Ajker Patrika

চরম অস্থিরতার মধ্যেও মুখ ফেরায়নি পোশাক খাতের অধিকাংশ বিদেশি ক্রেতা: জরিপ  

আপডেট : ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ২২: ১১
চরম অস্থিরতার মধ্যেও মুখ ফেরায়নি পোশাক খাতের অধিকাংশ বিদেশি ক্রেতা: জরিপ  

বাংলাদেশে রাজনৈতিক অস্থিরতা সত্ত্বেও ক্রয়াদেশ বা বায়না বাতিল করেনি বিশ্বের অধিকাংশ পোশাক ক্রেতা। মার্কিন গবেষণাপ্রতিষ্ঠান বিজনেস অ্যান্ড হিউম্যান রাইটস রিসোর্স সেন্টারের (বিএইচআরআরসি) জরিপ অনুসারে, ২০টি ক্রেতাপ্রতিষ্ঠানের মধ্যে ১২টি আন্তর্জাতিক ক্রেতা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক ক্রয় অব্যাহত রেখেছে। 

শীর্ষ ১৫ আন্তর্জাতিক ক্রেতার পাশাপাশি পাঁচটি স্ট্র্যাটেজিক কোম্পানির কাছে পাঁচটি প্রশ্নের উত্তর জানতে চায় প্রতিষ্ঠানটি। একই সঙ্গে ২০টি ব্র্যান্ডের সঙ্গেও যোগাযোগ করে প্রতিষ্ঠানটি। এগুলোর মধ্যে ১১টি ব্র্যান্ড ও দুটি কোম্পানি গবেষণাপ্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যোগাযোগ করে। তবে সাতটি ব্র্যান্ড বা কোম্পানি প্রতিষ্ঠানটির সঙ্গে যোগাযোগ করেনি। 

এর মধ্যে ১২টি প্রতিষ্ঠান সব প্রশ্নের জবাব দিয়েছে এবং বিএইচআরআরসিকে জানিয়েছে, অস্থিরতার সময়ে বাংলাদেশে থেকে ক্রয়াদেশ স্থানান্তর করেনি তারা। ওই সময়ে কোনো ব্র্যান্ড বা কোম্পানি জরিমানাও করেনি কারখানার মালিকদের। আর একটি প্রতিষ্ঠান সব প্রশ্নের জবাব দিলেও স্থানান্তরসংক্রান্ত কোনো তথ্য দেয়নি। 

এসব ব্র্যান্ড হলো অ্যাডিডাস, আসডা, সিঅ্যান্ডএ, এইচঅ্যান্ডএম, ইনডিটেক্স, মার্কস অ্যান্ড স্পেনসার, নেক্সট, পুমা, পিভিএইচ কর্প, টেসকো, প্রিমার্ক এবং ওয়ালমার্ট। 

কোটা সংস্কারের আন্দোলনের মধ্যে ব্র্যান্ডগুলো কীভাবে বাংলাদেশে নানা প্রতিকূলতা মোকাবিলা করছে, ক্রয়বাজারে দায়িত্বশীলতা বজায় রেখেছিল, সরবরাহকারী এবং ক্ষতিগ্রস্ত গার্মেন্টস কর্মীদের সহায়তা করেছে, সে সম্পর্কে তথ্য চেয়েছিল বিএইচআরআরসি। 

জবাবে বেশ কয়েকটি ব্র্যান্ড ক্রয়বাজারে দায়িত্বশীলতা বজায় রাখা এবং শ্রমিক কল্যাণের ওপর বিক্ষোভের প্রভাব সম্পর্কে তথ্য দিতে অনিচ্ছুক ছিল। তবে জরিপ করা ১৩টি ব্র্যান্ড জানিয়েছে, আন্দোলনের কারণে সরবরাহ প্রক্রিয়ায় ব্যাঘাত ঘটলে তারা বিলম্বে পণ্য পৌঁছানোর জন্য জরিমানা আরোপ করেনি। 

রিসোর্স সেন্টার শ্রমিকদের মজুরি প্রদানের ওপর ব্র্যান্ডগুলোর নজরদারির পদ্ধতি এবং জুলাই-আগস্টে সময়মতো পূর্ণাঙ্গ মজুরি প্রদান সম্পর্কে অনুসন্ধান করেছে। এতে দেখা গেছে, সাত ক্রেতাপ্রতিষ্ঠান—গ্যাপ, পুমা, পিভিএইচ, প্রিমার্ক, টেসকো, নেক্সট এবং এইচঅ্যান্ডএম জুলাই মাসের পূর্ণ বেতন সময়মতো প্রদানের বিষয়ে রিপোর্ট করেছে। অপরদিকে অ্যাডিডাস, আসডা এবং এমঅ্যান্ডএস জুলাই-আগস্টের মজুরি দেওয়া নিয়ে রূপরেখা দিয়েছে। কিন্তু তারা নিশ্চিত করেনি, সময়মতো পূর্ণ মজুরি দেওয়া হয়েছে কি না। আর সিঅ্যান্ডএ, ইনডিটেক্স এবং ওয়ালমার্ট এই প্রশ্নের উত্তর দেয়নি। 

আন্দোলনের সময় আসডা একটি বিকল্প সাপ্লাই চেইন ফাইন্যান্স অফার করেছে। এমঅ্যান্ডএস নগদ প্রবাহের সমস্যাগুলো সহজ করার জন্য ভেন্ডর ফাইন্যান্স ও লেটার অব ক্রেডিটের মতো বিকল্প সুবিধা দিয়েছে। সিঅ্যান্ডএ সরবরাহকারীদের কম-সুদ বা বিনা সুদে অর্থায়নের প্রস্তাব দিয়েছে এবং ডেলিভারির চ্যালেঞ্জগুলো প্রশমিত করতে বিমান চালানের খরচও দিয়েছে। 

প্রাইমার্ক সরবরাহকারীদের উৎপাদন ব্যাঘাত কাটিয়ে উঠতে উৎপাদন এবং ডেলিভারির সময়সীমা বাড়িয়েছে। প্রতিষ্ঠানটি দেরিতে পণ্য সরবরাহের জন্য জরিমানাও করেনি এবং বিভিন্ন অনার্থিক সহায়তা দিয়েছে। 

পোশাকশিল্প বিশেষজ্ঞরা অবশ্য বলছেন, পরোক্ষ ক্ষতি আরও বেশি; কারণ, বাংলাদেশের পোশাকশিল্পে এর দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব পড়বে। ব্যয়বহুল বিমান চালানের কারণে আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হবে ক্রেতারা। 

শ্রমিকদের ওপর রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে, নির্দিষ্ট সময়সীমার মধ্যে পণ্য সরবরাহ নিশ্চিত করতে শ্রমিকদের বাধ্যতামূলক ওভারটাইম করানো হয়েছে। আর্থিক ক্ষতি পূরণ করতে বা অর্ডার বাতিল এড়াতে উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা বাড়ানো হয়েছে। কারখানায় পৌঁছানোর জন্য শ্রমিকদের পরিবহন খরচ বৃদ্ধি এবং মজুরি না দেওয়া বা দেরিতেও দেওয়া হয়েছে। 

বাংলাদেশ নিটওয়্যার ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিকেএমইএ) ভাইস প্রেসিডেন্ট ফজলে শামীম এহসান বিএইচআরআরসিকে জানিয়েছিলেন, পণ্য সরবরাহে দেরি হওয়ার কারণে বেশ কিছু ব্র্যান্ড মূল্যছাড় দাবি করেছে, যা মিটিয়েছেন উৎপাদকেরা। যার পরিমাণ প্রায় ১ হাজার কোটি টাকা। আবার সরবরাহের সময় ঠিক রাখার জন্য বাড়তি পরিবহন খরচ, জরুরিভাবে পণ্য পাঠানোর জন্য উচ্চ বিমান ভাড়া গুনতে হচ্ছে উৎপাদকদের। অন্যদিকে কারখানার মালিকেরা ক্রেতাদের সঙ্গে আলোচনা করে যাচ্ছেন, যাতে পণ্য সরবরাহে দেরির জন্য জরিমানা করা না হয়। 

ফাইন্যান্সিয়াল এক্সপ্রেসকে তিনি বলেন, ‘বড় ব্র্যান্ডগুলো খুবই কৌশলী। তারা ঘোষণা দিয়ে অর্ডার বাতিল করবে না। কাঁচামাল ক্রয়, উৎপাদন পর্যায় এবং চালানের দীর্ঘ প্রক্রিয়ার কারণেও দ্রুত অর্ডার বাতিল না হয়ে থাকতে পারে। কিন্তু বিমান চালানে ব্যয়বহুল হওয়ায় অনেক কারখানা সম্প্রতি সমস্যায় পড়েছে।’ 

তিনি বলেন, প্রতি কেজিতে বিমানভাড়া বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬-৭ ডলার, এক মাস আগেও এটি মাত্র আড়াই ডলার ছিল। 

তিনি আরও বলেছেন, ‘গত মাসে অর্ডার প্লেসমেন্ট ধীরগতির ছিল। ছোট কারখানা থেকে ছোট ক্রেতারা বায়না বাতিল করায় এমনটি হতে পারে। একবার ছোট কারখানাগুলো কোনো ক্রেতা হারিয়ে ফেললে তাদের ফিরিয়ে আনা কঠিন।’ 

মজুরি বকেয়া সম্পর্কে এক প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘কিছু কারখানা এখনো মজুরি পরিশোধ করতে পারেনি; কারণ, তারা আকারে ছোট এবং নতুন ক্রয়াদেশ পেতে আপ্রাণ চেষ্টা করছে। আর এখন কোনো ব্যাংকও ঋণসহায়তা দিচ্ছে না।’ 

বাংলাদেশের শিল্প পুলিশের সূত্রের বরাত দিয়ে বিএইচআরআরসি জানিয়েছে, তাদের আওতাধীন প্রায় ৭০টি কারখানা রয়েছে, যারা জুলাই মাসের মজুরি পরিশোধ করেনি। আর গত বুধবার পর্যন্ত আগস্টের মজুরি পরিশোধ করেনি ৯৩ শতাংশ কারখানা। 

আইপি সূত্র এবং শ্রমিকনেতাদের মতে, বেশির ভাগ শ্রমিক ২৯ আগস্ট থেকে মজুরি বকেয়া, উপস্থিতি, টিফিন, রাতের বিলসহ বিভিন্ন ভাতা বৃদ্ধির জন্য আন্দোলন করেছেন। সর্বশেষ গত সপ্তাহে তাঁরা মজুরি বৃদ্ধির দাবি যুক্ত করেছেন। 

অন্যদিকে, কোটা সংস্কার ও সরকার পতনের আন্দোলন ঘিরে অস্থিতিশীল পরিস্থিতির কারণে হওয়া ক্ষতি পোষাতে সরকারের কাছে এক বছরের জন্য ‘সফট লোন’ চেয়েছে বাংলাদেশ তৈরি পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতি (বিজিএমইএ)। অন্তর্বর্তী সরকারের পক্ষ থেকে সহায়তার আশ্বাস দেওয়া হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

তারেক রহমানের জন্য নির্ধারিত ফ্লাইটের দুই কেবিন ক্রুকে প্রত্যাহার

‘আমি তো মামলা করি না, ডাইরেক্ট ওয়ারেন্ট করাই’

কুকুর লেলিয়ে পুরুষ ফিলিস্তিনিকে ধর্ষণ—বিবিসির প্রতিবেদনে ইসরায়েলি কারাগারে নির্যাতনের চিত্র

পত্রিকা অফিসে হামলার গোয়েন্দা তথ্য ছিল, আমলে নেওয়া হয়নি: সালাহউদ্দিন

দিল্লিতে বাংলাদেশ হাইকমিশনারকে হুমকি, বিবৃতিতে যা বলল ভারত

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

আদালতের রায়ে ইতিহাস গড়লেন ইলন মাস্ক, সম্পদ ছাড়াল ৭০০ বিলিয়ন ডলার

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ২১ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৯: ২৪
টেসলার প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) ইলন মাস্ক। ছবি: সংগৃহীত
টেসলার প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) ইলন মাস্ক। ছবি: সংগৃহীত

পে প্যাকেজ বা বেতন-ভাতাসংক্রান্ত একটি মামলার রায়ের পর টেসলার প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) ইলন মাস্কের সম্পদ গত শুক্রবার রাতে ৭৪৯ বিলিয়ন ডলারে গিয়ে ঠেকেছে।

ফোর্বসের বিলিয়নিয়ার ইনডেক্স অনুযায়ী, ডেলাওয়্যার সুপ্রিম কোর্ট মাস্কের ১৩৯ বিলিয়ন ডলার মূল্যের টেসলা স্টক অপশনগুলো পুনর্বহাল করার পরই তাঁর সম্পদে এই বিশাল উল্লম্ফন দেখা যায়।

উল্লেখ্য, গত বছর আদালত এই সুবিধাগুলো বাতিল করেছিলেন।

২০১৮ সালে মাস্কের যে বেতন প্যাকেজের মূল্য ৫৬ বিলিয়ন ডলার ছিল, সেটিই গত শুক্রবার ডেলাওয়্যার সুপ্রিম কোর্ট পুনর্বহাল করেন। এর দুই বছর আগে নিম্ন আদালত ওই পারিশ্রমিক চুক্তিকে ‘অবিশ্বাস্য’ আখ্যা দিয়ে বাতিল করেছিলেন।

সুপ্রিম কোর্ট রায়ে বলেছেন, ২০২৪ সালে দেওয়া যে সিদ্ধান্তে বেতনের প্যাকেজটি বাতিল করা হয়েছিল, তা সঠিক ছিল না এবং মাস্কের প্রতি অন্যায্য ছিল।

এর আগে চলতি সপ্তাহে মহাকাশ প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান স্পেসএক্স শেয়ারবাজারে আসতে পারে—এমন প্রতিবেদনের পর মাস্কের সম্পদ ৬০০ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে যায়। এর মধ্য দিয়ে তিনি ইতিহাসে প্রথম ব্যক্তি হিসেবে এই মাইলফলক স্পর্শ করেন।

এদিকে গত নভেম্বরে টেসলার শেয়ারহোল্ডাররা আলাদাভাবে মাস্কের জন্য ১ ট্রিলিয়ন ডলারের একটি পারিশ্রমিক পরিকল্পনা অনুমোদন করেন।

এটি করপোরেট ইতিহাসে সবচেয়ে বড় বেতন প্যাকেজ। বিনিয়োগকারীরা বৈদ্যুতিক গাড়ি নির্মাতা টেসলাকে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ও রোবটিকসভিত্তিক এক শক্তিশালী প্রতিষ্ঠানে রূপান্তরে মাস্কের পরিকল্পনার প্রতি সমর্থন জানান।

ফোর্বসের তালিকা অনুযায়ী, মাস্কের বর্তমান সম্পদমূল্য গুগলের সহপ্রতিষ্ঠাতা ল্যারি পেজের চেয়ে প্রায় ৫০০ বিলিয়ন ডলার বেশি। ল্যারি পেজ বর্তমানে বিশ্বের দ্বিতীয় ধনী ব্যক্তি।

তথ্যসূত্র: রয়টার্স

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

তারেক রহমানের জন্য নির্ধারিত ফ্লাইটের দুই কেবিন ক্রুকে প্রত্যাহার

‘আমি তো মামলা করি না, ডাইরেক্ট ওয়ারেন্ট করাই’

কুকুর লেলিয়ে পুরুষ ফিলিস্তিনিকে ধর্ষণ—বিবিসির প্রতিবেদনে ইসরায়েলি কারাগারে নির্যাতনের চিত্র

পত্রিকা অফিসে হামলার গোয়েন্দা তথ্য ছিল, আমলে নেওয়া হয়নি: সালাহউদ্দিন

দিল্লিতে বাংলাদেশ হাইকমিশনারকে হুমকি, বিবৃতিতে যা বলল ভারত

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

পুঁজিবাজারে নথি জমা এখন এক ক্লিকে

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
পুঁজিবাজারে নথি জমা এখন এক ক্লিকে

দীর্ঘদিন ধরে দেশের পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানি ও মিউচুয়াল ফান্ডগুলোর তথ্য জমা দেওয়ার প্রক্রিয়া ছিল জটিল ও সময়সাপেক্ষ। একই তথ্য বারবার ছাপিয়ে আলাদা স্টক এক্সচেঞ্জে জমা দিতে হতো। এ সমস্যার সমাধান হিসেবে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) সম্প্রতি চালু করেছে সম্পূর্ণ অনলাইনভিত্তিক স্মার্ট সাবমিশন সিস্টেম (এসএসএস)।

নতুন এই সিস্টেমের মাধ্যমে কোম্পানি ও ফান্ডগুলো মূল্য সংবেদনশীল ঘোষণা, আর্থিক প্রতিবেদন ও অন্যান্য রেগুলেটরি ফাইলিং কাগজ ছাড়াই অনলাইনে জমা দিতে পারবে। এতে সময় ও খরচ কমার পাশাপাশি তথ্য ব্যবস্থাপনায় স্বচ্ছতা এবং ট্র্যাকিং ক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে।

ডিএসই সূত্র জানায়, ২০২৪ সালের ফেব্রুয়ারি থেকে পরীক্ষামূলকভাবে চালু হওয়া এই প্ল্যাটফর্ম ধাপে ধাপে সম্প্রসারণ করা হয়েছে। সর্বশেষ দুটি নতুন মডিউল যুক্ত হওয়ায় এখন ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ ও চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে তথ্য একই ডিজিটাল গেটওয়ে দিয়ে জমা দেওয়া সম্ভব। ফলে দ্বৈত সাবমিশনের ঝামেলা প্রায় সম্পূর্ণভাবে শেষ হয়েছে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে ডিএসইর চেয়ারম্যান মমিনুল ইসলাম বলেন, এই উদ্যোগের মাধ্যমে কাগুজে নথির ওপর নির্ভরতা পুরোপুরি বন্ধ করা সম্ভব হয়েছে। ডিজিটাল সাবমিশন শুধু সুবিধার বিষয় নয়, এটি বাজার শৃঙ্খলা ও সময়ানুবর্তিতা নিশ্চিত করার একটি কাঠামোগত পরিবর্তন।

ডিএসই জানায়, চায়নিজ কনসোর্টিয়ামের সঙ্গে কাজ করে প্রশিক্ষণ ও সক্ষমতা বাড়ানোর পর সিস্টেমটি নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় তৈরি করা হয়েছে। এর ফলে ভবিষ্যতে বাজারের চাহিদা অনুযায়ী নতুন ফিচার যুক্ত করা সহজ হবে।

প্রযুক্তিগত দিক থেকে এর গুরুত্ব ব্যাখ্যা করে ডিএসইর প্রধান প্রযুক্তি কর্মকর্তা ড. মো. আসিফুর রহমান বলেন, একক ডিজিটাল সাবমিশন পয়েন্ট চালু হওয়ায় ম্যানুয়াল হস্তক্ষেপজনিত ভুল কমবে এবং তথ্য জমার প্রতিটি ধাপ ডিজিটালি যাচাইযোগ্য থাকবে।

বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এই উদ্যোগের প্রভাব শুধু স্টক এক্সচেঞ্জেই সীমাবদ্ধ থাকবে না।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

তারেক রহমানের জন্য নির্ধারিত ফ্লাইটের দুই কেবিন ক্রুকে প্রত্যাহার

‘আমি তো মামলা করি না, ডাইরেক্ট ওয়ারেন্ট করাই’

কুকুর লেলিয়ে পুরুষ ফিলিস্তিনিকে ধর্ষণ—বিবিসির প্রতিবেদনে ইসরায়েলি কারাগারে নির্যাতনের চিত্র

পত্রিকা অফিসে হামলার গোয়েন্দা তথ্য ছিল, আমলে নেওয়া হয়নি: সালাহউদ্দিন

দিল্লিতে বাংলাদেশ হাইকমিশনারকে হুমকি, বিবৃতিতে যা বলল ভারত

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

দেশের প্রথম ‘ক্যাশলেস’ জেলা হতে যাচ্ছে কক্সবাজার

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর। ছবি: আজকের পত্রিকা
বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর। ছবি: আজকের পত্রিকা

বাংলাদেশকে একটি ডিজিটাল ও নগদ লেনদেনমুক্ত (ক্যাশলেস) রাষ্ট্র হিসেবে গড়ে তোলার লক্ষ্যে বড় ধরনের উদ্যোগ নিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এই মহাপরিকল্পনার অংশ হিসেবে পর্যটন নগরী কক্সবাজারকে দেশের প্রথম ‘ক্যাশলেস’ জেলা হিসেবে ঘোষণা করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

গতকাল শনিবার চট্টগ্রামে আয়োজিত এক মতবিনিময় সভায় বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর এই তথ্য জানান।

গভর্নর বলেন, ‘২০২৭ সালের মধ্যে দেশের অন্তত ৭৫ শতাংশ খুচরা লেনদেন ডিজিটাল প্রযুক্তির মাধ্যমে সম্পন্ন করার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।’ তিনি জোর দিয়ে বলেন, ‘ডিজিটাল বাংলাদেশের স্বপ্ন বাস্তবায়ন করতে হলে দেশের প্রতিটি নাগরিকের হাতে ৬ হাজার থেকে ৭ হাজার টাকার মধ্যে স্মার্টফোন পৌঁছানো নিশ্চিত করতে হবে।’

চট্টগ্রাম অঞ্চলের অর্থনৈতিক সম্ভাবনা ও কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ভূমিকা শীর্ষক এই সভায় গভর্নর চট্টগ্রামকে দেশের ‘অর্থনৈতিক লাইফলাইন’ হিসেবে অভিহিত করেন। তিনি বলেন, ‘প্রধান সমুদ্রবন্দর, রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চল (ইপিজেড), ভারী শিল্প এবং জ্বালানি অবকাঠামোর কেন্দ্রবিন্দু এই চট্টগ্রাম। সিঙ্গাপুর, দুবাই বা হংকংয়ের মতো চট্টগ্রামের আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক সংযোগ শক্তিশালী করতে হবে। তবেই এই অঞ্চলের ভূ-রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সম্ভাবনা পুরোপুরি কাজে লাগানো সম্ভব হবে।’

আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম সহজ করতে দেশের সব সমুদ্রবন্দর ও বিমানবন্দরে শিগগিরই ২৪ ঘণ্টা রিয়েল টাইম গ্রস সেটেলমেন্ট (আরটিজিএস) সিস্টেম চালু করা হবে বলে জানান গভর্নর আহসান এইচ মনসুর। এটি একটি তাৎক্ষণিক ইলেকট্রনিক ফান্ড ট্রান্সফার ব্যবস্থা যা বাণিজ্যের গতি বহুগুণ বাড়িয়ে দেবে বলে উল্লেখ করেন তিনি।

এ ছাড়া, তৃণমূল পর্যায়ে বিশেষ করে ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প (এমএমই) এবং কৃষি খাতে পর্যাপ্ত ও সহজ শর্তে ঋণ নিশ্চিত করার ওপর গুরুত্বারোপ করেন গভর্নর। জেলা ও তৃণমূল পর্যায়ে উৎপাদনশীল খাতের বিকাশকে ত্বরান্বিত করতে ব্যাংকগুলোকে আরও সক্রিয় হওয়ার আহ্বান জানান তিনি।

বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক মো. মকবুল হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এই সভায় বিভিন্ন ব্যবসায়িক চেম্বার, ব্যাংকার, সরকারি সংস্থার প্রতিনিধি এবং শিক্ষাবিদ উপস্থিত ছিলেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

তারেক রহমানের জন্য নির্ধারিত ফ্লাইটের দুই কেবিন ক্রুকে প্রত্যাহার

‘আমি তো মামলা করি না, ডাইরেক্ট ওয়ারেন্ট করাই’

কুকুর লেলিয়ে পুরুষ ফিলিস্তিনিকে ধর্ষণ—বিবিসির প্রতিবেদনে ইসরায়েলি কারাগারে নির্যাতনের চিত্র

পত্রিকা অফিসে হামলার গোয়েন্দা তথ্য ছিল, আমলে নেওয়া হয়নি: সালাহউদ্দিন

দিল্লিতে বাংলাদেশ হাইকমিশনারকে হুমকি, বিবৃতিতে যা বলল ভারত

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

প্রগতি ইন্ডাস্ট্রিজের গ্র্যাচুইটি ফান্ড: কর্মকর্তার অবহেলায় ৬৫ লাখ টাকার ক্ষতি

  • ৩৩ মাস অব্যবহৃত পড়ে ছিল ফান্ডের অর্থ
  • অভিযুক্ত কর্মকর্তা আগাম স্বেচ্ছা অবসরে
  • দায়িত্বে অবহেলায় জরিমানা ১ লাখ টাকা
সবুর শুভ, চট্টগ্রাম 
প্রগতি ইন্ডাস্ট্রিজের গ্র্যাচুইটি ফান্ড: কর্মকর্তার অবহেলায় ৬৫ লাখ টাকার ক্ষতি

দেশের একমাত্র গাড়ি প্রস্তুত ও সংযোজনকারী রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান প্রগতি ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডে কর্মচারীদের গ্র্যাচুইটি ফান্ড ব্যবস্থাপনায় দীর্ঘ ৩৩ মাসের অবহেলায় অন্তত ৬৫ লাখ টাকার আর্থিক ক্ষতি হয়েছে। অথচ এই ক্ষতির দায়ে তদারকি কর্মকর্তার কাছ থেকে জরিমানা হিসেবে আদায় করা হয়েছে মাত্র ১ লাখ টাকা। বিশাল ক্ষতির বিপরীতে সামান্য দণ্ডে দায় নিষ্পত্তির ঘটনা প্রতিষ্ঠানটিতে প্রশ্ন ও সমালোচনার জন্ম দিয়েছে।

ফান্ড দেখভালের অতিরিক্ত দায়িত্বে থাকা সহপ্রধান হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা জসিম উদ্দিনের বিরুদ্ধে দায়িত্বে অবহেলার প্রমাণ মিললেও তিনি শর্তসাপেক্ষে স্বেচ্ছায় অবসর নিয়ে দায়িত্বমুক্ত হয়েছেন। ২৫ ডিসেম্বর তাঁর অবসর কার্যকর হওয়ার কথা থাকলেও তিনি গত ৩১ আগস্ট থেকে আগাম অবসরে যান। ২১ জুলাই শিল্প মন্ত্রণালয়ের অধীন বাংলাদেশ ইস্পাত ও প্রকৌশল করপোরেশনের (বিএসইসি) কাছে তিনি স্বেচ্ছায় অবসরের আবেদন করেন এবং তাঁর অবসর মঞ্জুর করা হয়।

এ বিষয়ে জসিম উদ্দিন বলেন, আমি প্রগতি ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড এমপ্লয়িজ গ্র্যাচুইটি ফান্ড ট্রাস্টের সদস্য নই। অতিরিক্ত দায়িত্ব হিসেবে ফান্ডের দেখভাল করেছি। ডাবল বেনিফিট স্কিমের মেয়াদ পূর্ণ হওয়ার পর ভুলবশত তা রিনিউ করা হয়নি। দোষটা আসলে ব্যাংকের, বিষয়টি ব্যাংকের পক্ষ থেকে জানানো হয়নি। সে কারণে আমরা মুনাফা থেকে বঞ্চিত হয়েছি।

জসিম উদ্দিন আরও বলেন, গ্র্যাচুইটি ফান্ড পরিচালনার পূর্ণ দায় ট্রাস্টি বোর্ডের সাত সদস্যের। তারপরও আমার বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা হয়েছে, আমি তা মোকাবিলা করেছি এবং ১ লাখ টাকা জরিমানাও গুনেছি। এটি অনিচ্ছাকৃত একটি ভুল।

প্রগতি ইন্ডাস্ট্রিজ সূত্রে জানা যায়, কর্মচারীদের জন্য গঠিত ‘প্রগতি ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড এমপ্লয়িজ গ্র্যাচুইটি ফান্ড ট্রাস্ট’-এর ২ কোটি টাকা ২০১২ সালের ২৪ জুলাই জনতা ব্যাংকের শেখ মুজিব রোড (আগ্রাবাদ) শাখায় ডাবল বেনিফিট স্কিমে জমা রাখা হয়। ছয় বছর মেয়াদি এ স্কিমে সুদের হার ছিল ১২ দশমিক ৬৩ শতাংশ। মেয়াদ শেষে ২০১৮ সালের ২৪ জুলাই সুদে-আসলে টাকার পরিমাণ দাঁড়ায় ৩ কোটি ৭৯ লাখ ৫৮ হাজার টাকা।

কিন্তু মেয়াদ শেষ হওয়ার পরবর্তী ৩৩ মাস ওই অর্থ একইভাবে ব্যাংকে পড়ে থাকে। এ সময়ে না প্রগতি কর্তৃপক্ষ উদ্যোগ নেয়, না ব্যাংক কর্তৃপক্ষ ফান্ডের মেয়াদোত্তীর্ণ হওয়ার বিষয়টি আনুষ্ঠানিকভাবে জানায়। এতে সম্ভাব্য মুনাফা হারিয়ে প্রতিষ্ঠানের ক্ষতির পরিমাণ নিরূপণ করা হয় ৯৩ লাখ ৯৪ হাজার ৬১০ টাকা।

ঘটনাটি ধরা পড়ার পর ফান্ড তদারকির দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তা জসিম উদ্দিনের কাছে ব্যাখ্যা চাওয়া হয়। ২০২৩ সালের ১ মার্চ দেওয়া তাঁর ব্যাখ্যা কর্তৃপক্ষ গ্রহণযোগ্য মনে করেনি। পরবর্তী সময়ে ১১ এপ্রিল প্রগতির তিন কর্মকর্তাকে নিয়ে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। কমিটির আহ্বায়ক ছিলেন বিভাগীয় প্রশাসনিক প্রধান মো. নুর হোসেন। সদস্য হিসেবে ছিলেন সহপ্রধান হিসাবরক্ষক গোলাম রাব্বি মোহাম্মদ সাদাত হোসেন এবং হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা মো. খায়রুল বাশার।

তদন্ত কমিটির সুপারিশে জনতা ব্যাংকের কাছে ৩৩ মাসের মুনাফা দাবি করা হয়। দেনদরবারের পর ব্যাংক সঞ্চয়ী বেনিফিটের আওতায় ২৮ লাখ টাকা পরিশোধ করে। জসিম উদ্দিনের কাছ থেকে আদায় করা জরিমানার ১ লাখ টাকা যোগ করে মোট উদ্ধার হয় ২৯ লাখ টাকা। ফলে এখনো অনাদায়ী থেকে যায় ৬৪ লাখ ৯৪ হাজার ৬১০ টাকা।

এ বিষয়ে জনতা ব্যাংক আগ্রাবাদ শাখার ব্যবস্থাপক মো. সানাউল্লাহ বলেন, ডাবল বেনিফিট স্কিমের মেয়াদ শেষে তা স্বয়ংক্রিয়ভাবে নবায়ন হয় না। এ কারণে ওই সময়ের বেনিফিট পাওয়ার সুযোগ ছিল না। ২৮ লাখ টাকা পরিশোধের বিষয়ে তিনি জানান, বিষয়টি তাঁর আগের দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যবস্থাপকের সময়কার সিদ্ধান্ত।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

তারেক রহমানের জন্য নির্ধারিত ফ্লাইটের দুই কেবিন ক্রুকে প্রত্যাহার

‘আমি তো মামলা করি না, ডাইরেক্ট ওয়ারেন্ট করাই’

কুকুর লেলিয়ে পুরুষ ফিলিস্তিনিকে ধর্ষণ—বিবিসির প্রতিবেদনে ইসরায়েলি কারাগারে নির্যাতনের চিত্র

পত্রিকা অফিসে হামলার গোয়েন্দা তথ্য ছিল, আমলে নেওয়া হয়নি: সালাহউদ্দিন

দিল্লিতে বাংলাদেশ হাইকমিশনারকে হুমকি, বিবৃতিতে যা বলল ভারত

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত