Ajker Patrika

বিনিয়োগ নিয়ে উদ্বেগ, গরিবমুখী প্রবৃদ্ধির ওপর জোর এমসিসিআইয়ের

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ০৩ জুন ২০২৫, ১৭: ৫২
বিনিয়োগ নিয়ে উদ্বেগ, গরিবমুখী প্রবৃদ্ধির ওপর জোর এমসিসিআইয়ের

বর্তমান প্রেক্ষাপটে বাজেট বাস্তবায়ন অত্যন্ত চ্যালেঞ্জিং বলে মনে করছে মেট্রোপলিটন চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি, ঢাকা (এমসিসিআই)। বাজেটকে সঠিকভাবে বাস্তবায়ন করতে হলে বাজেট ব্যবস্থাপনায় গতিশীলতা, করনীতি সংস্কার, করব্যবস্থার অটোমেশন, কর সংগ্রহে সামগ্রিক সিস্টেম লস কমানো ও কর প্রশাসনের সক্ষমতা বাড়ানো প্রয়োজন বলে জানায় তারা। একই সঙ্গে বর্তমান বিনিয়োগ পরিস্থিতিতে এমসিসিআই চিন্তিত বলে জানায় ব্যবসায়ী সংগঠনটি। এই চিন্তা দূর করার মতো বাজেটে কোনো নির্দেশনা নেই বলে তাদের পর্যবেক্ষণ।

কার্যকরী করহার কমানোর কোনোরূপ পদক্ষেপ না থাকায় এমসিসিআই হতাশা ব্যক্ত করেছে। এমসিসিআই সব সময় বলে আসছে, প্রতিষ্ঠানের টার্নওভারের ওপর ন্যূনতম কর (মিনিমাম ট্যাক্স) করনীতির পরিপন্থী। তাই এটি বাদ দেওয়ার দাবি জানিয়েছে তারা। ২০২৫-২৬ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে গরিবমুখী ও অন্তর্ভুক্তিমূলক প্রবৃদ্ধির ওপর অধিকতর নজর দেওয়া উচিত বলেও মনে করে তারা।

আজ মঙ্গলবার এমসিসিআই বাজেটোত্তর প্রতিক্রিয়ায় এসব কথা বলে।

গতকাল সোমবার ২০২৫-২৬ অর্থবছরের ৫৪তম জাতীয় বাজেট উপস্থাপন করেন অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ। জুলাই গণ-অভ্যুত্থানপরবর্তী দায়িত্ব নেওয়ার পর এটি অর্থ উপদেষ্টার প্রথম বাজেট।

বাজেটোত্তর প্রতিক্রিয়ায় এমসিসিআই আরও বলেছে, তারা সব সময় কর প্রশাসনে অর্থবহ কাঠামোগত পরিবর্তনের পরামর্শ দিয়ে আসছে, যেন কর প্রশাসন যথাযথভাবে রাজস্ব সংগ্রহ করতে সক্ষম হয়। করহার বৃদ্ধির মাধ্যমে নিয়মিত কর প্রদানকারী ব্যক্তি বা ব্যবসায়ীদের ওপর আরও বেশি করের বোঝা চাপানোর চেষ্টা, বিষয়টি সঠিকভাবে সমাধা করার জন্য এমসিসিআই জোর দাবি জানায়। এই ব্যবস্থা সমাধানের জন্য কর জাল বৃদ্ধির পরামর্শ দিয়েছে তারা।

এমসিসিআই মনে করে, ক্রমবর্ধমান মুদ্রাস্ফীতির কারণে রপ্তানি বাজার সংকুচিত হওয়া; মন্থর বিনিয়োগব্যবস্থা, ব্যাংকঋণের উচ্চ সুদহার, বিশ্বব্যাপী চলমান যুদ্ধাবস্থা ও ২০২৬ সালে উন্নয়নশীল দেশে উন্নীতকরণের সময় বাজেট প্রস্তুতকরণ অর্থ উপদেষ্টার জন্য একটি দুঃসাহসিক কাজ ছিল।

প্রস্তাবিত ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেট ৭ লাখ ৯০ হাজার কোটি টাকা (জিডিপির ১২.৭ শতাংশ), যা চলতি অর্থবছরের মূল বাজেটের (৭ লাখ ৯৭ হাজার কোটি টাকা) চেয়ে প্রায় দশমিক ৮৮ শতাংশ কম এবং সংশোধিত বাজেটের (৭ লাখ ৪৪ হাজার কোটি টাকা) চেয়ে ৬ দশমিক ১৮ শতাংশ বেশি।

অর্থনীতিতে গতিশীলতা আনার লক্ষ্যে অন্তর্বতী সরকার আসন্ন অর্থবছরের জন্য বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে (এডিপি) ২ লাখ ৩০ হাজার কোটি টাকা অনুমোদন দিয়েছে। প্রস্তাবিত বাজেটে জিডিপি প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৬ দশমিক ৫০ শতাংশ।

প্রস্তাবিত বাজেটে রাজস্ব আহরণের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৫ লাখ ৬৪ হাজার কোটি টাকা, যা বর্তমান অর্থবছরের সংশোধিত লক্ষ্যমাত্রার (৫ লাখ ১৮ হাজার কোটি টাকা) চেয়ে ৮ দশমিক ৮৮ শতাংশ বেশি। এই ৫ লাখ ৬৪ হাজার কোটি টাকার মধ্যে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) লক্ষ্যমাত্রা ৪ লাখ ৯৯ হাজার কোটি টাকা এবং অবশিষ্ট ৬৫ হাজার কোটি টাকা লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারিত হয়েছে রাজস্ববহির্ভূত খাত থেকে।

২০২৫-২৬ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে ঘাটতি ধরা হয়েছে ২ লাখ ২৬ হাজার কোটি টাকা (যা জিডিপির ৩.৬২ শতাংশ)। মোট ঘাটতির মধ্যে ১ লাখ ১ হাজার কোটি টাকা বাইরের উৎস থেকে এবং ১ লাখ ২৫ হাজার কোটি টাকা অভ্যন্তরীণ উৎস থেকে সংস্থান করা হবে। এই ১ লাখ ২৫ হাজার কোটি টাকার মধ্যে ১ লাখ ৪ হাজার কোটি টাকা ব্যাংক খাত থেকে এবং ২১ হাজার কোটি টাকা সঞ্চয়পত্র ও অন্যান্য নন-ব্যাংক আর্থিক প্রতিষ্ঠান খাতের উৎস থেকে সংগ্রহ করা হবে।

বিনিয়োগ স্থবিরতা ও অর্থনৈতিক সংকট নিয়ে এমসিসিআইয়ের উদ্বেগ

মেট্রোপলিটন চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (এমসিসিআই) দেশের বর্তমান বিনিয়োগ পরিস্থিতি নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। তাদের মতে, ২০২৪-২৫ অর্থবছরে বিনিয়োগ ১০ বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন ২৯.৩৮ শতাংশে নেমে এসেছে, যা সরকারি ও বেসরকারি উভয় খাতেই বিনিয়োগ হ্রাসের ইঙ্গিত দিচ্ছে। এই বিনিয়োগ স্থবিরতা কর্মসংস্থান কমাচ্ছে এবং দরিদ্র মানুষের সংখ্যা বাড়িয়ে অর্থনীতির সংকটকে আরও তীব্র করছে।

আইএমএফের শর্ত ও বাজেট ঘাটতি

এমসিসিআই জানিয়েছে, আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) সুপারিশ করা করব্যবস্থার সংস্কার শর্তাবলির কারণে চূড়ান্ত বাজেট ঘাটতি বাড়তে পারে। আইএমএফ ঋণের শর্ত মেনে কর-জিডিপি অনুপাত বাড়াতে গিয়ে করদাতাদের ওপর বাড়তি করের বোঝা চাপানোর সম্ভাবনা রয়েছে। তাই এমসিসিআই সরকারের প্রকল্প অর্থায়নে ব্যয় সীমিত রাখতে যথাযথ আর্থিক ব্যবস্থাপনার পরামর্শ দিয়েছে।

ব্যাংকিং খাত থেকে সরকারের ঋণ ও মূল্যস্ফীতি

২০২৪-২৫ অর্থবছরে ব্যাংকিং ব্যবস্থা থেকে সরকারের ঋণ নেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা ১ লাখ ৪ হাজার কোটি টাকা, যা গত অর্থবছরের সংশোধিত বাজেটের (৯৯ হাজার কোটি টাকা) চেয়ে ৫.০৫ শতাংশ বেশি। এমসিসিআই সতর্ক করেছে যে, এই উচ্চ ঋণ গ্রহণের ফলে অর্থনীতিতে ’ক্রাউডিং আউট’ প্রভাব তৈরি হতে পারে, যা বেসরকারি বিনিয়োগের জন্য তহবিল সংকট সৃষ্টি করবে। এ ছাড়া কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে ঋণ নিলে মূল্যস্ফীতির চাপ আরও বাড়বে, যার বোঝা শেষ পর্যন্ত ভোক্তাদের ওপরই পড়বে। এমসিসিআই এই দুই বিষয়ের মধ্যে সমন্বয়ের ওপর জোর দিয়েছে এবং ব্যাংকিং খাতের পুনর্গঠনে বরাদ্দ বাড়ানোর সুপারিশ করেছে।

সামাজিক নিরাপত্তাবেষ্টনী ও দরিদ্রমুখী প্রবৃদ্ধি

এমসিসিআই মনে করে, ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেটে দরিদ্রমুখী ও অন্তর্ভুক্তিমূলক প্রবৃদ্ধির ওপর বেশি নজর দেওয়া উচিত। উদ্বেগজনকভাবে প্রস্তাবিত বাজেটে সামাজিক নিরাপত্তাবেষ্টনীর জন্য বরাদ্দ গত অর্থবছরের (১ লাখ ৩৬ হাজার ২৬ কোটি টাকা) তুলনায় প্রায় ১৪.১৯ শতাংশ কমিয়ে ১ লাখ ১৬ হাজার ৭৩১ কোটি টাকা করা হয়েছে। এমসিসিআই এই খাতে বরাদ্দ যৌক্তিকভাবে বাড়ানোর আহ্বান জানিয়েছে।

অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির অন্তরায়

এমসিসিআই চিহ্নিত করেছে যে, অনুন্নত যোগাযোগব্যবস্থা, অবকাঠামো, জ্বালানির অসম বণ্টন এবং আমলাতান্ত্রিক জটিলতা এখনও অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির প্রধান বাধা। দুর্বল রাজস্ব আদায় (বর্তমান অর্থবছরের জুলাই-এপ্রিল পর্যন্ত ৬২.৪১ শতাংশ) ও বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিপি) বাস্তবায়নের ধীরগতি (বর্তমান অর্থবছরের জুলাই-এপ্রিল পর্যন্ত ৪১.৩১ শতাংশ) অর্থনীতির জন্য উদ্বেগের কারণ। এ ছাড়া উচ্চ আমদানি প্রবণতা ও বৈশ্বিক অস্থিরতা বিবেচনা করে বৈদেশিক মুদ্রা ব্যয়ে সতর্ক থাকার ওপরও এমসিসিআই জোর দিয়েছে।

করনীতি ও সংস্কারের আহ্বান

  • টার্নওভার কর: লাভ-ক্ষতি নির্বিশেষে টার্নওভার কর ০.৬০% থেকে ১% এবং ক্ষেত্রবিশেষে ৩% পর্যন্ত বৃদ্ধির প্রস্তাবে এমসিসিআই হতাশা ব্যক্ত করেছে। তারা এই ’ন্যূনতম কর’ বাতিল করে শুধু লাভজনক ব্যবসার করযোগ্য আয়ের ওপর কর আরোপের দাবি জানিয়েছে।
  • আইপিও/পিও: পাবলিক কোম্পানিগুলোর ক্ষেত্রে আইপিওর মাধ্যমে ১০ শতাংশের বেশি শেয়ার হস্তান্তরে ২২.৫% আয়কর হারের বিধানের পরিবর্তে ’পিও’ (পাবলিক অফারিং) অন্তর্ভুক্ত করার পরামর্শ দিয়েছে।
  • পারকুইজিট: কর্মচারীদের ’পারকুইজিট’ বাবদ সীমা ১০ লাখ থেকে ২০ লাখ টাকায় বৃদ্ধিকে স্বাগত জানালেও এমসিসিআই মনে করে এর কোনো নির্দিষ্ট সীমা থাকা উচিত নয়।
  • উৎসে কর রিটার্ন: উৎসে করের রিটার্ন মাসিক থেকে ত্রৈমাসিক করার প্রস্তাবকে এমসিসিআই সময় ও অর্থ সাশ্রয়ী হিসেবে স্বাগত জানিয়েছে।
  • রয়্যালটি ও কারিগরি সেবা ফি: রয়্যালটি, লাইসেন্স ফি, কারিগরি সেবা ফি ইত্যাদির ক্ষেত্রে বিডার প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী শুধু টার্নওভারের ৬% ব্যয় নির্বাহের বিধান প্রবর্তনের সুপারিশ করেছে।
  • কর নেট সম্প্রসারণ: ১ কোটি ১৪ লাখ ইটিআইএনধারীর মধ্যে মাত্র ৪৫ লাখ আয়কর রিটার্ন জমা দেওয়া এবং অধিকাংশ রিটার্ন শূন্য হওয়ায় উদ্বেগ প্রকাশ করে এমসিসিআই সুষ্ঠু কর ব্যবস্থাপনা ও আধুনিক করনীতিমালার মাধ্যমে রাজস্ব আহরণের আওতা বাড়ানোর দাবি জানিয়েছে।
  • প্রান্তিক করদাতা: প্রান্তিক করদাতাদের ন্যূনতম কর ৩০০০ টাকা থেকে ৫০০০ টাকা বৃদ্ধি করায় তাঁদের ওপর করের বোঝা বাড়বে বলে এমসিসিআই মনে করে।
  • ভ্যাট আইন: ভ্যাট আইনের কাঠামোগত সংস্কারে উল্লেখযোগ্য পরামর্শ না থাকায় এমসিসিআই হতাশা প্রকাশ করেছে।
  • আগাম কর: শিল্পের কাঁচামাল আমদানিতে আগাম কর ৩% থেকে ২% কমানোর প্রস্তাবকে স্বাগত জানালেও এমসিসিআই তা শূন্য করার দাবি জানিয়েছে।
  • আগাম কর সমন্বয়: আগাম কর সমন্বয় বা উৎসে কর কর্তনের ক্ষেত্রে সময়সীমা ৪ করমেয়াদ থেকে ৬ করমেয়াদ পর্যন্ত বৃদ্ধির প্রস্তাবকে এমসিসিআই স্বাগত জানিয়েছে।
  • ই-ইনভয়েসিং ও ইএফডি: এমসিসিআই বিশ্বাস করে, ই-ইনভয়েসিং ও ইলেকট্রনিক ফিসকাল ডিভাইস (ইএফডি) পর্যাপ্ত সরবরাহ নিশ্চিত করলে ভ্যাট সংগ্রহ প্রক্রিয়া দ্রুত হবে এবং ভ্যাটের নেট বৃদ্ধি পাবে।

সবশেষে, এমসিসিআই জোর দিয়ে বলেছে যে, কর-জিডিপি অনুপাত বৃদ্ধি ও করনেট সম্প্রসারণের জন্য করব্যবস্থার ডিজিটালাইজেশন ও জনবান্ধব করনীতি অত্যন্ত জরুরি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এনসিপি-জামায়াত জোটে যুক্ত হচ্ছে আরেকটি দল, আসন বণ্টন ঘোষণা রাতেই

৮ মিনিট দেরি, মনোনয়নপত্র জমা দিতে না পেরে অঝোরে কাঁদলেন এবি পার্টির প্রার্থী প্রত্যাশী

নির্বাচন না করার ঘোষণা দিলেন আনোয়ার হোসেন মঞ্জু

নাহিদকে শুভকামনা জানিয়ে সরে গেলেন জামায়াতের আতিক

কারওয়ান বাজারে চাঁদাবাজির বিরুদ্ধে ব্যবসায়ীদের লাঠিমিছিল, পাল্টাপাল্টি ধাওয়া

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ইসলামী ব্যাংকের শরিয়াহ সুপারভাইজরি কাউন্সিলের সভা অনুষ্ঠিত

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
ইসলামী ব্যাংকের শরিয়াহ সুপারভাইজরি কাউন্সিলের সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। ছবি: বিজ্ঞপ্তি
ইসলামী ব্যাংকের শরিয়াহ সুপারভাইজরি কাউন্সিলের সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। ছবি: বিজ্ঞপ্তি

ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ পিএলসির শরিয়াহ সুপারভাইজরি কাউন্সিলের সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

গতকাল রোববার (২৮ ডিসেম্বর) ইসলামী ব্যাংক টাওয়ারে আয়োজিত এই সভায় সভাপতিত্ব করেন কাউন্সিলের চেয়ারম্যান মুফতি ছাঈদ আহমাদ।

সভায় উপস্থিত ছিলেন ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ পিএলসির ম্যানেজিং ডাইরেক্টর মো. ওমর ফারুক খাঁন এবং শরিয়াহ সুপারভাইজরি কাউন্সিলের সদস্যসচিব অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ আব্দুস সামাদ। এ ছাড়া কাউন্সিলের অন্য সদস্যবৃন্দ সভায় অংশগ্রহণ করেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এনসিপি-জামায়াত জোটে যুক্ত হচ্ছে আরেকটি দল, আসন বণ্টন ঘোষণা রাতেই

৮ মিনিট দেরি, মনোনয়নপত্র জমা দিতে না পেরে অঝোরে কাঁদলেন এবি পার্টির প্রার্থী প্রত্যাশী

নির্বাচন না করার ঘোষণা দিলেন আনোয়ার হোসেন মঞ্জু

নাহিদকে শুভকামনা জানিয়ে সরে গেলেন জামায়াতের আতিক

কারওয়ান বাজারে চাঁদাবাজির বিরুদ্ধে ব্যবসায়ীদের লাঠিমিছিল, পাল্টাপাল্টি ধাওয়া

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

যশোরের খেজুর রস: লক্ষ্য ১২০ কোটি টাকার গুড় উৎপাদন

জাহিদ হাসান, যশোর
রসের জন্য খেজুরগাছ কেটে প্রস্তুত করছেন গাছি। গতকাল যশোরের চৌগাছা উপজেলার চাকলা গ্রাম থেকে তোলা। ছবি: আজকের পত্রিকা
রসের জন্য খেজুরগাছ কেটে প্রস্তুত করছেন গাছি। গতকাল যশোরের চৌগাছা উপজেলার চাকলা গ্রাম থেকে তোলা। ছবি: আজকের পত্রিকা

শীতের রাত পেরিয়ে ভোরের আলো ফোটার আগেই যশোরের গ্রামাঞ্চলে শুরু হয় ব্যস্ততা। খেজুরগাছের নিচে হাজির হন গাছিরা। আগের বিকেলে কাটা গাছের ‘চোখ’ বেয়ে সারা রাত মাটির হাঁড়িতে জমেছে সুমিষ্ট খেজুর রস। ভোরে সেই রস নামিয়ে শুরু হয় আরেক কর্মযজ্ঞ; চুলায় জ্বাল দিয়ে গুড় তৈরির কাজ। বাড়ির নারীরাই মূলত এই প্রক্রিয়ায় নেতৃত্ব দেন। কয়েক ঘণ্টা জ্বালানোর পর তৈরি হয় সুস্বাদু খেজুর গুড় ও পাটালি।

শীত মৌসুম এলেই এমন দৃশ্য দেখা যায় খেজুর গুড়ের জেলা খ্যাত যশোরের প্রায় প্রতিটি গ্রামে। সম্প্রতি যশোরের খেজুর গুড় ভৌগোলিক নির্দেশক (জিআই) পণ্যের স্বীকৃতি পাওয়ায় এর ঐতিহ্যের পাশাপাশি অর্থনৈতিক সম্ভাবনাও নতুন করে সামনে এসেছে।

উৎপাদন ও বাজারের চিত্র

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, চলতি মৌসুমে যশোরে প্রায় ১২০ কোটি টাকার খেজুর রস ও গুড় উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এই উৎপাদন গ্রামীণ অর্থনীতির চাকা আরও গতিশীল করবে বলে আশা সংশ্লিষ্টদের।

বর্তমানে খেজুরের কাঁচা রস প্রতি মাটির হাঁড়ি ২০০ থেকে ৪০০ টাকা, দানা গুড় প্রতি কেজি ৩৫০-৪০০ টাকা এবং পাটালি প্রতি কেজি ৪৫০-৬০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। বাজারদর বাড়লেও গাছিরা বলছেন, শ্রম ও ঝুঁকির তুলনায় লাভ সীমিত।

গাছির সংকট বড় চ্যালেঞ্জ

যশোর সদর উপজেলার নওয়াপাড়া গ্রামের গাছি আজিবর প্রায় ৩৫ বছর ধরে খেজুর গাছ কাটছেন। তিনি বলেন, ‘আগে দেড় শ গাছ কাটতাম, এখন বয়সের কারণে ৩৫-৪০টার বেশি পারি না। রস ও গুড়ের দাম বেড়েছে ঠিকই, কিন্তু কাটার মতো গাছ কমে গেছে। আবার গাছ থাকলেও দক্ষ গাছির অভাব। এবার বেশি শীত পড়ায় রসও ভালো নামছে, গুড়ের উৎপাদনও বেশি।’

গাছ থেকে নামিয়ে আনা খেজুরের রস জ্বাল দিয়ে গুড় তৈরি করছেন এক নারী। গতকাল যশোরের চৌগাছা উপজেলার চাকলা গ্রাম থেকে তোলা। ছবি: আজকের পত্রিকা
গাছ থেকে নামিয়ে আনা খেজুরের রস জ্বাল দিয়ে গুড় তৈরি করছেন এক নারী। গতকাল যশোরের চৌগাছা উপজেলার চাকলা গ্রাম থেকে তোলা। ছবি: আজকের পত্রিকা

মনিরামপুর উপজেলার সরসকাটি গ্রামের গাছি অতিয়ারও প্রায় ৪০ বছর ধরে এই পেশায় যুক্ত। তিনি বলেন, এবার ৫০টা গাছ কাটছি। প্রতিদিন ৮-১০ কেজি গুড় তৈরি হয়। কাজটা খুব কষ্টের। তবে শীত মৌসুমে এই আয়েই পুরো বছরের সংসার চলে।

ই-কমার্সে বাড়ছে চাহিদা

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, যশোর জেলায় মোট খেজুরগাছের সংখ্যা ২৩ লাখ ৩০ হাজার ৬৯৫। এগুলোর মধ্যে চলতি মৌসুমে রস আহরণের উপযোগী গাছ রয়েছে ৩ লাখ ৭ হাজার ১৩০টি।

উৎপাদিত গুড় প্রথমে স্থানীয় হাটে বিক্রি হয়, পরে পাইকারদের মাধ্যমে তা দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে সরবরাহ করা হয়। যশোরের খেজুর গুড় এখন বিদেশেও রপ্তানি হচ্ছে। পাশাপাশি ই-কমার্স ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমভিত্তিক উদ্যোক্তাদের হাত ধরে গুড় ও পাটালি সরাসরি ভোক্তার ঘরে পৌঁছানো হচ্ছে। এতে বাজার যেমন সম্প্রসারিত হচ্ছে, তেমনি তৈরি হচ্ছে নতুন কর্মসংস্থান।

কৃষি বিভাগের উদ্যোগ

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মোশাররফ হোসেন বলেন, যশোরের খেজুর গুড়ের স্বাদ ও মানের কারণে চাহিদা সব সময় বেশি। এবার শীত বেশি হওয়ায় রসের পরিমাণ ও মান—দুটোই ভালো। চলতি মৌসুমে প্রায় ১২০ কোটি টাকার রস ও গুড় উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। নিরাপদ খেজুর রস এবং গুড় উৎপাদনে কৃষকদের পরামর্শ ও প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। উঠান বৈঠকের মাধ্যমে গাছিদের উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এনসিপি-জামায়াত জোটে যুক্ত হচ্ছে আরেকটি দল, আসন বণ্টন ঘোষণা রাতেই

৮ মিনিট দেরি, মনোনয়নপত্র জমা দিতে না পেরে অঝোরে কাঁদলেন এবি পার্টির প্রার্থী প্রত্যাশী

নির্বাচন না করার ঘোষণা দিলেন আনোয়ার হোসেন মঞ্জু

নাহিদকে শুভকামনা জানিয়ে সরে গেলেন জামায়াতের আতিক

কারওয়ান বাজারে চাঁদাবাজির বিরুদ্ধে ব্যবসায়ীদের লাঠিমিছিল, পাল্টাপাল্টি ধাওয়া

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ইসলামি ১০ ও সরকারি ৬ ব্যাংক: ঋণের অর্ধেকের বেশি অনাদায়ি

জয়নাল আবেদীন খান, ঢাকা 
আপডেট : ২৯ ডিসেম্বর ২০২৫, ১১: ২৭
গ্রাফিক্স: আজকের পত্রিকা
গ্রাফিক্স: আজকের পত্রিকা

দেশের ব্যাংকিং খাতের ভেতরে জমে থাকা অনিয়ম, রাজনৈতিক আশ্রয় ও কৃত্রিম হিসাবের পর্দা চলতি বছর যেন একে একে সরে যেতে শুরু করেছে। আর তাতেই সামনে এসেছে এক ভয়াবহ বাস্তবতা। সরকারি ও শরিয়াহভিত্তিক ইসলামি ব্যাংকগুলো খেলাপি ঋণের ভারে এখন কার্যত দিশেহারা। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের হালনাগাদ তথ্য অনুযায়ী, সেপ্টেম্বর প্রান্তিক শেষে সরকারি ব্যাংকগুলোর খেলাপি ঋণের হার দাঁড়িয়েছে ৪৯ দশমিক ৬৫ শতাংশে, আর ইসলামি ব্যাংকগুলোর ক্ষেত্রে তা আরও বেশি—৫৯ দশমিক শূন্য ২ শতাংশে পৌঁছেছে। অর্থাৎ, এই দুটি খাতেই বিতরণ করা ঋণের অর্ধেকের বেশি অনাদায়ি হয়ে পড়েছে। যেখানে বিশেষায়িত ব্যাংকের খেলাপির হার ৪১ দশমিক ৯৫ ও বিদেশি ব্যাংকগুলোর খেলাপির হার মাত্র ৪ দশমিক ৯২ শতাংশ।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রতিবেদন পর্যালোচনায় দেখা গেছে, শরিয়াহভিত্তিক ১০টি ইসলামি ব্যাংক মোট ৪ লাখ ৭৯ হাজার ৬০৫ কোটি টাকা ঋণ বিনিয়োগ করেছে। এর মধ্যে খেলাপি হয়েছে ২ লাখ ৮৩ হাজার ৫৫ কোটি টাকা। হিসাব বলছে, প্রতি ১০ টাকার প্রায় ৬ টাকাই এখন আদায় অনিশ্চিত। সেই তুলনায় শরিয়াহসহ দেশীয় বেসরকারি ব্যাংকগুলোর মোট খেলাপি ঋণের পরিমাণ ৪ লাখ ৬৩ হাজার ১৮৫ কোটি টাকা, যা মোট ঋণের ৩৩ দশমিক ৭৫ শতাংশ। এই তুলনাতেই স্পষ্ট, খেলাপির বোঝা এককভাবে সবচেয়ে বেশি ইসলামি ব্যাংকগুলোর ঘাড়েই।

সরকারি ছয় ব্যাংকের অবস্থাও খুব একটা ভিন্ন নয়। এসব ব্যাংকে খেলাপি ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ৫৮ হাজার ৭৯২ কোটি টাকা। মোট বিতরণ করা ঋণের প্রায় অর্ধেকই সেখানে অনাদায়ি। ব্যাংকার ও বিশ্লেষকদের মতে, এই সংকট রাতারাতি তৈরি হয়নি। বছরের পর বছর ধরে দুর্বল তদারকি, রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ এবং ইচ্ছাকৃত খেলাপিকে আড়াল করার প্রবণতা ধীরে ধীরে ব্যাংকগুলোকে এই জায়গায় এনে দাঁড় করিয়েছে।

বিশ্বব্যাংকের ঢাকা অফিসের সাবেক মুখ্য অর্থনীতিবিদ ড. জাহিদ হোসেন মনে করেন, খেলাপি ঋণের এত উচ্চ হার শুধু ব্যাংকিং খাতের ভেতরের সমস্যা নয়, এটি সামগ্রিক অর্থনীতির জন্য বড় ঝুঁকি। ব্যাংকগুলো নতুন ঋণ দিতে পারছে না, বিনিয়োগ কার্যক্রম স্থবির হয়ে পড়ছে, শিল্প-কারখানার সম্প্রসারণ থেমে যাচ্ছে। এর সরাসরি প্রভাব পড়ছে কর্মসংস্থানে। তাঁর মতে, খেলাপিদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা এবং ঋণ আদায়ে বাস্তবসম্মত উদ্যোগ ছাড়া পরিস্থিতির উন্নতি সম্ভব নয়।

ইসলামি ব্যাংকিং খাতে এস আলম, নাসা ও বেক্সিমকো গ্রুপের নাম বারবার আলোচনায় এসেছে। সংশ্লিষ্টদের ভাষ্য, দীর্ঘদিন সরকারি মদদে এসব গ্রুপ বিপুল ঋণ নিয়ে খেলাপি হলেও তা আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকৃতি পায়নি। এখন সেই বাস্তবতা দিনের আলোর মতো স্পষ্ট।

সামগ্রিকভাবে দেশের ব্যাংকিং খাতের চিত্র আরও উদ্বেগজনক। সেপ্টেম্বর পর্যন্ত মোট বিতরণ করা ঋণের পরিমাণ ১৮ লাখ ৩ হাজার ৮৪০ কোটি টাকা। এর মধ্যে খেলাপি হয়েছে প্রায় ৬ লাখ ৪৪ হাজার ৫১৫ কোটি টাকা, যা মোট ঋণের ৩৫ দশমিক ৭৩ শতাংশ। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক ড. মইনুল ইসলাম বলেন, বিগত সরকারের টানা সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে খেলাপি ঋণ কম দেখানোর যে অপচেষ্টা ছিল, তা এখন ভেঙে পড়েছে। সঠিক হিসাব সামনে আসায় হার ৩৬ শতাংশের কাছাকাছি পৌঁছেছে, যা বাস্তবতারই প্রতিফলন। তিনি আবারও শীর্ষ ১০ খেলাপির জন্য আলাদা ট্রাইব্যুনালের প্রয়োজনীয়তার কথা বলেন।

বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র আরিফ হোসেন খান জানান, আগের সরকারের আমলে লুকিয়ে রাখা খেলাপি ঋণ প্রকাশ পাওয়ায় এই হার বেড়েছে। তবে কেন্দ্রীয় ব্যাংক এখন ঋণ আদায়ে কঠোর নির্দেশনার কারণে আগের তুলনায় আদায় বেড়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এনসিপি-জামায়াত জোটে যুক্ত হচ্ছে আরেকটি দল, আসন বণ্টন ঘোষণা রাতেই

৮ মিনিট দেরি, মনোনয়নপত্র জমা দিতে না পেরে অঝোরে কাঁদলেন এবি পার্টির প্রার্থী প্রত্যাশী

নির্বাচন না করার ঘোষণা দিলেন আনোয়ার হোসেন মঞ্জু

নাহিদকে শুভকামনা জানিয়ে সরে গেলেন জামায়াতের আতিক

কারওয়ান বাজারে চাঁদাবাজির বিরুদ্ধে ব্যবসায়ীদের লাঠিমিছিল, পাল্টাপাল্টি ধাওয়া

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ছয় মাসে ৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলার কিনেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
বাংলাদেশ ব্যাংক। ফাইল ছবি
বাংলাদেশ ব্যাংক। ফাইল ছবি

ডলার এখন রেমিট্যান্স, রপ্তানি, হুন্ডি নিয়ন্ত্রণ—সবকিছুর সঙ্গে জড়িয়ে আছে। তাই বাজারে ডলার হাতছাড়া হওয়ার ভয়ে সবাই চুপ। এই ডলারের সরবরাহ ও দাম স্থিতিশীল রাখার পাশাপাশি পুরো বৈদেশিক মুদ্রার ভারসাম্য ঠিক রাখতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক নিয়মিত বিরতিতে ডলার কিনছে। সেই ধারাবাহিকতায় শুধু চলতি ২০২৫-২৬ অর্থবছরের জুলাই থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত ৩ দশমিক শূন্য ৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার কিনেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র আরিফ হোসেন খান এ প্রসঙ্গে আজকের পত্রিকাকে জানান, ডিসেম্বর মাসে কেনা ডলারের পরিমাণ সবচেয়ে বেশি, ৯২ কোটি ডলার এবং চলতি অর্থবছর ধরে মোট কেনা হয়েছে ৩ দশমিক শূন্য ৫ বিলিয়ন ডলার। জুলাইয়ে প্রথম ডলার কেনা হয়েছিল ৪৮ কোটি ৪০ লাখ ডলার, আগস্টে ৪৫ কোটি ৪০ লাখ, সেপ্টেম্বরেই তা বেড়ে ৯২ কোটি ৯০ লাখে পৌঁছায়। এরপর অক্টোবর ও নভেম্বরে অবশ্য অনেকটাই কমে ১৪ কোটি ২০ লাখ এবং ৫ কোটি ৪০ লাখে নেমে আসে। ডিসেম্বরেই তার বড় উল্লম্ফন ঘটে, কেনার পরিমাণ দাঁড়ায় ৯২ কোটি ১০ লাখ ডলারে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংক বলেছে, রেমিট্যান্স বৃদ্ধি, হুন্ডি নিয়ন্ত্রণ, ব্যাংকিং চ্যানেলের শক্তিশালীকরণ এবং অনলাইনে আন্তর্জাতিক পণ্যের বাজার মনিটরিংয়ের ফলে বাজারে ডলারের সরবরাহ বেড়েছে। এ ছাড়া ওভার ও আন্ডার ইনভয়েসিং বন্ধ হওয়ায় ব্যবসার আড়ালে ডলার পাচার কমেছে। এসব কারণে ব্যাংকগুলোতে জমে থাকা অতিরিক্ত ডলার ক্রয় করছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

আগের অর্থবছরগুলোর সঙ্গে তুলনায় এবার কেন্দ্রীয় ব্যাংক ক্রেতার ভূমিকায়, যেখানে অতীতের বছরগুলোতে বড় অঙ্কে বিক্রি হতো। ২০২১-২২ অর্থবছরে বিক্রি হয়েছিল ৭ দশমিক ৬ বিলিয়ন, ২০২২-২৩ এ ছিল ১৩ দশমিক ৫ বিলিয়ন, ২০২৩-২৪ এ ১২ দশমিক ৭৯ বিলিয়ন এবং ২০২৪-২৫ এ ১ দশমিক ১২৪ বিলিয়ন ডলার। এই পরিবর্তন বাজারে স্থিতিশীলতার ইঙ্গিত দিচ্ছে।

বর্তমান খোলাবাজারে ডলারের দর ১২৪-১২৫ টাকার মধ্যে, যেখানে গত বছরের এই সময়ে তা ছিল ১৩১ টাকা। ২০২৪-২৫ অর্থবছরে দেশে পণ্য আমদানির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৬১ বিলিয়ন ডলার, আগের বছরের তুলনায় ৭ শতাংশ কম। অনলাইনে বাজার নজরদারি এবং ওভার/আন্ডার ইনভয়েসিং নিয়ন্ত্রণে আসায় পণ্যের আড়াল থেকে ডলার পাচারও অনেক কমেছে।

মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সৈয়দ মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ডলার ক্রয় বাজারে স্থিতিশীলতা আনার জন্য সময়োপযোগী পদক্ষেপ। এর ফলে আমদানি, বিনিয়োগ ও বাজার ভারসাম্য বজায় রাখতে সহায়ক হয়েছে।’

সব মিলিয়ে রেমিট্যান্স ও রপ্তানি আয় বৃদ্ধি, হুন্ডি নিয়ন্ত্রণ, পাচার কমে আসা—সব মিলিয়ে ডলার বাজারে স্বস্তি ফিরিয়েছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংক এখন ডলার বিক্রেতা নয়; বরং ক্রেতার ভূমিকায়, যা দেশের বৈদেশিক মুদ্রার ভারসাম্য বজায় রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এনসিপি-জামায়াত জোটে যুক্ত হচ্ছে আরেকটি দল, আসন বণ্টন ঘোষণা রাতেই

৮ মিনিট দেরি, মনোনয়নপত্র জমা দিতে না পেরে অঝোরে কাঁদলেন এবি পার্টির প্রার্থী প্রত্যাশী

নির্বাচন না করার ঘোষণা দিলেন আনোয়ার হোসেন মঞ্জু

নাহিদকে শুভকামনা জানিয়ে সরে গেলেন জামায়াতের আতিক

কারওয়ান বাজারে চাঁদাবাজির বিরুদ্ধে ব্যবসায়ীদের লাঠিমিছিল, পাল্টাপাল্টি ধাওয়া

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত