রফিকুর রশীদ

রফিকুর রশীদ, কথাসাহিত্যিক‘আমার সন্তান যেন থাকে দুধে-ভাতে’—অন্নদা দেবীর কাছে একদা এই অসামান্য বর প্রার্থনা করেছিল ঈশ্বর পাটনি। ভৈরব নদীপারের খুব সামান্য মানুষ। খেয়া পারাপারের পাটনি (মাঝি) সে। সন্তান-সন্ততির সুখ-সচ্ছলতার জন্য এইটুকু চাওয়া তার।
নদীয়ারাজ কৃষ্ণচন্দ্রের সভাকবি ভারতচন্দ্র রায়গুণাকর (১৭১২-১৭৬০) অন্নদামঙ্গল কাব্যে যে ভৌগোলিক ও প্রাকৃতিক পটভূমি তুলে ধরেছেন তাতে অনুমিত হয়, অমর চরিত্র ঈশ্বর পাটনি ছিল নদীয়া সন্নিহিত মেহেরপুর অঞ্চলের মানুষ। শুধু নিজের সন্তান নয়, মূলত এতদঞ্চলের দারিদ্র্যলাঞ্ছিত সাধারণ মানুষের ঐকান্তিক প্রত্যাশাই উচ্চারিত হয়েছে দেবীর কাছে তার বর প্রার্থনার মধ্য দিয়ে।
আজ সেই ভৈরবে নাব্য নেই, নদীপারের কোথাও ঈশ্বর পাটনির অস্তিত্ব খুঁজেও পাওয়া যাবে না হয়তো। তবে এ অঞ্চলের মানুষ দুধে-ভাতে থাকার সচ্ছলতার জন্য সেকালের দেবীনির্ভরতার জায়গায় একালে হয়ে উঠেছে স্ব–উদ্যোগী ও কর্মতৎপর। বিশেষত শিক্ষিত বেকার তরুণেরা আধুনিক কৃষিভিত্তিক নানান কর্মোদ্যোগের মধ্য দিয়ে মেহেরপুর জেলার মানচিত্রে স্বনির্ভরতার নতুন মাত্রা যুক্ত করে চলেছে।
স্বাধীন বাংলাদেশের অস্থায়ী রাজধানী খ্যাত মুজিবনগরের স্মৃতিধন্য জেলা মেহেরপুরের বর্ণাঢ্য অতীত আছে। শিল্প-সাহিত্য, রাজনীতি, সংস্কৃতির ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা আছে। একদা নদীপথে যশোর যাত্রাকালে মোগল সেনাপতি মানসিংহ যাত্রা বিরতি করেন এতদঞ্চলে। কথিত আছে, নবাব আলিবর্দি খাঁ বজরাযোগে মৃগয়ায় এসে প্রাকৃতিক দুর্যোগে পড়ে (বর্তমান) মুজিবনগর উপজেলার আমদহ-বাগোয়ানের বিধবা রাজু গোয়ালিনীর আতিথ্য গ্রহণ করেন। ইতিহাস সাক্ষ্য দেয়, নেতাজি সুভাষ বসু থেকে মওলানা ভাসানী, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব পর্যন্ত বহু রাজনৈতিক নেতার পদস্পর্শে ধন্য হয়েছে মেহেরপুর। আর ১৯৭১ সালের ১৭ এপ্রিল এ জেলার (তখনো মহকুমা) মুক্ত মাটিতে (বৈদ্যনাথতলায়) স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম সরকারের শপথগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয় এবং এখান থেকেই দেশি-বিদেশি বহু সাংবাদিক ও স্থানীয় জনতার সামনে স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র উপস্থাপন করা হয়, সেই ইতিহাস সবার জানা।
এরই মাঝে স্বাধীনতার ৫০ বছর পূর্তি হয়েছে বাংলাদেশের। অথচ বঙ্গবন্ধুর ঘোষণায় এবং স্বাধীনতার ঘোষণাপত্রে যে অর্থনৈতিক মুক্তির কথা বলা হয়েছে, সেই মুক্তির স্বপ্ন দীর্ঘকাল অধরাই ছিল স্বাধীনতার সূতিকাগার মেহেরপুর জেলার মানুষের কাছে। তারা প্রায় ভুলতেই বসেছিল যে জনগণের অর্থনৈতিক মুক্তি তথা অর্থনৈতিক উন্নয়নে সরকারেরও ভূমিকা থাকার কথা ছিল। তবে বছরের পর বছর তারা সরকারের মুখাপেক্ষী হয়ে বসে থাকেনি। নিজেরাই পথ খুঁজেছে অর্থনৈতিক মুক্তির।
কৃষিনির্ভর এই অঞ্চলের মানুষ প্রথমেই মনোযোগ দেয় কৃষিক্ষেত্রে। এখানে বন্যা-জলোচ্ছ্বাস নেই, অতিবৃষ্টি কিংবা তীব্র খরাও নেই। কৃষিতেই বিপ্লব সাধিত হওয়ার কথা, কিন্তু বাস্তবে তা হয়নি। সরকারের কৃষিনীতি কৃষকবান্ধব ছিল না বলেই প্রচলিত ফসল উৎপাদনের বাইরে বিকল্প ফসল উৎপাদনে উৎসাহিত করা হয়নি।
বর্তমান সরকারের কৃষকবান্ধব কৃষিনীতি, সার-সেচ ও কৃষি উপকরণে ভর্তুকি ও নানাবিধ প্রণোদনা, সেই সঙ্গে সহজ শর্তে কৃষিঋণ প্রকল্প এবং তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তা মেহেরপুর জেলার শিক্ষিত বেকার যুবসম্প্রদায়কে আত্মকর্মসংস্থানের নতুন দিগন্ত খুলে দেয়। ধান-পাট-ছোলা-মসুর-গম চাষের প্রচলিত বৃত্তকে তারা নতুনভাবে সম্প্রসারণের উদ্যোগ নেয়।
গাংনী উপজেলার সাহারবাটিতে গড়ে উঠেছে সবজিপল্লি। এখানে উৎপাদিত বাঁধাকপি, ফুলকপি, শিম, বরবটি, মিষ্টি কুমড়া, বেগুন, গাজর, ব্রোকলি, করলা, তরমুজ সারা জেলার চাহিদা মিটিয়ে ঢাকা, চট্টগ্রাম, সিলেট ও বরিশালের সবজিবাজারে সরবরাহ করা হচ্ছে। ঢাকার কারওয়ান বাজার কিংবা চট্টগ্রামের রিয়াজুদ্দিন মার্কেটের সবজি আড়তে ‘সাহারবাটি’ এখন প্রতিষ্ঠিত নাম। সাহারবাটির সবজিবিপ্লব এখন ছড়িয়ে পড়েছে এই জেলার বিভিন্ন গ্রামে। শুধু সবজি নয়, সবজিবীজ থেকেও বিস্তর অর্থ উপার্জন করছেন এই অঞ্চলের কৃষি উদ্যোক্তারা।
সবজি চাষের পাশাপাশি মেহেরপুরের শিক্ষিত বেকার যুবকেরা ফল চাষের দিকেও গুরুত্ব দিয়েছে। এতদঞ্চলের সুস্বাদু আম-লিচুর খ্যাতি ছড়িয়ে পড়েছে সারা দেশে। এখন তা রপ্তানিও করা হচ্ছে। শতবর্ষী প্রাচীন বাগানের জায়গায় এখন প্রতিটি গ্রামে তৈরি হয়েছে আম লিচুর সুদৃশ্য নতুন নতুন বাগান। শৌখিন ফল চাষ নয়, বর্তমানে তা হয়ে উঠেছে অর্থকরী ফসলের চাষ। কলার চাষও এ জেলার অনেক তরুণ উদ্যোক্তার ভাগ্য বদলে দিয়েছে।
‘কলা রুয়ে না কেটো পাত, তাতেই কাপড় তাতেই ভাত’—খনার বচন আবারও সত্য হয়ে উঠেছে এখানে। আধুনিক কৃষিপ্রযুক্তির আশীর্বাদে উন্নত জাতের পেয়ারা, কুল, মাল্টা, স্ট্রবেরি প্রভৃতি ফলের চাষ মেহেরপুরের কৃষিতে যেমন নতুন মাত্রা যোগ করেছে, তেমনি এ জেলার কৃষি উদ্যোক্তাদের এনে দিয়েছে অর্থনৈতিক সচ্ছলতা।
বিস্ময়কর হলেও সত্য, মহিষাখোলা গ্রামের সিঙ্গাপুরফেরত শিক্ষিত যুবক মাবুদ আলী নিজের জমির পাশে ১০ বিঘা জমি লিজ (ইজারা) নিয়ে আবাদ করেছেন ড্রাগন ফলের। আত্মকর্মসংস্থানের জন্য বিদেশি এই ফলের চাষ ছিল তাঁর জন্য বিরাট চ্যালেঞ্জ। শেষ পর্যন্ত অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হওয়ায় সেই চ্যালেঞ্জ তাঁর সফল হয়েছে।
মেহেরপুর শহরের এক সাহসী উদ্যোক্তা ২৯ বিঘা জমিতে ক্যাপসিক্যাম চাষ করে বিপুল সাফল্যের মুখ দেখেছেন। ক্যাপসিক্যামের চাষকে অনেকেই অর্থকরী আবাদ বলে গ্রহণ করেছেন।
এ ছাড়া এ জেলার অনেক গৃহিণী উদ্যোক্তা হাঁস-মুরগি পালনের পাশাপাশি বাড়ির উঠানে লেটুস, পুদিনা, মাশরুমসহ নানান জাতের শাকের আবাদ করে সংসারে বাড়তি উপার্জনের সংস্থান ঘটিয়েছেন।
সদর উপজেলার শালিখা গ্রামের আধুনিক চাষি আব্দুস সালাম স্ট্রবেরি চাষ করে মেহেরপুরের বাইরে বাজারজাত করার মাধ্যমে যে সাফল্যের স্বাক্ষর রেখেছেন; তা অনেকের কাছেই অনুকরণীয় হয়ে উঠেছে।
মেহেরপুর জেলার মাঠে মাঠে এবং বসতভিটার আশপাশে প্রাকৃতিকভাবেই অনেক খেজুরগাছ জন্মে, এখানকার খেজুরগুড়ের সুখ্যাতি দীর্ঘকালের। এই অভিজ্ঞতা মাথায় রেখে মুজিবনগর উপজেলার এক কৃষি উদ্যোক্তা মুজিবনগর স্মৃতিসৌধের সীমানাসংলগ্ন মাঠে সৌদি খেজুরের পরিকল্পিত চাষ করে সবাইকে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন। এই চাষের অর্থকরী দিক অনেককে বিপুলভাবে উৎসাহিত করেছে।
এত দিন বাড়ির সামনে ছোটখাটো ফুলবাগান দেখেই সবাই অভ্যস্ত। এই ফুলেরও যে বাণিজ্যিক মূল্য আছে, সেটা প্রমাণ করেছে মেহেরপুর সদরের হরিরামপুর এবং আমঝুপি গ্রামের কয়েক জন ফুলচাষি। দূর মফস্বলে উৎপাদিত নানান জাতের ফুল ঢাকার বাজারে বিক্রির মাধ্যমে আত্মকর্মসংস্থানের অভিনব দিগন্ত খুঁজে পেয়েছেন এখানকার ফুলচাষিরা।
গাংনী উপজেলার ষোলটাকা এবং বানিয়াপুকুর গ্রাম দুটিকে বলা হয় ‘মৎস্যপল্লি’। এ অঞ্চলের মাটির পানি ধারণক্ষমতা বেশি হওয়ায় শুধু উল্লিখিত দুটি গ্রামই নয়, আশপাশের সব গ্রামের বহু পুকুরে এখন পরিকল্পিতভাবে হচ্ছে মাছের চাষ। প্রকৃতি-নির্ভরতার পরিবর্তে শিক্ষিত বেকার যুবকেরা আত্মকর্মসংস্থানের লক্ষ্যে বিজ্ঞানসম্মত উপায়ে মৎস্য চাষের উদ্যোগ নিয়ে অর্থনৈতিকভাবে সফল হয়েছেন। এ সাফল্যে অনুপ্রাণিত হয়ে জেলার মরা নদী ও মজে যাওয়া খালবিলে পুকুর খনন করে এবং বিশেষভাবে বাঁধ দিয়ে স্থানীয় অনেক শিক্ষিত যুবক এখন মাছ চাষে মনোযোগ দিয়েছেন।
মেহেরপুরের বেকার যুবকদের আত্মকর্মসংস্থানের ক্ষেত্রে ব্যক্তি উদ্যোগে পশুপালনের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এ জেলায় এমন কোনো গ্রাম পাওয়া যাবে না, যেখানে বাণিজ্যিক ভিত্তিতে গো-পালন হয় না। বৃহদায়তনের প্রকল্প না থাক, আধুনিক পদ্ধতিতে মাত্র দু-চারটি গরু পালনের মধ্য দিয়েই অনেকে কর্মসংস্থানের ক্ষেত্র তৈরি করে নিয়েছেন। গো-পালনের পাশাপাশি ব্ল্যাক বেঙ্গল প্রজাতির ছাগলও পালিত হচ্ছে এ জেলার ঘরে ঘরে; যা যথেষ্ট জনপ্রিয় এবং অর্থকরী হয়ে উঠেছে। ভেড়াসদৃশ দ্রুত বর্ধনশীল গাড়ল পালন এখানকার অনেক বেকার যুবককে এনে দিয়েছে অর্থনৈতিক সচ্ছলতা।
পোলট্রিশিল্প এখন পৌঁছে গেছে এ জেলার গ্রামে গ্রামে। আত্মকর্মসংস্থানের উদ্দেশ্যে প্রায় প্রতিটি গ্রামে গড়ে উঠেছে হাঁস–মুরগির খামার। ক্ষুদ্র বিনিয়োগের মাধ্যমে অর্জিত সীমিত মুনাফা থেকে গ্রামের অনেক বেকার এখন স্বাবলম্বী হয়ে উঠেছেন। ফলে চাকরির মুখাপেক্ষিতা অনেকাংশে কমেছে।
তথ্য প্রযুক্তির ব্যবহার এই জেলার শিক্ষিত তরুণ-তরুণীর সামনে খুলে দিয়েছে কর্মসংস্থানের নতুন দিগন্ত। অনলাইনে মেহেরপুরের সূচিশিল্প এবং নকশিকাঁথার বিজ্ঞাপন প্রচার ও অর্ডার (ফরমাশ) নেওয়া হচ্ছে। এমনকি আম-লিচু সরবরাহের অর্ডারও হচ্ছে অনলাইনে। এই উদ্যোগের ফলে উজলপুরের (সদর উপজেলা) কাঁথাপল্লিতে তৈরি নকশিকাঁথা এখন পৌঁছে যাচ্ছে ইউরোপ, আমেরিকায়। কলেজ- বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ুয়া শিক্ষার্থীরা করোনাকালীন দীর্ঘ অবকাশে তৈরি পোশাকে বুটিক ও ফেব্রিকসের কাজ সম্পন্ন করে অনলাইনে বিপণন করছেন সারা দেশে। ঐতিহাসিক মুজিবনগর স্মৃতিসৌধের ছবি ও লোগো ব্যবহার করে তাঁরা গত শীত মৌসুমে বিশেষ ধরনের জ্যাকেট ও হুডিকে নতুন আঙ্গিকে অনলাইনে বাজারজাত করেছেন। এভাবেই নিজেদের কর্মসংস্থানের উপায় নিজেরাই খুঁজে নিয়েছেন।
এই জেলার রেমিট্যান্স যোদ্ধাও উল্লেখযোগ্য। ৯০ শতাংশ ঘরের যুবক বিদেশে থাকেন এমন গ্রাম আছে অনেক। এরই মধ্যে বর্তমান সরকার মুজিবনগরের স্মৃতিবিজড়িত এই জেলায় পূর্ণাঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়, স্থলবন্দর, চেকপোস্ট, রেলপথ, বৃহত্তম কৃষিখামার ও আইটি (তথ্যপ্রযুক্তি) পল্লি স্থাপনের ঘোষণা দিয়ে জেলাবাসীর অন্তরে নতুন আশার সঞ্চার ঘটিয়েছে।
সরকারি এসব উদ্যোগ বাস্তবায়িত হলে বদলে যাবে মেহেরপুরের আর্থসামাজিক অবস্থা এবং উন্মুক্ত হবে কর্মসংস্থানের বিশাল দিগন্ত। তার ফলে মেহেরপুরের সন্তান ‘দুধে-ভাতে’ থাকার সম্মানযোগ্য পথ খুঁজে পাবে বলে পর্যবেক্ষক মহলের বিশ্বাস।
রফিকুর রশীদ
কথাসাহিত্যিক

রফিকুর রশীদ, কথাসাহিত্যিক‘আমার সন্তান যেন থাকে দুধে-ভাতে’—অন্নদা দেবীর কাছে একদা এই অসামান্য বর প্রার্থনা করেছিল ঈশ্বর পাটনি। ভৈরব নদীপারের খুব সামান্য মানুষ। খেয়া পারাপারের পাটনি (মাঝি) সে। সন্তান-সন্ততির সুখ-সচ্ছলতার জন্য এইটুকু চাওয়া তার।
নদীয়ারাজ কৃষ্ণচন্দ্রের সভাকবি ভারতচন্দ্র রায়গুণাকর (১৭১২-১৭৬০) অন্নদামঙ্গল কাব্যে যে ভৌগোলিক ও প্রাকৃতিক পটভূমি তুলে ধরেছেন তাতে অনুমিত হয়, অমর চরিত্র ঈশ্বর পাটনি ছিল নদীয়া সন্নিহিত মেহেরপুর অঞ্চলের মানুষ। শুধু নিজের সন্তান নয়, মূলত এতদঞ্চলের দারিদ্র্যলাঞ্ছিত সাধারণ মানুষের ঐকান্তিক প্রত্যাশাই উচ্চারিত হয়েছে দেবীর কাছে তার বর প্রার্থনার মধ্য দিয়ে।
আজ সেই ভৈরবে নাব্য নেই, নদীপারের কোথাও ঈশ্বর পাটনির অস্তিত্ব খুঁজেও পাওয়া যাবে না হয়তো। তবে এ অঞ্চলের মানুষ দুধে-ভাতে থাকার সচ্ছলতার জন্য সেকালের দেবীনির্ভরতার জায়গায় একালে হয়ে উঠেছে স্ব–উদ্যোগী ও কর্মতৎপর। বিশেষত শিক্ষিত বেকার তরুণেরা আধুনিক কৃষিভিত্তিক নানান কর্মোদ্যোগের মধ্য দিয়ে মেহেরপুর জেলার মানচিত্রে স্বনির্ভরতার নতুন মাত্রা যুক্ত করে চলেছে।
স্বাধীন বাংলাদেশের অস্থায়ী রাজধানী খ্যাত মুজিবনগরের স্মৃতিধন্য জেলা মেহেরপুরের বর্ণাঢ্য অতীত আছে। শিল্প-সাহিত্য, রাজনীতি, সংস্কৃতির ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা আছে। একদা নদীপথে যশোর যাত্রাকালে মোগল সেনাপতি মানসিংহ যাত্রা বিরতি করেন এতদঞ্চলে। কথিত আছে, নবাব আলিবর্দি খাঁ বজরাযোগে মৃগয়ায় এসে প্রাকৃতিক দুর্যোগে পড়ে (বর্তমান) মুজিবনগর উপজেলার আমদহ-বাগোয়ানের বিধবা রাজু গোয়ালিনীর আতিথ্য গ্রহণ করেন। ইতিহাস সাক্ষ্য দেয়, নেতাজি সুভাষ বসু থেকে মওলানা ভাসানী, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব পর্যন্ত বহু রাজনৈতিক নেতার পদস্পর্শে ধন্য হয়েছে মেহেরপুর। আর ১৯৭১ সালের ১৭ এপ্রিল এ জেলার (তখনো মহকুমা) মুক্ত মাটিতে (বৈদ্যনাথতলায়) স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম সরকারের শপথগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয় এবং এখান থেকেই দেশি-বিদেশি বহু সাংবাদিক ও স্থানীয় জনতার সামনে স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র উপস্থাপন করা হয়, সেই ইতিহাস সবার জানা।
এরই মাঝে স্বাধীনতার ৫০ বছর পূর্তি হয়েছে বাংলাদেশের। অথচ বঙ্গবন্ধুর ঘোষণায় এবং স্বাধীনতার ঘোষণাপত্রে যে অর্থনৈতিক মুক্তির কথা বলা হয়েছে, সেই মুক্তির স্বপ্ন দীর্ঘকাল অধরাই ছিল স্বাধীনতার সূতিকাগার মেহেরপুর জেলার মানুষের কাছে। তারা প্রায় ভুলতেই বসেছিল যে জনগণের অর্থনৈতিক মুক্তি তথা অর্থনৈতিক উন্নয়নে সরকারেরও ভূমিকা থাকার কথা ছিল। তবে বছরের পর বছর তারা সরকারের মুখাপেক্ষী হয়ে বসে থাকেনি। নিজেরাই পথ খুঁজেছে অর্থনৈতিক মুক্তির।
কৃষিনির্ভর এই অঞ্চলের মানুষ প্রথমেই মনোযোগ দেয় কৃষিক্ষেত্রে। এখানে বন্যা-জলোচ্ছ্বাস নেই, অতিবৃষ্টি কিংবা তীব্র খরাও নেই। কৃষিতেই বিপ্লব সাধিত হওয়ার কথা, কিন্তু বাস্তবে তা হয়নি। সরকারের কৃষিনীতি কৃষকবান্ধব ছিল না বলেই প্রচলিত ফসল উৎপাদনের বাইরে বিকল্প ফসল উৎপাদনে উৎসাহিত করা হয়নি।
বর্তমান সরকারের কৃষকবান্ধব কৃষিনীতি, সার-সেচ ও কৃষি উপকরণে ভর্তুকি ও নানাবিধ প্রণোদনা, সেই সঙ্গে সহজ শর্তে কৃষিঋণ প্রকল্প এবং তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তা মেহেরপুর জেলার শিক্ষিত বেকার যুবসম্প্রদায়কে আত্মকর্মসংস্থানের নতুন দিগন্ত খুলে দেয়। ধান-পাট-ছোলা-মসুর-গম চাষের প্রচলিত বৃত্তকে তারা নতুনভাবে সম্প্রসারণের উদ্যোগ নেয়।
গাংনী উপজেলার সাহারবাটিতে গড়ে উঠেছে সবজিপল্লি। এখানে উৎপাদিত বাঁধাকপি, ফুলকপি, শিম, বরবটি, মিষ্টি কুমড়া, বেগুন, গাজর, ব্রোকলি, করলা, তরমুজ সারা জেলার চাহিদা মিটিয়ে ঢাকা, চট্টগ্রাম, সিলেট ও বরিশালের সবজিবাজারে সরবরাহ করা হচ্ছে। ঢাকার কারওয়ান বাজার কিংবা চট্টগ্রামের রিয়াজুদ্দিন মার্কেটের সবজি আড়তে ‘সাহারবাটি’ এখন প্রতিষ্ঠিত নাম। সাহারবাটির সবজিবিপ্লব এখন ছড়িয়ে পড়েছে এই জেলার বিভিন্ন গ্রামে। শুধু সবজি নয়, সবজিবীজ থেকেও বিস্তর অর্থ উপার্জন করছেন এই অঞ্চলের কৃষি উদ্যোক্তারা।
সবজি চাষের পাশাপাশি মেহেরপুরের শিক্ষিত বেকার যুবকেরা ফল চাষের দিকেও গুরুত্ব দিয়েছে। এতদঞ্চলের সুস্বাদু আম-লিচুর খ্যাতি ছড়িয়ে পড়েছে সারা দেশে। এখন তা রপ্তানিও করা হচ্ছে। শতবর্ষী প্রাচীন বাগানের জায়গায় এখন প্রতিটি গ্রামে তৈরি হয়েছে আম লিচুর সুদৃশ্য নতুন নতুন বাগান। শৌখিন ফল চাষ নয়, বর্তমানে তা হয়ে উঠেছে অর্থকরী ফসলের চাষ। কলার চাষও এ জেলার অনেক তরুণ উদ্যোক্তার ভাগ্য বদলে দিয়েছে।
‘কলা রুয়ে না কেটো পাত, তাতেই কাপড় তাতেই ভাত’—খনার বচন আবারও সত্য হয়ে উঠেছে এখানে। আধুনিক কৃষিপ্রযুক্তির আশীর্বাদে উন্নত জাতের পেয়ারা, কুল, মাল্টা, স্ট্রবেরি প্রভৃতি ফলের চাষ মেহেরপুরের কৃষিতে যেমন নতুন মাত্রা যোগ করেছে, তেমনি এ জেলার কৃষি উদ্যোক্তাদের এনে দিয়েছে অর্থনৈতিক সচ্ছলতা।
বিস্ময়কর হলেও সত্য, মহিষাখোলা গ্রামের সিঙ্গাপুরফেরত শিক্ষিত যুবক মাবুদ আলী নিজের জমির পাশে ১০ বিঘা জমি লিজ (ইজারা) নিয়ে আবাদ করেছেন ড্রাগন ফলের। আত্মকর্মসংস্থানের জন্য বিদেশি এই ফলের চাষ ছিল তাঁর জন্য বিরাট চ্যালেঞ্জ। শেষ পর্যন্ত অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হওয়ায় সেই চ্যালেঞ্জ তাঁর সফল হয়েছে।
মেহেরপুর শহরের এক সাহসী উদ্যোক্তা ২৯ বিঘা জমিতে ক্যাপসিক্যাম চাষ করে বিপুল সাফল্যের মুখ দেখেছেন। ক্যাপসিক্যামের চাষকে অনেকেই অর্থকরী আবাদ বলে গ্রহণ করেছেন।
এ ছাড়া এ জেলার অনেক গৃহিণী উদ্যোক্তা হাঁস-মুরগি পালনের পাশাপাশি বাড়ির উঠানে লেটুস, পুদিনা, মাশরুমসহ নানান জাতের শাকের আবাদ করে সংসারে বাড়তি উপার্জনের সংস্থান ঘটিয়েছেন।
সদর উপজেলার শালিখা গ্রামের আধুনিক চাষি আব্দুস সালাম স্ট্রবেরি চাষ করে মেহেরপুরের বাইরে বাজারজাত করার মাধ্যমে যে সাফল্যের স্বাক্ষর রেখেছেন; তা অনেকের কাছেই অনুকরণীয় হয়ে উঠেছে।
মেহেরপুর জেলার মাঠে মাঠে এবং বসতভিটার আশপাশে প্রাকৃতিকভাবেই অনেক খেজুরগাছ জন্মে, এখানকার খেজুরগুড়ের সুখ্যাতি দীর্ঘকালের। এই অভিজ্ঞতা মাথায় রেখে মুজিবনগর উপজেলার এক কৃষি উদ্যোক্তা মুজিবনগর স্মৃতিসৌধের সীমানাসংলগ্ন মাঠে সৌদি খেজুরের পরিকল্পিত চাষ করে সবাইকে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন। এই চাষের অর্থকরী দিক অনেককে বিপুলভাবে উৎসাহিত করেছে।
এত দিন বাড়ির সামনে ছোটখাটো ফুলবাগান দেখেই সবাই অভ্যস্ত। এই ফুলেরও যে বাণিজ্যিক মূল্য আছে, সেটা প্রমাণ করেছে মেহেরপুর সদরের হরিরামপুর এবং আমঝুপি গ্রামের কয়েক জন ফুলচাষি। দূর মফস্বলে উৎপাদিত নানান জাতের ফুল ঢাকার বাজারে বিক্রির মাধ্যমে আত্মকর্মসংস্থানের অভিনব দিগন্ত খুঁজে পেয়েছেন এখানকার ফুলচাষিরা।
গাংনী উপজেলার ষোলটাকা এবং বানিয়াপুকুর গ্রাম দুটিকে বলা হয় ‘মৎস্যপল্লি’। এ অঞ্চলের মাটির পানি ধারণক্ষমতা বেশি হওয়ায় শুধু উল্লিখিত দুটি গ্রামই নয়, আশপাশের সব গ্রামের বহু পুকুরে এখন পরিকল্পিতভাবে হচ্ছে মাছের চাষ। প্রকৃতি-নির্ভরতার পরিবর্তে শিক্ষিত বেকার যুবকেরা আত্মকর্মসংস্থানের লক্ষ্যে বিজ্ঞানসম্মত উপায়ে মৎস্য চাষের উদ্যোগ নিয়ে অর্থনৈতিকভাবে সফল হয়েছেন। এ সাফল্যে অনুপ্রাণিত হয়ে জেলার মরা নদী ও মজে যাওয়া খালবিলে পুকুর খনন করে এবং বিশেষভাবে বাঁধ দিয়ে স্থানীয় অনেক শিক্ষিত যুবক এখন মাছ চাষে মনোযোগ দিয়েছেন।
মেহেরপুরের বেকার যুবকদের আত্মকর্মসংস্থানের ক্ষেত্রে ব্যক্তি উদ্যোগে পশুপালনের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এ জেলায় এমন কোনো গ্রাম পাওয়া যাবে না, যেখানে বাণিজ্যিক ভিত্তিতে গো-পালন হয় না। বৃহদায়তনের প্রকল্প না থাক, আধুনিক পদ্ধতিতে মাত্র দু-চারটি গরু পালনের মধ্য দিয়েই অনেকে কর্মসংস্থানের ক্ষেত্র তৈরি করে নিয়েছেন। গো-পালনের পাশাপাশি ব্ল্যাক বেঙ্গল প্রজাতির ছাগলও পালিত হচ্ছে এ জেলার ঘরে ঘরে; যা যথেষ্ট জনপ্রিয় এবং অর্থকরী হয়ে উঠেছে। ভেড়াসদৃশ দ্রুত বর্ধনশীল গাড়ল পালন এখানকার অনেক বেকার যুবককে এনে দিয়েছে অর্থনৈতিক সচ্ছলতা।
পোলট্রিশিল্প এখন পৌঁছে গেছে এ জেলার গ্রামে গ্রামে। আত্মকর্মসংস্থানের উদ্দেশ্যে প্রায় প্রতিটি গ্রামে গড়ে উঠেছে হাঁস–মুরগির খামার। ক্ষুদ্র বিনিয়োগের মাধ্যমে অর্জিত সীমিত মুনাফা থেকে গ্রামের অনেক বেকার এখন স্বাবলম্বী হয়ে উঠেছেন। ফলে চাকরির মুখাপেক্ষিতা অনেকাংশে কমেছে।
তথ্য প্রযুক্তির ব্যবহার এই জেলার শিক্ষিত তরুণ-তরুণীর সামনে খুলে দিয়েছে কর্মসংস্থানের নতুন দিগন্ত। অনলাইনে মেহেরপুরের সূচিশিল্প এবং নকশিকাঁথার বিজ্ঞাপন প্রচার ও অর্ডার (ফরমাশ) নেওয়া হচ্ছে। এমনকি আম-লিচু সরবরাহের অর্ডারও হচ্ছে অনলাইনে। এই উদ্যোগের ফলে উজলপুরের (সদর উপজেলা) কাঁথাপল্লিতে তৈরি নকশিকাঁথা এখন পৌঁছে যাচ্ছে ইউরোপ, আমেরিকায়। কলেজ- বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ুয়া শিক্ষার্থীরা করোনাকালীন দীর্ঘ অবকাশে তৈরি পোশাকে বুটিক ও ফেব্রিকসের কাজ সম্পন্ন করে অনলাইনে বিপণন করছেন সারা দেশে। ঐতিহাসিক মুজিবনগর স্মৃতিসৌধের ছবি ও লোগো ব্যবহার করে তাঁরা গত শীত মৌসুমে বিশেষ ধরনের জ্যাকেট ও হুডিকে নতুন আঙ্গিকে অনলাইনে বাজারজাত করেছেন। এভাবেই নিজেদের কর্মসংস্থানের উপায় নিজেরাই খুঁজে নিয়েছেন।
এই জেলার রেমিট্যান্স যোদ্ধাও উল্লেখযোগ্য। ৯০ শতাংশ ঘরের যুবক বিদেশে থাকেন এমন গ্রাম আছে অনেক। এরই মধ্যে বর্তমান সরকার মুজিবনগরের স্মৃতিবিজড়িত এই জেলায় পূর্ণাঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়, স্থলবন্দর, চেকপোস্ট, রেলপথ, বৃহত্তম কৃষিখামার ও আইটি (তথ্যপ্রযুক্তি) পল্লি স্থাপনের ঘোষণা দিয়ে জেলাবাসীর অন্তরে নতুন আশার সঞ্চার ঘটিয়েছে।
সরকারি এসব উদ্যোগ বাস্তবায়িত হলে বদলে যাবে মেহেরপুরের আর্থসামাজিক অবস্থা এবং উন্মুক্ত হবে কর্মসংস্থানের বিশাল দিগন্ত। তার ফলে মেহেরপুরের সন্তান ‘দুধে-ভাতে’ থাকার সম্মানযোগ্য পথ খুঁজে পাবে বলে পর্যবেক্ষক মহলের বিশ্বাস।
রফিকুর রশীদ
কথাসাহিত্যিক

উন্নত বিশ্বের মতো বাংলাদেশেও মানুষ ধীরে ধীরে ক্যাশলেস লেনদেনের প্রতি আগ্রহী হয়ে উঠছে, যা অর্থনীতির আধুনিকায়নের পথে গুরুত্বপূর্ণ একটি অগ্রগতি। এটি শুধু সময় সাশ্রয় করে না, বরং নিরাপদ, স্বচ্ছ ও কার্যকর অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
২০ মার্চ ২০২৫
সিটি ব্যাংক ২০০৪ সালে প্রথম ক্রেডিট কার্ড ইস্যু করে এবং ২০০৯ সালে আমেরিকান এক্সপ্রেস (অ্যামেক্স) কার্ড ইস্যুয়ার ও অ্যাকুয়ারার হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে। প্রথম আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর লাউঞ্জ-সুবিধা চালু করার মাধ্যমে ক্রেডিট কার্ড খাতে উদ্ভাবনী সেবা প্রদান করে, যা সিটি ব্যাংককে শীর্ষ স্থানে নিয়ে আসে। বর্তম
২০ মার্চ ২০২৫
ক্রেডিট কার্ডের জগতে প্রতিযোগিতার ছড়াছড়ি। সেখানে কীভাবে ঢাকা ব্যাংক তার অবস্থান ধরে রেখেছে, ভবিষ্যৎ কী পরিকল্পনা, জানিয়েছেন ঢাকা ব্যাংকের এমডি শেখ মোহাম্মদ মারুফ। তাঁর সঙ্গে কথা বলেছেন আজকের পত্রিকার সিনিয়র রিপোর্টার...
২০ মার্চ ২০২৫
বাংলাদেশে যাত্রা শুরুর পর মাস্টারকার্ড এখন কোন অবস্থানে রয়েছে, গ্রাহকের সেবার মান ও নিরাপত্তার ধরন এবং ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নিয়ে আজকের পত্রিকার সঙ্গে কথা বলেছেন মাস্টারকার্ডের কান্ট্রি ম্যানেজার সৈয়দ মোহাম্মদ কামাল। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন
২০ মার্চ ২০২৫ক্রেডিট কার্ড নিয়ে বিশেষ আয়োজন
ক্রেডিট কার্ড, ইন্টারনেট ব্যাংকিং, মোবাইল ব্যাংকিং, কিউআর কোড পেমেন্ট ও ডিজিটাল ওয়ালেটের মতো আধুনিক প্রযুক্তির সংযোজন ক্যাশলেস সমাজ গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। এসব বিষয়ে প্রাইম ব্যাংকের ইভিপি ও হেড অব কার্ডস অ্যান্ড রিটেইল অ্যাসেট জোয়ার্দ্দার তানভীর ফয়সালের সঙ্গে কথা বলেছেন আজকের পত্রিকার সহসম্পাদক নাদিম নেওয়াজ।
নাদিম নেওয়াজ

দেশে দিন দিন ক্যাশলেস লেনদেন বাড়ছে। এ বিষয়ে আপনার মত জানতে চাই।
জোয়ার্দ্দার তানভীর ফয়সাল: উন্নত বিশ্বের মতো বাংলাদেশেও মানুষ ধীরে ধীরে ক্যাশলেস লেনদেনের প্রতি আগ্রহী হয়ে উঠছে, যা অর্থনীতির আধুনিকায়নের পথে গুরুত্বপূর্ণ একটি অগ্রগতি। এটি শুধু সময় সাশ্রয় করে না, বরং নিরাপদ, স্বচ্ছ ও কার্যকর অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
প্রাইম ব্যাংক সব সময় গ্রাহকদের সুবিধার কথা চিন্তা করে উদ্ভাবনী ডিজিটাল ব্যাংকিং সেবা প্রদান করছে। আমাদের ইন্টারনেট ব্যাংকিং, মোবাইল ব্যাংকিং, কিউআর কোড পেমেন্ট ও ডিজিটাল ওয়ালেট সেবা গ্রাহকদের সহজ, দ্রুত ও নিরাপদ লেনদেনের সুযোগ দিচ্ছে। প্রাইম ব্যাংক গ্রাহকদের ডিজিটাল লেনদেন ব্যবস্থার সঙ্গে সংযুক্ত হতে অনুপ্রাণিত করছে, যাতে তাঁরা নিরাপদ, ঝামেলামুক্ত ও আধুনিক ব্যাংকিং সুবিধা উপভোগ করতে পারেন।
কার্ড ব্যবহারে দেশের মানুষের আগ্রহ কেমন?
জোয়ার্দ্দার তানভীর ফয়সাল: দেশে মানুষের কার্ড ব্যবহারের প্রবণতা দিন দিন বাড়ছে। ব্যাংকগুলো গ্রাহকদের কার্ড ব্যবহারে উৎসাহিত করতে নানা সুবিধা দিচ্ছে। প্রাইম ব্যাংকের কার্ডের চাহিদাও দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে। গত তিন বছরে আমাদের ব্যাংকের কার্ড ব্যবহার দ্বিগুণ হয়েছে, যা গ্রাহকদের আস্থা ও ডিজিটাল পেমেন্টের প্রতি তাঁদের আগ্রহকে প্রতিফলিত করে। সহজলভ্যতা, নিরাপত্তা ও আধুনিক সুবিধার কারণে গ্রাহকেরা আমাদের কার্ড ব্যবহারে আগ্রহী হচ্ছেন।
প্রাইম ব্যাংকের কর্মীরা শুধু কার্ড সরবরাহে সীমাবদ্ধ নন, বরং সরকারের ক্যাশলেস অর্থনীতি বাস্তবায়নে সক্রিয় ভূমিকা রাখছেন। দৈনন্দিন লেনদেনকে আরও সহজ ও সুরক্ষিত করতে আমরা ডিজিটাল চ্যানেলের ব্যবহার বাড়াতে সচেতনতা বৃদ্ধি ও শিক্ষামূলক কার্যক্রম পরিচালনা করছি।
পবিত্র রমজান ও ঈদুল ফিতর উপলক্ষে গ্রাহকদের জন্য কী ধরনের অফার দিচ্ছেন?
জোয়ার্দ্দার তানভীর ফয়সাল: গ্রাহকদের উৎসবমুখর অভিজ্ঞতা আরও আনন্দদায়ক করতে আমরা বিভিন্ন খাতে আকর্ষণীয় মূল্যছাড় ও ক্যাশব্যাক অফার করছি। ইফতার ও সেহরির জন্য শীর্ষস্থানীয় রেস্তোরাঁগুলোতে এক্সক্লুসিভ ডাইনিং অফার, বাই ওয়ান গেট ওয়ান/টু/থ্রি সুবিধা রয়েছে। এ ছাড়া গ্রোসারি ও রিটেইল দোকানগুলোতে বিশেষ ছাড় এবং ক্যাশব্যাক সুবিধা দেওয়া হচ্ছে। আমাদের কার্ডহোল্ডাররা যাতে পরিবারের সঙ্গে ঈদের আনন্দ উপভোগ করতে পারেন, সে জন্য জনপ্রিয় টিকিটিং প্ল্যাটফর্মগুলোতে এক্সক্লুসিভ ক্যাশব্যাক অফার রাখা হয়েছে। গ্রাহক অভিজ্ঞতা ও সন্তুষ্টিকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়ে আমরা দীর্ঘস্থায়ী সম্পর্ক গড়ে তুলতে চাই।
প্রাইম ব্যাংকের কার্ডের চাহিদা দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে। তিন বছরে আমাদের ব্যাংকের কার্ড ব্যবহার দ্বিগুণ হয়েছে, যা গ্রাহকদের আস্থা ও ডিজিটাল পেমেন্টের প্রতি তাঁদের আগ্রহকে প্রতিফলিত করে। সহজলভ্যতা, নিরাপত্তা ও আধুনিক সুবিধার কারণে গ্রাহকেরা আমাদের কার্ড ব্যবহারে আগ্রহী হচ্ছেন।
এ ছাড়া আমাদের অনলাইন ব্যাংকিং অ্যাপ ‘মাইপ্রাইম’-এর মাধ্যমে গ্রাহকেরা ক্রেডিট কার্ড থেকে যেকোনো অ্যাকাউন্টে সহজে ফান্ড ট্রান্সফার করতে পারেন। সুদমুক্ত সময়সীমার সুবিধাসহ কোনো অতিরিক্ত চার্জ ছাড়া ওয়ালেট ট্রান্সফার ও টপ-আপ সুবিধা দেওয়া হচ্ছে। কার্ডভেদে গ্রাহকেরা দেশে-বিদেশে ১ হাজার ৪০০-এর বেশি এয়ারপোর্ট লাউঞ্জ সুবিধা উপভোগ করতে পারেন।

কার্ডের ব্যবহার বাড়াতে আরও কী ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া দরকার?
জোয়ার্দ্দার তানভীর ফয়সাল: আমাদের নির্বাচিত অ্যাকাউন্টধারী ও ঋণগ্রহীতাদের জন্য বান্ডেল ক্রেডিট কার্ডসহ বিশেষ সুবিধা প্রদান করছি। এ ছাড়া ক্ষুদ্র ও মাঝারি ব্যবসায়ীদের জন্য নতুন ধরনের ক্রেডিট কার্ড চালু করা হয়েছে, যা ডিজিটাল লেনদেনের প্রসার ঘটাবে এবং গ্রাহক সন্তুষ্টি নিশ্চিত করবে। সর্বোচ্চ আর্থিক অন্তর্ভুক্তি নিশ্চিত করতে প্রতিটি অ্যাকাউন্টের সঙ্গে ডেবিট কার্ড দেওয়া হচ্ছে, যা ডিজিটাল লেনদেনকে আরও সহজ ও আকর্ষণীয় করে তুলবে। সমাজের প্রতিটি স্তরের মানুষের জন্য ব্যাংকিং সুবিধা নিশ্চিত করতে করপোরেট প্রিপেইড কার্ড চালু করা হয়েছে, বিশেষত গার্মেন্টসের কর্মীদের জন্য, যাঁরা এখনো নগদে মজুরি পেয়ে থাকেন। গার্মেন্টস কারখানার সঙ্গে অংশীদারত্বের মাধ্যমে আমরা কর্মীদের ব্যাংকিং ব্যবস্থার আওতায় আনছি। পাশাপাশি যেসব এলাকায় ব্যাংকিং সুবিধা সীমিত, সেখানে আমাদের এজেন্ট ব্যাংকিং নেটওয়ার্কের মাধ্যমে ডেবিট কার্ড ইস্যু ও অন্যান্য ব্যাংকিং সেবা দেওয়া হচ্ছে।
আরও খবর পড়ুন:

দেশে দিন দিন ক্যাশলেস লেনদেন বাড়ছে। এ বিষয়ে আপনার মত জানতে চাই।
জোয়ার্দ্দার তানভীর ফয়সাল: উন্নত বিশ্বের মতো বাংলাদেশেও মানুষ ধীরে ধীরে ক্যাশলেস লেনদেনের প্রতি আগ্রহী হয়ে উঠছে, যা অর্থনীতির আধুনিকায়নের পথে গুরুত্বপূর্ণ একটি অগ্রগতি। এটি শুধু সময় সাশ্রয় করে না, বরং নিরাপদ, স্বচ্ছ ও কার্যকর অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
প্রাইম ব্যাংক সব সময় গ্রাহকদের সুবিধার কথা চিন্তা করে উদ্ভাবনী ডিজিটাল ব্যাংকিং সেবা প্রদান করছে। আমাদের ইন্টারনেট ব্যাংকিং, মোবাইল ব্যাংকিং, কিউআর কোড পেমেন্ট ও ডিজিটাল ওয়ালেট সেবা গ্রাহকদের সহজ, দ্রুত ও নিরাপদ লেনদেনের সুযোগ দিচ্ছে। প্রাইম ব্যাংক গ্রাহকদের ডিজিটাল লেনদেন ব্যবস্থার সঙ্গে সংযুক্ত হতে অনুপ্রাণিত করছে, যাতে তাঁরা নিরাপদ, ঝামেলামুক্ত ও আধুনিক ব্যাংকিং সুবিধা উপভোগ করতে পারেন।
কার্ড ব্যবহারে দেশের মানুষের আগ্রহ কেমন?
জোয়ার্দ্দার তানভীর ফয়সাল: দেশে মানুষের কার্ড ব্যবহারের প্রবণতা দিন দিন বাড়ছে। ব্যাংকগুলো গ্রাহকদের কার্ড ব্যবহারে উৎসাহিত করতে নানা সুবিধা দিচ্ছে। প্রাইম ব্যাংকের কার্ডের চাহিদাও দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে। গত তিন বছরে আমাদের ব্যাংকের কার্ড ব্যবহার দ্বিগুণ হয়েছে, যা গ্রাহকদের আস্থা ও ডিজিটাল পেমেন্টের প্রতি তাঁদের আগ্রহকে প্রতিফলিত করে। সহজলভ্যতা, নিরাপত্তা ও আধুনিক সুবিধার কারণে গ্রাহকেরা আমাদের কার্ড ব্যবহারে আগ্রহী হচ্ছেন।
প্রাইম ব্যাংকের কর্মীরা শুধু কার্ড সরবরাহে সীমাবদ্ধ নন, বরং সরকারের ক্যাশলেস অর্থনীতি বাস্তবায়নে সক্রিয় ভূমিকা রাখছেন। দৈনন্দিন লেনদেনকে আরও সহজ ও সুরক্ষিত করতে আমরা ডিজিটাল চ্যানেলের ব্যবহার বাড়াতে সচেতনতা বৃদ্ধি ও শিক্ষামূলক কার্যক্রম পরিচালনা করছি।
পবিত্র রমজান ও ঈদুল ফিতর উপলক্ষে গ্রাহকদের জন্য কী ধরনের অফার দিচ্ছেন?
জোয়ার্দ্দার তানভীর ফয়সাল: গ্রাহকদের উৎসবমুখর অভিজ্ঞতা আরও আনন্দদায়ক করতে আমরা বিভিন্ন খাতে আকর্ষণীয় মূল্যছাড় ও ক্যাশব্যাক অফার করছি। ইফতার ও সেহরির জন্য শীর্ষস্থানীয় রেস্তোরাঁগুলোতে এক্সক্লুসিভ ডাইনিং অফার, বাই ওয়ান গেট ওয়ান/টু/থ্রি সুবিধা রয়েছে। এ ছাড়া গ্রোসারি ও রিটেইল দোকানগুলোতে বিশেষ ছাড় এবং ক্যাশব্যাক সুবিধা দেওয়া হচ্ছে। আমাদের কার্ডহোল্ডাররা যাতে পরিবারের সঙ্গে ঈদের আনন্দ উপভোগ করতে পারেন, সে জন্য জনপ্রিয় টিকিটিং প্ল্যাটফর্মগুলোতে এক্সক্লুসিভ ক্যাশব্যাক অফার রাখা হয়েছে। গ্রাহক অভিজ্ঞতা ও সন্তুষ্টিকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়ে আমরা দীর্ঘস্থায়ী সম্পর্ক গড়ে তুলতে চাই।
প্রাইম ব্যাংকের কার্ডের চাহিদা দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে। তিন বছরে আমাদের ব্যাংকের কার্ড ব্যবহার দ্বিগুণ হয়েছে, যা গ্রাহকদের আস্থা ও ডিজিটাল পেমেন্টের প্রতি তাঁদের আগ্রহকে প্রতিফলিত করে। সহজলভ্যতা, নিরাপত্তা ও আধুনিক সুবিধার কারণে গ্রাহকেরা আমাদের কার্ড ব্যবহারে আগ্রহী হচ্ছেন।
এ ছাড়া আমাদের অনলাইন ব্যাংকিং অ্যাপ ‘মাইপ্রাইম’-এর মাধ্যমে গ্রাহকেরা ক্রেডিট কার্ড থেকে যেকোনো অ্যাকাউন্টে সহজে ফান্ড ট্রান্সফার করতে পারেন। সুদমুক্ত সময়সীমার সুবিধাসহ কোনো অতিরিক্ত চার্জ ছাড়া ওয়ালেট ট্রান্সফার ও টপ-আপ সুবিধা দেওয়া হচ্ছে। কার্ডভেদে গ্রাহকেরা দেশে-বিদেশে ১ হাজার ৪০০-এর বেশি এয়ারপোর্ট লাউঞ্জ সুবিধা উপভোগ করতে পারেন।

কার্ডের ব্যবহার বাড়াতে আরও কী ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া দরকার?
জোয়ার্দ্দার তানভীর ফয়সাল: আমাদের নির্বাচিত অ্যাকাউন্টধারী ও ঋণগ্রহীতাদের জন্য বান্ডেল ক্রেডিট কার্ডসহ বিশেষ সুবিধা প্রদান করছি। এ ছাড়া ক্ষুদ্র ও মাঝারি ব্যবসায়ীদের জন্য নতুন ধরনের ক্রেডিট কার্ড চালু করা হয়েছে, যা ডিজিটাল লেনদেনের প্রসার ঘটাবে এবং গ্রাহক সন্তুষ্টি নিশ্চিত করবে। সর্বোচ্চ আর্থিক অন্তর্ভুক্তি নিশ্চিত করতে প্রতিটি অ্যাকাউন্টের সঙ্গে ডেবিট কার্ড দেওয়া হচ্ছে, যা ডিজিটাল লেনদেনকে আরও সহজ ও আকর্ষণীয় করে তুলবে। সমাজের প্রতিটি স্তরের মানুষের জন্য ব্যাংকিং সুবিধা নিশ্চিত করতে করপোরেট প্রিপেইড কার্ড চালু করা হয়েছে, বিশেষত গার্মেন্টসের কর্মীদের জন্য, যাঁরা এখনো নগদে মজুরি পেয়ে থাকেন। গার্মেন্টস কারখানার সঙ্গে অংশীদারত্বের মাধ্যমে আমরা কর্মীদের ব্যাংকিং ব্যবস্থার আওতায় আনছি। পাশাপাশি যেসব এলাকায় ব্যাংকিং সুবিধা সীমিত, সেখানে আমাদের এজেন্ট ব্যাংকিং নেটওয়ার্কের মাধ্যমে ডেবিট কার্ড ইস্যু ও অন্যান্য ব্যাংকিং সেবা দেওয়া হচ্ছে।
আরও খবর পড়ুন:

রফিকুর রশীদ, কথাসাহিত্যিক‘আমার সন্তান যেন থাকে দুধে-ভাতে’—অন্নদা দেবীর কাছে একদা এই অসামান্য বর প্রার্থনা করেছিল ঈশ্বর পাটনি। ভৈরব নদীপারের খুব সামান্য মানুষ। খেয়া পারাপারের পাটনি (মাঝি) সে। সন্তান-সন্ততির সুখ-সচ্ছলতার জন্য এইটুকু চাওয়া তার।
২৯ জুন ২০২১
সিটি ব্যাংক ২০০৪ সালে প্রথম ক্রেডিট কার্ড ইস্যু করে এবং ২০০৯ সালে আমেরিকান এক্সপ্রেস (অ্যামেক্স) কার্ড ইস্যুয়ার ও অ্যাকুয়ারার হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে। প্রথম আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর লাউঞ্জ-সুবিধা চালু করার মাধ্যমে ক্রেডিট কার্ড খাতে উদ্ভাবনী সেবা প্রদান করে, যা সিটি ব্যাংককে শীর্ষ স্থানে নিয়ে আসে। বর্তম
২০ মার্চ ২০২৫
ক্রেডিট কার্ডের জগতে প্রতিযোগিতার ছড়াছড়ি। সেখানে কীভাবে ঢাকা ব্যাংক তার অবস্থান ধরে রেখেছে, ভবিষ্যৎ কী পরিকল্পনা, জানিয়েছেন ঢাকা ব্যাংকের এমডি শেখ মোহাম্মদ মারুফ। তাঁর সঙ্গে কথা বলেছেন আজকের পত্রিকার সিনিয়র রিপোর্টার...
২০ মার্চ ২০২৫
বাংলাদেশে যাত্রা শুরুর পর মাস্টারকার্ড এখন কোন অবস্থানে রয়েছে, গ্রাহকের সেবার মান ও নিরাপত্তার ধরন এবং ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নিয়ে আজকের পত্রিকার সঙ্গে কথা বলেছেন মাস্টারকার্ডের কান্ট্রি ম্যানেজার সৈয়দ মোহাম্মদ কামাল। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন
২০ মার্চ ২০২৫ক্রেডিট কার্ড নিয়ে বিশেষ আয়োজন
দেশের ক্রেডিট কার্ড বাজারে সিটি ব্যাংক এক নির্ভরযোগ্য নাম, বিশেষ করে একমাত্র আমেরিকান এক্সপ্রেস (অ্যামেক্স) ক্রেডিট কার্ড ইস্যু এবং অ্যাকুয়ারের ক্ষেত্রে। উদ্ভাবন এবং গ্রাহককেন্দ্রিক সেবা দিয়ে নেতৃত্বের আসন মজবুত করেছে। এ বিষয়ে ব্যাংকটির কার্ড বিভাগের প্রধান তৌহিদুল আলমের সঙ্গে কথা বলেছেন আজকের পত্রিকার স্টাফ রিপোর্টার আসাদুজ্জামান নূর।
আসাদুজ্জামান নূর

সিটি ব্যাংকের ক্রেডিট কার্ডের সাফল্যের মূল কারণ কী এবং গ্রাহকসংখ্যা ও লেনদেনের ভিত্তিতে ব্যাংকটি কোন অবস্থায় রয়েছে?
তৌহিদুল আলম: সিটি ব্যাংক ২০০৪ সালে প্রথম ক্রেডিট কার্ড ইস্যু করে এবং ২০০৯ সালে আমেরিকান এক্সপ্রেস (অ্যামেক্স) কার্ড ইস্যুয়ার ও অ্যাকুয়ারার হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে। প্রথম আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর লাউঞ্জ-সুবিধা চালু করার মাধ্যমে ক্রেডিট কার্ড খাতে উদ্ভাবনী সেবা প্রদান করে, যা সিটি ব্যাংককে শীর্ষ স্থানে নিয়ে আসে। বর্তমানে, সিটি ব্যাংক প্রায় ৭ লাখ ক্রেডিট কার্ড ইস্যু করেছে এবং দেশের ৪৪টি ব্যাংকের মধ্যে ১৫-২০ শতাংশ লেনদেন পরিচালিত হয় আমাদের কার্ডের মাধ্যমে। এর পেছনে রয়েছে মানসম্মত সেবা, উদ্ভাবনী অফার এবং গ্রাহকের প্রতি দায়বদ্ধতা।
এই ব্যাংকের ক্রেডিট কার্ড প্রোডাক্টগুলোর মধ্যে কোনটি সবচেয়ে জনপ্রিয় এবং গ্রাহকেরা কেন এটি বেশি ব্যবহার করছেন?
তৌহিদুল আলম: সিটি ব্যাংক অ্যামেক্স এবং ভিসা—দুটি পেমেন্ট স্কিমের ক্রেডিট কার্ড ইস্যু করে। তবে বাংলাদেশে আমরা একমাত্র অ্যামেক্স ক্রেডিট কার্ড ইস্যু কর্তা, যা বিশেষ গুরুত্ব পায়। এর ট্রাভেল, ডাইনিং ও লাইফস্টাইল অফারের কারণে অ্যামেক্স কার্ডই আমাদের গ্রাহকদের মধ্যে সবচেয়ে জনপ্রিয় এবং বেশি ব্যবহৃত।
ক্রেডিট কার্ড গ্রাহকদের জন্য বিশেষ অফার বা সুবিধা প্রদান করছে কি? কেন গ্রাহকেরা এই ব্যাংকের কার্ডে বেশি আগ্রহী?
তৌহিদুল আলম: অবশ্যই। সিটি ব্যাংক গ্রাহকদের জন্য বিভিন্ন সুবিধা প্রদান করছে, যেমন অ্যামেক্স কার্ডে রিওয়ার্ড পয়েন্ট, ভিসা ইনফাইনাইট কার্ডে ক্যাশব্যাক এবং এয়ারপোর্ট লাউঞ্জ, মিট অ্যান্ড গ্রিট, হোটেল-রেস্টুরেন্ট ডিসকাউন্ট অফার। আমরা একমাত্র অ্যামেক্স ইস্যুয়ার ও অ্যাকুয়ারার হওয়ায়, গ্রাহকদের জন্য কাস্টমাইজড সুবিধা দিতে পারি, যা তাদের আরও আকৃষ্ট করছে।
মোবাইল অ্যাপে ক্রেডিট কার্ড সেবার বিশেষত্ব কী?
তৌহিদুল আলম: সিটি ব্যাংক ক্রেডিট কার্ড সেবায় ডিজিটাল সুবিধার মাধ্যমে প্রতিনিয়ত নতুন ফিচার যুক্ত করছে। আমাদের সিটিটাচ অ্যাপ্লিকেশনটি এখন দেশের অন্যতম জনপ্রিয় ব্যাংকিং অ্যাপ। গ্রাহকেরা অ্যাপের মাধ্যমে বিল পেমেন্ট, কার্ড টু অ্যাকাউন্ট ট্রান্সফার, এমএফএস টু কার্ড ট্রান্সফার, কিউআর পেমেন্ট, সরকারি ও বেসরকারি ইউটিলিটি সার্ভিস পেমেন্টসহ বিভিন্ন কার্যক্রম সহজে সম্পন্ন করতে পারেন। এ ছাড়া মেম্বারশিপ রিওয়ার্ড পয়েন্ট দিয়ে পারচেইজ, পারসোনাল ডিটেইল চেঞ্জ এবং ইন্টারন্যাশনাল ট্রানজেকশন ম্যানেজমেন্টও এই প্ল্যাটফর্মে উপলব্ধ। গ্রাহকদের সুবিধা ও চাহিদা অনুযায়ী আমরা নিয়মিত নতুন নতুন সেবা যোগ করার জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
আরও খবর পড়ুন:

সিটি ব্যাংকের ক্রেডিট কার্ডের সাফল্যের মূল কারণ কী এবং গ্রাহকসংখ্যা ও লেনদেনের ভিত্তিতে ব্যাংকটি কোন অবস্থায় রয়েছে?
তৌহিদুল আলম: সিটি ব্যাংক ২০০৪ সালে প্রথম ক্রেডিট কার্ড ইস্যু করে এবং ২০০৯ সালে আমেরিকান এক্সপ্রেস (অ্যামেক্স) কার্ড ইস্যুয়ার ও অ্যাকুয়ারার হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে। প্রথম আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর লাউঞ্জ-সুবিধা চালু করার মাধ্যমে ক্রেডিট কার্ড খাতে উদ্ভাবনী সেবা প্রদান করে, যা সিটি ব্যাংককে শীর্ষ স্থানে নিয়ে আসে। বর্তমানে, সিটি ব্যাংক প্রায় ৭ লাখ ক্রেডিট কার্ড ইস্যু করেছে এবং দেশের ৪৪টি ব্যাংকের মধ্যে ১৫-২০ শতাংশ লেনদেন পরিচালিত হয় আমাদের কার্ডের মাধ্যমে। এর পেছনে রয়েছে মানসম্মত সেবা, উদ্ভাবনী অফার এবং গ্রাহকের প্রতি দায়বদ্ধতা।
এই ব্যাংকের ক্রেডিট কার্ড প্রোডাক্টগুলোর মধ্যে কোনটি সবচেয়ে জনপ্রিয় এবং গ্রাহকেরা কেন এটি বেশি ব্যবহার করছেন?
তৌহিদুল আলম: সিটি ব্যাংক অ্যামেক্স এবং ভিসা—দুটি পেমেন্ট স্কিমের ক্রেডিট কার্ড ইস্যু করে। তবে বাংলাদেশে আমরা একমাত্র অ্যামেক্স ক্রেডিট কার্ড ইস্যু কর্তা, যা বিশেষ গুরুত্ব পায়। এর ট্রাভেল, ডাইনিং ও লাইফস্টাইল অফারের কারণে অ্যামেক্স কার্ডই আমাদের গ্রাহকদের মধ্যে সবচেয়ে জনপ্রিয় এবং বেশি ব্যবহৃত।
ক্রেডিট কার্ড গ্রাহকদের জন্য বিশেষ অফার বা সুবিধা প্রদান করছে কি? কেন গ্রাহকেরা এই ব্যাংকের কার্ডে বেশি আগ্রহী?
তৌহিদুল আলম: অবশ্যই। সিটি ব্যাংক গ্রাহকদের জন্য বিভিন্ন সুবিধা প্রদান করছে, যেমন অ্যামেক্স কার্ডে রিওয়ার্ড পয়েন্ট, ভিসা ইনফাইনাইট কার্ডে ক্যাশব্যাক এবং এয়ারপোর্ট লাউঞ্জ, মিট অ্যান্ড গ্রিট, হোটেল-রেস্টুরেন্ট ডিসকাউন্ট অফার। আমরা একমাত্র অ্যামেক্স ইস্যুয়ার ও অ্যাকুয়ারার হওয়ায়, গ্রাহকদের জন্য কাস্টমাইজড সুবিধা দিতে পারি, যা তাদের আরও আকৃষ্ট করছে।
মোবাইল অ্যাপে ক্রেডিট কার্ড সেবার বিশেষত্ব কী?
তৌহিদুল আলম: সিটি ব্যাংক ক্রেডিট কার্ড সেবায় ডিজিটাল সুবিধার মাধ্যমে প্রতিনিয়ত নতুন ফিচার যুক্ত করছে। আমাদের সিটিটাচ অ্যাপ্লিকেশনটি এখন দেশের অন্যতম জনপ্রিয় ব্যাংকিং অ্যাপ। গ্রাহকেরা অ্যাপের মাধ্যমে বিল পেমেন্ট, কার্ড টু অ্যাকাউন্ট ট্রান্সফার, এমএফএস টু কার্ড ট্রান্সফার, কিউআর পেমেন্ট, সরকারি ও বেসরকারি ইউটিলিটি সার্ভিস পেমেন্টসহ বিভিন্ন কার্যক্রম সহজে সম্পন্ন করতে পারেন। এ ছাড়া মেম্বারশিপ রিওয়ার্ড পয়েন্ট দিয়ে পারচেইজ, পারসোনাল ডিটেইল চেঞ্জ এবং ইন্টারন্যাশনাল ট্রানজেকশন ম্যানেজমেন্টও এই প্ল্যাটফর্মে উপলব্ধ। গ্রাহকদের সুবিধা ও চাহিদা অনুযায়ী আমরা নিয়মিত নতুন নতুন সেবা যোগ করার জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
আরও খবর পড়ুন:

রফিকুর রশীদ, কথাসাহিত্যিক‘আমার সন্তান যেন থাকে দুধে-ভাতে’—অন্নদা দেবীর কাছে একদা এই অসামান্য বর প্রার্থনা করেছিল ঈশ্বর পাটনি। ভৈরব নদীপারের খুব সামান্য মানুষ। খেয়া পারাপারের পাটনি (মাঝি) সে। সন্তান-সন্ততির সুখ-সচ্ছলতার জন্য এইটুকু চাওয়া তার।
২৯ জুন ২০২১
উন্নত বিশ্বের মতো বাংলাদেশেও মানুষ ধীরে ধীরে ক্যাশলেস লেনদেনের প্রতি আগ্রহী হয়ে উঠছে, যা অর্থনীতির আধুনিকায়নের পথে গুরুত্বপূর্ণ একটি অগ্রগতি। এটি শুধু সময় সাশ্রয় করে না, বরং নিরাপদ, স্বচ্ছ ও কার্যকর অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
২০ মার্চ ২০২৫
ক্রেডিট কার্ডের জগতে প্রতিযোগিতার ছড়াছড়ি। সেখানে কীভাবে ঢাকা ব্যাংক তার অবস্থান ধরে রেখেছে, ভবিষ্যৎ কী পরিকল্পনা, জানিয়েছেন ঢাকা ব্যাংকের এমডি শেখ মোহাম্মদ মারুফ। তাঁর সঙ্গে কথা বলেছেন আজকের পত্রিকার সিনিয়র রিপোর্টার...
২০ মার্চ ২০২৫
বাংলাদেশে যাত্রা শুরুর পর মাস্টারকার্ড এখন কোন অবস্থানে রয়েছে, গ্রাহকের সেবার মান ও নিরাপত্তার ধরন এবং ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নিয়ে আজকের পত্রিকার সঙ্গে কথা বলেছেন মাস্টারকার্ডের কান্ট্রি ম্যানেজার সৈয়দ মোহাম্মদ কামাল। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন
২০ মার্চ ২০২৫ক্রেডিট কার্ড নিয়ে বিশেষ আয়োজন
ক্রেডিট কার্ডের জগতে প্রতিযোগিতার ছড়াছড়ি। সেখানে কীভাবে ঢাকা ব্যাংক তার অবস্থান ধরে রেখেছে, ভবিষ্যৎ কী পরিকল্পনা, জানিয়েছেন ঢাকা ব্যাংকের এমডি শেখ মোহাম্মদ মারুফ। তাঁর সঙ্গে কথা বলেছেন আজকের পত্রিকার সিনিয়র রিপোর্টার মাহফুজুল ইসলাম।
মাহফুজুল ইসলাম, ঢাকা

ঢাকা ব্যাংকের ক্রেডিট কার্ড সেবা ও বাজারে প্রতিযোগিতা সম্পর্কে কিছু বলুন?
শেখ মোহাম্মদ মারুফ: আমাদের ব্যাংকের ক্রেডিট কার্ডের চাহিদা দ্রুত বাড়ছে। আমরা কন্টাক্টলেস ও ডুয়াল কারেন্সি কার্ড, ক্যাশব্যাক, ডিসকাউন্ট, রিওয়ার্ড পয়েন্টস এবং কম বা শূন্য বার্ষিক ফির সুবিধা প্রদান করি। দ্রুত কার্ড ইস্যু, ২৪/৭ কাস্টমার কেয়ার এবং মোবাইল অ্যাপে সহজ তথ্য অ্যাকসেসের সুবিধা রয়েছে। বিভিন্ন উৎসব অফার, কো-ব্র্যান্ড কার্ড এবং ১৫০০+ এয়ারপোর্ট লাউঞ্জে প্রবেশের সুবিধা থাকায় আমাদের কার্ডের চাহিদা বাড়ছে।
অন্যান্য ব্যাংকের তুলনায় ঢাকা ব্যাংকের ক্রেডিট কার্ড কীভাবে আলাদা বা বিশেষ সুবিধা প্রদান করে?
শেখ মোহাম্মদ মারুফ: ঢাকা ব্যাংক পিএলসির ক্রেডিট কার্ডে ক্যাশব্যাক, ডিসকাউন্ট, রিওয়ার্ড পয়েন্টস, কম লেনদেন ও বার্ষিক ফি, কন্টাক্টলেস সুবিধা এবং উন্নত সুরক্ষা যেমন ওটিপি ও ফ্রড ডিটেকশন রয়েছে। ব্যবহারবান্ধব মোবাইল অ্যাপ এবং ২৪/৭ কাস্টমার কেয়ার সেবা গ্রাহকদের নিরাপদ অভিজ্ঞতা নিশ্চিত করে।
দেশে ক্রেডিট কার্ডধারীদের মধ্যে কোন ধরনের লেনদেন প্রবণতা বেশি দেখা যায়?
শেখ মোহাম্মদ মারুফ: ক্রেডিট কার্ডধারীরা ফ্যাশন, ইলেকট্রনিকস, গৃহসজ্জা, দৈনন্দিন পণ্য, রেস্টুরেন্ট, ফুড ডেলিভারি, হোটেল ও ভ্রমণ বুকিং এবং ইউটিলিটি বিল পরিশোধে বেশি ব্যবহার করেন। ডিজিটালাইজেশন ও অনলাইন সেবার সহজলভ্যতা এই প্রবণতাগুলোকে ক্রমাগত বাড়াচ্ছে।
ক্রেডিট কার্ড ব্যবহারে সুদের হার ও ফি-সংক্রান্ত নীতি কীভাবে নির্ধারণ করা হচ্ছে, এটি কি গ্রাহকবান্ধব?
শেখ মোহাম্মদ মারুফ: ব্যাংকগুলো সাধারণত কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নীতিমালা বা বাজার পরিস্থিতি অনুযায়ী রেট নির্ধারণ করে, তবে ক্রেডিট কার্ডের সুদের হার ২৫ শতাংশের বেশি হতে পারে না। বেশির ভাগ কার্ডে ৪৫ দিন বিনা সুদে কেনাকাটার সুযোগ থাকে। বার্ষিক ফি, লেট পেমেন্ট ফি এবং ক্যাশ উত্তোলন ফি প্রযোজ্য হতে পারে এবং অনেক কার্ডে রিওয়ার্ড পয়েন্ট বা ক্যাশব্যাক সুবিধা থাকে। তবে অতিরিক্ত ব্যবহার ও বিলম্বিত পেমেন্টে ঋণের বোঝা বাড়তে পারে।
গ্রাহককে ব্যাংকের গ্রাহক সেবা বিভাগে অভিযোগ জমা দিতে হবে। অনেক প্রতিষ্ঠান ট্র্যাকিং নম্বর দেয়, যা দিয়ে অভিযোগের অবস্থা ট্র্যাক করা যায়। সাধারণত ৭-১০ কর্মদিবসের মধ্যে প্রাথমিক প্রতিক্রিয়া এবং ৩০-৪৫ দিন পর সম্পূর্ণ সমাধান পাওয়া যায়। কেন্দ্রীয় ব্যাংক বা নিয়ন্ত্রক কর্তৃপক্ষ ক্রেডিট কার্ডসংক্রান্ত নীতিমালা প্রণয়ন করে এবং ব্যাংকগুলোকে ফি, সুদের হার এবং শর্তাবলি সম্পর্কে স্বচ্ছতা বজায় রাখতে হবে।
ঢাকা ব্যাংকের ক্রেডিট কার্ড কতটা নিরাপদ?
শেখ মোহাম্মদ মারুফ: আমাদের ব্যাংক লেনদেনের নিরাপত্তায় পিসিআই-ডিএসএস এবং আইএসও ২৭০০৩২ কমপ্লায়েন্ট। অনলাইন ট্রানজেকশনে ডেটা এনক্রিপশন ও দুই-ফ্যাক্টর অথেন্টিকেশন ব্যবহৃত হয়। লেনদেন রিয়েল-টাইমে মনিটর করা হয় এবং গ্রাহকদের নিরাপত্তা টিপস দেওয়া হয়। সন্দেহজনক লেনদেন হলে ২৪/৭ সেবা হটলাইনে যোগাযোগ করতে পারেন।

যেসব গ্রাহক প্রথমবারের মতো ক্রেডিট কার্ড নিতে চান, তাঁদের জন্য আপনার পরামর্শ কী?
শেখ মোহাম্মদ মারুফ: প্রথমবার ক্রেডিট কার্ড নেওয়ার আগে ক্রেডিট অবস্থা ও আয়প্রবাহ চেক করুন। সঠিক কার্ড নির্বাচন করে সুদ, ফি এবং অফার বুঝে ব্যবহার করুন। ক্রেডিট লিমিট অতিক্রম না করার চেষ্টা করুন, সময়মতো পেমেন্ট করুন এবং অটো পেমেন্ট সেট আপ করুন।
ঢাকা ব্যাংক ক্রেডিট কার্ড সেবায় ভবিষ্যতে কী ধরনের নতুন উদ্ভাবন বা প্রযুক্তি সংযুক্ত করার পরিকল্পনা করছে?
শেখ মোহাম্মদ মারুফ: ক্রেডিট কার্ড সুরক্ষা বাড়াতে বায়োমেট্রিক অথেন্টিকেশন, এআই ও মেশিন লার্নিংয়ের মাধ্যমে ব্যয় প্যাটার্ন বিশ্লেষণ এবং ব্লকচেইন প্রযুক্তি ব্যবহার করা হতে পারে। ঢাকা ব্যাংক তাদের মোবাইল অ্যাপে এআই-ভিত্তিক গ্রাহকসেবা এবং চ্যাটবট সংযুক্ত করতে পারে।
আরও খবর পড়ুন:

ঢাকা ব্যাংকের ক্রেডিট কার্ড সেবা ও বাজারে প্রতিযোগিতা সম্পর্কে কিছু বলুন?
শেখ মোহাম্মদ মারুফ: আমাদের ব্যাংকের ক্রেডিট কার্ডের চাহিদা দ্রুত বাড়ছে। আমরা কন্টাক্টলেস ও ডুয়াল কারেন্সি কার্ড, ক্যাশব্যাক, ডিসকাউন্ট, রিওয়ার্ড পয়েন্টস এবং কম বা শূন্য বার্ষিক ফির সুবিধা প্রদান করি। দ্রুত কার্ড ইস্যু, ২৪/৭ কাস্টমার কেয়ার এবং মোবাইল অ্যাপে সহজ তথ্য অ্যাকসেসের সুবিধা রয়েছে। বিভিন্ন উৎসব অফার, কো-ব্র্যান্ড কার্ড এবং ১৫০০+ এয়ারপোর্ট লাউঞ্জে প্রবেশের সুবিধা থাকায় আমাদের কার্ডের চাহিদা বাড়ছে।
অন্যান্য ব্যাংকের তুলনায় ঢাকা ব্যাংকের ক্রেডিট কার্ড কীভাবে আলাদা বা বিশেষ সুবিধা প্রদান করে?
শেখ মোহাম্মদ মারুফ: ঢাকা ব্যাংক পিএলসির ক্রেডিট কার্ডে ক্যাশব্যাক, ডিসকাউন্ট, রিওয়ার্ড পয়েন্টস, কম লেনদেন ও বার্ষিক ফি, কন্টাক্টলেস সুবিধা এবং উন্নত সুরক্ষা যেমন ওটিপি ও ফ্রড ডিটেকশন রয়েছে। ব্যবহারবান্ধব মোবাইল অ্যাপ এবং ২৪/৭ কাস্টমার কেয়ার সেবা গ্রাহকদের নিরাপদ অভিজ্ঞতা নিশ্চিত করে।
দেশে ক্রেডিট কার্ডধারীদের মধ্যে কোন ধরনের লেনদেন প্রবণতা বেশি দেখা যায়?
শেখ মোহাম্মদ মারুফ: ক্রেডিট কার্ডধারীরা ফ্যাশন, ইলেকট্রনিকস, গৃহসজ্জা, দৈনন্দিন পণ্য, রেস্টুরেন্ট, ফুড ডেলিভারি, হোটেল ও ভ্রমণ বুকিং এবং ইউটিলিটি বিল পরিশোধে বেশি ব্যবহার করেন। ডিজিটালাইজেশন ও অনলাইন সেবার সহজলভ্যতা এই প্রবণতাগুলোকে ক্রমাগত বাড়াচ্ছে।
ক্রেডিট কার্ড ব্যবহারে সুদের হার ও ফি-সংক্রান্ত নীতি কীভাবে নির্ধারণ করা হচ্ছে, এটি কি গ্রাহকবান্ধব?
শেখ মোহাম্মদ মারুফ: ব্যাংকগুলো সাধারণত কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নীতিমালা বা বাজার পরিস্থিতি অনুযায়ী রেট নির্ধারণ করে, তবে ক্রেডিট কার্ডের সুদের হার ২৫ শতাংশের বেশি হতে পারে না। বেশির ভাগ কার্ডে ৪৫ দিন বিনা সুদে কেনাকাটার সুযোগ থাকে। বার্ষিক ফি, লেট পেমেন্ট ফি এবং ক্যাশ উত্তোলন ফি প্রযোজ্য হতে পারে এবং অনেক কার্ডে রিওয়ার্ড পয়েন্ট বা ক্যাশব্যাক সুবিধা থাকে। তবে অতিরিক্ত ব্যবহার ও বিলম্বিত পেমেন্টে ঋণের বোঝা বাড়তে পারে।
গ্রাহককে ব্যাংকের গ্রাহক সেবা বিভাগে অভিযোগ জমা দিতে হবে। অনেক প্রতিষ্ঠান ট্র্যাকিং নম্বর দেয়, যা দিয়ে অভিযোগের অবস্থা ট্র্যাক করা যায়। সাধারণত ৭-১০ কর্মদিবসের মধ্যে প্রাথমিক প্রতিক্রিয়া এবং ৩০-৪৫ দিন পর সম্পূর্ণ সমাধান পাওয়া যায়। কেন্দ্রীয় ব্যাংক বা নিয়ন্ত্রক কর্তৃপক্ষ ক্রেডিট কার্ডসংক্রান্ত নীতিমালা প্রণয়ন করে এবং ব্যাংকগুলোকে ফি, সুদের হার এবং শর্তাবলি সম্পর্কে স্বচ্ছতা বজায় রাখতে হবে।
ঢাকা ব্যাংকের ক্রেডিট কার্ড কতটা নিরাপদ?
শেখ মোহাম্মদ মারুফ: আমাদের ব্যাংক লেনদেনের নিরাপত্তায় পিসিআই-ডিএসএস এবং আইএসও ২৭০০৩২ কমপ্লায়েন্ট। অনলাইন ট্রানজেকশনে ডেটা এনক্রিপশন ও দুই-ফ্যাক্টর অথেন্টিকেশন ব্যবহৃত হয়। লেনদেন রিয়েল-টাইমে মনিটর করা হয় এবং গ্রাহকদের নিরাপত্তা টিপস দেওয়া হয়। সন্দেহজনক লেনদেন হলে ২৪/৭ সেবা হটলাইনে যোগাযোগ করতে পারেন।

যেসব গ্রাহক প্রথমবারের মতো ক্রেডিট কার্ড নিতে চান, তাঁদের জন্য আপনার পরামর্শ কী?
শেখ মোহাম্মদ মারুফ: প্রথমবার ক্রেডিট কার্ড নেওয়ার আগে ক্রেডিট অবস্থা ও আয়প্রবাহ চেক করুন। সঠিক কার্ড নির্বাচন করে সুদ, ফি এবং অফার বুঝে ব্যবহার করুন। ক্রেডিট লিমিট অতিক্রম না করার চেষ্টা করুন, সময়মতো পেমেন্ট করুন এবং অটো পেমেন্ট সেট আপ করুন।
ঢাকা ব্যাংক ক্রেডিট কার্ড সেবায় ভবিষ্যতে কী ধরনের নতুন উদ্ভাবন বা প্রযুক্তি সংযুক্ত করার পরিকল্পনা করছে?
শেখ মোহাম্মদ মারুফ: ক্রেডিট কার্ড সুরক্ষা বাড়াতে বায়োমেট্রিক অথেন্টিকেশন, এআই ও মেশিন লার্নিংয়ের মাধ্যমে ব্যয় প্যাটার্ন বিশ্লেষণ এবং ব্লকচেইন প্রযুক্তি ব্যবহার করা হতে পারে। ঢাকা ব্যাংক তাদের মোবাইল অ্যাপে এআই-ভিত্তিক গ্রাহকসেবা এবং চ্যাটবট সংযুক্ত করতে পারে।
আরও খবর পড়ুন:

রফিকুর রশীদ, কথাসাহিত্যিক‘আমার সন্তান যেন থাকে দুধে-ভাতে’—অন্নদা দেবীর কাছে একদা এই অসামান্য বর প্রার্থনা করেছিল ঈশ্বর পাটনি। ভৈরব নদীপারের খুব সামান্য মানুষ। খেয়া পারাপারের পাটনি (মাঝি) সে। সন্তান-সন্ততির সুখ-সচ্ছলতার জন্য এইটুকু চাওয়া তার।
২৯ জুন ২০২১
উন্নত বিশ্বের মতো বাংলাদেশেও মানুষ ধীরে ধীরে ক্যাশলেস লেনদেনের প্রতি আগ্রহী হয়ে উঠছে, যা অর্থনীতির আধুনিকায়নের পথে গুরুত্বপূর্ণ একটি অগ্রগতি। এটি শুধু সময় সাশ্রয় করে না, বরং নিরাপদ, স্বচ্ছ ও কার্যকর অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
২০ মার্চ ২০২৫
সিটি ব্যাংক ২০০৪ সালে প্রথম ক্রেডিট কার্ড ইস্যু করে এবং ২০০৯ সালে আমেরিকান এক্সপ্রেস (অ্যামেক্স) কার্ড ইস্যুয়ার ও অ্যাকুয়ারার হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে। প্রথম আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর লাউঞ্জ-সুবিধা চালু করার মাধ্যমে ক্রেডিট কার্ড খাতে উদ্ভাবনী সেবা প্রদান করে, যা সিটি ব্যাংককে শীর্ষ স্থানে নিয়ে আসে। বর্তম
২০ মার্চ ২০২৫
বাংলাদেশে যাত্রা শুরুর পর মাস্টারকার্ড এখন কোন অবস্থানে রয়েছে, গ্রাহকের সেবার মান ও নিরাপত্তার ধরন এবং ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নিয়ে আজকের পত্রিকার সঙ্গে কথা বলেছেন মাস্টারকার্ডের কান্ট্রি ম্যানেজার সৈয়দ মোহাম্মদ কামাল। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন
২০ মার্চ ২০২৫ক্রেডিট কার্ড নিয়ে বিশেষ আয়োজন
বাংলাদেশে যাত্রা শুরুর পর মাস্টারকার্ড এখন কোন অবস্থানে রয়েছে, গ্রাহকের সেবার মান ও নিরাপত্তার ধরন এবং ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নিয়ে আজকের পত্রিকার সঙ্গে কথা বলেছেন মাস্টারকার্ডের কান্ট্রি ম্যানেজার সৈয়দ মোহাম্মদ কামাল। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন সিনিয়র রিপোর্টার জয়নাল আবেদীন খান।
জয়নাল আবেদীন খান, ঢাকা

মাস্টারকার্ডের যাত্রা কীভাবে শুরু হয়েছিল?
সৈয়দ মোহাম্মদ কামাল: আমরা বাংলাদেশে ১৯৯১ সালে যাত্রা শুরু করি, যখন বিশ্বে ডিজিটাল পেমেন্টের প্রয়োজনীয়তা বাড়ছিল। ১৯৯৭ সালে এএনজেড গ্রিনলেজ (পরে স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড) ব্যাংকের সঙ্গে মিলে দেশে প্রথম ক্রেডিট কার্ড চালু করি, যা স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক গ্রাহকদের জন্য নতুন সম্ভাবনা সৃষ্টি করে। ২০১৩ সালে বাংলাদেশের মধ্যবিত্ত ও ই-কমার্স খাতকে লক্ষ্য রেখে প্রথম অফিস চালু করা হয়। বর্তমানে ডিজিটাল প্রযুক্তি ও ই-কমার্সের বিকাশের সঙ্গে ডিজিটাল পেমেন্টের চাহিদা বেড়েছে, যেখানে মাস্টারকার্ড গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে।
গ্রাহকসেবার মান নিয়ে কিছু বলুন।
সৈয়দ মোহাম্মদ কামাল: মাস্টারকার্ড সব সময় সর্বোচ্চ মানের গ্রাহকসেবা নিশ্চিত করে, যাতে নিরাপদ ও সহজ লেনদেন সম্ভব হয়। আমাদের উদ্ভাবনী সলিউশন গ্রাহকদের দৈনন্দিন আর্থিক কার্যক্রম সহজ করে, বিশেষ করে কন্টাক্টলেস পেমেন্ট দ্রুত ও নিরাপদ অভিজ্ঞতা দেয়। কোভিড মহামারির সময় এটি আরও গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে। মাস্টারকার্ড সরাসরি কার্ড ইস্যু না করে, বিশ্বব্যাপী ব্যবসা ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রযুক্তিগত সহায়তা দেয়।
গ্রাহকের আস্থা অর্জনে কতটা সফল?
সৈয়দ মোহাম্মদ কামাল: বাংলাদেশে গ্রাহকদের আস্থা অর্জনে মাস্টারকার্ড আশাতীত সফল হয়েছে, যা প্রযুক্তিগত নিরাপত্তা ও উদ্ভাবনের মাধ্যমে সম্ভব হয়েছে। কারণ, আমাদের টোকেনাইজেশন প্রযুক্তি কার্ড তথ্য সুরক্ষিত রাখে, আর নানা অফার ও সুবিধা গ্রাহকদের আকৃষ্ট করে সম্পর্ক মজবুত করে। গ্রাহক সন্তুষ্টি নিশ্চিত করতে আমরা নিরন্তর কাজ করছি।
দেশি ও বিদেশি গ্রাহকদের সেবায় কি কোনো পার্থক্য আছে?
সৈয়দ মোহাম্মদ কামাল: মাস্টারকার্ড বিশ্বব্যাপী একই মানের সেবা নিশ্চিত করে। তবে অফারগুলো দেশের বাজার ও গ্রাহকের চাহিদা অনুযায়ী ভিন্ন হতে পারে। বাংলাদেশসহ প্রতিটি দেশে আর্থিক নীতিমালা ও বাজার পরিস্থিতির ভিত্তিতে সেবাগুলো নির্ধারিত হয়।
নিরাপত্তার ক্ষেত্রে মাস্টারকার্ডের বিশেষত্ব কী?
সৈয়দ মোহাম্মদ কামাল: মাস্টারকার্ড বিশ্বব্যাপী নিরাপত্তা প্রযুক্তির জন্য পরিচিত এবং বাংলাদেশেও গ্রাহকদের সুরক্ষিত লেনদেন নিশ্চিত করছে। আমাদের বিভিন্ন নিরাপত্তা প্রযুক্তি; যেমন চিপ ও পিন প্রযুক্তি, টোকেনাইজেশন, উন্নত এনক্রিপশন ও ‘সিকিউর কোড’ সিস্টেম অনলাইন ফ্রড ও তথ্য চুরির ঝুঁকি কমায়। মাস্টারকার্ড ইএমভি ও পিসিআই ডিএসএস প্রটোকল মেনে চলে, যা গ্লোবাল লেনদেনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে এবং গ্রাহকদের আস্থা বাড়ায়।
মাস্টারকার্ড বিশ্বব্যাপী নিরাপত্তা প্রযুক্তির জন্য পরিচিত এবং বাংলাদেশেও গ্রাহকদের সুরক্ষিত লেনদেন নিশ্চিত করছে। আমাদের বিভিন্ন নিরাপত্তা প্রযুক্তি; যেমন চিপ ও পিন প্রযুক্তি, টোকেনাইজেশন, উন্নত এনক্রিপশন ও ‘সিকিউর কোড’ সিস্টেম অনলাইন ফ্রড ও তথ্য চুরির ঝুঁকি কমায়। মাস্টারকার্ড ইএমভি ও পিসিআই ডিএসএস প্রটোকল মেনে চলে, যা গ্লোবাল লেনদেনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে এবং গ্রাহকদের আস্থা বাড়ায়।
মাস্টারকার্ড ব্যবহারের জনপ্রিয়তা কেন বাড়ছে?
সৈয়দ মোহাম্মদ কামাল: বাংলাদেশে মাস্টারকার্ডের জনপ্রিয়তা বেড়েছে ডিজিটাল পেমেন্টের প্রসার, উন্নত নিরাপত্তা, রিওয়ার্ড ও অফার এবং ই-কমার্সের বিকাশের কারণে। নগদ লেনদেনের বদলে ডিজিটাল লেনদেনের প্রবণতা বাড়লেও কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্য এখনো অর্জিত হয়নি, যেখানে আরও সহযোগিতা প্রয়োজন। উন্নত নিরাপত্তা প্রযুক্তি গ্রাহকদের আস্থা বাড়িয়েছে এবং বিভিন্ন রিওয়ার্ড ও ডিসকাউন্ট তাঁদের নিয়মিত লেনদেনে সুবিধা দিচ্ছে। ই-কমার্সের প্রসারও মাস্টারকার্ড ব্যবহারের চাহিদা বাড়ার একটি বড় কারণ, যা অনলাইন কেনাকাটায় নিরাপত্তা ও সুবিধা নিশ্চিত করে।
গ্রাহকদের জন্য বিশেষ কী অফার রয়েছে?
সৈয়দ মোহাম্মদ কামাল: মাস্টারকার্ড সারা বছর গ্রাহকদের জন্য নানা অফার ও সুবিধা দেয়, যা কেনাকাটা ও লেনদেনকে সহজ ও আকর্ষণীয় করে তোলে। ঈদ, পূজা, ক্রিসমাসসহ বিভিন্ন উৎসবে বিশেষ ছাড় ও ক্যাশব্যাক অফার থাকে। এবার পবিত্র রমজান ও ঈদ উপলক্ষে ৪০টি শীর্ষস্থানীয় ব্র্যান্ডের ১৭৫টির বেশি আউটলেটে ২৫ শতাংশ ছাড়, ৫০টি হোটেল ও রেস্টুরেন্টে বোগো অফার, ট্রাভেল প্যাকেজে ৭০ শতাংশ পর্যন্ত ছাড় এবং ইলেকট্রনিকসে অতিরিক্ত ডিসকাউন্ট দেওয়া হচ্ছে। দেশের ৯০০০+ মার্চেন্ট আউটলেটে বিশেষ পেমেন্ট সুবিধাও মিলছে, যা গ্রাহকদের কেনাকাটার আনন্দ বাড়াবে।
ভবিষ্যতে মাস্টারকার্ডের নতুন কোনো অভিনব সেবা আসছে কি?
সৈয়দ মোহাম্মদ কামাল: মাস্টারকার্ড সব সময় নতুন সেবা যোগ করে আসছে, যেমন মোবাইল অ্যাপের মাধ্যমে অ্যাকাউন্ট ম্যানেজমেন্ট। ভবিষ্যতে আরও উদ্ভাবনী ও গ্রাহককেন্দ্রিক সলিউশন দেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে, যেমন এআই প্রযুক্তি দিয়ে লেনদেনের নিরাপত্তা বাড়ানো ও ফ্রড শনাক্তকরণ। ক্রস-বর্ডার পেমেন্ট ও রেমিট্যান্স সেবায় স্বচ্ছতা ও দ্রুততা আনা এবং ডিজিটাল ওয়ালেট সলিউশন বাড়ানো লক্ষ্য। এসব উদ্যোগ মাস্টারকার্ডকে বাংলাদেশের ডিজিটাল অর্থনীতির অগ্রদূত হিসেবে প্রতিষ্ঠা করবে।
আরও খবর পড়ুন:

মাস্টারকার্ডের যাত্রা কীভাবে শুরু হয়েছিল?
সৈয়দ মোহাম্মদ কামাল: আমরা বাংলাদেশে ১৯৯১ সালে যাত্রা শুরু করি, যখন বিশ্বে ডিজিটাল পেমেন্টের প্রয়োজনীয়তা বাড়ছিল। ১৯৯৭ সালে এএনজেড গ্রিনলেজ (পরে স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড) ব্যাংকের সঙ্গে মিলে দেশে প্রথম ক্রেডিট কার্ড চালু করি, যা স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক গ্রাহকদের জন্য নতুন সম্ভাবনা সৃষ্টি করে। ২০১৩ সালে বাংলাদেশের মধ্যবিত্ত ও ই-কমার্স খাতকে লক্ষ্য রেখে প্রথম অফিস চালু করা হয়। বর্তমানে ডিজিটাল প্রযুক্তি ও ই-কমার্সের বিকাশের সঙ্গে ডিজিটাল পেমেন্টের চাহিদা বেড়েছে, যেখানে মাস্টারকার্ড গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে।
গ্রাহকসেবার মান নিয়ে কিছু বলুন।
সৈয়দ মোহাম্মদ কামাল: মাস্টারকার্ড সব সময় সর্বোচ্চ মানের গ্রাহকসেবা নিশ্চিত করে, যাতে নিরাপদ ও সহজ লেনদেন সম্ভব হয়। আমাদের উদ্ভাবনী সলিউশন গ্রাহকদের দৈনন্দিন আর্থিক কার্যক্রম সহজ করে, বিশেষ করে কন্টাক্টলেস পেমেন্ট দ্রুত ও নিরাপদ অভিজ্ঞতা দেয়। কোভিড মহামারির সময় এটি আরও গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে। মাস্টারকার্ড সরাসরি কার্ড ইস্যু না করে, বিশ্বব্যাপী ব্যবসা ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রযুক্তিগত সহায়তা দেয়।
গ্রাহকের আস্থা অর্জনে কতটা সফল?
সৈয়দ মোহাম্মদ কামাল: বাংলাদেশে গ্রাহকদের আস্থা অর্জনে মাস্টারকার্ড আশাতীত সফল হয়েছে, যা প্রযুক্তিগত নিরাপত্তা ও উদ্ভাবনের মাধ্যমে সম্ভব হয়েছে। কারণ, আমাদের টোকেনাইজেশন প্রযুক্তি কার্ড তথ্য সুরক্ষিত রাখে, আর নানা অফার ও সুবিধা গ্রাহকদের আকৃষ্ট করে সম্পর্ক মজবুত করে। গ্রাহক সন্তুষ্টি নিশ্চিত করতে আমরা নিরন্তর কাজ করছি।
দেশি ও বিদেশি গ্রাহকদের সেবায় কি কোনো পার্থক্য আছে?
সৈয়দ মোহাম্মদ কামাল: মাস্টারকার্ড বিশ্বব্যাপী একই মানের সেবা নিশ্চিত করে। তবে অফারগুলো দেশের বাজার ও গ্রাহকের চাহিদা অনুযায়ী ভিন্ন হতে পারে। বাংলাদেশসহ প্রতিটি দেশে আর্থিক নীতিমালা ও বাজার পরিস্থিতির ভিত্তিতে সেবাগুলো নির্ধারিত হয়।
নিরাপত্তার ক্ষেত্রে মাস্টারকার্ডের বিশেষত্ব কী?
সৈয়দ মোহাম্মদ কামাল: মাস্টারকার্ড বিশ্বব্যাপী নিরাপত্তা প্রযুক্তির জন্য পরিচিত এবং বাংলাদেশেও গ্রাহকদের সুরক্ষিত লেনদেন নিশ্চিত করছে। আমাদের বিভিন্ন নিরাপত্তা প্রযুক্তি; যেমন চিপ ও পিন প্রযুক্তি, টোকেনাইজেশন, উন্নত এনক্রিপশন ও ‘সিকিউর কোড’ সিস্টেম অনলাইন ফ্রড ও তথ্য চুরির ঝুঁকি কমায়। মাস্টারকার্ড ইএমভি ও পিসিআই ডিএসএস প্রটোকল মেনে চলে, যা গ্লোবাল লেনদেনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে এবং গ্রাহকদের আস্থা বাড়ায়।
মাস্টারকার্ড বিশ্বব্যাপী নিরাপত্তা প্রযুক্তির জন্য পরিচিত এবং বাংলাদেশেও গ্রাহকদের সুরক্ষিত লেনদেন নিশ্চিত করছে। আমাদের বিভিন্ন নিরাপত্তা প্রযুক্তি; যেমন চিপ ও পিন প্রযুক্তি, টোকেনাইজেশন, উন্নত এনক্রিপশন ও ‘সিকিউর কোড’ সিস্টেম অনলাইন ফ্রড ও তথ্য চুরির ঝুঁকি কমায়। মাস্টারকার্ড ইএমভি ও পিসিআই ডিএসএস প্রটোকল মেনে চলে, যা গ্লোবাল লেনদেনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে এবং গ্রাহকদের আস্থা বাড়ায়।
মাস্টারকার্ড ব্যবহারের জনপ্রিয়তা কেন বাড়ছে?
সৈয়দ মোহাম্মদ কামাল: বাংলাদেশে মাস্টারকার্ডের জনপ্রিয়তা বেড়েছে ডিজিটাল পেমেন্টের প্রসার, উন্নত নিরাপত্তা, রিওয়ার্ড ও অফার এবং ই-কমার্সের বিকাশের কারণে। নগদ লেনদেনের বদলে ডিজিটাল লেনদেনের প্রবণতা বাড়লেও কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্য এখনো অর্জিত হয়নি, যেখানে আরও সহযোগিতা প্রয়োজন। উন্নত নিরাপত্তা প্রযুক্তি গ্রাহকদের আস্থা বাড়িয়েছে এবং বিভিন্ন রিওয়ার্ড ও ডিসকাউন্ট তাঁদের নিয়মিত লেনদেনে সুবিধা দিচ্ছে। ই-কমার্সের প্রসারও মাস্টারকার্ড ব্যবহারের চাহিদা বাড়ার একটি বড় কারণ, যা অনলাইন কেনাকাটায় নিরাপত্তা ও সুবিধা নিশ্চিত করে।
গ্রাহকদের জন্য বিশেষ কী অফার রয়েছে?
সৈয়দ মোহাম্মদ কামাল: মাস্টারকার্ড সারা বছর গ্রাহকদের জন্য নানা অফার ও সুবিধা দেয়, যা কেনাকাটা ও লেনদেনকে সহজ ও আকর্ষণীয় করে তোলে। ঈদ, পূজা, ক্রিসমাসসহ বিভিন্ন উৎসবে বিশেষ ছাড় ও ক্যাশব্যাক অফার থাকে। এবার পবিত্র রমজান ও ঈদ উপলক্ষে ৪০টি শীর্ষস্থানীয় ব্র্যান্ডের ১৭৫টির বেশি আউটলেটে ২৫ শতাংশ ছাড়, ৫০টি হোটেল ও রেস্টুরেন্টে বোগো অফার, ট্রাভেল প্যাকেজে ৭০ শতাংশ পর্যন্ত ছাড় এবং ইলেকট্রনিকসে অতিরিক্ত ডিসকাউন্ট দেওয়া হচ্ছে। দেশের ৯০০০+ মার্চেন্ট আউটলেটে বিশেষ পেমেন্ট সুবিধাও মিলছে, যা গ্রাহকদের কেনাকাটার আনন্দ বাড়াবে।
ভবিষ্যতে মাস্টারকার্ডের নতুন কোনো অভিনব সেবা আসছে কি?
সৈয়দ মোহাম্মদ কামাল: মাস্টারকার্ড সব সময় নতুন সেবা যোগ করে আসছে, যেমন মোবাইল অ্যাপের মাধ্যমে অ্যাকাউন্ট ম্যানেজমেন্ট। ভবিষ্যতে আরও উদ্ভাবনী ও গ্রাহককেন্দ্রিক সলিউশন দেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে, যেমন এআই প্রযুক্তি দিয়ে লেনদেনের নিরাপত্তা বাড়ানো ও ফ্রড শনাক্তকরণ। ক্রস-বর্ডার পেমেন্ট ও রেমিট্যান্স সেবায় স্বচ্ছতা ও দ্রুততা আনা এবং ডিজিটাল ওয়ালেট সলিউশন বাড়ানো লক্ষ্য। এসব উদ্যোগ মাস্টারকার্ডকে বাংলাদেশের ডিজিটাল অর্থনীতির অগ্রদূত হিসেবে প্রতিষ্ঠা করবে।
আরও খবর পড়ুন:

রফিকুর রশীদ, কথাসাহিত্যিক‘আমার সন্তান যেন থাকে দুধে-ভাতে’—অন্নদা দেবীর কাছে একদা এই অসামান্য বর প্রার্থনা করেছিল ঈশ্বর পাটনি। ভৈরব নদীপারের খুব সামান্য মানুষ। খেয়া পারাপারের পাটনি (মাঝি) সে। সন্তান-সন্ততির সুখ-সচ্ছলতার জন্য এইটুকু চাওয়া তার।
২৯ জুন ২০২১
উন্নত বিশ্বের মতো বাংলাদেশেও মানুষ ধীরে ধীরে ক্যাশলেস লেনদেনের প্রতি আগ্রহী হয়ে উঠছে, যা অর্থনীতির আধুনিকায়নের পথে গুরুত্বপূর্ণ একটি অগ্রগতি। এটি শুধু সময় সাশ্রয় করে না, বরং নিরাপদ, স্বচ্ছ ও কার্যকর অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
২০ মার্চ ২০২৫
সিটি ব্যাংক ২০০৪ সালে প্রথম ক্রেডিট কার্ড ইস্যু করে এবং ২০০৯ সালে আমেরিকান এক্সপ্রেস (অ্যামেক্স) কার্ড ইস্যুয়ার ও অ্যাকুয়ারার হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে। প্রথম আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর লাউঞ্জ-সুবিধা চালু করার মাধ্যমে ক্রেডিট কার্ড খাতে উদ্ভাবনী সেবা প্রদান করে, যা সিটি ব্যাংককে শীর্ষ স্থানে নিয়ে আসে। বর্তম
২০ মার্চ ২০২৫
ক্রেডিট কার্ডের জগতে প্রতিযোগিতার ছড়াছড়ি। সেখানে কীভাবে ঢাকা ব্যাংক তার অবস্থান ধরে রেখেছে, ভবিষ্যৎ কী পরিকল্পনা, জানিয়েছেন ঢাকা ব্যাংকের এমডি শেখ মোহাম্মদ মারুফ। তাঁর সঙ্গে কথা বলেছেন আজকের পত্রিকার সিনিয়র রিপোর্টার...
২০ মার্চ ২০২৫