Ajker Patrika

‘গডফাদার’ তৈরির নেপথ্যের গল্প

জুবায়ের ইবনে কামাল, ঢাকা
‘গডফাদার’ তৈরির নেপথ্যের গল্প

‘গডফাদার’কে ধরা হয় উপন্যাস অবলম্বনে নির্মিত সিনেমার আদর্শ উদাহরণ। এমনকি আইএমডিবি রেটিংয়ে শীর্ষে থাকা ‘দ্য শশাঙ্ক রিডাম্পশন’ সিনেমাটি উপন্যাস অবলম্বনে নির্মিত হলেও, সমালোচকদের মতে ‘গডফাদার’-এর মতো সফলভাবে কেউই উপন্যাসকে চলচ্চিত্রের পর্দায় আনতে পারেননি। সম্প্রতি ‘গডফাদার’ মুক্তির ৫০ বছর পেরিয়েছে। জেনে নেওয়া যাক, যেভাবে তৈরি হয়েছিলো গডফাদার…

মারিয়া পুজোর লেখা ‘গডফাদার’ উপন্যাসটি যখন বিখ্যাত হয়নি, তখনই ৮০ হাজার ডলারের বিনিময়ে বইটির স্বত্ব কিনে নেয় প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান প্যারামাউন্ট পিকচারস। সংশ্লিষ্ট অনেকেই বলে থাকেন, বইটি যখন মাত্র একশ পৃষ্ঠা লেখা হয়েছিল, তখনই স্বত্ব কেনার পরিকল্পনা করছিল প্রযোজনা প্রতিষ্ঠানটি। একেই হয়তো বলে প্রযোজকের চোখ! কারণ এটি যে সর্বকালের শ্রেষ্ঠ ব্যবসাসফল সিনেমা হতে চলেছে, তা হয়তো অদৃশ্য চোখে দেখতে পেয়েছিলেন তাঁরা।

কিন্তু সিনেমাটি তৈরির শুরু থেকেই প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান আর পরিচালকের মধ্যে ছোট ছোট বিষয়ে বিরোধ লেগেই ছিল। তবে শেষ পর্যন্ত যে সিনেমাটি তৈরি করা গেছে, এটিই ছিল অবাক করা ব্যাপার। প্রথমত, সিনেমাটিকে সত্তর দশকের গল্প হিসেবে দেখানোর জন্য উপন্যাসের অনেক কিছুই চিত্রনাট্যে পাল্টে ফেলা হয়। কিন্তু পরিচালক ফ্রান্সিস ফোর্ড কপোলা চেয়েছিলেন, উপন্যাসের মতো সিনেমায় চল্লিশ-পঞ্চাশের দশকের গল্পই দেখাক। মুল চিত্রনাট্যকার ও উপন্যাসের লেখক মারিও পুজোকে তিনি রাজি করালেও প্রযোজক প্রতিষ্ঠান প্যারামাউন্ট পিকচারস তা মানতে চায়নি শুরুতে।

‘গডফাদার’ সিনেমার দৃশ্য। দ্বিতীয়বার নির্মাতা ফ্রান্সিসের সাথে আবার প্যারামাউন্টের দ্বন্দ্ব বাঁধে অভিনেতা নির্বাচনের সময়। ভিটো কর্লিয়নি চরিত্রের জন্য নির্মাতা ফ্রান্সিস তুখোড় অভিনেতা মারলন ব্র্যান্ডোকে নেওয়ার ব্যাপারে আগ্রহী হন। কিন্তু প্রযোজনা সংস্থা প্যারামাউন্ট শুরুতেই এটি নাকচ করে। কারণ তখন সময়মতো না আসা, শুটিংয়ে দুর্ব্যবহারসহ দুর্নামে জর্জরিত ছিল ব্র্যান্ডোর ইমেজ। প্যারামাউন্ট পিকচারসের মিটিংয়ে পরিচালক ফ্রান্সিস রীতিমতো গড়াগড়ি খেয়েছিলেন মারলন ব্র্যান্ডোকে নেওয়ার জন্য। তখন কঠিন তিনটি শর্ত জুড়ে দিয়ে ব্র্যান্ডোকে নেওয়ার ব্যাপারে অনুমতি দেয় তারা।

প্রথমত, কপোলা ও ব্র্যান্ডোর যা পারিশ্রমিক তার তুলনায় অনেক কম দেওয়া হবে।

দ্বিতীয়ত, ব্র্যান্ডো যত বড় অভিনেতাই হন না কেন, এই সিনেমায় অভিনয়ের জন্য তাঁকে স্ক্রিন টেস্ট দিতে হবে।

আর তৃতীয়ত, এক মিলিয়ন ডলারের একটি চুক্তি করতে হবে, যাতে ব্র্যান্ডোর কোনো কাজের জন্য বাজেটের বেশি টাকা খরচ না হয়।

সত্যিকার অর্থে, সেসময়ের জন্য মারলন ব্র্যান্ডোকে এই তিনটি শর্তে রাজি করানো ছিল প্রায় অসম্ভব। পরিচালক ফ্রান্সিস যখন মারলন ব্র্যান্ডোর কাছে যান চরিত্রটি নিয়ে এবং অনুরোধ করেন স্ক্রিনটেস্ট দেওয়ার, তখন কয়েক মুহুর্তের জন্য মারলন ব্র্যান্ডো যেন বনে যান গডফাদারের ভিটো কর্লিয়নি। পরিচালক একটি সাক্ষাৎকারে সেই পরিস্থিতি বর্ণনা করেছিলেন এভাবে, ‘তিনি প্রথম তাঁর বড় চুল খুলে শক্ত করে বাঁধলেন। চোয়ালটা সামনের দিকে নিয়ে গডফাদার সিনেমার প্রথম সংলাপটি বললেন। যেন কয়েক সেকেন্ড মাত্র! একটু আগের মারলন ব্র্যান্ডো মুহুর্তেই হয়ে গেলেন গডফাদার।’

‘গডফাদার’ সিনেমার দৃশ্য। স্ক্রিনটেস্টের জন্য ধারণ করা কয়েক মুহুর্তের চলমান চিত্র দেখে সন্তুষ্ট হয়ে যায় প্যারামাউন্ট পিকচার্স। তারা মারলন ব্র্যান্ডোকে সাদরে আহবান জানায় গডফাদার সিনেমায় অভিনয় করার জন্য।

‘গডফাদার’ সিনেমায় বিখ্যাত সব দৃশ্য ও সংলাপ আছে। সিনেমাটির রন্ধ্রে রন্ধ্রে রয়েছে সে সময়ের মাফিয়া ও গ্যাংস্টারদের কোলাহল। এ সবকিছুই দাঁড়িয়ে আছে সিনেমাটির সম্পাদনা ও চলচ্চিত্রের উচ্চ মানের ভাষার কারণে। ‘গডফাদার’ সিনেমায় কমলা ফলকে মৃত্যুর প্রতীক হিসেবে দেখানো হয়। যখন কোনো মৃত্যু, বিশেষ করে খুন হতে দেখা যায়, তখনই আশেপাশে কমলার আধিক্য দেখতে পাওয়া যায়। ভিটো কর্লিয়নি চরিত্রটিকে প্রথমবার যখন খুন করার জন্য আক্রমণ করা হয়, তখন তিনি একটি দোকানের সামনে দিয়ে যাচ্ছিলেন যেখানে কমলা বিক্রি হচ্ছিল।

কিংবা মাইকেল কর্লিয়নিকে একটি সভায় ডেকে হত্যা করার জন্য আক্রমণের সময় খাবার টেবিলের উপর হঠাৎ একটি কমলা গড়িয়ে পরতে দেখা যায়। এটিকে চলচ্চিত্রের ভাষায় বলা হয়— ফোরশেডয়িং।

সবচেয়ে দারুণ ছিল এই সিনেমার চিত্রগ্রহণ। পুরো সিনেমা জুড়ে একটি অন্ধকার জগতের আবহ তৈরি করা হয়েছিল। এমন গল্পও প্রচলিত আছে যে, সিনেমাটি শুরুর সময় আলো-আঁধারির একটি আবহ তৈরি করার জন্য প্রায় এক সপ্তাহ শুটিং পিছিয়েও দেওয়া হয়েছিল।

শুটিংয়ের মাঝামাঝি সময়ে প্রযোজক প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে পরিচালকের দ্বন্দ্ব তুঙ্গে উঠে গিয়েছিল। পরিচালক হিসেবে ফ্রান্সিসকে বরখাস্ত করার কথাও ভাবছিল প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান। কিন্তু বেঁকে বসেন মারলন ব্র্যান্ডো। সাফ জানিয়ে দেন, পরিচালককে বরখাস্ত করা হলে তিনিও কাজ করবেন না।

প্রচুর চাপ, উভয় দিকের দ্বন্দ্ব ও বিভিন্ন বড়সড় বাধাকে পেছনে ফেলে যখন সিনেমাটি মুক্তি পেল, তখন বিশ্বজুড়ে কী ঘটলো এই পঞ্চাশ বছরে তা নিশ্চয়ই দর্শক মাত্রই জানেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ওজন কমিয়ে শুটিংয়ে বাঁধন, মুক্তির অপেক্ষায় আরও দুই সিনেমা

বিনোদন প্রতিবেদক, ঢাকা
আজমেরী হক বাঁধন। ছবি: সংগৃহীত
আজমেরী হক বাঁধন। ছবি: সংগৃহীত

চরিত্রের সঙ্গে মানিয়ে নিতে চেষ্টার কোনো কমতি রাখেন না অভিনেত্রী আজমেরী হক বাঁধন। ‘রেহেনা মরিয়ম নূর’-এর রেহেনা, ‘গুটি’র সুলতানা কিংবা ‘এশা মার্ডার’ সিনেমার পুলিশ কর্মকর্তা লীনা চরিত্রেও দেখা গেছে পুরো প্রস্তুত হয়ে ক্যামেরার সামনে দাঁড়িয়েছেন অভিনেত্রী। এবার তানিম নূরের ‘বনলতা এক্সপ্রেস’ সিনেমায় সুরমা চরিত্রে অভিনয়ের জন্য ১৮ কেজি ওজন কমালেন বাঁধন। আজ থেকে শুরু হবে এই সিনেমার শুটিং। এ ছাড়া ইতিমধ্যে তিনি শেষ করেছেন রেজওয়ান শাহরিয়ার সুমিতের ‘মাস্টার’ ও রুবাইয়াত হোসেনের ‘দ্য ডিফিকাল্ট ব্রাইড’ সিনেমার শুটিং।

গত শুক্রবার বনলতা এক্সপ্রেস সিনেমার আনুষ্ঠানিক ঘোষণায় জানানো হয়, এতে অভিনয় করছেন বাঁধন। গতকাল সোশ্যাল মিডিয়ায় বাঁধন জানালেন, নতুন এই সিনেমার জন্য প্রস্তুত হতে তাঁকে কমাতে হয়েছে ১৮ কেজি ওজন। বাঁধন জানালেন, ওজন কমানোর এই পথ সহজ ছিল না তাঁর জন্য। ফেসবুকে বাঁধন লেখেন, ‘৭৮ কেজি থেকে ৬০ কেজি—এই যাত্রা সহজ ছিল না। মানসিক স্বাস্থ্য সংগ্রাম, অস্বাস্থ্যকর অভ্যাস ও জেনেটিক কারণে ওজন বেড়েই যাচ্ছিল। কিন্তু সঠিক চিকিৎসকের নির্দেশনা, ডিসিপ্লিন এবং আত্মবিশ্বাসের জোরে আমি মাত্র ৬ মাসে ১৮ কেজি ওজন কমাতে পেরেছি। এটি শুধু ওজন কমানো নয়—এটি নিরাময়, শক্তি এবং আত্মসম্মানেরও প্রতীক; এখনো এগিয়ে চলছি।’

বাঁধন জানান, এই যাত্রায় সবচেয়ে বড় শক্তি ছিল তাঁর মেয়ে। মেয়েই তাঁকে শরীরচর্চা করতে, জাঙ্ক ফুড থেকে দূরে থাকতে এবং প্রতিদিন নিজেকে বিশ্বাস করতে অনুপ্রাণিত করেছে। এর আগে বনলতা এক্সপ্রেস সিনেমার সংবাদ সম্মেলনে বাঁধন জানান, এই সিনেমায় যুক্ত হওয়ার অন্যতম প্রেরণা ছিল তাঁর মেয়ে। বাঁধন বলেন, ‘তানিম নূর যখন এই চরিত্রের কথা বলল, তখন আমার মেয়ে সবার আগে বলেছে, তুমি এটি করো। কারণ আমাকে নাকি সব সময় সিরিয়াস আর অবসাদগ্রস্ত চরিত্রে দেখা যায়। ও চায় উৎসব-এর মতো সিনেমায় আমি কাজ করি। তাই এই চিত্রনাট্য আমার কাছে এগিয়ে ছিল।’

কথাসাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদের ‘কিছুক্ষণ’ উপন্যাস অবলম্বনে নির্মিত হচ্ছে বনলতা এক্সপ্রেস। এতে বাঁধনের বিপরীতে আছেন চঞ্চল চৌধুরী। আরও দেখা যাবে মোশাররফ করিম, ইন্তেখাব দিনার, জাকিয়া বারী মম, শরিফুল রাজ, সাবিলা নূর ও শ্যামল মাওলাকে। আগামী বছর রোজার ঈদে মুক্তি পাবে এই সিনেমা।

আজমেরী হক বাঁধন। ছবি: সংগৃহীত
আজমেরী হক বাঁধন। ছবি: সংগৃহীত

এদিকে শুক্রবার রাতে সোশ্যাল মিডিয়ায় নির্মাতা রেজওয়ান শাহরিয়ার সুমিত জানালেন, সম্পূর্ণ কাজ শেষে মাস্টার সিনেমাটি এখন সবাইকে দেখানোর জন্য প্রস্তুত। গত বছর এপ্রিলে শেষ হয়েছিল সরকারি অনুদানে নির্মিত এই সিনেমার শুটিং। রাজনৈতিক থ্রিলার ঘরানার মাস্টারের শুটিং-পরবর্তী কাজ হয়েছে দক্ষিণ কোরিয়ায়। এই প্রক্রিয়ায় যুক্ত ছিলেন পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তের শিল্পীরা। একটি উপজেলার স্থানীয় রাজনীতি এই সিনেমার প্রেক্ষাপট। এতে বাঁধনকে দেখা যাবে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের (ইউএনও) চরিত্রে। আরও অভিনয় করেছেন নাসির উদ্দিন খান, জাকিয়া বারী মম প্রমুখ। নির্মাতা জানিয়েছেন, বিভিন্ন দেশের চলচ্চিত্র উৎসবে অংশ নেওয়ার পর দেশের প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পাবে মাস্টার।

আজমেরী হক বাঁধন। ছবি: সংগৃহীত
আজমেরী হক বাঁধন। ছবি: সংগৃহীত

এ বছরের মাঝামঝি সময়ে বাঁধন শেষ করেছেন দ্য ডিফিকাল্ট ব্রাইড সিনেমার কাজ। ১৩ ডিসেম্বর ফ্রান্সে শুরু হওয়া লেস আর্কস ফিল্ম ফেস্টিভ্যালের ওয়ার্ক-ইন-প্রোগ্রেস প্রোগ্রামে এই সিনেমার প্রকল্পটি প্রদর্শিত হবে। আগামী বছরের মার্চ নাগাদ শেষ হবে সম্পূর্ণ কাজ। রুবাইয়াত হোসেনের পরিচালনায় এতে বাঁধনের সহশিল্পী রিকিতা নন্দিনী শিমু, সুনেরাহ বিনতে কামাল, জাইনিন করিম চৌধুরী প্রমুখ।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

নতুন ওয়েব ফিল্মে বিদ্যা সিনহা মিম

বিনোদন প্রতিবেদক, ঢাকা
বিদ্যা সিনহা মিম। ছবি: সংগৃহীত
বিদ্যা সিনহা মিম। ছবি: সংগৃহীত

গত মাসেই বিদ্যা সিনহা মিম জানিয়েছিলেন, নতুন বছরটা হবে তাঁর প্রত্যাবর্তনের বছর। সেভাবেই এগোচ্ছেন তিনি। ইতিমধ্যে শেষ করেছেন সাইফ চন্দনের নাম চূড়ান্ত না হওয়া একটি সিনেমার শুটিং। এবার যুক্ত হলেন নতুন ওয়েব ফিল্মে। পরিচালনা করবেন কাজী আসাদ। প্রাথমিকভাবে সিনেমার নাম রাখা হয়েছে ‘লাইফ লাইন’। নতুন বছরে ওটিটি প্ল্যাটফর্ম চরকিতে মুক্তি পাবে এটি।

১৩ ডিসেম্বর আনুষ্ঠানিকভাবে এই ওয়েব ফিল্মের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হন মিম। মিম জানান, গল্পটা তাঁর ভালো লেগেছে। আরও জানান, গল্প ভালো না লাগায় এত দিন কাজ করা হয়নি তাঁর। মিম বলেন, ‘অনেকেই জানতে চান, কাজ কম করছি কেন? কারণ গল্পটাই মিলছিল না ঠিকভাবে। গল্প বা কাজের প্রস্তাব তো অনেক আসে, কিন্তু গল্প বা আনুষঙ্গিক বিষয়গুলো ভালো লাগছিল না। কাজী আসাদ যখন এই গল্পটা শোনালেন এবং আমি চরকিতে তাঁর আগের কাজ দেখলাম, আমার মনে হলো কাজটা করা দরকার।’

এই ওয়েব ফিল্মে একদম নতুনভাবে উপস্থাপন করা হবে মিমকে। কাজী আসাদ বলেন, ‘বিদ্যা সিনহা মিম আমাদের ইন্ডাস্ট্রির একজন পরীক্ষিত, মেধাবী এবং গ্ল্যামারাস অভিনেত্রী। সচরাচর তাঁকে গ্ল্যামার লুকেই দেখি। কিন্তু মজাটাই ওখানে যে তাঁকে কীভাবে ভেঙে নতুন ধরনের চরিত্রে দর্শকদের সামনে হাজির করা যায়। আমরা সেই চ্যালেঞ্জটা নিয়েছি। আশা করছি দর্শকেরা আমার কথা মিলিয়ে নিতে পারবেন।’

এখনই গল্প নিয়ে কোনো কথা বলতে চান না নির্মাতা। শুধু জানালেন, এটি নির্মিত হবে ইমোশনাল ড্রামা ঘরানায়। গল্প লিখেছেন মাহমুদুল হাসান টিপু ও কাজী আসাদ। নির্মাতার সঙ্গে চিত্রনাট্য করেছেন আসাদুজ্জামান আবীর। এ মাসের শেষ দিকে শুরু হবে শুটিং। এই সিনেমায় মিমের সহশিল্পীদের নাম শিগগির ঘোষণা করা হবে বলে জানিয়েছে চরকি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

বছরের শেষ সিনেমা ‘এখানে রাজনৈতিক আলাপ জরুরি’

বিনোদন প্রতিবেদক, ঢাকা
সিনেমার দৃশ্যে ইমতিয়াজ বর্ষণ
সিনেমার দৃশ্যে ইমতিয়াজ বর্ষণ

সাম্প্রতিক বছরগুলোতে সিনেমা মুক্তির হার কমেছে উল্লেখযোগ্যভাবে। এ বছর এখন পর্যন্ত মুক্তি পেয়েছে ৪৬টি সিনেমা। বছরের শেষ ভাগে সিনেমা মুক্তির সংখ্যা বাড়লেও ডিসেম্বরে এসে কমেছে। এ মাসে মুক্তি পেয়েছে একটি সিনেমা। গত শুক্রবার মুক্তির ঘোষণা এল আরও এক সিনেমার। ২৬ ডিসেম্বর মুক্তি পাবে আহমেদ হাসান সানি পরিচালিত ‘এখানে রাজনৈতিক আলাপ জরুরি’। এই সিনেমা দিয়ে শেষ হচ্ছে বছর।

এখানে রাজনৈতিক আলাপ জরুরি সিনেমার গল্পে ২০২৪ সালের গণ-অভ্যুত্থান, রাজনৈতিক পরিবর্তন এবং যুগ যুগ ধরে চলে আসা রাজনৈতিক অস্থিরতার নানা প্রসঙ্গ তুলে এনেছেন নির্মাতা। গত মাস থেকে সিনেমার প্রচার শুরু হয়েছে। গানের পর ট্রেলার প্রকাশের মধ্য দিয়ে ঘোষণা করা হলো সিনেমার মুক্তির তারিখ।

আহমেদ হাসান সানি একজন সংগীতশিল্পী। বিজ্ঞাপনচিত্র বানিয়ে নির্মাতা হিসেবেও পরিচিতি পেয়েছেন। ‘এখানে রাজনৈতিক আলাপ জরুরি’ তাঁর প্রথম পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র। সানি বলেন, ‘রাজনৈতিক আলাপের অভ্যাসটা জরুরি। মানুষ যত রাজনৈতিকভাবে সচেতন হবে, তত দেশকে নিয়ে ভাবতে শিখবে। আমরা সারা জীবন দেখে এসেছি হোটেলে, বাসে, রেস্টুরেন্টে বড় করে লেখা থাকে, এখানে রাজনৈতিক আলাপ নিষিদ্ধ। রাজনৈতিক আলাপ করাকে ট্যাবু হিসেবে দেখেছি আমরা। এই ট্যাবুকে ভাঙার লক্ষ্যে সিনেমাটি করা।’

সিনেমার কেন্দ্রীয় চরিত্রে অভিনয় করেছেন ইমতিয়াজ বর্ষণ। আরও আছেন আজাদ আবুল কালাম, তানভীর অপূর্ব, এ কে আজাদ সেতু, কেয়া আলমসহ অনেকে। প্রযোজনা করেছেন খালিদ মাহমুদ তূর্য।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

জুবিন গর্গের মৃত্যুর চার্জশিট দাখিল, চারজনের বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগ

বিনোদন ডেস্ক
জুবিন গর্গ। ছবি: সংগৃহীত
জুবিন গর্গ। ছবি: সংগৃহীত

সিঙ্গাপুরে স্কুবা ডাইভিং করতে গিয়ে গত ১৯ সেপ্টেম্বর মারা যান আসামের জনপ্রিয় সংগীতিশিল্পী জুবিন গর্গ। তাৎক্ষণিকভাবে মৃত্যুর কারণ হিসেবে দুর্ঘটনার কথা জানালেও অনেকেই ষড়যন্ত্রের আঁচ পেয়েছিলেন। কেউ কেউ দাবি করছিলেন পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে জুবিনকে। রহস্য উন্মোচনে একাধিক তদন্ত দল গঠনের নির্দেশ দেন আসামের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মা। গত শুক্রবার আসাম পুলিশের বিশেষ তদন্ত দল (এসআইটি) আড়াই হাজার পৃষ্ঠার চার্জশিট দাখিল করেছে, যেখানে চারজনের বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগ আনা হয়েছে।

দাখিল করা চার্জশিটে অভিযুক্তরা হলেন নর্থ ইস্ট ইন্ডিয়া ফেস্টিভ্যালের আয়োজক শ্যামকানু মোহন্ত, জুবিনের ম্যানেজার সিদ্ধার্থ শর্মা, ব্যান্ডের ড্রামার শেখর জ্যোতি গোস্বামী এবং গায়িকা অমৃতপ্রভা মোহন্ত। এ ছাড়া জুবিন গর্গের চাচাতো ভাই পুলিশ কর্মকর্তা সন্দীপন গর্গের বিরুদ্ধেও অনিচ্ছাকৃত হত্যার অভিযোগ আনা হয়েছে। তদন্তের শুরুতেই অভিযুক্তদের গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

জুবিন গর্গের মৃত্যু তদন্তের জন্য গত সেপ্টেম্বর মাসে এসআইটি (দ্য স্পেশাল ইনভেস্টিগেশন টিম) গঠন করে আসাম সরকার। ভারতীয় একাধিক সংবাদ মাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী, গত তিন মাসে প্রায় ৩০০ জনকে জেরা করেছেন তদন্তকারীরা। একটি টিম সিঙ্গাপুরে গিয়েও তথ্য-প্রমাণাদি সংগ্রহ করেছেন বলে জানা গেছে।

এদিকে চারজনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা হওয়ার পরই জুবিনের সমাধিস্থলে ফুল, মোমবাতি হাতে ভিড় জমিয়েছিলেন ভক্তরা। সেখানে উপস্থিত ছিলেন জুবিনের স্ত্রী গরিমা সাইকিয়া।

সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার সময় নিজেকে ধরে রাখতে পারেননি তিনি, ভেঙে পড়েন কান্নায়। এ সময় গরিমা বলেন, ‘আমি ভাবতেই পারছি না, জুবিনের মতো মানুষকেও কেউ নিজের স্বার্থে খুন করতে পারে! গোটা জীবন যে মানুষটা অন্যের জন্য বিলিয়ে দিল। নিজের সময়, অর্থ, মন—সবটাই তো চিরকাল বিলিয়ে গেছে সে। গত তিন মাস এসআইটি প্রচুর পরিশ্রম করেছে। যার ফলাফল মানুষের প্রত্যাশার সঙ্গে মিলে গেছে। এখন বাকি সব নির্ভর করছে বিচারব্যবস্থার ওপর। দোষী সাব্যস্তদের কঠোর শাস্তি পেতে হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত