আজকের পত্রিকা ডেস্ক

ভারতীয় সিনেমার ইতিহাসে এক নতুন অধ্যায়ের সূচনা হতে চলেছে। ভারতীয় চলচ্চিত্রপ্রেমীদের জন্য এক ঐতিহাসিক মুহূর্তের সাক্ষী হতে যাচ্ছে ইতালির বোলোগনা শহর। আজ শুক্রবার (স্থানীয় সময়) ‘ইল সিনেমা রিট্রোভাটো’ উৎসবে বিশ্ব প্রিমিয়ার হতে যাচ্ছে রমেশ সিপ্পি পরিচালিত ১৯৭৫ সালের জনপ্রিয় হিন্দি ছবি ‘শোলে’র সম্পূর্ণ পুনরুদ্ধারকৃত ও আনকাট সংস্করণ। পঞ্চাশ বছর আগে মুক্তি পেয়ে ভারতীয় সিনেমা জগতে যে ঝড় তুলেছিল ‘শোলে’, এই নতুন সংস্করণ সেই উন্মাদনা আবার ফিরিয়ে আনছে।
এই নতুন সংস্করণে দর্শকেরা দেখতে পাবেন ছবির আসল সমাপ্তি, যা সেন্সর বোর্ডের আপত্তির কারণে পরিবর্তন করা হয়েছিল। সেই সঙ্গে কিছু বাদ পড়া দৃশ্যও থাকবে নতুন সংস্করণে। উৎসবের উন্মুক্ত প্রাঙ্গণ পিয়াজ্জা ম্যাগিওরে-তে এই প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়েছে। এটি ইউরোপের অন্যতম বৃহত্তম উন্মুক্ত মঞ্চ।
ভারতীয় সিনেমায় ওয়েস্টার্ন ও সামুরাই ছায়া
চিত্রনাট্য লেখক জুটি সেলিম-জাভেদের হাতে রচিত, ‘শোলে’তে অভিনয় করেছেন সেই সময়ের সব বড় তারকারা—অমিতাভ বচ্চন, ধর্মেন্দ্র, হেমা মালিনী, জয়া ভাদুড়ি, সঞ্জীব কুমার এবং গব্বর সিং চরিত্রে আমজাদ খান (প্রয়াত)। ছবিটি ওয়েস্টার্ন ও সামুরাই ক্ল্যাসিক থেকে অনুপ্রাণিত হলেও, এটি ভারতীয় আত্মীকরণে অনন্য। ২০৪ মিনিটের এই চলচ্চিত্রটি মূলত রামগড় নামের একটি কাল্পনিক গ্রামে দুই ছোটখাটো মাস্তান জয় ও বীরুর (অমিতাভ বচ্চন ও ধর্মেন্দ্র) গল্প। তাঁরা একজন সাবেক জেলার, ঠাকুর বলদেব সিং-এর ভাড়াটে নিযুক্ত হন কুখ্যাত ডাকাত গব্বর সিংকে দমন করার জন্য। গব্বর সিং ভারতীয় সিনেমার অন্যতম আইকনিক খলনায়ক।
মুক্তির পর, মুম্বাইয়ের ১ হাজার ৫০০ আসনের মিনার্ভা থিয়েটারে ছবিটি টানা পাঁচ বছর প্রদর্শিত হয়। বিবিসি ইন্ডিয়ার অনলাইন জরিপে এটিকে ‘সহস্রাব্দের সেরা চলচ্চিত্র’ এবং ব্রিটিশ ফিল্ম ইনস্টিটিউটের জরিপে ‘সর্বকালের সেরা ভারতীয় চলচ্চিত্র’ হিসেবে নির্বাচিত হয়। আর. ডি. বর্মনের সংগীত এবং ছবির সংলাপের ৫ লাখ রেকর্ড ও ক্যাসেট বিক্রি হয়েছিল।

‘শোলে’ শুধু একটি চলচ্চিত্র নয়, এটি একটি সাংস্কৃতিক ফেনোমেনা। এর সংলাপ এখনো বিভিন্ন বিয়ের অনুষ্ঠানে উদ্ধৃত হয়, রাজনৈতিক বক্তৃতায় ব্যবহৃত হয়, বিজ্ঞাপনে প্যারোডি করা হয়। ছবিতে একটি ছোটখাটো মাস্তানের চরিত্রে অভিনয় করা ধর্মেন্দ্র সম্প্রতি এক বিবৃতিতে বলেন, ‘শোলে হলো বিশ্বের অষ্টম আশ্চর্য।’ অমিতাভ বচ্চন ছবিটি শুটিংয়ের অভিজ্ঞতাকে ‘অবিস্মরণীয়’ বলে বর্ণনা করেছেন। তিনি বলেন, ‘যদিও তখন আমার কোনো ধারণা ছিল না যে এটি ভারতীয় সিনেমার ইতিহাসে একটি যুগান্তকারী মুহূর্ত হয়ে উঠবে।’
পুরো সিনেমাটি যেভাবে পুনরুদ্ধার করা হলো
ফিল্ম হেরিটেজ ফাউন্ডেশনের শিবেন্দ্র সিং দুঙ্গারপুর জানিয়েছেন, এই নতুন সংস্করণটিই ‘শোলে’র সবচেয়ে অথেনটিক রূপ। কারণ এতে সিনেমার প্রকৃত সমাপ্তি এবং আগে কখনো না দেখা বাদ পড়া দৃশ্যগুলো রয়েছে।

মূল গল্পে, ঠাকুর গব্বরকে তাঁর কাঁটাযুক্ত জুতো দিয়ে পিষে মেরে ফেলে। কিন্তু সেন্সর বোর্ড এতে আপত্তি জানায়। একজন সাবেক পুলিশ কর্মকর্তা আইন নিজের হাতে তুলে নিচ্ছেন, এই ধারণায় তাঁরা আপত্তি করেন। তাঁদের কাছে ছবির স্টাইলিশ সহিংসতাও অতিরিক্ত মনে হয়েছিল। জরুরি অবস্থার সময় ছবিটি মুক্তি পাওয়ায় সেন্সরের কড়াকড়ি ছিল অনেক বেশি।
সেন্সর বোর্ডের সঙ্গে বোঝাপড়ার চেষ্টা ব্যর্থ হলে, পরিচালক সিপ্পিকে সমাপ্তি দৃশ্যটি পুনরায় শুট করতে বাধ্য করা হয়। অভিনেতাদের নিয়ে দ্রুত দক্ষিণ ভারতের রামানাগারাম-এর পাহাড়ে ফিরে যেতে হয়। এটিই ছবিতে রামগড় গ্রাম। নতুন এবং অপেক্ষাকৃত কম সহিংস সমাপ্তিতে গব্বর সিংকে হত্যা না করে বন্দী করা হয়। এরপরই ছবিটি সেন্সরের ছাড়পত্র পায়।
এই মহাকাব্যিক চলচ্চিত্রটির তিন বছরের পুনরুদ্ধার প্রক্রিয়া মোটেও সহজ ছিল না। ছবির মূল ৭০ মিলিমিটারের প্রিন্টগুলো নষ্ট হয়ে গিয়েছিল, ক্যামেরার নেগেটিভগুলোও মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত অবস্থায় ছিল।
২০২২ সালে, রমেশ সিপ্পির ছেলে শেহজাদ সিপ্পি ছবিটি পুনরুদ্ধার করার প্রস্তাব নিয়ে মুম্বাই-ভিত্তিক ফিল্ম হেরিটেজ ফাউন্ডেশনের কাছে যান। তিনি জানান, ছবির কিছু উপাদান মুম্বাইয়ের একটি গুদামে সংরক্ষিত আছে। এটি প্রথমে একটি ঝুঁকিপূর্ণ কাজ মনে হলেও, পরে প্রায় অলৌকিকভাবে মিলে যায়: লেবেলবিহীন ক্যানগুলোর ভেতর পাওয়া যায় আসল ৩৫ মিলিমিটারের ক্যামেরা ও সাউন্ড নেগেটিভ!

সিপ্পি ফিল্মস ফাউন্ডেশনকে জানায়, যুক্তরাজ্যের একটি গুদামেও অতিরিক্ত রিল সংরক্ষিত আছে। ব্রিটিশ ফিল্ম ইনস্টিটিউটের সহায়তায়, দলটি সেই আর্কাইভের উপাদানগুলো সংগ্রহ করে। এরপর সেগুলো অত্যন্ত সতর্কতার সঙ্গে বোলোগনার এল’ইমাজিন রিট্রোভাটা-তে পাঠানো হয়। এটি বিশ্বের অন্যতম সেরা চলচ্চিত্র পুনরুদ্ধার কেন্দ্র।
আশ্চর্যের বিষয়, মুক্তির প্রথম দিকে ‘শোলে’র যাত্রা মসৃণ ছিল না। প্রাথমিক রিভিউগুলো ছিল নেতিবাচক, বক্স অফিস ছিল নড়বড়ে, ৭০ মিলিমিটারের প্রিন্ট কাস্টমসে আটকে গিয়েছিল।
ইন্ডিয়া টুডে ম্যাগাজিন ছবিটি সম্পর্কে লিখেছিল ‘একটি নিভে যাওয়া অঙ্গার’। ফিল্মফেয়ার-এর বিক্রম সিং লিখেছিলেন, ছবির মূল সমস্যা ছিল ‘ব্যর্থ প্রচেষ্টা, ভারতীয় প্রেক্ষাপটে একটি ওয়েস্টার্ন সিনেমা জুড়ে দেওয়া চেষ্টা করা হয়েছে।’ প্রাথমিক প্রদর্শনীতে দর্শকেরা নীরব ছিলেন—কোনো হাসি, কান্না বা করতালি ছিল না। চলচ্চিত্র লেখক অনুপমা চোপড়া তাঁর ‘শোলে: দ্য মেকিং অব অ্যা ক্ল্যাসিক’ বইয়ে লিখেছেন, ‘শুধু নীরবতা।’ সপ্তাহান্তে প্রেক্ষাগৃহগুলো পূর্ণ হলেও দর্শকদের প্রতিক্রিয়া অনিশ্চিত ছিল। সংশ্লিষ্টদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছিল।
পরের কয়েক সপ্তাহের মধ্যে দর্শকেরা ছবিটি গ্রহণ করতে শুরু করেন এবং মুখে মুখে সুনাম ছড়িয়ে পড়ে। অনুপমা চোপড়া লিখেছেন, ‘ভিজ্যুয়ালগুলো ছিল মহাকাব্যিক এবং শব্দ ছিল জাদুকরী...তৃতীয় সপ্তাহের মধ্যে দর্শকেরা সংলাপগুলো আওড়াচ্ছিল। এর মানে হলো, কিছু দর্শক অন্তত দ্বিতীয়বারের মতো ছবিটি দেখতে আসছিল।’
‘শোলে’ মুক্তির এক মাস পর, পলিডর একটি ৪৮ মিনিটের সংলাপ রেকর্ড প্রকাশ করে—এবং পরিস্থিতি পাল্টে যায়। ছবির চরিত্রগুলো আইকনিক হয়ে ওঠে। গব্বর সিং—এক ‘সত্যিই ভীতিকর, কিন্তু ব্যাপক জনপ্রিয়’ খলনায়ক—একটি সাংস্কৃতিক ফেনোমেনা হিসেবে আবির্ভূত হন। বিদেশি সমালোচকেরা এটিকে ভারতের প্রথম ‘কারি ওয়েস্টার্ন’ বলে অভিহিত করেন।
মুম্বাইয়ের মিনার্ভা থিয়েটারে ‘শোলে’ পাঁচ বছরেরও বেশি সময় ধরে চলেছিল—তিন বছর নিয়মিত শোতে এবং দুই বছর ম্যাটিনি শোতে। এমনকি ২৪০ তম সপ্তাহেও শো ছিল হাউসফুল। ২০১৫ সালের এপ্রিলে, ৪০ বছর পুরোনো হওয়া সত্ত্বেও, ‘শোলে’ পাকিস্তানের প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পায় এবং ২০০২ সালের ‘দেবদাস’-এর মতো এক দশকেরও বেশি পুরোনো বেশির ভাগ ভারতীয় ছবিকে ছাপিয়ে যায়।
পঞ্চাশ বছর পরেও কেন ‘শোলে’ দর্শকদের মন জয় করে চলেছে? অমিতাভ বচ্চন এক সাক্ষাৎকারে এর একটি সহজ, কিন্তু গভীর উত্তর দিয়েছেন: ‘ভালো এবং মন্দের জয়... এবং সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ, তিন ঘণ্টার মধ্যে পয়েটিক জাস্টিস! যা আপনি এবং আমি সারা জীবনেও পাব না।’

ভারতীয় সিনেমার ইতিহাসে এক নতুন অধ্যায়ের সূচনা হতে চলেছে। ভারতীয় চলচ্চিত্রপ্রেমীদের জন্য এক ঐতিহাসিক মুহূর্তের সাক্ষী হতে যাচ্ছে ইতালির বোলোগনা শহর। আজ শুক্রবার (স্থানীয় সময়) ‘ইল সিনেমা রিট্রোভাটো’ উৎসবে বিশ্ব প্রিমিয়ার হতে যাচ্ছে রমেশ সিপ্পি পরিচালিত ১৯৭৫ সালের জনপ্রিয় হিন্দি ছবি ‘শোলে’র সম্পূর্ণ পুনরুদ্ধারকৃত ও আনকাট সংস্করণ। পঞ্চাশ বছর আগে মুক্তি পেয়ে ভারতীয় সিনেমা জগতে যে ঝড় তুলেছিল ‘শোলে’, এই নতুন সংস্করণ সেই উন্মাদনা আবার ফিরিয়ে আনছে।
এই নতুন সংস্করণে দর্শকেরা দেখতে পাবেন ছবির আসল সমাপ্তি, যা সেন্সর বোর্ডের আপত্তির কারণে পরিবর্তন করা হয়েছিল। সেই সঙ্গে কিছু বাদ পড়া দৃশ্যও থাকবে নতুন সংস্করণে। উৎসবের উন্মুক্ত প্রাঙ্গণ পিয়াজ্জা ম্যাগিওরে-তে এই প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়েছে। এটি ইউরোপের অন্যতম বৃহত্তম উন্মুক্ত মঞ্চ।
ভারতীয় সিনেমায় ওয়েস্টার্ন ও সামুরাই ছায়া
চিত্রনাট্য লেখক জুটি সেলিম-জাভেদের হাতে রচিত, ‘শোলে’তে অভিনয় করেছেন সেই সময়ের সব বড় তারকারা—অমিতাভ বচ্চন, ধর্মেন্দ্র, হেমা মালিনী, জয়া ভাদুড়ি, সঞ্জীব কুমার এবং গব্বর সিং চরিত্রে আমজাদ খান (প্রয়াত)। ছবিটি ওয়েস্টার্ন ও সামুরাই ক্ল্যাসিক থেকে অনুপ্রাণিত হলেও, এটি ভারতীয় আত্মীকরণে অনন্য। ২০৪ মিনিটের এই চলচ্চিত্রটি মূলত রামগড় নামের একটি কাল্পনিক গ্রামে দুই ছোটখাটো মাস্তান জয় ও বীরুর (অমিতাভ বচ্চন ও ধর্মেন্দ্র) গল্প। তাঁরা একজন সাবেক জেলার, ঠাকুর বলদেব সিং-এর ভাড়াটে নিযুক্ত হন কুখ্যাত ডাকাত গব্বর সিংকে দমন করার জন্য। গব্বর সিং ভারতীয় সিনেমার অন্যতম আইকনিক খলনায়ক।
মুক্তির পর, মুম্বাইয়ের ১ হাজার ৫০০ আসনের মিনার্ভা থিয়েটারে ছবিটি টানা পাঁচ বছর প্রদর্শিত হয়। বিবিসি ইন্ডিয়ার অনলাইন জরিপে এটিকে ‘সহস্রাব্দের সেরা চলচ্চিত্র’ এবং ব্রিটিশ ফিল্ম ইনস্টিটিউটের জরিপে ‘সর্বকালের সেরা ভারতীয় চলচ্চিত্র’ হিসেবে নির্বাচিত হয়। আর. ডি. বর্মনের সংগীত এবং ছবির সংলাপের ৫ লাখ রেকর্ড ও ক্যাসেট বিক্রি হয়েছিল।

‘শোলে’ শুধু একটি চলচ্চিত্র নয়, এটি একটি সাংস্কৃতিক ফেনোমেনা। এর সংলাপ এখনো বিভিন্ন বিয়ের অনুষ্ঠানে উদ্ধৃত হয়, রাজনৈতিক বক্তৃতায় ব্যবহৃত হয়, বিজ্ঞাপনে প্যারোডি করা হয়। ছবিতে একটি ছোটখাটো মাস্তানের চরিত্রে অভিনয় করা ধর্মেন্দ্র সম্প্রতি এক বিবৃতিতে বলেন, ‘শোলে হলো বিশ্বের অষ্টম আশ্চর্য।’ অমিতাভ বচ্চন ছবিটি শুটিংয়ের অভিজ্ঞতাকে ‘অবিস্মরণীয়’ বলে বর্ণনা করেছেন। তিনি বলেন, ‘যদিও তখন আমার কোনো ধারণা ছিল না যে এটি ভারতীয় সিনেমার ইতিহাসে একটি যুগান্তকারী মুহূর্ত হয়ে উঠবে।’
পুরো সিনেমাটি যেভাবে পুনরুদ্ধার করা হলো
ফিল্ম হেরিটেজ ফাউন্ডেশনের শিবেন্দ্র সিং দুঙ্গারপুর জানিয়েছেন, এই নতুন সংস্করণটিই ‘শোলে’র সবচেয়ে অথেনটিক রূপ। কারণ এতে সিনেমার প্রকৃত সমাপ্তি এবং আগে কখনো না দেখা বাদ পড়া দৃশ্যগুলো রয়েছে।

মূল গল্পে, ঠাকুর গব্বরকে তাঁর কাঁটাযুক্ত জুতো দিয়ে পিষে মেরে ফেলে। কিন্তু সেন্সর বোর্ড এতে আপত্তি জানায়। একজন সাবেক পুলিশ কর্মকর্তা আইন নিজের হাতে তুলে নিচ্ছেন, এই ধারণায় তাঁরা আপত্তি করেন। তাঁদের কাছে ছবির স্টাইলিশ সহিংসতাও অতিরিক্ত মনে হয়েছিল। জরুরি অবস্থার সময় ছবিটি মুক্তি পাওয়ায় সেন্সরের কড়াকড়ি ছিল অনেক বেশি।
সেন্সর বোর্ডের সঙ্গে বোঝাপড়ার চেষ্টা ব্যর্থ হলে, পরিচালক সিপ্পিকে সমাপ্তি দৃশ্যটি পুনরায় শুট করতে বাধ্য করা হয়। অভিনেতাদের নিয়ে দ্রুত দক্ষিণ ভারতের রামানাগারাম-এর পাহাড়ে ফিরে যেতে হয়। এটিই ছবিতে রামগড় গ্রাম। নতুন এবং অপেক্ষাকৃত কম সহিংস সমাপ্তিতে গব্বর সিংকে হত্যা না করে বন্দী করা হয়। এরপরই ছবিটি সেন্সরের ছাড়পত্র পায়।
এই মহাকাব্যিক চলচ্চিত্রটির তিন বছরের পুনরুদ্ধার প্রক্রিয়া মোটেও সহজ ছিল না। ছবির মূল ৭০ মিলিমিটারের প্রিন্টগুলো নষ্ট হয়ে গিয়েছিল, ক্যামেরার নেগেটিভগুলোও মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত অবস্থায় ছিল।
২০২২ সালে, রমেশ সিপ্পির ছেলে শেহজাদ সিপ্পি ছবিটি পুনরুদ্ধার করার প্রস্তাব নিয়ে মুম্বাই-ভিত্তিক ফিল্ম হেরিটেজ ফাউন্ডেশনের কাছে যান। তিনি জানান, ছবির কিছু উপাদান মুম্বাইয়ের একটি গুদামে সংরক্ষিত আছে। এটি প্রথমে একটি ঝুঁকিপূর্ণ কাজ মনে হলেও, পরে প্রায় অলৌকিকভাবে মিলে যায়: লেবেলবিহীন ক্যানগুলোর ভেতর পাওয়া যায় আসল ৩৫ মিলিমিটারের ক্যামেরা ও সাউন্ড নেগেটিভ!

সিপ্পি ফিল্মস ফাউন্ডেশনকে জানায়, যুক্তরাজ্যের একটি গুদামেও অতিরিক্ত রিল সংরক্ষিত আছে। ব্রিটিশ ফিল্ম ইনস্টিটিউটের সহায়তায়, দলটি সেই আর্কাইভের উপাদানগুলো সংগ্রহ করে। এরপর সেগুলো অত্যন্ত সতর্কতার সঙ্গে বোলোগনার এল’ইমাজিন রিট্রোভাটা-তে পাঠানো হয়। এটি বিশ্বের অন্যতম সেরা চলচ্চিত্র পুনরুদ্ধার কেন্দ্র।
আশ্চর্যের বিষয়, মুক্তির প্রথম দিকে ‘শোলে’র যাত্রা মসৃণ ছিল না। প্রাথমিক রিভিউগুলো ছিল নেতিবাচক, বক্স অফিস ছিল নড়বড়ে, ৭০ মিলিমিটারের প্রিন্ট কাস্টমসে আটকে গিয়েছিল।
ইন্ডিয়া টুডে ম্যাগাজিন ছবিটি সম্পর্কে লিখেছিল ‘একটি নিভে যাওয়া অঙ্গার’। ফিল্মফেয়ার-এর বিক্রম সিং লিখেছিলেন, ছবির মূল সমস্যা ছিল ‘ব্যর্থ প্রচেষ্টা, ভারতীয় প্রেক্ষাপটে একটি ওয়েস্টার্ন সিনেমা জুড়ে দেওয়া চেষ্টা করা হয়েছে।’ প্রাথমিক প্রদর্শনীতে দর্শকেরা নীরব ছিলেন—কোনো হাসি, কান্না বা করতালি ছিল না। চলচ্চিত্র লেখক অনুপমা চোপড়া তাঁর ‘শোলে: দ্য মেকিং অব অ্যা ক্ল্যাসিক’ বইয়ে লিখেছেন, ‘শুধু নীরবতা।’ সপ্তাহান্তে প্রেক্ষাগৃহগুলো পূর্ণ হলেও দর্শকদের প্রতিক্রিয়া অনিশ্চিত ছিল। সংশ্লিষ্টদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছিল।
পরের কয়েক সপ্তাহের মধ্যে দর্শকেরা ছবিটি গ্রহণ করতে শুরু করেন এবং মুখে মুখে সুনাম ছড়িয়ে পড়ে। অনুপমা চোপড়া লিখেছেন, ‘ভিজ্যুয়ালগুলো ছিল মহাকাব্যিক এবং শব্দ ছিল জাদুকরী...তৃতীয় সপ্তাহের মধ্যে দর্শকেরা সংলাপগুলো আওড়াচ্ছিল। এর মানে হলো, কিছু দর্শক অন্তত দ্বিতীয়বারের মতো ছবিটি দেখতে আসছিল।’
‘শোলে’ মুক্তির এক মাস পর, পলিডর একটি ৪৮ মিনিটের সংলাপ রেকর্ড প্রকাশ করে—এবং পরিস্থিতি পাল্টে যায়। ছবির চরিত্রগুলো আইকনিক হয়ে ওঠে। গব্বর সিং—এক ‘সত্যিই ভীতিকর, কিন্তু ব্যাপক জনপ্রিয়’ খলনায়ক—একটি সাংস্কৃতিক ফেনোমেনা হিসেবে আবির্ভূত হন। বিদেশি সমালোচকেরা এটিকে ভারতের প্রথম ‘কারি ওয়েস্টার্ন’ বলে অভিহিত করেন।
মুম্বাইয়ের মিনার্ভা থিয়েটারে ‘শোলে’ পাঁচ বছরেরও বেশি সময় ধরে চলেছিল—তিন বছর নিয়মিত শোতে এবং দুই বছর ম্যাটিনি শোতে। এমনকি ২৪০ তম সপ্তাহেও শো ছিল হাউসফুল। ২০১৫ সালের এপ্রিলে, ৪০ বছর পুরোনো হওয়া সত্ত্বেও, ‘শোলে’ পাকিস্তানের প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পায় এবং ২০০২ সালের ‘দেবদাস’-এর মতো এক দশকেরও বেশি পুরোনো বেশির ভাগ ভারতীয় ছবিকে ছাপিয়ে যায়।
পঞ্চাশ বছর পরেও কেন ‘শোলে’ দর্শকদের মন জয় করে চলেছে? অমিতাভ বচ্চন এক সাক্ষাৎকারে এর একটি সহজ, কিন্তু গভীর উত্তর দিয়েছেন: ‘ভালো এবং মন্দের জয়... এবং সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ, তিন ঘণ্টার মধ্যে পয়েটিক জাস্টিস! যা আপনি এবং আমি সারা জীবনেও পাব না।’
আজকের পত্রিকা ডেস্ক

ভারতীয় সিনেমার ইতিহাসে এক নতুন অধ্যায়ের সূচনা হতে চলেছে। ভারতীয় চলচ্চিত্রপ্রেমীদের জন্য এক ঐতিহাসিক মুহূর্তের সাক্ষী হতে যাচ্ছে ইতালির বোলোগনা শহর। আজ শুক্রবার (স্থানীয় সময়) ‘ইল সিনেমা রিট্রোভাটো’ উৎসবে বিশ্ব প্রিমিয়ার হতে যাচ্ছে রমেশ সিপ্পি পরিচালিত ১৯৭৫ সালের জনপ্রিয় হিন্দি ছবি ‘শোলে’র সম্পূর্ণ পুনরুদ্ধারকৃত ও আনকাট সংস্করণ। পঞ্চাশ বছর আগে মুক্তি পেয়ে ভারতীয় সিনেমা জগতে যে ঝড় তুলেছিল ‘শোলে’, এই নতুন সংস্করণ সেই উন্মাদনা আবার ফিরিয়ে আনছে।
এই নতুন সংস্করণে দর্শকেরা দেখতে পাবেন ছবির আসল সমাপ্তি, যা সেন্সর বোর্ডের আপত্তির কারণে পরিবর্তন করা হয়েছিল। সেই সঙ্গে কিছু বাদ পড়া দৃশ্যও থাকবে নতুন সংস্করণে। উৎসবের উন্মুক্ত প্রাঙ্গণ পিয়াজ্জা ম্যাগিওরে-তে এই প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়েছে। এটি ইউরোপের অন্যতম বৃহত্তম উন্মুক্ত মঞ্চ।
ভারতীয় সিনেমায় ওয়েস্টার্ন ও সামুরাই ছায়া
চিত্রনাট্য লেখক জুটি সেলিম-জাভেদের হাতে রচিত, ‘শোলে’তে অভিনয় করেছেন সেই সময়ের সব বড় তারকারা—অমিতাভ বচ্চন, ধর্মেন্দ্র, হেমা মালিনী, জয়া ভাদুড়ি, সঞ্জীব কুমার এবং গব্বর সিং চরিত্রে আমজাদ খান (প্রয়াত)। ছবিটি ওয়েস্টার্ন ও সামুরাই ক্ল্যাসিক থেকে অনুপ্রাণিত হলেও, এটি ভারতীয় আত্মীকরণে অনন্য। ২০৪ মিনিটের এই চলচ্চিত্রটি মূলত রামগড় নামের একটি কাল্পনিক গ্রামে দুই ছোটখাটো মাস্তান জয় ও বীরুর (অমিতাভ বচ্চন ও ধর্মেন্দ্র) গল্প। তাঁরা একজন সাবেক জেলার, ঠাকুর বলদেব সিং-এর ভাড়াটে নিযুক্ত হন কুখ্যাত ডাকাত গব্বর সিংকে দমন করার জন্য। গব্বর সিং ভারতীয় সিনেমার অন্যতম আইকনিক খলনায়ক।
মুক্তির পর, মুম্বাইয়ের ১ হাজার ৫০০ আসনের মিনার্ভা থিয়েটারে ছবিটি টানা পাঁচ বছর প্রদর্শিত হয়। বিবিসি ইন্ডিয়ার অনলাইন জরিপে এটিকে ‘সহস্রাব্দের সেরা চলচ্চিত্র’ এবং ব্রিটিশ ফিল্ম ইনস্টিটিউটের জরিপে ‘সর্বকালের সেরা ভারতীয় চলচ্চিত্র’ হিসেবে নির্বাচিত হয়। আর. ডি. বর্মনের সংগীত এবং ছবির সংলাপের ৫ লাখ রেকর্ড ও ক্যাসেট বিক্রি হয়েছিল।

‘শোলে’ শুধু একটি চলচ্চিত্র নয়, এটি একটি সাংস্কৃতিক ফেনোমেনা। এর সংলাপ এখনো বিভিন্ন বিয়ের অনুষ্ঠানে উদ্ধৃত হয়, রাজনৈতিক বক্তৃতায় ব্যবহৃত হয়, বিজ্ঞাপনে প্যারোডি করা হয়। ছবিতে একটি ছোটখাটো মাস্তানের চরিত্রে অভিনয় করা ধর্মেন্দ্র সম্প্রতি এক বিবৃতিতে বলেন, ‘শোলে হলো বিশ্বের অষ্টম আশ্চর্য।’ অমিতাভ বচ্চন ছবিটি শুটিংয়ের অভিজ্ঞতাকে ‘অবিস্মরণীয়’ বলে বর্ণনা করেছেন। তিনি বলেন, ‘যদিও তখন আমার কোনো ধারণা ছিল না যে এটি ভারতীয় সিনেমার ইতিহাসে একটি যুগান্তকারী মুহূর্ত হয়ে উঠবে।’
পুরো সিনেমাটি যেভাবে পুনরুদ্ধার করা হলো
ফিল্ম হেরিটেজ ফাউন্ডেশনের শিবেন্দ্র সিং দুঙ্গারপুর জানিয়েছেন, এই নতুন সংস্করণটিই ‘শোলে’র সবচেয়ে অথেনটিক রূপ। কারণ এতে সিনেমার প্রকৃত সমাপ্তি এবং আগে কখনো না দেখা বাদ পড়া দৃশ্যগুলো রয়েছে।

মূল গল্পে, ঠাকুর গব্বরকে তাঁর কাঁটাযুক্ত জুতো দিয়ে পিষে মেরে ফেলে। কিন্তু সেন্সর বোর্ড এতে আপত্তি জানায়। একজন সাবেক পুলিশ কর্মকর্তা আইন নিজের হাতে তুলে নিচ্ছেন, এই ধারণায় তাঁরা আপত্তি করেন। তাঁদের কাছে ছবির স্টাইলিশ সহিংসতাও অতিরিক্ত মনে হয়েছিল। জরুরি অবস্থার সময় ছবিটি মুক্তি পাওয়ায় সেন্সরের কড়াকড়ি ছিল অনেক বেশি।
সেন্সর বোর্ডের সঙ্গে বোঝাপড়ার চেষ্টা ব্যর্থ হলে, পরিচালক সিপ্পিকে সমাপ্তি দৃশ্যটি পুনরায় শুট করতে বাধ্য করা হয়। অভিনেতাদের নিয়ে দ্রুত দক্ষিণ ভারতের রামানাগারাম-এর পাহাড়ে ফিরে যেতে হয়। এটিই ছবিতে রামগড় গ্রাম। নতুন এবং অপেক্ষাকৃত কম সহিংস সমাপ্তিতে গব্বর সিংকে হত্যা না করে বন্দী করা হয়। এরপরই ছবিটি সেন্সরের ছাড়পত্র পায়।
এই মহাকাব্যিক চলচ্চিত্রটির তিন বছরের পুনরুদ্ধার প্রক্রিয়া মোটেও সহজ ছিল না। ছবির মূল ৭০ মিলিমিটারের প্রিন্টগুলো নষ্ট হয়ে গিয়েছিল, ক্যামেরার নেগেটিভগুলোও মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত অবস্থায় ছিল।
২০২২ সালে, রমেশ সিপ্পির ছেলে শেহজাদ সিপ্পি ছবিটি পুনরুদ্ধার করার প্রস্তাব নিয়ে মুম্বাই-ভিত্তিক ফিল্ম হেরিটেজ ফাউন্ডেশনের কাছে যান। তিনি জানান, ছবির কিছু উপাদান মুম্বাইয়ের একটি গুদামে সংরক্ষিত আছে। এটি প্রথমে একটি ঝুঁকিপূর্ণ কাজ মনে হলেও, পরে প্রায় অলৌকিকভাবে মিলে যায়: লেবেলবিহীন ক্যানগুলোর ভেতর পাওয়া যায় আসল ৩৫ মিলিমিটারের ক্যামেরা ও সাউন্ড নেগেটিভ!

সিপ্পি ফিল্মস ফাউন্ডেশনকে জানায়, যুক্তরাজ্যের একটি গুদামেও অতিরিক্ত রিল সংরক্ষিত আছে। ব্রিটিশ ফিল্ম ইনস্টিটিউটের সহায়তায়, দলটি সেই আর্কাইভের উপাদানগুলো সংগ্রহ করে। এরপর সেগুলো অত্যন্ত সতর্কতার সঙ্গে বোলোগনার এল’ইমাজিন রিট্রোভাটা-তে পাঠানো হয়। এটি বিশ্বের অন্যতম সেরা চলচ্চিত্র পুনরুদ্ধার কেন্দ্র।
আশ্চর্যের বিষয়, মুক্তির প্রথম দিকে ‘শোলে’র যাত্রা মসৃণ ছিল না। প্রাথমিক রিভিউগুলো ছিল নেতিবাচক, বক্স অফিস ছিল নড়বড়ে, ৭০ মিলিমিটারের প্রিন্ট কাস্টমসে আটকে গিয়েছিল।
ইন্ডিয়া টুডে ম্যাগাজিন ছবিটি সম্পর্কে লিখেছিল ‘একটি নিভে যাওয়া অঙ্গার’। ফিল্মফেয়ার-এর বিক্রম সিং লিখেছিলেন, ছবির মূল সমস্যা ছিল ‘ব্যর্থ প্রচেষ্টা, ভারতীয় প্রেক্ষাপটে একটি ওয়েস্টার্ন সিনেমা জুড়ে দেওয়া চেষ্টা করা হয়েছে।’ প্রাথমিক প্রদর্শনীতে দর্শকেরা নীরব ছিলেন—কোনো হাসি, কান্না বা করতালি ছিল না। চলচ্চিত্র লেখক অনুপমা চোপড়া তাঁর ‘শোলে: দ্য মেকিং অব অ্যা ক্ল্যাসিক’ বইয়ে লিখেছেন, ‘শুধু নীরবতা।’ সপ্তাহান্তে প্রেক্ষাগৃহগুলো পূর্ণ হলেও দর্শকদের প্রতিক্রিয়া অনিশ্চিত ছিল। সংশ্লিষ্টদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছিল।
পরের কয়েক সপ্তাহের মধ্যে দর্শকেরা ছবিটি গ্রহণ করতে শুরু করেন এবং মুখে মুখে সুনাম ছড়িয়ে পড়ে। অনুপমা চোপড়া লিখেছেন, ‘ভিজ্যুয়ালগুলো ছিল মহাকাব্যিক এবং শব্দ ছিল জাদুকরী...তৃতীয় সপ্তাহের মধ্যে দর্শকেরা সংলাপগুলো আওড়াচ্ছিল। এর মানে হলো, কিছু দর্শক অন্তত দ্বিতীয়বারের মতো ছবিটি দেখতে আসছিল।’
‘শোলে’ মুক্তির এক মাস পর, পলিডর একটি ৪৮ মিনিটের সংলাপ রেকর্ড প্রকাশ করে—এবং পরিস্থিতি পাল্টে যায়। ছবির চরিত্রগুলো আইকনিক হয়ে ওঠে। গব্বর সিং—এক ‘সত্যিই ভীতিকর, কিন্তু ব্যাপক জনপ্রিয়’ খলনায়ক—একটি সাংস্কৃতিক ফেনোমেনা হিসেবে আবির্ভূত হন। বিদেশি সমালোচকেরা এটিকে ভারতের প্রথম ‘কারি ওয়েস্টার্ন’ বলে অভিহিত করেন।
মুম্বাইয়ের মিনার্ভা থিয়েটারে ‘শোলে’ পাঁচ বছরেরও বেশি সময় ধরে চলেছিল—তিন বছর নিয়মিত শোতে এবং দুই বছর ম্যাটিনি শোতে। এমনকি ২৪০ তম সপ্তাহেও শো ছিল হাউসফুল। ২০১৫ সালের এপ্রিলে, ৪০ বছর পুরোনো হওয়া সত্ত্বেও, ‘শোলে’ পাকিস্তানের প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পায় এবং ২০০২ সালের ‘দেবদাস’-এর মতো এক দশকেরও বেশি পুরোনো বেশির ভাগ ভারতীয় ছবিকে ছাপিয়ে যায়।
পঞ্চাশ বছর পরেও কেন ‘শোলে’ দর্শকদের মন জয় করে চলেছে? অমিতাভ বচ্চন এক সাক্ষাৎকারে এর একটি সহজ, কিন্তু গভীর উত্তর দিয়েছেন: ‘ভালো এবং মন্দের জয়... এবং সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ, তিন ঘণ্টার মধ্যে পয়েটিক জাস্টিস! যা আপনি এবং আমি সারা জীবনেও পাব না।’

ভারতীয় সিনেমার ইতিহাসে এক নতুন অধ্যায়ের সূচনা হতে চলেছে। ভারতীয় চলচ্চিত্রপ্রেমীদের জন্য এক ঐতিহাসিক মুহূর্তের সাক্ষী হতে যাচ্ছে ইতালির বোলোগনা শহর। আজ শুক্রবার (স্থানীয় সময়) ‘ইল সিনেমা রিট্রোভাটো’ উৎসবে বিশ্ব প্রিমিয়ার হতে যাচ্ছে রমেশ সিপ্পি পরিচালিত ১৯৭৫ সালের জনপ্রিয় হিন্দি ছবি ‘শোলে’র সম্পূর্ণ পুনরুদ্ধারকৃত ও আনকাট সংস্করণ। পঞ্চাশ বছর আগে মুক্তি পেয়ে ভারতীয় সিনেমা জগতে যে ঝড় তুলেছিল ‘শোলে’, এই নতুন সংস্করণ সেই উন্মাদনা আবার ফিরিয়ে আনছে।
এই নতুন সংস্করণে দর্শকেরা দেখতে পাবেন ছবির আসল সমাপ্তি, যা সেন্সর বোর্ডের আপত্তির কারণে পরিবর্তন করা হয়েছিল। সেই সঙ্গে কিছু বাদ পড়া দৃশ্যও থাকবে নতুন সংস্করণে। উৎসবের উন্মুক্ত প্রাঙ্গণ পিয়াজ্জা ম্যাগিওরে-তে এই প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়েছে। এটি ইউরোপের অন্যতম বৃহত্তম উন্মুক্ত মঞ্চ।
ভারতীয় সিনেমায় ওয়েস্টার্ন ও সামুরাই ছায়া
চিত্রনাট্য লেখক জুটি সেলিম-জাভেদের হাতে রচিত, ‘শোলে’তে অভিনয় করেছেন সেই সময়ের সব বড় তারকারা—অমিতাভ বচ্চন, ধর্মেন্দ্র, হেমা মালিনী, জয়া ভাদুড়ি, সঞ্জীব কুমার এবং গব্বর সিং চরিত্রে আমজাদ খান (প্রয়াত)। ছবিটি ওয়েস্টার্ন ও সামুরাই ক্ল্যাসিক থেকে অনুপ্রাণিত হলেও, এটি ভারতীয় আত্মীকরণে অনন্য। ২০৪ মিনিটের এই চলচ্চিত্রটি মূলত রামগড় নামের একটি কাল্পনিক গ্রামে দুই ছোটখাটো মাস্তান জয় ও বীরুর (অমিতাভ বচ্চন ও ধর্মেন্দ্র) গল্প। তাঁরা একজন সাবেক জেলার, ঠাকুর বলদেব সিং-এর ভাড়াটে নিযুক্ত হন কুখ্যাত ডাকাত গব্বর সিংকে দমন করার জন্য। গব্বর সিং ভারতীয় সিনেমার অন্যতম আইকনিক খলনায়ক।
মুক্তির পর, মুম্বাইয়ের ১ হাজার ৫০০ আসনের মিনার্ভা থিয়েটারে ছবিটি টানা পাঁচ বছর প্রদর্শিত হয়। বিবিসি ইন্ডিয়ার অনলাইন জরিপে এটিকে ‘সহস্রাব্দের সেরা চলচ্চিত্র’ এবং ব্রিটিশ ফিল্ম ইনস্টিটিউটের জরিপে ‘সর্বকালের সেরা ভারতীয় চলচ্চিত্র’ হিসেবে নির্বাচিত হয়। আর. ডি. বর্মনের সংগীত এবং ছবির সংলাপের ৫ লাখ রেকর্ড ও ক্যাসেট বিক্রি হয়েছিল।

‘শোলে’ শুধু একটি চলচ্চিত্র নয়, এটি একটি সাংস্কৃতিক ফেনোমেনা। এর সংলাপ এখনো বিভিন্ন বিয়ের অনুষ্ঠানে উদ্ধৃত হয়, রাজনৈতিক বক্তৃতায় ব্যবহৃত হয়, বিজ্ঞাপনে প্যারোডি করা হয়। ছবিতে একটি ছোটখাটো মাস্তানের চরিত্রে অভিনয় করা ধর্মেন্দ্র সম্প্রতি এক বিবৃতিতে বলেন, ‘শোলে হলো বিশ্বের অষ্টম আশ্চর্য।’ অমিতাভ বচ্চন ছবিটি শুটিংয়ের অভিজ্ঞতাকে ‘অবিস্মরণীয়’ বলে বর্ণনা করেছেন। তিনি বলেন, ‘যদিও তখন আমার কোনো ধারণা ছিল না যে এটি ভারতীয় সিনেমার ইতিহাসে একটি যুগান্তকারী মুহূর্ত হয়ে উঠবে।’
পুরো সিনেমাটি যেভাবে পুনরুদ্ধার করা হলো
ফিল্ম হেরিটেজ ফাউন্ডেশনের শিবেন্দ্র সিং দুঙ্গারপুর জানিয়েছেন, এই নতুন সংস্করণটিই ‘শোলে’র সবচেয়ে অথেনটিক রূপ। কারণ এতে সিনেমার প্রকৃত সমাপ্তি এবং আগে কখনো না দেখা বাদ পড়া দৃশ্যগুলো রয়েছে।

মূল গল্পে, ঠাকুর গব্বরকে তাঁর কাঁটাযুক্ত জুতো দিয়ে পিষে মেরে ফেলে। কিন্তু সেন্সর বোর্ড এতে আপত্তি জানায়। একজন সাবেক পুলিশ কর্মকর্তা আইন নিজের হাতে তুলে নিচ্ছেন, এই ধারণায় তাঁরা আপত্তি করেন। তাঁদের কাছে ছবির স্টাইলিশ সহিংসতাও অতিরিক্ত মনে হয়েছিল। জরুরি অবস্থার সময় ছবিটি মুক্তি পাওয়ায় সেন্সরের কড়াকড়ি ছিল অনেক বেশি।
সেন্সর বোর্ডের সঙ্গে বোঝাপড়ার চেষ্টা ব্যর্থ হলে, পরিচালক সিপ্পিকে সমাপ্তি দৃশ্যটি পুনরায় শুট করতে বাধ্য করা হয়। অভিনেতাদের নিয়ে দ্রুত দক্ষিণ ভারতের রামানাগারাম-এর পাহাড়ে ফিরে যেতে হয়। এটিই ছবিতে রামগড় গ্রাম। নতুন এবং অপেক্ষাকৃত কম সহিংস সমাপ্তিতে গব্বর সিংকে হত্যা না করে বন্দী করা হয়। এরপরই ছবিটি সেন্সরের ছাড়পত্র পায়।
এই মহাকাব্যিক চলচ্চিত্রটির তিন বছরের পুনরুদ্ধার প্রক্রিয়া মোটেও সহজ ছিল না। ছবির মূল ৭০ মিলিমিটারের প্রিন্টগুলো নষ্ট হয়ে গিয়েছিল, ক্যামেরার নেগেটিভগুলোও মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত অবস্থায় ছিল।
২০২২ সালে, রমেশ সিপ্পির ছেলে শেহজাদ সিপ্পি ছবিটি পুনরুদ্ধার করার প্রস্তাব নিয়ে মুম্বাই-ভিত্তিক ফিল্ম হেরিটেজ ফাউন্ডেশনের কাছে যান। তিনি জানান, ছবির কিছু উপাদান মুম্বাইয়ের একটি গুদামে সংরক্ষিত আছে। এটি প্রথমে একটি ঝুঁকিপূর্ণ কাজ মনে হলেও, পরে প্রায় অলৌকিকভাবে মিলে যায়: লেবেলবিহীন ক্যানগুলোর ভেতর পাওয়া যায় আসল ৩৫ মিলিমিটারের ক্যামেরা ও সাউন্ড নেগেটিভ!

সিপ্পি ফিল্মস ফাউন্ডেশনকে জানায়, যুক্তরাজ্যের একটি গুদামেও অতিরিক্ত রিল সংরক্ষিত আছে। ব্রিটিশ ফিল্ম ইনস্টিটিউটের সহায়তায়, দলটি সেই আর্কাইভের উপাদানগুলো সংগ্রহ করে। এরপর সেগুলো অত্যন্ত সতর্কতার সঙ্গে বোলোগনার এল’ইমাজিন রিট্রোভাটা-তে পাঠানো হয়। এটি বিশ্বের অন্যতম সেরা চলচ্চিত্র পুনরুদ্ধার কেন্দ্র।
আশ্চর্যের বিষয়, মুক্তির প্রথম দিকে ‘শোলে’র যাত্রা মসৃণ ছিল না। প্রাথমিক রিভিউগুলো ছিল নেতিবাচক, বক্স অফিস ছিল নড়বড়ে, ৭০ মিলিমিটারের প্রিন্ট কাস্টমসে আটকে গিয়েছিল।
ইন্ডিয়া টুডে ম্যাগাজিন ছবিটি সম্পর্কে লিখেছিল ‘একটি নিভে যাওয়া অঙ্গার’। ফিল্মফেয়ার-এর বিক্রম সিং লিখেছিলেন, ছবির মূল সমস্যা ছিল ‘ব্যর্থ প্রচেষ্টা, ভারতীয় প্রেক্ষাপটে একটি ওয়েস্টার্ন সিনেমা জুড়ে দেওয়া চেষ্টা করা হয়েছে।’ প্রাথমিক প্রদর্শনীতে দর্শকেরা নীরব ছিলেন—কোনো হাসি, কান্না বা করতালি ছিল না। চলচ্চিত্র লেখক অনুপমা চোপড়া তাঁর ‘শোলে: দ্য মেকিং অব অ্যা ক্ল্যাসিক’ বইয়ে লিখেছেন, ‘শুধু নীরবতা।’ সপ্তাহান্তে প্রেক্ষাগৃহগুলো পূর্ণ হলেও দর্শকদের প্রতিক্রিয়া অনিশ্চিত ছিল। সংশ্লিষ্টদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছিল।
পরের কয়েক সপ্তাহের মধ্যে দর্শকেরা ছবিটি গ্রহণ করতে শুরু করেন এবং মুখে মুখে সুনাম ছড়িয়ে পড়ে। অনুপমা চোপড়া লিখেছেন, ‘ভিজ্যুয়ালগুলো ছিল মহাকাব্যিক এবং শব্দ ছিল জাদুকরী...তৃতীয় সপ্তাহের মধ্যে দর্শকেরা সংলাপগুলো আওড়াচ্ছিল। এর মানে হলো, কিছু দর্শক অন্তত দ্বিতীয়বারের মতো ছবিটি দেখতে আসছিল।’
‘শোলে’ মুক্তির এক মাস পর, পলিডর একটি ৪৮ মিনিটের সংলাপ রেকর্ড প্রকাশ করে—এবং পরিস্থিতি পাল্টে যায়। ছবির চরিত্রগুলো আইকনিক হয়ে ওঠে। গব্বর সিং—এক ‘সত্যিই ভীতিকর, কিন্তু ব্যাপক জনপ্রিয়’ খলনায়ক—একটি সাংস্কৃতিক ফেনোমেনা হিসেবে আবির্ভূত হন। বিদেশি সমালোচকেরা এটিকে ভারতের প্রথম ‘কারি ওয়েস্টার্ন’ বলে অভিহিত করেন।
মুম্বাইয়ের মিনার্ভা থিয়েটারে ‘শোলে’ পাঁচ বছরেরও বেশি সময় ধরে চলেছিল—তিন বছর নিয়মিত শোতে এবং দুই বছর ম্যাটিনি শোতে। এমনকি ২৪০ তম সপ্তাহেও শো ছিল হাউসফুল। ২০১৫ সালের এপ্রিলে, ৪০ বছর পুরোনো হওয়া সত্ত্বেও, ‘শোলে’ পাকিস্তানের প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পায় এবং ২০০২ সালের ‘দেবদাস’-এর মতো এক দশকেরও বেশি পুরোনো বেশির ভাগ ভারতীয় ছবিকে ছাপিয়ে যায়।
পঞ্চাশ বছর পরেও কেন ‘শোলে’ দর্শকদের মন জয় করে চলেছে? অমিতাভ বচ্চন এক সাক্ষাৎকারে এর একটি সহজ, কিন্তু গভীর উত্তর দিয়েছেন: ‘ভালো এবং মন্দের জয়... এবং সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ, তিন ঘণ্টার মধ্যে পয়েটিক জাস্টিস! যা আপনি এবং আমি সারা জীবনেও পাব না।’

‘রোকেয়ার স্বপ্নে আজকের সুলতানারা’ প্রযোজনাটির গ্রন্থনা ও নির্দেশনা দিয়েছেন নার্গিস সুলতানা। আবৃত্তি, শ্রুতিকথন আর অভিনয়ে অংশ নেন নার্গিস আক্তার, রেজিনা খন্দকার, জয়া হাওলাদার, আবুল ফজল, তোফাজ্জল হোসেন তপু প্রমুখ।
৭ ঘণ্টা আগে
গত জুলাইয়ে প্রকাশ পেয়েছিল সংগীতশিল্পী নিলয় ও কোনালের গাওয়া গান ‘ময়না’। জনপ্রিয়তা পায় ড্যান্স ঘরানার গানটি। আসিফ ইকবালের লেখা গানটির সুর ও সংগীত আয়োজন করেছিলেন আকাশ সেন। ময়নার পর আবার নতুন গান নিয়ে আসছেন নিলয় ও কোনাল। শিরোনাম ‘ও জান’।
১৮ ঘণ্টা আগে
বছরজুড়ে রাজনীতির গতিপ্রবাহ আর নির্বাচন ছিল দেশের মানুষের মূল আলোচনার বিষয়। ফলে দর্শকদের আগ্রহের প্রায় সবটা দখল করেছে রাজনৈতিক টক শো। টেলিভিশন হোক কিংবা ইউটিউব, রাজনৈতিক সেলিব্রিটি কিংবা বক্তাদের কথাই ভিউ পেয়েছে বেশি। ব্যাকফুটে চলে গেছে বিনোদনমূলক অনুষ্ঠান।
১৮ ঘণ্টা আগে
অক্টোবরে তানজিন তিশার বিরুদ্ধে প্রতারণার অভিযোগ করে একটি অনলাইন ফ্যাশন হাউস। প্রতিষ্ঠানটির দাবি, তিশা শাড়ি নিয়েছেন, কিন্তু শর্ত অনুযায়ী সেই শাড়ি পরে ছবি তুলে ফেসবুকে প্রমোশন করেননি। এই ঘটনায় তিশার বিরুদ্ধে মামলা করে প্রতিষ্ঠানটি। পরে আরও একজন উদ্যোক্তা তিশার বিরুদ্ধে একই অভিযোগ করেন।
১৮ ঘণ্টা আগেবিনোদন প্রতিবেদক, ঢাকা

নারী জাগরণের অগ্রদূত বেগম রোকেয়া সাখাওয়াতের জন্ম ও মৃত্যুদিবস ৯ ডিসেম্বর। এই উপলক্ষে বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের ইসফেন্দিয়ার জাহেদ হাসান মিলনায়তনে গত শুক্রবার (২৬ ডিসেম্বর) আয়োজন করা হয় ‘রোকেয়ার স্বপ্নে আজকের সুলতানারা’ শিরোনামের কাব্যনাটকের প্রদর্শনী।
সাহিত্য-সংস্কৃতির সৃজনশীল প্ল্যাটফর্ম ‘লেখার পোকা’র পৃষ্ঠপোষকতায় আয়োজিত রোকেয়ার স্বপ্নে আজকের সুলতানারা কাব্যনাট্যে আবৃত্তি, শ্রুতিকথন আর অভিনয়ে অংশ নেন নার্গিস আক্তার, রেজিনা খন্দকার, জয়া হাওলাদার, আবুল ফজল, তোফাজ্জল হোসেন তপু, সুজন রেহমান, নূরাইশা হাসান সামিয়া, মীর উমাইয়া হক পদ্ম, উম্মে হাবিবা শিবলী, অদ্রিতা ভদ্র ও নার্গিস সুলতানা।
প্রযোজনাটির গ্রন্থনা ও নির্দেশনা দিয়েছেন নার্গিস সুলতানা। পোশাক পরিকল্পনা ও সার্বিক তত্ত্বাবধানেও ছিলেন তিনি। আবহসংগীত করেছেন আরেফিন নিপুন ও মাজহারুল তুষার। দেড় ঘণ্টার এই আয়োজনে হলভর্তি দর্শক পিনপতন নীরবতায় উপভোগ করেন কবিতা, আবৃত্তি, শ্রুতিনাট্য ও অভিনয়ের সম্মিলিত শিল্পভাষা।
বেগম রোকেয়াকে নিয়ে এই আয়োজন প্রসঙ্গে নির্দেশক নার্গিস সুলতানা বলেন, ‘বেগম রোকেয়ার সাহসী ও ক্ষুরধার লেখা এবং তাঁর দূরদর্শী চিন্তা-চেতনা ও দর্শনই আমাদের রোকেয়ার স্বপ্নে আজকের সুলতানারা অনুষ্ঠানের মূল ভিত্তি। সমাজে নারীর বর্তমান অবস্থান ও তার স্বপ্নের বাস্তবায়ন কতটুকু হয়েছে, সেই বিষয়ে আলোকপাত করার চেষ্টা করেছি আমাদের এই প্রযোজনায়।’
নার্গিস সুলতানা আরও বলেন, ‘আজ শত বছর পরে, এই তথাকথিত প্রগতিশীল সমাজে দাঁড়িয়ে আমাদের জিজ্ঞাসা, আজকের সুলতানারা কেমন আছেন? রোকেয়ার স্বপ্ন কতখানি বাস্তবে রূপ নিয়েছে? আজকের নারী কি সত্যিই অবাদী হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হতে পেরেছে না রোকেয়ার সুলতানারা এখনো নিজেদের অধিকার ও অস্তিত্বের লড়াইয়ে ব্যতিব্যস্ত! এসব প্রশ্নের উত্তরই এই কাব্যনাটকে খোঁজার চেষ্টা করা হয়েছে।’
যেসব নারী রোকেয়ার সেই স্বপ্নের পৃথিবীকে বাস্তবে পরিণত করতে লড়াই-সংগ্রামে সোচ্চার রয়েছেন, সেসব রোকেয়া-অনুরাগীর জন্য অনুষ্ঠানটি উৎসর্গ করা হয়েছে বলে জানান নির্দেশক।

নারী জাগরণের অগ্রদূত বেগম রোকেয়া সাখাওয়াতের জন্ম ও মৃত্যুদিবস ৯ ডিসেম্বর। এই উপলক্ষে বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের ইসফেন্দিয়ার জাহেদ হাসান মিলনায়তনে গত শুক্রবার (২৬ ডিসেম্বর) আয়োজন করা হয় ‘রোকেয়ার স্বপ্নে আজকের সুলতানারা’ শিরোনামের কাব্যনাটকের প্রদর্শনী।
সাহিত্য-সংস্কৃতির সৃজনশীল প্ল্যাটফর্ম ‘লেখার পোকা’র পৃষ্ঠপোষকতায় আয়োজিত রোকেয়ার স্বপ্নে আজকের সুলতানারা কাব্যনাট্যে আবৃত্তি, শ্রুতিকথন আর অভিনয়ে অংশ নেন নার্গিস আক্তার, রেজিনা খন্দকার, জয়া হাওলাদার, আবুল ফজল, তোফাজ্জল হোসেন তপু, সুজন রেহমান, নূরাইশা হাসান সামিয়া, মীর উমাইয়া হক পদ্ম, উম্মে হাবিবা শিবলী, অদ্রিতা ভদ্র ও নার্গিস সুলতানা।
প্রযোজনাটির গ্রন্থনা ও নির্দেশনা দিয়েছেন নার্গিস সুলতানা। পোশাক পরিকল্পনা ও সার্বিক তত্ত্বাবধানেও ছিলেন তিনি। আবহসংগীত করেছেন আরেফিন নিপুন ও মাজহারুল তুষার। দেড় ঘণ্টার এই আয়োজনে হলভর্তি দর্শক পিনপতন নীরবতায় উপভোগ করেন কবিতা, আবৃত্তি, শ্রুতিনাট্য ও অভিনয়ের সম্মিলিত শিল্পভাষা।
বেগম রোকেয়াকে নিয়ে এই আয়োজন প্রসঙ্গে নির্দেশক নার্গিস সুলতানা বলেন, ‘বেগম রোকেয়ার সাহসী ও ক্ষুরধার লেখা এবং তাঁর দূরদর্শী চিন্তা-চেতনা ও দর্শনই আমাদের রোকেয়ার স্বপ্নে আজকের সুলতানারা অনুষ্ঠানের মূল ভিত্তি। সমাজে নারীর বর্তমান অবস্থান ও তার স্বপ্নের বাস্তবায়ন কতটুকু হয়েছে, সেই বিষয়ে আলোকপাত করার চেষ্টা করেছি আমাদের এই প্রযোজনায়।’
নার্গিস সুলতানা আরও বলেন, ‘আজ শত বছর পরে, এই তথাকথিত প্রগতিশীল সমাজে দাঁড়িয়ে আমাদের জিজ্ঞাসা, আজকের সুলতানারা কেমন আছেন? রোকেয়ার স্বপ্ন কতখানি বাস্তবে রূপ নিয়েছে? আজকের নারী কি সত্যিই অবাদী হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হতে পেরেছে না রোকেয়ার সুলতানারা এখনো নিজেদের অধিকার ও অস্তিত্বের লড়াইয়ে ব্যতিব্যস্ত! এসব প্রশ্নের উত্তরই এই কাব্যনাটকে খোঁজার চেষ্টা করা হয়েছে।’
যেসব নারী রোকেয়ার সেই স্বপ্নের পৃথিবীকে বাস্তবে পরিণত করতে লড়াই-সংগ্রামে সোচ্চার রয়েছেন, সেসব রোকেয়া-অনুরাগীর জন্য অনুষ্ঠানটি উৎসর্গ করা হয়েছে বলে জানান নির্দেশক।

ভারতীয় সিনেমার ইতিহাসে এক নতুন অধ্যায়ের সূচনা হতে চলেছে। ভারতীয় চলচ্চিত্রপ্রেমীদের জন্য এক ঐতিহাসিক মুহূর্তের সাক্ষী হতে যাচ্ছে ইতালির বোলোগনা শহর। আজ শুক্রবার (স্থানীয় সময়) ‘ইল সিনেমা রিট্রোভাটো’ উৎসবে বিশ্ব প্রিমিয়ার হতে যাচ্ছে রমেশ সিপ্পি পরিচালিত ১৯৭৫ সালের জনপ্রিয় হিন্দি ছবি ‘শোলে’র...
২৭ জুন ২০২৫
গত জুলাইয়ে প্রকাশ পেয়েছিল সংগীতশিল্পী নিলয় ও কোনালের গাওয়া গান ‘ময়না’। জনপ্রিয়তা পায় ড্যান্স ঘরানার গানটি। আসিফ ইকবালের লেখা গানটির সুর ও সংগীত আয়োজন করেছিলেন আকাশ সেন। ময়নার পর আবার নতুন গান নিয়ে আসছেন নিলয় ও কোনাল। শিরোনাম ‘ও জান’।
১৮ ঘণ্টা আগে
বছরজুড়ে রাজনীতির গতিপ্রবাহ আর নির্বাচন ছিল দেশের মানুষের মূল আলোচনার বিষয়। ফলে দর্শকদের আগ্রহের প্রায় সবটা দখল করেছে রাজনৈতিক টক শো। টেলিভিশন হোক কিংবা ইউটিউব, রাজনৈতিক সেলিব্রিটি কিংবা বক্তাদের কথাই ভিউ পেয়েছে বেশি। ব্যাকফুটে চলে গেছে বিনোদনমূলক অনুষ্ঠান।
১৮ ঘণ্টা আগে
অক্টোবরে তানজিন তিশার বিরুদ্ধে প্রতারণার অভিযোগ করে একটি অনলাইন ফ্যাশন হাউস। প্রতিষ্ঠানটির দাবি, তিশা শাড়ি নিয়েছেন, কিন্তু শর্ত অনুযায়ী সেই শাড়ি পরে ছবি তুলে ফেসবুকে প্রমোশন করেননি। এই ঘটনায় তিশার বিরুদ্ধে মামলা করে প্রতিষ্ঠানটি। পরে আরও একজন উদ্যোক্তা তিশার বিরুদ্ধে একই অভিযোগ করেন।
১৮ ঘণ্টা আগেবিনোদন প্রতিবেদক, ঢাকা

গত জুলাইয়ে প্রকাশ পেয়েছিল সংগীতশিল্পী নিলয় ও কোনালের গাওয়া গান ‘ময়না’। জনপ্রিয়তা পায় ড্যান্স ঘরানার গানটি। আসিফ ইকবালের লেখা গানটির সুর ও সংগীত আয়োজন করেছিলেন আকাশ সেন। ময়নার পর আবার নতুন গান নিয়ে আসছেন নিলয় ও কোনাল। শিরোনাম ‘ও জান’। ইংরেজি নতুন বছর উপলক্ষে ১ জানুয়ারি গানচিল মিউজিক ইউটিউব চ্যানেলে প্রকাশ পাবে গানটি।
ময়নার মতো ‘ও জান’ গানটিও লিখেছেন আসিফ ইকবাল। তবে পরিবর্তন এসেছে সুরকার ও সংগীত আয়োজকের ক্ষেত্রে। ও জান যৌথভাবে সুর করেছেন আভ্রাল সাহির ও পশ্চিমবঙ্গের লিংকন। সংগীত আয়োজন করেছেন আভ্রাল সাহির। আসিফ ইকবাল বলেন, ‘ময়না গানের সাফল্যের পর তার ধারাবাহিকতায় আমরা ও জান গানটি নিয়ে আসছি। ময়না ছিল একটি ড্যান্স নাম্বার গান। ও জান হচ্ছে একেবারে পিউর রোমান্টিক গান। গানের কথা, গায়কী, সুর, সংগীত আয়োজন ও ভিডিও—সবকিছুতেই নতুন সংযোজন থাকবে।’
কোনাল বলেন, ‘ময়না গানটিতে কণ্ঠ দেওয়ার সময়ই বলেছিলাম, এটি জনপ্রিয়তা পাবে; পেয়েছেও। ওটি ছিল নাচের গান। এবার আমরা আসছি রোমান্টিক ঘরানার গান নিয়ে। আমার বিশ্বাস, গানটি আগের গানের রেকর্ড ভেঙে দেবে। সবার ভালো লাগবে।’
নিলয় বলেন, ‘আসিফ ইকবাল ভাই রোমান্টিক গান অসাধারণ লেখেন। ও জান গানটিও দারুণ লিখেছেন। সুর ও সংগীত আয়োজনও ভালো হয়েছে। ভিডিওতেও আছে চমক। সব মিলিয়ে নতুন এই গান নিয়ে দারুণ আশাবাদী আমি।’
সিনেম্যাটিক আয়োজনে ময়না গানের ভিডিও নির্দেশনা দিয়েছিলেন তানিম রহমান অংশু। ভিডিওতে দেখা মিলেছিল শবনম বুবলী ও শরাফ আহমেদের জীবনের। এবারও ভিডিও নির্মাণে থাকছেন অংশু। নির্মাতা জানান, এবারের ভিডিওতে থাকছে নানা চমক। শুটিং লোকেশনেও ভিন্নতা থাকবে। তবে এখনই জানাতে চান না গানের ভিডিওতে কে থাকছেন মডেল হিসেবে।
ও জান গানচিল মিউজিকের ‘বাংলা অরিজিনালস’ প্রজেক্টের দ্বিতীয় গান। ময়না গান দিয়ে শুরু হয়েছে নতুন এই প্রজেক্ট।

গত জুলাইয়ে প্রকাশ পেয়েছিল সংগীতশিল্পী নিলয় ও কোনালের গাওয়া গান ‘ময়না’। জনপ্রিয়তা পায় ড্যান্স ঘরানার গানটি। আসিফ ইকবালের লেখা গানটির সুর ও সংগীত আয়োজন করেছিলেন আকাশ সেন। ময়নার পর আবার নতুন গান নিয়ে আসছেন নিলয় ও কোনাল। শিরোনাম ‘ও জান’। ইংরেজি নতুন বছর উপলক্ষে ১ জানুয়ারি গানচিল মিউজিক ইউটিউব চ্যানেলে প্রকাশ পাবে গানটি।
ময়নার মতো ‘ও জান’ গানটিও লিখেছেন আসিফ ইকবাল। তবে পরিবর্তন এসেছে সুরকার ও সংগীত আয়োজকের ক্ষেত্রে। ও জান যৌথভাবে সুর করেছেন আভ্রাল সাহির ও পশ্চিমবঙ্গের লিংকন। সংগীত আয়োজন করেছেন আভ্রাল সাহির। আসিফ ইকবাল বলেন, ‘ময়না গানের সাফল্যের পর তার ধারাবাহিকতায় আমরা ও জান গানটি নিয়ে আসছি। ময়না ছিল একটি ড্যান্স নাম্বার গান। ও জান হচ্ছে একেবারে পিউর রোমান্টিক গান। গানের কথা, গায়কী, সুর, সংগীত আয়োজন ও ভিডিও—সবকিছুতেই নতুন সংযোজন থাকবে।’
কোনাল বলেন, ‘ময়না গানটিতে কণ্ঠ দেওয়ার সময়ই বলেছিলাম, এটি জনপ্রিয়তা পাবে; পেয়েছেও। ওটি ছিল নাচের গান। এবার আমরা আসছি রোমান্টিক ঘরানার গান নিয়ে। আমার বিশ্বাস, গানটি আগের গানের রেকর্ড ভেঙে দেবে। সবার ভালো লাগবে।’
নিলয় বলেন, ‘আসিফ ইকবাল ভাই রোমান্টিক গান অসাধারণ লেখেন। ও জান গানটিও দারুণ লিখেছেন। সুর ও সংগীত আয়োজনও ভালো হয়েছে। ভিডিওতেও আছে চমক। সব মিলিয়ে নতুন এই গান নিয়ে দারুণ আশাবাদী আমি।’
সিনেম্যাটিক আয়োজনে ময়না গানের ভিডিও নির্দেশনা দিয়েছিলেন তানিম রহমান অংশু। ভিডিওতে দেখা মিলেছিল শবনম বুবলী ও শরাফ আহমেদের জীবনের। এবারও ভিডিও নির্মাণে থাকছেন অংশু। নির্মাতা জানান, এবারের ভিডিওতে থাকছে নানা চমক। শুটিং লোকেশনেও ভিন্নতা থাকবে। তবে এখনই জানাতে চান না গানের ভিডিওতে কে থাকছেন মডেল হিসেবে।
ও জান গানচিল মিউজিকের ‘বাংলা অরিজিনালস’ প্রজেক্টের দ্বিতীয় গান। ময়না গান দিয়ে শুরু হয়েছে নতুন এই প্রজেক্ট।

ভারতীয় সিনেমার ইতিহাসে এক নতুন অধ্যায়ের সূচনা হতে চলেছে। ভারতীয় চলচ্চিত্রপ্রেমীদের জন্য এক ঐতিহাসিক মুহূর্তের সাক্ষী হতে যাচ্ছে ইতালির বোলোগনা শহর। আজ শুক্রবার (স্থানীয় সময়) ‘ইল সিনেমা রিট্রোভাটো’ উৎসবে বিশ্ব প্রিমিয়ার হতে যাচ্ছে রমেশ সিপ্পি পরিচালিত ১৯৭৫ সালের জনপ্রিয় হিন্দি ছবি ‘শোলে’র...
২৭ জুন ২০২৫
‘রোকেয়ার স্বপ্নে আজকের সুলতানারা’ প্রযোজনাটির গ্রন্থনা ও নির্দেশনা দিয়েছেন নার্গিস সুলতানা। আবৃত্তি, শ্রুতিকথন আর অভিনয়ে অংশ নেন নার্গিস আক্তার, রেজিনা খন্দকার, জয়া হাওলাদার, আবুল ফজল, তোফাজ্জল হোসেন তপু প্রমুখ।
৭ ঘণ্টা আগে
বছরজুড়ে রাজনীতির গতিপ্রবাহ আর নির্বাচন ছিল দেশের মানুষের মূল আলোচনার বিষয়। ফলে দর্শকদের আগ্রহের প্রায় সবটা দখল করেছে রাজনৈতিক টক শো। টেলিভিশন হোক কিংবা ইউটিউব, রাজনৈতিক সেলিব্রিটি কিংবা বক্তাদের কথাই ভিউ পেয়েছে বেশি। ব্যাকফুটে চলে গেছে বিনোদনমূলক অনুষ্ঠান।
১৮ ঘণ্টা আগে
অক্টোবরে তানজিন তিশার বিরুদ্ধে প্রতারণার অভিযোগ করে একটি অনলাইন ফ্যাশন হাউস। প্রতিষ্ঠানটির দাবি, তিশা শাড়ি নিয়েছেন, কিন্তু শর্ত অনুযায়ী সেই শাড়ি পরে ছবি তুলে ফেসবুকে প্রমোশন করেননি। এই ঘটনায় তিশার বিরুদ্ধে মামলা করে প্রতিষ্ঠানটি। পরে আরও একজন উদ্যোক্তা তিশার বিরুদ্ধে একই অভিযোগ করেন।
১৮ ঘণ্টা আগেবিনোদন প্রতিবেদক, ঢাকা

বছরজুড়ে রাজনীতির গতিপ্রবাহ আর নির্বাচন ছিল দেশের মানুষের মূল আলোচনার বিষয়। ফলে দর্শকদের আগ্রহের প্রায় সবটা দখল করেছে রাজনৈতিক টক শো। টেলিভিশন হোক কিংবা ইউটিউব, রাজনৈতিক সেলিব্রিটি কিংবা বক্তাদের কথাই ভিউ পেয়েছে বেশি। ব্যাকফুটে চলে গেছে বিনোদনমূলক অনুষ্ঠান। এই বাস্তবতার সামনে দাঁড়িয়ে টিভি চ্যানেলগুলোও নাটক-সিনেমা-সংগীতের চেয়ে বেশি গুরুত্ব দিয়েছে টক শোর দিকে।
প্রযোজনা প্রতিষ্ঠানগুলোও টিভি চ্যানেলের চেয়ে এখন ইউটিউবের জন্য নাটক নির্মাণে বেশি আগ্রহী। এ প্রবণতা কয়েক বছর ধরে বেড়েছে। টিভি নাটকের তুলনায় বাজেট ও পারিশ্রমিক বেশি পাওয়া যায় বলে অভিনয়শিল্পীরাও ইউটিউবের নাটকে অভিনয় করতে বেশি আগ্রহী থাকেন। তবে এই ‘অতিরিক্ত বাজেট’ হিতে বিপরীত ফল নিয়ে এসেছে। অনেক ব্র্যান্ড এখন নাটকে স্পনসর বা বিজ্ঞাপন কমিয়ে দিয়েছে দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতির কারণে। ফলে এ বছর ব্যাপকভাবে কমেছে ইউটিউবের জন্য নাটক নির্মাণ।
মোশাররফ করিম, অপূর্ব, মেহজাবীন, তাসনিয়া ফারিণদের মতো জনপ্রিয় শিল্পী নাটকে অভিনয় কমিয়ে দেওয়ায় ছোট পর্দায় একধরনের শূন্যতা তৈরি হয়েছে। তাঁদের স্থলাভিষিক্ত হিসেবে অন্যরা উঠে না আসায় এ অঙ্গনে সংকট আরও বেড়েছে। তবে এত নেতিবাচক পরিস্থিতির মধ্যে আশার খবর একটাই, জনপ্রিয়তা বেড়েছে পারিবারিক গল্পের ধারাবাহিক নাটকের। ‘এটা আমাদেরই গল্প’, ‘দেনা পাওনা’র মতো ধারাবাহিক দর্শকপ্রিয়তা পাওয়ায় প্রযোজক-পরিচালকেরা ঝুঁকেছেন এ ঘরানার গল্পের দিকে। এ ছাড়া যেসব নাটক এ বছর দর্শকের পছন্দের তালিকায় ছিল, তার মধ্যে রয়েছে ‘তোমাদের গল্প’, ‘এমন দিনে তারে বলা যায়’, ‘কেন এই সঙ্গতা’, ‘হৃদয় গভীরে’, ‘মন দুয়ারী’, ‘মেঘবালিকা’, ‘মানুষ কী বলবে’, ‘ভালো থেকো’, ‘খোয়াবনামা’ ইত্যাদি।
বিশ্বজুড়ে টেলিভিশন ও প্রেক্ষাগৃহকে চ্যালেঞ্জে ফেলে দিয়েছে ওটিটি প্ল্যাটফর্ম। বাংলাদেশেও যথেষ্ট সম্ভাবনা জাগিয়ে এ মাধ্যমের যাত্রা শুরু হয়েছিল। কিন্তু কয়েক বছরেই ধস নেমেছে দেশের প্ল্যাটফর্মগুলোয়। ব্যাপকভাবে দর্শকদের আকর্ষণ করতে পারে, এমন কনটেন্ট খুব কমই পাওয়া যাচ্ছে। বিষয়ের বৈচিত্র্যও কমেছে। বেশির ভাগ কনটেন্ট আটকে আছে থ্রিলার আর খুনের তদন্তের গল্পে। ফলে দর্শকও আগ্রহ হারাচ্ছে। ২০২৫ সালে সব মিলিয়ে ৪২টি কনটেন্ট মুক্তি পেয়েছে, এর মধ্যে সিরিজ ছিল ১৩টি।
চরকি এ বছর মুক্তি দিয়েছে ‘২ষ’, ‘ঘুমপরী’, ‘ফেউ’, ‘আমলনামা’, ‘মাইশেলফ অ্যালেন স্বপন’, ‘গুলমোহর’, ‘তোমার জন্য মন’, ‘ডিমলাইট’ ইত্যাদি। বঙ্গতে এসেছে ‘ব্ল্যাক মানি’, ‘হাউ সুইট’, ‘ননসেন্স’, ‘ফ্যাকড়া’, ‘মির্জা’, ‘কানাগলি’ ইত্যাদি। কনটেন্ট বেড়েছে আইস্ক্রিনে, প্ল্যাটফর্মটি মুক্তি দিয়েছে ‘কিস্তিমাত’, ‘নীলপদ্ম’, ‘জলরঙ’, ‘নয়া নোট’, ‘পাপকাহিনি’, ‘অমীমাংসিত’ ইত্যাদি। বিঞ্জে মুক্তি পেয়েছে ‘অন্ধকারের গান’ ও ‘নীল সুখ’। ‘হাইড এন সিক’ নামে মাত্র একটি ওয়েব ফিল্ম এসেছে দীপ্ত প্লেতে। গত বছরের মতো এবারও হইচইয়ে মাত্র ৩টি সিরিজ প্রকাশ পেয়েছে—‘জিম্মি’, ‘আকা’ ও ‘বোহেমিয়ান ঘোড়া’। এ ছাড়া ‘নূর’ সিনেমা দিয়ে এ বছর যাত্রা শুরু করেছে নতুন প্ল্যাটফর্ম বায়স্কোপ প্লাস।
তবে হতাশার বিষয়, এত কনটেন্টের ভিড়ে ব্যাপকভাবে দর্শকদের মধ্যে আলোচিত হয়েছে এমন সিনেমা-সিরিজের সংখ্যা হাতে গোনা। মাইশেলফ অ্যালেন স্বপন, গুলমোহর, নয়া নোট, জিম্মি, আকা ও বোহেমিয়ান ঘোড়া নিয়ে প্রশংসা চোখে পড়েছে। প্রচার-প্রচারণারও যথেষ্ট ঘাটতি লক্ষ করা গেছে। আগে যেকোনো সিরিজ মুক্তির আগে নানা মাধ্যমে ব্যাপক প্রচার চালাত প্ল্যাটফর্মগুলো। এখন অনেকটা দায়সারাভাবেই মুক্তি দেওয়া হয়। ফলে দর্শকেরা জানতেও পারে না, কোন কনটেন্ট কখন আসছে। সব মিলিয়ে যেসব ঘাটতি রয়েছে দেশের ওটিটি প্ল্যাটফর্মে, নতুন বছরে তার সমাধান হবে—এটাই প্রত্যাশা।

বছরজুড়ে রাজনীতির গতিপ্রবাহ আর নির্বাচন ছিল দেশের মানুষের মূল আলোচনার বিষয়। ফলে দর্শকদের আগ্রহের প্রায় সবটা দখল করেছে রাজনৈতিক টক শো। টেলিভিশন হোক কিংবা ইউটিউব, রাজনৈতিক সেলিব্রিটি কিংবা বক্তাদের কথাই ভিউ পেয়েছে বেশি। ব্যাকফুটে চলে গেছে বিনোদনমূলক অনুষ্ঠান। এই বাস্তবতার সামনে দাঁড়িয়ে টিভি চ্যানেলগুলোও নাটক-সিনেমা-সংগীতের চেয়ে বেশি গুরুত্ব দিয়েছে টক শোর দিকে।
প্রযোজনা প্রতিষ্ঠানগুলোও টিভি চ্যানেলের চেয়ে এখন ইউটিউবের জন্য নাটক নির্মাণে বেশি আগ্রহী। এ প্রবণতা কয়েক বছর ধরে বেড়েছে। টিভি নাটকের তুলনায় বাজেট ও পারিশ্রমিক বেশি পাওয়া যায় বলে অভিনয়শিল্পীরাও ইউটিউবের নাটকে অভিনয় করতে বেশি আগ্রহী থাকেন। তবে এই ‘অতিরিক্ত বাজেট’ হিতে বিপরীত ফল নিয়ে এসেছে। অনেক ব্র্যান্ড এখন নাটকে স্পনসর বা বিজ্ঞাপন কমিয়ে দিয়েছে দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতির কারণে। ফলে এ বছর ব্যাপকভাবে কমেছে ইউটিউবের জন্য নাটক নির্মাণ।
মোশাররফ করিম, অপূর্ব, মেহজাবীন, তাসনিয়া ফারিণদের মতো জনপ্রিয় শিল্পী নাটকে অভিনয় কমিয়ে দেওয়ায় ছোট পর্দায় একধরনের শূন্যতা তৈরি হয়েছে। তাঁদের স্থলাভিষিক্ত হিসেবে অন্যরা উঠে না আসায় এ অঙ্গনে সংকট আরও বেড়েছে। তবে এত নেতিবাচক পরিস্থিতির মধ্যে আশার খবর একটাই, জনপ্রিয়তা বেড়েছে পারিবারিক গল্পের ধারাবাহিক নাটকের। ‘এটা আমাদেরই গল্প’, ‘দেনা পাওনা’র মতো ধারাবাহিক দর্শকপ্রিয়তা পাওয়ায় প্রযোজক-পরিচালকেরা ঝুঁকেছেন এ ঘরানার গল্পের দিকে। এ ছাড়া যেসব নাটক এ বছর দর্শকের পছন্দের তালিকায় ছিল, তার মধ্যে রয়েছে ‘তোমাদের গল্প’, ‘এমন দিনে তারে বলা যায়’, ‘কেন এই সঙ্গতা’, ‘হৃদয় গভীরে’, ‘মন দুয়ারী’, ‘মেঘবালিকা’, ‘মানুষ কী বলবে’, ‘ভালো থেকো’, ‘খোয়াবনামা’ ইত্যাদি।
বিশ্বজুড়ে টেলিভিশন ও প্রেক্ষাগৃহকে চ্যালেঞ্জে ফেলে দিয়েছে ওটিটি প্ল্যাটফর্ম। বাংলাদেশেও যথেষ্ট সম্ভাবনা জাগিয়ে এ মাধ্যমের যাত্রা শুরু হয়েছিল। কিন্তু কয়েক বছরেই ধস নেমেছে দেশের প্ল্যাটফর্মগুলোয়। ব্যাপকভাবে দর্শকদের আকর্ষণ করতে পারে, এমন কনটেন্ট খুব কমই পাওয়া যাচ্ছে। বিষয়ের বৈচিত্র্যও কমেছে। বেশির ভাগ কনটেন্ট আটকে আছে থ্রিলার আর খুনের তদন্তের গল্পে। ফলে দর্শকও আগ্রহ হারাচ্ছে। ২০২৫ সালে সব মিলিয়ে ৪২টি কনটেন্ট মুক্তি পেয়েছে, এর মধ্যে সিরিজ ছিল ১৩টি।
চরকি এ বছর মুক্তি দিয়েছে ‘২ষ’, ‘ঘুমপরী’, ‘ফেউ’, ‘আমলনামা’, ‘মাইশেলফ অ্যালেন স্বপন’, ‘গুলমোহর’, ‘তোমার জন্য মন’, ‘ডিমলাইট’ ইত্যাদি। বঙ্গতে এসেছে ‘ব্ল্যাক মানি’, ‘হাউ সুইট’, ‘ননসেন্স’, ‘ফ্যাকড়া’, ‘মির্জা’, ‘কানাগলি’ ইত্যাদি। কনটেন্ট বেড়েছে আইস্ক্রিনে, প্ল্যাটফর্মটি মুক্তি দিয়েছে ‘কিস্তিমাত’, ‘নীলপদ্ম’, ‘জলরঙ’, ‘নয়া নোট’, ‘পাপকাহিনি’, ‘অমীমাংসিত’ ইত্যাদি। বিঞ্জে মুক্তি পেয়েছে ‘অন্ধকারের গান’ ও ‘নীল সুখ’। ‘হাইড এন সিক’ নামে মাত্র একটি ওয়েব ফিল্ম এসেছে দীপ্ত প্লেতে। গত বছরের মতো এবারও হইচইয়ে মাত্র ৩টি সিরিজ প্রকাশ পেয়েছে—‘জিম্মি’, ‘আকা’ ও ‘বোহেমিয়ান ঘোড়া’। এ ছাড়া ‘নূর’ সিনেমা দিয়ে এ বছর যাত্রা শুরু করেছে নতুন প্ল্যাটফর্ম বায়স্কোপ প্লাস।
তবে হতাশার বিষয়, এত কনটেন্টের ভিড়ে ব্যাপকভাবে দর্শকদের মধ্যে আলোচিত হয়েছে এমন সিনেমা-সিরিজের সংখ্যা হাতে গোনা। মাইশেলফ অ্যালেন স্বপন, গুলমোহর, নয়া নোট, জিম্মি, আকা ও বোহেমিয়ান ঘোড়া নিয়ে প্রশংসা চোখে পড়েছে। প্রচার-প্রচারণারও যথেষ্ট ঘাটতি লক্ষ করা গেছে। আগে যেকোনো সিরিজ মুক্তির আগে নানা মাধ্যমে ব্যাপক প্রচার চালাত প্ল্যাটফর্মগুলো। এখন অনেকটা দায়সারাভাবেই মুক্তি দেওয়া হয়। ফলে দর্শকেরা জানতেও পারে না, কোন কনটেন্ট কখন আসছে। সব মিলিয়ে যেসব ঘাটতি রয়েছে দেশের ওটিটি প্ল্যাটফর্মে, নতুন বছরে তার সমাধান হবে—এটাই প্রত্যাশা।

ভারতীয় সিনেমার ইতিহাসে এক নতুন অধ্যায়ের সূচনা হতে চলেছে। ভারতীয় চলচ্চিত্রপ্রেমীদের জন্য এক ঐতিহাসিক মুহূর্তের সাক্ষী হতে যাচ্ছে ইতালির বোলোগনা শহর। আজ শুক্রবার (স্থানীয় সময়) ‘ইল সিনেমা রিট্রোভাটো’ উৎসবে বিশ্ব প্রিমিয়ার হতে যাচ্ছে রমেশ সিপ্পি পরিচালিত ১৯৭৫ সালের জনপ্রিয় হিন্দি ছবি ‘শোলে’র...
২৭ জুন ২০২৫
‘রোকেয়ার স্বপ্নে আজকের সুলতানারা’ প্রযোজনাটির গ্রন্থনা ও নির্দেশনা দিয়েছেন নার্গিস সুলতানা। আবৃত্তি, শ্রুতিকথন আর অভিনয়ে অংশ নেন নার্গিস আক্তার, রেজিনা খন্দকার, জয়া হাওলাদার, আবুল ফজল, তোফাজ্জল হোসেন তপু প্রমুখ।
৭ ঘণ্টা আগে
গত জুলাইয়ে প্রকাশ পেয়েছিল সংগীতশিল্পী নিলয় ও কোনালের গাওয়া গান ‘ময়না’। জনপ্রিয়তা পায় ড্যান্স ঘরানার গানটি। আসিফ ইকবালের লেখা গানটির সুর ও সংগীত আয়োজন করেছিলেন আকাশ সেন। ময়নার পর আবার নতুন গান নিয়ে আসছেন নিলয় ও কোনাল। শিরোনাম ‘ও জান’।
১৮ ঘণ্টা আগে
অক্টোবরে তানজিন তিশার বিরুদ্ধে প্রতারণার অভিযোগ করে একটি অনলাইন ফ্যাশন হাউস। প্রতিষ্ঠানটির দাবি, তিশা শাড়ি নিয়েছেন, কিন্তু শর্ত অনুযায়ী সেই শাড়ি পরে ছবি তুলে ফেসবুকে প্রমোশন করেননি। এই ঘটনায় তিশার বিরুদ্ধে মামলা করে প্রতিষ্ঠানটি। পরে আরও একজন উদ্যোক্তা তিশার বিরুদ্ধে একই অভিযোগ করেন।
১৮ ঘণ্টা আগেবিনোদন ডেস্ক



ভারতীয় সিনেমার ইতিহাসে এক নতুন অধ্যায়ের সূচনা হতে চলেছে। ভারতীয় চলচ্চিত্রপ্রেমীদের জন্য এক ঐতিহাসিক মুহূর্তের সাক্ষী হতে যাচ্ছে ইতালির বোলোগনা শহর। আজ শুক্রবার (স্থানীয় সময়) ‘ইল সিনেমা রিট্রোভাটো’ উৎসবে বিশ্ব প্রিমিয়ার হতে যাচ্ছে রমেশ সিপ্পি পরিচালিত ১৯৭৫ সালের জনপ্রিয় হিন্দি ছবি ‘শোলে’র...
২৭ জুন ২০২৫
‘রোকেয়ার স্বপ্নে আজকের সুলতানারা’ প্রযোজনাটির গ্রন্থনা ও নির্দেশনা দিয়েছেন নার্গিস সুলতানা। আবৃত্তি, শ্রুতিকথন আর অভিনয়ে অংশ নেন নার্গিস আক্তার, রেজিনা খন্দকার, জয়া হাওলাদার, আবুল ফজল, তোফাজ্জল হোসেন তপু প্রমুখ।
৭ ঘণ্টা আগে
গত জুলাইয়ে প্রকাশ পেয়েছিল সংগীতশিল্পী নিলয় ও কোনালের গাওয়া গান ‘ময়না’। জনপ্রিয়তা পায় ড্যান্স ঘরানার গানটি। আসিফ ইকবালের লেখা গানটির সুর ও সংগীত আয়োজন করেছিলেন আকাশ সেন। ময়নার পর আবার নতুন গান নিয়ে আসছেন নিলয় ও কোনাল। শিরোনাম ‘ও জান’।
১৮ ঘণ্টা আগে
বছরজুড়ে রাজনীতির গতিপ্রবাহ আর নির্বাচন ছিল দেশের মানুষের মূল আলোচনার বিষয়। ফলে দর্শকদের আগ্রহের প্রায় সবটা দখল করেছে রাজনৈতিক টক শো। টেলিভিশন হোক কিংবা ইউটিউব, রাজনৈতিক সেলিব্রিটি কিংবা বক্তাদের কথাই ভিউ পেয়েছে বেশি। ব্যাকফুটে চলে গেছে বিনোদনমূলক অনুষ্ঠান।
১৮ ঘণ্টা আগে