জাহাঙ্গীর আলম

দেড় লক্ষাধিক শাখায় এক শ কোটির বেশি গ্রাহকের কাছ থেকে আমানত সংগৃহীত হয়েছে ২ ট্রিলিয়ন ডলার। ভারতীয় ব্যাংকগুলোর কাগজপত্রে এমনই চোখ কপালে ওঠার মতো তথ্য-উপাত্ত। কিন্তু বাস্তব চিত্র ভয়াবহ।
ইচ্ছেমতো শাখা খুলে বিপুল পরিমাণ আমানত সংগ্রহ করেছে ভারতের ব্যাংকগুলো। নিয়ম-নীতির কোনো তোয়াক্কা না করে সেই টাকা ঋণ দেওয়া হয়েছে কিছু ‘বাজে’ প্রকল্পে। গত কয়েক বছরের মধ্যে ১০ বিলিয়ন ডলারের বেশি ঋণ গেছে এসব প্রকল্পে। এখন দেখা যাচ্ছে, এ ধরনের ঋণের ৬০ শতাংশই গেছে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলো থেকে। ২০১৮ সালের পর থেকে এখন পর্যন্ত পাঁচটি ব্যাংককে এ খাদ থেকে উদ্ধার করেছে সরকার।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির এ সম্পর্কিত এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ভারতে মন্দঋণ উদ্ধারের রেকর্ড সন্তোষজনক নয়। অবশ্য ২০১৬ সালে দেউলিয়া আইন করার পর পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হয়েছে। ৪০-৫০ শতাংশ পর্যন্ত মন্দঋণ উদ্ধার করা গেছে। এ আইনে সম্পদ অবসায়নের সুযোগ রাখা হয়েছে। আর এখন তো ঋণগ্রহীতারা মহামারিতে বিপর্যস্ত। এতে খেলাপি আরও বেড়েছে। সামনের মাসগুলোতে মন্দঋণের চিত্রটি ঊর্ধ্বমুখী হবে, তাতে সন্দেহ নেই।
শুধু ২০০৫ ও ২০০৯ সালের মধ্যেই করদাতাদের ৩৫ বিলিয়ন ডলার এই ঋণগ্রহীতাদের উদ্ধার কর্মসূচিতে ঢেলেছে সরকার। কিন্তু তাতে তেমন ফল হয়নি। গত বছরের জুলাই মাসে ফিচ রেটিংয়ে বলা হয়েছে, ভারতের পতনোন্মুখ ব্যাংকগুলোকে উদ্ধার করতে চাইলে ২০২২ সালের মধ্যে ১৫ থেকে ৫৮ বিলিয়ন ডলারের তহবিল জোগান দিতে হবে।
এই ঋণের বদনামের বোঝা কমাতে সরকার আবার পুরোনো কৌশলেই পা বাড়াচ্ছে। আবার তথাকথিত মন্দ ব্যাংকের (ব্যাড ব্যাংক) শরণাপন্ন হচ্ছে সরকার। মন্দঋণ ২৭ বিলিয়ন ডলার কমিয়ে আনার কথা ভাবা হচ্ছে। বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর ব্যালেন্স শিট পরিচ্ছন্ন করার এ উদ্যোগ অর্থনীতিতে কতটা ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে, সেটি পরিষ্কার নয়। কারণ, বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর কাগজে-কলমে আনুমানিক যে ১০০ বিলিয়ন ডলার মন্দঋণের তথ্য পাওয়া যাচ্ছে, উদ্ধার কর্মসূচির এই লক্ষ্য তার চার ভাগের এক ভাগ মাত্র। ঋণের এই উদ্দেশ্যপ্রণোদিত সংকোচন ব্যাংকিং ব্যবস্থাকেই শুধু ব্যাহত করবে না, এটি প্রবৃদ্ধিতেও নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে। কারণ, এতে ঝুঁকি গ্রহণে নারাজ ব্যাংকগুলো ঋণ দিতে অনীহা প্রকাশ করায় বেসরকারি বিনিয়োগে বড় পতন দেখা দিতে পারে।
ভারতে ‘মন্দ ব্যাংক’ বলতে সম্পদ পুনর্গঠন কোম্পানি বোঝানো হয়। এ ধরনের প্রতিষ্ঠান ক্ষতিগ্রস্ত ব্যাংক থেকে নির্দিষ্ট মূল্য ধরে মন্দঋণের দায় নেয়। এর পর তারা অবসায়ন বা সম্পত্তি বিক্রি করে, যেখানে ঋণদাতাকে ঋণের বিপরীতে শেয়ার দেওয়া হয়। বিভিন্ন কোম্পানির কাছে যে ঋণ দিয়ে বিপাকে পড়েছে, সেখান থেকে টাকা উদ্ধারে এই সম্পদ বিক্রির প্রক্রিয়া কিছুটা সহায়তা করে।
ভারত অবশ্য এই প্রথম এমন মন্দঋণের সমস্যায় পড়েনি। আর এমন পরিস্থিতি থেকে উত্তরণে ‘ব্যাড ব্যাংক’ কর্মসূচিও প্রথম নয়। প্রকৃতপক্ষে ভারতে এই তালিকায় ২৮টি প্রতিষ্ঠান আছে, যার সবগুলোই বেসরকারি। গত দুই দশকে এই পরিসংখ্যান দাঁড়িয়েছে। কিন্তু উদ্ধার চেষ্টার ফল খুবই হতাশাজনক।
মন্দঋণ সংকট মোকাবিলায় বর্তমানে সরকার দুটি কোম্পানি গঠন করেছে। এর একটি মন্দঋণের দায় গ্রহণ করবে এবং সেটি হবে রাষ্ট্রায়ত্ত। অন্যটি আংশিক বেসরকারি মালিকানাধীন। এরাই সম্পদ বিক্রির চেষ্টা করবে। বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর প্রত্যাশিত মূল্য এবং মন্দ ব্যাংকগুলো সম্পদ বিক্রি থেকে যে অর্থ পাবে, এই দুয়ের যে পার্থক্য হবে, সেটি দেবে সরকার।
তবে কাজটা মোটেও সহজ হবে না। প্রথমত, ব্যাংকগুলোকে ভ্যালুয়েশনের ব্যাপারে আগে একমত হতে হবে। ধরা যাক, একটি কোম্পানিতে ২০টি ঋণদাতা রয়েছে। এই সবাইকে অনেকগুলো বিষয়ে ঐকমত্যে আসতে হবে। ঋণের বর্তমান মূল্যমান কত, ঋণদাতার কাছে কত টাকার সম্পদ আছে, ঋণ বিক্রি করতে ব্যাংককে রাজি করানোও একটি বড় চ্যালেঞ্জ। বিনিয়োগ ও ঋণমান সংস্থা আইসিআরএর বাণিজ্যিক খাতের রেটিংবিষয়ক ভাইস প্রেসিডেন্ট অনিল গুপ্ত এমনটিই বলছেন। তিনি বলেন, ব্যাংকগুলো ঋণ বিতরণে সিদ্ধহস্ত। কিন্তু উদ্ধার এবং মন্দঋণ আদায়ের ক্ষেত্রে ততটা দক্ষ নয়।
দ্বিতীয়ত, দ্বিতীয় একটি কোম্পানির এখানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকায় থাকে। ধুঁকতে থাকা এবং বিলুপ্ত কোম্পানির সম্পদের নিলাম হবে। মূলত জমি, প্ল্যান্ট বা কারখানা এবং মেশিনারি ও কিছু স্ক্র্যাপের মূল্য নির্ধারণ করা হয়। ভারতে মন্দঋণের ৮০ শতাংশই রয়েছে প্রায় আধা ডজন কোম্পানিতে। এগুলোর মধ্যে আছে—লোহা, ইস্পাত, উড়োজাহাজ, খনি, সড়ক নির্মাণ, বিদ্যুৎ ও টেলিকম খাতের প্রতিষ্ঠান।
১২টি বৃহৎ খেলাপি কোম্পানি বা তথাকথিত ‘দ্য ডার্টি ডজন’ এক সময় ইস্পাত, বস্ত্র, অবকাঠামো ও জাহাজ নির্মাণ, বিদ্যুৎ বিতরণ, রিয়েল এস্টেট নিয়ে কাজ করত। তাদের কিছু সম্পদ এখন বিক্রি করতে হবে। অর্থনীতির এই মন্দা দশায় এসব সম্পদ বিক্রি করা বেশ কঠিনই হবে।
বিশেষজ্ঞেরা বলছেন, দীর্ঘ মেয়াদে ভারতকে অবশ্যই ব্যাংকিং খাতকে পরিচ্ছন্ন করতে হবে। বিশ্বের মধ্যে ভারতের ব্যাংকগুলোর কাছে সবচেয়ে বেশি নন পারফরমিং লোন (শ্রেণিকৃত ঋণ) রয়েছে। ২০০৬ থেকে ২০০৮ সালের মধ্যে এভাবে ঋণের পাহাড় জমেছে। এই সময়টাতেই প্রবৃদ্ধি ঊর্ধ্বমুখী ছিল এবং ঋণ নেওয়া সহজ করা হয়েছিল। ২০০৭-০৮-এর বৈশ্বিক অর্থনৈতিক সংকট এবং প্রবৃদ্ধিতে মন্দার মধ্যে ভারত তুলনামূলক নিরাপদ ছিল। সেই সঙ্গে বিনিয়োগ আগ্রহতেও সে অর্থে ভাটা পড়েনি।
ভারতের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সাবেক গভর্নর সি রাঙ্গারাজন বলেন, ভারতের ভালো সময়েই মন্দঋণের বাড়বাড়ন্ত সামনে এসেছে। বিশেষজ্ঞেরা বলছেন, এই পরিস্থিতিই অর্থনীতিতে একটি অযৌক্তিক উল্লম্ফনের গতিপথ তৈরিতে সহায়তা করেছে। উচ্চ ঋণ প্রবৃদ্ধি সত্ত্বেও উচ্চ অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি, নিম্ন মূল্যস্ফীতি এবং তুলনামূলক কম বাজেট ঘাটতির জগাখিচুড়িই ব্যাংক ও অন্যান্য প্রতিষ্ঠানকে উচ্চ ঝুঁকি গ্রহণে উৎসাহিত করেছে। প্যান্ডেমোনিয়াম: দ্য গ্রেট ইন্ডিয়ান ব্যাংকিং ট্র্যাজেডি বইয়ের লেখক তমাল বন্দ্যোপাধ্যায় এমনটিই বলছেন।
বিবিসির সঙ্গে আলাপে তমাল বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘অতি আত্মবিশ্বাসী ব্যাংকারেরা বহু ঋণের ক্ষেত্রে উদাসীন ছিলেন। ব্যাংকগুলো আসলে আশার ভেলায় ভেসেছে। আগের ঋণের সুদ সংগ্রহের মাধ্যমে তাঁরা কৃত্রিম মুনাফার হিসাব-নিকাশ করে নিশ্চিন্তে বসে ছিলেন। ভারতের অতিলোভী পুঁজিবাদীরা তাঁদের নতুন-পুরাতন প্রকল্পে অর্থ সংস্থান করতে ঋণ ও শেয়ার সংগ্রহে ব্যাংকঋণের দিকে ঝুঁকেছেন। একটি পুঁজিবাদী ব্যবস্থায় ব্যবসায়ীরা শেয়ারের মাধ্যমে অর্থ সংস্থানের দিকে ঝুঁকে থাকেন।’
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ভারতীয় ব্যাংকিং খাত পদ্ধতিগত সমস্যায় আক্রান্ত। এই ক্ষত সারাতে ‘মন্দ ব্যাংক’ কখনো জাদুমন্ত্রের মতো কাজ করবে না। রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোকে অবশ্যই সত্যিকার অর্থে স্বাধীন হতে হবে, তাদের কার্যক্রমকে স্বচ্ছ করতে হবে। সেই সঙ্গে বাজারের ঝুঁকি বিবেচনায় নিয়ে ঋণদাতাদের আরও দক্ষ ও সজাগ থাকতে হবে। এই সময়ে তাদের ঝুঁকি গ্রহণের অভিলাষকেও সংযত করতে হবে। এখানে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের আরও উন্নত নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা ভালো কাজে দিতে পারে। ঋণ হস্তান্তর প্রক্রিয়াও অবশ্যই স্বচ্ছ হতে হবে। মন্দ ব্যাংকের ধারণা খারাপ না। তবে এর জন্য দরকার সঠিক দিকনির্দেশনা। ভারত সরকার এই মুহূর্তে যে পদক্ষেপ নিয়েছে, ঋণের পাহাড় কাটতে, তা কতখানি কাজে আসবে, সেটি সময়ই বলে দেবে।

দেড় লক্ষাধিক শাখায় এক শ কোটির বেশি গ্রাহকের কাছ থেকে আমানত সংগৃহীত হয়েছে ২ ট্রিলিয়ন ডলার। ভারতীয় ব্যাংকগুলোর কাগজপত্রে এমনই চোখ কপালে ওঠার মতো তথ্য-উপাত্ত। কিন্তু বাস্তব চিত্র ভয়াবহ।
ইচ্ছেমতো শাখা খুলে বিপুল পরিমাণ আমানত সংগ্রহ করেছে ভারতের ব্যাংকগুলো। নিয়ম-নীতির কোনো তোয়াক্কা না করে সেই টাকা ঋণ দেওয়া হয়েছে কিছু ‘বাজে’ প্রকল্পে। গত কয়েক বছরের মধ্যে ১০ বিলিয়ন ডলারের বেশি ঋণ গেছে এসব প্রকল্পে। এখন দেখা যাচ্ছে, এ ধরনের ঋণের ৬০ শতাংশই গেছে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলো থেকে। ২০১৮ সালের পর থেকে এখন পর্যন্ত পাঁচটি ব্যাংককে এ খাদ থেকে উদ্ধার করেছে সরকার।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির এ সম্পর্কিত এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ভারতে মন্দঋণ উদ্ধারের রেকর্ড সন্তোষজনক নয়। অবশ্য ২০১৬ সালে দেউলিয়া আইন করার পর পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হয়েছে। ৪০-৫০ শতাংশ পর্যন্ত মন্দঋণ উদ্ধার করা গেছে। এ আইনে সম্পদ অবসায়নের সুযোগ রাখা হয়েছে। আর এখন তো ঋণগ্রহীতারা মহামারিতে বিপর্যস্ত। এতে খেলাপি আরও বেড়েছে। সামনের মাসগুলোতে মন্দঋণের চিত্রটি ঊর্ধ্বমুখী হবে, তাতে সন্দেহ নেই।
শুধু ২০০৫ ও ২০০৯ সালের মধ্যেই করদাতাদের ৩৫ বিলিয়ন ডলার এই ঋণগ্রহীতাদের উদ্ধার কর্মসূচিতে ঢেলেছে সরকার। কিন্তু তাতে তেমন ফল হয়নি। গত বছরের জুলাই মাসে ফিচ রেটিংয়ে বলা হয়েছে, ভারতের পতনোন্মুখ ব্যাংকগুলোকে উদ্ধার করতে চাইলে ২০২২ সালের মধ্যে ১৫ থেকে ৫৮ বিলিয়ন ডলারের তহবিল জোগান দিতে হবে।
এই ঋণের বদনামের বোঝা কমাতে সরকার আবার পুরোনো কৌশলেই পা বাড়াচ্ছে। আবার তথাকথিত মন্দ ব্যাংকের (ব্যাড ব্যাংক) শরণাপন্ন হচ্ছে সরকার। মন্দঋণ ২৭ বিলিয়ন ডলার কমিয়ে আনার কথা ভাবা হচ্ছে। বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর ব্যালেন্স শিট পরিচ্ছন্ন করার এ উদ্যোগ অর্থনীতিতে কতটা ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে, সেটি পরিষ্কার নয়। কারণ, বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর কাগজে-কলমে আনুমানিক যে ১০০ বিলিয়ন ডলার মন্দঋণের তথ্য পাওয়া যাচ্ছে, উদ্ধার কর্মসূচির এই লক্ষ্য তার চার ভাগের এক ভাগ মাত্র। ঋণের এই উদ্দেশ্যপ্রণোদিত সংকোচন ব্যাংকিং ব্যবস্থাকেই শুধু ব্যাহত করবে না, এটি প্রবৃদ্ধিতেও নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে। কারণ, এতে ঝুঁকি গ্রহণে নারাজ ব্যাংকগুলো ঋণ দিতে অনীহা প্রকাশ করায় বেসরকারি বিনিয়োগে বড় পতন দেখা দিতে পারে।
ভারতে ‘মন্দ ব্যাংক’ বলতে সম্পদ পুনর্গঠন কোম্পানি বোঝানো হয়। এ ধরনের প্রতিষ্ঠান ক্ষতিগ্রস্ত ব্যাংক থেকে নির্দিষ্ট মূল্য ধরে মন্দঋণের দায় নেয়। এর পর তারা অবসায়ন বা সম্পত্তি বিক্রি করে, যেখানে ঋণদাতাকে ঋণের বিপরীতে শেয়ার দেওয়া হয়। বিভিন্ন কোম্পানির কাছে যে ঋণ দিয়ে বিপাকে পড়েছে, সেখান থেকে টাকা উদ্ধারে এই সম্পদ বিক্রির প্রক্রিয়া কিছুটা সহায়তা করে।
ভারত অবশ্য এই প্রথম এমন মন্দঋণের সমস্যায় পড়েনি। আর এমন পরিস্থিতি থেকে উত্তরণে ‘ব্যাড ব্যাংক’ কর্মসূচিও প্রথম নয়। প্রকৃতপক্ষে ভারতে এই তালিকায় ২৮টি প্রতিষ্ঠান আছে, যার সবগুলোই বেসরকারি। গত দুই দশকে এই পরিসংখ্যান দাঁড়িয়েছে। কিন্তু উদ্ধার চেষ্টার ফল খুবই হতাশাজনক।
মন্দঋণ সংকট মোকাবিলায় বর্তমানে সরকার দুটি কোম্পানি গঠন করেছে। এর একটি মন্দঋণের দায় গ্রহণ করবে এবং সেটি হবে রাষ্ট্রায়ত্ত। অন্যটি আংশিক বেসরকারি মালিকানাধীন। এরাই সম্পদ বিক্রির চেষ্টা করবে। বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর প্রত্যাশিত মূল্য এবং মন্দ ব্যাংকগুলো সম্পদ বিক্রি থেকে যে অর্থ পাবে, এই দুয়ের যে পার্থক্য হবে, সেটি দেবে সরকার।
তবে কাজটা মোটেও সহজ হবে না। প্রথমত, ব্যাংকগুলোকে ভ্যালুয়েশনের ব্যাপারে আগে একমত হতে হবে। ধরা যাক, একটি কোম্পানিতে ২০টি ঋণদাতা রয়েছে। এই সবাইকে অনেকগুলো বিষয়ে ঐকমত্যে আসতে হবে। ঋণের বর্তমান মূল্যমান কত, ঋণদাতার কাছে কত টাকার সম্পদ আছে, ঋণ বিক্রি করতে ব্যাংককে রাজি করানোও একটি বড় চ্যালেঞ্জ। বিনিয়োগ ও ঋণমান সংস্থা আইসিআরএর বাণিজ্যিক খাতের রেটিংবিষয়ক ভাইস প্রেসিডেন্ট অনিল গুপ্ত এমনটিই বলছেন। তিনি বলেন, ব্যাংকগুলো ঋণ বিতরণে সিদ্ধহস্ত। কিন্তু উদ্ধার এবং মন্দঋণ আদায়ের ক্ষেত্রে ততটা দক্ষ নয়।
দ্বিতীয়ত, দ্বিতীয় একটি কোম্পানির এখানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকায় থাকে। ধুঁকতে থাকা এবং বিলুপ্ত কোম্পানির সম্পদের নিলাম হবে। মূলত জমি, প্ল্যান্ট বা কারখানা এবং মেশিনারি ও কিছু স্ক্র্যাপের মূল্য নির্ধারণ করা হয়। ভারতে মন্দঋণের ৮০ শতাংশই রয়েছে প্রায় আধা ডজন কোম্পানিতে। এগুলোর মধ্যে আছে—লোহা, ইস্পাত, উড়োজাহাজ, খনি, সড়ক নির্মাণ, বিদ্যুৎ ও টেলিকম খাতের প্রতিষ্ঠান।
১২টি বৃহৎ খেলাপি কোম্পানি বা তথাকথিত ‘দ্য ডার্টি ডজন’ এক সময় ইস্পাত, বস্ত্র, অবকাঠামো ও জাহাজ নির্মাণ, বিদ্যুৎ বিতরণ, রিয়েল এস্টেট নিয়ে কাজ করত। তাদের কিছু সম্পদ এখন বিক্রি করতে হবে। অর্থনীতির এই মন্দা দশায় এসব সম্পদ বিক্রি করা বেশ কঠিনই হবে।
বিশেষজ্ঞেরা বলছেন, দীর্ঘ মেয়াদে ভারতকে অবশ্যই ব্যাংকিং খাতকে পরিচ্ছন্ন করতে হবে। বিশ্বের মধ্যে ভারতের ব্যাংকগুলোর কাছে সবচেয়ে বেশি নন পারফরমিং লোন (শ্রেণিকৃত ঋণ) রয়েছে। ২০০৬ থেকে ২০০৮ সালের মধ্যে এভাবে ঋণের পাহাড় জমেছে। এই সময়টাতেই প্রবৃদ্ধি ঊর্ধ্বমুখী ছিল এবং ঋণ নেওয়া সহজ করা হয়েছিল। ২০০৭-০৮-এর বৈশ্বিক অর্থনৈতিক সংকট এবং প্রবৃদ্ধিতে মন্দার মধ্যে ভারত তুলনামূলক নিরাপদ ছিল। সেই সঙ্গে বিনিয়োগ আগ্রহতেও সে অর্থে ভাটা পড়েনি।
ভারতের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সাবেক গভর্নর সি রাঙ্গারাজন বলেন, ভারতের ভালো সময়েই মন্দঋণের বাড়বাড়ন্ত সামনে এসেছে। বিশেষজ্ঞেরা বলছেন, এই পরিস্থিতিই অর্থনীতিতে একটি অযৌক্তিক উল্লম্ফনের গতিপথ তৈরিতে সহায়তা করেছে। উচ্চ ঋণ প্রবৃদ্ধি সত্ত্বেও উচ্চ অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি, নিম্ন মূল্যস্ফীতি এবং তুলনামূলক কম বাজেট ঘাটতির জগাখিচুড়িই ব্যাংক ও অন্যান্য প্রতিষ্ঠানকে উচ্চ ঝুঁকি গ্রহণে উৎসাহিত করেছে। প্যান্ডেমোনিয়াম: দ্য গ্রেট ইন্ডিয়ান ব্যাংকিং ট্র্যাজেডি বইয়ের লেখক তমাল বন্দ্যোপাধ্যায় এমনটিই বলছেন।
বিবিসির সঙ্গে আলাপে তমাল বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘অতি আত্মবিশ্বাসী ব্যাংকারেরা বহু ঋণের ক্ষেত্রে উদাসীন ছিলেন। ব্যাংকগুলো আসলে আশার ভেলায় ভেসেছে। আগের ঋণের সুদ সংগ্রহের মাধ্যমে তাঁরা কৃত্রিম মুনাফার হিসাব-নিকাশ করে নিশ্চিন্তে বসে ছিলেন। ভারতের অতিলোভী পুঁজিবাদীরা তাঁদের নতুন-পুরাতন প্রকল্পে অর্থ সংস্থান করতে ঋণ ও শেয়ার সংগ্রহে ব্যাংকঋণের দিকে ঝুঁকেছেন। একটি পুঁজিবাদী ব্যবস্থায় ব্যবসায়ীরা শেয়ারের মাধ্যমে অর্থ সংস্থানের দিকে ঝুঁকে থাকেন।’
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ভারতীয় ব্যাংকিং খাত পদ্ধতিগত সমস্যায় আক্রান্ত। এই ক্ষত সারাতে ‘মন্দ ব্যাংক’ কখনো জাদুমন্ত্রের মতো কাজ করবে না। রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোকে অবশ্যই সত্যিকার অর্থে স্বাধীন হতে হবে, তাদের কার্যক্রমকে স্বচ্ছ করতে হবে। সেই সঙ্গে বাজারের ঝুঁকি বিবেচনায় নিয়ে ঋণদাতাদের আরও দক্ষ ও সজাগ থাকতে হবে। এই সময়ে তাদের ঝুঁকি গ্রহণের অভিলাষকেও সংযত করতে হবে। এখানে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের আরও উন্নত নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা ভালো কাজে দিতে পারে। ঋণ হস্তান্তর প্রক্রিয়াও অবশ্যই স্বচ্ছ হতে হবে। মন্দ ব্যাংকের ধারণা খারাপ না। তবে এর জন্য দরকার সঠিক দিকনির্দেশনা। ভারত সরকার এই মুহূর্তে যে পদক্ষেপ নিয়েছে, ঋণের পাহাড় কাটতে, তা কতখানি কাজে আসবে, সেটি সময়ই বলে দেবে।

দেশের ব্যাংকিং খাতের ভেতরে জমে থাকা অনিয়ম, রাজনৈতিক আশ্রয় ও কৃত্রিম হিসাবের পর্দা চলতি বছর যেন একে একে সরে যেতে শুরু করেছে। আর তাতেই সামনে এসেছে এক ভয়াবহ বাস্তবতা। সরকারি ও শরিয়াহভিত্তিক ইসলামি ব্যাংকগুলো খেলাপি ঋণের ভারে এখন কার্যত দিশেহারা।
২ ঘণ্টা আগে
ডলার এখন রেমিট্যান্স, রপ্তানি, হুন্ডি নিয়ন্ত্রণ—সবকিছুর সঙ্গে জড়িয়ে আছে। তাই বাজারে ডলার হাতছাড়া হওয়ার ভয়ে সবাই চুপ। এই ডলারের সরবরাহ ও দাম স্থিতিশীল রাখার পাশাপাশি পুরো বৈদেশিক মুদ্রার ভারসাম্য ঠিক রাখতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক নিয়মিত বিরতিতে ডলার কিনছে। সেই ধারাবাহিকতায় শুধু চলতি ২০২৫-২৬ অর্থবছরের জুলাই
৬ ঘণ্টা আগে
জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যানের দপ্তরের ব্যক্তিগত সহকারী মো. কাউসারের নাম ভাঙিয়ে একটি প্রতারক চক্র বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের কাছে ভয়ভীতি দেখিয়ে টাকা দাবি করছে। এ ঘটনায় শেরেবাংলা নগর থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হয়েছে এবং আনুষ্ঠানিক সতর্কবার্তা দিয়েছে এনবিআর।
৬ ঘণ্টা আগে
যুক্তরাষ্ট্র থেকে আরও ৫৬ হাজার ৮৯০ টন গম নিয়ে একটি জাহাজ চট্টগ্রাম বন্দরের বহির্নোঙরে পৌঁছেছে। আজ রোববার খাদ্য মন্ত্রণালয়ের এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
৬ ঘণ্টা আগেজয়নাল আবেদীন খান, ঢাকা

দেশের ব্যাংকিং খাতের ভেতরে জমে থাকা অনিয়ম, রাজনৈতিক আশ্রয় ও কৃত্রিম হিসাবের পর্দা চলতি বছর যেন একে একে সরে যেতে শুরু করেছে। আর তাতেই সামনে এসেছে এক ভয়াবহ বাস্তবতা। সরকারি ও শরিয়াহভিত্তিক ইসলামি ব্যাংকগুলো খেলাপি ঋণের ভারে এখন কার্যত দিশেহারা। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের হালনাগাদ তথ্য অনুযায়ী, সেপ্টেম্বর প্রান্তিক শেষে সরকারি ব্যাংকগুলোর খেলাপি ঋণের হার দাঁড়িয়েছে ৪৯ দশমিক ৬৫ শতাংশে, আর ইসলামি ব্যাংকগুলোর ক্ষেত্রে তা আরও বেশি—৫৯ দশমিক শূন্য ২ শতাংশে পৌঁছেছে। অর্থাৎ, এই দুটি খাতেই বিতরণ করা ঋণের অর্ধেকের বেশি অনাদায়ি হয়ে পড়েছে। যেখানে বিশেষায়িত ব্যাংকের খেলাপির হার ৪১ দশমিক ৯৫ ও বিদেশি ব্যাংকগুলোর খেলাপির হার মাত্র ৪ দশমিক ৯২ শতাংশ।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রতিবেদন পর্যালোচনায় দেখা গেছে, শরিয়াহভিত্তিক ১০টি ইসলামি ব্যাংক মোট ৪ লাখ ৭৯ হাজার ৬০৫ কোটি টাকা ঋণ বিনিয়োগ করেছে। এর মধ্যে খেলাপি হয়েছে ২ লাখ ৮৩ হাজার ৫৫ কোটি টাকা। হিসাব বলছে, প্রতি ১০ টাকার প্রায় ৬ টাকাই এখন আদায় অনিশ্চিত। সেই তুলনায় শরিয়াহসহ দেশীয় বেসরকারি ব্যাংকগুলোর মোট খেলাপি ঋণের পরিমাণ ৪ লাখ ৬৩ হাজার ১৮৫ কোটি টাকা, যা মোট ঋণের ৩৩ দশমিক ৭৫ শতাংশ। এই তুলনাতেই স্পষ্ট, খেলাপির বোঝা এককভাবে সবচেয়ে বেশি ইসলামি ব্যাংকগুলোর ঘাড়েই।
সরকারি ছয় ব্যাংকের অবস্থাও খুব একটা ভিন্ন নয়। এসব ব্যাংকে খেলাপি ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ৫৮ হাজার ৭৯২ কোটি টাকা। মোট বিতরণ করা ঋণের প্রায় অর্ধেকই সেখানে অনাদায়ি। ব্যাংকার ও বিশ্লেষকদের মতে, এই সংকট রাতারাতি তৈরি হয়নি। বছরের পর বছর ধরে দুর্বল তদারকি, রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ এবং ইচ্ছাকৃত খেলাপিকে আড়াল করার প্রবণতা ধীরে ধীরে ব্যাংকগুলোকে এই জায়গায় এনে দাঁড় করিয়েছে।
বিশ্বব্যাংকের ঢাকা অফিসের সাবেক মুখ্য অর্থনীতিবিদ ড. জাহিদ হোসেন মনে করেন, খেলাপি ঋণের এত উচ্চ হার শুধু ব্যাংকিং খাতের ভেতরের সমস্যা নয়, এটি সামগ্রিক অর্থনীতির জন্য বড় ঝুঁকি। ব্যাংকগুলো নতুন ঋণ দিতে পারছে না, বিনিয়োগ কার্যক্রম স্থবির হয়ে পড়ছে, শিল্প-কারখানার সম্প্রসারণ থেমে যাচ্ছে। এর সরাসরি প্রভাব পড়ছে কর্মসংস্থানে। তাঁর মতে, খেলাপিদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা এবং ঋণ আদায়ে বাস্তবসম্মত উদ্যোগ ছাড়া পরিস্থিতির উন্নতি সম্ভব নয়।
ইসলামি ব্যাংকিং খাতে এস আলম, নাসা ও বেক্সিমকো গ্রুপের নাম বারবার আলোচনায় এসেছে। সংশ্লিষ্টদের ভাষ্য, দীর্ঘদিন সরকারি মদদে এসব গ্রুপ বিপুল ঋণ নিয়ে খেলাপি হলেও তা আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকৃতি পায়নি। এখন সেই বাস্তবতা দিনের আলোর মতো স্পষ্ট।
সামগ্রিকভাবে দেশের ব্যাংকিং খাতের চিত্র আরও উদ্বেগজনক। সেপ্টেম্বর পর্যন্ত মোট বিতরণ করা ঋণের পরিমাণ ১৮ লাখ ৩ হাজার ৮৪০ কোটি টাকা। এর মধ্যে খেলাপি হয়েছে প্রায় ৬ লাখ ৪৪ হাজার ৫১৫ কোটি টাকা, যা মোট ঋণের ৩৫ দশমিক ৭৩ শতাংশ। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক ড. মইনুল ইসলাম বলেন, বিগত সরকারের টানা সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে খেলাপি ঋণ কম দেখানোর যে অপচেষ্টা ছিল, তা এখন ভেঙে পড়েছে। সঠিক হিসাব সামনে আসায় হার ৩৬ শতাংশের কাছাকাছি পৌঁছেছে, যা বাস্তবতারই প্রতিফলন। তিনি আবারও শীর্ষ ১০ খেলাপির জন্য আলাদা ট্রাইব্যুনালের প্রয়োজনীয়তার কথা বলেন।
বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র আরিফ হোসেন খান জানান, আগের সরকারের আমলে লুকিয়ে রাখা খেলাপি ঋণ প্রকাশ পাওয়ায় এই হার বেড়েছে। তবে কেন্দ্রীয় ব্যাংক এখন ঋণ আদায়ে কঠোর নির্দেশনার কারণে আগের তুলনায় আদায় বেড়েছে।

দেশের ব্যাংকিং খাতের ভেতরে জমে থাকা অনিয়ম, রাজনৈতিক আশ্রয় ও কৃত্রিম হিসাবের পর্দা চলতি বছর যেন একে একে সরে যেতে শুরু করেছে। আর তাতেই সামনে এসেছে এক ভয়াবহ বাস্তবতা। সরকারি ও শরিয়াহভিত্তিক ইসলামি ব্যাংকগুলো খেলাপি ঋণের ভারে এখন কার্যত দিশেহারা। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের হালনাগাদ তথ্য অনুযায়ী, সেপ্টেম্বর প্রান্তিক শেষে সরকারি ব্যাংকগুলোর খেলাপি ঋণের হার দাঁড়িয়েছে ৪৯ দশমিক ৬৫ শতাংশে, আর ইসলামি ব্যাংকগুলোর ক্ষেত্রে তা আরও বেশি—৫৯ দশমিক শূন্য ২ শতাংশে পৌঁছেছে। অর্থাৎ, এই দুটি খাতেই বিতরণ করা ঋণের অর্ধেকের বেশি অনাদায়ি হয়ে পড়েছে। যেখানে বিশেষায়িত ব্যাংকের খেলাপির হার ৪১ দশমিক ৯৫ ও বিদেশি ব্যাংকগুলোর খেলাপির হার মাত্র ৪ দশমিক ৯২ শতাংশ।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রতিবেদন পর্যালোচনায় দেখা গেছে, শরিয়াহভিত্তিক ১০টি ইসলামি ব্যাংক মোট ৪ লাখ ৭৯ হাজার ৬০৫ কোটি টাকা ঋণ বিনিয়োগ করেছে। এর মধ্যে খেলাপি হয়েছে ২ লাখ ৮৩ হাজার ৫৫ কোটি টাকা। হিসাব বলছে, প্রতি ১০ টাকার প্রায় ৬ টাকাই এখন আদায় অনিশ্চিত। সেই তুলনায় শরিয়াহসহ দেশীয় বেসরকারি ব্যাংকগুলোর মোট খেলাপি ঋণের পরিমাণ ৪ লাখ ৬৩ হাজার ১৮৫ কোটি টাকা, যা মোট ঋণের ৩৩ দশমিক ৭৫ শতাংশ। এই তুলনাতেই স্পষ্ট, খেলাপির বোঝা এককভাবে সবচেয়ে বেশি ইসলামি ব্যাংকগুলোর ঘাড়েই।
সরকারি ছয় ব্যাংকের অবস্থাও খুব একটা ভিন্ন নয়। এসব ব্যাংকে খেলাপি ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ৫৮ হাজার ৭৯২ কোটি টাকা। মোট বিতরণ করা ঋণের প্রায় অর্ধেকই সেখানে অনাদায়ি। ব্যাংকার ও বিশ্লেষকদের মতে, এই সংকট রাতারাতি তৈরি হয়নি। বছরের পর বছর ধরে দুর্বল তদারকি, রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ এবং ইচ্ছাকৃত খেলাপিকে আড়াল করার প্রবণতা ধীরে ধীরে ব্যাংকগুলোকে এই জায়গায় এনে দাঁড় করিয়েছে।
বিশ্বব্যাংকের ঢাকা অফিসের সাবেক মুখ্য অর্থনীতিবিদ ড. জাহিদ হোসেন মনে করেন, খেলাপি ঋণের এত উচ্চ হার শুধু ব্যাংকিং খাতের ভেতরের সমস্যা নয়, এটি সামগ্রিক অর্থনীতির জন্য বড় ঝুঁকি। ব্যাংকগুলো নতুন ঋণ দিতে পারছে না, বিনিয়োগ কার্যক্রম স্থবির হয়ে পড়ছে, শিল্প-কারখানার সম্প্রসারণ থেমে যাচ্ছে। এর সরাসরি প্রভাব পড়ছে কর্মসংস্থানে। তাঁর মতে, খেলাপিদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা এবং ঋণ আদায়ে বাস্তবসম্মত উদ্যোগ ছাড়া পরিস্থিতির উন্নতি সম্ভব নয়।
ইসলামি ব্যাংকিং খাতে এস আলম, নাসা ও বেক্সিমকো গ্রুপের নাম বারবার আলোচনায় এসেছে। সংশ্লিষ্টদের ভাষ্য, দীর্ঘদিন সরকারি মদদে এসব গ্রুপ বিপুল ঋণ নিয়ে খেলাপি হলেও তা আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকৃতি পায়নি। এখন সেই বাস্তবতা দিনের আলোর মতো স্পষ্ট।
সামগ্রিকভাবে দেশের ব্যাংকিং খাতের চিত্র আরও উদ্বেগজনক। সেপ্টেম্বর পর্যন্ত মোট বিতরণ করা ঋণের পরিমাণ ১৮ লাখ ৩ হাজার ৮৪০ কোটি টাকা। এর মধ্যে খেলাপি হয়েছে প্রায় ৬ লাখ ৪৪ হাজার ৫১৫ কোটি টাকা, যা মোট ঋণের ৩৫ দশমিক ৭৩ শতাংশ। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক ড. মইনুল ইসলাম বলেন, বিগত সরকারের টানা সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে খেলাপি ঋণ কম দেখানোর যে অপচেষ্টা ছিল, তা এখন ভেঙে পড়েছে। সঠিক হিসাব সামনে আসায় হার ৩৬ শতাংশের কাছাকাছি পৌঁছেছে, যা বাস্তবতারই প্রতিফলন। তিনি আবারও শীর্ষ ১০ খেলাপির জন্য আলাদা ট্রাইব্যুনালের প্রয়োজনীয়তার কথা বলেন।
বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র আরিফ হোসেন খান জানান, আগের সরকারের আমলে লুকিয়ে রাখা খেলাপি ঋণ প্রকাশ পাওয়ায় এই হার বেড়েছে। তবে কেন্দ্রীয় ব্যাংক এখন ঋণ আদায়ে কঠোর নির্দেশনার কারণে আগের তুলনায় আদায় বেড়েছে।

এই ঋণের বদনামের বোঝা কমাতে সরকার আবার পুরোনো কৌশলেই পা বাড়াচ্ছে। আবার তথাকথিত মন্দ ব্যাংকের (ব্যাড ব্যাংক) শরণাপন্ন হচ্ছে সরকার। মন্দ ঋণ ২৭ বিলিয়ন ডলার কমিয়ে আনার কথা ভাবা হচ্ছে। বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর ব্যালেন্স শিট পরিচ্ছন্ন করার এ উদ্যোগ অর্থনীতিতে কতটা ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে সেটি পরিষ্কার নয়।
০১ অক্টোবর ২০২১
ডলার এখন রেমিট্যান্স, রপ্তানি, হুন্ডি নিয়ন্ত্রণ—সবকিছুর সঙ্গে জড়িয়ে আছে। তাই বাজারে ডলার হাতছাড়া হওয়ার ভয়ে সবাই চুপ। এই ডলারের সরবরাহ ও দাম স্থিতিশীল রাখার পাশাপাশি পুরো বৈদেশিক মুদ্রার ভারসাম্য ঠিক রাখতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক নিয়মিত বিরতিতে ডলার কিনছে। সেই ধারাবাহিকতায় শুধু চলতি ২০২৫-২৬ অর্থবছরের জুলাই
৬ ঘণ্টা আগে
জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যানের দপ্তরের ব্যক্তিগত সহকারী মো. কাউসারের নাম ভাঙিয়ে একটি প্রতারক চক্র বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের কাছে ভয়ভীতি দেখিয়ে টাকা দাবি করছে। এ ঘটনায় শেরেবাংলা নগর থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হয়েছে এবং আনুষ্ঠানিক সতর্কবার্তা দিয়েছে এনবিআর।
৬ ঘণ্টা আগে
যুক্তরাষ্ট্র থেকে আরও ৫৬ হাজার ৮৯০ টন গম নিয়ে একটি জাহাজ চট্টগ্রাম বন্দরের বহির্নোঙরে পৌঁছেছে। আজ রোববার খাদ্য মন্ত্রণালয়ের এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
৬ ঘণ্টা আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

ডলার এখন রেমিট্যান্স, রপ্তানি, হুন্ডি নিয়ন্ত্রণ—সবকিছুর সঙ্গে জড়িয়ে আছে। তাই বাজারে ডলার হাতছাড়া হওয়ার ভয়ে সবাই চুপ। এই ডলারের সরবরাহ ও দাম স্থিতিশীল রাখার পাশাপাশি পুরো বৈদেশিক মুদ্রার ভারসাম্য ঠিক রাখতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক নিয়মিত বিরতিতে ডলার কিনছে। সেই ধারাবাহিকতায় শুধু চলতি ২০২৫-২৬ অর্থবছরের জুলাই থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত ৩ দশমিক শূন্য ৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার কিনেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র আরিফ হোসেন খান এ প্রসঙ্গে আজকের পত্রিকাকে জানান, ডিসেম্বর মাসে কেনা ডলারের পরিমাণ সবচেয়ে বেশি, ৯২ কোটি ডলার এবং চলতি অর্থবছর ধরে মোট কেনা হয়েছে ৩ দশমিক শূন্য ৫ বিলিয়ন ডলার। জুলাইয়ে প্রথম ডলার কেনা হয়েছিল ৪৮ কোটি ৪০ লাখ ডলার, আগস্টে ৪৫ কোটি ৪০ লাখ, সেপ্টেম্বরেই তা বেড়ে ৯২ কোটি ৯০ লাখে পৌঁছায়। এরপর অক্টোবর ও নভেম্বরে অবশ্য অনেকটাই কমে ১৪ কোটি ২০ লাখ এবং ৫ কোটি ৪০ লাখে নেমে আসে। ডিসেম্বরেই তার বড় উল্লম্ফন ঘটে, কেনার পরিমাণ দাঁড়ায় ৯২ কোটি ১০ লাখ ডলারে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংক বলেছে, রেমিট্যান্স বৃদ্ধি, হুন্ডি নিয়ন্ত্রণ, ব্যাংকিং চ্যানেলের শক্তিশালীকরণ এবং অনলাইনে আন্তর্জাতিক পণ্যের বাজার মনিটরিংয়ের ফলে বাজারে ডলারের সরবরাহ বেড়েছে। এ ছাড়া ওভার ও আন্ডার ইনভয়েসিং বন্ধ হওয়ায় ব্যবসার আড়ালে ডলার পাচার কমেছে। এসব কারণে ব্যাংকগুলোতে জমে থাকা অতিরিক্ত ডলার ক্রয় করছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
আগের অর্থবছরগুলোর সঙ্গে তুলনায় এবার কেন্দ্রীয় ব্যাংক ক্রেতার ভূমিকায়, যেখানে অতীতের বছরগুলোতে বড় অঙ্কে বিক্রি হতো। ২০২১-২২ অর্থবছরে বিক্রি হয়েছিল ৭ দশমিক ৬ বিলিয়ন, ২০২২-২৩ এ ছিল ১৩ দশমিক ৫ বিলিয়ন, ২০২৩-২৪ এ ১২ দশমিক ৭৯ বিলিয়ন এবং ২০২৪-২৫ এ ১ দশমিক ১২৪ বিলিয়ন ডলার। এই পরিবর্তন বাজারে স্থিতিশীলতার ইঙ্গিত দিচ্ছে।
বর্তমান খোলাবাজারে ডলারের দর ১২৪-১২৫ টাকার মধ্যে, যেখানে গত বছরের এই সময়ে তা ছিল ১৩১ টাকা। ২০২৪-২৫ অর্থবছরে দেশে পণ্য আমদানির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৬১ বিলিয়ন ডলার, আগের বছরের তুলনায় ৭ শতাংশ কম। অনলাইনে বাজার নজরদারি এবং ওভার/আন্ডার ইনভয়েসিং নিয়ন্ত্রণে আসায় পণ্যের আড়াল থেকে ডলার পাচারও অনেক কমেছে।
মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সৈয়দ মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ডলার ক্রয় বাজারে স্থিতিশীলতা আনার জন্য সময়োপযোগী পদক্ষেপ। এর ফলে আমদানি, বিনিয়োগ ও বাজার ভারসাম্য বজায় রাখতে সহায়ক হয়েছে।’
সব মিলিয়ে রেমিট্যান্স ও রপ্তানি আয় বৃদ্ধি, হুন্ডি নিয়ন্ত্রণ, পাচার কমে আসা—সব মিলিয়ে ডলার বাজারে স্বস্তি ফিরিয়েছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংক এখন ডলার বিক্রেতা নয়; বরং ক্রেতার ভূমিকায়, যা দেশের বৈদেশিক মুদ্রার ভারসাম্য বজায় রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে।

ডলার এখন রেমিট্যান্স, রপ্তানি, হুন্ডি নিয়ন্ত্রণ—সবকিছুর সঙ্গে জড়িয়ে আছে। তাই বাজারে ডলার হাতছাড়া হওয়ার ভয়ে সবাই চুপ। এই ডলারের সরবরাহ ও দাম স্থিতিশীল রাখার পাশাপাশি পুরো বৈদেশিক মুদ্রার ভারসাম্য ঠিক রাখতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক নিয়মিত বিরতিতে ডলার কিনছে। সেই ধারাবাহিকতায় শুধু চলতি ২০২৫-২৬ অর্থবছরের জুলাই থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত ৩ দশমিক শূন্য ৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার কিনেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র আরিফ হোসেন খান এ প্রসঙ্গে আজকের পত্রিকাকে জানান, ডিসেম্বর মাসে কেনা ডলারের পরিমাণ সবচেয়ে বেশি, ৯২ কোটি ডলার এবং চলতি অর্থবছর ধরে মোট কেনা হয়েছে ৩ দশমিক শূন্য ৫ বিলিয়ন ডলার। জুলাইয়ে প্রথম ডলার কেনা হয়েছিল ৪৮ কোটি ৪০ লাখ ডলার, আগস্টে ৪৫ কোটি ৪০ লাখ, সেপ্টেম্বরেই তা বেড়ে ৯২ কোটি ৯০ লাখে পৌঁছায়। এরপর অক্টোবর ও নভেম্বরে অবশ্য অনেকটাই কমে ১৪ কোটি ২০ লাখ এবং ৫ কোটি ৪০ লাখে নেমে আসে। ডিসেম্বরেই তার বড় উল্লম্ফন ঘটে, কেনার পরিমাণ দাঁড়ায় ৯২ কোটি ১০ লাখ ডলারে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংক বলেছে, রেমিট্যান্স বৃদ্ধি, হুন্ডি নিয়ন্ত্রণ, ব্যাংকিং চ্যানেলের শক্তিশালীকরণ এবং অনলাইনে আন্তর্জাতিক পণ্যের বাজার মনিটরিংয়ের ফলে বাজারে ডলারের সরবরাহ বেড়েছে। এ ছাড়া ওভার ও আন্ডার ইনভয়েসিং বন্ধ হওয়ায় ব্যবসার আড়ালে ডলার পাচার কমেছে। এসব কারণে ব্যাংকগুলোতে জমে থাকা অতিরিক্ত ডলার ক্রয় করছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
আগের অর্থবছরগুলোর সঙ্গে তুলনায় এবার কেন্দ্রীয় ব্যাংক ক্রেতার ভূমিকায়, যেখানে অতীতের বছরগুলোতে বড় অঙ্কে বিক্রি হতো। ২০২১-২২ অর্থবছরে বিক্রি হয়েছিল ৭ দশমিক ৬ বিলিয়ন, ২০২২-২৩ এ ছিল ১৩ দশমিক ৫ বিলিয়ন, ২০২৩-২৪ এ ১২ দশমিক ৭৯ বিলিয়ন এবং ২০২৪-২৫ এ ১ দশমিক ১২৪ বিলিয়ন ডলার। এই পরিবর্তন বাজারে স্থিতিশীলতার ইঙ্গিত দিচ্ছে।
বর্তমান খোলাবাজারে ডলারের দর ১২৪-১২৫ টাকার মধ্যে, যেখানে গত বছরের এই সময়ে তা ছিল ১৩১ টাকা। ২০২৪-২৫ অর্থবছরে দেশে পণ্য আমদানির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৬১ বিলিয়ন ডলার, আগের বছরের তুলনায় ৭ শতাংশ কম। অনলাইনে বাজার নজরদারি এবং ওভার/আন্ডার ইনভয়েসিং নিয়ন্ত্রণে আসায় পণ্যের আড়াল থেকে ডলার পাচারও অনেক কমেছে।
মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সৈয়দ মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ডলার ক্রয় বাজারে স্থিতিশীলতা আনার জন্য সময়োপযোগী পদক্ষেপ। এর ফলে আমদানি, বিনিয়োগ ও বাজার ভারসাম্য বজায় রাখতে সহায়ক হয়েছে।’
সব মিলিয়ে রেমিট্যান্স ও রপ্তানি আয় বৃদ্ধি, হুন্ডি নিয়ন্ত্রণ, পাচার কমে আসা—সব মিলিয়ে ডলার বাজারে স্বস্তি ফিরিয়েছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংক এখন ডলার বিক্রেতা নয়; বরং ক্রেতার ভূমিকায়, যা দেশের বৈদেশিক মুদ্রার ভারসাম্য বজায় রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে।

এই ঋণের বদনামের বোঝা কমাতে সরকার আবার পুরোনো কৌশলেই পা বাড়াচ্ছে। আবার তথাকথিত মন্দ ব্যাংকের (ব্যাড ব্যাংক) শরণাপন্ন হচ্ছে সরকার। মন্দ ঋণ ২৭ বিলিয়ন ডলার কমিয়ে আনার কথা ভাবা হচ্ছে। বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর ব্যালেন্স শিট পরিচ্ছন্ন করার এ উদ্যোগ অর্থনীতিতে কতটা ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে সেটি পরিষ্কার নয়।
০১ অক্টোবর ২০২১
দেশের ব্যাংকিং খাতের ভেতরে জমে থাকা অনিয়ম, রাজনৈতিক আশ্রয় ও কৃত্রিম হিসাবের পর্দা চলতি বছর যেন একে একে সরে যেতে শুরু করেছে। আর তাতেই সামনে এসেছে এক ভয়াবহ বাস্তবতা। সরকারি ও শরিয়াহভিত্তিক ইসলামি ব্যাংকগুলো খেলাপি ঋণের ভারে এখন কার্যত দিশেহারা।
২ ঘণ্টা আগে
জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যানের দপ্তরের ব্যক্তিগত সহকারী মো. কাউসারের নাম ভাঙিয়ে একটি প্রতারক চক্র বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের কাছে ভয়ভীতি দেখিয়ে টাকা দাবি করছে। এ ঘটনায় শেরেবাংলা নগর থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হয়েছে এবং আনুষ্ঠানিক সতর্কবার্তা দিয়েছে এনবিআর।
৬ ঘণ্টা আগে
যুক্তরাষ্ট্র থেকে আরও ৫৬ হাজার ৮৯০ টন গম নিয়ে একটি জাহাজ চট্টগ্রাম বন্দরের বহির্নোঙরে পৌঁছেছে। আজ রোববার খাদ্য মন্ত্রণালয়ের এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
৬ ঘণ্টা আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যানের দপ্তরের ব্যক্তিগত সহকারী মো. কাউসারের নাম ভাঙিয়ে একটি প্রতারক চক্র বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের কাছে ভয়ভীতি দেখিয়ে টাকা দাবি করছে। এ ঘটনায় শেরেবাংলা নগর থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হয়েছে এবং আনুষ্ঠানিক সতর্কবার্তা দিয়েছে এনবিআর।
এনবিআর জানায়, প্রতারকেরা মিথ্যা পরিচয় ব্যবহার করে ফোন, মেসেজসহ বিভিন্ন মাধ্যমে অর্থ আদায়ের চেষ্টা করছে। তবে মো. কাউসারের সঙ্গে এ কর্মকাণ্ডের কোনো সম্পৃক্ততা নেই। কর্মকর্তা-কর্মচারী ও সর্বসাধারণকে এই প্রতারক চক্র সম্পর্কে সতর্ক থাকতে হবে। কেউ এ ধরনের ফোনকল বা বার্তার সম্মুখীন হলে নিকটস্থ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে অবহিত করার আহ্বান জানিয়েছে সংস্থাটি।
জিডিতে মো. কাউসার উল্লেখ করেন, ২৩ ডিসেম্বর এনবিআরের উপ-কর কমিশনার রইসুন নেসা (বর্তমানে যুগ্ম কর কমিশনার) তাঁকে জানান, কাউসারের নাম ব্যবহার করে ০১৭০১৮৯০৩৮৭ নম্বর থেকে কল করে তাঁর বিরুদ্ধে ‘অভিযোগ আছে’ উল্লেখ করে টাকা দাবি করা হয়। বিকাশের মাধ্যমে টাকা পাঠানোর নির্দেশও দেওয়া হয় ০১৩২৮০৮৩২১৬ নম্বরে। পরে দেখা যায়, একই চক্র আরও অনেক কর্মকর্তার কাছ থেকে একই কৌশলে অর্থ আদায় করার চেষ্টা করেছে। পরে কাউসার জানতে পারেন আরও অনেক কর্মকর্তার কাছ থেকে একই নম্বর থেকে টাকা দাবি করা হয়েছে। অজ্ঞাতনামা কে বা কারা তাঁর পরিচয় দিয়ে অজ্ঞাতসারে বিভিন্ন কর্মকর্তার কাছে ভয়ভীতি দেখিয়ে টাকা দাবি করছে, তা জানা নেই বলে উল্লেখ করেন কাউসার।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে কর অঞ্চল-কুষ্টিয়ার পরিদর্শী রেঞ্জ-৪-এর যুগ্ম কর কমিশনার রইসুন নেসা আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাকে কাউসারের নামেই ফোন করে। আমি বিষয়টি কাউসারকে জানাই। পরে আর ফোন করেনি। কোনো কথাও হয়নি।’
জানতে চাইলে মো. কাউসার বলেন, কোনো একটা চক্র এটা করছে। এর আগে চেয়ারম্যান স্যারের হোয়াটসঅ্যাপ হ্যাক করে টাকা চেয়েছিল বিভিন্নজনের কাছ থেকে।

জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যানের দপ্তরের ব্যক্তিগত সহকারী মো. কাউসারের নাম ভাঙিয়ে একটি প্রতারক চক্র বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের কাছে ভয়ভীতি দেখিয়ে টাকা দাবি করছে। এ ঘটনায় শেরেবাংলা নগর থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হয়েছে এবং আনুষ্ঠানিক সতর্কবার্তা দিয়েছে এনবিআর।
এনবিআর জানায়, প্রতারকেরা মিথ্যা পরিচয় ব্যবহার করে ফোন, মেসেজসহ বিভিন্ন মাধ্যমে অর্থ আদায়ের চেষ্টা করছে। তবে মো. কাউসারের সঙ্গে এ কর্মকাণ্ডের কোনো সম্পৃক্ততা নেই। কর্মকর্তা-কর্মচারী ও সর্বসাধারণকে এই প্রতারক চক্র সম্পর্কে সতর্ক থাকতে হবে। কেউ এ ধরনের ফোনকল বা বার্তার সম্মুখীন হলে নিকটস্থ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে অবহিত করার আহ্বান জানিয়েছে সংস্থাটি।
জিডিতে মো. কাউসার উল্লেখ করেন, ২৩ ডিসেম্বর এনবিআরের উপ-কর কমিশনার রইসুন নেসা (বর্তমানে যুগ্ম কর কমিশনার) তাঁকে জানান, কাউসারের নাম ব্যবহার করে ০১৭০১৮৯০৩৮৭ নম্বর থেকে কল করে তাঁর বিরুদ্ধে ‘অভিযোগ আছে’ উল্লেখ করে টাকা দাবি করা হয়। বিকাশের মাধ্যমে টাকা পাঠানোর নির্দেশও দেওয়া হয় ০১৩২৮০৮৩২১৬ নম্বরে। পরে দেখা যায়, একই চক্র আরও অনেক কর্মকর্তার কাছ থেকে একই কৌশলে অর্থ আদায় করার চেষ্টা করেছে। পরে কাউসার জানতে পারেন আরও অনেক কর্মকর্তার কাছ থেকে একই নম্বর থেকে টাকা দাবি করা হয়েছে। অজ্ঞাতনামা কে বা কারা তাঁর পরিচয় দিয়ে অজ্ঞাতসারে বিভিন্ন কর্মকর্তার কাছে ভয়ভীতি দেখিয়ে টাকা দাবি করছে, তা জানা নেই বলে উল্লেখ করেন কাউসার।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে কর অঞ্চল-কুষ্টিয়ার পরিদর্শী রেঞ্জ-৪-এর যুগ্ম কর কমিশনার রইসুন নেসা আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাকে কাউসারের নামেই ফোন করে। আমি বিষয়টি কাউসারকে জানাই। পরে আর ফোন করেনি। কোনো কথাও হয়নি।’
জানতে চাইলে মো. কাউসার বলেন, কোনো একটা চক্র এটা করছে। এর আগে চেয়ারম্যান স্যারের হোয়াটসঅ্যাপ হ্যাক করে টাকা চেয়েছিল বিভিন্নজনের কাছ থেকে।

এই ঋণের বদনামের বোঝা কমাতে সরকার আবার পুরোনো কৌশলেই পা বাড়াচ্ছে। আবার তথাকথিত মন্দ ব্যাংকের (ব্যাড ব্যাংক) শরণাপন্ন হচ্ছে সরকার। মন্দ ঋণ ২৭ বিলিয়ন ডলার কমিয়ে আনার কথা ভাবা হচ্ছে। বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর ব্যালেন্স শিট পরিচ্ছন্ন করার এ উদ্যোগ অর্থনীতিতে কতটা ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে সেটি পরিষ্কার নয়।
০১ অক্টোবর ২০২১
দেশের ব্যাংকিং খাতের ভেতরে জমে থাকা অনিয়ম, রাজনৈতিক আশ্রয় ও কৃত্রিম হিসাবের পর্দা চলতি বছর যেন একে একে সরে যেতে শুরু করেছে। আর তাতেই সামনে এসেছে এক ভয়াবহ বাস্তবতা। সরকারি ও শরিয়াহভিত্তিক ইসলামি ব্যাংকগুলো খেলাপি ঋণের ভারে এখন কার্যত দিশেহারা।
২ ঘণ্টা আগে
ডলার এখন রেমিট্যান্স, রপ্তানি, হুন্ডি নিয়ন্ত্রণ—সবকিছুর সঙ্গে জড়িয়ে আছে। তাই বাজারে ডলার হাতছাড়া হওয়ার ভয়ে সবাই চুপ। এই ডলারের সরবরাহ ও দাম স্থিতিশীল রাখার পাশাপাশি পুরো বৈদেশিক মুদ্রার ভারসাম্য ঠিক রাখতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক নিয়মিত বিরতিতে ডলার কিনছে। সেই ধারাবাহিকতায় শুধু চলতি ২০২৫-২৬ অর্থবছরের জুলাই
৬ ঘণ্টা আগে
যুক্তরাষ্ট্র থেকে আরও ৫৬ হাজার ৮৯০ টন গম নিয়ে একটি জাহাজ চট্টগ্রাম বন্দরের বহির্নোঙরে পৌঁছেছে। আজ রোববার খাদ্য মন্ত্রণালয়ের এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
৬ ঘণ্টা আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

যুক্তরাষ্ট্র থেকে আরও ৫৬ হাজার ৮৯০ টন গম নিয়ে একটি জাহাজ চট্টগ্রাম বন্দরের বহির্নোঙরে পৌঁছেছে। আজ রোববার খাদ্য মন্ত্রণালয়ের এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
এতে বলা হয়, বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে স্বাক্ষরিত সমঝোতা স্মারকের আওতায় নগদ ক্রয় চুক্তির মাধ্যমে এই গম আমদানি করা হয়েছে। জি-টু-জি চুক্তির আওতায় যুক্তরাষ্ট্র থেকে মোট ২ লাখ ২০ হাজার টন গম আমদানির উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এর অংশ হিসেবে প্রথম চালানে ৫৬ হাজার ৮৯০ টন গম দেশে এসেছে। এর মধ্যে ৩৪ হাজার ১৩৪ টন চট্টগ্রাম বন্দরে এবং অবশিষ্ট ২২ হাজার ৭৫৬ টন মোংলা বন্দরে খালাস করা হবে।
খাদ্য মন্ত্রণালয় জানায়, জাহাজে রক্ষিত গমের নমুনা পরীক্ষার কার্যক্রম এরই মধ্যে শুরু হয়েছে। গমের নমুনা পরীক্ষা শেষে দ্রুত গম খালাসের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এর আগে আরেক চুক্তিতে (জি-টু-জি) এরই মধ্যে ২ লাখ ২০ হাজার টন গম আমদানি সম্পন্ন হয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্র থেকে আরও ৫৬ হাজার ৮৯০ টন গম নিয়ে একটি জাহাজ চট্টগ্রাম বন্দরের বহির্নোঙরে পৌঁছেছে। আজ রোববার খাদ্য মন্ত্রণালয়ের এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
এতে বলা হয়, বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে স্বাক্ষরিত সমঝোতা স্মারকের আওতায় নগদ ক্রয় চুক্তির মাধ্যমে এই গম আমদানি করা হয়েছে। জি-টু-জি চুক্তির আওতায় যুক্তরাষ্ট্র থেকে মোট ২ লাখ ২০ হাজার টন গম আমদানির উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এর অংশ হিসেবে প্রথম চালানে ৫৬ হাজার ৮৯০ টন গম দেশে এসেছে। এর মধ্যে ৩৪ হাজার ১৩৪ টন চট্টগ্রাম বন্দরে এবং অবশিষ্ট ২২ হাজার ৭৫৬ টন মোংলা বন্দরে খালাস করা হবে।
খাদ্য মন্ত্রণালয় জানায়, জাহাজে রক্ষিত গমের নমুনা পরীক্ষার কার্যক্রম এরই মধ্যে শুরু হয়েছে। গমের নমুনা পরীক্ষা শেষে দ্রুত গম খালাসের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এর আগে আরেক চুক্তিতে (জি-টু-জি) এরই মধ্যে ২ লাখ ২০ হাজার টন গম আমদানি সম্পন্ন হয়েছে।

এই ঋণের বদনামের বোঝা কমাতে সরকার আবার পুরোনো কৌশলেই পা বাড়াচ্ছে। আবার তথাকথিত মন্দ ব্যাংকের (ব্যাড ব্যাংক) শরণাপন্ন হচ্ছে সরকার। মন্দ ঋণ ২৭ বিলিয়ন ডলার কমিয়ে আনার কথা ভাবা হচ্ছে। বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর ব্যালেন্স শিট পরিচ্ছন্ন করার এ উদ্যোগ অর্থনীতিতে কতটা ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে সেটি পরিষ্কার নয়।
০১ অক্টোবর ২০২১
দেশের ব্যাংকিং খাতের ভেতরে জমে থাকা অনিয়ম, রাজনৈতিক আশ্রয় ও কৃত্রিম হিসাবের পর্দা চলতি বছর যেন একে একে সরে যেতে শুরু করেছে। আর তাতেই সামনে এসেছে এক ভয়াবহ বাস্তবতা। সরকারি ও শরিয়াহভিত্তিক ইসলামি ব্যাংকগুলো খেলাপি ঋণের ভারে এখন কার্যত দিশেহারা।
২ ঘণ্টা আগে
ডলার এখন রেমিট্যান্স, রপ্তানি, হুন্ডি নিয়ন্ত্রণ—সবকিছুর সঙ্গে জড়িয়ে আছে। তাই বাজারে ডলার হাতছাড়া হওয়ার ভয়ে সবাই চুপ। এই ডলারের সরবরাহ ও দাম স্থিতিশীল রাখার পাশাপাশি পুরো বৈদেশিক মুদ্রার ভারসাম্য ঠিক রাখতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক নিয়মিত বিরতিতে ডলার কিনছে। সেই ধারাবাহিকতায় শুধু চলতি ২০২৫-২৬ অর্থবছরের জুলাই
৬ ঘণ্টা আগে
জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যানের দপ্তরের ব্যক্তিগত সহকারী মো. কাউসারের নাম ভাঙিয়ে একটি প্রতারক চক্র বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের কাছে ভয়ভীতি দেখিয়ে টাকা দাবি করছে। এ ঘটনায় শেরেবাংলা নগর থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হয়েছে এবং আনুষ্ঠানিক সতর্কবার্তা দিয়েছে এনবিআর।
৬ ঘণ্টা আগে