Ajker Patrika

ঠাকুরগাঁও-৩: স্বাধীনতার পর প্রথম নারী এমপি প্রার্থী আশা মনি

রানীশংকৈল (ঠাকুরগাঁও) প্রতিনিধি
আপডেট : ১৮ ডিসেম্বর ২০২৩, ২০: ৩৮
ঠাকুরগাঁও-৩: স্বাধীনতার পর প্রথম নারী এমপি প্রার্থী আশা মনি

স্বাধীনতার পর প্রথমবারের মতো ঠাকুরগাঁও-৩ আসনে সংসদ সদস্য (এমপি) পদে নারী স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন আশা মনি। এর আগে আসনটিতে আর কোনো নারী এ পদে নির্বাচন করেননি। 

অবিবাহিত আশা মনি জেলার রানীশংকৈল উপজেলার নেকমরদ ইউনিয়নের গন্ডগ্রাম এলাকার বাসিন্দা। তাঁর বাবা আনারুল ইসলাম পেশায় একজন ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী। তিন ভাইবোনের মধ্যে তিনি সবার বড়। 

আশা মনি জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ম্যানেজমেন্টে অনার্স পড়ছেন। বর্তমানে তাঁর বয়স ২৭ বছর। সেই হিসাবে তিনি সারা দেশের মধ্যে কনিষ্ঠ সংসদ সদস্য পদ প্রার্থী। 

এর আগে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র দাখিল করেন আশা মনি। ৪ ডিসেম্বর যাচাই-বাছাইয়ে তাঁর ভোটার সমর্থনে গরমিল থাকায় মনোনয়নপত্র বাতিল করেন জেলা প্রশাসক ও জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা মাহবুবুর রহমান। 

পরে মনোনয়নপত্র বাতিলের বিরুদ্ধে আগারগাঁও নির্বাচন কমিশনে আপিল করে প্রার্থিতা ফিরে পান আশা মনি। আজ সোমবার জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছ থেকে ঈগল প্রতীক বরাদ্দ পেয়ে প্রচারণা শুরু করেন আশা মনি। 

তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘নারী নেতৃত্ব তৈরি করার নিমিত্তে এবং শুধু টাকাওয়ালা আর ব্যবসায়ীরা বাদেও দরিদ্র পরিবার থেকেও নেতৃত্ব দেওয়া সম্ভব।’ তা প্রতিষ্ঠিত করার জন্যই তিনি ভোটে দাঁড়িয়েছেন বলে জানান। 

আশা মনি বলেন, ২০২২ সালে জেলা পরিষদ নির্বাচনে সংরক্ষিত নারী আসনে তিনি প্রার্থী হয়েছিলেন। সেখানে সন্তোষজনক ভোটে পরাজিত হন। এখন তিনি সংসদ সদস্য পদে নির্বাচন করছেন। 

তিনি বলেন, তিনি সংসদ সদস্য হলে ঠাকুরগাঁও-৩ আসনে নারীদের অধিকার রক্ষায় কাজ করবেন। কোনো ধরনের দুর্নীতির সঙ্গে জড়াবেন না। এলাকার উন্নয়নে দিনরাত কাজ করবেন। নিজের বা পরিবারের উন্নয়নের কথা তিনি চিন্তা করবেন না। সব সময় নির্বাচনী এলাকার মানুষের কথাই চিন্তা করবেন। 

আশা মনি আরও বলেন, ‘আগেই বলেছি, নারী নেতৃত্ব তৈরির প্রয়াসেই আমার এই নির্বাচন করা।’ জয়ের ব্যাপারে তিনি আশাবাদী। 

ঠাকুরগাঁও-৩ (রানীশংকৈল–পীরগঞ্জ) দুটি উপজেলা, দুটি পৌরসভা ও ১৭টি ইউনিয়নয় নিয়ে গঠিত সংসদীয় এলাকা। মোট ভোটারের সংখ্যা ৩ লাখ ৪৪ হাজার ৩৫৪। 

দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে মোট চারজন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তাঁরা হলেন জাতীয় পার্টি থেকে লাঙ্গল প্রতীকে হাফিজ উদ্দীন আহম্মদ, বিকল্পধারা বাংলাদেশের কুলা প্রতীকে খলিলুর রহমান, বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির হাতুড়ি প্রতীকে গোপাল চন্দ্র রায় এবং ঈগল প্রতীকে আশা মনি স্বতন্ত্র প্রার্থী।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

৩৫তম প্রয়াণ দিবস: নতুন প্রজন্মের কাছে কমরেড মণি সিংহের সংগ্রাম ও আদর্শ তুলে ধরার আহ্বান

দুর্গাপুর (নেত্রকোনা) প্রতিনিধি 
কমরেড মণি সিংহের স্মরণে র‍্যালি করা হয়। ছবি: আজকের পত্রিকা
কমরেড মণি সিংহের স্মরণে র‍্যালি করা হয়। ছবি: আজকের পত্রিকা

দেশের বিশিষ্ট বামপন্থী নেতা কমরেড মণি সিংহের ৩৫তম প্রয়াণ দিবস আজ বুধবার (৩১ ডিসেম্বর) পালিত হয়েছে। এই উপলক্ষে আজ নেত্রকোনার দুর্গাপুরে আলোচনা সভাসহ দিনব্যাপী নানা আয়োজন করা হয়।

আজ সকাল থেকে স্থানীয় টংক শহীদ স্মৃতিস্তম্ভ ও কমরেড মণি সিংহ স্মৃতি জাদুঘর চত্বরে জাতীয় ও দলীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়। পরে কমরেড মণি সিংহের প্রতিকৃতিতে সর্বস্তরের মানুষের অংশগ্রহণে পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হয়। কর্মসূচির মধ্যে ছিল শোক র‍্যালি, শিশুদের চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা এবং বিকেলে আলোচনা সভা। সভায় টংক আন্দোলনের মহানায়ক, মুক্তিযুদ্ধকালীন প্রবাসী সরকারের অন্যতম উপদেষ্টা ও বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি কমরেড মণি সিংহের সংগ্রামী জীবন ও আদর্শ নতুন প্রজন্মের কাছে তুলে ধরার আহ্বান জানান বক্তারা।

আলোচনা সভায় কমরেড মণি সিংহ মেলা উদ্‌যাপন কমিটির আহ্বায়ক দিবালোক সিংহ সভাপতিত্ব করেন। সঞ্চালনায় ছিলেন সিপিবি দুর্গাপুর উপজেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক মোরশেদ আলম। সভায় কমরেড মণি সিংহের জীবন ও সংগ্রাম নিয়ে নিয়ে আলোচনা করেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক ড. তাইয়েবুল হাসান, বীর মুক্তিযোদ্ধা সোহরাব হোসেন তালুকদার, মেলা উদ্‌যাপন কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক অজয় সাহা, উপজেলা বিএনপির সহসভাপতি ও মেলা কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক আব্দুল্লাহ আল-মামুন মুকুল, সিপিবি উপজেলা কমিটির সভাপতি আলকাছ উদ্দীন মীর, উদীচী দুর্গাপুর উপজেলা সংসদের সভাপতি শামছুল আলম খান, কমরেড মণি সিংহ ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্য সাকি খন্দকার, মেলা কমিটির সদস্য শফিউল আলম স্বপন, কবি বিদ্যুৎ সরকারসহ ছাত্র ইউনিয়ন, যুব ইউনিয়ন ও ক্ষেতমজুর সমিতির নেতারা।

আলোচনার শুরুতে দেশের তিনবারের প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার আত্মার মাগফিরাত কামনা করা হয়।

সভায় বক্তারা বলেন, ১৯২৮ সালে কলকাতার মেটিয়াবুরুজে কেশরাম কটন মিলে শ্রমিকদের ১৩ দিনব্যাপী ধর্মঘটে নেতৃত্ব দিয়ে দাবি আদায়ের মধ্য দিয়ে কমরেড মণি সিংহ তাঁর রাজনৈতিক জীবনের প্রথম সফলতা অর্জন করেন। ১৯৩০ সালে তিনি গ্রেপ্তার হন এবং ১৯৩৭ সালের নভেম্বরে কারামুক্ত হয়ে সুসং-দুর্গাপুরে আসেন। সেখানে অবস্থানকালে কৃষকদের সংগঠিত করে টংক প্রথার বিরুদ্ধে ঐতিহাসিক কৃষক আন্দোলনে নেতৃত্ব দেন।

বক্তারা আরও বলেন, ১৯৪৫ সালে নেত্রকোনায় অনুষ্ঠিত নিখিল ভারত কিষান সভার মহাসম্মেলনে কমরেড মণি সিংহ অন্যতম সংগঠক ও অভ্যর্থনা কমিটির সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। সারা জীবন তিনি মেহনতি মানুষের পক্ষে বৈষম্যবিরোধী রাজনীতি করে গেছেন। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে তিনি প্রবাসী সরকারের অন্যতম উপদেষ্টা হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন।

উল্লেখ্য, কমরেড মণি সিংহ ১৯৯০ সালের ৩১ ডিসেম্বর মৃত্যুবরণ করেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

সিলেটে টিলা থেকে অবৈধভাবে পাথর উত্তোলন করায় আটক ১৬

সিলেট প্রতিনিধি
গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা। ছবি: সংগৃহীত
গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা। ছবি: সংগৃহীত

সিলেটের কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার শাহ আরেফিন টিলা থেকে অবৈধভাবে পাথর উত্তোলন করায় ১৬ জনকে আটক করেছে পুলিশ। গতকাল মঙ্গলবার রাতে ওই টিলা থেকে তাঁদের আটক করা হয়।

আটক ব্যক্তিরা হলেন খায়েরগাঁওয়ের মো. বাছিরের ছেলে মো. মাহমুদুল (২১), মো. ফসিউদ্দিন মিয়ার ছেলে মো. সাকিবুল হাসান (১৯), দক্ষিণ রাজনগরের মো. শামসুল হকের ছেলে মো. লালন (২০), বাবুল নগরের হাফিজ আশরাফ আলীর ছেলে মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ আল মামুন (৩২), চিকাডহরের ইকরাম আলীর ছেলে মো. ইয়াকুব আলী (৩৬), জালিয়ারপাড়ের আব্দুল খালিকের ছেলে মো. কামরুল (২৫), ধুপরীরপাড়ের মৃত আব্দুর রশিদের ছেলে মো. আব্দুল করিম (২৭), পাড়ুয়া মাঝপাড়ার মো. আব্দুল মালেকের ছেলে মো. আবু বক্কর (২২), মৃত মঙ্গল মিয়ার ছেলে মো. শফিক মিয়া (৪২), মো. রুহুল আমিন (৩০), ধনাই মিয়ার ছেলে মো. আখতার মিয়া (২৮), মো. আবু বক্করের ছেলে মো. শরিফ উদ্দিন (১৯), মুহাম্মদ সুলতান উদ্দিন (২২), দক্ষিণ কালীবাড়ির ময়না মিয়ার ছেলে মোহাম্মদ কামরুজ্জামান (৩০), চিকাডহর গ্রামের মো. আব্দুল জব্বারের ছেলে মোহাম্মদ লাল মিয়া (২৮) ও ভোলাগঞ্জের মৃত আব্দুল মুতালিবের ছেলে মো. আল আমীন হোসেন (৩২)।

পুলিশ জানায়, গতকাল রাতে অভিযান চালিয়ে কোম্পানীগঞ্জ থানাধীন শাহ আরেফিন টিলা থেকে অবৈধভাবে পাথর উত্তোলন করার দায়ে ১৬ জনকে আটক করা হয়।

বিষয়টি নিশ্চিত করে কোম্পানীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শফিকুল ইসলাম জানান, তাঁদের বিরুদ্ধে মামলা দিয়ে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মেজর জেনারেল (অব.) মাহমুদুল হাসান মারা গেছেন

টাঙ্গাইল প্রতিনিধি 
মেজর জেনারেল (অব.) মাহমুদুল হাসান । ছবি: সংগৃহীত
মেজর জেনারেল (অব.) মাহমুদুল হাসান । ছবি: সংগৃহীত

টাঙ্গাইল-৫ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এবং বিএনপির কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) মাহমুদুল হাসান মারা গেছেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)।

বুধবার (৩১ ডিসেম্বর) বেলা ৩টার দিকে রাজধানীতে নিজ বাসভবনে বার্ধক্যজনিত কারণে তিনি শেষনিশ্বাস ত্যাগ করেন। তাঁর বয়স হয়েছিল ৯০ বছর। তিনি এক ছেলে, এক মেয়েসহ অসংখ্য আত্মীয়স্বজন, সহকর্মী, গুণগ্রাহী ও শুভানুধ্যায়ী রেখে গেছেন।

জেলা বিএনপির সাবেক সদস্যসচিব মাহমুদুল হক সানু বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, রাজধানীতে নিজ বাসায় বর্ষীয়ান এই রাজনীতিবিদের মৃত্যু হয়। বৃহস্পতিবার (১ জানুয়ারি) বাদ জোহর টাঙ্গাইল শহরের বিন্দুবাসিনী সরকারি বালক বিদ্যালয় মাঠে মরহুমের জানাজা অনুষ্ঠিত হবে।

মেজর জেনারেল (অব.) মাহমুদুল হাসান ১৯৩৬ সালের ১ মার্চ টাঙ্গাইল সদর উপজেলার মাকোরকোল গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। সাবেক রাষ্ট্রপতি এরশাদের শাসনামলে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পালন করেন। রাজনৈতিক জীবনে ১৯৮৮ সালে জাতীয় পার্টির প্রার্থী হিসেবে প্রথমবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। পরে ১৯৯৬ ও ২০০১ সালে বিএনপি থেকে নির্বাচিত হন এবং ২০১২ সালের উপনির্বাচনে পুনরায় সংসদ সদস্য হন।

মাহমুদুল হাসানের মৃত্যুতে টাঙ্গাইলে বিএনপির নেতা-কর্মীসহ সর্বস্তরের মানুষের মধ্যে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। তাঁর মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় প্রচার সম্পাদক ও টাঙ্গাইল-৫ (সদর) আসনে বিএনপির মনোনীত সংসদ সদস্য প্রার্থী সুলতান সালাউদ্দিন টুকু।

শোকবার্তায় সুলতান সালাউদ্দিন টুকু বলেন, মেজর জেনারেল (অব.) মাহমুদুল হাসান আজীবন আদর্শ টাঙ্গাইল গড়তে নিরলসভাবে কাজ করে গেছেন। তিনি ছিলেন একজন সমাজসেবক, নিষ্ঠাবান ও দায়িত্বশীল মানুষ। শিক্ষা ও সামাজিক উন্নয়নে তাঁর অবদান ছিল অনস্বীকার্য। তাঁর মৃত্যুতে টাঙ্গাইল সদর একজন অভিভাবক হারাল।

সুলতান সালাউদ্দিন টুকু মরহুমের রুহের মাগফিরাত কামনা করেন এবং শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ভ্যানচালক ফারুক হত্যা মামলার ৬ আসামি পালানোর সময় গ্রেপ্তার

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী
গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা। ছবি: সংগৃহীত
গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা। ছবি: সংগৃহীত

রাজশাহীর বাগমারা উপজেলায় মধ্যযুগীয় কায়দায় ভ্যানচালক ওমর ফারুক (৩৮) হত্যা মামলায় ছয়জনকে গ্রেপ্তার করেছে র‍্যাব। গতকাল মঙ্গলবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে নাটোর সদর উপজেলার বনবেলঘড়িয়া পশ্চিম বাইপাস রোডে রাজশাহী-ঢাকা মহাসড়কে চেকপোস্ট বসিয়ে একটি যাত্রীবাহী বাস থেকে তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়। আসামিরা বাসে চড়ে পালিয়ে যাচ্ছিলেন বলে জানিয়েছে র‍্যাব।

গ্রেপ্তার ছয়জন হলেন বাগমারার ভবানীগঞ্জ সিএনজিচালিত অটোরিকশা মালিক সমিতির সভাপতি উপজেলার দেউলিয়া গ্রামের বাসিন্দা রেজাউল করিম (৪৭), সাধারণ সম্পাদক মাকিগ্রামের আব্দুল মতিন (৪০), সিএনজিচালিত অটোরিকশার চালক দরগামাড়িয়া গ্রামের রফিকুল ইসলাম ওরফে রফিক (৪০), হেজাতিপাড়া গ্রামের আসাদুল ইসলাম (৩৬), দেউলিয়া গ্রামের হাবিবুর রহমান (৫৫) ও আব্দুল হান্নান (৩৮)।

র‍্যাব-৫-এর সদর কোম্পানি ও নাটোরের সিপিসি-২-এর যৌথ দল চেকপোস্ট বসিয়ে আসামিদের গ্রেপ্তার করে। আজ বুধবার সকালে র‍্যাব-৫-এর এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে। নিহত ভ্যানচালক ওমর ফারুকের বাড়ি চাঁনপাড়া গ্রামে। তাঁর বাবার নাম মোসলেম সরদার। ছেলে হত্যার ঘটনায় তিনিই মামলা করেছিলেন।

র‍্যাবের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ১৭ ডিসেম্বর সন্ধ্যায় ভবানীগঞ্জ সিএনজি স্ট্যান্ডে নিজের ব্যবহৃত ভ্যানগাড়ি রেখে প্রস্রাব করতে যান ওমর ফারুক। কিছুক্ষণ পর ফিরে এলে সিএনজিচালিত অটোরিকশা মালিক সমিতির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের নির্দেশে সেখানে উপস্থিত অন্য আসামিরা তাঁকে চোর সন্দেহে আটক করেন। এরপর ২০ থেকে ২৫ জন সংঘবদ্ধভাবে ওমর ফারুককে দুই ঘণ্টার বেশি সময় ধরে নির্মমভাবে মারধর করেন। নির্যাতনের একপর্যায়ে তাঁকে উলঙ্গ করে দেয়ালের সঙ্গে দাঁড় করিয়ে তাঁর দুই হাত ও দুই পায়ে প্রায় দুই ইঞ্চি লোহার পেরেক ঢুকিয়ে দেওয়া হয়। মারধরের সময় ওমর ফারুক বারবার পানি চাইলে তাঁকে পানি পর্যন্ত দেওয়া হয়নি।

অত্যাচারে ফারুকের অবস্থা সংকটাপন্ন হয়ে পড়লে আসামিরা ঘটনা ভিন্ন খাতে নেওয়ার উদ্দেশ্যে তাঁকে মিথ্যা মাদক সেবনকারী হিসেবে উপস্থাপন করে পুলিশে খবর দেন। পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে ফারুককে নিতে অস্বীকৃতি জানালে সেখানে উপস্থিত হন বাগমারা উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সাইফুল ইসলাম ভুঞা। তিনি ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে এক পুরিয়া গাঁজা রাখার অভিযোগে ওমর ফারুককে সাত দিনের কারাদণ্ড দেন।

পরে আহত অবস্থায় ওমর ফারুককে রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হয়। কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার গুরুতর আহত অবস্থায়ই তাঁকে কারাগারে গ্রহণ করেন। পরদিন ১৮ ডিসেম্বর তাঁকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ২০ ডিসেম্বর ফারুকের মৃত্যু হয়। এ নিয়ে গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ হলে বিষয়টি নিয়ে তুমুল আলোচনা শুরু হয়। এরপরই ফারুক হত্যার ঘটনায় মামলা নেয় বাগমারা থানা-পুলিশ।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত