Ajker Patrika

হৃদয়-পথের রোদে একরাশ মেঘ ছড়িয়ে...

গুঞ্জন রহমান
আপডেট : ১৯ মার্চ ২০২৪, ২১: ৪৫
হৃদয়-পথের রোদে একরাশ মেঘ ছড়িয়ে...

খালিদের প্রতিটি গানই সুরুচির পরিচায়ক। সেই যে ৮০-র পরপর শুরু করলেন গান গাওয়া। ‘চাইম’ ব্যান্ডের লিড ভোকালিস্ট হিসেবে তাঁর গাওয়া প্রতিটি গানই শ্রোতাদের মন ছুঁয়ে গেছে সুন্দর কথা আর হৃদয় ছোঁয়া সুরের জন্য। কীর্তনখোলার পারের ছেলে খালিদ নিজেকে বলতেন গাঁয়ের ছেলে। তাঁর ব্যান্ড চাইমও লোকগানের প্রতি বিপুল আগ্রহী ছিল। চাইমের সবচেয়ে জনপ্রিয় গানটিই তো লোকজ ধাঁচের, ‘নাতি খাতি বেলা গেইলো, শুতি পারলাম না, আহারে সদরুদ্দির মা।’ এই গানটি কোনো চিরায়ত বাংলা লোকগান, নাকি তাঁদের নিজেদেরই (বা চাইমের জন্য অন্য কারও লেখা বা সুর করা) গান, তা আমার জানা নেই। রিলিজ হওয়ার সময় অ্যালবাম কভারে নিশ্চয়ই সে তথ্য লেখা ছিল, আমার এখন আর মনে পড়ছে না। কিন্তু গানের বাণী চিরায়ত লোকগীতিরই প্রমাণ রাখে।

‘বড় চাচার গরু ছুটে লাউয়ের জাংলা খাইলো 
চাচা আইসে খালি খালি চাচীরে কেন্ মাইল্লো 
সময় কইরে বাড়ির কেউ তো চোহি দ্যাকলো না! 
আহারে সদরুদ্দির মা…’

কথাগুলো গ্রামীণ জীবনের চিরায়ত চর্চার এক শাশ্বত নিদর্শন। আবার কীর্তনখোলা নদী নিয়ে অপূর্ব সুন্দর একটি গানও সে সময় উপহার দিয়েছিল চাইম নামের ব্যান্ডটি। বিশ্ববিদ্যালয়কেন্দ্রিক উচ্চশিক্ষা ব্যবস্থার অপরূপ এক নমুনা তাঁরা উপস্থাপন করেছিলেন উচ্চশিক্ষা নামের একটি গানে।  

পড়ালেখা শেষ করে বেকারত্বের যুগে মোরা 
এ কেমন অভিশাপ বলো 
কেউ নেতা বনে যায়
কেউ প্রেমের তরী বায়
ডিমোশনে হয় টলোমলো
এ কেমন অভিশাপ বলো...

এ রকম কথার এবং কীর্তন আঙ্গিকের প্যারোডি সুরে তৈরি সেই গান সেকালে চিন্তার খোরাক জুগিয়েছিল মননশীল যেকোনো মানুষকে।

আবার, বাংলার নারীদের চিরায়ত দুঃখ শরীরের কালো রং নিয়েও যুগোপযোগী গান করেছিলেন চাইম ব্যান্ডের খালিদ। ‘কালো মাইয়া কালো বইলা কইরো না কেউ হেলা...।’ এ রকম কথার সেই গান এক দুঃসহ সামাজিক সংকটের কথা তরুণ শ্রোতাদের ভাবতে অনুপ্রাণিত করেছে। তাদের আরেকটি গান, ‘ও আমার হাঁসের ছাও রে...’ গ্রামীণ জীবনের আরেক নিত্য ঘটনা তুলে এনেছে হাস্যরসাত্মক ভঙ্গিতে। এসব হলো ব্যান্ড মিউজিকের ভরা যৌবনে বাংলা লোকজ সংগীতকে দেয়া চাইমের অবদান, খালিদ সাইফুল্লাহ্‌র অবদান।

খালিদ চলে গেলেন তাঁর আবেগমাখা দরাজ গলার গানগুলো রেখে। এক জীবনে বারবার ঘুরেফিরে শোনার জন্য যা যথেষ্টসোলস, ফিডব্যাক ও মাইলসের পরেই গড়ে ওঠে চাইম নামের ব্যান্ডটি। বিটিভির ব্যান্ড শোতে অংশ নেয়ার মাধ্যমে রাতারাতি সারা দেশে তুমুল জনপ্রিয় হয়ে ওঠে দলটি। সে সময়েই নজর কাড়েন খালিদ, তাঁর দরাজ কণ্ঠ আর স্টাইলিশ পারফরমেন্সের জন্য। জিনস, টি–শার্ট, কেডস, সানগ্লাসের সঙ্গে লম্বা চুলের গেটআপে নিজের একটা পারফেক্ট রকস্টার ইমেজ গড়ে তুলতে সক্ষম হন তিনি। সেই তিরাশি-চুরাশির দিকে তাঁর স্টাইলিশ পারফরম্যান্স অনুকরণ করতেন সমকালীন অনেক ব্যান্ড তারকা। কেবল দর্শনধারীই নন, তিনি ছিলেন প্রকৃত গুণবিচারীও। সে কালে সোলসের তপন চৌধুরী ও নাসিম আলী খান, ফিডব্যাকের মাকসুদ আর চাইমের খালিদ—   এঁরাই ছিলেন বাংলা ব্যান্ডের আইকনিক ভোকাল। মনে রাখতে হবে, জেমস তখনো নজর কাড়তে পারেননি, আইয়ুব বাচ্চু সেভাবে গাইতে শুরুই করেননি, পার্থ বড়ুয়া এলেন আরও পরে, মাইলসের হামিন ও শাফিন তখনো বাংলা গান করছেন না। কোনো প্রকার ফাঁকি ঝুঁকিহীন, একেবারে তৈরি গলায় গান করতেন খালিদ। কণ্ঠে যেমন ছিল আবেগ, তেমনি ছিল জোর। অনেক চড়ুইয়ে উঠে যেতে পারতেন সাবলীলভাবে, নাকি সুর লাগাতেন না, গাইতেন শুদ্ধ উচ্চারণে, স্পষ্ট স্বরে।

নব্বইয়ের মাঝামাঝি সময়ে যখন মিক্সড অ্যালবামের জনপ্রিয়তা ক্রমশ বাড়তে থাকল, খালিদের যেন পুনর্জন্ম দেখলাম আমরা। একের পর এক মিক্সড অ্যালবাম, খালিদের কণ্ঠে একের পর এক হিট সিংগলস। তখনকার সময়ে জনপ্রিয় সব ব্যান্ডের ভোকালিস্টদের নিয়ে মিক্সড অ্যালবামগুলো প্রকাশিত হলেও, দশ বারোটা গান থেকে হিট করত দুই-তিনটি, বড়জোর। সেই দু-তিনটির মধ্যে খালিদের একটি গান থাকত। আর, সেকাল থেকে আজ প্রায় তিন দশক পরের অবস্থানে দাঁড়িয়ে দেখা যায়, দুই-তিনটিও নয়, বড় জোর একটি করে গানই টিকে আছে, যে গানটি খালিদের গাওয়া। সরলতার প্রতিমা, যদি হিমালয় হয়ে, কোনো কারণেই ফেরানো গেল না তাকে, আবার দেখা হবে/এখনই শেষ দেখা নয়, হয়নি যাবার বেলা, আকাশনীলা ইত্যাদি গানগুলো সবই কালোত্তীর্ণ, ক্রমশ এগিয়ে চলেছে কালজয়ী বাংলা গান হওয়ার পথে। এগুলো সবই বিভিন্ন মিক্সড অ্যালবামে গাওয়া।

যে কথাটি দিয়ে শুরু করেছিলাম, খালিদের গাওয়া প্রতিটি গানের কথা ও সুরে দারুণ সুরুচির পরিচয় পাওয়া যায়। গানগুলোর খুব কমই তাঁর লেখা বা সুর করা। কিন্তু তিনি লিরিক বুঝতেন, সুর চিনতেন। তাই দশ-বারোজন শিল্পীর জন্য করা দশ বারোটা গান থেকে ঠিকঠাক বেছে নিতে পারতেন নিজের জন্য সেরা গানটাই। কিংবা কে জানে, গানের কম্পোজারেরাই হয়তো তাঁর জন্য আলাদা করে রাখতেন তাঁর সেরা কাজটা।

‘সে যে হৃদয় পথের রোদে একরাশ মেঘ ছড়িয়ে/ হারিয়ে গেল নিমেষেই...’ ভেবে দেখুন তো, প্রেম ভেঙে যাওয়ায় প্রেমিকাকে দোষারোপ করার, তাকে রীতিমতো ভিলেন বানিয়ে দেয়ার গাজোয়ারির কালে তিনি কত নান্দনিকভাবে তুলে ধরলেন ভালোবাসা হারানোর কথা! প্রতিপক্ষকে দোষারোপ করার জনপ্রিয় চর্চার কালেই তিনি স্পষ্ট স্বরে উচ্চারণ করলেন, ‘নীরা, ক্ষমা করো আমাকে/ এতটুকু সুখ তোমায় পারিনি দিতে!’ এমনটাই কি হওয়া উচিত নয় সকল ক্ষেত্রে? আবার দেখুন, ভালোবাসা হারানোর দুঃখকে কী অদ্ভুতভাবে তিনি বর্ণনা করলেন একটিমাত্র বাক্যে, ‘যদি হিমালয় হয়ে দুঃখ আসে এ হৃদয়ে, সে কিছুই নয়!’ কিংবা, ‘যাবার বেলায় শুধু সান্ত্বনা, নয় কান্না/ আবার দেখা হবে, এখনই শেষ দেখা নয়’ এভাবেও তো সম্পর্কের ইতি টানা যায়। ‘তুমি আকাশের বুকে বিশালতার উপমা/ তুমি আমার চোখেতে সরলতার প্রতিমা’–এভাবেই বুঝি কমপ্লিমেন্ট দিতে হয় প্রেয়সীকে।

খালিদের গাওয়া প্রতিটি গানের কথা ও সুরে দারুণ সুরুচির পরিচয় পাওয়া যায়খালিদ চলে গেলেন ষাট বছর বয়সে। মধ্যম গড় আয়ুর দেশে ষাট বছর তেমন বেশি না হলেও খুব কম বয়স নয়। কিন্তু ব্যক্তিগত জানাশোনা থেকে উপলব্ধি করি, তিনি হয়তো আরও কিছুদিন থাকতে পারতেন। সঞ্জীব চৌধুরীর মতো তিনিও বুঝি অপচয় করে গেলেন নিজের যোগ্যতাকে, প্রতিভাকে, জীবনটাকেই।

শেষ দশ বছরে তেমন একটা গান করেননি। নতুন গান ছিল কি না, আমার শোনা হয়নি। তাঁর জীবনযাপনও খুব সুশৃঙ্খল ছিল না। প্রবাসে স্থায়ী ঠিকানা গড়েছিলেন। তবু দেশে ছুটে আসতেন বারবার। গান করতে চাইতেন। নতুন কিছু করতে চাইতেন। থাকার জন্য যুক্তরাষ্ট্র দেশটা হয়তো ভালো, কিন্তু সে তো আমজনতার ক্ষেত্রে। একজন শিল্পীর জন্য, বাঙালি শিল্পীর জন্য কি ওই ভিনদেশ, বিজাতীয় সাংস্কৃতিক বাতাবরণ খুব অনুকূল? প্রবাস-জীবনে জীবিকার চিন্তা হয়তো তাঁর ছিল না। কিন্তু মনের খোরাক কি ডলার গুনে মেটে? তাই হয়তো দেশে আসতেন বারবার গানের টানে। সে গান করা হতো না। এ দেশে যে গানের পরিবেশটাই গেছে বদলে! এখানে এখন রুচিমান গায়কের কোথায় স্থান? উদ্ভট কিছু করতে পারা তো খালিদের মতো শিল্পীর পক্ষে সম্ভব ছিল না। যে অভিমানে নিজেই নিজেকে পৃথিবী থেকে সরিয়ে নিলেন সাদি মহম্মদ, সেই একই অভিমান হয়তো একটু অন্যভাবে ছিল খালিদের মনেও। নয়তো এমন দরাজ কণ্ঠে বছরের পর বছর কোনো গান শোনা যায়নি কেন? দু’জনের মৃত্যু দুইভাবে হলেও, আমার কাছে তা এই অসময় যাত্রাকে অভিন্ন যাত্রাই মনে হয়।

খালিদ চলে গেলেন তাঁর আবেগমাখা দরাজ গলার গানগুলো রেখে, এক জীবনে বারবার ঘুরেফিরে শোনার জন্য যা যথেষ্ট। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বেশ ক’জন আইকনিক শিল্পীকে হারাল আমাদের গানের জগৎ। আমাদের আধুনিক বাংলা গানের জগতে কেবল শূন্যতাই সৃষ্টি হচ্ছে একের পর এক। সে শূন্যতা পূরণ হচ্ছে কতটুকু? আরেকজন সুরুচিবান খালিদ সাইফুল্লাহ্ আসবেন আর কবে?

লেখক: কবি, গল্পকার, গীতিকার

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ওসমান হাদিকে হত্যাচেষ্টায় ব্যবহৃত মোটরসাইকেলের মালিক আটক

হাদিকে হত্যাচেষ্টা: সন্দেহভাজন ফয়সালের ব্যাংক হিসাব জব্দ

হাদির মস্তিষ্কের অবস্থা ‘খুবই খারাপ’, এখনো আশঙ্কাজনক: চিকিৎসক

সুদানে নিহত ও আহত শান্তিরক্ষীদের পরিচয় জানাল আইএসপিআর

আজকের রাশিফল: প্রাক্তন ফোন করবে ও পুরোনো পাওনা টাকার কথা স্মরণ হবে, তবে পরিণতি একই

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

শুরু হচ্ছে তারকাবহুল ‘বনলতা এক্সপ্রেস’ সিনেমার শুটিং

বিনোদন প্রতিবেদক, ঢাকা
‘বনলতা এক্সপ্রেস’ সিনেমার সংবাদ সম্মেলনে নির্মাতা (সর্ববাঁয়ে) ও অভিনয়শিল্পীরা। ছবি: আজকের পত্রিকা
‘বনলতা এক্সপ্রেস’ সিনেমার সংবাদ সম্মেলনে নির্মাতা (সর্ববাঁয়ে) ও অভিনয়শিল্পীরা। ছবি: আজকের পত্রিকা

চার্লস ডিকেন্সের ‘আ ক্রিসমাস ক্যারল’ অবলম্বনে তানিম নূর বানিয়েছিলেন ‘উৎসব’। এবার হুমায়ূন আহমেদের ‘কিছুক্ষণ’ উপন্যাস অবলম্বনে সিনেমা নির্মাণ করছেন তিনি। নাম ‘বনলতা এক্সপ্রেস’। আগেই জানা গিয়েছিল, এতে অভিনয় করবেন মোশাররফ করিম, চঞ্চল চৌধুরী, শরিফুল রাজ ও সাবিলা নূর। গতকাল আনুষ্ঠানিকভাবে পরিচয় করিয়ে দেওয়া হলো অভিনয়শিল্পীদের। এতে আরও আছেন আজমেরি হক বাঁধন, জাকিয়া বারী মম, ইন্তেখাব দিনার ও শ্যামল মাওলা।

হুমায়ূন আহমেদের ‘কিছুক্ষণ’ উপন্যাসে অসুস্থ মামাকে দেখতে ট্রেনে করে দিনাজপুর যাচ্ছিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী চিত্রা। তার সেই ট্রেন জার্নির অভিজ্ঞতা নিয়েই এগিয়ে যায় কাহিনি। নির্মাতা সেই গল্পই পর্দায় তুলে ধরবেন, তবে সিনেমার প্রয়োজনে থাকবে কিছু সংযোজন-পরিমার্জন। থাকবে নতুন চমক। তবে কী সেই চমক, তা জানা যাবে বনলতা এক্সপ্রেস মুক্তির পর। সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, আগামীকাল থেকে ঢাকায় শুরু হবে শুটিং। চিত্রা চরিত্রে থাকছেন সাবিলা নূর। আগামী রোজার ঈদে মুক্তি পাবে সিনেমাটি।

পারিবারিক গল্পের উৎসব সিনেমায় অভিনয় করেছেন একঝাঁক তারকা। এবারও তারকাসমৃদ্ধ পারিবারিক গল্পের সিনেমা দিয়ে দর্শকের সামনে আসার পরিকল্পনা নির্মাতার। বনলতা এক্সপ্রেস প্রসঙ্গে নির্মাতা তানিম নূর বলেন, ‘উৎসব শেষ করার পর নতুন সিনেমা নিয়ে যখন পরিকল্পনা করছিলাম, অনেকে পরামর্শ দিল আরেকটা পারিবারিক গল্প নিয়ে কাজ করতে। তখন ভাবলাম, হুমায়ূন আহমেদের কোনো গল্প নিয়ে কাজ করা যায়। সেই ভাবনা থেকেই কিছুক্ষণ উপন্যাস নিয়ে বনলতা এক্সপ্রেস নির্মাণের প্রস্তুতি শুরু।’

অভিনেতা মোশাররফ করিম বলেন, ‘চরিত্রের প্রেমে পড়েই এই সিনেমায় যুক্ত হওয়া। সিনেমার চিত্রনাট্য ও সংলাপ দারুণ লেগেছে। এ ছাড়া হুমায়ূন আহমেদের উপন্যাসটি আমার পড়া, সেটার প্রতিও ভালো লাগা আছে। বনলতা এক্সপ্রেসে আমার সহশিল্পী যাঁরা আছেন, তাঁরা আমার অনেক দিনের সঙ্গী। সবাই মিলে একসঙ্গে কাজ করার অপেক্ষায় আছি।’

চঞ্চল চৌধুরী বলেন, ‘তানিম নূরের সঙ্গে কাজ করার অভিজ্ঞতা থেকে বলছি, সিনেমাটি সবার ভালো লাগবে। হুমায়ূন আহমেদের গল্প থেকে সিনেমা এই বিষয়টি যেমন দর্শকের আলাদা আগ্রহ সৃষ্টি করেছে। তেমনি অভিনেতা হিসেবে আমরাও একটি ভালো সিনেমার অংশ হতে অধীর হয়ে আছি।’

আজমেরী হক বাঁধন বলেন, ‘এই সিনেমার নির্মাতা ও সহশিল্পীরা আমার ভীষণ পছন্দের। তানিম নূর যখন এই চরিত্রের কথা বলল, তখন আমার মেয়ে বলেছে, তুমি এটি করো। কারণ আমাকে নাকি সব সময় সিরিয়াস আর অবসাদগ্রস্ত চরিত্রে দেখা যায়। আর হুমায়ূন আহমেদ যে আমার কত পছন্দের, সেটা সবাই জানে। অনেক বছর পর তাঁর গল্পে কাজ করার সুযোগ পাচ্ছি। এটা আমার কাছে বিশেষ কিছু।’

জাকিয়া বারী মম বলেন, ‘বনলতা এক্সপ্রেসে উঠে পড়ার অন্যতম কারণ হচ্ছে, এর ড্রাইভার তানিম নূর। এ ছাড়া যাত্রাপথে সহযাত্রীরা অনেক গুরুত্বপূর্ণ। এখানে আমার সহযাত্রীরা সবাই দুর্দান্ত। আশা করি দারুণ একটি যাত্রা হবে আমাদের।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ওসমান হাদিকে হত্যাচেষ্টায় ব্যবহৃত মোটরসাইকেলের মালিক আটক

হাদিকে হত্যাচেষ্টা: সন্দেহভাজন ফয়সালের ব্যাংক হিসাব জব্দ

হাদির মস্তিষ্কের অবস্থা ‘খুবই খারাপ’, এখনো আশঙ্কাজনক: চিকিৎসক

সুদানে নিহত ও আহত শান্তিরক্ষীদের পরিচয় জানাল আইএসপিআর

আজকের রাশিফল: প্রাক্তন ফোন করবে ও পুরোনো পাওনা টাকার কথা স্মরণ হবে, তবে পরিণতি একই

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

বিজয় দিবসের আয়োজন

৬ ইয়াং স্টারকে নিয়ে ৩ বিচারকের গান

বিনোদন প্রতিবেদক, ঢাকা
(বাঁ থেকে) মেসি, আব্রাম, লুইস সুয়ারেজ ও শাহরুখ খান। ছবি: সংগৃহীত
(বাঁ থেকে) মেসি, আব্রাম, লুইস সুয়ারেজ ও শাহরুখ খান। ছবি: সংগৃহীত

২০২৩ সালে আরটিভি ইয়াং স্টার প্রতিযোগিতার বিচারক ছিলেন গীতিকার কবির বকুল, সুরকার ইমন সাহা ও কণ্ঠশিল্পী সানিয়া সুলতানা লিজা। বিচারকের আসনে বসে তাঁরা বলেছিলেন প্রতিযোগিতার শীর্ষ শিল্পীদের সুযোগ করে দিতে কাজ করবেন, তাদের নিয়ে গান বানাবেন। কথামতো সেই প্রতিযোগিতার শীর্ষ দশের ছয় প্রতিযোগীকে নিয়ে গান বানালেন তাঁরা। বিজয় দিবস উপলক্ষে তৈরি গানটি আজ বিকেল ৫টা ৩০ মিনিটে লিজার ইউটিউব চ্যানেলে প্রকাশ করা হবে। ‘আমরা সবাই বাংলাদেশ’ শিরোনামের গানটিতে কণ্ঠ দিয়েছেন লিজা এবং ইয়াং স্টার ২০২৩-এর জাহিদ অন্তু, অনিক, অরিন্দল, আদিবা, অঙ্কিতা ও দীপান্বিতা। সুর ও সংগীত আয়োজন করেছেন ইমন সাহা। ‘আমার মুখে বাংলাদেশ, আমার বুকে বাংলাদেশ, সুখে দুঃখে আমার বাংলাদেশ... আমরা সবাই বাংলাদেশ’—এমন কথায় গানটি লিখেছেন কবির বকুল।

আমরা সবাই বাংলাদেশ গানটির সার্বিক আয়োজন ও প্রযোজনা করেছেন লিজা। গানের ভিডিও নির্দেশনা দিয়েছেন রাজ বিশ্বাস শংকর। শুটিং হয়েছে রাজধানীর সোহরাওয়ার্দি উদ্যান, শিখা চিরন্তনসহ বিভিন্ন লোকেশনে।

কবির বকুল বলেন, ‘মূলত গানটির উদ্যোক্তা কণ্ঠশিল্পী লিজা। আমরা সবাই মিলে চেষ্টা করেছি সুন্দর একটি দেশের গান উপহার দেওয়ার। এই সুন্দর দেশটার সঙ্গে প্রতিটি মানুষের যে আত্মিক টান, আবেগমাখা সম্পর্ক, দেশের প্রতি আমাদের যে ভালোবাসা—তা-ই তুলে ধরার চেষ্টা করেছি গানের কথায়।’

সুরকার ইমন সাহা বলেন, ‘প্রতিযোগিতার সময় থেকেই আমাদের ইচ্ছা ছিল নতুনদের নিয়ে গান করার। সেই ইচ্ছার প্রতিফলন এই গান। সবাই মিলে একটি সুন্দর দেশের গান উপহার দেওয়ার চেষ্টা করেছি। আমার বিশ্বাস গানটি ভালো লাগবে সবার।’

কণ্ঠশিল্পী লিজা বলেন, ‘আমি নিজেও রিয়েলিটি শো থেকে এসেছি। শো শেষে আমাদের বাকি জার্নিটা কিন্তু সলো হয়, দিকনির্দেশনা দেওয়ার মতো কেউ থাকে না। নিজের জীবন থেকেই উপলব্ধি করেছি, শুধু নতুন শিল্পী খুঁজে বের করলেই হবে না, তাঁদের প্রপার গাইড করতে হবে। তাঁদের পাশে থাকতে হবে। তাই বিচারকের আসনে থাকার সময়ই বলেছিলাম, নতুনদের জন্য কাজ করব, শুধু কাভার সং নয়, প্রতিটি নতুন শিল্পীর মৌলিক গান হওয়া প্রয়োজন। তাই ইয়াং স্টারদের নিয়ে আমাদের এই দেশের গান। চেষ্টা করেছি একটি সুন্দর গান উপহার দিতে। আমরা চাই গানটি সব শ্রোতার কাছে পৌঁছে যাক, তাই আমার চ্যানেল থেকে প্রকাশ করা হলেও, কোনো ধরনের কপিরাইট রেসট্রিকশন রাখছি না। যে কেউ চাইলে যেকোনো চ্যানেলে গানটি প্রকাশ করতে পারবেন।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ওসমান হাদিকে হত্যাচেষ্টায় ব্যবহৃত মোটরসাইকেলের মালিক আটক

হাদিকে হত্যাচেষ্টা: সন্দেহভাজন ফয়সালের ব্যাংক হিসাব জব্দ

হাদির মস্তিষ্কের অবস্থা ‘খুবই খারাপ’, এখনো আশঙ্কাজনক: চিকিৎসক

সুদানে নিহত ও আহত শান্তিরক্ষীদের পরিচয় জানাল আইএসপিআর

আজকের রাশিফল: প্রাক্তন ফোন করবে ও পুরোনো পাওনা টাকার কথা স্মরণ হবে, তবে পরিণতি একই

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

রটারড্যাম উৎসবে ‘দেলুপি’

বিনোদন প্রতিবেদক, ঢাকা
‘দেলুপি’ সিনেমার দৃশ্য
‘দেলুপি’ সিনেমার দৃশ্য

দক্ষিণাঞ্চলের মানুষের জীবনের ঘটনা, বাস্তবতা আর সম্পর্কের গল্প থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে নির্মাতা মোহাম্মদ তাওকীর ইসলাম বানিয়েছেন ‘দেলুপি’। যেখানে রাজনীতি আছে, ভালোবাসা আছে, প্রাকৃতিক দুর্যোগ আছে, যাত্রাশিল্পীদের সংগ্রাম আছে; আর আছে জীবন বদলানোর গল্প। এটি নির্মাতার প্রথম সিনেমা। গত ৭ নভেম্বর খুলনায় মুক্তি পেয়েছিল দেলুপি। পরের সপ্তাহে দেশব্যাপী মুক্তি পায়। প্রথম সিনেমাতেই প্রশংসা পাচ্ছেন তাওকীর। এখনো সিনেমাটি চলছে প্রেক্ষাগৃহে। এর মধ্যে জানা গেল নেদারল্যান্ডসের ইন্টারন্যাশনাল ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল রটারড্যামে জায়গা করে নিয়েছে দেলুপি। এই উৎসবে আন্তর্জাতিক প্রিমিয়ার হবে সিনেমাটির।

আগামী বছরের ২৯ জানুয়ারি নেদারল্যান্ডসের রটারড্যাম শহরে শুরু হবে ইন্টারন্যাশনাল ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল রটারড্যামের ৫৫তম আসর। যেখানে বিশ্বের সেরা নির্মাতা, উদীয়মান প্রতিভা ও আর্টহাউস সিনেমার প্রতিনিধিরা অংশ নেবেন। উৎসবের ‘ব্রাইট ফিউচার’ বিভাগে প্রদর্শিত হবে দেলুপি। এই বিভাগে চলচ্চিত্র নির্মাতাদের বানানো প্রথম ও দ্বিতীয় সিনেমা নির্বাচিত হয়।

রটারড্যামে দেলুপির যাত্রা নিয়ে উচ্ছ্বসিত পুরো টিম। পরিচালক তাওকীর বলেন, ‘রটারড্যাম থেকে আমরা যখন প্রথম মেইল পেয়ে জানতে পারি, তারা সিনেমাটির ওয়ার্ল্ড প্রিমিয়ার করতে চায়। সে সময় একটু বিপাকেই পড়ে গিয়েছিলাম। কেননা আমরা সিনেমা বানানোর সময় দেলুটি ইউনিয়নের মানুষদের কথা দিয়েছিলাম, সিনেমাটা প্রথমে তাঁদের দেখাব। আমাদের এই ইচ্ছা ফেস্টিভ্যালের অর্গানাইজারদের জানিয়েছিলাম। তারা ইতিবাচক সাড়া দেয়। আমরা সিনেমাটি আগে খুলনায় রিলিজ দিই। এখন দেশের গণ্ডি পেরিয়ে বিদেশের দর্শকেরা দেলুপি দেখতে পারবেন। তাই আমরা আনন্দিত।’

দেলুপি সিনেমায় যাঁরা অভিনয় করেছেন, তাঁরা সবাই খুলনার বিভিন্ন ইউনিয়নের বাসিন্দা। অভিনয় করেছেন চিরনজিৎ বিশ্বাস, অদিতি রায়, রুদ্র রায়, মো. জাকির হোসেনসহ অনেকে। প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান ফুটপ্রিন্ট ফিল্ম প্রোডাকশনের ব্যানারে নির্মিত হয়েছে সিনেমাটি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ওসমান হাদিকে হত্যাচেষ্টায় ব্যবহৃত মোটরসাইকেলের মালিক আটক

হাদিকে হত্যাচেষ্টা: সন্দেহভাজন ফয়সালের ব্যাংক হিসাব জব্দ

হাদির মস্তিষ্কের অবস্থা ‘খুবই খারাপ’, এখনো আশঙ্কাজনক: চিকিৎসক

সুদানে নিহত ও আহত শান্তিরক্ষীদের পরিচয় জানাল আইএসপিআর

আজকের রাশিফল: প্রাক্তন ফোন করবে ও পুরোনো পাওনা টাকার কথা স্মরণ হবে, তবে পরিণতি একই

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

দেখা হলো শাহরুখ-মেসির, সঙ্গে ছিল খানপুত্র আব্রাম

বিনোদন ডেস্ক
আপডেট : ১৪ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৯: ৪৩
(বাঁ থেকে) মেসি, আব্রাম, লুইস সুয়ারেজ ও শাহরুখ খান। ছবি: সংগৃহীত
(বাঁ থেকে) মেসি, আব্রাম, লুইস সুয়ারেজ ও শাহরুখ খান। ছবি: সংগৃহীত

‘গোট ট্যুর অব ইন্ডিয়া ২০২৫’–এর অংশ হিসেবে আর্জেন্টাইন ফুটবল তারকা লিওনেল মেসি এখন ভারতে। গতকাল শনিবার এসেছিলেন কলকাতায়। অংশ নেন একটি বিশেষ মিট অ্যান্ড গ্রিট অনুষ্ঠানে। এ সময় কলকাতার সল্টলেক স্টেডিয়ামে ভার্চুয়ালি উন্মোচন করা হয়েছে মেসির বিশাল ৭০ ফুট উচ্চতার মূর্তি। সেখানেই তাঁর সঙ্গে দেখা করেন বলিউড সুপারস্টার শাহরুখ খান।

মেসির সঙ্গে দেখা করতে কলকাতায় আসবেন, এ কথা নিজেই জানিয়েছিলেন বলিউড কিং শাহরুখ খান। কথামতোই মেসির সঙ্গে দেখা করতে কলকাতায় আসেন অভিনেতা। এ সময় শাহরুখের সঙ্গে ছিল তাঁর ছোট ছেলে আব্রাম খান। সংবাদ সংস্থা পিটিআই প্রকাশিত এক ভিডিওতে দেখা যায়, মেসির পাশে দাঁড়িয়ে ছবি তুলছেন শাহরুখ ও আব্রাম। ফুটবল তারকার সঙ্গে আব্রামের সহজ-স্বাভাবিক মুহূর্ত সোশ্যাল মিডিয়ায় ইতিমধ্যেই ভাইরাল।

অনুষ্ঠানে উপস্থিত হয়ে শাহরুখ প্রথমে করমর্দন করেন উরুগুয়ের তারকা লুইস সুয়ারেজ ও আর্জেন্টিনার মিডফিল্ডার রদ্রিগো দি পলের সঙ্গে। এরপর এগিয়ে যান মেসির দিকে। দুজন হাত মেলান, কথা বলেন, ছবি তোলেন। সেই সময় মেসি আলাদাভাবে ছবি তোলেন আব্রামের সঙ্গেও।

মেসির সঙ্গে যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনে উপস্থিত থাকার কথা জানিয়েছিলেন শাহরুখ। কিন্তু তেমনটা আর হয়নি। ভারতীয় গণমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী হোটেলে অনুষ্ঠান শেষ করে স্থানীয় সময় বেলা সোয়া ১১টার দিকে যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনে পৌঁছান মেসি। মিনিট ১৫ ছিলেন মাঠে। এর পরই বেরিয়ে যান মাঠ ছেড়ে। মেসিকে দেখতে না পাওয়ায় ক্ষোভে ফেটে পড়েন ভক্তরা। চরম বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হয় মাঠজুড়ে। খবর যায় শাহরুখের কাছেও। তাই যুবভারতীতে না গিয়ে শাহরুখ রওনা দেন বিমানবন্দরের দিকে।

জানা গেছে, অব্যবস্থাপনায় আর্জেন্টিনার বিশ্বকাপ জয়ী অধিনায়ক মেসির অনুষ্ঠান ঘিরে যুবভারতী স্টেডিয়াম রীতিমতো রণক্ষেত্রে পরিণত হয়েছিল। এই ঘটনায় মেসির কাছে ক্ষমা চেয়েছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ওসমান হাদিকে হত্যাচেষ্টায় ব্যবহৃত মোটরসাইকেলের মালিক আটক

হাদিকে হত্যাচেষ্টা: সন্দেহভাজন ফয়সালের ব্যাংক হিসাব জব্দ

হাদির মস্তিষ্কের অবস্থা ‘খুবই খারাপ’, এখনো আশঙ্কাজনক: চিকিৎসক

সুদানে নিহত ও আহত শান্তিরক্ষীদের পরিচয় জানাল আইএসপিআর

আজকের রাশিফল: প্রাক্তন ফোন করবে ও পুরোনো পাওনা টাকার কথা স্মরণ হবে, তবে পরিণতি একই

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত