Ajker Patrika

নিয়োগ আটকে যাচ্ছে রাজনৈতিক পরিচয়ে

শহীদুল ইসলাম, ঢাকা
আপডেট : ০৩ অক্টোবর ২০২১, ১১: ২৩
নিয়োগ আটকে যাচ্ছে রাজনৈতিক পরিচয়ে

বিসিএসে উত্তীর্ণ হলেও চূড়ান্তভাবে নিয়োগ পাচ্ছেন না অনেকে। পুলিশ ও গোয়েন্দা সংস্থার প্রতিবেদন ইতিবাচক না হওয়ায় এসব প্রার্থীর নিয়োগ হচ্ছে না। নিয়োগবঞ্চিতদের আবেদনের ভিত্তিতে মাঠ প্রশাসনের কর্মকর্তাদের দিয়ে প্রতিবেদন যাচাই করেই ফল মিলছে না। বিসিএস ক্যাডার হিসেবে নিয়োগে পিএসসির সুপারিশ পেলেও প্রতিবেদন সন্তোষজনক না হওয়ায় ৩৩ থেকে ৩৮তম বিসিএস পর্যন্ত ৬৩১ জন নিয়োগ পাননি।

নিয়োগ না পাওয়া অনেক প্রার্থীর পরিবারের সদস্য ও আত্মীয়স্বজনের বিরোধী রাজনৈতিক দলের সংশ্লিষ্টতাকে কারণ হিসেবে দেখানো হয়েছে। তবে জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন দাবি করেছেন, বিসিএসে উত্তীর্ণ কাউকে চূড়ান্তভাবে নিয়োগের আগে তাঁদের পরিবারের সদস্য ও আত্মীয়স্বজনের রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতা দেখা হয় না।

স্বীকৃতি ও নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলের সঙ্গে নিয়োগপ্রার্থীর আত্মীয়স্বজনের সম্পৃক্ততার কারণে নিয়োগের জন্য অনুপযুক্ত বিবেচনাকে সম্পূর্ণ বেআইনি বলে মত দিয়েছেন আইনজীবীরা। তাঁরা বলছেন, কেন নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে না, সেই কারণ জানার পর প্রার্থীরা আদালতে যেতে পারেন। কী কারণে নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে না, সেটা জানতেও রিট করা যাবে।

বিসিএসের সব পরীক্ষায় উত্তীর্ণের পর চূড়ান্তভাবে নিয়োগের জন্য সুপারিশ করে সরকারি কর্ম কমিশন (পিএসসি)। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে চূড়ান্ত নিয়োগ দেওয়ার আগে ১৬ ধরনের তথ্য পুলিশ ও গোয়েন্দা সংস্থাকে দিয়ে যাচাই করা হয়। এসব তথ্য যাচাইয়ের সঙ্গে প্রার্থী ও তাঁদের পরিবারের সদস্য এবং আত্মীয়স্বজনের রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতার তথ্যও এখন প্রতিবেদনে তুলে ধরা হচ্ছে। এ কারণেই নিয়োগ হয়নি বলে বেশ কয়েকজন প্রার্থী আজকের পত্রিকাকে জানিয়েছেন। অন্য সরকারি চাকরির বিষয়টি চিন্তা করে এঁদের কেউ নাম-পরিচয় প্রকাশ করেননি।

৩৩ থেকে ৩৮তম বিসিএসে কতজন প্রার্থী পিএসসির সুপারিশ পেয়েও নিয়োগ পাননি, সেই তথ্য জানায়নি জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। তবে বিভিন্ন বিসিএসে নিয়োগে পিএসসির সুপারিশ এবং তাঁদের গেজেটভুক্ত করে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের প্রজ্ঞাপন বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, ছয়টি বিসিএসে ১৮ হাজার ৮৫৩ জনকে নিয়োগের সুপারিশ করে পিএসসি। তাঁদের মধ্যে ১৮ হাজার ২২২ জন নিয়োগ পেয়েছেন, নিয়োগ পাননি ৬৩১ জন। নিয়োগবঞ্চিত অনেক প্রার্থী ক্ষমতাসীন দলের মন্ত্রী ও সংসদ সদস্যের সুপারিশ এবং স্থানীয় রাজনৈতিক নেতাদের প্রত্যয়নপত্র মন্ত্রণালয়ে জমা দিলেও কাজ হচ্ছে না।

৩৭তম বিসিএসে কৃষি ক্যাডারে নিয়োগবঞ্চিত একজন নারী প্রার্থী আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমি এখন ব্যাংকে চাকরি করি। বিষয়টি নিয়ে আর কথা বলতে চাই না।’ এই প্রার্থীকে নিয়োগ দিতে জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেনকে আধা সরকারিপত্র দিয়েছেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী জাকির হোসেন, কুড়িগ্রাম-৩ আসনের সংসদ সদস্য এম এ মতিন এবং উপজেলার আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক।

ওই প্রার্থীর আবেদনের ভিত্তিতে সংশ্লিষ্ট ইউএনওকে দিয়ে প্রতিবেদন যাচাই করা হয়। ইউএনও তাঁর প্রতিবেদনে বলেন, প্রার্থী রাষ্ট্রবিরোধী কোনো কার্যকলাপ বা কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে জড়িত নন। এই ইউএনওর আরেকটি প্রতিবেদনে বলা হয়, প্রার্থীর পিতা একজন ব্যবসায়ী। ২০০৭ সালে তিনি নিজ উপজেলায় বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। পরবর্তী সময়ে আওয়ামী লীগের সঙ্গে যুক্ত হয়ে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন এবং উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের সঙ্গে কাজ করেছেন।

 ওই প্রার্থীর বাবা আজকের পত্রিকাকে বলেন, “মেয়ের চাকরি নিয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ভেরিফিকেশন করার সময় বলেন, ‘আপনার একটা রাজনৈতিক পরিচিতি ছিল। আপনি একসময় বিএনপি করতেন। আপনি একজন প্রসিদ্ধ মানুষ। আপনাকে সবাই চেনেন। তাই বিষয়টি আমরা অমিট করতে পারব না।’ আমার মেয়ের এবং আমাদের অন্য কোনো প্রবলেম তাঁরা পাননি। আমি কী করেছি, এ জন্য সন্তানের সাজা হবে—এটা কেমন কথা!”

জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা বলেন, চূড়ান্তভাবে নিয়োগের আগে প্রার্থীদের পরিবারের সদস্য ছাড়াও এখন তাঁদের আত্মীয়স্বজনের রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতা দেখা হয়। ৩৫তম বিসিএস থেকে বিষয়গুলো বেশি দেখা হচ্ছে। ফলে আত্মীয়স্বজনের রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতার কারণে অনেকেই চূড়ান্তভাবে নিয়োগ পাচ্ছেন না।

 ৩৭তম বিসিএসে পুলিশ ক্যাডারে সুপারিশ পাওয়া একজন প্রার্থী আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘ভেরিফিকেশন প্রতিবেদন সন্তোষজনক না হওয়ায় আমি নিয়োগ পাইনি। এই বিসিএসে নিয়োগবঞ্চিত ৩৮ জন মিলে গত বছরের জুনে হাইকোর্টে রিট করেছি, এখনো নিষ্পত্তি হয়নি। আমরা এখন আদালতের রায়ের অপেক্ষা করছি।’ ৩৮তম বিসিএসে পররাষ্ট্র ক্যাডারে প্রথম হওয়া বুয়েটের সাবেক এক শিক্ষার্থীর প্রতিবেদন সন্তোষজনক না হওয়ায় নিয়োগ পাননি। এই প্রার্থী ও তাঁর পরিবারের কেউ এ বিষয়ে কথা বলতে রাজি হননি।

এ বিষয়ে জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘পুলিশ ও এনএসআইয়ের তদন্ত রিপোর্ট আমাদের কাছে থাকে। কারও বিরুদ্ধে মামলা থাকলে তাঁদের নিয়োগের জন্য বিবেচনা করা হয় না। নেগেটিভ রিপোর্ট পেলে প্রার্থীরা তদন্ত দাবি করেন, তখন জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে নিরপেক্ষভাবে তদন্ত করা হয়। প্রয়োজন হলে অন্য সংস্থা দিয়েও তদন্ত করা হয়। মামলা থেকে শুরু করে রাষ্ট্রবিরোধী কোনো কার্যক্রম কিংবা জঙ্গিসংশ্লিষ্টতা আছে কি না, সেটা খুব ভালোমতো দেখা হয়।’

প্রার্থীদের সঙ্গে তাঁদের পরিবারের সদস্য ও আত্মীয়স্বজনের রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতা দেখা হয় না বলে দাবি করেন জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘আমরা মেধা বিবেচনা করি। তবে জঙ্গি হামলা বা নাশকতামূলক মামলার প্রমাণ থাকলে নিয়োগবিধির ধারা অনুযায়ী নিয়োগ দেওয়া হয় না। তবে ভুল প্রতিবেদন ভেরিফাই করে অনেক সময় অনেকে পার পেয়ে যান। ৩৮তম বিসিএসে বেশ কয়েকজনের রিপোর্ট ভেরিফাই করা হচ্ছে, তাঁদের মধ্যে ৮০ শতাংশই নিয়োগ পাবেন। প্রধানমন্ত্রী দেশে ফিরলে তাঁদের নিয়োগের ব্যবস্থা করা হবে।’

 ‘আত্মীয়স্বজনের দলের সম্পৃক্ততায় বাদ দেওয়া বেআইনি’
স্বীকৃত ও নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলের সঙ্গে নিয়োগপ্রার্থীর আত্মীয়স্বজনের সম্পৃক্ততার কারণে নিয়োগ না-দেওয়া হলে সেটিকে বেআইনি বলে মনে করছেন আইনজীবীরা। তাঁরা বলছেন, মৌলিক অধিকার ক্ষুণ্ণের কারণে নিয়োগবঞ্চিতরা চাইলে আদালতে যেতে পারেন।

সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী শাহদীন মালিক আজকের পত্রিকাকে বলেন, রাষ্ট্রবিরোধী কার্যকলাপের অভিযোগে যদি কোনো মামলা দায়ের না হয়ে থাকে, তবে কাউকে সেই অভিযোগে দোষারোপ করা বেআইনি। ফৌজদারি অপরাধে সম্পৃক্ততা থাকলে, ফৌজদারি অপরাধে দণ্ডিতের প্রমাণ থাকলে এবং সন্ত্রাসী ও নিষিদ্ধঘোষিত দল বা সংগঠনের সঙ্গে সম্পৃক্ততার প্রমাণ থাকলে, তাঁদের বাদ দেওয়া যেতে পারে।

‘স্বীকৃত ও নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলের সঙ্গে নিয়োগপ্রার্থীর আত্মীয়স্বজনের সম্পৃক্ততার কারণে বাদ দেওয়া বা নিয়োগের জন্য অনুপযুক্ত বিবেচনা করা সম্পূর্ণ বেআইনি। যাঁরা বাদ পড়ছেন, তাঁরা যদি বাদ পড়ার কারণ জানতে পারেন, তবে আদালতে যেতে পারবেন। প্রতিবেদন কেন সন্তোষজনক নয়, সেটা জানতে চেয়েও চিঠি লিখতে পারেন। বিরোধী দলের সঙ্গে আত্মীয়স্বজনের সম্পৃক্ততার কারণে বাদ দেওয়া হলে সেটা জানার পর রিট করা যেতে পারে। কী কারণে নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে না, সেটি জানতেও রিট করা যেতে পারে। বাদপড়ারা আইনের দ্বারস্থ না হওয়ায় বছরের পর বছর এভাবে বাদ দেওয়া হচ্ছে।’

সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী জ্যোতির্ময় বড়ুয়া আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘কারও বাবার কোনো কর্মকাণ্ডের কারণে কাউকে নিয়োগ দেওয়া না হলে মৌলিক মানবাধিকার লঙ্ঘন হচ্ছে। বাবার কারণে সন্তান ভুগবে কেন?’

জ্যেতির্ময় বড়ুয়া বলেন, ‘সরকার নীতি ঠিক করতে গিয়ে একধরনের চিন্তাভাবনা থেকে এসব করছে। এ কাজগুলো করতে থাকলে সরকার পরিবর্তন হলেও তা আর পরিবর্তন হয় না। ফলে কখনো আর জনকর্মচারী হয়ে ওঠে না। সেটার প্রভাব এখন আমরা প্রত্যেক জায়গায় দেখতে পাচ্ছি।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

দেশে অণুজীববিজ্ঞান শিক্ষায় ভূমিকা রয়েছে বিএসএমের

শিক্ষা ডেস্ক
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

দেশে অণুজীববিজ্ঞান শিক্ষা ও গবেষণা প্রসারে ‘বাংলাদেশ সোসাইটি অব মাইক্রোবায়োলজিস্টসের (বিএসএম)’ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে বলে জানিয়েছেন সংগঠনটির সভাপতি ড. মুনিরুল আলম।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অণুজীববিজ্ঞান বিভাগ ও বিএসএমের যৌথ উদ্যোগে গত ২১–২২ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত ৩৯তম বার্ষিক আন্তর্জাতিক সম্মেলনে স্বাগত বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। একই সঙ্গে তিনি বৈশ্বিক স্বাস্থ্য ও পরিবেশগত চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় অণুজীববিজ্ঞান গবেষণায় উদ্ভাবনের গুরুত্ব তুলে ধরেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের নবাব নওয়াব আলী চৌধুরী সিনেট ভবনে এ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।

দুই দিনব্যাপী এই আন্তর্জাতিক সম্মেলনে বাংলাদেশসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশের বিজ্ঞানী, গবেষক, জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ, ভেটেরিনারি বিশেষজ্ঞ, শিল্পখাতের প্রতিনিধি এবং শিক্ষার্থীরা অংশগ্রহণ করেন। সম্মেলনের মূল লক্ষ্য ছিল অণুজীববিজ্ঞান ও সংশ্লিষ্ট শাখাগুলোতে সাম্প্রতিক গবেষণা ও অগ্রগতি নিয়ে মতবিনিময় করা, বৈজ্ঞানিক সহযোগিতা জোরদার করা এবং সমসাময়িক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় কার্যকর দিকনির্দেশনা প্রদান করা। সম্মেলনে দেশি-বিদেশি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের ৪০০-এর অধিক প্রতিনিধি অংশ নেন।

এবারের সম্মেলনের প্রতিপাদ্য বিষয় “Microbiomes for a Sustainable Future” সময়োপযোগী ছিল এবং মানব উন্নয়ন ও কল্যাণে অণুজীববিজ্ঞানের গুরুত্ব তুলে ধরতে সহায়ক হয়। সর্বমোট ২৮৮টি সারসংক্ষেপ (Abstract) গৃহীত হওয়ার পর সম্মেলনের ১২টি টেকনিক্যাল সেশনে ২টি প্লেনারি বক্তৃতা, ৮টি কীনোট বক্তৃতা, ৬টি আমন্ত্রিত বক্তৃতা, ৪টি ইয়াং সায়েন্টিস্ট টক, ৫৮টি মৌখিক উপস্থাপনা এবং প্রায় ২২৬টি পোস্টার উপস্থাপন করা হয়।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের চেয়ারম্যান প্রফেসর ডা. এস. এম. এ. ফয়েজ। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর (একাডেমিক) প্রফেসর ডা. মামুন আহমেদ। স্বাগতিক প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে বক্তব্য দেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অণুজীববিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারম্যান প্রফেসর ডা. শাকিলা নার্গিস খান।

অনুষ্ঠানের শেষপর্বে সম্মেলন আয়োজন কমিটির চেয়ারম্যান এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সেন্টার ফর অ্যাডভান্সড রিসার্চ ইন সায়েন্সেসের (সিএআরএস) চিফ সায়েন্টিস্ট ডা. লতিফুল বারী ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

‎জকসু নির্বাচনী প্রচারণায় অংশ নিলেন জামাল ভূঁইয়া

জবি প্রতিনিধি 
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে বাংলাদেশ ফুটবলের জাতীয় দলের অধিনায়ক জামাল ভূঁইয়া। ছবি: আজকের পত্রিকা
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে বাংলাদেশ ফুটবলের জাতীয় দলের অধিনায়ক জামাল ভূঁইয়া। ছবি: আজকের পত্রিকা

‎জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় শিক্ষার্থী সংসদ (জকসু) ও হল সংসদ নির্বাচন দরজায় কড়া নাড়ছে। এরই মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে এসেছেন বাংলাদেশ ফুটবলের জাতীয় দলের অধিনায়ক জামাল ভুঁইয়া। ‎

আজ ‎বৃহস্পতিবার (২৫ ডিসেম্বর) সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে আসেন তিনি। এ সময় শহীদ সাজিদ ভবন, প্রক্টর অফিস ঘুরে প্রোগোজ স্কুলের মাঠে সাংবাদিক ও ফ্যানদের সঙ্গে কথা বলেন এই ফুটবলার। ‎

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে বাংলাদেশ ফুটবলের জাতীয় দলের অধিনায়ক জামাল ভূঁইয়া। ছবি: আজকের পত্রিকা
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে বাংলাদেশ ফুটবলের জাতীয় দলের অধিনায়ক জামাল ভূঁইয়া। ছবি: আজকের পত্রিকা

‎এ সময় জামাল ভূঁইয়া বলেন, ‘জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রথমবারের মতো এলাম। আমার অনেক ভালো লাগছে। এটি অনেক পুরোনো বিশ্ববিদ্যালয়। আগামী ৩০ ডিসেম্বর জকসু নির্বাচন। আপনাদের সবার প্রতি শুভকামনা। আমি আবার আসব ইনশা আল্লাহ।’ ‎

‎এ সময় জাতীয় ছাত্র শক্তি সমর্থিত ‘ঐক্যবদ্ধ জবিয়ান’ প্যানেলের জিএস পদপ্রার্থী মো. ফয়সাল মুরাদ বলেন, ‘আমরা স্পোর্টস কার্নিভালের সময় জামাল ভাইকে আমাদের ক্যাম্পাসে আসার আহ্বান জানিয়েছিলাম। কিন্তু তখন শিডিউল না পাওয়ায় সম্ভব হয়নি। এই প্রজন্মের কাছে বাংলাদেশ ফুটবলের প্রথম সুপারস্টার জামাল ভূঁইয়া। তাঁর মাধ্যমে বাংলাদেশ ফুটবলের এই নতুন ধারা উন্মোচিত হয়েছে।’ ‎

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে বাংলাদেশ ফুটবলের জাতীয় দলের অধিনায়ক জামাল ভূঁইয়া। ছবি: আজকের পত্রিকা
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে বাংলাদেশ ফুটবলের জাতীয় দলের অধিনায়ক জামাল ভূঁইয়া। ছবি: আজকের পত্রিকা

‎এ সময় এই সংবাদ সম্মেলনে প্যানেলটির ভিপি পদপ্রার্থী কিশোয়ার আনজুম সাম্য, ক্রীড়া সম্পাদক পদপ্রার্থী ফেরদৌস হাসান সোহান, কার্যনির্বাহী সদস্য পদপ্রার্থী সিনহা ইসলাম অর্না এবং ছাত্রদল সমর্থিত ‘ঐক্যবদ্ধ নির্ভীক জবিয়ান’ প্যানেলের ক্রীড়া সম্পাদক কামরুল হাছান নাফিজসহ বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষার্থীরা ছিলেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

জকসু নির্বাচনে ব্যতিক্রমী প্রচারণায় প্রার্থীরা

সোহানুর রহমান, জবি
আপডেট : ২৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৮: ৩৪
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় শিক্ষার্থী সংসদ (জকসু) ও হল সংসদ নির্বাচন ঘিরে ক্যাম্পাসজুড়ে বিরাজ করছে উৎসবমুখর ও প্রাণবন্ত পরিবেশ। কলেজ থেকে বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে প্রতিষ্ঠা হওয়ার পর প্রথমবার অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া এই নির্বাচনের প্রচারণায় যুক্ত হয়েছে ভিন্নমাত্রিক ও সৃজনশীল পদ্ধতি, যা শিক্ষার্থীদের মাঝে বাড়তি আগ্রহ ও উদ্দীপনা সৃষ্টি করেছে।

জকসু নির্বাচনের প্রার্থীরা প্রচারণায় পোস্টার ও লিফলেটের মতো প্রচলিত প্রচারসামগ্রীর বাইরে গিয়ে লাল কার্ড, রঙিন প্ল্যাকার্ড ও হাতে বহনযোগ্য নানা প্রচারসামগ্রী ব্যবহার করছেন। দেয়ালে পোস্টার সাঁটানোর ওপর নিষেধাজ্ঞা থাকায় আচরণবিধি মেনেই ভিন্ন কৌশলে ভোটারদের কাছে নিজেদের বার্তা পৌঁছে দিচ্ছেন তাঁরা।

নির্বাচনী তফসিল অনুযায়ী ১৫ থেকে ২৭ ডিসেম্বর পর্যন্ত প্রচারণার সময় নির্ধারণ করা হয়েছে। এই সময়ের মধ্যেই প্রার্থীরা শিক্ষার্থীদের মন জয় করতে ব্যবহার করছেন এরোপ্লেন আকৃতির কাগজ, প্রতীকী নোট, কাপ, বোতল, প্রজাপতি, জকসু পাসপোর্টসহ নানা অভিনব উপকরণ। আকর্ষণীয় স্লোগান ও রঙিন ডিজাইনের মাধ্যমে তুলে ধরা হচ্ছে নির্বাচনী অঙ্গীকার ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা।

প্রচারণায় প্রযুক্তির ব্যবহারও চোখে পড়ার মতো। কিউআর কোড সংযুক্ত প্রচারণা সামগ্রীর মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা মোবাইল ফোন স্ক্যান করে মুহূর্তেই প্রার্থীদের বিস্তারিত ইশতেহার ও পরিকল্পনা জানতে পারছেন।

ছাত্রদল-সমর্থিত ‘ঐক্যবদ্ধ নির্ভীক জবিয়ান’ প্যানেলের জিএস পদপ্রার্থী খাদিজাতুল কুবরা বলেন, ‘জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থীদের মাঝে একটি স্বতঃস্ফূর্ত ও প্রাণবন্ত পরিবেশ বিরাজ করছে। শুরু থেকেই আমরা জোরালো প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছি। শিক্ষার্থীদের কাছে পৌঁছানো এবং তাঁদের দৃষ্টি আকর্ষণের লক্ষ্যেই আমি ভিন্নধর্মী প্রচার কার্ড ব্যবহার করছি।’

ছাত্রশিবির-সমর্থিত ‘অদম্য জবিয়ান ঐক্য’ প্যানেলের শিক্ষা ও গবেষণা সম্পাদক পদপ্রার্থী ইব্রাহিম খলিল বলেন, ‘লিফলেট দিয়ে প্রচার করার ফলে ভোটাররা অতিষ্ঠ হয়ে গেছেন, তাই এবার আমাদের অন্য রকম প্রচারণা। আমাদের বার্তাটি আকর্ষণীয়ভাবে ভোটারদের কাছে পৌঁছে দেওয়ার কার্যক্রম চালাচ্ছি।’

স্বতন্ত্র নির্বাহী সদস্য পদপ্রার্থী আল শাহরিয়ার খান বলেন, ‘নারী শিক্ষার্থীদের আগ্রহ সৃষ্টি করা এবং প্রচারসামগ্রী যেন সংরক্ষণযোগ্য হয়, এই চিন্তা থেকেই আমি বিড়ালের আদলে কার্ড তৈরি করেছি।’

ছাত্রশক্তি-সমর্থিত ‘নির্ভীক জবিয়ান’ প্যানেলের জিএস পদপ্রার্থী ফয়সাল মুরাদ বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের কাছে ইশতেহার পৌঁছে দেওয়ার পাশাপাশি তাঁদের সমস্যা ও প্রত্যাশা বোঝার চেষ্টা করছি।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

‎জবির ‘এ’ ও ‘সি’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা ২৬ ও ২৭ ডিসেম্বর

জবি প্রতিনিধি 
‎জবির ‘এ’ ও ‘সি’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা ২৬ ও ২৭ ডিসেম্বর

‎জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় স্নাতক (সম্মান) ও বিবিএ প্রথম বর্ষের ‘এ’ ইউনিট (বিজ্ঞান ও লাইফ অ্যান্ড আর্থ সায়েন্স অনুষদ) ও ‘সি’ ইউনিটের (বাণিজ্য অনুষদ) ভর্তি পরীক্ষা আগামী ২৬ ডিসেম্বর (শুক্রবার) ও ২৭ ডিসেম্বর (শনিবার) অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। উভয় দিন পরীক্ষার সময় বেলা ১১টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত ১ ঘন্টা।

‎‘এ’ ইউনিটের (বিজ্ঞান ও লাইফ অ্যান্ড আর্থ সায়েন্স অনুষদ) ভর্তি পরীক্ষায় ৮৬০টি আসনের বিপরীতে ৭২ হাজর ৪৭৪ জন আবেদন করেছে। প্রতি আসনের জন্য ৮৫ জন পরীক্ষার্থী লড়বেন। আর ‘সি’ ইউনিটে (বাণিজ্য অনুষদ) ৫২০টি আসনের বিপরীতে ২০ হাজর ৫৩৭ জন আবেদন করেছে। বিজ্ঞান অনুষদে ৮৬০ আসনের বিপরীতে ৭২ হাজর ৪৭৪ জন আবেদন করেছে। প্রতি আসনের জন্য ৪০ জন শিক্ষার্থী লড়বেন।

‎‘এ’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা মোট ১২টি কেন্দ্রে অনুষ্ঠিত হবে। এর মধ্যে ঢাকার বাহিরে তিনটি কেন্দ্র, কুমিল্লা বিশ্বিবদ্যালয়, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে পরীক্ষা হবে। ঢাকার মধ্যে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়সহ মোট ৯টি কেন্দ্রের মধ্যে পরীক্ষা হবে। ঢাকার ভেতরের কেন্দ্র সমূহ হলো— জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, ইঞ্জিনিয়ারিং ইউনিভার্সিটি গার্লস স্কুল অ্যান্ড কলেজ, মোহাম্মদপুর সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়, শেরে বাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলাবাজার সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, ঢাকা কলেজিয়েট স্কুল, কে এল জুবিলি হাই স্কুল এন্ড কলেজ, বিইএএম মডেল হাই স্কুল এন্ড কলেজ।

‎‘সি’ ইউনিটে (বাণিজ্য অনুষদ) জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাড়াও ঢাকার মধ্যে বাংলাবাজার সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, শেরে বাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, গভর্মেন্ট মুসলিম হাই স্কুল কেন্দ্রে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে ৷

‎মোট ১০০ মার্কের পরীক্ষায় ৭২ মার্ক এমসিকিউ ও বাকী ১৮ মার্ক থাকবে এসএসসি (সমমান) ও এইচএসসি (সমমান) ফলাফলের ওপর। ‘এ’ ইউনিটে পদার্থ বিজ্ঞান, রসায়ন গণিত অথবা জীব বিজ্ঞান বিষয়ে প্রশ্ন করা হবে। ‘সি’ ইউনিটে ইংরেজি, গাণিতিক বুদ্ধিমত্তা ও হিসাব বিজ্ঞান, ব্যবসায় নীতি ও প্রয়োগ বিষয়ে প্রশ্ন আসবে।

‎পরীক্ষার সার্বিক প্রস্তুতি বিষয়ে বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. পরিমল বালা বলেন, ভর্তি পরীক্ষা আয়োজনের সব প্রস্তুতি আমাদের সম্পন্ন হয়েছে। এবার পরীক্ষার্থীদের সুবিধার কথা বিবেচনায় নিয়ে এবার ঢাকার বাহিরে খুলনা, রাজশাহী ও কুমিল্লা পরীক্ষা কেন্দ্র রাখা হয়েছে।

‎বাণিজ্য অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ মঞ্জুর মুর্শেদ ভূঁইয়া বলেন, আমাদের ৫২০ আসনের বিপরীতে ২০ হাজার ৫৩৭ জন আবেদন করেছে। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাড়াও ঢাকার মধ্যে আরও ৩টি কেন্দ্রে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। ঢাকার বাহিরে কোন কেন্দ্রে পরীক্ষা হবে না।

‎এর আগে ১৩ ডিসেম্বর ‘ই’ ইউনিটের (চারুকলা অনুষদ) ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। উল্লখ্য, সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদভুক্ত ডি ইউনিটের পরীক্ষা আগামী ৯ জানুয়ারি বেলা ১১টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত অনুষ্ঠিত হবে। কলা ও আইন অনুষদভুক্ত বি ইউনিটের পরীক্ষা আগামী ৩০ জানুয়ারি বেলা ৩টা থেকে বিকেল সাড়ে ৪টা পর্যন্ত অনুষ্ঠিত হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত