Ajker Patrika

বিশ্ববিদ্যালয় জীবন

পার্টটাইম চাকরি, নাকি ক্লাবিং

মুসাররাত আবির 
পার্টটাইম চাকরি, নাকি ক্লাবিং

বিশ্ববিদ্যালয় জীবন মানেই নতুন নতুন অভিজ্ঞতা। তবে বেশির ভাগ শিক্ষার্থী যে জিনিসটার জন্য সবচেয়ে বেশি মুখিয়ে থাকেন, তা হলো একটা ভালো ক্লাবের সঙ্গে যুক্ত হওয়া। বিশ্ববিদ্যালয় জীবনে ক্লাবিং বেশ পরিচিত একটা সংস্কৃতি। কিছু শিক্ষার্থী ক্লাবে অংশ নিয়ে নিজেদের দক্ষতা বিকাশ করেন, নতুন বন্ধুবান্ধব তৈরি করেন এবং পেশাদার জগতে পা রাখার সুযোগ পান। আবার কিছু শিক্ষার্থী একাডেমিক এবং ব্যক্তিগত জীবনের মধ্যে সামঞ্জস্য ধরে রাখতে পারেন না।

এখন প্রশ্ন হচ্ছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লাবগুলো কি শিক্ষার্থীদের জন্য আসলেই লাভজনক, নাকি এটি তাঁদের পড়াশোনা, মানসিক স্বাস্থ্য এবং ব্যক্তিগত উন্নয়নে নেতিবাচক প্রভাব ফেলে? এ বিষয়ে জানাচ্ছেন গো জায়ানের ব্র‍্যান্ড মার্কেটিং এক্সিকিউটিভ মো. মেহেদি হাসিব এবং টাইগার মিডিয়ার হেড অব মিডিয়া বায়িং রাইয়ান ইহাব শামস।

ক্লাবিং কেন করব?

মেহেদি ও রাইয়ান দুজনেই বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের প্রথম থেকে ক্লাবের সঙ্গে যুক্ত থাকলেও তাঁদের অভিজ্ঞতা ছিল ভিন্ন ভিন্ন। রাইয়ান দ্বিতীয় বর্ষে এসে ক্লাব ছাড়ার সিদ্ধান্ত নেন। তিনি বলেন, ‘ক্লাব ছাড়ার সিদ্ধান্তটা সে সময়ে হুট করে নেওয়া হয়েছিল। তবে পাঁচ বছর পর আজ বুঝতে পারি, সেটি আমার জন্য ভালো সিদ্ধান্ত ছিল।’

তাঁর মতে, ক্লাবের সদস্যরা যখন নতুন শিক্ষার্থীদের ক্লাবে যোগ দেওয়ার জন্য আহ্বান জানান, তখন সবাই বলে কীভাবে তাঁদের ক্লাব অন্য ক্লাবগুলো থেকে আলাদা, কী কী সুবিধা পাওয়া যাবে। তবে কেউ কখনো এ প্রশ্নটি তোলেন না, কেন ক্লাবিং করবেন?

রাইয়ান মনে করেন, নেটওয়ার্কিং হলো ক্লাবিংয়ের সবচেয়ে বড় সুবিধা। ধরা যাক, আপনি প্রথম বর্ষে পড়ছেন। এ সময়ে সিনিয়ররা আপনার সঙ্গে কেন পরিচিত হতে আসবেন? ক্লাসে তো অনেকেই আছেন। তখন ক্লাবই আপনাকে সিনিয়র এবং অ্যালামনাইদের সঙ্গে পরিচিত হওয়ার সুযোগ দেয়।

মেহেদির কথায়ও শোনা গেল একই সুর। তাঁর মতে, ‘স্কুল-কলেজে আমি ক্লাবিংয়ের সুযোগ পাইনি। বিশ্ববিদ্যালয়ে এসে দেখলাম ব্যবসায় অনুষদের জন্য আলাদা কোনো ক্লাব নেই। তাই আমরা কয়েকজন সহপাঠী এবং সিনিয়রদের নিয়ে তৈরি করলাম ‘অস্ট ক্যারিয়ার ডেভেলপমেন্ট ক্লাব’। এই ক্লাবের মাধ্যমে আমি অনেক গুরুত্বপূর্ণ নেটওয়ার্ক তৈরি করতে পেরেছি, যা অন্যথায় সম্ভব হতো না।’

কর্মজীবনের প্রস্তুতি

ক্লাবে থাকাকালে মেহেদিকে অনেক ইভেন্টে কাজ করতে হয়েছে। এসব কাজ করতে গিয়ে তিনি এমন সব দক্ষতা অর্জন করেছেন, যা তাঁর কর্মক্ষেত্রে কাজে লেগেছে। শুধু তা-ই নয়, এসব ইভেন্টে হুট করে নানা সমস্যা দেখা দিতে পারে। সে সময় উপস্থিত বুদ্ধি ও চিন্তন দক্ষতা কাজে লাগিয়ে সমাধান বের করতে হয়, যেটা হয়তো সাধারণ শিক্ষার্থীদের তুলনায় ক্লাবের সদস্যরা বেশি দ্রুত করতে পারবেন।

ক্লাব কি করতেই হবে

রাইয়ানের মতে, কোনো শিক্ষার্থীর সিজিপিএও ঠিক থাকছে না, ক্লাবেও কাজ করছেন না, আবার পার্টটাইম চাকরিও করছেন না—তাহলে ওই সময়টায় তাঁরা করছেন কী? তিনি বলেন, ‘আমি যখন ক্লাব করিনি, তখন পার্টটাইম চাকরিকে বেছে নিয়েছিলাম। আপনি যদি চাকরি না করেন, তাহলে বাসায় বসে থাকার চেয়ে ক্লাবই একটি ভালো বিকল্প হতে পারে।’

ক্লাবের নেতিবাচক দিক: সময়ের অপচয়, নাকি ক্লাব পলিটিকস

ক্লাবিং সবসময় শিক্ষার্থীদের জন্য উপকারী নাও হতে পারে। রাইয়ান বলেন, ক্লাবে এমন কিছু কাজ করা হয়, যা প্রোডাকটিভ নয়। যেমন: ঘণ্টার পর ঘণ্টা তুচ্ছ বিষয় নিয়ে আলোচনা করা। মাঝেমধ্যে এ মিটিংগুলোয় রাত ১টাও পেরিয়ে যায়। এ ছাড়াও ক্লাবের পোস্ট শেয়ার করা, কিংবা পোস্টে কমেন্ট করা, আবার কারা এসব করছেন, না সেসবের লিস্ট করাও সবার ক্ষেত্রে সমান গুরুত্ব বহন করে না।

রাইয়ান আরও বলেন, ‘ক্লাবিংয়ের মধ্যে আমি প্রোডাকটিভ কিছু খুঁজে পাইনি। কারণ দ্বিতীয় বর্ষে থাকাকালে আমি একটি ভালো প্রতিষ্ঠানে পার্টটাইম চাকরি পেয়ে গিয়েছিলাম। আর সে চাকরির মাধ্যমেই আমি ইন্ডাস্ট্রির অনেক বড় বড় মানুষের সান্নিধ্যে আসতে পেরেছিলাম। এজন্য আমার মনে হয়েছিল, ক্লাবিংয়ের পেছনে এখন যে সময়টা দিচ্ছি, সেটা চাকরিতে দিলে আমার ক্যারিয়ারে তা আরও ভালো ভূমিকা রাখবে।’

ক্লাবের নেতিবাচক দিক নিয়ে কথা বলতে গেলে এর মধ্যে ক্লাব পলিটিকসও চলে আসে। ক্লাবের সিনিয়রদের গুণগত নেতৃত্বের অভাব, পক্ষপাতিত্ব এবং দলীয় সংকীর্ণতা ক্লাবের কার্যক্রমে বাধা সৃষ্টি করে। ফলে শিক্ষার্থীরা ক্লাবে কাজ করার আগ্রহ হারিয়ে ফেলেন। এ ছাড়াও এসব রাজনীতি ক্লাবের শিক্ষার্থীদের মধ্যে বন্ধুত্বপূর্ণ পরিবেশ তৈরি করার পরিবর্তে একঘেয়ে হয়ে ওঠে।

তবে রাইয়ানের মতে, এর একটা ইতিবাচক দিকও রয়েছে। তিনি বলেন, ক্লাবের মধ্যে রাজনীতি থাকবেই, কিন্তু করপোরেট জীবনে এর অভাব হবে না। ক্লাবিং আসলে কর্মজীবনের প্রস্তুতি হিসেবেই কাজ করে।

ক্লাব করলেই কি চাকরি নিশ্চিত?

ক্লাব করলেই চাকরি নিশ্চিত, এমন নয়। তবে এটি পেশাগত সম্ভাবনাগুলোকে অনেক বাড়িয়ে দেয়। অনেক শিক্ষার্থী ক্লাবের মাধ্যমে ভালো জায়গায় চাকরি পেয়েছেন, আবার কিছু শিক্ষার্থী চাকরি না পেয়ে বসে আছেন। ক্লাবের মাধ্যমে যোগাযোগ এবং নেটওয়ার্ক তৈরি হলে, এটি অনেক ক্ষেত্রেই কাজে আসে।

বর্তমানে চাকরি পাওয়া বেশ কঠিন, আর সিজিপিএর পাশাপাশি সহশিক্ষা কার্যক্রমও গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। মেহেদি বলেন, মার্কেটিং, ম্যানেজমেন্ট, সাপ্লাই চেইন ম্যানেজমেন্টের মতো বিষয়গুলো পুঁথিগত শিক্ষার মাধ্যমে শেখা যায় না, এগুলো হাতে-কলমে শিখতে হয়। আর এ কাজগুলোতে ক্লাব একটি বড় ভূমিকা পালন করে।

ক্লাব কখন ছাড়া উচিত যাঁরা এখনো নিশ্চিত নন, ক্লাবে যোগ দেওয়া উচিত কি না, তাঁদের জন্য রাইয়ানের পরামর্শ হলো প্রথমে একবার ক্লাবে যোগ দিয়ে দেখেন, কেমন লাগছে, নতুন কিছু শিখতে পারছেন কি না। যদি দেখেন, ক্লাব আপনার ক্যারিয়ার এবং ব্যক্তিগত উন্নয়নে তেমন ভূমিকা রাখছে না, তবে সেই ক্লাব থেকে বের হয়ে আসা সবচেয়ে ভালো সিদ্ধান্ত। এ বিষয়ে মেহেদিও একই কথা বলেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

‎জকসু নির্বাচনে প্যানেল ও স্বতন্ত্র প্রার্থীদের ৪ দফা দাবি

জবি প্রতিনিধি 
আপডেট : ৩০ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৭: ৫৪
জকসু নির্বাচন স্থগিতের প্রতিবাদে বিক্ষোভ। ছবি: আজকের পত্রিকা
জকসু নির্বাচন স্থগিতের প্রতিবাদে বিক্ষোভ। ছবি: আজকের পত্রিকা

‎জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় শিক্ষার্থী সংসদ (জকসু) ও হল সংসদ নির্বাচন স্থগিতের সিদ্ধান্তের পরিপ্রেক্ষিতে চার দফা দাবি জানিয়েছে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করা চার প্যানেলেসহ স্বতন্ত্র পদপ্রার্থীরা। আজ মঙ্গলবার (৩০ ডিসেম্বর) দুপুরে উপাচার্য বরাবর সম্মিলিতভাবে এ দাবি জানান তাঁরা। ‎

‎এ বিষয়ে ছাত্রশিবির সমর্থিত অদম্য জবিয়ান ঐক্য প্যানেলের জিএস পদপ্রার্থী আব্দুল আলিম আরিফ ‎বলেন, ‘আমরা প্যানেল এবং স্বতন্ত্র প্রার্থীরা জকসু নির্বাচনকে ঘিরে সম্মিলিতভাবে চার দফা মৌখিক দাবি জানিয়েছি। প্রশাসন থেকে আমাদের আশ্বস্ত করা হয়েছে যে সবগুলো পূরণ করতে তারা সর্বোচ্চ চেষ্টা করবে।’ ‎

‎সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট সমর্থিত মওলানা ভাসানী ব্রিগেড প্যানেলের ভিপি পদপ্রার্থী গৌরব ভৌমিক বলেন, ‘আমরা যে দাবি জানিয়েছি, তা অবশ্যই পূরণ করা লাগবে—এটা আমাদের অধিকার।’ ‎

এর আগে সকালে বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে শোক জানিয়ে নির্বাচন স্থগিত ঘোষণা করেন উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. রেজাউল করিম। নির্বাচন স্থগিতের ঘোষণার পরপরই ক্ষুব্ধ সাধারণ শিক্ষার্থী ও প্রার্থীরা ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ শুরু করেন। কয়েক ঘণ্টা ধরে উপাচার্য ভবন ঘেরাও করে আন্দোলন চালান তাঁরা। ‎

‎শিক্ষার্থীদের তীব্র আন্দোলনের মুখে আবারও সিন্ডিকেট সভা ডাকা হয়। সভা শেষে উপাচার্য শিক্ষার্থীদের আশ্বস্ত করে বলেন, ‘আমরা শিক্ষার্থীদের আবেগের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। উদ্ভূত পরিস্থিতির কারণে ভোট গ্রহণ স্থগিত করা হলেও শিক্ষার্থীদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে দ্রুততম সময়ের মধ্যে নতুন তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে। আগামী ৬ জানুয়ারি জকসু ও হল সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।’ ‎

‎চার দফা দাবি হলো—জকসু ও হল সংসদ নির্বাচন আগামী ৬ জানুয়ারির মধ্যেই অনুষ্ঠিত করতে হবে। নির্বাচন সম্পন্ন না হওয়া পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কোনো সদস্য পদত্যাগ করতে পারবেন না। নির্বাচন শেষে যেসব সিন্ডিকেট সদস্য নির্বাচন স্থগিতের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, তাদের পদত্যাগ করতে হবে। নির্বাচন স্থগিতের পেছনে কোনো দলীয় বা রাজনৈতিক চাপ ছিল কি না, সে বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে স্পষ্ট ব্যাখ্যা দিতে হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

খালেদা জিয়ার মৃত্যু: জকসু নির্বাচন পিছিয়ে ৬ জানুয়ারি

জবি প্রতিনিধি‎
জকসু ও হল সংসদ নির্বাচন স্থগিতের ঘোষণায় শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ। ছবি: আজকের পত্রিকা
জকসু ও হল সংসদ নির্বাচন স্থগিতের ঘোষণায় শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ। ছবি: আজকের পত্রিকা

‎জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় শিক্ষার্থী সংসদ (জকসু) ও হল সংসদ নির্বাচনের ভোট গ্রহণ পিছিয়ে আগামী ৬ জানুয়ারি নির্ধারণ করা হয়েছে। বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে শোক জানিয়ে এই ভোট গ্রহণ সাত দিন পেছাল বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

‎‎আজ ‎মঙ্গলবার দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের জরুরি সিন্ডিকেট সভায় এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ‎

‎তিনবারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে শোক জানিয়ে আজ সকালে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া জকসু ও হল সংসদ নির্বাচন স্থগিতের ঘোষণা দেন উপাচার্য ড. মো. রেজাউল করিম। এতে শিক্ষার্থী থেকে শুরু করে বিভিন্ন প্যানেলের প্রার্থীরা ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ শুরু করেন। একপর্যায়ে তাঁরা উপাচার্য ভবন ঘেরাও করেন। বিক্ষোভকারীরা তফসিল অনুযায়ী আজই নির্বাচন অনুষ্ঠানের দাবি জানান।

‎শিক্ষার্থীদের দাবির মুখে সিন্ডিকেটের জরুরি সভা ডাকা হয়।

সভা শেষে উপাচার্য শিক্ষার্থীদের আশ্বস্ত করে বলেন, ‘আমরা শিক্ষার্থীদের আবেগের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। উদ্ভূত পরিস্থিতির কারণে ভোট গ্রহণ স্থগিত করা হলেও শিক্ষার্থীদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে দ্রুততম সময়ের মধ্যে নতুন তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে। আগামী ৬ জানুয়ারি জকসু ও হল সংসদ নির্বাচন হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

খালেদা জিয়ার মৃত্যু: বুধবারের বৃত্তি পরীক্ষা স্থগিত, হবে ৫ জানুয়ারি

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ৩০ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৫: ৫০
খালেদা জিয়ার মৃত্যু: বুধবারের বৃত্তি পরীক্ষা স্থগিত, হবে ৫ জানুয়ারি

সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে তিন দিনের রাষ্ট্রীয় শোক ঘোষণা ও বুধবার সাধারণ ছুটি ঘোষণা করায় এ দিন অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া জুনিয়র বৃত্তির বিজ্ঞান এবং বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয় বিষয়ের পরীক্ষা স্থগিত ঘোষণা করেছে শিক্ষা বোর্ডগুলো। পরীক্ষাটি আগামী ৫ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত হবে।

আজ মঙ্গলবার দুপুরে ঢাকা মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক ও আন্তঃশিক্ষা বোর্ড পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক এস এম কামাল উদ্দিন হায়দার এ তথ্য জানান।

তিনি বলেন, ‘রাষ্ট্রীয় শোক এবং বুধবার ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে। তাই বুধবারের পরীক্ষা স্থগিত করা হয়েছে। ওই পরীক্ষা আগামী ৫ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত হবে।’

পরীক্ষা স্থগিত ও নতুন তারিখ ঘোষণা দিয়ে শিক্ষা বোর্ডগুলো বিজ্ঞপ্তি জারি করছে বলেও জানান এই কর্মকর্তা।

অষ্টম শ্রেণির পাঠ্যবইয়ের ভিত্তিতে বাংলা, ইংরেজি, গণিত, বিজ্ঞান এবং বাংলাদেশ ও বিশ্ব পরিচয় বিষয়ে জুনিয়র বৃত্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হচ্ছে।

রোববার বাংলা, সোমবার ইংরেজি, মঙ্গলবার গণিত পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছে। বুধবারের বিজ্ঞান এবং বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয় বিষয়ের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে ৫ জানুয়ারি।

বাংলা, ইংরেজি, গণিত বিষয়ে আলাদা আলাদা পরীক্ষা হলে বিজ্ঞান এবং বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয় বিষয়ের পরীক্ষা হবে একসঙ্গে।

বৃত্তি পরীক্ষার মোট নম্বর হবে ৪০০। বাংলায় ১০০, ইংরেজিতে ১০০, গণিতে ১০০, বিজ্ঞানে ৫০ এবং বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয় বিষয়ে ৫০ নম্বরের পরীক্ষা হবে। প্রতিটি পরীক্ষা হবে ৩ ঘণ্টা সময়ে।

এ পরীক্ষার ফলের ভিত্তিতে ‘ট্যালেন্টপুল’ কোটায় ও ‘সাধারণ’ কোটায় শিক্ষার্থীদের বৃত্তি দেওয়া হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

‎জকসু নির্বাচন স্থগিত, ক্যাম্পাস ছাড়ছেন শিক্ষার্থীরা

  জবি প্রতিনিধি
ক্যাম্পাস ছাড়তে শুরু করেছেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা। ছবি: আজকের পত্রিকা
ক্যাম্পাস ছাড়তে শুরু করেছেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা। ছবি: আজকের পত্রিকা

‎জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় শিক্ষার্থী সংসদ (জকসু) ও হল সংসদ নির্বাচন স্থগিতের ঘোষণার পর উপাচার্যের ভবন ঘেরাও করে আন্দোলন শুরু করেছেন শিক্ষার্থীরা। এদিকে এ উত্তাল পরিস্থিতির মাঝে ক্যাম্পাস ছাড়তে শুরু করেছেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা।

‎আজ মঙ্গলবার (৩০ ডিসেম্বর) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটক ও আশপাশের এলাকায় শিক্ষার্থীদের ক্যাম্পাস ছাড়ার দৃশ্য চোখে পড়ে। এদিন সকাল থেকেই ভোট দেওয়ার জন্য দূর-দূরান্ত থেকে শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসে এসেছিলেন। তবে ভোটের অনিশ্চয়তায় ক্যাম্পাস ছাড়ছেন তাঁরা।

‎গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের ২০২২–২৩ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী মিজানুর রহমান সোহাগ বলেন, জীবনের প্রথম ভোট দিতে ক্যাম্পাসে এসেছিলাম। কিন্তু প্রশাসনের সিদ্ধান্তের কারণে সেই সুযোগ আর হলো না। জানি না কবে এই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে এজন্যই বাসায় ফিরে যাচ্ছি।

‎সমাজকর্ম বিভাগের আরেক শিক্ষার্থী মায়িশা ফাহমিদা বলেন, নির্বাচনকে ঘিরে এক ধরনের ভিন্ন অনুভূতি কাজ করছিল। কিন্তু যা প্রশাসন করল, তা ছিল একেবারেই অপ্রত্যাশিত। ভোট যেহেতু হবে না, তাই ক্যাম্পাসে থাকার আর কোনো মনমানসিকতা নেই এ কারণেই চলে যাচ্ছি। ‎

‎এর আগে এক জরুরি সিন্ডিকেট সভায় জকসু নির্বাচন স্থগিতের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় বলে নিশ্চিত করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. রেজাউল করিম। আজ সকাল সোয়া ৯টায় নির্বাচন স্থগিতের এ আনুষ্ঠানিক ঘোষণা আসে।

‎‎তবে এ ঘোষণার পর ভিসি ভবন ঘেরাও করে আন্দোলন শুরু করেন প্রার্থী ও শিক্ষার্থীরা। প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত ভিসি ভবন ঘেরাও করে নির্বাচন আদায়ে শিক্ষার্থীরা আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত