিয়ে ১৭ ট্রাকবোঝাই পণ্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো ঢুকতে পারেনি। ট্রাকগুলো ফেরত আনা হচ্ছে। নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে অন্য পথ দিয়ে পণ্য পাঠাতে হবে।’
বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই ২৪টি ট্রাক পোর্টের ভেতরে থাকায় এখনো তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আশা, যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এই পণ্যগুলোর এলসি করা হয়েছিল, তাই এগুলো প্রবেশে অনুমতি পাবে। তবে এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার ওপর।
এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রপ্তানিকারক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।
স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় নৌপরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
আমদানি ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এর পরিমাণ ৮০ শতাংশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাক পণ্য থাকে তৈরি পোশাক।
এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। ফলে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখাই সরকারের উচিত বলে মনে করছেন তিনি।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহ মিটিয়ে ফেলতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হবে উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর।

শিশু বয়সে পর্যাপ্ত পরিমাণে মানসম্মত পুষ্টিকর খাবার না পাওয়ার কারণে যে মানুষটি বড় হয়ে কাঙ্ক্ষিত মানের শারীরিক সামর্থ্যের অভাবে সর্বোচ্চ মানের খেলোয়াড় বা ক্রীড়াবিদ হয়ে উঠতে পারছেন না, সেই একই কারণে এ দেশের অন্য মানুষেরাও তেমনি সেরা বিজ্ঞানী, গবেষক, উদ্ভাবক, শিক্ষক, আমলা কিংবা রাজনীতিক হয়ে উঠতে পারছেন
০৫ ডিসেম্বর ২০২৩
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
০৬ অক্টোবর ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
১৮৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ধূলিধূসর টিলা খুঁড়ে পাওয়া মূল্যবান এই রত্নগুলো এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি ব্রিটিশ সংগ্রহাগারে প্রায় দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে ছিল। এখন যেহেতু রত্নগুলোর হাতবদলের সময় এসেছে, তাই নতুন সংগ্রাহকেরা আগ্রহ নিয়ে এগুলো সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখানে একটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।
গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর কাছাকাছি, বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ইটের ঘরের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি মুক্তা, রুবি, টোপাজ, নীলা ও নকশা করা সোনার পাত সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে এই রত্নগুলোর সঙ্গে সঙ্গে একটি খোদাই করা পাত্রে হাড়ের টুকরাও পাওয়া যায়, যেগুলোকে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে শনাক্ত করা হয়। এই আবিষ্কার তখন প্রত্নতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।
সাদাবি’স এশিয়ার চেয়ারম্যান নিকোলাস চাউ মনে করেন, স্মরণকালের বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর মাঝে এই রত্নসম্ভার অন্যতম। তবে এগুলো নিলামে তোলার কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর তা হচ্ছে—ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এবং বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র এই সম্পদ বিক্রি করা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?
১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এস্টেট ম্যানেজার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে লুম্বিনির ঠিক দক্ষিণে পিপ্রাওয়ায় অবস্থিত একটি ঢিবি খনন করেন। সেখান থেকেই প্রায় ২ হাজার বছর আগের ওই নির্দশনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাপ্ত রত্নসম্ভার ও দেহাবশেষ, যা তখনো পর্যন্ত অক্ষত ছিল, সেগুলো গৌতম বুদ্ধের শাক্য বংশের এবং বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের ঐতিহ্য। হাড়ের নিদর্শনগুলো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। এসব দেশে এখনো সেগুলোর পূজা করা হয়।

আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
১৮৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ধূলিধূসর টিলা খুঁড়ে পাওয়া মূল্যবান এই রত্নগুলো এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি ব্রিটিশ সংগ্রহাগারে প্রায় দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে ছিল। এখন যেহেতু রত্নগুলোর হাতবদলের সময় এসেছে, তাই নতুন সংগ্রাহকেরা আগ্রহ নিয়ে এগুলো সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখানে একটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।
গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর কাছাকাছি, বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ইটের ঘরের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি মুক্তা, রুবি, টোপাজ, নীলা ও নকশা করা সোনার পাত সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে এই রত্নগুলোর সঙ্গে সঙ্গে একটি খোদাই করা পাত্রে হাড়ের টুকরাও পাওয়া যায়, যেগুলোকে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে শনাক্ত করা হয়। এই আবিষ্কার তখন প্রত্নতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।
সাদাবি’স এশিয়ার চেয়ারম্যান নিকোলাস চাউ মনে করেন, স্মরণকালের বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর মাঝে এই রত্নসম্ভার অন্যতম। তবে এগুলো নিলামে তোলার কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর তা হচ্ছে—ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এবং বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র এই সম্পদ বিক্রি করা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?
১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এস্টেট ম্যানেজার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে লুম্বিনির ঠিক দক্ষিণে পিপ্রাওয়ায় অবস্থিত একটি ঢিবি খনন করেন। সেখান থেকেই প্রায় ২ হাজার বছর আগের ওই নির্দশনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাপ্ত রত্নসম্ভার ও দেহাবশেষ, যা তখনো পর্যন্ত অক্ষত ছিল, সেগুলো গৌতম বুদ্ধের শাক্য বংশের এবং বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের ঐতিহ্য। হাড়ের নিদর্শনগুলো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। এসব দেশে এখনো সেগুলোর পূজা করা হয়।

শিশু বয়সে পর্যাপ্ত পরিমাণে মানসম্মত পুষ্টিকর খাবার না পাওয়ার কারণে যে মানুষটি বড় হয়ে কাঙ্ক্ষিত মানের শারীরিক সামর্থ্যের অভাবে সর্বোচ্চ মানের খেলোয়াড় বা ক্রীড়াবিদ হয়ে উঠতে পারছেন না, সেই একই কারণে এ দেশের অন্য মানুষেরাও তেমনি সেরা বিজ্ঞানী, গবেষক, উদ্ভাবক, শিক্ষক, আমলা কিংবা রাজনীতিক হয়ে উঠতে পারছেন
০৫ ডিসেম্বর ২০২৩
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
০৬ অক্টোবর ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫