জয়নাল আবেদীন খান, ঢাকা

বিগত কয়েক বছর দেশ থেকে বিপুল পরিমাণ অর্থ বিদেশে পাচার হয়েছে। বিভিন্ন সময় নানাভাবে এই অর্থ পাচার হয়েছে। সাম্প্রতিক সময়ে দেশে ডলার-সংকট যত প্রকট হয়েছে, ততই অর্থ পাচারের বিশালতা স্পষ্ট হয়ে উঠছে। বাংলাদেশ অর্থনীতি সমিতির হালনাগাদ প্রকাশিত তথ্য বলছে, গত ৫০ বছরে বাংলাদেশে মোট পুঞ্জীভূত পাচার হওয়া অর্থের পরিমাণ ১১ লাখ ৯২ হাজার কোটি টাকা।
সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, কখনও বেনামী এবং ভুঁইফোর প্রতিষ্ঠান খুলে ঋণের নামে ব্যাংক থেকে টাকা আত্মসাৎ করে, কখনও ব্যবসা-বাণিজ্যের আড়ালে ওভার-আন্ডার ইনভয়েসিংয়ের সুযোগ নিয়ে অর্থ পাচারের পথ খোলা হয়েছে। এ ছাড়া হুন্ডির মাধ্যমেও একটি চক্র টাকা পাচার করেছে বলে অভিযোগ রয়েছে।
এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের সাম্প্রতিক এক প্রকাশনায় বলা হয়, বাংলাদেশ ব্যাংক ও বাংলাদেশ ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটসহ (বিএফআইইউ) সংশ্লিষ্টরা এ বিষয়ে সবকিছুই জানত। দায়িত্বশীলদের কেউ কেউ বিভিন্ন সময় স্বীকারও করতেন। তবে এই অর্থ পাচারের সঙ্গে তৎকালীন সরকারের উচ্চপর্যায়ের একটি মহলের সম্পৃক্ততার প্রমাণ পাওয়ায় তখন পাচারকারীদের শনাক্তে কোনো ব্যবস্থাই নেওয়া হয়নি। এভাবেই নীরবে দেশ থেকে অর্থ পাচারের সুযোগ উন্মুক্ত রাখা হয়েছিল।
এখন সরকারের ক্ষমতার পালাবদল হয়েছে। অর্থ পাচার নিয়ে নানা মহলের আলোচনা নতুন করে উঠছে। একই সঙ্গে গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদারসহ তাঁর সহচরদের দ্বারা বাংলাদেশ ব্যাংকে সংঘটিত বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতিও টেনে আনা হচ্ছে। খোদ বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মীরাই এখন সব বিষয় সামনে আনছেন। তাঁরা ক্ষোভও প্রকাশ করছেন। দাবি করছেন পদত্যাগেরও। একটা পর্যায়ে গতকাল বুধবার গভর্নরের অন্যতম সহচর হিসেবে পরিচিত বিএফআইইউ প্রধান মাসুদ বিশ্বাস এবং ডেপুটি গভর্নর কাজী ছাইদুর রহমানসহ আরও দুই গভর্নরের পদত্যাগ করাতে বাধ্য করেন ক্ষুব্ধ ব্যাংক কর্মকর্তারা। তবে কাজী সাইদুর রহমান ছাড়া অন্যরা কোনো লিখিত পদত্যাগপত্র দেননি। হদিস নেই গভর্নরসহ অনেকের।
বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মো. মেজবাউল হক বলেন, গভর্নরের বিষয়ে জানা নেই। ডেপুটি গভর্নর এবং বিএফআইইউ প্রধানদের পদত্যাগের বিষয়ে দাবি তুলেছেন কিছু ক্ষুব্ধ কর্মকর্তা। কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতিতে খেলাপি এবং পাচারকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার সুযোগ নেই। অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন হলে তাদের নির্দেশনা অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বিএফআইইউয়ের এক প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে, সংস্থাটির কাজ অর্থ পাচার রোধ করা। কিন্তু একার পক্ষে সম্ভব না। পাচারকারী ধরার মতো আইনি এবং কাঠামোগত সক্ষমতা নেই তাদের। পাচার রোধে দুর্নীতি দমন কমিশন, ব্যাংক এবং কাস্টমস বিভাগের ভূমিকা রয়েছে। কিন্তু কার্যকর ব্যবস্থা না থাকায় ব্যবসায়িক লেনদেনকালে ৪০০ শতাংশ পর্যন্ত পাচার হয়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর মোহাম্মদ ফরাসউদ্দিন আজকের পত্রিকাকে বলেন, দেশের ঋণ ও করখেলাপি এবং অর্থ পাচার একই সূত্রে গাঁথা। ঋণ পুনঃতফসিল করার কারণে ব্যাংকে অর্থের টান পড়েছে। সরকার এবং কেন্দ্রীয় ব্যাংক নীরব দর্শকের ভূমিকার কারণেই এগুলো বেড়েছে, যা দেশের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর। যার ফলে জাতি আজ অনেক কিছু দেখছে। তিনি এ পরিস্থিতির উত্তরণে দ্রুত কেন্দ্রীয় ব্যাংক এবং সম্ভাব্য গঠিত অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে খেলাপি ঋণ আদায় এবং পাচার রোধ এবং পাচারকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার পরামর্শ দেন।
সূত্র জানায়, বাংলাদেশ ব্যাংক ডলার-সংকট দেখা দিলে পাচার কমাতে বিশেষ কমিটি গঠন করে। বিশেষ করে আমদানি এবং রপ্তানি করা পণ্যের অনলাইন দর মনিটরিং কার্যক্রম শুরু করেছে। এতে ওভার এবং আন্ডার ইনভয়েসিংয়ের মাধ্যমে পাচার প্রায় ৯৩ শতাংশ কমে এসেছে বলে সম্প্রতি এক অনুষ্ঠানে দাবি করেন গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার। এ ছাড়া ব্যাংকের ঋণের নামে অর্থ লুট ঠেকাতে ব্যাংক কোম্পানি আইন সংশোধন, ব্যাংকের পরিচালক নিয়োগে শর্ত আরোপ এবং হুন্ডি ঠেকাতে খোলাবাজারে ডলারের দর নির্ধারণসহ বিভিন্ন প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে। কিন্তু তত দিনে অর্থ পাচার বেসামাল হয়ে পড়ে। সরকারের বিশেষ মন্ত্রী, ঘনিষ্ঠজন ও একটি বিশেষ গ্রুপকে বাঁচাতে হাত-পা গুটিয়ে রেখেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক ও বিএফআইইউয়ের মতো সংস্থাগুলো।
এ বিষয়ে বিএফআইইউ প্রধান মাসুদ বিশ্বাস আজকের পত্রিকাকে বলেন, বিএফআইইউর একার পক্ষে পাচার রোধ করা সম্ভব না। পাচার রোধে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, দুর্নীতি দমন কমিশন, বাণিজ্যিক ব্যাংকসমূহ এবং কাস্টমস বিভাগের ভূমিকা রয়েছে। কিন্তু কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া হয় না। এতে পাচার বেড়ে গেছে। এমনকি ব্যবসায়িক লেনদেনকালে ৪০০ শতাংশ পর্যন্ত ওভার ও আন্ডার ইনভয়েসিং হয়েছে।
বাংলাদেশে অর্থের অবৈধ ব্যবহার নিয়ে প্রথম আইনটির নাম ছিল মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইন-২০০২। এ আইনের বিধানাবলি অপর্যাপ্ত থাকায় ২০০৮ সালে একটি অধ্যাদেশ জারি করে। পরে লন্ডারিং আইন-২০০৯ বাতিল করে মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ অধ্যাদেশ ২০১২ জারি করা হয়, যা পরবর্তী সময়ে মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইন-২০১২ নামেই পরিচিত।
টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান বলেন, অর্থ পাচার রোধে দুটি প্রক্রিয়া উল্লেখ্য। প্রথমটি প্রতিকারমূলক এবং অর্থ ফেরত আনা। কিন্তু সংস্থাগুলো ঠিকমতো ব্যবস্থা নিচ্ছে না।
সূত্র জানায়, দেশে খেলাপি ঋণ ১ লাখ ৮২ হাজার কোটি টাকা। কিন্তু আইএমএফের হিসাবে অনাদায়ী অর্থের পরিমাণ প্রায় সাড়ে ৫ লাখ কোটি টাকা। মূলত খেলাপি ঋণের পুনঃ পুনঃ পুনঃ তফসিলের কারণে ব্যাংক খাতে অর্থের টান পড়েছে।

বিগত কয়েক বছর দেশ থেকে বিপুল পরিমাণ অর্থ বিদেশে পাচার হয়েছে। বিভিন্ন সময় নানাভাবে এই অর্থ পাচার হয়েছে। সাম্প্রতিক সময়ে দেশে ডলার-সংকট যত প্রকট হয়েছে, ততই অর্থ পাচারের বিশালতা স্পষ্ট হয়ে উঠছে। বাংলাদেশ অর্থনীতি সমিতির হালনাগাদ প্রকাশিত তথ্য বলছে, গত ৫০ বছরে বাংলাদেশে মোট পুঞ্জীভূত পাচার হওয়া অর্থের পরিমাণ ১১ লাখ ৯২ হাজার কোটি টাকা।
সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, কখনও বেনামী এবং ভুঁইফোর প্রতিষ্ঠান খুলে ঋণের নামে ব্যাংক থেকে টাকা আত্মসাৎ করে, কখনও ব্যবসা-বাণিজ্যের আড়ালে ওভার-আন্ডার ইনভয়েসিংয়ের সুযোগ নিয়ে অর্থ পাচারের পথ খোলা হয়েছে। এ ছাড়া হুন্ডির মাধ্যমেও একটি চক্র টাকা পাচার করেছে বলে অভিযোগ রয়েছে।
এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের সাম্প্রতিক এক প্রকাশনায় বলা হয়, বাংলাদেশ ব্যাংক ও বাংলাদেশ ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটসহ (বিএফআইইউ) সংশ্লিষ্টরা এ বিষয়ে সবকিছুই জানত। দায়িত্বশীলদের কেউ কেউ বিভিন্ন সময় স্বীকারও করতেন। তবে এই অর্থ পাচারের সঙ্গে তৎকালীন সরকারের উচ্চপর্যায়ের একটি মহলের সম্পৃক্ততার প্রমাণ পাওয়ায় তখন পাচারকারীদের শনাক্তে কোনো ব্যবস্থাই নেওয়া হয়নি। এভাবেই নীরবে দেশ থেকে অর্থ পাচারের সুযোগ উন্মুক্ত রাখা হয়েছিল।
এখন সরকারের ক্ষমতার পালাবদল হয়েছে। অর্থ পাচার নিয়ে নানা মহলের আলোচনা নতুন করে উঠছে। একই সঙ্গে গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদারসহ তাঁর সহচরদের দ্বারা বাংলাদেশ ব্যাংকে সংঘটিত বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতিও টেনে আনা হচ্ছে। খোদ বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মীরাই এখন সব বিষয় সামনে আনছেন। তাঁরা ক্ষোভও প্রকাশ করছেন। দাবি করছেন পদত্যাগেরও। একটা পর্যায়ে গতকাল বুধবার গভর্নরের অন্যতম সহচর হিসেবে পরিচিত বিএফআইইউ প্রধান মাসুদ বিশ্বাস এবং ডেপুটি গভর্নর কাজী ছাইদুর রহমানসহ আরও দুই গভর্নরের পদত্যাগ করাতে বাধ্য করেন ক্ষুব্ধ ব্যাংক কর্মকর্তারা। তবে কাজী সাইদুর রহমান ছাড়া অন্যরা কোনো লিখিত পদত্যাগপত্র দেননি। হদিস নেই গভর্নরসহ অনেকের।
বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মো. মেজবাউল হক বলেন, গভর্নরের বিষয়ে জানা নেই। ডেপুটি গভর্নর এবং বিএফআইইউ প্রধানদের পদত্যাগের বিষয়ে দাবি তুলেছেন কিছু ক্ষুব্ধ কর্মকর্তা। কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতিতে খেলাপি এবং পাচারকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার সুযোগ নেই। অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন হলে তাদের নির্দেশনা অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বিএফআইইউয়ের এক প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে, সংস্থাটির কাজ অর্থ পাচার রোধ করা। কিন্তু একার পক্ষে সম্ভব না। পাচারকারী ধরার মতো আইনি এবং কাঠামোগত সক্ষমতা নেই তাদের। পাচার রোধে দুর্নীতি দমন কমিশন, ব্যাংক এবং কাস্টমস বিভাগের ভূমিকা রয়েছে। কিন্তু কার্যকর ব্যবস্থা না থাকায় ব্যবসায়িক লেনদেনকালে ৪০০ শতাংশ পর্যন্ত পাচার হয়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর মোহাম্মদ ফরাসউদ্দিন আজকের পত্রিকাকে বলেন, দেশের ঋণ ও করখেলাপি এবং অর্থ পাচার একই সূত্রে গাঁথা। ঋণ পুনঃতফসিল করার কারণে ব্যাংকে অর্থের টান পড়েছে। সরকার এবং কেন্দ্রীয় ব্যাংক নীরব দর্শকের ভূমিকার কারণেই এগুলো বেড়েছে, যা দেশের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর। যার ফলে জাতি আজ অনেক কিছু দেখছে। তিনি এ পরিস্থিতির উত্তরণে দ্রুত কেন্দ্রীয় ব্যাংক এবং সম্ভাব্য গঠিত অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে খেলাপি ঋণ আদায় এবং পাচার রোধ এবং পাচারকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার পরামর্শ দেন।
সূত্র জানায়, বাংলাদেশ ব্যাংক ডলার-সংকট দেখা দিলে পাচার কমাতে বিশেষ কমিটি গঠন করে। বিশেষ করে আমদানি এবং রপ্তানি করা পণ্যের অনলাইন দর মনিটরিং কার্যক্রম শুরু করেছে। এতে ওভার এবং আন্ডার ইনভয়েসিংয়ের মাধ্যমে পাচার প্রায় ৯৩ শতাংশ কমে এসেছে বলে সম্প্রতি এক অনুষ্ঠানে দাবি করেন গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার। এ ছাড়া ব্যাংকের ঋণের নামে অর্থ লুট ঠেকাতে ব্যাংক কোম্পানি আইন সংশোধন, ব্যাংকের পরিচালক নিয়োগে শর্ত আরোপ এবং হুন্ডি ঠেকাতে খোলাবাজারে ডলারের দর নির্ধারণসহ বিভিন্ন প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে। কিন্তু তত দিনে অর্থ পাচার বেসামাল হয়ে পড়ে। সরকারের বিশেষ মন্ত্রী, ঘনিষ্ঠজন ও একটি বিশেষ গ্রুপকে বাঁচাতে হাত-পা গুটিয়ে রেখেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক ও বিএফআইইউয়ের মতো সংস্থাগুলো।
এ বিষয়ে বিএফআইইউ প্রধান মাসুদ বিশ্বাস আজকের পত্রিকাকে বলেন, বিএফআইইউর একার পক্ষে পাচার রোধ করা সম্ভব না। পাচার রোধে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, দুর্নীতি দমন কমিশন, বাণিজ্যিক ব্যাংকসমূহ এবং কাস্টমস বিভাগের ভূমিকা রয়েছে। কিন্তু কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া হয় না। এতে পাচার বেড়ে গেছে। এমনকি ব্যবসায়িক লেনদেনকালে ৪০০ শতাংশ পর্যন্ত ওভার ও আন্ডার ইনভয়েসিং হয়েছে।
বাংলাদেশে অর্থের অবৈধ ব্যবহার নিয়ে প্রথম আইনটির নাম ছিল মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইন-২০০২। এ আইনের বিধানাবলি অপর্যাপ্ত থাকায় ২০০৮ সালে একটি অধ্যাদেশ জারি করে। পরে লন্ডারিং আইন-২০০৯ বাতিল করে মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ অধ্যাদেশ ২০১২ জারি করা হয়, যা পরবর্তী সময়ে মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইন-২০১২ নামেই পরিচিত।
টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান বলেন, অর্থ পাচার রোধে দুটি প্রক্রিয়া উল্লেখ্য। প্রথমটি প্রতিকারমূলক এবং অর্থ ফেরত আনা। কিন্তু সংস্থাগুলো ঠিকমতো ব্যবস্থা নিচ্ছে না।
সূত্র জানায়, দেশে খেলাপি ঋণ ১ লাখ ৮২ হাজার কোটি টাকা। কিন্তু আইএমএফের হিসাবে অনাদায়ী অর্থের পরিমাণ প্রায় সাড়ে ৫ লাখ কোটি টাকা। মূলত খেলাপি ঋণের পুনঃ পুনঃ পুনঃ তফসিলের কারণে ব্যাংক খাতে অর্থের টান পড়েছে।
জয়নাল আবেদীন খান, ঢাকা

বিগত কয়েক বছর দেশ থেকে বিপুল পরিমাণ অর্থ বিদেশে পাচার হয়েছে। বিভিন্ন সময় নানাভাবে এই অর্থ পাচার হয়েছে। সাম্প্রতিক সময়ে দেশে ডলার-সংকট যত প্রকট হয়েছে, ততই অর্থ পাচারের বিশালতা স্পষ্ট হয়ে উঠছে। বাংলাদেশ অর্থনীতি সমিতির হালনাগাদ প্রকাশিত তথ্য বলছে, গত ৫০ বছরে বাংলাদেশে মোট পুঞ্জীভূত পাচার হওয়া অর্থের পরিমাণ ১১ লাখ ৯২ হাজার কোটি টাকা।
সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, কখনও বেনামী এবং ভুঁইফোর প্রতিষ্ঠান খুলে ঋণের নামে ব্যাংক থেকে টাকা আত্মসাৎ করে, কখনও ব্যবসা-বাণিজ্যের আড়ালে ওভার-আন্ডার ইনভয়েসিংয়ের সুযোগ নিয়ে অর্থ পাচারের পথ খোলা হয়েছে। এ ছাড়া হুন্ডির মাধ্যমেও একটি চক্র টাকা পাচার করেছে বলে অভিযোগ রয়েছে।
এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের সাম্প্রতিক এক প্রকাশনায় বলা হয়, বাংলাদেশ ব্যাংক ও বাংলাদেশ ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটসহ (বিএফআইইউ) সংশ্লিষ্টরা এ বিষয়ে সবকিছুই জানত। দায়িত্বশীলদের কেউ কেউ বিভিন্ন সময় স্বীকারও করতেন। তবে এই অর্থ পাচারের সঙ্গে তৎকালীন সরকারের উচ্চপর্যায়ের একটি মহলের সম্পৃক্ততার প্রমাণ পাওয়ায় তখন পাচারকারীদের শনাক্তে কোনো ব্যবস্থাই নেওয়া হয়নি। এভাবেই নীরবে দেশ থেকে অর্থ পাচারের সুযোগ উন্মুক্ত রাখা হয়েছিল।
এখন সরকারের ক্ষমতার পালাবদল হয়েছে। অর্থ পাচার নিয়ে নানা মহলের আলোচনা নতুন করে উঠছে। একই সঙ্গে গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদারসহ তাঁর সহচরদের দ্বারা বাংলাদেশ ব্যাংকে সংঘটিত বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতিও টেনে আনা হচ্ছে। খোদ বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মীরাই এখন সব বিষয় সামনে আনছেন। তাঁরা ক্ষোভও প্রকাশ করছেন। দাবি করছেন পদত্যাগেরও। একটা পর্যায়ে গতকাল বুধবার গভর্নরের অন্যতম সহচর হিসেবে পরিচিত বিএফআইইউ প্রধান মাসুদ বিশ্বাস এবং ডেপুটি গভর্নর কাজী ছাইদুর রহমানসহ আরও দুই গভর্নরের পদত্যাগ করাতে বাধ্য করেন ক্ষুব্ধ ব্যাংক কর্মকর্তারা। তবে কাজী সাইদুর রহমান ছাড়া অন্যরা কোনো লিখিত পদত্যাগপত্র দেননি। হদিস নেই গভর্নরসহ অনেকের।
বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মো. মেজবাউল হক বলেন, গভর্নরের বিষয়ে জানা নেই। ডেপুটি গভর্নর এবং বিএফআইইউ প্রধানদের পদত্যাগের বিষয়ে দাবি তুলেছেন কিছু ক্ষুব্ধ কর্মকর্তা। কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতিতে খেলাপি এবং পাচারকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার সুযোগ নেই। অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন হলে তাদের নির্দেশনা অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বিএফআইইউয়ের এক প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে, সংস্থাটির কাজ অর্থ পাচার রোধ করা। কিন্তু একার পক্ষে সম্ভব না। পাচারকারী ধরার মতো আইনি এবং কাঠামোগত সক্ষমতা নেই তাদের। পাচার রোধে দুর্নীতি দমন কমিশন, ব্যাংক এবং কাস্টমস বিভাগের ভূমিকা রয়েছে। কিন্তু কার্যকর ব্যবস্থা না থাকায় ব্যবসায়িক লেনদেনকালে ৪০০ শতাংশ পর্যন্ত পাচার হয়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর মোহাম্মদ ফরাসউদ্দিন আজকের পত্রিকাকে বলেন, দেশের ঋণ ও করখেলাপি এবং অর্থ পাচার একই সূত্রে গাঁথা। ঋণ পুনঃতফসিল করার কারণে ব্যাংকে অর্থের টান পড়েছে। সরকার এবং কেন্দ্রীয় ব্যাংক নীরব দর্শকের ভূমিকার কারণেই এগুলো বেড়েছে, যা দেশের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর। যার ফলে জাতি আজ অনেক কিছু দেখছে। তিনি এ পরিস্থিতির উত্তরণে দ্রুত কেন্দ্রীয় ব্যাংক এবং সম্ভাব্য গঠিত অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে খেলাপি ঋণ আদায় এবং পাচার রোধ এবং পাচারকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার পরামর্শ দেন।
সূত্র জানায়, বাংলাদেশ ব্যাংক ডলার-সংকট দেখা দিলে পাচার কমাতে বিশেষ কমিটি গঠন করে। বিশেষ করে আমদানি এবং রপ্তানি করা পণ্যের অনলাইন দর মনিটরিং কার্যক্রম শুরু করেছে। এতে ওভার এবং আন্ডার ইনভয়েসিংয়ের মাধ্যমে পাচার প্রায় ৯৩ শতাংশ কমে এসেছে বলে সম্প্রতি এক অনুষ্ঠানে দাবি করেন গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার। এ ছাড়া ব্যাংকের ঋণের নামে অর্থ লুট ঠেকাতে ব্যাংক কোম্পানি আইন সংশোধন, ব্যাংকের পরিচালক নিয়োগে শর্ত আরোপ এবং হুন্ডি ঠেকাতে খোলাবাজারে ডলারের দর নির্ধারণসহ বিভিন্ন প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে। কিন্তু তত দিনে অর্থ পাচার বেসামাল হয়ে পড়ে। সরকারের বিশেষ মন্ত্রী, ঘনিষ্ঠজন ও একটি বিশেষ গ্রুপকে বাঁচাতে হাত-পা গুটিয়ে রেখেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক ও বিএফআইইউয়ের মতো সংস্থাগুলো।
এ বিষয়ে বিএফআইইউ প্রধান মাসুদ বিশ্বাস আজকের পত্রিকাকে বলেন, বিএফআইইউর একার পক্ষে পাচার রোধ করা সম্ভব না। পাচার রোধে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, দুর্নীতি দমন কমিশন, বাণিজ্যিক ব্যাংকসমূহ এবং কাস্টমস বিভাগের ভূমিকা রয়েছে। কিন্তু কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া হয় না। এতে পাচার বেড়ে গেছে। এমনকি ব্যবসায়িক লেনদেনকালে ৪০০ শতাংশ পর্যন্ত ওভার ও আন্ডার ইনভয়েসিং হয়েছে।
বাংলাদেশে অর্থের অবৈধ ব্যবহার নিয়ে প্রথম আইনটির নাম ছিল মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইন-২০০২। এ আইনের বিধানাবলি অপর্যাপ্ত থাকায় ২০০৮ সালে একটি অধ্যাদেশ জারি করে। পরে লন্ডারিং আইন-২০০৯ বাতিল করে মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ অধ্যাদেশ ২০১২ জারি করা হয়, যা পরবর্তী সময়ে মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইন-২০১২ নামেই পরিচিত।
টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান বলেন, অর্থ পাচার রোধে দুটি প্রক্রিয়া উল্লেখ্য। প্রথমটি প্রতিকারমূলক এবং অর্থ ফেরত আনা। কিন্তু সংস্থাগুলো ঠিকমতো ব্যবস্থা নিচ্ছে না।
সূত্র জানায়, দেশে খেলাপি ঋণ ১ লাখ ৮২ হাজার কোটি টাকা। কিন্তু আইএমএফের হিসাবে অনাদায়ী অর্থের পরিমাণ প্রায় সাড়ে ৫ লাখ কোটি টাকা। মূলত খেলাপি ঋণের পুনঃ পুনঃ পুনঃ তফসিলের কারণে ব্যাংক খাতে অর্থের টান পড়েছে।

বিগত কয়েক বছর দেশ থেকে বিপুল পরিমাণ অর্থ বিদেশে পাচার হয়েছে। বিভিন্ন সময় নানাভাবে এই অর্থ পাচার হয়েছে। সাম্প্রতিক সময়ে দেশে ডলার-সংকট যত প্রকট হয়েছে, ততই অর্থ পাচারের বিশালতা স্পষ্ট হয়ে উঠছে। বাংলাদেশ অর্থনীতি সমিতির হালনাগাদ প্রকাশিত তথ্য বলছে, গত ৫০ বছরে বাংলাদেশে মোট পুঞ্জীভূত পাচার হওয়া অর্থের পরিমাণ ১১ লাখ ৯২ হাজার কোটি টাকা।
সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, কখনও বেনামী এবং ভুঁইফোর প্রতিষ্ঠান খুলে ঋণের নামে ব্যাংক থেকে টাকা আত্মসাৎ করে, কখনও ব্যবসা-বাণিজ্যের আড়ালে ওভার-আন্ডার ইনভয়েসিংয়ের সুযোগ নিয়ে অর্থ পাচারের পথ খোলা হয়েছে। এ ছাড়া হুন্ডির মাধ্যমেও একটি চক্র টাকা পাচার করেছে বলে অভিযোগ রয়েছে।
এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের সাম্প্রতিক এক প্রকাশনায় বলা হয়, বাংলাদেশ ব্যাংক ও বাংলাদেশ ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটসহ (বিএফআইইউ) সংশ্লিষ্টরা এ বিষয়ে সবকিছুই জানত। দায়িত্বশীলদের কেউ কেউ বিভিন্ন সময় স্বীকারও করতেন। তবে এই অর্থ পাচারের সঙ্গে তৎকালীন সরকারের উচ্চপর্যায়ের একটি মহলের সম্পৃক্ততার প্রমাণ পাওয়ায় তখন পাচারকারীদের শনাক্তে কোনো ব্যবস্থাই নেওয়া হয়নি। এভাবেই নীরবে দেশ থেকে অর্থ পাচারের সুযোগ উন্মুক্ত রাখা হয়েছিল।
এখন সরকারের ক্ষমতার পালাবদল হয়েছে। অর্থ পাচার নিয়ে নানা মহলের আলোচনা নতুন করে উঠছে। একই সঙ্গে গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদারসহ তাঁর সহচরদের দ্বারা বাংলাদেশ ব্যাংকে সংঘটিত বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতিও টেনে আনা হচ্ছে। খোদ বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মীরাই এখন সব বিষয় সামনে আনছেন। তাঁরা ক্ষোভও প্রকাশ করছেন। দাবি করছেন পদত্যাগেরও। একটা পর্যায়ে গতকাল বুধবার গভর্নরের অন্যতম সহচর হিসেবে পরিচিত বিএফআইইউ প্রধান মাসুদ বিশ্বাস এবং ডেপুটি গভর্নর কাজী ছাইদুর রহমানসহ আরও দুই গভর্নরের পদত্যাগ করাতে বাধ্য করেন ক্ষুব্ধ ব্যাংক কর্মকর্তারা। তবে কাজী সাইদুর রহমান ছাড়া অন্যরা কোনো লিখিত পদত্যাগপত্র দেননি। হদিস নেই গভর্নরসহ অনেকের।
বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মো. মেজবাউল হক বলেন, গভর্নরের বিষয়ে জানা নেই। ডেপুটি গভর্নর এবং বিএফআইইউ প্রধানদের পদত্যাগের বিষয়ে দাবি তুলেছেন কিছু ক্ষুব্ধ কর্মকর্তা। কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতিতে খেলাপি এবং পাচারকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার সুযোগ নেই। অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন হলে তাদের নির্দেশনা অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বিএফআইইউয়ের এক প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে, সংস্থাটির কাজ অর্থ পাচার রোধ করা। কিন্তু একার পক্ষে সম্ভব না। পাচারকারী ধরার মতো আইনি এবং কাঠামোগত সক্ষমতা নেই তাদের। পাচার রোধে দুর্নীতি দমন কমিশন, ব্যাংক এবং কাস্টমস বিভাগের ভূমিকা রয়েছে। কিন্তু কার্যকর ব্যবস্থা না থাকায় ব্যবসায়িক লেনদেনকালে ৪০০ শতাংশ পর্যন্ত পাচার হয়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর মোহাম্মদ ফরাসউদ্দিন আজকের পত্রিকাকে বলেন, দেশের ঋণ ও করখেলাপি এবং অর্থ পাচার একই সূত্রে গাঁথা। ঋণ পুনঃতফসিল করার কারণে ব্যাংকে অর্থের টান পড়েছে। সরকার এবং কেন্দ্রীয় ব্যাংক নীরব দর্শকের ভূমিকার কারণেই এগুলো বেড়েছে, যা দেশের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর। যার ফলে জাতি আজ অনেক কিছু দেখছে। তিনি এ পরিস্থিতির উত্তরণে দ্রুত কেন্দ্রীয় ব্যাংক এবং সম্ভাব্য গঠিত অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে খেলাপি ঋণ আদায় এবং পাচার রোধ এবং পাচারকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার পরামর্শ দেন।
সূত্র জানায়, বাংলাদেশ ব্যাংক ডলার-সংকট দেখা দিলে পাচার কমাতে বিশেষ কমিটি গঠন করে। বিশেষ করে আমদানি এবং রপ্তানি করা পণ্যের অনলাইন দর মনিটরিং কার্যক্রম শুরু করেছে। এতে ওভার এবং আন্ডার ইনভয়েসিংয়ের মাধ্যমে পাচার প্রায় ৯৩ শতাংশ কমে এসেছে বলে সম্প্রতি এক অনুষ্ঠানে দাবি করেন গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার। এ ছাড়া ব্যাংকের ঋণের নামে অর্থ লুট ঠেকাতে ব্যাংক কোম্পানি আইন সংশোধন, ব্যাংকের পরিচালক নিয়োগে শর্ত আরোপ এবং হুন্ডি ঠেকাতে খোলাবাজারে ডলারের দর নির্ধারণসহ বিভিন্ন প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে। কিন্তু তত দিনে অর্থ পাচার বেসামাল হয়ে পড়ে। সরকারের বিশেষ মন্ত্রী, ঘনিষ্ঠজন ও একটি বিশেষ গ্রুপকে বাঁচাতে হাত-পা গুটিয়ে রেখেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক ও বিএফআইইউয়ের মতো সংস্থাগুলো।
এ বিষয়ে বিএফআইইউ প্রধান মাসুদ বিশ্বাস আজকের পত্রিকাকে বলেন, বিএফআইইউর একার পক্ষে পাচার রোধ করা সম্ভব না। পাচার রোধে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, দুর্নীতি দমন কমিশন, বাণিজ্যিক ব্যাংকসমূহ এবং কাস্টমস বিভাগের ভূমিকা রয়েছে। কিন্তু কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া হয় না। এতে পাচার বেড়ে গেছে। এমনকি ব্যবসায়িক লেনদেনকালে ৪০০ শতাংশ পর্যন্ত ওভার ও আন্ডার ইনভয়েসিং হয়েছে।
বাংলাদেশে অর্থের অবৈধ ব্যবহার নিয়ে প্রথম আইনটির নাম ছিল মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইন-২০০২। এ আইনের বিধানাবলি অপর্যাপ্ত থাকায় ২০০৮ সালে একটি অধ্যাদেশ জারি করে। পরে লন্ডারিং আইন-২০০৯ বাতিল করে মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ অধ্যাদেশ ২০১২ জারি করা হয়, যা পরবর্তী সময়ে মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইন-২০১২ নামেই পরিচিত।
টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান বলেন, অর্থ পাচার রোধে দুটি প্রক্রিয়া উল্লেখ্য। প্রথমটি প্রতিকারমূলক এবং অর্থ ফেরত আনা। কিন্তু সংস্থাগুলো ঠিকমতো ব্যবস্থা নিচ্ছে না।
সূত্র জানায়, দেশে খেলাপি ঋণ ১ লাখ ৮২ হাজার কোটি টাকা। কিন্তু আইএমএফের হিসাবে অনাদায়ী অর্থের পরিমাণ প্রায় সাড়ে ৫ লাখ কোটি টাকা। মূলত খেলাপি ঋণের পুনঃ পুনঃ পুনঃ তফসিলের কারণে ব্যাংক খাতে অর্থের টান পড়েছে।

জ্বালানি তেল প্রতিষ্ঠান স্ট্যান্ডার্ড এশিয়াটিক অয়েল কোম্পানি লিমিটেডের (এসএওসিএল) প্রায় ২ কোটি ৫৫ লাখ টাকা আত্মসাৎ ও মানি লন্ডারিংয়ের অভিযোগে পাঁচজনের বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। গতকাল সোমবার দুদকের উপপরিচালক (মানি লন্ডারিং) মো. জাহাঙ্গীর আলম মামলাটি করেন।
১ ঘণ্টা আগে
ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ পিএলসির শরিয়াহ সুপারভাইজরি কাউন্সিলের সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকাল রোববার (২৮ ডিসেম্বর) ইসলামী ব্যাংক টাওয়ারে আয়োজিত এ সভায় সভাপতিত্ব করেন কাউন্সিলের চেয়ারম্যান মুফতি ছাঈদ আহমাদ।
১৩ ঘণ্টা আগে
শীতের রাত পেরিয়ে ভোরের আলো ফোটার আগেই যশোরের গ্রামাঞ্চলে শুরু হয় ব্যস্ততা। খেজুরগাছের নিচে হাজির হন গাছিরা। আগের বিকেলে কাটা গাছের ‘চোখ’ বেয়ে সারা রাত মাটির হাঁড়িতে জমেছে সুমিষ্ট খেজুর রস।
১৯ ঘণ্টা আগে
দেশের ব্যাংকিং খাতের ভেতরে জমে থাকা অনিয়ম, রাজনৈতিক আশ্রয় ও কৃত্রিম হিসাবের পর্দা চলতি বছর যেন একে একে সরে যেতে শুরু করেছে। আর তাতেই সামনে এসেছে এক ভয়াবহ বাস্তবতা। সরকারি ও শরিয়াহভিত্তিক ইসলামি ব্যাংকগুলো খেলাপি ঋণের ভারে এখন কার্যত দিশেহারা।
১ দিন আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম

জ্বালানি তেল প্রতিষ্ঠান স্ট্যান্ডার্ড এশিয়াটিক অয়েল কোম্পানি লিমিটেডের (এসএওসিএল) প্রায় ২ কোটি ৫৫ লাখ টাকা আত্মসাৎ ও মানি লন্ডারিংয়ের অভিযোগে পাঁচজনের বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। গতকাল সোমবার দুদকের উপপরিচালক (মানি লন্ডারিং) মো. জাহাঙ্গীর আলম মামলাটি করেন।
মামলার আসামিরা হলেন এসএওসিএলের কর্মকর্তা (এইচআর) আব্দুল্লাহ আল মামুন (৩৭), উপব্যবস্থাপক (হিসাব) ও ডিপো ইনচার্জ মোহাম্মদ মাহমুদুল হক (৪৫), গোল্ডেন সিফাত এন্টারপ্রাইজের মালিক মোহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন গিয়াস (৪৬), আজহার টেলিকমের স্বত্বাধিকারী মো. সোহেল রানা (৪৪) এবং মেসার্স মদিনা কোয়ালিটির স্বত্বাধিকারী মো. মাসুদ মিয়া (৫১)।
দুদক চট্টগ্রামের উপপরিচালক সুবেল আহমেদ বলেন, আসামিরা পরস্পর যোগসাজশে ক্ষমতার অপব্যবহার করে স্ট্যান্ডার্ড এশিয়াটিক অয়েল কোম্পানি লিমিটেডের হিসাব থেকে প্রায় ২ কোটি ৫৫ লাখ টাকা বিভিন্নভাবে স্থানান্তর ও আত্মসাৎ করেন।
এজাহার থেকে প্রাপ্ত তথ্যমতে, ২০১৮-১৯ অর্থবছরে এসএওসিএলের এলসি-সংক্রান্ত লেনদেনের নামে প্রকৃত সরবরাহকারীর পরিবর্তে ভুয়া ও সম্পর্কহীন প্রতিষ্ঠানের অনুকূলে চেক ইস্যু করার বিষয় দুদকের অনুসন্ধানে উঠে আসে। পরে এসব চেকের অর্থ বিভিন্ন ব্যক্তিগত ও বাণিজ্যিক অ্যাকাউন্টে স্থানান্তর কিংবা নগদে উত্তোলন করে আত্মসাৎ করা হয়। অধিকাংশ ক্ষেত্রে কোনো এলসি খোলা হয়নি এবং লেনদেনগুলো কোম্পানির জেভি-০৮ ও জেনারেল লেজারে অন্তর্ভুক্তও করা হয়নি।
অনুসন্ধান প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, পাঁচটি চেকের মধ্যে তিনটির অর্থ গোল্ডেন সিফাত এন্টারপ্রাইজ, আজহার টেলিকম ও মদিনা কোয়ালিটির অ্যাকাউন্টে জমা হয় এবং বাকি দুটি চেকের অর্থ নগদে উত্তোলন করা হয়। চেক জমাদানকারী হিসেবে বারবার আব্দুল্লাহ আল মামুনের নাম পাওয়া গেছে। সংশ্লিষ্ট পেমেন্ট ভাউচারে নিরীক্ষা বিভাগের স্বাক্ষর না থাকাও অনিয়মের প্রমাণ হিসেবে উঠে এসেছে।

জ্বালানি তেল প্রতিষ্ঠান স্ট্যান্ডার্ড এশিয়াটিক অয়েল কোম্পানি লিমিটেডের (এসএওসিএল) প্রায় ২ কোটি ৫৫ লাখ টাকা আত্মসাৎ ও মানি লন্ডারিংয়ের অভিযোগে পাঁচজনের বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। গতকাল সোমবার দুদকের উপপরিচালক (মানি লন্ডারিং) মো. জাহাঙ্গীর আলম মামলাটি করেন।
মামলার আসামিরা হলেন এসএওসিএলের কর্মকর্তা (এইচআর) আব্দুল্লাহ আল মামুন (৩৭), উপব্যবস্থাপক (হিসাব) ও ডিপো ইনচার্জ মোহাম্মদ মাহমুদুল হক (৪৫), গোল্ডেন সিফাত এন্টারপ্রাইজের মালিক মোহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন গিয়াস (৪৬), আজহার টেলিকমের স্বত্বাধিকারী মো. সোহেল রানা (৪৪) এবং মেসার্স মদিনা কোয়ালিটির স্বত্বাধিকারী মো. মাসুদ মিয়া (৫১)।
দুদক চট্টগ্রামের উপপরিচালক সুবেল আহমেদ বলেন, আসামিরা পরস্পর যোগসাজশে ক্ষমতার অপব্যবহার করে স্ট্যান্ডার্ড এশিয়াটিক অয়েল কোম্পানি লিমিটেডের হিসাব থেকে প্রায় ২ কোটি ৫৫ লাখ টাকা বিভিন্নভাবে স্থানান্তর ও আত্মসাৎ করেন।
এজাহার থেকে প্রাপ্ত তথ্যমতে, ২০১৮-১৯ অর্থবছরে এসএওসিএলের এলসি-সংক্রান্ত লেনদেনের নামে প্রকৃত সরবরাহকারীর পরিবর্তে ভুয়া ও সম্পর্কহীন প্রতিষ্ঠানের অনুকূলে চেক ইস্যু করার বিষয় দুদকের অনুসন্ধানে উঠে আসে। পরে এসব চেকের অর্থ বিভিন্ন ব্যক্তিগত ও বাণিজ্যিক অ্যাকাউন্টে স্থানান্তর কিংবা নগদে উত্তোলন করে আত্মসাৎ করা হয়। অধিকাংশ ক্ষেত্রে কোনো এলসি খোলা হয়নি এবং লেনদেনগুলো কোম্পানির জেভি-০৮ ও জেনারেল লেজারে অন্তর্ভুক্তও করা হয়নি।
অনুসন্ধান প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, পাঁচটি চেকের মধ্যে তিনটির অর্থ গোল্ডেন সিফাত এন্টারপ্রাইজ, আজহার টেলিকম ও মদিনা কোয়ালিটির অ্যাকাউন্টে জমা হয় এবং বাকি দুটি চেকের অর্থ নগদে উত্তোলন করা হয়। চেক জমাদানকারী হিসেবে বারবার আব্দুল্লাহ আল মামুনের নাম পাওয়া গেছে। সংশ্লিষ্ট পেমেন্ট ভাউচারে নিরীক্ষা বিভাগের স্বাক্ষর না থাকাও অনিয়মের প্রমাণ হিসেবে উঠে এসেছে।

বিগত কয়েক বছর দেশ থেকে বিপুল পরিমাণ অর্থ বিদেশে পাচার হয়েছে। বিভিন্ন সময় নানাভাবে এই অর্থ পাচার হয়েছে। সাম্প্রতিক সময়ে দেশে ডলার-সংকট যত প্রকট হয়েছে, ততই অর্থ পাচারের বিশালতা স্পষ্ট হয়ে উঠছে। বাংলাদেশ অর্থনীতি সমিতির হালনাগাদ প্রকাশিত তথ্য বলছে, গত ৫০ বছরে বাংলাদেশে মোট পুঞ্জীভূত পাচার হওয়া অর্থের প
০৮ আগস্ট ২০২৪
ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ পিএলসির শরিয়াহ সুপারভাইজরি কাউন্সিলের সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকাল রোববার (২৮ ডিসেম্বর) ইসলামী ব্যাংক টাওয়ারে আয়োজিত এ সভায় সভাপতিত্ব করেন কাউন্সিলের চেয়ারম্যান মুফতি ছাঈদ আহমাদ।
১৩ ঘণ্টা আগে
শীতের রাত পেরিয়ে ভোরের আলো ফোটার আগেই যশোরের গ্রামাঞ্চলে শুরু হয় ব্যস্ততা। খেজুরগাছের নিচে হাজির হন গাছিরা। আগের বিকেলে কাটা গাছের ‘চোখ’ বেয়ে সারা রাত মাটির হাঁড়িতে জমেছে সুমিষ্ট খেজুর রস।
১৯ ঘণ্টা আগে
দেশের ব্যাংকিং খাতের ভেতরে জমে থাকা অনিয়ম, রাজনৈতিক আশ্রয় ও কৃত্রিম হিসাবের পর্দা চলতি বছর যেন একে একে সরে যেতে শুরু করেছে। আর তাতেই সামনে এসেছে এক ভয়াবহ বাস্তবতা। সরকারি ও শরিয়াহভিত্তিক ইসলামি ব্যাংকগুলো খেলাপি ঋণের ভারে এখন কার্যত দিশেহারা।
১ দিন আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ পিএলসির শরিয়াহ সুপারভাইজরি কাউন্সিলের সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
গতকাল রোববার (২৮ ডিসেম্বর) ইসলামী ব্যাংক টাওয়ারে আয়োজিত এই সভায় সভাপতিত্ব করেন কাউন্সিলের চেয়ারম্যান মুফতি ছাঈদ আহমাদ।
সভায় উপস্থিত ছিলেন ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ পিএলসির ম্যানেজিং ডাইরেক্টর মো. ওমর ফারুক খাঁন এবং শরিয়াহ সুপারভাইজরি কাউন্সিলের সদস্যসচিব অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ আব্দুস সামাদ। এ ছাড়া কাউন্সিলের অন্য সদস্যবৃন্দ সভায় অংশগ্রহণ করেন।

ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ পিএলসির শরিয়াহ সুপারভাইজরি কাউন্সিলের সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
গতকাল রোববার (২৮ ডিসেম্বর) ইসলামী ব্যাংক টাওয়ারে আয়োজিত এই সভায় সভাপতিত্ব করেন কাউন্সিলের চেয়ারম্যান মুফতি ছাঈদ আহমাদ।
সভায় উপস্থিত ছিলেন ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ পিএলসির ম্যানেজিং ডাইরেক্টর মো. ওমর ফারুক খাঁন এবং শরিয়াহ সুপারভাইজরি কাউন্সিলের সদস্যসচিব অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ আব্দুস সামাদ। এ ছাড়া কাউন্সিলের অন্য সদস্যবৃন্দ সভায় অংশগ্রহণ করেন।

বিগত কয়েক বছর দেশ থেকে বিপুল পরিমাণ অর্থ বিদেশে পাচার হয়েছে। বিভিন্ন সময় নানাভাবে এই অর্থ পাচার হয়েছে। সাম্প্রতিক সময়ে দেশে ডলার-সংকট যত প্রকট হয়েছে, ততই অর্থ পাচারের বিশালতা স্পষ্ট হয়ে উঠছে। বাংলাদেশ অর্থনীতি সমিতির হালনাগাদ প্রকাশিত তথ্য বলছে, গত ৫০ বছরে বাংলাদেশে মোট পুঞ্জীভূত পাচার হওয়া অর্থের প
০৮ আগস্ট ২০২৪
জ্বালানি তেল প্রতিষ্ঠান স্ট্যান্ডার্ড এশিয়াটিক অয়েল কোম্পানি লিমিটেডের (এসএওসিএল) প্রায় ২ কোটি ৫৫ লাখ টাকা আত্মসাৎ ও মানি লন্ডারিংয়ের অভিযোগে পাঁচজনের বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। গতকাল সোমবার দুদকের উপপরিচালক (মানি লন্ডারিং) মো. জাহাঙ্গীর আলম মামলাটি করেন।
১ ঘণ্টা আগে
শীতের রাত পেরিয়ে ভোরের আলো ফোটার আগেই যশোরের গ্রামাঞ্চলে শুরু হয় ব্যস্ততা। খেজুরগাছের নিচে হাজির হন গাছিরা। আগের বিকেলে কাটা গাছের ‘চোখ’ বেয়ে সারা রাত মাটির হাঁড়িতে জমেছে সুমিষ্ট খেজুর রস।
১৯ ঘণ্টা আগে
দেশের ব্যাংকিং খাতের ভেতরে জমে থাকা অনিয়ম, রাজনৈতিক আশ্রয় ও কৃত্রিম হিসাবের পর্দা চলতি বছর যেন একে একে সরে যেতে শুরু করেছে। আর তাতেই সামনে এসেছে এক ভয়াবহ বাস্তবতা। সরকারি ও শরিয়াহভিত্তিক ইসলামি ব্যাংকগুলো খেলাপি ঋণের ভারে এখন কার্যত দিশেহারা।
১ দিন আগেজাহিদ হাসান, যশোর

শীতের রাত পেরিয়ে ভোরের আলো ফোটার আগেই যশোরের গ্রামাঞ্চলে শুরু হয় ব্যস্ততা। খেজুরগাছের নিচে হাজির হন গাছিরা। আগের বিকেলে কাটা গাছের ‘চোখ’ বেয়ে সারা রাত মাটির হাঁড়িতে জমেছে সুমিষ্ট খেজুর রস। ভোরে সেই রস নামিয়ে শুরু হয় আরেক কর্মযজ্ঞ; চুলায় জ্বাল দিয়ে গুড় তৈরির কাজ। বাড়ির নারীরাই মূলত এই প্রক্রিয়ায় নেতৃত্ব দেন। কয়েক ঘণ্টা জ্বালানোর পর তৈরি হয় সুস্বাদু খেজুর গুড় ও পাটালি।
শীত মৌসুম এলেই এমন দৃশ্য দেখা যায় খেজুর গুড়ের জেলা খ্যাত যশোরের প্রায় প্রতিটি গ্রামে। সম্প্রতি যশোরের খেজুর গুড় ভৌগোলিক নির্দেশক (জিআই) পণ্যের স্বীকৃতি পাওয়ায় এর ঐতিহ্যের পাশাপাশি অর্থনৈতিক সম্ভাবনাও নতুন করে সামনে এসেছে।
উৎপাদন ও বাজারের চিত্র
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, চলতি মৌসুমে যশোরে প্রায় ১২০ কোটি টাকার খেজুর রস ও গুড় উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এই উৎপাদন গ্রামীণ অর্থনীতির চাকা আরও গতিশীল করবে বলে আশা সংশ্লিষ্টদের।
বর্তমানে খেজুরের কাঁচা রস প্রতি মাটির হাঁড়ি ২০০ থেকে ৪০০ টাকা, দানা গুড় প্রতি কেজি ৩৫০-৪০০ টাকা এবং পাটালি প্রতি কেজি ৪৫০-৬০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। বাজারদর বাড়লেও গাছিরা বলছেন, শ্রম ও ঝুঁকির তুলনায় লাভ সীমিত।
গাছির সংকট বড় চ্যালেঞ্জ
যশোর সদর উপজেলার নওয়াপাড়া গ্রামের গাছি আজিবর প্রায় ৩৫ বছর ধরে খেজুর গাছ কাটছেন। তিনি বলেন, ‘আগে দেড় শ গাছ কাটতাম, এখন বয়সের কারণে ৩৫-৪০টার বেশি পারি না। রস ও গুড়ের দাম বেড়েছে ঠিকই, কিন্তু কাটার মতো গাছ কমে গেছে। আবার গাছ থাকলেও দক্ষ গাছির অভাব। এবার বেশি শীত পড়ায় রসও ভালো নামছে, গুড়ের উৎপাদনও বেশি।’

মনিরামপুর উপজেলার সরসকাটি গ্রামের গাছি অতিয়ারও প্রায় ৪০ বছর ধরে এই পেশায় যুক্ত। তিনি বলেন, এবার ৫০টা গাছ কাটছি। প্রতিদিন ৮-১০ কেজি গুড় তৈরি হয়। কাজটা খুব কষ্টের। তবে শীত মৌসুমে এই আয়েই পুরো বছরের সংসার চলে।
ই-কমার্সে বাড়ছে চাহিদা
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, যশোর জেলায় মোট খেজুরগাছের সংখ্যা ২৩ লাখ ৩০ হাজার ৬৯৫। এগুলোর মধ্যে চলতি মৌসুমে রস আহরণের উপযোগী গাছ রয়েছে ৩ লাখ ৭ হাজার ১৩০টি।
উৎপাদিত গুড় প্রথমে স্থানীয় হাটে বিক্রি হয়, পরে পাইকারদের মাধ্যমে তা দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে সরবরাহ করা হয়। যশোরের খেজুর গুড় এখন বিদেশেও রপ্তানি হচ্ছে। পাশাপাশি ই-কমার্স ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমভিত্তিক উদ্যোক্তাদের হাত ধরে গুড় ও পাটালি সরাসরি ভোক্তার ঘরে পৌঁছানো হচ্ছে। এতে বাজার যেমন সম্প্রসারিত হচ্ছে, তেমনি তৈরি হচ্ছে নতুন কর্মসংস্থান।
কৃষি বিভাগের উদ্যোগ
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মোশাররফ হোসেন বলেন, যশোরের খেজুর গুড়ের স্বাদ ও মানের কারণে চাহিদা সব সময় বেশি। এবার শীত বেশি হওয়ায় রসের পরিমাণ ও মান—দুটোই ভালো। চলতি মৌসুমে প্রায় ১২০ কোটি টাকার রস ও গুড় উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। নিরাপদ খেজুর রস এবং গুড় উৎপাদনে কৃষকদের পরামর্শ ও প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। উঠান বৈঠকের মাধ্যমে গাছিদের উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে।

শীতের রাত পেরিয়ে ভোরের আলো ফোটার আগেই যশোরের গ্রামাঞ্চলে শুরু হয় ব্যস্ততা। খেজুরগাছের নিচে হাজির হন গাছিরা। আগের বিকেলে কাটা গাছের ‘চোখ’ বেয়ে সারা রাত মাটির হাঁড়িতে জমেছে সুমিষ্ট খেজুর রস। ভোরে সেই রস নামিয়ে শুরু হয় আরেক কর্মযজ্ঞ; চুলায় জ্বাল দিয়ে গুড় তৈরির কাজ। বাড়ির নারীরাই মূলত এই প্রক্রিয়ায় নেতৃত্ব দেন। কয়েক ঘণ্টা জ্বালানোর পর তৈরি হয় সুস্বাদু খেজুর গুড় ও পাটালি।
শীত মৌসুম এলেই এমন দৃশ্য দেখা যায় খেজুর গুড়ের জেলা খ্যাত যশোরের প্রায় প্রতিটি গ্রামে। সম্প্রতি যশোরের খেজুর গুড় ভৌগোলিক নির্দেশক (জিআই) পণ্যের স্বীকৃতি পাওয়ায় এর ঐতিহ্যের পাশাপাশি অর্থনৈতিক সম্ভাবনাও নতুন করে সামনে এসেছে।
উৎপাদন ও বাজারের চিত্র
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, চলতি মৌসুমে যশোরে প্রায় ১২০ কোটি টাকার খেজুর রস ও গুড় উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এই উৎপাদন গ্রামীণ অর্থনীতির চাকা আরও গতিশীল করবে বলে আশা সংশ্লিষ্টদের।
বর্তমানে খেজুরের কাঁচা রস প্রতি মাটির হাঁড়ি ২০০ থেকে ৪০০ টাকা, দানা গুড় প্রতি কেজি ৩৫০-৪০০ টাকা এবং পাটালি প্রতি কেজি ৪৫০-৬০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। বাজারদর বাড়লেও গাছিরা বলছেন, শ্রম ও ঝুঁকির তুলনায় লাভ সীমিত।
গাছির সংকট বড় চ্যালেঞ্জ
যশোর সদর উপজেলার নওয়াপাড়া গ্রামের গাছি আজিবর প্রায় ৩৫ বছর ধরে খেজুর গাছ কাটছেন। তিনি বলেন, ‘আগে দেড় শ গাছ কাটতাম, এখন বয়সের কারণে ৩৫-৪০টার বেশি পারি না। রস ও গুড়ের দাম বেড়েছে ঠিকই, কিন্তু কাটার মতো গাছ কমে গেছে। আবার গাছ থাকলেও দক্ষ গাছির অভাব। এবার বেশি শীত পড়ায় রসও ভালো নামছে, গুড়ের উৎপাদনও বেশি।’

মনিরামপুর উপজেলার সরসকাটি গ্রামের গাছি অতিয়ারও প্রায় ৪০ বছর ধরে এই পেশায় যুক্ত। তিনি বলেন, এবার ৫০টা গাছ কাটছি। প্রতিদিন ৮-১০ কেজি গুড় তৈরি হয়। কাজটা খুব কষ্টের। তবে শীত মৌসুমে এই আয়েই পুরো বছরের সংসার চলে।
ই-কমার্সে বাড়ছে চাহিদা
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, যশোর জেলায় মোট খেজুরগাছের সংখ্যা ২৩ লাখ ৩০ হাজার ৬৯৫। এগুলোর মধ্যে চলতি মৌসুমে রস আহরণের উপযোগী গাছ রয়েছে ৩ লাখ ৭ হাজার ১৩০টি।
উৎপাদিত গুড় প্রথমে স্থানীয় হাটে বিক্রি হয়, পরে পাইকারদের মাধ্যমে তা দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে সরবরাহ করা হয়। যশোরের খেজুর গুড় এখন বিদেশেও রপ্তানি হচ্ছে। পাশাপাশি ই-কমার্স ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমভিত্তিক উদ্যোক্তাদের হাত ধরে গুড় ও পাটালি সরাসরি ভোক্তার ঘরে পৌঁছানো হচ্ছে। এতে বাজার যেমন সম্প্রসারিত হচ্ছে, তেমনি তৈরি হচ্ছে নতুন কর্মসংস্থান।
কৃষি বিভাগের উদ্যোগ
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মোশাররফ হোসেন বলেন, যশোরের খেজুর গুড়ের স্বাদ ও মানের কারণে চাহিদা সব সময় বেশি। এবার শীত বেশি হওয়ায় রসের পরিমাণ ও মান—দুটোই ভালো। চলতি মৌসুমে প্রায় ১২০ কোটি টাকার রস ও গুড় উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। নিরাপদ খেজুর রস এবং গুড় উৎপাদনে কৃষকদের পরামর্শ ও প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। উঠান বৈঠকের মাধ্যমে গাছিদের উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে।

বিগত কয়েক বছর দেশ থেকে বিপুল পরিমাণ অর্থ বিদেশে পাচার হয়েছে। বিভিন্ন সময় নানাভাবে এই অর্থ পাচার হয়েছে। সাম্প্রতিক সময়ে দেশে ডলার-সংকট যত প্রকট হয়েছে, ততই অর্থ পাচারের বিশালতা স্পষ্ট হয়ে উঠছে। বাংলাদেশ অর্থনীতি সমিতির হালনাগাদ প্রকাশিত তথ্য বলছে, গত ৫০ বছরে বাংলাদেশে মোট পুঞ্জীভূত পাচার হওয়া অর্থের প
০৮ আগস্ট ২০২৪
জ্বালানি তেল প্রতিষ্ঠান স্ট্যান্ডার্ড এশিয়াটিক অয়েল কোম্পানি লিমিটেডের (এসএওসিএল) প্রায় ২ কোটি ৫৫ লাখ টাকা আত্মসাৎ ও মানি লন্ডারিংয়ের অভিযোগে পাঁচজনের বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। গতকাল সোমবার দুদকের উপপরিচালক (মানি লন্ডারিং) মো. জাহাঙ্গীর আলম মামলাটি করেন।
১ ঘণ্টা আগে
ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ পিএলসির শরিয়াহ সুপারভাইজরি কাউন্সিলের সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকাল রোববার (২৮ ডিসেম্বর) ইসলামী ব্যাংক টাওয়ারে আয়োজিত এ সভায় সভাপতিত্ব করেন কাউন্সিলের চেয়ারম্যান মুফতি ছাঈদ আহমাদ।
১৩ ঘণ্টা আগে
দেশের ব্যাংকিং খাতের ভেতরে জমে থাকা অনিয়ম, রাজনৈতিক আশ্রয় ও কৃত্রিম হিসাবের পর্দা চলতি বছর যেন একে একে সরে যেতে শুরু করেছে। আর তাতেই সামনে এসেছে এক ভয়াবহ বাস্তবতা। সরকারি ও শরিয়াহভিত্তিক ইসলামি ব্যাংকগুলো খেলাপি ঋণের ভারে এখন কার্যত দিশেহারা।
১ দিন আগেজয়নাল আবেদীন খান, ঢাকা

দেশের ব্যাংকিং খাতের ভেতরে জমে থাকা অনিয়ম, রাজনৈতিক আশ্রয় ও কৃত্রিম হিসাবের পর্দা চলতি বছর যেন একে একে সরে যেতে শুরু করেছে। আর তাতেই সামনে এসেছে এক ভয়াবহ বাস্তবতা। সরকারি ও শরিয়াহভিত্তিক ইসলামি ব্যাংকগুলো খেলাপি ঋণের ভারে এখন কার্যত দিশেহারা। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের হালনাগাদ তথ্য অনুযায়ী, সেপ্টেম্বর প্রান্তিক শেষে সরকারি ব্যাংকগুলোর খেলাপি ঋণের হার দাঁড়িয়েছে ৪৯ দশমিক ৬৫ শতাংশে, আর ইসলামি ব্যাংকগুলোর ক্ষেত্রে তা আরও বেশি—৫৯ দশমিক শূন্য ২ শতাংশে পৌঁছেছে। অর্থাৎ, এই দুটি খাতেই বিতরণ করা ঋণের অর্ধেকের বেশি অনাদায়ি হয়ে পড়েছে। যেখানে বিশেষায়িত ব্যাংকের খেলাপির হার ৪১ দশমিক ৯৫ ও বিদেশি ব্যাংকগুলোর খেলাপির হার মাত্র ৪ দশমিক ৯২ শতাংশ।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রতিবেদন পর্যালোচনায় দেখা গেছে, শরিয়াহভিত্তিক ১০টি ইসলামি ব্যাংক মোট ৪ লাখ ৭৯ হাজার ৬০৫ কোটি টাকা ঋণ বিনিয়োগ করেছে। এর মধ্যে খেলাপি হয়েছে ২ লাখ ৮৩ হাজার ৫৫ কোটি টাকা। হিসাব বলছে, প্রতি ১০ টাকার প্রায় ৬ টাকাই এখন আদায় অনিশ্চিত। সেই তুলনায় শরিয়াহসহ দেশীয় বেসরকারি ব্যাংকগুলোর মোট খেলাপি ঋণের পরিমাণ ৪ লাখ ৬৩ হাজার ১৮৫ কোটি টাকা, যা মোট ঋণের ৩৩ দশমিক ৭৫ শতাংশ। এই তুলনাতেই স্পষ্ট, খেলাপির বোঝা এককভাবে সবচেয়ে বেশি ইসলামি ব্যাংকগুলোর ঘাড়েই।
সরকারি ছয় ব্যাংকের অবস্থাও খুব একটা ভিন্ন নয়। এসব ব্যাংকে খেলাপি ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ৫৮ হাজার ৭৯২ কোটি টাকা। মোট বিতরণ করা ঋণের প্রায় অর্ধেকই সেখানে অনাদায়ি। ব্যাংকার ও বিশ্লেষকদের মতে, এই সংকট রাতারাতি তৈরি হয়নি। বছরের পর বছর ধরে দুর্বল তদারকি, রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ এবং ইচ্ছাকৃত খেলাপিকে আড়াল করার প্রবণতা ধীরে ধীরে ব্যাংকগুলোকে এই জায়গায় এনে দাঁড় করিয়েছে।
বিশ্বব্যাংকের ঢাকা অফিসের সাবেক মুখ্য অর্থনীতিবিদ ড. জাহিদ হোসেন মনে করেন, খেলাপি ঋণের এত উচ্চ হার শুধু ব্যাংকিং খাতের ভেতরের সমস্যা নয়, এটি সামগ্রিক অর্থনীতির জন্য বড় ঝুঁকি। ব্যাংকগুলো নতুন ঋণ দিতে পারছে না, বিনিয়োগ কার্যক্রম স্থবির হয়ে পড়ছে, শিল্প-কারখানার সম্প্রসারণ থেমে যাচ্ছে। এর সরাসরি প্রভাব পড়ছে কর্মসংস্থানে। তাঁর মতে, খেলাপিদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা এবং ঋণ আদায়ে বাস্তবসম্মত উদ্যোগ ছাড়া পরিস্থিতির উন্নতি সম্ভব নয়।
ইসলামি ব্যাংকিং খাতে এস আলম, নাসা ও বেক্সিমকো গ্রুপের নাম বারবার আলোচনায় এসেছে। সংশ্লিষ্টদের ভাষ্য, দীর্ঘদিন সরকারি মদদে এসব গ্রুপ বিপুল ঋণ নিয়ে খেলাপি হলেও তা আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকৃতি পায়নি। এখন সেই বাস্তবতা দিনের আলোর মতো স্পষ্ট।
সামগ্রিকভাবে দেশের ব্যাংকিং খাতের চিত্র আরও উদ্বেগজনক। সেপ্টেম্বর পর্যন্ত মোট বিতরণ করা ঋণের পরিমাণ ১৮ লাখ ৩ হাজার ৮৪০ কোটি টাকা। এর মধ্যে খেলাপি হয়েছে প্রায় ৬ লাখ ৪৪ হাজার ৫১৫ কোটি টাকা, যা মোট ঋণের ৩৫ দশমিক ৭৩ শতাংশ। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক ড. মইনুল ইসলাম বলেন, বিগত সরকারের টানা সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে খেলাপি ঋণ কম দেখানোর যে অপচেষ্টা ছিল, তা এখন ভেঙে পড়েছে। সঠিক হিসাব সামনে আসায় হার ৩৬ শতাংশের কাছাকাছি পৌঁছেছে, যা বাস্তবতারই প্রতিফলন। তিনি আবারও শীর্ষ ১০ খেলাপির জন্য আলাদা ট্রাইব্যুনালের প্রয়োজনীয়তার কথা বলেন।
বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র আরিফ হোসেন খান জানান, আগের সরকারের আমলে লুকিয়ে রাখা খেলাপি ঋণ প্রকাশ পাওয়ায় এই হার বেড়েছে। তবে কেন্দ্রীয় ব্যাংক এখন ঋণ আদায়ে কঠোর নির্দেশনার কারণে আগের তুলনায় আদায় বেড়েছে।

দেশের ব্যাংকিং খাতের ভেতরে জমে থাকা অনিয়ম, রাজনৈতিক আশ্রয় ও কৃত্রিম হিসাবের পর্দা চলতি বছর যেন একে একে সরে যেতে শুরু করেছে। আর তাতেই সামনে এসেছে এক ভয়াবহ বাস্তবতা। সরকারি ও শরিয়াহভিত্তিক ইসলামি ব্যাংকগুলো খেলাপি ঋণের ভারে এখন কার্যত দিশেহারা। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের হালনাগাদ তথ্য অনুযায়ী, সেপ্টেম্বর প্রান্তিক শেষে সরকারি ব্যাংকগুলোর খেলাপি ঋণের হার দাঁড়িয়েছে ৪৯ দশমিক ৬৫ শতাংশে, আর ইসলামি ব্যাংকগুলোর ক্ষেত্রে তা আরও বেশি—৫৯ দশমিক শূন্য ২ শতাংশে পৌঁছেছে। অর্থাৎ, এই দুটি খাতেই বিতরণ করা ঋণের অর্ধেকের বেশি অনাদায়ি হয়ে পড়েছে। যেখানে বিশেষায়িত ব্যাংকের খেলাপির হার ৪১ দশমিক ৯৫ ও বিদেশি ব্যাংকগুলোর খেলাপির হার মাত্র ৪ দশমিক ৯২ শতাংশ।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রতিবেদন পর্যালোচনায় দেখা গেছে, শরিয়াহভিত্তিক ১০টি ইসলামি ব্যাংক মোট ৪ লাখ ৭৯ হাজার ৬০৫ কোটি টাকা ঋণ বিনিয়োগ করেছে। এর মধ্যে খেলাপি হয়েছে ২ লাখ ৮৩ হাজার ৫৫ কোটি টাকা। হিসাব বলছে, প্রতি ১০ টাকার প্রায় ৬ টাকাই এখন আদায় অনিশ্চিত। সেই তুলনায় শরিয়াহসহ দেশীয় বেসরকারি ব্যাংকগুলোর মোট খেলাপি ঋণের পরিমাণ ৪ লাখ ৬৩ হাজার ১৮৫ কোটি টাকা, যা মোট ঋণের ৩৩ দশমিক ৭৫ শতাংশ। এই তুলনাতেই স্পষ্ট, খেলাপির বোঝা এককভাবে সবচেয়ে বেশি ইসলামি ব্যাংকগুলোর ঘাড়েই।
সরকারি ছয় ব্যাংকের অবস্থাও খুব একটা ভিন্ন নয়। এসব ব্যাংকে খেলাপি ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ৫৮ হাজার ৭৯২ কোটি টাকা। মোট বিতরণ করা ঋণের প্রায় অর্ধেকই সেখানে অনাদায়ি। ব্যাংকার ও বিশ্লেষকদের মতে, এই সংকট রাতারাতি তৈরি হয়নি। বছরের পর বছর ধরে দুর্বল তদারকি, রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ এবং ইচ্ছাকৃত খেলাপিকে আড়াল করার প্রবণতা ধীরে ধীরে ব্যাংকগুলোকে এই জায়গায় এনে দাঁড় করিয়েছে।
বিশ্বব্যাংকের ঢাকা অফিসের সাবেক মুখ্য অর্থনীতিবিদ ড. জাহিদ হোসেন মনে করেন, খেলাপি ঋণের এত উচ্চ হার শুধু ব্যাংকিং খাতের ভেতরের সমস্যা নয়, এটি সামগ্রিক অর্থনীতির জন্য বড় ঝুঁকি। ব্যাংকগুলো নতুন ঋণ দিতে পারছে না, বিনিয়োগ কার্যক্রম স্থবির হয়ে পড়ছে, শিল্প-কারখানার সম্প্রসারণ থেমে যাচ্ছে। এর সরাসরি প্রভাব পড়ছে কর্মসংস্থানে। তাঁর মতে, খেলাপিদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা এবং ঋণ আদায়ে বাস্তবসম্মত উদ্যোগ ছাড়া পরিস্থিতির উন্নতি সম্ভব নয়।
ইসলামি ব্যাংকিং খাতে এস আলম, নাসা ও বেক্সিমকো গ্রুপের নাম বারবার আলোচনায় এসেছে। সংশ্লিষ্টদের ভাষ্য, দীর্ঘদিন সরকারি মদদে এসব গ্রুপ বিপুল ঋণ নিয়ে খেলাপি হলেও তা আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকৃতি পায়নি। এখন সেই বাস্তবতা দিনের আলোর মতো স্পষ্ট।
সামগ্রিকভাবে দেশের ব্যাংকিং খাতের চিত্র আরও উদ্বেগজনক। সেপ্টেম্বর পর্যন্ত মোট বিতরণ করা ঋণের পরিমাণ ১৮ লাখ ৩ হাজার ৮৪০ কোটি টাকা। এর মধ্যে খেলাপি হয়েছে প্রায় ৬ লাখ ৪৪ হাজার ৫১৫ কোটি টাকা, যা মোট ঋণের ৩৫ দশমিক ৭৩ শতাংশ। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক ড. মইনুল ইসলাম বলেন, বিগত সরকারের টানা সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে খেলাপি ঋণ কম দেখানোর যে অপচেষ্টা ছিল, তা এখন ভেঙে পড়েছে। সঠিক হিসাব সামনে আসায় হার ৩৬ শতাংশের কাছাকাছি পৌঁছেছে, যা বাস্তবতারই প্রতিফলন। তিনি আবারও শীর্ষ ১০ খেলাপির জন্য আলাদা ট্রাইব্যুনালের প্রয়োজনীয়তার কথা বলেন।
বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র আরিফ হোসেন খান জানান, আগের সরকারের আমলে লুকিয়ে রাখা খেলাপি ঋণ প্রকাশ পাওয়ায় এই হার বেড়েছে। তবে কেন্দ্রীয় ব্যাংক এখন ঋণ আদায়ে কঠোর নির্দেশনার কারণে আগের তুলনায় আদায় বেড়েছে।

বিগত কয়েক বছর দেশ থেকে বিপুল পরিমাণ অর্থ বিদেশে পাচার হয়েছে। বিভিন্ন সময় নানাভাবে এই অর্থ পাচার হয়েছে। সাম্প্রতিক সময়ে দেশে ডলার-সংকট যত প্রকট হয়েছে, ততই অর্থ পাচারের বিশালতা স্পষ্ট হয়ে উঠছে। বাংলাদেশ অর্থনীতি সমিতির হালনাগাদ প্রকাশিত তথ্য বলছে, গত ৫০ বছরে বাংলাদেশে মোট পুঞ্জীভূত পাচার হওয়া অর্থের প
০৮ আগস্ট ২০২৪
জ্বালানি তেল প্রতিষ্ঠান স্ট্যান্ডার্ড এশিয়াটিক অয়েল কোম্পানি লিমিটেডের (এসএওসিএল) প্রায় ২ কোটি ৫৫ লাখ টাকা আত্মসাৎ ও মানি লন্ডারিংয়ের অভিযোগে পাঁচজনের বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। গতকাল সোমবার দুদকের উপপরিচালক (মানি লন্ডারিং) মো. জাহাঙ্গীর আলম মামলাটি করেন।
১ ঘণ্টা আগে
ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ পিএলসির শরিয়াহ সুপারভাইজরি কাউন্সিলের সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকাল রোববার (২৮ ডিসেম্বর) ইসলামী ব্যাংক টাওয়ারে আয়োজিত এ সভায় সভাপতিত্ব করেন কাউন্সিলের চেয়ারম্যান মুফতি ছাঈদ আহমাদ।
১৩ ঘণ্টা আগে
শীতের রাত পেরিয়ে ভোরের আলো ফোটার আগেই যশোরের গ্রামাঞ্চলে শুরু হয় ব্যস্ততা। খেজুরগাছের নিচে হাজির হন গাছিরা। আগের বিকেলে কাটা গাছের ‘চোখ’ বেয়ে সারা রাত মাটির হাঁড়িতে জমেছে সুমিষ্ট খেজুর রস।
১৯ ঘণ্টা আগে