Ajker Patrika

প্রতি হাটে ১০ কোটি টাকার শুকনা মরিচ বেচাকেনা

সাদ্দাম হোসেন, ঠাকুরগাঁও 
সূর্য ওঠার আগেই জমে ওঠে উত্তরবঙ্গের সবচেয়ে বড় শুকনা মরিচের হাট ভাউলার হাট। ছবি: আজকের পত্রিকা
সূর্য ওঠার আগেই জমে ওঠে উত্তরবঙ্গের সবচেয়ে বড় শুকনা মরিচের হাট ভাউলার হাট। ছবি: আজকের পত্রিকা

ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার রায়পুর ইউনিয়নের ভাউলার হাট উত্তরবঙ্গের সবচেয়ে বড় শুকনা মরিচের হাট, যেখানে সূর্য ওঠার আগেই জমে ওঠে কোটি টাকার বেচাকেনা। কোথাও চলছে মরিচ বস্তাবন্দী, কোথাও পাইকারদের হাঁকডাক আর দরদাম।

এই হাট বসে সপ্তাহে দুই দিন। প্রতি মঙ্গল ও শুক্রবার। প্রতি হাটে এখানে কেনাবেচা হয় ৮-১০ কোটি টাকার মরিচ, অনুকূল আবহাওয়ায় যা ছাড়িয়ে যায় ১৫ কোটিও। ঢাকা, চট্টগ্রাম, সিলেট, কুমিল্লাসহ দেশের নানা জেলা থেকে ছুটে আসেন পাইকারেরা। মরিচের মান, রং ও ঝাঁজের কারণে দেশের বাজারে আলাদা পরিচিতি পেয়েছে ভাউলার হাট।

তবে হাটের ভিড় আর কোলাহলের আড়ালে জমে আছে কৃষকের চাপা হতাশা। কারণ, বাজারে চাহিদা থাকলেও এবার দাম নেমে গেছে অস্বাভাবিকভাবে। এতে লাভ তো নেইই, বরং অনেকেই পড়েছেন লোকসানে।

স্থানীয় কৃষক আব্দুল মজিদ বলেন, ‘গত বছর প্রতি মণ মরিচ বিক্রি করেছি ১২ হাজার টাকায়। এবার মণে পাচ্ছি ৫-৬ হাজার টাকা। অথচ সার, ওষুধ, শ্রমিকের খরচ সবই বেড়েছে। এই দামে আমাদের তো মরিচ তুলে আনারও খরচ ওঠে না।’

তরুণ চাষি শফিকুল ইসলাম জানান, মরিচ চাষ তাঁদের পারিবারিক পেশা হলেও এই মৌসুমে তাঁরা পড়েছেন দুশ্চিন্তায়। তিনি বলেন, ‘ভেবেছিলাম এবার দাম পাব, তাই জমিতে বেশি চাষ করেছিলাম। ফলন খারাপ হয়নি, কিন্তু এই দামে বিক্রি করে চলা সম্ভব না। অনেক কৃষকই এনজিও কিংবা মহাজনের কাছ থেকে ঋণ নিয়ে চাষ করেন। বাজারে দাম পড়ে যাওয়ায় এখন ঋণ শোধ করাই বড় দুশ্চিন্তা হয়ে দাঁড়িয়েছে।’

অন্যদিকে হাটে প্রতিদিন লেনদেন হয় কোটি কোটি টাকা, অথচ নেই কোনো ব্যাংকের শাখা বা এটিএম বুথ। এতে ব্যবসায়ীদের নিরাপত্তা ও আর্থিক লেনদেন ঘিরে তৈরি হয় বাড়তি ঝুঁকি।

ঢাকা থেকে আসা পাইকার কামাল হোসেন বলেন, ‘এত বড় হাটে ব্যাংক না থাকা আসলেই দুঃখজনক। নগদ টাকা নিয়ে চলাফেরা করতে হয়, ভয় কাজ করে সব সময়। ব্যাংক থাকলে লেনদেন সহজ হতো।’

আরেক ব্যবসায়ী সেলিম মিয়া বলেন, ‘হঠাৎ টাকা দরকার হলে কিছুই করার থাকে না। একটি এটিএম বুথ থাকলেও এত ভোগান্তি হতো না।’

বাজার কমিটির সভাপতি আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘ভাউলার হাট এখন উত্তরবঙ্গের শুকনা মরিচের সবচেয়ে বড় হাট। কৃষক যেন ন্যায্য দাম পান, আর পাইকার ও ব্যবসায়ীরা নিরাপদে লেনদেন করতে পারেন, আমরা সেই চেষ্টাই করছি। বাজারে একটি ব্যাংকের শাখা ও এটিএম বুথ স্থাপনের জন্য ব্যাংক কর্তৃপক্ষ ও প্রশাসনের কাছে একাধিকবার আবেদন করা হয়েছে। পাশাপাশি বাজারে ছাউনি, রাস্তা ও আলোর ব্যবস্থা উন্নয়নের পরিকল্পনাও নেওয়া হয়েছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এনএসআইয়ের ১৩ কর্মকর্তার দুর্নীতির অভিযোগ অনুসন্ধান করছে দুদক

বিএনপির সময় গণমাধ্যম তুলনামূলক বেশি স্বস্তিদায়ক অবস্থায় ছিল: প্রথম আলো সম্পাদক

‘আমি ওর সঙ্গে এক মিনিট কথা বলতে চাই, শুধু এক মিনিট’

আন্দোলনের মুখে রাবিতে আওয়ামীপন্থী ছয় ডিনের পদত্যাগ

হাদি হত্যা: ফয়সালসহ সংশ্লিষ্টদের অ্যাকাউন্টে ১২৭ কোটি টাকার লেনদেন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ