Ajker Patrika

ট্যুরিজম অ্যান্ড হসপিটালিটি ম্যানেজমেন্টে পড়াশোনা ও ক্যারিয়ার

অধ্যাপক ড. সন্তোষ কুমার দেব 
আপডেট : ০৯ এপ্রিল ২০২৩, ১১: ০৯
ট্যুরিজম অ্যান্ড হসপিটালিটি ম্যানেজমেন্টে পড়াশোনা ও ক্যারিয়ার

দেশে সর্বপ্রথম ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ট্যুরিজম অ্যান্ড হসপিটালিটি ম্যানেজমেন্ট বিভাগ চালুর মাধ্যমে এ বিষয়ে শিক্ষা কার্যক্রম শুরু হয়। বর্তমানে দেশে সাতটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে এ বিষয়ে পড়ানো হয়। এ ছাড়া বেশ কয়েকটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে এই প্রোগ্রাম চালু রয়েছে। উল্লিখিত পাবলিক ও প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ে এই প্রোগ্রামে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর করার সুযোগ রয়েছে। তবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ট্যুরিজম অ্যান্ড হসপিটালিটি ম্যানেজমেন্টে এই প্রোগ্রামে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর, এমফিল ও ডক্টর অব ফিলোসফি (পিএইচডি) নেওয়ার সুযোগ রয়েছে।

পৃথিবীব্যাপী পর্যটনকেন্দ্রিক পড়াশোনার কদর দিনে দিনে বেড়েই চলেছে। বাদ যায়নি বাংলাদেশেও। কারও যদি পর্যটন ও আতিথেয়তার প্রতি আগ্রহ থাকে, তাহলে ভর্তি হতে পারেন ট্যুরিজম অ্যান্ড হসপিটালিটি ম্যানেজমেন্ট বিষয়ে। পর্যটনসংক্রান্ত পড়াশোনা ও প্রশিক্ষণের বেশির ভাগই ব্যবহারিক। তাই এ পেশায় অনেকের চেয়ে এগিয়ে থাকতে চাইলে প্রয়োজন ব্যবহারিক জ্ঞান ও প্রশিক্ষণ। 

পড়ার যোগ্যতা কী
ব্যবসায় শিক্ষা, বিজ্ঞান ও মানবিক বিভাগে উচ্চমাধ্যমিক উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীরা ট্যুরিজম অ্যান্ড হসপিটালিটি ম্যানেজমেন্ট বিভাগে আন্ডারগ্র্যাজুয়েট পড়ার সুযোগ পেয়ে থাকেন। আন্ডারগ্র্যাজুয়েটের ক্ষেত্রে বিশ্ববিদ্যালয় প্রচলিত ভর্তি প্রক্রিয়া অনুসৃত হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রচলিত ভর্তি পরীক্ষা ও মেধাক্রমের ভিত্তিতে এ বিষয়ে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পাওয়া যায়।

কোথায় কোথায় ভর্তি হওয়া যায়
বাংলাদেশে ট্যুরিজম অ্যান্ড হসপিটালিটি ম্যানেজমেন্ট বিষয়ে আন্ডারগ্র্যাজুয়েট, স্নাতকোত্তর, এমফিল ও পিএইচডি ডিগ্রি নিতে আগ্রহী মেধাবী শিক্ষার্থীদের রয়েছে অপার সম্ভাবনা। আমেরিকা, কানাডা, ইউরোপের দেশগুলোতে ট্যুরিজম অ্যান্ড হসপিটালিটি ম্যানেজমেন্ট শিক্ষার্থীদের কাছে অত্যন্ত জনপ্রিয় একটি বিষয়। বাংলাদেশের সাতটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়সহ অসংখ্য বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে এ বিষয়ে পড়ার সুযোগ রয়েছে। তবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্যুরিজম অ্যান্ড হসপিটালিটি ম্যানেজমেন্ট বিভাগ দেশে প্রথম এ বিষয়ে শিক্ষা কার্যক্রম শুরু করে। তা ছাড়া পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়, ইসলামিক বিশ্ববিদ্যালয়, পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় এবং রাঙামাটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে এ বিষয়ে পড়ার সুযোগ রয়েছে। বাংলাদেশে বেশ কিছু সরকারি ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় এবং কলেজে ট্যুরিজম অ্যান্ড হসপিটালিটি ম্যানেজমেন্ট বিষয়ে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রি করার সুযোগ রয়েছে। ইতিমধ্যে শিক্ষার্থীদের কাছে ভীষণ জনপ্রিয়তা পেয়েছে ট্যুরিজম অ্যান্ড হসপিটালিটি ম্যানেজমেন্ট বিভাগ। ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির অধীনে অনেক কলেজে ট্যুরিজম অ্যান্ড হসপিটালিটি ম্যানেজমেন্ট বিষয়ে স্নাতক পড়ানো হয়। এমনকি কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের অধীনে কিছু ইনস্টিটিউট এ বিষয়ে ডিপ্লোমা ডিগ্রি দিয়ে থাকে। ট্যুরিজম অ্যান্ড হসপিটালিটি ম্যানেজমেন্ট বিষয়ে ডিপ্লোমা করার সুযোগ আছে সরকারিভাবে পরিচালিত ন্যাশনাল হোটেল অ্যান্ড ট্যুরিজম ট্রেনিং ইনস্টিটিউটে।

কী কী বিষয়ে পড়ানো হয়
ফ্রন্ট অফিস ম্যানেজমেন্ট, হাউস কিপিং ম্যানেজমেন্ট, কালিনারি আর্টস, ফুড অ্যান্ড বেভারেজ সার্ভিস ম্যানেজমেন্ট, লেইজার অ্যান্ড রিক্রিয়েশন সার্ভিসেস, ফাইন্যান্স, ট্যুরিজম অ্যান্ড হসপিটালিটি মার্কেটিং, ট্যুরিজম ইন বাংলাদেশ, রেভিনিউ ম্যানেজমেন্ট, রিসার্চ মেথটোডোলজি, গ্লোবাল ইস্যুজ ইন ট্যুরিজম, ট্যুরিজম অ্যান্ড হসপিটালিটি ম্যানেজমেন্ট ফান্ডামেন্টালস, অ্যাকাউন্টিং, ম্যানেজমেন্ট, সার্ভিস ম্যানেজমেন্টসহ অন্যান্য বিষয়ে পাঠদান করা হয়।

কর্মসংস্থান বা চাকরির সুযোগ
এই বিভাগের শিক্ষার্থীদের গ্লোবাল ক্যারিয়ারের সুযোগ রয়েছে। বাংলাদেশে পর্যটনশিল্পকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছে অনেক চেইন তারকা হোটেল ও রিসোর্ট। দিনে দিনে বাড়ছে দক্ষ কর্মী ও ব্যবস্থাপকের চাহিদা। শুধু ঢাকায় প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁও, ইন্টারকন্টিনেন্টাল, ওয়েস্টিন ঢাকা, শেরাটন, রেনেসাঁ, লা মেরিডিয়ান, র‍্যাডিসন ব্লু, হানসা রেসিডেন্স, ঢাকা রিজেন্সিসহ আরও অনেক তারকা মানসম্পন্ন হোটেল গড়ে উঠেছে। ফলে এ বিষয়ে পড়ার আগ্রহ বাড়ছে। অন্যদিকে ঢাকার বাইরে দ্য প্যালেস, রয়্যাল টিউলিপ, গ্র্যান্ড সুলতান, অরুণিমা রিসোর্ট, দু-সাই রিসোর্টসহ উল্লেখযোগ্য রিসোর্টে প্রচুর দক্ষ কর্মীর চাকরির সুযোগ রয়েছে। এ ছাড়া সেবাসংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোতে (ব্যাংক, বিমা, টেলিকমিউনিকেশন, পাবলিক সার্ভিস ও অন্যান্য) ক্যারিয়ার গড়ার প্রচুর সুযোগ থাকছে এই বিভাগের শিক্ষার্থীদের। এর পাশাপাশি এয়ারলাইনগুলোর মধ্যে বিমান বাংলাদেশ, ইউ-এস বাংলা এয়ারলাইনস, এয়ার অ্যাস্ট্রা, নভোএয়ারসহ আন্তর্জাতিক প্রায় ৪০টি এয়ারলাইনসে কেবিন ক্রু, স্টুয়ার্ড হিসেবে যোগদান করার সুযোগ রয়েছে।

ট্যুরিজম বিভাগের প্রয়োজনীয়তা
ট্যুরিজম একটি ক্রমবর্ধমান শিল্প। সমগ্র বিশ্বে মানুষের মধ্যে ভ্রমণপ্রবণতা বাড়ছে। সেই সঙ্গে বাড়ছে হোটেল, মোটেল, রিসোর্ট, থিম পার্ক ও বিনোদনকেন্দ্র। পর্যটনের সঙ্গে তিনটি বিষয় খুব গুরুত্বপূর্ণ: সার্ভিস ম্যানেজমেন্ট; হোটেল ম্যানেজমেন্ট; ট্যুরিজম ব্যবস্থাপনা। বাংলাদেশে বেশ কিছু আন্তর্জাতিক চেইন তারকা হোটেল ইতিমধ্যে ব্যবসা শুরু করেছে। এসব হোটেল ও রিসোর্টে প্রচুর দক্ষ কর্মীর দরকার। পর্যটনের সঙ্গে একান্তভাবে যোগসূত্র রয়েছে হোটেল ম্যানেজমেন্টের। তাই বলা হয়, আগামীর পেশা পর্যটন ও হোটেল ম্যানেজমেন্ট। দিন দিন পর্যটক ট্যুর অপারেটর, ট্রাভেল এজেন্সি, ট্যুর গাইডের চাহিদা বাড়ছে। ইতিমধ্যে ডোমেস্টিক এয়ারলাইনসের পাশাপাশি ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইনসের সংখ্যা বাড়ায় দক্ষ জনশক্তির চাহিদা অনেক বেড়েছে। ফলে ট্যুরিজম অ্যান্ড হসপিটালিটি ম্যানেজমেন্ট বিভাগ দক্ষ জনশক্তি তৈরিতে অনন্য ভূমিকা রাখছে। ভবিষ্যতেও সারা বিশ্বই পর্যটনের মাধ্যমে তাদের নিজস্ব সংস্কৃতি, ইতিহাস, জীবনযাপন ও প্রাকৃতিক নয়নাভিরাম সৌন্দর্য বিশ্বের মানুষের কাছে তুলে ধরতে চাইবে। তাই ভবিষ্যতে এই খাতে বিপুল পরিমাণে দক্ষ জনবলের প্রয়োজন হবে।

পড়াশোনার খরচ কেমন পড়বে
পাবলিক ইউনিভার্সিটিগুলোতে নামমাত্র খরচে এ বিষয়ে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করা সম্ভব। তবে প্রাইভেট ইউনিভার্সিটিগুলোতে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জনে তিন থেকে পাঁচ লাখ টাকা প্রয়োজন। ডিপ্লোমা ডিগ্রির জন্য ৩০ থেকে ৪০ হাজার টাকা দরকার হয়। তবে খুব অল্প খরচে ডিপ্লোমা করা যায় সরকারিভাবে পরিচালিত ন্যাশনাল হোটেল অ্যান্ড ট্যুরিজম ট্রেনিং ইনস্টিটিউটে।

উচ্চশিক্ষার সুযোগ-সুবিধা
ট্যুরিজম অ্যান্ড হসপিটালিটি ম্যানেজমেন্ট প্রোগ্রামে স্নাতক, স্নাতকোত্তর, এমফিল ও পিএইচডি ডিগ্রি নেওয়ার সুযোগ রয়েছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নাতক, স্নাতকোত্তর, এমফিল ও পিএইচডি ডিগ্রি নেওয়ার সুযোগ রয়েছে। তা ছাড়া অন্যান্য পাবলিক ও প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় থেকেও স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রি নেওয়া যায়। বিশ্বের উন্নত ও উন্নয়নশীল দেশগুলোর মধ্যে আমেরিকা, কানাডা, যুক্তরাজ্য, জার্মানি, সুইজারল্যান্ড, ফ্রান্স, ইতালি, পোল্যান্ড, নেদারল্যান্ডস, বেলজিয়ামসহ এশিয়ার দেশগুলোর অসংখ্য বিশ্ববিদ্যালয়ে এই বিষয়ে ডিগ্রির সুযোগ রয়েছে। 

অধ্যাপক ড. সন্তোষ কুমার দেব চেয়ারম্যান, ট্যুরিজম অ্যান্ড হসপিটালিটি ম্যানেজমেন্ট বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।

অনুলিখন: আনিসুল ইসলাম নাঈম

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

জকসু নির্বাচন: ৪২ জন প্রার্থীর প্রার্থিতা বাতিলের সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার দাবি

জবি প্রতিনিধি 
আপডেট : ১৪ ডিসেম্বর ২০২৫, ২০: ২২
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের রফিক ভবনের সামনে রোববার আয়োজিত সংবাদ সম্মেলন। ছবি: আজকের পত্রিকা
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের রফিক ভবনের সামনে রোববার আয়োজিত সংবাদ সম্মেলন। ছবি: আজকের পত্রিকা

‎জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী সংসদ (জকসু) নির্বাচনের চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকা থেকে ৪২ জন প্রার্থীকে বাদ দেওয়ার সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার দাবি জানিয়েছে ছাত্রদল ও ছাত্র অধিকার পরিষদ সমর্থিত ‘ঐক্যবদ্ধ নির্ভীক জবিয়ান’ প্যানেল। ‎

বিশ্ববিদ্যালয়ের রফিক ভবনের সামনে আজ রোববার আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে এ দাবি তোলেন প্যানেলের সাধারণ সম্পাদক পদপ্রার্থী খাদিজাতুল কুবরা। ‎

‎তিনি বলেন, নির্বাচন কমিশন সম্প্রতি ঐক্যবদ্ধ নির্ভীক জবিয়ান প্যানেলের তিন প্রার্থীর প্রার্থিতা বাতিল করেছে। তাঁদের একজন সম্পাদক এবং অপর দুজন কার্যনির্বাহী সদস্য পদপ্রার্থী। পাশাপাশি অন্যান্য প্যানেল ও স্বতন্ত্র প্রার্থীদেরও প্রার্থিতা বাতিল করা হয়েছে। নির্বাচন কমিশন এখন পর্যন্ত এ বিষয়ে কোনো স্পষ্ট ব্যাখ্যা দেয়নি।

খাদিজাতুল কুবরা বলেন, প্রার্থীর এসএসসি বা এইচএসসি পরীক্ষার সনদে যে নাম আছে, এর পাশাপাশি তাঁর পরিচিত নাম প্রার্থী তালিকায় না থাকায় ভোটারদের মধ্যে বিভ্রান্তি সৃষ্টি হতে পারে।‎

‎প্যানেলের দাবি, অবিলম্বে ওই ৪২ প্রার্থীর প্রার্থিতা বাতিলের সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করা হোক। একই সঙ্গে জকসু নির্বাচনে অংশ নেওয়া সব প্রার্থী ও প্যানেলের প্রতি সমান, নিরপেক্ষ ও ন্যায়সংগত আচরণ নিশ্চিতের দাবিও জানানো হয়। ‎

‎গত ১৭ ও ১৮ নভেম্বর জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ও হল সংসদের মোট ৩৪টি পদের বিপরীতে ২৪৯ জন প্রার্থী মনোনয়নপত্র জমা দেন। যাচাই-বাছাই শেষে ২৪ নভেম্বর প্রাথমিক তালিকায় ২৩১ জন প্রার্থীর নাম প্রকাশ করে নির্বাচন কমিশন। ‎

এরপর ১১ ডিসেম্বর জকসুর ২১ পদে ১৫৬ জন ও হল সংসদের ১৩ পদের বিপরীতে ৩৩ জন প্রার্থীর চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশ করে নির্বাচন কমিশন। এর মধ্য দিয়ে বাদ পড়েন মনোনয়নপত্র জমা দেওয়া ৪২ জন প্রার্থী।

৩০ ডিসেম্বর জকসু নির্বাচনে ভোট গ্রহণ করা হবে। আর ফলাফল ঘোষণা করা হবে ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

কৃষি গুচ্ছের ভর্তি আবেদনের সময় বাড়ল

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
কৃষি গুচ্ছের ভর্তি আবেদনের সময় বাড়ল

কৃষি গুচ্ছের ৯টি বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২৫-২৬ শিক্ষাবর্ষে স্নাতক (সম্মান) প্রথম বর্ষের ভর্তিতে আবেদনের সময় বাড়ানো হয়েছে। ভর্তি-ইচ্ছুক শিক্ষার্থীরা ১৮ ডিসেম্বর রাত ১১টা ৫৯ মিনিট পর্যন্ত অনলাইনে আবেদন করতে পারবেন। এর আগে আবেদনের কার্যক্রম ১৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত চলবে বলে বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছিল

সম্প্রতি কৃষি গুচ্ছের ওয়েবসাইটে এ-সংক্রান্ত বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়েছে।

এতে বলা হয়, কৃষি গুচ্ছের ৯টি বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২৫-২৬ শিক্ষাবর্ষে স্নাতক (সম্মান) প্রথম বর্ষের ভর্তিতে আবেদনের সময়সীমা ১৮ ডিসেম্বর রাত ১১টা ৫৯ মিনিট পর্যন্ত বর্ধিত করা হলো। আবেদন শুরু হয় গত ২৫ নভেম্বর থেকে।

এবার কৃষি গুচ্ছের ৯টি বিশ্ববিদ্যালয়ে মোট আসনসংখ্যা ৩ হাজার ৭০১টি। ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে আগামী ৩ জানুয়ারি। ওই দিন বেলা ২টা থেকে ৩টা পর্যন্ত চলবে এই পরীক্ষা।

কৃষি গুচ্ছের আওতাধীন বিশ্ববিদ্যালয়গুলো হলো বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, গাজীপুর কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি ও অ্যানিমেল সায়েন্সেস বিশ্ববিদ্যালয়, সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, খুলনা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, হবিগঞ্জ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় ও কুড়িগ্রাম কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও ২৪-এর আকাঙ্ক্ষা ধারণ করেই বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে: জবি উপাচার্য

জবি প্রতিনিধি 
মিরপুর শহীদ বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে জবি উপাচার্যের শ্রদ্ধাঞ্জলি। ছবি: আজকের পত্রিকা
মিরপুর শহীদ বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে জবি উপাচার্যের শ্রদ্ধাঞ্জলি। ছবি: আজকের পত্রিকা

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. রেজাউল করিম বলেছেন, ‘মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও ২৪ এর জুলাই বিপ্লবের আকাঙ্ক্ষাকে ধারণ করেই আমাদের এ নতুন বাংলাদেশ সামনে এগিয়ে যাচ্ছে।’ আজ ‎রোববার (১৪ ডিসেম্বর) শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষে মিরপুর শহীদ বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে শ্রদ্ধাঞ্জলি দেওয়ার পর সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন তিনি। ‎

‎জবি উপাচার্য বলেন, ‘একটি বৈষম্যহীন সমাজ ও কল্যাণ রাষ্ট্রের স্বপ্নে শহীদ বুদ্ধিজীবী ও মুক্তিযোদ্ধারা জীবন উৎসর্গ করেছিলেন। কিন্তু ৫৪ বছরে আমরা সেই লক্ষ্য পূরণে ব্যর্থ হয়েছি, যার মূল্য দিতে হয়েছে ২৪-এর জুলাই–আগস্টে বহু ছাত্র–জনতাকে।’ ‎

তিনি আরও বলেন, ‘একটি বৈষম্যহীন সমাজ এবং বাংলাদেশ গড়ার মাধ্যমে শহীদদের স্বপ্ন পূরণ হবে। বাংলাদেশ একটু একটু করে সেদিকেই এগিয়ে যাচ্ছে।’ ‎

‎এর আগে সকাল সাড়ে ৭টার দিকে বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের পক্ষ থেকে শ্রদ্ধাঞ্জলি দেওয়া হয়। ‎এ সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. সাবিনা শরমীন, প্রক্টর অধ্যাপক ড. তাজাম্মুল হক, শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. রইছ উদ্দিনসহ বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষক, সাংবাদিক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা ছিলেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

এআইইউবির ২৩তম সমাবর্তন অনুষ্ঠিত

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
এআইইউবির ২৩তম সমাবর্তনে বিভিন্ন অনুষদের ১৭৬৬ জন শিক্ষার্থীকে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রি প্রদান করা হয়। ছবি: বিজ্ঞপ্তি
এআইইউবির ২৩তম সমাবর্তনে বিভিন্ন অনুষদের ১৭৬৬ জন শিক্ষার্থীকে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রি প্রদান করা হয়। ছবি: বিজ্ঞপ্তি

আমেরিকান ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশ (এআইইউবি)-এর ২৩তম সমাবর্তন অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকাল শনিবার (১৩ ডিসেম্বর) বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থায়ী ক্যাম্পাসে সমাবর্তনের আয়োজন করা হয়।

এআইইউবির প্রধান জনসংযোগ কর্মকর্তা আবু মিয়া আকন্দ তুহিন স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানানো হয়।

রাষ্ট্রপতি ও বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য মোঃ সাহাবুদ্দিনের সম্মতিক্রমে বিশিষ্ট বিজ্ঞানী ড. আবেদ চৌধুরী সমাবর্তনে সভাপতিত্ব করেন এবং গ্র্যাজুয়েটদের মাঝে সনদপত্র বিতরণ করেন। বিশেষ অতিথি হিসেবে অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের সম্মানিত সদস্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন।

এআইইউবির ২৩তম সমাবর্তনে বিভিন্ন অনুষদের মোট ১৭৬৬ জন শিক্ষার্থীকে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রি প্রদান করা হয়। এবারের সমাবর্তনে কৃতিত্বপূর্ণ ফলাফলের জন্য চ্যান্সেলর স্বর্ণপদক পেয়েছেন ৩ জন; সুম্মা কাম লাউড পেয়েছেন ৪৩ জন; ম্যাগনা কাম লাউড পেয়েছেন ৭৪ জন; কাম লাউড পেয়েছেন ২৬ জন; ডা. আনোয়ারুল আবেদীন লিডারশিপ পদক পেয়েছেন ১৯ জন এবং ভাইস-চ্যান্সেলর পদক পেয়েছেন ২১ জন।

অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন এআইইউবির বোর্ড অব ট্রাস্টিজের চেয়ারম্যান ও প্রতিষ্ঠাতা সদস্য নাদিয়া আনোয়ার, উপাচার্য অধ্যাপক ড. সাইফুল ইসলাম এবং উপ উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আব্দুর রহমান।

সমাবর্তনের প্রধান অতিথি ড. আবেদ চৌধুরী শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে বলেন, বাংলাদেশ ও বিশ্ব বর্তমানে এক বড় সংকটের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। সংকট হলো ঝুঁকি এবং সম্ভাবনার সমন্বয়। স্থানীয় ও বৈশ্বিকভাবে ঝুঁকি পরিমাপ এবং সম্ভাবনা বিবেচনায় দেখা যায়, শিক্ষাগত যোগ্যতা এবং অভিজ্ঞতাই সবচেয়ে বড় শক্তি।

তিনি আরও বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের মধ্যেই সেই শিক্ষা প্রতিফলিত হয়। সংকট শনাক্ত এবং অতিক্রম করার সক্ষমতা রয়েছে তাদের এবং সংকটের বাইরে এগিয়ে যাওয়ার সামর্থ্যই দেশের ভবিষ্যৎ। ভবিষ্যৎ আপনারাই।’

স্নাতকদের অভিনন্দন জানিয়ে বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের সদস্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘এই মুহূর্তটি কেবল একটি সমাবর্তন নয়; এটি আপনার বহু বছরের পরিশ্রমের স্বীকৃতি। পরীক্ষা ও অ্যাসাইনমেন্টের চাপ, নির্ঘুম রাত, নানা প্রতিকূলতার মধ্যেও অটল থাকা, অভিভাবকদের কষ্টার্জিত টিউশন ফি আর আপনার নিজের নিষ্ঠা ও ত্যাগ, সবকিছুরই সম্মিলিত স্বীকৃতি এটি।’

স্বাগত বক্তব্যে এআইইউবির প্রতিষ্ঠাতা সদস্য ও ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান নাদিয়া আনোয়ার বলেন, ‘যখন আমি আপনাদের দিকে তাকাই, তখন শত শত গল্প ভেসে ওঠে। নীরবে লড়ে যাওয়া সংগ্রামের গল্প, হৃদয়ের গভীরে লালিত স্বপ্নের গল্প। সংশয়ে ভরা অসংখ্য রাত পেরিয়ে নতুন প্রত্যয়ে জেগে ওঠা সকালের গল্প। আপনারা এই মুহূর্তে পৌঁছেছেন কোনো কাকতালীয়তায় নয়; পৌঁছেছেন নিজের শক্তি, আশার আলো এবং ভবিষ্যতের প্রতি অটল অঙ্গীকারের পথ ধরে।’

অভিভাবকদের উদ্দেশে নাদিয়া আনোয়ার বলেন, ‘আপনাদের প্রতি আমাদের ভালোবাসা, সম্মান ও কৃতজ্ঞতা—এসব শুধু শব্দ নয়; এগুলো আমাদের অন্তরের গভীর অনুভূতির প্রকাশ। আপনারা নীরবে যে ত্যাগ স্বীকার করেছেন, হয়তো নিজের স্বপ্ন পিছিয়ে দিয়েছেন, হয়তো নিজের ইচ্ছাগুলো সংযত রেখেছেন, সেই ত্যাগই আজকের এই সাফল্যের প্রকৃত ভিত্তি।’

সমাবর্তন বক্তা ব্রাসেলসের আইআরইজি অবজারভেটরি অন একাডেমিক র‍্যাংকিং অ্যান্ড এক্সিলেন্সের এক্সিকিউটিভ কমিটি মেম্বার অধ্যাপক ড. হাবিব ফারদৌন শিক্ষার্থীদের অভিনন্দন জানিয়ে বলেন, এআইইউবি’র মূলমন্ত্র ‘হোয়্যার লিডারস আর ক্রিয়েটেড’ কেবল একটি বাক্য নয়; এটি শিক্ষার্থীদের প্রতি প্রতিষ্ঠানের দায়িত্ব এবং সমাজের প্রতি অঙ্গীকারের প্রতিফলন। যেকোনো র‍্যাংকিংয়ের চেয়েও বড় বিষয় হলো, বিশ্ব আপনাকে চিনে নেওয়ার আগেই এআইইউবি আপনার সম্ভাবনায় বিশ্বাস করেছে। আপনার সবচেয়ে বড় শক্তি হলো শিখতে থাকা, আবার নতুনভাবে শিখতে পারা। এই চলমান শিক্ষণ-প্রক্রিয়ায় একজন কৌতূহলী মানুষ সেখানে সেতু নির্মাণ করেন, যেখানে অন্যরা কেবল দেয়াল দেখতে পান। ভবিষ্যৎ হবে তাদেরই, যারা এই সেতুগুলো গড়ে তুলতে সক্ষম।

শিক্ষার্থীদের আন্তরিক অভিনন্দন জানিয়ে এআইইউবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘আপনি এই স্তরে পৌঁছানোর জন্য দীর্ঘ পথ অতিক্রম করেছেন। তবে এখনো আপনাকে আরও অনেক দূর যেতে হবে এবং জীবনে সফল হতে আরও অনেক প্রতিবন্ধকতা অতিক্রম করতে হবে। মনে রাখবেন, এটি কোনো শেষ নয়, বরং সম্ভাবনাময় একটি উজ্জ্বল ভবিষ্যতের জন্য শুরু।’

গ্র্যাজুয়েট, অভিভাবক ও সম্মানিত অতিথিদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে এআইইউবি’র উপ উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আব্দুর রহমান বলেন, ‘এআইইউবি’র পক্ষ থেকে আমরা সকল গ্রাজুয়েট, অভিভাবক ও অতিথিকে আন্তরিক ধন্যবাদ জ্ঞাপন করছি। আপনাদের উপস্থিতি আজকের অনুষ্ঠানে বিশেষ মর্যাদা ও গৌরব যুক্ত করেছে।’

অনুষ্ঠানে এআইইউবির প্রতিষ্ঠাতা সদস্য ড. হাসানুল এ. হাসান ও প্রতিষ্ঠাতা সদস্য ইশতিয়াক আবেদীন উপস্থিত ছিলেন। এছাড়া ছিলেন বোর্ড অব ট্রাস্টিজের সদস্যরা, সিন্ডিকেট ও একাডেমিক কাউন্সিলের সদস্যরা, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের কর্মকর্তারা, বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ও উপ-উপাচার্যরা, আমন্ত্রিত অতিথিরা, এআইইউবির কোষাধ্যক্ষ, রেজিস্ট্রার, ডিন, শিক্ষক, প্রশাসনিক কর্মকর্তারা, শিক্ষার্থী, অভিভাবক এবং গণমাধ্যমের প্রতিনিধিরা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত