মামুনুর রশীদ

সংস্কারের কথা মনে হলেই ঊনবিংশ শতাব্দীর প্রথমার্ধের কিছু সামাজিক সংস্কারের কথা মনে পড়ে। এর মধ্যে আছে বিধবাবিবাহ প্রচলন, বাল্যবিবাহ এবং সতীদাহ প্রথা রদসহ অনেক কুসংস্কার। সেই সঙ্গে হয় নারীশিক্ষার প্রচলন। কিছু কিছু ক্ষেত্রে সফল হলেও লড়াইটা করতে হয়েছে অনেক দিন অবধি। ঊনবিংশ শতাব্দীর শেষ দিকে রাজনৈতিক আন্দোলন শুরু হলেও সেসব রাজনীতিকদের মধ্যে ইংল্যান্ডের রাষ্ট্রব্যবস্থার একটা সুস্পষ্ট ছায়া ছিল। বহু ভারতবাসীর ইংল্যান্ড গমন ও আইন বিষয়ে অধ্যয়নের পর তাঁরা ওই দেশের পার্লামেন্টটাকেই আদর্শ মনে করলেন। রাজা-রানির পরিবর্তে একজন রাষ্ট্রপতির কথা ভাবলেন তাঁরা।
ভারত খণ্ডিত হওয়ার পর সেখানে রয়ে গেলেন একজন গভর্নর জেনারেল, যিনি ইংল্যান্ডের। আর পাকিস্তানে গভর্নর জেনারেল হলেন যিনি পশ্চিমা শিক্ষায় শিক্ষিত উর্দুভাষী—ব্যারিস্টার মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ। জন্মসূত্রে তিনি গুজরাটি মুসলিম। ভারতের গভর্নর জেনারেলটি বিদায় হওয়ার পর সেখানে দ্রুতই রাষ্ট্রপতির বিষয়টি এসে যায়। সংবিধান প্রণীত হয় এবং পার্লামেন্টারি শাসনব্যবস্থা চালু হয়, যার প্রধান উদ্দেশ্য গণতন্ত্র। পাকিস্তানে গভর্নর জেনারেলই রয়ে গেলেন বেশ কিছুদিন। সেনাবাহিনী একটা গুরুত্বপূর্ণ অবস্থান নিয়ে নেয়। সংসদীয় গণতন্ত্রের পথ দুর্গম হয়ে যায়। সংবিধান রচনার বিষয়টি চলে যায় সুদূরে।
সংসদীয় ব্যবস্থার প্রতি পাকিস্তান রাষ্ট্রের কোনো আগ্রহই ছিল না। পূর্ব বাংলার প্রতি কোনো ধরনের রাজনৈতিক আগ্রহ প্রকাশ না করে শোষণটাই মুখ্য হয়ে দাঁড়ায়। ন্যূনতম রাজনৈতিক সহনশীলতা না থাকায় কোনো সংস্কৃতি গড়ে উঠল না। যদিও পূর্ব বাংলা এবং বঞ্চিত পশ্চিম পাকিস্তানি রাজনীতিকদের মধ্যে একটা রাজনৈতিক সংস্কৃতি গড়ে উঠেছিল বহু আগে থেকে। তাই এ দেশে সামরিক আইন চালু করে মানুষকে বুটের তলায় নেওয়া হলো। কিন্তু পূর্ব বাংলা এবং সীমান্ত প্রদেশের নেতৃত্বের মধ্যে একটা গণতন্ত্রের আকাঙ্ক্ষা থাকায় রাজনৈতিক আন্দোলনটা চলতে থাকল। একপর্যায়ে আন্দোলনটা একটা সশস্ত্র যুদ্ধের আকার গ্রহণ করল। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর আকাঙ্ক্ষিত সেই পথে চলতে গিয়ে বেশ কয়েকটা হোঁচট খাওয়ার পর সশস্ত্র বাহিনী পাকিস্তানি কায়দায় ক্ষমতা দখল করে গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক সংস্কৃতিটা একেবারেই ধ্বংস করে দেয়।
সেই থেকে জাতিতে বিভাজন আসে, সেই বিভাজন মাঝে মাঝে জোড়া লাগলেও ওই সংস্কৃতিটা আর ফিরে আসে না। এর মধ্যে পেশিশক্তি, অবাধ অর্থের লেনদেন মিলিয়ে যা দাঁড়ায় তা হলো, গণতান্ত্রিক সংস্কৃতিটা একেবারেই নষ্ট হয়ে যায়। পরমতসহিষ্ণুতা, আইনের প্রতি শ্রদ্ধা একেবারেই হারিয়ে যেতে থাকে। প্রতিহিংসা একটা বড় জায়গা করে নেয়। রাষ্ট্রব্যবস্থায় একজন রাষ্ট্রপতি আসেন বটে, কিন্তু তাঁর মধ্যে নিরপেক্ষতা এবং দলের ঊর্ধ্বে ওঠার কোনো লক্ষণ দেখা যায় না। রাষ্ট্রপতিকে কখনোই নাগরিকদের কল্যাণে নিজের ক্ষমতার ব্যবহার করতে দেখা যায় না; বরং দলের প্রতি পূর্ণ আনুগত্য প্রদর্শন করাটাই মুখ্য বলে বিবেচনা করেন তিনি। বারবার এ জন্য প্রায়ই উচ্চারণ করে থাকি, রাষ্ট্রটা কিছুতেই মানবিক হলো না।
রাষ্ট্রের যারা কর্মচারী, তারাও একই পথ অনুসরণ করে থাকে। এমনকি বিচার বিভাগও প্রশ্নাতীত থাকে না। ফলে সবাই শাসক দলের অনুগত হয়েই নিজেদের কাজ করে থাকে। ক্ষমতার পালাবদলে ব্যাপক রদবদলের পর দেখা যায় রাষ্ট্রের শাসনের বদলে দলীয় শাসন কায়েম হয়ে যায়। এই দুর্ভাগ্য মাথায় নিয়েই আমরা তেপ্পান্ন বছর ধরে চলছি।একসময় সামরিক শাসনের কালে একজন সচিব বলেছিলেন, ‘আমরা প্রজাতন্ত্রের কর্মচারী, কোনো দলের নই।’ কিন্তু সেই সচিবকেও পরবর্তীকালে দেখেছি তিনি মন্ত্রী হয়েছেন এবং প্রজাতন্ত্রের কর্মচারীদের দলের অনুশাসনের মধ্যে বেঁধে ফেলেছেন। তাই রাষ্ট্রের সংস্কারের মুখ্য কথাই হলো রাজনৈতিক সংস্কৃতিকে ঠিক করা এবং রাষ্ট্রকে মানবিক করে তোলা।
পৃথিবীর অনেক দেশেরই নিজস্ব রাষ্ট্রব্যবস্থা আছে, যা ইংল্যান্ডের মতো নয়। কিন্তু যেখানে ব্রিটিশরা গেছে, সেখানেই নিজেদের শাসনব্যবস্থাটাই রেখে গেছে। আজকের দিনে যখন রাষ্ট্র সংস্কারের কথা ওঠে, তখন ওপরের দুটি কথাই মনে আসে। রাজনৈতিক সংস্কৃতি, মানবিক রাষ্ট্র যার মধ্যে অসাম্যের বিষয়টি, বিশেষ করে মুক্তিযুদ্ধের অঙ্গীকার ধর্মনিরপেক্ষতার কথা সংস্কারকেরা অবশ্যই ভাববেন—রাষ্ট্র কীভাবে চলবে, নির্বাচিত প্রতিনিধি, আমলাতন্ত্র, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, বিচারব্যবস্থা—এসবই থাকবে। বাহাত্তরের সংবিধানটি পুনরায় পর্যালোচনা করা যেতে পারে।
প্রশ্ন উঠছে সংস্কৃতি সংস্কার নিয়ে। মাঝে মাঝে এ প্রশ্ন নিয়ে বিপুল বিতর্ক হচ্ছে। বহু আগে বদরুদ্দীন উমর বলেছিলেন, একটা বড় বিষয় লক্ষণীয় যে আমরা সব সময়ই একটা দ্বিধায় ভুগে থাকি, তা হলো—আমরা বাঙালি না মুসলমান? এ দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষ মুসলমান হলেও বাঙালিত্ব তাদের শিরা-উপশিরায় প্রবাহিত। সুদীর্ঘদিন মুসলিম শাসনের কালেও বাঙালিত্বকে কেউ অস্বীকার করেনি। অসাম্প্রদায়িকতার বাণী তারা ভুলে যায়নি। বাংলা সনের সূচনাও করেছিলেন সম্রাট আকবর। তাঁর মন্ত্রিসভার সদস্য, সেনাপতির অবস্থান খুবই অসাম্প্রদায়িক। সেই ধারা আওরঙ্গজেব পর্যন্ত চলেছে। অখণ্ড ভারতের চিন্তাবিদ, চিত্রকর, সংগীতজ্ঞ—সবার মধ্যেই এই ধারণা বহমান। ব্রিটিশরা এলেও লালন শাহ, হাসন রাজা, রবীন্দ্রনাথ, নজরুল, পঞ্চগীতিকবি, ভাস্কর, নাট্যকারসহ সব শিল্পীই অসাম্প্রদায়িকতার বাণী প্রচার করেছেন। চৈতন্যদেব থেকে শুরু করে আলাওল—সবাই একই পথের পথিক।
আর সংস্কৃতি বিষয়টা কোনো তাৎক্ষণিক বিষয় না। একজন চিন্তক বা শিল্পীদের উত্থান কোনো স্বল্প দিনের বিষয় না। আমাদের ভাষার ওপর যখন আক্রমণ আসে, তখন সমগ্র বাঙালি কেমন করে এক হয়ে লড়াই করতে চায়! আজকের দিনের রাষ্ট্র সংস্কৃতিও একটা অবকাঠামো গড়ে তোলে, যার মধ্যে শিল্পকলা একাডেমি, চলচ্চিত্র ইনস্টিটিউট, চারুকলা; নাটকের জন্য কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে বিভাগ করে ফেলে। আবার বেসরকারি পর্যায়েও অনেক শিক্ষকের সৃষ্টি করে। শাসক দল এই অবকাঠামোকে স্বাধীনভাবে কাজ করতে দেয় না। একধরনের গোপন ইঙ্গিতও তার মধ্যে থাকে, যেটি একেবারেই দলীয়। স্বাধীন শিল্পচর্চার পথ সেখানে রুদ্ধ হয়।
একদা উচ্চাঙ্গের শিল্পচর্চার জন্য সামন্তদের একটা পৃষ্ঠপোষকতা ছিল। উপমহাদেশের অনেক বড় বড় শিল্পীর তখন জন্ম হয়েছিল। আধুনিক রাষ্ট্রগুলো শিল্পীদের স্বাধীন সত্তা বিকাশের সঙ্গে সঙ্গে তাদের জীবিকার বিষয়টিও যথেষ্ট গুরুত্ব দিয়ে থাকে। ইউরোপ, আমেরিকা এবং প্রাচ্য দেশের জাপান, কোরিয়াও সেই পথ অবলম্বন করে। অনুদান দিয়ে শাসক দলের অনুগত করার কোনো চেষ্টা তারা করে না। শিল্পচর্চার জন্য অনুদান কোনো করুণার বিষয় নয়। এটা শিল্পীদের অধিকার। এটিকে তারা আইনসিদ্ধ করেও তুলেছে। নাটক, চলচ্চিত্র নির্মাণ অত্যন্ত ব্যয়সাপেক্ষ একটি বিষয়। এখানে রাষ্ট্রকে অনুদান এবং পৃষ্ঠপোষকতা দিতেই হবে। এটাই হবে সংস্কারের প্রধান বিষয়।
সংস্কৃতিতে প্রধান উপাদান হচ্ছে শিক্ষা। শিক্ষাব্যবস্থাকে যেভাবে নানা পরীক্ষা-নিরীক্ষার মাধ্যমে একেবারেই অর্থহীন করে তোলা হচ্ছে, সেখানে শিল্পের শিক্ষাই একটা বড় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে। জীবনাচরণে এবং সত্যিকারের মানুষ হওয়ার জন্য শিল্পের ভূমিকা অসীম। যদি সত্যি আমরা সংস্কারের কথা ভাবি, তাহলে শিল্পকে জীবনের বড় অনুষঙ্গ হিসেবেই দেখতে হবে।
লেখক: নাট্যব্যক্তিত্ব

সংস্কারের কথা মনে হলেই ঊনবিংশ শতাব্দীর প্রথমার্ধের কিছু সামাজিক সংস্কারের কথা মনে পড়ে। এর মধ্যে আছে বিধবাবিবাহ প্রচলন, বাল্যবিবাহ এবং সতীদাহ প্রথা রদসহ অনেক কুসংস্কার। সেই সঙ্গে হয় নারীশিক্ষার প্রচলন। কিছু কিছু ক্ষেত্রে সফল হলেও লড়াইটা করতে হয়েছে অনেক দিন অবধি। ঊনবিংশ শতাব্দীর শেষ দিকে রাজনৈতিক আন্দোলন শুরু হলেও সেসব রাজনীতিকদের মধ্যে ইংল্যান্ডের রাষ্ট্রব্যবস্থার একটা সুস্পষ্ট ছায়া ছিল। বহু ভারতবাসীর ইংল্যান্ড গমন ও আইন বিষয়ে অধ্যয়নের পর তাঁরা ওই দেশের পার্লামেন্টটাকেই আদর্শ মনে করলেন। রাজা-রানির পরিবর্তে একজন রাষ্ট্রপতির কথা ভাবলেন তাঁরা।
ভারত খণ্ডিত হওয়ার পর সেখানে রয়ে গেলেন একজন গভর্নর জেনারেল, যিনি ইংল্যান্ডের। আর পাকিস্তানে গভর্নর জেনারেল হলেন যিনি পশ্চিমা শিক্ষায় শিক্ষিত উর্দুভাষী—ব্যারিস্টার মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ। জন্মসূত্রে তিনি গুজরাটি মুসলিম। ভারতের গভর্নর জেনারেলটি বিদায় হওয়ার পর সেখানে দ্রুতই রাষ্ট্রপতির বিষয়টি এসে যায়। সংবিধান প্রণীত হয় এবং পার্লামেন্টারি শাসনব্যবস্থা চালু হয়, যার প্রধান উদ্দেশ্য গণতন্ত্র। পাকিস্তানে গভর্নর জেনারেলই রয়ে গেলেন বেশ কিছুদিন। সেনাবাহিনী একটা গুরুত্বপূর্ণ অবস্থান নিয়ে নেয়। সংসদীয় গণতন্ত্রের পথ দুর্গম হয়ে যায়। সংবিধান রচনার বিষয়টি চলে যায় সুদূরে।
সংসদীয় ব্যবস্থার প্রতি পাকিস্তান রাষ্ট্রের কোনো আগ্রহই ছিল না। পূর্ব বাংলার প্রতি কোনো ধরনের রাজনৈতিক আগ্রহ প্রকাশ না করে শোষণটাই মুখ্য হয়ে দাঁড়ায়। ন্যূনতম রাজনৈতিক সহনশীলতা না থাকায় কোনো সংস্কৃতি গড়ে উঠল না। যদিও পূর্ব বাংলা এবং বঞ্চিত পশ্চিম পাকিস্তানি রাজনীতিকদের মধ্যে একটা রাজনৈতিক সংস্কৃতি গড়ে উঠেছিল বহু আগে থেকে। তাই এ দেশে সামরিক আইন চালু করে মানুষকে বুটের তলায় নেওয়া হলো। কিন্তু পূর্ব বাংলা এবং সীমান্ত প্রদেশের নেতৃত্বের মধ্যে একটা গণতন্ত্রের আকাঙ্ক্ষা থাকায় রাজনৈতিক আন্দোলনটা চলতে থাকল। একপর্যায়ে আন্দোলনটা একটা সশস্ত্র যুদ্ধের আকার গ্রহণ করল। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর আকাঙ্ক্ষিত সেই পথে চলতে গিয়ে বেশ কয়েকটা হোঁচট খাওয়ার পর সশস্ত্র বাহিনী পাকিস্তানি কায়দায় ক্ষমতা দখল করে গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক সংস্কৃতিটা একেবারেই ধ্বংস করে দেয়।
সেই থেকে জাতিতে বিভাজন আসে, সেই বিভাজন মাঝে মাঝে জোড়া লাগলেও ওই সংস্কৃতিটা আর ফিরে আসে না। এর মধ্যে পেশিশক্তি, অবাধ অর্থের লেনদেন মিলিয়ে যা দাঁড়ায় তা হলো, গণতান্ত্রিক সংস্কৃতিটা একেবারেই নষ্ট হয়ে যায়। পরমতসহিষ্ণুতা, আইনের প্রতি শ্রদ্ধা একেবারেই হারিয়ে যেতে থাকে। প্রতিহিংসা একটা বড় জায়গা করে নেয়। রাষ্ট্রব্যবস্থায় একজন রাষ্ট্রপতি আসেন বটে, কিন্তু তাঁর মধ্যে নিরপেক্ষতা এবং দলের ঊর্ধ্বে ওঠার কোনো লক্ষণ দেখা যায় না। রাষ্ট্রপতিকে কখনোই নাগরিকদের কল্যাণে নিজের ক্ষমতার ব্যবহার করতে দেখা যায় না; বরং দলের প্রতি পূর্ণ আনুগত্য প্রদর্শন করাটাই মুখ্য বলে বিবেচনা করেন তিনি। বারবার এ জন্য প্রায়ই উচ্চারণ করে থাকি, রাষ্ট্রটা কিছুতেই মানবিক হলো না।
রাষ্ট্রের যারা কর্মচারী, তারাও একই পথ অনুসরণ করে থাকে। এমনকি বিচার বিভাগও প্রশ্নাতীত থাকে না। ফলে সবাই শাসক দলের অনুগত হয়েই নিজেদের কাজ করে থাকে। ক্ষমতার পালাবদলে ব্যাপক রদবদলের পর দেখা যায় রাষ্ট্রের শাসনের বদলে দলীয় শাসন কায়েম হয়ে যায়। এই দুর্ভাগ্য মাথায় নিয়েই আমরা তেপ্পান্ন বছর ধরে চলছি।একসময় সামরিক শাসনের কালে একজন সচিব বলেছিলেন, ‘আমরা প্রজাতন্ত্রের কর্মচারী, কোনো দলের নই।’ কিন্তু সেই সচিবকেও পরবর্তীকালে দেখেছি তিনি মন্ত্রী হয়েছেন এবং প্রজাতন্ত্রের কর্মচারীদের দলের অনুশাসনের মধ্যে বেঁধে ফেলেছেন। তাই রাষ্ট্রের সংস্কারের মুখ্য কথাই হলো রাজনৈতিক সংস্কৃতিকে ঠিক করা এবং রাষ্ট্রকে মানবিক করে তোলা।
পৃথিবীর অনেক দেশেরই নিজস্ব রাষ্ট্রব্যবস্থা আছে, যা ইংল্যান্ডের মতো নয়। কিন্তু যেখানে ব্রিটিশরা গেছে, সেখানেই নিজেদের শাসনব্যবস্থাটাই রেখে গেছে। আজকের দিনে যখন রাষ্ট্র সংস্কারের কথা ওঠে, তখন ওপরের দুটি কথাই মনে আসে। রাজনৈতিক সংস্কৃতি, মানবিক রাষ্ট্র যার মধ্যে অসাম্যের বিষয়টি, বিশেষ করে মুক্তিযুদ্ধের অঙ্গীকার ধর্মনিরপেক্ষতার কথা সংস্কারকেরা অবশ্যই ভাববেন—রাষ্ট্র কীভাবে চলবে, নির্বাচিত প্রতিনিধি, আমলাতন্ত্র, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, বিচারব্যবস্থা—এসবই থাকবে। বাহাত্তরের সংবিধানটি পুনরায় পর্যালোচনা করা যেতে পারে।
প্রশ্ন উঠছে সংস্কৃতি সংস্কার নিয়ে। মাঝে মাঝে এ প্রশ্ন নিয়ে বিপুল বিতর্ক হচ্ছে। বহু আগে বদরুদ্দীন উমর বলেছিলেন, একটা বড় বিষয় লক্ষণীয় যে আমরা সব সময়ই একটা দ্বিধায় ভুগে থাকি, তা হলো—আমরা বাঙালি না মুসলমান? এ দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষ মুসলমান হলেও বাঙালিত্ব তাদের শিরা-উপশিরায় প্রবাহিত। সুদীর্ঘদিন মুসলিম শাসনের কালেও বাঙালিত্বকে কেউ অস্বীকার করেনি। অসাম্প্রদায়িকতার বাণী তারা ভুলে যায়নি। বাংলা সনের সূচনাও করেছিলেন সম্রাট আকবর। তাঁর মন্ত্রিসভার সদস্য, সেনাপতির অবস্থান খুবই অসাম্প্রদায়িক। সেই ধারা আওরঙ্গজেব পর্যন্ত চলেছে। অখণ্ড ভারতের চিন্তাবিদ, চিত্রকর, সংগীতজ্ঞ—সবার মধ্যেই এই ধারণা বহমান। ব্রিটিশরা এলেও লালন শাহ, হাসন রাজা, রবীন্দ্রনাথ, নজরুল, পঞ্চগীতিকবি, ভাস্কর, নাট্যকারসহ সব শিল্পীই অসাম্প্রদায়িকতার বাণী প্রচার করেছেন। চৈতন্যদেব থেকে শুরু করে আলাওল—সবাই একই পথের পথিক।
আর সংস্কৃতি বিষয়টা কোনো তাৎক্ষণিক বিষয় না। একজন চিন্তক বা শিল্পীদের উত্থান কোনো স্বল্প দিনের বিষয় না। আমাদের ভাষার ওপর যখন আক্রমণ আসে, তখন সমগ্র বাঙালি কেমন করে এক হয়ে লড়াই করতে চায়! আজকের দিনের রাষ্ট্র সংস্কৃতিও একটা অবকাঠামো গড়ে তোলে, যার মধ্যে শিল্পকলা একাডেমি, চলচ্চিত্র ইনস্টিটিউট, চারুকলা; নাটকের জন্য কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে বিভাগ করে ফেলে। আবার বেসরকারি পর্যায়েও অনেক শিক্ষকের সৃষ্টি করে। শাসক দল এই অবকাঠামোকে স্বাধীনভাবে কাজ করতে দেয় না। একধরনের গোপন ইঙ্গিতও তার মধ্যে থাকে, যেটি একেবারেই দলীয়। স্বাধীন শিল্পচর্চার পথ সেখানে রুদ্ধ হয়।
একদা উচ্চাঙ্গের শিল্পচর্চার জন্য সামন্তদের একটা পৃষ্ঠপোষকতা ছিল। উপমহাদেশের অনেক বড় বড় শিল্পীর তখন জন্ম হয়েছিল। আধুনিক রাষ্ট্রগুলো শিল্পীদের স্বাধীন সত্তা বিকাশের সঙ্গে সঙ্গে তাদের জীবিকার বিষয়টিও যথেষ্ট গুরুত্ব দিয়ে থাকে। ইউরোপ, আমেরিকা এবং প্রাচ্য দেশের জাপান, কোরিয়াও সেই পথ অবলম্বন করে। অনুদান দিয়ে শাসক দলের অনুগত করার কোনো চেষ্টা তারা করে না। শিল্পচর্চার জন্য অনুদান কোনো করুণার বিষয় নয়। এটা শিল্পীদের অধিকার। এটিকে তারা আইনসিদ্ধ করেও তুলেছে। নাটক, চলচ্চিত্র নির্মাণ অত্যন্ত ব্যয়সাপেক্ষ একটি বিষয়। এখানে রাষ্ট্রকে অনুদান এবং পৃষ্ঠপোষকতা দিতেই হবে। এটাই হবে সংস্কারের প্রধান বিষয়।
সংস্কৃতিতে প্রধান উপাদান হচ্ছে শিক্ষা। শিক্ষাব্যবস্থাকে যেভাবে নানা পরীক্ষা-নিরীক্ষার মাধ্যমে একেবারেই অর্থহীন করে তোলা হচ্ছে, সেখানে শিল্পের শিক্ষাই একটা বড় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে। জীবনাচরণে এবং সত্যিকারের মানুষ হওয়ার জন্য শিল্পের ভূমিকা অসীম। যদি সত্যি আমরা সংস্কারের কথা ভাবি, তাহলে শিল্পকে জীবনের বড় অনুষঙ্গ হিসেবেই দেখতে হবে।
লেখক: নাট্যব্যক্তিত্ব

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
০৬ অক্টোবর ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫বাসস, ঢাকা

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরের জেরা শুরু করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আইনজীবী আমীর হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।
এই মামলার শুনানিতে এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের একাধিক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ ‘স্টার উইটনেস’ হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।
পরবর্তীকালে, এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।
মামলার প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এসএইচ তামিম। শুনানিতে তাঁদের সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলা ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হলো রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই তিনটি মামলার বিচারকাজই বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরের জেরা শুরু করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আইনজীবী আমীর হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।
এই মামলার শুনানিতে এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের একাধিক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ ‘স্টার উইটনেস’ হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।
পরবর্তীকালে, এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।
মামলার প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এসএইচ তামিম। শুনানিতে তাঁদের সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলা ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হলো রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই তিনটি মামলার বিচারকাজই বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।

সংস্কারের কথা মনে হলেই ঊনবিংশ শতাব্দীর প্রথমার্ধের কিছু সামাজিক সংস্কারের কথা মনে পড়ে। এর মধ্যে আছে বিধবাবিবাহ প্রচলন, বাল্যবিবাহ এবং সতীদাহ প্রথা রদসহ অনেক কুসংস্কার। সেই সঙ্গে হয় নারীশিক্ষার প্রচলন। কিছু কিছু ক্ষেত্রে সফল হলেও লড়াইটা করতে হয়েছে অনেক দিন অবধি। ঊনবিংশ শতাব্দীর শেষ দিকে রাজনৈতিক আন্দ
২২ আগস্ট ২০২৪
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা। অনেকে দেখে নিচ্ছিলেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না, কেউ জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করছিলেন, কেউ আবার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।
বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গতকাল শত শত ট্রলার নোঙর করে রাখা ছিল। জেলেদের উপস্থিতিতে ঘাট এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। ফকিরহাটের মুদি-মনিহারি দোকানগুলোতে জেলেরা কেনাকাটা করতে ভিড় জমান। ফকিরহাট এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে যেতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ামাত্রই সাগরে নামব।’
জেলে নুরসাইদ ও ফোরকান মিয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে কেটেছে। ওই সময়ে বেশ টাকা ঋণ করেছি। এখন সাগরে যাব। দেখি আল্লাহ ঋণ পরিশোধ করতে দেন কি না।’
নোয়াখালীর হাতিয়ার সূর্যমুখী, বাংলাবাজার, কাজিরবাজার, পাইতান মার্কেট চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গতকাল জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। অনেকে নৌকায় জাল তুলছিলেন, আবার অনেকে জ্বালানি তেল মজুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে নিয়ে যান। সূর্যমুখী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি জাফর উল্যা বলেন, ‘সাগরে ৮-১০ দিন থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ধ্যায় সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব।’
সূর্যমুখী ঘাট জেলে সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, ‘সাগরে নামতে প্রস্তুত নোয়াখালীর হাতিয়ার ২০টি ঘাটের লক্ষাধিক জেলে। এসব ঘাটে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ফিশিং ট্রলার রয়েছে। প্রতি ট্রলারে ১০ জন হলেও লক্ষাধিক জেলে এই মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সবাই গত ৫৮ দিন তীরে বেকার ছিলেন।’
পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেরা গতকাল দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিড়া, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী, হেতালিয়া, কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার জেলেরা, সদর উপজেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা প্রস্তুতি শেষে গত রাতে বঙ্গোপসাগরে রওনা হন।
কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে নৌকা, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সেরেছেন জেলেরা। গতকাল মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের খুরেরমুখ, সাবরাং ও বাহারছড়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা সারি সারি ট্রলারে জাল ও রসদ তোলেন জেলেরা।
একটি ট্রলারের মাঝি আবু তাহের জানান, এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কেউ সাগরে মাছ শিকারে নামেনি। এতে উপকূলের কাছাকাছি সাগরে জাল ফেললেই ইলিশসহ অন্য মাছ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
কক্সবাজার শহরের ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজারের মতো যান্ত্রিক ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। অধিকাংশ ট্রলার নিষেধাজ্ঞা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে রওনা হবে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও আমতলী, পিরোজপুর, কক্সবাজার এবং হাতিয়া প্রতিনিধি]

‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা। অনেকে দেখে নিচ্ছিলেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না, কেউ জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করছিলেন, কেউ আবার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।
বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গতকাল শত শত ট্রলার নোঙর করে রাখা ছিল। জেলেদের উপস্থিতিতে ঘাট এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। ফকিরহাটের মুদি-মনিহারি দোকানগুলোতে জেলেরা কেনাকাটা করতে ভিড় জমান। ফকিরহাট এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে যেতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ামাত্রই সাগরে নামব।’
জেলে নুরসাইদ ও ফোরকান মিয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে কেটেছে। ওই সময়ে বেশ টাকা ঋণ করেছি। এখন সাগরে যাব। দেখি আল্লাহ ঋণ পরিশোধ করতে দেন কি না।’
নোয়াখালীর হাতিয়ার সূর্যমুখী, বাংলাবাজার, কাজিরবাজার, পাইতান মার্কেট চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গতকাল জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। অনেকে নৌকায় জাল তুলছিলেন, আবার অনেকে জ্বালানি তেল মজুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে নিয়ে যান। সূর্যমুখী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি জাফর উল্যা বলেন, ‘সাগরে ৮-১০ দিন থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ধ্যায় সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব।’
সূর্যমুখী ঘাট জেলে সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, ‘সাগরে নামতে প্রস্তুত নোয়াখালীর হাতিয়ার ২০টি ঘাটের লক্ষাধিক জেলে। এসব ঘাটে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ফিশিং ট্রলার রয়েছে। প্রতি ট্রলারে ১০ জন হলেও লক্ষাধিক জেলে এই মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সবাই গত ৫৮ দিন তীরে বেকার ছিলেন।’
পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেরা গতকাল দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিড়া, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী, হেতালিয়া, কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার জেলেরা, সদর উপজেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা প্রস্তুতি শেষে গত রাতে বঙ্গোপসাগরে রওনা হন।
কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে নৌকা, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সেরেছেন জেলেরা। গতকাল মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের খুরেরমুখ, সাবরাং ও বাহারছড়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা সারি সারি ট্রলারে জাল ও রসদ তোলেন জেলেরা।
একটি ট্রলারের মাঝি আবু তাহের জানান, এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কেউ সাগরে মাছ শিকারে নামেনি। এতে উপকূলের কাছাকাছি সাগরে জাল ফেললেই ইলিশসহ অন্য মাছ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
কক্সবাজার শহরের ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজারের মতো যান্ত্রিক ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। অধিকাংশ ট্রলার নিষেধাজ্ঞা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে রওনা হবে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও আমতলী, পিরোজপুর, কক্সবাজার এবং হাতিয়া প্রতিনিধি]

সংস্কারের কথা মনে হলেই ঊনবিংশ শতাব্দীর প্রথমার্ধের কিছু সামাজিক সংস্কারের কথা মনে পড়ে। এর মধ্যে আছে বিধবাবিবাহ প্রচলন, বাল্যবিবাহ এবং সতীদাহ প্রথা রদসহ অনেক কুসংস্কার। সেই সঙ্গে হয় নারীশিক্ষার প্রচলন। কিছু কিছু ক্ষেত্রে সফল হলেও লড়াইটা করতে হয়েছে অনেক দিন অবধি। ঊনবিংশ শতাব্দীর শেষ দিকে রাজনৈতিক আন্দ
২২ আগস্ট ২০২৪
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
০৬ অক্টোবর ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক দিন পরই গত রোববার লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে পণ্যের ট্রাক আটকে দেয় ভারত। সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, রোববার ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী সীমান্তে প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকে যায়। এ ছাড়া বেনাপোলে ৩৬টি পোশাক বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যের শতাধিক ট্রাক ঢুকতে পারেনি।
গতকাল সোমবার পর্যন্ত বুড়িমারী থেকে প্রাণের পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোর অর্ধেকের বেশি ফেরত নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেনাপোলে পোর্টের ভেতরে ২৪টি ট্রাক ছাড়া বাকিগুলো ফেরত চলে যায়।
বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল পোর্টের ভেতর ও বাইরে শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। আজ পোর্টের ভেতরের ২৪টি ছাড়া বাকিগুলো ফেরত নিয়ে গেছেন মালিকেরা। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, পোর্টের ভেতরের ট্রাকগুলোও ফেরত নিতে হবে।
জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে ৬ মিলিয়ন ডলারের ক্রয় আদেশ রয়েছে। তার মধ্য থেকে রোববার বুড়িমারী দিয়ে ১৭ ট্রাকবোঝাই পণ্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো ঢুকতে পারেনি। ট্রাকগুলো ফেরত আনা হচ্ছে। নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে অন্য পথ দিয়ে পণ্য পাঠাতে হবে।’
বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই ২৪টি ট্রাক পোর্টের ভেতরে থাকায় এখনো তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আশা, যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এই পণ্যগুলোর এলসি করা হয়েছিল, তাই এগুলো প্রবেশে অনুমতি পাবে। তবে এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার ওপর।
এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রপ্তানিকারক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।
স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় নৌপরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
আমদানি ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এর পরিমাণ ৮০ শতাংশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাক পণ্য থাকে তৈরি পোশাক।
এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। ফলে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখাই সরকারের উচিত বলে মনে করছেন তিনি।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহ মিটিয়ে ফেলতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হবে উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর।

ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক দিন পরই গত রোববার লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে পণ্যের ট্রাক আটকে দেয় ভারত। সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, রোববার ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী সীমান্তে প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকে যায়। এ ছাড়া বেনাপোলে ৩৬টি পোশাক বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যের শতাধিক ট্রাক ঢুকতে পারেনি।
গতকাল সোমবার পর্যন্ত বুড়িমারী থেকে প্রাণের পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোর অর্ধেকের বেশি ফেরত নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেনাপোলে পোর্টের ভেতরে ২৪টি ট্রাক ছাড়া বাকিগুলো ফেরত চলে যায়।
বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল পোর্টের ভেতর ও বাইরে শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। আজ পোর্টের ভেতরের ২৪টি ছাড়া বাকিগুলো ফেরত নিয়ে গেছেন মালিকেরা। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, পোর্টের ভেতরের ট্রাকগুলোও ফেরত নিতে হবে।
জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে ৬ মিলিয়ন ডলারের ক্রয় আদেশ রয়েছে। তার মধ্য থেকে রোববার বুড়িমারী দিয়ে ১৭ ট্রাকবোঝাই পণ্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো ঢুকতে পারেনি। ট্রাকগুলো ফেরত আনা হচ্ছে। নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে অন্য পথ দিয়ে পণ্য পাঠাতে হবে।’
বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই ২৪টি ট্রাক পোর্টের ভেতরে থাকায় এখনো তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আশা, যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এই পণ্যগুলোর এলসি করা হয়েছিল, তাই এগুলো প্রবেশে অনুমতি পাবে। তবে এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার ওপর।
এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রপ্তানিকারক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।
স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় নৌপরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
আমদানি ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এর পরিমাণ ৮০ শতাংশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাক পণ্য থাকে তৈরি পোশাক।
এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। ফলে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখাই সরকারের উচিত বলে মনে করছেন তিনি।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহ মিটিয়ে ফেলতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হবে উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর।

সংস্কারের কথা মনে হলেই ঊনবিংশ শতাব্দীর প্রথমার্ধের কিছু সামাজিক সংস্কারের কথা মনে পড়ে। এর মধ্যে আছে বিধবাবিবাহ প্রচলন, বাল্যবিবাহ এবং সতীদাহ প্রথা রদসহ অনেক কুসংস্কার। সেই সঙ্গে হয় নারীশিক্ষার প্রচলন। কিছু কিছু ক্ষেত্রে সফল হলেও লড়াইটা করতে হয়েছে অনেক দিন অবধি। ঊনবিংশ শতাব্দীর শেষ দিকে রাজনৈতিক আন্দ
২২ আগস্ট ২০২৪
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
০৬ অক্টোবর ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
১৮৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ধূলিধূসর টিলা খুঁড়ে পাওয়া মূল্যবান এই রত্নগুলো এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি ব্রিটিশ সংগ্রহাগারে প্রায় দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে ছিল। এখন যেহেতু রত্নগুলোর হাতবদলের সময় এসেছে, তাই নতুন সংগ্রাহকেরা আগ্রহ নিয়ে এগুলো সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখানে একটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।
গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর কাছাকাছি, বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ইটের ঘরের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি মুক্তা, রুবি, টোপাজ, নীলা ও নকশা করা সোনার পাত সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে এই রত্নগুলোর সঙ্গে সঙ্গে একটি খোদাই করা পাত্রে হাড়ের টুকরাও পাওয়া যায়, যেগুলোকে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে শনাক্ত করা হয়। এই আবিষ্কার তখন প্রত্নতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।
সাদাবি’স এশিয়ার চেয়ারম্যান নিকোলাস চাউ মনে করেন, স্মরণকালের বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর মাঝে এই রত্নসম্ভার অন্যতম। তবে এগুলো নিলামে তোলার কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর তা হচ্ছে—ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এবং বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র এই সম্পদ বিক্রি করা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?
১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এস্টেট ম্যানেজার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে লুম্বিনির ঠিক দক্ষিণে পিপ্রাওয়ায় অবস্থিত একটি ঢিবি খনন করেন। সেখান থেকেই প্রায় ২ হাজার বছর আগের ওই নির্দশনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাপ্ত রত্নসম্ভার ও দেহাবশেষ, যা তখনো পর্যন্ত অক্ষত ছিল, সেগুলো গৌতম বুদ্ধের শাক্য বংশের এবং বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের ঐতিহ্য। হাড়ের নিদর্শনগুলো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। এসব দেশে এখনো সেগুলোর পূজা করা হয়।

আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
১৮৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ধূলিধূসর টিলা খুঁড়ে পাওয়া মূল্যবান এই রত্নগুলো এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি ব্রিটিশ সংগ্রহাগারে প্রায় দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে ছিল। এখন যেহেতু রত্নগুলোর হাতবদলের সময় এসেছে, তাই নতুন সংগ্রাহকেরা আগ্রহ নিয়ে এগুলো সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখানে একটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।
গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর কাছাকাছি, বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ইটের ঘরের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি মুক্তা, রুবি, টোপাজ, নীলা ও নকশা করা সোনার পাত সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে এই রত্নগুলোর সঙ্গে সঙ্গে একটি খোদাই করা পাত্রে হাড়ের টুকরাও পাওয়া যায়, যেগুলোকে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে শনাক্ত করা হয়। এই আবিষ্কার তখন প্রত্নতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।
সাদাবি’স এশিয়ার চেয়ারম্যান নিকোলাস চাউ মনে করেন, স্মরণকালের বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর মাঝে এই রত্নসম্ভার অন্যতম। তবে এগুলো নিলামে তোলার কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর তা হচ্ছে—ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এবং বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র এই সম্পদ বিক্রি করা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?
১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এস্টেট ম্যানেজার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে লুম্বিনির ঠিক দক্ষিণে পিপ্রাওয়ায় অবস্থিত একটি ঢিবি খনন করেন। সেখান থেকেই প্রায় ২ হাজার বছর আগের ওই নির্দশনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাপ্ত রত্নসম্ভার ও দেহাবশেষ, যা তখনো পর্যন্ত অক্ষত ছিল, সেগুলো গৌতম বুদ্ধের শাক্য বংশের এবং বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের ঐতিহ্য। হাড়ের নিদর্শনগুলো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। এসব দেশে এখনো সেগুলোর পূজা করা হয়।

সংস্কারের কথা মনে হলেই ঊনবিংশ শতাব্দীর প্রথমার্ধের কিছু সামাজিক সংস্কারের কথা মনে পড়ে। এর মধ্যে আছে বিধবাবিবাহ প্রচলন, বাল্যবিবাহ এবং সতীদাহ প্রথা রদসহ অনেক কুসংস্কার। সেই সঙ্গে হয় নারীশিক্ষার প্রচলন। কিছু কিছু ক্ষেত্রে সফল হলেও লড়াইটা করতে হয়েছে অনেক দিন অবধি। ঊনবিংশ শতাব্দীর শেষ দিকে রাজনৈতিক আন্দ
২২ আগস্ট ২০২৪
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
০৬ অক্টোবর ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫