Ajker Patrika

‘কোনো প্রতিভাকে রেটিং দিয়ে মাপা যায় না’

খায়রুল বাসার নির্ঝর, ঢাকা
আপডেট : ২৪ আগস্ট ২০২১, ১৭: ৪৮
‘কোনো প্রতিভাকে রেটিং দিয়ে মাপা যায় না’

‘নেটওয়ার্কের বাইরে’ ওয়েব ফিল্মে কাজ শুরুর আগের অধ্যায়টি কেমন ছিল?

ফোন করে আমাকে জানানো হয়, এমন একটা গল্প তাঁরা ভাবছেন। গল্পটা চার বন্ধুকে নিয়ে। প্রথমে আমি কনভিন্সড ছিলাম না গল্পটা নিয়ে। কারন গল্পে আমার উপস্থিতি কতটুকু, গুরুত্ব কতটুকু—এগুলো নিয়ে চিন্তা ছিল। পরে আমাদের সবাইকে কল করা হয় স্ক্রিপ্ট রিডিংয়ের দিন। সমস্ত কাস্টিং, ক্রুদের নিয়ে রিডিংটা হয়। ওইদিন স্ক্রিপ্টটা পড়া হয় ডিটেইলে। পুরো গল্পটা পড়ে কাজ করতে রাজি হই।

এ ওয়েব ফিল্মের যিনি নির্মাতা, মিজানুর রহমান আরিয়ান, তাঁর কাজে সাধারণত এমন অভিনয়শিল্পীদেরকে দেখা যায়, ইউটিউবে যাদের অনেক ভিউ। এক্ষেত্রে তো আপনি ব্যতিক্রম। বছরজুড়ে খানিকটা আলাদা ধরনের কাজেই আপনাকে পাওয়া যায়। শুধু গল্পটা শুনে ‘নেটওয়ার্কের বাইরে’ ওয়েব ফিল্মে কাজ করতে রাজি হলেন? নাকি নিজের কাজের ধরণ বদলের চেষ্টা?

আরিয়ানের কাজে অনেক ভিউ হয়, এবং তাঁর আলাদা দর্শক আছে। এদের সঙ্গে যেহেতু আমি নিয়মিত কাজ করি না, সেহেতু এ রকম একটা কাজ করার মানে হচ্ছে নিশ্চয়ই আমি আলাদা কিছু করছি। পুণরাবৃত্তি হয়নি আমার কাজে। তো আপনার প্রশ্নের মধ্যেই কিন্তু উত্তর লুকিয়ে আছে, যে আপনি কখনো এরকম কাজ করেন না। আপনার প্লট ডিফরেন্ট। ওটিটিতে আপনি অন্যমাত্রার কাজ করেন।

যেহেতু আমি অন্য কাজ করি, এবং প্রত্যেকটা কাজ থেকে প্রত্যেকটা কাজ আলাদা করার চেষ্টা করি। তার মানে এটাও একটা আলাদা প্যাটার্ন। আমি কিন্তু কখনো বলিনি, এর কাজ করবো, তার কাজ করবো না। বা এ ধরনের গল্প করব, অন্য ধরনের গল্প করব না।

নাজিয়া হক অর্ষাইউজুয়ালি গল্পগুলো কী হয়, ধরেন তথাকথিত তো গল্প একই। ঘুরেফিরে তো একই ধরনের গল্পেই আমাদের কাজ করতে হয়। কিন্তু ডিপেন্ড করে যে প্রেজেন্টেশনটা কেমন। ঠিক আছে? অথবা ধরেন কীভাবে গল্পটা বলা হচ্ছে? বা কী বলতে চাইছে? কাদের জন্য বলছে? সো এই জিনিসগুলো অনেক বড় ফ্যাক্ট।

যদি এই ফ্যাক্টগুলোকে মাথায় রাখতে হয়, তাহলে আমি চেষ্টা করি যে পুরনো ফ্যাক্টের সঙ্গে নতুন ফ্যাক্টগুলো যাতে না মেলে। কিছুটা আলাদা থাকে। যার কারণে হয়তো মনে হবে না, একই জিনিস বারবার করছি। যেটা আমার জন্য অনেক মনোটোনাস।

অডিয়েন্সের কথাও না। আমার ডিরেক্টর টিমের কথাও না। আমি নিজেই একই জিনিসের পুণরাবৃত্তি পছন্দ করি না। ওই জায়গা থেকেই ধরেন, আমি কাজের ইনডিভিজুয়ালিটি মেইনটেইন করার চেষ্টা করি। আরেকটা তথ্য হয়তো আপনি জানেন না। এ নির্মাতার সঙ্গে এটাই আমার প্রথম কাজ নয়।

এর আগেও আপনি আরিয়ানের নাটকে অভিনয় করেছেন। কিন্তু সেটা তো বেশ আগে। শুরুর দিকে।

আরিয়ানের জীবনের প্রথম প্রডাকশন আমাকে নিয়ে করা। ‘আমি তুমি এবং সে’। তো আফটার নাইন ইয়ারস, ওর জীবনের প্রথম সিনেমাটাও আমাকে নিয়ে করা। আরিয়ানের সাথে আমার বন্ডিং অনেক ডিফরেন্ট। মানে যখন আরিয়ান আসলে আরিয়ান না, তখন থেকে আরিয়ানকে আমি চিনি এবং তাঁর কাজ সম্পর্কে আমি অবগত।

এ সিনেমা করতে আসার সময় আরিয়ান আর আমার একটা অদ্ভুত ইমোশনাল ব্যাপার ছিল। বলছিল, ‘আপু তোমাকে দিয়েই ইন্ডাস্ট্রিতে আমি প্রথম কাজ করেছি।’ ওই গল্পে বোধহয় কাস্টিং ছিল আমি, ঈশানা, আরিফিন শুভ। শুভর ওটা শেষের দিকের কাজ সিনেমাতে ঢোকার আগে।

তারপর বললো যে, ‘আজকে নয় বছর পরে তোমার সাথে আবার আমার প্রথম সিনেমাতে কাজ হচ্ছে। সো আমি এক্সাইটেড এবং ইমোশনাল।’ আসলে বাইরে থেকে যা দেখতে, পেছনের গল্প অনেক আলাদা থাকে। আপনারা যেটা প্রেডিক্ট করেন, আমাদের রিলেশনের ব্যাপারটা বা আমাদের কাজের কেমিস্ট্রিটা তার উর্দ্ধে।

নাজিয়া হক অর্ষা‘নেটওয়ার্কের বাইরে’ তো বন্ধুদের নিয়ে গল্প। আমি যদি আপনার ব্যক্তি জীবনের বন্ধুদের কথা জানতে চাই। স্কুল-কলেজ-ভার্সিটির বন্ধুদের সঙ্গে যোগাযোগ হয় এখনো?

আমি আবার এই জায়গা থেকে লাকি। আমার বন্ধু অনেক বেশি না। আমার যারা বন্ধু, তাঁদের সাথে এখনো আমার যোগাযোগ আছে। তাঁদের সাথে ঘোরাফেরা, দেখা-সাক্ষাৎ সবকিছুই হয়। আমি তো খুবই চুপচাপ নিজের মতো লাইফ লিড করতে পছন্দ করি। এবং প্রাইভেসি পছন্দ করি। ফলে স্বাভাবিকভাবে ব্যক্তিগত জীবনের সঙ্গেই আমার বেশি সময় পার করা হয়, যখন আমার কাজ থাকে না। এখনও আমার স্কুলের বন্ধু, আমার ইউনিভার্সিটির বন্ধু এবং কাজের ক্ষেত্রে অনেকের সাথে বন্ধুত্ব হয়েছে এরকমও আমার বেশকিছু বন্ধু আছে, যাদের সাথে দশ বছর, বারো বছর, পনেরো বছরের সম্পর্ক। তাদের সাথে এখনও কমিউনিকেশন হয়। সো ফ্রেন্ডশিপটা আমার কাছে খুবই আলাদা জায়গা রাখে।

‘নেটওয়ার্কের বাইরে’ ওয়েব ফিল্মে একটা সংলাপ আছে আপনার চরিত্র ডাক্তার তানিয়ার মুখে— ‘এক রাতের বাস জার্নিতে প্রেম হয় না, যেটা হয় সেটা হচ্ছে ইনফ্যাচুয়েশন’। আপনি নিজে কী বিশ্বাস করেন? সম্পর্ক হয়ে ওঠার ক্ষেত্রে সময়টা ফ্যাক্ট নাকি পরিবেশ-পরিস্থিতি?

সম্পর্কের ক্ষেত্রে সময় অবশ্যই গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, সময় আসলে সম্পর্কগুলোকে বুঝতে শেখায়। নিজের ভুল, আবার নিজেদের ভালো-মন্দ এসব বিষয় সম্পর্কে একটা ধারণা তৈরি করতে শেখায় সময়। আবার কিছু কিছু বন্ডিংও থাকে, যেখানে খুব বেশি সময়ের প্রয়োজন পড়ে না। অল্প দু-একটা স্পার্কলিং, বন্ডিং, টিউনিং মিলে গেলে একটা ছোট জার্নি পার করে দেওয়া যায়।

আমাদের যেমন হয়, ডেইলি আমাদের নতুন নতুন চেহারার সাথে ডিল করতে হয়। আজকে প্রোডাকশনের যে ছেলেটাকে দেখছি, কালকে দেখছি আরেকটা নতুন ছেলে। কিন্তু ও আমাকে পাঁচবেলাই পাঁচ কাপ চা দিয়ে যাচ্ছে। ও আমাকে দু-বেলার খাবার এনশিওর করছে। ওর সাথে আমার একটা আলাদা পরিচিতির জায়গা তৈরি হচ্ছে। আমি ওর নাম জানার চেষ্টা করছি, কদ্দিন ধরে কাজ করে, কীভাবে এল— এ রকম কনভারসেশন আমার হয়। আমি জানি না, অন্য আর্টিস্টদের হয় কিনা! কিন্তু আমি এটা মেইনটেইন করি। দেখা যায় যে, ওইটুকুই, দুইদিনের শুটিংয়ের ওই পরিচিতিটুকুই, নেক্সট কোনো শুটিংয়ে দেখা হলে ঠিক ওই জায়গা থেকেই গল্পটা আবার শুরু হয়।

নাজিয়া হক অর্ষাতো কিছু কিছু সম্পর্ক থাকে, যেগুলোর জন্য অনেক সময়ের দরকার নেই। সম্পর্কটা কখনো হয়ে যায় প্রয়োজনের, ওই সম্পর্কটা কখনো হয়ে যায় একটা ঘটনাকে ঘটানোর জন্য। কিন্তু যখন দীর্ঘ সময় পার করতে হবে, রিলেশনটা অনেক বেশি ইমপ্যাক্ট ফেলবে আপনার ব্যক্তিগত জীবনে, তখন আসলে সময় দরকার।

আপনি নীরবে কাজ করায় বিশ্বাসী। সবসময় বলেন ‘প্রকাশিত হওয়া আমার কাছে গুরুত্বপূর্ণ নয়’। সোশ্যাল মিডিয়ার ইদানীংকার আলোচনা-প্রশংসা কি আপনার জীবনযাপনে প্রভাব ফেলছে?

না। কারণ আমি কোনোকিছুকে পার্মানেন্টলি ধরি না। যা হচ্ছে, সেটা ঘটনার একটা বহমান ধারা। আমি যেভাবে কাজ করি, সেভাবেই কাজ করে যাব। আমি বিশ্বাস করি, কোনো প্রতিভাকে রেটিং দিয়ে মাপা যায় না। কারণ প্রত্যেকটা গুণাগুনেরই নিজস্বতা থাকে। দেখা যাচ্ছে, আজকে যে কোথাও খুব খারাপ করছে, আগামী দু-বছর পরে সে যে দুর্দান্ত কিছু ঘটিয়ে ফেলবে না— তার কোনো গ্যারান্টি নেই। আমি কেন প্রচারে বিশ্বাস করি না, কারন আমি শিখতে ভালোবাসি।

অভিনয়ে প্রায় একযুগ কাটিয়ে দিলেন। কখনো আপনাকে নিয়ে কোনোরকম আলোচনা হয়নি, আবার কখনো তুমুল বিতর্কের কবলেও পড়েছেন। কীভাবে দেখেন এই জার্নিকে?

এমনও সময় গেছে, আমাকে নিয়ে মানুষ কোনো আলোচনাই করেনি। অনেক প্রডাকশন গেছে, যে প্রডাকশনে আমিও কাজ করেছি। কিন্তু সব আলোচনা হয়েছে আমার সহশিল্পীকে নিয়ে। তাতে মনে হয়েছে, আমি ইনভিজিবল, আমি কোথাও নেই। আবার এমনও তো ঘটেছে, যেখানে মানুষ আমাকে নির্দিষ্ট একটা কাজ দিয়ে জাজমেন্ট করে, খুবই অশ্রাব্য গালিগালাজও করেছে। সুতরাং এই আলোচনা কিংবা সমালোচনায় কিছু আসে যায় না। কারন আমি জানি, কর্মই আমাকে শেষ পর্যন্ত নিয়ে যাবে।

সাক্ষাৎকার: খায়রুল বাসার নির্ঝর

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

অবশেষে জাস্টিন ট্রুডো-কেটি পেরির প্রেমের আনুষ্ঠানিক ঘোষণা এল, ইন্টারনেটে তোলপাড়

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
জাপানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ফুমিও কিশিদা ও তাঁর স্ত্রীর সঙ্গে জাস্টিন ট্রুডো ও কেটি পেরি। ছবি:  এক্স
জাপানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ফুমিও কিশিদা ও তাঁর স্ত্রীর সঙ্গে জাস্টিন ট্রুডো ও কেটি পেরি। ছবি: এক্স

দীর্ঘদিন ধরে চলা প্রেমের গুঞ্জনে অবশেষে সিলমোহর পড়ল। আন্তর্জাতিক কূটনৈতিক মঞ্চে নিজেদের সম্পর্কের আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দিলেন পপ গায়িকা কেটি পেরি এবং কানাডার সাবেক প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো। জাপানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ফুমিও কিশিদা ও তাঁর স্ত্রী ইউকোর সঙ্গে এক মধ্যাহ্নভোজে যোগ দিয়ে এই জুটি তাঁদের সম্পর্কের বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

জানা গেছে, কেটি পেরি তাঁর চলমান ‘দ্য লাইফটাইমস ওয়ার্ল্ড ট্যুর’ স্থগিত রেখে ট্রুডোর সঙ্গে টোকিওতে এই কূটনৈতিক মধ্যাহ্নভোজে অংশ নেন।

জাস্টিন ট্রুডো কিশিদার সঙ্গে বৈঠকের একটি ছবি এক্স-এ শেয়ার করে লিখেছেন, ‘আপনাকে দেখে দারুণ লাগলো@kishida 230। ক্যাটি এবং আমি আপনার ও ইউকোর সঙ্গে বসে কথা বলার সুযোগ পেয়ে অত্যন্ত আনন্দিত। ফুমিও, আপনার বন্ধুত্বের জন্য এবং আন্তর্জাতিক নিয়মতান্ত্রিক ব্যবস্থার প্রতি এবং সবার জন্য একটি উন্নত ভবিষ্যতের প্রতি আপনার অব্যাহত প্রতিশ্রুতির জন্য ধন্যবাদ।’

পোস্ট করা ছবিতে দেখা যায়, ট্রুডো একটি ধূসর স্যুট পরে সম্পূর্ণ রাষ্ট্রনায়কোচিত রূপে ফিরে এসেছেন। অন্যদিকে, কেটি পেরি সেজেছিলেন সবুজ রঙের দু’টুকরো পোশাক, কালো টাইটস, একটি টার্টলনেক এবং বুট পরে। কিশিদা দম্পতির সঙ্গে ছবি তোলার সময় কেটি পেরিকে ট্রুডোর পেছনে হাত রেখে দাঁড়াতে দেখা যায়। কিশিদা ট্রুডোর পোস্টে মন্তব্য করেন, ‘ধন্যবাদ, জাস্টিন। আপনি এবং কেটি, দু’জনকেই অবকাশের শুভেচ্ছা!’

জাস্টিন ট্রুডো এই পোস্টটি শেয়ার করার সঙ্গে সঙ্গেই ইন্টারনেট জুড়ে তুমুল আলোড়ন সৃষ্টি হয়। একজন সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহারকারী লেখেন, ‘মুক্ত বিশ্বের ইতিহাসে এটি সম্ভবত সবচেয়ে উন্মাদনার একটি ঘোষণা।’ আরেকজন এক্স ব্যবহারকারী মন্তব্য করেন, ‘কেটি পেরি আন্তর্জাতিক কূটনীতি সামলাচ্ছেন। আমার টপ রিস্কস ২০২৫ তালিকায় এটা ছিল না!’

অনেক ভক্তও মজার প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন। একজন লেখেন, ‘আন্তর্জাতিক সম্পর্ক, কিন্তু সঙ্গে ছুটির কার্ডের আমেজ।’ অন্য একজন মন্তব্য করেন, ‘খোদার কসম, এটা আমার বিঙ্গো কার্ডে ছিল না।’ এই কূটনৈতিক ঘোষণার মাধ্যমে পেরি ও ট্রুডো জুটি এখন আন্তর্জাতিক সেলিব্রিটি মহলে নতুন আলোচনার কেন্দ্র হয়ে উঠেছেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

লন্ডনে উন্মোচিত হলো শাহরুখ-কাজলের ভাস্কর্য

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
গত বৃহস্পতিবার লন্ডনে উন্মোচিত হয় ডিডিএলজের ভাস্কর্য। ছবি: বিবিসির সৌজন্যে
গত বৃহস্পতিবার লন্ডনে উন্মোচিত হয় ডিডিএলজের ভাস্কর্য। ছবি: বিবিসির সৌজন্যে

বলিউডের ‘রোমান্স কিং’ হিসেবে পরিচিত শাহরুখ খান এবং তাঁর সহ-অভিনেত্রী কাজলের একটি নতুন ভাস্কর্য উন্মোচিত হলো লন্ডনের লেস্টার স্কয়ারে। ভারতীয় সিনেমার ইতিহাসে দীর্ঘতম সময় ধরে চলা ব্লকবাস্টার ছবি ‘দিলওয়ালে দুলহানিয়া লে জায়েঙ্গে’-এর ৩০ বছর পূর্তি উদ্‌যাপন উপলক্ষে এই ভাস্কর্যটি স্থাপন করা হয়েছে।

বর্ষণমুখর আবহাওয়ার মধ্যেই গত বৃহস্পতিবার ভাস্কর্যটির আনুষ্ঠানিক উন্মোচন করা হয়। এই ভাস্কর্যটি লেস্টার স্কয়ারের ‘সিনস ইন দ্য স্কয়ার’ ট্রেইলের অংশ হিসেবে হ্যারি পটার, প্যাডিংটন এবং ব্রিজেট জোনসের ভাস্কর্যের সঙ্গে যুক্ত হলো।

লন্ডনে ভাস্কর্য উন্মোচনের ফাঁকে শাহরুখ খানের কাছে নববিবাহিত দম্পতিদের জন্য তাঁর নিজস্ব পরামর্শ জানতে চাওয়া হয়। মজা করে জবাব দেন শাহরুখ।

শাহরুখ উত্তর দেওয়ার আগেই অভিনেত্রী কাজল রসিকতা করে বলে ওঠেন, ‘ওঁর সব ছবিই তো বিয়ের আগের প্রেম নিয়ে, বিয়ের পরের প্রেম নিয়ে নয়!’

কাজলের কথায় সম্মতি জানিয়ে শাহরুখ খান হাসতে হাসতে বলেন, ‘এখন পর্যন্ত, তুমি ছিলে একজন যাকে আমি উপদেশ দিতে পারতাম। কিন্তু বিয়ের পর, তুমি তো এখন নিজের দায়িত্বে চলে গেছ!’ অবশ্য শাহরুখ গুরুত্বপূর্ণ কিছু উপদেশ দিতে ভোলেননি। তিনি বলেন, ‘ততদিন (বিয়ের আগে) পর্যন্ত, আমার মনে হয় আমি ঠিকই করেছি। আপনাদের রোমান্স থাকতে হবে, গান গাইতে হবে।’ কাজল সঙ্গে সঙ্গে যোগ করেন, ‘এবং অবশ্যই ডিডিএলজে দেখতে হবে।’

ছবিটি সম্পর্কে যশ রাজ ফিল্মসের সিইও অক্ষয় বিধানি এটিকে ‘গৌরবের বিশাল মুহূর্ত’ হিসেবে বর্ণনা করেন। অন্যদিকে, হার্ট অব লন্ডন বিজনেস অ্যালায়েন্সের প্রধান নির্বাহী রস মর্গ্যান বলেন, ‘ডিডিএলজে একটি সিনেমাটিক ঘটনা যা প্রজন্মকে প্রভাবিত করেছে, এবং লন্ডন এই প্রথম ভারতীয় সিনেমার আন্তর্জাতিক দর্শকদের মুগ্ধ করে চলা একটি গল্পকে সম্মান জানাল।’

তিন দশকেরও বেশি সময় ধরে হিন্দি ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে রাজত্ব করেছেন শাহরুখ খান। সম্প্রতি প্রথমবারের মতো বিলিয়নেয়ার ক্লাবে প্রবেশ করেছেন। এই ঘটনা তাঁকে আর্নল্ড শোয়ার্জনেগার এবং টেলর সুইফটের মতো বৈশ্বিক তারকাদের কাতারে নিয়ে এসেছে।

চার বছরের বিরতির পর ২০২৩ সালে চলচ্চিত্রে ফেরেন বলিউড বাদশাহ। সম্প্রতি তাঁর আসন্ন অ্যাকশন ফিল্ম ‘কিং’-এর টিজার উন্মুক্ত হয়েছে। তবে অ্যাকশন ঘরানার আরও ছবি বা পরবর্তী জেমস বন্ড হওয়ার সম্ভাবনা নিয়ে প্রশ্ন করা হলে রসিকতা করে শাহরুখ জবাব দেন: ‘না। আমার উচ্চারণ সেরকম নয়। আর আমি শেকেন মার্টিনি (বিশেষভাবে তৈরি ককটেল) পছন্দ করি না।’

এদিকে, চলচ্চিত্র জগতের বর্তমান পরিস্থিতি এবং ওটিটি প্ল্যাটফর্মের কারণে সিনেমা হলগুলোতে দর্শক কমে যাওয়া নিয়ে কাজল মনে করেন, এখন দর্শকদের হাতে বেছে নেওয়ার সুযোগ অনেক বেশি। তিনি বলেন, ‘মানুষের এখন সিনেমা হলে যাওয়া বা না যাওয়ার স্বাধীনতা আছে। যখন এত বিকল্প, তখন বেছে নেওয়া কঠিন হয়ে যায়।’

তবে শাহরুখ খান বিশ্বাস করেন, ‘কমিউনিটি ভিউয়িং...সবসময় থাকবে। আমরা একসঙ্গে কোনো জিনিস দেখতে এবং উপভোগ করতে ভালোবাসি।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

রাক্ষস সিনেমায় অভিনয়ের গুঞ্জন নাকচ করলেন ইধিকা

বিনোদন প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ০৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৮: ৪২
ইধিকা পাল ছবি : সংগৃহীত
ইধিকা পাল ছবি : সংগৃহীত

শাকিব খানের বিপরীতে ' প্রিয়তমা ' সিনেমা দিয়ে বড় পর্দায় অভিষেক হয় পশ্চিমবঙ্গের ইধিকা পালের । প্রথম সিনেমাতেই নজর কাড়েন অভিনেত্রী । এ বছর রোজার ঈদে মুক্তি পাওয়া মেহেদী হাসান হৃদয় পরিচালিত ‘ বরবাদ ' সিনেমায়ও দেখা গেছে তাঁকে । খবর ছড়িয়েছে , মেহেদী হাসান হৃদয়ের নতুন সিনেমায়ও অভিনয় করবেন ইধিকা । এবার তাঁর নায়ক সিয়াম আহমেদ । ‘ রাক্ষস ’ নামের সিনেমায় জুটি হচ্ছেন তাঁরা । অথচ অভিনেত্রী জানালেন ভিন্ন কথা । এমন নামের কোনো সিনেমা নিয়ে তাঁর সঙ্গে নাকি কোনো কথাই হয়নি । রাক্ষস সিনেমায় ইধিকার অভিনয়ের এই গুঞ্জন কয়েক দিন ধরে । ইতিমধ্যে নাকি আলাপও হয়েছে নির্মাতাদের সঙ্গে , এমন খবরও প্রকাশিত হয়েছে সংবাদমাধ্যমে । কিন্তু , নতুন এই সিনেমা নিয়ে কথা বলতে যোগাযোগ করলে ইধিকা জানালেন ভিন্ন কথা । খুদে বার্তায় আজকের পত্রিকাকে ইধিকা লেখেন , “ এখন অবধি এ রকম ( রাক্ষস ) নামের কোনো সিনেমা নিয়ে আমার কোনো কথা হয়নি । ' একই কথা পশ্চিমবঙ্গের সংবাদমাধ্যম আনন্দবাজারকেও জানিয়েছেন ইধিকা । অভিনেত্রী জানান , সিয়াম আহমেদের সঙ্গে অভিনয় নিয়ে কোনো কথা হয়নি ।

আনন্দবাজার জানাচ্ছে , ইধিকা না থাকলেও রাক্ষসে সিয়ামের সঙ্গে থাকবেন টালিউড নায়িকা সুস্মিতা চট্টোপাধ্যায় । এর আগে এ সিনেমায় সাবিলা নূরের অভিনয়ের খবর ছড়িয়েছিল । রাক্ষস সিনেমায় দেশ - বিদেশের একাধিক অভিনেত্রীর নাম শোনা গেলেও এখন পর্যন্ত প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান কিংবা নির্মাতার কাছ থেকে আসেনি আনুষ্ঠানিক ঘোষণা । বরং প্রযোজক শাহরিনা সুলতানা সংবাদমাধ্যমে জানিয়েছেন , এই সিনেমা নিয়ে বেশ কয়েকজন নায়িকার সঙ্গে কথা হয়েছে । শেষ পর্যন্ত কে থাকছে , সেটা সময় বলে দেবে । রাক্ষসের আগে আবু হায়াত মাহমুদের ‘ প্রিন্স ' সিনেমার নায়িকা হিসেবেও শোনা গেছে ইধিকার নাম । সেই দৃশ্যপটও বদলে গেছে ।

এখন শোনা যাচ্ছে , ইধিকা নয় , টালিউডের আরেক নায়িকা জ্যোতির্ময়ী কুণ্ডুর নাম । তবে প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে তাসনিয়া ফারিণের থাকার বিষয়টি নিশ্চিত করলেও অন্য কারও নাম ঘোষণা হয়নি এখন পর্যন্ত । জানা গেছে , এ মাসেই শুরু হবে প্রিন্স ও রাক্ষস সিনেমার শুটিং । দুটি সিনেমার বেশির ভাগ শুটিং হবে দেশের বাইরে । সবকিছু ঠিক থাকলে আগামী বছর রোজার ঈদে মুক্তি পাবে সিনেমা দুটি ।

এ ধরনের গুঞ্জনে অবাক হয়েছেন তিনি । গত বছরও শোনা গিয়েছিল ‘ সিকান্দার ' নামের একটি সিনেমায় জুটি হচ্ছেন সিয়াম - ইধিকা । সেই খবরও শেষ পর্যন্ত গুঞ্জনই থেকে গেছে । এদিকে

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

প্রকাশিত হলো শিরোনামহীনের ‘এই অবেলায় ২’

বিনোদন প্রতিবেদক, ঢাকা
‘এই অবেলায় ২’ ও ‘রিমেম্বার মি’ গানের পোস্টার
‘এই অবেলায় ২’ ও ‘রিমেম্বার মি’ গানের পোস্টার

গত বছরের অক্টোবরে প্রকাশ পেয়েছিল শিরোনামহীন ব্যান্ডের ‘এই অবেলায় ২’ গানের টিজার। তবে স্পনসর জটিলতায় আটকে ছিল গানটি। অবশেষে গতকাল প্রকাশ পেল শিরোনামহীনের বহুল প্রতীক্ষিত এই অবেলায় গানের দ্বিতীয় পর্ব। এটি শিরোনামহীনের পঞ্চম অ্যালবাম বাতিঘরের শেষ গান।

‘যদি কোথাও/ কোনো দিন দূরে সরে যাই/ নিসর্গের আঁধারে হারাই/ সমুদ্রের ঢেউ দেখে আমায় রেখো মনে’—এমন কথার গানটি লিখেছেন শিরোনামহীনের দলনেতা জিয়াউর রহমান, সুর করেছেন ব্যান্ডের ড্রামার কাজী আহমাদ শাফিন। ভিডিও নির্দেশনাও দিয়েছেন তিনি। গেয়েছেন শেখ ইশতিয়াক। শুটিং হয়েছে থাইল্যান্ডের কো খাম, কো মাখ ও কো চ্যাং আইল্যান্ডে। মডেল হয়েছেন নীল হুরেজাহান।

২০১৯ সালের মে মাসে ‘এই অবেলায়’ দিয়ে নতুন করে জেগে উঠেছিল ব্যান্ড শিরোনামহীন। নতুন ভোকাল নিয়ে ভক্তদের প্রত্যাশা পূরণ করতে যখন হিমশিম খাচ্ছিল দলটি, তখন এই অবেলায় গানটি ছিল শিরোনামহীনের জন্য অক্সিজেনের মতো। ছয় বছর পর প্রকাশ পেল এ গানের সিকুয়েল এই অবেলায় ২।

শিরোনামহীনের ইউটিউব চ্যানেলে বাংলার পাশাপাশি এই অবেলায় প্রকাশ পেয়েছে ইংরেজি ভাষায়। এই ভার্সনের শিরোনাম দেওয়া হয়েছে ‘রিমেম্বার মি’। ইংরেজি ভার্সন নিয়ে শিরোনামহীনের দলনেতা জিয়াউর রহমান জিয়া বলেন, ‘এই অবেলায় গানটি বিদেশি ভাষার মানুষও পছন্দ করেছে। ইউটিউব চ্যানেলে অনেক মন্তব্য দেখেছি ইংরেজি, স্প্যানিশসহ বিভিন্ন ভাষায় লেখা, “আমি গানের ভাষা বুঝতে পারছি না। কিন্তু গানটির সুর খুব ভালো লাগছে।” তাই এই অবেলায় ২-এর ইংরেজি ভার্সন করা। আশা করছি, বাংলার পাশাপাশি ইংরেজি ভার্সনটাও দেশ-বিদেশের শ্রোতাদের মন জয় করতে পারবে। সেটা হলে ভবিষ্যতে এ ধরনের উদ্যোগ আরও হতে পারে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত