Ajker Patrika

বাতাসে তখনও মিশে আছে সুমনের গান, সুমনের সুর

খায়রুল বাসার নির্ঝর, ঢাকা
আপডেট : ২২ অক্টোবর ২০২২, ২০: ৩৪
বাতাসে তখনও মিশে আছে সুমনের গান, সুমনের সুর

সারাটা সন্ধ্যা প্রবীণ আঙুলগুলো খেলা করে গেল। সেই সন্ধ্যায়, ওই আঙুলের নিচে ভি বালসারার পিয়ানোটা নয়, ছিল কিবোর্ড। সারাটা সন্ধ্যা সেই কিবোর্ডে আঙুল ছুঁয়ে ছুঁয়ে কবীর সুমন কী মমতায়, কী গভীর প্রার্থনায় ও ধ্যানে, বুনে গেলেন সুর! ছড়িয়ে গেলেন মায়া ও মোহ! প্রেম ও প্রশ্রয়!

শহরে সেদিন ছিল ঘোষিত ছুটির দিন। সুমনের এবারের ঢাকা সফরেরও শেষ দিন। ২১ অক্টোবরের সন্ধ্যেটা তাই নামছিল শিরশিরে হেমন্তের পাতলা চাদর ছুঁয়ে, ধীরে। সেই সন্ধ্যায় যাঁরা জড়ো হয়েছিলেন সুমনের মাহফিলে, তাঁরা জানেন। তাঁরা দেখেছেন আশ্চর্য সেই সুরের সফর।

তাঁরা শুনেছেন, কীভাবে সুমন কথায় ও গানে, হাসি ও উচ্চারণে দোলাতে দোলাতে হঠাৎ বসে জিরোন কিছুক্ষণ, কাঠজুড়ি নদীটির তীরে। যেহেতু নদীর কথা এলে আসে শৈশব, তাই সুমন শোনান গাঙর নদীর গল্প, যার জলে একদা ভেসেছিল বেহুলার ভেলা। যেখানে লেগে আছে সুমনের জন্মদাগ। অথবা ‘কারমেন’ সিনেমার সেই উত্তাল প্রেম, মেয়েটিকে দেখে ছেলেটির চোখের হঠাৎ বিস্ফারণ, যেখান থেকে সুমন পেড়ে এনেছেন আস্ত এক গান ‘এক মুহূর্তে ফিরিয়ে দিলে, সহজ চোখে তাকিয়ে থাকা’।

যেন উপকথার প্রাচীন মলাট উল্টিয়ে চলেছেন কবীর সুমন। আর তা থেকে একের পর এক বেরিয়ে আসছে গল্প। ঢুকে পড়ছে গানের ভাঁজে ভাঁজে। সে গল্প রূপকথার চেয়ে ঝলমলে, সে গল্প বাস্তবের চেয়ে ভয়াবহ।

সেদিন শুক্রবার যেন উৎসব নেমেছিল রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনে। শহরের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে কেউ একা, কেউ দলে-বলে-যুগলে এসে মিশেছিলেন অডিটোরিয়াম ভর্তি ভিড়ের মিছিলে। তাঁরা কেউ হাতে হাত রেখে, কেউ সঙ্গীর কাঁধে রেখে মাথা, শুনছিলেন সুমনকে। গাইছিলেন সমস্বরে। ‘আজ জানলার কাছে ডেকে গেছে এক পাখির মতোন সকাল’ পেরিয়ে সুমন যখন ধরলেন ‘খোদার কসম জান’; সেই ভিড়ের মিছিল, সেই সমস্বর যেন হাহাকার করে উঠলো। যেন এতদিন, এভাবে কেউ বলেনি তাঁদের কথা! কেউ বলেনি অত সাহস করে অত দ্বিধাহীন স্বরে- ‘তোমায় খুঁজেছি আমি উজবুক বাঁচার নেশায়’।

এরপর ‘জাতিস্মর’ পেরিয়ে, ‘বিচলিত এই সন্ধ্যাটা’ সরিয়ে সুমন খুঁজলেন নূরকে। আসাদুজ্জামান নূর। দীর্ঘদিনের বন্ধু তাঁরা। গানের বন্ধু। জীবনকে খোঁজার সংগ্রামের বন্ধু। এবারের কবীর সুমনের ঢাকা সফরের তিন দিনের অনুষ্ঠানের প্রতিটিতেই ছিলেন নূর। ২০১১-তে সুমন যখন পুরান ঢাকার অলিগলি পেরিয়ে গিয়েছিলেন আজম খানের সাক্ষাৎকার নিতে, সেদিনও ছিলেন সঙ্গে। এদিন তাই গানের সঙ্গে এল আসাদুজ্জামান নূরের অনবদ্য আবৃত্তির প্রসঙ্গও। ফোয়াদ নাসের বাবুর নামও এল। কণ্ঠে যতটা সম্ভব বিনয় ঢেলে সুমন বললেন, ‘আমি খুব কুণ্ঠার সঙ্গে বাজাচ্ছি। কারণ দর্শকদের মধ্যে রয়েছেন আমার চেয়ে ঢের বড় কিবোর্ড শিল্পী, আমাদের উপমহাদেশের একজন প্রধান কিবোর্ড শিল্পী ফোয়াদ নাসের।’ তখন ঈষৎ অন্ধকারে, দর্শকসারিতে বসে থাকা ফোয়াদ নাসেরের মনে-মাথায় কী চলছিল, সেটা অনুমান করা খুব শক্ত নিশ্চয়ই।

এই যে সপ্তাহখানিক ধরে কবীর সুমন ঢাকায় আছেন, এটা তো শুধু বাংলাদেশের সুমনভক্তদের জন্য নয়, সুমনের নিজের জন্য, তাঁর পরিবারের জন্যও বিশেষ উপলক্ষ। সুমনের এই তিন দিনের অনুষ্ঠান দেখে, যাঁরা, যত মাধ্যমে, যতভাবে লিখেছেন তাঁর গান নিয়ে, তাঁকে নিয়ে; সে সব পড়ে দারুণ উচ্ছ্বসিত সুমন ও পশ্চিমবঙ্গে থাকা তাঁর পরিবারের সদস্যরা।

ঢাকা সফরের শেষ দিনে গাইছেন কবীর সুমনবাংলাদেশের সংবাদমাধ্যমের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে বললেন কবীর সুমন, ‘আমার বাড়ির লোকেরা আজ কদিন ধরে যে কী আনন্দে আছেন! আপনারা সংবাদমাধ্যমের লোকেরা ভাবতেও পারবেন না। যারা আমার দেখাশোনা করেন, অসুস্থ হলে হাসপাতালে নিয়ে যান, অথচ তাদের সঙ্গে আমার সামাজিক কিংবা প্রাতিষ্ঠানিক সম্পর্কও না। এরা সকলেই বলতে পারেন উড়ে এসে জুড়ে বসেছেন। আমার যত্ন নিচ্ছেন। আপনাদের এখানে যা যা লেখা হচ্ছে, প্রত্যেকেই গোগ্রাসে পড়ছেন এবং কান্নাকাটি করছেন। এভাবেও তাহলে মানুষটার সম্বন্ধে বলা যায়! আপনারা নিজেরাও হয়তো জানেন না, আমার ভেতরে কী হচ্ছে! আমি কতটা মুসলমান তাই নিয়ে পশ্চিম বাংলায় আলোচনা হয়। আমি কতটা নকশাল তাই নিয়ে হয়। আমি গান-বাজনা করি কিনা, তা নিয়ে আলোচনা আর হয় না।’

এতক্ষণ একাই বাজাচ্ছিলেন সুমন। একই মঞ্চের সবটুকু আলো জড়ো করে চারপাশে, গাইছিলেন নিত্য যাপনের গান। ‘চেনা দুঃখ চেনা সুখ’ শুরু করে, একটা লাইন গেয়ে, হঠাৎ থেমে, অল্পক্ষণের জন্য ডেকে নিলেন সফরসঙ্গীদের। মঞ্চে এলেন ধ্রুব বসু রায়, ইন্দ্রজিত প্রধান। ‘চেনা সিগারেট খাওয়া, চেনা পথে হেঁটে যাওয়া, চেনা ছবি স্বপ্নের লাশ’ পেরিয়ে সুমন যখন ধরলেন ‘হাল ছেড়ো না বন্ধু’, হাজার করতালির কোলাজ আর তবলা-গিটারের সঙ্গত পেয়ে, সে আহ্বান আরও উদাত্ত ভঙ্গি নিয়ে ছড়িয়ে পড়ল অডিটোরিয়ামের কোনে কোনে।

দর্শকসারির প্রতি কোন থেকে সুমনের দিকে উড়ে উড়ে যাচ্ছিল গানের অনুরোধ। সে সবের অনেকগুলোই মুঠোয় বন্দি করে, তাঁর আশ্চর্য জাদুকরী স্বর ও সুরের ভেতর দিয়ে ফেরত পাঠালেন। গানের তালিকা তাই লম্বা হতে থাকল। ‘তোমাকে অভিবাদন প্রিয়তমা’, ‘আমি চাই সাঁওতাল তার ভাষায় বলবে রাষ্ট্রপুঞ্জে’, ‘সারা রাত জ্বলেছে নিবিড়’, ‘জানি না কে দিয়েছিল পলাশকে তার ডাকনাম’, ‘কে তৈরি করেছিল তাজমহল সে কি শাজাহান’, ‘আমি যাকে ভালোবাসি তার গল্প শোনাব’, ‘পেটকাঠি চাঁদিয়াল’, ‘তোমার জন্য লিখছি প্রেমের গান’, ‘বাঁশুরিয়া বাজাও বাঁশি’, ‘খাতা দেখে গান গেও না’, ‘গড়িয়াহাটার মোড়’ এবং সবশেষে ‘তোমাকে চাই’ গেয়ে উঠে দাঁড়ালেন কবীর সুমন, যেভাবে ধ্বংসস্তুপ পায়ে ঠেলে উঠে দাঁড়ায় নতুন সবুজ।

তাঁর প্রবীণ আঙুল তখন ছড়িয়ে দিচ্ছে উড়ন্ত চুমুর আশীর্বাদ। গোটা অডিটোরিয়াম দাঁড়িয়ে, একটানা দীর্ঘক্ষণ করতালি দিয়ে, করছে কৃতজ্ঞতার উচ্চারণ। আবার বাংলাদেশে আসার, গাওয়ার ইচ্ছের কথা জানিয়ে মৃদু পায়ে ব্যাকস্টেজের পথে মিলিয়ে গেলেন কবীর সুমন। বাইরে, রমনার শান্ত বাতাসে তখনও মিশে আছে সুমনের গান, সুমনের সুর।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

গান-আড্ডায় শহীদ মাহমুদ জঙ্গীর ৭০ বছর

বিনোদন প্রতিবেদক, ঢাকা
শহীদ মাহমুদ জঙ্গী।
শহীদ মাহমুদ জঙ্গী।

বাংলাদেশের জনপ্রিয় গীতিকার শহীদ মাহমুদ জঙ্গী। আশি-নব্বইয়ের দশকে যাঁরা ব্যান্ডের গান শুনেছেন, তাঁরা নামটির সঙ্গে বেশি পরিচিত। সোলস, রেনেসাঁ, এলআরবি ছাড়াও তিনি গান লিখেছেন একক অনেক শিল্পীর জন্য। তিনি লিখেছেন ‘হৃদয় কাদামাটির কোনো মূর্তি নয়’, ‘আজ যে শিশু পৃথিবীর আলোয় এসেছে’, ‘আমি ভুলে যাই তুমি আমার নও’, ‘একদিন ঘুমভাঙা শহরে’, ‘যতীন স্যারের ক্লাসে’, ‘তৃতীয় বিশ্ব’, ‘সময় যেন কাটে না’র মতো কালজয়ী অনেক গান। লিখছেন এখনো। আগামী বছরের ৬ ফেব্রুয়ারিতে পূর্ণ হবে শহীদ মাহমুদের ৭০ বছর। গান ও আড্ডায় এই গীতিকবির সাত দশকের জীবন পরিক্রমা উদ্‌যাপন করতে আয়োজন করা হয়েছে একটি অনুষ্ঠানের। ১২ ডিসেম্বর ‘আপন আলোয় শহীদ মাহমুদ জঙ্গী: গানে গানে সত্তর’ শীর্ষক এই অনুষ্ঠান আয়োজন করেছে আজব কারখানা।

ধানমন্ডির রাশান হাউসে বিকেল ৫টায় শুরু হবে আয়োজন। সূচনা বক্তব্য এবং গীতিকারকে নিয়ে অতিথিদের স্মৃতিচারণার পর মোড়ক উন্মোচন করা হবে ‘আপন আলোয় শহীদ মাহমুদ জঙ্গী: গানে গানে সত্তর’ নামের স্মৃতিচারণা গ্রন্থের। জয় শাহরিয়ারের সম্পাদনায় এই গ্রন্থে গীতিকারকে নিয়ে স্মৃতিচারণা করেছেন নকীব খান, সামিনা চৌধুরী, ফয়সাল সিদ্দিকী বগি, ফোয়াদ নাসের বাবু, কুমার বিশ্বজিৎ, পিলু খান, নাসিম আলী খান, পার্থ বড়ুয়া, লিটন অধিকারী রিন্টু, গোলাম মোরশেদ, বাপ্পী খানসহ অনেকে। এতে উঠে এসেছে গীতিকারের জীবনের নানা ঘটনা।

সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় শহীদ মাহমুদ জঙ্গীর লেখা গান শোনাবেন রফিকুল আলম, নাসিম আলী খান, বাপ্পা মজুমদার, পান্থ কানাই, সুমন কল্যাণ, জয় শাহরিয়ার, কিশোর দাশ, ব্যান্ড সোলস, রেনেসাঁসহ অনেকে।

উৎসব উদ্‌যাপন পর্ষদে দায়িত্ব পালন করছেন নকীব খান, পার্থ বড়ুয়া, পিলু খান, জয় শাহরিয়ার, শামীম আহমেদ, এনাম এলাহী টন্টি, সুমন কল্যাণ, শাকিল খান, হাসান আসাদ প্রমুখ।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

রন্ধনশিল্পীকে নিয়ে সিনেমা

পর্দায় টমি মিয়া হবেন সাজ্জাদ হোসেন

বিনোদন প্রতিবেদক, ঢাকা
টমি মিয়ার লুকে সাজ্জাদ হোসেন। ছবি: সংগৃহীত
টমি মিয়ার লুকে সাজ্জাদ হোসেন। ছবি: সংগৃহীত

মাত্র ১০ বছর বয়সে মা-বাবার সঙ্গে ব্রিটেনে চলে যান টমি মিয়া। ছাত্রাবস্থায় একটি রেস্তোরাঁয় থালা-বাসন ধোয়ার কাজ দিয়ে তাঁর কর্মজীবন শুরু। সে সময় সিদ্ধান্ত নেন রান্নাকে ক্যারিয়ার হিসেবে বেছে নেওয়ার। এরপর আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি তাঁকে। হয়ে ওঠেন আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন শেফ। বাংলাদেশের রন্ধনশিল্পীদের নিয়েও কাজ করেছেন তিনি। ঢাকা, সিলেটসহ বেশ কয়েকটি স্থানে টমি মিয়াস হসপিটালিটি ইনস্টিটিউট থেকে গড়ে তুলেছেন আন্তর্জাতিক মানের শেফ। এবার এই রন্ধনশিল্পীর জীবনী আসছে বড় পর্দায়। ‘সিটিএম’ নামের এই বায়োপিক পরিচালনা করবেন মনিরুজ্জামান মনির।

আগামী বছর টমি মিয়া এমবিইর সহযোগিতায় আয়োজন করা হচ্ছে ‘টমি মিয়াস ঢালিউড অ্যাওয়ার্ড ২০২৬’। অক্টোবর মাসে লন্ডনে অনুষ্ঠিত হবে এই আয়োজন। বাংলাদেশ চলচ্চিত্র পরিচালক সমিতির উদ্যোগে এই অনুষ্ঠানে অংশ নেবেন দেশের একঝাঁক জনপ্রিয় তারকা। গতকাল এ উপলক্ষে এফডিসিতে আয়োজন করা হয় সংবাদ সম্মেলনের। সেখানেই নিজের বায়োপিকের ঘোষণা দেন টমি মিয়া।

পর্দায় টমি মিয়ার চরিত্রে অভিনয় করবেন সাজ্জাদ হোসেন। অভিনয়ে আসার আগে যিনি নিজেও কাজ করেছেন শেফ হিসেবে। ২০০৭ সালে টমি মিয়াস ইনস্টিটিউট ম্যানেজমেন্ট থেকে ট্রেনিং করেন সাজ্জাদ। এরপর লন্ডনের রেস্টুরেন্টে কাজ করেছেন শেফ হিসেবে। পরবর্তী সময়ে অভিনয়ের টানে চলে আসেন দেশে।

সাজ্জাদ হোসেন বলেন, ‘২০০৭ সালে কোর্স করার সময় টমি ভাইয়ের সঙ্গে আমার পরিচয়। এই পরিচয় তাঁর জীবনী নিয়ে সিনেমা করতে কাজে লাগবে আমার। এ ছাড়া শেফ হিসেবে কাজ করার অভিজ্ঞতা থাকায় পর্দায় তাঁর চরিত্রটি উপস্থাপন করা একটু সহজ হবে আমার জন্য।’

সাজ্জাদ আরও বলেন, ‘এটি বায়োপিক হলেও সুন্দর একটি গল্প আছে, প্রেম আছে, ট্র্যাজেডি আছে। সব মিলিয়ে দর্শকের জন্য উপভোগ্য একটি সিনেমা হবে। চেষ্টা করব পর্দায় পরিপূর্ণভাবে নিজেকে টমি মিয়া হিসেবে উপস্থাপন করতে। ইতিমধ্যে টমি ভাইয়ের সঙ্গে তাঁর জীবনের নানা দিক নিয়ে কথা বলা শুরু করেছি।’

‘এমআরনাইন’ সিনেমা দিয়ে ঢালিউডে অভিষেক সাজ্জাদের। এরপর অভিনয় করেছেন ‘মোনা: জ্বীন-২’, ‘মেঘনা কন্যা’ সিনেমায়। মুক্তির অপেক্ষায় রয়েছে সাজ্জাদ অভিনীত ‘প্রেম পুরাণ’ সিনেমাটি।

জানা গেছে, লন্ডনে বড় একটি অংশের শুটিং হবে সিটিএম সিনেমার। টমি মিয়ার সঙ্গে সহপ্রযোজনায় থাকবেন বাংলাদেশ ও লন্ডনের কয়েকজন। নতুন বছরের শুরুতে মহরত অনুষ্ঠান করে আনুষ্ঠানিকভাবে বিস্তারিত তুলে ধরা হবে এই সিনেমার।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

শিল্পীদের বিদেশে স্থায়ী হওয়ার কারণ জানালেন মিশা সওদাগর

বিনোদন প্রতিবেদক, ঢাকা
মিশা সওদাগর। ছবি: সংগৃহীত
মিশা সওদাগর। ছবি: সংগৃহীত

বাংলাদেশের শোবিজ জগতের অনেক তারকা পাড়ি জমিয়েছেন দেশের বাইরে। স্থায়ী হয়েছেন সেখানে। কেউ কেউ আবার মাঝেমধ্যে দেশে এসে কাজ করেন। সাম্প্রতিক সময়ে তারকাদের বিদেশ যাওয়ার প্রবণতা বেড়েছে লক্ষণীয়ভাবে। অমিত হাসান, সাইমন সাদিক, জায়েদ খান, মাহিয়া মাহি, সাজু খাদেমসহ বর্তমান সময়ের অনেক শিল্পী রয়েছেন এ তালিকায়। শিল্পীদের বিদেশে যাওয়া নিয়ে কথা বললেন চলচ্চিত্রশিল্পী সমিতির সভাপতি অভিনেতা মিশা সওদাগর। জানালেন কাজ কমে যাওয়ার কারণেই শিল্পীদের বিদেশে যাওয়ার প্রবণতা বেড়েছে।

মিশা সওদাগরের পরিবারের সদস্যরাও স্থায়ী হয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রে। তিনি নিজেও বছরের অর্ধেক সময় কাটান মার্কিন মুলুকে। সম্প্রতি এক টেলিভিশন অনুষ্ঠানে এসে শিল্পীদের বিদেশে স্থায়ী হওয়া প্রসঙ্গে কথা বলেন এই অভিনেতা। তাঁর মতে, দেশে কাজ থাকলে শিল্পীদের বিদেশে যেতে হতো না।

মিশা বলেন, ‘কাজ না থাকলে শিল্পীদের কী আর করার আছে। একসময় এক দিনে চার-পাঁচটি সিনেমার কাজ করেছি। সকাল ৭টায় শুরু করেছি, সেটা চলেছে রাত ২টা পর্যন্ত। এখন সেই এফডিসি প্রায় বন্ধ। যে শিল্পীরা দেশের বাইরে গেছে, তাদের কি কারও মন চাইছিল দেশ ছেড়ে যেতে? আমার বন্ধু অমিত হাসান কত সিনেমার নায়ক, সেও বাইরে চলে গেছে। এ ছাড়া মৌসুমী, ইমন, আলেকজান্ডার বো গেছে। অনেকেই সাম্প্রতিক সময়ে দেশ ছেড়েছে। মাহিয়া মাহিও যুক্তরাষ্ট্রে আছে। আমার কথাই যদি বলি, অভিনয় ছাড়া আমি তো কিছু পারি না। যাঁরা গেছে তাদেরকে দোষ দেওয়া যাবে না। কাজ যদি থাকত তাহলে তো তারা এখানেই কাজ করত।’

মিশা সওদাগর আরও বলেন, ‘আমাদের শিল্পীদের কাজ থাকুক না থাকুক, অনেক কিছু মেইনটেইন করতে হয়। চেহারায় একটা গেটআপ রাখতে হয়, একটা গাড়ি রাখতে হয়, একটা ভালো মোবাইল ব্যবহার করতে হয়, ভালো পোশাক পরতে হয়, ড্রয়িংরুম সাজিয়ে রাখতে হয়। তা ছাড়া আমরা কাজ করি পরিবারের জন্য। পরিবারের সদস্যদের ভালো রাখার জন্য। কিন্তু কাজই যদি না থাকে, ইনকাম যদি বন্ধ হয়ে যায়, তাহলে একজন শিল্পী কী করবে? শিল্পীদের সেক্রিফাইসগুলো সবাই বুঝবে না। ওইখানে (বিদেশে) গেলে অন্তত কাজ করে পরিবার নিয়ে সারভাইভ করতে পারবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

পুরোনো অপরাধ সামনে আসায় অভিনয় ছাড়লেন কোরিয়ান তারকা

বিনোদন ডেস্ক
জো জিন উং। ছবি: সংগৃহীত
জো জিন উং। ছবি: সংগৃহীত

দুই দশকের বেশি সময়ের ক্যারিয়ারকে বিদায় জানালেন কোরিয়ান অভিনেতা জো জিন উং। প্রায় ৩০ বছর আগে সংঘটিত তাঁর কিছু অপরাধের খবর সামনে আসায় বিতর্ক সৃষ্টি হয়। সেই বিতর্কের জেরে অভিনয় থেকেই সরে দাঁড়িয়েছেন জো জিন উং। কিশোর বয়সের ওই অপরাধের জন্য ভক্তদের কাছে ক্ষমা চেয়েছেন অভিনেতা।

মঞ্চনাটক দিয়ে অভিনয় শুরু করেছিলেন জো জিন উং। ২০০৪ সালে ‘ওয়ান্স আপন আ টাইম ইন হাইস্কুল’ সিনেমা দিয়ে পর্দায় তাঁর আত্মপ্রকাশ। ‘দ্য হ্যান্ডমেইডেন’, ‘দ্য শেরিফ ইন টাউন’, ‘দ্য স্পাই গন নর্থ’, ‘বিলিভার’, ‘ইনটিমেট স্ট্রেঞ্জার’, ‘ব্ল্যাক মানি’সহ অনেক আলোচিত সিনেমায় অভিনয় করেছেন তিনি। এ ছাড়া দেখা দিয়েছেন ‘ডিপ রুটেড ট্রি’, ‘বিয়ন্ড দ্য ক্লাউডস’, ‘সিগন্যাল’, ‘দ্য গুড ব্যাড মাদার’সহ অনেক সিরিয়ালে। কোরিয়ান সিনেমা ও কে-ড্রামার এই জনপ্রিয় অভিনেতাকে এবার বিতর্কের জেরে অভিনয় ছাড়ার মতো কঠিন সিদ্ধান্ত নিতে হলো।

সম্প্রতি একটি কোরিয়ান সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত হয়, হাইস্কুলে পড়ার সময় গাড়ি চুরির দায়ে জো জিন উংকে একবার কিশোর সংশোধন কেন্দ্রে যেতে হয়েছিল। এ ছাড়া ডাকাতি ও ধর্ষণের মতো অপরাধেও জড়িয়েছিলেন তিনি। ওয়ান্স আপন আ টাইম ইন হাইস্কুল সিনেমার শুটিং চলাকালে মদ্যপ অবস্থায় গাড়ি চালিয়ে পুলিশের হাতে ধরা পড়েছিলেন। স্থগিত করা হয়েছিল তাঁর ড্রাইভিং লাইসেন্স। অভিনেতার এসব পুরোনো অপরাধের খবর প্রকাশ পাওয়ার পর নতুন করে ব্যাপক সমালোচনার মুখোমুখি হতে হয় জো জিন উংকে। অন্য সব অভিযোগ মেনে নিলেও ধর্ষণের অভিযোগ অস্বীকার করেছেন অভিনেতা। সেই সঙ্গে নাবালক অবস্থায় ঘটা এসব অপরাধের জন্য ক্ষমা চেয়েছেন।

এক বিবৃতিতে জো জিন উং বলেন, ‘অতীতের এসব ঘটনার জন্য আমি ক্ষমা চাইছি। আপনাদের সব সমালোচনা মাথা পেতে নিলাম। সেই সঙ্গে আমার অভিনয় ক্যারিয়ারকে এখানেই বিদায় জানানোর সিদ্ধান্ত নিলাম।’

বিতর্কের জেরে এরই মধ্যে ‘ওয়ার অন ক্রাইম’ ডকুমেন্টারি সিরিজ থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে জো জিন উংকে। এতে কণ্ঠ দিয়েছিলেন তিনি। প্রথম পর্বটি প্রচারিত হয়েছিল গত ৩০ নভেম্বর। নতুন পর্বে আর শোনা যাবে না তাঁর কণ্ঠ। জো জিন উং অভিনীত আলোচিত সিরিজ ‘সিগন্যাল ২’ নিয়েও সংশয় দেখা দিয়েছে। এরই মধ্যে সিরিজটির শুটিং শেষ হলেও এতে তাঁর উপস্থিতি শেষ পর্যন্ত থাকবে কি না, বিষয়টি নতুন করে ভেবে দেখছে প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান।

প্রবল সমালোচনার মধ্যেও জো জিন উংয়ের পাশে দাঁড়িয়েছেন কিছু আইনজীবী ও রাজনীতিবিদ। তাঁদের মতে, কিশোর বয়সে ঘটা অপরাধের জন্য ওই সময়ই শাস্তি পেয়েছিলেন জো জিন উং। তাহলে এত বছর পর কেন নতুন করে তাঁকে হেনস্তা করা হবে! বরং একজন প্রতিষ্ঠিত অভিনেতার অন্ধকার অতীত টেনে আনায় মিডিয়ার সমালোচনা করছেন তাঁরা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত