সুলতান মাহমুদ, ঢাকা

পারভেজ (ছদ্মনাম) ও রুনা (ছদ্মনাম) দুজনে একই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী এবং উভয়ের বয়স ১৮ বছরের বেশি। একই বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনার সুবাদে তাঁদের মধ্যে প্রথমে বন্ধুত্ব এবং পরে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। সম্পর্কের একপর্যায়ে উভয়ে বিয়ের প্রতিশ্রুতিতে শারীরিক সম্পর্ক গড়ে তোলেন। কিন্তু পরে রুনা যখন বিয়ের চাপ দিতে থাকেন তখন নানা অজুহাতে এড়িয়ে যেতে থাকেন পারভেজ। এর মধ্যে শারীরিক সম্পর্কও অব্যাহত থাকে। একপর্যায়ে সম্পর্কে অবনতি হয়। পারভেজ রুনাকে বিয়ে করবে না বলে জানিয়ে দেন, যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করেন। পরে রুনা থানায় গিয়ে পারভেজের বিরুদ্ধে ‘বিয়ের প্রলোভনে ধর্ষণ’–এর অভিযোগে মামলা করেন। এখন পারভেজকে কি ধর্ষক বলা যাবে? বাংলাদেশের আইন কী বলে?
বিয়ের প্রলোভনে ধর্ষণের বিষয়টি ব্যাখ্যায় যাওয়ার আগে আমাদের শুরুতেই দেখতে হবে বাংলাদেশের আইনে ধর্ষণের সংজ্ঞায় কী আছে। কেননা এখানে ‘ধর্ষণ’কে প্রধান অপরাধ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।
ধর্ষণের সংজ্ঞা
দণ্ডবিধি ১৮৬০–এর ৩৭৫ ধারায় ‘ধর্ষণ’কে সংজ্ঞায়িত করা হয়েছে। এই ধারা অনুযায়ী, পাঁচটি অবস্থায় শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন করলে তা ধর্ষণ বলে গণ্য করা হয়েছে—
এক. নারীর ইচ্ছার বিরুদ্ধে
দুই. নারীর সম্মতি ছাড়া
তিন. নারীর সম্মতি আদায়, তবে তা মৃত্যু কিংবা জখমের ভয় দেখিয়ে
চার. নারীর সম্মতি নিয়েই, কিন্তু পুরুষটি জানেন যে, তিনি ওই নারীর স্বামী নন এবং ওই নারী তাঁকে এমন একজন পুরুষ বলে ভুল করছেন যে পুরুষটির সঙ্গে তাঁর আইনসংগতভাবে বিয়ে হয়েছে বা বিবাহিত বলে তিনি বিশ্বাস করেন।
পাঁচ. নারীর সম্মতিসহ বা সম্মতি ছাড়া—তবে সেই নারীর বয়স যদি হয় ১৪ বছরের কম।
এখন, বিয়ের প্রলোভনে ধর্ষণের বিষয়টি বিশ্লেষণে দেখা যায়, সেখানে অভিযুক্ত ব্যক্তি বিয়ের প্রলোভনে নারীর সম্মতি আদায় করেন, যা ৩৭৫ ধারায় ধর্ষণের সংজ্ঞার অন্তর্ভুক্ত নয়।
মূলত, ৩৭৫ ধারায় প্রদত্ত সংজ্ঞার বিশ্লেষণে স্পষ্ট যে, বিয়ের প্রলোভনে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন ‘ধর্ষণ’ হিসেবে সংজ্ঞায়িত হবে না।
অন্যদিকে, নারী ও শিশু নির্যাতন দমন (সংশোধন) আইন, ২০২০ এর ২ (ঙ) ধারায় বলা হয়েছে, ‘ধর্ষণ’ অর্থ ধারা ৯–এর বিধান সাপেক্ষে, Penal Code, ১৮৬০ (Act XLV of ১৮৬০) এর Section ৩৭৫ এ সংজ্ঞায়িত ‘rape’।
অর্থাৎ দণ্ডবিধি, ১৮৬০–এর ৩৭৫ ধারায় প্রদত্ত ধর্ষণের সংজ্ঞা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য।
বিয়ের প্রলোভনে ধর্ষণ
নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন, ২০২০ এর ৯ (১) ধারায় বলা হয়েছে, যদি কোনো পুরুষ কোনো নারী বা শিশুকে ধর্ষণ করেন, তাহলে তিনি মৃত্যুদণ্ডে বা যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ডে দণ্ডিত হবেন এবং এর অতিরিক্ত অর্থদণ্ডেও দণ্ডনীয় হবেন।
এই আইনের ব্যাখ্যায় বলা হয়েছে, যদি কোনো পুরুষ বিবাহবন্ধন ছাড়া ১৬ বছরের অধিক বয়সের কোনো নারীর সঙ্গে তাঁর সম্মতি ছাড়া বা ভীতি প্রদর্শন বা প্রতারণামূলকভাবে তাঁর সম্মতি আদায় করে, অথবা ১৬ বছরের কম বয়সের কোনো নারীর সঙ্গে তার সম্মতিসহ বা সম্মতি ছাড়া শারীরিক সম্পর্ক করেন, তা হলে তিনি ওই নারীকে ধর্ষণ করেছেন বলে গণ্য হবে।
এই ধারায়ও সম্মতি নিয়ে দৈহিক সম্পর্ক হলে তা অপরাধ হিসেবে গণ্য হবে না। তবে বয়স হতে হবে ১৬ বছরের বেশি।
বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ইশরাত হাসান মনে করেন, ‘নারীর সম্মতি ছাড়া হলে সেটি রেপ (ধর্ষণ)। বয়স যাই হোক। প্রশ্ন হচ্ছে, নারীর বয়স ১৬ বা ১৮ বছরের বেশি হলে তখন সেটি ধর্ষণ হবে কি না। এখানে প্রশ্ন থাকে সম্মতি কীভাবে আদায় করা হয়েছে।’
বিয়ের প্রলোভনে শারীরিক সম্পর্ক ধর্ষণ হবে কি না জানতে চাইলে এই আইনজীবী বলেন, ‘বিয়ের প্রলোভনে এটি (শারীরিক সম্পর্ক) কোনো রেপ (ধর্ষণ) হয় না। যদি এমন হয়, প্রাপ্তবয়স্ক (বয়স ১৬ বা ১৮ বছরের বেশি হলে) একজন নারী ও প্রাপ্তবয়স্ক একজন পুরুষ উভয়ে সম্মতিতে সম্পর্কে জড়িয়েছেন। তাঁদের বিয়ের প্রতিশ্রুতি থাকতেও পারে, আবার নাও থাকতে পারে। তখন সেটি কখনোই ধর্ষণ না।’
তিনি বলেন, ‘আমরা এখনো অনেক মামলায় দেখি, একজন নারী বিবাহিত এবং তাঁর বাচ্চা আছে, তিনি আবার বিয়ের প্রলোভনে ধর্ষণের মামলা করেন।’ আইনজীবী ইশরাত প্রশ্ন রেখে বলেন, ‘যে নারী এরই মধ্যে বিবাহিত তাঁকে আবার বিয়ের প্রতিশ্রুতি দেয় কীভাবে? তাঁকে তো বিয়ের প্রতিশ্রুতি দেওয়া সম্ভব না। কেননা তিনি অলরেডি ম্যারিড।’
তিনি আরও বলেন, ‘এই ধরনের মামলাগুলো নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের অপব্যবহার। এ নিয়ে কিছু মানুষ সুবিধা নেয়। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হয় তারা যারা আসলেই প্রকৃত ভিকটিম (ক্ষতিগ্রস্ত)। কারণ, এই ধরনের মামলা হলে আদালতে মামলার জট বাড়ে, তখন প্রকৃত ভুক্তভোগীরা বিচার পান না।’
অধিকতর ব্যাখ্যায় আইনজীবী ইশরাত বলেন, ‘বিয়ের প্রলোভন বললেই তো হবে না। এমনও তো হতে পারে, একটি ছেলেকে একটি মেয়ে বিয়ের প্রতিশ্রুতি দেয়, পরে মেয়েটি যদি তার কমিটমেন্ট (ওয়াদা) না রাখতে পারে, তাহলে ছেলেটি কি মেয়েটির বিরুদ্ধে রেপ কেস (ধর্ষণ মামলা) করতে পারবে যে, আমাকে বিয়ে করল না কেন? সম্পর্কে জড়িয়েছিল কেন? সেটা তো সম্ভব না। তাহলে এটাও রেপ হবে না।’
অন্যদিকে, দণ্ডবিধি ১৮৬০–এর ৪৯৩ ধারা অনুযায়ী, কোনো ব্যক্তি যদি কোনো নারীকে প্রতারণামূলকভাবে আইনসম্মত বিয়ের বিশ্বাসে প্ররোচিত করে, কিন্তু আদৌ ওই বিয়ে আইনসম্মতভাবে না হয় এবং ওই নারীর সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন করে, তবে অপরাধী সর্বোচ্চ ১০ বছর পর্যন্ত সশ্রম বা বিনাশ্রম কারাদণ্ডে ও অর্থদণ্ডে দণ্ডিত হবে।
এই ধারাটি মূলত বিয়ে বলবৎ আছে বিশ্বাস করিয়ে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপনের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য। অতএব, এই ধারায় বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে বা ভবিষ্যতে বিয়ে করার আশ্বাস দিয়ে দৈহিক সম্পর্ক করলে তা অপরাধ হবে না।
ধর্ষণ মামলা কোথায় হবে
ধর্ষণের অভিযোগ থানায় করতে হবে। পুলিশ ধর্ষণের অভিযোগ এফআইআর হিসেবে গ্রহণ করে তদন্ত শেষে আদালতে প্রতিবেদন দেবে। যদি থানা–পুলিশ অভিযোগ না নেয়, তাহলে ভুক্তভোগী নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে মামলা করতে পারেন। ট্রাইব্যুনাল পুলিশকে মামলা এফআইআর হিসেবে গ্রহণের নির্দেশ দিতে পারেন বা তদন্ত করে প্রতিবেদন দেওয়ার নির্দেশ দিতে পারেন।
তবে এই মামলা তদন্ত করতে গিয়ে পুলিশকে বেশ কিছু সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়। যদি এমন হয়, ধর্ষণের ঘটনার ১৫ দিন বা ১ মাস বা তারও পরে ভুক্তভোগী থানায় বা আদালতে ধর্ষণের মামলা করেন। তখন প্রমাণের জন্য অনেক সময়ই প্রয়োজনীয় আলামত বা সাক্ষ্য প্রমাণ পাওয়া যায় না। তখন মামলায় বেশির ভাগ ক্ষেত্রে বাদী পক্ষ হেরে যান। আসামি খালাস পান।
বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের একাধিক রায়ে বলা আছে, ১৬ বছরের ঊর্ধ্বে কোনো নারীর সম্মতিতে তাঁর সঙ্গে কারও শারীরিক সম্পর্ক হলে সেটিকে ধর্ষণ হিসেবে বিবেচনা করা যাবে না। এসব রায়ে আদালত বিয়ের প্রলোভন ধর্ষণের অভিযোগও খারিজ করেছেন।
ভারতের উচ্চ আদালতও বলেছেন, কোনো নারী স্বেচ্ছায় দীর্ঘদিন ধরে কারও সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক বজায় রাখার পর ওই ব্যক্তির বিরুদ্ধে বিয়ের প্রলোভনে ধর্ষণের অভিযোগ আনতে পারবেন না।
২০১৭ সালে বোম্বে হাইকোর্ট একটি মামলায় পর্যবেক্ষণ দেন, প্রাপ্তবয়স্ক নারীদের ক্ষেত্রে বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে শারীরিক সম্পর্ককে ধর্ষণ হিসেবে গণ্য করা যাবে না। মামলার রায়ে বোম্বে হাইকোর্টের বিচারপতি মৃদুলা ভাটকার বলেন, ‘দুজন প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তির মধ্যে শারীরিক সম্পর্ক যদি সেই মুহূর্তে উভয়ের সম্মতিতেই হয়ে থাকে, তা হলে তা কীভাবে ধর্ষণ হবে?’ তিনি বলেন, ‘নিজেদের ইচ্ছাতেই প্রেমিক–প্রেমিকা অনেক বেশি ঘনিষ্ঠ হয়ে থাকেন। পরে আবার অনেকেই এটাকে বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে ধর্ষণের অভিযোগ তোলেন। এটা হওয়া উচিত নয়।’
বিচারপতি বলেন, ‘সমাজ এখন আগের চেয়ে অনেক পরিবর্তিত হয়েছে। অতীতে বিয়ের আগে কোনো মেয়ে বা ছেলে শারীরিক সম্পর্ক রাখতেন না। সেটা সমাজের চোখে অপরাধ ছিল। কিন্তু এখনকার যুবসমাজ অনেক বেশি খোলা মনের। নিজেদের ইচ্ছাতেই তাঁরা প্রেমিক বা প্রেমিকার সঙ্গে অনেক বেশি ঘনিষ্ঠ হয়ে থাকেন।’
আবার অনেকেই বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে শারীরিক সম্পর্ক করেন। এটা হওয়া উচিত নয়। কারণ, বিয়ের আগে শারীরিক সম্পর্কের পরিণাম কী হতে পারে, তা একজন শিক্ষিত ও প্রাপ্তবয়স্ক মেয়ে অবশ্যই জানবেন। তাই সব ক্ষেত্রেই এমন ঘটনাকে ধর্ষণের পর্যায়ে ফেলা উচিত হবে না। যোগ করেন বিচারপতি।
বিচারপতি আরও বলেন, ‘এর মানে যদিও এই নয় যে, প্রাপ্তবয়স্ক এবং শিক্ষিত মেয়েদের আনা সব অভিযোগকে আগে থেকেই খারিজ করা হবে। কোনটা ধর্ষণ আর কোনটা ধর্ষণ নয়, তা অবশ্যই পরিস্থিতির বিচারে স্থির করা হবে।’

পারভেজ (ছদ্মনাম) ও রুনা (ছদ্মনাম) দুজনে একই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী এবং উভয়ের বয়স ১৮ বছরের বেশি। একই বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনার সুবাদে তাঁদের মধ্যে প্রথমে বন্ধুত্ব এবং পরে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। সম্পর্কের একপর্যায়ে উভয়ে বিয়ের প্রতিশ্রুতিতে শারীরিক সম্পর্ক গড়ে তোলেন। কিন্তু পরে রুনা যখন বিয়ের চাপ দিতে থাকেন তখন নানা অজুহাতে এড়িয়ে যেতে থাকেন পারভেজ। এর মধ্যে শারীরিক সম্পর্কও অব্যাহত থাকে। একপর্যায়ে সম্পর্কে অবনতি হয়। পারভেজ রুনাকে বিয়ে করবে না বলে জানিয়ে দেন, যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করেন। পরে রুনা থানায় গিয়ে পারভেজের বিরুদ্ধে ‘বিয়ের প্রলোভনে ধর্ষণ’–এর অভিযোগে মামলা করেন। এখন পারভেজকে কি ধর্ষক বলা যাবে? বাংলাদেশের আইন কী বলে?
বিয়ের প্রলোভনে ধর্ষণের বিষয়টি ব্যাখ্যায় যাওয়ার আগে আমাদের শুরুতেই দেখতে হবে বাংলাদেশের আইনে ধর্ষণের সংজ্ঞায় কী আছে। কেননা এখানে ‘ধর্ষণ’কে প্রধান অপরাধ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।
ধর্ষণের সংজ্ঞা
দণ্ডবিধি ১৮৬০–এর ৩৭৫ ধারায় ‘ধর্ষণ’কে সংজ্ঞায়িত করা হয়েছে। এই ধারা অনুযায়ী, পাঁচটি অবস্থায় শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন করলে তা ধর্ষণ বলে গণ্য করা হয়েছে—
এক. নারীর ইচ্ছার বিরুদ্ধে
দুই. নারীর সম্মতি ছাড়া
তিন. নারীর সম্মতি আদায়, তবে তা মৃত্যু কিংবা জখমের ভয় দেখিয়ে
চার. নারীর সম্মতি নিয়েই, কিন্তু পুরুষটি জানেন যে, তিনি ওই নারীর স্বামী নন এবং ওই নারী তাঁকে এমন একজন পুরুষ বলে ভুল করছেন যে পুরুষটির সঙ্গে তাঁর আইনসংগতভাবে বিয়ে হয়েছে বা বিবাহিত বলে তিনি বিশ্বাস করেন।
পাঁচ. নারীর সম্মতিসহ বা সম্মতি ছাড়া—তবে সেই নারীর বয়স যদি হয় ১৪ বছরের কম।
এখন, বিয়ের প্রলোভনে ধর্ষণের বিষয়টি বিশ্লেষণে দেখা যায়, সেখানে অভিযুক্ত ব্যক্তি বিয়ের প্রলোভনে নারীর সম্মতি আদায় করেন, যা ৩৭৫ ধারায় ধর্ষণের সংজ্ঞার অন্তর্ভুক্ত নয়।
মূলত, ৩৭৫ ধারায় প্রদত্ত সংজ্ঞার বিশ্লেষণে স্পষ্ট যে, বিয়ের প্রলোভনে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন ‘ধর্ষণ’ হিসেবে সংজ্ঞায়িত হবে না।
অন্যদিকে, নারী ও শিশু নির্যাতন দমন (সংশোধন) আইন, ২০২০ এর ২ (ঙ) ধারায় বলা হয়েছে, ‘ধর্ষণ’ অর্থ ধারা ৯–এর বিধান সাপেক্ষে, Penal Code, ১৮৬০ (Act XLV of ১৮৬০) এর Section ৩৭৫ এ সংজ্ঞায়িত ‘rape’।
অর্থাৎ দণ্ডবিধি, ১৮৬০–এর ৩৭৫ ধারায় প্রদত্ত ধর্ষণের সংজ্ঞা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য।
বিয়ের প্রলোভনে ধর্ষণ
নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন, ২০২০ এর ৯ (১) ধারায় বলা হয়েছে, যদি কোনো পুরুষ কোনো নারী বা শিশুকে ধর্ষণ করেন, তাহলে তিনি মৃত্যুদণ্ডে বা যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ডে দণ্ডিত হবেন এবং এর অতিরিক্ত অর্থদণ্ডেও দণ্ডনীয় হবেন।
এই আইনের ব্যাখ্যায় বলা হয়েছে, যদি কোনো পুরুষ বিবাহবন্ধন ছাড়া ১৬ বছরের অধিক বয়সের কোনো নারীর সঙ্গে তাঁর সম্মতি ছাড়া বা ভীতি প্রদর্শন বা প্রতারণামূলকভাবে তাঁর সম্মতি আদায় করে, অথবা ১৬ বছরের কম বয়সের কোনো নারীর সঙ্গে তার সম্মতিসহ বা সম্মতি ছাড়া শারীরিক সম্পর্ক করেন, তা হলে তিনি ওই নারীকে ধর্ষণ করেছেন বলে গণ্য হবে।
এই ধারায়ও সম্মতি নিয়ে দৈহিক সম্পর্ক হলে তা অপরাধ হিসেবে গণ্য হবে না। তবে বয়স হতে হবে ১৬ বছরের বেশি।
বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ইশরাত হাসান মনে করেন, ‘নারীর সম্মতি ছাড়া হলে সেটি রেপ (ধর্ষণ)। বয়স যাই হোক। প্রশ্ন হচ্ছে, নারীর বয়স ১৬ বা ১৮ বছরের বেশি হলে তখন সেটি ধর্ষণ হবে কি না। এখানে প্রশ্ন থাকে সম্মতি কীভাবে আদায় করা হয়েছে।’
বিয়ের প্রলোভনে শারীরিক সম্পর্ক ধর্ষণ হবে কি না জানতে চাইলে এই আইনজীবী বলেন, ‘বিয়ের প্রলোভনে এটি (শারীরিক সম্পর্ক) কোনো রেপ (ধর্ষণ) হয় না। যদি এমন হয়, প্রাপ্তবয়স্ক (বয়স ১৬ বা ১৮ বছরের বেশি হলে) একজন নারী ও প্রাপ্তবয়স্ক একজন পুরুষ উভয়ে সম্মতিতে সম্পর্কে জড়িয়েছেন। তাঁদের বিয়ের প্রতিশ্রুতি থাকতেও পারে, আবার নাও থাকতে পারে। তখন সেটি কখনোই ধর্ষণ না।’
তিনি বলেন, ‘আমরা এখনো অনেক মামলায় দেখি, একজন নারী বিবাহিত এবং তাঁর বাচ্চা আছে, তিনি আবার বিয়ের প্রলোভনে ধর্ষণের মামলা করেন।’ আইনজীবী ইশরাত প্রশ্ন রেখে বলেন, ‘যে নারী এরই মধ্যে বিবাহিত তাঁকে আবার বিয়ের প্রতিশ্রুতি দেয় কীভাবে? তাঁকে তো বিয়ের প্রতিশ্রুতি দেওয়া সম্ভব না। কেননা তিনি অলরেডি ম্যারিড।’
তিনি আরও বলেন, ‘এই ধরনের মামলাগুলো নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের অপব্যবহার। এ নিয়ে কিছু মানুষ সুবিধা নেয়। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হয় তারা যারা আসলেই প্রকৃত ভিকটিম (ক্ষতিগ্রস্ত)। কারণ, এই ধরনের মামলা হলে আদালতে মামলার জট বাড়ে, তখন প্রকৃত ভুক্তভোগীরা বিচার পান না।’
অধিকতর ব্যাখ্যায় আইনজীবী ইশরাত বলেন, ‘বিয়ের প্রলোভন বললেই তো হবে না। এমনও তো হতে পারে, একটি ছেলেকে একটি মেয়ে বিয়ের প্রতিশ্রুতি দেয়, পরে মেয়েটি যদি তার কমিটমেন্ট (ওয়াদা) না রাখতে পারে, তাহলে ছেলেটি কি মেয়েটির বিরুদ্ধে রেপ কেস (ধর্ষণ মামলা) করতে পারবে যে, আমাকে বিয়ে করল না কেন? সম্পর্কে জড়িয়েছিল কেন? সেটা তো সম্ভব না। তাহলে এটাও রেপ হবে না।’
অন্যদিকে, দণ্ডবিধি ১৮৬০–এর ৪৯৩ ধারা অনুযায়ী, কোনো ব্যক্তি যদি কোনো নারীকে প্রতারণামূলকভাবে আইনসম্মত বিয়ের বিশ্বাসে প্ররোচিত করে, কিন্তু আদৌ ওই বিয়ে আইনসম্মতভাবে না হয় এবং ওই নারীর সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন করে, তবে অপরাধী সর্বোচ্চ ১০ বছর পর্যন্ত সশ্রম বা বিনাশ্রম কারাদণ্ডে ও অর্থদণ্ডে দণ্ডিত হবে।
এই ধারাটি মূলত বিয়ে বলবৎ আছে বিশ্বাস করিয়ে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপনের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য। অতএব, এই ধারায় বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে বা ভবিষ্যতে বিয়ে করার আশ্বাস দিয়ে দৈহিক সম্পর্ক করলে তা অপরাধ হবে না।
ধর্ষণ মামলা কোথায় হবে
ধর্ষণের অভিযোগ থানায় করতে হবে। পুলিশ ধর্ষণের অভিযোগ এফআইআর হিসেবে গ্রহণ করে তদন্ত শেষে আদালতে প্রতিবেদন দেবে। যদি থানা–পুলিশ অভিযোগ না নেয়, তাহলে ভুক্তভোগী নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে মামলা করতে পারেন। ট্রাইব্যুনাল পুলিশকে মামলা এফআইআর হিসেবে গ্রহণের নির্দেশ দিতে পারেন বা তদন্ত করে প্রতিবেদন দেওয়ার নির্দেশ দিতে পারেন।
তবে এই মামলা তদন্ত করতে গিয়ে পুলিশকে বেশ কিছু সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়। যদি এমন হয়, ধর্ষণের ঘটনার ১৫ দিন বা ১ মাস বা তারও পরে ভুক্তভোগী থানায় বা আদালতে ধর্ষণের মামলা করেন। তখন প্রমাণের জন্য অনেক সময়ই প্রয়োজনীয় আলামত বা সাক্ষ্য প্রমাণ পাওয়া যায় না। তখন মামলায় বেশির ভাগ ক্ষেত্রে বাদী পক্ষ হেরে যান। আসামি খালাস পান।
বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের একাধিক রায়ে বলা আছে, ১৬ বছরের ঊর্ধ্বে কোনো নারীর সম্মতিতে তাঁর সঙ্গে কারও শারীরিক সম্পর্ক হলে সেটিকে ধর্ষণ হিসেবে বিবেচনা করা যাবে না। এসব রায়ে আদালত বিয়ের প্রলোভন ধর্ষণের অভিযোগও খারিজ করেছেন।
ভারতের উচ্চ আদালতও বলেছেন, কোনো নারী স্বেচ্ছায় দীর্ঘদিন ধরে কারও সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক বজায় রাখার পর ওই ব্যক্তির বিরুদ্ধে বিয়ের প্রলোভনে ধর্ষণের অভিযোগ আনতে পারবেন না।
২০১৭ সালে বোম্বে হাইকোর্ট একটি মামলায় পর্যবেক্ষণ দেন, প্রাপ্তবয়স্ক নারীদের ক্ষেত্রে বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে শারীরিক সম্পর্ককে ধর্ষণ হিসেবে গণ্য করা যাবে না। মামলার রায়ে বোম্বে হাইকোর্টের বিচারপতি মৃদুলা ভাটকার বলেন, ‘দুজন প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তির মধ্যে শারীরিক সম্পর্ক যদি সেই মুহূর্তে উভয়ের সম্মতিতেই হয়ে থাকে, তা হলে তা কীভাবে ধর্ষণ হবে?’ তিনি বলেন, ‘নিজেদের ইচ্ছাতেই প্রেমিক–প্রেমিকা অনেক বেশি ঘনিষ্ঠ হয়ে থাকেন। পরে আবার অনেকেই এটাকে বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে ধর্ষণের অভিযোগ তোলেন। এটা হওয়া উচিত নয়।’
বিচারপতি বলেন, ‘সমাজ এখন আগের চেয়ে অনেক পরিবর্তিত হয়েছে। অতীতে বিয়ের আগে কোনো মেয়ে বা ছেলে শারীরিক সম্পর্ক রাখতেন না। সেটা সমাজের চোখে অপরাধ ছিল। কিন্তু এখনকার যুবসমাজ অনেক বেশি খোলা মনের। নিজেদের ইচ্ছাতেই তাঁরা প্রেমিক বা প্রেমিকার সঙ্গে অনেক বেশি ঘনিষ্ঠ হয়ে থাকেন।’
আবার অনেকেই বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে শারীরিক সম্পর্ক করেন। এটা হওয়া উচিত নয়। কারণ, বিয়ের আগে শারীরিক সম্পর্কের পরিণাম কী হতে পারে, তা একজন শিক্ষিত ও প্রাপ্তবয়স্ক মেয়ে অবশ্যই জানবেন। তাই সব ক্ষেত্রেই এমন ঘটনাকে ধর্ষণের পর্যায়ে ফেলা উচিত হবে না। যোগ করেন বিচারপতি।
বিচারপতি আরও বলেন, ‘এর মানে যদিও এই নয় যে, প্রাপ্তবয়স্ক এবং শিক্ষিত মেয়েদের আনা সব অভিযোগকে আগে থেকেই খারিজ করা হবে। কোনটা ধর্ষণ আর কোনটা ধর্ষণ নয়, তা অবশ্যই পরিস্থিতির বিচারে স্থির করা হবে।’

ঢাকার দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের হাসনাবাদ এলাকায় গত শুক্রবার সকালে একটি মাদ্রাসায় ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। এতে নারী, শিশুসহ চারজন আহত হয়েছে। মাদ্রাসাটি শেখ আল আমিন নামের এক ব্যক্তি পরিচালনা করতেন। যিনি এর আগে নিষিদ্ধ উগ্রবাদী সংগঠনের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে দুবার গ্রেপ্তার হয়েছিলেন। দেশের বিভিন্ন থানায়
৩ দিন আগে
অপারেশন ডেভিল হান্ট ফেজ-২-এর বিশেষ অভিযানে এখন পর্যন্ত গ্রেপ্তার করা হয়েছে ৮ হাজার ৫৯৭ জনকে। গত ১৩ ডিসেম্বর থেকে শুরু হওয়া এই বিশেষ অভিযানে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় ৮৫টি আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে।
৬ দিন আগে
অপারেশন ডেভিল হান্ট ফেজ-২-এর বিশেষ অভিযানে গত রোববার বিকেল থেকে সোমবার বিকেল পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় সারা দেশে ৬৯৮ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এ সময় ১৪টি আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে। গতকাল রোববার রাতে পুলিশ সদর দপ্তর থেকে এ তথ্য জানানো হয়।
৮ দিন আগে
জুলাই–আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে আলোচিত মুখ ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক ওসমান হাদিকে গুলি করার ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগে মাধ্যমে বহুল আলোচিত নাম ফয়সাল করিম মাসুদ কিংবা দাউদ খান। গতকাল শুক্রবার হাদি গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর থেকেই এই দুই নামে এক ব্যক্তির ছবি ফেসবুকে ভেসে বেড়াচ্ছে।
১৭ দিন আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

ঢাকার দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের হাসনাবাদ এলাকায় গত শুক্রবার সকালে একটি মাদ্রাসায় ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। এতে নারী, শিশুসহ চারজন আহত হয়েছে। মাদ্রাসাটি শেখ আল আমিন নামের এক ব্যক্তি পরিচালনা করতেন। যিনি এর আগে নিষিদ্ধ উগ্রবাদী সংগঠনের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে দুবার গ্রেপ্তার হয়েছিলেন। দেশের বিভিন্ন থানায় তাঁর বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবিরোধী আইনে সাতটি মামলা রয়েছে। পুলিশ বলছে, ভবনটি বিস্ফোরক তৈরিতে ব্যবহৃত হতো।
আজ শনিবার দুপুরে সরেজমিন দেখা গেছে, হাসনাবাদ বাজারের ফলপট্টি গলিতে উম্মাল কুরা ইন্টারন্যাশনাল মাদ্রাসা। মাদ্রাসায় শিশুদের পাঠদান করা হয়। বিস্ফোরণে চার কক্ষের একতলা ভবনটির পশ্চিম পাশের দুটি কক্ষ সম্পূর্ণ ধসে পড়েছে, সিঁড়ির পাশের ছাদের একাংশ উড়ে গেছে এবং সব কটি কক্ষের পিলার ও দেয়ালে ফাটল ধরেছে। ঘটনাস্থলে ককটেল, রাসায়নিক দ্রব্য ও বোমা তৈরির বিভিন্ন সরঞ্জাম ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রয়েছে। পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) ফরেনসিক বিভাগের ক্রাইম সিন ইউনিটের কর্মীরা আলামত সংগ্রহ করছেন। তাঁরা পুরো এলাকা ঘিরে রেখেছেন। ভবনের পাশের একটি ভবনের দোতলার দেয়ালে বিস্ফোরণে ক্ষতের সৃষ্টি হয়েছে। এ ছাড়া বিস্ফোরণে পাশের একটি অটোরিকশার গ্যারেজের টিনের ছাউনি উড়ে গেছে। টিনের নিচে চাপা পড়েছিলেন গ্যারেজের ম্যানেজার আবুল কালাম।
আবুল কালাম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘এত বিকট শব্দ হয়েছে যে আমার কানে তব্দা লেগে যায়। আমি টিনের নিচে চাপা পড়ি। পরে হামাগুড়ি দিয়ে বের হই। এরপর দেখি মাদ্রাসার মধ্যে আগুন জ্বলছে। যারা ভেতরে ছিল, তারা দ্রুত বাচ্চাদের নিয়ে বের হয়ে চলে যায়।’
গ্যারেজের মালিক মোশাররফ হোসেন ঘটনাস্থলে দাঁড়িয়ে বলেন, ‘বিস্ফোরণের পর পুরো এলাকা কেঁপে ওঠে। আমিও বাসা থেকে দৌড়ে আসি। আমার গ্যারেজের দুজন অটোচালক দুই শিশুকে ওই ভবন থেকে বের করেন। এক নারী আর এক শিশুকে নিয়ে চলে যায়। এ সময় আল আমিনও দ্রুত ঘটনাস্থল থেকে চলে যায়। আধা ঘণ্টার মধ্যে ফায়ার সার্ভিস ও পুলিশের লোকজন এসে পুরো এলাকার নিয়ন্ত্রণ নেয়।’
মাদ্রাসার পাশের ৫ তলা বাড়ির বাসিন্দা মনোয়ার বলেন, ‘হঠাৎ বিকট শব্দ শুনতে পাই। মনে হয়েছিল ভূমিকম্প। কারণ, বিস্ফোরণে সব ভবনে কাঁপুনি লাগে। সবাই চিৎকার করেছিল।’
ওই বাসিন্দা আরও বলেন, ‘মাদ্রাসাটিতে ৩০-৩৫ শিক্ষার্থী পড়াশোনা করত। তবে শুক্রবার ছুটির দিন হওয়ায় মাদ্রাসা বন্ধ ছিল। এ কারণে বড় ধরনের প্রাণহানির ঘটনা ঘটেনি।’
ভবনটির পশ্চিম পাশের এক পাশে তিনটি কক্ষে মাদ্রাসার কার্যক্রম পরিচালিত হতো। অপর পাশের একটি কক্ষে পরিচালক শেখ আল আমিন (৩২), তাঁর স্ত্রী আছিয়া বেগম (২৮) এবং তাঁদের তিন সন্তান নিয়ে সেখানেই থাকতেন। বিস্ফোরণে দুই ছেলে উমায়েত (১০) ও আবদুল্লাহ (৭) আহত হয়। এর মধ্যে আছিয়া ও তাঁর দুই সন্তানকে প্রথমে স্থানীয় হাসপাতালে নেওয়া হয়। কর্তব্যরত চিকিৎসক উন্নত চিকিৎসার জন্য তাদের ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠান।
পাশের ভবনের বাসিন্দা হুমায়ুন কবির বলেন, ‘বিস্ফোরণে আমাদের ভবনের কিছু অংশ ফেটে গেছে। ঘরের ভেতরের আসবাবও ভেঙে পড়েছে।’
ঘটনাস্থলেই পুলিশ হেফাজতে বসে ছিলেন ভবনমালিক পারভীন বেগম। ভবনের জমি তাঁর পৈতৃক সম্পত্তি। সেখানে লিবিয়ায় থাকা তাঁর দুই ছেলে এই ভবন ২০২২ সালে তৈরি করেন। এরপর হারুন অর রশীদ নামের এক ব্যক্তি এটি মাদ্রাসা করবেন বলে ১০ হাজার টাকায় ভাড়া নেন। পারভীন বেগম বলেন, ‘তিন বছর ধরে আমার বাড়ি ভাড়া নিয়ে মুফতি হারুন অর রশীদ মাদ্রাসা পরিচালনা করতেন। হারুন তাঁর শ্যালক আল আমিন ও শ্যালকের স্ত্রী আছিয়াকে মাদ্রাসা পরিচালনার দায়িত্ব দেন। তিনি মাঝেমধ্যে মাদ্রাসায় আসতেন। আমি নিয়মিত খোঁজখবর নিতাম। কিন্তু মাদ্রাসার আড়ালে কী কার্যক্রম চলছিল, তা বুঝতে পারিনি। আজ এসে দেখি, ভবনের চারপাশ উড়ে গেছে।’
পারভীন বেগমের পাশেই ছিলেন তাঁর ছোট মেয়ে সোহানা। তিনি বলেন, ‘ভাড়া নেওয়ার সময় শুধু হারুন অর রশীদ একাই এসেছিলেন। এরপর তাঁরা মাদ্রাসা পরিচালনা শুরু করেন। তবে তাঁরা আশপাশের কারও সঙ্গে তেমন মিশতেন না।’
পুলিশ ভবনের ভেতর থেকে কেমিক্যাল, ককটেল, ভেস্ট ও বোমা তৈরির সরঞ্জাম উদ্ধার করেছে। এ ছাড়া বিভিন্ন ইলেকট্রনিক ডিভাইস, কম্পিউটার ও মোটরসাইকেল উদ্ধার করা হয়েছে। পুলিশের ধারণা, কোনো বিস্ফোরক তৈরি করতে গিয়ে বিস্ফোরিত হয়েছে।
ঘটনার বিষয়ে গতকাল বিকেলে জেলার পুলিশ সুপার (এসপি) মো. মিজানুর রহমান বলেন, এ ঘটনায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বিস্ফোরণের ঘটনায় সংশ্লিষ্ট শেখ আল আমিন পলাতক রয়েছেন। তবে কেরানীগঞ্জ থেকে তাঁর স্ত্রী আছিয়া বেগম, আছিয়ার ভাই হারুনের স্ত্রী ইয়াছমিন আক্তার এবং ঢাকার বাসাবো থেকে আসমানী খাতুন নামের এক নারীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
পুলিশ জানিয়েছে, আল আমিনের গ্রামের বাড়ি বাগেরহাটে। তাঁর বিরুদ্ধে এর আগে ২০১৭ ও ২০২০ সালে নিষিদ্ধঘোষিত সংগঠন জেএমবির সঙ্গে সংশ্লিষ্টতার অভিযোগে গ্রেপ্তার হয়েছিলেন। তাঁর বিরুদ্ধে ঢাকা এবং আশপাশের বিভিন্ন থানায় অন্তত সাতটি মামলা রয়েছে। গ্রেপ্তার আসমানী খাতুনের বিরুদ্ধেও বিভিন্ন থানায় একাধিক মামলা থাকার তথ্য পাওয়া গেছে।

ঢাকার দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের হাসনাবাদ এলাকায় গত শুক্রবার সকালে একটি মাদ্রাসায় ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। এতে নারী, শিশুসহ চারজন আহত হয়েছে। মাদ্রাসাটি শেখ আল আমিন নামের এক ব্যক্তি পরিচালনা করতেন। যিনি এর আগে নিষিদ্ধ উগ্রবাদী সংগঠনের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে দুবার গ্রেপ্তার হয়েছিলেন। দেশের বিভিন্ন থানায় তাঁর বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবিরোধী আইনে সাতটি মামলা রয়েছে। পুলিশ বলছে, ভবনটি বিস্ফোরক তৈরিতে ব্যবহৃত হতো।
আজ শনিবার দুপুরে সরেজমিন দেখা গেছে, হাসনাবাদ বাজারের ফলপট্টি গলিতে উম্মাল কুরা ইন্টারন্যাশনাল মাদ্রাসা। মাদ্রাসায় শিশুদের পাঠদান করা হয়। বিস্ফোরণে চার কক্ষের একতলা ভবনটির পশ্চিম পাশের দুটি কক্ষ সম্পূর্ণ ধসে পড়েছে, সিঁড়ির পাশের ছাদের একাংশ উড়ে গেছে এবং সব কটি কক্ষের পিলার ও দেয়ালে ফাটল ধরেছে। ঘটনাস্থলে ককটেল, রাসায়নিক দ্রব্য ও বোমা তৈরির বিভিন্ন সরঞ্জাম ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রয়েছে। পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) ফরেনসিক বিভাগের ক্রাইম সিন ইউনিটের কর্মীরা আলামত সংগ্রহ করছেন। তাঁরা পুরো এলাকা ঘিরে রেখেছেন। ভবনের পাশের একটি ভবনের দোতলার দেয়ালে বিস্ফোরণে ক্ষতের সৃষ্টি হয়েছে। এ ছাড়া বিস্ফোরণে পাশের একটি অটোরিকশার গ্যারেজের টিনের ছাউনি উড়ে গেছে। টিনের নিচে চাপা পড়েছিলেন গ্যারেজের ম্যানেজার আবুল কালাম।
আবুল কালাম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘এত বিকট শব্দ হয়েছে যে আমার কানে তব্দা লেগে যায়। আমি টিনের নিচে চাপা পড়ি। পরে হামাগুড়ি দিয়ে বের হই। এরপর দেখি মাদ্রাসার মধ্যে আগুন জ্বলছে। যারা ভেতরে ছিল, তারা দ্রুত বাচ্চাদের নিয়ে বের হয়ে চলে যায়।’
গ্যারেজের মালিক মোশাররফ হোসেন ঘটনাস্থলে দাঁড়িয়ে বলেন, ‘বিস্ফোরণের পর পুরো এলাকা কেঁপে ওঠে। আমিও বাসা থেকে দৌড়ে আসি। আমার গ্যারেজের দুজন অটোচালক দুই শিশুকে ওই ভবন থেকে বের করেন। এক নারী আর এক শিশুকে নিয়ে চলে যায়। এ সময় আল আমিনও দ্রুত ঘটনাস্থল থেকে চলে যায়। আধা ঘণ্টার মধ্যে ফায়ার সার্ভিস ও পুলিশের লোকজন এসে পুরো এলাকার নিয়ন্ত্রণ নেয়।’
মাদ্রাসার পাশের ৫ তলা বাড়ির বাসিন্দা মনোয়ার বলেন, ‘হঠাৎ বিকট শব্দ শুনতে পাই। মনে হয়েছিল ভূমিকম্প। কারণ, বিস্ফোরণে সব ভবনে কাঁপুনি লাগে। সবাই চিৎকার করেছিল।’
ওই বাসিন্দা আরও বলেন, ‘মাদ্রাসাটিতে ৩০-৩৫ শিক্ষার্থী পড়াশোনা করত। তবে শুক্রবার ছুটির দিন হওয়ায় মাদ্রাসা বন্ধ ছিল। এ কারণে বড় ধরনের প্রাণহানির ঘটনা ঘটেনি।’
ভবনটির পশ্চিম পাশের এক পাশে তিনটি কক্ষে মাদ্রাসার কার্যক্রম পরিচালিত হতো। অপর পাশের একটি কক্ষে পরিচালক শেখ আল আমিন (৩২), তাঁর স্ত্রী আছিয়া বেগম (২৮) এবং তাঁদের তিন সন্তান নিয়ে সেখানেই থাকতেন। বিস্ফোরণে দুই ছেলে উমায়েত (১০) ও আবদুল্লাহ (৭) আহত হয়। এর মধ্যে আছিয়া ও তাঁর দুই সন্তানকে প্রথমে স্থানীয় হাসপাতালে নেওয়া হয়। কর্তব্যরত চিকিৎসক উন্নত চিকিৎসার জন্য তাদের ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠান।
পাশের ভবনের বাসিন্দা হুমায়ুন কবির বলেন, ‘বিস্ফোরণে আমাদের ভবনের কিছু অংশ ফেটে গেছে। ঘরের ভেতরের আসবাবও ভেঙে পড়েছে।’
ঘটনাস্থলেই পুলিশ হেফাজতে বসে ছিলেন ভবনমালিক পারভীন বেগম। ভবনের জমি তাঁর পৈতৃক সম্পত্তি। সেখানে লিবিয়ায় থাকা তাঁর দুই ছেলে এই ভবন ২০২২ সালে তৈরি করেন। এরপর হারুন অর রশীদ নামের এক ব্যক্তি এটি মাদ্রাসা করবেন বলে ১০ হাজার টাকায় ভাড়া নেন। পারভীন বেগম বলেন, ‘তিন বছর ধরে আমার বাড়ি ভাড়া নিয়ে মুফতি হারুন অর রশীদ মাদ্রাসা পরিচালনা করতেন। হারুন তাঁর শ্যালক আল আমিন ও শ্যালকের স্ত্রী আছিয়াকে মাদ্রাসা পরিচালনার দায়িত্ব দেন। তিনি মাঝেমধ্যে মাদ্রাসায় আসতেন। আমি নিয়মিত খোঁজখবর নিতাম। কিন্তু মাদ্রাসার আড়ালে কী কার্যক্রম চলছিল, তা বুঝতে পারিনি। আজ এসে দেখি, ভবনের চারপাশ উড়ে গেছে।’
পারভীন বেগমের পাশেই ছিলেন তাঁর ছোট মেয়ে সোহানা। তিনি বলেন, ‘ভাড়া নেওয়ার সময় শুধু হারুন অর রশীদ একাই এসেছিলেন। এরপর তাঁরা মাদ্রাসা পরিচালনা শুরু করেন। তবে তাঁরা আশপাশের কারও সঙ্গে তেমন মিশতেন না।’
পুলিশ ভবনের ভেতর থেকে কেমিক্যাল, ককটেল, ভেস্ট ও বোমা তৈরির সরঞ্জাম উদ্ধার করেছে। এ ছাড়া বিভিন্ন ইলেকট্রনিক ডিভাইস, কম্পিউটার ও মোটরসাইকেল উদ্ধার করা হয়েছে। পুলিশের ধারণা, কোনো বিস্ফোরক তৈরি করতে গিয়ে বিস্ফোরিত হয়েছে।
ঘটনার বিষয়ে গতকাল বিকেলে জেলার পুলিশ সুপার (এসপি) মো. মিজানুর রহমান বলেন, এ ঘটনায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বিস্ফোরণের ঘটনায় সংশ্লিষ্ট শেখ আল আমিন পলাতক রয়েছেন। তবে কেরানীগঞ্জ থেকে তাঁর স্ত্রী আছিয়া বেগম, আছিয়ার ভাই হারুনের স্ত্রী ইয়াছমিন আক্তার এবং ঢাকার বাসাবো থেকে আসমানী খাতুন নামের এক নারীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
পুলিশ জানিয়েছে, আল আমিনের গ্রামের বাড়ি বাগেরহাটে। তাঁর বিরুদ্ধে এর আগে ২০১৭ ও ২০২০ সালে নিষিদ্ধঘোষিত সংগঠন জেএমবির সঙ্গে সংশ্লিষ্টতার অভিযোগে গ্রেপ্তার হয়েছিলেন। তাঁর বিরুদ্ধে ঢাকা এবং আশপাশের বিভিন্ন থানায় অন্তত সাতটি মামলা রয়েছে। গ্রেপ্তার আসমানী খাতুনের বিরুদ্ধেও বিভিন্ন থানায় একাধিক মামলা থাকার তথ্য পাওয়া গেছে।

বিয়ের প্রলোভনে ধর্ষণের বিষয়টি ব্যাখ্যায় যাওয়ার আগে আমাদের শুরুতেই দেখতে হবে বাংলাদেশের আইনে ধর্ষণের সংজ্ঞায় কী। কেননা এখানে ‘ধর্ষণ’কে প্রধান অপরাধ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।
১১ নভেম্বর ২০২৩
অপারেশন ডেভিল হান্ট ফেজ-২-এর বিশেষ অভিযানে এখন পর্যন্ত গ্রেপ্তার করা হয়েছে ৮ হাজার ৫৯৭ জনকে। গত ১৩ ডিসেম্বর থেকে শুরু হওয়া এই বিশেষ অভিযানে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় ৮৫টি আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে।
৬ দিন আগে
অপারেশন ডেভিল হান্ট ফেজ-২-এর বিশেষ অভিযানে গত রোববার বিকেল থেকে সোমবার বিকেল পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় সারা দেশে ৬৯৮ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এ সময় ১৪টি আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে। গতকাল রোববার রাতে পুলিশ সদর দপ্তর থেকে এ তথ্য জানানো হয়।
৮ দিন আগে
জুলাই–আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে আলোচিত মুখ ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক ওসমান হাদিকে গুলি করার ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগে মাধ্যমে বহুল আলোচিত নাম ফয়সাল করিম মাসুদ কিংবা দাউদ খান। গতকাল শুক্রবার হাদি গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর থেকেই এই দুই নামে এক ব্যক্তির ছবি ফেসবুকে ভেসে বেড়াচ্ছে।
১৭ দিন আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

অপারেশন ডেভিল হান্ট ফেজ-২-এর বিশেষ অভিযানে এখন পর্যন্ত গ্রেপ্তার করা হয়েছে ৮ হাজার ৫৯৭ জনকে। গত ১৩ ডিসেম্বর থেকে শুরু হওয়া এই বিশেষ অভিযানে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় ৮৫টি আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে।
আজ বুধবার সন্ধ্যায় পুলিশ সদর দপ্তর থেকে এ তথ্য জানানো হয়।
পুলিশ সদর দপ্তর জানায়, অপারেশন ডেভিল হান্ট ফেজ-২-এ সারা দেশে ৮ হাজার ৫৯৭ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এ সময় ৮৫টি আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে। এ ছাড়া পুলিশি কার্যক্রমের অংশ হিসেবে ২ লাখ ৫৮ হাজার ১৬৮টি মোটরসাইকেল ও ২ লাখ ৬৪ হাজার ৪১১টি গাড়ি তল্লাশি করা হয়। তল্লাশিকালে ৩ হাজার ৩৯৪টি অবৈধ মোটরসাইকেল আটক করা হয়।
অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ ও ‘ফ্যাসিস্টদের’ দমনে ১৩ ডিসেম্বর সন্ধ্যা থেকে দেশজুড়ে ‘অপারেশন ডেভিল হান্ট ফেজ-২’ নামে বিশেষ অভিযান শুরু করে যৌথ বাহিনী।

অপারেশন ডেভিল হান্ট ফেজ-২-এর বিশেষ অভিযানে এখন পর্যন্ত গ্রেপ্তার করা হয়েছে ৮ হাজার ৫৯৭ জনকে। গত ১৩ ডিসেম্বর থেকে শুরু হওয়া এই বিশেষ অভিযানে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় ৮৫টি আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে।
আজ বুধবার সন্ধ্যায় পুলিশ সদর দপ্তর থেকে এ তথ্য জানানো হয়।
পুলিশ সদর দপ্তর জানায়, অপারেশন ডেভিল হান্ট ফেজ-২-এ সারা দেশে ৮ হাজার ৫৯৭ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এ সময় ৮৫টি আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে। এ ছাড়া পুলিশি কার্যক্রমের অংশ হিসেবে ২ লাখ ৫৮ হাজার ১৬৮টি মোটরসাইকেল ও ২ লাখ ৬৪ হাজার ৪১১টি গাড়ি তল্লাশি করা হয়। তল্লাশিকালে ৩ হাজার ৩৯৪টি অবৈধ মোটরসাইকেল আটক করা হয়।
অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ ও ‘ফ্যাসিস্টদের’ দমনে ১৩ ডিসেম্বর সন্ধ্যা থেকে দেশজুড়ে ‘অপারেশন ডেভিল হান্ট ফেজ-২’ নামে বিশেষ অভিযান শুরু করে যৌথ বাহিনী।

বিয়ের প্রলোভনে ধর্ষণের বিষয়টি ব্যাখ্যায় যাওয়ার আগে আমাদের শুরুতেই দেখতে হবে বাংলাদেশের আইনে ধর্ষণের সংজ্ঞায় কী। কেননা এখানে ‘ধর্ষণ’কে প্রধান অপরাধ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।
১১ নভেম্বর ২০২৩
ঢাকার দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের হাসনাবাদ এলাকায় গত শুক্রবার সকালে একটি মাদ্রাসায় ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। এতে নারী, শিশুসহ চারজন আহত হয়েছে। মাদ্রাসাটি শেখ আল আমিন নামের এক ব্যক্তি পরিচালনা করতেন। যিনি এর আগে নিষিদ্ধ উগ্রবাদী সংগঠনের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে দুবার গ্রেপ্তার হয়েছিলেন। দেশের বিভিন্ন থানায়
৩ দিন আগে
অপারেশন ডেভিল হান্ট ফেজ-২-এর বিশেষ অভিযানে গত রোববার বিকেল থেকে সোমবার বিকেল পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় সারা দেশে ৬৯৮ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এ সময় ১৪টি আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে। গতকাল রোববার রাতে পুলিশ সদর দপ্তর থেকে এ তথ্য জানানো হয়।
৮ দিন আগে
জুলাই–আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে আলোচিত মুখ ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক ওসমান হাদিকে গুলি করার ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগে মাধ্যমে বহুল আলোচিত নাম ফয়সাল করিম মাসুদ কিংবা দাউদ খান। গতকাল শুক্রবার হাদি গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর থেকেই এই দুই নামে এক ব্যক্তির ছবি ফেসবুকে ভেসে বেড়াচ্ছে।
১৭ দিন আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

অপারেশন ডেভিল হান্ট ফেজ-২-এর বিশেষ অভিযানে গত রোববার বিকেল থেকে সোমবার বিকেল পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় সারা দেশে ৬৯৮ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এ সময় ১৪টি আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে। গতকাল রোববার রাতে পুলিশ সদর দপ্তর থেকে এ তথ্য জানানো হয়।
পুলিশ সদর দপ্তর জানায়, ২৪ ঘণ্টায় সারা দেশে ৬৯৮ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এ সময় ১৪টি আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে। এ ছাড়া পুলিশি কার্যক্রমের অংশ হিসেবে ২৮ হাজার ৭৬৬টি মোটরসাইকেল ও ৪৩ হাজার ৩৫২টি গাড়ি তল্লাশি করা হয়। তল্লাশিকালে ২৯১টি অবৈধ মোটরসাইকেল আটক করা হয়।
অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ ও ‘ফ্যাসিস্টদের’ দমনে ১৩ ডিসেম্বর সন্ধ্যা থেকে দেশজুড়ে ‘অপারেশন ডেভিল হান্ট ফেজ-২’ নামে বিশেষ অভিযান শুরু করে যৌথ বাহিনী।

অপারেশন ডেভিল হান্ট ফেজ-২-এর বিশেষ অভিযানে গত রোববার বিকেল থেকে সোমবার বিকেল পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় সারা দেশে ৬৯৮ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এ সময় ১৪টি আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে। গতকাল রোববার রাতে পুলিশ সদর দপ্তর থেকে এ তথ্য জানানো হয়।
পুলিশ সদর দপ্তর জানায়, ২৪ ঘণ্টায় সারা দেশে ৬৯৮ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এ সময় ১৪টি আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে। এ ছাড়া পুলিশি কার্যক্রমের অংশ হিসেবে ২৮ হাজার ৭৬৬টি মোটরসাইকেল ও ৪৩ হাজার ৩৫২টি গাড়ি তল্লাশি করা হয়। তল্লাশিকালে ২৯১টি অবৈধ মোটরসাইকেল আটক করা হয়।
অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ ও ‘ফ্যাসিস্টদের’ দমনে ১৩ ডিসেম্বর সন্ধ্যা থেকে দেশজুড়ে ‘অপারেশন ডেভিল হান্ট ফেজ-২’ নামে বিশেষ অভিযান শুরু করে যৌথ বাহিনী।

বিয়ের প্রলোভনে ধর্ষণের বিষয়টি ব্যাখ্যায় যাওয়ার আগে আমাদের শুরুতেই দেখতে হবে বাংলাদেশের আইনে ধর্ষণের সংজ্ঞায় কী। কেননা এখানে ‘ধর্ষণ’কে প্রধান অপরাধ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।
১১ নভেম্বর ২০২৩
ঢাকার দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের হাসনাবাদ এলাকায় গত শুক্রবার সকালে একটি মাদ্রাসায় ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। এতে নারী, শিশুসহ চারজন আহত হয়েছে। মাদ্রাসাটি শেখ আল আমিন নামের এক ব্যক্তি পরিচালনা করতেন। যিনি এর আগে নিষিদ্ধ উগ্রবাদী সংগঠনের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে দুবার গ্রেপ্তার হয়েছিলেন। দেশের বিভিন্ন থানায়
৩ দিন আগে
অপারেশন ডেভিল হান্ট ফেজ-২-এর বিশেষ অভিযানে এখন পর্যন্ত গ্রেপ্তার করা হয়েছে ৮ হাজার ৫৯৭ জনকে। গত ১৩ ডিসেম্বর থেকে শুরু হওয়া এই বিশেষ অভিযানে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় ৮৫টি আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে।
৬ দিন আগে
জুলাই–আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে আলোচিত মুখ ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক ওসমান হাদিকে গুলি করার ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগে মাধ্যমে বহুল আলোচিত নাম ফয়সাল করিম মাসুদ কিংবা দাউদ খান। গতকাল শুক্রবার হাদি গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর থেকেই এই দুই নামে এক ব্যক্তির ছবি ফেসবুকে ভেসে বেড়াচ্ছে।
১৭ দিন আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

জুলাই–আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে আলোচিত মুখ ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক ওসমান হাদিকে গুলি করার ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগে মাধ্যমে বহুল আলোচিত নাম ফয়সাল করিম মাসুদ কিংবা দাউদ খান। গতকাল শুক্রবার হাদি গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর থেকেই এই দুই নামে এক ব্যক্তির ছবি ফেসবুকে ভেসে বেড়াচ্ছে।
হাদিকে গুলির ঘটনায় মাস্ক পরা দুই তরুণ জড়িত বলে তাঁর সহযোদ্ধাদের সন্দেহ। তাঁদের দাবি, কয়েকদিন ধরে দুই তরুণ মাস্ক পরে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সম্ভাব্য স্বতন্ত্র প্রার্থী হাদির সঙ্গে গণসংযোগে অংশ নিচ্ছেন। বার বার তাঁদের মাস্ক খুলতে বলা হলেও তাঁরা রাজি হননি। হাদিঘনিষ্ঠদের সন্দেহ, এই তরুণরা হাদিকে হত্যার উদ্দেশ্যে তাঁর গতিবিধি বোঝার জন্য তাঁর সঙ্গে যুক্ত হন।
দুজনের মধ্যে মাস্ক পরা একজন হাদির পাশে বসে আছে— এমন একটি ছবি ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে। সোশ্যাল মিডিয়ায় অনেকেই তাকে ‘ফয়সাল করিম মাসুদ ওরফে দাউদ খান’ হিসেবে দেখিয়েছেন। তবে মাস্ক করা এই তরুণই যে হাদিকে গুলি করেছেন, কিংবা এই তরুণই যে ফয়সাল, তা নিশ্চিত করে বলছে না আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) পক্ষ থেকে ‘সন্দেহভাজন’ হিসেবে শনাক্ত একজনের ছবি প্রকাশ করে ধরিয়ে দেওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে।
ডিএমপির বিবৃতিতে বলা হয়, ‘শুক্রবার (১২ ডিসেম্বর) রাজধানীর বিজয়নগর বক্স কালভার্ট এলাকায় মোটরসাইকেল আরোহী দুর্বৃত্তদের হামলায় ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ওসমান হাদি গুরুতর আহত হন। ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ হামলাকারীদের গ্রেফতারে রাজধানীতে জোর অভিযান পরিচালনা করছে। ঘটনাস্থলের সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ করে ছবির ব্যক্তিকে প্রাথমিকভাবে সনাক্ত করা গেছে। ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ তাকে হন্য হয়ে খুঁজছে। উক্ত ব্যক্তি সম্পর্কে কোন তথ্য থাকলে বা তার সন্ধান পেলে দ্রুত নিম্নলিখিত মোবাইল নম্বর অথবা ৯৯৯ এর মাধ্যমে পুলিশকে জানানোর জন্য বিনীত অনুরোধ করা হলো।’
পুলিশের বিবৃতিতে এই তরুণের নাম উল্লেখ করা না হলেও ছবি দেখে ‘ফয়সাল করিম মাসুদ ওরফে দাউদ খান’ বলে আন্দাজ করা যায়। এই তরুণকেও আগে হাদীর সঙ্গে দেখা গেছে। তবে গত কয়েকদিন ধরে হাদির সঙ্গে গণসংযোগে থাকা মাস্ক পরা তরুণটিই ‘ফয়সাল করিম মাসুদ ওরফে দাউদ খান’ এমন কোনো তথ্য পুলিশের কাছ থেকে পাওয়া যায়নি।
অনুসন্ধানে দেখা যায়, গত ৯ ডিসেম্বর বাংলামোটর এলাকায় হাদির ইনকিলাব কালচারাল সেন্টারে গিয়ে হাদির পাশে বসে আলোচনা শুনেছিলেন ফয়সাল করিম। সেই আলোচনার ছবিও ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে।
ফয়সাল করিম নামের তরুণ কার্যক্রমনিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের নিষিদ্ধঘোষিত সহযোগী সংগঠন ছাত্রলীগের সঙ্গে জড়িত ছিলেন। ২০১৯ সালের ১১ মে ঘোষিত কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে তিনি সদস্য হন। তাঁর পুরো নাম ফয়সাল করিম দাউদ খান।
নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পরদিন গতকাল শুক্রবার দুপুরে রাজধানীর পুরানা পল্টনের বক্স কালভার্ট রোডে গুলিবিদ্ধ হন ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক ও ঢাকা–৮ সংসদীয় আসনের সম্ভাব্য প্রার্থী ওসমান হাদি। হাদিকে বহনকারী রিকশাকে অনুসরণ করে পেছন দিকে থেকে মোটরসাইকেলে এসে তাঁকে গুলি করে চলে যায় আততায়ীরা। হাদি রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তাঁর অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা।
ইনকিলাব কালচারাল সেন্টার নামে ওসমান হাদির প্রতিষ্ঠানসহ বিভিন্ন জায়গায় তাঁর সঙ্গে ফয়সাল করিমের কিছু ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক ও বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে। সেই ছবিগুলোতে থাকা ফয়সাল করিমের সঙ্গে মাস্ক পরা ব্যক্তির চেহারার কিছুটা সাদৃশ্য আছে। সেকারণে গুলি ছোড়ার ঘটনায় তাঁকে সন্দেহ করা হচ্ছে।
এর মধ্যেই দুপুরে ডিএমপি সন্দেহভাজনকে শনাক্তের কথা জানায় এবং ওসমান হাদিকে গুলি করা ব্যক্তিকে ধরিয়ে দিতে পারলে ৫০ লাখ টাকা পুরস্কারের ঘোষণা দেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।

পেশাদারদের যোগাযোগমাধ্যম লিংকডইনে ফয়সাল করিমের নামে প্রোফাইল আছে। সেখানে তিনি নিজেকে অ্যাপল সফট আইটি, ওয়াইসিইউ টেকনোলজি ও এনলিস্ট ওয়ার্ক নামে তিন প্রতিষ্ঠানের মালিক হিসেবে উল্লেখ করেছেন।
লিংকডইন প্রোফাইলের তথ্য অনুযায়ী, ফয়সাল করিম ২০১৩ সালে ঢাকার একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কম্পিউটারবিজ্ঞানে স্নাতক সম্পন্ন করেছেন। পরে আরেকটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তিনি এমবিএ করেছেন বলে সেখানে উল্লেখ রয়েছে।
২০২৪ সালে জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের সময় আন্দোলনকারীদের দমনে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনগুলোর নেতা–কর্মীদের সঙ্গে মাঠে ছিলেন বলে ছাত্রলীগের সূত্র জানিয়েছে।
ওসমান হাদিকে গুলির ঘটনায় নাম আসার পর ফয়সাল করিমের সঙ্গে আওয়ামী লীগ আমলে বাংলাদেশের দুইবারের রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ এবং ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের কিছু নেতার ছবি ফেসবুকে প্রকাশিত হয়েছে। এ ছাড়া সাম্প্রতিক সময়ে হাদির সঙ্গে ঢাকা–৮ আসনে গণসংযোগ এবং বাংলামোটরে হাদির প্রতিষ্ঠিত ইনকিলাব কালচারাল সেন্টারের আড্ডায় ফয়সালের অংশ নেওয়ার ছবিও ভাইরাল হয়েছে। অনেকে ধারণা করছেন, ফয়সাল করিম ওসমান হাদিকে বেশ কিছুদিন ধরে অনুসরণ করছিলেন।
২০১৬ সালে বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেসের (বেসিস) সহযোগিতা ও সরকারের তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি বিভাগের পৃষ্ঠপোষকতায় বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে নিয়ে ‘ব্যাটল অব ৭১’ নামে একটি কম্পিউটার গেম তৈরি করেছিল ফয়সাল করিমের মালিকানাধীন ওয়াইসিইউ টেকনোলজি লিমিটেড। সে বছরের নভেম্বরে ওই গেমের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বেসিসের তৎকালীন সভাপতি এবং পরে ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বারও উপস্থিত ছিলেন।
২০১৮ সালে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ‘আসনভিত্তিক নির্বাচন পরিচালনা ও সমন্বয়ক কমিটি’ করেছিল কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ। ঢাকা–১২ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী ছিলেন সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান। এই আসনের সমন্বয়ক কমিটির সদস্য ছিলেন ফয়সাল করিম।
জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের পর গত বছরের ২৮ অক্টোবর ঢাকার আদাবরের বাইতুল আমান হাউজিং সোসাইটি এলাকায় ব্রিটিশ কলাম্বিয়া স্কুলের চতুর্থ তলায় অফিসে অস্ত্রের মুখে ১৭ লাখ টাকা লুটের ঘটনা ঘটে। ওই ঘটনায় আদাবর থানার মামলার প্রধান আসামি ছিলেন ফয়সাল করিম।
মামলা হওয়ার কিছুদিন পর ৭ নভেম্বর আদাবর এলাকা থেকে ফয়সাল করিমকে গ্রেপ্তার করে র্যাব। তাঁর কাছ থেকে দুটি বিদেশি পিস্তল, দুটি ম্যাগাজিন ও পাঁচটি গুলিও উদ্ধার করা হয়। ওই মামলায় গত ১৬ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্ট থেকে জামিন পান ফয়সাল করিম। জামিনের সময়সীমা বাড়াতে গত ১২ আগস্ট আবারও আবেদন করলে হাইকোর্ট নতুন করে তাঁর এক বছরের জামিন মঞ্জুর করেন।
জামিনে থাকা অবস্থায় এবার তাঁর বিরুদ্ধে ওসমান হাদিকে গুলি করার অভিযোগ এল। এত অল্প সময়ের মধ্যে তিনি কীভাবে জামিন পেলেন, তা নিয়ে প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। কারণ, কোনো অপরাধমূলক কাজের প্রমাণ না থাকলেও অভ্যুত্থানের পর শুধু মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতা নিয়ে আলোচনা সভা করায় গ্রেপ্তার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও সাংবাদিকের জামিন বারবার নাকচ করা হয়েছিল। আর এ রকম লুটের ঘটনায় দুটি অস্ত্রসহ গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তিকে এতো দ্রুত জামিন দেওয়া হলো কীভাবে, সেই প্রশ্ন নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এখন আলোচনা–সমালোচনায় সরব।

জুলাই–আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে আলোচিত মুখ ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক ওসমান হাদিকে গুলি করার ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগে মাধ্যমে বহুল আলোচিত নাম ফয়সাল করিম মাসুদ কিংবা দাউদ খান। গতকাল শুক্রবার হাদি গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর থেকেই এই দুই নামে এক ব্যক্তির ছবি ফেসবুকে ভেসে বেড়াচ্ছে।
হাদিকে গুলির ঘটনায় মাস্ক পরা দুই তরুণ জড়িত বলে তাঁর সহযোদ্ধাদের সন্দেহ। তাঁদের দাবি, কয়েকদিন ধরে দুই তরুণ মাস্ক পরে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সম্ভাব্য স্বতন্ত্র প্রার্থী হাদির সঙ্গে গণসংযোগে অংশ নিচ্ছেন। বার বার তাঁদের মাস্ক খুলতে বলা হলেও তাঁরা রাজি হননি। হাদিঘনিষ্ঠদের সন্দেহ, এই তরুণরা হাদিকে হত্যার উদ্দেশ্যে তাঁর গতিবিধি বোঝার জন্য তাঁর সঙ্গে যুক্ত হন।
দুজনের মধ্যে মাস্ক পরা একজন হাদির পাশে বসে আছে— এমন একটি ছবি ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে। সোশ্যাল মিডিয়ায় অনেকেই তাকে ‘ফয়সাল করিম মাসুদ ওরফে দাউদ খান’ হিসেবে দেখিয়েছেন। তবে মাস্ক করা এই তরুণই যে হাদিকে গুলি করেছেন, কিংবা এই তরুণই যে ফয়সাল, তা নিশ্চিত করে বলছে না আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) পক্ষ থেকে ‘সন্দেহভাজন’ হিসেবে শনাক্ত একজনের ছবি প্রকাশ করে ধরিয়ে দেওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে।
ডিএমপির বিবৃতিতে বলা হয়, ‘শুক্রবার (১২ ডিসেম্বর) রাজধানীর বিজয়নগর বক্স কালভার্ট এলাকায় মোটরসাইকেল আরোহী দুর্বৃত্তদের হামলায় ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ওসমান হাদি গুরুতর আহত হন। ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ হামলাকারীদের গ্রেফতারে রাজধানীতে জোর অভিযান পরিচালনা করছে। ঘটনাস্থলের সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ করে ছবির ব্যক্তিকে প্রাথমিকভাবে সনাক্ত করা গেছে। ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ তাকে হন্য হয়ে খুঁজছে। উক্ত ব্যক্তি সম্পর্কে কোন তথ্য থাকলে বা তার সন্ধান পেলে দ্রুত নিম্নলিখিত মোবাইল নম্বর অথবা ৯৯৯ এর মাধ্যমে পুলিশকে জানানোর জন্য বিনীত অনুরোধ করা হলো।’
পুলিশের বিবৃতিতে এই তরুণের নাম উল্লেখ করা না হলেও ছবি দেখে ‘ফয়সাল করিম মাসুদ ওরফে দাউদ খান’ বলে আন্দাজ করা যায়। এই তরুণকেও আগে হাদীর সঙ্গে দেখা গেছে। তবে গত কয়েকদিন ধরে হাদির সঙ্গে গণসংযোগে থাকা মাস্ক পরা তরুণটিই ‘ফয়সাল করিম মাসুদ ওরফে দাউদ খান’ এমন কোনো তথ্য পুলিশের কাছ থেকে পাওয়া যায়নি।
অনুসন্ধানে দেখা যায়, গত ৯ ডিসেম্বর বাংলামোটর এলাকায় হাদির ইনকিলাব কালচারাল সেন্টারে গিয়ে হাদির পাশে বসে আলোচনা শুনেছিলেন ফয়সাল করিম। সেই আলোচনার ছবিও ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে।
ফয়সাল করিম নামের তরুণ কার্যক্রমনিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের নিষিদ্ধঘোষিত সহযোগী সংগঠন ছাত্রলীগের সঙ্গে জড়িত ছিলেন। ২০১৯ সালের ১১ মে ঘোষিত কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে তিনি সদস্য হন। তাঁর পুরো নাম ফয়সাল করিম দাউদ খান।
নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পরদিন গতকাল শুক্রবার দুপুরে রাজধানীর পুরানা পল্টনের বক্স কালভার্ট রোডে গুলিবিদ্ধ হন ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক ও ঢাকা–৮ সংসদীয় আসনের সম্ভাব্য প্রার্থী ওসমান হাদি। হাদিকে বহনকারী রিকশাকে অনুসরণ করে পেছন দিকে থেকে মোটরসাইকেলে এসে তাঁকে গুলি করে চলে যায় আততায়ীরা। হাদি রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তাঁর অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা।
ইনকিলাব কালচারাল সেন্টার নামে ওসমান হাদির প্রতিষ্ঠানসহ বিভিন্ন জায়গায় তাঁর সঙ্গে ফয়সাল করিমের কিছু ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক ও বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে। সেই ছবিগুলোতে থাকা ফয়সাল করিমের সঙ্গে মাস্ক পরা ব্যক্তির চেহারার কিছুটা সাদৃশ্য আছে। সেকারণে গুলি ছোড়ার ঘটনায় তাঁকে সন্দেহ করা হচ্ছে।
এর মধ্যেই দুপুরে ডিএমপি সন্দেহভাজনকে শনাক্তের কথা জানায় এবং ওসমান হাদিকে গুলি করা ব্যক্তিকে ধরিয়ে দিতে পারলে ৫০ লাখ টাকা পুরস্কারের ঘোষণা দেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।

পেশাদারদের যোগাযোগমাধ্যম লিংকডইনে ফয়সাল করিমের নামে প্রোফাইল আছে। সেখানে তিনি নিজেকে অ্যাপল সফট আইটি, ওয়াইসিইউ টেকনোলজি ও এনলিস্ট ওয়ার্ক নামে তিন প্রতিষ্ঠানের মালিক হিসেবে উল্লেখ করেছেন।
লিংকডইন প্রোফাইলের তথ্য অনুযায়ী, ফয়সাল করিম ২০১৩ সালে ঢাকার একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কম্পিউটারবিজ্ঞানে স্নাতক সম্পন্ন করেছেন। পরে আরেকটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তিনি এমবিএ করেছেন বলে সেখানে উল্লেখ রয়েছে।
২০২৪ সালে জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের সময় আন্দোলনকারীদের দমনে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনগুলোর নেতা–কর্মীদের সঙ্গে মাঠে ছিলেন বলে ছাত্রলীগের সূত্র জানিয়েছে।
ওসমান হাদিকে গুলির ঘটনায় নাম আসার পর ফয়সাল করিমের সঙ্গে আওয়ামী লীগ আমলে বাংলাদেশের দুইবারের রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ এবং ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের কিছু নেতার ছবি ফেসবুকে প্রকাশিত হয়েছে। এ ছাড়া সাম্প্রতিক সময়ে হাদির সঙ্গে ঢাকা–৮ আসনে গণসংযোগ এবং বাংলামোটরে হাদির প্রতিষ্ঠিত ইনকিলাব কালচারাল সেন্টারের আড্ডায় ফয়সালের অংশ নেওয়ার ছবিও ভাইরাল হয়েছে। অনেকে ধারণা করছেন, ফয়সাল করিম ওসমান হাদিকে বেশ কিছুদিন ধরে অনুসরণ করছিলেন।
২০১৬ সালে বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেসের (বেসিস) সহযোগিতা ও সরকারের তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি বিভাগের পৃষ্ঠপোষকতায় বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে নিয়ে ‘ব্যাটল অব ৭১’ নামে একটি কম্পিউটার গেম তৈরি করেছিল ফয়সাল করিমের মালিকানাধীন ওয়াইসিইউ টেকনোলজি লিমিটেড। সে বছরের নভেম্বরে ওই গেমের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বেসিসের তৎকালীন সভাপতি এবং পরে ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বারও উপস্থিত ছিলেন।
২০১৮ সালে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ‘আসনভিত্তিক নির্বাচন পরিচালনা ও সমন্বয়ক কমিটি’ করেছিল কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ। ঢাকা–১২ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী ছিলেন সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান। এই আসনের সমন্বয়ক কমিটির সদস্য ছিলেন ফয়সাল করিম।
জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের পর গত বছরের ২৮ অক্টোবর ঢাকার আদাবরের বাইতুল আমান হাউজিং সোসাইটি এলাকায় ব্রিটিশ কলাম্বিয়া স্কুলের চতুর্থ তলায় অফিসে অস্ত্রের মুখে ১৭ লাখ টাকা লুটের ঘটনা ঘটে। ওই ঘটনায় আদাবর থানার মামলার প্রধান আসামি ছিলেন ফয়সাল করিম।
মামলা হওয়ার কিছুদিন পর ৭ নভেম্বর আদাবর এলাকা থেকে ফয়সাল করিমকে গ্রেপ্তার করে র্যাব। তাঁর কাছ থেকে দুটি বিদেশি পিস্তল, দুটি ম্যাগাজিন ও পাঁচটি গুলিও উদ্ধার করা হয়। ওই মামলায় গত ১৬ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্ট থেকে জামিন পান ফয়সাল করিম। জামিনের সময়সীমা বাড়াতে গত ১২ আগস্ট আবারও আবেদন করলে হাইকোর্ট নতুন করে তাঁর এক বছরের জামিন মঞ্জুর করেন।
জামিনে থাকা অবস্থায় এবার তাঁর বিরুদ্ধে ওসমান হাদিকে গুলি করার অভিযোগ এল। এত অল্প সময়ের মধ্যে তিনি কীভাবে জামিন পেলেন, তা নিয়ে প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। কারণ, কোনো অপরাধমূলক কাজের প্রমাণ না থাকলেও অভ্যুত্থানের পর শুধু মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতা নিয়ে আলোচনা সভা করায় গ্রেপ্তার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও সাংবাদিকের জামিন বারবার নাকচ করা হয়েছিল। আর এ রকম লুটের ঘটনায় দুটি অস্ত্রসহ গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তিকে এতো দ্রুত জামিন দেওয়া হলো কীভাবে, সেই প্রশ্ন নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এখন আলোচনা–সমালোচনায় সরব।

বিয়ের প্রলোভনে ধর্ষণের বিষয়টি ব্যাখ্যায় যাওয়ার আগে আমাদের শুরুতেই দেখতে হবে বাংলাদেশের আইনে ধর্ষণের সংজ্ঞায় কী। কেননা এখানে ‘ধর্ষণ’কে প্রধান অপরাধ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।
১১ নভেম্বর ২০২৩
ঢাকার দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের হাসনাবাদ এলাকায় গত শুক্রবার সকালে একটি মাদ্রাসায় ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। এতে নারী, শিশুসহ চারজন আহত হয়েছে। মাদ্রাসাটি শেখ আল আমিন নামের এক ব্যক্তি পরিচালনা করতেন। যিনি এর আগে নিষিদ্ধ উগ্রবাদী সংগঠনের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে দুবার গ্রেপ্তার হয়েছিলেন। দেশের বিভিন্ন থানায়
৩ দিন আগে
অপারেশন ডেভিল হান্ট ফেজ-২-এর বিশেষ অভিযানে এখন পর্যন্ত গ্রেপ্তার করা হয়েছে ৮ হাজার ৫৯৭ জনকে। গত ১৩ ডিসেম্বর থেকে শুরু হওয়া এই বিশেষ অভিযানে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় ৮৫টি আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে।
৬ দিন আগে
অপারেশন ডেভিল হান্ট ফেজ-২-এর বিশেষ অভিযানে গত রোববার বিকেল থেকে সোমবার বিকেল পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় সারা দেশে ৬৯৮ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এ সময় ১৪টি আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে। গতকাল রোববার রাতে পুলিশ সদর দপ্তর থেকে এ তথ্য জানানো হয়।
৮ দিন আগে