Ajker Patrika

চাকসু নির্বাচন: ভোটের দিন স্ট্রাইকিং ফোর্সের দায়িত্বে সেনাবাহিনী

চবি প্রতিনিধি 
চাকসু নির্বাচন উপলক্ষে উপাচার্যের সম্মেলনকক্ষে সংবাদ সম্মেলন। ছবি: আজকের পত্রিকা
চাকসু নির্বাচন উপলক্ষে উপাচার্যের সম্মেলনকক্ষে সংবাদ সম্মেলন। ছবি: আজকের পত্রিকা

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (চাকসু) নির্বাচনকে ঘিরে পুরো ক্যাম্পাসে কঠোর নিরাপত্তাব্যবস্থা নিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় নির্বাচনের দিন প্রতিটি ভবনে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটসহ বহুমুখী নিরাপত্তা পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। নির্বাচনে যেকোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে থাকবে সেনাবাহিনী, প্রয়োজনে তিন মিনিটের মধ্যে ক্যাম্পাসে প্রবেশ করবে তারা।

আজ রোববার উপাচার্যের সম্মেলনকক্ষে সংবাদ সম্মেলনে সার্বিক বিষয় ও আইনশৃঙ্খলা সম্পর্কে এসব তথ্য জানান চাকসুর প্রধান নির্বাচন কমিশনার অধ্যাপক মনির উদ্দিন।

প্রধান নির্বাচন কমিশনার বলেন, নির্বাচন সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন করতে সব ধরনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। নির্বাচনের দিন পাঁচটি ভবনের ১৫টি হলের জন্য কেন্দ্র থাকবে ৬০টি। ভোট গ্রহণ হবে ওএমআর পদ্ধতিতে। প্রতিটি রুমে গড়ে ৪০০-৫০০ শিক্ষার্থী ভোট দেবেন। একজন শিক্ষার্থী ৪০টি ভোট দেবেন। সেই অনুযায়ী গোপন বুথ তৈরি করা হয়েছে।

সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত চলবে ভোট গ্রহণ। নির্বাচন পরিচালনার জন্য প্রতিটি অনুষদ ভবনের ডিনকে রিটার্নিং কর্মকর্তা ও বিভাগীয় চেয়ারম্যানদের প্রিসাইডিং কর্মকর্তার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। ১৪ অক্টোবর থেকে শিক্ষার্থী ছাড়া বহিরাগত কেউ ক্যাম্পাসে অবস্থান করতে পারবেন না।

ভোট গণনার ব্যাপারে অধ্যাপক মনির উদ্দিন বলেন, দুই ধাপে হবে ভোট ঘোষণা—একটি ধাপ পরিচালনা করবে ভেন্ডর প্রতিষ্ঠান এবং অন্যটি বিশ্ববিদ্যালয়ের আইসিটি সেল। ভোট গ্রহণ শেষে প্রতিটি কেন্দ্রে তাৎক্ষণিকভাবে গণনা হবে এবং কেন্দ্র থেকেই ফলাফল ঘোষণা করা হবে। হলের ফলাফলও একইভাবে প্রকাশ করা হবে। চূড়ান্ত ফলাফল ঘোষণা করা হবে ব্যবসায় প্রশাসন অনুষদের অডিটরিয়ামে।

ভোটকেন্দ্রের প্রতিটি কক্ষে থাকবে সিসিটিভি ক্যামেরা। নির্বাচনে স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে সেনাবাহিনী প্রস্তুত থাকবে, যারা প্রয়োজনে তিন মিনিটের মধ্যে ক্যাম্পাসে প্রবেশ করতে পারবে। পুলিশের পাশাপাশি র‍্যাব, বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তা বাহিনী, বিএনসিসি ও রোভার স্কাউট সদস্যরাও দায়িত্বে থাকবেন। প্রতিটি ভবনে একজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট দায়িত্ব পালন করবেন। চারজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে ক্যাম্পাসে সার্বক্ষণিক মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করা হবে।

এ ছাড়া ভোটকেন্দ্রে পানি ও মেডিকেল টিমের ব্যবস্থা থাকবে। ইলেকট্রিসিটি বন্ধ হলেও ভোটের রেকর্ড বন্ধ হবে না—এ জন্য জেনারেটর সাপোর্ট রাখা হয়েছে।

এ ছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন জানিয়েছে, ক্যাম্পাসে কোনো অবৈধ শিক্ষার্থী যাতে অবস্থান করতে না পারে, সে বিষয়ে অভিযান চালানো হচ্ছে। প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী ছাড়া যাঁদের আইডি কার্ড নেই, তাঁদের ক্যাম্পাসে থাকার অনুমতি দেওয়া হবে না এবং নির্বাচনের দিন গণমাধ্যমকর্মীদের প্রেসের কার্ড প্রদর্শনের মাধ্যমে যানবাহন চলাচলের অনুমতি দেওয়া হবে।

আইনশৃঙ্খলার বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক হোসেন শহীদ সরওয়ার্দী বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের দুটি প্রবেশপথে প্রতিদিন টহল দিচ্ছে দুটি করে টহল টিম। বহিরাগতদের প্রবেশেও কঠোর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রবেশের ক্ষেত্রে আইডি কার্ড বহন বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।

পুলিশ, বিজিবি, এপিবিএন ও বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল টিম যৌথভাবে বহিরাগতদের প্রবেশ ঠেকাতে কাজ করবে। পাঁচটি ভবনের জন্য আলাদা নিরাপত্তা স্তর নির্ধারণ করা হয়েছে। ভোট গ্রহণের সময় প্রিসাইডিং কর্মকর্তার অনুমতি ছাড়া কোনো নিরাপত্তাকর্মী কাউকে ভবনে প্রবেশ করতে দেবেন না।

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ইয়াহ্ইয়া আখতার বলেন, ‘প্রায় ৩৫ বছর পর আমরা চাকসু নির্বাচনের আয়োজন করেছি। দীর্ঘদিন ধরে এই নির্বাচন হয় না। আমরা এটিকে অগ্রাধিকার দিয়েছি। এই নির্বাচন যেন একটি স্বচ্ছ ও ইনক্লুসিভ নির্বাচন হয়, তা আমরা নিশ্চিত করার জন্য সর্বাত্মকভাবে কাজ করছি।’

নির্বাচন পরিচালনার জন্য নির্বাচন কমিশন সম্পূর্ণভাবে স্বাধীনভাবে কাজ করছে। তা ছাড়া নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে কড়া নিরাপত্তাব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

এ সময় উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক শামীম উদ্দিন খান, উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক কামাল উদ্দিনসহ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ঢাবি ভর্তি আবেদনের সময় বেড়েছে, শেষ ১৯ নভেম্বর

শিক্ষা ডেস্ক
ঢাবি ভর্তি আবেদনের সময় বেড়েছে, শেষ ১৯ নভেম্বর

২০২৫-২৬ শিক্ষাবর্ষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) আন্ডারগ্র্যাজুয়েট প্রোগ্রামে ভর্তি পরীক্ষার আবেদনের সময় তিন দিন বাড়ানো হয়েছে। বৃহস্পতিবার (১৩ নভেম্বর) বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তির ওয়েবসাইটে এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

এর আগে, গত ২৯ অক্টোবর দুপুর ১২টা থেকে ভর্তির আবেদন শুরু হয়। ১৬ নভেম্বর রাত ১১টা ৫৯ মিনিটে অনলাইনে আবেদন শেষ হওয়ার কথা ছিল।

বর্ধিত সময় অনুযায়ী, ১৯ নভেম্বর রাত ১২টা পর্যন্ত আবেদন করা যাবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, আগামী ১৬ নভেম্বর উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার পুনর্নিরীক্ষণের ফলাফল প্রকাশ করা হবে। এ অবস্থায়, ফলাফল পরিবর্তনের ফলে নতুনভাবে আবেদনের যোগ্যতা অর্জনকারী শিক্ষার্থীরা যেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আবেদনের সুযোগ থেকে বঞ্চিত না হয়, সে পরিপ্রেক্ষিতে ভর্তি-সংক্রান্ত অন্য সব তারিখ অপরিবর্তিত রেখে অনলাইনে আবেদনের সময়সীমা তিন দিন বৃদ্ধি করা হয়েছে।

চলতি শিক্ষাবর্ষে ঢাবির পাঁচটি ইউনিটের মাধ্যমে ‘আন্ডারগ্র্যাজুয়েট প্রোগ্রামে’ ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। ইউনিটগুলো হচ্ছে ‘কলা, আইন ও সামাজিক বিজ্ঞান ইউনিট’, ‘বিজ্ঞান ইউনিট’, ‘ব্যবসায় শিক্ষা ইউনিট’ ‘চারুকলা ইউনিট’ এবং আইবিএ ইউনিট।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

এইচএসসি পরীক্ষার পুনঃনিরীক্ষণের ফল প্রকাশ, পূর্ণাঙ্গ তালিকা দেখুন

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ১৬ নভেম্বর ২০২৫, ১১: ০৮
ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

২০২৫ সালের উচ্চমাধ্যমিক সার্টিফিকেট (এইচএসসি) ও সমমান পরীক্ষার পুনঃনিরীক্ষণের ফল প্রকাশ করা হয়েছে। আজ রোববার এই তথ্য জানান ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক অধ্যাপক এস এম কামাল উদ্দিন হায়দার।

এর আগে গত বৃহস্পতিবার ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, এইচএসসি পরীক্ষার পুনঃনিরীক্ষণের ফল রোববার সকাল ১০টায় বোর্ডের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হবে। পাশাপাশি আবেদনকারীদের মোবাইল নম্বরে এসএমএস পাঠিয়েও ফল জানিয়ে দেওয়া হবে। ফলাফল ওয়েবসাইট থেকে সংগ্রহ করার অনুরোধ জানানো হয়েছে।

একইভাবে বাংলাদেশ মাদ্রাসা শিক্ষাবোর্ড জানিয়েছে, আলিম পরীক্ষার পুনঃনিরীক্ষণের ফলও একই সময়ে বোর্ডের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হবে। যারা পুনঃনিরীক্ষণের জন্য আবেদন করেছেন, তাঁদের মোবাইল নম্বরে এসএমএসের মাধ্যমে ফল জানানো হবে।

এইচএসসি পরীক্ষার পুনঃনিরীক্ষা ফলাফল:

শিক্ষা বোর্ড-সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, এবার খাতা পুনঃনিরীক্ষণের জন্য রেকর্ডসংখ্যক আবেদন জমা পড়েছে। দেশের ১১টি শিক্ষা বোর্ডে ২ লাখ ২৬ হাজার শিক্ষার্থী ৪ লাখ ২৮ হাজার খাতা পুনঃনিরীক্ষণের আবেদন করেছেন। এর মধ্যে সর্বাধিক আবেদন পড়েছে ঢাকা শিক্ষা বোর্ডে এবং সবচেয়ে কম বরিশাল বোর্ডে।

বিষয়ভিত্তিক সবচেয়ে বেশি আবেদন এসেছে ইংরেজি এবং তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি (আইসিটি) বিষয়ে। ১৬ অক্টোবর ফল প্রকাশের পরদিন ১৭ থেকে ২৩ অক্টোবর পর্যন্ত সাত দিন আবেদন গ্রহণ করা হয়। শিক্ষার্থীরা প্রতি বিষয়ে ১৫০ টাকা ফি দিয়ে পুনঃনিরীক্ষণের আবেদন করেন।

আলিম পরীক্ষার পুনঃনিরীক্ষা ফলাফল:

উল্লেখ্য, এ বছর সারা দেশের ৯ হাজার ১৯৭টি প্রতিষ্ঠান থেকে ১২ লাখ ৫১ হাজার ১১১ জন শিক্ষার্থী এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় অংশ নেন। তাঁদের মধ্যে উত্তীর্ণ হয়েছেন ৭ লাখ ২৬ হাজার ৯৬০ জন, পাসের হার ৫৮ দশমিক ৮৩ শতাংশ। ফেল করেছেন ৫ লাখ ৮ হাজার ৭০১ জন (৪১ দশমিক ১৭ শতাংশ)। ছাত্রীদের পাসের হার ৬২ দশমিক ৯৭ শতাংশ এবং ছাত্রদের ৫৪ দশমিক ৬০ শতাংশ।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

তৈরি পোশাক ও টেক্সটাইল খাতে ক্যারিয়ার

দেশের অর্থনীতির প্রাণশক্তি এখন তৈরি পোশাক ও টেক্সটাইল শিল্প। সময়ের সঙ্গে এই খাত পেরিয়েছে নানা চড়াই-উতরাই, অর্জন করেছে বিশ্বের নজরকাড়া সাফল্য। আজ এই শিল্প শুধু রপ্তানির প্রধান উৎস নয়, বরং তরুণদের জন্য সম্ভাবনাময় ক্যারিয়ারের জগৎ। প্রশ্ন হলো, এই সম্ভাবনাকে আমরা কতটা কাজে লাগাচ্ছি? এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানিয়েছেন বুনন বি-এর প্রতিষ্ঠাতা মো. সালাউদ্দিন

মো. আশিকুর রহমান
তৈরি পোশাক ও টেক্সটাইল খাতে ক্যারিয়ার

কেন এই খাত তরুণদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ

দেশের মোট রপ্তানি আয়ের প্রায় ৮০ শতাংশ আসে তৈরি পোশাক ও টেক্সটাইল থেকে। অথচ এত বড় শিল্পে এখনো দক্ষ মানবসম্পদের ঘাটতি স্পষ্ট। এই ঘাটতি পূরণে সবচেয়ে বড় ভূমিকা রাখতে পারেন আজকের শিক্ষার্থীরা। কিন্তু বাস্তবতা হলো, অনেক তরুণ ক্যারিয়ারের শুরুতে নিজেদের কমফোর্ট জোনে আটকে থাকেন। তাঁরা নির্দিষ্ট পদে সীমাবদ্ধ থেকে যান, পুরো শিল্পের গতিবিধি বোঝার আগ্রহ দেখান না। অথচ এই খাতে সাফল্যের জন্য প্রয়োজন বাস্তব অভিজ্ঞতা ও উদ্ভাবনী মনোভাব।

বই ও ক্লাসরুম আপনাকে জ্ঞানের ভিত্তি দেবে, কিন্তু বাজার শেখাবে টিকে থাকার কৌশল। তাই টেক্সটাইল বা গার্মেন্টস খাতে সফল হতে চাইলে এখন থেকে হাতে-কলমে শেখার অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে। সম্ভব হলে নিজের উদ্যোগে ছোট কোনো প্রকল্প শুরু করা; যেমন ৫০টি পণ্য তৈরি, কাপড়ের স্যাম্পল বানানো কিংবা স্থানীয় বাজারে বিক্রির অভিজ্ঞতা নেওয়া। এই বাস্তব চর্চা আপনাকে আলাদা করবে অন্যদের থেকে।

ক্যারিয়ারের নতুন দিগন্ত

গার্মেন্টস ও টেক্সটাইল শিল্প মানে এখন শুধু উৎপাদন নয়। এই খাতের বাইরেও রয়েছে অসংখ্য সম্ভাবনাময় ক্ষেত্র। তথ্যপ্রযুক্তি ও ডিজিটাল ম্যানুফ্যাকচারিং, ফ্যাশন ডিজাইন ও ইনোভেশন, সাপ্লাই চেইন ও লজিস্টিকস ম্যানেজমেন্ট, কমপ্লায়েন্স, ইএসজি (Environmental, Social & Governance) ও গ্রিন বিল্ডিং, ডিজিটাল মার্কেটিং ও আন্তর্জাতিক ব্র্যান্ড কমিউনিকেশন, টেক্সটাইল গবেষণা এবং সাস্টেইনেবল প্রোডাকশন টেকনোলজি—প্রতিটি ক্ষেত্রে এখন তরুণদের জন্য নতুন দরজা খুলে যাচ্ছে। বিশেষ করে যাঁরা উদ্যোক্তা হতে চান, তাঁদের জন্য এটি সেরা সময়। তবে বাজারের বাস্তব চাহিদা, প্রযুক্তিগত অগ্রগতি ও বৈশ্বিক পরিবর্তন সম্পর্কে সচেতন না হলে এই প্রতিযোগিতামূলক শিল্পে টিকে থাকা কঠিন হবে।

চাকরি, না উদ্যোক্তা

অনেকে ভাবেন, চাকরি করব নাকি উদ্যোক্তা হব। বাস্তবতা হলো, বাংলাদেশের প্রায় ৭০ শতাংশ সফল গার্মেন্টস উদ্যোক্তা একসময় এই খাতে চাকরি করেছিলেন। চাকরির অভিজ্ঞতা তাঁদের উদ্যোক্তা হওয়ার মজবুত ভিত্তি তৈরি করেছে। তবে চাকরি বদলের ক্ষেত্রে বুদ্ধিমত্তা জরুরি। যদি নতুন কর্মস্থলে আপনার দক্ষতা ও শ্রমের সঠিক মূল্যায়ন হয়, তবে সেই সুযোগ গ্রহণ করুন। নিজের কিছু গড়ার পরিকল্পনা থাকলে বারবার চাকরি বদল না করাই ভালো। অভিজ্ঞতাকে ব্যবহার করতে শিখুন। দেখবেন, সেই অভিজ্ঞতা একদিন পুঁজিতে রূপ নেবে।

অচেনা নায়কেরা

আমরা প্রায় সময় এই শিল্পের মালিক বা শ্রমিকদের গল্প শুনি। কিন্তু এর আড়ালে কাজ করা অসংখ্য পেশাজীবীর কথা খুব কম বলা হয়। মার্চেন্ডাইজার, প্রোডাকশন প্ল্যানার, সাপ্লাই চেইন ম্যানেজার ও কোয়ালিটি কন্ট্রোল কর্মকর্তাদের নিঃশব্দ পরিশ্রমে প্রতিটি রপ্তানি অর্ডার সময়মতো সম্পন্ন হয়। এই মধ্যম স্তরের পেশাজীবীরা পুরো সাপ্লাই চেইনের ভারসাম্য ধরে রাখেন। তাঁদের অবদান মূল্যায়ন না করলে এই শিল্পের স্থায়িত্ব হুমকির মুখে পড়বে।

একসময়ের অনিশ্চয়তা থেকে আজকের সাফল্য

১৯৭০-এর দশকের শেষ দিকে এই খাত ছিল প্রায় অচেনা। শিক্ষিত তরুণেরা গার্মেন্টসে কাজ করতে আগ্রহী ছিলেন না। অথচ আজ টেক্সটাইল ও গার্মেন্টস খাত দেশের সবচেয়ে বড় কর্মসংস্থানের ক্ষেত্র। বিশ্বব্যাপী নানা চ্যালেঞ্জের মধ্যে এই শিল্প যে স্থিতিশীলতা ও প্রযুক্তিগত উন্নয়ন অর্জন করেছে, তা বাংলাদেশের জন্য গর্বের বিষয়।

সফলতার সূত্র

শিক্ষা আপনাকে দেবে জ্ঞান; কিন্তু অভিজ্ঞতা শেখাবে সিদ্ধান্ত নেওয়া, সমস্যা সমাধান ও নেতৃত্বের দক্ষতা। এই দুইয়ের সমন্বয়ে তৈরি হবে ভবিষ্যতের সফল পেশাজীবী। মনে রাখবেন, গার্মেন্টস ও টেক্সটাইল শিল্পে দক্ষতা মানে শুধু মেশিন বা কাঁচামালের জ্ঞান নয়, বরং বোঝার ও বোঝানোর ক্ষমতা। এই ক্ষমতা একদিন আপনাকে নেতা হিসেবে গড়ে তুলবে। আমরা সেই প্রজন্ম, যারা এই শিল্পে প্রযুক্তি ও উদ্ভাবনের ছোঁয়া এনেছি। তাই নিজেকে ‘বেকার’ নয়, ‘প্রস্তুতপ্রার্থী’ ভাবুন। গর্ব করে বলুন, ‘আমি প্রস্তুতি নিচ্ছি, আমার সময় আসছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

নেদারল্যান্ডসের টোয়েন্টে বিশ্ববিদ্যালয়ে অর্থায়িত বৃত্তি

শিক্ষা ডেস্ক
টোয়েন্টে বিশ্ববিদ্যালয়
টোয়েন্টে বিশ্ববিদ্যালয়

নেদারল্যান্ডসের ইউনিভার্সিটি অব টোয়েন্টে স্কলারশিপের আবেদন গ্রহণ শুরু হয়েছে। বিশ্বের সব দেশের শিক্ষার্থীরা এই অর্থায়িত বৃত্তির জন্য আবেদন করতে পারবেন। নির্বাচিত শিক্ষার্থীরা এই বৃত্তির আওতায় দেশটির বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জনের সুযোগ পাবেন। ২০২৬ শিক্ষাবর্ষের জন্য বৃত্তিটি কার্যকর থাকবে।

ইউনিভার্সিটি অব টোয়েন্টে নেদারল্যান্ডসের এনশেকেডে শহরে অবস্থিত একটি আধুনিক ও গবেষণাভিত্তিক পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়। বিশ্ববিদ্যালয়টি তার আধুনিক ল্যাব, বন্ধুত্বপূর্ণ ক্যাম্পাস পরিবেশ এবং নতুন আইডিয়া ও স্টার্টআপ তৈরিতে শিক্ষার্থীদের উৎসাহ দেওয়ার জন্য পরিচিত। উচ্চমানের শিক্ষা ও আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীবান্ধব পরিবেশের কারণে এটি বিশ্বজুড়ে সব শিক্ষার্থীর কাছে প্রথম পছন্দ হয়ে উঠেছে।

সুযোগ-সুবিধা: ইউনিভার্সিটি অব টোয়েন্টে স্কলারশিপ আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের জন্য বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধার ব্যবস্থা রয়েছে। এই বৃত্তিটির মূল্য (বছরে) ৩ হাজার থেকে ২২ হাজার ইউরো। শিক্ষার্থীরা প্রথম বছর বৃত্তির শর্ত পূরণ করতে পারলে দ্বিতীয় বছরেও নবায়ন হতে পারে। বিশ্ববিদ্যালয়টির আরেকটি বৃত্তি রয়েছে। কিপাজি নামের ওই বৃত্তির মূল্য ১২ হাজার ইউরো।

বৃত্তির সংখ্যা: বিশ্ববিদ্যালয়টিতে মোট ৫০টি স্কলারশিপ রয়েছে।

আবেদনের যোগ্যতা

ইউরোপীয় ইউনিয়ন বা ইউরোপিয়ান ইকোনমিক এরিয়ার বাইরের যেকোনো দেশের শিক্ষার্থীরা বৃত্তির জন্য আবেদন করতে পারবেন। প্রথমে প্রার্থীকে একটি একাডেমিক অ্যাডমিশন লেটার সংগ্রহ করতে হবে। আবেদন করার পর ফল পেতে সর্বোচ্চ আট সপ্তাহ সময় লাগতে পারে। নেদারল্যান্ডসে প্রবেশের জন্য স্টুডেন্ট ভিসা সংগ্রহ করতে হবে। প্রার্থীদের আইইএলটিএস স্কোর ৬.৫ থাকতে হবে।

অধ্যয়নের ক্ষেত্রগুলো: অ্যাপ্লাইড ফিজিকস, অ্যাপ্লাইড ম্যাথমেটিকস, বিজনেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন, বায়োমেডিকেল ইঞ্জিনিয়ারিং, কেমিক্যাল সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং, সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট, কম্পিউটার সায়েন্স, কমিউনিকেশন সায়েন্স, কনস্ট্রাকশন ম্যানেজমেন্ট অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং, ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং, এনভায়রনমেন্টাল অ্যান্ড এনার্জি ম্যানেজমেন্ট, ইউরোপিয়ান স্টাডিজ, হেলথ সায়েন্সেস, ইন্ডাস্ট্রিয়াল ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট, ন্যানোটেকনোলজি, মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং, সাইকোলজি, পাবলিক অ্যাডমিনিস্ট্রেশন এবং রোবোটিকস।

আবেদন পদ্ধতি

আগ্রহী প্রার্থীরা এই লিংকে গিয়ে অনলাইনের মাধ্যমে আবেদন করতে পারবেন।

আবেদনের শেষ সময়: ১ মে, ২০২৬।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত