Ajker Patrika

এটি আমার রাতের পর রাত প্রচণ্ড ব্যথায় চিৎকার করার গান

মীর রাকিব হাসান
আপডেট : ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২১, ১৪: ৫১
এটি আমার রাতের পর রাত প্রচণ্ড ব্যথায় চিৎকার করার গান

ভক্তদের দীর্ঘ প্রতীক্ষা শেষে প্রকাশিত হলো বেজবাবাখ্যাত সুমনের নতুন গান ‘বয়স হলো আমার’। নানা রোগের সঙ্গে লড়াই শেষে দীর্ঘদিন পর ২৪ সেপ্টেম্বর নিজের গান প্রকাশ করলেন তিনি। সুমনের সঙ্গে কথোপকথনে ছিলেন মীর রাকিব হাসান।

‘বয়স হলো আমার’ গানে কী আছে?
এটা খুবই সাদামাটাভাবে গাওয়া। গানটিতে কোনো বেইজ সোলো নেই, কোনো ভয়ংকর লিড নেই, ড্রামসের কোনো ক্যারিকেচার নেই! মহানের খুব সুন্দর বাজানো অ্যাকুয়াস্টিক গিটারের ওপর সাদামাটাভাবে আমার গাওয়া লিরিকনির্ভর গান এটি। এটি আমার ধীরে ধীরে বয়স বেড়ে যাওয়ার গান, এটি আমার গত দুই বছর প্রায় পঙ্গু হয়ে বিছানায় পড়ে থাকার গান, এটি আমার অন্ধকারে ডুবে যাওয়ার গান, এটি আমার রাতের পর রাত প্রচণ্ড ব্যথায় চিৎকার করার গান, এটি আমার সব বাধা অতিক্রম করে আলোয় ফিরে আসার গান।

জীবনযুদ্ধে জয়ী হওয়ার এক অদম্য শক্তি আপনার মাঝে। কোথায় পেয়েছেন এই শক্তি?
সম্ভবত ব্যাপারটা জেনেটিক। আমার বাবা মানসিকভাবে প্রচণ্ড শক্ত একজন মানুষ । তাঁর কাছ থেকে ব্যাপারটা পেয়েছি বোধ হয়। বাবাকে দেখলে একটা অন্যরকম শক্তি পাই।

সাইদুস সালেহীন খালেদ সুমনকখনোই কি ভেঙে পড়েননি?
অবশ্যই ভেঙে পড়েছি। কিন্তু কাউকে বুঝতে দেইনি।

প্রথম যখন ক্যানসার ধরা পড়ল, আপনার মনে হলো পুরো বাংলাদেশ ঘোরা উচিত। দেশের যত জেলায় গাড়িতে যাওয়া যায় সব জায়গায় ঘুরেছেন। আমেরিকায় ৩১ দিনে ২৮টি প্রদেশ ঘুরেছেন সাড়ে ১৪ হাজার মাইল গাড়ি চালিয়ে….
অন্যদিকে ব্যস্ত থাকা অথবা যে কাজটা করলে মন ভালো থাকে সেটা করাই বেঁচে থাকার অন্যতম ‘টনিক’।

কনসার্টে গাওয়ার জন্যও কি প্রস্তুত আছেন?
পুরো একটা কনসার্ট করার জন্য মানসিকভাবে প্রস্তুত, তবে শারীরিকভাবে নই। আরও দুই-তিন মাস লাগবে। টানা তিন বছর গিটার বাজানো বা গান গাওয়া হয়নি। তাই অনুশীলনের প্রয়োজন আছে।

আপনার জীবনে এক একটা ঝড় বয়ে গেছে। ঝড়ের মুখোমুখি হওয়া, ঝড় থেকে উত্তরণ। সেই সময়গুলো নিয়ে যদি কিছু বলতেন। আমি কিছু উল্লেখ করতে পারি…

২০০১ সালের কথা। কনসার্টে গান গাইছিলেন। হঠাৎ মনে হলো আর চোয়াল বন্ধ করতে পারছেন না! ডাক্তার বলেছিলেন, এই চোয়াল নিয়ে আর কখনো গান গাওয়া যাবে না! সেখান থেকে জয়ী হয়েছেন আপনি।

আমার চোয়ালের একটা রোগ হয়েছিল তখন। এটাকে ‘টিএমজি ডিসঅর্ডার’ বলে। আমার কেইসটা ছিল সিভিয়ার। বেশি বড়ভাবে মুখ হা করলে চোয়ালের এক সাইড ডিসলোকেটেড হয়ে যেত! সে সময় ডাক্তার আমাকে একটা ‘ডেঞ্চার’ দিয়েছিল মুখে পরে থাকার জন্য। সেটা মুখে পরে থাকলে ঠিকমতো কথা বলা জেত না। আই মিন কথা বললে সবাই বুঝতে পারত যে আমি মুখে কোনো একটা ইমপ্ল্যান্ট পরে আছি। তিন মাস পর পর সিঙ্গাপুরে গিয়ে ইনেজকশন দিয়ে আসতে হতো। কিন্তু আমি কোনোভাবেই মেনে নিতে পারছিলাম না যে আমি আর গান গাইতে পারব না। তবে ডাক্তারের কথায় দমে যাইনি। ব্যাপারটা চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিলাম। যখনই গান গাওয়ার চেষ্টা করতাম, শুনলে মনে হতো আমি মুখে বড় সাইজের দুইটা সুপারি নিয়ে গান গাইছি। প্রথম দিকে অসহায় লাগত। কিন্তু অসম্ভব রকম প্র্যাকটিস করতে করতে নিজেই একটা টেকনিক বের করলাম। ৯ মাস পর অর্থহীনের ‘ধ্রুবক’ অ্যালবাম রিলিজ দিলাম। প্রতিটা গান গাওয়ার সময় মুখে ‘ডেঞ্চার’ লাগানো ছিল। এখনো পর্যন্ত কেউ সেই অ্যালবামের গান শুনে বুঝতে পারে না যে আমি মুখে ব্রেইস লাগিয়ে গানগুলো গেয়েছিলাম। তারপর আরও বেশ কয়েক মাস মুখে সেই ইমপ্ল্যান্ট লাগিয়েই কনসার্ট করেছি। কেউ বোঝেনি। তারপর আবার সিঙ্গাপুরে গিয়ে ডাক্তার দেখানোর পর সে বলল আমার আর ডেঞ্চার পরে থাকার দরকার নেই, চোয়াল ঠিক হয়ে গেছে। ব্যাপারটা আমার জন্য একটা মিরাকল ছিল।

সাইদুস সালেহীন খালেদ সুমনখেতে খুব ভালোবাসতেন। ওজন ছিল অস্বাভাবিক রকমের বেশি; ১৭৪ কেজি! কমিয়েছেন…

হ্যাঁ। অনেক মোটা ছিলাম। ৫৮ সাইজের প্যান্ট পরতাম। চলতে-ফিরতে অনেক কষ্ট হতো। মিউজিক সিনে অনেক সুমন আছে। সে সময় সবাই আমাকে ‘মোটা সুমন’ হিসেবেই চিনত। ২০০৪ সালের ডিসেম্বরের ৪ তারিখ একটা পার্টিতে আমি সিরিয়াসলি ডিসিশন নিই ওজন কমানোর। আমি তখন কোক খাচ্ছিলাম। আমার পাশে তখন সম্ভবত আর্টসেলের সাজু দাঁড়ানো ছিল। আমি তাকে বললাম, এটাই আমার লাস্ট কোক, আর খাব না, আজকে থেকে আমি শুকানো শুরু করব। সেই সময় থেকে আমি দিনে অসম্ভব রকমের কম খাওয়া শুরু করি। শুধু চা, টোস্ট বিস্কুট, নিউট্রিশন আর ভিটামিন সাপ্লিমেন্ট খেয়ে চলতাম। দিনে পাঁচ ঘণ্টা খেলতাম আর এক্সারসাইজ করতাম। ১৮ মাসে কমিয়েছিলাম ৯২ কেজি।  অনেকের ধারণা, আমি সার্জারি করে ওজন কমিয়েছি। ধারণাটা সম্পূর্ণ ভুল। আর্টসেল, ক্রিপটিক ফেইট, আরবোভাইরাস, নেমেসিসের মতো অনেকগুলো ব্যান্ডের মেম্বার এর সাক্ষী। আমার শুকানোর পুরো সময়টায় তারা আমার পাশে ছিল। তারা দেখেছে আমি কতটা কষ্ট করে শুকিয়েছি।

যতটুকু জানি, মেরুদণ্ডে মোট ৭টি স্ক্রু নিয়ে ঘোরেন। পাকস্থলীর ক্যানসারের সার্জারিতে পুরো পাকস্থলীই কেটে ফেলা হয়েছে। এখন এসব সমস্যা কোন স্টেজে আছে?

এখন আমি সম্পূর্ণ ক্যানসারমুক্ত। মেরুদণ্ডের দুটি সার্জারি করাতে হবে বছরখানেকের মধ্যে। আশা করি কোভিডের অবস্থা একটু ভালোর দিকে গেলে জার্মানিতে গিয়ে সার্জারি করাব।

দীর্ঘদিন ধরে আপনি চিকিৎসাসেবা নিচ্ছেন। যতটুকু জানি, আপনার সচ্ছলতা রয়েছে। তার পরও কোনো সমস্যার সম্মুখীন কি হতে হয়?
আল্লাহ্‌র রহমতে হতে হয়নি।

এত ক্যানসার, এত সমস্যার পরও হাসিখুশি থাকেন কীভাবে?
হ্যাপিনেস ইজ আ চয়েজ অ্যান্ড লাইফ ইজ বিউটিফুল

সাইদুস সালেহীন খালেদ সুমনআপনার প্রতিটা গান একটা গল্প বলে। গানে কেন গল্প বলতে চান?

আমার মনে হয় আমার জীবনটা অনেক ইন্টারেস্টিং। আমি অনেক ধরনের মানুষের সাথে মিশেছি এই জীবনে। তাঁদের জীবনেও অনেক ইন্টারেস্টিং গল্প আমি শুনেছি। আমি বেশির ভাগ গান লেখার সময় ‘সত্য’ কথা লিখতে পছন্দ করি। আমি যা অনুভব করতে পারি, সেটা আমি অনেক সহজে লিখতে পারি। তাই আমার জীবন অথবা আমার আশপাশের মানুষের জীবনে ঘটে যাওয়া ঘটনাগুলো নিয়েই রূপক ধারায় আমি খুব সাধারণভাবে গান লিখি। এ কারণেই হয়তো গানগুলো গল্পের মতো হয়ে যায়।

বেজ গিটারের প্রতি আপনার এই ভালো লাগাটা তৈরি হলো কীভাবে?

আয়রন মেইডেনের একটা লাইভ কনসার্টের ভিডিওতে স্টিভ হ্যারিসের বেজ প্লেয়িং দেখে প্রথম মাথায় আসে বেজ বাজাব। তারপর আমাদের স্কুলে রক স্ট্র্যাটার একটা কনসার্টে ওয়ারফেইজের কমল ভাই গেস্ট মেম্বার হিসেবে বেজ বাজাতে আসেন। সেদিন কমল ভাইয়ের বেজ বাজানো দেখার পর আর পেছনে ফিরে তাকাইনি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

তুমুল হট্টগোলে ফরিদপুরে পণ্ড হলো কনসার্ট, আয়োজকদের দুষলেন জেমস

বিনোদন প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ২৮ ডিসেম্বর ২০২৫, ১০: ২৫
জেমস। ছবি: সংগৃহীত
জেমস। ছবি: সংগৃহীত

গত শুক্রবার ফরিদপুর জিলা স্কুলের ১৮৫ বছর পূর্তি ও পুনর্মিলনীর সমাপনী দিনের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে পারফর্ম করার কথা ছিল ব্যান্ড তারকা নগরবাউল জেমসের। গান শোনাতে যথাসময়ে ফরিদপুর গিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু জেমস মঞ্চে ওঠার আগেই তৈরি হয় বিশৃঙ্খলা। বহিরাগত ব্যক্তিদের হামলা ও ইটবৃষ্টির মুখে কনসার্টটি বাতিল ঘোষণা করেন আয়োজকেরা। শেষ পর্যন্ত গান না গেয়েই ফরিদপুর ছাড়েন জেমস। কনসার্ট বাতিল হওয়ার ঘটনাকে আয়োজকদের ব্যর্থতা দাবি করে জেমস বলেছেন, ‘এটি সম্পূর্ণ আয়োজকদের অব্যবস্থাপনা ও ব্যর্থতা।’

জেমসের ম্যানেজার ও মুখপাত্র রুবাইয়াৎ ঠাকুর রবিন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আয়োজকেরা ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছেন। অনুষ্ঠানস্থলের ভেতর থেকে অনেক বেশি মানুষ ছিল বাইরে। এভাবে তো অনুষ্ঠান করা সম্ভব নয়। আমরা সন্ধ্যার সময়ই ফরিদপুর পৌঁছাই। অনুষ্ঠান শুরুর পর জানতে পারি বিশৃঙ্খলা তৈরি হয়েছে। রাত ১০টার দিকে আমাদের জানানো হয়, বাতিল করা হয়েছে অনুষ্ঠান। এরপর ঢাকায় চলে আসেন জেমস।’

জানা যায়, স্কুলের পুনর্মিলনী উপলক্ষে গত বৃহস্পতিবার থেকেই সাজ সাজ রব ছিল ফরিদপুর শহরে। শুক্রবার সন্ধ্যায় সাংস্কৃতিক পর্বের সময় জিলা স্কুলের মূল ফটকের বাইরে অবস্থান নেওয়া কয়েক হাজার মানুষ ভেতরে প্রবেশের জন্য প্রবল চাপ সৃষ্টি করে। একদল যুবক সীমানাপ্রাচীর টপকে ভেতরে ঢোকার চেষ্টা করলে স্বেচ্ছাসেবকেরা বাধা দেন। এর পরপরই মুজিব সড়ক ও স্কুলের চারপাশ থেকে বৃষ্টির মতো ইটপাটকেল নিক্ষেপ শুরু হয়। এতে শিক্ষার্থী ও আয়োজকসহ অন্তত ৩০ জন আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে।

সোশ্যাল মিডিয়ায় খবর ছড়িয়ে পড়ে, বিশৃঙ্খলার কবলে পড়েছেন জেমস। মৃত্যুর মুখ থেকে ফিরলেন—এমন কথাও ছড়িয়ে পড়ে। তবে রুবাইয়াৎ ঠাকুর রবিন বলেন, ‘এমন কথা সত্যি নয়। সন্ধ্যায় ফরিদপুর পৌঁছালেও অনুষ্ঠানস্থলে যাননি জেমস। ছিলেন একটি গেস্ট হাউসে। সেখানেই তিনি খবর পান বিশৃঙ্খলার। পরে শো বাতিল করলে আমরা ভেন্যুতে না গিয়ে ঢাকায় ফিরে আসি।’

ফরিদপুর কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ শহিদুল ইসলাম বলেন, ‘স্কুলের ভেতরের ধারণক্ষমতার চেয়ে বাইরে অন্তত ১০ গুণ মানুষ জমায়েত হয়েছিল। জিলা স্কুল প্রাঙ্গণে এত বিশাল জনসমুদ্র সামলানো অসম্ভব ছিল। বহিরাগতদের বাধা দিতে গেলে বিশৃঙ্খলা তৈরি হয়।’

পুনর্মিলনী উদ্‌যাপন পরিষদের আহ্বায়ক ডা. মোস্তাফিজুর রহমান শামীম বলেন, ‘নিরাপত্তার খাতিরেই আমরা অনুষ্ঠানটি স্থগিত করেছি। আমাদের অনেক ছোট ছোট শিক্ষার্থী ও প্রবীণ সদস্য আহত হয়েছেন। এটি অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

আবার শুরু হচ্ছে ‘প্রীতিলতা’ সিনেমার শুটিং

বিনোদন প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ২৮ ডিসেম্বর ২০২৫, ১০: ৪৬
পরীমণি। ছবি: সংগৃহীত
পরীমণি। ছবি: সংগৃহীত

ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনের বীরকন্যা প্রীতিলতা ওয়াদ্দেদারকে নিয়ে দুটি সিনেমার শুটিং শুরু হয়েছিল ২০২০ সালে। প্রদীপ ঘোষের ‘বীরকন্যা প্রীতিলতা’ সিনেমায় প্রীতিলতা হয়েছেন নুসরাত ইমরোজ তিশা। অন্যদিকে রাশিদ পলাশের সিনেমায় প্রীতিলতা হয়েছেন পরীমণি। প্রদীপ ঘোষের সিনেমাটি ২০২৩ সালে আলোর মুখ দেখলেও আটকে আছে রাশিদ পলাশের ‘প্রীতিলতা’। নির্মাতা জানালেন নতুন বছরে আবার শুরু হচ্ছে সিনেমার শুটিং।

গতকাল সোশ্যাল মিডিয়ায় পরীমণির সঙ্গে একটি ছবি শেয়ার করে রাশিদ পলাশ লেখেন, ‘এবার প্রীতিলতাও শেষ হবে ইনশা আল্লাহ ২০২৬’। মন্তব্যের ঘরে পরীমণি লেখেন, ‘আমিও প্রস্তুত আছি’। স্পষ্টতই বোঝা গেল, জটিলতা কাটিয়ে নতুন বছরে আবার প্রীতিলতা হয়ে ক্যামেরার সামনে দাঁড়াচ্ছেন পরীমণি।

প্রীতিলতা সিনেমা নিয়ে জানতে যোগাযোগ করলে রাশিদ পলাশ বলেন, ‘অনেক দিন ধরেই প্রীতিলতার বাকি অংশের কাজ শেষ করার পরিকল্পনা করছি। সবকিছু ঠিক থাকলে আগামী বছরের এপ্রিলে শুটিংয়ে যাব।’

২০২১ সালে প্রকাশ করা হয়েছিল প্রীতিলতার ফার্স্ট লুক। প্রীতিলতা বেশে চমকে দিয়েছিলেন পরী। সিনেমাটি নিয়ে তৈরি হয়েছিল আগ্রহ। কিন্তু পরীমণির মাতৃত্বকালীন বিরতিসহ নানা কারণে সে সময় শুটিং শেষ করা সম্ভব হয়নি। মাঝে কয়েকবার এই সিনেমার শুটিং শুরুর কথা শোনা গেলেও তা হয়নি। নতুন বছরে সেই অসম্পূর্ণ কাজ শেষ করতে চান পরিচালক রাশিদ পলাশ। তিনি জানিয়েছেন, আগামী বছরের এপ্রিলে শুটিং শেষ করতে চান প্রীতিলতার। এরপরেই শুরু করবেন সম্পাদনাসহ পোস্ট প্রোডাকশনের কাজ। সিনেমার চিত্রনাট্য ও সংলাপ লিখেছেন গোলাম রাব্বানী।

রাশিদ পলাশ বলেন, ‘২০২০ সালের শেষ দিকে আমরা শুটিং শুরু করেছিলাম। তখন প্রায় ৩০ শতাংশ শুটিং হয়েছিল। সব মিলিয়ে ঢাকা অংশের কাজ শেষ করা আছে। এখন আমরা শুটিং করব চট্টগ্রাম অংশের। আশা করছি রোজার ঈদের পর এপ্রিল মাসে আবার ক্যামেরা ওপেন করতে পারব।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ফিরে দেখা /বলিউডের হতাশার বছরে আলো দেখালেন রণবীর

বিনোদন ডেস্ক
আপডেট : ২৮ ডিসেম্বর ২০২৫, ১০: ৪৫
‘ধুরন্ধর’ সিনেমায় রণবীর সিং
‘ধুরন্ধর’ সিনেমায় রণবীর সিং

তারকারাই বলিউডের প্রাণ। যত বড় তারকা, তাঁর সিনেমা ঘিরে প্রত্যাশাও তত বিশাল। তবে সিনেমায় সুপারস্টারের উপস্থিতি কিংবা নজরকাড়া প্রমোশন এখন আর সাফল্যের নিশ্চয়তা দিতে পারে না। দর্শকেরা এখন তারকা নয়, সিনেমায় খোঁজে ভালো গল্প। এর প্রমাণ এ বছর আবারও পেয়েছে বলিউড।

হৃতিক রোশন-এনটিআর জুনিয়র-কিয়ারা আদভানি অভিনীত ‘ওয়ার ২’ প্রত্যাশিত সাফল্য পায়নি। ব্যর্থ হয়েছে সালমান খানের ‘সিকান্দার’, বরুণ ধাওয়ান-জাহ্নবী কাপুরের ‘সানি সংস্কারি কি তুলসী কুমারী’, শহিদ কাপুরের ‘দেবা’, কাজলের ‘মা’, অর্জুন কাপুরের ‘মেরে হাজবেন্ড কি বিবি’সহ একাধিক বড় তারকার সিনেমা। হিট সিনেমার সিকুয়েলও এবার খুব বেশি সুবিধা করে উঠতে পারেনি। ওয়ার ২ তো আছেই, ফ্লপের তালিকায় যুক্ত হয়েছে অজয়ের ‘দে দে পেয়ার দে ২’, ‘সন অব সরদার ২’, টাইগার শ্রফের ‘বাঘি ৪’, সিদ্ধান্ত চতুর্বেদী-তৃপ্তি দিমরির ‘ধাড়াক ২’সহ একগুচ্ছ সিকুয়েল।

আগে থেকেই দক্ষিণের চাপে ছিল বলিউড। এ বছর সে চাপ আরও বেড়েছে। ইদানীং দক্ষিণি সিনেমাগুলো প্যান-ইন্ডিয়া নাম দিয়ে হিন্দি ভাষাতেও মুক্তি পায়। ফলে দক্ষিণি সিনেমার সাফল্য অনেকটাই ম্লান করে দিয়েছে বলিউডের বক্স অফিস। বলিউডের হতাশার এই বছরে ফেব্রুয়ারিতে প্রথম বড় সাফল্য এনে দেয় ভিকি কৌশলের ‘ছাভা’। দেড় শ কোটিতে নির্মিত সিনেমাটি ৮০০ কোটি রুপির বেশি ব্যবসা করে। তবে ইতিহাস বিকৃতির অভিযোগও ওঠে সিনেমাটির বিরুদ্ধে।

‘লাল সিং চাড্ডা’র ব্যর্থতার পর ‘সিতারে জমিন পার’ দিয়ে বক্স অফিসে আমির খানের রাজত্ব ফেরাটাও বলিউডের এ বছরের উল্লেখযোগ্য ঘটনা। প্রেক্ষাগৃহে ২৬৬ কোটির বেশি ব্যবসা করা সিনেমাটি পরবর্তী সময়ে ওটিটিতে না দিয়ে আমির সরাসরি মুক্তি দেন ইউটিউবে। সেখানেও বড় সাফল্য পেয়েছেন। এ পদক্ষেপ নেওয়ার মাধ্যমে সিনেমা মুক্তির নতুন দিশা দেখিয়েছেন তিনি।

বছরের মাঝামাঝি সময়ে এক নতুন জুটি দিয়ে তাক লাগিয়ে দেন নির্মাতা মোহিত সুরি। আহান পান্ডে ও অনিত পাড্ডাকে নিয়ে তিনি তৈরি করেন ‘সাইয়ারা’। এই গতানুগতিক প্রেমের আখ্যান দর্শক ভালোভাবেই গ্রহণ করেছে। আয় করেছে ৫৭৯ কোটি রুপি। এ সিনেমার সাফল্যের মাধ্যমে বলিউড পেয়েছে দুই নতুন মুখ, যাঁরা হয়ে উঠতে পারেন আগামীর তারকা। অ্যাকশন গল্পের আধিক্যের ভিড়ে কিছুটা স্বস্তি দিয়েছে ‘জলি এলএলবি ৩’ কিংবা ‘হাউসফুল ৫’-এর মতো কমেডি গল্প। এ দুই সিনেমা দিয়ে এবার বক্স অফিসে কিছুটা হলেও সাফল্য ফিরে পেয়েছেন অক্ষয় কুমার।

তবে বছরের সবচেয়ে বড় দানটা মেরেছেন রণবীর সিং। বছরজুড়ে তাঁর মুক্তির তালিকা ছিল শূন্য। ছিলেন আলোচনার বাইরে। ৫ ডিসেম্বর আসে তাঁর স্পাই অ্যাকশন থ্রিলার ‘ধুরন্ধর’। মুক্তির ২২ দিনের মাথায় হাজার কোটির মাইলফলকে পৌঁছেছে সিনেমাটি। এটিই বলিউডে এ বছরের সবচেয়ে বড় সাফল্য। এই সিনেমা দিয়ে নতুন করে আলোচনায় ফিরেছেন অক্ষয় খান্না।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ফিরে দেখা /বলিউডের আলোচিত ঘটনা

বিনোদন ডেস্ক
আপডেট : ২৮ ডিসেম্বর ২০২৫, ১০: ৪৫
দীপিকা পাড়ুকোন। ছবি: সংগৃহীত
দীপিকা পাড়ুকোন। ছবি: সংগৃহীত
  • সর্বোচ্চ ৮ ঘণ্টা কাজের দাবি জানিয়ে একাধিক সিনেমা থেকে বাদ পড়ার ঘটনায় পুরো বছর আলোচনায় ছিলেন দীপিকা পাড়ুকোন। অভিনেত্রী এমন দাবি করলে বাদ পড়েন সন্দীপ রেড্ডি ভাঙার ‘স্পিরিট’ সিনেমা থেকে। এরপর কল্কি সিনেমার সিকুয়েল থেকেও বাদ দেওয়া হয় দীপিকাকে।
  • জানুয়ারিতে সাইফ আলী খানের মুম্বাইয়ের বাড়িতে ঢুকে তাঁকে ছুরিকাঘাত করে একজন অনুপ্রবেশকারী। এই ঘটনায় একজনকে গ্রেপ্তার করা হলেও এখনো জানা যায়নি ঘটনার আসল রহস্য।
  • ⊲ মে মাসের মাঝামাঝি সময়ে ‘হেরা ফেরি থ্রি’ থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দেন পরেশ রাওয়াল। তাঁর এ সিদ্ধান্তের কারণে আইনের আশ্রয় নেন সিনেমার অভিনেতা ও প্রযোজক অক্ষয় কুমার। জুনের শেষদিকে পরেশ রাওয়াল জানান, সব সমস্যার সমাধান হয়েছে। তিনি থাকছেন হেরা ফেরি সিনেমার নতুন পর্বে।
  • নভেম্বরে গোয়ায় একটি চলচ্চিত্র উৎসবে কানতারা সিনেমার নায়ক ঋষভ শেঠিকে মিমিক্রি করে সমালোচনার মুখে পড়েন রণবীর সিং। তিনি কানতারার দাইভা চরিত্রটিকে ভূত হিসেবেও উল্লেখ করেন। পরে ক্ষমা চান রণবীর সিং।
  • অনুষ্ঠান হোক কিংবা জনসমাগম, তাঁর সামনে ক্যামেরা উঠলেই বিরক্তি ঝরে পড়ে জয়া বচ্চনের কথায়-অভিব্যক্তিতে। তাই চলতি মাসে পাপারাজ্জিরা তাঁকে বয়কটের ডাক দিয়েছেন।
  • গত ১২ জুন হৃদ্‌রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান কারিশমা কাপুরের সাবেক স্বামী সঞ্জয় কাপুর। সঞ্জয়ের রেখে যাওয়া সম্পত্তি সমানভাবে বাঁটোয়ারা হচ্ছে না বলে দাবি করেন কারিশমা। সন্তানদের সম্পত্তির ভাগ আদায়ের জন্য আদালতে গিয়েছেন কারিশমা।
  • সিঙ্গাপুরে স্কুবা ডাইভিং করতে গিয়ে গত ১৯ সেপ্টেম্বর মারা যান সংগীতশিল্পী জুবিন গর্গ। তাৎক্ষণিকভাবে মৃত্যুর কারণ হিসেবে দুর্ঘটনার কথা জানালেও কেউ কেউ দাবি করছিলেন পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে জুবিনকে। ১২ ডিসেম্বর হাজার পৃষ্ঠার চার্জশিট দাখিল করে পুলিশ, যেখানে চারজনের বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগ আনা হয়েছে।
  • এ বছর মে মাসে ম্যানহাটনের মর্যাদাপূর্ণ মেট গালায় রেড কার্পেটে হেঁটে প্রথম ভারতীয় পুরুষ হিসেবে ইতিহাস রচনা করেন শাহরুখ খান।
  • সিতারে জমিন পার দিয়ে গত জুন মাসে তিন বছর পর প্রেক্ষাগৃহে ফেরেন আমির খান। নেটফ্লিক্স ১২৫ কোটি রুপিতে সিনেমাটি কিনতে চাইলে অসম্মতি জানান আমির। প্রেক্ষাগৃহে মুক্তির পর সিনেমাটি মুক্তি দেওয়া হয় ইউটিউবে। আমির জানান, সিনেমা মুক্তির নতুন মাধ্যম সৃষ্টি করতেই তিনি এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত