Ajker Patrika

যেভাবে হারিয়ে গেল হিমালয়ের এক প্রাচীন গ্রাম

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
পানির অভাবে স্থানান্তরিত হতে হয়েছে পুরো একটি গ্রামকে।
পানির অভাবে স্থানান্তরিত হতে হয়েছে পুরো একটি গ্রামকে।

নেপালি গ্রাম সামজুং। দেশটির উত্তরের পাহাড়ি ভূমিতে, সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে প্রায় ১৩ হাজার ফুট উঁচুতে ছিল এই গ্রাম। নানা প্রতিকূলতার পরও বহু বছর টিকে ছিল হিমালয়ের কোল ঘেঁষে থাকা এই বৌদ্ধ জনপদ। তবে, এখন মৃত। বাধ্য হয়ে নতুন করে গ্রাম তৈরি করে সেখানে বসতি শুরু করতে হয়েছে সামজুংয়ের বাসিন্দাদের।

এই জনপদের মানুষের জীবিকার প্রধান উপায় ছিল ইয়াক ও ভেড়া পালন। গ্রামটিতে রয়েছে বহু প্রাচীন ঐতিহ্যও। তবে, হঠাৎ করে ধ্বংসের মুখে পড়েনি সামজুং। প্রথমে কমে আসে তুষারপাত। পর্বতচূড়াগুলো হয়ে পড়ে বিবর্ণ ও ধুলিধুসর। এরপর একে একে শুকিয়ে যায় তিনটি প্রধান ঝরনা। নালা, খাল, এমনকি কূপের পানিও নিঃশেষ হয়ে যায়।

পানির অভাবে স্থানান্তরিত হতে হয়েছে পুরো একটি গ্রামকে।
পানির অভাবে স্থানান্তরিত হতে হয়েছে পুরো একটি গ্রামকে।

প্রয়োজন অনুযায়ী বৃষ্টিপাত এখানে হয় না। তবে, যখন হয় তখন ভাসিয়ে নিয়ে যায় কৃষিজমি, মাটি দিয়ে বানানো ঘরগুলো গলে গিয়ে গ্রামের অবকাঠামোর ব্যাপক ক্ষতি হয়।

নেপালভিত্তিক সংগঠন ইন্টারনন্যাশনাল সেন্টার ফর ইন্টিগ্রেটেড মাউন্টেন ডেভেলপমেন্ট (আইসিআইএমওডি) জানায়, আফগানিস্তান থেকে মিয়ানমার পর্যন্ত বিস্তৃত হিন্দুকুশ ও হিমালয় পর্বতশ্রেণি পৃথিবীর সবচেয়ে বড় হিমবাহ ভাণ্ডার। এই হিমবাহ গলেই বিভিন্ন নদীর জন্ম হয়েছে। এগুলোই ২৪ কোটি পাহাড়ি মানুষ এবং আরও ১৬৫ কোটির বেশি নিম্নভূমির মানুষের পানির উৎস।

পানির অভাবে স্থানান্তরিত হতে হয়েছে পুরো একটি গ্রামকে।
পানির অভাবে স্থানান্তরিত হতে হয়েছে পুরো একটি গ্রামকে।

সাম্প্রতিক গবেষণা বলছে, এই উচ্চভূমিগুলো সমতলের তুলনায় বেশি দ্রুত উষ্ণ হচ্ছে। আর এ কারণে, অঞ্চলগুলোতে কমে যাচ্ছে তুষারপাত, পাতলা হয়ে যাচ্ছে বরফের স্তর, সময়ের তুলনায় দ্রুত হিমবাহ গলে শুকিয়ে যাচ্ছে নদীগুলোও। আর এসব পরিবর্তনের ভয়াবহ প্রভাব পড়ছে সামজুংয়ের মতো পাহাড়ি গ্রামগুলোতে। যেকারণে অনেকেই এখন গ্রাম ছেড়ে অন্যত্র বসবাস শুরু করেছে।

৫৪ বছর বয়সী কুঙ্গা গুরুং বলেন, ‘আমরা চলে এসেছি কারণ ওখানে পানি নেই। পান করা থেকে শুরু করে ফসল চাষ, পশু পালন সবকিছুতেই পানির প্রয়োজন। কিন্তু ওখানে আর কিছুই নেই।’

বিশ্লেষকেরা বলছেন, জলবায়ু পরিবর্তন সরাসরি ও নীরবে ঠিক করে দিচ্ছে মানুষের বসতি ও জীবনযাপন পদ্ধতি। এটি এখন আর কেবল পুস্তকি কথা নয়, সামজুং জনপদ তার জীবন্ত প্রমাণ। আইসিআইএমওড-এর অভিবাসন বিশ্লেষক আমিনা মহারজান বলেন, ‘হিমালয়ের অনেক গ্রামই এখন স্থানান্তরিত হতে বাধ্য হচ্ছে। আর পানি না থাকাই এর সবচেয়ে বড় কারণ।’

এর আগে ২০২৩ সালে বিজ্ঞানীরা সতর্ক করেছিলেন, গ্রীনহাউজ গ্যাসের নির্গমন যদি কমানো সম্ভব না হয় তাহলে এই শতকেই হিমালয়-হিন্দুকুশ অঞ্চলের ৮০ শতাংশ হিমবাহ গলে যেতে পারে। ইতোমধ্যে সেই সতর্কবর্তার বাস্তব হতে শুরু করে। নেপালের পাহাড়ি এলাকা মুস্তাংয়ে গত তিন বছর একফোঁটা তুষারপাতও হয়নি—যেটি ঐ অঞ্চলের কৃষি ও গবাদিপশুর জন্য চরম বিপর্যয়।

সামজুংয়ে পানি সংকট শুরু হয় ২০০০ সালের শুরুর দিকে। প্রথাগত শুকনো ঠান্ডা আবহাওয়ার জন্য তৈরি কাদা ঘরগুলো হঠাৎ করে অস্বাভাবিক বর্ষণে ভেঙে পড়তে থাকে। পাহাড়ের খাড়া ঢাল বেয়ে জলধারা নেমে এসে হঠাৎ করে ভয়াবহ বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হতে শুরু করে। এমন পরিস্থিতিতে বাড়ি ছাড়তে বাধ্য হয় স্থানীয়রা।

মাত্র ১০০ জনেরও কম বাসিন্দার একটি গ্রাম সরিয়ে নেওয়াও ছিল এক বিশাল চ্যালেঞ্জ। পানির সহজলভ্যতা, রাস্তার সংযোগ, পার্শ্ববর্তী গ্রামের সঙ্গে সহযোগিতামূলক সম্পর্ক—সবকিছু মিলিয়ে জায়গা খুঁজে পেতে সময় লেগেছে অনেক। অবশেষে, মুস্তাংয়ের রাজা—যিনি এখনও স্থানীয় ভূমির মালিক—নতুন গ্রাম তৈরির জন্য জমি দেন।

পানির অভাবে স্থানান্তরিত হতে হয়েছে পুরো একটি গ্রামকে।
পানির অভাবে স্থানান্তরিত হতে হয়েছে পুরো একটি গ্রামকে।

প্রায় ১৫ কিলোমিটার দূরে, কালি গণ্ডকী নদীর তীরে গড়ে ওঠে ‘নিউ সামজুং’। কয়েক বছর ধরে নিরলস পরিশ্রমের পর সেখানে নতুন করে কাদা ঘর তৈরি হয়েছে। এখনো কেউ কেউ ইয়াক-ভেড়া চরান, তবে নতুন জীবনে যুক্ত হয়েছে পর্যটনও। কারণ, এই গ্রামটির কাছেই আছে প্রাচীন দুর্গশহর লো মান্থাংয়ের। সেখানে ১৯৯২ সাল পর্যন্ত বিদেশিদের প্রবেশ নিষিদ্ধ ছিল। তবে, এখন পর্যটকদের জন্য উন্মুক্ত। তাই পর্যটন বৃদ্ধি পাওয়ায় স্থানীয়দের জন্য জীবিকার সুযোগ তৈরি হয়েছে।

১৮ বছরের পেম্বা গুরুং এবং তাঁর বড় বোন ২২ বছরের তোশি লামা গুরুং খুব একটা মনে করতে পারেন না, ঠিক কেমন ছিল তাঁদের পুরনো গ্রাম থেকে চলে আসার সেই দিনগুলো। তবে তাঁরা মনে রাখছেন নতুন জীবন শুরু করার কঠিন বাস্তবতা। নতুন গ্রামে বসতি গড়ার আগে পরিবারগুলোকে কয়েক বছর ধরে উপকরণ জোগাড় করতে হয়েছে। মাটির ঘর বানানো, রঙিন টিনের ছাদ তোলা, গবাদিপশুর আশ্রয় তৈরি এবং বরফগলা কালিগণ্ডকী নদীর পানি বাড়ি পর্যন্ত আনতে খাল কাটা-এসবের জন্য দীর্ঘদিন পরিশ্রম করতে হয়েছে তাঁদের। সবকিছু তৈরি হওয়ার পরেই কেবল তাঁরা নতুন ঠিকানায় চলে আসতে পেরেছেন।

এখন আর প্রতিদিন ঘণ্টার পর ঘণ্টা ধরে বহুদূরের পথ হেঁটে পানি আনতে যেতে হয় না তাঁদের। তবে, পুরোনো ঠিকানার স্মৃতি তারা ভুলতে পারেন না।। তোশি বলেন, ‘ওটাই আমাদের জন্মভূমি। আমরা ফিরে যেতে চাই। কিন্তু আমার মনে হয় না, সেটা আর কখনও সম্ভব হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

দিল্লির পর কলকাতায় ব্যারিকেড ভেঙে বাংলাদেশ উপহাইকমিশনে প্রবেশের চেষ্টা

ভিড়ের মধ্যে ঠেলাঠেলির ভিডিও ভাইরাল, ব্যাখ্যা দিলেন ইশরাক

রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী ও অতি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের নিরাপত্তায় গেজেট

হাতিয়ায় চর দখল নিয়ে দুই গ্রুপের সংঘর্ষ-গোলাগুলি, নিহত ৫

ভারতে নারী সরকারি কর্মকর্তাকে ‘রিল তারকা’ বলায় ৪ কলেজশিক্ষার্থী আটক

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

বায়ুদূষণ বেড়েছে ঢাকায়, বিপর্যস্ত কায়রো

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

শীতের মৌসুমে বাতাস থাকে শুষ্ক। বেড়ে যায় ধূলিকণার পরিমাণ। আর এ কারণে বায়ুদূষণও বাড়তে থাকে। আজ মঙ্গলবার ঢাকার বায়ুমান ‘খুব অস্বাস্থ্যকর’ অবস্থায় আছে।

সুইজারল্যান্ডভিত্তিক বায়ুমান পর্যবেক্ষণকারী সংস্থা আইকিউএয়ারের তালিকায় দেখা যায়, বিশ্বের দূষিত শহর তালিকার ১২৭টি দেশের মধ্যে আজ ঢাকা তৃতীয় স্থানে রয়েছে। আর শীর্ষ অবস্থানে রয়েছে মিশরের কায়রো।

আইকিউএয়ারের সকাল ৮টা ৩০ মিনিটের রেকর্ড অনুযায়ী, ঢাকার এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্স স্কোর ২৫৪।

ঢাকার বেশকিছু স্থানের বাতাসের অবস্থা সবার জন্য অস্বাস্থ্যকর থেকে খুব অস্বাস্থ্যকর। এর মধ্যে রয়েছে— দক্ষিণ পল্লবী (৩০২), বেজ এজওয়াটার আউটডোর (২৭৯), ইস্টার্ন হাউজিং (২৬৭), কল্যাণপুর (২৬৬) ও গ্রেস ইন্টারন্যাশনাল স্কুল (২৩৯)।

বাতাসের গুণমান সূচকের (একিউআই) মাধ্যমে দূষণের মাত্রা নির্ধারণ করে নিয়মিত বায়ু পরিস্থিতি তুলে ধরে সুইজারল্যান্ডভিত্তিক প্রতিষ্ঠান আইকিউএয়ার। তাদের তালিকার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ঢাকার বাতাসে অতিক্ষুদ্র বস্তুকণাই দূষণের প্রধান উৎস। বেশিমাত্রার দূষণ শ্বাসতন্ত্রের রোগ, হৃদ্রোগ এবং দীর্ঘ মেয়াদে ক্যানসারের মতো মারাত্মক স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি করে।

বাতাসের মূল ক্ষতিকারক উপাদান হলো ক্ষুদ্র বস্তুকণা বা পিএম ২.৫। এটি এতই সূক্ষ্ম যে তা ফুসফুসে, এমনকি রক্তপ্রবাহেও প্রবেশ করতে পারে।

অন্যদিকে দূষিত বায়ুর শহরের তালিকায় শীর্ষ অবস্থানে রয়েছে কায়রো। শহরটির একিউআই স্কোর ৩৪৬। যা এই শহরের বাতাসকে ‘দুর্যোগপূর্ণ’ হিসেবে শ্রেণিবদ্ধ করেছে।

তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে ভারতের দিল্লি (২৬৪, খুব অস্বাস্থ্যকর), পাকিস্তানের করাচি (২০৬, খুব অস্বাস্থ্যকর) ও পঞ্চম স্থানে রয়েছে ইরানের তেহরান (১৭১, সবার জন্য অস্বাস্থ্যকর)।

বৈশ্বিক মানদণ্ড অনুযায়ী, বায়ুমান সূচক ৫০-এর নিচে থাকলে বিশুদ্ধ বাতাস ধরা হয়। ৫১-১০০ হলে তা সহনীয়। ১০১ থেকে ১৫০-এর মধ্যে হলে সতর্কতামূলক বা সংবেদনশীল মানুষের (শিশু ও বয়স্ক ব্যক্তি) জন্য অস্বাস্থ্যকর। ১৫১-২০০ হলে সবার জন্য অস্বাস্থ্যকর এবং সূচক ২০১ থেকে ৩০০ হলে বাতাসকে খুব অস্বাস্থ্যকর বলা হয়। আর সূচক ৩০০ ছাড়ালে সেই বাতাস দুর্যোগপূর্ণ।

বায়ুদূষণজনিত স্বাস্থ্য সমস্যায় প্রতিবছর বহু মানুষ মারা যায়। জীবাশ্ম জ্বালানি থেকে বায়ুদূষণ প্রতিবছর বিশ্বব্যাপী ৫২ লাখ মানুষের মৃত্যুর কারণ বলে ২০২৩ সালের নভেম্বরে ব্রিটিশ মেডিকেল জার্নালে (বিএমজে) প্রকাশিত একটি সমীক্ষায় তুলে ধরা হয়।

এদিকে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে, গৃহস্থালি ও পারিপার্শ্বিক বায়ুদূষণের সম্মিলিত প্রভাবে বছরে ৬৭ লাখ মানুষ মারা যায়।

দীর্ঘদিন ঢাকার বাতাস অতিমাত্রায় দূষিত হওয়ায় বাইরে বের হলে সবাইকে মাস্ক পরার পরামর্শ দিয়েছে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়। এ ছাড়া সংবেদনশীল ব্যক্তিদের অতি প্রয়োজন ছাড়া বাইরে না যাওয়ার অনুরোধও করা হয়েছে।

পাশাপাশি ইটভাটা, শিল্পকারখানার মালিক এবং সাধারণ মানুষকে কঠিন বর্জ্য পোড়ানো বন্ধ রাখা, নির্মাণস্থলে ছাউনি ও বেষ্টনী স্থাপন করা, নির্মাণসামগ্রী ঢেকে রাখা, নির্মাণসামগ্রী পরিবহনের সময় ট্রাক বা লরি ঢেকে নেওয়া, নির্মাণস্থলের আশপাশে দিনে অন্তত দুবার পানি ছিটানো এবং পুরোনো ও ধোঁয়া তৈরি করা যানবাহন রাস্তায় বের না করতে বলা হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

দিল্লির পর কলকাতায় ব্যারিকেড ভেঙে বাংলাদেশ উপহাইকমিশনে প্রবেশের চেষ্টা

ভিড়ের মধ্যে ঠেলাঠেলির ভিডিও ভাইরাল, ব্যাখ্যা দিলেন ইশরাক

রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী ও অতি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের নিরাপত্তায় গেজেট

হাতিয়ায় চর দখল নিয়ে দুই গ্রুপের সংঘর্ষ-গোলাগুলি, নিহত ৫

ভারতে নারী সরকারি কর্মকর্তাকে ‘রিল তারকা’ বলায় ৪ কলেজশিক্ষার্থী আটক

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ঢাকার তাপমাত্রা কমবে

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

রাজধানী ঢাকায় তাপমাত্রা আজ মঙ্গলবার সামান্য কমেছে। তাপমাত্রা আরও কমতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। এ ছাড়া সকালে হালকা থেকে মাঝারি ধরনের কুয়াশা পড়তে পারে।

আজ সকাল ৭টায় ঢাকা ও পার্শ্ববর্তী এলাকার আবহাওয়া অধিদপ্তরের পূর্বাভাসে এই তথ্য জানানো হয়েছে।

পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, আজ সকাল ৬টায় রাজধানী ঢাকার তাপমাত্রা ছিল ১৬ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আগের দিন সোমবার ছিল ১৬ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এ সময় বাতাসে আর্দ্রতার পরিমাণ ছিল ৮৯ শতাংশ।

পূর্বাভাসের তথ্য অনুযায়ী, ঢাকা ও পার্শ্ববর্তী এলাকায় দুপুর পর্যন্ত আবহাওয়া থাকতে পারে শুষ্ক। সেই সঙ্গে হালকা থেকে মাঝারি কুয়াশা পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। আকাশ আংশিক মেঘলা থাকতে পারে। এ সময় উত্তর অথবা উত্তর-পশ্চিম দিক থেকে ঘণ্টায় ৫ থেকে ১০ কিলোমিটার বেগে বাতাস বয়ে যেতে পারে। দিনের তাপমাত্রা সামান্য কমতে পারে।

পূর্বাভাসে আরও জানানো হয়েছে, আজ সূর্যাস্ত ৫টা ১৭ মিনিটে এবং আগামীকাল সূর্যোদয় ৬টা ৩৮ মিনিটে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

দিল্লির পর কলকাতায় ব্যারিকেড ভেঙে বাংলাদেশ উপহাইকমিশনে প্রবেশের চেষ্টা

ভিড়ের মধ্যে ঠেলাঠেলির ভিডিও ভাইরাল, ব্যাখ্যা দিলেন ইশরাক

রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী ও অতি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের নিরাপত্তায় গেজেট

হাতিয়ায় চর দখল নিয়ে দুই গ্রুপের সংঘর্ষ-গোলাগুলি, নিহত ৫

ভারতে নারী সরকারি কর্মকর্তাকে ‘রিল তারকা’ বলায় ৪ কলেজশিক্ষার্থী আটক

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

বায়ু দূষণে তৃতীয় স্থানে ঢাকা, শীর্ষে দিল্লি

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

শীতের মৌসুমে বাতাস থাকে শুষ্ক। বেড়ে যায় ধূলিকণার পরিমাণ। আর এ কারণে বায়ুদূষণও বাড়তে থাকে। আজ সোমবার ঢাকার বায়ুমানের অবনতি হয়ে ‘খুব অস্বাস্থ্যকর’ অবস্থায় আছে।

সুইজারল্যান্ডভিত্তিক বায়ুমান পর্যবেক্ষণকারী সংস্থা আইকিউএয়ারের তালিকায় দেখা যায়, বিশ্বের দূষিত শহর তালিকার ১২৭টি দেশের মধ্যে আজ ঢাকা তৃতীয় স্থানে রয়েছে। আর শীর্ষ অবস্থানে রয়েছে ভারতের রাজধানী দিল্লি।

আইকিউএয়ারের সকাল ৮টা ৩০ মিনিটের রেকর্ড অনুযায়ী, ঢাকার এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্স স্কোর ২৩২, যা খুব অস্বাস্থ্যকর বাতাসের নির্দেশক। আর শীর্ষে থাকা দিল্লির এয়ার কোয়ালিটি ইনডেস্ক স্কোর ২৭৪, যা খুব অস্বাস্থ্যকর বাতাসের নির্দেশক।

শীর্ষ পাঁচে থাকা অন্য শহরগুলো হলো মিশরের কায়রো (২৩৫), ভারতের কলকাতা (২১০) ও ভিয়েতনামের হ্যানয় (১৯১)।

আজ ঢাকার যেসব এলাকায় বায়ুদূষণ সবচেয়ে বেশি— গোড়ান, দক্ষিণ পল্লবী, ইস্টার্ন হাউজিং, কল্যাণপুর, বেজ এজওয়াটার আউটডোর, গ্রেস ইন্টারন্যাশনাল স্কুল, শান্তা ফোরাম, পেয়ারাবাগ রেল লাইন ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মোকাররম বিল্ডিং।

ঢাকার নিম্নমানের বাতাসের প্রধান কারণ হলো পিএম ২.৫ বা সূক্ষ্ম কণা। এই অতিক্ষুদ্র কণাগুলো, যাদের ব্যাস ২.৫ মাইক্রোমিটারের চেয়েও কম, ফুসফুসের গভীরে প্রবেশ করে রক্তপ্রবাহে মিশে যেতে পারে। এর ফলে হাঁপানি (অ্যাজমা) বৃদ্ধি, ব্রঙ্কাইটিস এবং হৃদ্‌রোগের মতো শ্বাসযন্ত্র ও হৃদ্‌যন্ত্রের গুরুতর অসুস্থতার ঝুঁকি উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়ে যায়।

শীতকালীন আবহাওয়ার ধরন, যানবাহন ও শিল্প থেকে অনিয়ন্ত্রিত নির্গমন, চলমান নির্মাণকাজ থেকে সৃষ্ট ধুলো এবং আশপাশের ইটভাটাগুলো এই দূষণ সংকটের জন্য দায়ী।

বৈশ্বিক মানদণ্ড অনুযায়ী, বায়ুমান সূচক ৫০-এর নিচে থাকলে বিশুদ্ধ বাতাস ধরা হয়। ৫১ থেকে ১০০ হলে তা সহনীয়। ১০১ থেকে ১৫০-এর মধ্যে হলে সতর্কতামূলক বা সংবেদনশীল মানুষের (শিশু ও বয়স্ক ব্যক্তি) জন্য অস্বাস্থ্যকর। ১৫১ থেকে ২০০ হলে সবার জন্য অস্বাস্থ্যকর এবং সূচক ২০১ থেকে ৩০০ হলে বাতাসকে খুব অস্বাস্থ্যকর বলা হয়। আর সূচক ৩০০ ছাড়ালে সেই বাতাস দুর্যোগপূর্ণ।

বায়ুদূষণজনিত স্বাস্থ্য সমস্যায় প্রতিবছর বহু মানুষ মারা যায়। জীবাশ্ম জ্বালানি থেকে বায়ুদূষণ প্রতিবছর বিশ্বব্যাপী ৫২ লাখ মানুষের মৃত্যুর কারণ বলে ২০২৩ সালের নভেম্বরে ব্রিটিশ মেডিকেল জার্নালে (বিএমজে) প্রকাশিত একটি সমীক্ষায় তুলে ধরা হয়।

এদিকে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে, গৃহস্থালি ও পারিপার্শ্বিক বায়ুদূষণের সম্মিলিত প্রভাবে বছরে ৬৭ লাখ মানুষ মারা যায়।

দীর্ঘদিন ঢাকার বাতাস অতিমাত্রায় দূষিত হওয়ায় বাইরে বের হলে সবাইকে মাস্ক পরার পরামর্শ দিয়েছে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়। এ ছাড়া সংবেদনশীল ব্যক্তিদের অতি প্রয়োজন ছাড়া বাইরে না যাওয়ার অনুরোধও করা হয়েছে।

পাশাপাশি ইটভাটা, শিল্পকারখানার মালিক এবং সাধারণ মানুষকে কঠিন বর্জ্য পোড়ানো বন্ধ রাখা, নির্মাণস্থলে ছাউনি ও বেষ্টনী স্থাপন করা, নির্মাণসামগ্রী ঢেকে রাখা, নির্মাণসামগ্রী পরিবহনের সময় ট্রাক বা লরি ঢেকে নেওয়া, নির্মাণস্থলের আশপাশে দিনে অন্তত দুবার পানি ছিটানো এবং পুরোনো ও ধোঁয়া তৈরি করা যানবাহন রাস্তায় বের না করতে বলা হয়েছে।

বাতাসের এই বিপজ্জনক পরিস্থিতিতে করণীয়

অত্যন্ত সংবেদনশীল গোষ্ঠী: শিশু, বয়স্ক, হৃদ্‌রোগ বা শ্বাসকষ্টের রোগীরা সব ধরনের ঘরের বাইরে না যাওয়াই ভালো।

সাধারণ সুস্থ ব্যক্তি: তাদের উচিত বাইরে কাটানো সময় সীমিত করা এবং শারীরিক পরিশ্রমের কাজ এড়িয়ে চলা।

যদি বাইরে বের হতে হয়, তবে অবশ্যই দূষণ রোধে কার্যকর মাস্ক ব্যবহার করুন।

ঘরের ভেতরের বাতাস পরিষ্কার রাখতে এয়ার পিউরিফায়ার ব্যবহার করুন এবং দূষিত বাতাস প্রবেশ ঠেকাতে জানালা ও দরজা বন্ধ রাখুন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

দিল্লির পর কলকাতায় ব্যারিকেড ভেঙে বাংলাদেশ উপহাইকমিশনে প্রবেশের চেষ্টা

ভিড়ের মধ্যে ঠেলাঠেলির ভিডিও ভাইরাল, ব্যাখ্যা দিলেন ইশরাক

রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী ও অতি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের নিরাপত্তায় গেজেট

হাতিয়ায় চর দখল নিয়ে দুই গ্রুপের সংঘর্ষ-গোলাগুলি, নিহত ৫

ভারতে নারী সরকারি কর্মকর্তাকে ‘রিল তারকা’ বলায় ৪ কলেজশিক্ষার্থী আটক

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ঢাকায় সকালে তাপমাত্রা আবারও ১৬ ডিগ্রির ঘরে

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

ভোরবেলা কিছুটা কুয়াশা পড়লেও বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে আজ সোমবার সকালে রাজধানী ঢাকায় রোদের দেখা মিলেছে। তবে গতকালের চেয়ে কিছুটা বেশি শীত পড়ছে।

আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, আজ সকালে হালকা থেকে মাঝারি ধরনের কুয়াশা পড়তে পারে।

আজ সকাল ৭টায় ঢাকা ও পার্শ্ববর্তী এলাকার আবহাওয়া অধিদপ্তরের পূর্বাভাসে এই তথ্য জানানো হয়েছে।

পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, আজ সকাল ৬টায় রাজধানী ঢাকার তাপমাত্রা ছিল ১৬ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আগের দিন ছিল ১৭ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এ সময় বাতাসে আর্দ্রতার পরিমাণ ছিল ৮৯ শতাংশ।

পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, ঢাকা ও পার্শ্ববর্তী এলাকায় দুপুর পর্যন্ত আবহাওয়া থাকতে পারে শুষ্ক। আকাশ আংশিক মেঘলা থাকতে পারে। এ সময় উত্তর অথবা উত্তর-পশ্চিম দিক থেকে ঘণ্টায় ৫ থেকে ১০ কিলোমিটার বেগে বাতাস বয়ে যেতে পারে। দিনের তাপমাত্রা অপরিবর্তিত থাকতে পারে।

পূর্বাভাসে আরও জানানো হয়েছে, আজ সূর্যাস্ত ৫টা ১৭ মিনিটে এবং আগামীকাল সূর্যোদয় ৬টা ৩৮ মিনিটে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

দিল্লির পর কলকাতায় ব্যারিকেড ভেঙে বাংলাদেশ উপহাইকমিশনে প্রবেশের চেষ্টা

ভিড়ের মধ্যে ঠেলাঠেলির ভিডিও ভাইরাল, ব্যাখ্যা দিলেন ইশরাক

রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী ও অতি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের নিরাপত্তায় গেজেট

হাতিয়ায় চর দখল নিয়ে দুই গ্রুপের সংঘর্ষ-গোলাগুলি, নিহত ৫

ভারতে নারী সরকারি কর্মকর্তাকে ‘রিল তারকা’ বলায় ৪ কলেজশিক্ষার্থী আটক

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত