Ajker Patrika
সাক্ষাৎকার

গ্রাহকেরা শতভাগ নিরাপদ

গ্রাহকেরা শতভাগ নিরাপদ

আজকের পত্রিকা: প্রথম কবে, কোথা থেকে এজেন্ট ব্যাংকিং শুরু হয়েছিল। ব্যাংক থাকার পরও কেন তৃতীয় পক্ষ দিয়ে সেবা চালু হলো?
জাফর আলম: ২০১৫ সালের ২৫ অক্টোবর বাংলাদেশ ব্যাংকের তৎকালীন গভর্নর ড. আতিউর রহমান আমাদের এজেন্ট ব্যাংকিংয়ের লাইসেন্স এবং ৫০টি এজেন্ট আউটলেট খোলার অনুমতি দেন। বর্তমানে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ৩৭১টি আউটলেট রয়েছে এবং ভবিষ্যতে সারা দেশে ব্যাংকিং সুবিধাবঞ্চিত সব মানুষের কাছে আমরা এজেন্ট ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে ব্যাংকিং সেবা পৌঁছে দেওয়ার লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছি। এজেন্ট ব্যাংকিংয়ের ধারণাটি এসেছে মূলত তৃণমূল পর্যায়ে ব্যাংকিং সেবা পৌঁছে দেওয়ার লক্ষ্য থেকে। ব্যাংকগুলোর পক্ষে দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে শাখা ও উপশাখা খুলে সেবা দেওয়া সম্ভব হয় না। সে ক্ষেত্রে এজেন্ট ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে প্রত্যন্ত অঞ্চলেও সেবা দেওয়া যায়। আর তাই এ ধারণাটি দ্রুত জনপ্রিয়তা পেয়েছে।

আজকের পত্রিকা: এজেন্ট ব্যাংকিংয়ের শুরুর চ্যালেঞ্জ কেমন ছিল। এজেন্ট হতে হলে কী ধরনের যোগ্যতার প্রয়োজন হয়?
জাফর আলম: এজেন্ট ব্যাংকিংয়ের শুরুর দিকে বেশ কিছু চ্যালেঞ্জ ছিল। তবে এই চ্যালেঞ্জ অতি অল্প সময়ে কাটিয়ে উঠে আমরা এগিয়ে চলেছি। বাংলাদেশ ব্যাংকের গাইডলাইন অনুসারে দেশের যেকোনো প্রাপ্তবয়স্ক নাগরিক এজেন্ট হওয়ার যোগ্যতা রাখেন। তবে সরকারি চাকরিজীবী বা ব্যাংকে কর্মরত, আদালত দ্বারা অভিযুক্ত, মানি লন্ডারিং অথবা টেররিস্ট ফাইন্যান্সের সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তি, ঋণখেলাপি, কোনো মামলায় বিচারাধীন ব্যক্তি, দুর্নীতি দমন কমিশনের তদন্তাধীন ব্যক্তি এজেন্ট হতে পারবেন না।

আজকের পত্রিকা: এজেন্ট ব্যাংকিং সেবা ব্যাংকের পরিচালন ব্যয় কমাতে সহায়তা করছে কি? করলে সেটা কীভাবে?
জাফর আলম: এজেন্ট ব্যাংকিং ব্যাংকের পরিচালন ব্যয় কমাতে অনেক সহায়ক। যেমন শাখা-উপশাখার মতো এজেন্ট পয়েন্ট থেকে কম খরচে উল্লেখযোগ্য পরিমাণ আমানত সংগ্রহ করা যায়, আলাদাভাবে মার্কেটিং টিম প্রয়োজন হয় না। এজেন্ট নিজের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে ব্যাংকিং কার্যক্রম পরিচালনার ব্যবস্থা করেন বিধায় স্থাপনা নির্মাণ অথবা ভবন ভাড়ার খরচ হয় না। এজেন্ট তাঁর কর্মকর্তাদের বেতন দিয়ে থাকেন। এ ছাড়া বিদ্যুৎ বিল, ইন্টারনেট বিলসহ যাবতীয় খরচ এজেন্ট নিজেই বহন করে থাকেন, যে খরচগুলো ব্যাংকের বহন করতে হতো।

ভবিষ্যতে আমাদের এজেন্টের মাধ্যমে সারা দেশে এসএমই বিনিয়োগ কার্যক্রম বাড়ানোর পরিকল্পনা আছে। পাশাপাশি ছাদকৃষি, কৃষি, ক্ষুদ্র, মাঝারি শিল্পসহ সব পেশাজীবীর জন্য আলাদা বিনিয়োগ স্কিমের পরিকল্পনা আছে।

আজকের পত্রিকা: ভবিষ্যতে এজেন্টরা আর কী কী সেবায় যুক্ত হতে পারেন?
জাফর আলম: ভবিষ্যতে শাখা-উপশাখার মতো সব সেবা এবং ভ্যালু অ্যাডেড সার্ভিস এজেন্ট আউটলেটে যুক্ত করার পরিকল্পনা আছে আমাদের। যেমন পাসপোর্ট ফি, ডিপিডিসি, ডেসকো, পিডিবি, ওয়াসা, তিতাস গ্যাস ও বিআরটিএর বিল, সব ধরনের এসএমই বিনিয়োগ, কৃষি বিনিয়োগ, ইজিপি পেমেন্ট ইত্যাদি।

আজকের পত্রিকা: এজেন্ট ব্যাংকিংয়ে গ্রাহকদের নিরাপত্তা কতটুকু?
জাফর আলম: যেহেতু গ্রাহকেরা আঙুলের ছাপ দিয়ে লেনদেন করেন, তাই এজেন্ট ব্যাংকিংয়ে তাঁরা শতভাগ নিরাপদ। গ্রাহক হিসাব খোলার সঙ্গে সঙ্গে ব্যাংকের সার্ভারে তাঁর আমানতসহ সব তথ্য সংরক্ষিত থাকে। শাখা-উপশাখার গ্রাহকের মতো এজেন্ট আউটলেটের গ্রাহকও আমাদের কাছে সমান গুরুত্বপূর্ণ। তাঁদের আমানতও ইনস্যুরেন্স কাভারেজ পায়। তা ছাড়া এজেন্ট আউটলেটের প্রতিটি লেনদেন গ্রাহক তৎক্ষণাৎ এসএমএস এবং ব্যাংক মুদ্রিত রসিদের মাধ্যমে নিশ্চিত হতে পারেন। এ ছাড়া প্রত্যেক এজেন্ট আমাদের শাখা এবং প্রধান কার্যালয়ের কঠোর নজরদারিতে থাকেন।

 আজকের পত্রিকা: এখন পর্যন্ত দেশের কতটি উপজেলায় আপনাদের কী পরিমাণ এজেন্ট রয়েছে? দৈনিক কেমন লেনদেন হচ্ছে?
জাফর আলম: শুরু থেকেই আমরা দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে এজেন্ট ব্যাংকিংয়ের প্রসারে কাজ করে যাচ্ছি, যাতে দেশের একজন মানুষও ব্যাংকিং সেবার বাইরে না থাকে। এখন পর্যন্ত দেশের ১৭৯টি উপজেলায় আমাদের এজেন্ট ব্যাংকিং আউটলেট ছড়িয়ে আছে; যার মাধ্যমে প্রতিদিন প্রায় ৪ কোটি টাকার বেশি লেনদেন হয়। পর্যায়ক্রমে দেশের প্রতিটি জেলা, উপজেলা, থানা ও ইউনিয়নে এজেন্ট আউটলেট স্থাপন করার পরিকল্পনা রয়েছে। 

আজকের পত্রিকা: এজেন্টদের মাধ্যমে এসএমই ঋণ কার্যক্রম বাড়ানোর পরিকল্পনা আছে কি?
জাফর আলম: আমরা ইতিমধ্যে অনেক আউটলেটের মাধ্যমে ক্ষুদ্রঋণ বিতরণ করেছি এবং সংশ্লিষ্ট শাখা ও এজেন্টের প্রত্যক্ষ মনিটরিংয়ে আদায় চলছে। ভবিষ্যতে আমাদের এজেন্টের মাধ্যমে সারা দেশে এসএমই বিনিয়োগ কার্যক্রম বাড়ানোর পরিকল্পনা আছে। পাশাপাশি ছাদকৃষি, কৃষি, ক্ষুদ্র, মাঝারি শিল্পসহ সব পেশাজীবীর জন্য আলাদা বিনিয়োগ স্কিমের পরিকল্পনা আছে। আমরা ইতিমধ্যে বেশ কিছু স্কিম চালু করেছি, যার মাধ্যমে সঞ্চয়ের পাশাপাশি বিনিয়োগ গ্রহণের সুযোগ আছে।

আজকের পত্রিকা: নয় বছরে ব্যাংকের গ্রাহকদের একটি বড় অংশ এজেন্ট ব্যাংকিংয়ে যুক্ত হয়েছেন। বড় সফলতার জন্য আর কী কী পদক্ষেপ নেওয়া দরকার মনে করেন?
জাফর আলম: দেশের গ্রামীণ জনগোষ্ঠীকে আর্থিক কর্মকাণ্ডে সম্পৃক্ত করতে নিরলসভাবে কাজ করছেন এজেন্টরা। এজেন্টদের ব্যবসা টেকসই করার জন্য বাংলাদেশ ব্যাংক এবং এজেন্ট ব্যাংকিং পরিচালনাকারী ব্যাংকগুলোর এজেন্টদের ওপর মনোযোগ দিতে হবে। বিনিয়োগসহ শাখা-উপশাখার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে এজেন্ট আউটলেট থেকে সব ধরনের সেবা চালু করতে হবে। যার মাধ্যমে এজেন্টরা লাভজনকভাবে এই ব্যবসা করতে পারেন। যেহেতু তাঁরা প্রান্তিক পর্যায়ের উদ্যোক্তা, তাই তাঁদের জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকের ইইএফ ফান্ড বা যেকোনো তহবিল থেকে বিনিয়োগ বা প্রণোদনা প্রদান, সরকারি উদ্যোগে সহজ শর্তে বিনিয়োগের ব্যবস্থা করা যেতে পারে। বড় সফলতার জন্য এজেন্টদের ব্যাংকের মূলধারার সঙ্গে যুক্ত করা যেতে পারে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

তেল-পেঁয়াজে দাম বাড়তি, সবজিতে ফিরছে স্বস্তি

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ০৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৯: ৪০
টাটকা সবজি কিনছেন একজন। গতকাল রাজধানীর হাতিরপুল কাঁচাবাজারে।
টাটকা সবজি কিনছেন একজন। গতকাল রাজধানীর হাতিরপুল কাঁচাবাজারে।

বাজারে একলাফে লিটারে ৯ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে সয়াবিন তেলের দাম। আর দেশি পুরোনো পেঁয়াজের দাম বেড়েছে প্রতি কেজিতে ১০ টাকা। তবে এসব পণ্যের সরবরাহে তেমন কোনো সমস্যা নেই বাজারে। পুরোনো পেঁয়াজের সঙ্গে নতুন পেঁয়াজও পাওয়া যাচ্ছে।

ভোজ্যতেল ও পেঁয়াজ ছাড়া বাজারে সবজি, ডিম, মুরগি, আটা, চিনিসহ প্রায় অধিকাংশ পণ্যের দাম কমেছে। বিশেষ করে সবজির বাজারে গত সপ্তাহের তুলনায় অনেকটাই স্বস্তি ফিরেছে।

গতকাল বৃহস্পতিবার রাজধানীর শান্তিনগর, মালিবাগ, রামপুরাসহ বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা যায়, প্রতি কেজি দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ১২০-১৪০ টাকা, এক সপ্তাহ আগে মানভেদে দাম ছিল ১১০-১২০ টাকা কেজি। নতুন পেঁয়াজের দাম অবশ্য তুলনামূলক কম। খুচরায় পাতাসহ নতুন পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৭০-৮০ টাকা কেজি।

জানতে চাইলে রামপুরা বাজারের সবজি বিক্রেতা শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘এবার পেঁয়াজ আমদানি না করেই বাজারের চাহিদা মিটে গেছে। এখন আগের মৌসুমের পেঁয়াজের মজুত একেবারেই শেষের দিকে। এই সময় পুরোনো পেঁয়াজের দাম কিছুটা বেশিই থাকে। তবে এটা বেশি দিন থাকবে না। বাজারে পেঁয়াজের ঘাটতি নেই। চাহিদা অনুসার পেঁয়াজ রয়েছে।’

বেড়েছে ভোজ্যতেলের দামও। প্রতি লিটার বোতলজাত সয়াবিন তেল বিক্রি হচ্ছে ১৯৮ টাকা, যা গত সপ্তাহে ছিল ১৮৯ টাকা। খোলা সয়াবিন তেল বিক্রি হচ্ছে ১৭৫-১৭৯ টাকা লিটার, যা গত সপ্তাহে ছিল ১৭১-১৭৪ টাকা লিটার।

বিক্রেতারা বলছেন, কোম্পানিগুলো গত এক সপ্তাহে ধীরে ধীরে বাজারে বাড়তি দামে তেল সরবরাহ করেছে। এখনো অনেক দোকানে আগের দামের তেল পাওয়া যায়। তবে বাজারের অধিকাংশ দোকানেই বাড়তি দামের তেল রয়েছে।

গত সপ্তাহ পর্যন্ত খুচরায় কাঁচা মরিচ বিক্রি হতো ১২০-১৫০ টাকা কেজি, তবে চলতি সপ্তাহে দাম কমে ৭০-১০০ টাকা কেজিতে নেমেছে। এ ছাড়া শীতের সবজি হলেও শিমের দাম হঠাৎ বেড়ে ১৫০ টাকার ওপরে উঠেছিল।

সেই শিম এখন বিক্রি হচ্ছে ৬০-৮০ টাকা কেজি। ফুলকপি, বাঁধাকপির দাম কমেছে প্রতিটিতে ১০ টাকা। দুই ধরনের কপিই পাওয়া যাচ্ছে ৩০ টাকায়। তবে ভালো মানের ফুলকপি ৫০ টাকা। গত সপ্তাহে একটি কপি কিনতে ৪০-৬০ টাকা লেগেছিল।

দাম কমেছে টমেটোরও। মান ও বাজারভেদে প্রতি কেজি টমেটো বিক্রি হচ্ছে ৮০-১০০ টাকা, যা গত সপ্তাহে ছিল ১২০-১৪০ টাকা।

দেশি গাজরের সরবরাহ ব্যাপক বেড়েছে বাজারে, এতে দামও কমেছে। প্রতি কেজি গাজর বিক্রি হচ্ছে ৬০-৮০ টাকা, যা গত সপ্তাহে ছিল ৮০-১০০ টাকা। তবে আমদানির গাজর আগের মতোই ১২০-১৩০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। গত সপ্তাহে বেগুন বিক্রি হয়েছিল ৮০-১০০ টাকা কেজি, যা চলতি সপ্তাহে কমে ৭০-৮০ টাকায় নেমেছে। বাজারে আলুর দাম আগের মতোই প্রতি কেজি ২৫ টাকা রয়েছে।

আমিষের সবচেয়ে বড় উৎস ডিমের দাম আরও কমেছে। ফার্মের মুরগির সাদা ও বাদামি ডিমের দাম কমে ১১০ থেকে ১২৫ টাকা ডজনে নেমেছে। গত সপ্তাহে ছিল ১২০-১৩০ টাকা।

ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি) তথ্য বলছে, গত বছর এই সময় ফার্মের মুরগির ডিম বিক্রি হয়েছিল ১৪০-১৫০ টাকা ডজন। টিসিবি বলছে, গত বছরের তুলনায় ডিমের দাম ৩৫ শতাংশ কমেছে।

ডিমের সঙ্গে কমেছে ফার্মের মুরগির দামও। প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগির দাম কমে ১৫০-১৭০ টাকা কেজি, যা গত সপ্তাহে ছিল ১৬০-১৮০ টাকা কেজি।

সেগুনবাগিচা বাজারের ডিম বিক্রেতা নূর ই আলম বলেন, ‘ডিম ও মুরগির বাজার স্বাভাবিক আচরণ করছে না। হঠাৎ দামের এত পতন হচ্ছে কেন, তা বোঝা যাচ্ছে না। বর্তমানে ডিমের যে দাম, তা গত কয়েক বছরের তুলনায় সবচেয়ে কম।’

ডিম-মুরগির সঙ্গে কিছুটা কমেছে রুই-কাতলা মাছের দামও। বাজারে চাষের এই মাছগুলো বিক্রি হচ্ছে ৩০০-৪০০ টাকা কেজি, যা গত সপ্তাহে ছিল ৩২০-৪৫০ টাকা কেজি।

মুদিপণ্যের মধ্যে চিনির দাম আগে থেকেই কমেছে। খোলা চিনি বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ৯০-১০০ টাকা কেজি। চলতি সপ্তাহে নতুন করে কমেছে আটা, মসুর ডাল, ছোলার দাম। খোলা আটার দাম ২-৩ টাকা কমে ৪৫-৪৮ টাকা বিক্রি হচ্ছে, যা আগে ছিল ৪৮-৫০ টাকা কেজি। কেজিপ্রতি বড় দানার মসুর ডাল বিক্রি হচ্ছে ৯০-১০০ টাকা কেজি, যা গত সপ্তাহে ছিল ৯৫-১০৫ টাকা। ছোলার দামও কেজিপ্রতি ৫ টাকা কমে ৯৫-১১০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

সেগুনবাগিচা কাঁচাবাজারের মামা-ভাগনে মুদিদোকানের বিক্রেতা হারুনুর রশিদ বলেন, রমজান উপলক্ষে পণ্যের আমদানি ব্যাপক বেড়েছে। তাই প্রায় সব ধরনের পণ্যের দাম কমছে। তবে ভোজ্যতেল ও পেঁয়াজের বিষয়টি কিছুটা ভিন্ন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

উত্তরা ব্যাংকের ২৫০তম শাখার উদ্বোধন

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

উত্তরা ব্যাংক পিএলসির একটি নতুন শাখার উদ্বোধন করা হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার কুমিল্লা জেলার লাকসাম থানার ব্যাংক রোড, দৌলতগঞ্জ বাজারে ব্যাংকের ২৫০তম লাকসাম শাখার উদ্বোধন করেন ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী মো. আবুল হাশেম।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ব্যাংকের অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাকসুদুল হাসান।

এ ছাড়া অনুষ্ঠানে মহাব্যবস্থাপক (জনসংযোগ) মো. রবিউল হাসান এবং উপমহাব্যবস্থাপক ও আঞ্চলিক প্রধান (কুমিল্লা অঞ্চল) মো. জাহাঙ্গীর আলমসহ স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

টানা চার মাস কমল রপ্তানি আয়

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

রেমিট্যান্সে প্রবাহ বাড়লেও পণ্য রপ্তানিতে ধাক্কার ধারা থামছে না। রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সর্বশেষ প্রতিবেদনে দেখা গেছে, চলতি ২০২৫-২৬ অর্থবছরের নভেম্বরে দেশের রপ্তানি আয় হয়েছে ৩৮৯ কোটি ১৫ লাখ ডলার। গত বছরের একই মাসে এই আয় ছিল ৪১১ কোটি ৯৬ লাখ ডলার। অর্থাৎ মাসওয়ারি হিসাবে এক বছরের ব্যবধানে রপ্তানি আয় কমেছে ৫ দশমিক ৫৪ শতাংশ, টাকার অঙ্কে এই হ্রাসকৃত রপ্তানির পরিমাণ দাঁড়ায় ২২ কোটি ৮১ লাখ ডলার।

এবারই প্রথম নয়, আগস্ট থেকে শুরু হওয়া নিম্নমুখী ধারা নভেম্বরে এসে চতুর্থ মাসে পা দিল। জুলাইয়ের শক্তিশালী সূচনার পর রপ্তানি খাত যে ধারাবাহিক গতি অর্জন করেছিল, সেই গতি আগস্টেই থমকে যায়। ওই মাসে আগের বছরের তুলনায় প্রবৃদ্ধি কমে ২ দশমিক ৯৩ শতাংশে নেমে আসে। সেপ্টেম্বরেও পতন গভীর হয়—৪ দশমিক ৬১ শতাংশ। অক্টোবরে সেই হার আরও বেড়ে দাঁড়ায় ৭ দশমিক ৪৩ শতাংশে।

জুলাইয়ের ব্যতিক্রমী সাফল্যের পর পরবর্তী চার মাস যেন একটানা ঢালু পথ। সেই জুলাইয়ে রপ্তানি আয় ছিল ৪৭৭ কোটি ৫ লাখ ডলার, প্রবৃদ্ধি প্রায় ২৪ দশমিক ৯০ শতাংশ। কিন্তু এরপর প্রতি মাসেই কমতে কমতে নভেম্বরে এসে রপ্তানি আয়ের ব্যবধান স্পষ্ট হয়ে উঠেছে।

সার্বিক চিত্রটি বলছে, অর্থবছরের শুরুতে পাওয়া জোয়ারটি এখন চার মাসের টানা ভাটার মুখে দাঁড়িয়ে।

আজ বৃহস্পতিবার প্রকাশিত ইপিবির তথ্য পর্যালোচনায় আরও দেখা গেছে, চলতি অর্থবছরের জুলাই-নভেম্বর মিলিয়ে পাঁচ মাসে মোট রপ্তানি আয় দাঁড়িয়েছে ২০০২ কোটি ৮৫ লাখ ডলার; যা আগের ২০২৪-২৫ অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় প্রবৃদ্ধি ঘটেছে মাত্র দশমিক ৬২ শতাংশ। অর্থাৎ পাঁচ মাসের সার্বিক রপ্তানি আয়ের চিত্রও নামমাত্র।

নভেম্বরের সবচেয়ে বড় আঘাত লেগেছে পোশাক খাতে, যেটি দেশের রপ্তানির প্রধান ভরসা। ওই মাসে পোশাক রপ্তানি থেকে এসেছে ৩১৪ কোটি ৯ লাখ ডলার, যা গত বছরের তুলনায় ৫ শতাংশ কম। এ সময় নিটওয়্যার খাতে আয় নেমেছে ১৬১ কোটি ৮৪ লাখ ডলারে, আর ওভেনে এসেছে ১৫২ কোটি ২৪ লাখ ডলার। গত বছরের একই সময়ে নিটওয়্যার আয় ছিল ১৭৩ কোটি ৮২ লাখ ডলার এবং ওভেন ১৫৬ কোটি ৯২ লাখ ডলার।

পোশাকের বাইরে কৃষিপণ্যে রপ্তানি কমেছে ২৪ দশমিক ৬৮ শতাংশ, প্লাস্টিক পণ্যে কমেছে ১৫ দশমিক ৪৯ শতাংশ। এ ছাড়া রপ্তানি পতনের তালিকায় রয়েছে চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য, পাট ও পাটজাত সামগ্রী, হোম টেক্সটাইলস, ফার্মাসিউটিক্যালস, জাহাজ, চিংড়ি ও লাইট ইঞ্জিনিয়ারিং। এর মানে হচ্ছে, প্রচলিত এসব খাতেও মন্থরতা স্পষ্ট।

তবে সব বাজারে একই চিত্র নয়। কিছু গন্তব্যে বিপরীত প্রবণতা দেখা গেছে, যা সামগ্রিক মন্দার মধ্যেও আশার সঞ্চার করেছে। যুক্তরাষ্ট্রে রপ্তানি বেড়েছে ৪ দশমিক ২০ শতাংশ, যুক্তরাজ্যে ৩ দশমিক শূন্য ৪ শতাংশ। উদীয়মান বাজারগুলোর মধ্যেও ইতিবাচক প্রবণতা স্পষ্ট—চীনে রপ্তানি বেড়েছে ২৩ দশমিক ৮৩ শতাংশ, পোল্যান্ডে ১১ দশমিক ৫৭ শতাংশ, সৌদি আরবে ১১ দশমিক ৩৪ শতাংশ এবং স্পেনে ১০ দশমিক ৪৬ শতাংশ। এ প্রবণতা সাম্প্রতিক বছরগুলোয় যেন অনেকটাই ব্যতিক্রমী সাফল্য।

সব মিলিয়ে চিত্রটি দ্বিমুখী। একদিকে ঐতিহ্যগত প্রধান খাতগুলোতে পতন; অন্যদিকে কিছু নতুন বাজারে ইতিবাচক ইঙ্গিত। তবে বড় প্রশ্ন রয়ে যায়, এই বাজার বৃদ্ধি কি পোশাকসহ প্রধান খাতের ধারাবাহিক মন্দাকে সামাল দিতে পারবে?

বর্তমান বাস্তবতা বলছে, বৈচিত্র্য বাড়ানোর পথে অনেক দূর যেতে হবে। উৎপাদন প্রতিযোগিতা, মূল্যের চাপ, বৈদেশিক অর্ডার সংকোচন এবং বিশ্ববাজারের অনিশ্চয়তা, সব মিলিয়ে রপ্তানি খাতে সামনের পথ সহজ নয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

৯ কোটি টাকার রাজস্ব ফাঁকি দিল সিগারেট কোম্পানি

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ০৪ ডিসেম্বর ২০২৫, ২১: ৪৮
৯ কোটি টাকার রাজস্ব ফাঁকি দিল  সিগারেট কোম্পানি

পাবনার ইশ্বরদীভিত্তিক সিগারেট কোম্পানি ইউনাইটেড টোব্যাকো ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের প্রায় ৯ কোটি টাকার রাজস্ব ফাঁকি উদঘাটন করেছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। ভ্যাট গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা অভিযানে গিয়ে এই ফাঁকি ধরেছেন বলে আজ বৃহস্পতিবার এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে এনবিআর।

এনবিআর জানায়, তামাক ও তামাকজাত পণ্যের অবৈধ উৎপাদন, বাজারজাতকরণ এবং রাজস্ব ফাঁকি প্রতিরোধে সম্প্রতি কার্যক্রম আরও জোরদার করেছে এনবিআর। এরই ধারাবাহিকতায় গোপন সূত্রের ভিত্তিতে এনবিআরের ভ্যাট গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তরের একটি দল ঈশ্বরদীতে অবস্থিত ইউনাইটেড টোব্যাকো ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের কারখানায় বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে।

গোয়েন্দা দলের পর্যবেক্ষণে দেখা যায়, প্রতিষ্ঠানটি ভ্যাট নিবন্ধন গ্রহণ করলেও দীর্ঘদিন ধরে আনুষ্ঠানিক উৎপাদন কার্যক্রম প্রদর্শন না করে গোপনে সিগারেট উৎপাদন ও বাজারজাতকরণের মাধ্যমে বিপুল পরিমাণ রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে আসছে। অভিযানে ৬ লাখ ৩৪ হাজার ৫৯০ শলাকা জাল ব্যান্ডরোলযুক্ত সিগারেট জব্দ করা হয়, যার বাজারমূল্য ৩৮ লাখ টাকারও বেশি। এসব সিগারেটের বিপরীতে সরকারের প্রাপ্য প্রায় ২৯ লাখ টাকা রাজস্ব ফাঁকি দেওয়ার সুনির্দিষ্ট প্রমাণ পাওয়া যায়।

এ ছাড়া ১০ লাখ ২৯ হাজারটি অব্যবহৃত জাল ব্যান্ডরোল বা স্ট্যাম্প উদ্ধার করা হয়, যা ব্যবহার করা হলে অতিরিক্ত ৮ কোটি ৫০ লাখ টাকারও বেশি রাজস্ব ফাঁকি দেওয়া সম্ভব ছিল। প্রতিষ্ঠানটি ৩ লাখ ২২ হাজার ৫০০টি বৈধ ব্যান্ডরোল সংগ্রহ করলেও তা ব্যবহার না করে জাল ব্যান্ডরোল ব্যবহার করে সিগারেট উৎপাদন ও বিক্রি করছিল।

এনবিআর জানিয়েছে, সব সিগারেট ও উপকরণ আইনানুগভাবে জব্দ করা হয়েছে এবং প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনিপ্রক্রিয়া ইতিমধ্যে শুরু হয়েছে। অভিযানে উদ্ধার করা দলিলাদির ভিত্তিতে শিগগিরই পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন দাখিল করা হবে। পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট ভ্যাট কমিশনারেটকে প্রতিষ্ঠানটির উৎপাদন ও বিক্রি কার্যক্রমের ওপর কঠোর নজরদারির জন্য নির্দেশনা প্রদান করা হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত