Ajker Patrika

ক্রাইমস অব দ্য ফিউচার: ভয়ংকর ভবিষ্যৎ ও শরীরের রাজনীতির গল্প

জাহাঙ্গীর আলম
আপডেট : ৩০ জুন ২০২২, ১৮: ৪৭
ক্রাইমস অব দ্য ফিউচার: ভয়ংকর ভবিষ্যৎ ও শরীরের রাজনীতির গল্প

মানুষের সবচেয়ে অরক্ষিত বস্তুটি কী? উত্তর হলো, তার নিজের শরীর। এই শরীরকে উপলক্ষ করেই শিল্প নির্মাণ করতে চান ডেভিড ক্রোনেনবার্গ। আবিষ্কার, উদ্ভাবন, বিপর্যয়, বিবর্তন—সবকিছুরই প্রথম ‘শিকার’ শরীর। তবে শুধু শরীরের বাহ্যিক গঠন নয়, এটিকে কাটাছেঁড়াও করতে চান নির্মাতা ডেভিড ক্রোনেনবার্গ। সেটিই তিনি করেছেন তাঁর সর্বশেষ ছবি ‘ক্রাইমস অব দ্য ফিউচার’-এ।

দীর্ঘ আট বছর পর বড় পর্দায় ফিরেছেন এ কানাডীয় নির্মাতা। ধরন হিসেবে অনেকে এটিকে বলছেন, ‘সায়েন্স ফিকশন-বডি হরর’। অবশ্য এর অনেক আগেই ‘কিং অব বডি হরর’ খেতাব পেয়ে গেছেন ক্রোনেনবার্গ! 

এ সিনেমার নট-নটীরা বিজ্ঞানী, চিকিৎসক, আমলা, গোয়েন্দা আর বিশেষ করে বডি পারফরমেন্স আর্টিস্ট। উপলক্ষ যেহেতু শরীর, তাই বডি আর্টিস্টদেরই প্রধান চরিত্র হিসেবে বেছে নিয়েছেন ক্রোনেনবার্গ। কারণ, এই শিল্পীরাই শরীর উজাড় করে দিয়ে শিল্প করেন। যেমন: ট্যাটু আর্টিস্ট, বডি পেইন্টিং, সার্কাস, বাজিকর এবং সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ যেটিকে বলা যেতে পারে—অঙ্গপ্রত্যঙ্গে পরিবর্তন অযোগ্য অস্ত্রোপচার। এসব শিল্প শ্রমসাধ্য ও বেদনাদায়ক। পৃথিবী নামের গ্রহে সম্ভবত মানুষই সবচেয়ে বুদ্ধিমান চতুর প্রাণী, যারা নিজের অস্তিত্ব সম্পর্কে সচেতন। শরীরই অস্তিত্ব। এটাই বাস্তব। এই বাস্তবতাই শিল্পের ক্যানভাস। 

দূষণ এবং জলবায়ু পরিবর্তনের বিপর্যয়কর প্রভাবগুলো মানুষকে জৈব প্রযুক্তিতে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি করতে বাধ্য করেছে। অতি উচ্চ প্রযুক্তির যন্ত্র এবং (অ্যানালগ) কম্পিউটারের উদ্ভাবন এর মধ্যে অন্যতম। এই প্রযুক্তি সরাসরি মানুষের জৈবিক ক্রিয়া নিয়ন্ত্রণ করতে পারে। 

একই সময় মানবজাতি বেশ কিছু জৈবিক পরিবর্তনের ভেতর দিয়ে যেতে শুরু করেছে। এই পরিবর্তনগুলোর মধ্যে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য হলো শারীরিক ব্যথা এবং ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়তে পারে এমন সংক্রামক রোগের অন্তর্ধান। কিছু মানুষ আবার শরীরে আরও ব্যাপক পরিবর্তন লক্ষ্য করতে শুরু করেছে। তাদেরই একজন, ব্রেকেন নামের আট বছর বয়সী বালক, যার খাদ্য প্লাস্টিক। প্লাস্টিক চিবিয়ে খেয়ে সহজেই হজম করতে পারে সে। এটি হলো গল্পের উপক্রমণিকা। 

টেনসরের শরীরে ক্রমাগত নতুন অঙ্গপ্রত্যঙ্গ তৈরি হচ্ছে। ছবি: টুইটারপ্লাস্টিকখেকো মানুষের বিবর্তনের ব্যাপারটা বেশ মজার। ডেভিড ক্রোনেনবার্গ একই নামে ১৯৭০ সালে একটি সিনেমা বানিয়েছিলেন। অবশ্য এখনকারটার গল্প সম্পূর্ণ আলাদা। প্লাস্টিক দূষণ মোকাবিলার একটা বিকল্প দেখিয়েছেন তিনি, জনাথন সুইফট স্টাইলের প্রহসনমূলক, তবে বাস্তব। এখানে তিনি অ্যাকটিভিস্টদের পথে হাঁটতে চাননি। ধারণাটা গাঁজাখুরি মনে হতে পারে। কিন্তু এখন অন্যান্য প্রাণী তো বটেই মানুষের রক্তপ্রবাহেও মাইক্রোপ্লাস্টিক পাওয়া যাচ্ছে! প্লাস্টিকখেকো ব্যাকটেরিয়ারও সন্ধান পাওয়া যাচ্ছে। যেমনটি প্রযুক্তির কল্যাণে মানুষ ক্রমেই সাইবর্গ হয়ে উঠছে! 

কিন্তু ব্রেকেনের মায়ের কাছে ব্যাপারটা স্বাভাবিক মনে হয়নি। নিজের সন্তানকে ‘অন্য’, ‘ভীতিকর’, ‘অসহ্য’ কিছু মনে হয়েছে তাঁর। একদিন ঘুমের মধ্যে আপন সন্তানকে বালিশ চাপা দিয়ে হত্যা করেন তিনি। 

সোল টেনসর এবং ক্যাপ্রিস দম্পতি বিশ্ববিখ্যাত অভিনয় শিল্পী (পারফরম্যান্স আর্টিস্ট)। টেনসরের ‘এক্সিলারেটেড ইভোলিউশন সিন্ড্রোম’ নামে এক বিশেষ শারীরিক সমস্যা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। এ ব্যাধি তাঁর শরীরকে ক্রমাগত নতুন অঙ্গপ্রত্যঙ্গ সৃষ্টিতে বাধ্য করছে। 

এই সমস্যাকে পুঁজি করেন তাঁরা। আন্ডারগ্রাউন্ডে এই নিষিদ্ধ শিল্পের প্রদর্শনী চলে। দর্শকদের সামনে অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে নতুন অঙ্গ অপসারণ করা হয়। কিন্তু এই সিন্ড্রোমটি টেনসরকে অবিরাম ব্যথা এবং তীব্র শ্বাসকষ্ট ও হজমের সমস্যায় ফেলে দেয়। সার্বক্ষণিক অস্বস্তিতে ভোগেন তিনি। বেশ কয়েকটি বিশেষায়িত বায়োমেকানিক্যাল ডিভাইসের ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়েন টেনসর। 

এর মধ্যে টেনসর এবং ক্যাপ্রিস ন্যাশনাল অর্গান রেজিস্ট্রির দায়িত্বে থাকা আমলাদের সঙ্গে দেখা করেন। মানব বিবর্তনের ওপর রাষ্ট্রের নিয়ন্ত্রণ ও বিধিনিষেধ বজায় রাখার জন্যই এই অফিস করা হয়েছে। তাঁরা মানুষের মধ্যে নতুন বিকশিত অঙ্গগুলোর তালিকা এবং সংরক্ষণ করেন। 

তাহলে কি আমরা ধরে নিতে পারি, রাষ্ট্র নাগরিকের শরীরের ওপরও নিয়ন্ত্রণ চায়? হ্যাঁ, চায় তো। রাষ্ট্র নাগরিককে মৃত্যুদণ্ড দেয়, সশ্রম কারাদণ্ড দেয়, গর্ভপাতের অধিকারের ওপর খবরদারি করে, সন্তানের সংখ্যা নিয়ন্ত্রণ করে, বিয়ের বয়স নির্ধারণ করে দেয়। আপাতদৃষ্টিতে এটি নাগরিকদের মঙ্গলের জন্য করা হয়। কিন্তু আপাত মঙ্গলময় সিদ্ধান্ত ও আইনগুলোও শেষ পর্যন্ত নিয়ন্ত্রণের হাতিয়ার হয়ে ওঠে। 

ন্যাশনাল অর্গান রেজিস্ট্রির একজন আমলা, যৌন হতাশাগ্রস্ত, নার্ভি টিমলিন, টেনসরের শিল্পভাবনার মোহে পড়ে যান। টেনসরের একটি দারুণ সফল শোতে গোপনে হাজির হন তিনি। কারণ, এ ধরনের পারফরমেন্সে সরকারের অনুমতি নেই। শো শেষে টিমলিন টেনসরের কাছে গিয়ে কানে কানে বলেন, ‘সার্জারি ইজ দ্য নিউ সেক্স।’ নতুন দুনিয়ায় স্বাগতম! নতুন এ ভাবনা টেনসরকেও নাড়িয়ে দেয়। 

তার মানে ক্রোনেনবার্গ কি আমাদের মনে করিয়ে দিতে চাচ্ছেন বা মহিমান্বিত করতে চাচ্ছেন যে, কষ্ট বা বেদনার অনুভূতিও উপভোগ্য হতে পারে। অথবা সহিংসতার আনন্দ! এগুলোকে তো বিশেষ মানসিক বিকৃতি (স্যাডিজম/ধর্ষকাম) হিসেবেই দেখা হয়। ক্রোনেনবার্গ বলছেন, না, সেরকম কোনো বার্তা তিনি দিতে চান না। তিনি বরং একজন আত্মোৎসর্গকারী নিবেদিত শিল্পীর উজাড় করে দেওয়ার বাসনা ও দর্শককে বিস্মিত বিমোহিত করতে সব শ্রম, ঘাম, পীড়ন সহ্য করার মধ্যে মানসিক তৃপ্তির, স্বর্গীয় আনন্দের স্বরূপটাকে ওভাবে দেখতে এবং দেখাতে চেয়েছেন। নির্মাতা নিজেও ক্যারিয়ারের শুরুর দিকে মূলধারায় প্রত্যাখ্যাত হয়েছেন। বারবার সেন্সরের কাঁচিতে ক্ষতবিক্ষত হয়েছেন। 

তাহলে কি এই সিনেমার কোনো রাজনৈতিক অবস্থান নেই? পরিচালক প্রথমত বলছেন, আক্ষরিক অর্থে এখানে কোনো রাজনীতি নেই। এটা কোনো রাজনৈতিক সিনেমা নয়। কিন্তু শেষ পর্যন্ত সব শিল্পেরই তো একটা রাজনৈতিক অবয়ব থাকে। শিল্পের রাজনীতি থাকবে না, এটা তো হয় না! সামগ্রিক অর্থে এখানেও নিশ্চয় আছে। 

মাংসল, পচা অর্কিডের মতো অপারেশনের বেডে চরম অস্বস্তি নিয়ে শুয়ে থাকা টেনসর। ছবি: টুইটারসিনেমার মাঝপথে গিয়ে গল্পের বাঁকবদলের মধ্যে এই রাজনৈতিক চরিত্র কিছুটা প্রকাশ পেয়েছে। হঠাৎ সরকারি গোয়েন্দা সংস্থা টেনসরের সঙ্গে যোগাযোগ করে। তারা শিল্পী টেনসরকে ব্যবহার করে উগ্র বিবর্তনবাদীদের একটি দলের ভেতরে অনুপ্রবেশ করতে চায়। ক্যাপ্রিসকে না জানিয়ে গোপনে টেনসর অন্য পারফরম্যান্স আর্ট শোগুলোতে যাতায়াত শুরু করেন। সেখানে অনেকের সঙ্গে তাঁর পরিচয় হয়। এভাবেই এক সময় পৌঁছে যান বিবর্তনবাদীদের একটি সেলে। তাদের মধ্যে একজন প্রাক্তন কসমেটিক সার্জন নাসাতির। টেনসরের পেটে একটি জিপারযুক্ত গহ্বর তৈরি করে দেন। অন্যান্য পারফরম্যান্স শিল্পীদের সঙ্গে নেটওয়ার্ক গড়তে গিয়ে নিজেও বডি আর্টে আসক্ত হয়ে পড়েন ট্রমা সার্জন ক্যাপ্রিস। কপালে আলংকারিক কসমেটিকস সার্জারি করেন। যদিও টেনসর তাতে খুব একটা খুশি হন বলে মনে হয় না। 

অনেকে বলছেন, এই সিনেমা মূলত ট্রান্স ফ্যান্টাসি এবং বডি পলিটিকস (শরীরের রাজনীতি) নিয়ে। এমনটি মনে করার যথেষ্ট উপাদান এই সিনেমায় রয়েছে। টেনসর জানেন, তাঁর শরীরে নতুন হরমোনের অস্তিত্ব পাওয়া গেছে। সেটি শরীরের ভেতরে ব্যাপক পরিবর্তন সাধন করছে। অপারেশনের বেডটি দেখতে মাংসল, পচা অর্কিডের মতো। সেখানে টেনসরকে অত্যন্ত অস্বস্তি নিয়ে শুয়ে থাকতে দেখা যায়। ফলে এখানে ট্রান্সজেন্ডারবিষয়ক প্রচুর রূপক আছে। তা ছাড়া সমাজে, রাষ্ট্রে ট্রান্সজেন্ডাররা যেন ভীতিকর প্রাণী। রীতিমতো হরর সিনেমার চরিত্র। ‘অদ্ভুত আচরণ’ ও ফ্যান্টাসির কারণে রাজনৈতিকভাবে এবং স্বাস্থ্যগত দিক থেকে তারা কঠোর ও সমালোচনার নজরে থাকেন। এমনকি তাদের জন্য অমানবিক আইনকানুনও করা হয়। 

টেনসরকেও এমন পরিস্থিতির ভেতর দিয়ে যেতে হয়। অবশ্য টেনসর নিজেকে ট্রান্সজেন্ডার বলেননি। তাঁর মুখ দিয়েই আমরা শুনছি, তাঁর শরীর বিদ্রোহ করছে, শরীরে চলছে জৈবিক নৈরাজ্য এবং গভীরে বৈপ্লবিক কিছু ঘটছে। টিমলিন যখন তাঁকে প্রলুব্ধ করার চেষ্টা করছিলেন, তখন তাঁর জবাব ছিল, ‘আমি পুরোনো যৌনতায় খুব একটা ভালো না!’ বহু ট্রান্সজেন্ডার ব্যক্তি এমন অভিজ্ঞতার ভেতর দিয়ে যান। টেনসরকে বলা যেতে পারে ট্রান্স হিউম্যান। ভবিষ্যতে হয়তো এমন কিছুর সঙ্গে মানবজাতিকে মানিয়ে নিতে হবে। 

এখানে আরেকটি বিষয় উল্লেখ না করলেই নয়, টেনসর জানেন, চলমান বিবর্তন প্রক্রিয়া গ্রহণে যে মানুষ আগ্রহী, তা নয়। বরং তারা এটা অপছন্দই করে। কারণ, শরীরে তৈরি নতুন অঙ্গ অপসারণের প্রদর্শনীই তো তাদের টিকিট কেটে দেখতে আসতে প্রলুব্ধ করছে। অবশ্য আরেকটা বিষয়ও মানুষের আগ্রহের কেন্দ্রে। সবখানে মানব বিবর্তন আর মিউটেশনের ভীতিকর গল্প। কিন্তু সবাই তো সেই অভিজ্ঞতার ভেতর দিয়ে যাচ্ছে না, বা তারা সচেতন নয়। মূলত তাদের সচেতন করতেই টেনসরের এই আয়োজন কি? সেটা শিল্পের ঘাড়ে নৈতিকতার খাঁড়া বললেও বলা যেতে পারে। 

টেনসর একদিন টিমলিনের সঙ্গে দেখা করেন। টিমলিন তাঁকে বিবর্তনবাদীদের এজেন্ডা বিস্তারিত বলেন। এই বিবর্তনবাদীরা প্লাস্টিক এবং অন্যান্য সিনথেটিক রাসায়নিক হজম করার সক্ষমতা অর্জনের জন্য নিজেদের পাচনতন্ত্র পরিবর্তন করছে। তাদের প্রধান খাদ্য বিষাক্ত বর্জ্যে তৈরি এক ধরনের বেগুনি ‘ক্যান্ডি বার’। অন্যদের জন্য এটি মারাত্মক বিষাক্ত। 

ল্যাং নামক ব্যক্তি এই সংগঠনের নেতা। আমরা প্রথম দৃশ্যে যেই বালকের কথা বলেছিলাম, সেই ব্রেকেন তাঁরই ছেলে। তবে ব্রেকেন কিন্তু প্লাস্টিক হজম করার ক্ষমতা নিয়েই জন্মেছিল। 

কিন্তু সরকার এটি বিশ্বাস করতে চায়নি। মানুষের এই স্বতঃস্ফূর্ত বিবর্তন কোনো মঙ্গল বয়ে আনবে না—এটিই সরকারের অবস্থান। ব্রেকেন সেই ধারণা ভুল প্রমাণ করেছিল। তাহলে কি ব্রেকেনকে সরকারই খুন করেছে? না, সেটি নিঃসন্দেহে বলা যাবে না। কিন্তু রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে যে ধারণা প্রতিষ্ঠিত করা হয়েছিল, তাতে ব্রেকেনের মা আস্থা রেখেছিলেন। তিনি নিজের সন্তানকেই মানবশিশু বলে বিশ্বাস করতে পারেননি। এটি কি বিশৃঙ্খল বিশ্বে বিষণ্ন মানুষের মানসিক বিকৃতির আভাস! হবে হয়তো। অবশ্য শেষের দিকে কিছু ইঙ্গিত মিলবে। 

অবশেষে ল্যাংয়ের সঙ্গে টেনসরের যোগাযোগ হয়। ল্যাং চান টেনসর এবং ক্যাপ্রিস ব্রেকেনের একটি প্রকাশ্য ময়নাতদন্ত করুক। মানুষ দেখুক ব্রেকেনের প্লাস্টিক হজমকারী পাচনতন্ত্র প্রাকৃতিকভাবেই বিকশিত হয়েছে। মানুষ জানুক এই গ্রুপের এজেন্ডা কী, সরকারের ধারণা আসলে ভুল। 

প্রথমে আপত্তি করলেও শেষ পর্যন্ত টেনসর সম্মত হন। সরকারি আমলা টিমলিন, ল্যাং এবং আরও অনেকের সামনে ব্রেকেনের ময়নাতদন্ত করা হয়। কিন্তু দেখা যায়, ব্রেকেনের পাচনতন্ত্র আসলে অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে প্রতিস্থাপন করা হয়েছে! আশাহত ল্যাং কাঁদতে কাঁদতে শো থেকে সবার অলক্ষ্যে বেরিয়ে যান। 

সিঁড়িতে বসে ফোঁপাচ্ছেন ল্যাং। পেছন থেকে নিঃশব্দে সেখানে হাজির হয় সেই দুই লেসবিয়ান টেকনিশিয়ান। টেনসরের বায়োমেডিক্যাল মেশিন প্রস্তুতকারী করপোরেশনে কাজ করে তারা। হঠাৎ করে গুপ্তঘাতক হয়ে ওঠে। তারা সেই কসমেটিক সার্জন নাসাতিরকে হত্যা করে ড্রিল মেশিন দিয়ে মাথা ফুটো করে। একই কায়দায় তারা ল্যাংকেও হত্যা করে সটকে পড়ে।

রাষ্ট্র আর করপোরেশনের এজেন্ডার এই মিল কি কাকতালীয়? মোটেও তা নয়। যদিও পরিচালক সেটি স্পষ্ট করেননি। 

পরে সেই গোয়েন্দা এজেন্টের কাছ থেকেই টেনসর জানতে পারেন, চলমান বিবর্তনের ঘটনাগুলো থেকে জনসাধারণের নজর সরাতেই টিমলিন ব্রেকেনের অঙ্গ প্রতিস্থাপন করেছিলেন। 

প্রশ্ন উঠতে পারে, সরকার কেন একটি অমোঘ বাস্তবতাকে গোপন রাখতে চায়? কেন এই প্রাকৃতিক পরিবর্তনকে মেনে নিতে পারছে না? কারণ একটাই, যেটিকে নিয়ন্ত্রণ করা যায় না, সেটি রাষ্ট্র পছন্দ করে না! ঠিক এই কারণেই রাষ্ট্র অঙ্গপ্রত্যঙ্গ নিবন্ধনের দোকান খুলেছে! এটি আসলে নজরদারির টুল। 

ব্রেকেন এবং ল্যাংয়ের মৃত্যুতে মর্মাহত টেনসর গোয়েন্দা সংস্থাকে জানান, তিনি আর তাদের সঙ্গে কাজ করবেন না। সেই সঙ্গে সেই বিবর্তনবাদীদের অবস্থানকেও সমর্থনের কথা জানান তিনি। শেষ দৃশ্যে প্লাস্টিকের ক্যান্ডিবার মুখে নিয়ে টেনসরের হাসি আরেকবার তারই স্পষ্ট অনুমোদন দেয়। 

সমালোচকেরা সিনেমাটিকে পাস নম্বর দিয়েছেন। অনেকে বলেছেন, সিনেমায় নির্মাতা যত রহস্যের অবতারণা করেছেন, তার সমাধান দিয়েছেন খুব কম। পুরো গল্পটি বোঝার মতো যথেষ্ট দীর্ঘ নয় বলেও অনেকে অভিযোগ করেছেন। তা ছাড়া সিক্যুয়েন্সগুলোর মধ্যে ধারাবাহিকতা পাওয়াও কঠিন। 

অবশ্য ডেভিড ক্রোনেনবার্গকে কোনো নির্দিষ্ট ছাঁচে ফেলা যায় না। তিনি হরর গল্প বলার প্রচলিত ধরনটি পছন্দ করেন না। তিনি চান মানুষকে তার বাস্তবতা বোঝাতে। বডি হরর নয়, তিনি বলতে চান বডি বিউটিফুল। নির্মাতা স্পষ্ট করেই বলেছেন, তাঁর সিনেমায় কোনো খলনায়ক নেই! আর সাম্প্রতিক সাক্ষাৎকারে ট্রান্সজেন্ডার উপাদানের বিষয়েও কোনো ইঙ্গিত তিনি দেননি। 

মূল প্রতিপাদ্য হলো—পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে টিকে থাকা এবং অভিযোজনই শেষ কথা। শরীরই একমাত্র বাস্তবতা। শরীরই হলো অস্তিত্বের সার। ২০ বছর আগে লেখা স্ক্রিপ্ট। এ কারণে মাইক্রোপ্লাস্টিকের বিষয়টি আসেনি। প্লাস্টিক দূষণ মোকাবিলায় বিকল্প হিসেবে এসেছে প্লাস্টিক ভক্ষণের ধারণা। 

চিত্রনাট্য ও পরিচালনা: ডেভিড ক্রোনেনবার্গ
প্রযোজক: রবার্ট ল্যান্টোস
অভিনয়ে: ভিগ্গো মরটেনসেন, লে সিদোক্স, ক্রিস্টেন স্টুয়ার্ট 
সিনেমাটোগ্রাফি: ডগলাস কোচ
সংগীত পরিচালনা: হাওয়ার্ড শোর
মুক্তি: ২৩ মে, কান; ২৫ মে, ফ্রান্স; ৩ জুন, কানাডা ও যুক্তরাষ্ট্র
দৈর্ঘ্য: ১০৭ মিনিট
এখন পর্যন্ত আয়: ৩৩ লাখ মার্কিন ডলার

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

তুমুল হট্টগোলে ফরিদপুরে পণ্ড হলো কনসার্ট, আয়োজকদের দুষলেন জেমস

বিনোদন প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ২৮ ডিসেম্বর ২০২৫, ১০: ২৫
জেমস। ছবি: সংগৃহীত
জেমস। ছবি: সংগৃহীত

গত শুক্রবার ফরিদপুর জিলা স্কুলের ১৮৫ বছর পূর্তি ও পুনর্মিলনীর সমাপনী দিনের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে পারফর্ম করার কথা ছিল ব্যান্ড তারকা নগরবাউল জেমসের। গান শোনাতে যথাসময়ে ফরিদপুর গিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু জেমস মঞ্চে ওঠার আগেই তৈরি হয় বিশৃঙ্খলা। বহিরাগত ব্যক্তিদের হামলা ও ইটবৃষ্টির মুখে কনসার্টটি বাতিল ঘোষণা করেন আয়োজকেরা। শেষ পর্যন্ত গান না গেয়েই ফরিদপুর ছাড়েন জেমস। কনসার্ট বাতিল হওয়ার ঘটনাকে আয়োজকদের ব্যর্থতা দাবি করে জেমস বলেছেন, ‘এটি সম্পূর্ণ আয়োজকদের অব্যবস্থাপনা ও ব্যর্থতা।’

জেমসের ম্যানেজার ও মুখপাত্র রুবাইয়াৎ ঠাকুর রবিন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আয়োজকেরা ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছেন। অনুষ্ঠানস্থলের ভেতর থেকে অনেক বেশি মানুষ ছিল বাইরে। এভাবে তো অনুষ্ঠান করা সম্ভব নয়। আমরা সন্ধ্যার সময়ই ফরিদপুর পৌঁছাই। অনুষ্ঠান শুরুর পর জানতে পারি বিশৃঙ্খলা তৈরি হয়েছে। রাত ১০টার দিকে আমাদের জানানো হয়, বাতিল করা হয়েছে অনুষ্ঠান। এরপর ঢাকায় চলে আসেন জেমস।’

জানা যায়, স্কুলের পুনর্মিলনী উপলক্ষে গত বৃহস্পতিবার থেকেই সাজ সাজ রব ছিল ফরিদপুর শহরে। শুক্রবার সন্ধ্যায় সাংস্কৃতিক পর্বের সময় জিলা স্কুলের মূল ফটকের বাইরে অবস্থান নেওয়া কয়েক হাজার মানুষ ভেতরে প্রবেশের জন্য প্রবল চাপ সৃষ্টি করে। একদল যুবক সীমানাপ্রাচীর টপকে ভেতরে ঢোকার চেষ্টা করলে স্বেচ্ছাসেবকেরা বাধা দেন। এর পরপরই মুজিব সড়ক ও স্কুলের চারপাশ থেকে বৃষ্টির মতো ইটপাটকেল নিক্ষেপ শুরু হয়। এতে শিক্ষার্থী ও আয়োজকসহ অন্তত ৩০ জন আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে।

সোশ্যাল মিডিয়ায় খবর ছড়িয়ে পড়ে, বিশৃঙ্খলার কবলে পড়েছেন জেমস। মৃত্যুর মুখ থেকে ফিরলেন—এমন কথাও ছড়িয়ে পড়ে। তবে রুবাইয়াৎ ঠাকুর রবিন বলেন, ‘এমন কথা সত্যি নয়। সন্ধ্যায় ফরিদপুর পৌঁছালেও অনুষ্ঠানস্থলে যাননি জেমস। ছিলেন একটি গেস্ট হাউসে। সেখানেই তিনি খবর পান বিশৃঙ্খলার। পরে শো বাতিল করলে আমরা ভেন্যুতে না গিয়ে ঢাকায় ফিরে আসি।’

ফরিদপুর কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ শহিদুল ইসলাম বলেন, ‘স্কুলের ভেতরের ধারণক্ষমতার চেয়ে বাইরে অন্তত ১০ গুণ মানুষ জমায়েত হয়েছিল। জিলা স্কুল প্রাঙ্গণে এত বিশাল জনসমুদ্র সামলানো অসম্ভব ছিল। বহিরাগতদের বাধা দিতে গেলে বিশৃঙ্খলা তৈরি হয়।’

পুনর্মিলনী উদ্‌যাপন পরিষদের আহ্বায়ক ডা. মোস্তাফিজুর রহমান শামীম বলেন, ‘নিরাপত্তার খাতিরেই আমরা অনুষ্ঠানটি স্থগিত করেছি। আমাদের অনেক ছোট ছোট শিক্ষার্থী ও প্রবীণ সদস্য আহত হয়েছেন। এটি অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

আবার শুরু হচ্ছে ‘প্রীতিলতা’ সিনেমার শুটিং

বিনোদন প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ২৮ ডিসেম্বর ২০২৫, ১০: ৪৬
পরীমণি। ছবি: সংগৃহীত
পরীমণি। ছবি: সংগৃহীত

ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনের বীরকন্যা প্রীতিলতা ওয়াদ্দেদারকে নিয়ে দুটি সিনেমার শুটিং শুরু হয়েছিল ২০২০ সালে। প্রদীপ ঘোষের ‘বীরকন্যা প্রীতিলতা’ সিনেমায় প্রীতিলতা হয়েছেন নুসরাত ইমরোজ তিশা। অন্যদিকে রাশিদ পলাশের সিনেমায় প্রীতিলতা হয়েছেন পরীমণি। প্রদীপ ঘোষের সিনেমাটি ২০২৩ সালে আলোর মুখ দেখলেও আটকে আছে রাশিদ পলাশের ‘প্রীতিলতা’। নির্মাতা জানালেন নতুন বছরে আবার শুরু হচ্ছে সিনেমার শুটিং।

গতকাল সোশ্যাল মিডিয়ায় পরীমণির সঙ্গে একটি ছবি শেয়ার করে রাশিদ পলাশ লেখেন, ‘এবার প্রীতিলতাও শেষ হবে ইনশা আল্লাহ ২০২৬’। মন্তব্যের ঘরে পরীমণি লেখেন, ‘আমিও প্রস্তুত আছি’। স্পষ্টতই বোঝা গেল, জটিলতা কাটিয়ে নতুন বছরে আবার প্রীতিলতা হয়ে ক্যামেরার সামনে দাঁড়াচ্ছেন পরীমণি।

প্রীতিলতা সিনেমা নিয়ে জানতে যোগাযোগ করলে রাশিদ পলাশ বলেন, ‘অনেক দিন ধরেই প্রীতিলতার বাকি অংশের কাজ শেষ করার পরিকল্পনা করছি। সবকিছু ঠিক থাকলে আগামী বছরের এপ্রিলে শুটিংয়ে যাব।’

২০২১ সালে প্রকাশ করা হয়েছিল প্রীতিলতার ফার্স্ট লুক। প্রীতিলতা বেশে চমকে দিয়েছিলেন পরী। সিনেমাটি নিয়ে তৈরি হয়েছিল আগ্রহ। কিন্তু পরীমণির মাতৃত্বকালীন বিরতিসহ নানা কারণে সে সময় শুটিং শেষ করা সম্ভব হয়নি। মাঝে কয়েকবার এই সিনেমার শুটিং শুরুর কথা শোনা গেলেও তা হয়নি। নতুন বছরে সেই অসম্পূর্ণ কাজ শেষ করতে চান পরিচালক রাশিদ পলাশ। তিনি জানিয়েছেন, আগামী বছরের এপ্রিলে শুটিং শেষ করতে চান প্রীতিলতার। এরপরেই শুরু করবেন সম্পাদনাসহ পোস্ট প্রোডাকশনের কাজ। সিনেমার চিত্রনাট্য ও সংলাপ লিখেছেন গোলাম রাব্বানী।

রাশিদ পলাশ বলেন, ‘২০২০ সালের শেষ দিকে আমরা শুটিং শুরু করেছিলাম। তখন প্রায় ৩০ শতাংশ শুটিং হয়েছিল। সব মিলিয়ে ঢাকা অংশের কাজ শেষ করা আছে। এখন আমরা শুটিং করব চট্টগ্রাম অংশের। আশা করছি রোজার ঈদের পর এপ্রিল মাসে আবার ক্যামেরা ওপেন করতে পারব।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ফিরে দেখা /বলিউডের হতাশার বছরে আলো দেখালেন রণবীর

বিনোদন ডেস্ক
আপডেট : ২৮ ডিসেম্বর ২০২৫, ১০: ৪৫
‘ধুরন্ধর’ সিনেমায় রণবীর সিং
‘ধুরন্ধর’ সিনেমায় রণবীর সিং

তারকারাই বলিউডের প্রাণ। যত বড় তারকা, তাঁর সিনেমা ঘিরে প্রত্যাশাও তত বিশাল। তবে সিনেমায় সুপারস্টারের উপস্থিতি কিংবা নজরকাড়া প্রমোশন এখন আর সাফল্যের নিশ্চয়তা দিতে পারে না। দর্শকেরা এখন তারকা নয়, সিনেমায় খোঁজে ভালো গল্প। এর প্রমাণ এ বছর আবারও পেয়েছে বলিউড।

হৃতিক রোশন-এনটিআর জুনিয়র-কিয়ারা আদভানি অভিনীত ‘ওয়ার ২’ প্রত্যাশিত সাফল্য পায়নি। ব্যর্থ হয়েছে সালমান খানের ‘সিকান্দার’, বরুণ ধাওয়ান-জাহ্নবী কাপুরের ‘সানি সংস্কারি কি তুলসী কুমারী’, শহিদ কাপুরের ‘দেবা’, কাজলের ‘মা’, অর্জুন কাপুরের ‘মেরে হাজবেন্ড কি বিবি’সহ একাধিক বড় তারকার সিনেমা। হিট সিনেমার সিকুয়েলও এবার খুব বেশি সুবিধা করে উঠতে পারেনি। ওয়ার ২ তো আছেই, ফ্লপের তালিকায় যুক্ত হয়েছে অজয়ের ‘দে দে পেয়ার দে ২’, ‘সন অব সরদার ২’, টাইগার শ্রফের ‘বাঘি ৪’, সিদ্ধান্ত চতুর্বেদী-তৃপ্তি দিমরির ‘ধাড়াক ২’সহ একগুচ্ছ সিকুয়েল।

আগে থেকেই দক্ষিণের চাপে ছিল বলিউড। এ বছর সে চাপ আরও বেড়েছে। ইদানীং দক্ষিণি সিনেমাগুলো প্যান-ইন্ডিয়া নাম দিয়ে হিন্দি ভাষাতেও মুক্তি পায়। ফলে দক্ষিণি সিনেমার সাফল্য অনেকটাই ম্লান করে দিয়েছে বলিউডের বক্স অফিস। বলিউডের হতাশার এই বছরে ফেব্রুয়ারিতে প্রথম বড় সাফল্য এনে দেয় ভিকি কৌশলের ‘ছাভা’। দেড় শ কোটিতে নির্মিত সিনেমাটি ৮০০ কোটি রুপির বেশি ব্যবসা করে। তবে ইতিহাস বিকৃতির অভিযোগও ওঠে সিনেমাটির বিরুদ্ধে।

‘লাল সিং চাড্ডা’র ব্যর্থতার পর ‘সিতারে জমিন পার’ দিয়ে বক্স অফিসে আমির খানের রাজত্ব ফেরাটাও বলিউডের এ বছরের উল্লেখযোগ্য ঘটনা। প্রেক্ষাগৃহে ২৬৬ কোটির বেশি ব্যবসা করা সিনেমাটি পরবর্তী সময়ে ওটিটিতে না দিয়ে আমির সরাসরি মুক্তি দেন ইউটিউবে। সেখানেও বড় সাফল্য পেয়েছেন। এ পদক্ষেপ নেওয়ার মাধ্যমে সিনেমা মুক্তির নতুন দিশা দেখিয়েছেন তিনি।

বছরের মাঝামাঝি সময়ে এক নতুন জুটি দিয়ে তাক লাগিয়ে দেন নির্মাতা মোহিত সুরি। আহান পান্ডে ও অনিত পাড্ডাকে নিয়ে তিনি তৈরি করেন ‘সাইয়ারা’। এই গতানুগতিক প্রেমের আখ্যান দর্শক ভালোভাবেই গ্রহণ করেছে। আয় করেছে ৫৭৯ কোটি রুপি। এ সিনেমার সাফল্যের মাধ্যমে বলিউড পেয়েছে দুই নতুন মুখ, যাঁরা হয়ে উঠতে পারেন আগামীর তারকা। অ্যাকশন গল্পের আধিক্যের ভিড়ে কিছুটা স্বস্তি দিয়েছে ‘জলি এলএলবি ৩’ কিংবা ‘হাউসফুল ৫’-এর মতো কমেডি গল্প। এ দুই সিনেমা দিয়ে এবার বক্স অফিসে কিছুটা হলেও সাফল্য ফিরে পেয়েছেন অক্ষয় কুমার।

তবে বছরের সবচেয়ে বড় দানটা মেরেছেন রণবীর সিং। বছরজুড়ে তাঁর মুক্তির তালিকা ছিল শূন্য। ছিলেন আলোচনার বাইরে। ৫ ডিসেম্বর আসে তাঁর স্পাই অ্যাকশন থ্রিলার ‘ধুরন্ধর’। মুক্তির ২২ দিনের মাথায় হাজার কোটির মাইলফলকে পৌঁছেছে সিনেমাটি। এটিই বলিউডে এ বছরের সবচেয়ে বড় সাফল্য। এই সিনেমা দিয়ে নতুন করে আলোচনায় ফিরেছেন অক্ষয় খান্না।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ফিরে দেখা /বলিউডের আলোচিত ঘটনা

বিনোদন ডেস্ক
আপডেট : ২৮ ডিসেম্বর ২০২৫, ১০: ৪৫
দীপিকা পাড়ুকোন। ছবি: সংগৃহীত
দীপিকা পাড়ুকোন। ছবি: সংগৃহীত
  • সর্বোচ্চ ৮ ঘণ্টা কাজের দাবি জানিয়ে একাধিক সিনেমা থেকে বাদ পড়ার ঘটনায় পুরো বছর আলোচনায় ছিলেন দীপিকা পাড়ুকোন। অভিনেত্রী এমন দাবি করলে বাদ পড়েন সন্দীপ রেড্ডি ভাঙার ‘স্পিরিট’ সিনেমা থেকে। এরপর কল্কি সিনেমার সিকুয়েল থেকেও বাদ দেওয়া হয় দীপিকাকে।
  • জানুয়ারিতে সাইফ আলী খানের মুম্বাইয়ের বাড়িতে ঢুকে তাঁকে ছুরিকাঘাত করে একজন অনুপ্রবেশকারী। এই ঘটনায় একজনকে গ্রেপ্তার করা হলেও এখনো জানা যায়নি ঘটনার আসল রহস্য।
  • ⊲ মে মাসের মাঝামাঝি সময়ে ‘হেরা ফেরি থ্রি’ থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দেন পরেশ রাওয়াল। তাঁর এ সিদ্ধান্তের কারণে আইনের আশ্রয় নেন সিনেমার অভিনেতা ও প্রযোজক অক্ষয় কুমার। জুনের শেষদিকে পরেশ রাওয়াল জানান, সব সমস্যার সমাধান হয়েছে। তিনি থাকছেন হেরা ফেরি সিনেমার নতুন পর্বে।
  • নভেম্বরে গোয়ায় একটি চলচ্চিত্র উৎসবে কানতারা সিনেমার নায়ক ঋষভ শেঠিকে মিমিক্রি করে সমালোচনার মুখে পড়েন রণবীর সিং। তিনি কানতারার দাইভা চরিত্রটিকে ভূত হিসেবেও উল্লেখ করেন। পরে ক্ষমা চান রণবীর সিং।
  • অনুষ্ঠান হোক কিংবা জনসমাগম, তাঁর সামনে ক্যামেরা উঠলেই বিরক্তি ঝরে পড়ে জয়া বচ্চনের কথায়-অভিব্যক্তিতে। তাই চলতি মাসে পাপারাজ্জিরা তাঁকে বয়কটের ডাক দিয়েছেন।
  • গত ১২ জুন হৃদ্‌রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান কারিশমা কাপুরের সাবেক স্বামী সঞ্জয় কাপুর। সঞ্জয়ের রেখে যাওয়া সম্পত্তি সমানভাবে বাঁটোয়ারা হচ্ছে না বলে দাবি করেন কারিশমা। সন্তানদের সম্পত্তির ভাগ আদায়ের জন্য আদালতে গিয়েছেন কারিশমা।
  • সিঙ্গাপুরে স্কুবা ডাইভিং করতে গিয়ে গত ১৯ সেপ্টেম্বর মারা যান সংগীতশিল্পী জুবিন গর্গ। তাৎক্ষণিকভাবে মৃত্যুর কারণ হিসেবে দুর্ঘটনার কথা জানালেও কেউ কেউ দাবি করছিলেন পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে জুবিনকে। ১২ ডিসেম্বর হাজার পৃষ্ঠার চার্জশিট দাখিল করে পুলিশ, যেখানে চারজনের বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগ আনা হয়েছে।
  • এ বছর মে মাসে ম্যানহাটনের মর্যাদাপূর্ণ মেট গালায় রেড কার্পেটে হেঁটে প্রথম ভারতীয় পুরুষ হিসেবে ইতিহাস রচনা করেন শাহরুখ খান।
  • সিতারে জমিন পার দিয়ে গত জুন মাসে তিন বছর পর প্রেক্ষাগৃহে ফেরেন আমির খান। নেটফ্লিক্স ১২৫ কোটি রুপিতে সিনেমাটি কিনতে চাইলে অসম্মতি জানান আমির। প্রেক্ষাগৃহে মুক্তির পর সিনেমাটি মুক্তি দেওয়া হয় ইউটিউবে। আমির জানান, সিনেমা মুক্তির নতুন মাধ্যম সৃষ্টি করতেই তিনি এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত