Ajker Patrika

বাঘও কাঁপে বুনো কুকুরের ভয়ে

ইশতিয়াক হাসান
আপডেট : ২৯ জুলাই ২০২১, ২০: ০২
বাঘও কাঁপে বুনো কুকুরের ভয়ে

বান্দরবান। সাঙ্গু সংরক্ষিত বনে পৌঁছাতে তখনো বেশ খানিকটা বাকি। বড় মোদকের কাছাকাছি জায়গাটি। সাঙ্গু নদী ধরে চলছে আমাদের নৌকা। সালটা ২০১১। হঠাৎই এক অদ্ভুত জায়গায় চলে এলাম। চারদিকে সুনসান, নেই মানুষের আনাগোনা, কেবল পাখি আর পোকামাকড়ের শব্দ। নৌকা দাঁড় করতে বললাম মাঝিদের। নদীর মাঝখানে বড় একটা পাথুরে জায়গা জেগে দ্বীপের মতো। সেখানে আয়েশ করে বসলাম। 

নদীর বাম পাশে এক কৃষক মারফা বা পাহাড়ি শসা চাষ করেছেন। একটা বানর মজা করে মারফা খাচ্ছে কৃষকের অনুপস্থিতির সুযোগ নিয়ে। মারফাখেতের পাশ থেকেই শুরু জঙ্গলের। সেদিকে তাকালাম। তখনই এক ঝলকের জন্য দেখলাম জন্তুটাকে। লালচে শরীর, মাঝারি আকারের কুকুরের আকৃতি। পরমুহূর্তেই হারিয়ে গেল অরণ্যে। ঢোল বা বুনো কুকুর। পাহাড়–অরণ্যে দীর্ঘ ঘোরাঘুরিতে ওই একবারই আড়ালে থাকতে পছন্দ করা জন্তুটিকে দেখার সৌভাগ্য হয়। 

এ তো গেল প্রথম ও একমাত্র সাক্ষাতের গল্প। এবার বরং ঢোল জন্তুটি কী, তা একটু জেনে নেওয়া যাক। একধরনের বন্য কেনিড এরা। বৈজ্ঞানিক নাম কুয়ন আলপিনাস। লালচে রঙের এই জন্তু মূলত মধ্য, পূর্ব, দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার অরণ্যে ঘুরে বেড়ায়। এই এলাকার গভীর জঙ্গলের বাতাস প্রায়ই আলোড়িত হয় এদের শিস, চিৎকারে; সম্বার, বুনো শূকরের মতো প্রাণীদের আত্মা কাঁপিয়ে দেওয়ার জন্য যা যথেষ্ট। বাংলাদেশসহ এশিয়ার দেশগুলোয় এদের আছে নানা নাম। যেমন শিস দেওয়া কুকুর, লাল নেকড়ে, রাম কুত্তা। ইংরেজি নাম এশিয়ান ওয়াইল্ড ডগ। আইইউসিএনের তথ্য অনুয়ায়ী, দুনিয়ায় মুক্তভাবে বিচরণ করা ঢোলের সংখ্যা ৯৪৯ থেকে ২ হাজার ২১৫, যা বুনো পরিবেশে টিকে থাকা বাঘের সংখ্যা থেকেও কম। কিন্তু তার পরও সাধারণ মানুষ তো বটেই, সংরক্ষণবিদ ও গবেষকদের কাছেও অনেকটা অচ্ছুত এরা। 

এবার বুনো কুকুরের আরেকটি মজার বিষয়ের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিচ্ছি। সালটা ২০০৪–০৫। বেড়াতে গিয়েছি সীতাকুণ্ডের ইকো পার্কে। তখন আলাপ জমল এক বিট কর্মকর্তা ও কয়েকজন বনকর্মীর সঙ্গে। কথায় কথায় তাঁরা জানালেন এক অদ্ভুত ঘটনা। আহত এক মায়া হরিণকে উদ্ধার করে একটি খাঁচায় রাখা হয়েছিল পার্কের ভেতরে। রাতে অতর্কিতে হামলা চালায় ঢোল বা বন্য কুকুরদের একটা দল। সীতাকুণ্ডে ঢোল আছে এটা শুনে তখন অবাক হয়েছিলাম। তারপর তাঁরা দিলেন আরেক আশ্চর্য তথ্য। ঢোলরা নাকি চোখে প্রস্রাব ছুড়ে সাময়িক অন্ধ করে দেয় শিকারকে। তখন কথাটা ঠিক হজম করতে পারিনি, তবে পরে বিখ্যাত শিকারি, অ্যাডভেঞ্চার কাহিনি লেখক এবং পরে বন্যপ্রাণী সংরক্ষক এন্ডারসনের বইয়েও পেয়েছিলাম একই ধরনের বর্ণনা। সীতাকুণ্ডের ওই সফরের পর থেকেই বন্য কুকুরের প্রতি আগ্রহের শুরু। অবশ্য এরও কয়েক বছর আগে পত্রিকায় একটা খবর দেখেছিলাম, স্পষ্ট মনে আছ আজও। চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়া কিংবা সাতকানিয়ার দিকে পাহাড় কাটা শ্রমিকেরা ঢোলের আক্রমণের শিকার হয়েছিলেন। যত দূর জানি, এখনো সীতাকুণ্ড–মিরসরাইয়ের জঙ্গলে ঘুরে বেড়ায় ঢোল বা বন্য কুকুরেরা। কদিন আগেই ইকো পার্কটির দায়িত্বে থাকা বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মিজানুর রহমান ভাইয়ের সঙ্গে কথা বলে নিশ্চিত হই এ বিষয়ে। 

তবে তুখোড় শিকারি হলেও গায়ে–গতরে এদের মোটেই বিশাল বলা যাবে না। আকারে অস্বাভাবিক রকম ছোট। ওজন কেবল ১২ থেকে ২০ কেজি, যা নেকড়ের চেয়ে অনেক কম, অনেকটা মাঝারি আকারের কুকুরের সমান। 

ঢোলদের শিকারের ক্ষমতা নির্ভর করে দলের সদস্যসংখ্যা ও পরিস্থিতির ওপর। সাধারণ এক–একটি দলে ৫ থেকে ১৫টি ঢোল থাকে। কোনো কোনো গবেষণায় চল্লিশটি, এমনকি এক শটি পর্যন্ত সদস্যের দলের কথাও শোনা যায়। শিকারে ঢোলরা নানা পদ্ধতির আশ্রয় নেয়। কখনো কখনো ছোট দল পাঠায় স্কাউট করার জন্য। তবে সফল হলে মোটেই শিকারকে গলায় কামড়ে ধরে মারে না বাঘ বা চিতা বাঘের মতো। বরং ধরাশায়ী করে সরাসরি খেতে শুরু করে। এমনকি জীবন্ত অবস্থায় শিকারের চারপাশ থেকে ঘিরে আক্রমণ করে খাবলা–খাবলা মাংস তুলে নেওয়ার বিবরণও পাওয়া যায়। তবে ঢোলদের ব্যাপারে খুব বেশি তথ্য পাওয়া মুশকিল। কারণ, এদের দেখা পাওয়া ভার। চেহারাও এমন যে একটি থেকে আরেকটিকে, এমনকি স্ত্রী–পুরুষ আলাদা করাও মুশকিল। 

বাঘের মতো পরাক্রমশালী প্রাণীকে হার মানিয়ে দেওয়ার রেকর্ড আছে ঢোলের। বিখ্যাত শিকারি অ্যান্ডারসনের বইয়ে এ রকম অন্তত দুটো ঘটনার বিবরণ আছে। এর মধ্যে একবার পরের দিন ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার করা হয় কেবল বাঘটার কিছু চামড়ার টুকরো। বুনো কুকুরের দলটি বাঘটিকে কোণঠাসা করে ছিন্নভিন্ন করে ফেলে। ১৮০৭ সালের এক পেইন্টিংও কিন্তু এ ধরনের ঘটনাকেই সমর্থন করে, সেখানে এক দল ঢোলকে দেখা যায় একটি বাঘকে তাড়া করতে। 

ঢোলদের কথা পাওয়া যায় আরও অনেক শিকারি ও অ্যাডভেঞ্চারের বইয়েও। এদের একজন এ মারভিন স্মিথ। বিশালদেহী বুনো মোষ আর সাম্বারদের ধরাশায়ী করার কাহিনি বর্ণনা করেছেন তিনি। এমনকি এক বন্ধু দুটো ঢোলের বাচ্চা পোষার ঘটনারও বিবরণ দিয়েছেন। ওগুলোর গায়ে এমন গন্ধ ছিল যে, বহুবার ধুয়েও গন্ধ দূর করা সম্ভব হয়নি। একটাকে পেলেপুষে বড় করলেও বুনো স্বভাব পুরোপুরি যায়নি। এমনকি সন্তানসম্ভবা হওয়ার পর ওটাও পালিয়ে যায়। 

যেসব এলাকায় বাঘ বা চিতা বাঘের সঙ্গে একত্রে বাস করতে হয়, সেখানে টিকে থাকার একটি সূত্র আছে ঢোলদের। তারা অরণ্যের পরাক্রমশালী ওই প্রাণীদের তুলনায় অন্য ধরনের শিকার বেছে নেয়। কখনো কখনো সরাসরি প্রতিযোগিতাও হয়। এমনকি বাঘের আক্রমণে ঢোল মারা যাওয়ার কিংবা চিতা বাঘের আক্রমণের শিকার হওয়ার ঘটনাও শোনা যায়। 

বাঘ–চিতার সঙ্গে লড়াই করে হয়তো টিকে থাকা সম্ভব, তবে সবচেয়ে ভয়ানক শত্রু মানুষের হাত থেকে বাঁচা কঠিন। বন ধ্বংসের পাশাপাশি এদের শিকার কমে যাওয়াও একটা সমস্যা। ঢোল কোনো গবাদিপশু মারলে মালিক ওই পশুটার শরীরে বিষ মাখিয়ে রাখে। এতে একবারে গোটা একটা ঢোলের দলও নিশ্চিহ্ন হয়ে যেতে পারে। এভাবে অবশ্য বাঘ, চিতা কিংবা শকুনও মারে জঙ্গল এলাকার আশপাশে বসবাস করা অধিবাসীরা। এ ধরনের বিষ মাখিয়ে ঢোল বা চিতা বাঘ হত্যার কথা শোনা যায় বাংলাদেশেও।

গত দশ বছরে ঢোলের বিচরণের এলাকা অন্তত ৫০ শতাংশ কমেছে বলে দাবি করেন গবেষকেরা। তবে ঢোলদের গতিবিধি অনুসরণ করা মুশকিল। কারণ দক্ষিণ এশিয়ার বাইরে খুব দুর্গম এলাকায় বাস ঢোলদের। ভারত, বাংলাদেশ, নেপাল কিংবা ভুটানের সাধারণ বনে এদের আবাস থাকলেও নিজেদের জাহির করার অভ্যাস নেই মোটেই। 

দক্ষিণ ও দক্ষিণ–পূর্ব এশিয়ার অন্যতম শিকারি প্রাণী হওয়ায় খাদ্যশৃঙ্খলে এদের দারুণ ভূমিকা রয়েছে। ওখানকার কোনো কোনো এলাকা থেকে বাঘ বিদায় নেওয়ায় খাদ্যশৃঙ্খলের ওপরে উঠে এসেছে ঢোল। পরিবেশের ভারসাম্য বজায় রাখতেও তাই দারুণ ভূমিকা এদের। আর আশ্চর্যজনক হলেও মানুষকে আক্রমণ করার প্রবণতা এদের একেবারেই কম। 

চুনারুঘাটের তরাপ হিলে অবস্থিত কালেঙ্গার অরণ্যে বন্য কুকুরের গল্প শুনেছে অনেকেই। সাম্প্রতিক সময়েও এই অরণ্যে ঢোলের আক্রমণের খবর মিলেছে। বাংলাদেশের পার্বত্য চট্টগ্রাম, চট্টগ্রাম ও সিলেটের অনেক বনেই টিকে আছে এই ধূর্ত প্রাণীরা। হালকা-পাতলা গড়ন ও সাবধানী চলাফেরার কারণে লোকচক্ষুর অনেকটাই আড়ালে থাকে এরা। আবার হরিণ কিংবা বিড়াল গোত্রের প্রাণীদের মতো এদের প্রতি চোরা শিকারিদের আগ্রহ কম থাকাও একটা বড় কারণ। 

বন্যপ্রাণী নিয়ে কাজ করা ক্রিয়েটিভ কনজারভেশন অ্যালায়েন্সের বসানো ক্যামেরা ট্র্যাপে বান্দরবানের সাঙ্গু রিজার্ভে ধরা পড়েছে ঢোলের একাধিক ছবি। এমনকি হবিগঞ্জের চুনারুঘাটের ছোট্ট এক বন সাতছড়িতেও সন্ধান মিলেছে এদের। ভারতের বারোমুরা হিলের সবচেয়ে উত্তর-পুবের সীমানায় অবস্থান রঘুনন্দন হিল রিজার্ভ ফরেস্টের অন্তর্গত সাতছড়ি জাতীয় উদ্যান। এখানেই ক্যামেরা ট্র্যাপে ঢোলদের বন্দী করেছেন তিন গবেষক তানিয়া জাকির, হারিশ দেববর্মা ও মুনতাসির আকাশ। 

বন বিভাগে চাকরি করা মাহফুজুল হক রাঙামাটি-বান্দরবানে কয়েকবারই ঢোল দেখার কথা বলেছিলেন। কাসালং সংরক্ষিত বনেও এরা আছে। রাঙামাটি বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী অধ্যাপক সুপ্রিয় চাকমার কাছ থেকে শুনেছি, এখনো দুর্গ পাড়ার বাসিন্দাদের গবাদিপশু মারা পড়ার ঘটনা ঘটে ঢোলের আক্রমণে। 

প্রকৃতিপ্রেমী মইনুল ইসলাম কাপ্তাইয়ে থাকতেন বাবার চাকরি সূত্রে, সেটা অন্তত বছর তিরিশেক আগের কথা। জানালেন, তখন নৌবাহিনীর এলাকায় বুনো কুকুরের অনেক বড় একটা দল দেখতেন প্রায়ই। কাপ্তাইয়ের ঢোলের ওই দলের বংশধরেরা কী এখনো মনের আনন্দে ঘুরে বেড়াচ্ছে কাপ্তাইয়ের বন–পাহাড়ে? নাকি আরও অনেক বন্যপ্রাণীর মতো মানুষের হিংস্রতার বলি হয়ে তারা আস্তানা পাল্টেছে কিংবা হারিয়েই গেছে। 

আরও পড়ুন

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এনসিপি-জামায়াত জোটে যুক্ত হচ্ছে আরেকটি দল, আসন বণ্টন ঘোষণা রাতেই

৮ মিনিট দেরি, মনোনয়নপত্র জমা দিতে না পেরে অঝোরে কাঁদলেন এবি পার্টির প্রার্থী প্রত্যাশী

নির্বাচন না করার ঘোষণা দিলেন আনোয়ার হোসেন মঞ্জু

৪৭ আসনে মনোনয়নপত্র জমা দিল এনসিপি

জেপির মঞ্জুর পর নির্বাচন বর্জন করলেন রুহুল আমিন হাওলাদার ও ফিরোজ রশীদ

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

শীতে কাঁপছে সারা দেশ, রাতে তাপমাত্রা আরও কমবে

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
যশোরে টানা দুইদিন সূর্যের দেখা নেই। ছবি: আজকের পত্রিকা
যশোরে টানা দুইদিন সূর্যের দেখা নেই। ছবি: আজকের পত্রিকা

মাঘ মাস আসতে এখনো অনেক বাকি। আজ সোমবার কেবল ১৪ পৌষ। তবে এখনই হাড়কাঁপানো শীত পড়েছে দেশজুড়ে। আজ সকাল ৬টায় দেশের মধ্যে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল কিশোরগঞ্জের নিকলীতে ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এ সময় রাজধানী ঢাকায় তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছে ১৩ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, আজ রাতে সারা দেশেই তাপমাত্রা আরও কমতে পারে।

আজ সকাল ৯টা আবহাওয়া অধিদপ্তরের সর্বশেষ পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ সারা দেশের আবহাওয়া শুষ্ক থাকতে পারে। মধ্যরাত থেকে সকাল পর্যন্ত সারা দেশের কোথাও কোথাও মাঝারি থেকে ঘন কুয়াশা পড়তে পারে। কোথাও কোথাও দুপুর পর্যন্ত তা অব্যাহত থাকতে পারে।

পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, আজ সকালে দেশের বিভাগীয় শহরগুলোর মধ্যে রাজশাহীতে তাপমাত্রা ছিল ১২ দশমিক ৪, রংপুরে ১৩, ময়মনসিংহে ১৩ দশমিক ৬, সিলেটে ১৪ দশমিক ৫, চট্টগ্রামে ১৫ দশমিক ৭ এবং খুলনা ও বরিশালে ১৩ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

কুয়াশার কারণে দেশজুড়ে যোগাযোগ ব্যবস্থা বিঘ্ন হতে পারে উল্লেখ করে আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, ঘন কুয়াশার কারণে বিমান চলাচল, অভ্যন্তরীণ নৌ পরিবহন এবং সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা সাময়িকভাবে ব্যাহত হতে পারে।

এ ছাড়া সারা দেশে আজ রাতের তাপমাত্রা সামান্য কমতে পারে এবং দিনের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে। কুয়াশাচ্ছন্ন আবহাওয়ার কারণে দেশের অনেক জায়গায় শীতের অনুভূতি অব্যাহত থাকতে পারে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এনসিপি-জামায়াত জোটে যুক্ত হচ্ছে আরেকটি দল, আসন বণ্টন ঘোষণা রাতেই

৮ মিনিট দেরি, মনোনয়নপত্র জমা দিতে না পেরে অঝোরে কাঁদলেন এবি পার্টির প্রার্থী প্রত্যাশী

নির্বাচন না করার ঘোষণা দিলেন আনোয়ার হোসেন মঞ্জু

৪৭ আসনে মনোনয়নপত্র জমা দিল এনসিপি

জেপির মঞ্জুর পর নির্বাচন বর্জন করলেন রুহুল আমিন হাওলাদার ও ফিরোজ রশীদ

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ঢাকায় শীত আরও বেড়েছে, পড়বে ঘন কুয়াশা

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ২৯ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৯: ২৩
ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

রাজধানী ঢাকায় শীত যেন আরও জেঁকে বসেছে। গতকাল রোববার সকাল ৬টায় তাপমাত্রা ছিল ১৪ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াসের ঘরে, আজ সোমবার একই সময়ে সেটি কমে হয়েছে ১৩ দশমিক ৮।

আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, আজ ঢাকায় তাপমাত্রা অপরিবর্তিত থাকতে পারে। সেই সঙ্গে মাঝারি থেকে ঘন কুয়াশা পড়তে পারে।

আজ সকাল ৭টায় ঢাকা ও পার্শ্ববর্তী এলাকার আবহাওয়া অধিদপ্তরের পূর্বাভাসে এই তথ্য জানানো হয়েছে।

পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, আজ সকাল ৬টায় রাজধানী ঢাকার তাপমাত্রা ছিল ১৩ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এ সময় বাতাসের আর্দ্রতা ছিল ৯৫ শতাংশ।

পূর্বাভাসে আরও জানানো হয়, ঢাকা ও পার্শ্ববর্তী এলাকায় দুপুর পর্যন্ত আবহাওয়া থাকতে পারে শুষ্ক। আকাশ আংশিক মেঘলা থাকতে পারে। এ সময় উত্তর অথবা উত্তর-পশ্চিম দিক থেকে ঘণ্টায় ৮ থেকে ১২ কিলোমিটার বেগে বাতাস বয়ে যেতে পারে। দিনের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে। আজ সূর্যাস্ত ৫টা ২১ মিনিটে এবং আগামীকাল সূর্যোদয় ৬টা ৪০ মিনিটে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এনসিপি-জামায়াত জোটে যুক্ত হচ্ছে আরেকটি দল, আসন বণ্টন ঘোষণা রাতেই

৮ মিনিট দেরি, মনোনয়নপত্র জমা দিতে না পেরে অঝোরে কাঁদলেন এবি পার্টির প্রার্থী প্রত্যাশী

নির্বাচন না করার ঘোষণা দিলেন আনোয়ার হোসেন মঞ্জু

৪৭ আসনে মনোনয়নপত্র জমা দিল এনসিপি

জেপির মঞ্জুর পর নির্বাচন বর্জন করলেন রুহুল আমিন হাওলাদার ও ফিরোজ রশীদ

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

শীতে বিপর্যস্ত জনজীবন, কুয়াশায় ব্যাহত চলাচল

  • দক্ষিণের পথে লঞ্চ চলাচল সাময়িক বন্ধ ঘোষণা।
  • কুয়াশায় ব্যাহত সড়ক ও বিমান যোগাযোগও।
  • বাগেরহাটে শীতের জেরে বৃদ্ধের মৃত্যু।
  • রাতের তাপমাত্রা আরেকটু কমতে পারে।
‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ২৯ ডিসেম্বর ২০২৫, ১০: ৪৯
ছবি: আজকের পত্রিকা
ছবি: আজকের পত্রিকা

আবহাওয়া দপ্তরের ভাষায় ‘শৈত্যপ্রবাহ’ না চললেও গতকাল রোববার টানা তৃতীয় দিনের মতো সারা দেশ তীব্র শীতে কাবু ছিল। বরং ঠান্ডার কামড়ের জোর আরও কিছুটা বেড়েছে। উত্তরবঙ্গসহ দেশের অনেক এলাকাতেই ঘন কুয়াশা ও তীব্র শীতের কারণে জনজীবন বিপর্যস্ত। গতকাল দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে কিশোরগঞ্জের নিকলী উপজেলায়।

আবহাওয়া অধিদপ্তরের পূর্বাভাস অনুযায়ী, আগামী কয়েক দিনে রাতের তাপমাত্রা আরও কিছুটা কমতে পারে। চলতে পারে ঘন কুয়াশার ভোগান্তিও। তবে কয়েক দিন পরই নতুন বছরের শুরুতে ধীরে ধীরে তাপমাত্রা বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

নিকলী আবহাওয়া কার্যালয়ের জ্যেষ্ঠ পর্যবেক্ষক আক্তারুজ্জামান ফারুক জানিয়েছেন, গতকাল সেখানে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ৯ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। নাতিশীতোষ্ণ জলবায়ুর বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে তাপমাত্রা ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে নামা মানে রীতিমতো হাড়কাঁপানো শীত।

আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, উপমহাদেশীয় উচ্চ চাপবলয়ের বাড়তি অংশ পশ্চিমবঙ্গ ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থান করায় শীতের প্রকোপ বেড়েছে। গতকাল আবহাওয়ার পূর্বাভাস অনুযায়ী, আজ সোমবারসহ আগামী চার দিন সারা দেশের আবহাওয়া শুষ্ক থাকতে পারে। মধ্য রাত থেকে সকাল পর্যন্ত দেশের বিভিন্ন স্থানে মাঝারি থেকে ঘন কুয়াশা পড়তে পারে। কোথাও কোথাও দুপুর পর্যন্ত কুয়াশার চাদর অব্যাহত থাকতে পারে।

লঞ্চ চলাচল সাময়িক বন্ধ

ঘন কুয়াশার কারণে গতকাল রাতে চাঁদপুর ও দেশের দক্ষিণাঞ্চলের নৌপথে সব ধরনের যাত্রীবাহী লঞ্চ চলাচল সাময়িকভাবে বন্ধ ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ)। সংস্থাটির এক বিজ্ঞপ্তিতে যাত্রীদের নিরাপত্তার কথা বিবেচনা করে এ সিদ্ধান্ত নেওয়ার কথা জানানো হয়।

কুয়াশার কারণে সড়ক ও নৌযোগাযোগের পাশাপাশি বিমান চলাচলও ব্যাহত হচ্ছে। ঘন কুয়াশার প্রভাবে রাজধানীর হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে গতকালও ভোর থেকে সকাল পর্যন্ত একাধিক আন্তর্জাতিক ও অভ্যন্তরীণ ফ্লাইট দেরিতে অবতরণ ও উড্ডয়ন করে। তবে কাল সন্ধ্যা পর্যন্ত কোনো ফ্লাইট অন্যত্র পাঠানো হয়নি।

বিমানবন্দরের নির্বাহী পরিচালকের মুখপাত্র মো. মাসুদুল হাসান মাসুদ গতকাল দুপুরের দিকে বলেন, ‘ভোরে রানওয়ের দৃশ্যমানতা কম থাকায় ফ্লাইট অপারেশনে সাময়িক বিঘ্ন ঘটে। তবে সকাল গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে পরিস্থিতির উন্নতি হয়। ফ্লাইট অপারেশন ধীরে ধীরে স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরেছে’।

বাগেরহাটে বৃদ্ধের মৃত্যু

বাগেরহাটের চিতলমারীতে শীতের তীব্রতায় অসুস্থ হয়ে বৈদ্যনাথ মণ্ডল (৭৫) নামে এক বৃদ্ধের মৃত্যু হয়েছে। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শনিবার সন্ধ্যায় তিনি মারা যান। বৈদ্যনাথ চিতলমারী উপজেলার খিলিগাতী গ্রামের মুকুন্দলাল মণ্ডলের ছেলে।

এ ছাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ঠান্ডাজনিত সর্দি, কাশি ও হাঁপানিতে আক্রান্ত হয়ে গত চার দিনে মোট ৫৫০ জন চিকিৎসা নিয়েছেন। শিশু ও বৃদ্ধরা এসব রোগে সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত হচ্ছেন।

উত্তরে জীবন বিপর্যস্ত

তীব্র শীত ও ঘন কুয়াশার কারণে উত্তরাঞ্চলের জেলাগুলোতে জরুরি প্রয়োজন ছাড়া মানুষ ঘর থেকে বের হচ্ছেন না। কুয়াশার জন্য মহাসড়ক ও আঞ্চলিক সড়কে যানবাহন চলছে ধীরগতিতে। হিমালয়ের পাদদেশের কাছাকাছি হওয়ায় বরাবরই উত্তরের জেলাগুলোতে শীতের তীব্রতা বেশি থাকে। ঘন কুয়াশা ও হিমেল বাতাসে সে অঞ্চলের জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। বিশেষ করে তিস্তার চরাঞ্চলের ছিন্নমূল ও নিম্ন আয়ের মানুষজন চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন।

সৈয়দপুর বিমানবন্দরের আবহাওয়া অফিসের ইনচার্জ লোকমান হোসেন জানান, গত দুই দিনে এ অঞ্চলে সর্বনিম্ন ১৩ এবং সর্বোচ্চ ১৬ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। ঘন কুয়াশার কারণে শনিবার ও গতকাল দুপুর ১২টার আগে বিমানবন্দরে কোনো ফ্লাইট অবতরণ করতে পারেনি।

দেশের দক্ষিণাঞ্চল থেকে উত্তরবঙ্গের অন্যতম প্রবেশদ্বার সিরাজগঞ্জে গতকাল সকাল ৯টায় সর্বনিম্ন ১১ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। জেলার তাড়াশ আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগার জানায়, এটি চলতি মৌসুমে জেলার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা।

তাড়াশ আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. জাহিদুল ইসলাম বলেন, ‘রোববার সকাল ৬টা থেকে অনেকক্ষণ পর্যন্ত তাপমাত্রা ১১ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াসে স্থির ছিল। এটি চলতি মৌসুমে এখানকার সর্বনিম্ন।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এনসিপি-জামায়াত জোটে যুক্ত হচ্ছে আরেকটি দল, আসন বণ্টন ঘোষণা রাতেই

৮ মিনিট দেরি, মনোনয়নপত্র জমা দিতে না পেরে অঝোরে কাঁদলেন এবি পার্টির প্রার্থী প্রত্যাশী

নির্বাচন না করার ঘোষণা দিলেন আনোয়ার হোসেন মঞ্জু

৪৭ আসনে মনোনয়নপত্র জমা দিল এনসিপি

জেপির মঞ্জুর পর নির্বাচন বর্জন করলেন রুহুল আমিন হাওলাদার ও ফিরোজ রশীদ

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

জেঁকে বসেছে শীত, বছরের শেষ দিন পর্যন্ত কমতে পারে তাপমাত্রা

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ২৮ ডিসেম্বর ২০২৫, ১২: ৩৭
ছবি: আজকের পত্রিকা
ছবি: আজকের পত্রিকা

মধ্য পৌষে এসে সারা দেশে শীত যেন জেঁকে বসেছে। গতকালের তুলনায় আজ রোববার তাপমাত্রা সামান্য বেড়েছে। তবে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত তাপমাত্রা কমতে পারে। এর সঙ্গে পড়বে ঘন কুয়াশা।

আজ বেলা ১১টায় আবহাওয়া অধিদপ্তরের সর্বশেষ পূর্বাভাসে এসব কথা জানানো হয়েছে।

পূর্বাভাসের তথ্য অনুযায়ী, আজ সকাল ৬টায় সারা দেশের মধ্যে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল কিশোরগঞ্জের হাওরাঞ্চলের নিকলীতে ৯ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এ সময় রাজধানী ঢাকায় ছিল ১৪ দশমিক ৩।

বিভাগীয় শহরগুলোর মধ্যে সকালে তাপমাত্রা ছিল রাজশাহী, রংপুর, বরিশালে ১৩; ময়মনসিংহে ১৩ দশমিক ৩, সিলেটে ১৪ দশমিক ৮, চট্টগ্রামে ১৬, খুলনায় ১৩ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

আজ রোববার সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ১২০ ঘণ্টার আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, আজ অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ সারা দেশের আবহাওয়া শুষ্ক থাকতে পারে। মধ্যরাত থেকে সকাল পর্যন্ত সারা দেশের কোথাও কোথাও মাঝারি থেকে ঘন কুয়াশা পড়তে পারে। কোথাও কোথাও আবার দুপুর পর্যন্ত কুয়াশা থাকতে পারে। ঘন কুয়াশার কারণে বিমান চলাচল, অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন এবং সড়ক যোগাযোগব্যবস্থা সাময়িকভাবে ব্যাহত হতে পারে।

সারা দেশে আজ রাত ও দিনের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে। কুয়াশাচ্ছন্ন আবহাওয়ার কারণে দেশের অনেক জায়গায় শীতের অনুভূতি অব্যাহত থাকতে পারে।

এ ছাড়া আজ ঢাকায় পশ্চিম অথবা উত্তর-পশ্চিম দিক থেকে ঘণ্টায় ৫ থেকে ১০ কিলোমিটার গতিতে বাতাস বয়ে যেতে পারে।

২৯ ডিসেম্বরও পরিস্থিতির পরিবর্তন তেমন হবে না উল্লেখ করে আবহাওয়া অধিদপ্তর আরও জানায়, ৩০ ডিসেম্বর মঙ্গলবার মধ্যরাত থেকে সকাল পর্যন্ত সারা দেশে হালকা থেকে মাঝারি ধরনের কুয়াশা পড়তে পারে। তবে নদী অববাহিকার কোথাও কোথাও ঘন কুয়াশা পড়তে পারে। এদিন রাতে তাপমাত্রা সামান্য কমতে পারে। পরদিন ৩১ ডিসেম্বর সারা দেশে রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে। তবে দিনের বেলা তাপমাত্রা সামান্য কমতে পারে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এনসিপি-জামায়াত জোটে যুক্ত হচ্ছে আরেকটি দল, আসন বণ্টন ঘোষণা রাতেই

৮ মিনিট দেরি, মনোনয়নপত্র জমা দিতে না পেরে অঝোরে কাঁদলেন এবি পার্টির প্রার্থী প্রত্যাশী

নির্বাচন না করার ঘোষণা দিলেন আনোয়ার হোসেন মঞ্জু

৪৭ আসনে মনোনয়নপত্র জমা দিল এনসিপি

জেপির মঞ্জুর পর নির্বাচন বর্জন করলেন রুহুল আমিন হাওলাদার ও ফিরোজ রশীদ

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত