Ajker Patrika

ক্রেডিট কার্ড নিয়ে বিশেষ আয়োজন

কার্ডেই লেনদেনের সহজ সমাধান

জয়নাল আবেদীন খান, ঢাকা 
আপডেট : ২০ মার্চ ২০২৫, ১৫: ৪৫
কার্ডেই লেনদেনের সহজ সমাধান

ক্রেডিট কার্ড—আপাতদৃষ্টে নেহাত চৌকো এক টুকরো প্লাস্টিক; অথচ জীবনযাত্রাকে বদলে দিয়েছে ব্যাপকভাবে। নগদ অর্থ বহনের ঝামেলা এড়িয়ে দ্রুত ও নিরাপদ লেনদেনের সুবিধা দেয় ক্রেডিট কার্ড। জরুরি প্রয়োজনের সময় নির্দিষ্ট অঙ্কের নগদ অর্থ তুলে দেয় হাতে। ক্রেডিট কার্ড শুধু দৈনন্দিন কেনাকাটায় ব্যবহৃত হচ্ছে না; বিল পরিশোধ, দেশ-বিদেশে অনলাইন পেমেন্ট, কিস্তিতে কেনা বা বিভিন্ন ছাড়ের সুবিধা পাওয়ার কাজেও লাগছে। সব মিলিয়ে এ সময়ের মানুষের খরচের অভ্যাস, আর্থিক ব্যবস্থাপনাসহ জীবনধারায় পরিবর্তন এনেছে এটি। এ বাস্তবতায় ক্রেডিট কার্ড এখন আর বিলাসিতা নয়। উচ্চবিত্ত তো বটেই, সচ্ছল মধ্যবিত্ত শ্রেণির জন্যও তা হয়ে উঠছে এক অপরিহার্য আর্থিক হাতিয়ার। সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে দেশে ক্রেডিট কার্ডের ব্যবহার দিন দিন বেড়ে চলেছে। দেশের সামগ্রিক অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতেও তা ভূমিকা রাখছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, বিশ্বে প্রথম ক্রেডিট কার্ড চালু হয় ১৯৫০ সালে। আর বাংলাদেশে স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংক ১৯৯৬ সালে প্রথম ক্রেডিট কার্ড চালু করে। এরপর বিভিন্ন ব্যাংক আন্তর্জাতিক ব্র্যান্ডের কার্ড সেবা নিয়ে আসে। এসব কার্ডের মধ্যে ভিসা, মাস্টারকার্ড, আমেরিকান এক্সপ্রেস, ডিসকভার, জেবিসি ও ইউনিয়ন পে উল্লেখযোগ্য। পরিসংখ্যান বলছে, ক্রেডিট কার্ড ব্যবহারকারীরা সবচেয়ে বেশি অর্থ ব্যয় করেন সুপারমার্কেট ও রিটেইল আউটলেটে।

বর্তমানে দেশে ক্রেডিট কার্ডের গ্রাহক ২৭ লাখ। প্রতি মাসে সাড়ে ৩ হাজার কোটি টাকার লেনদেন করছেন তাঁরা। করোনার পর থেকে ক্রেডিট কার্ডধারীর সংখ্যা প্রায় দ্বিগুণ হয়েছে—২০২০ সালে যেখানে এটি ছিল ১৫ লাখ ২৪ হাজার, ২০২৩ সালের ডিসেম্বরে তা বেড়ে দাঁড়ায় ২৬ লাখ ৭৪ হাজার ৫১২ জনে। একই সময়ের মধ্যে লেনদেনের অঙ্কও বেড়েছে—২০২০ সালে ১ হাজার ৩৫৭ কোটি টাকা থেকে ২০২৩ সালে ৩ হাজার ৫৩২ কোটি টাকায় দাঁড়িয়েছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র আরিফ হোসেন খান আজকের পত্রিকা’কে বলেন, ‘ক্রেডিট কার্ড নগদ টাকার বিকল্প হিসেবে ব্যাপকভাবে গৃহীত হচ্ছে। এটি শুধু জীবনকে সহজ করছে না, বরং অর্থনীতিকেও ডিজিটাল কাঠামোর দিকে নিয়ে যাচ্ছে।’

ব্যাংকগুলো ক্রেডিট কার্ডের বাজার আরও সম্প্রসারণ করতে সচেষ্ট। মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের কার্ড বিভাগের প্রধান আনোয়ার হোসেনের মতে, গ্রাহকদের সচেতনতা বাড়লে ও নীতিমালা কিছুটা শিথিল করা হলে ক্রেডিট কার্ডের ব্যবহার আরও বাড়বে। বর্তমানে প্রতি মাসে প্রায় ১ হাজার কোটি টাকার লেনদেন কিস্তিতে হয়, যেখানে ৭০ শতাংশ গ্রাহক নিয়মিত বিল পরিশোধ করেন। ক্রেডিট কার্ডে ব্যয়িত অর্থ নির্ধারিত সময়ের মধ্যে পরিশোধ করলে ৪৫ থেকে ৫৫ দিন পর্যন্ত সুদমুক্ত সুবিধা পাওয়া যায়।

নগদ টাকার বিকল্প, অনেক সুবিধা

ক্রেডিট কার্ড ধীরে ধীরে নগদ টাকার বিকল্প হয়ে উঠছে; বিশেষ করে ডিজিটাল ব্যাংকিংয়ের প্রসারের সঙ্গে সঙ্গে এর ব্যবহারও উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে। বর্তমানে ৪০টি ব্যাংক ও একটি আর্থিক প্রতিষ্ঠান এই সেবা দিচ্ছে। দেশজুড়ে ৫০ হাজার পয়েন্ট অব সেলস (পিওএস) ও ১৩ হাজার এটিএম বুথে ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার করা সম্ভব। ফলে এখন বহু ক্ষেত্রে নগদ অর্থ বহনের ঝামেলা ছাড়া লেনদেন করা যাচ্ছে। নিরাপত্তার দিক থেকে চিন্তা করলে এটি এক বিরাট সুবিধা। আন্তর্জাতিক লেনদেন ও অনলাইন কেনাকাটায় ক্রেডিট কার্ড দিচ্ছে ক্যাশব্যাক, ডিসকাউন্ট ও রিওয়ার্ড পয়েন্টের সুবিধা। পাশাপাশি সুদমুক্ত সময় ও কিস্তিতে পরিশোধের সুবিধা এটিকে আরও জনপ্রিয় করে তুলছে। নগদহীন লেনদেনের আরেকটি দিক হলো ব্যবহারকারীর অভ্যাসের পরিবর্তন। এর ফলে ডিজিটাল ওয়ালেটে ভার্চুয়াল কার্ড দিয়েও স্মার্টফোনের মাধ্যমে কেনাকাটা করা সম্ভব হচ্ছে। দ্রুত প্রসারমাণ এই ব্যবস্থায় ক্রেডিট ছাড়াও ডেবিট, প্রিপেইড ও অন্যান্য কার্ডেও লেনদেনের সুবিধা রয়েছে, যা ভিসা, মাস্টারকার্ড, আমেরিকান এক্সপ্রেস বা ডিসকভার নেটওয়ার্কের অন্তর্ভুক্ত।

ব্যবহারে যে চ্যালেঞ্জ

ক্রেডিট কার্ড ব্যবহারের কিছু চ্যালেঞ্জ রয়েছে। এগুলোর মধ্যে রয়েছে নগদ টাকা যাচ্ছে না ভেবে অতিরিক্ত খরচের প্রবণতা এবং নির্ধারিত সময়ের মধ্যে বিল পরিশোধ না করার কারণে উচ্চ সুদের হার। এসব কারণে কেউ কেউ মনে করেন, ক্রেডিট কার্ড শুধু উচ্চবিত্তদের ব্যাপার। এর ব্যবহারে ঋণের ফাঁদে পড়তে হতে পারে। সুদের হার আগের ২০ শতাংশ থেকে কিছুটা বাড়িয়ে ২০২৫ সালের জানুয়ারি থেকে ২৫ শতাংশ নির্ধারণ করা হয়েছে। মনে রাখা দরকার, সময়মতো ক্রেডিট কার্ডের বিল পরিশোধ করলে সুদ নেওয়া হয় না। সংশ্লিষ্ট অভিজ্ঞজনেরা মনে করেন, সচেতন ও পরিকল্পিত ব্যবহারের মাধ্যমে ক্রেডিট কার্ডকে একটি কার্যকর আর্থিক টুলে রূপান্তর করা সম্ভব, যা ভোক্তাদের জন্য উপকারী হবে।

বাড়তি নিরাপত্তা

ক্রেডিট কার্ডের অন্যতম বড় সুবিধা হচ্ছে নিরাপত্তা। নগদ টাকার তুলনায় এটি অনেক বেশি নিরাপদ। কারণ, চুরি বা জালিয়াতির ঝুঁকি কম। ব্যাংকগুলোর উন্নত নিরাপত্তাব্যবস্থার কারণে (যেমন চিপযুক্ত কার্ড, ওটিপি ও পিন নম্বর) এতে ঝুঁকিহীন লেনদেন নিশ্চিত করা যায়। কার্ড হারিয়ে গেলে দ্রুত তা বন্ধ করে (ব্লক করা) দেওয়া সম্ভব। এর ফলে জালিয়াতির আশঙ্কা কমে যায়। ডেবিট কার্ডের তুলনায় ক্রেডিট কার্ডের নিরাপত্তাব্যবস্থা বেশি উন্নত।

কীভাবে পাওয়া যায় ক্রেডিট কার্ড

বাংলাদেশে ক্রেডিট কার্ড পেতে হলে কিছু নির্দিষ্ট যোগ্যতা থাকতে হয়। এ জন্য নির্দিষ্ট কিছু শর্ত পূরণ করা লাগে। মাসিক আয় ৩০ হাজার টাকা হলে ব্যাংক থেকে নির্দিষ্ট অঙ্কের ক্রেডিট লিমিট পাওয়া যায়। আবেদনকারীর জাতীয় পরিচয়পত্র, ব্যাংক হিসাব, ট্রেড লাইসেন্স (যদি ব্যবসায়ী হন), বিআইএন ও টিআইএন নম্বর প্রয়োজন হয়। চাকরিজীবীদের ক্ষেত্রে ছয় মাসের চাকরির স্থায়িত্ব দরকার হয়।

ব্যবহারে যে সতর্কতা জরুরি

ক্রেডিট কার্ড ব্যবহারের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে কিছু সতর্কতা মেনে চলা জরুরি। প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞরা জানান, প্রতারণা থেকে রক্ষা পেতে শুধু বিশ্বস্ত ওয়েবসাইটে লেনদেন, এইচটিটিপিএস এনক্রিপশন চেক ও টু স্টেপ ভেরিফিকেশন চালু রাখা উচিত। ওয়ান-টাইম পাসওয়ার্ড (ওটিপি) ব্যবহার, পাবলিক ওয়াই-ফাই এড়িয়ে চলা এবং ব্যক্তিগত ও কার্ডের সব তথ্য গোপন রাখা গুরুত্বপূর্ণ। বিল পরিশোধের নির্দিষ্ট তারিখ মেনে চলা, সুদের হার ও ফি সম্পর্কে সচেতন থাকা প্রয়োজন। এ ছাড়া অনলাইনে বা মেসেজে সন্দেহজনক কিছু দেখলে দ্রুততম সময়ে ব্যাংকের সঙ্গে যোগাযোগ করতে হবে।

আরও খবর পড়ুন:

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ছয় মাসে ৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলার কিনেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
বাংলাদেশ ব্যাংক। ফাইল ছবি
বাংলাদেশ ব্যাংক। ফাইল ছবি

ডলার এখন রেমিট্যান্স, রপ্তানি, হুন্ডি নিয়ন্ত্রণ—সবকিছুর সঙ্গে জড়িয়ে আছে। তাই বাজারে ডলার হাতছাড়া হওয়ার ভয়ে সবাই চুপ। এই ডলারের সরবরাহ ও দাম স্থিতিশীল রাখার পাশাপাশি পুরো বৈদেশিক মুদ্রার ভারসাম্য ঠিক রাখতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক নিয়মিত বিরতিতে ডলার কিনছে। সেই ধারাবাহিকতায় শুধু চলতি ২০২৫-২৬ অর্থবছরের জুলাই থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত ৩ দশমিক শূন্য ৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার কিনেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র আরিফ হোসেন খান এ প্রসঙ্গে আজকের পত্রিকাকে জানান, ডিসেম্বর মাসে কেনা ডলারের পরিমাণ সবচেয়ে বেশি, ৯২ কোটি ডলার এবং চলতি অর্থবছর ধরে মোট কেনা হয়েছে ৩ দশমিক শূন্য ৫ বিলিয়ন ডলার। জুলাইয়ে প্রথম ডলার কেনা হয়েছিল ৪৮ কোটি ৪০ লাখ ডলার, আগস্টে ৪৫ কোটি ৪০ লাখ, সেপ্টেম্বরেই তা বেড়ে ৯২ কোটি ৯০ লাখে পৌঁছায়। এরপর অক্টোবর ও নভেম্বরে অবশ্য অনেকটাই কমে ১৪ কোটি ২০ লাখ এবং ৫ কোটি ৪০ লাখে নেমে আসে। ডিসেম্বরেই তার বড় উল্লম্ফন ঘটে, কেনার পরিমাণ দাঁড়ায় ৯২ কোটি ১০ লাখ ডলারে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংক বলেছে, রেমিট্যান্স বৃদ্ধি, হুন্ডি নিয়ন্ত্রণ, ব্যাংকিং চ্যানেলের শক্তিশালীকরণ এবং অনলাইনে আন্তর্জাতিক পণ্যের বাজার মনিটরিংয়ের ফলে বাজারে ডলারের সরবরাহ বেড়েছে। এ ছাড়া ওভার ও আন্ডার ইনভয়েসিং বন্ধ হওয়ায় ব্যবসার আড়ালে ডলার পাচার কমেছে। এসব কারণে ব্যাংকগুলোতে জমে থাকা অতিরিক্ত ডলার ক্রয় করছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

আগের অর্থবছরগুলোর সঙ্গে তুলনায় এবার কেন্দ্রীয় ব্যাংক ক্রেতার ভূমিকায়, যেখানে অতীতের বছরগুলোতে বড় অঙ্কে বিক্রি হতো। ২০২১-২২ অর্থবছরে বিক্রি হয়েছিল ৭ দশমিক ৬ বিলিয়ন, ২০২২-২৩ এ ছিল ১৩ দশমিক ৫ বিলিয়ন, ২০২৩-২৪ এ ১২ দশমিক ৭৯ বিলিয়ন এবং ২০২৪-২৫ এ ১ দশমিক ১২৪ বিলিয়ন ডলার। এই পরিবর্তন বাজারে স্থিতিশীলতার ইঙ্গিত দিচ্ছে।

বর্তমান খোলাবাজারে ডলারের দর ১২৪-১২৫ টাকার মধ্যে, যেখানে গত বছরের এই সময়ে তা ছিল ১৩১ টাকা। ২০২৪-২৫ অর্থবছরে দেশে পণ্য আমদানির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৬১ বিলিয়ন ডলার, আগের বছরের তুলনায় ৭ শতাংশ কম। অনলাইনে বাজার নজরদারি এবং ওভার/আন্ডার ইনভয়েসিং নিয়ন্ত্রণে আসায় পণ্যের আড়াল থেকে ডলার পাচারও অনেক কমেছে।

মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সৈয়দ মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ডলার ক্রয় বাজারে স্থিতিশীলতা আনার জন্য সময়োপযোগী পদক্ষেপ। এর ফলে আমদানি, বিনিয়োগ ও বাজার ভারসাম্য বজায় রাখতে সহায়ক হয়েছে।’

সব মিলিয়ে রেমিট্যান্স ও রপ্তানি আয় বৃদ্ধি, হুন্ডি নিয়ন্ত্রণ, পাচার কমে আসা—সব মিলিয়ে ডলার বাজারে স্বস্তি ফিরিয়েছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংক এখন ডলার বিক্রেতা নয়; বরং ক্রেতার ভূমিকায়, যা দেশের বৈদেশিক মুদ্রার ভারসাম্য বজায় রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

এনবিআর কর্মকর্তার নাম ভাঙিয়ে টাকা দাবি, সতর্কবার্তা

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
রাজধানীর আগারগাঁওয়ে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সামনে দিয়ে হেঁটে যাচ্ছেন পথচারীরা। ছবি: সংগৃহীত
রাজধানীর আগারগাঁওয়ে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সামনে দিয়ে হেঁটে যাচ্ছেন পথচারীরা। ছবি: সংগৃহীত

জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যানের দপ্তরের ব্যক্তিগত সহকারী মো. কাউসারের নাম ভাঙিয়ে একটি প্রতারক চক্র বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের কাছে ভয়ভীতি দেখিয়ে টাকা দাবি করছে। এ ঘটনায় শেরেবাংলা নগর থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হয়েছে এবং আনুষ্ঠানিক সতর্কবার্তা দিয়েছে এনবিআর।

এনবিআর জানায়, প্রতারকেরা মিথ্যা পরিচয় ব্যবহার করে ফোন, মেসেজসহ বিভিন্ন মাধ্যমে অর্থ আদায়ের চেষ্টা করছে। তবে মো. কাউসারের সঙ্গে এ কর্মকাণ্ডের কোনো সম্পৃক্ততা নেই। কর্মকর্তা-কর্মচারী ও সর্বসাধারণকে এই প্রতারক চক্র সম্পর্কে সতর্ক থাকতে হবে। কেউ এ ধরনের ফোনকল বা বার্তার সম্মুখীন হলে নিকটস্থ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে অবহিত করার আহ্বান জানিয়েছে সংস্থাটি।

জিডিতে মো. কাউসার উল্লেখ করেন, ২৩ ডিসেম্বর এনবিআরের উপ-কর কমিশনার রইসুন নেসা (বর্তমানে যুগ্ম কর কমিশনার) তাঁকে জানান, কাউসারের নাম ব্যবহার করে ০১৭০১৮৯০৩৮৭ নম্বর থেকে কল করে তাঁর বিরুদ্ধে ‘অভিযোগ আছে’ উল্লেখ করে টাকা দাবি করা হয়। বিকাশের মাধ্যমে টাকা পাঠানোর নির্দেশও দেওয়া হয় ০১৩২৮০৮৩২১৬ নম্বরে। পরে দেখা যায়, একই চক্র আরও অনেক কর্মকর্তার কাছ থেকে একই কৌশলে অর্থ আদায় করার চেষ্টা করেছে। পরে কাউসার জানতে পারেন আরও অনেক কর্মকর্তার কাছ থেকে একই নম্বর থেকে টাকা দাবি করা হয়েছে। অজ্ঞাতনামা কে বা কারা তাঁর পরিচয় দিয়ে অজ্ঞাতসারে বিভিন্ন কর্মকর্তার কাছে ভয়ভীতি দেখিয়ে টাকা দাবি করছে, তা জানা নেই বলে উল্লেখ করেন কাউসার।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে কর অঞ্চল-কুষ্টিয়ার পরিদর্শী রেঞ্জ-৪-এর যুগ্ম কর কমিশনার রইসুন নেসা আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাকে কাউসারের নামেই ফোন করে। আমি বিষয়টি কাউসারকে জানাই। পরে আর ফোন করেনি। কোনো কথাও হয়নি।’

জানতে চাইলে মো. কাউসার বলেন, কোনো একটা চক্র এটা করছে। এর আগে চেয়ারম্যান স্যারের হোয়াটসঅ্যাপ হ্যাক করে টাকা চেয়েছিল বিভিন্নজনের কাছ থেকে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

যুক্তরাষ্ট্র থেকে এল আরও ৫৭ হাজার টন গম

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
জি-টু-জি চুক্তির আওতায় যুক্তরাষ্ট্র থেকে মোট ২ লাখ ২০ হাজার টন গম আমদানির উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ছবি: সংগৃহীত
জি-টু-জি চুক্তির আওতায় যুক্তরাষ্ট্র থেকে মোট ২ লাখ ২০ হাজার টন গম আমদানির উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ছবি: সংগৃহীত

যুক্তরাষ্ট্র থেকে আরও ৫৬ হাজার ৮৯০ টন গম নিয়ে একটি জাহাজ চট্টগ্রাম বন্দরের বহির্নোঙরে পৌঁছেছে। আজ রোববার খাদ্য মন্ত্রণালয়ের এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

এতে বলা হয়, বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে স্বাক্ষরিত সমঝোতা স্মারকের আওতায় নগদ ক্রয় চুক্তির মাধ্যমে এই গম আমদানি করা হয়েছে। জি-টু-জি চুক্তির আওতায় যুক্তরাষ্ট্র থেকে মোট ২ লাখ ২০ হাজার টন গম আমদানির উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এর অংশ হিসেবে প্রথম চালানে ৫৬ হাজার ৮৯০ টন গম দেশে এসেছে। এর মধ্যে ৩৪ হাজার ১৩৪ টন চট্টগ্রাম বন্দরে এবং অবশিষ্ট ২২ হাজার ৭৫৬ টন মোংলা বন্দরে খালাস করা হবে।

খাদ্য মন্ত্রণালয় জানায়, জাহাজে রক্ষিত গমের নমুনা পরীক্ষার কার্যক্রম এরই মধ্যে শুরু হয়েছে। গমের নমুনা পরীক্ষা শেষে দ্রুত গম খালাসের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এর আগে আরেক চুক্তিতে (জি-টু-জি) এরই মধ্যে ২ লাখ ২০ হাজার টন গম আমদানি সম্পন্ন হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

চট্টগ্রামে ওয়ালটন পণ্যের ক্রেতাদের হাতে উপহার হস্তান্তর

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
ওয়ালটন পণ্য কিনে ফ্রিজ, টিভি উপহার পাওয়া ক্রেতাদের সঙ্গে চিত্রনায়ক ও ওয়ালটনের সিনিয়র এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর আমিন খান। ছবি: বিজ্ঞপ্তি
ওয়ালটন পণ্য কিনে ফ্রিজ, টিভি উপহার পাওয়া ক্রেতাদের সঙ্গে চিত্রনায়ক ও ওয়ালটনের সিনিয়র এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর আমিন খান। ছবি: বিজ্ঞপ্তি

ইলেকট্রনিকস ও হোম অ্যাপ্লায়েন্স খাতের সুপারব্র্যান্ড ওয়ালটনের চলমান ডিজিটাল ক্যাম্পেইন সিজন-২৩-এ দেশজুড়ে ওয়ালটন পণ্য কিনে গ্রাহকেরা পাচ্ছেন সর্বাধুনিক প্রযুক্তির সাইড বাই সাইড ফ্রিজসহ বিভিন্ন ধরনের পণ্য ফ্রি ও নিশ্চিত উপহার। গত ২৫ নভেম্বর থেকে শুরু হওয়া এই ক্যাম্পেইনে প্রতিদিন অসংখ্য ক্রেতার হাতে উপহারের পণ্য তুলে দিচ্ছে ওয়ালটন।

এরই ধারাবাহিকতায় সম্প্রতি চট্টগ্রাম বিভাগের বিভিন্ন অঞ্চলের ওয়ালটন প্লাজা ও ডিস্ট্রিবিউটর শোরুম থেকে ফ্রিজ ও টিভি কিনে ফ্রি পাওয়া সাইড বাই সাইড ফ্রিজ ও স্মার্ট টিভি ৯ ক্রেতার হাতে তুলে দিয়েছে ওয়ালটন। পণ্য ফ্রি পাওয়া ক্রেতারা হচ্ছেন—পটিয়ার সাজ্জাদ হোসেন, বাঁশখালীর রহিমা আক্তার, ফটিকছড়ির জহির উদ্দীন, রাউজানের অরুন কান্তি দাস, লক্ষ্মীপুর রামগঞ্জের কবির হোসেন, মিরসরাইয়ের মো. আছলাম, রাঙামাটির যতিন চাকমা, দোহাজারীর জাকির হোসেন ও সীতাকুণ্ডের মো. জোবায়ের।

গত মঙ্গলবার (২৩ ডিসেম্বর) বন্দর নগরীর একটি অভিজাত রেস্টুরেন্টে আয়োজিত অনুষ্ঠানে সৌভাগ্যবান ক্রেতাদের হাতে উপহার তুলে দেন জনপ্রিয় চিত্রনায়ক ও ওয়ালটনের সিনিয়র এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর আমিন খান। অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ওয়ালটনের চিফ ডিভিশনাল অফিসার ইমরোজ হায়দার খান।

উপহারপ্রাপ্তদের অভিনন্দন জানিয়ে চিত্রনায়ক আমিন খান বলেন, দেশের কোটি কোটি গ্রাহকের, ক্রেতার আস্থা ও ভালোবাসায়ই ওয়ালটন দেশের শীর্ষ ও টেক জায়ান্ট হয়ে উঠেছে। যার পরিপ্রেক্ষিতে ইলেকট্রনিকস খাতের আমদানিনির্ভরতা ব্যাপক হারে হ্রাস পেয়ে সাশ্রয় হচ্ছে বিপুল পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা। সমৃদ্ধ হয়েছে দেশীয় শিল্প খাতের। দেশীয় অর্থনীতিকে আরও সমৃদ্ধ করতে সবাইকে দেশীয় পণ্য ক্রয় ও ব্যবহারের আহ্বান জানান তিনি।

আমিন খান জানান, ওয়ালটনের গুণগতমানের পণ্য শুধু দেশীয় ক্রেতাদেরই নয়; বৈশ্বিক ক্রেতাদেরও আস্থা ও মন জয় করে নিতে সক্ষম হচ্ছে। যার পরিপ্রেক্ষিতে ‘মেড ইন বাংলাদেশ’ ট্যাগযুক্ত ওয়ালটন ব্র্যান্ডের পণ্য এখন বিশ্বের ৫০টির বেশি দেশে রপ্তানি ও বাজারজাত করা হচ্ছে। বিশ্বের শতাধিক দেশে ব্র্যান্ড বিজনেস সম্প্রসারণের টার্গেট নিয়ে আন্তর্জাতিক বাজারে সাফল্যের সঙ্গে এগিয়ে যাচ্ছে ওয়ালটন।

অনুষ্ঠানে সাধারণ ক্রেতাদের বিশেষ সুবিধা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী উপহারের পণ্য তুলে দেওয়ায় ওয়ালটনকে ধন্যবাদ জানান বিজয়ীরা।

কর্মকর্তারা জানান, সিজন-২৩-এর আওতায় ক্রেতারা দেশের যেকোনো ওয়ালটন প্লাজা, পরিবেশক শোরুম কিংবা অনলাইনে ই-প্লাজা থেকে ফ্রিজ, টিভি, এসি, ওয়াশিং মেশিন ও বিএলডিসি ফ্যান কেনার পর পণ্যটির ডিজিটাল রেজিস্ট্রেশন করা হচ্ছে। এরপর ক্রেতাদের মোবাইলে ওয়ালটন থেকে উপহার পাওয়ার এসএমএস পাঠানো হচ্ছে। পাশাপাশি ওয়ালটনের ক্রেতাদের জন্য তৈরি ‘আমার আওয়াজ’ মোবাইল অ্যাপ প্ল্যাটফর্ম ব্যবহারকারী ক্রেতাদের জন্যও এবারের ক্যাম্পেইনে বাড়তি সুবিধা রয়েছে। আগামী ২৫ জানুয়ারি পর্যন্ত ওয়ালটন পণ্য ক্রয়ে ক্রেতাদের জন্য এই বিশেষ সুবিধা থাকছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত