Ajker Patrika

সিলেটে মুষলধারে বৃষ্টি, বাড়ছে নদ-নদীর পানি

নিজস্ব প্রতিবেদক ও প্রতিনিধি, সিলেট 
সিলেটে বৃষ্টিতে বাড়ছে জলাবদ্ধতা। ছবি: আজকের পত্রিকা
সিলেটে বৃষ্টিতে বাড়ছে জলাবদ্ধতা। ছবি: আজকের পত্রিকা

দিনভর মুষলধারে বৃষ্টিতে সিলেট নগরের বিভিন্ন এলাকায় পানি আটকে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। ভোগান্তিতে পড়েছে নগরের বাসিন্দারা। টানা বর্ষণে জেলার সব নদীর পানিও বাড়ছে। ভারতের মেঘালয়ের চেরাপুঞ্জি ও সিলেটে এমন বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকলে বন্যার আশঙ্কাও রয়েছে।

আজ শনিবার সকাল থেকে শুরু হওয়া বৃষ্টির পরিমাণ দুপুরে আরও বাড়ে। জরুরি প্রয়োজন ছাড়া মানুষ বাইরে বের হচ্ছে না।

আবহাওয়া অধিদপ্তর সিলেট জানায়, গতকাল শুক্রবার সকাল ৬টা থেকে আজ সকাল ৬টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় সিলেটে ১৩২ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। আজ সকাল ৬টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত মাত্র ৮ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। আর দুপুর ১২টা থেকে বেলা ৩টা পর্যন্ত ১৫৬ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। বেলা ৩টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত ৩৪ দশমিক ৬ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। আজ মোট ১৯৮ দশমিক ৬ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড হয়েছে। এখন পর্যন্ত বৃষ্টিপাত অব্যাহত রয়েছে।

আবহাওয়া অধিদপ্তর সিলেটের আবহাওয়াবিদ শাহ মো. সজিব হোসাইন বলেন, ‘সিলেট অঞ্চলে বৃষ্টিপাতের মেঘ রয়েছে এবং বৃষ্টি হচ্ছে। এটি কেটে যেতে সময় লাগতে পারে। আগামী তিন দিন এ রকম বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস রয়েছে।’

সিলেটে বৃষ্টিতে বাড়ছে জলাবদ্ধতা। ছবি: আজকের পত্রিকা
সিলেটে বৃষ্টিতে বাড়ছে জলাবদ্ধতা। ছবি: আজকের পত্রিকা

পানি উন্নয়ন বোর্ড সিলেট জানায়, গতকাল সকাল থেকে সুরমা নদীর দুটি পয়েন্ট, কুশিয়ারা নদীর চারটি, লোভা নদীর একটি, ডাউকি নদীর একটি ও সারি-গোয়াইন নদের একটি পয়েন্টে পানি বাড়ছে। এর মধ্যে সুরমা নদীর সিলেট পয়েন্টে আজ সন্ধ্যা ৬টায় বিপৎসীমার ১ দশমিক ১৫ সেমি, কানাইঘাট পয়েন্টে শূন্য দশমিক ২৯ সেমি নিচ দিয়ে পানি বইছে।

একই সময়ে কুশিয়ারা নদীর অমলশীদ পয়েন্টে বিপৎসীমার ১ দশমিক ৮৭ সেমি, শেওলা পয়েন্টে ২ দশমিক ২৩ সেমি, ফেঞ্চুগঞ্জ পয়েন্টে ১ দশমিক শূন্য ২ সেমি ও শেরপুর পয়েন্টে ১ দশমিক ১৪ সেমি, ডাউকি নদীর জাফলং পয়েন্টে ২ দশমিক ২৫ সেমি, সারি-গোয়াইন নদীর গোয়াইনঘাট পয়েন্টে ৭৪ সেমি নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এ ছাড়া আজ সন্ধ্যা ৬টায় লোভা লুবা নদীর লুবা ছড়া পয়েন্টে ১৩ দশমিক ২৪ সেমি আর ধলাই নদের ইসলামপুর পয়েন্টে ৯ দশমিক ১৭ সেমি ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে।

সিলেটে বৃষ্টিতে বাড়ছে জলাবদ্ধতা। ছবি: আজকের পত্রিকা
সিলেটে বৃষ্টিতে বাড়ছে জলাবদ্ধতা। ছবি: আজকের পত্রিকা

পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) সিলেটের নির্বাহী প্রকৌশলী দীপক রঞ্জন দাশ বলেন, ‘ভারতের মেঘালয়ের চেরাপুঞ্জিতে গত ২৪ ঘণ্টায় (শুক্রবার সকাল সাড়ে ৮টা থেকে শনিবার সকাল সাড়ে ৮) ৪১০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। আমাদের এখানেও শনিবার ১৯৮ দশমিক ৬ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। প্রায় সবগুলো পয়েন্টে নদ-নদীর পানি বাড়ছে। তবে এখনো পর্যন্ত আমরা কোনো পয়েন্টে বিপৎসীমা অতিক্রম করার খবর পাইনি। আর স্বস্তির খবর নিম্নাঞ্চলের পানি দ্রুত নেমে যাচ্ছে। এই পানি সুনামগঞ্জ, কিশোরগঞ্জ হয়ে মেঘনা গিয়ে পড়ছে। চেরাপুঞ্জিতে মনে হয় আরও এক-দুই দিন বৃষ্টি হবে।’

এদিকে দুপুরের ১৫৬ মিলিমিটার বৃষ্টিপাতে সিলেট নগরে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। এতে ডুবে গেছে নগরের বেশির ভাগ এলাকা। ভোগান্তিতে পড়েছে বাসিন্দারা। নগরের খাসদবীর, চৌহাট্টা, ওসমানী মেডিকেল ও মেডিকেল রোড, শিবগঞ্জ, মদীনা মার্কেট, দরগাহ মহল্লা, পীর মহল্লা, হাউজিং এস্টেট, মেন্দিবাগ, রেলগেট, মাছিমপুর, দক্ষিণ সুরমা, মেজর টিলাসহ বেশির ভাগ এলাকায় জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়।

সিলেটে বৃষ্টিতে বাড়ছে জলাবদ্ধতা। ছবি: আজকের পত্রিকা
সিলেটে বৃষ্টিতে বাড়ছে জলাবদ্ধতা। ছবি: আজকের পত্রিকা

সিলেট সিটি করপোরেশনের (সিসিক) প্রধান প্রকৌশলী নূর আজিজুর রহমান বলেন, ‘একসঙ্গে এত পরিমাণ বৃষ্টিপাত হওয়াতে নগরের বেশির ভাগ এলাকায় জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। এখন পানি নেমে গেছে। আমাদের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা কাজ করছেন, ড্রেন পরিষ্কার করছেন। বেশি বৃষ্টিপাত হলে এই সমস্যা হয়। আমরা ড্রেনের মুখ আরেকটু বড় করার চেষ্টা করব।’

এদিকে পাহাড়ি ঢল ও টানা বৃষ্টিপাতের কারণে সিলেটের গোয়াইনঘাট, কোম্পানীগঞ্জ, জৈন্তাপুর, জকিগঞ্জ ও কানাইঘাট উপজেলার নিম্নাঞ্চলে দ্রুত পানি বাড়ছে। ওই সব এলাকায় বৃষ্টিপাত অব্যাহত রয়েছে। ইতিমধ্যে কোম্পানীগঞ্জের সাদাপাথর, গোয়াইনঘাট উপজেলার পর্যটনকেন্দ্র জাফলং ও বিছানাকান্দি পানিতে প্লাবিত হয়েছে। যে কারণে পর্যটকেরা সেখানে এখন যাচ্ছেন না।

সিলেটের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ শের মাহবুব মুরাদ আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘এখনো সিলেটে বন্যা হয়নি। নদ-নদীর পানি বিপৎসীমা অতিক্রম করেনি। যে কারণে মানুষজন তার বাড়িতেই আছে। যদি পানি বাড়ে, তাহলে আমরা ব্যবস্থা নেব। পরিস্থিতি মোকাবিলায় সব ধরনের প্রস্তুতি রয়েছে আমাদের। ইতিমধ্যে জেলায় ৫৮৩টি আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত করা হয়েছে। সব ধরনের শুকনো ও গোখাদ্য প্রস্তুত রয়েছে। এখনো কারও পানিবন্দী হওয়ার খবর জানা যায়নি।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

মাঠে পড়ে ছিল মাছ ব্যবসায়ীর রক্তাক্ত লাশ

ফরিদপুর প্রতিনিধি
ঘটনাস্থলে স্থানীয় বাসিন্দারা জড়ো হন। ছবি: আজকের পত্রিকা
ঘটনাস্থলে স্থানীয় বাসিন্দারা জড়ো হন। ছবি: আজকের পত্রিকা

ফরিদপুরের সালথায় উৎপল সরকার (৩৫) নামের এক মাছ ব্যবসায়ীর রক্তাক্ত লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। আজ শুক্রবার সকালে উপজেলার আটঘর ইউনিয়নের গৌরদিয়া এলাকার কালীতলা ব্রিজ-সংলগ্ন মাঠ থেকে লাশটি উদ্ধার করে পুলিশ। এই ঘটনায় মাঠ-সংলগ্ন সেতু থেকে চোখ বাঁধা অবস্থায় থাকা ফিরোজ মোল্যা নামের এক ভ্যানচালককে জীবিত উদ্ধার করে স্থানীয় লোকজন।

নিহত উৎপল ফরিদপুর জেলা সদরের কানাইপুর ইউনিয়নের রনকাইল গ্রামের অজয় সরকারের ছেলে। তাঁর স্ত্রী ও আড়াই বছর বয়সী এক শিশুসন্তান রয়েছে।

থানা-পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, আজ ভোরে সড়কের পাশে ফাঁকা মাঠে রক্তাক্ত অবস্থায় একটি লাশ দেখতে পায় স্থানীয় লোকজন। পাশেই একটি সেতুর সঙ্গে একই গ্রামের ভ্যানচালক ফিরোজ মোল্যাকে চোখ বাঁধা অবস্থায় বেঁধে রাখা হয়েছিল। পরে স্থানীয় বাসিন্দাদের হত্যাকাণ্ডের বিষয়টি খুলে বলেন তিনি।

ভ্যানচালকের বরাত দিয়ে রনকাইল গ্রামের বাসিন্দা ও প্রতিবেশী কাজী শাহীন বলেন, উৎপল সরকার ব্যাটারিচালিত ভ্যানে করে গোপালগঞ্জের মুকসুদপুরে মাছ কিনতে যাচ্ছিলেন। পথে অজ্ঞাতপরিচয় তিন-চার ব্যক্তি দেশীয় অস্ত্রের মুখে ভ্যানচালক ফিরোজ মোল্যাকে গামছা দিয়ে চোখ বেঁধে ব্রিজের রেলিংয়ে বেঁধে ফেলে। তারা উৎপলের সঙ্গে থাকা টাকাপয়সা লুট করে তাঁকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে হত্যা করে পালিয়ে যায়।

বিষয়টি নিশ্চিত করে সালথা থানার পরিদর্শক (তদন্ত) কে এম মারুফ হাসান রাসেল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘দুই থেকে তিনজন দুর্বৃত্ত ঘটনাটি ঘটিয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে। তবে এটাকে ডাকাতি বলা যায় না। ঘটনাটি নিয়ে তদন্ত চলমান। তদন্ত শেষে মূল কারণ বলা যাবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

বাসার দরজা ভেঙে চবি শিক্ষার্থীর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার

চবি প্রতিনিধি 
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) ওমর ফারুক সুমন নামের এক শিক্ষার্থীর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার (৪ ডিসেম্বর) রাতে চট্টগ্রাম নগরীর খুলশী এলাকার একটি বাসা থেকে লাশটি উদ্ধার করে পুলিশ।

ওমর ফারুক বিশ্ববিদ্যালয়ের আরবি বিভাগের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন।

স্থানীয় ও পরিবারের সদস্যরা জানান, সুমন খুলশীতে তাঁর মামার বাসায় থাকতেন। তাঁর বড় ভাইও সেখানে থাকেন। দুই দিন আগে সুমনের মামা পুরো পরিবার নিয়ে তুরস্কে বেড়াতে যান। বাসায় সুমন ও তাঁর বড় ভাই ছিলেন। গতকাল বিকেল ৪টার দিকে ভাইয়ের সঙ্গে ফোনে কথা বলেন সুমন। ফোনে তাঁর বড় ভাই কখন বাসায় ফিরবেন জানতে চান সুমন। বড় ভাই জানান যে তাঁর আসতে একটু দেরি হবে। এর কিছুক্ষণ পর বড় ভাই সুমনকে ফোন করলে তিনি আর ফোন রিসিভ করেননি। পরে বাড়ি থেকে সুমনের মা ফোন দিয়ে যোগাযোগ করতে না পেরে বিষয়টি বড় ভাইকে জানান। এতে উদ্বেগ দেখা দিলে বড় ভাই বিল্ডিংয়ের দারোয়ানকে দিয়ে বাসা চেক করান।

দারোয়ান কলিংবেল বাজিয়েও কোনো সাড়া না পেয়ে বড় ভাইকে জানালে তিনি দ্রুত বাসায় এসে সুমনকে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখতে পান। খবর পেয়ে পুলিশ এসে লাশ উদ্ধার করে। ঘটনাস্থলে চিরকুট মিলেছে। এতে লেখা রয়েছে, ‘আমি সুমন, ওমর ফারুক সুমন। আমার কোনো আশা-আকাঙ্ক্ষা নেই। আর আমার কারও প্রতি কোনো অভিযোগ নেই। সবাই ভালো থাকবেন।’ এর আগে ১ ডিসেম্বর লেখা আরেকটি চিরকুট পাওয়া যায়। সেখানে লেখা ছিল—‘আশাই জীবন, আশাই মরণ, ব্যর্থতা হতাশা-অন্ধকারে নিয়ে যায়।’

খুলশী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহীনুর জামান বলেন, ‘সুমন ও তাঁর বড় ভাই একসঙ্গে মামার বাসায় থাকতেন। মামা ও মামি বর্তমানে বিদেশে আছেন। বড় ভাই সন্ধ্যায় বাইরে যান। সে সময় সুমন বাসায় একা ছিলেন। বড় ভাই বাসায় ফিরে এসে বারবার ডাকলেও ফ্ল্যাটের ভেতর থেকে কোনো সাড়া পাননি। পরে দরজা ভেঙে ভেতরে ঢুকলে সুমনের মরদেহ ঝুলন্ত অবস্থায় পাওয়া যায়। প্রাথমিক তদন্তে এটি আত্মহত্যা মনে হলেও আমরা সব সম্ভাব্য কারণ খতিয়ে দেখছি। ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহটি চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

বদলি নিয়ে ফেসবুকে ক্ষোভ প্রকাশ শিক্ষক নেতার

ময়মনসিংহ প্রতিনিধি
প্রাথমিক শিক্ষক দাবি বাস্তবায়ন পরিষদের আহ্বায়ক আবুল কাশেম। ছবি: সংগৃহীত ক্যাটা: সারা দেশ, ময়মনসিংহ
প্রাথমিক শিক্ষক দাবি বাস্তবায়ন পরিষদের আহ্বায়ক আবুল কাশেম। ছবি: সংগৃহীত ক্যাটা: সারা দেশ, ময়মনসিংহ

সহকর্মী এবং নিজের বদলি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক লাইভে এসে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন প্রাথমিক শিক্ষক দাবি বাস্তবায়ন পরিষদের আহ্বায়ক আবুল কাশেম। তিনি বলেন, ‘আমাকে সাড়ে ৪০০ মাইল দূরে বদলি করা হয়েছে। এতে আমি বিচলিত নই।’

আজ শুক্রবার সকাল সাড়ে ৭টার দিকে ফেসবুক লাইভে এসে আবুল কাশেম বলেন, ‘আমার মতো সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকদের তিন দফা দাবি আদায়ের নেতৃত্ব দেওয়া শতাধিক শিক্ষককে বদলি করা হয়েছে পার্শ্ববর্তী জেলা এবং বিভাগে। আরও অনেককে বদলি করা হতে পারে। এ নিয়ে কেউ বিচলিত হবেন না। প্রয়োজনে আইনি লড়াইয়ে যাব। তবে আন্দোলন থেকে সরে আসব না। আপনাদের পাশে রয়েছি। অবিলম্বে আরও কঠোর কর্মসূচির ঘোষণা আসবে। সে জন্য যদি জেলেও যেতে হয়, প্রস্তুত রয়েছি।’

এ বিষয়ে প্রাথমিক শিক্ষক দাবি বাস্তবায়ন পরিষদের আহ্বায়ক আবুল কাশেমের সঙ্গে একাধিকবার মোবাইল ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও কোনো সাড়া মেলেনি।

৪ ডিসেম্বর প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক (পলিসি ও অপারেশন) মাহফুজা খাতুন স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে ময়মনসিংহের ফুলপুর উপজেলার চানপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবুল কাশেমকে বরিশাল সদরের চরবাড়িয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বদলি করা হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

আমনের বাম্পার ফলনেও মুখে হাসি নেই কৃষকের, বাজারে ধানের দাম কমায় হতাশা

মাহিদুল ইসলাম, মৌলভীবাজার
জমির ধান কাটছেন কৃষকেরা। ছবি: আজকের পত্রিকা
জমির ধান কাটছেন কৃষকেরা। ছবি: আজকের পত্রিকা

মৌলভীবাজারের চলতি মৌসুমে আমন ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। ফসল ঘরে তুলতে দিনরাত ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন কৃষকেরা। তবে বাজারে ধানের দাম কম হওয়ায় হতাশা ব্যক্ত করেছেন তাঁরা। কৃষকদের অভিযোগ, বাজারে ব্যবসায়ীরা সিন্ডিকেট করে ধানের দাম কমিয়ে দিয়েছেন। তাই ফলন ভালো হওয়ার পরও বাজারে ধানের যথার্থ মূল্য না পাওয়ায় লোকসানে পড়ছেন তাঁরা।

কৃষকেরা জানান, চলতি আমন মৌসুমে আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় ধানের ফলন অনেক ভালো হয়েছে। তবে অন্যান্য বছরের তুলনায় এবার ধানের দাম অনেক কম। গত বছর বাজারে যেখানে ১ হাজার ১০০ থেকে ১ হাজার ৩০০ টাকায় প্রতি মণ ধান বিক্রি হয়েছে, এই বছর মাঝারি শুকনা ধান ৯০০ ও শুকনা ধান ১ হাজার থেকে ১ হাজার ৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। বীজতলা থেকে শুরু করে ফসল ঘরে তোলার আগপর্যন্ত অনেক শ্রম ও টাকা খরচ করতে হয়েছে।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে ৯৮ হাজার ২০ হেক্টর জমিতে আমন আবাদ করা হয়েছে। এর থেকে ৪ লাখ ৪১ হাজার ৯০ টন ধান উৎপাদন হবে। আর এই ধান থেকে ২ লাখ ৯৫ হাজার ৫৩০ মেট্রিক টন চাল পাওয়া যাবে। ইতিমধ্যে ৬৫ শতাংশ ধান কাটা হয়েছে। আমন ধানের শতভাগ লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হয়েছে। এক সপ্তাহের মধ্যে শতভাগ ধান ঘরে তুলতে পারবেন কৃষকেরা।

বাজারে আমন ধানের দাম কম হলেও সরকারিভাবে ভালো দাম নির্ধারণ করা হয়েছে। জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক অফিস সূত্রে জানা গেছে, সরকারিভাবে প্রতি কেজি আমন ধান ৩৪ টাকা মূল্যে ৭৯০ টন, সেদ্ধ চাল ৫০ টাকা কেজি মূল্যে ২ হাজার ৬৭৭ টন ও আতপ চাল ৪৯ টাকা কেজি মূল্যে ৫ হাজার ৬৪৬ টন চাল সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে।

জেলার কমলগঞ্জ, রাজনগর, কুলাউড়া ও সদর উপজেলার আমনখেত ঘুরে দেখা যায়, কৃষকেরা পাকা আমন ধান ঘরে তুলতে ব্যস্ত। অনেক এলাকায় দ্রুত সময়ে কম্বাইন হারভেস্টারের মাধ্যমে ধান কাটা ও মাড়াইয়ের কাজ একসঙ্গে সেরে নিচ্ছেন কৃষকেরা। এতে সময়, খরচ ও কষ্ট কম করতে হচ্ছে। আবার কেউ কাজের লোক এনে ধান কেটে ফসলের মাঠেই মাড়াই করে সেদ্ধ দিচ্ছেন। অনেক কৃষক মাঠের মধ্যে রাত জেগে ধান সেদ্ধ করছেন। তবে সবকিছু ঠিক থাকলেও ধানের দাম কম থাকায় হতাশা ব্যক্ত করেছেন কৃষকেরা।

কমলগঞ্জ উপজেলার পতনঊষার ইউনিয়ন কৃষক আনোয়ার খান বলেন, ‘গত বছর আমাদের ধান একেবারেই হয়নি। এ বছর অনেক ভালো ধান হয়েছে। প্রত্যাশার চেয়ে বেশি ফলন হয়েছে। তবে বাজারে ধানের দাম অনেক কম। প্রতি মণ ধান মাত্র ৯০০ থেকে ১ হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে। কৃষিতে আগের চেয়ে অনেক বেশি খরচ বেড়েছে। সে তুলনায় ধানের দাম বাড়েনি।’

জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক (ভারপ্রাপ্ত) মিলন কান্তি চাকমা বলেন, ‘আমাদের ধান-চাল সংগ্রহের কার্যক্রম ২০ নভেম্বর শুরু হয়েছে; চলবে ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত। সরকারিভাবে ধানের দাম গত বছরের তুলনায় কেজিপ্রতি ১ টাকা বৃদ্ধি করা হয়েছে। একটা সময় আমরা ধান সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করতে পারতাম না; তবে এখন ধান-চালের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হয়। আশা করি, চলতি মৌসুমে আমাদের লক্ষ্য পূরণ হবে।’

মৌলভীবাজার কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মো. জালাল উদ্দীন বলেন, ‘জেলায় এ বছর খুব ভালো আমন ধান হয়েছে। কৃষকেরা অত্যন্ত উৎসাহ নিয়ে ধান ঘরে তুলছেন। আশা করি, আগামী সপ্তাহের মধ্যে শতভাগ ধান কাটা হয়ে যাবে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় ও দিনের বেলা কুয়াশা না থাকায় সহজে কৃষকেরা ধান কাটা, মাড়াই ও সেদ্ধ করতে পারছেন।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত