Ajker Patrika
সাক্ষাৎকার

পবিপ্রবির গবেষণার ফল বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে দেব

অধ্যাপক ড. কাজী রফিকুল ইসলাম। ছবি: সংগৃহীত

পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (পবিপ্রবি) ৯ম উপাচার্য হিসেবে যোগ দিয়েছেন অধ্যাপক ড. কাজী রফিকুল ইসলাম। ২০০২ সালে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতা দিয়ে তাঁর কর্মজীবনের শুরু। তিনি ২০১১ সালে জাপানের কাগাওয়া বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচডি ডিগ্রি এবং কাগাওয়া মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পোস্টডক্টরেট ডিগ্রি অর্জন করেন। পবিপ্রবির সার্বিক অবস্থা নিয়ে তাঁর সাক্ষাৎকার নিয়েছেন মীর মহিবুল্লাহ

মীর মহিবুল্লাহ
আপডেট : ১৯ জানুয়ারি ২০২৫, ০৯: ৪৫

আপনি প্রায় ৪ মাস হলো নিয়োগ পেয়েছেন। কী কী পরিবর্তন আনলেন?

আমার এই ৪ মাসের মধ্যে পবিপ্রবিকে বিশ্বমানের এবং ওয়ার্ল্ড র‍্যাঙ্কিংয়ে নিয়ে আসার জন্য কিছু পদক্ষেপ নিয়েছি, যা বর্তমানে দৃশ্যমান। সেগুলো হলো বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাকৃতিক পরিবেশ এবং শিক্ষা ও গবেষণা পাঠদানের জন্য যে ক্লাসরুমগুলো আছে, সেগুলোর পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা। বিশ্ববিদ্যালয়ে ১৫ বছর ৭ মাসে ধরে যে অনিয়ম চলছিল; শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারী ও ছাত্রদের মধ্যে যে অস্থিরতা ও হীনম্মন্যতা কাজ করছিল, সেটি কাটিয়ে ওঠার জন্য প্রতিটি শাখায় ভিজিট করে অফিসের সময়টা নিশ্চিত করেছি। শিক্ষকদের শিক্ষায় ও গবেষণায় উজ্জীবিত করা এবং উন্নয়নে কাজগুলো নিয়মিত তদারকি করে চলছি। সঙ্গে সঙ্গে এই বিশ্ববিদ্যালয়ে বহিরাগতদের আনাগোনা এবং মাদকের যে একটা আখড়া ছিল, সেটিকে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে দমন করেছি। বিশ্ববিদ্যালয়ের বাবুগঞ্জ ও মেইন ক্যাম্পাসকে র‍্যাগিংমুক্ত করেছি। মাদক ও র‍্যাগিংয়ের বিরুদ্ধে এই ব্যবস্থা চলমান থাকবে।

দীর্ঘদিন পর অন্য বিশ্ববিদ্যালয় থেকে উপাচার্য পেল পবিপ্রবি। আপনাকে কীভাবে গ্রহণ করল? সবার সহযোগিতা কতটা পাচ্ছেন?

এককথায় বলব, আমাকে খুশিমনে গ্রহণ করেছে। আমি যে উদ্যোগগুলো নিয়েছি, সেগুলোর প্রতি সাড়া দিয়েছেন প্রো-উপাচার্য, ট্রেজারার, প্রক্টরিয়াল বডি, অ্যাডভাইজরি বডি, প্রভোস্ট কাউন্সিল, সাধারণ শিক্ষক-শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা-কর্মচারী—সবাই। তাঁদের সহযোগিতা শুধু অফিশিয়াল সময়েই নয়, রাত ১২টা-১টা পর্যন্তও প্রশাসনিক বডিগুলো কাজ করছে। আমিসহ আমার বর্তমান প্রশাসনের যে চাওয়া, তা হলো বিশ্ববিদ্যালয় এবং তার শিক্ষা ও গবেষণাকে এগিয়ে নেওয়া। তাঁরা বিষয়টি অনুধাবন করে সার্বিক সহযোগিতা করছেন, যা প্রমাণ করে, পবিপ্রবির পরিবার আমাকে ভালোভাবে গ্রহণ করেছে।

বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ে আপনার পরিকল্পনা কী?

দক্ষিণবঙ্গের সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠ হলো পবিপ্রবি। এখানে দুই ধরনের শিক্ষার্থী ভর্তি হয়—কৃষি গুচ্ছ এবং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি গুচ্ছ থেকে। এ ছাড়া এখানে অনেক মেধাবী শিক্ষক রয়েছেন এবং গবেষণার জন্য ভালো সুযোগ রয়েছে। আমি দেশের বাইরে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় খুব কাছ থেকে দেখেছি। তাই এই বিশ্ববিদ্যালয়কে র‍্যাঙ্কিংয়ে নিয়ে আসার জন্য কাজ করব। পবিপ্রবির গবেষণার ফল সারা দেশসহ বিশ্বের বুকে ছড়িয়ে দেওয়া আমার মূল লক্ষ্য। ক্লাসরুম এবং গবেষণাগারগুলোর শিক্ষা ও গবেষণার পরিবেশ তৈরি করা খুবই জরুরি, যার জন্য প্রয়োজন উপযুক্ত অর্থায়ন।

কাজের অগ্রাধিকার পর্যায়ক্রমে কী কী?

প্রথম অগ্রাধিকার হলো শিক্ষা ও গবেষণা। দ্বিতীয়টি হচ্ছে করোনার সময়ের কারণে ছাত্রছাত্রীদের জীবনে যে সময় নষ্ট হয়েছে, সেটি পুষিয়ে নেওয়ার জন্য দ্রুত ক্লাস, পরীক্ষা ও ফলাফল দেওয়া। তৃতীয়ত, মাদকমুক্ত ক্যাম্পাস গঠন করা। মাদক নিরোধের লক্ষ্যে আমরা প্রথমে ডোপ টেস্টের মাধ্যমে ভর্তি নিয়েছি এবং ভবিষ্যতে এটি শতভাগ নিশ্চিত করার চেষ্টা করব। চতুর্থত, র‍্যাগিংমুক্ত হলের পরিবেশ নিশ্চিত করা এবং হলগুলোতে শিক্ষার্থীদের সমস্যাগুলো ধীরে ধীরে সমাধান করা। পঞ্চমত, শিক্ষকদের গবেষণায় উৎসাহিত করা এবং তাদের উপযুক্ত পুরস্কৃত করা। এ ছাড়া যারা ভালো কাজ করবে বা এক্সট্রা কারিকুলার অ্যাকটিভিটিতে অংশ নেবে, তাদেরও পুরস্কৃত করা হবে। এভাবেই আমি পবিপ্রবিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে চাই।

অতীতের অনেক অনিয়ম, অবৈধ নিয়োগ ও পদোন্নতি ছিল। এ ছাড়া বিভিন্ন ঘটনার তদন্ত হলেও প্রতিবেদন জমা হতো না। এ ব্যাপারে আপনার উদ্যোগ থাকবে কি না?

আমি আসার পরপরই তদন্ত কমিশন-২০২৪ গঠন করেছি। সেই কমিশনের মূল লক্ষ্য হলো ২০০৯ থেকে বর্তমান সময় পর্যন্ত ঘটে যাওয়া সব অনিয়মের তদন্ত করা এবং দ্রুত রিপোর্ট জমা দিয়ে সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া। ১৫ বছরের অনিয়মের কারণে শিক্ষার পরিবেশ ও প্রশাসনিক পরিবেশ পুনরুদ্ধারে কিছুটা সময় লাগছে, তাই প্রতিবেদনগুলোতে কিছুটা দেরি হচ্ছে। তবে ইতিমধ্যে তদন্ত কমিটিগুলো বিভিন্ন উপকমিটি গঠন করে কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। আমি আশা করছি, শিগগির এর ফল প্রকাশ পাবে। একই সঙ্গে জড়িতদের বিচারের আওতায় আনার জন্য সুপারিশ করা হবে।

ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁসের সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে শাস্তি হবে কি না?

ভর্তি পরীক্ষার যে দুর্নীতি ঘটেছে, তার তদন্ত চলছে এবং গোয়েন্দা সংস্থাও তথ্য সংগ্রহ করছে। অনেক অগ্রগতি হয়েছে, যা কিছুদিনের মধ্যে প্রকাশিত হবে। তবে গোপনীয়তার স্বার্থে এই বিষয়ে এখন বিস্তারিত কিছু বলা ঠিক হবে না।

শিক্ষার্থী দেবাশীষ মণ্ডলের আত্মহত্যার প্ররোচনাকারীদের বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নিয়েছেন?

দেবাশীষের আত্মহত্যা, কেন চাকরি পায়নি এবং তার চাকরি নিয়ে ঘুষ কেলেঙ্কারির কয়েকটি ভিডিও প্রকাশিত হয়েছে। এসব নিয়ে আমাদের তদন্ত কমিটির একটি উপকমিটিকে বিশেষ দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। ইনশা আল্লাহ খুব দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবন। ছবি: সংগৃহীত
পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবন। ছবি: সংগৃহীত

থেমে থাকা কনস্ট্রাকশনের কাজের কী অবস্থা? দুর্নীতিবাজ প্রকৌশলীদের ব্যাপারে কী পদক্ষেপ নেবেন?

আমি এসেই থেমে থাকা কাজগুলো চালুর লক্ষ্যে অধ্যাপক মো. জামাল হোসেনকে তদারকির দায়িত্ব দিয়ে এবং সকল ঠিকাদার ও দায়িত্বপ্রাপ্ত কনস্ট্রাকশন কনসালট্যান্সি ফার্মের বিভিন্ন পর্যায়ের ইঞ্জিনিয়ার এবং দায়িত্বপ্রাপ্তদের সঙ্গে বারবার বৈঠক করেছি। বর্তমানে কনস্ট্রাকশন কাজগুলো দ্রুতগতিতে এগিয়ে চলছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়নের জন্য আমার প্রশাসনের সব পর্যায়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা দিনরাত পরিশ্রম করে যাচ্ছি। এ ছাড়া আমার কাছে নতুন করে কোনো প্রকৌশলীর বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ নেই। তবে কয়েকজনের বিরুদ্ধে দুদকের অনুসন্ধান চলমান রয়েছে। আমরা দুদককে তথ্য দিয়ে সহযোগিতা করছি। এ ছাড়া সবার ওপর আমাদের বর্তমান প্রশাসনের নজরদারি রয়েছে।

ছাত্ররাজনীতি নিয়ে আলোচনার সময় শিক্ষকরাজনীতির প্রসঙ্গও এসে যায়। আমরা দেখেছি, শিক্ষকরাজনীতিতে দল ভারী করতে শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া হয়। শিক্ষকনেতারা বিশ্ববিদ্যালয়ে পদ পেতে নির্লজ্জভাবে দলকানা হয়ে ওঠেন। এটা ঠেকাবেন কী করে?

এটা ঠেকানো খুবই কঠিন। তবে আমাদের শিক্ষকদের বোঝা উচিত, আমরা প্রথমে শিক্ষক। সেখানে শিক্ষকতা ছাড়িয়ে রাজনীতি আমাদের পেশা হওয়াটা সমীচীন নয়। আমার মনে হয়, যাঁরা একটি পোস্ট ও পজিশনের জন্য মরিয়া হয়ে ওঠেন, তাঁদের সে অপরাজনীতি বাদ দিয়ে বর্তমান প্রশাসনকে সহযোগিতা করা উচিত। কারণ, এর আগে যা হয়েছে তা ভুলে যান। আমার আমলে এমন কিছু হতে দেব না। আগে এসব কারণেই বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষা ও গবেষণা থেকে পিছিয়ে পড়েছে। এ ব্যাপারে আমি সবার সহযোগিতা কামনা করছি।

ক্যাম্পাসে রাজনীতি কবে শুরু হবে? ছাত্র সংসদ নির্বাচনের ব্যাপারে উদ্যোগ নেবেন কি না?

সরকার চাইলে শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারী ও ছাত্রদের রাজনীতি ক্যাম্পাসে উন্মুক্ত হবে, এর আগে নয়। এ ছাড়া ছাত্র সংসদ নির্বাচনের ব্যাপারে ইউজিসি ও মন্ত্রণালয় থেকে যদি নির্দেশনা আসে, তাহলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তবে শিক্ষার্থীদের মেধা বিকশিত করার বিভিন্ন এক্সট্রা কারিকুলার অ্যাকটিভিটি এবং অরাজনৈতিক সামাজিক সংগঠনগুলোর কার্যক্রম চালু রয়েছে।

বহিরাগতরা বিগত দিনে পবিপ্রবির সবকিছুতেই হস্তক্ষেপের পাশাপাশি উপাচার্যকে নিয়ন্ত্রণ করতেন। এই ৪ মাসে আপনার সঙ্গে এমন হয়েছে কি না?

এখন পর্যন্ত বহিরাগতদের কোনো চাপ অনুভব করছি না। নিঃসংকোচে নির্দ্বিধায় আমার মেধা, যোগ্যতা ও প্রজ্ঞা দিয়ে কাজ করে যাচ্ছি। গত ৪ মাসে শতভাগ অনিয়ম দূর করা সম্ভব না হলেও এসব দূরে ঠেলে কাজ করছি।

রেজিস্ট্রার একটি দাপ্তরিক পদ। সেখানে কর্মকর্তা না বসিয়ে সব সময় কেন শিক্ষকেরা বসছেন?

আমি কাউকেই খাটো করে দেখছি না। গত ১৫ বছরে দাপ্তরিক যে অসংগতি সৃষ্টি হয়েছে, সেটা দূর করা সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। বর্তমান প্রেক্ষাপটে বিভিন্ন পজিশনে শিক্ষকদের দ্বারাই সেটা দূর করা সম্ভব বলে মনে করি। আমি ভালো মানুষগুলোকে সিলেকশন দিয়েছি, তাঁদের দ্বারা বিশ্ববিদ্যালয় একটি পজিশনে এলে পরবর্তী সময়ে বিকল্প চিন্তা করব।

২০২৪ সালের ১৫ জানুয়ারি আজকের পত্রিকার প্রথম পাতায় আপনার বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ে লিড নিউজ হয়েছিল ‘এ যেন পারিবারিক বিশ্ববিদ্যালয়’ শিরোনামে। এই পরিবারেতন্ত্রের সিন্ডিকেট কীভাবে ভাঙবেন?

উত্তর: এই সিন্ডিকেটকে ভাঙার চেষ্টা করছি। সামনে যাতে এ রকম আর না হয়, সে জন্য সর্বোচ্চ চেষ্টা করব।

৫ আগস্টের পর বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য হিসেবে যাঁরা নিয়োগ পেয়েছেন, তাঁরা বিশেষ কোনো রাজনৈতিক দলের বলে অভিযোগ রয়েছে। আপনি আসলে কোনো দলের সঙ্গে জড়িত কি না?

আমি আগেই বলেছি প্রথমে আমি একজন শিক্ষক ও গবেষক। আমি একজন মানুষ হিসেবে আমার নিজস্ব স্বকীয়তা থাকতেই পারে।

পবিপ্রবিতে দলমত-নির্বিশেষে সব সময় দুটি গ্রুপ থাকে যেমন ভিসি গ্রুপ ও ভিসিবিরোধী গ্রুপ। বর্তমানে আপনার কোনো গ্রুপ তৈরি হয়েছে কি না?

ভাইস চ্যান্সেলরের কাছে সবারই চাওয়া পাওয়া থাকে। কারও থাকে নিয়মতান্ত্রিক, কারও অনৈতিক। আপনি যখন নিয়মতান্ত্রিক সব চাওয়া পাওয়াই পূরণ করতে পারবেন না, আর অনৈতিক তো প্রশ্নই আসে না। তখনই আপনার শত্রু জন্মাবে এবং ভিসিবিরোধী দল তৈরি হবে। বিরোধিতা আমার করতেই পারে, সেটা আমি ঠেকাতে যাব না। বিরোধিতাই আমাকে সঠিক পথে পরিচালনা করবে, সব সময় আমাকে সচেতন রাখবে। তবে আমি কোনো গ্রুপ করার পক্ষপাতি নই। আমি আমার মেধা, প্রজ্ঞা, যোগ্যতা ও সততা দিয়েই সবার গ্রহণযোগ্যতা অর্জন করতে চাই।

সর্বশেষ অবৈধ নিয়োগের ব্যাপারে কী পদক্ষেপ নিয়েছেন?

সে সময় আমি ছিলাম না, তবে নিয়োগটি নিয়ে আমাদের প্রশ্ন আছে। বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন, শিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং আদালতের কিছু অবজারভেশন আছে। তাঁদের সুপারিশের আলোকে আশা করি ভবিষ্যতে আমরা সিদ্ধান্ত নিতে পারব।

চব্বিশের ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থান নিয়ে আপনি কী বলবেন?

প্রথমেই বলব আমি এবং বর্তমান প্রশাসন হলাম এই ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের একটি ফল। একটি পরিবর্তিত নতুন বাংলাদেশের স্বপ্ন। আমার বর্তমান প্রশাসন জুলাই-আগস্ট গণ-অভ্যুত্থানে নিহত শহীদদের রক্তের ফল। আমরা তাদের রক্তের ওপর দাঁড়িয়ে আছি। বাহান্নর ভাষা আন্দোলন, একাত্তরের স্বাধীনতা ও নব্বইয়ের গণ-অভ্যুত্থানের সঙ্গে একই সূত্রে গাঁথা এই জুলাই-আগস্ট চব্বিশের ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থান। শহীদদের রুহের মাগফিরাত কামনা করছি এবং আহতদের পাশে বিত্তবানদের দাঁড়ানোর অনুরোধ করছি।

সর্বশেষ শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে কিছু বলুন।

পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে মাদকমুক্ত, র‍্যাগিংমুক্ত থেকে সুষ্ঠু পরিবেশ বজায় রেখে জ্ঞান আহরণের জন্য তোমরা এসেছো, জ্ঞান নিয়ে সারা পৃথিবীর বুকে ছড়িয়ে পড়বে এবং এই বিশ্ববিদ্যালয়ের মান মর্যাদা অক্ষুণ্ন রাখবে। সঙ্গে সঙ্গে তোমার এবং তোমার পরিবারের উন্নয়নের জন্য ভালো কাজে এগিয়ে যাও। অপরাজনীতি ও অপসংস্কৃতি থেকে দূরে থাকবে, যা বর্তমান পরিবর্তিত নতুন বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

‎জবির ‘এ’ ও ‘সি’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা ২৬ ও ২৭ ডিসেম্বর

জবি প্রতিনিধি 
‎জবির ‘এ’ ও ‘সি’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা ২৬ ও ২৭ ডিসেম্বর

‎জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় স্নাতক (সম্মান) ও বিবিএ প্রথম বর্ষের ‘এ’ ইউনিট (বিজ্ঞান ও লাইফ অ্যান্ড আর্থ সায়েন্স অনুষদ) ও ‘সি’ ইউনিটের (বাণিজ্য অনুষদ) ভর্তি পরীক্ষা আগামী ২৬ ডিসেম্বর (শুক্রবার) ও ২৭ ডিসেম্বর (শনিবার) অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। উভয় দিন পরীক্ষার সময় বেলা ১১টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত ১ ঘন্টা।

‎‘এ’ ইউনিটের (বিজ্ঞান ও লাইফ অ্যান্ড আর্থ সায়েন্স অনুষদ) ভর্তি পরীক্ষায় ৮৬০টি আসনের বিপরীতে ৭২ হাজর ৪৭৪ জন আবেদন করেছে। প্রতি আসনের জন্য ৮৫ জন পরীক্ষার্থী লড়বেন। আর ‘সি’ ইউনিটে (বাণিজ্য অনুষদ) ৫২০টি আসনের বিপরীতে ২০ হাজর ৫৩৭ জন আবেদন করেছে। বিজ্ঞান অনুষদে ৮৬০ আসনের বিপরীতে ৭২ হাজর ৪৭৪ জন আবেদন করেছে। প্রতি আসনের জন্য ৪০ জন শিক্ষার্থী লড়বেন।

‎‘এ’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা মোট ১২টি কেন্দ্রে অনুষ্ঠিত হবে। এর মধ্যে ঢাকার বাহিরে তিনটি কেন্দ্র, কুমিল্লা বিশ্বিবদ্যালয়, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে পরীক্ষা হবে। ঢাকার মধ্যে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়সহ মোট ৯টি কেন্দ্রের মধ্যে পরীক্ষা হবে। ঢাকার ভেতরের কেন্দ্র সমূহ হলো— জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, ইঞ্জিনিয়ারিং ইউনিভার্সিটি গার্লস স্কুল অ্যান্ড কলেজ, মোহাম্মদপুর সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়, শেরে বাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলাবাজার সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, ঢাকা কলেজিয়েট স্কুল, কে এল জুবিলি হাই স্কুল এন্ড কলেজ, বিইএএম মডেল হাই স্কুল এন্ড কলেজ।

‎‘সি’ ইউনিটে (বাণিজ্য অনুষদ) জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাড়াও ঢাকার মধ্যে বাংলাবাজার সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, শেরে বাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, গভর্মেন্ট মুসলিম হাই স্কুল কেন্দ্রে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে ৷

‎মোট ১০০ মার্কের পরীক্ষায় ৭২ মার্ক এমসিকিউ ও বাকী ১৮ মার্ক থাকবে এসএসসি (সমমান) ও এইচএসসি (সমমান) ফলাফলের ওপর। ‘এ’ ইউনিটে পদার্থ বিজ্ঞান, রসায়ন গণিত অথবা জীব বিজ্ঞান বিষয়ে প্রশ্ন করা হবে। ‘সি’ ইউনিটে ইংরেজি, গাণিতিক বুদ্ধিমত্তা ও হিসাব বিজ্ঞান, ব্যবসায় নীতি ও প্রয়োগ বিষয়ে প্রশ্ন আসবে।

‎পরীক্ষার সার্বিক প্রস্তুতি বিষয়ে বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. পরিমল বালা বলেন, ভর্তি পরীক্ষা আয়োজনের সব প্রস্তুতি আমাদের সম্পন্ন হয়েছে। এবার পরীক্ষার্থীদের সুবিধার কথা বিবেচনায় নিয়ে এবার ঢাকার বাহিরে খুলনা, রাজশাহী ও কুমিল্লা পরীক্ষা কেন্দ্র রাখা হয়েছে।

‎বাণিজ্য অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ মঞ্জুর মুর্শেদ ভূঁইয়া বলেন, আমাদের ৫২০ আসনের বিপরীতে ২০ হাজার ৫৩৭ জন আবেদন করেছে। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাড়াও ঢাকার মধ্যে আরও ৩টি কেন্দ্রে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। ঢাকার বাহিরে কোন কেন্দ্রে পরীক্ষা হবে না।

‎এর আগে ১৩ ডিসেম্বর ‘ই’ ইউনিটের (চারুকলা অনুষদ) ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। উল্লখ্য, সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদভুক্ত ডি ইউনিটের পরীক্ষা আগামী ৯ জানুয়ারি বেলা ১১টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত অনুষ্ঠিত হবে। কলা ও আইন অনুষদভুক্ত বি ইউনিটের পরীক্ষা আগামী ৩০ জানুয়ারি বেলা ৩টা থেকে বিকেল সাড়ে ৪টা পর্যন্ত অনুষ্ঠিত হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

এআইইউবিতে সাইবার গেমিং ফেস্ট ২০২৫ অনুষ্ঠিত

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

আমেরিকান ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটিতে (এআইইউবি) কম্পিউটার ক্লাব (এসিসি) ও অফিস অব স্টুডেন্ট অ্যাফেয়ার্সের সহযোগিতায় চার দিনব্যাপী ‘এআইইউবি সাইবার গেমিং ফেস্ট ২০২৫’ অনুষ্ঠিত হয়েছে। ১৯ থেকে ২২ ডিসেম্বর পর্যন্ত আয়োজিত এই উৎসবে দেশের বিভিন্ন স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের বিপুল সংখ্যক শিক্ষার্থী অংশ নেন।

সোমবার (২২ ডিসেম্বর) সমাপনী অনুষ্ঠানের মাধ্যমে বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেওয়া হয়। সমাপনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন এআইইউবির বোর্ড অব ট্রাস্টিজের চেয়ারম্যান ও প্রতিষ্ঠাতা সদস্য মিস নাদিয়া আনোয়ার, উপাচার্য অধ্যাপক ড. সাইফুল ইসলাম এবং উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আবদুর রহমান।

অনলাইন ও অন-ক্যাম্পাস পর্বের সমন্বয়ে আয়োজিত এই উৎসবে এআইইউবি ক্যাম্পাস একটি প্রাণবন্ত গেমিং অঙ্গনে রূপ নেয়। অনলাইন বাছাইপর্বে ৫১টি দল অংশ নেয়। সেখান থেকে ১৬টি দল চূড়ান্ত পর্বে লড়ে। চার ম্যাচের রুদ্ধশ্বাস লড়াই শেষে ‘ব্ল্যাকবিয়ার্ড পাইরেটস’ চ্যাম্পিয়ন হওয়ার গৌরব অর্জন করে।

এই বিভাগে ‘লোয়ার-ব্র্যাকেট’ থেকে উঠে এসে গ্র্যান্ড ফাইনালে ‘ন্যাক্সার ই-স্পোর্টস’কে হারিয়ে শিরোপা নিশ্চিত করে ‘অলস্টারস’ দল।

‘মোবাইল লিজেন্ডস ব্যাং ব্যাং’ (MLBB) বিভাগে ‘ভাইপার স্ট্রাইকার্স’, ‘এফসি ২৫’ বিভাগে নিও এবং ‘ই-ফুটবল’ একক বিভাগে শাওন শান্ত ও দলীয় বিভাগে পিএনজি বট চ্যাম্পিয়ন হয়েছে।

বিজয়ীদের মাঝে নগদ অর্থ ও ক্রেস্ট বিতরণ করা হয়। এছাড়া এআইইউবি ফটোগ্রাফি ক্লাব, ই-স্পোর্টস ক্লাব ও পারফর্মিং আর্টস ক্লাবকে বিশেষ সম্মাননা দেওয়া হয়। তিনজনকে সেরা ক্যাম্পাস অ্যাম্বাসেডর হিসেবে পুরস্কৃত করা হয়।

বক্তারা প্রতিযোগিতামূলক গেমিংয়ের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের প্রযুক্তিগত সক্ষমতা ও দক্ষতা বৃদ্ধির গুরুত্ব তুলে ধরেন। তাঁরা এই আয়োজনের পেশাদার ব্যবস্থাপনা ও ব্যাপক প্রসারের ভূয়সী প্রশংসা করেন।

এবারের আয়োজনে ইকুইপমেন্ট স্পন্সর ছিল কিয়ানস কালেক্টিবলস, টেক স্পন্সর এমএসআই এবং বেসিক স্পন্সর হিসেবে ছিল সিটি ব্যাংক। এছাড়া ইন্টারনেট পার্টনার হিসেবে ছিল লিঙ্ক থ্রি। মিডিয়া পার্টনার হিসেবে যুক্ত ছিল ডেইলি সান, দৈনিক যুগান্তর ও ডিবিসি নিউজ এবং ম্যাগাজিন পার্টনার ছিল কিশোর আলো।

উদ্বোধনী ও বিভিন্ন পর্বে আরও উপস্থিত ছিলেন এআইইউবির প্রক্টর অধ্যাপক ড. মঞ্জুর এইচ খানসহ অফিস অব স্টুডেন্ট অ্যাফেয়ার্সের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি ড. রইছ ও সম্পাদক ড. ইমরানুল

জবি প্রতিনিধি 
আপডেট : ২৪ ডিসেম্বর ২০২৫, ২০: ৪৫
সভাপতি অধ্যাপক ড. মো. রইছ উদ্দীন এবং সাধারণ সম্পাদক মার্কেটিং বিভাগের অধ্যাপক ড. ইমরানুল হক। ছবি: আজকের পত্রিকা
সভাপতি অধ্যাপক ড. মো. রইছ উদ্দীন এবং সাধারণ সম্পাদক মার্কেটিং বিভাগের অধ্যাপক ড. ইমরানুল হক। ছবি: আজকের পত্রিকা

‎জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির কার্যনির্বাহী পরিষদ নির্বাচন ২০২৬-এ সভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. রইছ উদ্দীন এবং সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছেন মার্কেটিং বিভাগের অধ্যাপক ড. ইমরানুল হক।

‎সকল পদে কোনো প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী না থাকায় আজ বুধবার (২৪ ডিসেম্বর) প্রধান নির্বাচন কমিশনার অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমান আনুষ্ঠানিকভাবে নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণা করেন।

‎ঘোষিত ফল অনুযায়ী, সহসভাপতি পদে ফিন্যান্স বিভাগের অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ মঞ্জুর মুর্শেদ ভূঁইয়া, কোষাধ্যক্ষ পদে কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ নাসির উদ্দিন এবং যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক পদে ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ বিলাল হোসাইন নির্বাচিত হয়েছেন।

কার্যনির্বাহী পরিষদের সদস্য হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. আজম খাঁন, মার্কেটিং বিভাগের অধ্যাপক ড. শেখ রফিকুল ইসলাম, রসায়ন বিভাগের অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ লোকমান হোসেন ও অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ জামির হোসেন, সমাজবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. আয়েশা সিদ্দিকা ডেইজী, ফিন্যান্স বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. ওমর ফারুক, কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. আবু লায়েক, ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক ড. নাছির আহমাদ, অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক তারেক মুহাম্মদ শামসুল আরেফীন এবং আইন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মুহাম্মদ আসাদুজ্জামান সাদী।

‎নির্বাচন কমিশনার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. কাজী সাখাওয়াত হোসেন, আইন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক আহমদ ইহসানুল কবীর, লোকপ্রশাসন বিভাগের সহকারী অধ্যাপক আয়শা জাহান এবং ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. তারেক বিন আতিক।

‎নবনির্বাচিত সাধারণ সম্পাদক ড. ইমরানুল হক বলেন, এককভাবে নয়, সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টায় বিশ্ববিদ্যালয়কে একটি ব্র্যান্ড হিসেবে গড়ে তোলা হবে। নিয়মিত দায়িত্বের পাশাপাশি ভিন্নধর্মী উদ্যোগ নেওয়া হবে এবং আগামী বছরও জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব ভর্তি প্রক্রিয়া অব্যাহত থাকবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

চীনের বিশ্ববিদ্যালয়ে সম্পূর্ণ অর্থায়িত সিএসসি বৃত্তি

শিক্ষা ডেস্ক
আপডেট : ২৪ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৯: ২২
বেইহাং ইউনিভার্সিটি, চীন
বেইহাং ইউনিভার্সিটি, চীন

চীনে উচ্চশিক্ষার স্বপ্ন দেখা আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের জন্য এসেছে বড় সুযোগ। দেশটির বেইহাং ইউনিভার্সিটি চায়নিজ গভর্নমেন্ট স্কলারশিপের আবেদনপ্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। বিশ্বের যেকোনো দেশের শিক্ষার্থীরা এই বৃত্তির জন্য আবেদন করতে পারবেন। সম্পূর্ণ অর্থায়িত এই বৃত্তিতে অর্থায়ন করবে দেশটির সরকার। বৃত্তিটির আওতায় নির্বাচিত শিক্ষার্থীরা দেশটির বিশ্ববিদ্যালয়টি থেকে স্নাতকোত্তর ও পিএইচডি ডিগ্রি অর্জনের সুযোগ পাবেন। ২০২৬-২৭ শিক্ষাবর্ষের জন্য প্রদত্ত এই বৃত্তি আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের জন্য এক অনন্য সুযোগ।

চীনের শীর্ষস্থানীয় প্রকৌশল ও প্রযুক্তিনির্ভর উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে বেইহাং ইউনিভার্সিটি বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। ১৯৫২ সালে প্রতিষ্ঠিত এই বিশ্ববিদ্যালয় বেইজিংয়ে অবস্থিত। এর পূর্ব নাম ছিল বেইজিং ইউনিভার্সিটি অব অ্যারোনটিকস অ্যান্ড অ্যাস্ট্রোনটিকস। চীনের ‘ডাবল ফার্স্ট ক্লাস ইউনিভার্সিটি’ উদ্যোগের অন্তর্ভুক্ত এই প্রতিষ্ঠান আধুনিক গবেষণাগার, বিশ্বমানের ফ্যাকাল্টি এবং শক্তিশালী শিল্প-সহযোগিতার মাধ্যমে আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের জন্য একটি অত্যন্ত আকর্ষণীয় গন্তব্য হিসেবে বিবেচিত।

সুযোগ-সুবিধা

বেইহাং ইউনিভার্সিটি সিএসসি স্কলারশিপ চীনে আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের জন্য সম্পূর্ণ অর্থায়িত একটি বৃত্তি। এই বৃত্তির আওতায় শিক্ষার্থীদের পড়াশোনার প্রায় সব খরচ বহন করা হয়। এই বৃত্তির জন্য নির্বাচিত শিক্ষার্থীদের সম্পূর্ণ টিউশন ফি মওকুফ করা হবে। পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে বিনা মূল্যে আবাসন অথবা আবাসন ভর্তুকির সুযোগ থাকবে। শিক্ষার্থীদের দৈনন্দিন জীবনযাত্রার খরচ নির্বাহের জন্য দেওয়া হবে মাসিক ভাতা (স্টাইপেন্ড)। স্বাস্থ্য সুরক্ষায় অন্তর্ভুক্ত থাকবে সমন্বিত চিকিৎসাবিমা।

আবেদনের যোগ্যতা

বৃত্তিটির জন্য আবেদন করতে হলে প্রার্থীদের কিছু নির্দিষ্ট যোগ্যতার শর্ত পূরণ করতে হবে। আবেদনকারীকে অবশ্যই গণপ্রজাতন্ত্রী চীনের বাইরে অন্য কোনো দেশের নাগরিক হতে হবে। প্রার্থীদের অবশ্যই শারীরিক ও মানসিকভাবে সুস্থ থাকতে হবে। শিক্ষাগত যোগ্যতা ও বয়সের ক্ষেত্রে মাস্টার্স প্রোগ্রামে আবেদনকারীদের স্নাতক ডিগ্রিধারী হতে হবে এবং বয়স ৩৫ বছরের নিচে থাকতে হবে। অন্যদিকে, ডক্টরাল (পিএইচডি) প্রোগ্রামে আবেদনকারীদের স্নাতকোত্তর ডিগ্রি থাকতে হবে এবং বয়স ৪০ বছরের নিচে হতে হবে।

প্রয়োজনীয় তথ্য

বৃত্তিটিতে আবেদন করতে আগ্রহী শিক্ষার্থীদের নির্ধারিত কিছু গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্র প্রস্তুত ও জমা দিতে হবে। এগুলোর মধ্যে রয়েছে চায়নিজ গভর্নমেন্ট স্কলারশিপের আবেদন ফরম (চীনা অথবা ইংরেজি ভাষায় পূরণকৃত), হালনাগাদ রেজুমে বা সিভি, পাসপোর্টের মূল তথ্য-পাতার কপি, সর্বোচ্চ ডিগ্রির নোটারাইজড সনদ এবং একাডেমিক ট্রান্সক্রিপ্ট। পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট বিভাগ বা সুপারভাইজরের অ্যাকসেপ্ট্যান্স লেটার, একটি সুস্পষ্ট স্টাডি প্ল্যান বা গবেষণা প্রস্তাবনা এবং দুটি সুপারিশপত্র জমা দিতে হবে। এ ছাড়া ফরেনার ফিজিক্যাল এক্সামিনেশন ফরমের কপি, নন-ক্রিমিনাল রেকর্ডের নথি এবং ইংরেজি ভাষা দক্ষতার সনদ সংযুক্ত করতে হবে।

অধ্যয়নের ক্ষেত্রসমূহ

স্কুল অব অ্যারোনটিক্যাল সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং, অ্যাস্ট্রোনটিকস, অটোমেশন সায়েন্স অ্যান্ড ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং, কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং, ইলেকট্রনিক ইনফরমেশন ইঞ্জিনিয়ারিং, মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড অটোমেশন, ম্যাটেরিয়ালস সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং, এনার্জি অ্যান্ড পাওয়ার ইঞ্জিনিয়ারিং, সাইবার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং, ম্যাথমেটিকস অ্যান্ড সিস্টেমস সায়েন্স, ফিজিক্স, কেমিস্ট্রি, ইকোনমিকস অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট, হিউম্যানিটিজ অ্যান্ড সোশ্যাল সায়েন্সেস, ফরেন ল্যাঙ্গুয়েজেস এবং স্কুল অব ল।

আবেদনের পদ্ধতি

আগ্রহী প্রার্থীরা লিংকে গিয়ে অনলাইনের মাধ্যমে আবেদন করতে পারবেন।

আবেদনের শেষ সময়

২৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২৬।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত