Ajker Patrika

মার্কিন খাদ্যপণ্যের আমদানি কমিয়ে বাণিজ্য যুদ্ধে শক্তিশালী চীন

যুক্তরাষ্ট্রের ইন্ডিয়ানা অঙ্গরাজ্যে অবস্থিত রোচডেল হডজেন ফার্মের একটি ক্ষেত থেকে সয়াবিন কাটা হচ্ছে। ছবি: সংগৃহীত
যুক্তরাষ্ট্রের ইন্ডিয়ানা অঙ্গরাজ্যে অবস্থিত রোচডেল হডজেন ফার্মের একটি ক্ষেত থেকে সয়াবিন কাটা হচ্ছে। ছবি: সংগৃহীত

বিশ্বের শীর্ষ কৃষিপণ্য আমদানিকারক দেশ চীন ২০১৮ সাল থেকে খাদ্য আমদানির উৎস পরিবর্তনের চেষ্টা চালিয়ে আসছে। এতে মার্কিন কৃষিপণ্য আমদানির ওপর চীনের পাল্টা শুল্ক আরোপের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। শুধু তাই নয়, ওয়াশিংটনের সঙ্গে বাণিজ্য বিরোধ সৃষ্টি হলেও চীনের খাদ্য নিরাপত্তার ওপর তেমন কোনো প্রভাব পড়বে না।

অদূর ভবিষ্যতে চীন একটি বাণিজ্য যুদ্ধে জড়িয়ে পড়তে পারে। কেননা যুক্তরাষ্ট্রের উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে রিপাবলিকান প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প ৬০ শতাংশ পর্যন্ত শুল্ক আরোপের পরিকল্পনা করছেন। অন্যদিকে, ট্রাম্পের প্রতিপক্ষ ডেমোক্র্যাট প্রার্থী কমলা হ্যারিসও চীনের সঙ্গে বাণিজ্য নীতিতে কঠোর অবস্থান নিতে পারেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।

ট্রাম্পের শাসনামলে চীন যুক্তরাষ্ট্রের কৃষিপণ্যর ওপর নির্ভরতা কমাতে বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছে। দেশটি খাদ্য নিরাপত্তা এবং স্বয়ংসম্পূর্ণতার জন্য কাজ করেছে। ২০১৮ সালে চীন যুক্তরাষ্ট্রের সয়াবিন, গরুর মাংস, শূকরের মাংস, গম, ভুট্টা এবং সোরঘামের ওপর ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করে। এটি ছিল ট্রাম্প প্রশাসনের ৩০০ বিলিয়ন ডলারের চীনা পণ্যের ওপর শুল্ক আরোপের পাল্টা জবাব।

মার্কিন ডলারে চীনের কৃষি আমদানির গ্রাফচিত্র। ছবি: সংগৃহীত
মার্কিন ডলারে চীনের কৃষি আমদানির গ্রাফচিত্র। ছবি: সংগৃহীত

যদিও ২০২০ সালের জানুয়ারিতে ট্রাম্প ও চীনের তৎকালীন উপপ্রধানমন্ত্রী লিউয়ের মধ্যে একটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। ওই চুক্তিনামায় চীন যুক্তরাষ্ট্রের পণ্য ও পরিষেবার ক্রয় বাড়ানোর প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল। কিন্তু বাস্তবে যুক্তরাষ্ট্র থেকে চীনের আমদানি কমেছে।

বর্তমানে চীন যুক্তরাষ্ট্রের থেকে কম শস্য কিনছে। পরিবর্তে ব্রাজিল, আর্জেন্টিনা, ইউক্রেন এবং অস্ট্রেলিয়াসহ অন্যান্য দেশ থেকে বেশি শস্য আমদানি করছে। ২০১৬ সালে যুক্তরাষ্ট্র থেকে চীনের সয়াবিনের আমদানির পরিমাণ ছিল ৪০ শতাংশ। ২০২৩ সালে এটি কমে ১৮ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। এই সময়ে ব্রাজিল থেকে চীনের সয়াবিন আমদানি ৪৬ শতাংশ থেকে বেড়ে ৭৬ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। একই বছর চীনের ভুট্টা আমদানিতেও যুক্তরাষ্ট্রকে টপকে ব্রাজিল প্রথম স্থানে উঠে এসেছে। অথচ মাত্র এক বছর আগেই ব্রাজিলের সঙ্গে কৃষিপণ্যের বাণিজ্য শুরু করে চীন।

এদিকে, চীনা পশুখাদ্য উৎপাদনকারীরা আমদানি করা সয়াবিনের ওপর নির্ভরতা কমাতে সয়ামিলের ব্যবহার হ্রাস করেছে। একই সময় উৎপাদন বাড়াতে জেনেটিক্যালি মডিফাইড সয়াবিন ও ভুট্টার অনুমোদন দিয়েছে।

মেট্রিক টনে চীনের সয়াবিনের আমদানি পরিমাণ। গত এক দশকে চীনের বাজারে মার্কিন সয়াবিন বিক্রি ব্যাপকভাবে কমে গেছে। ছবি: সংগৃহীত
মেট্রিক টনে চীনের সয়াবিনের আমদানি পরিমাণ। গত এক দশকে চীনের বাজারে মার্কিন সয়াবিন বিক্রি ব্যাপকভাবে কমে গেছে। ছবি: সংগৃহীত

চীনের কৃষি মন্ত্রণালয় বিষয়টি নিয়ে মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে।

ট্রাম্পের একজন মুখপাত্র চীনে যুক্তরাষ্ট্রের কৃষিপণ্য রপ্তানি কমে যাওয়া নিয়ে সরাসরি কোনো মন্তব্য করেননি। তবে তিনি ট্রাম্পের একটি বক্তব্যের উল্লেখ করেছেন, যেখানে ট্রাম্প শুল্ককে ‘সুন্দর শব্দ’ বলে অভিহিত করেছেন ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এ থেকে বিপুল রাজস্ব পাবে।

অন্যদিকে, হ্যারিসের ক্যাম্পেইন ওয়েবসাইট বলেছে, তিনি যুক্তরাষ্ট্রের শ্রমিকদের ক্ষতিগ্রস্ত করে এমন কোনো অন্যায্য বাণিজ্য নীতি সহ্য করবেন না।

কৃষিপণ্য মজুত

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে নির্বাচন পরবর্তী উত্তেজনার আশঙ্কায় সম্প্রতি চীনা ক্রেতারা যুক্তরাষ্ট্র থেকে সয়াবিন ও ভুট্টাসহ বিভিন্ন কৃষিপণ্য আমদানি বাড়িয়েছে বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ী ও বিশ্লেষকেরা। প্রাণী খাদ্যের জন্য ব্যবহৃত সয়াবিনের আমদানি চলতি বছরের প্রথম নয় মাসে ৮ শতাংশ, বার্লি ৬৩ শতাংশ ও সোরঘামের আমদানি ৮৬ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্রের কৃষিপণ্য রপ্তানির পরিমাণ। ছবি: সংগৃহীত
যুক্তরাষ্ট্রের কৃষিপণ্য রপ্তানির পরিমাণ। ছবি: সংগৃহীত

চীনে শস্য ও তেলবীজ বিক্রিকারী একটি আন্তর্জাতিক ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের একজন ব্যবসায়ী বলেন, ‘এই সময়টি ভিন্ন। প্রয়োজনীয় পণ্যে চীন ভালোভাবেই মজুত রেখেছে। এবার কোনো সরবরাহের ধাক্কা দ্রুত লাগবে না। পরিকল্পনা ও কেনাকাটা পুনর্নির্দেশ দিতে চীনের হাতে যথেষ্ট সময় থাকবে।’

যুক্তরাষ্ট্রের সয়াবিন রপ্তানি বর্তমানে গত ১৪ মাসের সর্বোচ্চ অবস্থানে রয়েছে, কারণ শস্য ব্যবসায়ীরা নির্বাচনের আগে রেকর্ড ফসল সংগ্রহের প্রতিযোগিতায় রয়েছে।

বিশ্ব বাণিজ্যে ইটের বদলে যুক্তরাষ্ট্রকে পাটকেল মারার জন্য চীন খাদ্যশস্যকে বেছে নেবে না, কিন্তু বড় কোনো সংঘাতে পরিস্থিতি অনুযায়ী বাধ্য হতে পারে বলে মত দেন নিউইয়র্কের কর্নেল বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী অধ্যাপক ও কৃষি অর্থনীতিবিদ ওয়েনডং ঝাং। তিনি বলেন, বাণিজ্যে সমতা বজায় রেখে চীন যুক্তরাষ্ট্রের কৃষিপণ্যে শুল্ক আরোপ করতে পারে, যা যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতিতে আঘাত হানতে পারে।

যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে চীনের মোট বাণিজ্য উদ্বৃত্ত শুধুমাত্র সেপ্টেম্বর মাসেই ৩৩ দশমিক ৩৩ বিলিয়ন ডলার ছিল, ফলে চীন ভেবেচিন্তেই পা বাড়াবে।

চীনের ট্রিভিয়াম কনসালটেন্সির কৃষি বিশ্লেষক ইভেন পে বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের ওপর চীনের খাদ্য নির্ভরশীলতা কমে যাওয়ায় বেইজিং অনেক বেশি নিরাপদ মনে করছে। এখন যেকোনো বিরোধপূর্ণ পরিস্থিতে যুক্তরাষ্ট্র চীনের চাপ দিতে পারবে না। এটি একটি পরিকল্পিত পদক্ষেপ।’

তবে কমনওয়েলথ ব্যাংকের বিশ্লেষক ডেনিস ভোজনেসেনস্কি চীন বলেছেন, মার্কিন কৃষিপণ্যের ওপর চীনের নির্ভরতা কিছুটা কমাতে পারে, কিন্তু তা সীমিত মাত্রায়। কিছু বিকল্প পণ্য পাওয়া গেলেও উৎসের সংখ্যা খুবই কম।’

যুক্তরাষ্ট্রের কৃষকেরা ঝুঁকিতে

কৃষিপণ্য রপ্তানিতে নতুন শুল্ক আরোপ করা হলে মার্কিন কৃষকদের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে। বিশেষ করে দক্ষিণ আমেরিকার কৃষি উৎপাদনের সঙ্গে প্রতিযোগিতার দিক থেকে।

জরিপে হ্যারিস ও ট্রাম্পের লড়াই হাড্ডাহাড্ডি হলও বেশির ভাগ কৃষিপ্রধান রাজ্যে এগিয়ে আছেন ট্রাম্প। যদিও ট্রাম্পের আগের মেয়াদে চীন-যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য যুদ্ধ যুক্তরাষ্ট্রের কৃষকদের জন্য ক্ষতিকারক ছিল। ওই সময় ট্রাম্প প্রশাসন মার্কিন কৃষকদের প্রায় ২৩ বিলিয়ন ডলার ক্ষতিপূরণ দিতে বাধ্য হয়।

মার্কিন আদমশুমারি ব্যুরোর তথ্য অনুসারে, ২০২৩ সালে সয়াবিন রপ্তানি থেকে যুক্তরাষ্ট্রের মোট আয় ১৫ দশমিক ২ বিলিয়ন ডলার। আর এর প্রায় অর্ধেকই চীনে রপ্তানি করা হয়েছে। আমেরিকার কৃষকেরা শস্যের কমদাম নিয়ে উদ্বিগ্ন ও শস্যের বিশ্ব সরবরাহ পর্যাপ্ত হওয়ায় তাঁরা ক্ষতির আশঙ্কা করছে।

উত্তর ইলিনয়ের একজন সয়াবিন চাষি মার্ক টাটল বলেন, ‘আমরা অত্যন্ত উদ্বিগ্ন। আমরা পৃথিবীর একমাত্র সয়াবিন উৎপাদক নই। দক্ষিণ আমেরিকা প্রচুর সয়াবিন উৎপাদন করছে। যদি আমরা আরও শুল্ক আরোপ করি তাহলে তা আমাদের জন্য খুবই ক্ষতিকর হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ছয় মাসে ৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলার কিনেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
বাংলাদেশ ব্যাংক। ফাইল ছবি
বাংলাদেশ ব্যাংক। ফাইল ছবি

ডলার এখন রেমিট্যান্স, রপ্তানি, হুন্ডি নিয়ন্ত্রণ—সবকিছুর সঙ্গে জড়িয়ে আছে। তাই বাজারে ডলার হাতছাড়া হওয়ার ভয়ে সবাই চুপ। এই ডলারের সরবরাহ ও দাম স্থিতিশীল রাখার পাশাপাশি পুরো বৈদেশিক মুদ্রার ভারসাম্য ঠিক রাখতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক নিয়মিত বিরতিতে ডলার কিনছে। সেই ধারাবাহিকতায় শুধু চলতি ২০২৫-২৬ অর্থবছরের জুলাই থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত ৩ দশমিক শূন্য ৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার কিনেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র আরিফ হোসেন খান এ প্রসঙ্গে আজকের পত্রিকাকে জানান, ডিসেম্বর মাসে কেনা ডলারের পরিমাণ সবচেয়ে বেশি, ৯২ কোটি ডলার এবং চলতি অর্থবছর ধরে মোট কেনা হয়েছে ৩ দশমিক শূন্য ৫ বিলিয়ন ডলার। জুলাইয়ে প্রথম ডলার কেনা হয়েছিল ৪৮ কোটি ৪০ লাখ ডলার, আগস্টে ৪৫ কোটি ৪০ লাখ, সেপ্টেম্বরেই তা বেড়ে ৯২ কোটি ৯০ লাখে পৌঁছায়। এরপর অক্টোবর ও নভেম্বরে অবশ্য অনেকটাই কমে ১৪ কোটি ২০ লাখ এবং ৫ কোটি ৪০ লাখে নেমে আসে। ডিসেম্বরেই তার বড় উল্লম্ফন ঘটে, কেনার পরিমাণ দাঁড়ায় ৯২ কোটি ১০ লাখ ডলারে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংক বলেছে, রেমিট্যান্স বৃদ্ধি, হুন্ডি নিয়ন্ত্রণ, ব্যাংকিং চ্যানেলের শক্তিশালীকরণ এবং অনলাইনে আন্তর্জাতিক পণ্যের বাজার মনিটরিংয়ের ফলে বাজারে ডলারের সরবরাহ বেড়েছে। এ ছাড়া ওভার ও আন্ডার ইনভয়েসিং বন্ধ হওয়ায় ব্যবসার আড়ালে ডলার পাচার কমেছে। এসব কারণে ব্যাংকগুলোতে জমে থাকা অতিরিক্ত ডলার ক্রয় করছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

আগের অর্থবছরগুলোর সঙ্গে তুলনায় এবার কেন্দ্রীয় ব্যাংক ক্রেতার ভূমিকায়, যেখানে অতীতের বছরগুলোতে বড় অঙ্কে বিক্রি হতো। ২০২১-২২ অর্থবছরে বিক্রি হয়েছিল ৭ দশমিক ৬ বিলিয়ন, ২০২২-২৩ এ ছিল ১৩ দশমিক ৫ বিলিয়ন, ২০২৩-২৪ এ ১২ দশমিক ৭৯ বিলিয়ন এবং ২০২৪-২৫ এ ১ দশমিক ১২৪ বিলিয়ন ডলার। এই পরিবর্তন বাজারে স্থিতিশীলতার ইঙ্গিত দিচ্ছে।

বর্তমান খোলাবাজারে ডলারের দর ১২৪-১২৫ টাকার মধ্যে, যেখানে গত বছরের এই সময়ে তা ছিল ১৩১ টাকা। ২০২৪-২৫ অর্থবছরে দেশে পণ্য আমদানির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৬১ বিলিয়ন ডলার, আগের বছরের তুলনায় ৭ শতাংশ কম। অনলাইনে বাজার নজরদারি এবং ওভার/আন্ডার ইনভয়েসিং নিয়ন্ত্রণে আসায় পণ্যের আড়াল থেকে ডলার পাচারও অনেক কমেছে।

মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সৈয়দ মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ডলার ক্রয় বাজারে স্থিতিশীলতা আনার জন্য সময়োপযোগী পদক্ষেপ। এর ফলে আমদানি, বিনিয়োগ ও বাজার ভারসাম্য বজায় রাখতে সহায়ক হয়েছে।’

সব মিলিয়ে রেমিট্যান্স ও রপ্তানি আয় বৃদ্ধি, হুন্ডি নিয়ন্ত্রণ, পাচার কমে আসা—সব মিলিয়ে ডলার বাজারে স্বস্তি ফিরিয়েছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংক এখন ডলার বিক্রেতা নয়; বরং ক্রেতার ভূমিকায়, যা দেশের বৈদেশিক মুদ্রার ভারসাম্য বজায় রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

এনবিআর কর্মকর্তার নাম ভাঙিয়ে টাকা দাবি, সতর্কবার্তা

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
রাজধানীর আগারগাঁওয়ে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সামনে দিয়ে হেঁটে যাচ্ছেন পথচারীরা। ছবি: সংগৃহীত
রাজধানীর আগারগাঁওয়ে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সামনে দিয়ে হেঁটে যাচ্ছেন পথচারীরা। ছবি: সংগৃহীত

জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যানের দপ্তরের ব্যক্তিগত সহকারী মো. কাউসারের নাম ভাঙিয়ে একটি প্রতারক চক্র বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের কাছে ভয়ভীতি দেখিয়ে টাকা দাবি করছে। এ ঘটনায় শেরেবাংলা নগর থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হয়েছে এবং আনুষ্ঠানিক সতর্কবার্তা দিয়েছে এনবিআর।

এনবিআর জানায়, প্রতারকেরা মিথ্যা পরিচয় ব্যবহার করে ফোন, মেসেজসহ বিভিন্ন মাধ্যমে অর্থ আদায়ের চেষ্টা করছে। তবে মো. কাউসারের সঙ্গে এ কর্মকাণ্ডের কোনো সম্পৃক্ততা নেই। কর্মকর্তা-কর্মচারী ও সর্বসাধারণকে এই প্রতারক চক্র সম্পর্কে সতর্ক থাকতে হবে। কেউ এ ধরনের ফোনকল বা বার্তার সম্মুখীন হলে নিকটস্থ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে অবহিত করার আহ্বান জানিয়েছে সংস্থাটি।

জিডিতে মো. কাউসার উল্লেখ করেন, ২৩ ডিসেম্বর এনবিআরের উপ-কর কমিশনার রইসুন নেসা (বর্তমানে যুগ্ম কর কমিশনার) তাঁকে জানান, কাউসারের নাম ব্যবহার করে ০১৭০১৮৯০৩৮৭ নম্বর থেকে কল করে তাঁর বিরুদ্ধে ‘অভিযোগ আছে’ উল্লেখ করে টাকা দাবি করা হয়। বিকাশের মাধ্যমে টাকা পাঠানোর নির্দেশও দেওয়া হয় ০১৩২৮০৮৩২১৬ নম্বরে। পরে দেখা যায়, একই চক্র আরও অনেক কর্মকর্তার কাছ থেকে একই কৌশলে অর্থ আদায় করার চেষ্টা করেছে। পরে কাউসার জানতে পারেন আরও অনেক কর্মকর্তার কাছ থেকে একই নম্বর থেকে টাকা দাবি করা হয়েছে। অজ্ঞাতনামা কে বা কারা তাঁর পরিচয় দিয়ে অজ্ঞাতসারে বিভিন্ন কর্মকর্তার কাছে ভয়ভীতি দেখিয়ে টাকা দাবি করছে, তা জানা নেই বলে উল্লেখ করেন কাউসার।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে কর অঞ্চল-কুষ্টিয়ার পরিদর্শী রেঞ্জ-৪-এর যুগ্ম কর কমিশনার রইসুন নেসা আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাকে কাউসারের নামেই ফোন করে। আমি বিষয়টি কাউসারকে জানাই। পরে আর ফোন করেনি। কোনো কথাও হয়নি।’

জানতে চাইলে মো. কাউসার বলেন, কোনো একটা চক্র এটা করছে। এর আগে চেয়ারম্যান স্যারের হোয়াটসঅ্যাপ হ্যাক করে টাকা চেয়েছিল বিভিন্নজনের কাছ থেকে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

যুক্তরাষ্ট্র থেকে এল আরও ৫৭ হাজার টন গম

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
জি-টু-জি চুক্তির আওতায় যুক্তরাষ্ট্র থেকে মোট ২ লাখ ২০ হাজার টন গম আমদানির উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ছবি: সংগৃহীত
জি-টু-জি চুক্তির আওতায় যুক্তরাষ্ট্র থেকে মোট ২ লাখ ২০ হাজার টন গম আমদানির উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ছবি: সংগৃহীত

যুক্তরাষ্ট্র থেকে আরও ৫৬ হাজার ৮৯০ টন গম নিয়ে একটি জাহাজ চট্টগ্রাম বন্দরের বহির্নোঙরে পৌঁছেছে। আজ রোববার খাদ্য মন্ত্রণালয়ের এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

এতে বলা হয়, বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে স্বাক্ষরিত সমঝোতা স্মারকের আওতায় নগদ ক্রয় চুক্তির মাধ্যমে এই গম আমদানি করা হয়েছে। জি-টু-জি চুক্তির আওতায় যুক্তরাষ্ট্র থেকে মোট ২ লাখ ২০ হাজার টন গম আমদানির উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এর অংশ হিসেবে প্রথম চালানে ৫৬ হাজার ৮৯০ টন গম দেশে এসেছে। এর মধ্যে ৩৪ হাজার ১৩৪ টন চট্টগ্রাম বন্দরে এবং অবশিষ্ট ২২ হাজার ৭৫৬ টন মোংলা বন্দরে খালাস করা হবে।

খাদ্য মন্ত্রণালয় জানায়, জাহাজে রক্ষিত গমের নমুনা পরীক্ষার কার্যক্রম এরই মধ্যে শুরু হয়েছে। গমের নমুনা পরীক্ষা শেষে দ্রুত গম খালাসের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এর আগে আরেক চুক্তিতে (জি-টু-জি) এরই মধ্যে ২ লাখ ২০ হাজার টন গম আমদানি সম্পন্ন হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

চট্টগ্রামে ওয়ালটন পণ্যের ক্রেতাদের হাতে উপহার হস্তান্তর

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
ওয়ালটন পণ্য কিনে ফ্রিজ, টিভি উপহার পাওয়া ক্রেতাদের সঙ্গে চিত্রনায়ক ও ওয়ালটনের সিনিয়র এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর আমিন খান। ছবি: বিজ্ঞপ্তি
ওয়ালটন পণ্য কিনে ফ্রিজ, টিভি উপহার পাওয়া ক্রেতাদের সঙ্গে চিত্রনায়ক ও ওয়ালটনের সিনিয়র এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর আমিন খান। ছবি: বিজ্ঞপ্তি

ইলেকট্রনিকস ও হোম অ্যাপ্লায়েন্স খাতের সুপারব্র্যান্ড ওয়ালটনের চলমান ডিজিটাল ক্যাম্পেইন সিজন-২৩-এ দেশজুড়ে ওয়ালটন পণ্য কিনে গ্রাহকেরা পাচ্ছেন সর্বাধুনিক প্রযুক্তির সাইড বাই সাইড ফ্রিজসহ বিভিন্ন ধরনের পণ্য ফ্রি ও নিশ্চিত উপহার। গত ২৫ নভেম্বর থেকে শুরু হওয়া এই ক্যাম্পেইনে প্রতিদিন অসংখ্য ক্রেতার হাতে উপহারের পণ্য তুলে দিচ্ছে ওয়ালটন।

এরই ধারাবাহিকতায় সম্প্রতি চট্টগ্রাম বিভাগের বিভিন্ন অঞ্চলের ওয়ালটন প্লাজা ও ডিস্ট্রিবিউটর শোরুম থেকে ফ্রিজ ও টিভি কিনে ফ্রি পাওয়া সাইড বাই সাইড ফ্রিজ ও স্মার্ট টিভি ৯ ক্রেতার হাতে তুলে দিয়েছে ওয়ালটন। পণ্য ফ্রি পাওয়া ক্রেতারা হচ্ছেন—পটিয়ার সাজ্জাদ হোসেন, বাঁশখালীর রহিমা আক্তার, ফটিকছড়ির জহির উদ্দীন, রাউজানের অরুন কান্তি দাস, লক্ষ্মীপুর রামগঞ্জের কবির হোসেন, মিরসরাইয়ের মো. আছলাম, রাঙামাটির যতিন চাকমা, দোহাজারীর জাকির হোসেন ও সীতাকুণ্ডের মো. জোবায়ের।

গত মঙ্গলবার (২৩ ডিসেম্বর) বন্দর নগরীর একটি অভিজাত রেস্টুরেন্টে আয়োজিত অনুষ্ঠানে সৌভাগ্যবান ক্রেতাদের হাতে উপহার তুলে দেন জনপ্রিয় চিত্রনায়ক ও ওয়ালটনের সিনিয়র এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর আমিন খান। অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ওয়ালটনের চিফ ডিভিশনাল অফিসার ইমরোজ হায়দার খান।

উপহারপ্রাপ্তদের অভিনন্দন জানিয়ে চিত্রনায়ক আমিন খান বলেন, দেশের কোটি কোটি গ্রাহকের, ক্রেতার আস্থা ও ভালোবাসায়ই ওয়ালটন দেশের শীর্ষ ও টেক জায়ান্ট হয়ে উঠেছে। যার পরিপ্রেক্ষিতে ইলেকট্রনিকস খাতের আমদানিনির্ভরতা ব্যাপক হারে হ্রাস পেয়ে সাশ্রয় হচ্ছে বিপুল পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা। সমৃদ্ধ হয়েছে দেশীয় শিল্প খাতের। দেশীয় অর্থনীতিকে আরও সমৃদ্ধ করতে সবাইকে দেশীয় পণ্য ক্রয় ও ব্যবহারের আহ্বান জানান তিনি।

আমিন খান জানান, ওয়ালটনের গুণগতমানের পণ্য শুধু দেশীয় ক্রেতাদেরই নয়; বৈশ্বিক ক্রেতাদেরও আস্থা ও মন জয় করে নিতে সক্ষম হচ্ছে। যার পরিপ্রেক্ষিতে ‘মেড ইন বাংলাদেশ’ ট্যাগযুক্ত ওয়ালটন ব্র্যান্ডের পণ্য এখন বিশ্বের ৫০টির বেশি দেশে রপ্তানি ও বাজারজাত করা হচ্ছে। বিশ্বের শতাধিক দেশে ব্র্যান্ড বিজনেস সম্প্রসারণের টার্গেট নিয়ে আন্তর্জাতিক বাজারে সাফল্যের সঙ্গে এগিয়ে যাচ্ছে ওয়ালটন।

অনুষ্ঠানে সাধারণ ক্রেতাদের বিশেষ সুবিধা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী উপহারের পণ্য তুলে দেওয়ায় ওয়ালটনকে ধন্যবাদ জানান বিজয়ীরা।

কর্মকর্তারা জানান, সিজন-২৩-এর আওতায় ক্রেতারা দেশের যেকোনো ওয়ালটন প্লাজা, পরিবেশক শোরুম কিংবা অনলাইনে ই-প্লাজা থেকে ফ্রিজ, টিভি, এসি, ওয়াশিং মেশিন ও বিএলডিসি ফ্যান কেনার পর পণ্যটির ডিজিটাল রেজিস্ট্রেশন করা হচ্ছে। এরপর ক্রেতাদের মোবাইলে ওয়ালটন থেকে উপহার পাওয়ার এসএমএস পাঠানো হচ্ছে। পাশাপাশি ওয়ালটনের ক্রেতাদের জন্য তৈরি ‘আমার আওয়াজ’ মোবাইল অ্যাপ প্ল্যাটফর্ম ব্যবহারকারী ক্রেতাদের জন্যও এবারের ক্যাম্পেইনে বাড়তি সুবিধা রয়েছে। আগামী ২৫ জানুয়ারি পর্যন্ত ওয়ালটন পণ্য ক্রয়ে ক্রেতাদের জন্য এই বিশেষ সুবিধা থাকছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত