Ajker Patrika

বিখ্যাত নয়, মানুষ হতে চান ফকির সাহেব

নবিউল ইসলাম
আপডেট : ০৭ নভেম্বর ২০২১, ০৪: ২৯
বিখ্যাত নয়, মানুষ হতে চান ফকির সাহেব

বাবা ছিলেন ভিক্ষু সাধু ও সংগীতপ্রেমী মানুষ। ২০০১ সালে পৃথিবী ছেড়ে যান তিনি। ওই সময় থেকে অনেক অভাব-অনটন থাকলেও বাবার অনেক ভক্ত আসতেন বাড়িতে। এ ছাড়া বিভিন্ন পাগল-সন্ন্যাসী আসতেন। তাঁদের সঙ্গে যেতেন ভারতের বিভিন্ন জায়গায়। সেখানে গানবাজনা হতো। পাসপোর্ট-ভিসা ছাড়াই তাঁরা ভারতে যেতেন। তখন তারকাঁটার বেড়া ছিল না। এভাবে ঘুরতে ঘুরতে গানের যে ব্যাপার, সাধুসঙ্গ—এ বিষয়গুলো টানত তাঁকে। এভাবে গানবাজনাকে ভালোবাসেন ওজকুরুনী ফকির সাহেব, যিনি ফকির সাহেব হিসেবেই বেশি পরিচিত।

বাড়ির পাশে মন্দিরে গান হতো। তখন গান শুনে ভালো লাগত তাঁর। টুকটাক গান শুনতেন, আসরে যেতেন। বড় বোন বুলবুলি গান করতেন। তিনি যেখানেই গান করতে যেতেন, সেখানে নিয়ে যেতেন ফকির সাহেবকে। বিভিন্ন অনুষ্ঠানে গিয়ে গানবাজনা শুনে হঠাৎ করে অনেক মানুষকে কাঁদতে দেখেন ফকির সাহেব। এটাকে দশা ধরা বলে। এই  যে মানুষ কাঁদছে, কী বুঝে কাঁদছে? এই চিন্তা আসে তাঁর মনে। মানুষের কান্নার কারণ খুঁজতেন ফকির সাহেব। আর এই বিষয় খুঁজতে খুঁজতে পান গানের ভেতরে পাওয়া মানুষের জীবন।

২০০৫ সাল থেকে মানুষের সামনে গান গাওয়া শুরু করেন ফকির সাহেব। ফকির সাহেব বলেন, ‘গানের ভেতর সৃষ্টিকর্তাকে পাওয়া যায়। আর পৃথিবীতে খুব কমসংখ্যক মানুষই আছে, যারা গান পছন্দ করেন না। জনসম্মুখে না শুনলেও নিরালায় শুনছে। পদাবলি কীর্তন, চৈতন্য মহাপ্রভুর রাশ মেলায় যে কীর্তন হইতো, সেগুলা শুনতাম, গুনগুন করতাম। সাধুসঙ্গেরে ভেতর বৈঠকি গানের আসরে যে গানগুলো চলত, সে গানগুলো ভালো লাগত। এ ছাড়া আব্বাস উদ্দিন, আব্দুল আলীম, লালনের গান, দেহতত্ত্ব, মুর্শিদি গানগুলো শুনতাম।’

তবে বিভিন্ন আসরে লালনের গান বেশি হতো। লালন ফকিরের গান। লালন ফকিরের গান খুব টানে ফকির সাহেবকে। তখন থেকে ফোক গান, ভাটিয়ালি, লালন, মুর্শিদি, দেহতত্ত্ব ও মাটির গানগুলোর প্রতি একটা ভালোবাসা সৃষ্টি হয় ফকির সাহেবের। ভালো লাগা আরও বেশি কাজ করে যখন তাঁর বোন বুলবুলি বেগম গান করতেন।

গান গাওয়ার ক্ষেত্রে ফকির সাহেবের বড় উৎসাহের জায়গা বড় বোন। বড় বোন বলতেন, ‘গান কেমন শোনাচ্ছে—এইটা বড় বিষয় নয়, গলা ছেড়ে গাইত হবে। তুমি গান গাইতেছ—এইটা দরকার। আমি গলা ছেড়ে গান গাইতে পারতেছি এইটা বড় ব্যাপার।’

নিয়ম করে কখনো গান শেখা হয়নি ফকির সাহেবের। গানের কোনো প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা নেই তাঁর। বাবা ভিক্ষু সাধুর গান গেয়ে ব্যাপক ভাইরাল হন তিনি। গানটি গেয়েছিলেন সোনাদিয়ায় সাগরের তীরে। হাতে একটি মোবাইল নিয়ে তাতে তাল দিয়ে গেয়েছিলেন গানটি। ‘ভাব আছ যার গায়, দেখলে তারে চেনা যায়।’

সাধুর সঙ্গে ফকির সাহেবফকির সাহেব বলেন, ‘আসলে কোনো জিনিসের তো পূর্ণতা বোঝা যায় না, বা জানারও তো শেষ নেই। এইখানে একটা অনুভূতির ব্যাপার আছে। যে জ্ঞান বই পড়লেই বোঝা যায়, কিন্তু অনুভূতি এমন একটা জিনিস যে, প্রত্যেকটি ব্যক্তির এইটা আলাদা আলাদাভাবে থাকে। অনুভূতি অনেক দামি জিনিস। জ্ঞানের চেয়ে অনুভূতি অনেক বড় জিনিস। এইটা আমি বুঝত পারলাম কখন? এই গানে আরেকটা লাইন আছে বলে সঙ্গে সঙ্গে গেয়ে ওঠেন—

‘ওরে আমার আমার ছাড়ো
দমের জিকির করো
তাইলে পাইতে পারো খোদারে
গুরুরূপে নয়ন দিয়াছে যেই জন 
তার মরণের ভয় কি আছে রে...’

‘গানে বলতেছে আমি যে ব্যক্তি ওয়াজকুরুনি ফকির সাহেব, এই যে আমি যে ব্যক্তি, এই ভাবনাটা ছেড়ে দেওয়া। কারণ, এগুলো তো আসলেই আমার না।’

বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলের আনাচে-কানাচে যারা গান লিখছেন, তাদের গান করতে চান ফকির সাহেব। তিনি বলেন, ‘আল্লাহতালা আমাকে একটি সম্পদ দান করেছেন। তা হচ্ছে আমার কণ্ঠ। আর আমি এই কণ্ঠ দিয়ে সেই সকল মানুষের বার্তা বা বাণী মানুষের কাছে পৌঁছাতে চাই।’ তিনি বলেন, ‘পরিচিত শিল্পীদের গান সবাই গায়, শোনে। কিন্তু বিভিন্ন অঞ্চলে যে মানুষগুলো লেখার মাধ্যমে যে বাণী বা বার্তা তাঁরা দেন, তা অনেকেই শুনতে পারেন না। আমি চাই এই সকল বার্তা আমার কণ্ঠের মাধ্যমে মানুষকে শোনাতে।’

কোন ধরনের গান তিনি পছন্দ করেন—এমন প্রশ্নের উত্তরে ফকির সাহেব বলেন, ‘গান তো গানই। লালন, ভাটিয়ালি, জারি, পল্লিগীতি, যাই হোক না কেন গানের ফর্মগুলা আমার কাছে ইমপর্টেন্ট না। আমার কাছে বড় বিষয় হচ্ছে কথাগুলা কী বলতেছে। আমাকে এই কথাগুলা বলতে হবে। আর এই কথাগুলা আমার হাজার মানুষকে বোঝানোর দরকার নাই, একজন মানুষও যদি বোঝে তাও হবে।’ 

মঞ্চে গান গাইছেন ফকির সাহেবগানের মাধ্যমে কী বোঝাতে চেয়েছেন বা কি বাণী দেন একজন শিল্পী? প্রেম তত্ত্বকে লালন করে গান করেন ফকির সাহেব। এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি গেয়ে ওঠেন—‘যেই প্রেমেতে আল্লাহ রসুল সাক্ষাৎ মিলেছে...’

যে প্রেমে জীবাত্মা পরমাত্মাকে নেওয়ার পর আল্লাহ এবং আল্লাহর রসুলক এক করে দিচ্ছে। এই এক প্রেম এবং এই প্রেমেই উজ্জীবিত হতে হবে। অর্থাৎ, সৃষ্টিকর্তার সঙ্গে মানবজনমের যে প্রেম, এই প্রেমকে লালন করেন ফকির সাহেব।

গানকে পেশা হিসেবে নেবেন কি না—এমন প্রশ্নের উত্তরে ফকির সাহেব বলেন, ‘গান আমার নেশা; কিন্তু পেশা না। আমার মা আমাকে বলেছেন, বাবা তুমি এইটা প্রচার করো; কিন্তু এইটার জন্য কারও কাছ থেকে এর বিনিময়ে কোনো অর্থ নিয়ো না। যেহেতু আমার সুইচ বাতি উনি, পৃথিবীতে আসার মাধ্যম উনি, সেহেতু আমাকে এইটা পালন করতে হবে এবং এইটা পালন করতে আমি সর্বদা প্রস্তুত। যতক্ষণ পর্যন্ত আমার দেহেরে ভেতরে এই নিশ্বাসটা আছে, ততক্ষণ পর্যন্ত তাঁর (মা) কথাটাই আমার কাছে মুখ্য।’ তিনি বলেন, ‘বিখ্যাত হতে চাই না, মানুষ হতে চাই।’

ক্যারিয়ারের কথা জানতে চাইলে তিনি বলেন, জীবন সবকিছু ফুরিয়ে যায়। কিন্তু যে জিনিস ফুরাবে না—সেটি হলো কর্ম। আর এই কর্ম আর গান—এই দুটোর সমন্বয় করবেন কীভাবে, এমন প্রশ্নের উত্তরে ফকির সাহেব বলেন, এ ধরনের ভাবনা এখনো তৈরি করিনি। তৈরি করিনি একটা কারণে আমার মা বলেছেন যে বাবা পৃথিবীতে চলতে এত টাকা পয়সার এত কিছুর দরকার হয় না। তবে হ্যাঁ অনেক স্টেজ প্রোগ্রামে মানুষ আমাকে জিজ্ঞেস কর আপনি গান গেয়ে টাকা নেন না, আপনি যদি অসুস্থ হয়ে যান? তখন কী হবে! আসলে কী বলব সুস্থতা, অসুস্থতা, রিজিক এগুলা তো সব আল্লাহর কাছে। উনি চাইলে আমাকে নিয়ে নিবেন। আমি তো প্রস্তুত মৃত্যুর জন্য। সব সময় প্রস্তুত। কিন্তু আমি কর্ম থেকে একবিন্দু্ও ছাড় পেতে চাই না। আসবে আসবে।

ফকির সাহেব বলেন, ‘আত্মশক্তিতে বলীয়ান ব্যক্তি কখনো দরিদ্র থাকতে পারে না। এইটা আমি খুব বিশ্বাস করি এবং বিশ্বাসরে জোরেই এখনো পর্যন্ত চলতেছি। খুব কম সময়ই আমি অর্থ সংকটে থাকি। এবং থাকলেও সেটা আমার হাসিতেই চলে যায়। একটা তিল যদি সত্তর জন ভাগ করে থাকতে পারে, তাহলে আমার হাসিতে অনেক দুঃখ চলে যেতে পারে। সবাই আমার শুধু হাসিটাই দেখে, কেউ দুঃখটা দেখে না। কারণ, আমি জানি আমার দুঃখের সমাধান কেউ করতে পারবে না।’ এই কথা বলে তিনি গেয়ে ওঠেন—

‘সারা জীবন ভালোবাসলাম যারে 
সে তো বুঝল না
বুঝল না আমারে
দুঃখ কইনা কইনা
রাইখাছি অন্তরে...’

মোশারফ করিমকে একজন সংগীতপ্রেমী মানুষ হিসেবে কীভাবে মূল্যায়ন করেন—এমন প্রশ্নের উত্তরে ফকির সাহেব বলেন, ‘আমার কাছে মনে হয় তিনি প্রকৃত অর্থে মানুষ। সঙ্গে সঙ্গে গেয়ে ওঠেন—

‘মানুষ কুলে জন্ম নিলে
মানুষ বলা যায় না
তারে চিনব কেমন করে
আমি জানব কেমন করে’

‘তিনি পপুলার তাঁর কর্ম দিয়ে। কিন্তু আমার কাছে ভালো লেগেছে একজন প্রকৃত মানুষ হিসেবে। তিনি অনেক গানও লিখেছেন। যেমন—

‘যা দেখি তার সবই ভালো
ভালো ভালো লাগে না
ভালো কেন একা ভালো 
কিছুই ভালো লাগে না’

একসঙ্গে ফকির সাহেব ও ইমন চৌধুরী‘এই মানুষটা যতটুকু লেখেন ততটুকু দিয়ে মানুষের ভেতরে ঢুকে যেতে পারেন। এই ভেতরে ঢুকে যাওয়ার ব্যাপারটা, প্রতিটা লাইনে লাইনে মানুষকে গানের ভেতর ঢোকানোর ব্যাপারটা গানের ক্ষেত্রে তার এই ব্যাপারটা আমার ভালো লাগে। এই জায়গাটার জন্য সংগীতের ক্ষেত্রে তাঁকে আমার গুরুত্বপূর্ণ পারসন মনে হইছে।’

কাঠবিড়ালি সিনেমার গানের জন্য একবার ফকির সাহেবকে যেতে হয় বাংলাদেশের জনপ্রিয় মিউজিশিয়ান ইমন চৌধুরীর কাছে। জানান, তাঁর সঙ্গে কাটানো কিছু মুহূর্তের কথা। ফকির সাহেব বলেন, ‘তাঁর কাছে গিয়ে আমার পা কাঁপছিল। কারণ, আমি স্টুডিওতে গান করি নাই। প্রথম হিসেবে আমার অনেক ভয় লাগছিল। কিন্তু তিনি এত আন্তরিক যে আমাকে ইজি করার জন্য অনেক আন্তরিকতা দেখিয়েছেন। উনি সচরাচর একটা গানে এতবার টেক নেন না, যতবার আমার বেলায় নিয়েছিলেন। উনি এত আন্তরিক যে, আমাকে নিজের হাতে চা বানিয়ে খাওয়াইছেন। চা খাওয়ার পর আমি আবারও কয়েকবার টেক দিলাম গানের জন্য।’

ভক্তদের অনুরোধে তিনি ‘ফকির সাহেব’ নামের একটি ফেসবুক পেজ খুলেছেন। তিনি বলেন, ‘যেহেতু আমি গান গেয়ে টাকা নেই না, সেহেতু গান গেয়ে মাঝেমধ্যে অর্থ পেলে, তা মানবিক কাজে ব্যয় করা হয়।’ 

ফকির সাহেবের বাড়ি লালমনিরহাট জেলায় হাতীবান্ধা উপজেলার গোতামারি ইউনিয়ন গাওচুলকা গ্রামে। দুই বোন আছে তাঁর। এখন বাড়িতে বড় বোন বুলবুলি, ভাগনে-ভাগনি আর মা থাকেন। অনেক কষ্টে তাঁর মা তাঁকে বড় করেছেন। মা তাঁকে ফকির বলে ডাকতেন। তাঁর মুখের হাসি ও কর্মকাণ্ড যখন সাহেবেদের মতো দেখলেন, তখন মা তাঁর নামের সঙ্গে সাহেব যোগ করেন। এলাকার মানুষ তাঁকে অনেক সম্মান করেন। এভাবে তিনি হয়ে ওঠেন ফকির সাহেব।

স্কুল ছিল নিজের গ্রামে পুরোনো কাচারি গাওচুলকা রেজিস্টার্ড প্রাথমিক বিদ্যালয়। হাইস্কুল ছিল হাতীবান্ধা উপজেলা শহরে। হাতীবান্ধা এস এস হাইস্কুল এণ্ড টেকনিক্যাল কলেজ (বর্তমানে মডেল কলেজ)। কলেজ ছিল হাতীবান্ধার আলীমুদ্দিন ডিগ্রি কলেজ। স্কুল ও কলেজজীবনে মানুষের বাসায় থেকেছেন তিনি। হাতীবান্ধায় এসএসসিতে পড়ার সময় কারিমুর নামে একজনের বাসায় থেকে লেখাপড়া করেছেন তিনি। আর কলেজ থাকাকালে আশরাফ ভান্ডারি নামের একজন ওস্তাদের কাছ থেকেছেন। অন্ধ্র প্রদেশের একজন ওস্তাদের কাছ থেকে তিনি দীক্ষা নিয়েছেন। তাঁর কাছ থেকে মূলত দেহতত্ত্বের ব্যাপারে দীক্ষা নিয়েছেন তিনি, যেটাকে ব্রাক্ষ্মচর্য বলে। 

এর পর ভর্তি হন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের নাটক ও নাট্যতত্ত্ব বিভাগে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪৩তম ব্যাচের শিক্ষার্থী তিনি। এখানে ভর্তি হওয়ার জন্য উৎসাহ, নির্দেশনা ও সার্বিক সহযোগিতা করেছেন আশরাফুজ্জামান দীদার নামে তাঁর এক বন্ধু। গ্র্যাজুয়েশন শেষ হলে কী করবেন—এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ‘কর্ম করবেন। এবং সঙ্গে সঙ্গে গেয়ে ওঠেন—

‘কর্ম তোমার আর কি কিছু নয়
আঁকা আঁকি মোছামুছি বেখেয়ালী 
তাজ্জব হয়েছি,’
এখন আমার কর্ম ভালো থাকলে মানুষ তাজ্জব হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

চলে গেলেন ‘নারী স্বাধীনতার প্রতীক’ ব্রিজিত বার্দো

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ২৮ ডিসেম্বর ২০২৫, ২১: ০০
১৯৬৩ সালে ব্রিজিত বার্দো। ছবি: সংগৃহীত
১৯৬৩ সালে ব্রিজিত বার্দো। ছবি: সংগৃহীত

ফরাসি সিনেমার কিংবদন্তি অভিনেত্রী ও প্রাণী অধিকারকর্মী ব্রিজিত বার্দো আর নেই। রোববার (২৮ ডিসেম্বর) তাঁর প্রতিষ্ঠানের দেওয়া এক বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, ৯১ বছর বয়সে তিনি মারা গেছেন। সিনেমায় সাহসী ও স্বাধীন নারীর প্রতীক হিসেবে ষাটের দশকে যৌন বিপ্লবের ভাষা নির্মাণে ভূমিকা রেখেছিলেন বার্দো। জীবনের দ্বিতীয় অধ্যায়ে সেই মানুষটিই নিজেকে পুরোপুরি উৎসর্গ করেছিলেন প্রাণীর অধিকার রক্ষার আন্দোলনে।

বার্দোর মৃত্যুতে তাঁর প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে বলা হয়, একজন অসাধারণ নারীর স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা, যিনি সবকিছু দিয়েছিলেন এবং প্রাণীদের প্রতি আরও সম্মানজনক একটি পৃথিবীর জন্য সবকিছু ত্যাগ করেছিলেন। তাঁর আদর্শ ও সংগ্রাম ফাউন্ডেশনের কাজের মধ্য দিয়ে বেঁচে থাকবে।

সিএনএন জানিয়েছে, ফ্রান্সে ‘বিবি’ নামে পরিচিত ছিলেন ব্রিজিত। ১৯৫০ ও ৬০–এর দশকে তাঁর খোলামেলা, সংযমহীন অভিনয় একদিকে দর্শককে মোহিত করে, অন্যদিকে রক্ষণশীলতার ধারক-বাহকদের কাঁপিয়ে দেয়। হলিউডে যখন যৌনতা নিয়ে কঠোর সেন্সরশিপ চলছিল, তখন বার্দো বিদেশি চলচ্চিত্রের মাধ্যমে মার্কিন দর্শকদের কাছে নতুন এক স্বাধীনতার ছবি হাজির করেন। ১৯৬১ সালে লাইফ ম্যাগাজিন লিখেছিল, ‘মেয়েরা যখন হাঁটে, তারা বার্দোর মতো হাঁটে, পোশাক পরে, চুল বাঁধে এবং তাঁর মতো মুক্ত আত্মা হতে চায়।’

ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাখোঁ বার্দোকে শ্রদ্ধা জানিয়ে বলেছেন, তিনি স্বাধীন জীবনের প্রতীক। এক্সে দেওয়া পোস্টে মাখোঁ লেখেন, ‘তাঁর সিনেমা, কণ্ঠ, দীপ্তি, দুঃখ, প্রাণীদের প্রতি উদার ভালোবাসা—সব মিলিয়ে বার্দো এক মুক্ত জীবনের প্রতিচ্ছবি।’

বার্দো ছিলেন আধুনিক সেলিব্রিটির প্রথম দিককার এক উদাহরণ। প্রাক-নারীবাদী যুগেই তিনি নিজের শর্তে প্রেম করেছেন, সম্পর্ক গড়েছেন, ভোগবাদী জীবনযাপন নিয়ে কখনো অনুতপ্ত হননি। ফরাসি দার্শনিক সিমোন দ্য বোভোয়ার ১৯৫৯ সালে লিখেছিলেন, প্রেমের খেলায় বার্দো যেমন শিকার, তেমনি শিকারি—আর সেটাই পুরুষ অহংকারে আঘাত হানে।

নিজের অভিনয় দক্ষতা নিয়ে বার্দো কখনো বড়াই করেননি। তবু ‘...অ্যান্ড গড ক্রিয়েটেড উইম্যান’, ‘কঁতঁপ্ত’, ‘ভিভা মারিয়া!’সহ ৪০টির বেশি চলচ্চিত্রে প্রায় দুই দশক ধরে তাঁর ক্যারিশমা অপ্রতিরোধ্য ছিল। একই সঙ্গে তিনি ছিলেন জনপ্রিয় গায়িকাও। ফ্যাশনে তাঁর প্রভাব ছিল দীর্ঘস্থায়ী—স্বর্ণকেশী এলোমেলো চুল, সহজ পোশাক ও স্বাভাবিক উপস্থিতি বহু অভিনেত্রী ও মডেলের অনুকরণীয় হয়ে ওঠে।

১৯৭৩ সালে, মাত্র ৩৯ বছর বয়সে সিনেমা থেকে অবসর নিয়ে জীবনকে অন্যদিকে নিয়ে যান বার্দো। প্রাণী নির্যাতনের বিরুদ্ধে তিনি হয়ে ওঠেন কণ্ঠস্বর। ১৯৮৭ সালে তিনি বলেন, ‘যৌবন ও সৌন্দর্য দিয়েছি পুরুষদের, এখন আমার প্রজ্ঞা ও অভিজ্ঞতা দেব প্রাণীদের জন্য।’ তবে তাঁর জীবন বিতর্কমুক্ত ছিল না—অভিবাসন ও ধর্মীয় আচার নিয়ে মন্তব্যের কারণে তিনি সমালোচিত ও দণ্ডিত হয়েছেন।

স্বাভাবিকভাবে বার্ধক্যকে গ্রহণ করাও ছিল তাঁর আরেকটি বিদ্রোহ। প্লাস্টিক সার্জারি এড়িয়ে সাদা চুল ও মুখের ভাঁজ নিয়েই তিনি প্রকাশ্যে থেকেছেন।

ব্রিজিত বার্দোর জন্ম ১৯৩৪ সালের ২৮ সেপ্টেম্বর, প্যারিসে। একসময় ব্যালে নৃত্যশিল্পী হওয়ার স্বপ্ন দেখা মেয়েটি শেষপর্যন্ত হয়ে ওঠেন শতাব্দীর এক প্রতীক—যিনি স্বাধীনতা, বিতর্ক ও করুণ বাস্তবতার মাঝেই নিজের মতো করে বেঁচে ছিলেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

তুমুল হট্টগোলে ফরিদপুরে পণ্ড হলো কনসার্ট, আয়োজকদের দুষলেন জেমস

বিনোদন প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ২৮ ডিসেম্বর ২০২৫, ১০: ২৫
জেমস। ছবি: সংগৃহীত
জেমস। ছবি: সংগৃহীত

গত শুক্রবার ফরিদপুর জিলা স্কুলের ১৮৫ বছর পূর্তি ও পুনর্মিলনীর সমাপনী দিনের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে পারফর্ম করার কথা ছিল ব্যান্ড তারকা নগরবাউল জেমসের। গান শোনাতে যথাসময়ে ফরিদপুর গিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু জেমস মঞ্চে ওঠার আগেই তৈরি হয় বিশৃঙ্খলা। বহিরাগত ব্যক্তিদের হামলা ও ইটবৃষ্টির মুখে কনসার্টটি বাতিল ঘোষণা করেন আয়োজকেরা। শেষ পর্যন্ত গান না গেয়েই ফরিদপুর ছাড়েন জেমস। কনসার্ট বাতিল হওয়ার ঘটনাকে আয়োজকদের ব্যর্থতা দাবি করে জেমস বলেছেন, ‘এটি সম্পূর্ণ আয়োজকদের অব্যবস্থাপনা ও ব্যর্থতা।’

জেমসের ম্যানেজার ও মুখপাত্র রুবাইয়াৎ ঠাকুর রবিন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আয়োজকেরা ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছেন। অনুষ্ঠানস্থলের ভেতর থেকে অনেক বেশি মানুষ ছিল বাইরে। এভাবে তো অনুষ্ঠান করা সম্ভব নয়। আমরা সন্ধ্যার সময়ই ফরিদপুর পৌঁছাই। অনুষ্ঠান শুরুর পর জানতে পারি বিশৃঙ্খলা তৈরি হয়েছে। রাত ১০টার দিকে আমাদের জানানো হয়, বাতিল করা হয়েছে অনুষ্ঠান। এরপর ঢাকায় চলে আসেন জেমস।’

জানা যায়, স্কুলের পুনর্মিলনী উপলক্ষে গত বৃহস্পতিবার থেকেই সাজ সাজ রব ছিল ফরিদপুর শহরে। শুক্রবার সন্ধ্যায় সাংস্কৃতিক পর্বের সময় জিলা স্কুলের মূল ফটকের বাইরে অবস্থান নেওয়া কয়েক হাজার মানুষ ভেতরে প্রবেশের জন্য প্রবল চাপ সৃষ্টি করে। একদল যুবক সীমানাপ্রাচীর টপকে ভেতরে ঢোকার চেষ্টা করলে স্বেচ্ছাসেবকেরা বাধা দেন। এর পরপরই মুজিব সড়ক ও স্কুলের চারপাশ থেকে বৃষ্টির মতো ইটপাটকেল নিক্ষেপ শুরু হয়। এতে শিক্ষার্থী ও আয়োজকসহ অন্তত ৩০ জন আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে।

সোশ্যাল মিডিয়ায় খবর ছড়িয়ে পড়ে, বিশৃঙ্খলার কবলে পড়েছেন জেমস। মৃত্যুর মুখ থেকে ফিরলেন—এমন কথাও ছড়িয়ে পড়ে। তবে রুবাইয়াৎ ঠাকুর রবিন বলেন, ‘এমন কথা সত্যি নয়। সন্ধ্যায় ফরিদপুর পৌঁছালেও অনুষ্ঠানস্থলে যাননি জেমস। ছিলেন একটি গেস্ট হাউসে। সেখানেই তিনি খবর পান বিশৃঙ্খলার। পরে শো বাতিল করলে আমরা ভেন্যুতে না গিয়ে ঢাকায় ফিরে আসি।’

ফরিদপুর কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ শহিদুল ইসলাম বলেন, ‘স্কুলের ভেতরের ধারণক্ষমতার চেয়ে বাইরে অন্তত ১০ গুণ মানুষ জমায়েত হয়েছিল। জিলা স্কুল প্রাঙ্গণে এত বিশাল জনসমুদ্র সামলানো অসম্ভব ছিল। বহিরাগতদের বাধা দিতে গেলে বিশৃঙ্খলা তৈরি হয়।’

পুনর্মিলনী উদ্‌যাপন পরিষদের আহ্বায়ক ডা. মোস্তাফিজুর রহমান শামীম বলেন, ‘নিরাপত্তার খাতিরেই আমরা অনুষ্ঠানটি স্থগিত করেছি। আমাদের অনেক ছোট ছোট শিক্ষার্থী ও প্রবীণ সদস্য আহত হয়েছেন। এটি অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

আবার শুরু হচ্ছে ‘প্রীতিলতা’ সিনেমার শুটিং

বিনোদন প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ২৮ ডিসেম্বর ২০২৫, ১০: ৪৬
পরীমণি। ছবি: সংগৃহীত
পরীমণি। ছবি: সংগৃহীত

ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনের বীরকন্যা প্রীতিলতা ওয়াদ্দেদারকে নিয়ে দুটি সিনেমার শুটিং শুরু হয়েছিল ২০২০ সালে। প্রদীপ ঘোষের ‘বীরকন্যা প্রীতিলতা’ সিনেমায় প্রীতিলতা হয়েছেন নুসরাত ইমরোজ তিশা। অন্যদিকে রাশিদ পলাশের সিনেমায় প্রীতিলতা হয়েছেন পরীমণি। প্রদীপ ঘোষের সিনেমাটি ২০২৩ সালে আলোর মুখ দেখলেও আটকে আছে রাশিদ পলাশের ‘প্রীতিলতা’। নির্মাতা জানালেন নতুন বছরে আবার শুরু হচ্ছে সিনেমার শুটিং।

গতকাল সোশ্যাল মিডিয়ায় পরীমণির সঙ্গে একটি ছবি শেয়ার করে রাশিদ পলাশ লেখেন, ‘এবার প্রীতিলতাও শেষ হবে ইনশা আল্লাহ ২০২৬’। মন্তব্যের ঘরে পরীমণি লেখেন, ‘আমিও প্রস্তুত আছি’। স্পষ্টতই বোঝা গেল, জটিলতা কাটিয়ে নতুন বছরে আবার প্রীতিলতা হয়ে ক্যামেরার সামনে দাঁড়াচ্ছেন পরীমণি।

প্রীতিলতা সিনেমা নিয়ে জানতে যোগাযোগ করলে রাশিদ পলাশ বলেন, ‘অনেক দিন ধরেই প্রীতিলতার বাকি অংশের কাজ শেষ করার পরিকল্পনা করছি। সবকিছু ঠিক থাকলে আগামী বছরের এপ্রিলে শুটিংয়ে যাব।’

২০২১ সালে প্রকাশ করা হয়েছিল প্রীতিলতার ফার্স্ট লুক। প্রীতিলতা বেশে চমকে দিয়েছিলেন পরী। সিনেমাটি নিয়ে তৈরি হয়েছিল আগ্রহ। কিন্তু পরীমণির মাতৃত্বকালীন বিরতিসহ নানা কারণে সে সময় শুটিং শেষ করা সম্ভব হয়নি। মাঝে কয়েকবার এই সিনেমার শুটিং শুরুর কথা শোনা গেলেও তা হয়নি। নতুন বছরে সেই অসম্পূর্ণ কাজ শেষ করতে চান পরিচালক রাশিদ পলাশ। তিনি জানিয়েছেন, আগামী বছরের এপ্রিলে শুটিং শেষ করতে চান প্রীতিলতার। এরপরেই শুরু করবেন সম্পাদনাসহ পোস্ট প্রোডাকশনের কাজ। সিনেমার চিত্রনাট্য ও সংলাপ লিখেছেন গোলাম রাব্বানী।

রাশিদ পলাশ বলেন, ‘২০২০ সালের শেষ দিকে আমরা শুটিং শুরু করেছিলাম। তখন প্রায় ৩০ শতাংশ শুটিং হয়েছিল। সব মিলিয়ে ঢাকা অংশের কাজ শেষ করা আছে। এখন আমরা শুটিং করব চট্টগ্রাম অংশের। আশা করছি রোজার ঈদের পর এপ্রিল মাসে আবার ক্যামেরা ওপেন করতে পারব।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ফিরে দেখা /বলিউডের হতাশার বছরে আলো দেখালেন রণবীর

বিনোদন ডেস্ক
আপডেট : ২৮ ডিসেম্বর ২০২৫, ১০: ৪৫
‘ধুরন্ধর’ সিনেমায় রণবীর সিং
‘ধুরন্ধর’ সিনেমায় রণবীর সিং

তারকারাই বলিউডের প্রাণ। যত বড় তারকা, তাঁর সিনেমা ঘিরে প্রত্যাশাও তত বিশাল। তবে সিনেমায় সুপারস্টারের উপস্থিতি কিংবা নজরকাড়া প্রমোশন এখন আর সাফল্যের নিশ্চয়তা দিতে পারে না। দর্শকেরা এখন তারকা নয়, সিনেমায় খোঁজে ভালো গল্প। এর প্রমাণ এ বছর আবারও পেয়েছে বলিউড।

হৃতিক রোশন-এনটিআর জুনিয়র-কিয়ারা আদভানি অভিনীত ‘ওয়ার ২’ প্রত্যাশিত সাফল্য পায়নি। ব্যর্থ হয়েছে সালমান খানের ‘সিকান্দার’, বরুণ ধাওয়ান-জাহ্নবী কাপুরের ‘সানি সংস্কারি কি তুলসী কুমারী’, শহিদ কাপুরের ‘দেবা’, কাজলের ‘মা’, অর্জুন কাপুরের ‘মেরে হাজবেন্ড কি বিবি’সহ একাধিক বড় তারকার সিনেমা। হিট সিনেমার সিকুয়েলও এবার খুব বেশি সুবিধা করে উঠতে পারেনি। ওয়ার ২ তো আছেই, ফ্লপের তালিকায় যুক্ত হয়েছে অজয়ের ‘দে দে পেয়ার দে ২’, ‘সন অব সরদার ২’, টাইগার শ্রফের ‘বাঘি ৪’, সিদ্ধান্ত চতুর্বেদী-তৃপ্তি দিমরির ‘ধাড়াক ২’সহ একগুচ্ছ সিকুয়েল।

আগে থেকেই দক্ষিণের চাপে ছিল বলিউড। এ বছর সে চাপ আরও বেড়েছে। ইদানীং দক্ষিণি সিনেমাগুলো প্যান-ইন্ডিয়া নাম দিয়ে হিন্দি ভাষাতেও মুক্তি পায়। ফলে দক্ষিণি সিনেমার সাফল্য অনেকটাই ম্লান করে দিয়েছে বলিউডের বক্স অফিস। বলিউডের হতাশার এই বছরে ফেব্রুয়ারিতে প্রথম বড় সাফল্য এনে দেয় ভিকি কৌশলের ‘ছাভা’। দেড় শ কোটিতে নির্মিত সিনেমাটি ৮০০ কোটি রুপির বেশি ব্যবসা করে। তবে ইতিহাস বিকৃতির অভিযোগও ওঠে সিনেমাটির বিরুদ্ধে।

‘লাল সিং চাড্ডা’র ব্যর্থতার পর ‘সিতারে জমিন পার’ দিয়ে বক্স অফিসে আমির খানের রাজত্ব ফেরাটাও বলিউডের এ বছরের উল্লেখযোগ্য ঘটনা। প্রেক্ষাগৃহে ২৬৬ কোটির বেশি ব্যবসা করা সিনেমাটি পরবর্তী সময়ে ওটিটিতে না দিয়ে আমির সরাসরি মুক্তি দেন ইউটিউবে। সেখানেও বড় সাফল্য পেয়েছেন। এ পদক্ষেপ নেওয়ার মাধ্যমে সিনেমা মুক্তির নতুন দিশা দেখিয়েছেন তিনি।

বছরের মাঝামাঝি সময়ে এক নতুন জুটি দিয়ে তাক লাগিয়ে দেন নির্মাতা মোহিত সুরি। আহান পান্ডে ও অনিত পাড্ডাকে নিয়ে তিনি তৈরি করেন ‘সাইয়ারা’। এই গতানুগতিক প্রেমের আখ্যান দর্শক ভালোভাবেই গ্রহণ করেছে। আয় করেছে ৫৭৯ কোটি রুপি। এ সিনেমার সাফল্যের মাধ্যমে বলিউড পেয়েছে দুই নতুন মুখ, যাঁরা হয়ে উঠতে পারেন আগামীর তারকা। অ্যাকশন গল্পের আধিক্যের ভিড়ে কিছুটা স্বস্তি দিয়েছে ‘জলি এলএলবি ৩’ কিংবা ‘হাউসফুল ৫’-এর মতো কমেডি গল্প। এ দুই সিনেমা দিয়ে এবার বক্স অফিসে কিছুটা হলেও সাফল্য ফিরে পেয়েছেন অক্ষয় কুমার।

তবে বছরের সবচেয়ে বড় দানটা মেরেছেন রণবীর সিং। বছরজুড়ে তাঁর মুক্তির তালিকা ছিল শূন্য। ছিলেন আলোচনার বাইরে। ৫ ডিসেম্বর আসে তাঁর স্পাই অ্যাকশন থ্রিলার ‘ধুরন্ধর’। মুক্তির ২২ দিনের মাথায় হাজার কোটির মাইলফলকে পৌঁছেছে সিনেমাটি। এটিই বলিউডে এ বছরের সবচেয়ে বড় সাফল্য। এই সিনেমা দিয়ে নতুন করে আলোচনায় ফিরেছেন অক্ষয় খান্না।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত