Ajker Patrika

ভারত থেকে পুশ ইনের ২৬ হটস্পট ১৭ জেলায়

  • চলতি মাসের ২২ দিনে ১১০৬ জনকে ঠেলে পাঠিয়েছে বিএসএফ
  • সবচেয়ে বেশি মানুষ এসেছেন মৌলভীবাজারের তিন সীমান্ত দিয়ে
  • দূরের রাজ্য থেকে আটক, রাতের অন্ধকারে বাংলাদেশে পুশ ইন
আমানুর রহমান রনি, ঢাকা 
আপডেট : ৩১ মে ২০২৫, ০৯: ১২
মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ সীমান্ত দিয়ে পুশ ইন করা ব্যক্তিদের আটক করছে বিজিবি। ছবি: আজকের পত্রিকা
মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ সীমান্ত দিয়ে পুশ ইন করা ব্যক্তিদের আটক করছে বিজিবি। ছবি: আজকের পত্রিকা

সীমান্ত দিয়ে প্রতিদিনই বাংলাদেশে মানুষ ঠেলে পাঠাচ্ছে (পুশ ইন) ভারত। শুধু চলতি মে মাসের ২২ দিনেই ১ হাজার ১০৬ জনকে পুশ ইন করেছে ভারতের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফ। এ কাজে সীমান্তবর্তী ১৭ জেলার ২৬টি স্থানকে বেঁচে নিয়েছে তারা। সবচেয়ে বেশি পুশ ইনের ঘটনা ঘটেছে মৌলভীবাজার জেলার তিন সীমান্ত দিয়ে।

সীমান্তে বিএসএফের পুশ ইন প্রতিরোধে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) বিভিন্ন উদ্যোগ নিলেও তা যথেষ্ট ফল দিচ্ছে না। কর্মকর্তারা বলছেন, বাংলাদেশ সীমান্তের কিছু এলাকায় ঘনজঙ্গল ও দুর্গম পাহাড় থাকায় বিজিবির টহল কার্যক্রমে সীমাবদ্ধতার সুযোগ নিচ্ছে বিএসএফ। এই ২৬টি সীমান্ত এলাকাকে হটস্পট হিসেবে চিহ্নিত করেছে বিজিবি। ওই সব এলাকায় টহল জোরদার, সীমান্ত পাহারায় স্থানীয়দের যুক্ত করাসহ বিভিন্ন উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। তবে পাহারা দিয়ে পুশ ইন ঠেকানো যাচ্ছে না।

বিজিবি সূত্রে জানা গেছে, বিএসএফ সুযোগ বুঝে একেক দিন একেক সীমান্ত দিয়ে পুশ ইন করছে। বিজিবি সদর দপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, ৭ থেকে ২৯ মে পর্যন্ত এই ২২ দিনে ২৬টি দুর্গম সীমান্ত দিয়ে ১ হাজার ১০৬ জনকে পুশ ইন করেছে বিএসএফ। এর মধ্যে খাগড়াছড়ির মাটিরাঙ্গা উপজেলার তাইন্দং ইউনিয়নের আচালং সীমান্ত দিয়ে ১১৮, কুড়িগ্রামের রৌমারী, ভূরুঙ্গামারীর ভাওয়ালকুড়ি ও ফুলবাড়ী উপজেলার বালাতাড়ী সীমান্ত দিয়ে ৯৩ জনকে পুশ ইন করা হয়েছে। এ ছাড়া সিলেটের বিয়ানীবাজার উপজেলার নয়াগ্রাম সীমান্ত দিয়ে ১১৫, মৌলভীবাজারের বড়লেখা উপজেলার শাহবাজপুর ও পাল্লাথল সীমান্ত দিয়ে ৩৪০, হবিগঞ্জের চুনারুঘাট উপজেলার কেলেঙ্গা সীমান্ত দিয়ে ১৯, সুনামগঞ্জের ছাতক উপজেলার ছনবাড়ী সীমান্ত দিয়ে ১৬, কুমিল্লা সদর উপজেলার গোলাবাড়ীর কমুয়া সীমান্ত দিয়ে ১৩, ফেনীর ছাগলনাইয়া ও ফুলগাজী সীমান্ত দিয়ে ৩৯, লালমনিরহাটের পাটগ্রাম উপজেলার রহমতপুর গাটিয়ার ভিটা ও শ্রীরামপুর সীমান্ত দিয়ে ৭৮, ঠাকুরগাঁওয়ের পীরগঞ্জ উপজেলার বৈরুচুনা সীমান্ত দিয়ে ১৯, পঞ্চগড় সদর উপজেলার হাঁড়িভাসা ইউনিয়নের বড়বাড়ী সীমান্ত দিয়ে ৩২, দিনাজপুরের বিরল উপজেলার এনায়েতপুর ও রামচন্দ্রপুর সীমান্ত দিয়ে ১৫ জনকে ঠেলে পাঠানো হয়েছে। একই সময়ে চাঁপাইনবাবগঞ্জের গোমস্তাপুর উপজেলার রাধানগর ইউনিয়নের বিভীষণ সীমান্ত দিয়ে ১৭, চুয়াডাঙ্গার জীবননগরের হরিহরনগর ও দামুড়হুদা উপজেলার দর্শনা নিমতলী সীমান্ত দিয়ে ১৯, মেহেরপুরের মুজিবনগর উপজেলার সোনাপুর-মাজপাড়া সীমান্ত দিয়ে ৩০, ঝিনাইদহের মহেশপুরের অধীন কুসুমপুর ও বেনীপুর সীমান্ত দিয়ে ৪২ এবং সাতক্ষীরার কুশখালী সীমান্ত দিয়ে ২৩ জনকে পুশ ইন করা হয়। এ ছাড়া সুন্দরবনের গহিন অরণ্যের মান্দারবাড়িয়া এলাকায় ৭৮ জনকে পুশ ইন করা হয়েছে।

সবচেয়ে বেশি পুশ ইন মৌলভীবাজারের ২ সীমান্ত দিয়ে

২৯ মে বিকেল পর্যন্ত বিজিবির দেওয়া তথ্য বলছে, সবচেয়ে বেশি পুশ ইন করা হয়েছে মৌলভীবাজার জেলার দুটি সীমান্ত দিয়ে। সেগুলো হলো জেলার বড়লেখার শাহবাজপুর ও পাল্লাথল সীমান্ত। এই দুই সীমান্ত দিয়ে মোট ৩৪০ জনকে পুশ ইন করেছে বিএসএফ, যা মোট পুশ ইনের তিন ভাগের এক ভাগ।

এই এলাকা থেকে এত বেশিসংখ্যক মানুষকে পুশ ইনের কারণ জানতে চাইলে সিলেট বিজিবি ৫২ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মেহেদী হাসান আজকের পত্রিকাকে বলেন, মৌলভীবাজার সীমান্ত এলাকায় পাহাড় ও ঘনজঙ্গল। সেখানে বিজিবির সদস্যদের পাহাড় ডিঙিয়ে টহলে যেতে হয়। বিওপি থেকে কোনো কোনো এলাকায় যেতে ৩ থেকে ৪ ঘণ্টা সময় লাগে। জনমানবহীন ওই সব এলাকার ঘনজঙ্গলেও সবসময় বিজিবির টহল ও পাহারা থাকে। কিন্তু বিএসএফ সুযোগ বুঝে রাতের অন্ধকারে সীমান্তের কোনো এক জায়গা দিয়ে পুশ ইন করে চলে যায়। তাঁরা মূলত তাঁদের এলাকা দিয়ে ভুক্তভোগীদের জিরো পয়েন্টের দিকে ঠেলে দেয়।

দূরের রাজ্য থেকে আটক, রাতের অন্ধকারে পুশ ইন

ভারতের বিভিন্ন রাজ্য থেকে আটক করে বাংলাদেশ সীমান্তে পুশ ইন করা হয়েছে এমন কয়েকজন ভুক্তভোগীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গত এপ্রিল থেকে দিল্লি, আসাম ও হরিয়ানার মতো দূরের রাজ্যগুলো থেকে তাঁদের আটক করে স্থানীয় পুলিশ। প্রথমে থানায় নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ ও মেডিকেল পরীক্ষার পর কয়েকদিন আটকে রাখা হয়। যখন সংখ্যা শতাধিক ছাড়ায়, তখন ট্রেন ও গাড়িতে করে পুলিশ পাহারায় সীমান্ত এলাকায় এনে বিএসএফের হাতে তুলে দেয়। পরে গভীর রাতে বিএসএফ বিভিন্ন সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশে পুশ ইন করে।

হরিয়ানা থেকে আটক করে বাংলাদেশে পুশ ইন করা হয়েছে এমন একজন হলেন আমির হোসেন। স্ত্রী ও চার সন্তানসহ তাঁর পুরো পরিবারকে কঠোর পাহারায় এনে সীমান্তে রাতে ছেড়ে দেয় বিএসএফ। তাঁদের বলা হয়, ‘সামনে হাঁটো, না হলে গুলি করব।’ পরে বিজিবি তাঁদের উদ্ধার করে।

এদিকে ২৭ মে বিকেলে বেনাপোল স্থালবন্দর দিয়ে ৩৫ নাগরিককে ভারত বাংলাদেশের কাছে ফেরত পাঠায়। তাঁদের ভালো কাজের প্রলোভন দেখিয়ে বিভিন্ন সময় ভারতে পাচার করা হয়েছিল। তাঁরা ভারতের পশ্চিম বাংলার বিভিন্ন সেফহোমে ছিলেন। পাচারের শিকার ৩৫ জনের বয়স ১৬-১৮ বছরের মধ্যে।

আরও যত পুশ ইন

এদিকে সীমান্ত দিয়ে পুশ ইন অব্যাহত রেখেছে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ)। গত বৃহস্পতিবার রাতে হবিগঞ্জের চুনারুঘাটের রেমা সীমান্ত দিয়ে ২২ জনকে পুশ ইন করেছে ভারত। বিজিবি সূত্র জানিয়েছে, সবাই বাংলাদেশি নাগরিক এবং তাঁরা কুড়িগ্রামের বাসিন্দা।

এ ছাড়া ফেনীর ছাগলনাইয়া উপজেলার মথুয়া সীমান্ত দিয়ে ১৩ জন পুশ ইন করেছে বিএসএফ। আর মৌলভীবাজারের জুড়ী সীমান্ত দিয়ে ১০ ও কমলগঞ্জ উপজেলার দুটি সীমান্ত দিয়ে ১৯ জনকে পুশ ইন করা হয়েছে। এর বাইরে খাগড়াছড়ি সীমান্ত দিয়ে আবারও ১৪ জনকে পুশ ইন করেছে বিএসএফ।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

মাকে দেখতে মাঝরাতে হাসপাতালে তারেক রহমান

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
ছবিটি ভিডিও থেকে নেওয়া
ছবিটি ভিডিও থেকে নেওয়া

চিকিৎসাধীন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার খোঁজ নিতে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে গেছেন দলটির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। রোববার (২৮ ডিসেম্বর) রাত সাড়ে ১১টার পরে হাসপাতালে যান তিনি। পরে সেখানে আধঘণ্টারও বেশি সময় অবস্থান করে রাত ১২টা ৮ মিনিটে বেরিয়ে যান। বিএনপির মিডিয়া সেলের সদস্য শায়রুল কবির খান এই তথ্য জানিয়েছেন।

এর আগে শনিবার মধ্যরাতে বিএনপি চেয়ারপারসনের অবস্থা অত্যন্ত জটিল বলে জানিয়েছিলেন তাঁর চিকিৎসায় গঠিত মেডিকেল বোর্ডের সদস্য ও বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন। খালেদা জিয়া সংকটময় মুহূর্ত অতিক্রম করছেন বলেও উল্লেখ করেন ডা. জাহিদ।

চিকিৎসারত খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্যের সর্বশেষ কী অবস্থা, সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে এই চিকিৎসক বলেন, ‘স্বাভাবিকভাবেই ওনার (খালেদা জিয়া) অবস্থার উন্নতি হয়েছে, এ কথা বলা যাবে না।...ওনার অবস্থা অত্যন্ত জটিল এবং উনি একটা সংকটময় মুহূর্ত পার করছেন।’

শনিবার দিবাগত রাত সাড়ে ১২টার দিকে কোনো ধরনের পূর্বঘোষণা ছাড়াই রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালের সামনে এই ব্রিফ করা হয়।

ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন বলেন, ‘সত্যিকার অর্থে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া ২৩ নভেম্বর এখানে (এভারকেয়ার হাসপাতাল) ভর্তি হয়েছেন; ভর্তি হওয়ার পরবর্তীতে ওনার (খালেদা জিয়া) শারীরিক অবস্থার বেশ অবনতি হয়েছিল।’

স্বাস্থ্যের ক্রমাগত অবনতির কারণেই খালেদা জিয়াকে কেবিন থেকে সিসিইউ এবং সেখানে থেকে পরবর্তীতে আইসিইউতে নেওয়া হয় বলেও জানান তিনি।

খালেদা জিয়ার চিকিৎসায় গঠিত মেডিকেল বোর্ডের এই সদস্য জানান, দেশি-বিদেশি চিকিৎসকেরা বিএনপি চেয়ারপারসনকে চিকিৎসা দিচ্ছেন, তাঁর পুত্রবধূ ডা. জুবাইদা রহমান তাতে যুক্ত রয়েছেন।

১৭ বছর পর গত বৃহস্পতিবার (২৫ ডিসেম্বর) যুক্তরাজ্যের লন্ডন থেকে ফেরার পর মাকে দেখতে হাসপাতালে গিয়েছিলেন তারেক রহমান। শনিবার (২৭ ডিসেম্বর) দিনভর নানা কর্মসূচি শেষে আবারও মাকে দেখতে যান তিনি। দুই ঘণ্টার বেশি সময় সেখানে অবস্থান করে রাত ১১টা ৫৮ মিনিটে তিনি হাসপাতাল ছাড়েন।

গত ২৩ নভেম্বর থেকে খালেদা জিয়া রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। অধ্যাপক শাহাবুদ্দিন তালুকদারের নেতৃত্বে দেশি-বিদেশি বিশেষজ্ঞদের সমন্বয়ে গঠিত মেডিকেল বোর্ডের অধীন খালেদা জিয়ার চিকিৎসা কার্যক্রম চলছে।

বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার নানা শারীরিক জটিলতার মধ্যে ডায়াবেটিস, কিডনি, হৃদ্‌যন্ত্র ও ফুসফুসের সমস্যা ওঠানামা করছে। নিয়মিত চিকিৎসার অংশ হিসেবে তাঁর কিছু শারীরিক পরীক্ষা-নিরীক্ষা নিয়মিত করা হচ্ছে।

খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্যের এমন পরিস্থিতিতে তাঁকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে নেওয়ার কথা বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হলেও শেষ পর্যন্ত তা সম্ভব হয়নি। বিএনপি চেয়ারপারসনের শারীরিক অবস্থা আকাশযাত্রার উপযোগী না হওয়ায় দেশেই তাঁর চিকিৎসা চলমান।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

লক্ষ্মীপুর-১ আসনে স্বতন্ত্র মাহফুজ আলম, এনসিপির পক্ষে মনোনয়নপত্র নিলেন বড় ভাই মাহবুব

লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি
এনসিপির কেন্দ্রীয় নেতা মাহবুব আলম ও তাঁর ছোট ভাই সাবেক উপদেষ্টা মাহফুজ আলম। ছবি: সংগৃহীত
এনসিপির কেন্দ্রীয় নেতা মাহবুব আলম ও তাঁর ছোট ভাই সাবেক উপদেষ্টা মাহফুজ আলম। ছবি: সংগৃহীত

আগামী ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সাবেক তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা মাহফুজ আলম। আজ রোববার (২৮ ডিসেম্বর) বিকেলে নিজ এলাকা লক্ষ্মীপুর-১ (রামগঞ্জ) আসন থেকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে তাঁর পক্ষে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করা হয়েছে।

রামগঞ্জ উপজেলা নির্বাচন অফিসার ও রিটার্নিং কর্মকর্তা ওবায়দুর রহমানের কাছ থেকে মাহফুজ আলমের পক্ষে এই মনোনয়নপত্র গ্রহণ করা হয়। উপদেষ্টা পদ ছেড়ে দেওয়ার পর তিনি সরাসরি নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন—এমন খবরে রামগঞ্জসহ পুরো জেলায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।

এদিকে, এই নির্বাচনী লড়াইয়ে মাহফুজ আলমের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় থাকছেন তাঁর আপন বড় ভাই মাহবুব আলম মাহিরও। তিনি জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) কেন্দ্রীয় যুগ্ম আহ্বায়ক। তিনি একই আসন থেকে দলীয়ভাবে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন।

মাহফুজ আলম স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র নিলেও তিনি কোনো রাজনৈতিক দলে যোগ দিচ্ছেন কি না, তা নিয়ে এখনো ধোঁয়াশা বজায় রেখেছেন। আজ রাতেই এক ফেসবুক পোস্টে তিনি এনসিপি বা জামায়াত-এনসিপি জোটে যোগ না দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন।

একই আসন থেকে নির্বাচনে অংশগ্রহণের জন্য মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন বিএলডিপি বিলুপ্ত করে বিএনপিতে যোগদান করা শাহাদাত হোসেন সেলিম, ঢাকা মহানগর বিএনপির (দক্ষিণ) যুগ্ম আহ্বায়ক ও মতিঝিল ওয়ার্ডের সাবেক কমিশনার হারুন অর রশিদসহ মোট ১৬ জন প্রার্থী।

এ ছাড়া রামগঞ্জ আসন থেকে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে (২০১৪) আওয়ামী মহাজোটের শরিক বাংলাদেশ তরিকত ফেডারেশনের মহাসচিব লায়ন এম এ আউয়াল। তিনি নৌকা প্রতীকে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে নির্বাচিত হয়েছিলেন। তবে বর্তমানে হত্যা মামলাসহ নানান কারণে বিতর্কিত এ নেতা এলাকা ছেড়ে ঢাকায় অবস্থান করছেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

চট্টগ্রাম-১৪ আসনে ধানের শীষ পেলেন বেনজীরের ব্যবসায়িক সহযোগী জসিম

নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম
চট্টগ্রাম-১৪ আসনে ধানের শীষ পেলেন বেনজীরের ব্যবসায়িক সহযোগী জসিম। ছবি: সংগৃহীত
চট্টগ্রাম-১৪ আসনে ধানের শীষ পেলেন বেনজীরের ব্যবসায়িক সহযোগী জসিম। ছবি: সংগৃহীত

চট্টগ্রাম-১৪ (চন্দনাইশ–সাতকানিয়া আংশিক) আসনে চন্দনাইশ উপজেলা সাবেক চেয়ারম্যান জসিম উদ্দিন আহমেদের ধানের শীষ প্রতীকের মনোনয়ন পাওয়ার খবরে ক্ষোভ জানিয়েছেন স্থানীয় বিএনপির নেতা-কর্মীরা। আজ রোববার (২৮ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় তাঁর মনোনয়নের খবর ছড়িয়ে পড়ার পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে।

অনেকেই আওয়ামী লীগ সরকারের সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ ও আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের সঙ্গে জসিম উদ্দিনের ছবি শেয়ার করে প্রশ্ন তুলছেন তাঁর রাজনৈতিক পরিচয় ও অবস্থান নিয়ে।

যদিও সন্ধ্যা পর্যন্ত বিএনপির কেন্দ্রীয় দপ্তর থেকে এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো কিছু জানা না গেলেও চট্টগ্রামের রিটার্নিং কর্মকর্তার পাঠানো তথ্যে ধানের শীষ প্রতীকের প্রার্থী হিসেবে তাঁর নাম রয়েছে বলে জানা গেছে। এ ছাড়া জসিম উদ্দিন আহমেদ মোবাইল ফোনে আজকের পত্রিকাকে তাঁর মনোনয়নের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

স্থানীয় বাসিন্দাদের তথ্যমতে, জসিম উদ্দিন সাবেক আইজিপি বেনজীর আহমেদের দীর্ঘদিনের ব্যবসায়িক সহযোগী। তাঁর মালিকানায় কক্সবাজারে ‘রামাদা কক্সবাজার’ এবং দুবাইয়ে ‘রামাদা দুবাই’ হোটেল রয়েছে। চট্টগ্রাম নগরীর লালদীঘি এলাকায় ‘মহল মার্কেট’, খুলশীতে ‘জসিম হিল পার্ক’সহ একাধিক বাণিজ্যিক ও আবাসিক স্থাপনার মালিক তিনি। এ ছাড়া তাঁর সম্পদের উৎস ও দ্রুত উত্থান ঘিরে রয়েছে নানা অভিযোগ।

অভিযোগ উঠেছে, জসিম উদ্দিন সাবেক দুই আইজিপি বেনজীর আহমেদ ও শহিদুল হকের সঙ্গে ব্যবসায়িক সম্পর্ক বজায় রেখেছিলেন এবং আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী একাধিক নেতার সান্নিধ্য পেয়েছিলেন। এ ছাড়া ২০২৪ সালে উপজেলা নির্বাচনে অংশ নিয়ে তিনি চন্দনাইশ উপজেলা চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন।

চন্দনাইশ উপজেলা বিএনপির এক নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে যিনি সুবিধাভোগী ছিলেন, তাঁর হাতে ধানের শীষ দেওয়া আমাদের জন্য লজ্জাজনক। এতে দলের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হবে।’

এদিকে অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে জসিম উদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘আমি একজন ব্যবসায়ী। বিভিন্ন মানুষের সঙ্গে আমার ছবি থাকতেই পারে। এসব বিষয়ে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার সময় চট্টগ্রাম বিভাগীয় কার্যালয়ে বিস্তারিত বলব।’ এ কথা বলেই তিনি ফোনের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ভারতীয়দের ওয়ার্ক পারমিট বাতিলসহ ৪ দফা দাবি ঘোষণা করল ইনকিলাব মঞ্চ

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ২৯ ডিসেম্বর ২০২৫, ০০: ০৭
ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সম্মুখসারির যোদ্ধা শরিফ ওসমান বিন হাদি হত্যাকাণ্ডের বিচারের দাবিতে এবার চার দফা দাবি ঘোষণা করেছে ইনকিলাব মঞ্চ। রোববার রাতে সংগঠনটি ফেসবুক পেজে দেওয়া এক পোস্টে এই দাবিগুলো তুলে ধরে।

রাত পৌনে ১০টার দিকে ইনকিলাব মঞ্চের সদস্যসচিব আব্দুল্লাহ আল জাবের এই কর্মসূচি ও দাবিদাওয়ার কথা সংবাদমাধ্যমকে জানান। তিনি হুঁশিয়ারি দেন, এই দাবিগুলো মানা না হলে ভবিষ্যতে আরও কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।

ইনকিলাব মঞ্চের ৪ দফা—

১. খুনি, খুনের পরিকল্পনাকারী, খুনের সহায়তাকারী, পলায়নে সহযোগী, আশ্রয়দাতাসহ পুরো খুনি চক্রের আগামী ২৪ দিনের মধ্যে বিচারকার্য সম্পন্ন করতে হবে।

২. বাংলাদেশে অবস্থানরত সকল ভারতীয়দের ওয়ার্ক পারমিট বাতিল করতে হবে।

৩. ভারত তার অভ্যন্তরে আশ্রয় নেওয়া সকল খুনিদের ফেরত দিতে অস্বীকৃতি জানালে ভারতের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক আদালতে মামলা দায়ের করতে হবে।

৪. সিভিল মিলিটারি ইন্টেলিজেন্সের মধ্যে ঘাপটি মেরে লুকিয়ে থাকা ফ্যাসিস্টের দোসরদের চিহ্নিত করে গ্রেপ্তার ও বিচারের মুখোমুখি করতে হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত