ফারুক মেহেদী, ঢাকা

দেশে চায়ের উৎপাদন বাড়লেও সংকুচিত হচ্ছে রপ্তানি বাজার। বাড়ছে না স্থানীয় বাজারও। চায়ের নিলাম দরে ধস নেমেছে। নিলামে চায়ের বর্তমান দাম উৎপাদন খরচের চেয়ে কম। অথচ খুচরায় বেশি দরেই চা কিনছেন ভোক্তারা। চায়ের বাজারের এই অস্বাভাবিক পরিস্থিতির জন্য একটি অসাধু ব্যবসায়ী চক্রের কারসাজিকে দায়ী করছেন উদ্যোক্তা ও গবেষকেরা। তাঁরা বলছেন, চা শিল্প এখন খাদের কিনারে।
চা-বাগানমালিক ও বিপণনের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিরা বলছেন, চা পানের ৫০-৫৫ শতাংশ হয় হোটেল-রেস্তোরাঁ ও স্টলে। বাসাবাড়ি ও অফিসে হয় ৪৫-৫০ শতাংশ। দিনে অন্তত ১০ কোটি কাপ চা বিক্রি হয়। খুচরায় গড়ে ১০ টাকা করে বিক্রি হলেও স্থানীয় বাজার অন্তত ৩৬ হাজার ৫০০ কোটি টাকার।
উদ্যোক্তারা বলছেন, কম শুল্কে কফি আমদানির সুযোগ, অসহনীয় উৎপাদন খরচ আর পাচার হয়ে আসা নিম্নমানের চা এই শিল্পকে ঝুঁকিপূর্ণ করে তুলছে।
চা-বাগানমালিকদের সংগঠন বাংলাদেশ টি অ্যাসোসিয়েশন জানিয়েছে, গত ১০ বছরে নিলামে চায়ের দর বেড়েছে ২ দশমিক ৭১ শতাংশ।বিপরীতে উৎপাদন খরচ বেড়েছে ৭০ দশমিক ২৫ শতাংশ। অ্যাসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান কামরান টি রহমান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘নিলামের বাধ্যবাধকতার কারণে উৎপাদন খরচের নিচে আমরা চা বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছি। নিলাম মূল্য ১০ বছর আগের চেয়ে এখন কম। এ রকম চলতে থাকলে চা শিল্প টিকে থাকতে পারবে না।’ তিনি আরও বলেন, ‘এ সময়ে চাল-ডালসহ সব খাদ্যদ্রব্যের দাম কয়েক গুণ বেড়েছে, এমনকি ভোক্তাকেও কয়েক গুণ বেশি দাম দিয়ে চা খেতে হয়। একমাত্র উৎপাদকেরাই চায়ের দাম পাচ্ছে না।’
ব্রিটিশদের হাত ধরে আসা চা-বাগানের মালিকানা পরিবর্তনের সূচনা হয় যুক্তরাজ্যের জেমস ফিনলে লিমিটেডের চা-বাগান হস্তান্তরের পর। ২০০৬ সালের মার্চে ব্রিটিশ কোম্পানিটির হাতে থাকা ৩৯,১১২ একর বাগানের সব শেয়ার কিনে নেয় বাংলাদেশের ছয় ব্যবসায়ী গ্রুপ ও দুই ব্যক্তি। ছয়টি গ্রুপ হলো–ইস্পাহানি, উত্তরা গ্রুপ, পেডরোলো, ইস্ট কোস্ট, এবিসি এবং এমজিএইচ গ্রুপ। গত দুই যুগে চা-বাগান ইজারা নিয়ে যুক্ত হয়েছে আকিজ, স্কয়ার, এ কে খান, সিটি, টি কে, ওরিয়ন, কাজী অ্যান্ড কাজী (জেমকন), ইউনাইটেড, মোস্তফা ও প্যারাগন গ্রুপ। আল হারামাইন পারফিউমস গ্রুপ, পোশাক খাতের হা-মীম ও ভিয়েলাটেক্স গ্রুপও আছে এই তালিকায়। বেসরকারি সংস্থা ব্র্যাকও বিনিয়োগ করেছে চা খাতে।
উৎপাদনে রেকর্ড, তবু আমদানি
বাংলাদেশ চা বোর্ডের তথ্যমতে, ২০২৩ সালে ১০ কোটি ২৯ লাখ কেজি চা উৎপাদিত হয়েছে ১৬৮টি বাগান থেকে। অথচ ১৯৭০ সালের ৪২ হাজার ৬৮৫ হেক্টর বাগানে উৎপাদিত হতো ৩ কোটি ১৩ লাখ কেজি। ২০২৩ সালে আবাদ হয়েছে ৬২ হাজার ৭৩৪ হেক্টরে। বাগান ১৬৮টি। ২০২০ সালে ৮ কোটি ৬৩ লাখ ৯০ হাজার কেজি, ২০২১ সালে ৯ কোটি ৬৫ লাখ ১০ হাজার কেজি এবং ২০২২ সালে ৯ কোটি ৩৮ লাখ ৩০ হাজার কেজি চা উৎপাদিত হয়।
দেশে চা উদ্বৃত্ত থাকা সত্ত্বেও আমদানি হচ্ছে। চা বোর্ডের তথ্যমতে, ২০২৩ সালে ২ লাখ ৮৮ হাজার কেজি চা আমদানি হয়েছে।
চা বোর্ড সূত্রে জানা যায়, গত ২২ বছরে অন্তত ১৭ গুণ কমেছে রপ্তানি। ২০০১-০২ অর্থবছরে চা রপ্তানি হয়েছিল ১ কোটি ৩৮ লাখ ২ হাজার কেজি। ২০২২-২৩ অর্থবছরে নেমেছে ৮ লাখ ২৬ হাজার কেজিতে।
সূত্রমতে, দেশি-বিদেশি অন্তত ২২টি প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ থেকে চা রপ্তানিতে জড়িত থাকলেও তাদের অনেকেরই এখন আর রপ্তানি নেই।
দাম উৎপাদন খরচের নিচে
চা বোর্ডের তথ্যমতে, ২০২৩ সালে নিলামে প্রতি কেজি চায়ের দাম ঠিক হয়েছে ১৭৩ টাকা ৩৭ পয়সা। আগের বছর ছিল ১৯৫ টাকা ৪৩ পয়সা। ২০১৬ সালেও ছিল ২০০ টাকা। কিন্তু প্রতি কেজিতে উৎপাদন খরচ বিক্রয় দামের চেয়ে প্রায় ১০০ টাকা বেশি। ২০২৩ সালে প্রতি কেজি চায়ের উৎপাদন খরচ ছিল ২৭১ টাকা ৭৭ পয়সা। আগের বছরে ছিল ২৯৭ টাকা ৩০ পয়সা।
একাধিক বাগানমালিকের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, গত পাঁচ বছরে চায়ের উৎপাদন খরচ অনেক বেড়েছে। সম্প্রতি চা-শ্রমিকদের মজুরিও বেড়েছে। কিন্তু উৎপাদন খরচের চেয়ে কম দামে বিক্রি করতে হচ্ছে।
জানতে চাইলে হবিগঞ্জের দেউন্দি চা কোম্পানি লিমিটেডের উদ্যোক্তা ও বাংলাদেশ টি অ্যাসোসিয়েশনের নির্বাহী কমিটির সদস্য ওয়াহিদুল হক বলেন, ‘গত ১০ বছরেও চায়ের দাম বাড়েনি। উন্মুত্ত নিলামে চায়ের দাম নির্ধারিত হয়। এখানে কারও কোনো হাত নেই।
আবার ওপার থেকে চোরাই পথে আসছে নিম্নমানের চা। এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে কফি পান। কফিতে মাত্র ২২ শতাংশের মতো শুল্ক। কম শুল্কের কারণে দাম সহনীয় হওয়ায় মানুষ কফি পান করছে। অনেক জায়গায় এখন চায়ের বদলে কফি পাওয়া যায়।’
কৃষি অর্থনীতিবিদ ড. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, একটি অসাধু ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট নিলামে যোগসাজশ করে চায়ের দর কম দিচ্ছে। আবার ভোক্তাদের কাছে দাম অনেক বাড়িয়ে বিক্রি করছে। এতে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, বিদেশে বাংলাদেশ মিশন ও চা বোর্ডের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের গাফিলতিও আছে।
মান নিয়ে প্রশ্ন
চা উদ্যোক্তা ওয়াহিদুল হক বলেন, ‘ক্রেতারা বলছেন, আমাদের চায়ের মান খারাপ। সে জন্য দাম কম।’
ড. জাহাঙ্গীর আলমের মতে, চায়ের মান যদি খারাপ হয়, তবে এর জন্য চা বোর্ড ও চা গবেষণা ইনস্টিটিউটও দায়ী। বাংলাদেশ চা বোর্ডের প্রকল্প উন্নয়ন ইউনিটের পরিচালক ড. এ কে এম রফিকুল হক এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘বাংলাদেশের চায়ের মান খারাপ, এটা ঠিক। তবে মান বাড়ানোর জন্য আমরা কাজ করছি।’
বাজার অস্বাভাবিক
চা বোর্ডের তথ্য অনুযায়ী, ২০২২-২৩ মৌসুমে (এপ্রিল-মার্চ) নিলামে ১ হাজার ৮০০ কোটি টাকার চা বিক্রি হয়েছে। নিলামে যে চায়ের দাম প্রতি কেজি ১৭৩ টাকা ৩৭ পয়সা, সাধারণ মানের সেই খোলা চা বাজারে বিক্রি হচ্ছে ৩০০-৪০০ টাকায়। কোম্পানিগুলোর প্যাকেটে তা ৫২৫ টাকা।
ড. জাহাঙ্গীর আলম মনে করেন, স্থানীয় ভোক্তা তৈরির পাশাপাশি রপ্তানি না বাড়াতে পারলে চায়ের উৎপাদকেরাও টিকে থাকতে পারবেন না।

দেশে চায়ের উৎপাদন বাড়লেও সংকুচিত হচ্ছে রপ্তানি বাজার। বাড়ছে না স্থানীয় বাজারও। চায়ের নিলাম দরে ধস নেমেছে। নিলামে চায়ের বর্তমান দাম উৎপাদন খরচের চেয়ে কম। অথচ খুচরায় বেশি দরেই চা কিনছেন ভোক্তারা। চায়ের বাজারের এই অস্বাভাবিক পরিস্থিতির জন্য একটি অসাধু ব্যবসায়ী চক্রের কারসাজিকে দায়ী করছেন উদ্যোক্তা ও গবেষকেরা। তাঁরা বলছেন, চা শিল্প এখন খাদের কিনারে।
চা-বাগানমালিক ও বিপণনের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিরা বলছেন, চা পানের ৫০-৫৫ শতাংশ হয় হোটেল-রেস্তোরাঁ ও স্টলে। বাসাবাড়ি ও অফিসে হয় ৪৫-৫০ শতাংশ। দিনে অন্তত ১০ কোটি কাপ চা বিক্রি হয়। খুচরায় গড়ে ১০ টাকা করে বিক্রি হলেও স্থানীয় বাজার অন্তত ৩৬ হাজার ৫০০ কোটি টাকার।
উদ্যোক্তারা বলছেন, কম শুল্কে কফি আমদানির সুযোগ, অসহনীয় উৎপাদন খরচ আর পাচার হয়ে আসা নিম্নমানের চা এই শিল্পকে ঝুঁকিপূর্ণ করে তুলছে।
চা-বাগানমালিকদের সংগঠন বাংলাদেশ টি অ্যাসোসিয়েশন জানিয়েছে, গত ১০ বছরে নিলামে চায়ের দর বেড়েছে ২ দশমিক ৭১ শতাংশ।বিপরীতে উৎপাদন খরচ বেড়েছে ৭০ দশমিক ২৫ শতাংশ। অ্যাসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান কামরান টি রহমান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘নিলামের বাধ্যবাধকতার কারণে উৎপাদন খরচের নিচে আমরা চা বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছি। নিলাম মূল্য ১০ বছর আগের চেয়ে এখন কম। এ রকম চলতে থাকলে চা শিল্প টিকে থাকতে পারবে না।’ তিনি আরও বলেন, ‘এ সময়ে চাল-ডালসহ সব খাদ্যদ্রব্যের দাম কয়েক গুণ বেড়েছে, এমনকি ভোক্তাকেও কয়েক গুণ বেশি দাম দিয়ে চা খেতে হয়। একমাত্র উৎপাদকেরাই চায়ের দাম পাচ্ছে না।’
ব্রিটিশদের হাত ধরে আসা চা-বাগানের মালিকানা পরিবর্তনের সূচনা হয় যুক্তরাজ্যের জেমস ফিনলে লিমিটেডের চা-বাগান হস্তান্তরের পর। ২০০৬ সালের মার্চে ব্রিটিশ কোম্পানিটির হাতে থাকা ৩৯,১১২ একর বাগানের সব শেয়ার কিনে নেয় বাংলাদেশের ছয় ব্যবসায়ী গ্রুপ ও দুই ব্যক্তি। ছয়টি গ্রুপ হলো–ইস্পাহানি, উত্তরা গ্রুপ, পেডরোলো, ইস্ট কোস্ট, এবিসি এবং এমজিএইচ গ্রুপ। গত দুই যুগে চা-বাগান ইজারা নিয়ে যুক্ত হয়েছে আকিজ, স্কয়ার, এ কে খান, সিটি, টি কে, ওরিয়ন, কাজী অ্যান্ড কাজী (জেমকন), ইউনাইটেড, মোস্তফা ও প্যারাগন গ্রুপ। আল হারামাইন পারফিউমস গ্রুপ, পোশাক খাতের হা-মীম ও ভিয়েলাটেক্স গ্রুপও আছে এই তালিকায়। বেসরকারি সংস্থা ব্র্যাকও বিনিয়োগ করেছে চা খাতে।
উৎপাদনে রেকর্ড, তবু আমদানি
বাংলাদেশ চা বোর্ডের তথ্যমতে, ২০২৩ সালে ১০ কোটি ২৯ লাখ কেজি চা উৎপাদিত হয়েছে ১৬৮টি বাগান থেকে। অথচ ১৯৭০ সালের ৪২ হাজার ৬৮৫ হেক্টর বাগানে উৎপাদিত হতো ৩ কোটি ১৩ লাখ কেজি। ২০২৩ সালে আবাদ হয়েছে ৬২ হাজার ৭৩৪ হেক্টরে। বাগান ১৬৮টি। ২০২০ সালে ৮ কোটি ৬৩ লাখ ৯০ হাজার কেজি, ২০২১ সালে ৯ কোটি ৬৫ লাখ ১০ হাজার কেজি এবং ২০২২ সালে ৯ কোটি ৩৮ লাখ ৩০ হাজার কেজি চা উৎপাদিত হয়।
দেশে চা উদ্বৃত্ত থাকা সত্ত্বেও আমদানি হচ্ছে। চা বোর্ডের তথ্যমতে, ২০২৩ সালে ২ লাখ ৮৮ হাজার কেজি চা আমদানি হয়েছে।
চা বোর্ড সূত্রে জানা যায়, গত ২২ বছরে অন্তত ১৭ গুণ কমেছে রপ্তানি। ২০০১-০২ অর্থবছরে চা রপ্তানি হয়েছিল ১ কোটি ৩৮ লাখ ২ হাজার কেজি। ২০২২-২৩ অর্থবছরে নেমেছে ৮ লাখ ২৬ হাজার কেজিতে।
সূত্রমতে, দেশি-বিদেশি অন্তত ২২টি প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ থেকে চা রপ্তানিতে জড়িত থাকলেও তাদের অনেকেরই এখন আর রপ্তানি নেই।
দাম উৎপাদন খরচের নিচে
চা বোর্ডের তথ্যমতে, ২০২৩ সালে নিলামে প্রতি কেজি চায়ের দাম ঠিক হয়েছে ১৭৩ টাকা ৩৭ পয়সা। আগের বছর ছিল ১৯৫ টাকা ৪৩ পয়সা। ২০১৬ সালেও ছিল ২০০ টাকা। কিন্তু প্রতি কেজিতে উৎপাদন খরচ বিক্রয় দামের চেয়ে প্রায় ১০০ টাকা বেশি। ২০২৩ সালে প্রতি কেজি চায়ের উৎপাদন খরচ ছিল ২৭১ টাকা ৭৭ পয়সা। আগের বছরে ছিল ২৯৭ টাকা ৩০ পয়সা।
একাধিক বাগানমালিকের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, গত পাঁচ বছরে চায়ের উৎপাদন খরচ অনেক বেড়েছে। সম্প্রতি চা-শ্রমিকদের মজুরিও বেড়েছে। কিন্তু উৎপাদন খরচের চেয়ে কম দামে বিক্রি করতে হচ্ছে।
জানতে চাইলে হবিগঞ্জের দেউন্দি চা কোম্পানি লিমিটেডের উদ্যোক্তা ও বাংলাদেশ টি অ্যাসোসিয়েশনের নির্বাহী কমিটির সদস্য ওয়াহিদুল হক বলেন, ‘গত ১০ বছরেও চায়ের দাম বাড়েনি। উন্মুত্ত নিলামে চায়ের দাম নির্ধারিত হয়। এখানে কারও কোনো হাত নেই।
আবার ওপার থেকে চোরাই পথে আসছে নিম্নমানের চা। এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে কফি পান। কফিতে মাত্র ২২ শতাংশের মতো শুল্ক। কম শুল্কের কারণে দাম সহনীয় হওয়ায় মানুষ কফি পান করছে। অনেক জায়গায় এখন চায়ের বদলে কফি পাওয়া যায়।’
কৃষি অর্থনীতিবিদ ড. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, একটি অসাধু ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট নিলামে যোগসাজশ করে চায়ের দর কম দিচ্ছে। আবার ভোক্তাদের কাছে দাম অনেক বাড়িয়ে বিক্রি করছে। এতে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, বিদেশে বাংলাদেশ মিশন ও চা বোর্ডের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের গাফিলতিও আছে।
মান নিয়ে প্রশ্ন
চা উদ্যোক্তা ওয়াহিদুল হক বলেন, ‘ক্রেতারা বলছেন, আমাদের চায়ের মান খারাপ। সে জন্য দাম কম।’
ড. জাহাঙ্গীর আলমের মতে, চায়ের মান যদি খারাপ হয়, তবে এর জন্য চা বোর্ড ও চা গবেষণা ইনস্টিটিউটও দায়ী। বাংলাদেশ চা বোর্ডের প্রকল্প উন্নয়ন ইউনিটের পরিচালক ড. এ কে এম রফিকুল হক এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘বাংলাদেশের চায়ের মান খারাপ, এটা ঠিক। তবে মান বাড়ানোর জন্য আমরা কাজ করছি।’
বাজার অস্বাভাবিক
চা বোর্ডের তথ্য অনুযায়ী, ২০২২-২৩ মৌসুমে (এপ্রিল-মার্চ) নিলামে ১ হাজার ৮০০ কোটি টাকার চা বিক্রি হয়েছে। নিলামে যে চায়ের দাম প্রতি কেজি ১৭৩ টাকা ৩৭ পয়সা, সাধারণ মানের সেই খোলা চা বাজারে বিক্রি হচ্ছে ৩০০-৪০০ টাকায়। কোম্পানিগুলোর প্যাকেটে তা ৫২৫ টাকা।
ড. জাহাঙ্গীর আলম মনে করেন, স্থানীয় ভোক্তা তৈরির পাশাপাশি রপ্তানি না বাড়াতে পারলে চায়ের উৎপাদকেরাও টিকে থাকতে পারবেন না।
ফারুক মেহেদী, ঢাকা

দেশে চায়ের উৎপাদন বাড়লেও সংকুচিত হচ্ছে রপ্তানি বাজার। বাড়ছে না স্থানীয় বাজারও। চায়ের নিলাম দরে ধস নেমেছে। নিলামে চায়ের বর্তমান দাম উৎপাদন খরচের চেয়ে কম। অথচ খুচরায় বেশি দরেই চা কিনছেন ভোক্তারা। চায়ের বাজারের এই অস্বাভাবিক পরিস্থিতির জন্য একটি অসাধু ব্যবসায়ী চক্রের কারসাজিকে দায়ী করছেন উদ্যোক্তা ও গবেষকেরা। তাঁরা বলছেন, চা শিল্প এখন খাদের কিনারে।
চা-বাগানমালিক ও বিপণনের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিরা বলছেন, চা পানের ৫০-৫৫ শতাংশ হয় হোটেল-রেস্তোরাঁ ও স্টলে। বাসাবাড়ি ও অফিসে হয় ৪৫-৫০ শতাংশ। দিনে অন্তত ১০ কোটি কাপ চা বিক্রি হয়। খুচরায় গড়ে ১০ টাকা করে বিক্রি হলেও স্থানীয় বাজার অন্তত ৩৬ হাজার ৫০০ কোটি টাকার।
উদ্যোক্তারা বলছেন, কম শুল্কে কফি আমদানির সুযোগ, অসহনীয় উৎপাদন খরচ আর পাচার হয়ে আসা নিম্নমানের চা এই শিল্পকে ঝুঁকিপূর্ণ করে তুলছে।
চা-বাগানমালিকদের সংগঠন বাংলাদেশ টি অ্যাসোসিয়েশন জানিয়েছে, গত ১০ বছরে নিলামে চায়ের দর বেড়েছে ২ দশমিক ৭১ শতাংশ।বিপরীতে উৎপাদন খরচ বেড়েছে ৭০ দশমিক ২৫ শতাংশ। অ্যাসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান কামরান টি রহমান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘নিলামের বাধ্যবাধকতার কারণে উৎপাদন খরচের নিচে আমরা চা বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছি। নিলাম মূল্য ১০ বছর আগের চেয়ে এখন কম। এ রকম চলতে থাকলে চা শিল্প টিকে থাকতে পারবে না।’ তিনি আরও বলেন, ‘এ সময়ে চাল-ডালসহ সব খাদ্যদ্রব্যের দাম কয়েক গুণ বেড়েছে, এমনকি ভোক্তাকেও কয়েক গুণ বেশি দাম দিয়ে চা খেতে হয়। একমাত্র উৎপাদকেরাই চায়ের দাম পাচ্ছে না।’
ব্রিটিশদের হাত ধরে আসা চা-বাগানের মালিকানা পরিবর্তনের সূচনা হয় যুক্তরাজ্যের জেমস ফিনলে লিমিটেডের চা-বাগান হস্তান্তরের পর। ২০০৬ সালের মার্চে ব্রিটিশ কোম্পানিটির হাতে থাকা ৩৯,১১২ একর বাগানের সব শেয়ার কিনে নেয় বাংলাদেশের ছয় ব্যবসায়ী গ্রুপ ও দুই ব্যক্তি। ছয়টি গ্রুপ হলো–ইস্পাহানি, উত্তরা গ্রুপ, পেডরোলো, ইস্ট কোস্ট, এবিসি এবং এমজিএইচ গ্রুপ। গত দুই যুগে চা-বাগান ইজারা নিয়ে যুক্ত হয়েছে আকিজ, স্কয়ার, এ কে খান, সিটি, টি কে, ওরিয়ন, কাজী অ্যান্ড কাজী (জেমকন), ইউনাইটেড, মোস্তফা ও প্যারাগন গ্রুপ। আল হারামাইন পারফিউমস গ্রুপ, পোশাক খাতের হা-মীম ও ভিয়েলাটেক্স গ্রুপও আছে এই তালিকায়। বেসরকারি সংস্থা ব্র্যাকও বিনিয়োগ করেছে চা খাতে।
উৎপাদনে রেকর্ড, তবু আমদানি
বাংলাদেশ চা বোর্ডের তথ্যমতে, ২০২৩ সালে ১০ কোটি ২৯ লাখ কেজি চা উৎপাদিত হয়েছে ১৬৮টি বাগান থেকে। অথচ ১৯৭০ সালের ৪২ হাজার ৬৮৫ হেক্টর বাগানে উৎপাদিত হতো ৩ কোটি ১৩ লাখ কেজি। ২০২৩ সালে আবাদ হয়েছে ৬২ হাজার ৭৩৪ হেক্টরে। বাগান ১৬৮টি। ২০২০ সালে ৮ কোটি ৬৩ লাখ ৯০ হাজার কেজি, ২০২১ সালে ৯ কোটি ৬৫ লাখ ১০ হাজার কেজি এবং ২০২২ সালে ৯ কোটি ৩৮ লাখ ৩০ হাজার কেজি চা উৎপাদিত হয়।
দেশে চা উদ্বৃত্ত থাকা সত্ত্বেও আমদানি হচ্ছে। চা বোর্ডের তথ্যমতে, ২০২৩ সালে ২ লাখ ৮৮ হাজার কেজি চা আমদানি হয়েছে।
চা বোর্ড সূত্রে জানা যায়, গত ২২ বছরে অন্তত ১৭ গুণ কমেছে রপ্তানি। ২০০১-০২ অর্থবছরে চা রপ্তানি হয়েছিল ১ কোটি ৩৮ লাখ ২ হাজার কেজি। ২০২২-২৩ অর্থবছরে নেমেছে ৮ লাখ ২৬ হাজার কেজিতে।
সূত্রমতে, দেশি-বিদেশি অন্তত ২২টি প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ থেকে চা রপ্তানিতে জড়িত থাকলেও তাদের অনেকেরই এখন আর রপ্তানি নেই।
দাম উৎপাদন খরচের নিচে
চা বোর্ডের তথ্যমতে, ২০২৩ সালে নিলামে প্রতি কেজি চায়ের দাম ঠিক হয়েছে ১৭৩ টাকা ৩৭ পয়সা। আগের বছর ছিল ১৯৫ টাকা ৪৩ পয়সা। ২০১৬ সালেও ছিল ২০০ টাকা। কিন্তু প্রতি কেজিতে উৎপাদন খরচ বিক্রয় দামের চেয়ে প্রায় ১০০ টাকা বেশি। ২০২৩ সালে প্রতি কেজি চায়ের উৎপাদন খরচ ছিল ২৭১ টাকা ৭৭ পয়সা। আগের বছরে ছিল ২৯৭ টাকা ৩০ পয়সা।
একাধিক বাগানমালিকের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, গত পাঁচ বছরে চায়ের উৎপাদন খরচ অনেক বেড়েছে। সম্প্রতি চা-শ্রমিকদের মজুরিও বেড়েছে। কিন্তু উৎপাদন খরচের চেয়ে কম দামে বিক্রি করতে হচ্ছে।
জানতে চাইলে হবিগঞ্জের দেউন্দি চা কোম্পানি লিমিটেডের উদ্যোক্তা ও বাংলাদেশ টি অ্যাসোসিয়েশনের নির্বাহী কমিটির সদস্য ওয়াহিদুল হক বলেন, ‘গত ১০ বছরেও চায়ের দাম বাড়েনি। উন্মুত্ত নিলামে চায়ের দাম নির্ধারিত হয়। এখানে কারও কোনো হাত নেই।
আবার ওপার থেকে চোরাই পথে আসছে নিম্নমানের চা। এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে কফি পান। কফিতে মাত্র ২২ শতাংশের মতো শুল্ক। কম শুল্কের কারণে দাম সহনীয় হওয়ায় মানুষ কফি পান করছে। অনেক জায়গায় এখন চায়ের বদলে কফি পাওয়া যায়।’
কৃষি অর্থনীতিবিদ ড. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, একটি অসাধু ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট নিলামে যোগসাজশ করে চায়ের দর কম দিচ্ছে। আবার ভোক্তাদের কাছে দাম অনেক বাড়িয়ে বিক্রি করছে। এতে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, বিদেশে বাংলাদেশ মিশন ও চা বোর্ডের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের গাফিলতিও আছে।
মান নিয়ে প্রশ্ন
চা উদ্যোক্তা ওয়াহিদুল হক বলেন, ‘ক্রেতারা বলছেন, আমাদের চায়ের মান খারাপ। সে জন্য দাম কম।’
ড. জাহাঙ্গীর আলমের মতে, চায়ের মান যদি খারাপ হয়, তবে এর জন্য চা বোর্ড ও চা গবেষণা ইনস্টিটিউটও দায়ী। বাংলাদেশ চা বোর্ডের প্রকল্প উন্নয়ন ইউনিটের পরিচালক ড. এ কে এম রফিকুল হক এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘বাংলাদেশের চায়ের মান খারাপ, এটা ঠিক। তবে মান বাড়ানোর জন্য আমরা কাজ করছি।’
বাজার অস্বাভাবিক
চা বোর্ডের তথ্য অনুযায়ী, ২০২২-২৩ মৌসুমে (এপ্রিল-মার্চ) নিলামে ১ হাজার ৮০০ কোটি টাকার চা বিক্রি হয়েছে। নিলামে যে চায়ের দাম প্রতি কেজি ১৭৩ টাকা ৩৭ পয়সা, সাধারণ মানের সেই খোলা চা বাজারে বিক্রি হচ্ছে ৩০০-৪০০ টাকায়। কোম্পানিগুলোর প্যাকেটে তা ৫২৫ টাকা।
ড. জাহাঙ্গীর আলম মনে করেন, স্থানীয় ভোক্তা তৈরির পাশাপাশি রপ্তানি না বাড়াতে পারলে চায়ের উৎপাদকেরাও টিকে থাকতে পারবেন না।

দেশে চায়ের উৎপাদন বাড়লেও সংকুচিত হচ্ছে রপ্তানি বাজার। বাড়ছে না স্থানীয় বাজারও। চায়ের নিলাম দরে ধস নেমেছে। নিলামে চায়ের বর্তমান দাম উৎপাদন খরচের চেয়ে কম। অথচ খুচরায় বেশি দরেই চা কিনছেন ভোক্তারা। চায়ের বাজারের এই অস্বাভাবিক পরিস্থিতির জন্য একটি অসাধু ব্যবসায়ী চক্রের কারসাজিকে দায়ী করছেন উদ্যোক্তা ও গবেষকেরা। তাঁরা বলছেন, চা শিল্প এখন খাদের কিনারে।
চা-বাগানমালিক ও বিপণনের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিরা বলছেন, চা পানের ৫০-৫৫ শতাংশ হয় হোটেল-রেস্তোরাঁ ও স্টলে। বাসাবাড়ি ও অফিসে হয় ৪৫-৫০ শতাংশ। দিনে অন্তত ১০ কোটি কাপ চা বিক্রি হয়। খুচরায় গড়ে ১০ টাকা করে বিক্রি হলেও স্থানীয় বাজার অন্তত ৩৬ হাজার ৫০০ কোটি টাকার।
উদ্যোক্তারা বলছেন, কম শুল্কে কফি আমদানির সুযোগ, অসহনীয় উৎপাদন খরচ আর পাচার হয়ে আসা নিম্নমানের চা এই শিল্পকে ঝুঁকিপূর্ণ করে তুলছে।
চা-বাগানমালিকদের সংগঠন বাংলাদেশ টি অ্যাসোসিয়েশন জানিয়েছে, গত ১০ বছরে নিলামে চায়ের দর বেড়েছে ২ দশমিক ৭১ শতাংশ।বিপরীতে উৎপাদন খরচ বেড়েছে ৭০ দশমিক ২৫ শতাংশ। অ্যাসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান কামরান টি রহমান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘নিলামের বাধ্যবাধকতার কারণে উৎপাদন খরচের নিচে আমরা চা বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছি। নিলাম মূল্য ১০ বছর আগের চেয়ে এখন কম। এ রকম চলতে থাকলে চা শিল্প টিকে থাকতে পারবে না।’ তিনি আরও বলেন, ‘এ সময়ে চাল-ডালসহ সব খাদ্যদ্রব্যের দাম কয়েক গুণ বেড়েছে, এমনকি ভোক্তাকেও কয়েক গুণ বেশি দাম দিয়ে চা খেতে হয়। একমাত্র উৎপাদকেরাই চায়ের দাম পাচ্ছে না।’
ব্রিটিশদের হাত ধরে আসা চা-বাগানের মালিকানা পরিবর্তনের সূচনা হয় যুক্তরাজ্যের জেমস ফিনলে লিমিটেডের চা-বাগান হস্তান্তরের পর। ২০০৬ সালের মার্চে ব্রিটিশ কোম্পানিটির হাতে থাকা ৩৯,১১২ একর বাগানের সব শেয়ার কিনে নেয় বাংলাদেশের ছয় ব্যবসায়ী গ্রুপ ও দুই ব্যক্তি। ছয়টি গ্রুপ হলো–ইস্পাহানি, উত্তরা গ্রুপ, পেডরোলো, ইস্ট কোস্ট, এবিসি এবং এমজিএইচ গ্রুপ। গত দুই যুগে চা-বাগান ইজারা নিয়ে যুক্ত হয়েছে আকিজ, স্কয়ার, এ কে খান, সিটি, টি কে, ওরিয়ন, কাজী অ্যান্ড কাজী (জেমকন), ইউনাইটেড, মোস্তফা ও প্যারাগন গ্রুপ। আল হারামাইন পারফিউমস গ্রুপ, পোশাক খাতের হা-মীম ও ভিয়েলাটেক্স গ্রুপও আছে এই তালিকায়। বেসরকারি সংস্থা ব্র্যাকও বিনিয়োগ করেছে চা খাতে।
উৎপাদনে রেকর্ড, তবু আমদানি
বাংলাদেশ চা বোর্ডের তথ্যমতে, ২০২৩ সালে ১০ কোটি ২৯ লাখ কেজি চা উৎপাদিত হয়েছে ১৬৮টি বাগান থেকে। অথচ ১৯৭০ সালের ৪২ হাজার ৬৮৫ হেক্টর বাগানে উৎপাদিত হতো ৩ কোটি ১৩ লাখ কেজি। ২০২৩ সালে আবাদ হয়েছে ৬২ হাজার ৭৩৪ হেক্টরে। বাগান ১৬৮টি। ২০২০ সালে ৮ কোটি ৬৩ লাখ ৯০ হাজার কেজি, ২০২১ সালে ৯ কোটি ৬৫ লাখ ১০ হাজার কেজি এবং ২০২২ সালে ৯ কোটি ৩৮ লাখ ৩০ হাজার কেজি চা উৎপাদিত হয়।
দেশে চা উদ্বৃত্ত থাকা সত্ত্বেও আমদানি হচ্ছে। চা বোর্ডের তথ্যমতে, ২০২৩ সালে ২ লাখ ৮৮ হাজার কেজি চা আমদানি হয়েছে।
চা বোর্ড সূত্রে জানা যায়, গত ২২ বছরে অন্তত ১৭ গুণ কমেছে রপ্তানি। ২০০১-০২ অর্থবছরে চা রপ্তানি হয়েছিল ১ কোটি ৩৮ লাখ ২ হাজার কেজি। ২০২২-২৩ অর্থবছরে নেমেছে ৮ লাখ ২৬ হাজার কেজিতে।
সূত্রমতে, দেশি-বিদেশি অন্তত ২২টি প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ থেকে চা রপ্তানিতে জড়িত থাকলেও তাদের অনেকেরই এখন আর রপ্তানি নেই।
দাম উৎপাদন খরচের নিচে
চা বোর্ডের তথ্যমতে, ২০২৩ সালে নিলামে প্রতি কেজি চায়ের দাম ঠিক হয়েছে ১৭৩ টাকা ৩৭ পয়সা। আগের বছর ছিল ১৯৫ টাকা ৪৩ পয়সা। ২০১৬ সালেও ছিল ২০০ টাকা। কিন্তু প্রতি কেজিতে উৎপাদন খরচ বিক্রয় দামের চেয়ে প্রায় ১০০ টাকা বেশি। ২০২৩ সালে প্রতি কেজি চায়ের উৎপাদন খরচ ছিল ২৭১ টাকা ৭৭ পয়সা। আগের বছরে ছিল ২৯৭ টাকা ৩০ পয়সা।
একাধিক বাগানমালিকের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, গত পাঁচ বছরে চায়ের উৎপাদন খরচ অনেক বেড়েছে। সম্প্রতি চা-শ্রমিকদের মজুরিও বেড়েছে। কিন্তু উৎপাদন খরচের চেয়ে কম দামে বিক্রি করতে হচ্ছে।
জানতে চাইলে হবিগঞ্জের দেউন্দি চা কোম্পানি লিমিটেডের উদ্যোক্তা ও বাংলাদেশ টি অ্যাসোসিয়েশনের নির্বাহী কমিটির সদস্য ওয়াহিদুল হক বলেন, ‘গত ১০ বছরেও চায়ের দাম বাড়েনি। উন্মুত্ত নিলামে চায়ের দাম নির্ধারিত হয়। এখানে কারও কোনো হাত নেই।
আবার ওপার থেকে চোরাই পথে আসছে নিম্নমানের চা। এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে কফি পান। কফিতে মাত্র ২২ শতাংশের মতো শুল্ক। কম শুল্কের কারণে দাম সহনীয় হওয়ায় মানুষ কফি পান করছে। অনেক জায়গায় এখন চায়ের বদলে কফি পাওয়া যায়।’
কৃষি অর্থনীতিবিদ ড. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, একটি অসাধু ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট নিলামে যোগসাজশ করে চায়ের দর কম দিচ্ছে। আবার ভোক্তাদের কাছে দাম অনেক বাড়িয়ে বিক্রি করছে। এতে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, বিদেশে বাংলাদেশ মিশন ও চা বোর্ডের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের গাফিলতিও আছে।
মান নিয়ে প্রশ্ন
চা উদ্যোক্তা ওয়াহিদুল হক বলেন, ‘ক্রেতারা বলছেন, আমাদের চায়ের মান খারাপ। সে জন্য দাম কম।’
ড. জাহাঙ্গীর আলমের মতে, চায়ের মান যদি খারাপ হয়, তবে এর জন্য চা বোর্ড ও চা গবেষণা ইনস্টিটিউটও দায়ী। বাংলাদেশ চা বোর্ডের প্রকল্প উন্নয়ন ইউনিটের পরিচালক ড. এ কে এম রফিকুল হক এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘বাংলাদেশের চায়ের মান খারাপ, এটা ঠিক। তবে মান বাড়ানোর জন্য আমরা কাজ করছি।’
বাজার অস্বাভাবিক
চা বোর্ডের তথ্য অনুযায়ী, ২০২২-২৩ মৌসুমে (এপ্রিল-মার্চ) নিলামে ১ হাজার ৮০০ কোটি টাকার চা বিক্রি হয়েছে। নিলামে যে চায়ের দাম প্রতি কেজি ১৭৩ টাকা ৩৭ পয়সা, সাধারণ মানের সেই খোলা চা বাজারে বিক্রি হচ্ছে ৩০০-৪০০ টাকায়। কোম্পানিগুলোর প্যাকেটে তা ৫২৫ টাকা।
ড. জাহাঙ্গীর আলম মনে করেন, স্থানীয় ভোক্তা তৈরির পাশাপাশি রপ্তানি না বাড়াতে পারলে চায়ের উৎপাদকেরাও টিকে থাকতে পারবেন না।

ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ পিএলসির শরিয়াহ সুপারভাইজরি কাউন্সিলের সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকাল রোববার (২৮ ডিসেম্বর) ইসলামী ব্যাংক টাওয়ারে আয়োজিত এ সভায় সভাপতিত্ব করেন কাউন্সিলের চেয়ারম্যান মুফতি ছাঈদ আহমাদ।
৭ ঘণ্টা আগে
শীতের রাত পেরিয়ে ভোরের আলো ফোটার আগেই যশোরের গ্রামাঞ্চলে শুরু হয় ব্যস্ততা। খেজুরগাছের নিচে হাজির হন গাছিরা। আগের বিকেলে কাটা গাছের ‘চোখ’ বেয়ে সারা রাত মাটির হাঁড়িতে জমেছে সুমিষ্ট খেজুর রস।
১৩ ঘণ্টা আগে
দেশের ব্যাংকিং খাতের ভেতরে জমে থাকা অনিয়ম, রাজনৈতিক আশ্রয় ও কৃত্রিম হিসাবের পর্দা চলতি বছর যেন একে একে সরে যেতে শুরু করেছে। আর তাতেই সামনে এসেছে এক ভয়াবহ বাস্তবতা। সরকারি ও শরিয়াহভিত্তিক ইসলামি ব্যাংকগুলো খেলাপি ঋণের ভারে এখন কার্যত দিশেহারা।
২০ ঘণ্টা আগে
ডলার এখন রেমিট্যান্স, রপ্তানি, হুন্ডি নিয়ন্ত্রণ—সবকিছুর সঙ্গে জড়িয়ে আছে। তাই বাজারে ডলার হাতছাড়া হওয়ার ভয়ে সবাই চুপ। এই ডলারের সরবরাহ ও দাম স্থিতিশীল রাখার পাশাপাশি পুরো বৈদেশিক মুদ্রার ভারসাম্য ঠিক রাখতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক নিয়মিত বিরতিতে ডলার কিনছে। সেই ধারাবাহিকতায় শুধু চলতি ২০২৫-২৬ অর্থবছরের জুলাই
১ দিন আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ পিএলসির শরিয়াহ সুপারভাইজরি কাউন্সিলের সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
গতকাল রোববার (২৮ ডিসেম্বর) ইসলামী ব্যাংক টাওয়ারে আয়োজিত এই সভায় সভাপতিত্ব করেন কাউন্সিলের চেয়ারম্যান মুফতি ছাঈদ আহমাদ।
সভায় উপস্থিত ছিলেন ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ পিএলসির ম্যানেজিং ডাইরেক্টর মো. ওমর ফারুক খাঁন এবং শরিয়াহ সুপারভাইজরি কাউন্সিলের সদস্যসচিব অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ আব্দুস সামাদ। এ ছাড়া কাউন্সিলের অন্য সদস্যবৃন্দ সভায় অংশগ্রহণ করেন।

ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ পিএলসির শরিয়াহ সুপারভাইজরি কাউন্সিলের সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
গতকাল রোববার (২৮ ডিসেম্বর) ইসলামী ব্যাংক টাওয়ারে আয়োজিত এই সভায় সভাপতিত্ব করেন কাউন্সিলের চেয়ারম্যান মুফতি ছাঈদ আহমাদ।
সভায় উপস্থিত ছিলেন ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ পিএলসির ম্যানেজিং ডাইরেক্টর মো. ওমর ফারুক খাঁন এবং শরিয়াহ সুপারভাইজরি কাউন্সিলের সদস্যসচিব অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ আব্দুস সামাদ। এ ছাড়া কাউন্সিলের অন্য সদস্যবৃন্দ সভায় অংশগ্রহণ করেন।

দেশে চায়ের উৎপাদন বাড়লেও সংকুচিত হচ্ছে রপ্তানি বাজার। বাড়ছে না স্থানীয় বাজারও। চায়ের নিলাম দরে ধস নেমেছে। নিলামে চায়ের বর্তমান দাম উৎপাদন খরচের চেয়ে কম। অথচ খুচরায় বেশি দরেই চা কিনছেন ভোক্তারা।
২১ এপ্রিল ২০২৪
শীতের রাত পেরিয়ে ভোরের আলো ফোটার আগেই যশোরের গ্রামাঞ্চলে শুরু হয় ব্যস্ততা। খেজুরগাছের নিচে হাজির হন গাছিরা। আগের বিকেলে কাটা গাছের ‘চোখ’ বেয়ে সারা রাত মাটির হাঁড়িতে জমেছে সুমিষ্ট খেজুর রস।
১৩ ঘণ্টা আগে
দেশের ব্যাংকিং খাতের ভেতরে জমে থাকা অনিয়ম, রাজনৈতিক আশ্রয় ও কৃত্রিম হিসাবের পর্দা চলতি বছর যেন একে একে সরে যেতে শুরু করেছে। আর তাতেই সামনে এসেছে এক ভয়াবহ বাস্তবতা। সরকারি ও শরিয়াহভিত্তিক ইসলামি ব্যাংকগুলো খেলাপি ঋণের ভারে এখন কার্যত দিশেহারা।
২০ ঘণ্টা আগে
ডলার এখন রেমিট্যান্স, রপ্তানি, হুন্ডি নিয়ন্ত্রণ—সবকিছুর সঙ্গে জড়িয়ে আছে। তাই বাজারে ডলার হাতছাড়া হওয়ার ভয়ে সবাই চুপ। এই ডলারের সরবরাহ ও দাম স্থিতিশীল রাখার পাশাপাশি পুরো বৈদেশিক মুদ্রার ভারসাম্য ঠিক রাখতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক নিয়মিত বিরতিতে ডলার কিনছে। সেই ধারাবাহিকতায় শুধু চলতি ২০২৫-২৬ অর্থবছরের জুলাই
১ দিন আগেজাহিদ হাসান, যশোর

শীতের রাত পেরিয়ে ভোরের আলো ফোটার আগেই যশোরের গ্রামাঞ্চলে শুরু হয় ব্যস্ততা। খেজুরগাছের নিচে হাজির হন গাছিরা। আগের বিকেলে কাটা গাছের ‘চোখ’ বেয়ে সারা রাত মাটির হাঁড়িতে জমেছে সুমিষ্ট খেজুর রস। ভোরে সেই রস নামিয়ে শুরু হয় আরেক কর্মযজ্ঞ; চুলায় জ্বাল দিয়ে গুড় তৈরির কাজ। বাড়ির নারীরাই মূলত এই প্রক্রিয়ায় নেতৃত্ব দেন। কয়েক ঘণ্টা জ্বালানোর পর তৈরি হয় সুস্বাদু খেজুর গুড় ও পাটালি।
শীত মৌসুম এলেই এমন দৃশ্য দেখা যায় খেজুর গুড়ের জেলা খ্যাত যশোরের প্রায় প্রতিটি গ্রামে। সম্প্রতি যশোরের খেজুর গুড় ভৌগোলিক নির্দেশক (জিআই) পণ্যের স্বীকৃতি পাওয়ায় এর ঐতিহ্যের পাশাপাশি অর্থনৈতিক সম্ভাবনাও নতুন করে সামনে এসেছে।
উৎপাদন ও বাজারের চিত্র
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, চলতি মৌসুমে যশোরে প্রায় ১২০ কোটি টাকার খেজুর রস ও গুড় উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এই উৎপাদন গ্রামীণ অর্থনীতির চাকা আরও গতিশীল করবে বলে আশা সংশ্লিষ্টদের।
বর্তমানে খেজুরের কাঁচা রস প্রতি মাটির হাঁড়ি ২০০ থেকে ৪০০ টাকা, দানা গুড় প্রতি কেজি ৩৫০-৪০০ টাকা এবং পাটালি প্রতি কেজি ৪৫০-৬০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। বাজারদর বাড়লেও গাছিরা বলছেন, শ্রম ও ঝুঁকির তুলনায় লাভ সীমিত।
গাছির সংকট বড় চ্যালেঞ্জ
যশোর সদর উপজেলার নওয়াপাড়া গ্রামের গাছি আজিবর প্রায় ৩৫ বছর ধরে খেজুর গাছ কাটছেন। তিনি বলেন, ‘আগে দেড় শ গাছ কাটতাম, এখন বয়সের কারণে ৩৫-৪০টার বেশি পারি না। রস ও গুড়ের দাম বেড়েছে ঠিকই, কিন্তু কাটার মতো গাছ কমে গেছে। আবার গাছ থাকলেও দক্ষ গাছির অভাব। এবার বেশি শীত পড়ায় রসও ভালো নামছে, গুড়ের উৎপাদনও বেশি।’

মনিরামপুর উপজেলার সরসকাটি গ্রামের গাছি অতিয়ারও প্রায় ৪০ বছর ধরে এই পেশায় যুক্ত। তিনি বলেন, এবার ৫০টা গাছ কাটছি। প্রতিদিন ৮-১০ কেজি গুড় তৈরি হয়। কাজটা খুব কষ্টের। তবে শীত মৌসুমে এই আয়েই পুরো বছরের সংসার চলে।
ই-কমার্সে বাড়ছে চাহিদা
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, যশোর জেলায় মোট খেজুরগাছের সংখ্যা ২৩ লাখ ৩০ হাজার ৬৯৫। এগুলোর মধ্যে চলতি মৌসুমে রস আহরণের উপযোগী গাছ রয়েছে ৩ লাখ ৭ হাজার ১৩০টি।
উৎপাদিত গুড় প্রথমে স্থানীয় হাটে বিক্রি হয়, পরে পাইকারদের মাধ্যমে তা দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে সরবরাহ করা হয়। যশোরের খেজুর গুড় এখন বিদেশেও রপ্তানি হচ্ছে। পাশাপাশি ই-কমার্স ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমভিত্তিক উদ্যোক্তাদের হাত ধরে গুড় ও পাটালি সরাসরি ভোক্তার ঘরে পৌঁছানো হচ্ছে। এতে বাজার যেমন সম্প্রসারিত হচ্ছে, তেমনি তৈরি হচ্ছে নতুন কর্মসংস্থান।
কৃষি বিভাগের উদ্যোগ
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মোশাররফ হোসেন বলেন, যশোরের খেজুর গুড়ের স্বাদ ও মানের কারণে চাহিদা সব সময় বেশি। এবার শীত বেশি হওয়ায় রসের পরিমাণ ও মান—দুটোই ভালো। চলতি মৌসুমে প্রায় ১২০ কোটি টাকার রস ও গুড় উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। নিরাপদ খেজুর রস এবং গুড় উৎপাদনে কৃষকদের পরামর্শ ও প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। উঠান বৈঠকের মাধ্যমে গাছিদের উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে।

শীতের রাত পেরিয়ে ভোরের আলো ফোটার আগেই যশোরের গ্রামাঞ্চলে শুরু হয় ব্যস্ততা। খেজুরগাছের নিচে হাজির হন গাছিরা। আগের বিকেলে কাটা গাছের ‘চোখ’ বেয়ে সারা রাত মাটির হাঁড়িতে জমেছে সুমিষ্ট খেজুর রস। ভোরে সেই রস নামিয়ে শুরু হয় আরেক কর্মযজ্ঞ; চুলায় জ্বাল দিয়ে গুড় তৈরির কাজ। বাড়ির নারীরাই মূলত এই প্রক্রিয়ায় নেতৃত্ব দেন। কয়েক ঘণ্টা জ্বালানোর পর তৈরি হয় সুস্বাদু খেজুর গুড় ও পাটালি।
শীত মৌসুম এলেই এমন দৃশ্য দেখা যায় খেজুর গুড়ের জেলা খ্যাত যশোরের প্রায় প্রতিটি গ্রামে। সম্প্রতি যশোরের খেজুর গুড় ভৌগোলিক নির্দেশক (জিআই) পণ্যের স্বীকৃতি পাওয়ায় এর ঐতিহ্যের পাশাপাশি অর্থনৈতিক সম্ভাবনাও নতুন করে সামনে এসেছে।
উৎপাদন ও বাজারের চিত্র
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, চলতি মৌসুমে যশোরে প্রায় ১২০ কোটি টাকার খেজুর রস ও গুড় উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এই উৎপাদন গ্রামীণ অর্থনীতির চাকা আরও গতিশীল করবে বলে আশা সংশ্লিষ্টদের।
বর্তমানে খেজুরের কাঁচা রস প্রতি মাটির হাঁড়ি ২০০ থেকে ৪০০ টাকা, দানা গুড় প্রতি কেজি ৩৫০-৪০০ টাকা এবং পাটালি প্রতি কেজি ৪৫০-৬০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। বাজারদর বাড়লেও গাছিরা বলছেন, শ্রম ও ঝুঁকির তুলনায় লাভ সীমিত।
গাছির সংকট বড় চ্যালেঞ্জ
যশোর সদর উপজেলার নওয়াপাড়া গ্রামের গাছি আজিবর প্রায় ৩৫ বছর ধরে খেজুর গাছ কাটছেন। তিনি বলেন, ‘আগে দেড় শ গাছ কাটতাম, এখন বয়সের কারণে ৩৫-৪০টার বেশি পারি না। রস ও গুড়ের দাম বেড়েছে ঠিকই, কিন্তু কাটার মতো গাছ কমে গেছে। আবার গাছ থাকলেও দক্ষ গাছির অভাব। এবার বেশি শীত পড়ায় রসও ভালো নামছে, গুড়ের উৎপাদনও বেশি।’

মনিরামপুর উপজেলার সরসকাটি গ্রামের গাছি অতিয়ারও প্রায় ৪০ বছর ধরে এই পেশায় যুক্ত। তিনি বলেন, এবার ৫০টা গাছ কাটছি। প্রতিদিন ৮-১০ কেজি গুড় তৈরি হয়। কাজটা খুব কষ্টের। তবে শীত মৌসুমে এই আয়েই পুরো বছরের সংসার চলে।
ই-কমার্সে বাড়ছে চাহিদা
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, যশোর জেলায় মোট খেজুরগাছের সংখ্যা ২৩ লাখ ৩০ হাজার ৬৯৫। এগুলোর মধ্যে চলতি মৌসুমে রস আহরণের উপযোগী গাছ রয়েছে ৩ লাখ ৭ হাজার ১৩০টি।
উৎপাদিত গুড় প্রথমে স্থানীয় হাটে বিক্রি হয়, পরে পাইকারদের মাধ্যমে তা দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে সরবরাহ করা হয়। যশোরের খেজুর গুড় এখন বিদেশেও রপ্তানি হচ্ছে। পাশাপাশি ই-কমার্স ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমভিত্তিক উদ্যোক্তাদের হাত ধরে গুড় ও পাটালি সরাসরি ভোক্তার ঘরে পৌঁছানো হচ্ছে। এতে বাজার যেমন সম্প্রসারিত হচ্ছে, তেমনি তৈরি হচ্ছে নতুন কর্মসংস্থান।
কৃষি বিভাগের উদ্যোগ
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মোশাররফ হোসেন বলেন, যশোরের খেজুর গুড়ের স্বাদ ও মানের কারণে চাহিদা সব সময় বেশি। এবার শীত বেশি হওয়ায় রসের পরিমাণ ও মান—দুটোই ভালো। চলতি মৌসুমে প্রায় ১২০ কোটি টাকার রস ও গুড় উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। নিরাপদ খেজুর রস এবং গুড় উৎপাদনে কৃষকদের পরামর্শ ও প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। উঠান বৈঠকের মাধ্যমে গাছিদের উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে।

দেশে চায়ের উৎপাদন বাড়লেও সংকুচিত হচ্ছে রপ্তানি বাজার। বাড়ছে না স্থানীয় বাজারও। চায়ের নিলাম দরে ধস নেমেছে। নিলামে চায়ের বর্তমান দাম উৎপাদন খরচের চেয়ে কম। অথচ খুচরায় বেশি দরেই চা কিনছেন ভোক্তারা।
২১ এপ্রিল ২০২৪
ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ পিএলসির শরিয়াহ সুপারভাইজরি কাউন্সিলের সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকাল রোববার (২৮ ডিসেম্বর) ইসলামী ব্যাংক টাওয়ারে আয়োজিত এ সভায় সভাপতিত্ব করেন কাউন্সিলের চেয়ারম্যান মুফতি ছাঈদ আহমাদ।
৭ ঘণ্টা আগে
দেশের ব্যাংকিং খাতের ভেতরে জমে থাকা অনিয়ম, রাজনৈতিক আশ্রয় ও কৃত্রিম হিসাবের পর্দা চলতি বছর যেন একে একে সরে যেতে শুরু করেছে। আর তাতেই সামনে এসেছে এক ভয়াবহ বাস্তবতা। সরকারি ও শরিয়াহভিত্তিক ইসলামি ব্যাংকগুলো খেলাপি ঋণের ভারে এখন কার্যত দিশেহারা।
২০ ঘণ্টা আগে
ডলার এখন রেমিট্যান্স, রপ্তানি, হুন্ডি নিয়ন্ত্রণ—সবকিছুর সঙ্গে জড়িয়ে আছে। তাই বাজারে ডলার হাতছাড়া হওয়ার ভয়ে সবাই চুপ। এই ডলারের সরবরাহ ও দাম স্থিতিশীল রাখার পাশাপাশি পুরো বৈদেশিক মুদ্রার ভারসাম্য ঠিক রাখতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক নিয়মিত বিরতিতে ডলার কিনছে। সেই ধারাবাহিকতায় শুধু চলতি ২০২৫-২৬ অর্থবছরের জুলাই
১ দিন আগেজয়নাল আবেদীন খান, ঢাকা

দেশের ব্যাংকিং খাতের ভেতরে জমে থাকা অনিয়ম, রাজনৈতিক আশ্রয় ও কৃত্রিম হিসাবের পর্দা চলতি বছর যেন একে একে সরে যেতে শুরু করেছে। আর তাতেই সামনে এসেছে এক ভয়াবহ বাস্তবতা। সরকারি ও শরিয়াহভিত্তিক ইসলামি ব্যাংকগুলো খেলাপি ঋণের ভারে এখন কার্যত দিশেহারা। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের হালনাগাদ তথ্য অনুযায়ী, সেপ্টেম্বর প্রান্তিক শেষে সরকারি ব্যাংকগুলোর খেলাপি ঋণের হার দাঁড়িয়েছে ৪৯ দশমিক ৬৫ শতাংশে, আর ইসলামি ব্যাংকগুলোর ক্ষেত্রে তা আরও বেশি—৫৯ দশমিক শূন্য ২ শতাংশে পৌঁছেছে। অর্থাৎ, এই দুটি খাতেই বিতরণ করা ঋণের অর্ধেকের বেশি অনাদায়ি হয়ে পড়েছে। যেখানে বিশেষায়িত ব্যাংকের খেলাপির হার ৪১ দশমিক ৯৫ ও বিদেশি ব্যাংকগুলোর খেলাপির হার মাত্র ৪ দশমিক ৯২ শতাংশ।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রতিবেদন পর্যালোচনায় দেখা গেছে, শরিয়াহভিত্তিক ১০টি ইসলামি ব্যাংক মোট ৪ লাখ ৭৯ হাজার ৬০৫ কোটি টাকা ঋণ বিনিয়োগ করেছে। এর মধ্যে খেলাপি হয়েছে ২ লাখ ৮৩ হাজার ৫৫ কোটি টাকা। হিসাব বলছে, প্রতি ১০ টাকার প্রায় ৬ টাকাই এখন আদায় অনিশ্চিত। সেই তুলনায় শরিয়াহসহ দেশীয় বেসরকারি ব্যাংকগুলোর মোট খেলাপি ঋণের পরিমাণ ৪ লাখ ৬৩ হাজার ১৮৫ কোটি টাকা, যা মোট ঋণের ৩৩ দশমিক ৭৫ শতাংশ। এই তুলনাতেই স্পষ্ট, খেলাপির বোঝা এককভাবে সবচেয়ে বেশি ইসলামি ব্যাংকগুলোর ঘাড়েই।
সরকারি ছয় ব্যাংকের অবস্থাও খুব একটা ভিন্ন নয়। এসব ব্যাংকে খেলাপি ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ৫৮ হাজার ৭৯২ কোটি টাকা। মোট বিতরণ করা ঋণের প্রায় অর্ধেকই সেখানে অনাদায়ি। ব্যাংকার ও বিশ্লেষকদের মতে, এই সংকট রাতারাতি তৈরি হয়নি। বছরের পর বছর ধরে দুর্বল তদারকি, রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ এবং ইচ্ছাকৃত খেলাপিকে আড়াল করার প্রবণতা ধীরে ধীরে ব্যাংকগুলোকে এই জায়গায় এনে দাঁড় করিয়েছে।
বিশ্বব্যাংকের ঢাকা অফিসের সাবেক মুখ্য অর্থনীতিবিদ ড. জাহিদ হোসেন মনে করেন, খেলাপি ঋণের এত উচ্চ হার শুধু ব্যাংকিং খাতের ভেতরের সমস্যা নয়, এটি সামগ্রিক অর্থনীতির জন্য বড় ঝুঁকি। ব্যাংকগুলো নতুন ঋণ দিতে পারছে না, বিনিয়োগ কার্যক্রম স্থবির হয়ে পড়ছে, শিল্প-কারখানার সম্প্রসারণ থেমে যাচ্ছে। এর সরাসরি প্রভাব পড়ছে কর্মসংস্থানে। তাঁর মতে, খেলাপিদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা এবং ঋণ আদায়ে বাস্তবসম্মত উদ্যোগ ছাড়া পরিস্থিতির উন্নতি সম্ভব নয়।
ইসলামি ব্যাংকিং খাতে এস আলম, নাসা ও বেক্সিমকো গ্রুপের নাম বারবার আলোচনায় এসেছে। সংশ্লিষ্টদের ভাষ্য, দীর্ঘদিন সরকারি মদদে এসব গ্রুপ বিপুল ঋণ নিয়ে খেলাপি হলেও তা আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকৃতি পায়নি। এখন সেই বাস্তবতা দিনের আলোর মতো স্পষ্ট।
সামগ্রিকভাবে দেশের ব্যাংকিং খাতের চিত্র আরও উদ্বেগজনক। সেপ্টেম্বর পর্যন্ত মোট বিতরণ করা ঋণের পরিমাণ ১৮ লাখ ৩ হাজার ৮৪০ কোটি টাকা। এর মধ্যে খেলাপি হয়েছে প্রায় ৬ লাখ ৪৪ হাজার ৫১৫ কোটি টাকা, যা মোট ঋণের ৩৫ দশমিক ৭৩ শতাংশ। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক ড. মইনুল ইসলাম বলেন, বিগত সরকারের টানা সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে খেলাপি ঋণ কম দেখানোর যে অপচেষ্টা ছিল, তা এখন ভেঙে পড়েছে। সঠিক হিসাব সামনে আসায় হার ৩৬ শতাংশের কাছাকাছি পৌঁছেছে, যা বাস্তবতারই প্রতিফলন। তিনি আবারও শীর্ষ ১০ খেলাপির জন্য আলাদা ট্রাইব্যুনালের প্রয়োজনীয়তার কথা বলেন।
বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র আরিফ হোসেন খান জানান, আগের সরকারের আমলে লুকিয়ে রাখা খেলাপি ঋণ প্রকাশ পাওয়ায় এই হার বেড়েছে। তবে কেন্দ্রীয় ব্যাংক এখন ঋণ আদায়ে কঠোর নির্দেশনার কারণে আগের তুলনায় আদায় বেড়েছে।

দেশের ব্যাংকিং খাতের ভেতরে জমে থাকা অনিয়ম, রাজনৈতিক আশ্রয় ও কৃত্রিম হিসাবের পর্দা চলতি বছর যেন একে একে সরে যেতে শুরু করেছে। আর তাতেই সামনে এসেছে এক ভয়াবহ বাস্তবতা। সরকারি ও শরিয়াহভিত্তিক ইসলামি ব্যাংকগুলো খেলাপি ঋণের ভারে এখন কার্যত দিশেহারা। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের হালনাগাদ তথ্য অনুযায়ী, সেপ্টেম্বর প্রান্তিক শেষে সরকারি ব্যাংকগুলোর খেলাপি ঋণের হার দাঁড়িয়েছে ৪৯ দশমিক ৬৫ শতাংশে, আর ইসলামি ব্যাংকগুলোর ক্ষেত্রে তা আরও বেশি—৫৯ দশমিক শূন্য ২ শতাংশে পৌঁছেছে। অর্থাৎ, এই দুটি খাতেই বিতরণ করা ঋণের অর্ধেকের বেশি অনাদায়ি হয়ে পড়েছে। যেখানে বিশেষায়িত ব্যাংকের খেলাপির হার ৪১ দশমিক ৯৫ ও বিদেশি ব্যাংকগুলোর খেলাপির হার মাত্র ৪ দশমিক ৯২ শতাংশ।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রতিবেদন পর্যালোচনায় দেখা গেছে, শরিয়াহভিত্তিক ১০টি ইসলামি ব্যাংক মোট ৪ লাখ ৭৯ হাজার ৬০৫ কোটি টাকা ঋণ বিনিয়োগ করেছে। এর মধ্যে খেলাপি হয়েছে ২ লাখ ৮৩ হাজার ৫৫ কোটি টাকা। হিসাব বলছে, প্রতি ১০ টাকার প্রায় ৬ টাকাই এখন আদায় অনিশ্চিত। সেই তুলনায় শরিয়াহসহ দেশীয় বেসরকারি ব্যাংকগুলোর মোট খেলাপি ঋণের পরিমাণ ৪ লাখ ৬৩ হাজার ১৮৫ কোটি টাকা, যা মোট ঋণের ৩৩ দশমিক ৭৫ শতাংশ। এই তুলনাতেই স্পষ্ট, খেলাপির বোঝা এককভাবে সবচেয়ে বেশি ইসলামি ব্যাংকগুলোর ঘাড়েই।
সরকারি ছয় ব্যাংকের অবস্থাও খুব একটা ভিন্ন নয়। এসব ব্যাংকে খেলাপি ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ৫৮ হাজার ৭৯২ কোটি টাকা। মোট বিতরণ করা ঋণের প্রায় অর্ধেকই সেখানে অনাদায়ি। ব্যাংকার ও বিশ্লেষকদের মতে, এই সংকট রাতারাতি তৈরি হয়নি। বছরের পর বছর ধরে দুর্বল তদারকি, রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ এবং ইচ্ছাকৃত খেলাপিকে আড়াল করার প্রবণতা ধীরে ধীরে ব্যাংকগুলোকে এই জায়গায় এনে দাঁড় করিয়েছে।
বিশ্বব্যাংকের ঢাকা অফিসের সাবেক মুখ্য অর্থনীতিবিদ ড. জাহিদ হোসেন মনে করেন, খেলাপি ঋণের এত উচ্চ হার শুধু ব্যাংকিং খাতের ভেতরের সমস্যা নয়, এটি সামগ্রিক অর্থনীতির জন্য বড় ঝুঁকি। ব্যাংকগুলো নতুন ঋণ দিতে পারছে না, বিনিয়োগ কার্যক্রম স্থবির হয়ে পড়ছে, শিল্প-কারখানার সম্প্রসারণ থেমে যাচ্ছে। এর সরাসরি প্রভাব পড়ছে কর্মসংস্থানে। তাঁর মতে, খেলাপিদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা এবং ঋণ আদায়ে বাস্তবসম্মত উদ্যোগ ছাড়া পরিস্থিতির উন্নতি সম্ভব নয়।
ইসলামি ব্যাংকিং খাতে এস আলম, নাসা ও বেক্সিমকো গ্রুপের নাম বারবার আলোচনায় এসেছে। সংশ্লিষ্টদের ভাষ্য, দীর্ঘদিন সরকারি মদদে এসব গ্রুপ বিপুল ঋণ নিয়ে খেলাপি হলেও তা আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকৃতি পায়নি। এখন সেই বাস্তবতা দিনের আলোর মতো স্পষ্ট।
সামগ্রিকভাবে দেশের ব্যাংকিং খাতের চিত্র আরও উদ্বেগজনক। সেপ্টেম্বর পর্যন্ত মোট বিতরণ করা ঋণের পরিমাণ ১৮ লাখ ৩ হাজার ৮৪০ কোটি টাকা। এর মধ্যে খেলাপি হয়েছে প্রায় ৬ লাখ ৪৪ হাজার ৫১৫ কোটি টাকা, যা মোট ঋণের ৩৫ দশমিক ৭৩ শতাংশ। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক ড. মইনুল ইসলাম বলেন, বিগত সরকারের টানা সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে খেলাপি ঋণ কম দেখানোর যে অপচেষ্টা ছিল, তা এখন ভেঙে পড়েছে। সঠিক হিসাব সামনে আসায় হার ৩৬ শতাংশের কাছাকাছি পৌঁছেছে, যা বাস্তবতারই প্রতিফলন। তিনি আবারও শীর্ষ ১০ খেলাপির জন্য আলাদা ট্রাইব্যুনালের প্রয়োজনীয়তার কথা বলেন।
বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র আরিফ হোসেন খান জানান, আগের সরকারের আমলে লুকিয়ে রাখা খেলাপি ঋণ প্রকাশ পাওয়ায় এই হার বেড়েছে। তবে কেন্দ্রীয় ব্যাংক এখন ঋণ আদায়ে কঠোর নির্দেশনার কারণে আগের তুলনায় আদায় বেড়েছে।

দেশে চায়ের উৎপাদন বাড়লেও সংকুচিত হচ্ছে রপ্তানি বাজার। বাড়ছে না স্থানীয় বাজারও। চায়ের নিলাম দরে ধস নেমেছে। নিলামে চায়ের বর্তমান দাম উৎপাদন খরচের চেয়ে কম। অথচ খুচরায় বেশি দরেই চা কিনছেন ভোক্তারা।
২১ এপ্রিল ২০২৪
ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ পিএলসির শরিয়াহ সুপারভাইজরি কাউন্সিলের সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকাল রোববার (২৮ ডিসেম্বর) ইসলামী ব্যাংক টাওয়ারে আয়োজিত এ সভায় সভাপতিত্ব করেন কাউন্সিলের চেয়ারম্যান মুফতি ছাঈদ আহমাদ।
৭ ঘণ্টা আগে
শীতের রাত পেরিয়ে ভোরের আলো ফোটার আগেই যশোরের গ্রামাঞ্চলে শুরু হয় ব্যস্ততা। খেজুরগাছের নিচে হাজির হন গাছিরা। আগের বিকেলে কাটা গাছের ‘চোখ’ বেয়ে সারা রাত মাটির হাঁড়িতে জমেছে সুমিষ্ট খেজুর রস।
১৩ ঘণ্টা আগে
ডলার এখন রেমিট্যান্স, রপ্তানি, হুন্ডি নিয়ন্ত্রণ—সবকিছুর সঙ্গে জড়িয়ে আছে। তাই বাজারে ডলার হাতছাড়া হওয়ার ভয়ে সবাই চুপ। এই ডলারের সরবরাহ ও দাম স্থিতিশীল রাখার পাশাপাশি পুরো বৈদেশিক মুদ্রার ভারসাম্য ঠিক রাখতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক নিয়মিত বিরতিতে ডলার কিনছে। সেই ধারাবাহিকতায় শুধু চলতি ২০২৫-২৬ অর্থবছরের জুলাই
১ দিন আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

ডলার এখন রেমিট্যান্স, রপ্তানি, হুন্ডি নিয়ন্ত্রণ—সবকিছুর সঙ্গে জড়িয়ে আছে। তাই বাজারে ডলার হাতছাড়া হওয়ার ভয়ে সবাই চুপ। এই ডলারের সরবরাহ ও দাম স্থিতিশীল রাখার পাশাপাশি পুরো বৈদেশিক মুদ্রার ভারসাম্য ঠিক রাখতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক নিয়মিত বিরতিতে ডলার কিনছে। সেই ধারাবাহিকতায় শুধু চলতি ২০২৫-২৬ অর্থবছরের জুলাই থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত ৩ দশমিক শূন্য ৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার কিনেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র আরিফ হোসেন খান এ প্রসঙ্গে আজকের পত্রিকাকে জানান, ডিসেম্বর মাসে কেনা ডলারের পরিমাণ সবচেয়ে বেশি, ৯২ কোটি ডলার এবং চলতি অর্থবছর ধরে মোট কেনা হয়েছে ৩ দশমিক শূন্য ৫ বিলিয়ন ডলার। জুলাইয়ে প্রথম ডলার কেনা হয়েছিল ৪৮ কোটি ৪০ লাখ ডলার, আগস্টে ৪৫ কোটি ৪০ লাখ, সেপ্টেম্বরেই তা বেড়ে ৯২ কোটি ৯০ লাখে পৌঁছায়। এরপর অক্টোবর ও নভেম্বরে অবশ্য অনেকটাই কমে ১৪ কোটি ২০ লাখ এবং ৫ কোটি ৪০ লাখে নেমে আসে। ডিসেম্বরেই তার বড় উল্লম্ফন ঘটে, কেনার পরিমাণ দাঁড়ায় ৯২ কোটি ১০ লাখ ডলারে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংক বলেছে, রেমিট্যান্স বৃদ্ধি, হুন্ডি নিয়ন্ত্রণ, ব্যাংকিং চ্যানেলের শক্তিশালীকরণ এবং অনলাইনে আন্তর্জাতিক পণ্যের বাজার মনিটরিংয়ের ফলে বাজারে ডলারের সরবরাহ বেড়েছে। এ ছাড়া ওভার ও আন্ডার ইনভয়েসিং বন্ধ হওয়ায় ব্যবসার আড়ালে ডলার পাচার কমেছে। এসব কারণে ব্যাংকগুলোতে জমে থাকা অতিরিক্ত ডলার ক্রয় করছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
আগের অর্থবছরগুলোর সঙ্গে তুলনায় এবার কেন্দ্রীয় ব্যাংক ক্রেতার ভূমিকায়, যেখানে অতীতের বছরগুলোতে বড় অঙ্কে বিক্রি হতো। ২০২১-২২ অর্থবছরে বিক্রি হয়েছিল ৭ দশমিক ৬ বিলিয়ন, ২০২২-২৩ এ ছিল ১৩ দশমিক ৫ বিলিয়ন, ২০২৩-২৪ এ ১২ দশমিক ৭৯ বিলিয়ন এবং ২০২৪-২৫ এ ১ দশমিক ১২৪ বিলিয়ন ডলার। এই পরিবর্তন বাজারে স্থিতিশীলতার ইঙ্গিত দিচ্ছে।
বর্তমান খোলাবাজারে ডলারের দর ১২৪-১২৫ টাকার মধ্যে, যেখানে গত বছরের এই সময়ে তা ছিল ১৩১ টাকা। ২০২৪-২৫ অর্থবছরে দেশে পণ্য আমদানির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৬১ বিলিয়ন ডলার, আগের বছরের তুলনায় ৭ শতাংশ কম। অনলাইনে বাজার নজরদারি এবং ওভার/আন্ডার ইনভয়েসিং নিয়ন্ত্রণে আসায় পণ্যের আড়াল থেকে ডলার পাচারও অনেক কমেছে।
মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সৈয়দ মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ডলার ক্রয় বাজারে স্থিতিশীলতা আনার জন্য সময়োপযোগী পদক্ষেপ। এর ফলে আমদানি, বিনিয়োগ ও বাজার ভারসাম্য বজায় রাখতে সহায়ক হয়েছে।’
সব মিলিয়ে রেমিট্যান্স ও রপ্তানি আয় বৃদ্ধি, হুন্ডি নিয়ন্ত্রণ, পাচার কমে আসা—সব মিলিয়ে ডলার বাজারে স্বস্তি ফিরিয়েছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংক এখন ডলার বিক্রেতা নয়; বরং ক্রেতার ভূমিকায়, যা দেশের বৈদেশিক মুদ্রার ভারসাম্য বজায় রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে।

ডলার এখন রেমিট্যান্স, রপ্তানি, হুন্ডি নিয়ন্ত্রণ—সবকিছুর সঙ্গে জড়িয়ে আছে। তাই বাজারে ডলার হাতছাড়া হওয়ার ভয়ে সবাই চুপ। এই ডলারের সরবরাহ ও দাম স্থিতিশীল রাখার পাশাপাশি পুরো বৈদেশিক মুদ্রার ভারসাম্য ঠিক রাখতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক নিয়মিত বিরতিতে ডলার কিনছে। সেই ধারাবাহিকতায় শুধু চলতি ২০২৫-২৬ অর্থবছরের জুলাই থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত ৩ দশমিক শূন্য ৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার কিনেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র আরিফ হোসেন খান এ প্রসঙ্গে আজকের পত্রিকাকে জানান, ডিসেম্বর মাসে কেনা ডলারের পরিমাণ সবচেয়ে বেশি, ৯২ কোটি ডলার এবং চলতি অর্থবছর ধরে মোট কেনা হয়েছে ৩ দশমিক শূন্য ৫ বিলিয়ন ডলার। জুলাইয়ে প্রথম ডলার কেনা হয়েছিল ৪৮ কোটি ৪০ লাখ ডলার, আগস্টে ৪৫ কোটি ৪০ লাখ, সেপ্টেম্বরেই তা বেড়ে ৯২ কোটি ৯০ লাখে পৌঁছায়। এরপর অক্টোবর ও নভেম্বরে অবশ্য অনেকটাই কমে ১৪ কোটি ২০ লাখ এবং ৫ কোটি ৪০ লাখে নেমে আসে। ডিসেম্বরেই তার বড় উল্লম্ফন ঘটে, কেনার পরিমাণ দাঁড়ায় ৯২ কোটি ১০ লাখ ডলারে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংক বলেছে, রেমিট্যান্স বৃদ্ধি, হুন্ডি নিয়ন্ত্রণ, ব্যাংকিং চ্যানেলের শক্তিশালীকরণ এবং অনলাইনে আন্তর্জাতিক পণ্যের বাজার মনিটরিংয়ের ফলে বাজারে ডলারের সরবরাহ বেড়েছে। এ ছাড়া ওভার ও আন্ডার ইনভয়েসিং বন্ধ হওয়ায় ব্যবসার আড়ালে ডলার পাচার কমেছে। এসব কারণে ব্যাংকগুলোতে জমে থাকা অতিরিক্ত ডলার ক্রয় করছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
আগের অর্থবছরগুলোর সঙ্গে তুলনায় এবার কেন্দ্রীয় ব্যাংক ক্রেতার ভূমিকায়, যেখানে অতীতের বছরগুলোতে বড় অঙ্কে বিক্রি হতো। ২০২১-২২ অর্থবছরে বিক্রি হয়েছিল ৭ দশমিক ৬ বিলিয়ন, ২০২২-২৩ এ ছিল ১৩ দশমিক ৫ বিলিয়ন, ২০২৩-২৪ এ ১২ দশমিক ৭৯ বিলিয়ন এবং ২০২৪-২৫ এ ১ দশমিক ১২৪ বিলিয়ন ডলার। এই পরিবর্তন বাজারে স্থিতিশীলতার ইঙ্গিত দিচ্ছে।
বর্তমান খোলাবাজারে ডলারের দর ১২৪-১২৫ টাকার মধ্যে, যেখানে গত বছরের এই সময়ে তা ছিল ১৩১ টাকা। ২০২৪-২৫ অর্থবছরে দেশে পণ্য আমদানির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৬১ বিলিয়ন ডলার, আগের বছরের তুলনায় ৭ শতাংশ কম। অনলাইনে বাজার নজরদারি এবং ওভার/আন্ডার ইনভয়েসিং নিয়ন্ত্রণে আসায় পণ্যের আড়াল থেকে ডলার পাচারও অনেক কমেছে।
মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সৈয়দ মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ডলার ক্রয় বাজারে স্থিতিশীলতা আনার জন্য সময়োপযোগী পদক্ষেপ। এর ফলে আমদানি, বিনিয়োগ ও বাজার ভারসাম্য বজায় রাখতে সহায়ক হয়েছে।’
সব মিলিয়ে রেমিট্যান্স ও রপ্তানি আয় বৃদ্ধি, হুন্ডি নিয়ন্ত্রণ, পাচার কমে আসা—সব মিলিয়ে ডলার বাজারে স্বস্তি ফিরিয়েছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংক এখন ডলার বিক্রেতা নয়; বরং ক্রেতার ভূমিকায়, যা দেশের বৈদেশিক মুদ্রার ভারসাম্য বজায় রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে।

দেশে চায়ের উৎপাদন বাড়লেও সংকুচিত হচ্ছে রপ্তানি বাজার। বাড়ছে না স্থানীয় বাজারও। চায়ের নিলাম দরে ধস নেমেছে। নিলামে চায়ের বর্তমান দাম উৎপাদন খরচের চেয়ে কম। অথচ খুচরায় বেশি দরেই চা কিনছেন ভোক্তারা।
২১ এপ্রিল ২০২৪
ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ পিএলসির শরিয়াহ সুপারভাইজরি কাউন্সিলের সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকাল রোববার (২৮ ডিসেম্বর) ইসলামী ব্যাংক টাওয়ারে আয়োজিত এ সভায় সভাপতিত্ব করেন কাউন্সিলের চেয়ারম্যান মুফতি ছাঈদ আহমাদ।
৭ ঘণ্টা আগে
শীতের রাত পেরিয়ে ভোরের আলো ফোটার আগেই যশোরের গ্রামাঞ্চলে শুরু হয় ব্যস্ততা। খেজুরগাছের নিচে হাজির হন গাছিরা। আগের বিকেলে কাটা গাছের ‘চোখ’ বেয়ে সারা রাত মাটির হাঁড়িতে জমেছে সুমিষ্ট খেজুর রস।
১৩ ঘণ্টা আগে
দেশের ব্যাংকিং খাতের ভেতরে জমে থাকা অনিয়ম, রাজনৈতিক আশ্রয় ও কৃত্রিম হিসাবের পর্দা চলতি বছর যেন একে একে সরে যেতে শুরু করেছে। আর তাতেই সামনে এসেছে এক ভয়াবহ বাস্তবতা। সরকারি ও শরিয়াহভিত্তিক ইসলামি ব্যাংকগুলো খেলাপি ঋণের ভারে এখন কার্যত দিশেহারা।
২০ ঘণ্টা আগে