Ajker Patrika

পৃথিবীর সবচেয়ে বড় কাঠের টারবাইন চালু হলো সুইডেনে

আপডেট : ২৮ ডিসেম্বর ২০২৩, ১৬: ৫৯
পৃথিবীর সবচেয়ে বড় কাঠের টারবাইন চালু হলো সুইডেনে

সাধারণত বাতাসকে কাজে লাগিয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য যে টারবাইন ব্যবহার করা হয় তা তৈরি হয় ইস্পাত দিয়ে। তবে সাম্প্রতিক সুইডেনের একটি কোম্পানি পৃথিবীর দীর্ঘতম কাঠের টারবাইন তৈরি করেছে। এটি ভবিষ্যতে বাতাসকে কাজে লাগানোর কাঠের গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠার একটি সম্ভাবনা তৈরি করেছে। একই সঙ্গে কার্বন নিঃসরণ কমিয়ে পরিবেশ রক্ষায়ও ভূমিকা রাখতে পারে এটি। এসব তথ্য জানা যায় ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির এক প্রতিবেদনে।

এই কাঠের টারবইনের প্রস্তুতকারক কোম্পানি মডভিয়ান। সুইডেনের শহর গোথেনবার্গের কাছেই স্কারায় বিশাল এই কাঠের টারবাইনের দেখা পাবেন। প্রতিষ্ঠানটির প্রধান নির্বাহী অটো লানডমেন বলেন, ‘এর দারুণ সম্ভাবনা আছে।’ 

সবচেয়ে ওপরের পাখিটির ডগা পর্যন্ত টারবাইনটির দৈর্ঘ্য ১৫০ মিটার বা ৪৯২ ফুট। ওপরের ২ মেগাওয়াটের জেনারেটরটি সবেমাত্র সুইডেনের গ্রিডে বিদ্যুৎ সরবরাহ শুরু করেছে, প্রায় ৪০০টি বাড়িতে বিদ্যুৎ সরবরাহ করছে এটি। 

লানডম্যান এবং মডভিয়ানের স্বপ্ন কাঠ ও বাতাসের এ মেলবন্ধনকে আরও অনেক দূর নিয়ে যাওয়া। 

কাঠ নয় বরং ইস্পাতই এখন টারবাইন তৈরির মূল উপাদান। কারণ বিশ্বের প্রায় সমস্ত টারবাইন টাওয়ারই ইস্পাতের তৈরি। শক্ত এবং টেকসই ইস্পাত ডাঙা এবং সমুদ্রে বিশাল সব টারবাইন এবং বায়ু ফার্ম তৈরিতে বড় ভূমিকা রেখেছে। 

বিশালাকায় কাঠের টারবাইনের পাখা ও জেনারেটর সাধারণ উপকরণ দিয়েই তৈরি হয়েছে। ছবি: মডভিয়ানবড় জেনারেটরের সাহায্যে বাতাস সংগ্রহের জন্য দীর্ঘ বা উঁচু টারবাইনের চাহিদা বেড়েছে। তাই ইস্পাত টাওয়ারের ব্যাসও বাড়াতে হয়েছে। তবে টারবাইন তৈরির জায়গায় ধাতুর বড় টুকরো গুলি নিয়ে যাওয়া একটি সত্যিকারের মাথাব্যথা হয়ে দাঁড়িয়েছে। এর ফলে ইস্পাতের টারবাইনগুলি আরও বিশাল করে তৈরিটা বাধার মুখে পড়ছে। 

বাইরে থেকে দেখে ইস্পাতের তৈরি টারবাইনের সঙ্গ মডভিয়নদের কাঠের টারবাইনের খুব বেশি পার্থক্য নজরে আসবে না আপনার। দুটিরই বাইরের অংশটি সাদা আবরণে ঢাকা। জেনারেটরের সঙ্গে সংযুক্ত ব্লেড তৈরি হয় ফাইবার গ্লাস থেকে। ব্লেড বা পাখা ঘুরলেই বিদ্যুৎ উৎপাদিত হবে। 

তবে পার্থক্যটি পরিষ্কার হবে স্তম্ভ বা টাওয়ারের ভেতরে ঢুকলে। দেয়ালে কাঠের বাঁকানো ফালিগুলি সহজেই দৃষ্টিগোচর হবে।

১০৫ মিটার উচ্চতার টাওয়ারের শক্তি আসে ১৪৪ স্তর বিশিষ্ট কাঠের দেয়াল থেকে। প্রতিটি স্তর তিন ইঞ্চি করে পুরু। 

গোথেনবার্গের প্রান্ত সীমায় অবস্থিত কারখানায় কাঠের পাতলা স্তর গুলিকে সংকুচিত করে বাঁকা অংশগুলি তৈরি করা হয়েছে। সেই টুকরো গুলিকে তারপরে স্তম্ভটি যেখানে বসানো হয় সেখানে নিয়ে যাওয়া হয়। সিলিন্ডারে তৈরির জন্য একটার ওপর আরেকটা কাঠের ফালি আঠার সাহায্যে আটকে দেওয়া হয়। 

এ ধরনের টারবাইনের বড় একটা সুবিধা আছে। কাঠ এবং আঠা ব্যবহারর করে তৈরি অংশগুলি ছোট ছোট খণ্ডে ভাগ করে পরিবহন করা সহজ হবে। এটাই কাঠের টাওয়ার আরও উঁচু করে তৈরির সুযোগ করে দিয়েছে। ছোট ছোট টুকরো গুলি সহজেই দুর্গম জায়গায় বহন করে নেওয়া যাবে। 

তবে টারবাইন প্রস্তুতকারক বিশ্বের সবচেয়ে বড় কোম্পানি গুলির একটি সিমেন্স গমেজোর সাসটেইনেবিলিটি বিভাগের প্রধান ড. ম্যাক্সমিলান স্নিপারিং বলেন, বেশি টুকরো মানে এটি জোড়া লাগানোর জন্য বেশি ট্রাক, বেশি মানুষ আর বেশি সময়ের দরকার। তবে সবকিছু মিলিয়ে এই কাঠের স্মম্ভগুলি ইস্পাতের স্তম্ভের ভালো পরিপূরক হয়ে উঠতে পারে বলে মনে করেন তিনি।

টাওয়ার তৈরিতে ব্যবহার করা বাঁকানো কাঠের ফালিগুলো পরীক্ষা করা হচ্ছে কারখানায়। ছবি: সংগৃহীতবিদ্যুৎ উৎপাদনের সহায়তা করা অন্য সব কিছুর চেয়ে বায়ু শক্তি সস্তা এবং পরিষ্কার। কিন্তু ইস্পাত তৈরিতে অত্যন্ত গরম চুল্লি ব্যবহৃত হয়। অর্থাৎ প্রচুর জীবাশ্ম জ্বালানি পোড়ানোর প্রয়োজন পড়ে এর জন্য। তার মানে কার্বন-ডাই-অক্সাইড নির্গমন, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রধান প্রভাবক। 

মডভিয়নের দাবি, ইস্পাতের বদলে কাঠের ব্যবহার বাতাসের টারবাইন গুলিতে কার্বন নিঃসরণ পুরোপুরি দূর করবে। শুধু তাই নয় এগুলো কার্বন ঋণাত্মক হয়ে উঠবে। 

এর কারণ গাছ পরিবেশ থেকে কার্বন-ডাই-অক্সাইড শুষে নেয়। কেটে ফেলার পরও কার্বন ভেতরে সঞ্চিত থাকে। কাঠ পোড়ানো না হলে কিংবা পচে না গেলে এ কার্বন বের হবে না। 

মডভিয়নের টারবাইন স্তম্ভ তৈরি করতে ২০০টি গাছ কাটতে হয়। অবশ্য এর থেকে বেশি গাছের চারা রোপণ করা হয়েছিল। 

টারবাইনের ভেতরের অংশ। ছবি: সংগৃহীতযুক্তরাজ্যে যে সমস্ত প্রতিষ্ঠান বায়ু শক্তি উৎপাদন করে তাদের অন্যতম এএসই রিনিউবেল বিবিসিকে জানায়, মডভিয়নের কাজ সম্পর্কে তাঁরা ওয়াকিবহাল। ইস্পাতের বিকল্প হয়ে উঠতে পারে এ কাঠের টাওয়ার। 

আরও উঁচু একটি কাঠের টারবাইন তৈরির পরিকল্পনা আছে তাদের, জানায় মডভিয়ন। সবকিছু ঠিকভাবে চললে ২০২৭ সাল থেকে বছরে ১০০টি কাঠের টারবাইন তৈরি করতে সক্ষম হবে তারা। 

‘এ শিল্পে বছরে ২০ হাজার টারবাইনের প্রয়োজন হয়,’ বলেন লানডম্যান, ‘আমাদের লক্ষ্য হলো ১০ বছরের মধ্যে মোট টারবাইনের ১০ শতাংশ জায়গা কাঠের টারবাইনের দখলে নিয়ে আসা।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

শীতে কাঁপছে সারা দেশ, রাতে তাপমাত্রা আরও কমবে

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
যশোরে টানা দুইদিন সূর্যের দেখা নেই। ছবি: আজকের পত্রিকা
যশোরে টানা দুইদিন সূর্যের দেখা নেই। ছবি: আজকের পত্রিকা

মাঘ মাস আসতে এখনো অনেক বাকি। আজ সোমবার কেবল ১৪ পৌষ। তবে এখনই হাড়কাঁপানো শীত পড়েছে দেশজুড়ে। আজ সকাল ৬টায় দেশের মধ্যে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল কিশোরগঞ্জের নিকলীতে ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এ সময় রাজধানী ঢাকায় তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছে ১৩ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, আজ রাতে সারা দেশেই তাপমাত্রা আরও কমতে পারে।

আজ সকাল ৯টা আবহাওয়া অধিদপ্তরের সর্বশেষ পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ সারা দেশের আবহাওয়া শুষ্ক থাকতে পারে। মধ্যরাত থেকে সকাল পর্যন্ত সারা দেশের কোথাও কোথাও মাঝারি থেকে ঘন কুয়াশা পড়তে পারে। কোথাও কোথাও দুপুর পর্যন্ত তা অব্যাহত থাকতে পারে।

পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, আজ সকালে দেশের বিভাগীয় শহরগুলোর মধ্যে রাজশাহীতে তাপমাত্রা ছিল ১২ দশমিক ৪, রংপুরে ১৩, ময়মনসিংহে ১৩ দশমিক ৬, সিলেটে ১৪ দশমিক ৫, চট্টগ্রামে ১৫ দশমিক ৭ এবং খুলনা ও বরিশালে ১৩ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

কুয়াশার কারণে দেশজুড়ে যোগাযোগ ব্যবস্থা বিঘ্ন হতে পারে উল্লেখ করে আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, ঘন কুয়াশার কারণে বিমান চলাচল, অভ্যন্তরীণ নৌ পরিবহন এবং সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা সাময়িকভাবে ব্যাহত হতে পারে।

এ ছাড়া সারা দেশে আজ রাতের তাপমাত্রা সামান্য কমতে পারে এবং দিনের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে। কুয়াশাচ্ছন্ন আবহাওয়ার কারণে দেশের অনেক জায়গায় শীতের অনুভূতি অব্যাহত থাকতে পারে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ঢাকায় শীত আরও বেড়েছে, পড়বে ঘন কুয়াশা

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ২৯ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৯: ২৩
ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

রাজধানী ঢাকায় শীত যেন আরও জেঁকে বসেছে। গতকাল রোববার সকাল ৬টায় তাপমাত্রা ছিল ১৪ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াসের ঘরে, আজ সোমবার একই সময়ে সেটি কমে হয়েছে ১৩ দশমিক ৮।

আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, আজ ঢাকায় তাপমাত্রা অপরিবর্তিত থাকতে পারে। সেই সঙ্গে মাঝারি থেকে ঘন কুয়াশা পড়তে পারে।

আজ সকাল ৭টায় ঢাকা ও পার্শ্ববর্তী এলাকার আবহাওয়া অধিদপ্তরের পূর্বাভাসে এই তথ্য জানানো হয়েছে।

পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, আজ সকাল ৬টায় রাজধানী ঢাকার তাপমাত্রা ছিল ১৩ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এ সময় বাতাসের আর্দ্রতা ছিল ৯৫ শতাংশ।

পূর্বাভাসে আরও জানানো হয়, ঢাকা ও পার্শ্ববর্তী এলাকায় দুপুর পর্যন্ত আবহাওয়া থাকতে পারে শুষ্ক। আকাশ আংশিক মেঘলা থাকতে পারে। এ সময় উত্তর অথবা উত্তর-পশ্চিম দিক থেকে ঘণ্টায় ৮ থেকে ১২ কিলোমিটার বেগে বাতাস বয়ে যেতে পারে। দিনের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে। আজ সূর্যাস্ত ৫টা ২১ মিনিটে এবং আগামীকাল সূর্যোদয় ৬টা ৪০ মিনিটে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

শীতে বিপর্যস্ত জনজীবন, কুয়াশায় ব্যাহত চলাচল

  • দক্ষিণের পথে লঞ্চ চলাচল সাময়িক বন্ধ ঘোষণা।
  • কুয়াশায় ব্যাহত সড়ক ও বিমান যোগাযোগও।
  • বাগেরহাটে শীতের জেরে বৃদ্ধের মৃত্যু।
  • রাতের তাপমাত্রা আরেকটু কমতে পারে।
‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ২৯ ডিসেম্বর ২০২৫, ১০: ৪৯
ছবি: আজকের পত্রিকা
ছবি: আজকের পত্রিকা

আবহাওয়া দপ্তরের ভাষায় ‘শৈত্যপ্রবাহ’ না চললেও গতকাল রোববার টানা তৃতীয় দিনের মতো সারা দেশ তীব্র শীতে কাবু ছিল। বরং ঠান্ডার কামড়ের জোর আরও কিছুটা বেড়েছে। উত্তরবঙ্গসহ দেশের অনেক এলাকাতেই ঘন কুয়াশা ও তীব্র শীতের কারণে জনজীবন বিপর্যস্ত। গতকাল দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে কিশোরগঞ্জের নিকলী উপজেলায়।

আবহাওয়া অধিদপ্তরের পূর্বাভাস অনুযায়ী, আগামী কয়েক দিনে রাতের তাপমাত্রা আরও কিছুটা কমতে পারে। চলতে পারে ঘন কুয়াশার ভোগান্তিও। তবে কয়েক দিন পরই নতুন বছরের শুরুতে ধীরে ধীরে তাপমাত্রা বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

নিকলী আবহাওয়া কার্যালয়ের জ্যেষ্ঠ পর্যবেক্ষক আক্তারুজ্জামান ফারুক জানিয়েছেন, গতকাল সেখানে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ৯ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। নাতিশীতোষ্ণ জলবায়ুর বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে তাপমাত্রা ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে নামা মানে রীতিমতো হাড়কাঁপানো শীত।

আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, উপমহাদেশীয় উচ্চ চাপবলয়ের বাড়তি অংশ পশ্চিমবঙ্গ ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থান করায় শীতের প্রকোপ বেড়েছে। গতকাল আবহাওয়ার পূর্বাভাস অনুযায়ী, আজ সোমবারসহ আগামী চার দিন সারা দেশের আবহাওয়া শুষ্ক থাকতে পারে। মধ্য রাত থেকে সকাল পর্যন্ত দেশের বিভিন্ন স্থানে মাঝারি থেকে ঘন কুয়াশা পড়তে পারে। কোথাও কোথাও দুপুর পর্যন্ত কুয়াশার চাদর অব্যাহত থাকতে পারে।

লঞ্চ চলাচল সাময়িক বন্ধ

ঘন কুয়াশার কারণে গতকাল রাতে চাঁদপুর ও দেশের দক্ষিণাঞ্চলের নৌপথে সব ধরনের যাত্রীবাহী লঞ্চ চলাচল সাময়িকভাবে বন্ধ ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ)। সংস্থাটির এক বিজ্ঞপ্তিতে যাত্রীদের নিরাপত্তার কথা বিবেচনা করে এ সিদ্ধান্ত নেওয়ার কথা জানানো হয়।

কুয়াশার কারণে সড়ক ও নৌযোগাযোগের পাশাপাশি বিমান চলাচলও ব্যাহত হচ্ছে। ঘন কুয়াশার প্রভাবে রাজধানীর হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে গতকালও ভোর থেকে সকাল পর্যন্ত একাধিক আন্তর্জাতিক ও অভ্যন্তরীণ ফ্লাইট দেরিতে অবতরণ ও উড্ডয়ন করে। তবে কাল সন্ধ্যা পর্যন্ত কোনো ফ্লাইট অন্যত্র পাঠানো হয়নি।

বিমানবন্দরের নির্বাহী পরিচালকের মুখপাত্র মো. মাসুদুল হাসান মাসুদ গতকাল দুপুরের দিকে বলেন, ‘ভোরে রানওয়ের দৃশ্যমানতা কম থাকায় ফ্লাইট অপারেশনে সাময়িক বিঘ্ন ঘটে। তবে সকাল গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে পরিস্থিতির উন্নতি হয়। ফ্লাইট অপারেশন ধীরে ধীরে স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরেছে’।

বাগেরহাটে বৃদ্ধের মৃত্যু

বাগেরহাটের চিতলমারীতে শীতের তীব্রতায় অসুস্থ হয়ে বৈদ্যনাথ মণ্ডল (৭৫) নামে এক বৃদ্ধের মৃত্যু হয়েছে। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শনিবার সন্ধ্যায় তিনি মারা যান। বৈদ্যনাথ চিতলমারী উপজেলার খিলিগাতী গ্রামের মুকুন্দলাল মণ্ডলের ছেলে।

এ ছাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ঠান্ডাজনিত সর্দি, কাশি ও হাঁপানিতে আক্রান্ত হয়ে গত চার দিনে মোট ৫৫০ জন চিকিৎসা নিয়েছেন। শিশু ও বৃদ্ধরা এসব রোগে সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত হচ্ছেন।

উত্তরে জীবন বিপর্যস্ত

তীব্র শীত ও ঘন কুয়াশার কারণে উত্তরাঞ্চলের জেলাগুলোতে জরুরি প্রয়োজন ছাড়া মানুষ ঘর থেকে বের হচ্ছেন না। কুয়াশার জন্য মহাসড়ক ও আঞ্চলিক সড়কে যানবাহন চলছে ধীরগতিতে। হিমালয়ের পাদদেশের কাছাকাছি হওয়ায় বরাবরই উত্তরের জেলাগুলোতে শীতের তীব্রতা বেশি থাকে। ঘন কুয়াশা ও হিমেল বাতাসে সে অঞ্চলের জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। বিশেষ করে তিস্তার চরাঞ্চলের ছিন্নমূল ও নিম্ন আয়ের মানুষজন চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন।

সৈয়দপুর বিমানবন্দরের আবহাওয়া অফিসের ইনচার্জ লোকমান হোসেন জানান, গত দুই দিনে এ অঞ্চলে সর্বনিম্ন ১৩ এবং সর্বোচ্চ ১৬ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। ঘন কুয়াশার কারণে শনিবার ও গতকাল দুপুর ১২টার আগে বিমানবন্দরে কোনো ফ্লাইট অবতরণ করতে পারেনি।

দেশের দক্ষিণাঞ্চল থেকে উত্তরবঙ্গের অন্যতম প্রবেশদ্বার সিরাজগঞ্জে গতকাল সকাল ৯টায় সর্বনিম্ন ১১ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। জেলার তাড়াশ আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগার জানায়, এটি চলতি মৌসুমে জেলার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা।

তাড়াশ আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. জাহিদুল ইসলাম বলেন, ‘রোববার সকাল ৬টা থেকে অনেকক্ষণ পর্যন্ত তাপমাত্রা ১১ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াসে স্থির ছিল। এটি চলতি মৌসুমে এখানকার সর্বনিম্ন।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

জেঁকে বসেছে শীত, বছরের শেষ দিন পর্যন্ত কমতে পারে তাপমাত্রা

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ২৮ ডিসেম্বর ২০২৫, ১২: ৩৭
ছবি: আজকের পত্রিকা
ছবি: আজকের পত্রিকা

মধ্য পৌষে এসে সারা দেশে শীত যেন জেঁকে বসেছে। গতকালের তুলনায় আজ রোববার তাপমাত্রা সামান্য বেড়েছে। তবে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত তাপমাত্রা কমতে পারে। এর সঙ্গে পড়বে ঘন কুয়াশা।

আজ বেলা ১১টায় আবহাওয়া অধিদপ্তরের সর্বশেষ পূর্বাভাসে এসব কথা জানানো হয়েছে।

পূর্বাভাসের তথ্য অনুযায়ী, আজ সকাল ৬টায় সারা দেশের মধ্যে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল কিশোরগঞ্জের হাওরাঞ্চলের নিকলীতে ৯ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এ সময় রাজধানী ঢাকায় ছিল ১৪ দশমিক ৩।

বিভাগীয় শহরগুলোর মধ্যে সকালে তাপমাত্রা ছিল রাজশাহী, রংপুর, বরিশালে ১৩; ময়মনসিংহে ১৩ দশমিক ৩, সিলেটে ১৪ দশমিক ৮, চট্টগ্রামে ১৬, খুলনায় ১৩ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

আজ রোববার সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ১২০ ঘণ্টার আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, আজ অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ সারা দেশের আবহাওয়া শুষ্ক থাকতে পারে। মধ্যরাত থেকে সকাল পর্যন্ত সারা দেশের কোথাও কোথাও মাঝারি থেকে ঘন কুয়াশা পড়তে পারে। কোথাও কোথাও আবার দুপুর পর্যন্ত কুয়াশা থাকতে পারে। ঘন কুয়াশার কারণে বিমান চলাচল, অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন এবং সড়ক যোগাযোগব্যবস্থা সাময়িকভাবে ব্যাহত হতে পারে।

সারা দেশে আজ রাত ও দিনের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে। কুয়াশাচ্ছন্ন আবহাওয়ার কারণে দেশের অনেক জায়গায় শীতের অনুভূতি অব্যাহত থাকতে পারে।

এ ছাড়া আজ ঢাকায় পশ্চিম অথবা উত্তর-পশ্চিম দিক থেকে ঘণ্টায় ৫ থেকে ১০ কিলোমিটার গতিতে বাতাস বয়ে যেতে পারে।

২৯ ডিসেম্বরও পরিস্থিতির পরিবর্তন তেমন হবে না উল্লেখ করে আবহাওয়া অধিদপ্তর আরও জানায়, ৩০ ডিসেম্বর মঙ্গলবার মধ্যরাত থেকে সকাল পর্যন্ত সারা দেশে হালকা থেকে মাঝারি ধরনের কুয়াশা পড়তে পারে। তবে নদী অববাহিকার কোথাও কোথাও ঘন কুয়াশা পড়তে পারে। এদিন রাতে তাপমাত্রা সামান্য কমতে পারে। পরদিন ৩১ ডিসেম্বর সারা দেশে রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে। তবে দিনের বেলা তাপমাত্রা সামান্য কমতে পারে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত